‘বিড়াল’ অতিরিক্ত অনুশীলন (সৃজনশীল) অংশ

৬ নং প্রশ্নের উত্তর

 প্রসন্ন কর্তৃক দোহনকৃত দুধ মঙ্গলার।

 চিরায়ত প্রথার অবমাননা বলতে বিড়াল দুধ চুরি করে খেলে তাকে তাড়িয়ে না দেয়ার বিষয়টিকে বোঝানো হয়েছে।
 লোক-সমাজে চিরাচরিত একটি প্রথা প্রচলিত হয়েছে, তা হলো বিড়াল দুধ চুরি করে খেয়ে ফেললে, তার দিকে তেড়ে যেতে হয়। নইলে মনুষ্যকুলে কুলাঙ্গাররূপে চি‎িহ্নত হতে হয়। কেননা, বিড়াল অন্যায় করলে তাকে লাঠিপেটা করা উচিত। কমলাকান্ত দুধ খাওয়ার অপরাধে বিড়ালটিকে না মারার জন্য যে সিদ্ধান্ত প্রথমে নিয়েছিল, চিরায়ত প্রথার অবমাননা বলতে তাকেই বোঝানো হয়েছে।

 উদ্দীপকের সঙ্গে ‘বিড়াল’ রচনায় উঠে আসা বিড়ালের চুরির অন্তর্নিহিত কারণের দিকটি প্রাসঙ্গিক।
 ‘বিড়াল’ রচনায় লেখক বিড়ালের কাল্পনিক কথোপকথনের মধ্য দিয়ে মানবতার কথা উচ্চারণ করেছেন। যেখানে বিড়ালরূপী লেখকের বিবেক চুরির পেছনে সভ্য সমাজের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন।
 উদ্দীপকে হাজি মুহম্মদ মুহসীনের জীবনের একটি কাহিনি উপস্থাপন করা হয়েছে। যেখানে মুহসীন একরাতে জনৈক চোরকে হাতে-নাতে ধরে ফেলেন। কিন্তু উদার চিত্ত মুহসীন চৌর্যবৃত্তির জন্য তাকে কোনোরূপ শাস্তি দেননি। এমনকি তিনি তার অভাব অভিযোগের কথা জানতে পেরে তাকে অর্থ ও খাবার দিয়ে বিদায় করেন। আলোচ্য ‘বিড়াল’ রচনাতেও মার্জারীর জবানিতে চুরির পিছনে অভাবের দিকটিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিই মানুষকে অপরাধ কর্মে প্রবৃত্ত করে।

 “যাদের প্রয়োজনাতীত ধন থাকতেও চোরের প্রতি মুখ তুলে চান না, তাদের মনের বিপরীত স্রোতের মানুষ মুহসীন।”Ñ বক্তব্যটি যথার্থ।
 বিড়াল রচনায় লেখক কমলাকান্তের কল্পনার আবহে বিড়ালের স্বগতোক্তির মাধ্যমে তার নিজস্ব বোধ ও ধারণাকে তুলে ধরেছেন। সেখানে তিনি চুরির মূল কারণ হিসেবে চি‎িহ্নত করেছেন ধনীর ধন দান না করাকে।
 বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘বিড়াল’ রচনায় সাধ করে কেউ চোর হয় না বলে মন্তব্য প্রকাশ করা হয়েছে। যারা অনায়াসে খেতে পায়, তাদের চুরি করার প্রয়োজন হয় না। এ বিশ্বের অনেক বড় বড় সাধু, চোরের নামে যারা শিউরে ওঠেন, তারা অনেকেই চোর অপেক্ষাও অসৎ। কেননা, এদের প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ধন থাকতেও চোরের প্রতি নির্দয়। তাদের মনের বিপরীত স্রোতের মানুষ হলেন হাজি মুহম্মদ মুহসীন।
 উদ্দীপকে হাজি মুহম্মদ মুহসীনের বদান্যতা প্রকাশ পেয়েছে। নিজ ঘরের মধ্যে চোরকে হাতে-নাতে ধরে শাস্তি না দিয়ে তাকে সহায়তা করেন। তিরস্কারের পরিবর্তে পুরস্কার দেন। চোরকে দণ্ডের পরিবর্তে উপহার দেয়ার এমন দৃষ্টান্ত শুধু মুহসীনের ক্ষেত্রেই দেখা যায়। যার বিপরীত চিত্র পরিলক্ষিত হয় ‘বিড়াল’ রচনায় বিড়ালের কল্পিত জবানির মধ্য দিয়ে। যেখানে চুরির জন্য দায়ী করা হয়েছে ধনী কৃপণদের।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
দণ্ডিতের সাথে
দণ্ডদাতা কাঁদে যবে সমান আঘাতে
সর্বশ্রেষ্ঠ সে বিচার।
ক. কে বিজ্ঞ চতুষ্পদের কাছে শিক্ষালাভ ব্যতীত মানুষের জ্ঞানোন্নতির উপায়ান্তর দেখে না?
খ. “পুরুষের ন্যায় আচরণ করাই বিধেয়।”Ñ কী প্রসঙ্গে বলা হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের কোন ভাবটি ‘বিড়াল’ রচনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “অপরাধীর শাস্তিতে বিচারক ব্যথিত হলে সে বিচারকে শ্রেষ্ঠ বিচার বলা যায়”Ñ উক্তিটি উদ্দীপক ও ‘বিড়াল’ রচনার আলোকে মূল্যায়ন কর। ১



৭ নং প্রশ্নের উত্তর

 বিড়াল বিজ্ঞ চতুষ্পদের কাছে শিক্ষালাভ ব্যতীত বিড়াল মানুষের জ্ঞানোন্নতির উপায়ান্তর দেখে না।

 দুধ চুরির অপরাধে বিড়ালকে লাঠিপেটা করাকে পুরুষের ন্যায় আচরণ করা বলে বোঝানো হয়েছে।
 কমলাকান্ত তার শয়নকক্ষে বিবিধ বিষয়ে চিন্তায় অন্যমনস্ক থাকলে বিড়াল এসে তার জন্য রাখা দুধটুকু সাবাড় করে ফেলে। দুধের ওপর বিড়ালের অধিকার বিবেচনায় প্রথমদিকে কমলাকান্ত নীরব থাকলেও শেষ পর্যন্ত এ মনোভাব ধরে রাখতে পারেন নি। তাই অনেক অনুসন্ধান করে একখানা লাঠি নিয়ে বিড়ালকে তাড়া করে পুরুষোচিত মনোভাবের পরিচয় দেন। প্রশ্নোক্ত উক্তিটি দ্বারা এ কথাটিই বোঝানো হয়েছে।

 উদ্দীপকের আসামির প্রতি সহানুভূতির দিকটি ‘বিড়াল’ রচনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
 পরিস্থিতির শিকার হয়েই অপরাধী অপরাধ কর্মে প্রবৃত্ত হয়। তাই কার্যকারণ এবং অবস্থার কথা বিবেচনায় সহানুভূতি নিয়েই বিচারকের বিচার করা উচিত।
 উদ্দীপকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিচারের কথা বলা হয়েছে। যেখানে আসামিকে দণ্ড দিয়ে দণ্ডদাতা নিজেই সমব্যথী হবেন। দণ্ডিতের প্রতি সমবেদনা প্রকাশের এ দিকটি ‘বিড়াল’ রচনাতেও সমানভাবে উঠে এসেছে। সেখানে বিড়াল চৌর্যবৃত্তির দ্বারা লেখকের জন্য রাখা দুধ খেয়ে নিলেও লেখক সহানুভূতি প্রকাশ করে তাকে পেটান নি। এমনকি বিড়ালের ক্ষুধার তাড়না অনুভব করে তাকে পরদিন প্রসন্ন যে ছানা দেবে তা ভাগ করে খাওয়ার প্রস্তাব দেন। এক্ষেত্রে উদ্দীপকের আসামির প্রতি সহানুভূতির দিকটি ‘বিড়াল’ রচনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।

 “অপরাধীর শাস্তিতে বিচারক ব্যথিত হলে সে বিচারকে শ্রেষ্ঠ বিচার বলা যায়”Ñ উক্তিটি ‘বিড়াল’ রচনার আলোকে সঠিক। ‘বিড়াল’ রচনায় চৌর্যবৃত্তির দায়ে অভিযুক্ত বিড়ালের বিচার করতে গিয়ে তার প্রতি লেখকের সহানুভূতি প্রকাশ পেয়েছে।
 উদ্দীপকে দণ্ডিতের প্রতি দণ্ডদাতার সমব্যথী হওয়ার কথা বলা হয়েছে। কেননা, পরিস্থিতিই অপরাধীকে অপরাধ করতে বাধ্য করে। তাই অপরাধীর অপরাধের অন্তর্নিহিত কারণ বিবেচনায় বিচারক ব্যথিত হলেই বিচার যথার্থ হয়। উদ্দীপকের এ ভাবনা ‘বিড়াল’ রচনাতেও প্রতিভাত হয়।
 ‘বিড়াল’ রচনায় লেখক বিড়ালের কল্পিত ভাষ্যে কমলাকান্তকে তিনদিন অভুক্ত থাকতে বলার মধ্য দিয়ে অপরাধের কারণ বিবেচনা করার আহŸান জানিয়েছে। কমলাকান্তও বিষয়টিকে আমলে নিয়ে বিড়ালের প্রতি সহানুভূতিশীল হয় এবং তাকে পরবর্তী দিনের জলযোগে আমন্ত্রণ জানায়। আলোচ্য উদ্দীপকেও অপরাধীর প্রতি তেমনি সহানুভূতির কথাই বলা হয়েছে।
 বস্তুত উদ্দীপক ও বিড়াল রচনায় সমাজের শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের প্রতি মানবিকতা ও সহানুভূতি মূর্ত হয়ে উঠেছে। এ দিক থেকে বিচার করলে আলোচ্য মন্তব্যটি যথার্থ।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
বিশ্বব্যাপী ২০১৩ সালে ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ বেড়ে ১৫২ ট্রিলিয়ন বা ১৫২ লাখ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি। বিবিসি বলেছে, সা¤প্রতিক বছরগুলোতে এশিয়ার দেশসমূহের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে। এর ফলে এই অঞ্চলে ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধির হার বেড়েছে।
ক. ‘কমলাকান্তের দপ্তর’ পড়লে কী বুঝতে পারা যাবে?
খ. ‘সমাজের ধনবৃদ্ধির অর্থ ধনীর ধনবৃদ্ধি’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের সাথে ‘বিড়াল’ গল্পের কোন দিকটির সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকটিতে ‘বিড়াল’ গল্পের মার্জারীর সম্পূর্ণ বক্তব্য প্রতিফলিত হয় নি। Ñ মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর। ১



৮ নং প্রশ্নের উত্তর

 ‘কমলাকান্তের দপ্তর’ পড়লে আফিমের অসীম মহিমা বুঝতে পারা যাবে।

 কথাটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, সমাজের ধনবৃদ্ধি ঘটলেও তা মূলত ধনীর হাতেই সীমাবদ্ধ থাকে।
 অর্থনৈতিকভাবে সমাজের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন নির্ভর করে সমাজের সম্পদের গতিশীলতার ওপর। কারণ সম্পদের যত হাত-বদল হয় সমাজস্থ মানুষের জীবনযাপনের মানও তত বৃদ্ধি পায়। সে সম্পদ যখন গুটিকয়েক ধনীর হাতে কুক্ষিগত হয়ে পড়ে, তখন আশেপাশের নির্ধন গরিব মানুষের জীবনযাপনের মান অনেক বেশি নিচে নেমে যায়। অথচ সমাজের উন্নতির প্রয়োজনে সমাজের ধনবৃদ্ধির নামে মূলত ধনীরই ধনবৃদ্ধির পাঁয়তারা চলে।

 ‘বিড়াল’ গল্পের পর্যায়ক্রমিকভাবে ধনীর ধনবৃদ্ধির দিকটির সঙ্গে উদ্দীপকের সাদৃশ্য রয়েছে।
 প্রতিটি অঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য সম্পদ অপরিহার্য। সব মানুষকে উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য থাকা প্রয়োজন সম্পদের সুষম বণ্টন। তা না হলে দ্রুত বেড়ে ওঠা একটা বটগাছের নিচে অবস্থিত অন্য গাছগুলো যেমন স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়, ঠিক তেমনি সমাজের একটা অংশও থেকে যাবে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত।
 উদ্দীপকে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ২০১৩ সালে ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪ শতাংশ। অর্থাৎ ধনী ব্যক্তি আরও বেশি ধনী হয়েছে। আর বিবিসির ভাষ্যমতে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কাজে লাগিয়ে এশিয়ার দেশসমূহে ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধির হার বেড়ে চলেছে দ্রুত গতিতে। অর্থাৎ সম্পদ নির্দিষ্ট কিছু মানুষের কুক্ষিগত হওয়াতে বঞ্চিত হচ্ছে অন্যরা। অন্যদিকে ‘বিড়াল’ গল্পেও উঠে এসেছে, পাঁচশ দরিদ্রকে বঞ্চিত করে একজন পাঁচশ লোকের আহার করছে। এই আহার হরণকারী একজন ধনীর মতো অন্য ধনীরাও ধনবৃদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে সামাজিক উন্নয়নের ধারণাকে। এজন্য বলা যায়, উদ্দীপকের ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধি আর ‘বিড়াল’ গল্পে ধনীর ধনবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাদৃশ্য বিদ্যমান।

 উদ্দীপকটিতে ‘বিড়াল’ গল্পের মার্জারীর বক্তব্য সম্পূর্ণ প্রতিফলিত হয় নিÑ মন্তব্যটি যথার্থ।
 মানুষের চাওয়ার কোনো শেষ নেই। যত পায় তত চায়। সে ভাবতে চায় না হয়তো তার দ্বিতীয় চাওয়ার কারণে অন্যজন বঞ্চিত হচ্ছে নির্দিষ্ট প্রাপ্তিটুকু থেকে। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, একদিকে একজনের অধীনে সম্পদের বিশাল পাহাড়, অন্যদিকে নিরন্ন মানুষের হাহাকার, বুকফাটা আর্তনাদ।
 উদ্দীপকে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বব্যাপী ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধির সাথে পাল­া দিয়ে এশিয়ার দেশগুলো এগিয়ে গেছে বহুমাত্রায়। বিবিসির তথ্যানুসারে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হাত ধরে এশিয়া অঞ্চলে ব্যক্তিগত সম্পদের বৃদ্ধি ঘটেছে অর্থাৎ সম্পদ কিছু মানুষের হাতে আটকে থাকছে। অন্যদিকে ‘বিড়াল’ গল্পে কমলাকান্তের সাথে কথা প্রসঙ্গে মার্জারী বলেছে, পাঁচশ দরিদ্রকে বঞ্চিত করে একজন সে পাঁচশ লোকের আহারের পুরোটাই সংগ্রহ করছে সামাজিক উন্নয়নের নামে। কিন্তু নিজে খাওয়ার পর যতটুকু থাকে তা অন্যকে খাওয়ার সুযোগ দিচ্ছে না। মার্জারী তাই সে খাবার নিরন্নকে কেড়ে বা চুরি করে খাওয়ার পরামর্শ দিতে চায়। মার্জারী গরিবকে তার প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয়ারও কথা ব্যক্ত করেছে।
 উদ্দীপকে ব্যক্তিগত সম্পদের বৃদ্ধি ও তার কৌশলকে তুলে ধরা হয়েছে। তবে ‘বিড়াল’ গল্পে ধনীর সম্পদ বৃদ্ধির প্রক্রিয়ার পাশাপাশি মার্জারী তার বক্তব্যে গরিবের প্রাপ্য অধিকার বোধকে তুলে এনেছে। এ বিবেচনায় বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথাযথ।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
আমরা পরের উপকার করিব মনে করিলেই উপকার করিতে পারি না। উপকার করিবার অধিকার থাকা চাই। যে বড়ো সে ছোটোর অপকার অতি সহজে করিতে পারে, কিন্তু ছোটর উপকার করিতে হইলে কেবল বড়ো হইলে চলিবে না, ছোট হইতে হইবে, ছোটর সমান হইতে হইবে। মানুষ কোনোদিন কোনো যথার্থ হিতকে ভিক্ষারূপে গ্রহণ করিবে না, ঋণরূপেও না, কেবলমাত্র প্রাপ্ত বলিয়াই গ্রহণ করিতে পারিবে।
ক. বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম উপন্যাসের নাম কী?
খ. “একটি পতিত আত্মাকে অন্ধকার হইতে আলোকে আনিয়াছি, ভাবিয়া কমলাকান্তের বড় আনন্দ হইল!” ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকটি ‘বিড়াল’ রচনার সাথে কীভাবে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের মূলভাবে দরিদ্র মানুষের যে অধিকার চেতনাটি প্রকাশ পেয়েছে তা ‘বিড়াল রচনায় প্রতিফলিত অধিকার চেতনার সাথে একসূত্রে গাঁথা। বিশ্লেষণ কর। ১





৯ নং প্রশ্নের উত্তর

 বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম উপন্যাসের নাম দুর্গেশনন্দিনী।

 বাক্যটির মাধ্যমে কথক কমলাকান্তের মানসিক উন্নতি ও পরোপকারী মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে।
 বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘বিড়াল’ রচনায় ক্ষুধার্ত এক বিড়াল কমলাকান্ত নামক এক ব্যক্তির জন্য রাখা দুধ খেয়ে ফেলে। বিড়ালের এই দুধ খাওয়া উচিত হয়েছে কিনা তা নিয়ে কমলাকান্ত এর পক্ষে-বিপক্ষে নানা যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করেন। তাতে একটি সমাজের নানা অসঙ্গতি, চুরির কারণ, ক্ষুধার্তের ক্ষুধার জ্বালা, সামাজিক উন্নতির জন্য ধন সঞ্চয় যে অভাবীদের কোনো উপকার করে না প্রভৃতি বিষয় ফুটে উঠেছে। এতে করে আফিমে নেশাগ্রস্ত কমলাকান্ত সত্যিকার অর্থেই আলোর সন্ধান লাভ করেছে।

 উদ্দীপকটি ‘বিড়াল’ রচনায় প্রতিফলিত পরোপকারী মনোভাব এবং দুর্বলের অধিকার সচেতনতাবোধের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। যুগযুগ ধরে দুর্বলের প্রতি সবলের অত্যাচারের তুলনায় দুর্বলের প্রতি সবলের আশীর্বাদ তেমন দেখা যায় না। অনেক সময় দুর্বলকে সাহায্যের নামে সবলেরা এক ধরনের শোষণ চালায়, যা প্রাথমিক অবস্থায় সহজ-সরল নিরীহ মানুষেরা বুঝতে পারে না। মূলত দুর্বলের প্রতি সবলেরা যে সহানুভূতি দেখায় তা স্বার্থহীন নয়।
 উদ্দীপকে ছোটর প্রতি বড়র উপকারী মনোভাব এবং তা প্রদর্শনের বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। অহংকারী মনোভাব নিয়ে নিরীহদের উপকার করতে গেলে তা হবে ভিক্ষার নামান্তর। আর ভিক্ষারূপে পরোপকার বা হিতসাধন করা প্রকৃত উপকার নয়। কাজেই ছোটর উপকার করতে হলে, ছোটর কষ্ট-যন্ত্রণাকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করেই করতে হবে। ছোটর প্রাপ্যকে ভিক্ষারূপে নয়, ঋণরূপে নয়, সহানুভূতিশীল হৃদয়ের ভালোবাসার দান হিসেবে দিতে হবে।
 উদ্দীপকের এই মূল বক্তব্যের সাথে ‘বিড়াল’ রচনায় বিড়ালের প্রতি কথক কমলাকান্তের সহানুভূতি সাদৃশ্যপূর্ণ। সেখানে বিড়ালকে প্রহার না করে তার প্রাপ্য হিসেবে তা গ্রহণ করাকে কমলাকান্ত মেনে নিয়েছেন।

 উদ্দীপকের মূলভাবে মানুষের যে অধিকার চেতনাটি প্রকাশ পেয়েছে তা ‘বিড়াল’ রচনায় প্রতিফলিত অধিকার চেতনার সাথে একসূত্রে গাঁথাÑ মন্তব্যটি যথার্থ।
 অধিকার কেউ কাউকে দেয় না, আদায় করে নিতে হয়। জগতের নিয়ম যাই হোক, এভাবেই চলছে। যারা সবল তারা শক্তি প্রয়োগ করে তার অধিকার আদায় করে নেয়। যারা দুর্বল অথচ ঐক্যবদ্ধ তারা সংগ্রামের পথ বেছে নেয়। আর যারা দুর্বল, ক্ষুদ্র, ঐক্যহীন তারাও তাদের অধিকারের প্রশ্নে মত প্রকাশ করে।
 উদ্দীপকে দুর্বলকে সবলের উপকার, ভিক্ষা নয়, নাকি ঋণশোধÑ এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সে ব্যাখ্যায় দুর্বলের অধিকার সচেতনতার দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে, যা ‘বিড়াল’ রচনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। রচনায় বিড়াল তার শরীরের করুণ বর্ণনা শেষে বলেছেÑ “এ পৃথিবীতে মৎস্য, মাংসে আমাদের কিছু অধিকার আছে। খাইতে দাও, নইলে চুরি করিব। দরিদ্রের আহার সংগ্রহের দণ্ড আছে, ধনীর কার্পণ্যের দণ্ড নাই কেন?” এই বক্তব্যে ছোটর অধিকার সচেতনতার এবং ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। এ বিষয়টি উদ্দীপকের “কেবলমাত্র প্রাপ্ত বলিয়াই গ্রহণ করিতে পারিবে” উক্তিটির সাথে ঐক্য স্থাপন করে।
 ‘বিড়াল’ রচনায় বিড়াল ন্যায়সঙ্গত যুক্তি প্রদর্শন করেছে। কমলাকান্তের দুধে যে তার অধিকার রয়েছে সে দিকটি বিড়ালের যুক্তি-তর্কে প্রতিফলিত হয়েছে। ধনীর ধন-সম্পদে যে অভাবীদের অধিকার আছে, এ বিষয়টি এখানে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এসব দিক বিবেচনা করে তাই বলা হয়েছে যে, উদ্দীপকের মূলভাবে দরিদ্র মানুষের অধিকার চেতনাটি ‘বিড়াল’ রচনায় প্রতিফলিত অধিকার সচেতনতার সাথে একসূত্রে গাঁথা।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
নাফিজ সাহেবের কাজের লোক রুবেল। প্রতিদিন সে বাজার থেকে বড় বড় মাছ, মুরগি, গরু ও খাসির মাংসসহ অনেক জিনিস কিনে আনে। নাফিজ সাহেবের বাড়িতে প্রতিদিনই পোলাও-কোরমা, মাছ-মাংস রান্না করা হয়। তারা অতি তৃপ্তিসহকারে সেসব খাবার খায়। আর কাজের লোকদের জন্য আলাদাভাবে কেবল ডাল, ভাত আর সবজির ব্যবস্থা করা হয়। রুবেল একদিন নিজেই রান্নাঘর থেকে পোলাও আর মাংস খেয়ে নেয়। এ ঘটনা আরেক কাজের মহিলা দেখে ফেললে রুবেল বলে, “বড়লোকদের খাবার থেকে এভাবেই নিজের অধিকার নিয়ে নিতে হয়।”
ক. নির্জল দুগ্ধপানে কে পরিতৃপ্ত হয়েছিল?
খ. “চোর যে চুরি করে, সে অধর্ম কৃপণ ধনীর।”Ñ ব্যাখ্যা কর।
গ. রান্নাঘর থেকে রুবেলের পোলাও ও মাংস চুরি করে খাওয়ার ঘটনাটি ‘বিড়াল’ গল্পের কোন বিষয়টির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. নাফিজের মতো কৃপণ ধনী মানুষরাই আমাদের সমাজে চুরি নামক অপকর্মের অন্যতম প্রধান কারণ।”Ñমন্তব্যটি মূল্যায়ন কর। ১




FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]