ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ ,শামসুর রহমান


 পাঠ পরিচিতি
“ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯” শীর্ষক কবিতাটি কবি শামসুর রাহমানের ‘নিজ বাসভূমে’ কাব্যগ্রন্থ থেকে চয়ন করা হয়েছে। “ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯” সংগ্রামী চেতনার কবিতা, দেশপ্রেমের কবিতা, গণজাগরণের কবিতা।
১৯৬৯-এ পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তৎকালীন পূর্ববঙ্গে যে গণআন্দোলনের সূচনা ঘটেছিল, কবিতাটি সেই গণজাগরণের পটভূমিতে রচিত। জাতিগত শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে এ দেশের সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ’৬৯-এ। প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জ থেকে, হাটবাজার থেকে, কলকারখানা থেকে, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অসংখ্য মানুষ জড়ো হয় ঢাকার রাজপথে। শামসুর রাহমান বিচিত্র শ্রেণি-পেশার মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সংগ্রামী চেতনার অসাধারণ এক শিল্পভাষ্য রচনা করেছেন এই কবিতায়।
কবিতাটিতে দেশমাতৃকার প্রতি জনতার বিপুল ভালোবাসা সংবর্ধিত হয়েছে। দেশকে ভালোবেসে মানুষের আত্মদান ও আত্মাহুতির প্রেরণাকে কবি গভীর মমতা ও শ্রদ্ধার সঙ্গে মূর্ত করে তুলেছেন। কবিতাটিতে একুশের রক্তঝরা দিনগুলোতে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে এ দেশের সংগ্রামী মানুষের আত্মহুতির মাহাত্ম্যের প্রগাঢ়তা লাভ করেছে। গদ্যছন্দ ও প্রবহমান ভাষার সুষ্ঠু বিকাশে কবিতাটি বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য সংযোজন।
 কবি পরিচিত
নাম শামসুর রহমান
জন্মপরিচয় জন্ম তারিখ : ২৩ অক্টোবর, ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দ।
জন্মস্থান : মাহুতটুলা, ঢাকা।
পিতৃক নিবাস : পাড়াতলী, রায়পুরা, নরসিংদী।
পিতৃ পরিচয় পিতার নাম : মুখলেসুর রহমান চৌধুরী।
শিক্ষাজীবন মাধ্যমিক : পোগাজ স্কুল (১৯৪৫), ঢাকা।
উচ্চ মাধ্যমিক : ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (১৯৪৭)।
উচ্চতর শিক্ষা : বিএ (অনার্স), এম.এ (ইংরেজি); ঢাকা বিশ্ববিদ্যাল।
পেশা ও কর্মজীবন সাংবাদিকতা । সম্পাদক-দৈনিক বাংলা। সভাপতি-বাংলা একাডেমি।

সাহিত্য কর্ম কাব্য : প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে, রৌদ্র করোটিতে, বিধ্বস্ত নীলিমা, নিরালোকে দিব্যরথ, নিজ বাসভূমে, বন্দী শিবির থেকে, দুঃসময়ের মুখোমুখি, ফিরিয়ে নাও ঘাতক কাঁটা, এক ফোঁটা কেমন অনল, বাংলাদেশ স্বপ্ন দ্যাখে, উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ, শামসুর রাহমানের শ্রেষ্ঠ কবিতা প্রভৃতি উলে­খযোগ্য।
উপন্যাস : অক্টোপাস, নিয়ত মন্তাজ, অদ্ভুত আঁধার এক, এলো সে অবেলায়।
প্রবন্ধ : আমৃত্যু তাঁর জীবনানন্দ।
শিশুতোষ : এলাটিং বেলাটিং, ধান ভানলে কুঁড়ো দেবো, গোলাপ ফোটে কুকীর হাতে, রংধনু সাঁকো, লাল ফুলকির ছড়া।
অনুবাদ : ফ্রস্টের কবিতা, হ্যামলেট, ডেনমার্কের যুবরাজ।
সম্পাদনা : হাসান হাফিজুর রহমানের অপ্রকাশিত কবিতা।
পুরস্কার ও সম্মাননা পুরস্কার : আদমজী পুরস্কার (১৯৬৩), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৯),
একুশে পদক (১৯৭৭), স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৯১)।
মৃত্যু মৃত্যু তারিখ : ১৭ আগস্ট, ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দ।
 উৎস পরিচিতি
‘ফেব্র“য়ারী ১৯৬৯’ শীর্ষক কবিতাটি কবি শামসুর রহমানের ‘নিজ বাসভূমে’ কাব্যগ্রন্থ থেকে চয়ন করা হয়েছে।
 বস্তুসংক্ষেপ
বিশ শতকের দ্বিতীয় ভাগে দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয়তায় প্রতিষ্ঠিত, অতি আধুনিক কাব্যধারার সার্থক রূপকার, নাগরিক কবি শামসুর রাহমান। কবিতার সা¤প্রতিকতম বিবর্তনে তিনি কতটা সংযোগ সাধন করতে সক্ষম হয়েছেন তার উজ্জ্বলতম নিদর্শন সেটা ‘ফেব্র“য়ারী-১৯৬৯’ কবিতাটিতে প্রকাশিত হয়েছে। পরিপার্শ্ব, সমাজ ও সময় সজ্ঞানতা, উপমা ও চিত্রকল্প, বাস্তববাদী বিষয় নির্বাচনে তিনি কবিতাটিকে অতুলনীয় করে তুলেছেন।
‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় সমকালীন জীবনের আশা-আকাঙক্ষা এবং সময় বাস্তবতার দিকটি তুলে ধরার প্রয়াস পেয়েছেন। এতে নাগরিক জীবনের কৃত্রিমতা এবং অসারতার দিকটি তুলে ধরেছেন বিভিন্ন চিত্রকল্পের মাধ্যমে। কবি নিজেকে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার সাথে নিজে সম্পৃক্ত করে দেখেছেন। যারা অনবরত জীবনের কঠিন বাস্তবতার সাথে যুদ্ধ করে চলেছে। জীবনের টানেই পৃথিবীর পথে বেরিয়েছি সকলে-এটাই কবির জীবনদর্শন। কবিতায় জীবনের প্রতি কবির গভীর দৃষ্টিভঙ্গি এবং জীবনের বাস্তবমুখিতা প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রাকৃতিক জীবনের বিচিত্র চিত্রে কবি এদেশের স্বাধীনতার ভাবী রূপ অবলোকন করেছেন। আবহমান বাংলার ‘সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ এবং বাঙালির সংগ্রামী চেতনার পরিচয় তুলে ধরেছেন কবিতার শেষাংশে। কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙে তিনি দেখেছেন শহিদদের রক্তের ঝলকানি, ঘাতকদের আঘাতে বাঙালির মানবিকতা তছনছ হতে দেখেছেন। শহিদদের চেতনা বাংলার প্রকৃতিতে ভাস্বর হতে দেখেছেন। সালাম বরকতের রক্তে দুঃখিনী মাতার চোখের জলে আমাদের প্রাণ কীভাবে শিহরিত হয় ১৯৬৯ সালের প্রেক্ষাপটে কবি তা ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় উপস্থাপন করেছেন।
 নামকরণ
‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ শীর্ষক কবিতাটির নামকরণ করা হয়েছে এর বিষয়বস্তু আঙ্গিকে। ফেব্র“য়ারি বাঙালির চেতনার প্রতীক। ফেব্র“য়ারি বাঙালির আন্দোলন-সংগ্রামের অনুপ্রেরণার উৎস। ১৯৫২ সালের ফেব্র“য়ারির চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে ১৯৬৯ সালের ফেব্র“য়ারিতে। কবি শামসুর রাহমান ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ শীর্ষক কবিতায় সেই চেতনাকেই মূর্ত করে তুলেছেন। তিনি এতে ১৯৬৯ সালে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তৎকালীন পূর্ববঙ্গে যে গণ-আন্দোলন শুরু হয় তা তুলে ধরেছেন। এ কবিতায় সেই সময়ের জাতিগত শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে এদেশের সাধারণ মানুষের ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠার দিকটি ফুটে উঠেছে।
১৯৫২ সালের ঐতিহাসিক রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের ক্রমধারায় ছাত্র অসন্তোষকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলন কীভাবে উনিশ’শো ঊনসত্তরে গণ-অভ্যুত্থানের রূপ নেয়, শহর ও গ্রামের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আন্দোলনে কীভাবে অংশগ্রহণ করে এই কবিতায় তাও তুলে ধরা হয়েছে । এ কবিতায় দেশমাতৃকার প্রতি গভীর অনুরাগ, মুক্তির আকুতি ফেব্র“য়ারিতে ফুটে থাকা কৃষ্ণচূড়া ফুলের রঙে’৫২-এর ফেব্র“য়ারিতে আত্মদানকারী শহিদদের রক্তের প্রতিফলন বলে তিনি মনে করেছেন। সেগুলোতে কবির চেতনার রং কীভাবে লেগে আছে তা তুলে ধরেছেন। এভাবে ১৯৫২ সালের ফেব্র“য়ারিতে এ দেশে যে গণজাগরণ শুরু হয়েছিল, সেই চেতনাই বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়ে ১৯৬৯-এ গণ-আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। কবি সেই সময়ের গণজাগরণ ও চেতনাকে আনন্দের রৌদ্রে আর দুঃখের ছায়ায় বাণীবদ্ধ করেছেন এ কবিতায়। এসব দিক বিবেচনায় কবিতার নামকরণটি যথার্থ হয়েছে।
 শব্দার্থ ও টীকা
আবার ফুটেছে দ্যাখো ...
আমাদের চেতনারই রং Ñ প্রতি বছর শহরের পথে পথে কৃষ্ণচূড়া ফুল ফোটে। কবির মনে হয় যেন ভাষা-শহিদদের রক্তের বুদ্বুদ কৃষ্ণচূড়া ফুল হয়ে ফুটেছে। তাই একুশের কৃষ্ণচূড়াকে কবি আমাদের চেতনার রঙের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে চান। ভাষার জন্য যাঁরা রক্ত দিয়েছেন, জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের ত্যাগ আর মহিমা যেন মূর্ত হয়ে ওঠে থরে থরে ফুটে থাকা লাল কৃষ্ণচূড়ার স্তবকে-স্তবকে।
মানবিক বাগান Ñ মানবীয় জগৎ। মনুষ্যত্ব, ন্যায় ও মঙ্গলের জগৎ।
কমলবন Ñ কবি মানবিকতা, সুন্দর ও কল্যাণের জগৎ বোঝাতে ‘কমলবন’ প্রতীকটি ব্যবহার করেছেন।
বুঝি তাই উনিশশো ...
থাবার সম্মুখে Ñ ১৯৫২ সালের ঐতিহাসিক রাষ্ট্রভাষা-আন্দোলনের ক্রমধারায় ছাত্র-অসন্তোষকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলন উনিশশো ঊসত্তরে ব্যাপক গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। শহর ও গ্রামের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত ছয় দফা ও ছাত্রদের ১১ দফার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা এই আন্দোলন ছিল অপ্রতিরোধ্য। এই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন আসাদুজ্জামান, মতিউর, ড. শামসুজ্জোহা প্রমুখ। এ অংশে কবি শোষণ আর বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ও আত্মাহুতি দেওয়া বীর জনতাকে ভাষা-শহিদ সালাম ও বরকতের প্রতীকে তাৎপর্যময় করে তুলেছেন।
সেই ফুল আমাদেরই প্রাণ Ñ ফুল বলতে এখানে বাংলা ভাষা বোঝানো হয়েছে।
 বানান সতর্কতা
কৃষ্ণচূড়া, বুদ্বুদ, স্মৃতিগন্ধ, আস্তানা, সন্ধ্যা, সন্ত্রাস, ভুলুণ্ঠিত, ফ্ল্যাগ, রৌদ্র, দুঃখিনী, হরিৎ, অবিনাশী, ক্ষণ, চত্বর,উচ্চারণ, শ্যামল।

 অনুশীলন অংশ (চৎধপঃরপব)
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
কপালে কব্জিতে লাল সালু বেঁধে
এই মাঠে ছুটে এসেছিল কারখানা থেকে লোহার শ্রমিক,
লাঙল জোয়াল কাঁধে এসেছিল ঝাঁক বেঁধে উলঙ্গ কৃষক
হাতের মুঠোয় মৃত্যু চোখে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল মধ্যবিত্ত,
নিম্নবিত্ত, করুণ কেরানি, নারী, বৃদ্ধ, ভবঘুরে
আর তোমাদের মত শিশু পাতা কুড়ানিরা দল বেঁধে।
ক. শহরের পথে থরে থরে কী ফুটেছে?
খ. ‘এ-রঙের বিপরীত আছে অন্য রং’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকটি ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতার যে দিকটিকে তুলে ধরে তার পরিচয় দাও।
ঘ. উদ্দীপকের বক্তব্য ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতার খণ্ডাংশযৌক্তিকতা দেখাও। ১



১নং প্রশ্নের উত্তর

 শহরের পথে থরে থরে কৃষ্ণচূড়া ফুটেছে।

 “এ রঙের বিপরীত আছে অন্য রং” বলতে প্রতিবাদ বা গণজাগরণের কথা বলা হয়েছে।
 পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙালিদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন ও অত্যাচার চালায়। তারা সে সময়ের পূর্ববঙ্গের মানুষকে পুতুলের মতো ব্যবহার করতে থাকে। চারদিকে হত্যা, সন্ত্রাস ও লুণ্ঠন জনজীবনে আতঙ্ক তৈরি করে। এর প্রতিবাদে এদেশের সাধারন মানুষ ক্ষুদ্ব হয়ে ওঠে। এ কথা বোঝাতেই প্রশ্নোক্ত কথাটি বলা হয়েছে।

 উদ্দীপকটি ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার অত্যাচারী শাসক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলনে অংশ নেয়ার জন্য সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ করার দিকটি তুলে ধরেছে।
 বাঙালি জাতি বীরের জাতি। এই জাতি যুগে যুগে শাসক শ্রেণির বিভিন্ন অন্যায় আর অত্যাচারের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে সংগ্রাম করেছে, ছিনিয়ে এনেছে মুক্তির আস্বাদ। বাঙালি কৃষক-শ্রমিক-ছাত্র তথা সকল শ্রেণিপেশার মানুষ একত্রিত হয়ে অন্যায়কে পদদলিত করে ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠা করেছে।
 উদ্দীপকে এমনই এক অন্যায়ের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে বাঙালি জনতা। কপালে ও কব্জিতে লাল সালু বেঁধে এসেছে কারখানার শ্রমিক, লাঙল কাঁধে এসেছে কৃষক। মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, করুণ কেরানি, নারী-বৃদ্ধ, শিশু-কিশোর এমনকি ভবঘুরেরাও এসেছে আন্দোলন করার জন্য। তীব্র সংগ্রামে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতাতেও এই বিষয়টি লক্ষ করা যায়। ১৯৬৯-এর গণআন্দোলনে জাতিগত শোষণ আর নিপীড়নের বিরুদ্ধে জেগে ওঠে সমগ্র বাঙালি জাতি, প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জ, হাটবাজার, কলকারখানা, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অসংখ্য মানুষ ঢাকার রাজপথে জড়ো হয়ে আন্দোলন শুরু করে। সুতরাং বলা যায় যে, ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার গণমানুষের এই আন্দোলন করার দিকটিই উদ্দীপকটিতে তুলে ধরা হয়েছে।

 উদ্দীপকে যে বিষয়ের প্রতিফলন ঘটেছে ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার খন্ডাংশÑ মন্তব্যটি যথাযথ।
 দেশ ভাগের পরই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আমাদের ভাষার ওপর বিভিন্নভাবে আঘাত হানে। কিন্তু বীর বাঙালি রক্ত দিয়ে তা প্রতিহত করে। ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত শোষণের বিরুদ্ধে ধাপে ধাপে আমরা ঘাতক পাকিস্তানি সরকারের বিরুদ্ধে অনেক সংগ্রাম আর আন্দোলন করি। আর এই মহান সংগ্রামগুলোতে শহিদ হয়েছেন বীরের জাতি বাঙালির অনেক তরুণ-যুবা।
 উদ্দীপকটিতে একটি আন্দোলন-সংগ্রামরত সকল শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণের বিষয়টি লক্ষ করা যায়। কারখানার লোহার শ্রমিক, লাঙল কাঁধে কৃষক, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, কেরানি, নারী, বৃদ্ধ সবাই এসেছে আন্দোলন করার জন্য। ভবঘুরে বা পথশিশুরাও এই আন্দোলন থেকে বাদ পড়ে নি। এই আন্দোলনটি মূলত ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার গণআন্দোলনেরই নামান্তর। কেননা সেই আন্দোলনেও কৃষক-শ্রমিক, ছাত্র-জনতা সকলে দল বেঁধে অংশগ্রহণ করে। তবে ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় একমাত্র আলোচিত দিক এটিই নয়, আরও দিক রয়েছে।
 ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় একুশের চেতনার দিকটি তথা একুশের স্মৃতিচারণার বিষয়টি এসেছে। এছাড়াও পথ-ঘাট সারাদেশে ঘাতকদের আস্তানা ছেড়ে যাওয়া, মানবিক বাগান, কমলবন তছনছ হওয়ার দিকগুলোও আলোচিত হয়েছে। কিন্তু এসব বিষয় উদ্দীপকের কবিতায় মোটেও আলোচিত হয় নি। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।
 অতিরিক্ত অনুশীলন (সৃজনশীল) অংশ
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
রাশেদের গ্রামের বাড়ি সিলেট। পেশায় সে কেরানি ছিল। সে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্র“য়ারিতে ভাষা আন্দোলনে শহিদ হয়। তার ছোট্ট মেয়ে শেফা কাল বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছে। আজ হাতে মেহেদি পরেছে। সকালে রাঙাহাত দেখে মায়ের চোখ ছলছল করে। লাল রং-এর এমন দাগ রাশেদের শরীরে সেদিন দেখেছিলেন তিনি। আজও রক্তবর্ণ তার চোখে চেতনার রং হয়ে ভাসল।
ক. ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় কৃষ্ণচূড়ার লাল রং কিসের প্রতীক?
খ. ‘ফুল নয়, ওরা শহিদদের ঝলকিত রক্তের বুদ্বুদ’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে রাশেদের মায়ের অশ্র“ ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার কোন আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে দেয়? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “আজো রক্তবর্ণ তার চোখে চেতনার রং হয়ে ভাসল”-উক্তিটি ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার নিরিখে পর্যালোচনা কর। ১



২নং প্রশ্নের উত্তর

 কৃষ্ণচূড়ার লাল রং চেতনার প্রতীক।

 ফাগুন মাস বসন্তের মাস।
 ফাগুন মাসের ৮ই ফাগ্লুন সংগঠিত হয়েছিল ভাষা আন্দোলন। রক্তের ছোপ ছোপ দাগ শরীরে জামায় এঁকে দেয় মৃত্যুর আলপনা। তাই কৃষ্ণচূড়া ফুল আর ফুল নয়, তা শহিদের রক্তের বুদ্বুদ ফেনায় ওঠা ফুল।

 উদ্দীপকের রাশেদের মায়ের অশ্র“ ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার ঊনসত্তরের আন্দোলনের কথা মনে করিয়ে দেয়।
 বাঙালির প্রতিবাদী চেতনার অনন্য প্রকাশ ভাষা আন্দোলন। এ আন্দোলনের শহিদদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠা পায় মর্যাদার আসনে। উদ্দীপক এবং ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতা উভয় ক্ষেত্রেই এ আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করা হয়েছে।
 উদ্দীপকে ভাষা শহিদ রাশেদের মতো শত শত মানুষ সেদিন ভাষার দাবিতে রাজপথে নেমেছিল। এদের কেউ কেউ শহিদ হয়েছে। শহিদ রাশেদের জননীর মতো অন্যান্য শহিদদের জননীরাও তাদের সন্তানের জন্য চোখের জল ফেলে, হারানো ছেলে মেয়ের পুত্র-কন্যার স্মৃতি রোমন্থন করে। তেমনি রাশেদের মা তার নাতনির হাতে মেহেদি রং দেখে ফিরে গেছেন ছেলের রক্তে ভেজা জামা দেখার স্মৃতিতে। ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায়ও একইভাবে কবি ফাগুনে কৃষ্ণচূড়ার লাল রংকে চেতনার রং হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

 “আজও রক্তবর্ণ তার চোখে চেতনার রং হয়ে ভাসল”- উক্তিটি ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার আলোকে যথার্থ।
 ফেব্র“য়ারি শুধু ভাষার মাস নয়, একই সাথে আবেগের এবং ক্ষোভের। রক্তের বদলে যদি ভাষা হয় তবে চেতনার বদলে বাঙালি ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল। আলোচ্য কবিতায় যেমন একুশের কথা বারবার এসেছে, তেমনি উদ্দীপকে একুশকে প্রকাশ করা হয়েছে প্রতীকের মাধ্যমে।
 উদ্দীপকে কেরানি রাশেদ ভাষা আন্দোলনে গিয়ে শহিদ হয়। এ ঘটনার বহুদিন পর তার মেয়ে শেফা মেহেদি হাতে বিয়ের সাজে সেজেছে। নাতনির হাতের মেহেদির লাল রং দেখে তার দুঃখিনী মায়ের শহিদ ছেলের কথা মনে পড়ে যায়। লাল রং তার চোখে চেতনার রং হয়ে দেখা দেয়। ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায়ও একুশের চেতনার কথা বলা হয়েছে। বাঙালির প্রথম প্রেরণার সিঁড়ি ফাগুন বারবার এসে কৃষ্ণচূড়া প্রতীকের মাধ্যমে তার লেগে থাকা স্মৃতিকে মনে করিয়ে দেয়। একুশের চেতনা ভোলার নয়। শোকে ও সংগ্রামে এ চেতনাই জাতিকে উত্তরণের পথ দেখিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এসেছে স্বাধীনতা। শহিদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে বলেই একুশের রং লাল।
 উদ্দীপকে লাল রং দেখেই রাশেদের মায়ের চোখ জলে ভরে ওঠে, ভাষা হারিয়ে যায়। বুকে বেদনার আবহ সৃষ্টি হয়। তবুও এই বলে শান্তি পায় একুশ নিয়েছে প্রাণ দিয়েছে সম্মান, অহংকার, বীরত্ব আর মুখের ভাষা। আর তাই কৃষ্ণচূড়ার রক্তবর্ণ চেতনার রং, একুশের রং।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
বেলালের বাড়ি সরুদিয়া গ্রামে। ছোট্টবেলায় সে বাবার সাথে ঢাকার রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করত। একদিন বাবা তাকে সঙ্গে না নিয়েই বেরিয়ে যায়। দুদিন বাবা বাসায় ফেরেনি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তার গুলিবিদ্ধ লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাওয়া গেল। বুকের বাম পাশে গুলি লেগেছে। কপালে ফিতা বাঁধা। তাতে লেখা ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’।
ক. থরে থরে কৃষ্ণচূড়া কোথায় ফুটেছে?
খ. একুশের কৃষ্ণচূড়া আমাদের চেতনারই রং কেন?
গ. বেলালের বাবার মৃত্যুর সাথে ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার কাদের তুলনা করা চলে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক”- মূলত ’৬৯-এর গণআন্দোলনের চেতনায় সমৃদ্ধÑ মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। ১



৩ নং প্রশ্নের উত্তর

 থরে থরে কৃষ্ণচূড়া শহরের পথে ফুটেছে।

 কৃষ্ণচূড়া ফুলের রক্তবর্ণ ভাষা শহিদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়ার মাধ্যমে আমাদের দেশাত্মবোধকে উজ্জীবিত করে তুলে বিধায় একুশের কৃষ্ণচূড়াকে আমাদের চেতনার রং বলা হয়েছে।
 ২১শে ফেব্র“য়ারি ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের জন্য সালাম, রফিক, জব্বার, রবকতসহ অনেকে জীবন দিয়েছেন। তাদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে রাজপথ। তাই ফাগুনে কৃষ্ণচূড়ার রক্তবর্ণ একুশকে স্মরণ করিয়ে দেয়, আমাদের দেশাত্মবোধের চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করে তোলে।

 উদ্দীপকের বেলালের বাবার মৃত্যুর সঙ্গে ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় বর্ণিত ভাষা শহিদদের মৃত্যুর সাদৃশ্য রয়েছে।
 সামন্তবাদী স্বৈরশক্তির হাত থেকে বাংলার স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে বাঙালিকে বারবার আন্দোলনে নামতে হয়েছে। অনেক রক্তপাত ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে কয়েকশ বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্ত হয়ে অর্জিত হয়েছে কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। উদ্দীপকের বেলালের পিতার মৃত্যু এবং কবিতার ’৬৯-এর আন্দোলন মূলত এরই ধারাবাহিকতা মাত্র।
 উদ্দীপকে বেলালের বাবা একজন দেশপ্রেমিক ও অধিকার সচেতন মানুষ। তাই তিনি স্বৈরশাসন মেনে নিতে পারেননি বলে গণতন্ত্রের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। তার দাবি ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পাক। কেননা স্বৈরশাসন জাতিকে অগ্রগতি হতে দূরে রাখে। ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের কথা উলে­খ রয়েছে। তৎকালীন পূর্ববঙ্গে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণআন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। জাতিগত আদর্শ ও উৎপীড়নের বিরুদ্ধে সারাদেশ থেকে মানুষ জমায়েত হয়েছিল ঢাকায়। উদ্দীপকে সে দিকটিই সাবলীলভাবে ব্যক্ত হয়েছে।

 “স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক” মূলত ’৬৯-এর গণআন্দোলনের চেতনায় সমৃদ্ধ-উক্তিটি যথাযথ।
 কবি শামসুর রাহমান তার ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় বাঙালি জাতির ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের যে চিত্র অঙ্কন করেছেন তাতে বাঙালির চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে। উদ্দীপকেও এর প্রতিফলন লক্ষ করা যায়।
 উদ্দীপকে যে বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে তাতে বাঙালির আত্মমর্যাদা ও অধিকার সচেতনতার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বেলালের পিতা মারা গেলেও তার চেতনার মৃত্যু ঘটেনি। এক্ষেত্রে তার মাথার ফিতায় লেখা ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ স্লোগানটি মূলত তার চেতনারই বহিঃপ্রকাশ। ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় ভাষা আন্দোলন করতে গিয়ে যারা জীবনদান করেছেন, তারা দেশের সূর্যসন্তান। এরূপ চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে তারাও মৃত্যুভয়কে তুচ্ছ করে ১৪৪ ধারা ভেঙে রাস্তায় নেমে আসে। অবশেষে নিজেদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত করে।
 কবি একুশের কৃষ্ণচূড়াকে আমাদের চেতনার সঙ্গে তুলনা করেছেন। উদ্দীপকের বেলালের বাবার আন্দোলন তাই সে চেতনারই প্রতিফলন। এক্ষেত্রে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি শতভাগ সঠিক।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
প্রিয় ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য
ধ্বংসের মুখোমুখি আমরা।
চোখে আর স্বপ্নের নেই নীল মদ্য
কাঠফাটা রোদ সেঁকে চামড়া।
ক. বরকত কোথায় বুক পাতে?
খ. ‘সালামের মুখে আজ তরুণ শ্যামল পূর্ব বাংলা’Ñ কেন বলা হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার কোন বিষয়টি উঠে এসেছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপক ও ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতা সমাজবাস্তবতারই ধারক-বাহক”Ñ উক্তিটি বিশ্লেষণ কর। ১



৪ নং প্রশ্নের উত্তর

 বরকত ঘাতকের থাবার সম্মুখে বুক পাতে।

 ভাষা আন্দোলন থেকে ঊনসত্তরের গণআন্দোলনের সময়কালকে বোঝাতে ‘সালামের মুখে আজ তরুণ শ্যামল পূর্ব বাংলা’ বলা হয়েছে।
 ’৫২ ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই বাঙালি জাতি স্বাধীন হওয়ার প্রেরণা পায়। ’৫২-এর পর বাঙালি আরও কিছু বিপ্লব ও সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছে, যা ঊনসত্তরে এসে আরও বিস্তৃতি লাভ করে। প্রশ্নে সালামের কথায় সে কথাই ফুটে উঠেছে।

 উদ্দীপকে ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার প্রতিবাদী চেতনার দিকটিই উঠে এসেছে।
 যখন অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্ন দেখা দেয়, তখন আর কোনো অন্যায়-অত্যাচারকে মেনে নেয়া যায় না। আর তখনই মানুষ সোচ্চার হয়ে ওঠে সমস্ত অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধে। আলোচ্য উদ্দীপক ও ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায়ও এরই ধারাবাহিকতা লক্ষ করা যায়।
 উদ্দীপকে দেখা যায়, একটি বৈরী সময়ের দৃশ্যের অন্তরালে জাতির সংকটময় অবস্থাকে নির্দেশ করা হয়েছে। যখন সবাই ধ্বংসের সম্মুখীন হয়ে পড়েছে, তখন ফুল দিয়ে খেলা করা তথা আর চুপ থাকার সময় নেই। অর্থাৎ কথাটির মধ্য দিয়ে লেখক প্রতিরোধ গড়ে তোলার ইঙ্গিত দিয়েছেন। ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায়ও আমরা একটি প্রতিক‚ল সময়ের চিত্র দেখি। যখন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালির ভাষা-সংস্কৃতি ও অস্তিত্ব নিশ্চি‎হ্ন করে দেয়ার ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে, তখন আরাম-আয়েশে ও নিশ্চিন্তে নিষ্ক্রিয় থাকা বাট্টালিদের অচিরেই নেমে আসতে হয় রাজপথে। তারাও জেনে যায়, বাঁচতে হলে সংগ্রাম করতে হবে। তখন তারা তীব্র প্রতিবাদের মধ্যে দিয়ে নিজেদের দাবিকে সামনে নিয়ে আসে। অধিকার আদায়ের এই সচেতনতা তথা প্রতিবাদী চেতনাই উদ্দীপকে মূর্ত হয় উঠেছে।

 উদ্দীপক ও ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতা সমাজ বাস্তবতারই ধারক-বাহক, উভয় ক্ষেত্রেই আমরা এর নির্মম বাস্তবতার প্রখর উপস্থিতি দেখি।
 সমসাময়িক সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতার উত্তাপ সঞ্চারিত হয়েছে উদ্দীপক ও আলোচ্য কবিতার শরীরে। যেখানে নির্মম বাস্তবতায় প্রখর উপস্থিতি লক্ষণীয় এবং আমরা তা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করি।
 উদ্দীপকে যে সামাজিক অবস্থা ফুটে ওঠে, তা সুখকর নয়। বেঁচে থাকার সুকুমার জীবনের স্বপ্ন এখানে সুদূর পরাহত যেখানে চামড়া কাঠফাটা রোদ সেঁকে। সেখানে ফুল নিয়ে লেখার দিন নয় বলার মধ্য দিয়ে কবি সবাইকে প্রতিরোধের ইঙ্গিত দিয়েছেন। বোঝা-ই যাচ্ছে, বৈরী সময় কতটা প্রখরভাবে উপস্থিত এখানে। ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায়ও উঠে এসেছে নষ্ট সময়ের আলেখ্য। যেখানে বাঙালির মুখের ভাষাকেই কেড়ে নিতে উদ্যত কিছু সামন্তবাদী অপশক্তি।
 নির্বিচার হত্যা এবং অন্যায়-অত্যাচার দ্বারা সামন্তবাদী অপশক্তি বেঁচে থাকার স্বাভাবিক পরিবেশকেও নষ্ট করে দেয়। ফলে বাঙালি হয়ে ওঠে প্রতিবাদী। আর এই প্রতিবাদ ও দাবি-দাওয়াকে প্রতিষ্ঠিত করতে জীবনের মূল্য দিতে হয় অনেককে। এক্ষেত্রে উদ্দীপক ও আলোচ্য কবিতা নির্মম সমাজবাস্তবতা তীব্রভাবে ধারণ করেছে।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
ওরা কারা বুনো দল ঢোকে
এরি মধ্যে (থামাও, থামাও) স্বর্ণশ্যাম বুক ছিঁড়ে
অস্ত্র হাতে নামে সান্ত্রী কাপুরুষ, অধম রাষ্ট্রের
রক্ত পতাকা তোলে, কোটি মানুষের সমবায়ী
সভ্যতার ভাষা এরা রদ করবে কীভাবে?
ক. ‘আবার সালাম রাজপথে নামে’-কখন?
খ. ‘সেই ফুল আমাদেরই প্রাণ’Ñ কেন বলা হয়েছে?
গ. উদ্দীপক ও ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার সাদৃশ্য চি‎িহ্নত কর।
ঘ. “কোটি মানুষের সমবায়ী সভ্যতার ভাষা এরা রদ করবে কীভাবে”Ñ মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর। ১



৫নং প্রশ্নের উত্তর

 ‘আবার সালাম রাজপথে নামে’ -উনিশশো ঊনসত্তরে।

 ‘সেই ফুল আমাদেরই প্রাণ’-পঙ্ক্তিটিতে সেই ফুল বলতে বাংলা ভাষাকে নির্দেশ করা হয়েছে, যা প্রকৃতপক্ষে আমাদের প্রাণের চেয়ে প্রিয়।
 বাংলা ভাষারূপ এই ফুল ফোটে এক ভয়াল বাস্তবতায়। এই ভাষা আমাদের প্রাণের চেয়ে প্রিয়। প্রাণ ছাড়া যেমন বাঁচা অসম্ভব, তেমনি বাংলা ভাষা ছাড়াও আমাদের অস্তিত্ব অকল্পনীয়। মায়ের ভাষার জন্য আত্মদানে বলীয়ান হতে সদা প্রস্তুত আমরা।

 উদ্দীপক ও ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় পাকিস্তানি হানাদারদের বর্বরতার চিত্র ফুটে উঠেছে।
 পাকিস্তানি সামন্তবাদী অপশক্তি বাংলার ওপর কেবল সাংস্কৃতিক-অর্থনৈতিক আগ্রাসনই চলায় নি, তারা শোষণ-নির্যাতনের মাধ্যমে জাতিকে কোণঠাসা করে রাখতে চেয়েছিল। আলোচ্য উদ্দীপক ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় এ দিকটি লক্ষণীয়।
 উদ্দীপকে লক্ষ করা যায়, বাংলার স্বর্ণশ্যাম বুকে সান্ত্রী কাপুরুষ পাকিস্তানিদের সদর্প বিচরণ। অস্ত্র হাতে তারা নিধন করতে উদ্যত হয় বাঙালি জাতিকে। উদ্দীপকে এদের ‘বুনো দল’ বলে অভিহিত করে কবি এদের থামাতে বলেছেন। ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় কবি সারাবাংলাকে ঘাতকের অশুভ আস্তানায় পরিণত হতে দেখেছেন। মানবিক বাগান, কমলবন হয়ে যাচ্ছে তছনছ। অমানবিকতার করাল থাবার নিচে চাপা পড়েছিল বাংলাদেশ। তাদের সঙ্গে বাঙালির ভাষাগত পার্থক্য যেমন ছিল, তেমনি ছিল আদর্শগত পার্থক্য। তাই বাঙালি নিধনে তারা বিন্দুমাত্র দ্বিধান্বিত ছিল না। পাকিস্তানিদের এ বর্বরতার চিত্র প্রাধান্য পাওয়ার মধ্য দিয়ে উদ্দীপক ও ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতা সাদৃশ্যপূর্ণ হয়ে ওঠে।

 “কোটি মানুষের সমবায়ী সভ্যতার ভাষা এরা রদ করবে কীভাবে”- উক্তিটি ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার নিরিখে যথার্থ।
 কোটি কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। মাতৃভাষা বাংলা তাদের মনের ভাব প্রকাশ করে। বাংলা ভাষাই তাদের আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ করেছে। অথচ এই ভাষাকেই পাকিস্তানিরা রদ করতে উদ্যত হয়।
 উদ্দীপকে পাক-হানাদারদের বর্বরতা ও নৃশংসতার দৃশ্যই সর্বত্র পরিলক্ষিত হয়। যেখানে বাংলার স্বর্ণশ্যাম বুকে সান্ত্রী কাপুরুষরা সদর্পে বিচরণরত। চেতনাকে ধ্বংস করতে না পেরে তারা অস্ত্র দিয়ে বাঙালিকে কাবু করতে চায়। এমনকি তারা বাঙালির সংস্কৃতিকে পর্যন্ত ধ্বংস করতে উদ্যত হয়েছে। উদ্দীপকের কবিতাংশে ‘বুনোদল’ উলে­খ করে এদের প্রতিরোধের আহŸান জানিয়েছেন। ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় হানাদারদের এ ধ্বংস চিত্র তুলে ধরা হয়েছে প্রতীকাশ্রয়ে। কবির বর্ণনায় মানবিক বাগান আর কমলবন তছনছ হয়ে যাচ্ছে পাকবাহিনীর বর্বরতায়। বাংলা ভাষাকে ধ্বংসের মধ্য দিয়ে তারা বাঙালিকে দমনের প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। কিন্তু আত্মসচেতন বাঙালি তা মেনে নেয়নি। বরং তারা দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলে। বীর বাঙালি পাকবাহিনীর হীন চক্রান্তকে নস্যাৎ করে দিয়েছিল প্রতিবার।
 উদ্দীপকেও হানাদারদের এ হীন মনোবৃত্তি অত্যন্ত সুস্পষ্ট। এক্ষেত্রে প্রশ্নোক্ত উক্তিটি যথাযথ ও যুক্তিযুক্ত।

নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
তোমাকে উপড়ে নিলে, বলো, তবে কী থাকে আমার?
উনিশ শো বাহান্নোর দারুণ রক্তিম পুষ্পাঞ্জলি
বুকে নিয়ে আছে সগৌরবে মহীয়সী।
সে ফুলে একটি পাপড়িও ছিন্ন হলে আমার সত্তার দিকে
কতো নোংরা হাতের হিংস্রতা ধেয়ে আসে।
ক. কার হাত থেকে অবিনাশী বর্ণমালা ঝরে পড়ে?
খ. “সারাদেশ ঘাতকের অশুভ আস্তানা”- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার কোন দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার সমগ্রভাবকে ধারণ করে না” মন্তব্যটির পক্ষে তোমার যুক্তি দাও। ১



৬নং প্রশ্নের উত্তর

 সালামের হাত থেকে অবিনাশী বর্ণমালা ঝরে পড়ে।

 “সারাদেশ ঘাতকের অশুভ আস্তানা” বলতে পাকিস্তানি বাহিনীর অশুভ পদচারণাকে বোঝানো হয়েছে।
 পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বাঙালিদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন ও অত্যাচার চালায়। তারা সে সময়ের পূর্ববঙ্গের মানুষকে পুতুলের মতো ব্যবহার করতে থাকে। চারদিকে হত্যা, সন্ত্রাস ও লুণ্ঠন জনজীবনে আতঙ্ক তৈরি করে। এ কথা বোঝাতেই প্রশ্নোক্ত কথাটি বলা হয়েছে।

 উদ্দীপকে ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার চেতনা ও ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটটির প্রতিফলন লক্ষণীয়।
 ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় গণআন্দোলনের বিষয়টি স্থান পেয়েছে। বাঙালি জাতীয়তাবাদের অবমাননা হলে বাঙালির অস্তিত্বের সংকট তৈরি হয়। কারণ বাঙালির ভাষা, আত্মমর্যাদা ও অস্তিত্ব অভিন্ন সূত্রে গাঁথা। বাঙালির ভাষা ও অস্তিত্ব রক্ষার এই সংগ্রামী প্রেক্ষাপটই উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে। যা আলোচ্য কবিতারও গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ।
 উদ্দীপকে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্র“য়ারিতে যে মর্মন্তিক ঘটনাটি ঘটেছিল; পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর যে নির্মমতা বিশ্ব অবলোকন করেছিল, তার স্মৃতিচারণ ঘটেছে। শহিদের রক্তদানের স্মৃতিকে বলা হয়েছে ‘দারুণ রক্তিম পুষ্পাঞ্জলি’। যা বুকে ধারণ করে আছে বাংলা ভাষা। অর্থাৎ, বাংলা ভাষা আমরা পেয়েছি রক্তের দামে।

 উদ্দীপকটি ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার সমগ্রভাবকে ধারণ করে না মন্তব্যটি সম্পূর্ণ যৌক্তিক।
 মাতৃভাষার প্রতি সকল মানুষের থাকে সহজাত ভালোবাসা। বাঙালিও তার ভাষা-সংস্কৃতিকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসে, যার প্রমাণ ভাষা আন্দোলন। এরই প্রতিফলন লক্ষ করা যায় উদ্দীপকে। কিন্তু ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় এর ভিন্ন চিত্র দেখতে পাওয়া যায়।
 ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় উঠে এসেছে সংগ্রামী চেতনা ও স্বদেশপ্রেম। পাকিস্তানি বাহিনীর অত্যাচার ও নিপীড়ন থেকে রেহাই পেতে তৎকালীন পূর্ব বাংলার মানুষের প্রতিবাদী মনোভাব ’৫২ -এর ভাষা আন্দোলনের যে তীব্রতা ছিল সে কথাই ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় প্রতিভাত। যে কারণে সালাম ও বরকতের কথা ব্যক্ত করা হয়েছে। অবিনাশী বর্ণমালা ঝরে পড়ার কথাও বলা হয়েছে।
নিচের উদ্দীপকটি পড় এবং প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও।
সাজিদুর রহমান একজন জনপ্রিয় গল্প লেখক। তাঁর গল্পের জনপ্রিয়তার কারণ সম্পর্কে একদিন বন্ধু সাব্বির কিছু জানতে চান। তখন সাজিদুর রহমান জানান, তিনি গল্পের চরিত্র ও বিষয়গুলো আমাদের সমাজের চেনাজানা পরিবেশ থেকে সংগ্রহ করেন এবং তার সাথে নিজের চৈতন্যজাত উপলব্ধির সংযোগ সাধন করেন। ফলে ঐ গল্প পাঠকের নিজের বা তারই আশপাশের পরিচিত মানুষের জীবনকাহিনি বলেই মনে হয়। এতেই তাঁর গল্পগুলো পাঠকের কাছে বিশেষভাবে গ্রহণযোগ্যতা পায়।
ক. কবির হৃদয়ে কে নিত্য আসা-যাওয়া করে?
গ. “ফুল নয়, ওরা শহিদের ঝলকিত রক্তের বুদ্বুদ”-ব্যাখ্যা কর।
গ. ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার কবির কোন বৈশিষ্ট্য উদ্দীপকের সাজিদুর রহমানের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে? বর্ণনা কর।
ঘ. “উদ্দীপকের সাজিদুর রহমান আর ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার কবি একই বোধে উজ্জীবিত।” মন্তব্যটির যথার্থতা যাচাই কর। ১



৭নং প্রশ্নের উত্তর

 কবি হৃদয়ে চর্যাপদের হরিণী নিত্য আসা-যাওয়া করে।

 “ফুল নয় ওরা শহিদের ঝলকিত রক্তের বুদ্বুদ”- লাইনটিতে কবি কৃষ্ণচূড়ার ডালে থরে থরে ফুটে থাকা লাল ফুলকে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে শহিদদের রক্তের সাথে তুলনা করেছেন।
 ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতা কবির হৃদয়ে একুশের চেতনার প্রতীক। প্রতি একুশেই কৃষ্ণচূড়ার ডাল রক্তের মতো লাল হয়ে ওঠে ফুলে ফুলে। কবির মনে হয় ভাষাশহিদদের রক্তের বুদ্বুদ যেন কৃষ্ণচূড়া ফুল হয়ে ফুটেছে। মূলত কবির স্মৃতিতে হয়ে আছে ভাষাশহিদদের স্মৃতি।

 ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার কবির উপলব্ধিকে বাস্তবতার সাথে মেলানোর যে বৈশিষ্ট্য, তা উদ্দীপকের সাজিদুর রহমানের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে।
 কবিরা অনেক বেশি সময় ও সমাজ সচেতন হন। তবে লেখার ক্ষেত্রে তাঁরা শুধু সময়দ্রষ্টা কিংবা সমাজদ্রষ্টা নন। কেননা জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ সব সামাজিক সমস্যা একনিষ্ঠ বিশ্বস্ততার সাথে লেখার মধ্যে প্রতিফলিত করাই তাঁদের মহান ব্রত।
 ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় দেখা যায়, নব্যকালের এক কবির হৃদয়ে চর্যাপদের হরিণী নিত্য আসা-যাওয়া করে। তাঁর মননে নতুন বিন্যাস রাবীন্দ্রিক ধ্যান জাগে। এ চর্যাপদের প্রভাব আর রবীন্দ্রনাথের ধ্যান তাঁর মধ্যে যে উপলব্ধির সৃষ্টি করে তাই তিনি বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে দেন। অন্যদিকে উদ্দীপকের সাজিদুর রহমানও তাঁর গল্পকে বাস্তবসম্মত করেই রচনা করেন। তিনি তাঁর গল্পের উপাদান সংগ্রহ করেন বাস্তব সমাজ থেকেই। আর ঐ গল্পের বাস্তব উপাদানের সাথে সূ²ভাবে নিজের উপলব্ধির সংযোগ সাধন করেন। ফলে গল্পগুলো হয়ে ওঠে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য।

 “উদ্দীপকের সাজিদুর রহমান আর ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার কবি একই বোধে উজ্জীবিত।”Ñ মন্তব্যটি যথার্থ।
 প্রত্যেক জাতির জাতীয় গৌরবগাথা কবি-লেখকের কাছ থেকেই উদ্ভূত হয়ে থাকে। তাঁদের লেখায় কলমের আঁচড়ে সমকালীন মানুষের জীবনযাত্রা, জীবনযাপনের নানাবিধ অনুষঙ্গ, লোকাচার, ধর্মীয় বিশ্বাসবোধ, জাতীয় জীবনের নানাবিধ গৌরবগাথা জীবন্ত হয়ে ওঠে। সেক্ষেত্রে যাঁর লেখা যত বেশি বাস্তবসম্মত ও যুগোপযোগী, তাঁর লেখাকে মানুষ আপন মনে করে নেয় তত বেশি। আর এভাবে উপলব্ধিকে মানুষের মনে সঞ্চারিত করার প্রশ্নে অধিকাংশ কবি-লেখকই অভিন্ন।
 উদ্দীপকে দেখা যায়, সাজিদুর রহমান একজন সমাজসচেতন গল্প লেখক। তিনি গল্পকে বরাবরই যুগোপযোগী করে রচনার পক্ষপাতী। কেননা তিনি মনে করেন, উপলব্ধিকে পাঠকের মনে সঞ্চারিত করার প্রধান উপায় হচ্ছে বাস্তবসম্মত রচনা। এজন্যই তিনি সমাজ থেকে গল্পের বাস্তব উপাদান সংগ্রহ করে তার মধ্যে স্বীয় উপলব্ধির মিশ্রণ ঘটান। উপলব্ধিকে বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে নেয়ার এ কাব্যটিই করতে চান ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার কবি। যিনি চর্যাপদের হরিণীকে হৃদয়ে ধারণ করেছেন। কালের প্রভাবে তাঁর মননে রাবীন্দ্রিক ধ্যান নতুন বিন্যাস নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে। নতুন এ ধ্যান-ধারণাকে এবার বাস্তবতার তুমুল রোদ্দুরের সাথে মিশিয়ে দিয়েছেন।
 উদ্দীপকের সাজিদুর রহমান গল্পের উপাদানের ভেতরে স্বীয় উপলব্ধিকে সঞ্চারিত করতে চান। আর ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার কবিও উপলব্ধিকে কঠোর বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে নিতে চান। এ বিবেচনায় বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।



অনুশীলনীর বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
১ ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতায় বর্ণমালাকে কীসের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?
চ নক্ষত্র খ রক্ত গ ফুল ঘ রৌদ্র
২ “আবার ফুটেছে দ্যাখো কৃষ্ণচূড়া থরে থরে শহরের পথে”Ñ চরণটি আমাদের জাতীয় জীবনের কোন দিকটি তুলে ধরে?
ক গণআন্দোলন ছ ভাষা আন্দোলন
গ স্বাধীনতা আন্দোলন ঘ স্বদেশী আন্দোলন
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ৩ ও ৪ সংখ্যক প্রশ্নের উত্তর দাও :
১৯৭১ সালে মাতৃভূমির মুক্তির জন্য অকাতরে জীবন বিসর্জন দেন মতিউর রহমান, মোস্তফা কামাল, মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরসহ লক্ষ লক্ষ মানুষ। তাঁদের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে জন্ম নেয় স্বাধীন বাংলাদেশ।
৩ উদ্দীপকের ত্যাগী মানুষদের প্রতিচ্ছবি ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় যাদের নির্দেশ করে তারা হলেন
র. সালাম রর. বরকত
ররর. দু:খিনী মাতা
নিচের কোনটি ঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর গ রর ও ররর ঝ র, রর ও ররর
৪ ওই ব্যক্তিদের আত্মত্যাগের মূলমন্ত্র কী ছিল?
ক আদর্শ ছ দেশপ্রেম গ বিদ্রোহ ঘ স্বাধিকার
মাস্টার ট্রেইনার কর্তৃক যাচাইকৃত বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
সাধারণ বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর
ক কবি পরিচিতি : (বোর্ড বই থেকে)
৫ শামসুর রাহমানের জন্ম কত সালে?
ক ১৯৭২ খ ১৯২৮ জ ১৯২৯ ঘ ১৯৩০
৬ শামসুর রাহমানের পৈতৃক নিবাস কোথায়?
ক নোয়াখালী ছ নরসিংদি গ নেত্রকোনা ঘ কুমিল­া
৭ শামসুর রাহমানের জন্ম কোন গ্রামে?
চ পাড়াতলি খ বালিয়াকান্দি
গ কাঁঠালপাড়া ঘ সাগরদাড়ি
৮ শামসুর রাহমানের পিতার নাম কী?
ক আহমদ উল­াহ
ছ মুখলেসুর রহমান চৌধুরী
গ আফসার আহমেদ চৌধুরী ঘ আলফাজ রাহমান
৯ শামসুর রাহমানের মাতার নাম কী?
ক আসমা খাতুন খ মোমেনা খাতুন
জ আমেনা বেগম ঘ আম্বিয়া বেগম
১০ শামসুর রাহমান কত খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা পাস করেন?
ক ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে খ ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে
গ ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে ঝ ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে
১১ শামসুর রাহমান কত সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন?
চ ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে খ ১৯৪৬ খ্রিস্টাাব্দে
গ ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে ঘ ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে
১২ শামসুর রাহমান কোন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন?
ক কবি নজরুল কলেজ ছ ঢাকা কলেজ
গ আইডিয়াল কলেজ ঘ জগন্নাথ কলেজ
১৩ শামসুর রাহমান কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাস করেন?
চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
খ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
গ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ঘ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
১৪ কর্মজীবনে শামসুর রাহমান কী ছিলেন?
ক শিক্ষক ছ সাংবাদিক
গ ব্যবসায়ী ঘ চাকরিজীবী
১৫ শামসুর রাহমান কত খ্রিস্টাব্দে প্রথম সাংবাদিকতা শুরু করেন?
ক ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে খ ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে
জ ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে ঘ ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে
১৬ কোন পত্রিকায় সাংবাদিকতার মাধ্যমে শামসুর রাহমান কর্মজীবন শুরু করেন?
ক দৈনিক ইত্তেফাক ছ দৈনিক মর্নিং-এজ
গ দৈনিক বাংলা ঘ ডেইলি স্টার
১৭ শামসুর রাহমান কত খ্রিস্টাব্দে ‘দৈনিক পাকিস্তান’ পত্রিকায় যোগ দেন?
ক ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে ছ ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে
গ ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে ঘ ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে
১৮ ‘দৈনিক পাকিস্তান’ পত্রিকাটি পরবর্তীতে কী নামে রূপ লাভ করে?
চ দৈনিক বাংলা খ বাংলার বাণী
গ দৈনিক ইত্তেফাক ঘ দৈনিক সংবাদ
১৯ কোন পত্রিকায় শামসুর রাহমানের প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়?
ক দৈনিক সংবাদ খ দৈনিক ইত্তেফাক
জ সাপ্তাহিক সোনার বাংলা ঘ সাপ্তাহিক ২০০০
২০ কত খ্রিষ্টাব্দে শামসুর রাহমানের প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়?
ক ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে খ ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে
জ ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে ঘ ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে
২১ নিচের কোনটি শামসুর রাহমানের কাব্যগ্রন্থ?
ক রাত্রিশেষ ছ নিজ বাসভূমে
গ লোক-লোকান্তর ঘ কালের কলস
২২ শামসুর রাহমানের মৃত্যু হয় কত খ্রিস্টাব্দে?
ক ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে খ ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে
জ ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে ঘ ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে
২৩ কোনটি শামসুর রাহমান রচিত উপন্যাস নয়?
ক অদ্ভুত আঁধার এক খ অক্টোপাস
জ বন্দী শিবির থেকে ঘ এলো সে অবেলায়
২৪ কোন গ্রন্থটি শামসুর রাহমানের রচনা নয়?
ক নিজ বাসভূমি খ রৌদ্র করোটিতে
গ বন্দী শিবির থেকে
ঝ পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়
২৫ শামসুর রাহমান একুশে পদক পান কত খ্রিস্টাব্দে
ক ১৯৬৬ খ্রিস্টাব্দে ছ ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে
গ ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে ঘ ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে

খ মূল পাঠ : (বোর্ড বই থেকে)
২৬ সর্বত্র তছনছ হচ্ছে কী?
ক শালবন খ হরিৎমাঠ জ কমলবন ঘ মধুবন
২৭ সারাদেশ কাদের অশুভ আস্তানা?
ক দালালের খ শোষকের গ পুলিশের ঝ ঘাতকের
২৮ কখন সালাম আবার ফিরে আসে?
ক বায়ান্নতে ছ ঊনসত্তরে গ ছেষট্টিতে ঘ একাত্তরে
২৯ শূন্যে ফ্ল্যাগ তুলে ধরে কে?
ক কামার খ কুমোর জ সালাম ঘ বরকত
৩০ ঘাতকের থাবার সামনে বুক পাতে কে?
ক তরুণ খ নব্য লেখক গ শিক্ষক ঝ বরকত
৩১ কার চোখ আজ আলোচিত ঢাকা?
ক রফিকের খ জব্বারের জ সালামের ঘ বরকতের
৩২ সালামের হাত থেকে কী ঝরে পড়ে?
ক অবিমিশ্র রক্ত খ ঝলকিত অস্ত্র
জ অবিনাশী বর্ণমালা ঘ অজস্র ফুল
৩৩ কার মুখ আজ তরুণ শ্যামল পূর্ব বাংলা?
চ সালামের খ রফিকের গ জব্বারের ঘ বরকতের
৩৪ কৃষ্ণচূড়া কোথায় ফুটেছে?
ক ঝুলন্ত গাছে খ গ্রামের বাঁকে
গ নদীর ধারে ঝ শহরের পথে
৩৫ কৃষ্ণচূড়া রং কীসের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে?
চ একুশের চেতনা খ স্বাধীনতার চেতনা
গ ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ঘ ছেষট্টির ছয় দফার চেতনা
৩৬ ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে কীসের চেতনা কাজ করেছে?
ক লাহোর প্রস্তাবের চেতনা ছ একুশের চেতনা
গ স্বাধীনতার চেতনা ঘ স্বৈরাচার বিরোধী চেতনা
৩৭ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় মূলত কী ফুটে উঠেছে?
ক সহিংস চেতনা খ সন্ত্রাসী মনোভাব
জ দেশপ্রেমের চেতনা ঘ মানুষের প্রতি ভালোবাসা
৩৮ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতাটি কোন কারণে সার্থক?
ক ভাষার জন্য খ রসের জন্য
গ বর্ণনার জন্য ঝ চেতনার জন্য
৩৯ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় প্রস্ফুটিত হয়েছে?
ক বাঙালির ভ্রাতৃত্ববোধ খ বাঙালির স্বদেশপ্রেম
জ সংঘবদ্ধ প্রতিবাদী আন্দোলন ঘ জীবনের তাৎপর্য
৪০ কবি শামসুর রাহমান ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় কোন বিষয়ে জোর দিয়েছেন?
ক ভাষা আন্দোলনের প্রতি খ দেশপ্রেমের প্রতি
গ দেশের প্রকৃতির প্রতি
ঝ স্বাধীনতাকামী মানুষের চেতনাবোধে
৪১ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় কোন শ্রেণিকে প্রতিবাদের হাতিয়ার হিসেবে দেখানো হয়েছে?
ক রাজনৈতিক নেতা খ পুলিশ বাহিনী
জ আমজনতা ঘ কারখানার শ্রমিক
৪২ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় একুশের কৃষ্ণচূড়ার রংকে কবি কীসের রং হিসেবে উলে­খ করেছেন?
ক বাঙালির প্রিয় রং ছ বাঙালির চেতনার রং
গ বাঙালির ঐতিহ্যের রং ঘ জাতীয় পতাকার রং
৪৩ “এ রঙের বিপরীত আছে অন্য রং” এখানে ‘অন্য রং’ দ্বারা কোন রংকে ইঙ্গিত করা হয়েছে?
ক লাল খ সাদা জ কালো ঘ হলুদ
৪৪ “সারাদেশ ঘাতকের অশুভ আস্তানা”Ñ এখানে ‘ঘাতক’ দ্বারা কাদেরকে বোঝানো হয়েছে?
চ পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীকে
খ বাঙালি সন্ত্রাসীদের
গ আন্দোলনকারী জনতাকে
ঘ নর-হত্যাকারী জল­াদদের
৪৫ “বুঝি তাই উনিশশো ঊনসত্তরেও আবার সালাম নামে রাজপথে।”Ñ সালাম রাজপথে নেমে কী করে?
ক স্লোগান দেয় ছ পতাকা ওড়ায়
গ শহিদ হয় ঘ ভাষণ দেয়
৪৬ “বুক পাতে ঘাতকের থাবার মুখে”-কে?
ক তরুণ ছাত্র খ ফতুর কৃষক গ আসাদুজ্জামান ঝ বরকত
৪৭ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় “অবিনাশী বর্ণমালা”- বলতে কোন বর্ণমালাকে বোঝানো হয়েছে?
চ বাংলা বর্ণমালাকে
খ পৃথিবীর সকল বর্ণমালাকে
গ প্রাচীন বর্ণমালাকে ঘ উর্দু বর্ণমালাকে
৪৮ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় ‘হৃদয়ের হরিৎ উপত্যকা’ দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
ক রাজপথকে ছ পূর্ব বাংলাকে
গ বধ্যভূমিকে ঘ হৃদয়ের উপত্যকাকে
৪৯ শহিদের ঝলকিত রক্তের বুদবুদ বলা হয়েছে কোন ফুলকে?
ক রক্তজবা ছ কৃষ্ণচূড়া গ পলাশ ঘ শিমুল
৫০ একুশের কৃষ্ণচূড়া কোনটির প্রতীক?
ক আমাদের সংগ্রামের খ আমাদের আকাক্সক্ষার
জ আমাদের চেতনার ঘ আমাদের বিজয়ের
৫১ ‘একুশের কৃষ্ণচূড়ার’ বিপরীত রং আমাদের মনে কী আনে?
ক প্রত্যয় খ সাহস গ পরাজয় ঝ সন্ত্রাস
৫২ একুশের কৃষ্ণচূড়ার বিপরীত রং আমাদের মনে কখন সন্ত্রাস আনে?
ক বছরে বছরে খ দিনে দিনে
গ দিনে রাতে ঝ সকাল-সন্ধ্যায়
৫৩ কোন রঙে পথ-ঘাট ছেয়ে গেছে?
ক একুশের কৃষ্ণচূড়ার রঙে ছ কৃষ্ণচূড়ার বিপরীত রঙে
গ পলাশ ফুলের রঙে ঘ পলাশের বিপরীত রঙে
৫৪ বহুলোক কোথায় ভূলুণ্ঠিত?
চ ঘাতকের আস্তানায় খ ঘাতকের দেশে
গ যুদ্ধক্ষেত্রে ঘ রাজপথে
৫৫ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় কোন কোন ভাষাশহিদদের কথা বলা হয়েছে?
চ সালাম, বরকত খ সালাম, জব্বার
গ বরকত, শফিউর ঘ জব্বার, শফিউর
৫৬ সালামের হাত থেকে অবিরত কী ঝরে পড়ে?
ক বিনাশী বর্ণমালা ছ অবিনাশী বর্ণমালা
গ নক্ষত্রমালা ঘ স্বরবর্ণমালা
৫৭ সালামের হাত থেকে অবিনাশী বর্ণমালা কীসের মতো ঝরে পড়ে?
ক ঝরনার মতো খ গ্রহের মতো
জ নক্ষত্রের মতো ঘ চাঁদের মতো
৫৮ কোন কবিকে তাঁরই ইচ্ছানুসারে মায়ের সমাধির মধ্যে সমাহিত করা হয়?
ক আবু জাফর আবদুল­াহকে খ আহসান হাবীবকে
জ শামসুর রাহমানকে ঘ সৈয়দ শামসুল হককে
৫৯ কোনটি ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় ব্যবহৃত ইংরেজি শব্দ?
ক ফুল ছ ফ্ল্যাগ গ রং ঘ পথ
৬০ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতার কবি কোন ফুলকে শহিদের রক্তের সাথে তুলনা করেছেন?
ক গোলাপ খ জবা গ পলাশ ঝ কৃষ্ণচূড়া
৬১ ‘একুশের কৃষ্ণচূড়া’ কথাটি আমাদের কী স্মরণ করিয়ে দেয়?
ক একুশে এপ্রিলের কথা খ একুশে আগস্টের কথা
জ একুশে ফেব্র“য়ারির কথা ঘ একুশে জানুয়ারির কথা
৬২ কোন রং চোখে ভালো লাগে না?
ক যে রং পাকা নয় খ যে রং গাঢ় নয়
গ যে রং হালকা নয় ঝ যে রং সন্ত্রাস আনে
৬৩ “এখন সে রঙে ছেয়ে গেছে পথঘাট, সারাদেশ”Ñএখানে কোন রঙের কথা বলা হয়েছে?
ক কৃষ্ণচূড়ার রং ছ সন্ত্রাসের রং
গ ভালোবাসার রং ঘ সবকয়টি
৬৪ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় কবি কোন আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন?
ক ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন
খ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ
গ তেভাগা আন্দোলন
ঝ ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান
গ শব্দার্থ ও টীকা : (বোর্ড বই থেকে)
৬৫ ‘কমল’ শব্দের অর্থ কী?
ক গোলাপ ছ পদ্ম গ কৃষ্ণচূড়া ঘ কলমিলতা
৬৬ ‘চোখ’ শব্দের সমার্থক শব্দ নয় কোনটি?
ক নেত্র খ আঁখি গ নয়ন ঝ কাজল
৬৭ ‘যার বিনাশ নেই’ তাকে এককথায় কী বলে?
ক বিনাশী ছ অবিনাশী গ বিনাশযোগ্য ঘ ধ্বংস
৬৮ নিচের কোনটি নক্ষত্রের সমার্থক শব্দ?
চ তারা খ চাঁদ গ গ্রহ ঘ ধূমকেতু
৬৯ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতাটি কবির কোন কাব্য থেকে নেওয়া হয়েছে?
চ নিজ বাসভূমে খ রৌদ্র করোটিতে
গ বিধ্বস্ত নীলিমা ঘ নিরালোকে দিব্যরথ
৭০ ১৯৬৯-এর গণআন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত কবিতা কোনটি?
ক শহিদ স্মরণে খ মাগো ওরা বলে
জ ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯ ঘ স্বাধীনতা তুমি
৭১ ‘হরিৎ’ শব্দের অর্থ কী?
ক লাল বর্ণ খ নীল বর্ণ জ সবুজ বর্ণ ঘ হলুদ বর্ণ
৭২ নিচের কোনটি ভিন্নার্থক শব্দ?
ক বুদ্বুদ খ অলবিম্ব
গ পানির ভুড়ভুড়ি ঝ জল
ঘ পাঠ পরিচিতি : (বোর্ড বই থেকে)
৭৩ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতাটির মোট কয়টি চরণ?
ক ৯৬টি খ ৪৫টি জ ২৮টি ঘ ৩০টি
৭৪ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতাটির রচয়িতা কে?
চ শামসুর রাহমান খ আহসান হাবীব
গ সৈয়দ আলী আহসান ঘ নির্মলেন্দু গুণ
৭৫ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতাটি শামসুর রাহমানের কোন কাব্যগ্রন্থ থেকে চয়ন করা হয়েছে?
চ নিজ বাসভূমে খ বিধ্বস্ত নীলিমা
গ রৌদ্র করোটিতে ঘ বন্দী শিবির থেকে
৭৬ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতাটি কোন পটভূমিতে রচিত হয়েছে?
ক ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন খ ১৯৫৬ -এর নির্বাচন
গ ১৯৬৬-এর ছয় দফা ঝ ১৯৬৯-এর গণজাগরণ
৭৭ “মানবিক বাগান, কমল বন হচ্ছে তছনছ”-চরণটি দ্বারা কবি কী বুঝিয়েছেন?
ক মানুষের তৈরি বাগানের কারণে কমল বন নষ্ট হচ্ছে
ছ মূল্যবোধের অবক্ষয়
গ বাগান ধ্বংস হওয়া
ঘ বন ধ্বংস করে নগর সৃষ্টি করা
৭৮ “ফোটে ফুল বাস্তবের বিশাল চত্বরে”
Ñচরণটির পরের চরণ কোনটি?
চ হৃদয়ের হরিৎ উপত্যকায় সেই ফুল আমাদেরই প্রাণ
খ দেখলাম রাজপথে, যে দেখলাম আমরা সবাই
গ সালামের মুখ আজ তরুণ শ্যামল পূূর্ব বাংলা
ঘ বুঝি তাই উনিশশো ঊনসত্তরেও
৭৯ শিহরিত ক্ষণে ক্ষণে আনন্দের রৌদ্রে আর-
ক আনন্দের ছায়া খ কষ্টের ছায়ায়
জ দুঃখের ছায়ায় ঘ ভালোবাসার মায়ায়
৮০ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতাটির শেষ চরণ কোনটি?
ক এখানে এসেছি কেন? এখানে কী কাজ আমাদের?
খ বাহিরকে আমরা করেছি ঘর, ঘরকে বাহির
জ শিহরিত ক্ষণে ক্ষণে আনন্দের রৌদ্র আর দুঃখের ছায়ায়
ঘ আবার ফুটেছে দ্যাখো কৃষ্ণচূড়া থরে থরে শহরের পথে
ঙ বহুপদী সমাপ্তিসূচক প্রশ্নোত্তর :
৮১ বীরের রক্তে দুখিনী মাতার অশ্র“জলে ফুল ফোটে 
র. হৃদয়ের গতি উপত্যকায়
রর. হৃদয়ের হরিউপত্যকায়
ররর. বাস্তবের বিশাল চত্ত¡রে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর
জ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮২ আসাদ ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে শহিদ হয়। এ
‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় উলি­খিত ভাষা শহিদ হলেন
র. সালাম রর. রফিক ররর. বরকত
নিচের কোনটি ঠিক?
ক র ও রর ছ র ও রর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৩ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় নামের আড়ালে লুকিয়ে আছেÑ
র. বায়ান্নর ২১শে ফেব্র“য়ারির আন্দোলন
রর. একাত্তরের স্বাধীনতা আন্দোলন
ররর. ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের জোয়ার
নিচের কোনটি ঠিক?
ক র ও রর ছ র ও রর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৪ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় শামসুর রাহমানের অভিব্যক্তি-
র. একুশ আমাদের চেতনার নাম
রর. একুশের চেতনায় ঊনসত্তর আসে
ররর. একুশ ও ঊনসত্তর বাঙালির ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের ফল
নিচের কোনটি ঠিক?
ক র ও রর খ র ও রর গ রর ও ররর ঝ র, রর ও ররর
৮৫ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় লক্ষণীয় বিষয়-
র. আন্দোলন সংগ্রামে বাঙালির চেতনাবোধ
রর. জীবনের তাৎপর্যের দার্শনিক উন্মোচন
ররর. আন্দোলন সংগ্রাম বাঙালির ঐতিহ্য
নিচের কোনটি ঠিক?
চ র ও রর খ র ও রর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৮৬ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতার আড়ালে প্রকাশ পায়-
র. ভাষা শহিদদের মহান আত্মত্যাগ
রর. আন্দোলনের সাধারণ মানুষের অবদান
ররর. বাঙালির স্বদেশপ্রেম
নিচের কোনটি ঠিক?
ক র ও রর খ র ও রর গ রর ও ররর ঝ র, রর ও ররর
৮৭ ঘাতকের আস্তানায় ভূলুণ্ঠিতদের মধ্যে কেউ কেউ
র. মৃত রর. অর্ধ-মৃত ররর. বিপ্লবী
নিচের কোনটি ঠিক?
ক র ও রর খ র ও রর গ রর ও ররর ঝ র, রর ও ররর
৮৮ “চতুর্দিকে মানবিক বাগান, কমলবন হচ্ছে তছনছ।”-পঙ্ক্তিটি দ্বারা বোঝানো হয়েছে
র. শাসকদের নির্মম অত্যাচার
রর. স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব
ররর. অমানবিক নিষ্ঠুরতা
নিচের কোনটি ঠিক?
ক র ও রর খ র ও রর গ রর ও ররর ঝ র, রর ও ররর
৮৯ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় ১৯৫২ সালের যেসব ভাষা শহিদদের নাম উলে­খ রয়েছে তারা হলো
র. সালাম রর রফিক ররর বরকত
নিচের কোনটি ঠিক?
ক র ও রর ছ র ও রর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৯০ থরে থরে ফোটা কৃষ্ণচূড়া ফুল দেখে কবির মনে হয়েছে
র. এরা যেন শহিদের ঝলকিত রক্তের বুদ্বুদ
রর. এরা শহিদের স্মৃতিগন্ধে ভরা
ররর. এরা আমাদের চেতনার রং
নিচের কোনটি ঠিক?
ক র ও রর খ র ও রর গ রর ও ররর ঝ র, রর ও ররর
৯১ ‘একুশের কৃষ্ণচূড়া’র বিপরীত রং সম্পর্কে বলা যায়’Ñ
র. এ রং কবির ভালো লাগে না
রর. এ রং আমাদের মনে সন্ত্রাস আনে
ররর. এ রং আমাদের সংগ্রামী করে
নিচের কোনটি ঠিক?
চ র ও রর খ র ও রর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৯২ বীরের রক্তে দুখিনী মাতার অশ্র“জলে ফুল ফোটে
র. হৃদয়ের গীত উপত্যকায়
রর. হৃদয়ের হরিৎ উপত্যকায়
ররর. বাস্তবের বিশাল চত্বরে
নিচের কোনটি ঠিক?
ক র ও রর খ র ও রর জ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৯৩ ‘মানবিক বাগান’ দ্বারা বোঝানো হয়েছে
র. মনুষ্যত্ব রর. মানবীয় জগৎ
ররর. ন্যায় ও মঙ্গলের জগৎ
নিচের কোনটি ঠিক?
ক র ও রর খ র ও রর গ রর ও ররর ঝ র, রর ও ররর
৯৪ ১৯৬৯ সালের আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন-
র. মতিউর রর. আসাদুজ্জামান
ররর. ড. শামসুজ্জোহা
নিচের কোনটি ঠিক?
ক র ও রর খ র ও রর গ রর ও ররর ঝ র, রর ও ররর
৯৫ কবির উলে­খযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হলোÑ
র. রৌদ্র করোটিতে রর. সিন্দু হিন্দোল
ররর. বন্দী শিবির থেকে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ র ও রর
জ র ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৯৬ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় স্মৃতিচারণ করা হয়েছেÑ
র. ভাষা শহিদদের
রর. মুক্তিযোদ্ধাদের
ররর. শহিদ বুদ্ধিজীবীদের
নিচের কোনটি সঠিক?
চ র খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৯৭ শামসুর রাহমানের কবিতার লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হলোÑ
র. নাগরিক জীবনের চিত্র
রর. একাকিত্ব
ররর. সামাজিক বন্ধন
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর
গ র ও ররর ঝ র, রর ও ররর
৯৮ চেতনার রঙের বিপরীত রং হলোÑ
র. যে রং সংগ্রাম আনে
রর. যে রং লাগে না ভালো
ররর. যে রং সন্ত্রাস আনে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর
জ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
৯৯ মানবিক বাগান বলতে বোঝায়Ñ
র. মানবীয় জগৎ
রর. মনুষ্যত্ব
ররর. ন্যায় ও মঙ্গলের জগৎ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ র ও রর
গ র ও ররর ঝ র, রর ও ররর
১০০ ১৯৬৯-এর আন্দোলনে শহিদ হনÑ
র. বরকত
রর. আসাদুজ্জামান
ররর. ড. শামসুজ্জোহা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর খ র ও ররর
জ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
১০১ ঘাতকের আস্তানায় সাধারণ মানুষের অবস্থা ছিলÑ
র. কেউ মরা
রর. আধমরা কেউ
ররর. কেউ বা ভীষণ জেদি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ র ও ররর
গ রর ও ররর ঝ র, রর ও ররর
১০২ কবি শাসসুর রাহমান যেসব পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন
র. আদমজী পুরস্কার
রর. পুলিৎজার পুরস্কার
ররর. স্বাধীনতা পুরস্কার
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র খ রর
গ র ও ররর ঝ র, রর ও ররর
চ অভিন্ন তথ্যভিত্তিক প্রশ্নোত্তর :
 উদ্দীপকটি পড় এবং ১০৩-১০৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
বিষ্ণুপদ নিমসার হাইস্কুলে পড়ে। স্কুলে আজ হোলি খেলায় সবাই মেতেছে। লাল রং তার মনে স্বাধীনতা যুদ্ধের কথা মনে পড়ে গেল।
১০৩ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতার কৃষ্ণচূড়ার সাথে কোন অর্থে উদ্দীপকের মিল রয়েছে?
চ হোলি খেলার লাল রং খ হোলি খেলার রং
গ স্বাধীনতার রং ঘ রক্তবর্ণ স্বাধীনতা
১০৪ বিষ্ণুপদের মনে স্বাধীনতার চেতনা যেমন, তেমনি ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায়Ñ
র. একুশের চেতনা রর. স্বাধীনতার রং
ররর. রক্তবর্ণ স্বাধীনতা
নিচের কোনটি ঠিক?
ক র ও রর ছ র ও রর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
 উদ্দীপকটি পড় এবং ১০৫-১০৬ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
সুমন্তদের স্কুলে একটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে। সমস্ত শরীরে বর্ণমালা খোদাই করা।
১০৫ উদ্দীপকের ভাস্কর্যটি ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় বর্ণিত কোন ব্যক্তিকে নির্দেশ করে?
ক বরকত ছ সালাম গ রফিক ঘ শফিউর
১০৬ কবিতায় বর্ণিত ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে বলা যায়
র. তিনি একজন ভাষা শহিদ
রর. তার চোখে আজ আলোকিত ঢাকা
ররর. তিনি আবার রাজপথে নেমে এসেছেন
নিচের কোনটি ঠিক
ক র ও রর খ র ও রর গ রর. ও ররর ঝ র, রর ও ররর
 উদ্দীপকটি পড় এবং ১০৭-১০৮ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
কবিতা ভাষা শহিদ সালামের পৈতৃক বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিল।
১০৭ উদ্দীপকে বর্ণিত ভাষা শহিদ ছাড়া ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় আর কয়জন ভাষা শহিদের উলে­খ আছে?
চ একজন খ দুইজন গ তিনজন ঘ চারজন
১০৮ ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতার আলোকে ওই ভাষা শহিদ সম্পর্কে বলা যায়
র. তিনি ভাষা শহিদ রফিক রর. তিনি ভাষা শহিদ বরকত
ররর. তিনি ঘাতকের থাবার সম্মুখে বুক পাতেন
নিচের কোনটি ঠিক?
ক র ও রর খ র ও রর জ রর. ও ররর ঘ র, রর ও ররর
 উদ্দীপকটি পড় এবং ১০৯-১১০ নং প্রশ্নের উত্তর দাও।
শিমুল স¤প্রতি ‘নিজ বাসভূমে’ কাব্যগ্রন্থের একটি কবিতা
পাঠ করেছে। কবিতাটিতে ১৯৫২ ও ১৯৬৯ সালের আন্দোলনের কথা ব্যক্ত হয়েছে।
১০৯ উদ্দীপকে বর্ণিত কবিতাটির রচয়িতা কে?
ক আহসান হাবীব খ দিলওয়ার
গ শহীদ কাদরী ঝ শামসুর রাহমান
১১০ উক্ত কবিতাটি-
র. শ্রেণিচেতনার কবিতা রর. দেশপ্রেমের কবিতা
ররর. গণজাগরণের কবিতা
নিচের কোনটি ঠিক?
ক র ও রর খ র ও রর জ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
 উদ্দীপকটি পড় এবং ১১১-১১২ নং প্রশ্নের উত্তর দাও :
বাঙালি চেতনার বীজ অঙ্কুরিত হয়েছিল ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের পরবর্তী সকল আন্দোলন এর থেকে প্রেরণা পেয়েছে।
১১১ উদ্দীপকে বর্ণিত ভাষা আন্দোলন ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় বর্ণিত কোন আন্দোলনকে প্রেরণা জুগিয়েছিল
ক ছাত্র আন্দোলন খ ছয় দফা আন্দোলন
গ ফকির আন্দোলন ঝ গণঅভ্যুত্থান
১১২ কবিতায় বর্ণিত ওই আন্দোলন সম্পর্কে বলা যায়
র. এ আন্দোলন হয়েছিল পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে
রর. এ আন্দোলনে শহিদ হন আসাদুজ্জামান, মতিউর, ডা. শামসুজ্জোহা
ররর. এ আন্দোলনে শহিদ হন আসাদুজ্জামান, সালাম, শফিউর
নিচের কোনটি ঠিক?
চ র ও রর খ র ও রর গ রর ও ররর ঘ র, রর ও ররর
 উদ্দীপকটি পড় এবং ১১৩-১১৪ নং প্রশ্নের উত্তর দাও:
নিশাত গতকাল উইকিপিডিয়ায় একজন কবির জীবনী পড়ল। ওই কবির পৈতৃক নিবাস পাড়াতলী গ্রাম। তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থের নাম ‘রৌদ্র করোটিতে’।
১১৩ উদ্দীপকটি নিচের কোন কবিকে নির্দেশ করে?
চ শামসুর রাহমান খ শহিদ কাদরী
গ আল মাহমুদ ঘ দিলওয়ার
১১৪ ওই কবি সম্পর্কে বলা যায়
র. তিনি ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন
রর. তিনি ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন
ররর. তাঁর উলে­খযোগ্য কাব্য ‘বন্দী শিবির থেকে’
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ও রর ছ র ও রর গ রর. ও ররর ঘ র, রর ও ররর
* নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ১১৫-১১৭ নং প্রশ্নের উত্তর দাও।
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো
একুশে ফেব্র“য়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি।
১১৫ উদ্দীপক এবং ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় প্রকাশিত হয়েছেÑ
র. শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা
রর. স্বদেশ চেতনা
ররর. প্রকৃতি চেতনা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ছ র ও ররর
গ ররর ঘ র, রর ও ররর
১১৬ উদ্দীপকে ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতার কোন বিষয়টি ফুটে উঠেছে?
চ ভাষা সংগ্রামের খ স্বাধীনতা সংগ্রামের
গ প্রেক্ষাপটগত ঘ বিষয়বস্তুগত
১১৭ কোনটি ‘ ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতা থেকে নেওয়া উপমা?
ক বাহিরকে আমরা করেছি ঘর, ঘরকে বাহির
ছ আমি আর আমার মতোই বহু লোক
গ দেখলাম সালামের হাত থেকে নক্ষত্রের মতো ঝরে অবিরত অবিনাশী বর্ণমালা
ঘ রাবীন্দ্রিক ধ্যান জাগে নতুন বিন্যাসে
* নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ১১৮-১১৯ নং প্রশ্নের উত্তর দাও।
নানামুখী হাজার লোকের
একত্র অস্তিত্ব
একুশে ফেব্র“য়ারি।
১১৮ উদ্দীপকের যে শব্দটি ‘ফেব্র“য়ারি ৬৯’ কবিতায় প্রয়োগ করা হয়েছেÑ
র. অস্তিত্ব
রর. একুশে ফেব্র“য়ারি
ররর. হাজার লোক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক র ছ রর গ র ও রর ঘ র ও ররর
১১৯ উদ্দীপক এবং ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় বাঙালির কোন চেতনাকে প্রকাশ করা হয়েছে?
চ সংগ্রামী খ মানবিক
গ প্রেমিক ঘ সহজ সরল


 রিভিশন অংশ (জবারংরড়হ)
আলোচ্য অংশে জ্ঞানভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করার জন্য বাড়ির কাজ, গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকণিকা, জ্ঞানমূলক এবং অনুধাবনমূলক আরও কিছু প্রশ্নোত্তর উলে­খ করা হয়েছে। এ অংশটি অনুশীলনের মাধ্যমে পরীক্ষার চূড়ান্ত প্রস্তুতি ও জবারংরড়হ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।
 বাড়ির কাজ
 ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতা অবলম্বনে আমাদের জাতীয় চেতনার জাগরণে ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্যÑবিশ্লেষণ কর।
 ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় সালাম, বরকত চরিত্র মূলত একুশের চেতনাকে ধারণ করেÑ কীভাবে তা ব্যাখ্যা কর।
 ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছে কীভাবে? ব্যাখ্যা কর।
 প্রমাণ কর যে, ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতাটি ভাষা আন্দোলনের চেতনা-সমৃদ্ধ হলেও এটি মূলত আমাদের চূড়ান্ত মুক্তিসংগ্রামেরই চেতনায় উজ্জ্বল।
 গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকণিকা
 ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতায় কবি শহরের কৃষ্ণচূড়ার রংকে একুশের চেতনার রং হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।
 শহিদের সাহসিকতার স্মৃতিতে একুশ আমাদের জীবনের প্রেরণা।
 অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন মারা যাচ্ছে, আহত হচ্ছে যত্রতত্র। এ নিয়ে অনেকের মনে জেগে উঠছে বিপ্লব।
 ভাষা আন্দোলনে সালাম, বরকতরা বুকের রক্ত দিয়েছিল বাংলা ভাষাকে ভালোবেসে। সে ভাষাই আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ। আমাদের আনন্দ বেদনার সাথী।
 কৃষ্ণচূড়া রং অনন্য সুন্দর। প্রতিবছর কৃষ্ণচূড়ায় ঢাকা রঙে রঙে ছেয়ে যায়। ভাষা আন্দোলনে শহিদদের যে রক্ত ঝরেছিল, সে রক্তের রংও কৃষ্ণচূড়ার মতো, তাই কৃষ্ণচূড়াকে কবি চেতনার রং বলেছেন।
 ১৯৬৯ সালে বাংলার বুকে জাগে ব্যাপক গণঅভ্যুত্থান, যা মূলত ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রেরণা থেকে সৃষ্টি হয়েছে।
 শামসুর রাহমানে ‘নিজ বাসভূমে’ কাব্যগ্রন্থ থেকে ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতাটি সংকলন করা হয়েছে।
 ১৯৬৯ সালে এদেশের বুকে যে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হয়েছে, কবিতাটি সে প্রেক্ষাপটেই রচিত।

টেক্সট বুক অ্যানালাইসিস

ক জ্ঞানমূলক প্রশ্নোত্তর
১ রাজপথে শূন্যে ফ্ল্যাগ তোলে কে?
উত্তর : রাজপথে শূন্যে ফ্ল্যাগ তোলে সালাম।
২ মরা, আধমরা, ভীষণ জেদিরা কী করে?
উত্তর : মরা, আধমরা, ভীষণ জেদীরা ফেটে পড়ে?
৩ আমাদের চেতনার রং কী?
উত্তর : একুশের কৃষ্ণচূড়া আমাদের চেতনার রং।
৪ ঘাতকের আস্তানায় ভূলুণ্ঠিত কারা?
উত্তর : কবি ও কবির মতোই বহুলোক ঘাতকের আস্তানায় ভূলুণ্ঠিত।
৫ কৃষ্ণচূড়া থরে থরে কোথায় ফুটেছে?
উত্তর : কৃষ্ণচূড়া থরে থরে শহরের পথে ফুটেছে।
৬ পথঘাট, সারাদেশ ছাড়াও সে রং আর কোথায় ছেয়ে গেছে?
উত্তর : পথ-ঘাট, সারা, দেশ ছাড়াও সে রঙে ঘাতকের অশুভ আস্তানাও ছেয়ে গেছে।
৭ চতুর্দিকে কী হচ্ছে?
উত্তর : চতুর্দিকে মানবিক বাগান আর কমলবন তছনছ হচ্ছে।
৮ গাঢ় উচ্চারণে কথা বলে কে?
উত্তর : গাঢ় উচ্চারণে কথা বলে বরকত।
৯ কোন ফুল শহরে নিবিড় হয়ে ফুটেছে?
উত্তর : কৃষ্ণচূড়া ফুল শহরে নিবিড় হয়ে ফুটেছে।
১০ কোন ফুল স্মৃতিগঞ্জে ভরপুর?
উত্তর : কৃষ্ণচূড়া ফুল স্মৃতিগঞ্জে ভরপুর।
১১ আমাদের চেতনার রং কীসের রঙের মতো?
উত্তর : আমাদের চেতনার রং কৃষ্ণচূড়ার রঙের মতো।
১২ পথঘাট কোন রঙে ছেয়ে গেছে?
উত্তর : যে রং সন্ত্রাস আনে, সে রঙে পথঘাট ছেয়ে গেছে।
১৩ কার অশ্র“জলে ফুল ফোটে?
উত্তর : মায়ের অশ্র“জলে ফুল ফোটে।
১৪ ‘হরিৎ উপত্যকা’ অর্থ কী?
উত্তর : ‘হরিৎ উপত্যকা’ অর্থ সবুজ উপত্যকা।
১৫ কোথায় দিনরাত ভূলুণ্ঠিত?
উত্তর : ঘাতকের আস্তানায় দিনরাত ভূলণ্ঠিত।
খ অনুধাবনমূলক প্রশ্নোত্তর
১ লোকজন বিপ্লবে ফেটে পড়েছে কেন?
উত্তর : পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের অন্যায় শাসনের বিরুদ্ধে লোকজন বিপ্লবে ফেটে পড়েছে।
পাকিস্তানি শাসকরা অন্যায়ভাবে শিক্ষা, চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বাঙালিদের বঞ্চিত করেছে। এছাড়াও নির্বিচারে হত্যা ও অত্যাচার করতে থাকে পাকিস্তানিরা। তাই প্রতিবাদ ছাড়া বাঙালির বিকল্প আর কোনো পথ খোলা ছিল না। নিজেদের অধিকার আদায় করার জন্যই বাঙালি বিপ্লবে ফেটে পড়েছিল।
২ এখনো বীরের রক্তে দুখিনী মাতার অশ্র“জলে ফোটে ফুল বাস্তবের বিশাল চত্বরে হৃদয়ের হরিৎ উপত্যকায়-ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বাঙালির বেঁচে থাকার ও দাবি-দাওয়ার স্বাভাবিক পরিবেশের অভাবের কথাই ব্যক্ত করা হয়েছে এখানে।
পাকিস্তানিরা বাঙালিদের সর্বদা অত্যাচার, শোষণ, নির্যাতন করেছে। তাদের কাছ থেকে যে-কোনো দাবি-দাওয়া আদায় করতে গিয়ে নির্বিচারে মরতে হয়েছে বাঙালিদের। ভাষার দাবিতে যেমন প্রাণ দিতে হয়েছে ১৯৫২ সালে বাঙালিদেরকে, ১৯৬৯ সালেও ছয় দফা দাবি আদায় করতে গিয়ে ঠিক তেমনই হয়েছে। এখনো বীরের রক্তে দুখিনী মাতার অশ্র“জলে ফোটে ফুল বাস্তবতার বিশাল চত্বরে হৃদয়ের হরিৎ উপত্যকায় কথাটি দ্বারা পাকিস্তানিদের শাসনামলে বাঙালির বৈরী সময়ের কথাই বোঝানো হয়েছে।
৩ ‘আবার ফুটেছে দ্যাখো কৃষ্ণচূড়া থরে থরে শহরের পথে কেমন নিবিড় হয়ে।’ কোন বিষয়টিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে?
উত্তর : ‘আবার ফুটেছে দ্যাখো কৃষ্ণচূড়া থরে থরে শহরের পথে নিবিড় হয়ে কথাটি দ্বারা ভাষা আন্দোলনের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
১৯৫২ সালের ফাগুন মাসে মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে ভাষা আন্দোলন হয়েছিল এদেশে। ভাষা আন্দোলনের জন্য অনেক তাজা প্রাণ ঝরে গিয়েছিল। ফাগুন মাসে প্রস্ফুটিত কৃষ্ণচূড়া ফুল যেন শহিদদের সেই রক্ত ধারণ করে লাল হয়েছে। তাই পথের পাশে থরে থরে লাল কৃষ্ণচূড়া দ্বারা বায়ান্নর ভাষা শহিদদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
৪ কৃষ্ণচূড়াকে স্মৃতিগন্ধে ভরপুর বলা হয়েছে কেন?
উত্তর : কৃষ্ণচূড়াকে স্মৃতিগন্ধে ভরপুর বলা হয়েছে, কারণ কৃষ্ণচূড়া ভাষা আন্দোলনে নিহত শহিদদের রক্তদানের স্মৃতিকে মনে করিয়ে দেয়।
শহরের পথে থরে থরে কৃষ্ণচূড়া ফুটে থাকে। কিন্তু এই কৃষ্ণচূড়া কবির কাছে অন্য ফুলের মতো সাধারণ কোনো ফুল নয়। কৃষ্ণচূড়ার গাঢ় লাল রং যেন ভাষা আন্দোলনের জীবন উৎসর্গকারী শহিদদের রক্তে রঞ্জিত। তাই কৃষ্ণচূড়াকে স্মৃতিগন্ধে ভরপুর বলা হয়েছে।
৫ “সারাদেশ ঘাতকের অশুভ আস্তানা”-ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : “সারাদেশ ঘাতকের অশুভ আস্তানা”-বলতে ভাষা আন্দোলনের চেতনাবিরোধীদের অপতৎপরতার কথা বোঝানো হয়েছে।
ভাষা আন্দোলনের চেতনা বাঙালিকে সংগ্রামী ও প্রতিবাদী হতে শেখায়। ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও সন্ত্রাসমুক্ত একটি দেশ গঠনের প্রত্যয়েও উজ্জীবিত করে তোলে। কিন্তু কবি লক্ষ করেছেন, কিছু মানুষের অশুভ তৎপরতায় ভাষা আন্দোলনের সেই অনন্য চেতনা ফিকে হয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাসের অনাকাক্সিক্ষত রঙে ছেয়ে গেছে সমগ্র দেশ। ফলে সারাদেশ ঘাতকের অশুভ আস্তানায় পরিণত হয়েছে।
৬ “চতুর্দিকে মানবিক বাগান, কমলবন হচ্ছে তছনছ” -ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : চতুর্দিকে মানবিক বাগান, কমলবন হচ্ছে তছনছ’-বলতে ঘাতকের অশুভ তৎপরতায় মানবিকতা ও সৌন্দর্যের বিনাশকে বোঝানো হয়েছে।
ভাষা আন্দোলনের চেতনাবিরোধী ঘাতক দল সারাদেশে অন্ধকারের রাজত্ব কায়েম করতে চায়। এদের দৌরাত্ম্য দেশের মানুষ কেউ মরা কেউ বা আধমরা অবস্থায় আছে। ফলে মানবিকতারও মৃত্যু ঘটে যাচ্ছে। মানুষের সুন্দর ও মহৎ চিন্তা-চেতনার বিকাশ দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এই বিষয়টিকেই কবি মানবিক বাগান ও কমলবন তছনছ হওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন।
৭ “সেই ফুল আমাদেরই প্রাণ”-ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : “সেই ফুল আমাদেরই প্রাণ”-এখানে ‘সেই ফুল’ বলতে মুক্তি ও স্বাধিকার চেতনাকে নির্দেশ করা হয়েছে।
১৯৬৯-এর ফেব্র“য়ারি কবি দেশে কিছু লোকের অপতৎপরতা লক্ষ করেছেন। চারদিকে সন্ত্রাসের রং ছড়িয়ে পড়তে দেখেছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি ভাষা আন্দোলনে আত্মদানকারী বীর শহিদ সালাম ও বরকতকে আবারও রাজপথে নেমে আসতে দেখেন।
অর্থাৎ ভাষা-আন্দোলনের অবিনশ্বর সংগ্রামী চেতনায় এখনো মৃত্যু ঘটেনি। ফলে সেই বাস্তবতায়ও মুক্তি ও স্বাধিকার চেতনায় বাঙালি আবার উজ্জীবিত হয়। আর এই চেতনাই বাঙালির প্রাণ।
৮ উনিশশো ঊনসত্তরেও সালাম আবার রাজপথে নামে কেন?
উত্তর : উনিশশো ঊনসত্তরেও সালাম আবার রাজপথে নামে। কারণ ভাষা আন্দোলনের চেতনা-বিরোধীরা দেশে তৎপর হয়ে উঠেছে।
ভাষা আন্দোলন পরবর্তী সময়ে দেশে যে সুস্থ, সুন্দর ও মানবিক পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। বরং সারাদেশ ঘাতকের অশুভ আস্তানা হয়ে উঠেছিল। ফলে উনিশশো ঊনসত্তরের প্রেক্ষাপটেও সালাম আবার রাজপথে নেমে আসে। এখানে সালাম ভাষা-আন্দোলনের চেতনায় উজ্জীবিত জনতার প্রতিনিধিত্বশীল চরিত্র হয়ে ওঠে।
 পরীক্ষা-প্রস্তুতি যাচাই অংশ (অংংবংসবহঃ)
 সৃজনশীল প্রশ্নব্যাংক
প্রশ্নÑ১\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
একুশ মানে লাল-সবুজ পতাকা।
একুশ মানে স্বাধীনতা।
একুশ মানে বিপ্লব।
একুশ মানে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
একুশ মানে ‘বাঙালি হার মানতে জানে না’ এই স্লোগান।
একুশ মানে ‘মাথা নত না করা’।
ক. কৃষ্ণচূড়া থরে থরে কোথায় ফুটেছে?
খ. “জীবন মানেই...অন্যায়ের প্রতিবাদে শূন্যে মুঠি তোলা।” Ñউলি­খিত চরণ দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার কোন দিকটি সাদৃশ্য রয়েছে? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. “মূলত একুশের চেতনাকে ধারণ করেই ১৯৬৯-এর গণঅভ্যূত্থানে কৃষক-শ্রমিকসহ দেশের সর্বস্তরের মানুষ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।” মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. শহরের পথে ফুটেছে।
খ. জীবনের অর্থ হলো অন্যায়, অবিচার আর অসত্যের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত প্রতিবাদ করা।
মানবজীবনে প্রতিটি পদে পদে অন্যায়, অত্যাচার আর শোষণ চোখে পড়ে। সভ্যতার আদিকাল থেকে এসব বিষয় মানুষের জীবনকে বিষিয়ে তুলেছে। কিন্তু এসব বিষয় মানুষ কখনই বিনা বিচারে মাথা পেতে নেয় নি; সবসময়ই এসবের বিরুদ্ধে সোচ্চার থেকেছে। তবে যারা এসব অন্যায়কে বিনা বিচারে মাথা পেতে নিয়েছে, তাদের জীবন কোনো জীবনই নয়। এজন্যই বলা হয়েছে, প্রকৃত জীবন মানে সর্বদা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা।
 টিপস্
গ. উদ্দীপকটি মনোযোগসহকারে পড়ে প্রথমে এর বিশেষ দিকগুলো চি‎িহ্নত কর। তারপর ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার সাথে মিল খুঁজে বের করে উভয়ের মধ্যকার সাদৃশ্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।
ঘ. প্রথমে উদ্দীপকটি ভালোভাবে পড়ে একুশের চেতনার বিষয়টি অনুধাবন কর। এরপর ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে কীভাবে একুশের চেতনা ঢুকেছে সেই বিষয়টি উলে­খ কর। তারপর মূল্যায়ন অংশে কীভাবে একুশের চেতনা সব শ্রেণির মানুষের প্রতিবাদের ভাষা হয়ে প্রবল বিস্ফোরণ ঘটেছে সেটি উপস্থাপন করে সহজবোধ্য ভাষায় বিষয়টি তুলে ধর।
প্রশ্নÑ২\ উদ্দীপকটি পড় এবং নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও:
১৯৪৭-এর দেশভাগের পরই পাকিস্তানিদের আসল রূপ ধরা পড়ে। তারা আমাদের সংস্কৃতি তথা জাতিসত্তাকে বিনষ্ট করার জন্য আমাদের মাতৃভাষার ওপর কুঠারাঘাত হানে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠে ছাত্র-জনতা। সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্র“য়ারি ১৪৪ ধারা ভাঙার জন্য জমায়েত হয়। তাদের এই ভিড় জমানোর কারণ ক্ষমতা দখল বা কোনো উচ্চাভিলাষ নয়। কেবল ভাষার জন্য নিঃস্বার্থভাবে জমায়েত হয়ে তাদের অনেকেই সেদিন প্রাণ দিয়েছিল।
ক. নাক্ষত্রিক স্পন্দনে সর্বদা কী ভাসে?
খ. পলাশতলীর কৃষক কেন গণআন্দোলনে ভিড় জমিয়েছিল?
গ. “উদ্দীপকে ও ‘ফেব্র“য়ারি ১৯৬৯’ কবিতার প্রেক্ষাপট এক না হলেও বিষয় দুটিতে চেতনাগত কোনো ভিন্নতা নেই।” - মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর
ক. নাক্ষত্রিক স্পন্দনে সর্বদা স্বপ্নহাঁস ভাসে।
খ. অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রবল আন্দোলন গড়ে তুলতে পলাশতলীর কৃষক আন্দোলনে ভিড় জমিয়েছিল।
১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর থেকে পাকিস্তানি শোষকরা বিভিন্নভাবে এদেশের সকল শ্রেণির মানুষের ওপর শোষণ করতে শুরু করে। স্বৈরাচার আইয়ূবের শাসনামলে তা চরম আকার ধারণ করে। এ সময় তার বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদে মুখর ছিল, তাদেরকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে প্রেরণ করে আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এই প্রতিবাদী মানুষদের মুক্তি এবং শোষণের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আন্দোলন গড়ে তুলতেই পলাশতলীর কৃষক গণআন্দোলনে ভিড় জমিয়েছিল।
 টিপস্
গ. প্রথমে উদ্দীপকে ভাষা আন্দোলনে মানুষদের জমায়েত হওয়ার বিষয়টি লক্ষ কর। এই বিষয়টির সঙ্গে কবিতার কোন বিষয়টি সাদৃশ্যপূর্ণ তা খুঁজে বের কর। এবার সাদৃশ্যপূর্ণ বিষয় দু'টি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. প্রথমেই উদ্দীপক ও ‘ফেব্র“য়ারি-১৯৬৯’ কবিতার প্রেক্ষাপটের ভিন্নতা বিষয়টি লক্ষ কর এবং এগুলোর মধ্যকার চেতনাগত মিলটি খুঁজে বের কর। তারপর মূল্যায়ন অংশে চেতনাগত সাদৃশ্যের বিষয়টি ব্যাখ্যা করে এগুলোর মধ্যে যে প্রকৃত অর্থেই কোনো ভিন্নতা নেই সেই বিষয়টি প্রতিপন্ন কর।

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]