কুমিল্লা বোর্ড-২০১৯
2. প্রশ্নঃ নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও
চিপস সবার খুব প্রিয়। চিপস প্যাকেটজাত করণের সময় একটি বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। চিপস কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রবেশের পথে আঙ্গুলের ছাপ দেওয়ার জন্য একটি ডিভাইস স্থাপন করা হয়েছে।
ক, রোবটিক্স কী?
খ. প্রযুক্তি ব্যবহার করে মটর ড্রাইভিং শেখা সম্ভব- কথাটি ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে কারখানায় ব্যবহৃত ডিভাইসটির প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. চিপসের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্রযুক্তির সুবিধা ও অসুবিধা উল্লেখ সহ - তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।
২নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর।
ক. রোবটিক্স কী?
রোবটিক্স হল প্রকৌশল বিজ্ঞানের একটি শাখা, যেখানে রোবট সম্পর্কিত ধারণা, নকশা, উৎপাদন, কার্যক্রম ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে গবেষণা করা হয়।
খ. প্রযুক্তি ব্যবহার করে মটর ড্রাইভিং শেখা সম্ভব- কথাটি ব্যাখ্যা কর। উদ্দীপকে প্রযুক্তি বলতে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কী বোঝানো হয়েছে।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তিতে কম্পিউটার ও বিভিন্ন যন্ত্রপাতির সাহায্যে হুবহু গাড়ি চালানোর সময় চারপাশে থাকা শহরের পরিবেশ বা ব্যস্ত সড়কের একটি কৃত্রিম দৃশ্য তৈরি করা হয়। রাস্তার ড্রাইভিং শেখার ক্ষেত্রে যেমন- নানা রকম দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে, এক্ষেত্রে তার কোন বালাই নেই। কেননা ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী ভার্চুয়াল রিয়েলিটির যে পরিবেশে গাড়ি ড্রাইভিং শিখছেন সেটা মোটেই কোন বাস্তব পরিবেশ নয়। তাই এখানে দুর্ঘটনার কোন ঝুঁকি নেই। সুতরাং নিশ্চিতভাবেই ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে মটর ড্রাইভিং শেখা সম্ভব।
গ. উদ্দীপকে কারখানায় ব্যবহৃত ডিভাইসটির প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
উদ্দীপকে কারখানায় ব্যবহৃত ডিভাইসটির প্রযুক্তিটি হলে বায়োমেট্রিক । বায়োমেট্রিক হলে সেই প্রযুক্তি যেখানে মানুষের অদ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনার জন্য DNA, আঙুলের ছাপ, চোখের রেটিনা, আইরিশ, কণ্ঠস্বর, চেহারা, হাতের লেখা, ধমনী, হস্তরেখা ইত্যাদি বিষয় সমূহ শনাক্ত ও পর্যালোচনা করা হয়। উদ্দীপকে দেখা যাচ্ছে চিপস কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রবেশের পথে আঙ্গুলের ছাপ দেওয়ার জন্য একটি ডিভাইস স্থাপন করা হয়েছে। প্রত্যেক ব্যক্তির আঙুলের ছাপ অদ্বিতীয় বিধায় দরজায় বহুল ব্যবহৃত বায়োমেট্রিক ডিভাইস ব্যবহৃত হয়েছে। এর সাহায্যে মানুষের আঙুলের ছাপ ইনপুট হিসেবে গ্রহণ করে তা পূর্ব থেকে রক্ষিত আঙুলের ছাপের সাথে মিলিয়ে ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়। অর্থাৎ, কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এখানে কর্মীদের আঙুলের ছাপ স্ক্যান করে বিশ্লেষণ বা মেলানোর পর কারখানায় প্রবেশাধিকার পাওয়া যাচ্ছে। সুতরাং, কারখানার প্রবেশ পথে বসান ডিভাইসে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি অবশ্যই বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি।
ঘ, চিপসের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্রযুক্তির সুবিধা ও অসুবিধা উল্লেখ সহ তোমার মতামত বিশ্লেষণ কর।
চিপসের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হল ন্যানো টেকনোলজি। ন্যানো স্কেলে অতি ক্ষুদ্র ডিভাইস তৈরি করার জন্য কোনাে বস্তুকে সুনিপুণভাবে কাজে লাগানোর প্রযুক্তিতে ন্যানো টেকনোলজি বলে। সিলভার ন্যানো পার্টিকেল সমৃদ্ধ পলিমার সমূহ ব্যবহার করে শুকনো খাদ্য সমূহ যেমন চিপস, বিস্কুট ইত্যাদি প্যাকেজিং করা হয় যাতে করে শুকনো খাদ্য দ্রব্য সমূহ দীর্ঘদিন টাটকা ও মচমচে রাখতে পারে। এই প্রযুক্তির সুবিধা ও অসুবিধা সমূহ নিম্নরূপ সুবিধা সমূহঃ
১. পানি বিশুদ্ধকরণে ন্যানো ম্যাটেরিয়াল সমূহকে ব্যবহার করা যায়।
২. মেটাল অক্সাইড ন্যানো-ওয়্যার সমূহকে কেমিক্যাল সেন্সর হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
৩. সেলফ-অ্যাসেমব্লিং ক্ষমতাসম্পন্ন।
৪. ন্যানো ফেব্রিকেশন এর প্রচলন ঘটিয়েছে। ফলে ইলেকট্রিক বায়ো সেন্সর সমূহের ফেব্রিকেশন করা যায়।
৫. পণ্যের ওজন কমায়, দীর্ঘস্থায়িত্ব পান করে এবং পানি প্রতিরোধী।
অসুবিধা সমূহঃ
১. ন্যানো টেকনোলজি গবেষণা এবং প্রয়োগ অনেক ব্যয়সাপেক্ষ।
২. ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহার করে মারাত্মক যুদ্ধাস্ত্র তৈরি করা সব বিদায় যুদ্ধক্ষেত্রে আরও ভয়াবহের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
৩. ন্যানো প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে পানি এবং বায়ু দূষণ হতে চায় যা মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। প্রযুক্তি মানুষের শরীরের জন্য খানিকটা ক্ষতিকারক বটে।
৪. এ প্রযুক্তির ভুল ব্যবহার বিরাট ক্ষতি করতে পারে।
উপরোক্ত আলোচনার সাপেক্ষে আমার মতামত হলো যদি ন্যানোপ্রযুক্তি বেশ কিছু অসুবিধা ও ক্ষতিকর দিক রয়েছে তথাপি এই প্রযুক্তি আমাদের আধুনিক জীবনযাত্রা নানা সুবিধাজনক অবদান রেখে থাকতে। সুতরাং এর ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ন্ত্রণে রেখে এই প্রযুক্তির সৎ গবেষণা ও ব্যবহার মানব সভ্যতার উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।