৫ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ত আরবিতে ও বাংলায় | বাংলা অর্থসহ | পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ত

নামাজের নিয়ত সহিহ নিয়ত ব্যতীত কোনো আমলই আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন না। বান্দার আমল কবুল হওয়া বা না হওয়াটা নিয়তের উপরই নির্ভরশীল।

প্রিয় নবি – সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম – বলেন –
নিশ্চয় সকল আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল।’ (সহিহ বুখারি – ১)

তাই প্রতিটি আমল কবুল হওয়া এবং এর বিনিময়ে পুরুষ্কার পাওয়ার প্রধান শর্ত হচ্ছে শুদ্ধ নিয়ত। নিয়ত শুদ্ধ না থাকলে আমলের কোনো ফল পাওয়া যাবে না। 

মুমিন জীবনে যেহেতু নামাজ অত্যন্ত গুরুত্ববহ একটি ফরজ ইবাদাত। তাই স্বাভাবিকভাবেই নামাজ শুদ্ধ হওয়ার জন্য নিয়ত করতে হবে।

কিন্তু নামাজের নিয়ত কিভাবে করতে হয়? নিয়তের জন্য আরবি কোনো বাক্য উচ্চারণ করতে হবে কি না? এই প্রশ্নটিকে কেন্দ্র করে সমাজে বিরাট বড় একটি ভুল প্রচলিত রয়েছে। 

আজকের ব্লগটিতে আমরা সেই ভুলটির মূলোৎপাটন করার চেষ্টা করবো। আশা এটি নামাজি সকল নারী পুরুষের জন্য উপকারী হবে। 

নামাজের-নিয়ত-বাংলা-অর্থ-কি" নামাজের নিয়ত বাংলা অর্থ কি?

‘আন নিয়্যাতু’ (النية) একটি আরবি শব্দ। তার বাংলা অর্থ – ইচ্ছা করা, সংকল্প করা, প্রতিজ্ঞা করা ইত্যাদি।
পরিভাষায় নিয়ত বলা হয় – যে কোনো ইবাদতের জন্য নিজের ইচ্ছা ও মনকে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির প্রতি ধাবিত করা।
ফুকাহায়ে কেরাম এ ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেন যে, নিয়তের স্থান হচ্ছে অন্তর। অর্থাৎ যে আমলটি করার জন্য বান্দা উদ্যত হবে সেই আমলটির চেতনা অন্তরে বিদ্যমান থাকার নামই হচ্ছে নিয়ত। 
পাঁচ-ওয়াক্ত-নামাজের-আরবি-নিয়ত" পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আরবি নিয়ত

বাংলাদেশে সাবাহি মক্তব বা গ্রামগঞ্জে নামাজের নিয়ত নামে আরবি কতোগুলো বাক্য শিশুদের মুখস্ত করানোর প্রথা রয়েছে।

অনলাইনে কিছু ওয়েব সাইটেও নামাজের নিয়ত বলে আরবি বাক্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সত্য কথা হলো আরবি এই বাক্যগুলো মুখস্ত করা একটি অনর্থক কাজ। 

যারা নামাজের নিয়ত হিসাবে আরবি বাক্যগুলো মানুষকে শিখাচ্ছেন তারা বিরাট বড় একটি ভুল শিক্ষা দিচ্ছেন।

কেননা নামাজসহ কোনো আমলের নিয়তের জন্যই মুখে আরবি বা বাংলা শব্দ উচ্চারণের প্রয়োজন নেই।

আমরা একটু পরে সে আলোচনা বিস্তারিত করছি।  এখানে সমাজে প্রচলিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আরবি নিয়ত তুলে ধরছি। 
ফজরের নামাজের নিয়ত বাংলা

আমাদের দেশে ফজরের নামাজের নিয়ত হিসাবে যে আরবি বাক্যগুলো শিখানো হয় সেটি হলো –
ফজরের দুই রাকাত সুন্নত নামাজের নিয়ত 

বাংলা উচ্চারণ নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তাআলা রাকায়াতাই সালাতিল ফাজরি, সুন্নাতু রাসুলিল্লা-হি তাআলা মুতায়াজজিহান্ ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি।

অনুবাদ আমি কিবলা মুখী হয়ে রাসুলুল্লাহর সুন্নত দুই রাকাত ফজরের নামাজ আল্লাহ তায়ালার জন্য পড়ার নিয়ত করেছি। 
ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজের নিয়ত

বাংলা উচ্চারণ: নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তায়ালা রাকয়াতাই সালাতিল ফাজরি, ফারজুল্লা-হি তায়ালা, মুতায়াজজিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি।

অনুবাদ: আমি কিবলা মুখী হয়ে আল্লাহ তায়ালার ফরজ দুই রাকাত ফজরের নামাজ আল্লাহর জন্য পড়ার নিয়ত করলাম।
যোহরের নামাজের নিয়ত

যোহরের নাময বারো রাকাত। সূর্য মধ্য আকাশ থেকে পশ্চিম্ দিকে একটু হেলিয়া পড়লেই যোহর নামাজের ওয়াক্ত শুরু এবং কোনো বস্তুর ছায়া দ্বিগুণ হয়ে গেলে যোহরের ওয়াক্ত শেষ হয়ে যায়।
৪ রাকায়াত যোহরের সুন্নত নামাজের নিয়ত

বাংলা উচ্চারণ নাউয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-তায়ালা আরবায়া রাকয়াতি সালাতিয যুহরি – সুন্নাতু রাসুলিল্লা-হি তায়ালা মুতায়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি।

অনুবাদ: আমি কিবলা মুখী হয়ে রাসুলুল্লাহর ৪ রাকাত যুহরের সুন্নত আদায় করার নিয়ত করলাম।
যোহরের ৪ রাকায়াত ফরজ নামাজের নিয়ত

বাংলা উচ্চারণ নাউয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তায়ালা আরবায়া রাকয়াতি সালাতিয যুহরি ফারজুল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি।

অনুবাদ আমি কিবলা মুখী হয়ে আল্লাহ তায়ালার জন্য আল্লাহর ফরজ চার রাকাত যুহরের নামাজ আদায় করার নিয়ত করলাম।
যুহরের ২ রাকায়াত সুন্নত নামাজের নিয়ত

বাংলা উচ্চারণ নাউয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তায়ালা রাকায়াতাই সালাতিয যুহরি সুন্নাতি রাসুলিল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি।

অনুবাদ আমি কিবলা মুখী হয়ে রাসুলুল্লাহ সুন্নত দুই রাকাত যুহরের নামাজ আল্লাহ তায়ালার জন্য আদায় করার নিয়ত করলাম।
জোহরের ২ রাকায়াত নফল নামাজের নিয়ত

বাংলা উচ্চারণ: নাউয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তায়ালা রাকয়াতাই সালাতিল নাফলি মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারুফাতি।

অনুবাদ আমি কিবলা মুখী হয়ে আল্লাহ তায়ালার জন্য দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করার নিয়ত করলাম।
আছরের নামাজের নিয়ত

আছর নামাজ মোট আট রাকাত। কোনো বস্তুর ছায়া দ্বিগুণ হওয়ার পর থেকে সূর্যাস্তের ২০ মিনিট আগ পর্যন্ত আছরের নামাজের সময় থাকে।
আছরের চার রাকাত সুন্নাত নামাজের নিয়ত

বাংলা উচ্চারণ নাউয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তায়ালা আরবায়া রাকায়াতি সালাতিল আছরি সুন্নাতু রাসুলিল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি।

অনুবাদ: আমি কিবলা মুখী হয়ে রাসুলুল্লাহর চার রাকাত সুন্নত নামাজ আল্লাহর জন্য পড়ার নিয়ত করলাম।
আছরের চার রাকায়াত ফরজ নামাযের নিয়ত

বাংলা উচ্চারণ নাওয়াইতু আন্উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তায়ালা আরবায়া রাকায়াতি সালাতিল আছরি ফারজুল্লা-হি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি।

অনুবাদ: আমি কিবলা মুখী হয়ে আল্লাহ তায়ালার চার রাকাত আছরের ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ত করলাম।
মাগরিবের নামাজের নিয়ত

মাগরিব নামাজ মোট সাত রাকাত। সূর্যাস্তের পর থেকে মাগরিবের নামাজের সময় শুরু হয়ে পশ্চিমাকাশে লালিমা অস্ত যাওয়া পর্যন্ত বাকি থাকে।
মাগরিবের তিন রাকাত ফরজ নামাযের নিয়ত

বাংলা উচ্চারণ নাউয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তায়ালা সালাসা রাকায়াতি সালাতিল মাগরিবি ফারজুল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি।


অনুবাদ আমি কিবলা মুখী হয়ে আল্লাহ তায়ালার জন্য তিন রাকাত আল্লাহর তিন রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার নিয়ত করলাম।
মাগরিবের দুই রাকাত নামাজের নিয়ত

বাংলা উচ্চারণ নাউয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তায়ালা রাকায়াতাই সালাতিল মাগরিবি সুন্নাতু রাসুলিল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি।

অনুবাদ আমি কিবলা মুখী হয়ে রাসুলুল্লাহর দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আল্লাহর জন্য আদায় করার নিয়ত করলাম।
এশার নামাজের নিয়ত

এশার নামাজ বিতরসহ মোট ১৭ রাকাত। ৪ রাকাত সুন্নত। ৪ রাকাত ফরজ। ২ রাকাত সুন্নত। ৪ রাকাত নফল। ৩ রাকাত বিতর।
৪ রাকাত এশার সুন্নত নামাজের নিয়ত

বাংলা উচ্চারণ নাউয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তায়ালা আরবায়া রাকয়াতি এশায়ি সুন্নাতু রাসুলিল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি।

অনুবাদ আমি কিবলা মুখী হয়ে রাসুলুল্লাহর চার রাকাত এশার সুন্নত আল্লাহর জন্য আদায় করার নিয়ত করলাম।
এশার চার রাকায়াত ফরজ নামাজের নিয়ত

বাংলা উচ্চারণ নাউয়াইত আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তায়ালা আরবায়া রাকয়াতি এশায়ি ফারজুল্লা-হি তায়ালা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি।

অনুবাদ আমি কিবলা মুখী হয়ে আল্লাহ তায়ালার চার রাকাত এশার ফরজ নামাজ আল্লাহর জন্য পড়ার নিয়ত করলাম।
এশার দুই রাকায়াত সুন্নাত নামাজের নিয়ত

বাংলা অনুবাদ নাউয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লা-হি তায়ালা রাকায়াতি সালাতিল এশায়ি সুন্নাতু রাসুলিল্লা-হি তাআলা মুতাওয়াজজিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি।


অনুবাদ আমি কিবলা মুখী হয়ে আল্লাহর জন্য রাসুলুল্লাহর দুই রাকাত এশার সুন্নত নামাজ পড়ার নিয়ত করলাম।
নামাজের-নিয়ত-মুখে-উচ্চারণ-করা-কি" নামাজের নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা কি?
আমরা এতোক্ষণ সমাজে নামাজের নিয়ত হিসাবে প্রচলিত আরবি বাক্যগুলো তুলে ধরেছি। কিন্তু এই বাক্যগুলোকে নামাজের নিয়ত হিসাবে উচ্চারণ কি বৈধ?

এই বাক্যগুলোকে নামাজের নিয়ত হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে কে? কুরাআন বা হাদিসে এ রকম বাক্যের উচ্চারণ করে নিয়ত করার কথা বলা আছে কি?

প্রিয় নবি মুহাম্মাদ – সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম – কি নামাজের আগে এই বাক্যগুলো উচ্চারণ করতেন?

সাহাবায়ে কেরাম – রাদিয়াল্লাহু আনহুম – কি এই বাক্যগুলো নামাজের আগে উচ্চারণ করতেন?

যদি রাসুলুল্লাহ – সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম – ও সাহাবায়ে কেরাম এই বাক্যগুলো নামাজের সময় উচ্চারণ না করেন তবে তারা কীভাবে নামাজের নিয়ত করতেন?

এই প্রশ্নগুলোর উত্তর একটু গভীরভাবে বুঝতে হবে। কেননা এই উত্তরগুলোর বুঝতে পারলেই আপনার কাছে এটা পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, নামাজের সময় আরবি বাক্যগুলো মুখে উচ্চারণ করাটা অনর্থক।
নামাজের নিয়ত করার সঠিক নিয়ম

কুরআন বা হাদিসে – ফিকহের গ্রহণযোগ্য কোনো কিতাবে নামাজের নিয়ত হিসাবে আলাদা কোনো বাক্যের পরিচয় দেওয়া হয়নি।

রাসুলুল্লাহ – সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম – নামাজের আগে আরবি বাক্য উচ্চারণ করে নামাজের নিয়ত করতেন কোনো বলে বর্ণনা নেই।

একইভাবে সাহাবায়ে কেরাম নামাজের নিয়ত করার সময় আরবি কোনো বাক্য মুখে উচ্চারণ করতেন বলে রেফারেন্স নেই।

তাহলে আমরা বুঝতে পারলাম, রাসুলুল্লাহ – সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম – নামাজের নিয়তের জন্য মুখে কোনো বাক্য উচ্চারণ করতেন না।

সাহাবায়ে কেরাম – যারা রাসুলুল্লাহ – সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম – এর কাছ সরাসরি শিক্ষা গ্রহণ করেছেন, তারাও নামাজের আগে নিয়ত করতে গিয়ে মুখে কোনো বাক্য উচ্চারণ করতেন না।

এখান থেকে প্রমাণিত হয় রাসুলুল্লাহ – সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম – যে নামাজ শিখিয়ে গেছেন সেই নামাজের জন্য মুখ দিয়ে নিয়তের বাক্য উচ্চারণ করার প্রয়োজন নেই।

এ হিসাবে আমরা বলতে পারি নামাজের আগে নিয়তের বাক্য উচ্চারণ করা ড়কটি অনর্থক কাজ। ক্ষেত্র বিশেষে বিদআত।
নামাজের-নিয়ত-কীভাবে-করতে-হয়" নামাজের নিয়ত কীভাবে করতে হয়?

আমরা প্রথমেই একটি হাদিস উল্লেখ করে এসেছি। সেই হাদিসে রাসুলুল্লাহ – সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম – বলেছেন –

সকল আমলই নিয়তের উপর নির্ভরশীল ( সহিহ বুখারি – ১)

এই হাদিস থেকে প্রমাণিত হয় যে, যদি নামাজে নিয়ত না থাকে তবে নামাজও শুদ্ধ হবে না।

আবার উপরে আলোচনা করে এসেছি নামাজের নিয়তের জন্য কোনো আরবি বাক্য উচ্চারণ করতে হয় না।

তাহলে নামাজের জন্য কীভাবে শুদ্ধ পন্থায় নিয়ত করতে হবে? এই উত্তরটি ভালোভাবে জানা দরকার।

আমরা উপরে আলোচনা করে এসেছি নিয়ত মানে হলো ইচ্ছা বা মনের সংকল্প। তা থেকে বুঝা যাচ্ছে নিয়ত মনের বিষয়।

আমি যে কাজটি করছি সে কাজটির ইচ্ছা মনের মধ্যে জাগ্রত থাকার নামই নিয়ত।

তাই নামজের নিয়ত বলতে – আমি যে ওয়াক্তে যে নামাজের জন্য মসজিদে গেছি বা ইমাম সাহেবের সাথে শরীক হচ্ছি সেই নামাজের ইচ্ছাটা মনের মধ্যে থাকাটাই যথেষ্ট।

নামাজের সময় একজন ব্যক্তি যখন বসা থেকে উঠবে বা দাঁড়িয়ে জামাতে শামিল হবে তখন তার মনে নামাজের চেতানা থাকাটা নিয়ত হিসাবে গণ্য হবে।
নামাজের নিয়ত ও ইসলামি স্কলারদের অভিমত
শায়খ বিন বায – রাহিমাহুল্লাহ বলেন –

অনুবাদ কিছু মানুষ মুখে উচ্চারণ করে যে, ‘নাউয়াইতু আন উসাল্লিয়’। চাই সে ইমাম হোক বা মুক্তাদি। এ সবের কোনো ভিত্তি নেই।

বরং আলেমদের বিশুদ্ধ মতে এটা বিদআত। কেননা রাসুলুল্লাহ – সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম – নিয়তের বাক্য মুখে উচ্চারণ করতেন না।

এভাবে সাহাবায়ে কেরামও মুখে নিয়তের জন্য জন্য কোনো বাক্য উচ্চারণ করতেন না।

একইভাবে তাবিয়ি ও তাদের অনুসারী চার ইমামের কেউই মুখে নিয়তের বাক্য উচ্চারণ করতেন না।
নামাজের-নিয়ত-মুখে-উচ্চারণ-কী-করা-বিদআত" নামাজের নিয়ত মুখে উচ্চারণ কী করা বিদআত?
ইমাম ইবনু তাইমিয়া রাহিমাহুল্লাহ বলেন –

অনুবাদ – মুসলিম ইমামদের ঐক্যমতে সমস্ত ইবাদাতের ক্ষেত্রে নিয়তের স্থান হলো অন্তর। মুখ নয়।

চাই সে ইবাদাত নামাজ হোক বা পবিত্রতা বা যাকাত বা হজ বা রোজা বা গোলাম আজাদ করা বা জিহাদ বা অন্য কিছু।

মুসলিমদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে নিয়ত সশব্দে উচ্চারণ করা ওয়াজিব বা মুস্তাহাব কিছুই নয়।

বরং নিয়ত উচ্চারণকারী বিদআতী ও শরিয়ত বিরোধি। যদি সে এ কথা ভেবে করে যে এটা শরয়ি বিধান তবে সে একজন মুর্খ পথভ্রষ্ট। শাস্তির উপযুক্ত।
নামাজের নিয়ত ও শেষ কথা

আমরা এই পোস্টটি পড়ে জানতে পারলাম নামাজের নিয়তের জন্য আদালা করে আরবি বা বাংলা বা অন্য কোনো ভাষায়ই কোনো বাক্য উচ্চারণের প্রয়োজন নেই।

কিন্তু আমাদের দেশে ভুল শিক্ষার প্রচলন রয়েছে। বহুদিন থেকে মক্তবে মসজিদে শিশুদের নামাজের নিয়ত নামে আরবি কিছু বাক্য শিখানো হয়।

আমাকেও এমন কিছু বাক্য শিখানো হয়েছিলো। যদিও বর্তমানে সেই বাক্যগুলো আমার মুখস্ত নেই।

আমার ঐ বাক্যগুলো মুখস্ত না থাকলেও আমি নামাজ আদায় করতে কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। কেননা আমি জানি এর দরকার নেই।

আমি আমার অন্তরকে দুনিয়ার সকল চিন্তা চেতনা থেকে ফারিগ করে আল্লাহ তায়ালর প্রতি ধাবিত করে নামাজে দাঁড়িয়ে যাই।

এটাই আমার নামাজের নিয়ত। এর দ্বারাই আমার নামাজ শুদ্ধ হচ্ছে বলে আমি জানি ও বিশ্বাস করি।

কিন্তু এদেশে অগণিত মানুষ রয়েছে যারা সেই ছোট কালে মক্তবে বা মসজিদে যে আরবি বাক্যকে নামাজের নিয়ত জেনে আসছে সেটা মুখস্ত নেই বলে নামাজই আদায় করছে না।

আমি এমন অনেক মানুষ পেয়েছি যারা বলে নামাজেরই নিয়তই ভুলে গেছি তাহলে নামাজ কেমনে পড়বো?

এই যে ভুল একটি শিক্ষা দেওয়া হয়েছিলো সেই ছোট কালে মক্তবে তার জন্য বড় হয়ে সে নামাজই আদায় করছে না সেটা মুখস্ত নেই বলে।

যদি মক্তবে আরবি বাক্যগুলো না শিখানো হতো তাহলে নামাজ না পড়ার অযুহাত নামাজের নিয়ত না জানাটা দেখাতে পারতো না।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]