চট্টগ্রাম বোর্ড-২০১৯ |
৬ .প্রশ্ন নিচের উদ্দীপকটি পড়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :
শফিক সাহেব তার গবেষণাগারে দিনাজপুরের ঐতিহ্য ধারণের লক্ষ্যে লিচু নিয়ে গবেষণা করে, তার ফলাফল সংরক্ষণ করেন। তিনি গবেষণাগারের প্রবেশমুখে এমন একটি যন্ত্র বানিয়েছেন সেটার দিকে নির্দিষ্ট সময় তাকালে অনুমোদিত ব্যক্তিবর্গ ভিতরে প্রবেশ করতে পারেন।
ক, স্মার্ট হোম কী?
খ. “ন্যূনতম ধকল সহিষ্ণু শল্যচিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
গ, গবেষণাগারের প্রবেশমুখে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের গবেষণা কার্যক্রমে তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির যে দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে, বিশ্লেষণ পূর্বক সেটির প্রয়োগ ক্ষেত্র আলোচনা কর ।
{ ৬ নং সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর।
ক, স্মার্ট হোম কী?
স্মার্ট হোম হলো এমন একটি বাসস্থান যেখানে রিমোট কন্ট্রোল বা প্রোগ্রামিং ডিভাইসের সাহায্যে বাড়ির হিটিং, কুলিং, লাইটিং এবং সিকিউরিটি কন্ট্রোল প্রভৃতি সিস্টেম নিয়ন্ত্রণ করা যায় ।
খ, ন্যূনতম ধকল সহিষ্ণু শল্যচিকিৎসা পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
ন্যূনতম ধকল সহিষ্ণু শল্যচিকিৎসা পদ্ধতি হলো ক্রায়োসার্জারি। এটা হচ্ছে চরম ঠাণ্ডা প্রয়ােগ করে অস্বাভাবিক টিস্যু ধ্বংস করার পদ্ধতি। চিকিৎসাক্ষেত্রে ক্যান্সার অথবা ক্যান্সারের পূর্ব অবস্থা চিকিৎসা করার জন্য ক্রায়োসার্জারি ব্যবহার করা হয়।
ক্রায়োসার্জারিতে অতি শীতল বা বরফ জমাট তাপমাত্রা মানব শরীরের কোন অংশের রোগাক্রান্ত কোষ বা টিস্যুসমূহকে -৪১ তাপমাত্রায় ক্রায়ােস্রোবসহ বিভিন্ন ক্রায়োজনিক এজেন্টের দ্বারা ধ্বংস করার মাধ্যমে চিকিৎসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য বা সুবিধা হল এতে শল্য চিকিৎসার মত কাটা-ছেড়া করা তথা অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন পড়ে এজন্য ক্রায়োসার্জারি হলে ন্যূনতম ধকল সহিষ্ণু শল্যচিকিৎসা পদ্ধতি।
গ, গবেষণাগারের প্রবেশমুখে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি ব্যাখ্যা কর।
উদ্দীপকের গবেষণার প্রবেশমুখে ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি হল বায়োমেট্রিক্স । বায়োমেট্রিক্স হলো সেই প্রযুক্তি যেখানে মানুষের অদ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনার জন্য DNA, আঙুলের ছাপ, চোখের রেটিনা, আইরিশ, কণ্ঠস্বর, চেহারা, হাতের লেখা, ধমনী, হস্তরেখা ইত্যাদি বিষয় সমূহ শনাক্ত ও পর্যালোচনা করা হয়। প্রত্যেক ব্যক্তির চোখের রেটিনার আকার, রং ইত্যাদি ভিন্ন। দরজায় আসলে বহুল ব্যবহৃত রেটিনা স্ক্যান বায়োমেট্রিক ডিভাইস ব্যবহৃত হয়েছে, যার সাহায্যে কোন ব্যক্তির চোখের রেটিনা ও আইরিশ স্ক্যান করে এর আকার, রং প্রভৃতি ডেটা ইনপুট হিসেবে গ্রহণ করে তা পূর্ব থেকে রক্ষিত তার রেটিনা ও আইরিশ সংক্রান্ত ডেটার সাথে মিলিয়ে ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়। উদ্দীপকে দেখা যাচ্ছে, শফিক সাহেব গবেষণাগারের প্রবেশমুখে এমন একটি যন্ত্র বানিয়েছেন যেটা দিকে নির্দিষ্ট সময় তাকালে অনুমোদিত ব্যক্তিবর্গ ভিতরে প্রবেশ করতে পারেন। অর্থাৎ দরজা খােলার জন্য এখানে তাদের রেটিনা ও আইরিশ স্ক্যান করে বিশ্লেষণ বা মেলানাের পর ল্যাবরেটরি কক্ষে প্রবেশাধিকার পাওয়া যাচ্ছে। সুতরাং ল্যাবরেটরির দরজায় ব্যবহৃত প্রযুক্তিটি অবশ্যই বায়োমেট্রিক্স প্রযুক্তি।
ঘ. উদ্দীপকের গবেষণা কার্যক্রমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যে দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে, বিশ্লেষণ পূর্বক সেটির প্রয়োগ ক্ষেত্র আলোচনা কর।
উদ্দীপকের গবেষণা কার্যক্রমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যে দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে, সেটি হলো বায়োইনফরমেটিক্স। বায়োইনফরমেটিক্স হল তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে জৈব তথ্য বা বায়োলজিক্যাল ডেটা বিশ্লেষণ করার পদ্ধতি। বায়োইনফরমেটিক্সে মূলত জীবের DNA কে বিশ্লেষণ করে সংশ্লিষ্ট সকল অপ্রয়োজনীয় তথ্যকে সংরক্ষণ ও সুসজ্জিত ভাবে উপস্থাপনের কাজটি করা হয়ে থাকে। এটি মূলত জীববিদ্যা, গণিত ও পরিসংখ্যানের সমন্বয়ে গঠিত বিজ্ঞান যা জীবের DNA সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য কার্যকরী উপায়ে প্রয়গের নিমিত্তে সংরক্ষিত রাখে। যখন জৈব তথ্য নিয়ে কম্পিউটারের মধ্যে গবেষণা করা হয়, তখন তাকে বলে ড্রাইল্যাব। এখানে রিএজেন্ট (একপ্রকার রাসায়নিক বস্তু) প্রয়োজন হয় না। ড্রাইল্যাব বিজ্ঞানী তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় নানা ধরনের বিশ্লেষণ করে, ত্রিমাত্রিক মডেল,
সিমুলেশন বিশ্লেষণ করে যারা কাজ করতে পারে সম্ভাব্য এমন দশটা পেপটাইড বের করে আনতে পারেন। অতঃপর ওয়েটল্যাবে একশতটি পেপটাইড নিয়ে কাজ না করে এ দশটি মাত্র পেপটাইড নিয়ে কাজ করে কাক্ষিত সফলতা পেতে পারেন। এভাবে বায়োইনফরমেটিক্স দশ ভাগ কাজ, গম, পরিশ্রম ও অর্থ কমিয়ে দেয়। ধান, পাট, গমসহ নানাবিধ ফলের উন্নত জাত উবিন, মিউটেশন ব্রিডিং বা সংকরায়ন প্রক্রিয়ার উপর নির্ভরশীল। সংকরায়ন পদ্ধতিতে কাঙ্ক্ষিত এক বা একাধিক গুণাবলী নির্ভর কয়েকটি জিনকে কোনাে একটি জাতের মধ্যে আনা হয়। আর জটিল এ কাজটি সহজ করে দেয় বায়ােইনফরমেটি। তাই খাদ্য চাহিদা মেটাতে কৃষিতে বায়োইনফরমেটিক্স গুরুত্ব অপরিসীম।