ক্ষুরারোগ কী তা বলতে পারবেন এ রোগের কারণ ক্ষুরারোগ কীভাবে পশুতে সংক্রমিত হয় ক্ষুরারোগের লক্ষণ, রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ

মানুষের ন্যায় গবাদিপশুও বিভিন্ন রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হয়। কিন্তু পশুর রোগব্যাধির প্রতি আমরা
প্রায়ই গুরুত্ব দিই না। অথচ এসব প্রাণীতে রোগব্যাধির গতিপ্রকৃতি অত্যন্ত জটিল। আমাদের
পরিবেশে রোগ সৃষ্টির উপাদানসমূহ সর্বদা বিদ্যমান। ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, মাইকোপ−াজমা,
রিকেটশিয়া, ছত্রাক প্রভৃতি রোগজীবাণু এবং বিভিন্ন পরজীবী অহরহ মানুষ ও পশুপাখির সংস্পর্শে
আসছে। রোগ সৃষ্টির এসব জীবাণু সাধারণত খালি চোখে দেখা যায় না। তাই মানুষ ও গবাদিপশু
পাখি সুস্থ রাখার জন্য পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যপোযোগী রাখা অপরিহার্য। উপরোলি−খিত
জীবাণুজনিত রোগ, বিশেষ করে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস সংক্রমিত রোগ, মহামারী হিসেবে দেখা দেয়
এবং এতে অল্প সময়ে অসংখ্য পশুপাখি মারা যেতে পারে। ব্যাকটেরিয়াস্নারা সৃষ্ট রোগ
অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের মাধ্যমে নিরাময় করা যায়। কিন্তু ভাইরাস সংক্রমিত রোগের জন্য অদ্যাবধি
কোনো চিকিৎসা আবিষ্কৃত হয় নি। এসব রোগের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, রোগ সৃষ্টির আদর্শ পরিবেশ ও
নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকলে রোগের প্রাদুর্ভাব কমানো যেতে পারে। গবাদিপশুতে
ভাইরাসজনিত রোগ অতি দ্রæত সংক্রমিত ও সম্প্রসারিত হয়।
এ ইউনিটের বিভিন্ন পাঠে গৃহপালিত পশুর ক্ষুরারোগ, বসন্ত ও জলাতঙ্ক রোগের কারণ, লক্ষণ, রোগ নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। ক্ষুরারোগ একটি অতিতীব্র প্রকৃতির সংক্রামক ভাইরাসজনিত রোগ। এ রোগ সকল বিভক্ত ক্ষুরবিশিষ্ট
(ঈষড়াবহ ঋড়ড়ঃবফ) প্রাণীতে দেখা যায়। এ রোগে অক্রান্ত পশুর মুখ ও পায়ে ঘা হবার ফলে খাদ্য
গ্রহণ করতে পারে না এবং খুঁড়িয়ে হাঁটে। পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই এ রোগ দেখা যায়। তবে, বাংলাদেশের গরুতে ক্ষুরারোগের প্রদুর্ভাব খুব বেশি।
রোগের কারণ
ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ (ঋড়ড়ঃ ধহফ গড়ঁঃয উরংবধংব) নামক এক প্রকার ভাইরাস এ রোগ সৃষ্টি
করে। সে কারণে ইংরেজিতে ক্ষুরারোগকে এফ.এম.ডি. (ঋগউ) বলে। এ ভাইরাসের মোট ৭টি
টাইপ রয়েছে। এগুলোর নাম এ (অ), ও (ঙ), সি (ঈ), স্যাট-১ (ঝঅঞ-১), স্যাট-২ (ঝঅঞ-২), স্যাট-৩
(ঝঅঞ-৩) এবং এশিয়া-১ (অঝওঅ-১)। বাংলাদেশে ও এবং এশিয়া-১ টাইপের ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি।
রোগ সংক্রমণ
ক্ষুরারোগ অত্যন্ত সংক্রামক হওয়ায় কোনো এলাকায় এ রোগ দেখা দিলে একশত ভাগ পশুই তাতে
আক্রান্ত হয়। রোগাক্রান্ত পশুর মধ্যে শতকরা ২ ভাগ বয়স্ক ও ২০ ভাগ বাচ্চা মারা যায়। তবে,
তীব্ররূপে রোগ দেখা দিলে শতকরা ৫০ ভাগ পশুও মারা যেতে পারে।
গবাদিপশুর রোগ ও প্রতিরোধ
গরুতে এ রোগের প্রাদুর্ভাব খুব বেশি। তবে ছাগল, ভেড়া, শূকর প্রভৃতি পশুতেও এ রোগ দেখা যায়।
আক্রান্ত ছাগল ও ভেড়া থেকে সহজেই এ রোগ গরুতে সংক্রমিত হতে পারে। নিরাময়প্রাপ্ত গরু ১−৪
বৎসর পর্যন্ত এ রোগের পুনরাক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে। কম বয়স্ক সকল পশুতে এ রোগের
প্রকোপ সর্বাধিক।
ক্ষুরারোগের জীবাণু খাদ্য ও শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। বায়ুপ্রবাহের মাধ্যমে এ
রোগের জীবাণু সক্রিয় অবস্থায় ৫০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত চলে যেতে পারে। সংক্রমণের পরপরই
জীবাণু রক্ত প্রবাহ, দুধ এবং লালার মধ্যে প্রবেশ করে। সংক্রমিত পশুর দুধ, মল, প্রস্রাব, বীর্য প্রভৃতির
মাধ্যমে ভাইরাস আবার পরিবেশে ফিরে আসে। আক্রান্ত পশুর শতকরা ৫০ ভাগ রোগ নিরাময়ের পর
শরীরে ভাইরাস বহন করে। এসব পশু থেকেও সুস্থ পশুতে রোগের বিস্তার ঘটতে পারে। ক্ষুরারোগের
ভাইরাস বীর্যের মধ্যে প্রবেশ করার কারণে ভাইরাস বহনকারী ষাঁড় কৃত্রিম প্রজননের জন্য অত্যন্ত
বিপদজনক। কারণ, এসব ষাঁড় থেকে সংগৃহীত বীর্য কৃত্রিম প্রজননে ব্যবহার করলে এ রোগ মহামারী আকারে দেখা দিতে পারে।
রোগের বিকাশ (
ক্ষুরারোগের ভাইরাস শরীরে অনুপ্রবেশ করার পর যথপোযুক্ত জায়গাসমূহ অর্থাৎ মুখগহŸর ও জিহŸার
বহিরাবরণী, বিভক্ত ক্ষুরের মধ্যবর্তী স্থান, ওলান ও ওলানের বাটে সম্প্রসারিত হয়। পরে এসব স্থানে
রোগের চিহ্ন দেখা দেয়। সংক্রমণের ১−৮ দিনের মধ্যে এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। আক্রান্ত পশুর
শতকরা ৭৫ ভাগের মুখে এবং ২৫ ভাগের ক্ষুরে এ রোগের লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়। ক্ষুরারোগ সব
ঋতুতেই দেখা যায়। তবে, বর্ষার শেষে এবং শরৎকালে এ রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পায়।
জীবদেহে সংক্রমণের ১−৮
দিনের মধ্যে ক্ষুরারোগের
লক্ষণ প্রকাশ পায়।
ক খ
চিত্র ২৫ (ক, খ) ঃ ক্ষুরারোগে আক্রান্ত গরুতে রোগলক্ষণ
ক− মুখ দিয়ে অতিরিক্ত লালা নির্গমন ও খ− ফোস্কা ফেটে গিয়ে জিহŸায় ক্ষত
রোগের লক্ষণ (ঈষরহরষপধষ ঝরমহং)
ক্ষুরারোগের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণসমূহ নিম্নরূপ−
♦ আক্রান্ত পশুর শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং তা সাধারণত ৪০০
−৪১.১০
সে.
(১০৪০
−১০৬০
ফা.) এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ৩২
গবাদিপশুর ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ
♦ মুখে ক্ষত থাকার কারণে পশু খাদ্য গ্রহণ করতে পারে না। ফলে ক্ষুধামন্দা দেখা দেয় এবং মুখে তীব্র বেদনাযুক্ত প্রদাহ শুরু হয়। ক্ষুরারোগ হলে পশুর শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। মুখ ও পায়ে ঘা হয়। খাদ্য গহণে অ ্র নিহা ও মখ ু থেকে সুতাকৃতির লালা নির্গত হয়। বাছুরে এ রোগের তীব্রতা অপেক্ষাকৃত বেশি।
♦ মুখ থেকে অতিরিক্ত লালা নির্গমণ ঘটে এবং তা প্রায়শ সুতাকৃতি অবস্থায় ঝুলতে থাকে।
♦ পরবর্তীতে মুখ ও জিহŸায় ফোস্কা দেখা দেয়। চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে এসব ফোস্কা ফেটে
বেদনাযুক্ত কাঁচা ঘায়ে পরিণত হয়। এ কারণে পশু খেতে পারে না। এসব ঘা শুকাতে প্রায়
এক সপ্তাহ সময় লাগে।
♦ একই সময় এ রোগের লক্ষণ দুই ক্ষুরের ম্যধবর্তী স্থান এবং ক্ষুর-ত্বকের সন্ধিস্থলে
(ঈড়ৎড়হবঃ) দেখা যায়। ক্ষতস্থানে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ফলে আরও জটিল হয়। ফলে
আক্রান্ত পশু খুঁড়িয়ে হাঁটে। এ পর্যায়ে পায়ের নিচের অংশ ফুলে যায় এবং উক্ত স্থান গরম ও
বেদনাদায়ক হয়।
♦ খাদ্য গ্রহণে অনিহা ও অক্ষমতার কারণে আক্রান্ত পশুর দৈহিক ওজন দ্রæত হ্রাস পায়। এ
রোগ থেকে সেড়ে ওঠতে অন্তত ৬ মাস সময় লাগে।
♦ আক্রান্ত পশু দুগ্ধবতী হলে দুধের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে হ্রাস পায়।
♦ অল্পবয়স্ক পশুতে এ রোগের তীব্রতা বয়স্ক পশুর চেয়ে অনেক বেশি।
♦ এ থেকে নিরাময়প্রাপ্ত পশুর শ্বাসকষ্ট, রক্তশূন্যতা এবং পরিবেশগত উচ্চ তাপমাত্রায়
অসহিষ্ণুতা পরিলক্ষিত হয়।
রোগ নির্ণয়
আক্রান্ত পশুতে রোগের লক্ষণ ও উপসর্গসমূহ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ক্ষুরারোগ নির্ণয় করা যায়। এসব
লক্ষণ ও উপসর্গসমূহের মধ্যে অতিরিক্ত দৈহিক তাপমাত্রা, মুখগহŸর ও দুই ক্ষুরের সংযোগস্থলে প্রথমে
ফোস্কা এবং পরে ঘা, খোঁড়ানো এবং মুখ থেকে লালা পড়া উলে−খযোগ্য। গরুর ভেসিকুলার
স্টোমাটাইটিস (ঠবংরপঁষধৎ ঝঃড়সধঃরঃরং) রোগেও ক্ষুরারোগের ন্যায় মুখে ও পায়ে ফোস্কা দেখা দেয়। তবে, আমাদের দেশে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বিরল। আক্রাš পÍ শুতে রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ক্ষরারোগ ু নির্ণয় করা
চ‚ড়ান্ত রোগ নির্ণয়ের জন্য গবেষণাগারে কমপি−মেন্ট ফিক্সেশন টেস্ট (ঈড়সঢ়ষবসবহঃ ঋরীধঃরড়হ ঞবংঃ)
করা হয়। এছাড়া আক্রান্ত পশুর ক্ষত থেকে সংগৃহীত নমুনা গিনিপিগে অনুপ্রবেশ করানো হলে যদি
৭−৮ দিনের মধ্যে অনুপ্রবেশ স্থান ও মুখে ফোস্কা দেখা দেয় তাহলে ক্ষুরারোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।
চিকিৎসা
ভাইরাসজনিত রোগ বলে ক্ষুরারোগের কোনো কার্যকর চিকিৎসা নেই। তবে, ক্ষতস্থানসমূহ
ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য স্থানীয়ভাবে জীবাণুনাশক এবং সাধারণভাবে অ্যান্টিবায়োটিক
ব্যবহার করা যেতে পারে। পায়ের ক্ষতস্থানে সালফানিলামাইড পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে।
আক্রান্ত পশুকে পরিষ্কার ও শুকনো স্থানে রাখতে হবে, তরল খাবার দিতে হবে এবং প্রয়োজন হলে নলের সাহায্যে খাওয়াতে হবে। ভাইরাসজনিত রোগ বলে ক্ষুরারোগের কোনো কার্যকর চিকিৎসা নেই।
জটিলতা (
ক্ষুরারোগে আক্রান্ত পশুতে গর্ভপাত, ওলানপ্রদাহ, নিউমোনিয়া প্রভৃতি রোগ হতে পারে।
রোগ নিয়ন্ত্রণ (ঈড়হঃৎড়ষ) পৃথিবীর অনেক দেশ, যেমন−
ডেনমার্ক, নরওয়ে, সুইডেন,
ফিনল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড
ক্ষুরারোগমুক্ত।
♦ পৃথিবীর অনেক দেশ ক্ষুরারোগমুক্ত। এসব দেশের মধ্যে ডেনমার্ক, নরওয়ে, সুইডেন,
ফিনল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড উলে−খযোগ্য। এসব দেশে হঠাৎ কোনো স্থানে ক্ষুরারোগ দেখা দিলে
আক্রান্ত পশুকে মেরে মাটির নিচে পুতে রাখা হয়। আমাদের দেশে এ রোগের প্রাদুর্ভাব
ব্যাপক বলে অনুরূপ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা সম্ভব নয়।
♦ রাসায়নিক বিক্রিয়ার তারতম্য, সূর্যরশ্মি ও তাপ প্রয়োগের মাধ্যমে সহজেই এ ভাইরাস নিষ্ক্রিয় হয়।
♦ গবাদিপশুর চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কারণ, আক্রান্ত পশু একস্থান থেকে অন্যস্থানে চলাচলের ফলে রোগ বিস্তারলাভ করে।
♦ সঙ্গনিরোধ বা কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে হবে। এ
ব্যবস্থা ছাড়াই সীমান্তবর্তী দেশ ভারত থেকে প্রতিদিন অসংখ্য গরু বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ
করায় এ রোগ নিয়ন্ত্রণ দুরূহ হয়ে পড়েছে।
♦ আক্রান্ত পশুকে সুস্থ পশু থেকে আলাদা করে রাখতে হবে যেন সুস্থ পশুতে এ রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
♦ আক্রান্ত পশুর আবাসস্থল (গোয়াল ঘর) ২% সোডিয়াম হাইড্রক্সাইড অথবা ৪% সোডিয়াম
কার্বনেটস্নারা পরিষ্কার করতে হবে।
♦ এ রোগে মৃত পশুকে মাটির নিচে পুতে রাখতে হবে। কারণ, মৃতদেহ মুক্তস্থানে ফেলে
রাখলে এ রোগের ভাইরাস সহজেই অন্যান্য পশুতে সংক্রমিত হয়। টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে
গবাদিপশুকে ক্ষুরারোগের আক্রমণ থেকে রক্ষা করা যায়। এ রোগের টিকা নির্ধারিত মাত্রায়
পশুর গলকম্বলের ত্বকের নিচে ইনজেকশন আকারে দেয়া হয়। টিকাপ্রাপ্ত পশু ৪−৬ মাস
পর্যন্ত ক্ষুরারোগ প্রতিরোধ করতে পারে, অর্থাৎ প্রতি ৬ মাস অন্তর এ রোগের টিকা প্রদান করতে হবে। চার মাসের কম বয়সের পশুকে এ টিকা দেয়া হয় না। গর্ভবতী গাভীকে
♦ ক্ষুরারোগের প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশে ব্যাপক। প্রতি বছর অসংখ্য পশু এ রোগে আক্রান্ত হয়।
এদের মধ্যে অনেক পশু, বিশেষ করে বাছুর, মারা যায়।
♦ এ রোগের কারণে দীর্ঘদিন পশুকে কৃষিকাজে ব্যবহার করা যায় না। ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যহত হয়।
♦ দৈহিক ওজন হ্রাস পাওয়ায় মাংসের উৎপাদন কমে যায়। দুগ্ধবতী গাভীর দুধ উৎপাদন কমে
যায়। কাজেই এ রোগের কারণে প্রথম পর্যায়ে কৃষক এবং পরবর্তীতে জাতীয় অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ে।
♦ এ রোগের কারণে পশুর গর্ভধারণ ক্ষমতা লোপ পেতে পারে, এমনকী গর্ভপাত হতে পারে
যা কৃষকের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
অনুশীলন গরুতে ক্ষুরারোগের লক্ষণ ও ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে লিখুন।
সারমর্ম ঃ ক্ষুরারোগ একটি অতি তীব্র প্রকৃতির সংক্রামক ভাইরাসজনিত রোগ। এ রোগ সকল বিভক্ত
ক্ষুরবিশিষ্ট পশুতে দেখা যায়। আক্রান্ত পশুর মুখ ও পায়ে ঘা হয় এবং মুখ থেকে সুতাকৃতির লালা
নির্গত হয়। দৈহিক তাপমাত্রা ৪০.০ক্ক−৪১.১ক্ক সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। এ রোগে পশু
খাদ্য গ্রহণ করতে পারে না এবং খুঁড়িয়ে হাঁটে। বয়স্ক পশু অপেক্ষা বাছুরে এ রোগের মৃত্যুর হার
বেশি। রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাস প্রধানত খাদ্য ও শ্বাসনালির মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। আক্রান্ত
পশুর লক্ষণ দেখে এ রোগ নির্ণয় করা যায়। তবে চ‚ড়ান্ত রোগ নির্ণয়ের জন্য গবেষণাগারে নমুনা
পরীক্ষা করা প্রয়োজন। ক্ষুরারোগের কোনো কার্যকর চিকিৎসা নেই। তবে ব্যাকটেরিয়াজনিত
সংক্রমের জটিলতা প্রতিরোধের জন্য মুখ ও পায়ের ক্ষতস্থানে জীবাণুনাশক প্রয়োগ ও অ্যান্টিবায়োটিক
ব্যবহার করা যেতে পারে। টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষুরারোগ প্রতিরোধ করা যায়। ক্ষুরারোগগ্রস্থ পশুর
দৈহিক ওজন ও দুধ উৎপাদন কমে যায়। এছাড়া কর্মক্ষমতা হ্রাস পাওয়ার কারণে কৃষি উৎপাদন ব্যহত হয়।
" পাঠোত্তর মূল্যায়ন ২.১ ১। সঠিক উত্তরের পাশে টিক চিহ্ন (৩) দিন। ক. ক্ষুরারোগ কী জাতীয় জীবাণুস্নারা সৃষ্টি হয়? র) ব্যাকটেরিয়া রর) ভাইরাস ররর) মাইকোপ−াজমা রা) রিকেটশিয়া খ. ক্ষুরারোগের ক্ষত চিহ্ন কোথায় দেখা যায়? র) গলকম্বল ও বুকে রর) ঘাড় ও পিঠে ররর) মুখ ও পায়ে রা) শিং ও কানে ২। সত্য হলে ‘স’ এবং মিথ্যা হলে ‘মি’ লিখুন। ক. ক্ষুরারোগে বাছুর বেশি মারা যায়। খ. কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে ক্ষুরারোগ মহামারী আকার ধারণ করে। ৩। শূন্যস্থান পূরণ করুন। ক. ক্ষুরারোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুর নাম থথথথ এন্ড মাউথ ডিজিজ ভাইরাস। খ. থথথথথ মাসের কম বয়স্ক পশুতে ক্ষুরারোগের টিকা দেয়া হয় না। ৪। এক কথা বা বাক্যে উত্তর দিন। ক. ক্ষুরারোগের লক্ষণ পায়ের কোন্ অংশে দেখা যায়? খ. ক্ষুরারোগের টিকা পশুর শরীরের কোন্ স্থানে দেয়া হয়?

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]