জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত পশুর লক্ষণ ও মৃত্যুর কারণ জলাতঙ্ক রোগ নির্ণয়ের বিভিন্ন পদ্ধতি ও পরিণতি জলাতঙ্ক রোগ নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন কৌশল ও পন্থা

জলাতঙ্ক কী?
জলাতঙ্ক ( একটি মারত্মক ভাইরাসজনিত রোগ। মানুষসহ সকল উষ্ণ রক্তবাহী পশু এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে, প্রাকৃতিক পরিবেশে কুকুর, বিড়াল, শৃগাল, গরু,
মাংসাশি বন্যপ্রাণী, বাদুড় প্রধানত বেশি আক্রান্ত হয়। পাগলা কুকুরের দংশনে সৃষ্ট এ রোগে পশুর
কেন্দ্রীয়স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হয়। পশু উন্মাদ ও আক্রমণাত্বক হয় এবং পরবর্তীতে উর্ধমুখী অবশতা বা
প্যারালাইসিস দেখা দেয়। এ রোগে অন্ননালির উপরে অবস্থিত গহŸর অর্থাৎ গলবিল বা
ফ্যারিংসের (চযধৎুহী) পেশির শিথিলতার কারণে পানি গ্রহণ করতে পারে না। এমতাবস্থায়, আক্রান্ত
পশু পানি দেখলে ভয় পায় বলে এ রোগের নাম দেয়া হয়েছে জলাতঙ্ক বা হাইড্রোফোবিয়া
জলাতঙ্ক একটি মারত্মক
ভাইরাসজনিত রোগ।
মানষসহ সকল উ ু ষ্ণ রক্তবাহী
পশু এ রোগে আক্রান্ত হতে
রোগের বিস্তৃতি
জলাতঙ্ক পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই পাওয়া যায়। তবে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, হাওয়াই
দ্বীপপুঞ্জে এ রোগের প্রাদুর্ভাব নেই বললেই চলে।
রোগের কারণ
রেবিস নামক এক প্রকার ভাইরাস এ রোগ সৃষ্টি করে। এ ভাইরাস বুলেট আকৃতির। এর দুটো প্রধান
টাইপ রয়েছে। যথা− স্ট্রিট ভাইরাস ও ফিক্সড ভাইরাস। স্ট্রিট ভাইরাস প্রাকৃতিক পরিবেশে রোগের
সৃষ্টি করে। এ ভাইরাস খুবই বিপদজনক। পক্ষান্তরে, ফিক্সভ ভাইরাস গবেষণাগারে তৈরি করা হয়।
স্ট্রিট ভাইরাস পুনঃপুনঃ মুরগির ভ্রƒণের মধ্যে বংশবৃদ্ধির ফলে ফিক্সড ভাইরাসে পরিণত হয়। এ
ভাইরাসের রোগ সৃষ্টির ক্ষমতা কম বলে প্রতিষেধক বা টিকা তৈরির কাজে ব্যবহৃত হয়।
রেবিস নামক এক প্রকার ভাইরাস জলাতঙ্ক সৃষ্টি করে।
এ ভাইরাস বলেট আকৃতির। ু
সংক্রমণ
আক্রান্ত অথবা ভাইরাস বহনকারী পশু অন্য কোনো পশুকে কামড় দিলে যে ক্ষত সৃষ্টি হয় সে
ক্ষতস্থানে সদ্য নির্গত লালার মাধ্যমে ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করে। আমাদের দেশে প্রধানত পাগলা
কুকুরের কামড়ে জলাতঙ্ক রোগ বিস্তারলাভ করে। বাদুড় এ রোগের জীবাণু বহন করে এবং কোনো
পশুকে কামড়ালে সে পশু জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বাদুড়ে এ ভাইরাস কেন্দ্রীয়স্নায়ুতন্ত্র
আক্রমণ না করে øেহজাতীয় কলাতে বংশবিস্তার করতে পারে। এ অবস্থায় বাদুড় কোনো লক্ষণ প্রকাশ
না করেই শরীরে ভাইরাস বহন করে এবং অন্য কোনো পশুকে কামড় দিলে সহজেই এ রোগ
সংক্রমিত হয়। বন্যপ্রানীর মধ্যে নেকড়ে, হায়েনা, বানর, বেজি, কাঠবিড়ালী প্রভৃতির মাধ্যমেও এ
রোগের বিস্তার ঘটে। শ্বাসনালি ও পৌষ্টিকনালির মাধ্যমে এ রোগ ছড়াতে পারে।
আমাদের দেশে প্রধানত পাগলা কুকুরের কামড়ে জলাতঙ্ক রোগ বিস্তারলাভ করে। গ্রীষ্মের শেষে এবং শরৎকালে জলাতঙ্ক রোগের প্রকোপ বেশি।
গ্রীষ্মের শেষে এবং শরৎকালে জলাতঙ্ক রোগের প্রকোপ বেশি। কারণ, এ সময় কুকুরসহ বন্যপ্রাণীরা
প্রজননের উদ্দেশ্যে তৎপর থাকে বিধায় এদের আচরণ অত্যন্ত ক্ষীপ্ত ও হিংস্র হয়। গবাদিপশু থেকে
জলাতঙ্ক রোগের বিস্তার কদাচিৎ ঘটে। তবে, নগ্ন ক্ষতযুক্ত হাতস্নারা আক্রান্ত পশুর মুখ পরীক্ষাকালে
ক্ষতস্থান লালার সংস্পর্শে আসলে এ রোগ সংক্রমিত হতে পারে।
রোগের বিকাশ
ভাইরাস বহনকারী লালা ক্ষতস্থানে অবস্থিতস্নায়ুর সংস্পর্শে আসে এবং এর মাধ্যমে ভাইরাস
কেন্দ্রীয়স্নায়ুতন্ত্রে পৌঁছে। গবেষণার মাধ্যমে দেখা গেছে, ক্ষতস্থান থেকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে মেরুরজ্জুতে
পৌঁছে এবং ৪−৫ দিনের মধ্যে এর কলাতে সংক্রমিত হয়। মেরুরজ্জুতে পৌঁছার পর ভাইরাস উর্ধমুখে
যাত্রা করে মস্তিষ্কে পৌঁছে। এখান থেকেস্নায়ুর মাধ্যমে ভাইরাস লালাগ্রন্থিতে প্রবেশ করে।
রোগের লক্ষণ
গবাদিপশুর মধ্যে গরুই সর্বাপেক্ষা বেশি আক্রান্ত হয়। জলাতঙ্কে আক্রান্ত প্রাণী কামড়ানোর পর
গরুতে সাধারণত ৩ সপ্তাহের মধ্যে রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। তবে, অধিকাংশ প্রজাতির পশুতে
লক্ষণ প্রকাশের জন্য ২ সপ্তাহ থেকে কয়েকমাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। সকল প্রজাতির পশুই
সাধারণত একই প্রকার লক্ষণ প্রদর্শন করে। এ রোগে আক্রান্ত পশুর আচরণে লক্ষণীয় পরিবর্তন
পরিলক্ষিত হয়। সাধারণত লক্ষণ প্রকাশের প্রথমদিকে উত্তেজনা ও পরে শিথিলতা দেখা দেয়।
শারীরিক তাপমাত্রার কোনো উলে−খযোগ্য পরিবর্তন হয় না। মুখ থেকে লালা নির্গত হয়, ঘন ঘন
প্রস্রাব করে এবং পুরুষ পশুতে সাময়িকভাবে অতিরিক্ত যৌনানুভ‚তি দেখা দেয়। লক্ষণ অনুযায়ী
জলাতঙ্ক প্রধানত দুই প্রকারের হয়ে থাকে। যথা− শিথিল রূপ ও উত্তেজিত রূপ। লক্ষণ অনুযায়ী জলাতঙ্ক
প্রধানত দুই প্রকারের হয়ে থাকে। যথা− শিথিল রূপ ও উত্তেজিত রূপ।
শিথিল ঃ এ প্রকৃতির জলাতঙ্কে গলা এবং চাবানোর জন্য ব্যবহৃত পেশি
অবশ হয়ে যায়। মুখ থেকে প্রচুর লালা নির্গত হয় ও গলধকরণ ক্ষমতা লোপ পায়। কুকুরের নিচের
চোয়াল ঝুলে পড়ে এবং কদাচিৎ দংশন করে। পরবর্তীতে সারা শরীর অবশ হয়ে যায় এবং কয়েক
ঘন্টার মধ্যেই মৃত্যু ঘটে।
শিথিল প্রকৃতির জলাতঙ্কে গলা
এবং চাবানোর জন্য ব্যবহৃত
পেশি অবশ হয়ে যায়।
গরু হাঁটার সময় পিছনের পায়ের স্বাভাবিক ছন্দ হারিয়ে যায়, লেজ নিশ্চল হয়ে পড়ে এবং ডান অথবা বামে স্থানচ্যুত হয়। পিছনের পায়ের অনুভ‚তি কমে যায় এবং দুর্বলতার কারণে হঠাৎ করে মাটিতে
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ৪২
গবাদিপশুর ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ
লুটিয়ে পড়তে পারে। মুখ থেকে সুতাকৃতির লালা নির্গত হয় এবং মটিতে লুটিয়ে পড়ার ৪৮ ঘন্টার
মধ্যে এবং লক্ষণ দেখা দেয়ার ৬−৭ দিনের মধ্যে গরু মারা যায়।
উত্তেজিত ধরনের জলাতঙ্কে আক্রান্ত প্রাণী কান্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলে এবং অত্যন্ত উত্তেজিত ও আক্রমণাতœক
উত্তেজিত রূপ এ ধরনের জলাতঙ্কে আক্রান্ত প্রাণী কান্ডজ্ঞান হারিয়ে ফেলে এবং
অত্যন্ত উত্তেজিত ও আক্রমণাতœক হয়। এসব পশুর চক্ষুতারা প্রসারিত হয় এবং সকল প্রকার ভয়ভীতি
লোপ পায়। এ অবস্থায় কোনো অবসতার লক্ষণ দেখা যায় না। আক্রান্ত কুকুর লক্ষণ প্রকাশের পর
সাধারণত ১০ দিনের বেশি বাঁচে না। তবে, মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত রাস্তাঘাটে মানুষ, গরু, অন্যান্য পশু
এমনকী চলন্ত বস্তুকে দংশন করে। এ পর্যায়ে আক্রান্ত পশু বিষ্ঠা, খড়, লাঠি, পাথর ইত্যাদি অখাদ্য
বস্তু খাওয়ার চেষ্টা করে। এ রোগের আরও বিকাশলাভের সাথে সাথে পেশির সমন্বয়হীনতা এবং
খিঁচুনি পরিলক্ষিত হয়। অবশেষে সারা শরীর অবশ হয়ে পড়ে এবং পশু মারা যায়।
গরুর ক্ষেত্রেও অনেকটা একই ধরনের লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়। আক্রান্ত পশু অতিরিক্ত সতর্ক হয়, শব্দ
ও নড়াচড়াতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখায়। কখনও কখনও অন্য পশু বা কোনো বস্তুকে আক্রমণ করে এবং
উচ্চস্বরে হাম্বা হাম্বা করে। আক্রান্ত ষাঁড় অতিরিক্ত যৌনানুভ‚তির কারণে অন্য পশু অথবা অপ্রাণী বস্তুর
উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ ধরনের লক্ষণ প্রদর্শনের ২৪-৪৮ ঘন্টার মধ্যে অবশতার কারণে পশু হঠাৎ
করে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং কয়েক ঘন্টার মধ্যে মারা যায়।
মানুষের ক্ষেত্রে পাগলা কুকুরে দংশনের ৩০−৬০ দিনের মধ্যে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। তবে
দংশনের পর সর্বনিম্ন ২ সপ্তাহ এবং সর্বোচ্চ ২ বৎসর পরও এ রোগের লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
কেন্দ্রীয়স্নায়ুতন্ত্র থেকে দংশন স্থানের দূরত্বের তারতম্যের কারণে রোগলক্ষণ প্রকাশের সময় প্রভাবিত
হয়। আক্রান্তস্থান মাথার নিকট হলে রোগলক্ষণ তাড়াতাড়ি প্রকাশ পায়। আবার পিছনের পায়ের
নিচের অংশ দংশিত হলে রোগলক্ষণ দেখা দিতে বিলম্ব হয়। জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত মানুষে প্রথমে
মাথা ব্যাথা, ক্ষুধামন্দা ও বমিভাব পরিলক্ষিত হয়। গলা শুকিয়ে আসে, অতিরিক্ত তৃষ্ণা অনুভ‚ত হয়
অথচ পানি পানে অনিহা দেখা দেয়। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে উত্তেজনা ও শারীরিক অবশতা দেখা দেয় এবং এরূপ লক্ষণ দেখা দেয়ার ২−৬ দিনের মধ্যে আক্রান্ত পশু মারা যায়। কেন্দ্রীয়স্নায়ুতন্ত্র থেকে দংশন স্থানের দরূ ত্বের তারতম্যের কারণে রোগলক্ষণ পক্র াশের সময় প্রভাবিত হয়।
মৃত্যুর কারণ
দংশনের পর ভাইরাসস্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে যতই উর্ধমুখে উঠতে থাকে ততইস্নায়ুকোষ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়
এবং ফলশ্রæতিতে শরীরে অবশতা পরিলক্ষিত হয়। এ জীবাণুর আক্রমণ মস্তিষ্কে পৌঁছলে উন্মাদনা,
উত্তেজনা, ক্ষিপ্রতা ও খিঁচুনি দেখা দেয়। মস্তিষ্কে শ্বসন কাজের জন্য নির্ধারিতস্নায়ুকোষসমূহ ধ্বংস হলে
শ্বসনকার্য বন্ধ হয়ে পশু মারা যায়।
রোগ নির্ণয়
জলাতঙ্ক রোগ নির্ণয় করা বেশ কঠিন এবং বিপদসংকুল। কেননা এ রোগ মানুষে সংক্রমিত হতে
পারে। আক্রান্ত পশুর লক্ষণ দেখে সাধারণত রোগ নির্ণয় করা হয়। তবে, মালিক অথবা পালক কর্তৃক
পাগলা কুকুরে দংশনের অভিযোগ থাকলে এ রোগ সম্পর্কে অনেকটা নিশ্চিত হওয়া যায়। দংশনকারী
কুকুরবিড়ালকে ১০ দিন পর্যন্ত আটক রাখা হলে যদি জলাতঙ্কের লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে উক্ত প্রাণী
মেরে তার মস্তিষ্ক গবেষণাগারে পরীক্ষা করে এ রোগের উপস্থিতি নির্ণয় করা যায়। ফ্লোরোসেন্ট
অ্যান্টিবডি স্টেইনিং টেকনিক এর মাধ্যমে কয়েক
ঘন্টার মধ্যে এ রোগ নিশ্চিতভাবে নির্ণয় করা যায়। এক্ষেত্রে মৃত পশুর মাস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস
অথবা মেডুলা অবল্যাংগাটা ( থেকে ইমপ্রেশন স্মিয়ার ) তৈরি করা হয়।
জলাতঙ্ক রোগ নির্ণয় করা বেশ কঠিন এবং বিপদসংকুল। কেননা এ রোগ মানুষে সংক্রমিত হতে পারে। আক্রান্ত পশুর লক্ষণ দেখে সাধারণত রোগ নিণয় করার্ হয়। জলাতঙ্কের লক্ষণ একবার দেখা দিলে অবধারিত পরিনতি মৃত্যু।
রোগের পরিণতি
জলাতঙ্ক একটি মারত্মক জীবনহরণকারী রোগ। এ রোগের লক্ষণ একবার দেখা দিলে অবধারিত পরিনতি মৃত্যু।ধ
চিকিৎসা
জলাতঙ্ক ভাইরাসজনিত রোগ হওয়ায় এর কোনো কার্যকর চিকিৎসা নেই। তবে, দংশনের পরপরই
ক্ষতস্থান ২০% কোমল সাবান পানি উত্তমরূপে ধৌত করলে উপকার পাওয়া যায়। রোগের লক্ষণ
দেখা দেয়ার পর টিকার কোনো কার্যকারিতা থাকে না। তবে, জলাতঙ্ক আক্রান্ত কুকুর কোনো পশুকে
দংশন করলে অনতিবিলম্বে এ রোগের প্রতিষেধক ব্যবহার করে জীবন রক্ষা করা যায়।
জলাতঙ্ক ভাইরাসজনিত রোগ হওয়ায় এর কোনো কার্যকর চিকিৎসা নেই।
রোগ নিয়ন্ত্রণ
রাস্তাঘাটের যাবতীয় বেওয়ারিশ কুকুরবিড়াল মেরে ফেলতে হবে। সকল পোষা কুকুরবিড়ালকে
যথারীতি প্রতিষেধক দিতে হবে। বনেজঙ্গলে অবস্থানরত সংক্রমণকারী প্রাণী, যেমন− নেকড়ে,
হায়েনা, বানর, শিয়াল, বেজি, কাঠবিড়ালী যথাসম্ভব মেরে ফেলতে হবে। ইউরোপে বন্যপ্রাণীর মধ্যে
শিয়াল ৮৫% রোগ সংক্রমিত করে। আমাদের দেশেও এ রোগ বিস্তারে কুকুরের পরেই শিয়ালের
স্থান। কাজেই এ রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য শিয়াল নিধন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা একটা দুরূহ কাজ বিধায় এ রোগের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ অনেকটা অসম্ভব।
জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণের জন্য অবিলম্বে বিদেশ থেকে আগত কুকুরবিড়ালের জন্য কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা
চালু করা প্রয়োজন। এ ব্যবস্থায়, বিদেশ থেকে আসা সকল কুকুরবিড়ালকে ৩−৬ মাস পর্যন্ত
পৃথকভাবে রাখা হয়। এ সময়ের মধ্যে জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ না দেখা দিলে ঐসব পশুকে দেশের
অভ্যন্তরে নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়। দ্বীপরাষ্ট্রের জন্য কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা কার্যকর। কিন্তু যেসব
দেশের মধ্যে সাধারণ স্থলসীমা বিদ্যমান সেসব দেশে এ ব্যবস্থা রোগ নিয়ন্ত্রণে তেমন ভ‚মিকা রাখে
না। টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে এ রোগের বিস্তার সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। বাংলাদেশে জলাতঙ্ক
রোগের জন্য দুপ্রকার টিকা বা ভ্যাকসিন রয়েছে। লেপ টিকা
কুকুরে ও হেপ টিকা গবাদিপশুতে প্রয়োগ করা হয়। এসব টিকা
প্রয়োগ করলে পশু এক বৎসর পর্যন্ত জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।
এদেশে জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ
করতে অবিলম্বে বিদেশ থেকে
আগত ককুরবিড় ু ালের জন্য
কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা চালু
করা প্রয়োজন।
টিকা পয়োগের ্র মাধ্যমে
জলাতঙ্কের বিস্তার সহজেই
নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
অনুশীলন ঃ জলাতঙ্ক রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য আপনি কী কী কৌশল গ্রহণ করবেন তা
খাতায় লিখুন।
সারমর্ম ঃ জলাতঙ্ক একটি মারত্মক ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ। এ রোগের লক্ষণ একবার প্রকাশ
পেলে মৃত্যু অবধারিত। মানুষসহ সকল উষ্ণ রক্তবাহী পশু জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এ
রোগ প্রধানত পাগলা কুকুরশিয়ালের দংশনে সংক্রমিত হয়। আক্রান্ত পশু প্রথমে উত্তেজিত ও
আক্রমণত্মক হয়। পরবর্তীতে উর্ধ্বমুখী প্যারালাইসিসের কারণে পশু নিশ্চল হয়ে পড়ে এবং এক
পর্যায়ে মৃত্যুবরণ করে। পাগলা কুকুরে কামড়ানোর অভিযোগ ও আক্রান্ত পশুর লক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে
এ রোগ নির্ণয় করা যায়। লক্ষণ প্রকাশের পর এ রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। তবে, কুকুরে
কামড়ানোর পরপরই অ্যান্টির‌্যাবিস ভ্যাকসিন প্রয়োগের মাধ্যমে জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
রাস্তাঘাটের কুকুরশিয়াল নিধন ও নিয়মিত টিকা প্রদানের মাধ্যমে এ রোগের বিস্তার অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
" পাঠোত্তর মূল্যায়ন ২.৩ ১। সঠিক উত্তরের পাশে টিক চিহ্ন (৩) দিন। ক. জলাতঙ্ক ভাইরাস শরীরে প্রবেশের পর কোন্ বিশেষ অংশে আক্রমণ করে? র) মাংশপেশি রর) অন্ডকোষথলি ররর) কেন্দ্রীয়স্নায়ুতন্ত্র রা) ফুসফুস খ. জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত পশুর পরিণতি কী হয়? র) পাগল হয় রর) দীর্ঘজীবী হয় ররর) আরোগ্য লাভ করে রা) অবধারিত মৃত্যু ২। সত্য হলে ‘স’ এবং মিথ্যা হলে ‘মি’ লিখুন। ক. বিড়াল জলাতঙ্ক বিস্তারে প্রধান ভ‚মিকা পালন করে। খ. জলাতঙ্ক রোগে নিম্নমুখী প্যারালাইসিস দেখা দেয়। ৩। শূণ্যস্থান পূরণ করুন। ক. থথথথ ব্যবহার করে জলাতঙ্ক রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা যায়। খ. গবেষণাগারে তড়িৎ রোগ নির্ণয় পদ্ধতির নাম থথথথথথথথ অ্যান্টিবডি স্টেইনিং টেকনিক। ৪। এক কথা বা বাক্যে উত্তর দিন। ক. জলাতঙ্ক ভাইরাসের প্রধান দুটো টাইপের নাম কী? খ. জলাতঙ্ক রোগের প্রধান দুটো রূপের নাম কী? কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন স্কুল ৪৫ গবাদিপশুর রোগ ও প্রতিরোধ চ‚ড়ান্ত মূল্যায়ন − ইউনিট ২ সংক্ষিপ্ত ও রচনামূলক প্রশ্ন ১। ক্ষুরারোগ কী? ২। গরুতে কীভাবে ক্ষুরারোগ বিকাশলাভ করে? ৩। কীভাবে আক্রান্ত গরুতে ক্ষুরারোগ নির্ণয় করা হয়? ৪। ক্ষুরারোগের নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিসমূহ লিখুন। ৫। ক্ষুরারোগের কারণে কৃষক কীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হন? ৬। গরু ও মহিষের বসন্ত রোগের বৈশিষ্ট্য কী? ৭। গরু ও মহিষের বসন্ত কীভাবে পশুতে সংক্রমিত হয়? ৮। ছাগল ও ভেড়ার বসন্তের লক্ষণসমূহ বর্ণনা করুন। ৯। কীভাবে ছাগল ও ভেড়ার বসন্ত রোগের চিকিৎসা করবেন? ১০। জলাতঙ্ক নামকরণের ভিত্তি কী? ১১। জলাতঙ্ক রোগের কারণ বর্ণনা করুন। ১২। জলাতঙ্কের শিথিল ও উত্তেজিত রূপের বৈশিষ্ট্য লিখুন। ১৩। জলাতঙ্কের ফলে কীভাবে পশুর মৃত্যু হয়? ১৪। কীভাবে জলাতঙ্ক রোগ নির্ণয় করা হয়? ১৫। জলাতঙ্ক রোগ নিয়ন্ত্রণের উপায়সমূহ সংক্ষেপে লিখুন। উত্তরমালা − ইউনিট ২ পাঠ ২.১ ১। ক. রর ১। খ. ররর ২। ক. স ২। খ. স ৩। ক. ফুট ৩। খ. চার ৪। ক. দুই ক্ষুরের মধ্যবর্তী স্থান এবং ক্ষুর-ত্বকের সন্ধিস্থলে ৪। খ. গলকম্বলের ত্বকের নিচে পাঠ ২.২ ১। ক. র ১। খ. ররর ২। ক. মি ২। খ. মি ৩। ক. হাতের ৩। খ. টিকা ৪। ক. অন্ডকোষথলির ত্বকে ৪। ক. পক লিশন (চড়পশ খবংরড়হ) পাঠ ২.৩ ১। ক. ররর ১। খ. রা ২। ক. মি ২। ক. মি ৩। ক. টিকা ৩। খ. ফ্লোরেসেন্ট ৪। ক. স্ট্রিট ও ফিক্সড ৪। খ. শিথিল ও উত্তেজিত

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]