.
১. মনে মনে পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যমে আল্লাহর ইবাদত করার
উদ্দেশ্য বা নিয়্যাত করুন।
২. মিসওয়াক, ব্রাশ বা অনুরূপ কিছু দ্বারা দাঁত ও মুখের অভ্যন্তর
পরিষ্কার করুন।
৩. “বিসমিল্লাহ” বা “আল্লাহর নামে শুরু করছি” বলুন।
৪. দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত তিন বার ধৌত করুন।
৫. ডান হাতে মুখের মধ্যে পানি দিয়ে তিন বার ভালভাবে কুলি
করুন।
৬. ডান হাত দিয়ে নাকের মধ্যে পানি দিন এবং পানি নাকের
মধ্যে টেনে নিয়ে বাম হাতের দ্বারা ভালভাবে নাকের অভ্যন্তর
পরিষ্কার করুন এবং নাক ঝেড়ে ফেলুন।
৭. কপালের চুলের গোড়া থেকে থুতনির শেষ প্রান্ত পর্যন্ত এবং
এক কান থেকে অপর কান পর্যন্ত সম্পূর্ণ মুখমÐল ভালভাবে
তিনবার ধুয়ে নিন। দাড়ির ভিতরে আঙুল দিয়ে পানি প্রবেশ
করিয়ে নাড়াচাড়া করুন।
৮. কনুই সহ ডান হাত তিন বার ভালভাবে ধৌত করুন। বাম
হাতের আঙুল ডান হাতের আঙুলের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে
নাড়াচাড়া করুন।
৯. উপরে বর্ণিত একই নিয়মে কনুই সহ বাম হাত তিন বার ধুয়ে
নিন।
১০. ভিজে হাত দিয়ে সম্পূর্ণ মাথা একবার মুছে নিন। দুহাত দিয়ে
মাথার সম্মুখভাগ থেকে মুছতে শুরু করুন। একবারে ঘাড়
পর্যন্ত মোছার পর আবার হাতদুটো আগের স্থানে ফিরিয়ে
আনুন। হাতের ভিজে আঙুল দিয়ে কানের ভিতরে ও বাইরে
মুছে নিন।
১১. পায়ের গোড়ালির উপরের উঁচু হাড় বা টাখনু সহ ডান পা
তিনবার ধুয়ে নিন। পায়ের আঙুলের মধ্যে হাতের আঙুল
প্রবেশ করিয়ে নাড়াচাড়া করে আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে
ভালভাবে পানি যেতে সাহায্য করুন।
১২. উপরের একই নিয়মে বাম পা তিনবার ধুয়ে নিন।
১৩. অযুর পরে বলুন:
উচ্চারণ: আশহাদু আল্ লা- ইলা-হা, ইল্লাল্লা-হু ওয়া‘হদাহু
লা- শারীকা লাহু, ওয়া আশহাদু আন্না মু‘হাম্মাদান ‘আবদুহু ওয়া
রাসূলুহু। আল্লা-হুম্মাজ্ ‘আলনী, মিনাত তাওয়া-বীন, ওয়াজ্
‘আলনী মিনাল মুতাতাহ্ হিরীন।
অর্থ: “আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো
উপাস্য নেই তিনি একক, তাঁর কোনো শরীক নেই। এবং সাক্ষ্য
প্রদান করছি যে, মুহাম্মাদ তাঁর বান্দা ও রাসূল। “হে আল্লাহ
আপনি আমাকে তাওবাকারীগণের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং যারা
গুরুত্ব ও পূর্ণতা সহকারে পবিত্রতা অর্জন করেন আমাকে তাঁদের
অন্তর্ভুক্ত করুন।”
রাসূলুল্লাহ বলেছেন, “যদি কেউ সুন্দরভাবে[১৯] এবং
পরিপূর্ণভাবে অযু করে এরপর উক্ত যিক্র পাঠ করে তাহলে
জান্নাতের আটটি দরজাই তাঁর জন্য খুলে দেওয়া হবে, সে যে
দরজা দিয়ে ইচ্ছা করবে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে।”
১. ১. ৫. অযু নষ্ট হওয়ার কারণ ও অযু বিষয়ক ভুলভ্রান্তি
একবার অযু করলে সেই অযু নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত একাধিক
সালাত আদায় করা যায়। নি¤েœর কোন একটি কাজ করলে অযু
ভেঙে যাবে বা নষ্ট হয়ে যাবে এবং সালাত আদায়ের জন্য নতুন
করে অযু করা দরকার হবে:
১. পেশাব বা পায়খানার পথ দিয়ে কোন কিছু বেরিয়ে আসা। এ
দু’স্থান থেকে পেশাব, পায়খানা, বীর্য, বায়ু বা অন্য যা কিছুই
বের-হোক তাতে অযু ভেঙে যাবে।
২. গভীর ঘুম যাতে মানুষ নিজের সম্পর্কে স্বাভাবিক অনুভূতি
হারিয়ে ফেলে। সাধারণভাবে শুয়ে বা হেলান দিয়ে ঘুমালে
অযু নষ্ট হয়। বসে বসে তন্দ্রাতে অযু নষ্ট হয় না।
৩. জ্ঞান হারানো। পাগলামি, অসুস্থতা, মাদকতা বা অন্য কারণে
জ্ঞান হারালে অযু ভেঙে যাবে।
৪. ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করা। ঈমান নষ্ট হয় এমন কোন কথা
বললে, বিশ্বাস করলে বা ইসলামের মৌলিক কোন বিষয়ে
[১৯]. সহীহ মুসলিম, হাদীস-২৩৪, সুনান তিরমিযি, হাদীস-৫৫।
সন্দেহ পোষণ করলে সে ইসলাম ত্যাগী বলে গণ্য হবে এবং
তার অযু নষ্ট হয়ে যাবে। এমতাবস্থায় তাকে পুনরায় ইসলাম
গ্রহণ করতে হবে এবং সালাত ইত্যাদির প্রয়োজনে নতুন
করে অযু করতে হবে।
৫. রক্তপাত হলে। মুখভরে বমি করলে।
সন্দেহ বা ওয়াসওয়াসার জন্য অযু যাবে না। উপরের
কোন কারণ ঘটেছে বলে নিশ্চিত হলেই পুনরায় অযু করতে হবে।
অনেক মুসলিম অজ্ঞতার কারণে অযুর সময় এমন কিছু
কাজ করেন যা রাসূলুল্লাহ করেন নি বা তাঁর সুন্নাতের খেলাফ।
এতে মুমিন সুন্নাত অনুসারে আমলের সাওয়াব থেকে বঞ্চিত হন
বা গোনাহগার হন। যেমন:
১. মুখে নিয়্যাত উচ্চারণ করা। নিয়্যাত অর্থ ইচ্ছা। মনের মধ্যে
ইচ্ছা পোষণ করতে হয়। মুখে উচ্চারণ অর্থহীন ও সুন্নাতের
খেলাফ।
২. অতিরিক্ত পানি ব্যবহার করা বা পানির অপচয় করা। রাসূলুল্লাহ
এক সেরের চেয়ে কম পানি দিয়ে অযু করতেন।
৩. অযুর কোন স্থান শুকনো রয়েছে কিনা এ ব্যাপারে সতর্ক না
হওয়া।
৪. ওয়াসওসার কারণে বারবার অযু করা বা অযুর সময় তিনবারের
বেশী কোন অঙ্গ ধোয়া।