নামাজের ফরজ কয়টি নামাজের বাইরে ফরজ কয়টি নামাজের ভিতরে ফরজ কয়টি নামাজের ওয়াজিব কয়টি নামাজের সুন্নত কয়টি


নামাজের ফরজ কয়টি ও কি কি? নামাজের ওয়াজিব কয়টি?
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে নামাজের ফরজ কয়টি ও কি কি, নামাজের ওয়াজিব কয়টি, নামাজের সুন্নত কয়টি।
নামাজের ফরজ কয়টি
সালাত বা নামাজের ফরজ বা রুকন ১৫টি। যার মধ্যে ৮টি ফরজ নামাজের বাইরে এবং ৭টি ফরজ নামাজের ভেতরে। এগুলি নামাজের অপরিহার্য বিষয়। যা ইচ্ছাকৃত বা ভুলক্রমে পরিত্যাগ করলে নামাজ বাতিল হয়ে যায়। 

নামাজের বাইরে ফরজ কয়টি
নামাজের বাইরে ৮টি ফরজ, যেগুলিকে বলা হয় নামাজের আহকাম বা শর্ত। যা হলো-

(১) শরীর পাক হওয়া [সুরা মায়িদা, আয়াত ৬; তিরমিজি, হাদিস : ১, ৩ (হাদিসটি হাসান)]

(২) কাপড় পাক হওয়া [সুরা মুদ্দাসসির, আয়াত ৪; তিরমিজি, হাদিস : ১, ৩ (হাসান)]

(৩) নামাজের জায়গা পাক হওয়া [সুরা বাকারা, আয়াত : ১২৫; তিরমিজি, হাদিস : ১, ৩ (হাসান)]

(৪) ওযু-গোসল বা তায়াম্মুমের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা [মায়েদা ৬]

(৫) সতর ঢাকা। সালাতের সময় পুরুষের জন্য দুই কাঁধ ও নাভি হতে হাটু পর্যন্ত এবং মহিলাদের দুই হাতের তালু ও চেহারা ব্যতীত মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত সর্বাঙ্গ সতর হিসেবে ঢাকা। [মিশকাত হা/৭৫৫, সূরা নূর ২৪/৩১]

(৬) কিবলামুখী হওয়া [বাক্বারাহ ২/১৪৪]

(৭) ওয়াক্ত হওয়া [নিসা ৪/১০৩]

(৮) সালাতের নিয়ত বা সংকল্প করা [বুখারী ও মিশকাতের প্রথম হাদীস]

নামাজের ভিতরে ফরজ কয়টি
নামাজের ভেতরে ৭টি ফরজ, যেগুলিকে বলা হয় নামাজের আরকান বা স্তম্ভ। যা হলো-

(১) কিয়াম বা দাঁড়ানো
আল্লাহ বলেন, আর তোমরা আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠ চিত্তে দাঁড়িয়ে যাও। (বাক্বারা ২/২৩৮) 

(২) তাকবীরে তাহরীমা
অর্থাৎ আল্লাহু আকবর বলে দুই হাত কাঁধ অথবা কান পর্যন্ত উঠানো। আল্লাহ বলেন, তোমার প্রভুর জন্য তাকবীর দাও। (মুদ্দাসসির ৭৪/৩)। অর্থাৎ তার বড়ত্ব ঘোষণা কর। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, সালাতের জন্য সবকিছু হারাম হয় তাকবীরের মাধ্যমে এবং সবকিছু হালাল হয় সালাম ফিরানোর মাধ্যমে। (আবু দাউদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৩১২)

(৩) সূরায়ে ফাতিহা পাঠ করা
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, ঐ ব্যক্তির ছালাত সিদ্ধ নয়, যে ব্যক্তি সূরায়ে ফাতিহা পাঠ করে না। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৮২২)

(৪) রুকু করা
আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা রুকু কর ও সিজদা কর। (হজ্জ ২২/৭৭)। 

(৫) সিজদা করা
আল্লাহ বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা রুকু কর ও সিজদা কর। (হজ্জ ২২/৭৭)। 

(৬) তাদীলে আরকান বা ধীর-স্থির ভাবে নামাজ আদায় করা
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, জনৈক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে নামাজ আদায় শেষে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে সালাম দিলে তিনি তাকে সালামের জওয়াব দিয়ে বলেন, তুমি ফিরে যাও এবং সালাত আদায় কর। কেননা তুমি সালাত আদায় করনি। এভাবে লোকটি তিনবার সালাত আদায় করল ও রাসূল (ছাঃ) তাকে তিনবার ফিরিয়ে দিলেন। তখন লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! যিনি আপনাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন, তাঁর কসম করে বলছি, এর চাইতে সুন্দরভাবে আমি সালাত আদায় করতে জানিনা। অতএব দয়া করে আপনি আমাকে সালাত শিখিয়ে দিন! (অতঃপর তিনি তাকে ধীরে-সুস্থে ছালাত আদায় করা শিক্ষা দিলেন)। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৭৯০, ‘সালাতের বিবরণ’ অনুচ্ছেদ-১০)।

(৭) কাদায়ে আখিরাহ বা শেষ বৈঠক
হযরত উম্মে সালামা (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ)-এর যামানায় মহিলাগণ জামাতে ফরজ নামাজ শেষে সালাম ফিরানোর পরে উঠে দাঁড়াতেন এবং রাসূল (ছাঃ) ও পুরুষ মুসল্লিগণ কিছু সময় বসে থাকতেন। অতঃপর যখন রাসূল (ছাঃ) দাঁড়াতেন তখন তারাও দাঁড়াতেন। (বুখারী, মিশকাত হা/৯৪৮ তাশাহুদে দোয়া অনুচ্ছেদ-১৭)

এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, শেষ বৈঠকে বসা এবং সালাম ফিরানােটাই ছিল রাসূল (সাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরামের নিয়মিত সুন্নাত। প্রকাশ থাকে যে, কঠিন অসুখ বা অন্য কোন বাস্তব কারণে অপারগ অবস্থায় উপরোক্ত শর্তাবলী ও রুকন সমূহ ঠিকমত আদায় করা সম্ভব না হলে বসে বা শুয়ে ইশারায় নামাজ আদায় করবে। (বুখারী; মিশকাত হা/১২৪৮)। কিন্তু জ্ঞান থাকা পর্যন্ত কোন অবস্থায় নামাজ মাফ নেই। 

নামাজের ওয়াজিব কয়টি
ফরজ এর পরেই ওয়াজিবের স্থান, যা আবশ্যক। যা ইচ্ছাকৃতভাবে তরক করলে নামাজ বাতিল হয়ে যায়; এবং ভুলক্রমে তরক করলে ‘সিজদায়ে সাহু’ দিতে হয়। সালাতের ওয়াজিব ৮টি। যা হলো-

১. তাকবীরে তাহরীমা ব্যতীত অন্য সকল তাকবীর বলা। (বুখারী, মুসলিম ও অন্যান্য, মিশকাত হা/৭৯৯, ৮০১)

২. রুকুতে তাসবিহ পড়া। কমপক্ষে সুবহা-না রব্বিয়াল ‘আযীম’ বলা। (নাসাঈ, আবু দাউদ তিরমিযী, মিশকাত হা/৮৮১ রুকূ অনুচ্ছেদ-১৩)

৩. কওমার সময় সামিআল্লাহ-হুলিমান হামিদাহ বলা। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/ ৮৭০, ৭৪, ৭৫, ৭৭)

৪. কওমার দো’আ কমপক্ষে রব্বানা লাকাল হামদ’ অথবা ‘আল্লা-হুম্মা  রব্বানা লাকাল হামদ’ বলা। (বুখারী হা/৭৩২-৩৫, ৭৩৮; মুসলিম হা/৯০৪, ৯১৩।

৫. সিজদায় গিয়ে তাসবিহ পড়া। কমপক্ষে সুবহা-না রাব্বিয়াল আ’লা’ বলা। (নাসাঈ, আবু দাউদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/ ৮৮১)

৬. দুই সিজদার মাঝখানে স্থির হয়ে বসা ও দো‘আ পাঠ করা। যেমন কমপক্ষে রব্বিগফিরলী’ ২ বার বলা। (ইবনু মাজাহ হা/৮৯৭; আবুদাউদ হা/৮৫০)

৭. প্রথম বৈঠকে বসা ও তাশাহুদ পাঠ করা। (মিশকাত হা/৯০৯)

৮. সালামের মাধ্যমে নামাজ শেষ করা। (আবু দাউদ, তিরমিযী, মিশকাত হা/৩১২)

নামাজের সুন্নত কয়টি
ফরজ ও ওয়াজিব ব্যতীত ছালাতের বাকি সব আমলই সুন্নাত। যেমন-

(১) জুমার ফরজ নামাজ ব্যতীত দিবসের সকল নামাজ নীরবে ও রাত্রির ফরজ নামাজ সমূহ সরবে পড়া

(২) প্রথম রাকাতে কিরাতের পূর্বে আউযুবিল্লাহ চুপে চুপে পাঠ করা

(৩) সালাতে পঠিতব্য সকল দোয়া পাঠ করা

(৪) বুকে হাত বাঁধা 

(৫) রাফউল ইয়াদাইন করা 

(৬) আমীন বলা 

(৭) সিজদায় যাওয়ার সময় মাটিতে আগে হাত রাখা 

(৮) জালসায়ে ইস্তিরাহাত করা 

(৯) মাটিতে দুই হাতে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ানো 

(১০) সালাতে দাঁড়িয়ে সিজদার স্থানে নজর রাখা 

(১১) তাশাহুদের সময় ডান হাত ৫৩ এর ন্যায় মুষ্টিবদ্ধ করা ও শাহাদাত আঙ্গুল নাড়াতে থাকা; এছাড়া ফরয ওয়াজিবের বাইরে সকল বৈধ কর্মসমূহ। 

নামাজের ফরজ কয়টি ও কি কি, নামাজের ফরজ ১৩ টি কি কি, নামাজের ফরজ সমূহ, নামাজের ফরজ ও ওয়াজিব সমূহ, নামাজের ফরজ ১৪টি, নামাজের ফরজ এবং ওয়াজিব, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফরজ কয়টি, নামাজের ফরজ ও ওয়াজিব কয়টি ও কি কি, নামাজের ফরজ কয়টি ও কী কী, নামাজের ভিতরে ফরজ কয়টি, নামাজের বাইরে ফরজ কয়টি, নামাজের ভিতরে বাহিরে ফরজ কয়টি, নামাজের বাইরের ফরজ কয়টি, নামাজের মধ্যে ফরজ কয়টি ও কি কি, নামাজের বাহিরের ফরজ কয়টি, নামাজের ওয়াজিব কয়টি, সালাতের ফরজ কয়টি
সালাতের ওয়াজিব কয়টি ও কী কী, নামাজের আহকাম ও আরকান সমূহ, নামাজের আহকাম আরকান, নামাজের আহকাম কয়টি, নামাজের আহকাম আরকান কয়টি, নামাজের আহকাম ও আরকান কয়টি, নামাজের শর্তাবলী, নামাজের আরকান আহকাম, নামাজের আরকান আহকাম কয়টি, নামাজের আরকান কয়টি, নামাজের আরকান ও আহকাম সমূহ, নামাজের আরকান ও আহকাম কয়টি ও কি কি, নামাজের রুকন কয়টি ও কি কি, নামাজের ওয়াজিব, নামাজের সুন্নত কয়টি, নামাজের সুন্নাত সমূহ, নামাজের ওয়াজিব কয়টি, 

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]