আমের ইবনে রবীয়াতা হইতে বর্ণিত হইয়াছে, ফজারা বংশের একটি মেয়ে এক জোড়া জুতার বিনিময়ে বিবাহ করিল। তখন রাসূলে করীম (স) তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেনঃ তুমি কি তোমার মনের ও তোমার ধন-সম্পদের দিক দিয়া দুইখানি জুতার বিনিময়ে বিবাহ করিতে রাযী হইতে পারিয়াছ? মেয়েটি বলিলঃ হ্যাঁ, তখন নবী করীম (স) এই বিবাহকে বৈধ ঘোষণা করিলেন।
(তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ)
ব্যাখ্যাঃ একজোড়া জুতার বিনিময়ে বিবাহ হওয়া ও স্বয়ং নবী করীম (স) কর্তৃক উহা বৈধ ঘোষিত হওয়ার কথা হাদীসটিতে বলা হইয়াছে। ইহা হইতে অনেকে প্রমাণ করিতে চাহিয়াছেন যে, অতীব নগণ্য-সামান্য মূল্যের জিনিসও বিবাহের ‘মহরানা’ হইতে পারে এবং এই ধরনের বিবাহ সম্পূর্ণ জায়েয। কিন্তু সনদের দিক দিয়া এই হাদীসটি যয়ীফ। অবশ্য ইমাম তিরমিযী ইহাকে ‘সহীহ হাসান’ বলিয়াছেন।
এই পর্যায়ে হযরত উমর, আবূ হুরাইরা, সহল ইবনে সায়াদ, আবূ সায়ীদ খুদরী, আনাস, আয়েশা, জাবির ও আবূ হাদরাদ আল-আসলামী প্রমুখ সাহাবী হইতে বহু সংখ্যক হাদীস বর্ণিত ও গ্রন্হসমূহে উদ্ধৃত হইয়াছে।
হযরত আবূ হুরায়রা (রা) হইতে বর্ণিত হাদীসে বলা হইয়াছে, এক ব্যক্তি রাসূলে করীম (স)-এর নিকট আসিল ও বলিলঃ আমি আনসার বংশের একটি মেয়ে বিবাহ করিয়াছি। নবী করীম (স) জিজ্ঞাসা করিলেনঃ
****************************************
কত দিয়া তুমি বিবাহ করিলে?
অর্থাৎ বিবাহে মহরানা কত ধার্য করিলে? লোকটি বলিলঃ চার আউকিয়া (‘আউকিয়া- তদানীন্তন) আরব সমাজের একটি বিশেষ মুদ্রা পরিমাণ)
হযরত আনাসের বর্ণনায় বলা হইয়াছে, নবী করীম (স) হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা)-এর গায়ে হলূদ রঙ দেখিতে পাইলেন। তিনি তাহাকেঁ জিজ্ঞাসা করিলেনঃ ইহা কি? তিনি বলিলেনঃ
****************************************
স্বর্ণের এক রত্তি পরিমাণের মহরানা দিয়া আমি সম্মতি একটি মেয়ে বিবাহ করিয়াছি।
নবী করীম (স) বলিলেন ********************* ‘আল্লাহ তোমার এই বিবাহে বরকত দান করুন’। স্বর্ণের উপরোক্ত পরিমাণের মূল্য তখনকার সময়ে ছিল পাঁচ দিরহাম; কিংবা এক দীনারের এক চতুর্থাংশ।
এই সব হাদীস ও এই ধরনের আরও বহু শত হাদীস হইতে জানা যায় যে, বিবাহে মহরানা ধার্য করিতে হইবে। মহরানা ব্যতীত বিবাহ সহীহ হইতে পারে না।
কুরআন মজীদে বিবাহে স্ত্রীর প্রাপ্য হিসাবে মহরানার উল্লেখ হইয়াছে বহু কয়টি আয়াতে। এই পর্যায়ে প্রথম উল্লেখ্য আয়াতটি এইঃ
****************************************
যে সব মেয়েলোক পরস্ত্রী- তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যে সব মেয়ে লোকের মালিক হইয়াছে তাহাদের ছাড়া- সকলেই হারাম। ইহা আল্লাহর তরফ হইতে তোমাদের প্রতি লিখিয়া দেওয়া ফরমান। ইহাদের ছাড়া অন্যান্য সব মেয়েলোক তোমাদের জন্য হালাল করা হইয়াছে এই শর্তে যে, তোমরা তাহাদিগকে তোমাদের ধন-মালের বিনিময়ে পাইতে চাহিবে পবিত্রতা রক্ষাকারী বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে, ব্যভিচারী রূপে নয়। পরস্তু তোমরা তাহাদের মধ্য হইতে যাহাদের নিকট যৌন-সঙ্গম স্বাদ-আস্বাদন করিবে, তাহাদিগকে নির্ধারিত পরিমাণ ‘পারিশ্রমিক’ দাও।
(আন-নিসা-২৪)
আয়াতে ******* (বলিয়া ) ঘোষণা করা হইয়াছে যে, স্ত্রী গ্রহণ করিতে হইবে ধন-মালের বিনিময়ে। এই ধন-মাণ দিতে হইবে বিবাতে মহরানা স্বরূপ, কেবলমাত্র অর্থদানই নয়, নির্দিষ্ট পরিমাণ মহরানা দেওয়াই বিধেয়। আয়াতের শেষের দিকে বলা হইয়াছেঃ ************ ইহাতে ধার্যকৃত মহরানা আদায় করিয়া দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হইয়াছে। কুরআনের এই আয়াতে মহরানাকে ****** বলা হইয়াছে। কেননা উহা কার্যতঃ ************* ‘স্ত্রী সঙ্ম স্বাদ-আস্বাদনের বিনিময় মূল্য’।
কিন্তু ইহা কিসের বিনিময় মূল্যঃ বলা হইয়াছে, ইহা স্ত্রীর যৌন অঙ্গ সম্ভোগের বিনিময় মূল্য। কেননা মুনাফা স্বরূপ যাহা পাওয়া যায় তাহাই মজুরী, পারিশ্রমিক বা ******** অবশ্য কেহ কেহ বলিয়াছেন, ইহা স্ত্রী সঙ্গম হালাল হওয়ার বিনিময় মূল্য। অন্যরা বলিয়াছেন, স্ত্রী সমস্ত দেহের বিনিময় মূল্য হইয়াছে তাহাদে দেওয়া মহরানা। আসলে স্ত্রীর দেহ মন ও যৌন অঙ্গ সম্ভোগ, স্বাদ গ্রহণ- এই সব কিছুর বিনিময় মূল্য এই মহরানা।
(************************)
আল্লামা আবূ বকর আল-জাসসাস লিখিয়াছেনঃ এই আয়াত অনুযায়ী বিবাহের আকদ মুবাহ ও জায়েয হইবে স্ত্রী অঙ্গ ব্যবহারের বিনিময় মূল্য আদায় করিয়া দেওয়ার শর্তে। এবং তাহা কোন মাল-সম্পদ (kind) হইতে হইবে। ইহা হইতে দুইটি কথা জানা গেল। একটি এই যে, স্ত্রীর যৌন অঙ্গেন বিনিময় মূল্য দেওয়া ওয়াজিব। যে জিনিসের বিনিময়ে স্ত্রীর যৌন অঙ্গের স্বাদ গ্রহণ হালাল হয় তাহা তাহাকে দিয়া দিতে হইবে। আর দ্বিতীয় কথা, মহরানা হইতে হইবে এমন যাহা জিনিস বা kind পর্যায়ে গণ্য হইতে পারে। যাহা মাল-সম্পদ নয়, তাহা মহরানা হইতে পারে না।
(************)
দ্বিতীয় উল্লেখ্য আয়াত হইলঃ
****************************************
তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের মহরানা দিয়া দাও দেওয়ার মতই- আন্তরিকতা ও মনের সন্তুষ্টি সহকারে।
বস্তুত মহরানা আল্লাহর ধার্য করিয়া দেওয়া স্ত্রীর হক। ইহা তাহার পাওনা। এই পাওনা তাহাকে পাইতেই হইবে। ইহা আদায় করিয়া দেওয়া ফরয। আদায় করিতে হইবে কুণ্ঠিত সংকচিত মন-মানসিকতা লইয়া নয়, করিতে হইবে স্ব-ইচ্ছায়, সাগ্রহে ও আন্তরিক ইচ্ছা সহকারে।
হযরত আলী (রা) ও হযরত ফাতিমা (রা)-এর বিবাহ হইল, তখন নবী করীম (স) হযরত আলীকে বলিলেন, ********** ‘তুমি ফাতিমারকে কিছু একটা দাও’। হযরত আলী (রা) বলিলেন *********** ‘দিতে পারি এমন কোন জিনিসই আমার নাই’। নবী করীম (স) বলিলেন *********** ‘তোমার হিতমিয়া বর্মটি কোথায়’? অর্থাৎ সেই বর্মটি বিক্রয় করিয়া কিছু একটা লইয়া আস ফাতিমাকে দিবার জন্য।
ইহা হইতে অকাট্যভাবে প্রমাণিত হইল, স্বামী স্ত্রীর মিলন হওয়ার পূর্বেই মহরানার একটা অংশ স্ত্রীকে দিয়া দেওয়া স্বামীর কর্তব্য। হাদীসে যদিও স্পষ্ট বলা হয় নাই যে, অতঃপর হযরত আলী (রা) সেই বর্মটি বা উহার বিক্রয় লব্ধ অর্থ দ্বারা কিছু নিয়ে মহরানা বাবদ দিয়াছিলেন কিনা; কিন্তু অন্যান্য কয়েকটি বর্ণনা হইতে জানা যায়, বর্মটি তিনি বিক্রয় করিয়া উহার মূল্য মহরানা বাবদ দিয়াছিলেন।
(*******)
মুসনাদে আহমাদ গ্রন্হে এই হাদীসটির বর্ণনা স্বয়ং হযরত আলী (রা) হইতে উদ্ধৃত হইয়াছে। তিনি বলিলেনঃ আমি রাসূলে করীমের কন্যার সহিত বিবাহের প্রস্তাব দিবার কথা চিন্তা করিলাম। মনে মনে বলিলাম, আমার দিবার মত কিছুই নাই। তাহা হইলে কিভাবে হইতে পারে? পারে রাসূলে করীম (স) –এর সহিত আমার সম্পর্কের কথা চিন্তা করিয়া শেষ পর্যন্ত প্রস্তাব দিয়াই ফেলিলাম। তিনি বলিলেনঃ ************** ‘তোমার নিকট মহরানা বাবত দিবার মত কিছু আছে?’ বলিলাম, না। বলিলেনঃ আমি যে তোমাকে অমুক দিন একটা বর্ম দিয়াছিলাম, সেটি কোথায়? বলিলাম সেটি আমার নিকট রহিয়াছে। বলিলেন, তুমি উহাই দিয়া দাও।
(***********)
মোট কথা সব কয়টি হাদী হইতে মহরানা দেওয়ার অপরিহার্যতা প্রমাণীত হয়।
****************************************
হযরত সহল ইবনে সায়াদ সায়েদ হইতে বর্ণিত হইয়াছে। তিনি বলিয়াছেনঃ একটি মেয়েলোক রাসূলে করীম (স)-এর নিকট আসিল এবং বলিলঃ ইয়া রাসূল! ‘আমি নিজেকে আপনার জন্য উৎসর্গ করার উদ্দেশ্যে উপস্থিত হইয়াছি’। এই কথা শুনিয়া নবী করীম (স) তাহার উপর দৃষ্টি নিক্ষেপ করিলেন। পরে তাহার উপর-নিচের দিকে দৃষ্টিপাত করিলেন, এবং গভীরভাবে চিন্তা-বিবেচনা করিলেন। পরে রাসূলে করীম (স) তাঁহার মাথা উপরে তুলিলেন। অতঃপর মেয়েলোকটি লক্ষ্য করিল, নবী করীম (স) তাহাতে তাঁহার কোন প্রয়োজন দেখিতে পাইলেন না। পরে সে বলিয়া রহিল। এই সময় রাসূলের একজন সাহাবী দাঁড়াইয়া বলিলেনঃ ইয়া রাসূল! এই মেয়ে লোকটিতে আপনার যদি কোন প্রয়োজন না থাকে, তাহা হইলে এই স্ত্রীলোকটিকে আমার নিকট বিবাহ দিন। তখন রাসূলে করীম (স) বলিলেন, তোমার নিকট মহরানা দেওয়ার মত কিছু আছে কি? সাহাবী বলিলেনঃ আল্লাহর শপথ, ‘হে রাসূল, আমার নিকট মহরানা দেওয়ার মত কিছুই নাই’। তখন রাসূলে করীম (স) বলিলেনঃ তুমি তোমার ঘরের লোকদের নিকট যাও এবং খুঁজিয়া দেখ, কোন জিনিস পাও কিনা! সাহাবী চলিয়া গেলেন। পরে ফিরিয়া আসিয়া বলিলেনঃ হে রাসূল, আল্লাহর শপথ, কিছুই নাই। তখন রাসূলে করীম (স) বলিলেনঃ দেখ, লোহার একটা আঙটিও পাও কিনা। তিনি চলিয়া গেলেন, পরে ফিরিয়অ আসিলেন, বলিলেন, না, ইয়া রাসূল, একটা লোহার আঙটিও নাই। তবে আমার এই কাপড়খানা (তাঁহার চাদর) আছে, ইহার অর্ধেম মহরানা স্বরূপ তাহাকে দিতে পারি। রাসূলে করীম (স) বলিলেনঃ তোমার এই কাপড়খানা লইয়া তুমি কি করিবে! ইহা যদি তুমি ব্যবহার কর, তাহা হইলে তোমার স্ত্রীর ব্যবহারের ইহার কিছুই আসিবেনা। আবার সে যদি ইহা ব্যবহার করে তাহা হইলে তোমার গায়ে ইহার কোন অংশ থাকিবে না। তখন এই (সাহাবী) লোকটি বসিয়া রহিলেন। দীর্ঘসময় ধরিয়া বসিয়া থাকার পর তিনি দাঁড়াইলেন। রাসূলে করীম (স) তখন তাঁহাকে চলিয়া যাইতে দেখিলেন। তখন রাসূলে করীম (স) তাঁহাকে ডাকিয়া আনিবার জন্য নির্দেশ দিলেন। ডাকার পর তিনি যখন ফিরিয়া আসিলেন, রাসূলে করীম (স) বলিলেনঃ তুমি কুরআন মজীদ কতটা শিখিয়াছ? বলিলেনঃ কুরআনের অমুক অমুক সূরা আমি আয়ত্ত করিয়াছি। তিনি তাহা গণিয়া দিলেন। রাসূল বলিলেনঃ তুমি ইহা বুঝিয়া অন্তর দিয়া পড়? বলিলেন, হ্যাঁ, তখন রাসূলে করীম (স), বলিলেনঃ যাও, তুমি যতটা কুরআন শিখিয়াছ উহার বিনিময়ে তুমি এই মেয়ে লোকটির স্বামীত্ব লাভ করিলে।
(বুখারী, মুসলিম, দারে কুতনী, মুসনাদে আহমাদ, তাবারানী)
ব্যাখ্যাঃ এই দীর্ঘ হাদীসটিতে প্রধানত দেন-মোহর বা মহরানা সম্পর্কে আলোচিত হইলেও ইহার দীর্ঘ বিবরণ ও উহাতে উদ্ধৃত কথোপকথন হইতে বহু প্রয়োজনীয় বিষয় জানা যায়। হাদীসের শুরুতে বলা হইয়াছে, একটি মেয়েলোক রাসূলে করীম (স)-এর নিকট আসিল। হাদীসে মেয়েলোকটির নাম বলা হয় নাই। ইবনে হাজার আসকালানী বলিয়াছেন *************** আমি তাহার না জানিতে পারি নাই। তখন রাসূলে করীম (স) কোথায় ছিলেন? সুফিয়ান সওরীর বর্ণনা হইতে জানা যায়, *************** তখন নবী করীম (স) মসজিদে আসীন ছিলেন। মেয়ে লোকটি বলিলঃ ****************** ‘আমি নিজেকে আপনার জন্য উৎসর্গ করিবার উদ্দেশ্যে উপস্থিত হইয়াছি’। অর্থাৎ সে যেন বলিলঃ ************** কোন রূপ বিনিময় ছাড়াই আমি আপনাকে বিবাহ করিব’। আর সোজা কথায় ইহার অর্থ, আপনি আমাকে বিবাহ করুন, কোন মহরানা আমাকে দিতে হইবে না। ইহা হইতে প্রমাণিত হয় যে, একজন মেয়ে রাসূলে করীম (স)-এর নিকট বিবাহিতা হইবার উদ্দেশ্যে নিজেকে পেশ করিতে পারে- ইহা জায়েয। কুরআন মজীদে এই কথাই বলা হইয়াছেঃ নিম্নোদ্ধৃত আয়াতেঃ
****************************************
মু’মিন স্ত্রীলোক যদি নিজেকে নবীর জন্য উৎসর্গ করে যদি নবী তাহাকে বিবাহ করিতে ইচ্ছা করে- একান্তভাবে তোমার জন্য হে নবী- অন্যান্য মু’মিন ছাড়া। (তবে তাহা জায়েয হইবে)।
এই আয়াত ও উপরোক্ত দীর্ঘ হাদীসই এইরূপ বিবাহ জায়েয হওয়র অকাট্য দলীল এবং এই অনুযায়ী কোন মেয়ে যদি নিজেকে রাসূলে করীম (স)-এর সহিত বিবাহিতা হওয়ার জন্য পেশ করে ও রাসূলে করীম (স) মহরানা না দিয়াই বিবাহ করে তাহা হইলে তাহা তাঁহার জন্য হালাল হইবে। পরেও তাহাকে কোন মহরানা দেওয়া তাঁহার উপর ওয়াজিব হইবে না- না সঙ্মম হওয়ার কারণে না মৃত্যু সংঘটিত হওয়ার পর। কিন্তু এই ব্যবস্থা কেবলমাত্র রাসূলে করীম (স)- এর জন্য, অন্য কহারও এইরূপ করার অধিকার নাই। অন্য কেহ এইরূপ করিলে- অর্থাৎ মহরানা ছাড়াই বিবাহ করিলে- মহরানা দেওয়া অবশ্যই ওয়াজিব হইবে।
নবী করীমের পক্ষে ****** ‘হেবা’ শব্দে বিবাহ অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে দুইটি কথা আছে। একটি হইল কুরআন মজীদেই এইরূপ বলা হইয়াছে। এই হাদীসেও তাহাই বলা হইয়াছে। অতএব তাহা হইতে পারে। আর দ্বিতীয় হইল, ‘হেবা’ শব্দে বিবাহ সংঘটিত হয়না। বরং সত্য কথা এই যে, বিবাহ (******* বা *********) শব্দ বলা চাড়া বিবাহ অনুষ্ঠিত হয় না। রাসূলের উম্মতের লোকদের ব্যাপারেও তাহাই। এই শেষোক্ত দুইটি শব্দের যে কোন একটি ছাড়া বিবাহ হইতে পারে না। ইহা ইমাম শাফেয়ীর মত। আর ইমাম আবূ হানীফা (র) বলিলেনঃ
****************************************
চিরন্তন স্বামীত্বের অধিকার পাওয়ার কথা বুঝায় যে শব্দেই, তাহা বলা হইলে যে-কোন দম্পতির বিবাহ সম্পন্ন হইতে পারে।
সুফিয়ান সওরী, আবূ সওর এবং মালিকী মাযহাবের বহু বিশেষজ্ঞ ইমাম শাফিয়ীর উপরোক্ত মত সমর্থন করিয়াছেন। ইহা কাযী ইয়াযের বর্ণনা ও বিশ্লেষণ।
মেয়ে লোকটির উক্ত কথা বলার পর রাসূলে করীম (স) কি করিলেন? উপরোদ্ধৃত হাদীসে বলা হইয়াছে? রাসূলে করীম (স) তাহার প্রতি তাকাইলেন। চোখ উপর হইত নিচের দিকে নিয়া আসিলেন। ইহা হইতে প্রমাণিত হয়, যে মেয়েকে বিবাহ করার কথা-বার্তা ও প্রস্তাব হইবে তাহাকে এইভাবে দেখা—যেভাবে রাসূলে করীম (স) মেয়েটিকে দেখিয়াছিলেন- সম্পূর্ণ জায়েয। ইমাম নববীর মতেঃ
****************************************
কোন উন্নত চরিত্রবান আদর্শ ব্যক্তির নিকট নিজেকে বিবাহ করার প্রস্তাব একটি মেয়ের নিজেই পেশ করা পছন্দনীয় কাজ- এ কথার প্রমাণ ইহাতে রহিয়াছে।
বুখারীর বর্ণনায় বলা হইয়াছেঃ ************ মেয়েটির ঐ কথা বলার পর রাসূলে করীম (স) কোন উত্তর দিলেন না। আর তাবারানীর বর্ণনায় বলা হইয়াছেঃ
****************************************
রাসূলে করীম (স) চুপ করিয়া থাকিলেন। মেয়েটি নিজেকে আবার পেশ করিল। তখনও তিনি চুপ থাকিলেন। (হাদীসের বর্ণনাকারী হযরত সহল বলেন) আমি নিজে মেয়েটিকে চিন্তান্বিতা অবস্থায় দাঁড়াইয়া থাকিতে দেখিলাম এবং দাঁড়াইয়া থাকিয়াও সে নিজেকে রাসূলে করীম (স)-এর নিকট পেশ করিতেছিলেন। কিন্তু তিনি চুপ ও নির্বাক হইয়া রহিয়াছেন।
আর হাম্মাদ ইবনে জায়দের বর্ননায় বলা হইয়াছেঃ
মেয়ে লোকটি নিজেকে আল্লাহ এবং তাঁহার রাসূলের জন্য উৎসর্গ করিল। রাসূলে করীম (স) বলিলেন, আমার কোন মেয়ে লোকের প্রয়োজন নাই।
এই দুই ধরনের বর্ণনার মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য বলা যায়, রাসূলে করীম (স) ইহা বলিয়াছিলেন সর্বশেষে। প্রথম দিকদিয়া তিনি নির্বাক ও লা-জওয়াবই রহিয়াছেন। তিন হয়ত মনে করিয়াছিলেন, মেয়েটির প্রস্তাবের কোন জবাব না দিলেই সে বুঝিতে পারিবে যে, তাহাকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহণ করার কোন ইচ্ছাই রাসূলে করীমের নাই। কিন্তু সে যখন বার বার একই কথা বলিয়া নিজেকে পেশ করিতে লাগিল, তখন সুস্পষ্ট ভাষায় বলিয়া দেওয়া প্রয়োজন মনে করিলেন।
রাসূলে করীম (স)-এর অস্বীকৃতির পর দরবারে উপস্থিত একজন লোক দাঁড়াইয়া বলিলেনঃ ইয়া রাসূল, আপনার প্রয়োজন না থাকিলে মেয়ে লোকটিকে আমার নিকট বিবাহ দিন। লোকটি কে ছিলেন? ইবনে হাজার আসকালানী লিখিয়াছেন ************ ‘আমি এই লোকটির নাম জানিতে পারি নাই’। আর তাবারানীর বর্ণনায় বলা হইয়াছেঃ
****************************************
তখন একজন লোক দাঁড়াইল, হাদীস বর্ণনাকারী বলেনঃ আমি মনে করি, লোকটি আনসার বংশের হইবেন। তবে তিনি যে একজন সাহাবী ছিলেন, তাহাতে সন্দেহ নাই।
রাসূলে করীম (স) বিবাহের ইচ্ছা প্রকাশকারী সাহাবীকে জিজ্ঞাসা করিলেনঃ মহরানা দেওয়র মত কোন জিনিস তোমার নিকট আছে কি? তিনি তখণ কিছুই উপস্থিত করিতে পারিলেন না, তখন নবী করীম (স) বলিলেনঃ
****************************************
দেখ, একটা লোহার আঙটিও জোগাড় করিতে পার কি না।
ইহা হইতে প্রমাণিত হয় যে, মহরাহনা ব্যতীত কোন বিবাহই সংঘটিত হয় না। কেননা এই মহরানাই সমস্ত ঝগড়া-বিবাদ মিটাইয়া দেয়। আর মেয়ে লোকটির জন্যও এই মহরানা ধার্য হওয়া মর্যাদাসম্পন্ন জীবন যাপনেনর জন্য বিশেষ সহায়ক। কেনন নির্দিষ্ট পরিমাণ মহরানার ভিত্তিতে বিবাহ হইলে স্বামী যদি তাহাকে সংগম-সহবাসের পূর্বেই তালাক দিয়া দেয়, তাহা হইলে সে সেই পরিমাণের মহরানার অর্ধেক লাভ করিতে পারিবে। আর ইহা তাহার ইদ্দতকালীন ও অন্য স্বামী গ্রহণ পর্যন্তকার জন্য সম্বল হইবে। তবে আকদের সময় মহরানা নির্দিষ্ট না করা হইলেও বিবাহ শুদ্ধ হইবে। কুরআন মজীদেই আল্লাহ তা’আলা বলিয়াছেনঃ
****************************************
তোমরা যদি মহরানার কোন পরিমাণ নির্দিষ্ট না করিয়া এবং বিবাহের পর স্ত্রীকে স্পর্শ অর্থাৎ সঙ্গম করার পূর্বেই তাহাকে তালাক দাও, তবে তাহাতে কোন দোষ নাই।
ইহা হইতে স্পষ্টভাবে জানা যায় যে, আকদের সময় মহরানা নির্দিষ্ট করা না হইলেও বিবাহ এবং স্ত্রীকে তালাক দেওয়া জায়েয। অবশ্য আকদের স ময় মহরানা ধার্য না হইলেও পরে ইহা ধার্য করা ওয়াজিব হইবে। কেননা মহরানা তো দিতে হইবেই। ইহা স্ত্রীর অধিকার।
মহরানা কখন ওয়াজিব হয়। আকদ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, না স্ত্রী সঙ্গম হওয়ার পর? এই বিষয়ে ফিকাহবিদগণ বিভিন্ন সিদ্ধান্তে পৌছিয়াছেন। ইমাম শাফিয়ীর দুইটি কথা এ বিষয়ে উদ্ধৃত হইয়াছে। তন্মধ্যে নির্ভুলতম কথা হইল, স্ত্রী সঙ্গম সংঘটিত হইলেই মহরানা ওয়াজিব হইয়া যায়। উপরোক্ত আয়াত হইবে বাহ্যতঃ তাহাই মনে হয়।
আলোচ্য হাদীসের উপরোদ্ধৃত বাক্যাংশ হইতে একথাও প্রমাণিত হয় যে, মহরানার নির্দিষ্ট ও শরীয়াত কর্তৃক ধার্যকৃত কোন পরিমাণ নাই। উহা কম পরিমাণেরও হইতে পারে, হইতে পারে বেশী পরিমাণেরও। উভয়পক্ষ স্বামী ও স্ত্রী যে পরিমাণে পরস্পর সম্মত ও ঐক্যমত হইবে, তাহাতেই বিবাহ সহীহ হইবে। কেননা রাসূলে করীম (স) মহরানা হিসাবে একটা লোহার আঙটিও আনিতে বলিয়াছেন।আর লোহার আঙটি তো মূল্যের দিক দিয়া অতি নগণ্য। ইমাম শাফিয়ী এই মত দিয়াছেন এবং পূর্ব ও পরের অধিকাংশ আলেমই এই মত গ্রহণ করিয়াছেন! রবীয়া, আবুজ-জানাদ, ইবনে আবূ জি’ব, ইয়াহইয়া ইবনে সায়ীদ, লাইসা ইবনে সায়াদ, সওরী আওজায়ী, ইবনে আবূ লাইলা, দায়ূদ এবং অন্যান্য হাদীস ও ফিকাহবিদগণ এই কথাই সমর্থন করিয়াছেন। রবীয়া, আবুজ-জানাদ, ইবনে আবূ জি’ব, ইয়াহইয়া ইবনে সায়ীদ, লাইসা ইবনে সায়াদ, সওরী, আওজায়ী, ইবনে আবূ লাইলা, দায়ূদ এবং অন্যান্য হাদীস ও ফিকাহবিদগণ এই কথাই সমর্থন করিয়াছেন। মালিকী মাযহাবের অনুসারী হাদীস ফিকাহবিদ ইবনে অহাবও এই কথাই বলিয়াছেন কাযী ইয়ায বলিয়াছেন, হিজাজ, বাছরা, কূফা ও সীরিয়ার প্রখ্যাত আলেমগণের মাযহাব এই যে, স্বামী-স্ত্রী যে পরিমাণ মহরানায় পরস্পর সম্মত হইবে, তাহা কম হউক বেশী হউক এবং চাবুক, জুতা বা লোহার আংটি প্রভৃতি যাই হউক না কেন, তাহাতেই বিবাহ জায়েয হইবে। ইমাম মালিক বলিয়াছেন, মহরানার নুন্যতম পরিমাণ হইল চার দীনার। এই পরিমাণ সম্পদ চুরি করিলে ‘চুরি’ সাব্যস্ত হয় ও দন্ডযোগ্য অপরাধ রূপে গণ্য হয়। কাযী ইয়াযের মতে ইহা ইমা মালিকের একার মত। ইহাতে তাঁহার সমর্থক কেহ নাই। ইমাম আবূ হানীফা ও তাঁহার সঙ্গীগণ বলিয়াছেনঃ ********** ‘মহরানা নূন্যতম পরিমাণ হইল দশ দিরহাম’। ইহার কম পরিমাণের মহরানার বিবাহ জায়েয নয়। ইবনে শায়রামাতা বলিয়াছেনঃ নূন্য পরিমাণ মহরানা হইল পাঁচ দিরহাম। অবশ্য এই মত অধিকাংশ ফিকাহবিদদের মতের বিপরীত। বর্তমান আলোচ্য হাদীস হইতেও হানাফী মতের বিপরীত কথাই প্রমাণিত হয়। কেননা এই সহীহ হাদীসটি প্রমাণিত হয় যে, একটা লোহার আঙটিও মহরানা হইতে পারে। আর একটা লোহার আংটির মূল্য যে অতি সামান্য তাহা সর্বজনবিদিত।
এই হাদীস হইতে একথা জানা যায় যে, স্ত্রীর মহরানা অনতিবিলম্বে তাহাকে দিয়া দেওয়া ভাল। হাদীসটিতে উদ্ধৃত বিবহা-প্রার্থী সাহাবীর প্রায় প্রত্যেকটি কথার শুরুতে ************** বলিয়া আল্লহর শপথ উদ্ধৃত হইয়াছে। অথচ ইহা শপথ করিয়া কথা বলার স্থান নয় এবং উহার কোন প্রয়োজনও এখানে নাই। ইহা হইতে জানা যায় যে, বিনা প্রয়োজনে ও প্রকৃত শপথের লক্ষ্য না থাকা সত্ত্বেও শপথ করিয়া কথা বলা সম্পূর্ণ নাজায়েয নয়। কিন্তু আসলেই ইহা পছন্দনীয় কাজ নয়। এই ঘটনার বিবরণ হইতে একথাও জানা যায় যে, দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত লোকদেরও বিবাহ করার অধিকার আছে। এজন্য সমাজ তথা রাষ্টের পক্ষ হইতে তাহাদের সহিত সহযোগিতা হওয়া বাঞ্ছনীয়। গরীব মানুষ বলিয়া বিবাহ করিবে না, কেবল ধনী ও সচ্ছল লোকেরাই বিবাহ সুখ ভোগ করিবে, ইহা আর যাহাই হউক, মানবিক নীতি হইতে পারে না। ইসলামী নীতিতো নয়-ই।
বিবাহ-প্রার্থী সাহাবী যখন বলিলেনঃ আমার কাপড় খানাই আছে। ইহার অর্ধেক তাহাকে মহরানা স্বরূপ দিতে পারি। তখন নবী করীম (স) বলিলেনঃ ‘তুমি এই কাপড় থানা দিয়া কি করিবে? তুমি ইহা পরিলে তোমার স্ত্রীর কোন কাজে লাগিবে না। আর সে পরিলে তোমার ব্যবহারের জন্য কোন অংশ থাকিবে না’। আসলে ইহা সাহাবীর কাজের পরিণতিতে যে অসুবিধা ও জটিলতা দেখা দিতে পারে- যে বাস্তব সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার আশংকা রহিয়াছে, ইহা তাহারই বিশ্লেষণ এবং সেই দিকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির দৃ্টি আকর্ষণ। বস্তুত প্রত্যেক জন-নেতা, সমাজ-পতি ও রাষ্ট্র প্রধানের ইহাই কর্তব্য।
সর্বশেষে মহরানা পর্যায়ে রাসূলে করীম (স) জিজ্ঞাসা করিয়াছিলেনঃ
****************************************
তুমি কোরআনের যে সূরা কয়টির নাম করিলে তাহা কি মুখস্থ করিয়াছ ও হৃদয় দিয়া এইগুলির সংরক্ষণ করিতেছ?
কোন কোন সূরা তাঁহার মুখস্ত আছে, তাহার নাম এই বর্ণনায় উল্লেখ করা হয় নাই। কিন্তু হযরত ইবনে মাসউদের বর্ণনায় সূরা কয়টির নাম উল্লেখ করা হইয়াছে । তাহাতে সাহাবীর জবাব এই ভাষায় উদ্ধৃত হইয়াছেঃ *************** হ্যাঁ, সূরা বাকারা ও আর একটি দীর্ঘ সূরা। আর আবূ দায়ূদ ও নাসায়ীতে হযরত আবূ হুরায়রা কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে বলা হইয়াছেঃ ************** সেই লোক এই প্রশ্নের জবাবে যখন বলিলেন, হ্যাঁ, তখন নবী করীম (স) বলিলেনঃ
****************************************
যাও, তুমি কুরআনের যতটা মুখস্থ ও সংরক্ষিত রাখিয়াছ, উহার বিনিময়েই তোমাকে এই মেয়েলোকটির স্বামীত্বের মালিক বানাইয়া দেওয়া হইল।
বুখারীর বর্ণনায় ইহার ভাষা হইলঃ ************* ‘আমি তোমাকে ইহার মালিক করিয়া দিলাম। কিন্তু ইমাম দারে কুতনী বলিয়াছেন, ইহা ভ্রামাত্মক। সহীহতম বর্ণনানুযায়ী শব্দটি হইবেঃ ******** ‘আমি তোমাকে এই স্ত্রীলোকটির সহিত বিবাহ দিলাম’। অথবা ‘তোমার নিকট স্ত্রীলোকটিকে বিবাহ দিলাম’। এই দুইটিই হইতে পারে।
এই হাদীসের ভিত্তিতে এই মতও শরীয়াত সম্মত যে, কুরআন মজীদ শিক্ষা দেওয়াটাও অবস্থা বিশেষে বিবাহে স্ত্রীর মহরানা হইতে পারে এবং ইহাকে ‘মহরানা’ ধরিয়া বিবাহের আকদ করা হইলে সে বিবাহ সহীহ হইবে। ইহা ইমাম শাফেয়ীর মত এবং তাঁহার মতে এই হাদীসের দলীল অনুযায়ী কুরআন শিক্ষা দানের পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়েয। আতা, হাসান ইবনে সালেহ, মালিক ও ইসহাক প্রমুখ ফিকাহবিদগণও এই মত প্রকাশ করিয়াছেন। অবশ্য ইমাম জুহরী ও ইমাম আবূ হানীফা ইহা সমর্থন করেন নাই। আলোচ্য হাদীসটি এবং
****************************************
তোমরা যে সব কাজে পারিশ্রমিক গ্রহণ কর, কুরআন তন্মধ্যে ইহার বেশী অধিকার সম্পন্ন। অর্থাৎ শিক্ষাদানের বিনিময়ে পারিশ্রমিক গ্রহণ অবশ্যই জায়েয।
এই সহীহ হাদীসটি হইতেও কুরআন শিক্ষাদানের পারিশ্রমিক লওয়া জায়েয প্রমাণিত হয়।
(*********************)
এই দীর্ঘ হাদীসটির কথা সংক্ষিপ্তভাবেও বর্ণিত হইয়াছে বিভিন্ন বর্ণনায়। একটি বর্ণনার ভাষা এইঃ
****************************************
নবী করীম (স) একটি লোককে- যাহার নিকট কিছুই ছিল না- সূরা বাকারার বিনিময়ে বিবাহ দিলেন।
অপর একটি বর্ণনার ভাষা এইঃ
****************************************
নবী করীম (স) তাঁহার একজন সাহাবীকে বিবাহ করাইয়াছিলেন একটি দীর্ঘ সূরার বিনিময়ে, উহাকে মহরানা স্বরূপ ধরিয়াছিলেন এবং মেয়েটিকে তাহার নিকট প্রবেশ করাইয়া দিয়া বলিয়াছিলেন, ইহাকে তাহা শিক্ষা দাও।