ইহসান শব্দের অর্থ কি এবং ইহসান কাকে বলে?

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম; আজকে আলোচনা করব ইহসান শব্দের অর্থ কি এবং ইহসান কাকে বলে সেই সম্পর্কে। ইহসান শব্দটি আরবী; এটি ‘হাসান’ মূলধাতু থেকে উদ্ভুত; হাসান অর্থ ভালো, উত্তম, সুন্দর; আর ইহসান অর্থ ভালো করা, অনুগ্রহ করা।

ইহসান কাকে বলে
উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট উপস্থিত ছিলাম, এমন সময় এক ব্যক্তি আগমন করলেন; যার কাপড় অত্যধিক সাদা ছিল এবং চুল অধিক কাল ছিল; বুঝা যাচ্ছিল না যে, তিনি সফর হতে এসেছেন; আর আমাদের মধ্যে কেউ তাঁকে চিনতে পারছিল না; তিনি নিজ হাঁটুদ্বয় তাঁর হাঁটুদ্বয়ের সাথে লাগিয়ে বসলেন, তাঁর হস্তদ্বয় তাঁর উভয় উরুর উপর রাখলেন এবং বললেন: হে মুহাম্মদ! আমাকে বলুন: ইসলাম কি? তিনি বললেন: এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ্‌ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, আর মুহাম্মদ আল্লাহর বাসুল এবং সালাত আদায় করা, যাকাত দেওয়া, রমযানের রোযা রাখা ও পথ খরচের সামর্থ্য থাকলে হজ্জ করা। সে লোকটি বললো: আপনি সত্যই বলেছেন। আমরা আশ্চর্যান্বিত হলাম যে, তিনি প্রশ্ন করলেন এবং বললেন: আপনি সত্য বলেছেন। এরপর তিনি বললেন: ঈমান কি, আমাকে বলুন? তখন তিনি বললেন: বিশ্বাস স্থাপন করা আল্লাহ্‌র উপর, ফিরিশতাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসুলগণ, কিয়ামত দিবস এবং নিয়তির ভাল-মন্দের উপর বিশ্বাস।

তিনি বললেন: আপনি সত্য বলেছেন। তারপর বললেন: ইহসান কি? তিনি বললেন: এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে, যেন তুমি আল্লাহকে দেখছো, যদি তুমি তাঁকে না দেখতে পাও, তবে তিনি তো তোমাকে দেখছেন। তারপর বললেন: কিয়ামত কখন হবে? তখন তিনি বললেন: যার নিকট প্রশ্ন করা হচ্ছে তিনি প্রশ্নকারী হতে অধিক জ্ঞাত নন। সে ব্যক্তি বললো: কিয়ামতের নিদর্শনসমূহ বর্ণনা করুন।তিনি বললেন: দাসী তার মুনিবকে প্রসব করবে, নগ্ন পদ, বিবস্ত্র, গরীব, বকরীর রাখালরা বড় বড় প্রাসাদ নির্মাণে প্রতিযোগিতা করবে। উমর (রাঃ) বলেন, আমি তিন দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম, পরে রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে বললেন: হে উমর! তুমি কি অবগত আছ, এই প্রশ্নকারী ব্যক্তি কে? আমি বললাম: আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুলই সমধিক অবগত। তিনি বললেন: তিনি ছিলেন জিবরাঈল (আ), তিনি তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শিক্ষা দিতে এসেছিলেন।

সুনানে আন নাসায়ী ৪৯৯০, সহিহ মুসলিম ১, সুনানে আবু দাউদ ৪৬৯৫, সুনানে ইবনে মাজাহ ৬৩, মিশকাতুল মাসাবিহ ২।

হাদিসটি সহিহ।

হাদিসে জিবরাঈল থেকে এটা বুঝতে পারলাম যে,
ইহসান হলো এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করা, যেন আমি আল্লাহকে দেখছি; যদি আমি তাঁকে দেখতে না পাই, তবে তিনি তো আমাকে দেখছেন।

এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত করতে হবে যেন আমি তাকে দেখছি। অর্থাৎ যদি এমনটা হয় যে, আমি তাকে দেখছি তবে তার ইবাদাত অর্থাৎ তার প্রতি আমার আনুগত্য যেমন হওয়া উচিত ঠিক তেমনভাবে তার ইবাদাত করতে হবে। যদিও আমি তাকে দেখতে পাই না কিন্তু তিনি তো আমাকে দেখছেন। যেহতেু তিনি আমাকে দেখছেন তাই তার ইবাদাত অর্থাৎ তার প্রতি আমার আনুগত্য যেমন হওয়া উচিত ঠিক তেমনভাবে তার ইবাদাত করতে হবে। আর সেটাই হবে যথার্থ ইবাদাত। এইভাবে ইবাদাত করার মাধ্যমে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে হবে। তবেই তিনি আমাকে তার শাস্তি থেকে রক্ষা করবেন, তার নিয়ামতের জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। তাই যথার্থভাবে তার ইবাদাত করার মাধ্যমে তাকে সন্তুষ্ট করে নিজের জন্য উত্তমটাকে গ্রহণ করে নিজের প্রতি দয়া করা, নিজের প্রতি অনুগ্রহ করার নামই ইহসান।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]