শিরক শব্দের অর্থ কি? শিরক কত প্রকার? মুশরিক কাকে বলে বা মুশরিক কারা?

শিরক শব্দের অর্থ কি? শিরক কত প্রকার? মুশরিক কাকে বলে? মুশরিক কারা?
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম, আজকের আলোচনার বিষয় হচ্ছে শিরক শব্দের অর্থ কি, শিরক কত প্রকার, মুশরিক কাকে বলে, মুশরিক কারা ইত্যাদি।
শিরক শব্দের অর্থ কি?
শিরক আরবী শব্দ; যার আভিধানিক অর্থ শরিক, অংশীদার, সমকক্ষ, সামঞ্জস্য; পারিভাষিক অর্থে আল্লাহ তায়ালা কোরআন ও সহীহ হাদিসের মাধ্যমে আমাদেরকে তার নিজের নাম ও গুণাবলী সমূহের যে বর্ণনা শিক্ষা দিয়েছেন সেগুলোর কোন ব্যাপারে আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক বা অংশীদার করা বা সমকক্ষ করা বা সামঞ্জস্য করার নামই শিরক। শিরক হচ্ছে সবচেয়ে বড় পাপ যা তওবা ছাড়া ক্ষমা হবে না। 

শিরক হচ্ছে তাওহীদের বিপরীত। আল্লাহ তায়ালার সমস্ত নাম ও গুণাবলীর ব্যাপারে তার এককত্বই হচ্ছে তাওহীদ।

তাওহীদ একটি বাস্তব ও সত্য অবস্থার নাম। তাওহীদ মেনে চললে হয় ইবাদাত আর তাওহীদ মেনে না চললে অর্থাৎ শিরক করলে হয় কুফুর।

শিরক কত প্রকার?
শিরককে ছোট ও বড় এই দুই ভাগে বিভক্ত করা সমীচিন নয়; শিরক তো শিরকই তা ছোট হোক বা বড়; ছোট এবং বড় এই দুই ভাগে বিভক্ত করার কারনেই মনে হয় যেন আজ মুসলিমরা কথিত ছোট শিরককে পাপই মনে করছে না; তা থেকে বিরত থাকার কোন গুরুত্বই যেন তাদের নেই; ভাবছে ছোট শিরকে কোন সমস্যা নেই; কিন্তু শিরক ছোট হোক বা বড় উভয়ই ভয়াবহ পাপ যা থেকে বিরত থাকা জরুরি।

শিরক করলে তা হয় কুফুর; আর  কুফুরের বিভিন্ন রূপ রয়েছে; রূপভেদে কুফুর ছোট বড় হতে পারে; কিন্তু উভয়ই ভয়াবহ ক্ষতির কারন।
মানুষের মধ্যে অল্প কিছু সংখ্যক আছে যারা আল্লাহকে স্বীকার করে না; মূলত তারা মনের পূজারী; তাই তারা মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত। এই অল্প কিছু সংখ্যক নাস্তিক ছাড়া সবাই আল্লাহকে স্বীকার করে; আল্লাহ আমাদের সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রিযিকদাতা, তিনি ক্ষমতাবান এসব স্বীকার করে এবং তার ইবাদাতও করে; কিন্তু মূল সমস্যা এখানে যে, তারা অন্যকে এসব ব্যাপারে আল্লাহর সাথে অংশীদার করে; আবার কখনও আল্লাহর সৃষ্টিকে তার সাথে সামঞ্জস্যশীল মনে করে। মক্কার মুশরিকরা আল্লাহকে স্বীকার করত, কিন্তু তারা মনে করত যে, আমরা অধম গুনাহগার বান্দা, তাই আল্লাহ আমাদের প্রার্থণা কবুল করবেন না। তাই তারা বিভিন্ন দেবদেবীর পূজা করত, যেন তারা আল্লাহর কাছে সুপারিশ করে তাদের জন্য। আর সেই অসীলায় যেন আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করেন। আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, মুসলিমদের মধ্যেও সেই অন্ধত্ব বিরাজমান। একদল মুসলিম যারা পীর ও মাজারকে পূজা করছে। যেন তারা অসীলা হতে পারে, সুপারিশকারী হতে পারে আল্লাহর নিকটে, যেমন মক্কার মুশরিকরা করত।

মানুষ আল্লাহকে স্বীকার করলেও আল্লাহর একত্ববাদকে স্বীকার করে না। রবুবিয়্যাতের ব্যাপারে আল্লাহর একত্ববাদ মেনে নিলেও বেশিরভাগ মানুষ ইবাদাতের ক্ষেত্রে আল্লাহর একত্ববাদ মেনে নেয় না। অর্থাৎ কিছু বিষয়ে আল্লাহকে মান্য করলেও কতক বিষয়ে অমান্য করে। তাই তারা মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত। শিরককে মূলত তিনটি ভাগে বিভক্ত করা ঠিক নয়। যেমন শিরকে রবুবিয়্যাত, শিরকে উলুহিয়্যাত, শিরকে আসমা ওয়া সেফাত।  

আল্লাহর নাম ও গুণাবলী সমূহকে সঠিকভাবে বোঝার মাধ্যমে তার পরিচয় জানতে পারলেই তাওহীদকে সঠিকভাবে বুঝতে পারা যাবে তথা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নাই, এ বাক্যের মূল অর্থ বোঝা যাবে। আর তখনই শিরককে ভালভাবে বুঝতে পারা যাবে। তাই আমাদেরকে প্রথমে আল্লাহর পরিচয় ভালভাবে জানতে হবে। তবেই শিরককে চিনতে পারব।

মুশরিক কাকে বলে বা মুশরিক কারা?
যারা কোরআন ও সহীহ হাদিসে বর্ণিত আল্লাহর নাম ও গুণাবলী সমূহের কোন ব্যাপারে আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে শরিক বা অংশীদার করে বা সমকক্ষ করে বা সামঞ্জস্য করে তারাই মুশরিক। হতে পারে তা অন্তরের বিশ্বাসে বা কথায় বা কাজে। যারা মুশরিক অবস্থায় মারা যাবে আল্লাহ তাদেরকে কখনও ক্ষমা করবেন না এবং তারা চিরকাল জাহান্নামে বসবাস করবে।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]