মিসক্যারেজ : আপনার গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু? গর্ভপাত না হওয়ার দোয়া গর্ভপাতের পর রক্তপাত বন্ধ করার উপায়

দ্বিতীয় পর্ব শুরু হওয়ার আগে আপনি মিসক্যারেজ এর প্রথম পর্ব থেকে গর্ভপাত সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নিয়ে আসতে পারেন।

 

গর্ভপাতের পর একজন নারীর প্রচন্ডভাবে মানসিক ও শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়। তবে যথাযথ যত্ন ও চিকিৎসা নিলে সেই ট্রমা থেকে খুব দ্রুতই সেরে উঠা যায়। চলুন গর্ভপাতের পর করণীয় সম্পর্কে খুঁটিনাটি সব জেনে নেই। 

গর্ভপাত মায়ের শরীরে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে?

গর্ভপাত মোটেও কোন স্বাভাবিক বিষয় নয়। একজন নারী এই দূর্ভাগ্যজনক ঘটনাটির ফলে মানসিক ও শারীরিক সবরকমের সমস্যারই মুখোমুখি হয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে শতকরা ৩০-৫০ শতাংশ নারীর মধ্যে গর্ভপাতের পর উদ্বিগ্নতা, মানসিক চাপ এবং ১০-১৫ শতাংশ নারীর মধ্যে ডিপ্রেশন দেখা দেয়। 

কষ্ট, দুঃখ- এই ব্যাপারগুলো খুব প্রাকৃতিক। তবে শুধু কোনকিছু হারিয়ে ফেলার অনুভূতি নয়, একইসাথে শারীরিক পরিবর্তনের মুখোমুখিও হন এই সময় একজন নারী। গবেষকদের মতে, গর্ভপাতের মুখোমুখি হয়েছেন এমন প্রতি দশজন নারীর মধ্যে একজন পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (PTSD) সিম্পটম অনুভব করে থাকেন। আর এই মানসিক সমস্যা গর্ভপাতের তিন মাসের মধ্যে প্রকাশ পায় এবং থেকে যায় অনেকটা সময়।

এই পুরোটা প্রক্রিয়া একজন নারীর মানসিক স্বাস্থ্যের মাধ্যমে শারীরিক স্বাস্থ্যকেও প্রভাবিত করে এবং পরবর্তীতে পুনরায় গর্ভপাতের দিকে নিয়ে যায়।

গর্ভপাতের পর মায়ের শরীরের যত্নে কী করা উচিৎ?

গর্ভপাতের পর একজন নারীর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় মানসিক সাপোর্টের। চলুন, জেনে নেওয়া যাক গর্ভপাতের মুখোমুখি হয়েছেন এমন একজন নারীকে সাহায্য করার জন্য ঠিক কী কী করা উচিৎ।

তবে একইসাথে এইসময় কিছু ব্যাপার করা থেকেও বিরত থাকা প্রয়োজন। গর্ভপাতের মুখোমুখি হয়েছেন এমন একজন নারীকে-

গর্ভপাতের পর কি আবার সন্তান নেওয়া সম্ভব?

মানসিক ও শারীরিকভাবে খারাপ থাকায়, অথবা অন্য কোন কারণে একজন নারী গর্ভপাতের পরপরই আবার সন্তান নিতে চাইতেই পারেন। তবে হ্যাঁ, যে কারণে প্রাথমিকভাবে আপনার গর্ভপাত হয়েছে সেটি পুনরায় পরবর্তীতেও হতে পারে। উদ্বিগ্নতা, অপরাধবোধ, কষ্ট থেকে পরবর্তী সন্তানকে আবার পরিকল্পনা ছাড়া বা পূর্বের সমস্যার সমাধান ছাড়া পৃথিবীতে নিয়ে আসাটা মোটেই কাজের কথা নয়। 

সাধারণত গর্ভপাতের পরের দুই সপ্তাহে যৌনমিলন করা থেকে বিরত থাকতে বলেন চিকিৎসকেরা। দুই সপ্তাহ পরেই আপনি আবার গর্ভধারনের চেষ্টা করতে পারেন। তবে গর্ভপাতের পর মানসিক ও শারীরিকভাবে ধকল কাটিয়ে উঠেই পরবর্তী গর্ভধারণের দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিৎ। তবে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটাও প্রয়োজন। আর যদি আপনার কয়েকবার গর্ভপাত হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে কথা বলে নিন। 

এক্ষেত্রে গর্ভপাতের পর পুনরায় গর্ভধারণের পূর্বে নিচের পরীক্ষাগুলো করে ফেলতে পারেনঃ

এছাড়াও জরায়ুর অবস্থা সম্পর্কে যাচাই করতে আলট্রাসাউন্ড, হিস্টেরোস্কোপি, হিস্টেরোসালপিঙ্গোগ্রাফি, সোনোহিস্টেরোগ্রাফি, এমআরআই ইত্যাদি করতে পারেন। পরবর্তীতে যেন এমনটা না হয় যেজন্য জীবনযাপন পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনার চেষ্টা করতে পারেন। গর্ভপাতের পর পুনরায় গর্ভধারণ করলে একই সাথে খারাপ লাগা ও আনন্দ দুটোই কাজ করতে পারে। সেক্ষেত্রে এই অনুভূতিগুলো নিয়ে কথা বলতে পারেন থেরাপিস্ট বা চারপাশে বন্ধুদের সাথে।

গর্ভপাতের পর গর্ভধারনের সম্ভাবনা বাড়ানোর উপায়

গর্ভপাতের প্রক্রিয়াকে অনুভব করার পর পুনরায় গর্ভধারণের চেষ্টা করা একই সাথে সাহস ও উদ্বেগের কাজ। এসময় আপনি যেমন আনন্দ অনুভব করবেন, তেমনি আপনাকে জুড়ে থাকবে খারাপ লাগাও। তবে গর্ভপাতের পর আপনার গর্ভধারণের সম্ভাবনাকে বৃদ্ধি করতে কিছু ব্যাপার অবশ্যই আপনাকে সাহায্য করতে পারে। সেগুলো হলো-

গর্ভপাতের চিকিৎসা

গর্ভপাতের সঠিক এবং সম্পূর্ণ কার্যকর কোন চিকিৎসা নেই। বরং, কেন গর্ভপাত হয়েছে সেই কারণটি বের করে এনে সেটিকে দূর করার বা কমিয়ে আনার চেষ্টা করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে-

তবে এ তো গেলো গর্ভপাতের পর পরবর্তী গর্ভধারণের আগে চিকিৎসার কথা। স্বাভাবিক ও নিরাপদ গর্ভপাতের জন্য প্রয়োজন টিস্যু সঠিকভাবে জরায়ু থেকে অপসারণ করা। সেক্ষেত্রে-

তাই মায়ের সুস্থতার জন্য গর্ভপাত হলে সেক্ষেত্রে নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলোর মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহন করা প্রয়োজন।

গর্ভকালীন একজন নারী মানসিক ও শারীরিক- উভয় পরিবর্তনের মধ্য দিয়েই যান। তাই হঠাৎ গর্ভপাত নারীর দৈনন্দিন স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, ভবিষ্যৎ স্বাস্থ্য ও গর্ভধারণের ক্ষেত্রেও অসম্ভব নেতিবাচক প্রভাব রাখে। এমন একটি ঘটনার মুখোমুখি হওয়া বর্তমান সময়ে অনেকটাই সাধারণ হলেও মানসিকভাবে অনভিপ্রেত এই ঘটনার জন্য প্রস্তুত থাকেন না কেউই। তাই গর্ভধারণের সময় থেকে গর্ভপাত যেন না হয় সে চেষ্টাগুলো করুন এবং গর্ভপাত যদি হয়ে যায় সেক্ষেত্রে পরবর্তীতে মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার চেষ্টায় উপরোক্ত পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করুন।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]