নবজাতক শিশুর পায়খানা না হলে করনীয় শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়? শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার কৌশল

আপনার সন্তান কি কখনও বাথরুম থেকে কান্নায় বেরিয়ে এসে বলেছে, "মা, আমি যখন মলত্যাগ করি তখন ব্যথা হয়?" এর সম্ভাব্য কারণ কোষ্ঠকাঠিন্য যা শিশুদের মধ্যে একটি খুব সাধারণ সমস্যা। একটি কোষ্ঠকাঠিন্য শিশুর কদাচিৎ মলত্যাগ হয় বা শক্ত ও শুকনো মল হয়। সৌভাগ্যবশত, শিশুদের মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্যের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অস্থায়ী। আসুন বিস্তারিত জেনে নেই।

শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়?

বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয় সাময়িক সময়ের জন্য। সঠিক পরিমাণ খাবার গ্রহণ না করার জন্য ও খাবার সম্পূর্ণভাবে পরিপাক না হবার জন্য বিশেষত বাচ্চাদের এই সমস্যা হয়ে থাকে। এছাড়াও যেসব কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে তা হলোঃ

১) জোরপূর্বক মল আটকে রাখা

অনেক শিশু মলত্যাগের সময় পেটব্যাথা সহ্য করতে পারে না। ফলে জোর করে মল আটকে রাখে। অতিরিক্ত সময় ধরে মলত্যাগ না করার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। 

আবার অনেক সময় দেখা যায় শিশুরা খেলাধুলো করার সময় বিরতি নিতে চায় না। ইচ্ছে করে মল আটকে রাখে। এসবই শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্যের মূল কারণ।

২) খাওয়াদাওয়ায় পরিবর্তন

প্রায়ই বাচ্চাদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনের জন্য এই সমস্যা হয়ে থাকে। হঠাৎ অন্য কোনো পরিবেশে গিয়ে সেখানকার খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত হতে না পারলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে। এমনকি নিজ পরিবেশেও অতিরিক্ত শীত বা গরমে এ সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া ভ্রমণে গিয়ে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন কোনো কোনো শিশুর জন্য কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। 

 ৩) সঠিক খাবার গ্রহন না করা

সঠিক পরিমাণ আঁশযুক্ত খাবার এবং শাকসবজি না খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দেয়। যথেষ্ট পরিমাণ পানি ও তরল খাবার না খেলেও এই সমস্যা হতে পারে। 

৪) টয়লেট ট্রেইনিং

অনেক বাচ্চাদের টয়লেট ট্রেইনিং দিতে চাইলে তারা তা শিখতে চায় না এবং জোর করে মলত্যাগ আটকে রাখে। এর ফলে দীর্ঘক্ষণ জেদের বশে মলত্যাগ না করায় কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। 

৫) ওষুধ

কিছু কিছু ওষুধ বা অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট শিশুদের জন্য ক্ষতিকর। এগুলো গ্রহণের ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে। 

৬) গরুর দুধে এ্যালার্জি

অনেক শিশুর গরুর দুধ বা মিষ্টি জাতীয় খাবারে এ্যালার্জি থাকে। তাদের জন্য এসব খাবার কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

৭) পরিবার

পরিবারের কোনো সদস্যের যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকে তবে সেই সমস্যা বাচ্চাদের মধ্যেও শুরু হতে পারে। জেনেটিক বা পরিবেশগত কারণে শিশুদের মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে। 

৮) শারীরিক সমস্যা

হজমে সমস্যা, বিপাকীয় সমস্যা বা শারীরিক বিকলাঙ্গতার কারণে শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয়। 

৯) মলত্যাগে চাপ

শিশুকে মলত্যাগের জন্য বারবার চাপ প্রয়োগ করা বা মলত্যাগের সময় চমকে দেওয়া শিশুর মলত্যাগ সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে দিতে পারে। এতেও অনেক শিশু কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগতে পারে। 

উপরিউক্ত কারণগুলো ছাড়াও আরো নানা কারণে শিশুদের এই রোগ হতে পারে। তবে এই কারণগুলোর জন্যই সাধারণত শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য হতে দেখা যায় এবং এগুলো প্রতিকার করাও সম্ভব। তাই শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য হলে আগে তার কারণ জানতে হবে, তাহলেই এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। 

কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেশি দেখা যায় কোন শিশুদের মধ্যে?

তবে সব শিশুর একই কারণে বা একই পরিবেশের জন্য কোষ্ঠকাঠিন্য হয় না। প্রধানত যেসব শিশু কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগে তারা হলো-

স্বাভাবিক শিশুদের সাময়িকভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য হলেও তা ওষুধ খেয়ে এবং যথাযথ চিকিৎসায় ভালো হয়ে যায়। কিন্তু উল্লিখিত সমস্যাগুলো রয়েছে এমন শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য হলে অবশ্যই সতর্কতার সাথে তাদের চিকিৎসা করা উচিৎ। 

শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণগুলো কি কি?

মূলত যেগুলোকে কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ ধরা যায় সেগুলো হলো-

এগুলোই কোষ্ঠকাঠিন্যের সাধারণ লক্ষণ, তবে সব শিশুর ক্ষেত্রেই যে সকল লক্ষণ দেখা যাবে এমনটা নয়। এসব লক্ষণ দেখা গেলে দেরি না করে শিশুকে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া উচিৎ। 

শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য যেভাবে দূর করা যায় কখন কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য শিশুকে চিকিৎসককে দেখানো উচিৎ?

কোষ্ঠকাঠিন্য কিছু কিছু সময় বড় ধরণের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চলতে থাকলে চিকিৎসককে দেখানো উচিৎ। প্রায় দুইসপ্তাহ ধরে এসব লক্ষণ দেখা গেলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। এছাড়া-

উপরিউক্ত সমস্যাগুলো যদি কোষ্ঠকাঠিন্যের সাথে দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসককে দেখাতে হবে। এসব দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ এবং এগুলো থেকে বড় সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। 

কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করার জন্য শিশুদের যেসব ওষুধ দেয়া যেতে পারে

তবে এসব ওষুধ অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরিমিত পরিমাণে দিতে হবে। চিকিৎসক ওষুধের জন্য যে কোর্স দিবেন সেটা পূরণ করতে হবে। 

শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য কার্যকর ঘরোয়া পদ্ধতি শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্যের ব্যাথা কমানোর জন্য তাৎক্ষণিক যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়

যদিও শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটির কারণে অন্ত্রের অন্যান্য সমস্যাও সৃষ্টি হতে পারে। তাই শিশুর কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিলে তৎক্ষনাৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]