সঠিকভাবে ইনসুলিন ব্যবহারের ১০টি নিয়ম ইনসুলিন কোথায় দিতে হয় ইনসুলিন খাওয়ার আগে না পরে কলম ইনসুলিন ব্যবহারের নিয়ম

আমরা জানি ডায়াবেটিস হলে অনেকের ক্ষেত্রে ঔষধের পাশাপাশি ইনসুলিন নেয়া লাগে। এই ইনসুলিন আসলে কি? 

ইনসুলিন হলো এক ধরনের হরমোন যা আমাদের রক্তের গ্লুকোজের পরিমানকে সঠিক মাত্রায় বজায় রাখে। ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে এই হরমোনটির অনুপস্থিতি বা হরমোনটি নিঃসৃত হলেও ঠিকভাবে কাজ না করার ফলে রক্তে গ্লুকোজের সঠিক মাত্রা বজায় থাকে না যার ফলে নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ কারনে অনেক সময় ঔষধ সেবনের পাশাপাশি ডায়াবেটিসের রোগীদের বাইরে থেকে মানবদেহে ইনসুলিন নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। 

তবে ইনসুলিন সিরিঞ্জ বা পেনের সাহায্যে নিতে হয় যার কারনে বিষয়টি একটু জটিল। তাই ইনসুলিন নেওয়ার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে জানা না থাকলে, ইনসুলিন এর ডোজ কম বা বেশি হয়ে কিংবা শরীরে ভুল জায়গায় ইনসুলিন নিয়ে রোগী মারাত্মক সমস্যায় পড়তে পারেন।     

 ইনসুলিন সঠিকভাবে নেওয়ার জন্য যেসব বিষয়ে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে:

১. ইনসুলিন সংরক্ষণ  

ইনসুলিন ২-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় রাখতে হয় অর্থাৎ ফ্রিজে রাখতে হবে তবে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষন করা যাবে না। যদি ইনসুলিনকে খুব গরম কিংবা শীতল তাপমাত্রায় রাখা হয় তাহলে তার গুনাগুন হ্রাস পায়। তবে একবার ব্যাবহারের পর ইনসুলিন পেনের সাথে সুচ লাগানো অবস্থায় ফ্রিজে রাখা যাবে না। ইনজেকশন দেওয়ার আগে ইনসুলিন  ফ্রিজ থেকে বের করে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় না  আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

২. ইনসুলিন ইঞ্জেকশন গ্রহণ 

ইঞ্জেকশন নেওয়ার জন্য সিরিঞ্জ অথবা পেন রোগীর অবস্থা অনুসারে ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে তা হল, সিরিঞ্জের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সাইজের সিরিঞ্জ রয়েছে। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী নির্দিষ্ট ইনসুলিনের জন্য নির্দিষ্ট সাইজের সিরিঞ্জ ব্যবহার করতে হবে। ইনসুলিন পেন দুই ধরনের হয়ে থাকে। যে কোন এক ধরনের পেন নির্দিষ্ট নিয়মানুযায়ী ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে পেন এর সাথে আলাদাভাবে সুই ব্যবহার করতে হবে এবং যা একবারই ব্যবহার করা সর্বোত্তম। 

৩. ইনসুলিন সিরিঞ্জ দিয়ে ইনসুলিন নেওয়ার সময় যা মনে রাখা জরুরী

প্রথমেই ইনসুলিন নেওয়ার জন্য শরীরের একটি নির্দিষ্ট জায়গা নির্বাচন করতে হবে।

সাধারণত শরীরের চর্বিযুক্ত স্থান কে ইনসুলিন নেওয়ার জন্য সবচাইতে উপযুক্ত মনে করা হয়। যেমনঃ তলপেট, উরু এবং বাহু। এক্ষেত্রে ডাক্তারের নির্র্দেশনা অনুযায়ী জায়গা ঠিক করতে হবে। তবে ইনসুলিন নেওয়ার জন্য সবচাইতে ভাল জায়গা হল তলপেটের অংশ বা নাভির নিচের দিক কেননা এখানে চর্বির স্তর অন্যান্য জায়গা থেকে বেশি থাকে।

কোথায় ইনসুলিন নিবেন না?

নাভির আশেপাশের অন্তত দুই ইঞ্চি পরিমান জায়গায়, শরীরের এমন কোন জায়গায় যেখানে তিল আছে সেখানে ইঞ্জেকশন নেওয়া যাবে না এবং চামড়ার কোন স্থানে ফুলে গেলে, র‍্যাশ কিংবা সংক্রমণ দেখা দিলে এসব জায়গায় ইঞ্জেকশন নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

এছাড়া প্রতিবার ইঞ্জেকশন নেওয়ার সময় ভিন্ন ভিন্ন স্থান নির্বাচন করা ভাল এবং পূর্ববর্তী ইঞ্জেকশনের স্থান থেকে পরবর্তী স্থানের দুরত্ব কমপক্ষে এক সেন্টিমিটার রাখা উচিত।

পেন ব্যবহার করে ইনসুলিন নেওয়ার ক্ষেত্রেও আমাদের এইসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে।

৪. ইঞ্জেকশন নেওয়ার স্থানটি শুকনো ও পরিষ্কার রাখা জরুরী।

৫. ঘোলা ইনসুলিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে পেন বা ভায়ালটি উপর নিচ করে ঘুরিয়ে ভালভাবে মিশিয়ে নিতে হবে।

৬. সিরিঞ্জ দিয়ে ইনসুলিন দেওয়ার ক্ষেত্রে যত ইউনিট ইনসুলিন দেওয়া হবে সেই পরিমাণ বাতাস সিরিঞ্জে টেনে নিয়ে ভায়ালে বাতাস প্রবেশ করাতে হবে। ভায়ালের মুখটি নিচের দিকে রেখে পরিমাণ অনুযায়ী ইনসুলিন সিরিঞ্জে প্রবেশ করাতে হবে। অপরদিকে পেন ব্যাবহারের ক্ষেত্রে যত ইউনিট ইনসুলিন নেওয়া হবে ঠিক সেই পরিমাণ ডায়াল ঘুরিয়ে সেট করে নিতে হবে। 

৭. ইনসুলিন নেওয়ার জায়গার চামড়া দুই আঙুল দিয়ে একটু ভাজ করে তুলে ধরলে সুই পুশ করতে সুবিধা হবে।

৮. ইনসুলিন পুশ করার সময় খাড়াভাবে বা নব্বই ডিগ্রি কোণে সুইটি প্রবেশ করাতে হবে। 

৯. ইঞ্জেকশন দেওয়া শেষ হলে ইনসুলিন যেন শরীরে ঠিকভাবে প্রবেশ করতে পারে তার জন্য কিছু সময় (অন্তত ১০ সেকেন্ড) অপেক্ষা করে তারপর সুইটি বের করে আনতে হবে।

১০. ইনসুলিন নেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হলে সিরিঞ্জ এবং সুই এগুলো নিরাপদ স্থানে ফেলতে হবে।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]