সকল ধরণের মেডিসিনই অবাঞ্ছিত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এগুলির মধ্যে রয়েছে প্রেসক্রিপশন ড্রাগ, ওভার-দ্য-কাউন্টার ড্রাগ এবং সাপ্লিমেন্ট (হারবাল এবং ভিটামিন)।
আপনি যদি আপনার কোনো ঔষুধের সাইড ইফেক্ট নিয়ে চিন্তিত হন, অবিলম্বে চিকিৎসার পরামর্শ নিন।
একের অধিক ঔষু্ধের সক্রিয় উপাদানগুলি নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ করতে পারে। তাই, একই সময়ে একাধিক ঔষুধ সেবন করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
আপনি যে সমস্ত মেডিসিন গ্রহণ করছেন সে সম্পর্কে আপনার ডাক্তারকে জানিয়ে রাখুন।
সাধারণ প্যারাসিটামল, অ্যাসপিরিন থেকে শুরু করে অ্যান্টিবায়োটিক যেকোন ঔষুধেরই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়ে থাকে। এরমধ্যে অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আমরা বুঝতে পারি কম, অন্যগুলো আমাদের চোখে পড়ে বেশি। তবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমনটাই হোক না কেন, সেটি নিয়ে আপনার উচিৎ সতর্ক হওয়া এবং চিকিৎসকের সাথে কথা বলা।
ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কখনও ভালো হয়ে থাকে আবার কখনও বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঔষুধের নেতিবাচক প্রভাব হিসেবে পেটের গোলযোগ, মাথা ঘোরানো, ত্বকের চুলকানি ইত্যাদি দেখা দেয়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষুধ সেবন করলে এমন সমস্যাগুলো থেকে দূরে থাকা যায় সহজেই।
সাধারণত শারীরিক কোন সমস্যা দূরীকরণে চিকিৎসকেরা ঔষুধ সেবন করার পরামর্শ দেন। তবে সেই ঔষুধ সেবনের ফলে বা একাধিক ঔষুধ একত্রে সেবন করলে শারীরিক যে যে অপ্রত্যাশিত সমস্যাগুলো তৈরি হয় সেগুলোকে মেডিসিন সাইড ইফেক্ট বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বলা হয়।
ঔষুধের সাধারপণ সাইড ইফেক্ট খুব একটা লক্ষণীয় বা সমস্যার না হলেও কখনো কখনো তা ঝুঁকিপূর্ণও হয়ে পড়তে পারে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঔষুধের নেতিবাচক প্রভাব দেখা যায় কয়েকটি ঔষুধের পরিমাণ কমবেশী হলে।
ঔষুধ সেবনের ফলে যেকোন ঔষুধ থেকেই অ্যালার্জির লক্ষণ দেখা দিতে পারে। মৃদু চুলকানি ও র্যাশ তৈরি হতে পারে এক্ষেত্রে। তবে এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বৃদ্ধি পেলে জীবন সংহারীও হতে পারে পুরো ব্যাপারটি।
কিছু অ্যালার্জির ঔষুধ মুখে শুষ্কতা তৈরি করে।
কিছু ঔষুধ শরীরের রক্তচলাচলকেও প্রভাবিত করে।
রক্তচাপ কমে যাওয়া, গ্যাস্ট্রিকের প্রদাহ তৈরি হওয়া ইত্যাদি ঔষুধের সাইড ইফেক্টের বড় উদাহরণ।
কোন ঔষুধের মধ্যে অ্যালকোহল থাকলে সেটি মানসিকভাবে প্রভাবিত করতে পারে একজন রোগীকে। রোগীর উদ্বিগ্নতা বৃদ্ধি করা, মাথা ঘোরানো, মাথা ব্যথা, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধির মতো সমস্যা তৈরি করে এই ঔষুধগুলো।
চিকিৎসক কোন ঔষুধ দেওয়ার সময় ঔষুধের সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানতে নিচের প্রশ্নগুলো অবশ্যই চিকিৎসককে করবেন-
১. এই ঔষুধের কোন সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি?
২. সাধারণত কতবার এবং কতটা বেশি সাইড ইফেক্ট দেখা দিতে পারে?
৩. এই সাইড ইফেক্ট কি শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ?
৪. সময়ের সাথে সাথে কি সাইড ইফেক্ট ঠিক হয়ে যাবে?
৫. আমি এই সাইড ইফেক্ট দূর করতে বা এড়িয়ে চলতে কী করবো?
৬. আমার বর্তমান ঔষুধের সাথে এই ঔষুধ আরো বড় কোন ঝুঁকি তৈরি করবে না তো?
৭. সাইড ইফেক্ট দেখা দিলে আমি কী করবো?
জরুরি অবস্থায়, অবশ্যই নিকটস্থ হাসপাতালে সেবা নিতে হবে । অন্য কোন উপায় না থাকলে, সর্বদা ট্রিপল নাইন (999) কল করুন।
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলি নোট করুন এবং যদি তা উদ্বেগের বিষয় হয় তবে আপনার ডাক্তার বা অভিজ্ঞ ফার্মাসিস্টের সাথে পরামর্শ করুন। তারা আপনার ব্যবহার করা ওষুধের ডোজ বা ধরন সামঞ্জস্য করে দিতে পারে।
ঔষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন। এছাড়া এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করতে-
১. চিকিৎসকের প্রদানকৃত ঔষুধ সেবন করুন। কোনভাবেই ঝোঁকের মাথায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করার জন্য অন্য চিকিৎসকের দেওয়া ঔষুধ বা নিজ থেকে কোন ঔষুধ সেবন করবেন না।
২.ঔষুধ সম্পর্কে জেনে রাখুন। যে ঔষুধ সেবন করছেন সেটা সম্পর্কে এবং সেই ঔষুধের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে যে ঔষুধ সেবন করতে হবে তা সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে রাখুন।
৩. ফার্মেসি থেকে ঔষুধ নেওয়ার পূর্বে সেখানে প্রেসক্রাইবড ঔষুধগুলো সম্পর্কে এবং সেগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নিন ভালোভাবে।
৪. চিকিৎসককে আপনার অন্যান্য শারীরিক সমস্যা এবং সেই সমস্যার জন্য আপনি কোন কোন ঔষুধ সেবন করছেন সবকিছু ভালোভাবে জানান।
৫. প্রতি বছর আপনি মোট কী কী ঔষুধ নিচ্ছেন এবং আপনার শরীরে সেগুলো প্রভাব হিসেবে কী কী হচ্ছে তা সম্পর্কে জেনে নিন।
৬. যদি ঔষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দূর করতে আপনার জীবনযাপন পদ্ধতি বদলাতে হয় তাহলে সেটা সম্পর্কেও চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন।
৭. আপনাকে ২৪/৭ ঔষুধসংক্রান্ত যেকোন সমস্যায় পরামর্শ দিতে পারবেন এমন কারো সাথে যোগাযোগ রাখুন।
এতে করে আপনি আপনার ঔষুধের মাধ্যমে হওয়া পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে দূরে থাকতে পারবেন বা এমন কোন পরিস্থিতি তৈরি হলেও সেখান থেকে সহজেই বের হয়ে আসতে পারবেন।