সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস সাহাবীগণের মর্যাদা অধ্যায় ২য় ভাগ হাদিস নং ৩৭০১ – ৩৭৭৫

৬২/৯. অধ্যায়ঃ
আবুল হাসান ‘আলী ইব্‌নু তালিব কুরাইশী হাশিমী (রাঃ)-এর মর্যাদা।

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আলী (রাঃ) –কে বলেছেন, তুমি আমার ঘনিষ্ঠ আপনজন আমি তোমার একান্ত শ্রদ্ধাভাজন। ‘উমার (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওফাত পর্যন্ত তাঁর উপর সন্তুষ্ট ছিলেন।

৩৭০১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ عَنْ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ لَاعْطِيَنَّ الرَّايَةَ غَدًا رَجُلًا يَفْتَحُ اللهُ عَلَى يَدَيْهِ قَالَ فَبَاتَ النَّاسُ يَدُوكُوْنَ لَيْلَتَهُمْ أَيُّهُمْ يُعْطَاهَا فَلَمَّا أَصْبَحَ النَّاسُ غَدَوْا عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم كُلُّهُمْ يَرْجُوْ أَنْ يُعْطَاهَا فَقَالَ أَيْنَ عَلِيُّ بْنُ أَبِيْ طَالِبٍ فَقَالُوْا يَشْتَكِيْ عَيْنَيْهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ فَأَرْسِلُوْا إِلَيْهِ فَأْتُوْنِيْ بِهِ فَلَمَّا جَاءَ بَصَقَ فِيْ عَيْنَيْهِ وَدَعَا لَهُ فَبَرَأَ حَتَّى كَأَنْ لَمْ يَكُنْ بِهِ وَجَعٌ فَأَعْطَاهُ الرَّايَةَ فَقَالَ عَلِيٌّ يَا رَسُوْلَ اللهِ أُقَاتِلُهُمْ حَتَّى يَكُوْنُوْا مِثْلَنَا فَقَالَ انْفُذْ عَلَى رِسْلِكَ حَتَّى تَنْزِلَ بِسَاحَتِهِمْ ثُمَّ ادْعُهُمْ إِلَى الْإِسْلَامِ وَأَخْبِرْهُمْ بِمَا يَجِبُ عَلَيْهِمْ مِنْ حَقِّ اللهِ فِيْهِ فَوَاللهِ لَانْ يَهْدِيَ اللهُ بِكَ رَجُلًا وَاحِدًا خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ يَكُوْنَ لَكَ حُمْرُ النَّعَمِ

সাহল ইব্‌নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি আগামীকাল এমন এক ব্যক্তিকে পতাকা দিব যাঁর হাতে আল্লাহ্‌ বিজয় দান করবেন। রাবী বলেন, তারা এই আগ্রহ ভরে রাত্রি যাপন করলেন যে, কাকে এ পতাকা দেয়া হবে। যখন ভোর হল তখন সকলেই আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর নিকট গিয়ে উপস্থিত হলেন। তাদেরর প্রত্যেকেই এ আশা করছিলেন যে পতাকা তাকে দেয়া হবে। অতঃপর তিনি বললেন, ‘আলী ইব্‌নু আবু তালিব কোথায়? তাঁরা বললেন, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তিনি চক্ষু রোগে আক্রান্ত। তিনি বললেন, কাউকে পাঠিয়ে তাকে আমার নিকট নিয়ে এস। যখন তিনি এলেন, তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর দু’চোখে থুথু লাগিয়ে দিলেন এবং তাঁর জন্য দু’আও করলেন। এতে তিনি এমন সুস্থ হয়ে গেলেন যেন তাঁর চোখে কোন রোগই ছিল না। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে পতাকাটি দিলেন। ‘আলী (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! তারা যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের মত না হয়ে যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমি কি তাদের সঙ্গে যুদ্ধ চালিয়ে যাব। তিনি বললেন, তুমি সোজা এগিয়ে যেতে থাক এবং তাদের আঙ্গিণায় পৌঁছে তাদেরকে ইসলাম গ্রহণের দা’ওয়াত দাও। তাদের উপর আল্লাহ্‌র যে দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে তাও তাদেরকে জানিয়ে দাও। আল্লাহর কসম, তোমার দ্বারা যদি একটি মানুষও হিদায়াত লাভ করে, তা হবে তোমার জন্য লাল রং এর উট পাওয়ার চেয়েও উত্তম।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪২৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৩৩)

৩৭০২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا حَاتِمٌ عَنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِيْ عُبَيْدٍ عَنْ سَلَمَةَ قَالَ كَانَ عَلِيٌّ قَدْ تَخَلَّفَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ خَيْبَرَ وَكَانَ بِهِ رَمَدٌ فَقَالَ أَنَا أَتَخَلَّفُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ فَخَرَجَ عَلِيٌّ فَلَحِقَ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا كَانَ مَسَاءُ اللَّيْلَةِ الَّتِيْ فَتَحَهَا اللهُ فِيْ صَبَاحِهَا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَاعْطِيَنَّ الرَّايَةَ أَوْ لَيَأْخُذَنَّ الرَّايَةَ غَدًا رَجُلًا يُحِبُّهُ اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَوْ قَالَ يُحِبُّ اللهَ وَرَسُوْلَهُ يَفْتَحُ اللهُ عَلَيْهِ فَإِذَا نَحْنُ بِعَلِيٍّ وَمَا نَرْجُوْهُ فَقَالُوْا هَذَا عَلِيٌّ فَأَعْطَاهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الرَّايَةَ فَفَتَحَ اللهُ عَلَيْهِ

সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আলী (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সঙ্গে খায়বার যুদ্ধে যাননি। কেননা তাঁর চোখে অসুখ ছিল। এতে তিনি বললেন, আমি কি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে যাব না? অতঃপর তিনি বেরিয়ে পড়লেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে মিলিত হলেন। যেদিন সকালে আল্লাহ্‌ বিজয় দান করলেন, তার আগের রাতে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আগামীকাল ভোরে আমি এমন এক লোককে পতাকা দিব, অথবা বলেছিলেন যে, এমন এক লোক ঝান্ডা ধারণ করবে যাঁকে আল্লাহ এবং তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভালবাসেন, অথবা বলেছিলেন, সে আল্লাহ্‌ ও তাঁর রসূলকে ভালবাসে। তাঁর মাধ্যমে আল্লাহ্‌ তা’আলা বিজয় দান করবেন। অতঃপর আমরা দেখতে পেলাম তিনি হলেন ‘আলী (রাঃ), অথচ আমরা তাঁর সম্পর্কে এমনটি আশা করিনি। তাই সকলেই বলে উঠলেন, এই যে ‘আলী (রাঃ)। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকেই দিলেন এবং তাঁর মাধ্যমেই আল্লাহ তা’আলা বিজয় দিলেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪২৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৩৪)

৩৭০৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ رَجُلًا جَاءَ إِلَى سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ فَقَالَ هَذَا فُلَانٌ لِأَمِيْرِ الْمَدِيْنَةِ يَدْعُوْ عَلِيًّا عِنْدَ الْمِنْبَرِ قَالَ فَيَقُوْلُ مَاذَا قَالَ يَقُوْلُ لَهُ أَبُوْ تُرَابٍ فَضَحِكَ قَالَ وَاللهِ مَا سَمَّاهُ إِلَّا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَمَا كَانَ لَهُ اسْمٌ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْهُ فَاسْتَطْعَمْتُ الْحَدِيْثَ سَهْلًا وَقُلْتُ يَا أَبَا عَبَّاسٍ كَيْفَ ذَلِكَ قَالَ دَخَلَ عَلِيٌّ عَلَى فَاطِمَةَ ثُمَّ خَرَجَ فَاضْطَجَعَ فِي الْمَسْجِدِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَيْنَ ابْنُ عَمِّكِ قَالَتْ فِي الْمَسْجِدِ فَخَرَجَ إِلَيْهِ فَوَجَدَ رِدَاءَهُ قَدْ سَقَطَ عَنْ ظَهْرِهِ وَخَلَصَ التُّرَابُ إِلَى ظَهْرِهِ فَجَعَلَ يَمْسَحُ التُّرَابَ عَنْ ظَهْرِهِ فَيَقُوْلُ اجْلِسْ يَا أَبَا تُرَابٍ مَرَّتَيْنِ

আবূ হাযিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক লোক সাহ্‌ল ইব্‌নু সা’দ (রাঃ)-এর নিকট হাযির হয়ে বললেন, মদীনার অমুক আমীর মিম্বরের নিকটে বসে ‘আলী (রাঃ) সম্পর্কে অপ্রিয় কথা বলছে। তিনি বললেন, সে কী বলছে? সে বলল, সে তাকে আবূ তুরাব (রাঃ) বলে উল্লেখ করছে। সাহ্‌ল (রাঃ) হেসে দিলেন এবং বললেন, আল্লাহ্‌র কসম, তাঁর এ নাম নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রেখেছিলেন। এ নাম অপেক্ষা তাঁর নিকট বেশি প্রিয় আর কোন নাম ছিল না। আমি ঘটনাটি জানার জন্য সাহ্‌ল (রাঃ) –এর নিকট ইচ্ছে প্রকাশ করলাম এবং তাকে বললাম, হে আবূ ‘আব্বাস! এটা কিভাবে হয়েছিল। তিনি বললেন, ‘আলী (রাঃ) ফাতিমা (রাঃ) –এর নিকট গেলেন এবং কিছুক্ষণ পর ফিরে মাসজিদে শুয়ে রইলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার চাচাত ভাই কোথায়? তিনি বললেন, মাসজিদে। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর খোঁজে বেরিয়ে পড়লেন। পরে তিনি তাঁকে এমন অবস্থায় পেলেন যে তাঁর চাদর পিঠ হতে সরে গিয়েছে। তাঁর পিঠে ধূলা-বালি লেগে গেছে। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পিঠ হতে ধূলা-বালি ঝাড়তে ঝাড়তে বললেন, উঠে বস হে আবূ তুরাব! কথাটি দু’বার বলেছিলেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪২৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৩৫)

৩৭০৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ عَنْ زَائِدَةَ عَنْ أَبِيْ حَصِيْنٍ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى ابْنِ عُمَرَ فَسَأَلَهُ عَنْ عُثْمَانَ فَذَكَرَ عَنْ مَحَاسِنِ عَمَلِهِ قَالَ لَعَلَّ ذَاكَ يَسُوءُكَ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَأَرْغَمَ اللهُ بِأَنْفِكَ ثُمَّ سَأَلَهُ عَنْ عَلِيٍّ فَذَكَرَ مَحَاسِنَ عَمَلِهِ قَالَ هُوَ ذَاكَ بَيْتُهُ أَوْسَطُ بُيُوْتِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قَالَ لَعَلَّ ذَاكَ يَسُوءُكَ قَالَ أَجَلْ قَالَ فَأَرْغَمَ اللهُ بِأَنْفِكَ انْطَلِقْ فَاجْهَدْ عَلَيَّ جَهْدَكَ

সাদ ইব্‌নু ‘উবাইদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক লোক ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) –এর কাছে এস ‘উসমান (রাঃ) সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করল। তিনি ‘উসমান (রাঃ) –এর কতিপয় ভাল গুণ বর্ণনা করলেন। ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) ঐ লোককে বললেন, মনে হয় এটা তোমার নিকট খারাপ লাগছে। সে বলল, হাঁ। ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) ঐ লোককে বললেন, আল্লাহ (তোমাকে) অপমানিত করুন। অতঃপর সে ব্যক্তি ‘আলী (রাঃ) এর সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। তিনি তাঁরও কতিপয় ভাল গুণ বর্ণনা করলেন এবং বললেন, ঐ দেখ! তাঁর ঘরটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর ঘরগুলির মধ্যে অবস্থিত। অতঃপর তিনি বললেন, মনে হয় এ সব কথা শুনতে তোমার খারাপ লাগছে। সে বলল, হাঁ। ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহ তোমাকে লাঞ্ছিত করুন। যাও আমার বিরুদ্ধে যত পার কর।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪২৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৩৬)

৩৭০৫
حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ الْحَكَمِ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِيْ لَيْلَى قَالَ حَدَّثَنَا عَلِيٌّ أَنَّ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَام شَكَتْ مَا تَلْقَى مِنْ أَثَرِ الرَّحَا فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سَبْيٌ فَانْطَلَقَتْ فَلَمْ تَجِدْهُ فَوَجَدَتْ عَائِشَةَ فَأَخْبَرَتْهَا فَلَمَّا جَاءَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ عَائِشَةُ بِمَجِيءِ فَاطِمَةَ فَجَاءَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَيْنَا وَقَدْ أَخَذْنَا مَضَاجِعَنَا فَذَهَبْتُ لِأَقُومَ فَقَالَ عَلَى مَكَانِكُمَا فَقَعَدَ بَيْنَنَا حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَ قَدَمَيْهِ عَلَى صَدْرِيْ وَقَالَ أَلَا أُعَلِّمُكُمَا خَيْرًا مِمَّا سَأَلْتُمَانِيْ إِذَا أَخَذْتُمَا مَضَاجِعَكُمَا تُكَبِّرَا أَرْبَعًا وَثَلَاثِيْنَ وَتُسَبِّحَا ثَلَاثًا وَثَلَاثِيْنَ وَتَحْمَدَا ثَلَاثًا وَثَلَاثِيْنَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكُمَا مِنْ خَادِمٍ

‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ফাতিমা (রাঃ) যাঁতা চালানোর কষ্ট সম্পর্কে একদা অভিযোগ প্রকাশ করলেন। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর নিকট কিছু সংখ্যক যুদ্ধবন্দী আসল। ফাতিমা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গেলেন। কিন্তু তাঁকে না পেয়ে ‘আয়িশা (রাঃ) –এর নিকট তাঁর কথা বলে আসলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ঘরে আসলেন তখন ফাতিমা (রাঃ) এর আগমন ও উদ্দেশ্যের ব্যাপারে ‘আয়িশা (রাঃ) তাঁকে জানালেন। (আলী (রাঃ) বলেন) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের এখানে আসলেন, যখন আমরা বিছানায় শুয়ে পড়েছিলাম। তাঁকে দেখে আমি উঠে বসতে চাইলাম। কিন্তু তিনি বললেন, তোমারা নিজ নিজ অবস্থায় থাক এবং তিনি আমাদের মাঝে এমনভাবে বসে পড়লেন যে আমি তাঁর দুই পায়ের শীতলতা আমার বুকে অনুভব করলাম। তিনি বললেন, তোমরা যা চেয়েছিলে আমি কি তার চেয়েও উত্তম জিনিস শিক্ষা দিব না? তোমরা যখন ঘুমানোর উদ্দেশে বিছানায় যাবে তখন চৌত্রিশ বার “আল্লাহ্‌ আকবার” তেত্রিশবার “সুবহানাল্লাহ” তেত্রিশবার “আলহামদুলিল্লাহ” পড়ে নিবে। এটা খাদিম অপেক্ষা অনেক উত্তম।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৩০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৩৭)

৩৭০৬
حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ سَعْدٍ قَالَ سَمِعْتُ إِبْرَاهِيْمَ بْنَ سَعْدٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِعَلِيٍّ أَمَا تَرْضَى أَنْ تَكُوْنَ مِنِّيْ بِمَنْزِلَةِ هَارُوْنَ مِنْ مُوْسَى

সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আলী (রাঃ)-কে বলেছিলেন, তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, যেভাবে হারূন (আঃ) মূসা (আঃ) –এর নিকট হতে মর্যাদা লাভ করেছিলেন তুমিও আমার নিকট সেই মর্যাদা লাভ কর।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৩১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৩৮)

৩৭০৭
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْجَعْدِ أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ ابْنِ سِيْرِيْنَ عَنْ عَبِيْدَةَ عَنْ عَلِيٍّ قَالَ اقْضُوْا كَمَا كُنْتُمْ تَقْضُوْنَ فَإِنِّيْ أَكْرَهُ الِاخْتِلَافَ حَتَّى يَكُوْنَ لِلنَّاسِ جَمَاعَةٌ أَوْ أَمُوْتَ كَمَا مَاتَ أَصْحَابِيْ فَكَانَ ابْنُ سِيْرِيْنَ يَرَى أَنَّ عَامَّةَ مَا يُرْوَى عَنْ عَلِيٍّ الْكَذِبُ

‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তোমরা আগে হতে যেভাবে ফয়সালা করে আসছ সেভাবেই কর কেননা পারস্পরিক বিবাদ আমি অপছন্দ করি। যেন সকল লোক এক দল ভুক্ত হয়ে থাকে। অথবা আমি এমন অবস্থায় দুনিয়া হতে বিদায় হই যেভাবে আমার সাথীগণ দুনিয়া হতে বিদায় নিয়েছেন। (মুহাম্মদ) ইব্‌নু সীরীন (রহঃ) এ ধারণা পোষণ করতেন যে, ‘আলী (রাঃ) এর (১ম খলীফা হওয়া সম্পর্কে) যে সব কথা তার হতে (রাফিযী সম্প্রদায় কর্তৃক) বর্ণিত তার অধিকাংশই ভিত্তিহীন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৩২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৩৯)

৬২/১০. অধ্যায়ঃ
জা‘ফর ইব্‌নু আবূ তালিব হাশিমী (রাঃ)-এর মর্যাদা।

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বলেছিলেন, অবয়ব ও স্বভাব-চরিত্রে তুমি আমার সদৃশ।

৩৭০৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ أَبِيْ بَكْرٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ بْنِ دِيْنَارٍ أَبُوْ عَبْدِ اللهِ الْجُهَنِيُّ عَنْ ابْنِ أَبِيْ ذِئْبٍ عَنْ سَعِيْدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّاسَ كَانُوْا يَقُوْلُوْنَ أَكْثَرَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ وَإِنِّيْ كُنْتُ أَلْزَمُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِشِبَعِ بَطْنِيْ حَتَّى لَا آكُلُ الْخَمِيْرَ وَلَا أَلْبَسُ الْحَبِيْرَ وَلَا يَخْدُمُنِيْ فُلَانٌ وَلَا فُلَانَةُ وَكُنْتُ أُلْصِقُ بَطْنِيْ بِالْحَصْبَاءِ مِنْ الْجُوعِ وَإِنْ كُنْتُ لَاسْتَقْرِئُ الرَّجُلَ الْآيَةَ هِيَ مَعِيْ كَيْ يَنْقَلِبَ بِيْ فَيُطْعِمَنِيْ وَكَانَ أَخْيَرَ النَّاسِ لِلْمِسْكِيْنِ جَعْفَرُ بْنُ أَبِيْ طَالِبٍ كَانَ يَنْقَلِبُ بِنَا فَيُطْعِمُنَا مَا كَانَ فِيْ بَيْتِهِ حَتَّى إِنْ كَانَ لَيُخْرِجُ إِلَيْنَا الْعُكَّةَ الَّتِيْ لَيْسَ فِيْهَا شَيْءٌ فَنَشُقُّهَا فَنَلْعَقُ مَا فِيْهَا

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

লোকেরা বলে থাকেন যে, আবূ হুরায়রা (রাঃ) অনেক বেশি হাদীস বর্ণনা করে থাকেন। বস্তুতঃ আমি আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আত্মতৃপ্তি নিয়ে পড়ে থাকতাম। ঐ সময়ে আমি সুস্বাদু রুটি ভক্ষণ করিনি, দামী কাপড় পরিনি। তখন কেউ আমার সেবা করত না। এবং আমি ক্ষুধার জ্বালায় পাথুরে ভূমির সঙ্গে পেট চেপে ধরতাম। কোন কোন সময় কুরআনে কারীমের কোন আয়াত, আমার জানা থাকা সত্ত্বেও অন্যদের জিজ্ঞেস করতাম যেন, তারা আমাকে তাদের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কিছু খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেন। গরীব মিসকীনদের জন্য সবার চেয়ে উত্তম ব্যক্তি ছিলেন জা’ফর ইব্‌নু আবূ তালিব (রাঃ)। তিনি প্রায়ই আমাকে নিজ ঘরে নিয়ে যেতেন এবং যা ঘরে থাকত তাই আমাকে আহার করিয়ে দিতেন। কোন সময় ঘিয়ের খালি পাত্র এনে দিতেন, আমরা ভেঙ্গে দিয়ে তা চেটে খেতাম।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৩৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৪০)

৩৭০৯
حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ هَارُوْنَ أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيْلُ بْنُ أَبِيْ خَالِدٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا كَانَ إِذَا سَلَّمَ عَلَى ابْنِ جَعْفَرٍ قَالَ السَّلَامُ عَلَيْكَ يَا ابْنَ ذِي الْجَنَاحَيْنِ

قَالَ أَبُوْ عَبْدُ الله : الْجَنَاحَانِ كُلُّ ناحِيَتَيْنِ

শাবী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) যখন জা‘ফর (রাঃ)-এর ছেলেকে সালাম করতেন তখন বলতেন, হে, দু‘বাহু ওয়ালা ব্যক্তির ছেলে। [১]

আবূ ‘আবদুল্লাহ [ইমাম বুখারী (রহ.)] বলেন, الْجَنَاحَانِ অর্থ প্রত্যেক বস্তুর দু’ পাশ। (৪২৬৪)

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৩৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৪১)


[১] মুতার যুদ্ধে কাফিরদের তীরের আঘাতে যখন জা’ফার ইব্‌নু আবূ তালিবের হাত দুটো দেহ হতে পৃথক হয়ে যায় তখন তিনি ঐ দু’হাতের বদলে আল্লাহ্‌র তরফ হতে দু’টি ডানা লাভ করেন। সেগুলোর সাহায্যে তিনি ফেরেশতাদের সাথে আকাশে উড়তে থাকেন। পিতার এই অনন্য বৈশিষ্ট্য ও ফাযীলাতের স্মৃতি চারণার্থে শহীদের পুত্রকে “দু’ডানা বিশিষ্ট ব্যক্তির পুত্র” বলে সম্বোধন করতেন। হাদীসটি তিরমিযীতে বর্ণিত রয়েছে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬২/১১. অধ্যায়ঃ
‘আব্বাস ইব্‌নু ‘আবদুল মুত্তালিব (রাঃ)-এর উল্লেখ।

৩৭১০
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الأَنْصَارِيُّ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ الْمُثَنَّى عَنْ ثُمَامَةَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ كَانَ إِذَا قَحَطُوْا اسْتَسْقَى بِالْعَبَّاسِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَقَالَ اللَّهُمَّ إِنَّا كُنَّا نَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِنَبِيِّنَا صلى الله عليه وسلم فَتَسْقِيْنَا وَإِنَّا نَتَوَسَّلُ إِلَيْكَ بِعَمِّ نَبِيِّنَا فَاسْقِنَا قَالَ فَيُسْقَوْنَ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘উমার (রাঃ) অনাবৃষ্টির কারণে দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে ‘আব্বাস ইব্‌নু ‘আবদুল মুত্তালিব (রাঃ)-এর ওয়াসীলাহ নিয়ে বৃষ্টি বর্ষণের দু’আ করতেন। তিনি বলতেন, হে আল্লাহ্‌! আমরা অনাবৃষ্টি দেখা দিলে আমাদের নবীর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওয়াসীলাহ নিয়ে দু’আ করতাম, তুমি বৃষ্টি বর্ষণ করতে; এখন আমরা আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চাচা ‘আব্বাস (রাঃ)-এর ওয়াসীলাহ্‌য় বৃষ্টি বর্ষণের দু’আ করছি। তুমি আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ কর। তখন বৃষ্টি হত। [২]

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৩৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৪২)


[২] অত্র হাদীস দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, জীবিত মানুষকে ওয়াসীলাহ করা যেতে পারে, মৃত মানুষকে নয়। মৃত ব্যক্তি ওয়াসীলাহ্‌র যোগ্য হলে সাহাবীগণ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওয়াসীলাহ্‌য় পানি চাইতেন।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬২/১২. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটাত্মীয়দের মর্যাদা এবং ফাতিমা (রাঃ) বিন্‌তে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মর্যাদা।

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ফাতিমা (রাঃ) জান্নাতী নারীগণের নেত্রী।

৩৭১১
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَام أَرْسَلَتْ إِلَى أَبِيْ بَكْرٍ تَسْأَلُهُ مِيْرَاثَهَا مِنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْمَا أَفَاءَ اللهُ عَلَى رَسُوْلِهِ تَطْلُبُ صَدَقَةَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الَّتِيْ بِالْمَدِيْنَةِ وَفَدَكٍ وَمَا بَقِيَ مِنْ خُمُسِ خَيْبَرَ

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবূ বকর (রাঃ)-এর নিকট ফাতিমা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে তাঁর উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত অংশ দাবী করলেন যা আল্লাহ্‌ তা’আলা তাঁকে বিনাযুদ্ধে দান করেছিলেন, যা তিনি সদাকাহ স্বরূপ মাদীনাহ, ফাদাকে রেখে গিয়েছিলেন এবং খায়বারের এক-পঞ্চমাংশ হতে যে অবশিষ্ট ছিল তাও।

(ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৪৩ প্রথমাংশ)

৩৭১২
فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ لَا نُوْرَثُ مَا تَرَكْنَا فَهُوَ صَدَقَةٌ إِنَّمَا يَأْكُلُ آلُ مُحَمَّدٍ مِنْ هَذَا الْمَالِ يَعْنِيْ مَالَ اللهِ لَيْسَ لَهُمْ أَنْ يَزِيْدُوْا عَلَى الْمَأْكَلِ وَإِنِّيْ وَاللهِ لَا أُغَيِّرُ شَيْئًا مِنْ صَدَقَاتِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الَّتِيْ كَانَتْ عَلَيْهَا فِيْ عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَلَاعْمَلَنَّ فِيْهَا بِمَا عَمِلَ فِيْهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَتَشَهَّدَ عَلِيٌّ ثُمَّ قَالَ إِنَّا قَدْ عَرَفْنَا يَا أَبَا بَكْرٍ فَضِيْلَتَكَ وَذَكَرَ قَرَابَتَهُمْ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَحَقَّهُمْ فَتَكَلَّمَ أَبُوْ بَكْرٍ فَقَالَ وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ لَقَرَابَةُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَحَبُّ إِلَيَّ أَنْ أَصِلَ مِنْ قَرَابَتِي

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমাদের মালের কেউ ওয়ারিস হয় না। আমরা যা কিছু রেখে যাই তা সবই সদাকাহ্‌। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবারবর্গ এ মাল হতে অর্থাৎ আল্লাহ্‌র মাল হতে খেতে পারবে। তবে প্রয়োজনের বেশি নিতে পারবে না। আল্লাহ্‌র কসম, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিত্যক্ত মালে তাঁর যুগে যে নিয়ম ছিল তার পরিবর্তন করব না। আমি অবশ্যই তা করব যা আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) করে গেছেন। অতঃপর ‘আলী (রাঃ) শাহাদাত পাঠ করে বললেন, হে আবূ বাক্‌র! আমরা আপনার মর্যাদা সম্পর্কে জ্ঞাত এবং আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে তাঁদের যে আত্মীয়তা ও ঘনিষ্ঠতা রয়েছে তা এবং তাঁদের অধিকারের কথাও উল্লেখ করলেন। আবূ বকর (রাঃ) ও এ বিষয়ে উল্লেখ করে বললেন, আল্লাহ্‌র কসম! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আমার আত্মীয়দের সঙ্গে উত্তম আচরণ করার চেয়ে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আত্মীয়দের সঙ্গে উত্তম আচরণ করা আমি অধিক পছন্দ করি।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৩৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৪৩ শেষাংশ)

৩৭১৩
أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا خَالِدٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ وَاقِدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبِيْ يُحَدِّثُ عَنْ ابْنِ عُمَرَ عَنْ أَبِيْ بَكْرٍ قَالَ ارْقُبُوْا مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فِيْ أَهْلِ بَيْتِهِ

আবূ বাক্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবার-পরিজনের প্রতি তোমরা অধিক সম্মান প্রদর্শন করবে।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৩৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৪৪)

৩৭১৪
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَاطِمَةُ بَضْعَةٌ مِنِّيْ فَمَنْ أَغْضَبَهَا أَغْضَبَنِي

মিসওয়ার ইব্‌নু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ফাতিমা আমার টুকরা। যে তাকে দুঃখ দিবে, সে যেন আমাকে দুঃখ দিল।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৩৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৪৫)

৩৭১৫
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ قَزَعَةَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ دَعَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَاطِمَةَ ابْنَتَهُ فِيْ شَكْوَاهُ الَّذِيْ قُبِضَ فِيْهَا فَسَارَّهَا بِشَيْءٍ فَبَكَتْ ثُمَّ دَعَاهَا فَسَارَّهَا فَضَحِكَتْ قَالَتْ فَسَأَلْتُهَا عَنْ ذَلِكَ

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মৃত্যুর সময় রোগে আক্রান্ত হলে তাঁর কন্যা ফাতিমা (রাঃ)-কে ডেকে পাঠালেন। চুপিচুপি কি যেন তাঁকে বললেন, তিনি এতে কাঁদতে লাগলেন। অতঃপর তিনি তাঁকে ডেকে পুনরায় চুপিচুপি কি যেন বললেন, এবারে তিনি হাসতে লাগলেন। আমি তাঁকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম।

(ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৪৬ প্রথমাংশ)

৩৭১৬
فَقَالَتْ سَارَّنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَنِيْ أَنَّهُ يُقْبَضُ فِيْ وَجَعِهِ الَّذِيْ تُوُفِّيَ فِيْهِ فَبَكَيْتُ ثُمَّ سَارَّنِيْ فَأَخْبَرَنِيْ أَنِّيْ أَوَّلُ أَهْلِ بَيْتِهِ أَتْبَعُهُ فَضَحِكْتُ

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জানালেন যে, তিনি এ রোগে মারা যাবেন, এতে আমি ক্রন্দন করি। অতঃপর তিনি চুপেচুপে বললেন, আমি তাঁর পরিবারবর্গের মধ্যে সর্বপ্রথম তাঁর সঙ্গে মিলিত হব, তখন আমি হাসি।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৩৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৪৬ শেষাংশ)

৬২/১৩. অধ্যায়ঃ
যুবায়র ইব্‌নু আ’ওয়াম (রাঃ) এর মর্যাদা।

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাওয়ারী ছিলেন। কাপড় সাদা হবার কারণে হাওয়ারীদের এ নাম হয়েছে।

৩৭১৭
حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ أَخْبَرَنِيْ مَرْوَانُ بْنُ الْحَكَمِ قَالَ أَصَابَ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ رُعَافٌ شَدِيْدٌ سَنَةَ الرُّعَافِ حَتَّى حَبَسَهُ عَنْ الْحَجِّ وَأَوْصَى فَدَخَلَ عَلَيْهِ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ قَالَ اسْتَخْلِفْ قَالَ وَقَالُوْهُ قَالَ نَعَمْ قَالَ وَمَنْ فَسَكَتَ فَدَخَلَ عَلَيْهِ رَجُلٌ آخَرُ أَحْسِبُهُ الْحَارِثَ فَقَالَ اسْتَخْلِفْ فَقَالَ عُثْمَانُ وَقَالُوْا فَقَالَ نَعَمْ قَالَ وَمَنْ هُوَ فَسَكَتَ قَالَ فَلَعَلَّهُمْ قَالُوْا الزُّبَيْرَ قَالَ نَعَمْ قَالَ أَمَا وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ إِنَّهُ لَخَيْرُهُمْ مَا عَلِمْتُ وَإِنْ كَانَ لَاحَبَّهُمْ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم

মারওয়ান ইব্‌নু হাকাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘উসমান (রহঃ) কঠিন নাকের পীড়ায় আক্রান্ত হলেন যে সনকে নাকের পীড়ার সন বলা হয়। এ কারণে তিনি ঐ বছর হাজ্জ পালন করতে পারলেন না এবং ওয়াসিয়াত করলেন। ঐ সময় কুরাইশের এক লোক তাঁর কাছে এসে বলল, আপনি কাউকে আপনার খালীফা মনোনীত করুন। ‘উসমান (রহঃ) জিজ্ঞেস করলেন, জনগণ কি এ কথা বলেছে? সে বললো, হাঁ, ‘উসমান (রহঃ) বললেন, বলতো কাকে? রাবী বলেন তখন সে ব্যক্তি চুপ হয়ে গেল। অতঃপর অপর এক লোক আসল, (রাবী বলেন) আমার ধারণা সে হারিস (ইব্‌নু হাকাম মারওয়ানের ভাই) ছিল। সেও বলল, আপনি খালিফা মনোনীত করুন। ‘উসমান (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, জনগণ কি চায়? সে বলল, হাঁ। তিনি জিজ্ঞেস করলেন কাকে? রাবী বলেন সে চুপ হয়ে গেল। ‘উসমান (রাঃ) বললেন, সম্ভবতঃ তারা যুবায়র (রাঃ) এর নাম প্রস্তাব করেছেন। সে বলল, হাঁ। ‘উসমান (রাঃ) বললেন, ঐ সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, আমার জানা মতে তিনিই সব চেয়ে উত্তম ব্যক্তি এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সব চেয়ে প্রিয় পাত্র ছিলেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৪০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৪৭)

৩৭১৮
حَدَّثَنِيْ عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ أَخْبَرَنِيْ أَبِيْ سَمِعْتُ مَرْوَانَ كُنْتُ عِنْدَ عُثْمَانَ أَتَاهُ رَجُلٌ فَقَالَ اسْتَخْلِفْ قَالَ وَقِيْلَ ذَاكَ قَالَ نَعَمْ الزُّبَيْرُ قَالَ أَمَا وَاللهِ إِنَّكُمْ لَتَعْلَمُوْنَ أَنَّهُ خَيْرُكُمْ ثَلَاثًا

মারওয়ান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘উসমান (রহঃ) এর নিকট হাজির ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি এসে তাঁকে বলল, আপনি খলীফা মনোনীত করুন। তিনি বললেন, তা কি বলাবলি হচ্ছে? সে বলল, হাঁ, তিনি হলেন যুবায়র (রহঃ)। এই শুনে তিনি বললেন, আল্লাহ্‌র কসম তোমরা নিশ্চয়ই জান যে যুবায়র (রহঃ) তোমাদের মধ্যে সব চেয়ে উত্তম ব্যক্তি। এ কথাটি তিনি তিন বার বললেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৪১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৪৮)

৩৭১৯
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, প্রত্যেক নবীরই হাওয়ারী ছিলেন। আর আমার হাওয়ারী হলেন যুবায়র (রাঃ)।

৩৭২০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ قَالَ كُنْتُ يَوْمَ الأَحْزَابِ جُعِلْتُ أَنَا وَعُمَرُ بْنُ أَبِيْ سَلَمَةَ فِي النِّسَاءِ فَنَظَرْتُ فَإِذَا أَنَا بِالزُّبَيْرِ عَلَى فَرَسِهِ يَخْتَلِفُ إِلَى بَنِيْ قُرَيْظَةَ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا فَلَمَّا رَجَعْتُ قُلْتُ يَا أَبَتِ رَأَيْتُكَ تَخْتَلِفُ قَالَ أَوَهَلْ رَأَيْتَنِيْ يَا بُنَيَّ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ يَأْتِ بَنِيْ قُرَيْظَةَ فَيَأْتِيْنِيْ بِخَبَرِهِمْ فَانْطَلَقْتُ فَلَمَّا رَجَعْتُ جَمَعَ لِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَبَوَيْهِ فَقَالَ فِدَاكَ أَبِيْ وَأُمِّي

আব্দুল্লাহ ইব্‌নু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, খন্দক যুদ্ধ চলা কালে আমি এবং ‘উমার ইব্‌নু আবূ সালামাহ (অল্প বয়সি বলে) মহিলাদের দলে চলছিলাম। হঠাৎ যুবায়রকে দেখতে পেলাম যে, তিনি অশ্বারোহণ করে বনী কুরায়যা গোত্রের দিকে দু’বার অথবা তিনবার আসা যাওয়া করছেন। যখন ফিরে আসলাম তখন বললাম, আব্বা! আমি আপনাকে কয়েকবার যাতায়াত করতে দেখেছি। তিনি বললেন, হে প্রিয় বৎস! তুমি কি আমাকে দেখতে পেয়েছিলে? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বললেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন, কে বনী কুরায়যা গোত্রের নিকট গিয়ে তাদের খবরা-খবর জেনে আসবে? তখন আমিই গিয়েছিলাম। যখন আমি ফিরে আসলাম তখন আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার জন্য তাঁর মাতা-পিতাকে একত্র করে বললেন, আমার মাতাপিতা তোমার জন্য কুরবান হোক।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৪৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৫০)

৩৭২১
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ أَصْحَابَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالُوْا لِلزُّبَيْرِ يَوْمَ الْيَرْمُوكِ أَلَا تَشُدُّ فَنَشُدَّ مَعَكَ فَحَمَلَ عَلَيْهِمْ فَضَرَبُوْهُ ضَرْبَتَيْنِ عَلَى عَاتِقِهِ بَيْنَهُمَا ضَرْبَةٌ ضُرِبَهَا يَوْمَ بَدْرٍ قَالَ عُرْوَةُ فَكُنْتُ أُدْخِلُ أَصَابِعِيْ فِيْ تِلْكَ الضَّرَبَاتِ أَلْعَبُ وَأَنَا صَغِيْرٌ

‘উরওয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইয়ারমুক যুদ্ধে যোগদানকারী মুজাহিদগণ যুবায়রকে বললেন, আপনি কি আক্রমণ কঠোরতর করবেন না? তা হলে আমরাও আপনার সঙ্গে (সর্বশক্তি নিয়ে) আক্রমণ করব। এবার তিনি ভীষণভাবে আক্রমণ করলেন। শক্ররা তাঁর স্কন্ধে দু’টি আঘাত করল। ক্ষতদ্বয়ের মধ্যে আরো একটি ক্ষতের দাগ ছিল যা বাদ‌্‌র যুদ্ধে হয়েছিল। ‘উরওয়াহ (রহঃ) বলেন, আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আঘাতের জায়গাগুলোতে আঙ্গুল ঢুকিয়ে খেলা করতাম।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৪৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৫১)

৬২/১৪. অধ্যায়ঃ
ত্বল্হা ইব্‌নু ‘উবাইদুল্লাহ (রাঃ)-এর উল্লেখ।

৩৭২২
حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ أَبِيْ بَكْرٍ الْمُقَدَّمِيُّ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ عُثْمَانَ قَالَ لَمْ يَبْقَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ بَعْضِ تِلْكَ الأَيَّامِ الَّتِيْ قَاتَلَ فِيْهِنَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم غَيْرُ طَلْحَةَ وَسَعْدٍ عَنْ حَدِيْثِهِمَا

আবূ ‘উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে সব যুদ্ধে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বয়ং যোগদান করেছিলেন, তন্মধ্যে এক যুদ্ধে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে কোন এক সময় ত্বলহা ও সা’দ (রাঃ) ছাড়া অন্য কেউ ছিলেন না। আবূ ‘উসমান (রাঃ) তাঁদের উভয় হতে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৪৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৫২)

৩৭২৩
حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ أَبِيْ بَكْرٍ الْمُقَدَّمِيُّ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ عُثْمَانَ قَالَ لَمْ يَبْقَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ بَعْضِ تِلْكَ الأَيَّامِ الَّتِيْ قَاتَلَ فِيْهِنَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم غَيْرُ طَلْحَةَ وَسَعْدٍ عَنْ حَدِيْثِهِمَا

আবূ ‘উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে সব যুদ্ধে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বয়ং যোগদান করেছিলেন, তন্মধ্যে এক যুদ্ধে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে কোন এক সময় ত্বলহা ও সা’দ (রাঃ) ছাড়া অন্য কেউ ছিলেন না। আবূ ‘উসমান (রাঃ) তাঁদের উভয় হতে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৪৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৫২)

৩৭২৪
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا خَالِدٌ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ خَالِدٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِيْ حَازِمٍ قَالَ رَأَيْتُ يَدَ طَلْحَةَ الَّتِيْ وَقَى بِهَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَدْ شَلَّتْ

কাইস ইব্‌নু আবূ হাযিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ত্বলহা (রহঃ)-এর ঐ হাতকে অবশ অবস্থায় দেখেছি, যে হাত দিয়ে (উহুদ যুদ্ধে) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে রক্ষা করেছিলেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৪৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৫৩)

৬২/১৫. অধ্যায়ঃ
সা’দ ইব্‌নু আবূ ওক্কাস যুহরীর (রাঃ) মর্যাদা।

৩৭২৫
حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ قَالَ سَمِعْتُ يَحْيَى قَالَ سَمِعْتُ سَعِيْدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ قَالَ سَمِعْتُ سَعْدًا يَقُوْلُ جَمَعَ لِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَبَوَيْهِ يَوْمَ أُحُدٍ

সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ওহুদ যুদ্ধে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার জন্য তাঁর মাতা-পিতাকে একত্র করেছিলেন, (তোমার উপর আমার মাতা-পিতা কুরবান হোক)।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৪৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৫৪)

৩৭২৬
حَدَّثَنَا مَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا هَاشِمُ بْنُ هَاشِمٍ عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ لَقَدْ رَأَيْتُنِيْ وَأَنَا ثُلُثُ الْإِسْلَامِ

সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আমাকে খুব ভালভাবে জানি, ইসলাম গ্রহণ করার ব্যাপারে আমি ছিলাম তৃতীয় ব্যক্তি।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৪৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৫৫)

৩৭২৭
حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِيْ زَائِدَةَ حَدَّثَنَا هَاشِمُ بْنُ هَاشِمِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ أَبِيْ وَقَّاصٍ قَالَ سَمِعْتُ سَعِيْدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ يَقُوْلُ سَمِعْتُ سَعْدَ بْنَ أَبِيْ وَقَّاصٍ يَقُوْلُ مَا أَسْلَمَ أَحَدٌ إِلَّا فِي الْيَوْمِ الَّذِيْ أَسْلَمْتُ فِيْهِ وَلَقَدْ مَكَثْتُ سَبْعَةَ أَيَّامٍ وَإِنِّيْ لَثُلُثُ الْإِسْلَامِ تَابَعَهُ أَبُوْ أُسَامَةَ حَدَّثَنَا هَاشِمٌ

সা’দ ইব্‌নু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যেদিন আমি ইসলাম গ্রহণ করি সেদিন [এর পূর্বে খাদীজাহ (রাঃ) ও আবূ বকর (রাঃ) ব্যতীত] অন্য কেউ ইসলাম গ্রহণ করেনি। আমি সাতদিন এমনিভাবে অতিবাহিত করেছি যে, আমি ইসলাম গ্রহণে তৃতীয় জন ছিলাম।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৪৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৫৬)

৩৭২৮
حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ عَوْنٍ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ عَنْ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ قَيْسٍ قَالَ سَمِعْتُ سَعْدًا يَقُوْلُ إِنِّيْ لَاوَّلُ الْعَرَبِ رَمَى بِسَهْمٍ فِيْ سَبِيْلِ اللهِ وَكُنَّا نَغْزُوْ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَمَا لَنَا طَعَامٌ إِلَّا وَرَقُ الشَّجَرِ حَتَّى إِنَّ أَحَدَنَا لَيَضَعُ كَمَا يَضَعُ الْبَعِيْرُ أَوْ الشَّاةُ مَا لَهُ خِلْطٌ ثُمَّ أَصْبَحَتْ بَنُوْ أَسَدٍ تُعَزِّرُنِيْ عَلَى الْإِسْلَامِ لَقَدْ خِبْتُ إِذًا وَضَلَّ عَمَلِيْ وَكَانُوْا وَشَوْا بِهِ إِلَى عُمَرَ قَالُوْا لَا يُحْسِنُ يُصَلِّي

কায়েস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি সা’দ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, আরবদের মধ্যে আমিই সেই ব্যক্তি যে আল্লাহ্‌র রাস্তায় প্রথম তীর নিক্ষেপ করেছে। আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে থেকেই লড়াই করেছি। তখন গাছের পাতা ছাড়া আমাদের কোন খাবার ছিল না। এমনকি আমাদের উট অথবা ছাগলের মত বড়ির ন্যায় মল ত্যাগ করতে হত। আর এখন বনূ আসাদ আমাকে ইসলামের ব্যাপারে লজ্জা দিচ্ছে। আমি তখন অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হব এবং আমার আমলসমূহ নষ্ট হবে। বনূ আসাদ ‘উমার (রাঃ) এর নিকট সা’দ (রাঃ)-এর বিরুদ্ধে যথা নিয়মে সলাত আদায় না করার অভিযোগ করেছিল। আবূ আবদুল্লাহ ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন ইসলামের তৃতীয় ব্যক্তি দ্বারা তিনি বলতে চান যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে যারা প্রথমে ইসলাম এনেছিল আমি এদের তিন জনের তৃতীয়।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৪৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৫৭)

৬২/১৬. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জামাতাগণের বর্ণনা।

আবুল ‘আস ইব্‌নু রাবী (রাঃ) তাদের মধ্যে একজন।

৩৭২৯
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَلِيُّ بْنُ حُسَيْنٍ أَنَّ الْمِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ قَالَ إِنَّ عَلِيًّا خَطَبَ بِنْتَ أَبِيْ جَهْلٍ فَسَمِعَتْ بِذَلِكَ فَاطِمَةُ فَأَتَتْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَزْعُمُ قَوْمُكَ أَنَّكَ لَا تَغْضَبُ لِبَنَاتِكَ وَهَذَا عَلِيٌّ نَاكِحٌ بِنْتَ أَبِيْ جَهْلٍ فَقَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَسَمِعْتُهُ حِيْنَ تَشَهَّدَ يَقُوْلُ أَمَّا بَعْدُ أَنْكَحْتُ أَبَا الْعَاصِ بْنَ الرَّبِيْعِ فَحَدَّثَنِيْ وَصَدَقَنِيْ وَإِنَّ فَاطِمَةَ بَضْعَةٌ مِنِّيْ وَإِنِّيْ أَكْرَهُ أَنْ يَسُوءَهَا وَاللهِ لَا تَجْتَمِعُ بِنْتُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَبِنْتُ عَدُوِّ اللهِ عِنْدَ رَجُلٍ وَاحِدٍ فَتَرَكَ عَلِيٌّ الْخِطْبَةَ وَزَادَ مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ حَلْحَلَةَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَلِيِّ بْنِ الْحُسَيْنِ عَنْ مِسْوَرٍ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَذَكَرَ صِهْرًا لَهُ مِنْ بَنِيْ عَبْدِ شَمْسٍ فَأَثْنَى عَلَيْهِ فِيْ مُصَاهَرَتِهِ إِيَّاهُ فَأَحْسَنَ قَالَ حَدَّثَنِيْ فَصَدَقَنِيْ وَوَعَدَنِيْ فَوَفَى لِي

মিসওয়ার ইব্‌নু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবূ জেহেলের কন্যাকে ‘আলী (রাঃ) বিবাহের প্রস্তাব দিয়ে পাঠালেন। ফাতিমা (রাঃ) এই খবর শুনতে পেয়ে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বললেন, আপনার গোত্রের লোকজন মনে করে যে, আপনি আপনার মেয়েদের সম্মানে রাগান্বিত হন না। ‘আলী তো আবূ জেহেলের কন্যাকে বিবাহ করতে প্রস্তুত। আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুতবা দিতে প্রস্তুত হলেন। (মিসওয়ার বলেন) তিনি যখন হাম্‌দ ও সানা পাঠ করেন, তখন আমি তাঁকে বলতে শুনেছি যে, আমি আবূল আ’স ইব্‌নু রাবির নিকট আমার মেয়েকে শাদী দিয়েছিলাম। সে আমার সঙ্গে যা বলেছে সত্যই বলেছে। আর ফাতিমা (রাঃ) আমার টুকরা; তাঁর কোন কষ্ট হোক তা আমি কখনও পছন্দ করি না। আল্লাহ্‌র কসম, আল্লাহ্‌র রসূলের মেয়ে এবং আল্লাহ্‌র দুশমনের মেয়ে একই লোকের নিকট একত্রিত হতে পারে না। ‘আলী (রাঃ) তাঁর বিবাহের প্রস্তাব উঠিয়ে নিলেন। মুহাম্মাদ ইব্‌নু আমার ইব্‌নু হালহালা (রহঃ)……মিস্‌ওয়ার (রহঃ) হতে অতিরিক্ত বর্ণনা করে বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বনী আবদে শামস গোত্রে তাঁর এক জামাতার ব্যাপারে অত্যন্ত প্রশংসা করতে শুনেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সে আমাকে যা বলেছে- সত্য বলেছে। যা ওয়াদা করেছে, তা পূর্ণ করেছে।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৫০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৫৮)

৬২/১৭. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুক্তিপ্রাপ্ত গোলাম যায়দ ইব্‌নু হারিসাহ্‌ (রাঃ)-এর মর্যাদা।

বারাআ (রহঃ) বলেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বলেছেন, তুমি আমাদের ভাই ও আমাদের সুহৃদ।

৩৭৩০
حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ دِيْنَارٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَعْثًا وَأَمَّرَ عَلَيْهِمْ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ فَطَعَنَ بَعْضُ النَّاسِ فِيْ إِمَارَتِهِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ تَطْعُنُوْا فِيْ إِمَارَتِهِ فَقَدْ كُنْتُمْ تَطْعُنُوْنَ فِيْ إِمَارَةِ أَبِيْهِ مِنْ قَبْلُ وَايْمُ اللهِ إِنْ كَانَ لَخَلِيْقًا لِلْإِمَارَةِ وَإِنْ كَانَ لَمِنْ أَحَبِّ النَّاسِ إِلَيَّ وَإِنَّ هَذَا لَمِنْ أَحَبِّ النَّاسِ إِلَيَّ بَعْدَهُ

আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি সেনাবাহিনী পাঠানোর জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং উসামা ইব্‌নু যায়দ (রাঃ)-কে উক্ত বাহিনীর নেতা মনোনীত করেন। কিছু সংখ্যক লোক তাঁর নেতৃত্বের উপর মন্তব্য প্রকাশ করতে লাগলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তার নেতৃত্বের প্রতি তোমরা সমালোচনা করছ। ইতোপূর্বে তার পিতার নেতৃত্বের প্রতিও তোমরা সমালোচনা করেছ। আল্লাহ্‌র কসম, নিশ্চয়ই সে নেতৃত্বের জন্য যোগ্যতম ব্যক্তি ছিল এবং আমার প্রিয় পাত্রদের একজন ছিল। অতঃপর তার পুত্র আমার প্রিয় পাত্রদের একজন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৫১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৫৯)

৩৭৩১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ قَزَعَةَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ دَخَلَ عَلَيَّ قَائِفٌ وَالنَّبِيُّ شَاهِدٌ وَأُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ وَزَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ مُضْطَجِعَانِ فَقَالَ إِنَّ هَذِهِ الأَقْدَامَ بَعْضُهَا مِنْ بَعْضٍ قَالَ فَسُرَّ بِذَلِكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَعْجَبَهُ فَأَخْبَرَ بِهِ عَائِشَةَ

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার এক কায়িফ (রেখা চিহ্নে অভিজ্ঞ) ব্যক্তি আসে, সে সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপস্থিত ছিলেন। উসামা (রাঃ) ও তাঁর পিতা শুয়েছিলেন। কায়িফ বলে উঠল, এ পাগুলো একটি অন্যটির অংশ। রাবী বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অত্যন্ত খুশি হলেন এবং ‘আয়িশা (রাঃ)-কেও এ খবর জানালেন। [১]

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৫২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৬০)


[১] উসামা (রাঃ) ছিলেন কাল বর্ণের, তাঁর পিতা যায়দ (রাঃ) ছিলেন গৌর বর্ণের। তাই জাহিলী যুগে তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ করা হত। এ ভ্রান্ত সন্দেহ দূর হওয়ায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনন্দিত হন।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬২/১৮. অধ্যায়ঃ
উসামা ইব্‌নু যায়দ (রাঃ)-এর উল্লেখ।

৩৭৩২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا لَيْثٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ قُرَيْشًا أَهَمَّهُمْ شَأْنُ الْمَخْزُومِيَّةِ فَقَالُوْا مَنْ يَجْتَرِئُ عَلَيْهِ إِلَّا أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ حِبُّ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মাখযুম গোত্রের এক নারীর চুরির ঘটনায় কুরাইশগণ চিন্তিত হয়ে পড়ল। তারা বললেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রিয় পাত্র উসামা ইব্‌নু যায়দ (রাঃ) ছাড়া কে আর তাঁর নিকট বলার সাহস করবে?

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৫৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৬১)

৩৭৩৩
ح و حَدَّثَنَا عَلِيٌّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ ذَهَبْتُ أَسْأَلُ الزُّهْرِيَّ عَنْ حَدِيْثِ الْمَخْزُومِيَّةِ فَصَاحَ بِيْ قُلْتُ لِسُفْيَانَ فَلَمْ تَحْتَمِلْهُ عَنْ أَحَدٍ قَالَ وَجَدْتُهُ فِيْ كِتَابٍ كَانَ كَتَبَهُ أَيُّوْبُ بْنُ مُوْسَى عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ امْرَأَةً مِنْ بَنِيْ مَخْزُومٍ سَرَقَتْ فَقَالُوْا مَنْ يُكَلِّمُ فِيْهَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يَجْتَرِئْ أَحَدٌ أَنْ يُكَلِّمَهُ فَكَلَّمَهُ أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ فَقَالَ إِنَّ بَنِيْ إِسْرَائِيْلَ كَانَ إِذَا سَرَقَ فِيْهِمْ الشَّرِيْفُ تَرَكُوْهُ وَإِذَا سَرَقَ فِيْهِمْ الضَّعِيْفُ قَطَعُوْهُ لَوْ كَانَتْ فَاطِمَةُ لَقَطَعْتُ يَدَهَا

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মাখযুম গোত্রের এক নারী চুরি করেছিল। তখন তারা বলল, এ ব্যাপারে কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে কথা বলতে পারবে? কিন্তু তাদের মধ্যে কেউ-ই কথা বলার সাহস করল না। উসামা (রাঃ) এ সম্পর্কে তাঁর সাথে আলোচনা করলেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, বনী ইসরাইল তাদের গণ্যমান্য পরিবারের কেউ চুরি করলে তাকে ছেড়ে দিত। এবং দুর্বল কেউ চুরি করলে তারা তার হাত কেটে দিত। ফাতিমা (রাঃ) হলেও আমি তাঁর হাত কেটে ফেলতাম।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৫৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৬২)

৩৭৩৪
بَاب حَدَّثَنِي الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَبَّادٍ يَحْيَى بْنُ عَبَّادٍ حَدَّثَنَا الْمَاجِشُونُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ دِيْنَارٍ قَالَ نَظَرَ ابْنُ عُمَرَ يَوْمًا وَهُوَ فِي الْمَسْجِدِ إِلَى رَجُلٍ يَسْحَبُ ثِيَابَهُ فِيْ نَاحِيَةٍ مِنْ الْمَسْجِدِ فَقَالَ انْظُرْ مَنْ هَذَا لَيْتَ هَذَا عِنْدِيْ قَالَ لَهُ إِنْسَانٌ أَمَا تَعْرِفُ هَذَا يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ هَذَا مُحَمَّدُ بْنُ أُسَامَةَ قَالَ فَطَأْطَأَ ابْنُ عُمَرَ رَأْسَهُ وَنَقَرَ بِيَدَيْهِ فِي الأَرْضِ ثُمَّ قَالَ لَوْ رَآهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَاحَبَّهُ

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু দিনার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) এক লোককে দেখতে পেলেন যে, মাস্‌জিদের এক কোণে তার কাপড় টেনে নিচ্ছে, তিনি বললেন, দেখতো, লোকটি কে? সে যদি আমার নিকট থাকত! তখন একজন তাঁকে বলল, হে আবূ আবদুর রাহমান, আপনি কি তাকে চিনতে পেরেছেন। তিনি উসামা (রাঃ)-এর পুত্র মুহাম্মাদ। এ কথা শুনে ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) মাথা নীচু করে দু’হাত দিয়ে মাটি আঁচড়াতে লাগলেন এবং বললেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে দেখলে নিশ্চয়ই আদর করতেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৫৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৬৩)

৩৭৩৫
حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ قَالَ سَمِعْتُ أَبِيْ حَدَّثَنَا أَبُوْ عُثْمَانَ عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا حَدَّثَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ يَأْخُذُهُ وَالْحَسَنَ فَيَقُوْلُ اللَّهُمَّ أَحِبَّهُمَا فَإِنِّيْ أُحِبُّهُمَا

উসামা ইব্‌নু যায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বর্ণনা করেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে এবং হাসান (রাঃ)-কে এক সঙ্গে তুলে নিতেন এবং বলতেন, হে আল্লাহ! তুমি এদেরকে ভালবাস। কেননা আমিও এদেরকে ভালবাসি।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৫৬ প্রথমাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৬৪ প্রথমাংশ)

৩৭৩৬
وَقَالَ نُعَيْمٌ عَنْ ابْنِ الْمُبَارَكِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِيْ مَوْلًى لِأُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ أَنَّ الْحَجَّاجَ بْنَ أَيْمَنَ بْنِ أُمِّ أَيْمَنَ وَكَانَ أَيْمَنُ بْنُ أُمِّ أَيْمَنَ أَخَا أُسَامَةَ لِأُمِّهِ وَهُوَ رَجُلٌ مِنْ الأَنْصَارِ فَرَآهُ ابْنُ عُمَرَ لَمْ يُتِمَّ رُكُوعَهُ وَلَا سُجُوْدَهُ فَقَالَ أَعِدْ

মু’আইয (রহঃ) উসামা (রাঃ)-এর আযাদকৃত গোলাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা সে ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ)-এর সঙ্গে ছিল। তখন তার ভাই হাজ্জাজ ইব্‌নু আয়মান প্রবেশ করল, এবং সলাতে রুকু ও সাজদাহ পূর্ণভাবে আদায় করেনি। ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) তাকে বললেন, সলাত আবার আদায় কর।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৫৬, মধ্যমাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৬৪ মধ্যমাংশ)

৩৭৩৭
قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ و حَدَّثَنِيْ سُلَيْمَانُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ حَدَّثَنَا الْوَلِيْدُ بْنُ مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ نَمِرٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنِيْ حَرْمَلَةُ مَوْلَى أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ أَنَّهُ بَيْنَمَا هُوَ مَعَ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ إِذْ دَخَلَ الْحَجَّاجُ بْنُ أَيْمَنَ فَلَمْ يُتِمَّ رُكُوعَهُ وَلَا سُجُوْدَهُ فَقَالَ أَعِدْ فَلَمَّا وَلَّى قَالَ لِيْ ابْنُ عُمَرَ مَنْ هَذَا قُلْتُ الْحَجَّاجُ بْنُ أَيْمَنَ بْنِ أُمِّ أَيْمَنَ فَقَالَ ابْنُ عُمَرَ لَوْ رَأَى هَذَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَاحَبَّهُ فَذَكَرَ حُبَّهُ وَمَا وَلَدَتْهُ أُمُّ أَيْمَنَ قَالَ و حَدَّثَنِيْ بَعْضُ أَصْحَابِيْ عَنْ سُلَيْمَانَ وَكَانَتْ حَاضِنَةَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم

মু’আইয (রহঃ) উসামা (রাঃ)-এর আযাদকৃত গোলাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যখন সে চলে গেল তখন ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, এ ব্যক্তি কে? আমি বললাম, হাজ্জাজ ইব্‌নু আয়মন ইব্‌নু উম্মু আয়মান। ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি তাকে দেখতেন তবে স্নেহ করতেন। অতঃপর এ পরিবারের প্রতি আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কত ভালবাসা ছিল তা বর্ণনা করতে লাগলেন এবং উম্মু আয়মানের সন্তানদের কথাও বললেন। আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন আমার কোন কোন সাথী আরো বলেছেন যে উম্মু আয়মান (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শিশুকালে কোলে নিয়েছেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৫৬ শেষাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৬৪ শেষাংশ)

৬২/১৯. অধ্যায়ঃ
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ)-এর মর্যাদা।

৩৭৩৮
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ الرَّجُلُ فِيْ حَيَاةِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَأَى رُؤْيَا قَصَّهَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَتَمَنَّيْتُ أَنْ أَرَى رُؤْيَا أَقُصُّهَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَكُنْتُ غُلَامًا شَابًّا أَعْزَبَ وَكُنْتُ أَنَامُ فِي الْمَسْجِدِ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَرَأَيْتُ فِي الْمَنَامِ كَأَنَّ مَلَكَيْنِ أَخَذَانِيْ فَذَهَبَا بِيْ إِلَى النَّارِ فَإِذَا هِيَ مَطْوِيَّةٌ كَطَيِّ الْبِئْرِ وَإِذَا لَهَا قَرْنَانِ كَقَرْنَيْ الْبِئْرِ وَإِذَا فِيْهَا نَاسٌ قَدْ عَرَفْتُهُمْ فَجَعَلْتُ أَقُوْلُ أَعُوْذُ بِاللهِ مِنْ النَّارِ أَعُوْذُ بِاللهِ مِنْ النَّارِ فَلَقِيَهُمَا مَلَكٌ آخَرُ فَقَالَ لِيْ لَنْ تُرَاعَ فَقَصَصْتُهَا عَلَى حَفْصَةَ

ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলে- নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জীবদ্দশায় কেউ কোন স্বপ্ন দেখলে তা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট বর্ণনা করতেন। আমিও স্বপ্ন দেখার জন্য আকাঙ্খা করতাম এই উদ্দেশ্যে যে তা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট বর্ণনা করব। আমি ছিলাম অবিবাহিত একজন তরুন। তাই আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যুগে মসজিদেই ঘুমাতাম। একরাতে স্বপ্নে দেখতে পেলাম যে দুজন ফেরেশতা আমাকে ধরে জাহান্নামের কাছে নিয়ে গেল। আমি দেখতে পেলাম যে কূপের ন্যায় তার দুটো উঁচু পাড়ও রয়েছে। তাতে এমন এমন মানুষজন রয়েছে যাদের আমি চিনতে পারলাম। তখন আমি (জাহান্নামের আগুন থেকে আশ্রয় চাচ্ছি) বারবার পাঠ করতে লাগলাম। তখন তৃতীয় আরেকজন ফেরেশতা তাদের দুজনের সাথে সাক্ষাৎ করলেন এবং তিনি আমাকে বললেন- ভয় করোনা (এরপর আমি জেগে গেলাম) স্বপ্নটি (আমার বোন) হাফসা (রাঃ) এর নিকট বললাম।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৫৭ প্রথমাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৬৫ প্রথমাংশ)

৩৭৩৯
فَقَصَّتْهَا حَفْصَةُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ نِعْمَ الرَّجُلُ عَبْدُ اللهِ لَوْ كَانَ يُصَلِّيْ بِاللَّيْلِ قَالَ سَالِمٌ فَكَانَ عَبْدُ اللهِ لَا يَنَامُ مِنْ اللَّيْلِ إِلَّا قَلِيْلًا

বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

তিনি তা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বর্ণনা করেন। তিনি বললেন, ‘আবদুল্লাহ খুব চমৎকার মানুষ। যদি সে রাতে সলাত আদায় করত। (তাঁর পুত্র) সালিম (রহঃ) বলেন, অতঃপর ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) রাতে খুব অল্প সময়ই ঘুমাতেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৫৭ শেষাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৬৫ শেষাংশ)

৩৭৪০
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ عَنْ يُونُسَ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ عَنْ أُخْتِهِ حَفْصَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَهَا إِنَّ عَبْدَ اللهِ رَجُلٌ صَالِحٌ

হাফসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নিকট বলেছেন যে, ‘আবদুল্লাহ অত্যন্ত নেক ব্যক্তি।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৫৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৬৬)

৩৭৪১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ عَنْ يُونُسَ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ عَنْ أُخْتِهِ حَفْصَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَهَا إِنَّ عَبْدَ اللهِ رَجُلٌ صَالِحٌ

হাফসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর নিকট বলেছেন যে, ‘আবদুল্লাহ অত্যন্ত নেক ব্যক্তি।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৫৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৬৬)

৬২/২০. অধ্যায়ঃ
আম্মার ও হুযাইফা (রাঃ)-এর মর্যাদা।

৩৭৪২
حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ الْمُغِيْرَةِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ قَالَ قَدِمْتُ الشَّأْمَ فَصَلَّيْتُ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ قُلْتُ اللَّهُمَّ يَسِّرْ لِيْ جَلِيْسًا صَالِحًا فَأَتَيْتُ قَوْمًا فَجَلَسْتُ إِلَيْهِمْ فَإِذَا شَيْخٌ قَدْ جَاءَ حَتَّى جَلَسَ إِلَى جَنْبِيْ قُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوْا أَبُو الدَّرْدَاءِ فَقُلْتُ إِنِّيْ دَعَوْتُ اللهَ أَنْ يُيَسِّرَ لِيْ جَلِيْسًا صَالِحًا فَيَسَّرَكَ لِيْ قَالَ مِمَّنْ أَنْتَ قُلْتُ مِنْ أَهْلِ الْكُوفَةِ قَالَ أَوَلَيْسَ عِنْدَكُمْ ابْنُ أُمِّ عَبْدٍ صَاحِبُ النَّعْلَيْنِ وَالْوِسَادِ وَالْمِطْهَرَةِ وَفِيكُمْ الَّذِيْ أَجَارَهُ اللهُ مِنْ الشَّيْطَانِ يَعْنِيْ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّهِ أَوَلَيْسَ فِيكُمْ صَاحِبُ سِرِّ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الَّذِيْ لَا يَعْلَمُهُ أَحَدٌ غَيْرُهُ ثُمَّ قَالَ كَيْفَ يَقْرَأُ عَبْدُ اللهِ وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشٰى (الليل) فَقَرَأْتُ عَلَيْهِ وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشٰىوَالنَّهَارِ إِذَا تَجَلّٰى وَالذَّكَرِ وَالْأُنْثٰى (الليل :1-3) قَالَ وَاللهِ لَقَدْ أَقْرَأَنِيْهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ فِيْهِ إِلَى فِيَّ

মালিক ইব্‌নু ইসমাঈল (রহঃ) ‘আলকামাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি সিরিয়ায় গমন করলাম। দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করে দু‘আ করলাম, হে আল্লাহ! আপনি আমাকে একজন নেককার সাথী মিলিয়ে দিন। অতঃপর আমি একটি জামা‘আতের নিকট এসে তাদের নিকট বসলাম। তখন একজন বৃদ্ধ লোক এসে আমার পাশেই বসলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ইনি কে? তারা উত্তরে বললেন, ইনি আবূ দারদা (রাঃ)। আমি তখন তাঁকে বললাম, একজন নেক্কার সঙ্গীর জন্য আমি আল্লাহর নিকট দু’আ করেছিলাম। আল্লাহ আপনাকে মিলিয়ে দিয়েছেন। তিনি বললেন, তুমি কোথাকার অধিবাসী? আমি বললাম, আমি কুফার অধিবাসী। তিনি বললেন, (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর) জুতা, বালিশ এবং উযূর পাত্র বহনকারী সর্বক্ষণের সহচর ইবনু উম্মু ‘আবদ (রাঃ) কি তোমাদের ওখানে নেই? তোমাদের মাঝে কি ঐ ব্যক্তি নেই যাকে আল্লাহ শয়তান হতে নিরাপত্তা দান করেছেন? [অর্থাৎ আম্মার ইবনু ইয়াসির (রাঃ)] তোমাদের মধ্যে কি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গোপন তথ্যবিদ লোকটি নেই? যিনি ছাড়া অন্য কেউ এসব রহস্য জানেন না। অর্থাৎ হুযাইফাহ (রাঃ) অতঃপর তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) সূরাوَاللَّيْلِ কিভাবে পাঠ করতেন? তখন আমি তাকে সূরাটি পড়ে শুনালামঃ

وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشٰى وَالنَّهَارِ إِذَا تَجَلّٰى وَالذَّكَرِ وَالأُنْثٰى

তিনি বললেন, আল্লাহর কসম, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে সূরাটি সরাসরি এভাবেই শিক্ষা দিয়েছিলেন।* (৩২৮৭)

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৫৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৬৭)


* প্রচলিত কিরাআতে وَمَا خَلَقَ الذَّكَرَ وَالأُنْثٰى এভাবে বর্ণিত আছে। কিন্তু’ ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ দারদা -এর কিরাআতে وَمَا خَلَقَ শব্দটি নেই।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩৭৪৩
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مُغِيْرَةَ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ ذَهَبَ عَلْقَمَةُ إِلَى الشَّأْمِ فَلَمَّا دَخَلَ الْمَسْجِدَ قَالَ اللَّهُمَّ يَسِّرْ لِيْ جَلِيْسًا صَالِحًا فَجَلَسَ إِلَى أَبِي الدَّرْدَاءِ فَقَالَ أَبُو الدَّرْدَاءِ مِمَّنْ أَنْتَ قَالَ مِنْ أَهْلِ الْكُوفَةِ قَالَ أَلَيْسَ فِيكُمْ أَوْ مِنْكُمْ صَاحِبُ السِّرِّ الَّذِيْ لَا يَعْلَمُهُ غَيْرُهُ يَعْنِيْ حُذَيْفَةَ قَالَ قُلْتُ بَلَى قَالَ أَلَيْسَ فِيكُمْ أَوْ مِنْكُمْ الَّذِيْ أَجَارَهُ اللهُ عَلَى لِسَانِ نَبِيِّهِ يَعْنِيْ مِنْ الشَّيْطَانِ يَعْنِيْ عَمَّارًا قُلْتُ بَلَى قَالَ أَلَيْسَ فِيكُمْ أَوْ مِنْكُمْ صَاحِبُ السِّوَاكِ وَالْوِسَادِ أَوْ السِّرَارِ قَالَ بَلَى قَالَ كَيْفَ كَانَ عَبْدُ اللهِ يَقْرَأُوَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشٰى وَالنَّهَارِ إِذَا تَجَلّٰى (الليل : 1-2) قُلْتُ وَالذَّكَرِ وَالْأُنْثَى قَالَ مَا زَالَ بِيْ هَؤُلَاءِ حَتَّى كَادُوْا يَسْتَنْزِلُونِيْ عَنْ شَيْءٍ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم

ইবরাহীম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আলকামাহ (রহ.) একবার সিরিয়ায় গেলেন। যখন মসজিদে প্রবেশ করলেন, তখন তিনি দু’আ করলেন, হে আল্লাহ্! আমাকে একজন নেক্কার সঙ্গী মিলিয়ে দিন। তখন তিনি আবূ দারদা (রাঃ)-এর নিকট গিয়ে বসলেন। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কোথাকার লোক। আমি বললাম, কুফার অধিবাসী। তিনি বললেন, তোমাদের মাঝে কি ঐ ব্যক্তিটি নেই যাঁকে আল্লাহ্ তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জবানীতে শয়তান হতে নিরাপত্তা দান করেছেন। অর্থাৎ আম্মার (ইবনু ইয়াসির) (রাঃ)। আমি বললাম, হাঁ। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের মধ্যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর গোপন তথ্যবিদ লোকটি কি নেই যিনি ছাড়া অন্য কেউ এ সব গোপন রহস্যাদি জানেন না? অর্থাৎ হুযাইফাহ (রাঃ)। আমি বললাম, হাঁ। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন তোমাদের মধ্যে কি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মিস্ওয়াক ও সামান বহনকারী ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) নেই? আমি বললাম, হাঁ। তিনি জিজ্ঞেস করলেন ‘আবদুল্লাহ وَاللَّيْلِ কিভাবে পাঠ করেন। আমি বললাম وَالذَّكَرِ وَالأُنْثَى পড়েন। তখন তিনি বললেন, (এভাবে পড়ার কারণে) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে যেভাবে শুনেছিলাম এরা (অন্যান্য সাহাবীরা) তা হতে আমাকে সরিয়ে দেয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছে। (৩২৮৭)

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৬০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৬৮)

৬২/২১. অধ্যায়ঃ
আবু ‘উবাইদাহ ইব্‌নু জার্‌রাহ (রাঃ)-এর মর্যাদা।

৩৭৪৪
حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ أَبِيْ قِلَابَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ لِكُلِّ أُمَّةٍ أَمِيْنًا وَإِنَّ أَمِيْنَنَا أَيَّتُهَا الْأُمَّةُ أَبُوْ عُبَيْدَةَ بْنُ الْجَرَّاحِ

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, প্রত্যেক উম্মাতের মধ্যে একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তি থাকেন আর আমার এই উম্মাতের মধ্যে বিশ্বস্ত ব্যক্তি হচ্ছে আবূ ‘উবাইদাহ ইব্‌নু জার্‌রাহ (রাঃ)।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৬১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৬৯)

৩৭৪৫
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ صِلَةَ عَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِأَهْلِ نَجْرَانَ لَابْعَثَنَّ يَعْنِيْ عَلَيْكُمْ يَعْنِيْ أَمِيْنًا حَقَّ أَمِيْنٍ فَأَشْرَفَ أَصْحَابُهُ فَبَعَثَ أَبَا عُبَيْدَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ

হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নাজরানবাসীকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন; আমি এমন এক ব্যক্তিকে পাঠাব যিনি হবেন প্রকৃতই বিশ্বস্ত। একথা শুনে সাহাবায়ে কেরাম আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করতে লাগলেন। পরে তিনি [রসূল(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] আবূ ‘উবাইদাহ (রাঃ)-কে পাঠালেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৬২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৭০)

৬২/০০. অধ্যায়ঃ
মুস’আব ইব্‌নু উমায়র (রাঃ)-এর উল্লেখ।

৬২/২২. অধ্যায়ঃ
হাসান ও হুসাইন (রাঃ)-এর মর্যাদা।

নাফি’ ইব্‌নু জুবাইর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাসান (রাঃ)-কে আলিঙ্গন করেছেন।

৩৭৪৬
حَدَّثَنَا صَدَقَةُ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ حَدَّثَنَا أَبُوْ مُوْسَى عَنْ الْحَسَنِ سَمِعَ أَبَا بَكْرَةَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَلَى الْمِنْبَرِ وَالْحَسَنُ إِلَى جَنْبِهِ يَنْظُرُ إِلَى النَّاسِ مَرَّةً وَإِلَيْهِ مَرَّةً وَيَقُوْلُ ابْنِيْ هَذَا سَيِّدٌ وَلَعَلَّ اللهَ أَنْ يُصْلِحَ بِهِ بَيْنَ فِئَتَيْنِ مِنْ الْمُسْلِمِيْنَ

আবূ বাক্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মিম্বরের উপর বলতে শুনেছি, ঐ সময় হাসান (রাঃ) তাঁর পাশে ছিলেন। তিনি একবার উপস্থিত লোকদের দিকে আবার হাসান (রাঃ)-এর দিকে তাকালেন এবং বললেন, আমার এ সন্তান হচ্ছে নেতা। আল্লাহ তা’আলা তাঁর মাধ্যমে বিবাদমান দু’দল মুসলমানের মধ্যে সমঝোতা করিয়ে দিবেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৬৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৭১)

৩৭৪৭
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ قَالَ سَمِعْتُ أَبِيْ قَالَ حَدَّثَنَا أَبُوْ عُثْمَانَ عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ يَأْخُذُهُ وَالْحَسَنَ وَيَقُوْلُ اللَّهُمَّ إِنِّيْ أُحِبُّهُمَا فَأَحِبَّهُمَا أَوْ كَمَا قَالَ

উসামা ইব্‌নু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে এবং হাসান (রাঃ)-কে এক সঙ্গে কোলে তুলে নিয়ে বলতেন, হে আল্লাহ! আমি এদের দু’জনকে ভালবাসি, আপনিও এদেরকে ভালবাসুন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৬৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৭২)

৩৭৪৮
حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ الْحُسَيْنِ بْنِ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ حَدَّثَنِيْ حُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أُتِيَ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ زِيَادٍ بِرَأْسِ الْحُسَيْنِ عَلَيْهِ السَّلَام فَجُعِلَ فِيْ طَسْتٍ فَجَعَلَ يَنْكُتُ وَقَالَ فِيْ حُسْنِهِ شَيْئًا فَقَالَ أَنَسٌ كَانَ أَشْبَهَهُمْ بِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ مَخْضُوْبًا بِالْوَسْمَةِ

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘উবাইদুল্লাহ ইব্‌নু যিয়াদের সামনে হুসাইন (রাঃ)-এর মস্তক আনা হল এবং একটি বড় পাত্রে তা রাখা হল। তখন ইব্‌নু যিয়াদ তা খুঁচাতে লাগল এবং তাঁর রূপ লাবণ্য সম্পর্কে কটূক্তি করল। আনাস (রাঃ) বললেন, হুসাইন (রাঃ) গঠন ও আকৃতিতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অবয়বের সবচেয়ে সাদৃশ্যপূর্ণ ছিলেন। তাঁর চুল ও দাড়িতে ওয়াসমা দ্বারা কলপ লাগানো ছিল।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৬৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৭৩)

৩৭৪৯
حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ الْمِنْهَالِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَدِيٌّ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَالْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ عَلَى عَاتِقِهِ يَقُوْلُ اللَّهُمَّ إِنِّيْ أُحِبُّهُ فَأَحِبَّهُ

বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি হাসানকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্কন্ধের উপর দেখেছি। সে সময় তিনি [রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] বলেছিলেন, হে আল্লাহ! আমি একে ভালবাসি, তুমিও তাকে ভালবাস।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৬৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৭৪)

৩৭৫০
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُمَرُ بْنُ سَعِيْدِ بْنِ أَبِيْ حُسَيْنٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ الْحَارِثِ قَالَ رَأَيْتُ أَبَا بَكْرٍ وَحَمَلَ الْحَسَنَ وَهُوَ يَقُوْلُ بِأَبِيْ شَبِيْهٌ بِالنَّبِيِّ لَيْسَ شَبِيْهٌ بِعَلِيٍّ وَعَلِيٌّ يَضْحَكُ

‘উকবাহ ইব্‌নু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবূ বকর (রাঃ)-কে দেখলাম, তিনি হাসান (রাঃ)-কে কোলে তুললেন এবং বলতে লাগলেন, এ-ত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সদৃশ, ‘আলীর সদৃশ নয়। তখন ‘আলী (রাঃ) হাসছিলেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৬৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৭৫)

৩৭৫১
حَدَّثَنِيْ يَحْيَى بْنُ مَعِيْنٍ وَصَدَقَةُ قَالَا أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ وَاقِدِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ أَبُوْ بَكْرٍ ارْقُبُوْا مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم فِيْ أَهْلِ بَيْتِهِ

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবূ বকর (রাঃ) বললেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সন্তুষ্টি তাঁর পরিবারবর্গের (প্রতি সদাচরণের) মাধ্যমে অর্জন কর।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৬৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৭৬)

৩৭৫২
حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ يُوْسُفَ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ أَنَسٍ وَقَالَ عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِيْ أَنَسٌ قَالَ لَمْ يَكُنْ أَحَدٌ أَشْبَهَ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবারে হাসান ইব্‌নু ‘আলী (রাঃ)-এর চেয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে বেশি সাদৃশ্যপূর্ণ আর কেউ ছিলেন না। ‘আবদুর রায্‌যাক (রহঃ)…আনাস (রাঃ) হতে একইভাবে বর্ণিত।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৬৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৭৭)

৩৭৫৩
حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِيْ يَعْقُوْبَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِيْ نُعْمٍ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ وَسَأَلَهُ عَنْ الْمُحْرِمِ قَالَ شُعْبَةُ أَحْسِبُهُ يَقْتُلُ الذُّبَابَ فَقَالَ أَهْلُ الْعِرَاقِ يَسْأَلُوْنَ عَنْ الذُّبَابِ وَقَدْ قَتَلُوْا ابْنَ ابْنَةِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ هُمَا رَيْحَانَتَايَ مِنْ الدُّنْيَا

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তাকে ইরাকের এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, ইহরামের অবস্থায় মশা-মাছি মারা যাবে কি? তিনি বললেন, ইরাকবাসী মশা-মাছি মারা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে অথচ তারা আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নাতিকে হত্যা করেছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেন, হাসান ও হুসাইন (রাঃ) আমার নিকট দুনিয়ায় যেন দুটি ফুল।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৭০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৭৮)

৬২/২৩. অধ্যায়ঃ
আবূ বাক্‌র (রাঃ)-এর মুক্ত কৃতদাস বিলাল ইব্‌নু রাবাহ (রাঃ)-এর মর্যাদা।

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, জান্নাতে আমার অগ্রভাগে তোমার পাদুকার শব্দ শুনেছি।

৩৭৫৪
حَدَّثَنَا أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ أَخْبَرَنَا جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ عُمَرُ يَقُوْلُ أَبُوْ بَكْرٍ سَيِّدُنَا وَأَعْتَقَ سَيِّدَنَا يَعْنِيْ بِلَالًا

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) বলতেন, আবূ বকর (রাঃ) আমাদের নেতা আর তিনি মুক্ত করেছেন আমাদের একজন নেতাকে অর্থাৎ বিলাল (রাঃ)।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৭১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৭৯)

৩৭৫৫
حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عُبَيْدٍ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ عَنْ قَيْسٍ أَنَّ بِلَالًا قَالَ لِأَبِيْ بَكْرٍ إِنْ كُنْتَ إِنَّمَا اشْتَرَيْتَنِيْ لِنَفْسِكَ فَأَمْسِكْنِيْ وَإِنْ كُنْتَ إِنَّمَا اشْتَرَيْتَنِيْ لِلهِ فَدَعْنِيْ وَعَمَلَ اللهِ

কায়েস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

বিলাল (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ)-কে বললেন, আপনি যদি আপনার স্বীয় কাজের জন্য আমাকে কিনে থাকেন তাহলে আপনার খিদমতেই আমাকে নিয়োজিত রাখুন। আর যদি আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জনের কামনায় আমাকে কিনে থাকেন, তবে আমাকে আল্লাহ্‌ তা’আলার ইবাদাত করার সুযোগ দান করুন!

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৭২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৮০)

৬২/২৪. অধ্যায়ঃ
(‘আবদুল্লাহ) ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর মর্যাদা।

৩৭৫৬
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ عَنْ خَالِدٍ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ ضَمَّنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى صَدْرِهِ وَقَالَ اللَّهُمَّ عَلِّمْهُ الْحِكْمَةَ حَدَّثَنَا أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ وَقَالَ عَلِّمْهُ الْكِتَابَ حَدَّثَنَا مُوْسَى حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ عَنْ خَالِدٍ مِثْلَهُ وَالْحِكْمَةُ الْإِصَابَةُ فِيْ غَيْرِ النُّبُوَّةِ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তাঁর বুকে জড়িয়ে ধরলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্, তাকে হিক্মত শিক্ষা দিন। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৭৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৮১)

‘আবদুল ওয়ারিস (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, [নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এ কথাটিও বলেছিলেন, হে আল্লাহ্! তাকে কিতাবের জ্ঞান দান করুন। মূসা (রাঃ)….খালিদ (রহ.) হতে একইভাবে বর্ণনা করেছেন। ইমাম বুখারী (রহ.) বলেন الْحِكْمَةُ অর্থ নবুওয়াতের বিষয় ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছা। (৭৫)

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৭৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৮২)

৬২/২৫. অধ্যায়ঃ
খালিদ ইব্‌নু ওয়ালিদ (রাঃ) এর মর্যাদা।

৩৭৫৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ وَاقِدٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ هِلَالٍ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَعَى زَيْدًا وَجَعْفَرًا وَابْنَ رَوَاحَةَ لِلنَّاسِ قَبْلَ أَنْ يَأْتِيَهُمْ خَبَرُهُمْ فَقَالَ أَخَذَ الرَّايَةَ زَيْدٌ فَأُصِيْبَ ثُمَّ أَخَذَ جَعْفَرٌ فَأُصِيْبَ ثُمَّ أَخَذَ ابْنُ رَوَاحَةَ فَأُصِيْبَ وَعَيْنَاهُ تَذْرِفَانِ حَتَّى أَخَذَ سَيْفٌ مِنْ سُيُوفِ اللهِ حَتَّى فَتَحَ اللهُ عَلَيْهِمْ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যায়দ, জা’ফর ও ‘আবদুল্লাহ (রাঃ)-এর মৃত্যু সংবাদ যুদ্ধক্ষেত্র হতে সংবাদ আসার পূর্বেই আমাদেরকে শুনিয়েছিলেন। তিনি বলছিলেন, যায়দ (রাঃ) পতাকা ধারণ করে শাহাদাত লাভ করেছে। অতঃপর জা’ফর (রাঃ) পতাকা ধারণ করে শাহাদাতের মর্যাদা লাভ করল। অতঃপর ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু রাওয়াহা (রাঃ) পতাকা হাতে নিয়ে শাহাদাত লাভ করল। তিনি যখন এ কথাগুলি বলছিলেন তখন তাঁর দু’চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরছিল। (অতঃপর বললেন) আল্লাহ তা’আলার তরবারিগুলোর এক তরবারি অর্থাৎ খালিদ ইবনু ওয়ালিদ পতাকা উঠিয়েছেন। অবশেষে আল্লাহ মুসলিমদেরকে বিজয় দিয়েছেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৭৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৮৩)

৬২/২৬. অধ্যায়ঃ
আবু হুযাইফা (রাঃ)-এর আযাদকৃত গোলাম সালিম (রাঃ)-এর মর্যাদা।

৩৭৫৮
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ مَسْرُوقٍ قَالَ ذُكِرَ عَبْدُ اللهِ عِنْدَ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو فَقَالَ ذَاكَ رَجُلٌ لَا أَزَالُ أُحِبُّهُ بَعْدَ مَا سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ اسْتَقْرِئُوْا الْقُرْآنَ مِنْ أَرْبَعَةٍ مِنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ فَبَدَأَ بِهِ وَسَالِمٍ مَوْلَى أَبِيْ حُذَيْفَةَ وَأُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ وَمُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ لَا أَدْرِيْ بَدَأَ بِأُبَيٍّ أَوْ بِمُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ

মাসরূক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘আমর (রাঃ)-এর মজলিসে ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস’ঊদ (রাঃ)-এর আলোচনা হলে তিনি বললেন, আমি এই লোককে ঐদিন হতে অত্যন্ত ভালবাসি যেদিন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, তোমরা চার ব্যক্তি হতে কুরআন শিক্ষা কর, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু মাস’ঊদ সর্বপ্রথম তাঁর নাম বললেন, আবূ হুযাইফা (রাঃ)-এর মুক্ত গোলাম সালিম, ‘উবাই ইব্‌নু কা’ব (রাঃ) ও মু’আয ইব্‌নু জাবাল (রাঃ) থেকে। উবাই (রাঃ) ও মু’আয (রাঃ) এ দু’জনের কার নাম আগে বলেছিলেন সেটুকু আমার স্মরণ নেই।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৭৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৮৪)

৬২/২৭. অধ্যায়ঃ
‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস’ঊদ (রাঃ)-এর মর্যাদা।

৩৭৫৯
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ سُلَيْمَانَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا وَائِلٍ قَالَ سَمِعْتُ مَسْرُوقًا قَالَ قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَمْرٍو إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَكُنْ فَاحِشًا وَلَا مُتَفَحِّشًا وَقَالَ إِنَّ مِنْ أَحَبِّكُمْ إِلَيَّ أَحْسَنَكُمْ أَخْلَاقًا

মাসরূক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘আমর (রাঃ) বলেছেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জন্মগতভাবে বা ইচ্ছাপূর্বক অশ্লীল ভাষী ছিলেন না। তিনি বলেছেন, তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই আমার সবচেয়ে প্রিয় যে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী।

(ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৮৫ প্রথমাংশ)

৩৭৬০
وَقَالَ اسْتَقْرِئُوْا الْقُرْآنَ مِنْ أَرْبَعَةٍ مِنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُوْدٍ وَسَالِمٍ مَوْلَى أَبِيْ حُذَيْفَةَ وَأُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ وَمُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ

মাসরূক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি আরো বলেছেন, তোমরা চার ব্যক্তির নিকট হতে কুরআন শিক্ষা কর, ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস’ঊদ, সালিম মাওলা আবূ হুযায়ফা, উবাই ইব্‌নু কা’ব ও মু’আয ইব্‌নু জাবাল (রাঃ)।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৭৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৮৫ শেষাংশ)

৩৭৬১
حَدَّثَنَا مُوْسَى عَنْ أَبِيْ عَوَانَةَ عَنْ مُغِيْرَةَ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ دَخَلْتُ الشَّأْمَ فَصَلَّيْتُ رَكْعَتَيْنِ فَقُلْتُ اللَّهُمَّ يَسِّرْ لِيْ جَلِيْسًا فَرَأَيْتُ شَيْخًا مُقْبِلًا فَلَمَّا دَنَا قُلْتُ أَرْجُوْ أَنْ يَكُوْنَ اسْتَجَابَ قَالَ مِنْ أَيْنَ أَنْتَ قُلْتُ مِنْ أَهْلِ الْكُوفَةِ قَالَ أَفَلَمْ يَكُنْ فِيكُمْ صَاحِبُ النَّعْلَيْنِ وَالْوِسَادِ وَالْمِطْهَرَةِ أَوَلَمْ يَكُنْ فِيكُمْ الَّذِيْ أُجِيْرَ مِنْ الشَّيْطَانِ أَوَلَمْ يَكُنْ فِيكُمْ صَاحِبُ السِّرِّ الَّذِيْ لَا يَعْلَمُهُ غَيْرُهُ كَيْفَ قَرَأَ ابْنُ أُمِّ عَبْدٍوَاللَّيْلِ فَقَرَأْتُ وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشٰى وَالنَّهَارِ إِذَا تَجَلّٰى وَالذَّكَرِ وَالْأُنْثٰى (الليل : 1-3) قَالَ أَقْرَأَنِيْهَا النَّبِيُّ فَاهُ إِلَى فِيَّ فَمَا زَالَ هَؤُلَاءِ حَتَّى كَادُوْا يَرُدُّونِي

‘আলকামাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি সিরিয়া গেলাম। মসজিদে দু’রাকআত সালাত আদায় করে দু‘আ করলাম, হে আল্লাহ্, আমাকে একজন সৎ সাথী মিলিয়ে দিন। তখন আমি একজন বৃদ্ধকে আসতে দেখলাম। তিনি ছিলেন আবূ দারদা (রাঃ)। তিনি যখন আমার নিকটে আসলেন, তখন আমি বললাম, আশা করি আমার দু‘আ কবুল হয়েছে। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কোথাকার লোক? আমি বললাম, আমার ঠিকানা কুফায়। তিনি বললেন, তোমাদের মাঝে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর জুতা, বালিস ও উযূর পাত্র বহনকারী [আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ)] কি বিদ্যমান নেই? তোমাদের মাঝে ঐ ব্যক্তি কি নেই, যাকে শয়তান হতে নিরাপদ করে দেয়া হয়েছে? [অর্থাৎ আম্মার (রাঃ)]। তোমাদের মাঝে কি গোপন তথ্যাভিজ্ঞ ব্যক্তিটি [হুযাইফাহ (রাঃ)] নেই, যিনি ব্যতীত এসব গোপন রহস্য অন্য কেউ জানে না। (আমি বললাম, আছেন) অতঃপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) وَاللَّيْلِ কিভাবে পড়েন? আমি পড়লাম,

وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى وَالنَّهَارِ إِذَا تَجَلَّى وَالذَّكَرِ وَالأُنْثَى

এভাবে পড়েন। তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে সূরাটি সরাসরি এভাবে পড়তে শিখিয়েছেন। কিন্তু এসব লোক বার বার ব’লে আমাকে এ থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। (৩২৮৭)

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৭৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৮৬)

৩৭৬২
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيْدَ قَالَ سَأَلْنَا حُذَيْفَةَ عَنْ رَجُلٍ قَرِيْبِ السَّمْتِ وَالْهَدْيِ مِنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى نَأْخُذَ عَنْهُ فَقَالَ مَا أَعْرِفُ أَحَدًا أَقْرَبَ سَمْتًا وَهَدْيًا وَدَلًا بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ ابْنِ أُمِّ عَبْدٍ

আবদুর রাহমান ইব্‌নু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা হুযাইফা (রাঃ)-কে এমন এক ব্যক্তির সন্ধান দিতে অনুরোধ করলাম যার আকার আকৃতি, চাল-চলন, আচার-ব্যবহার এবং স্বভাব-চরিত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সবচেয়ে মিল আছে, আমরা তাঁর হতে শিক্ষা গ্রহণ করব। হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, আকার-আকৃতি, চাল-চলন, আচার-ব্যবহার এবং স্বভাব-চরিত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে মিল আছে এমন লোক ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস’ঊদ (রাঃ) ছাড়া অন্য কাউকেও আমি জানি না।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৭৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৮৭)

৩৭৬৩
حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ يُوْسُفَ بْنِ أَبِيْ إِسْحَاقَ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ قَالَ حَدَّثَنِي الأَسْوَدُ بْنُ يَزِيْدَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا مُوْسَى الأَشْعَرِيَّ يَقُوْلُ قَدِمْتُ أَنَا وَأَخِيْ مِنْ الْيَمَنِ فَمَكُثْنَا حِيْنًا مَا نُرَى إِلَّا أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ مَسْعُوْدٍ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ بَيْتِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لِمَا نَرَى مِنْ دُخُوْلِهِ وَدُخُوْلِ أُمِّهِ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم

আসওয়াদ ইব্‌নু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, আমি এবং আমার ভাই ইয়ামান হতে মদীনাতে আসি এবং বেশ কিছুদিন মদীনাতে অবস্থান করি। তখন আমরা মনে করতাম যে, ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস’ঊদ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবারেরই একজন লোক। কারণ আমরা তাঁকে এবং তাঁর মাকে সর্বদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঘরে প্রবেশ করতে দেখতাম।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৮০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৮৮)

৬২/২৮. অধ্যায়ঃ
মু’আবিয়াহ (রাঃ)-এর উল্লেখ।

৩৭৬৪
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ بِشْرٍ حَدَّثَنَا الْمُعَافَى عَنْ عُثْمَانَ بْنِ الأَسْوَدِ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ قَالَ أَوْتَرَ مُعَاوِيَةُ بَعْدَ الْعِشَاءِ بِرَكْعَةٍ وَعِنْدَهُ مَوْلًى لِابْنِ عَبَّاسٍ فَأَتَى ابْنَ عَبَّاسٍ فَقَالَ دَعْهُ فَإِنَّهُ قَدْ صَحِبَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم

ইব্‌নু আবূ মুলাইকা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার মু’আবিয়াহ (রাঃ) ‘ইশার সলাতের পর এক রাক’আত বিতরের সলাত আদায় করেন। তখন তাঁর নিকট ইব্‌নু ‘আব্বাসের আযাদকৃত গোলাম হাযির ছিলেন। তিনি ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর নিকট ঘটনাটি বর্ণনা করেন, তখন ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ) বললেন, তাঁকে কিছু বলো না, কেননা, তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহচর্য লাভ করেছেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৮১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৮৯)

৩৭৬৫
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ حَدَّثَنَا نَافِعُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنِيْ ابْنُ أَبِيْ مُلَيْكَةَ قِيْلَ لِابْنِ عَبَّاسٍ هَلْ لَكَ فِيْ أَمِيْرِ الْمُؤْمِنِيْنَ مُعَاوِيَةَ فَإِنَّهُ مَا أَوْتَرَ إِلَّا بِوَاحِدَةٍ قَالَ أَصَابَ إِنَّهُ فَقِيْهٌ

ইব্‌নু আবূ মুলায়কাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বলা হল, আপনি আমীরুল মু’মিনীন মু’আবিয়াহ (রাঃ)-এর সঙ্গে এ বিষয় আলাপ করবেন কি? যেহেতু তিনি বিতর সলাত এক রাক’আত আদায় করেছেন। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, তিনি ঠিকই করেছেন, কারণ তিনি নিজেই একজন ফকীহ্।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৮২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৯০)

৩৭৬৬
حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ عَبَّاسٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ قَالَ سَمِعْتُ حُمْرَانَ بْنَ أَبَانَ عَنْ مُعَاوِيَةَ قَالَ إِنَّكُمْ لَتُصَلُّوْنَ صَلَاةً لَقَدْ صَحِبْنَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَمَا رَأَيْنَاهُ يُصَلِّيهَا وَلَقَدْ نَهَى عَنْهُمَا يَعْنِي الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعَصْرِ

মু’আবিয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তোমরা এমন এক সলাত আদায় কর, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গ লাভ করেছি, আমরা তাঁকে তা আদায় করতে দেখিনি বরং তিনি এ দু’রাক’আত সলাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন। অর্থাৎ ‘আসরের পর দু’ রাক’আত।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৮৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৯১)

৬২/২৯. অধ্যায়ঃ
ফাতিমা রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহা-এর মর্যাদা।

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ফাতিমা রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহা জান্নাতী নারীদের নেত্রী।

৩৭৬৭
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَاطِمَةُ بِضْعَةٌ مِنِّيْ فَمَنْ أَغْضَبَهَا أَغْضَبَنِي

মিসওয়ার ইব্‌ন মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ফাতিমা আমার (দেহের) অংশ। যে তাঁকে অসন্তুষ্ট করল সে আমাকেই অসন্তুষ্ট করল।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৮৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৯২*)


* আধুনিক প্রকাশনীর ৩৪৮৫ নং এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ৩৪৯৩ নং হাদীসটি মূল বুখারীতে এ স্থানে সংকলিত হয়নি। এ হাদীসটি ইমাম বুখারী অত্র গ্রন্থের যথাক্রমে ৩৩২৫-৩৩২৬ ও ৩৭১৫-৩৭১৬ নং হাদীসে বর্ণনা করেছেন।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬২/৩০. অধ্যায়ঃ
‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর মর্যাদা।

৩৭৬৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ يُونُسَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَبُوْ سَلَمَةَ إِنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا يَا عَائِشَ هَذَا جِبْرِيْلُ يُقْرِئُكِ السَّلَامَ فَقُلْتُ وَعَلَيْهِ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللهِ وَبَرَكَاتُهُ تَرَى مَا لَا أَرَى تُرِيْدُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে ‘আয়িশা! জিবরাঈল (আরবী) তোমাকে সালাম বলেছেন। আমি উত্তরে বললাম, “ওয়া আলাইহিস্ সালাম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। আপনি যা দেখতে পান আমি তা দেখতে পাই না। এ কথা দ্বারা তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বুঝিয়েছেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৮৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৯৪)

৩৭৬৯
حَدَّثَنَا آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ و حَدَّثَنَا عَمْرٌو أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ عَنْ مُرَّةَ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى الأَشْعَرِيِّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَمَلَ مِنْ الرِّجَالِ كَثِيْرٌ وَلَمْ يَكْمُلْ مِنْ النِّسَاءِ إِلَّا مَرْيَمُ بِنْتُ عِمْرَانَ وَآسِيَةُ امْرَأَةُ فِرْعَوْنَ وَفَضْلُ عَائِشَةَ عَلَى النِّسَاءِ كَفَضْلِ الثَّرِيْدِ عَلَى سَائِرِ الطَّعَامِ

আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, পুরুষদের মধ্যে অনেকেই পূর্ণতাপ্রাপ্ত হয়েছে, কিন্তু নারীদের মধ্যে মারইয়াম বিনত ‘ইমরান ও ফিরাউনের স্ত্রী আসিয়া (রহঃ) ছাড়া অন্য কেউ তাদের মত পূর্ণতাপ্রাপ্ত হননি। আর ‘আয়িশা (রাঃ)-এর মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব অন্যান্য নারীদের উপর এমন যেমন সারীদ অর্থাৎ গোশ্‌ত এবং রুটি দ্বারা তৈরী খাদ্য বিশেষ এর মর্যাদা অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের উপর।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৮৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৯৫)

৩৭৭০
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ يَقُوْلُ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ فَضْلُ عَائِشَةَ عَلَى النِّسَاءِ كَفَضْلِ الثَّرِيْدِ عَلَى سَائِرِ الطَّعَامِ

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছি, ‘আয়িশা (রাঃ)-এর মর্যাদা নারীদের উপর এমন যেমন সারীদের মর্যাদা অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের উপর।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৮৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৯৬)

৩৭৭১
حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ بْنُ عَبْدِ الْمَجِيْدِ حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ عَنْ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ أَنَّ عَائِشَةَ اشْتَكَتْ فَجَاءَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَقَالَ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِيْنَ تَقْدَمِيْنَ عَلَى فَرَطِ صِدْقٍ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَعَلَى أَبِيْ بَكْرٍ

কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘আয়িশা (রাঃ) যখন (মৃত্যু) রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লেন। তখন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এসে বললেন, হে উম্মুল মু’মিনীন! আপনি প্রথম সত্যবাদী রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও আবূ বাক্‌র-এর নিকট যাচ্ছেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৮৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৯৭)

৩৭৭২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ الْحَكَمِ سَمِعْتُ أَبَا وَائِلٍ قَالَ لَمَّا بَعَثَ عَلِيٌّ عَمَّارًا وَالْحَسَنَ إِلَى الْكُوفَةِ لِيَسْتَنْفِرَهُمْ خَطَبَ عَمَّارٌ فَقَالَ إِنِّيْ لَاعْلَمُ أَنَّهَا زَوْجَتُهُ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ وَلَكِنَّ اللهَ ابْتَلَاكُمْ لِتَتَّبِعُوْهُ أَوْ إِيَّاهَا

আবূ ওয়াইল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আলী (রাঃ) তাঁর স্বপক্ষে জিহাদে সাহায্য করার জন্য লোক সংগ্রহের জন্য আম্মার ও হাসান (রাঃ)-কে কুফায় পাঠান। আম্মার (রাঃ) তাঁর ভাষণে একদা বললেন, এ কথা আমি ভালভাবেই জানি যে, ‘আয়িশা (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দুনিয়া ও আখিরাতের সম্মানিতা স্ত্রী। কিন্তু এখন আল্লাহ্ তোমাদেরকে পরীক্ষা করছেন যে তোমরা কি ‘আলী (রাঃ)-এর আনুগত্য করবে, না ‘আয়িশা (রাঃ)-এর আনুগত্য করবে?

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৯০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৯৮)

৩৭৭৩
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّهَا اسْتَعَارَتْ مِنْ أَسْمَاءَ قِلَادَةً فَهَلَكَتْ فَأَرْسَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَاسًا مِنْ أَصْحَابِهِ فِيْ طَلَبِهَا فَأَدْرَكَتْهُمْ الصَّلَاةُ فَصَلَّوْا بِغَيْرِ وُضُوءٍ فَلَمَّا أَتَوْا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم شَكَوْا ذَلِكَ إِلَيْهِ فَنَزَلَتْ آيَةُ التَّيَمُّمِ فَقَالَ أُسَيْدُ بْنُ حُضَيْرٍ جَزَاكِ اللهُ خَيْرًا فَوَاللهِ مَا نَزَلَ بِكِ أَمْرٌ قَطُّ إِلَّا جَعَلَ اللهُ لَكِ مِنْهُ مَخْرَجًا وَجَعَلَ لِلْمُسْلِمِيْنَ فِيْهِ بَرَكَةً

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি আসমা (রাঃ)-এর নিকট হতে একটি হার চেয়ে নিয়েছিলেন। পরে হারটি হারিয়ে যায়। এর অনুসন্ধানে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছু সাহাবীকে পাঠালেন। ইতোমধ্যে সলাতের সময় হয়ে গেলে তাঁরা পানির অভাবে উযূ ব্যতীতই সলাত আদায় করলেন। তাঁরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে এই বিষয়ে অভিযোগ পেশ করলেন। তখন তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল হল। উসায়দ ইব্‌নু হুযায়র (রাঃ) বললেন, (হে ‘আয়িশা) আল্লাহ্ আপনাকে উত্তম প্রতিদানে পুরস্কৃত করুন। আল্লাহ্‌র কসম! যখনই আপনি কোন সমস্যায় পড়েছেন, তখনই আল্লাহ তা’আলা তা থেকে আপনাকে বের করে এনেছেন এবং মুসলিমদের জন্য এর মধ্যে বরকত রেখে দিয়েছেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৯১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৪৯৯)

৩৭৭৪
حَدَّثَنِيْ عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَمَّا كَانَ فِيْ مَرَضِهِ جَعَلَ يَدُوْرُ فِيْ نِسَائِهِ وَيَقُوْلُ أَيْنَ أَنَا غَدًا أَيْنَ أَنَا غَدًا حِرْصًا عَلَى بَيْتِ عَائِشَةَ قَالَتْ عَائِشَةُ فَلَمَّا كَانَ يَوْمِيْ سَكَنَ

‘উরওয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মৃত্যু রোগে আক্রান্ত তখন সহধর্মিনীদের ঘরে পালাক্রমে থাকতে লাগলেন। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আয়িশা (রাঃ)-এর ঘরে অবস্থানের ইচ্ছায় এ কথাটি বলতেন, “আগামীকাল আমি কার ঘরে থাকব? আগামীকাল আমি কার ঘরে থাকব? ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমার ঘরে অবস্থানের দিনই তিনি শান্তি লাভ করলেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৯২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫০০)

৩৭৭৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ كَانَ النَّاسُ يَتَحَرَّوْنَ بِهَدَايَاهُمْ يَوْمَ عَائِشَةَ قَالَتْ عَائِشَةُ فَاجْتَمَعَ صَوَاحِبِيْ إِلَى أُمِّ سَلَمَةَ فَقُلْنَ يَا أُمَّ سَلَمَةَ وَاللهِ إِنَّ النَّاسَ يَتَحَرَّوْنَ بِهَدَايَاهُمْ يَوْمَ عَائِشَةَ وَإِنَّا نُرِيْدُ الْخَيْرَ كَمَا تُرِيْدُهُ عَائِشَةُ فَمُرِيْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَأْمُرَ النَّاسَ أَنْ يُهْدُوْا إِلَيْهِ حَيْثُ مَا كَانَ أَوْ حَيْثُ مَا دَارَ قَالَتْ فَذَكَرَتْ ذَلِكَ أُمُّ سَلَمَةَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ فَأَعْرَضَ عَنِّيْ فَلَمَّا عَادَ إِلَيَّ ذَكَرْتُ لَهُ ذَاكَ فَأَعْرَضَ عَنِّيْ فَلَمَّا كَانَ فِي الثَّالِثَةِ ذَكَرْتُ لَهُ فَقَالَ يَا أُمَّ سَلَمَةَ لَا تُؤْذِيْنِيْ فِيْ عَائِشَةَ فَإِنَّهُ وَاللهِ مَا نَزَلَ عَلَيَّ الْوَحْيُ وَأَنَا فِيْ لِحَافِ امْرَأَةٍ مِنْكُنَّ غَيْرِهَا

‘উরওয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, লোকেরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে হাদীয়া প্রদানের জন্য ‘আয়িশা (রাঃ)-এর গৃহে তাঁর অবস্থানের দিন হিসাব করতেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, একদা আমার সতীনগণ উম্মু সালামাহ (রাঃ)-এর নিকট সমবেত হয়ে বললেন, হে উম্মু সালামাহ! আল্লাহ্‌র কসম, লোকজন তাদের উপঢৌকনসমূহ প্রেরণের জন্য ‘আয়িশা (রাঃ)-এর গৃহে অবস্থানের দিন গণনা করেন। ‘আয়িশা (রাঃ)-এর মত আমরাও কল্যাণ আকাঙ্ক্ষা করি। আপনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলুন, তিনি যেন লোকদের বলে দেন, তারা যেন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেদিন যেখানেই অবস্থান করেন সেখানেই তারা হাদীয়া পাঠিয়ে দেন। উম্মু সালামাহ রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহা বলেন, তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে এ বিষয়ে উল্লেখ করলেন। উম্মু সালামাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার কথা শুনে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। পরে আমার গৃহে অবস্থানের জন্য পুনরায় আসলে আমি ঐ কথা তাঁকে বলি। এবারও তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন। তৃতীয়বারেও আমি ঐ কথা তাঁকে বললাম, তিনি বললেন, হে উম্মু সালামাহ! ‘আয়িশা (রাঃ)-এর ব্যাপারে তোমরা আমাকে কষ্ট দিও না। আল্লাহ্‌র কসম, তোমাদের মধ্যে ‘আয়িশা (রাঃ) ছাড়া অন্য কারো শয্যায় শায়িত থাকা কালীন আমার উপর ওয়াহী নাযিল হয়নি।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৪৯৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫০১)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]