সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আনসারগণের মর্যাদা অধ্যায় ২য় ভাগ হাদিস নং ৩৮১৫ – ৩৮৫০

৬৩/২০. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সাথে খাদীজাহ (রাঃ) – এর বিবাহ এবং তাঁর ফাযীলাত।

৩৮১৫
حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ جَعْفَرٍ قَالَ سَمِعْتُ عَلِيًّا يَقُوْلُ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ ح حَدَّثَنِيْ صَدَقَةُ أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ جَعْفَرٍ عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِيْ طَالِبٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ خَيْرُ نِسَائِهَا مَرْيَمُ وَخَيْرُ نِسَائِهَا خَدِيْجَةُ

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মারিয়াম (আঃ) ছিলেন (পূর্বের) নারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতমা নারী। আর খাদীজাহ (রাঃ) (এ উম্মাতের) নারীদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠা।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪০)

৩৮১৬
حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ عُفَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ قَالَ كَتَبَ إِلَيَّ هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ مَا غِرْتُ عَلَى امْرَأَةٍ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَا غِرْتُ عَلَى خَدِيْجَةَ هَلَكَتْ قَبْلَ أَنْ يَتَزَوَّجَنِيْ لِمَا كُنْتُ أَسْمَعُهُ يَذْكُرُهَا وَأَمَرَهُ اللهُ أَنْ يُبَشِّرَهَا بِبَيْتٍ مِنْ قَصَبٍ وَإِنْ كَانَ لَيَذْبَحُ الشَّاةَ فَيُهْدِيْ فِيْ خَلَائِلِهَا مِنْهَا مَا يَسَعُهُنَّ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কোন স্ত্রীর প্রতি এতটুকু ঈর্ষা করিনি যতটুকু খাদীজাহ (রাঃ) – এর প্রতি করেছি। কেননা, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে তাঁর কথা বারবার আলোচনা করতে শুনেছি, অথচ আমাকে বিবাহ করার আগেই তিনি ইন্তিকাল করেছিলেন। খাদীজাহ (রাঃ) – কে জান্নাতে মণি-মুক্তা খচিত একটি প্রাসাদের খোশ খবর দেয়ার জন্য আল্লাহ তা‘আলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে আদেশ করেন। কোন দিন বকরী যবেহ হলে খাদীজাহ (রাঃ) – এর বান্ধবীদের নিকট তাদের প্রত্যেকের দরকার মত গোশত্‌ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপঢৌকন হিসেবে পাঠিয়ে দিতেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪১)

৩৮১৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ مَا غِرْتُ عَلَى امْرَأَةٍ مَا غِرْتُ عَلَى خَدِيْجَةَ مِنْ كَثْرَةِ ذِكْرِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِيَّاهَا قَالَتْ وَتَزَوَّجَنِيْ بَعْدَهَا بِثَلَاثِ سِنِيْنَ وَأَمَرَهُ رَبُّهُ عَزَّ وَجَلَّ أَوْ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَام أَنْ يُبَشِّرَهَا بِبَيْتٍ فِي الْجَنَّةِ مِنْ قَصَبٍ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর অন্য কোন স্ত্রীর ব্যাপারে এত ঈর্ষা পোষণ করিনি, যতটুকু খাদীজাহ (রাঃ) – এর প্রতি করেছি। যেহেতু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর আলোচনা বেশি করতেন। তিনি (আরো) বলেন, খাদীজাহ (রাঃ) – এর (ইন্তিকালের) তিন বছর পর তিনি আমাকে বিবাহ করেন। আল্লাহ নিজে অথবা জিব্‌রাঈল (আঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে আদেশ করলেন যে, খাদীজাহ (রাঃ) – কে জান্নাতে মণিমুক্তা খচিত একটি ভবনের খোশ খবর দিন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪২)

৩৮১৮
حَدَّثَنِيْ عُمَرُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ حَسَنٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا حَفْصٌ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ مَا غِرْتُ عَلَى أَحَدٍ مِنْ نِسَاءِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَا غِرْتُ عَلَى خَدِيْجَةَ وَمَا رَأَيْتُهَا وَلَكِنْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُكْثِرُ ذِكْرَهَا وَرُبَّمَا ذَبَحَ الشَّاةَ ثُمَّ يُقَطِّعُهَا أَعْضَاءً ثُمَّ يَبْعَثُهَا فِيْ صَدَائِقِ خَدِيْجَةَ فَرُبَّمَا قُلْتُ لَهُ كَأَنَّهُ لَمْ يَكُنْ فِي الدُّنْيَا امْرَأَةٌ إِلَّا خَدِيْجَةُ فَيَقُوْلُ إِنَّهَا كَانَتْ وَكَانَتْ وَكَانَ لِيْ مِنْهَا وَلَدٌ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর অন্য কোন স্ত্রীর প্রতি এতটুকু ঈর্ষা করিনি যতটুকু খাদীজাহ (রাঃ) – এর প্রতি করেছি। অথচ আমি তাঁকে দেখিনি। কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কথা বেশি সময় আলোচনা করতেন। কোন কোন সময় বকরী যবেহ করে গোশতে্‌র পরিমাণ বিবেচনায় হাড়-গোশত্‌কে ছোট ছোট টুকরো করে হলেও খাদীজাহ (রাঃ) – এর বান্ধবীদের ঘরে পৌঁছে দিতেন। আমি কোন সময় ঈর্ষা ভরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে বলতাম, মনে হয় খাদীজাহ (রাঃ) ছাড়া দুনিয়াতে যেন আর কোন নারী নাই। উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেন, হাঁ। তিনি এমন ছিলেন, এমন ছিলেন, তাঁর গর্ভে আমার সন্তানাদি জন্মেছিল।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৩)

৩৮১৯
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ إِسْمَاعِيْلَ قَالَ قُلْتُ لِعَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ أَوْفَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا بَشَّرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَدِيْجَةَ قَالَ نَعَمْ بِبَيْتٍ مِنْ قَصَبٍ لَا صَخَبَ فِيْهِ وَلَا نَصَبَ

ইসমাঈল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু আবূ আউফা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাদীজাহ (রাঃ) – কে জান্নাতের খোশ খবর দিয়েছিলেন কি? তিনি বললেন, হাঁ। এমন একটি ভবনের খোশ খবর দিয়েছিলেন, যে ভবনটি তৈরী করা হয়েছে এমন মোতি দ্বারা যার ভিতরদেশ ফাঁকা। আর সেখানে থাকবে না শোরগোল, কোন প্রকার ক্লেশ ও দুঃখ।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৪)

৩৮২০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ عَنْ عُمَارَةَ عَنْ أَبِيْ زُرْعَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ أَتَى جِبْرِيْلُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ هَذِهِ خَدِيْجَةُ قَدْ أَتَتْ مَعَهَا إِنَاءٌ فِيْهِ إِدَامٌ أَوْ طَعَامٌ أَوْ شَرَابٌ فَإِذَا هِيَ أَتَتْكَ فَاقْرَأْ عَلَيْهَا السَّلَامَ مِنْ رَبِّهَا وَمِنِّيْ وَبَشِّرْهَا بِبَيْتٍ فِي الْجَنَّةِ مِنْ قَصَبٍ لَا صَخَبَ فِيْهِ وَلَا نَصَبَ

وَقَالَ إِسْمَاعِيْلُ بْنُ خَلِيْلٍ أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ اسْتَأْذَنَتْ هَالَةُ بِنْتُ خُوَيْلِدٍ أُخْتُ خَدِيْجَةَ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَعَرَفَ اسْتِئْذَانَ خَدِيْجَةَ فَارْتَاعَ لِذَلِكَ فَقَالَ اللَّهُمَّ هَالَةَ قَالَتْ فَغِرْتُ فَقُلْتُ مَا تَذْكُرُ مِنْ عَجُوْزٍ مِنْ عَجَائِزِ قُرَيْشٍ حَمْرَاءِ الشِّدْقَيْنِ هَلَكَتْ فِي الدَّهْرِ قَدْ أَبْدَلَكَ اللهُ خَيْرًا مِنْهَا

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন যে, জিব্‌রাঈল (আঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট হাযির হয়ে বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! ঐ যে খাদীজাহ (রাঃ) একটি পাত্র হাতে নিয়ে আসছেন। ঐ পাত্রে তরকারী, অথবা খাদ্যদ্রব্য অথবা পানীয় ছিল। যখন তিনি পৌঁছে যাবেন তখন তাঁকে তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ হতে এবং আমার পক্ষ থেকেও সালাম জানাবেন আর তাঁকে জান্নাতের এমন একটি ভবনের খোশ খবর দিবেন যার অভ্যন্তর ভাগ ফাঁকা-মোতি দ্বারা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে থাকবে না কোন প্রকার শোরগোল; কোন প্রকার দুঃখ-ক্লেশ।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৫ প্রথমাংশ)

৩৮২১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ عَنْ عُمَارَةَ عَنْ أَبِيْ زُرْعَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ أَتَى جِبْرِيْلُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ هَذِهِ خَدِيْجَةُ قَدْ أَتَتْ مَعَهَا إِنَاءٌ فِيْهِ إِدَامٌ أَوْ طَعَامٌ أَوْ شَرَابٌ فَإِذَا هِيَ أَتَتْكَ فَاقْرَأْ عَلَيْهَا السَّلَامَ مِنْ رَبِّهَا وَمِنِّيْ وَبَشِّرْهَا بِبَيْتٍ فِي الْجَنَّةِ مِنْ قَصَبٍ لَا صَخَبَ فِيْهِ وَلَا نَصَبَ وَقَالَ إِسْمَاعِيْلُ بْنُ خَلِيْلٍ أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ اسْتَأْذَنَتْ هَالَةُ بِنْتُ خُوَيْلِدٍ أُخْتُ خَدِيْجَةَ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَعَرَفَ اسْتِئْذَانَ خَدِيْجَةَ فَارْتَاعَ لِذَلِكَ فَقَالَ اللَّهُمَّ هَالَةَ قَالَتْ فَغِرْتُ فَقُلْتُ مَا تَذْكُرُ مِنْ عَجُوْزٍ مِنْ عَجَائِزِ قُرَيْشٍ حَمْرَاءِ الشِّدْقَيْنِ هَلَكَتْ فِي الدَّهْرِ قَدْ أَبْدَلَكَ اللهُ خَيْرًا مِنْهَا

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ খাদীজাহ্‌র বোন হালা বিনতে খুয়াইলিদ (একদিন) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য অনুমতি চাইলেন। (দু’বোনের গলার স্বর ও অনুমতি চাওয়ার ভঙ্গি একই রকম ছিল বলে) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাদীজাহ্‌র অনুমতি চাওয়ার কথা মনে করে হতচকিত হয়ে পড়েন। তারপর (প্রকৃতিস্থ হয়ে) তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! এতো দেখছি হালা! ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ এতে আমার ভারী ঈর্ষা হলো। আমি বললাম, কুরাইশদের বুড়ীদের মধ্য থেকে এমন এক বুড়ীর কথা আপনি আলোচনা করেন যার দাঁতের মাড়ির লাল বর্ণটাই শুধু বাকি রয়ে গিয়েছিল, যে শেষ হয়ে গেছে কতকাল আগে। তার পরিবর্তে আল্লাহ তো আপনাকে তার চাইতেও উত্তম স্ত্রী দান করেছেন। [১]

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৩৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ নাই)


[১] ‘আয়িশা (রাঃ) – এর এ কথার জবাবে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কী বলেছেন তার উল্লেখ বুখারীতে নেই। তবে হাদীস সংকলন আহমাদ ও তাবারানী এ প্রসঙ্গে বর্ণনা করেছেন যে, ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ এতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্রুদ্ধ হন। অবশেষে আমি বললামঃ যিনি আপনাকে সত্যের বাহকরূপে পাঠিয়েছেন তাঁর কসম, ভবিষ্যতে আমি তাঁর (খাদীজাহ্‌র) সম্পর্কে উত্তম মন্তব্য ছাড়া অন্য কোনরূপ মন্তব্য করবো না।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৩/২১. অধ্যায়ঃ
জারীর ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ বাজালী (রাঃ) – এর উল্লেখ।

৩৮২২
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ الْوَاسِطِيُّ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ بَيَانٍ عَنْ قَيْسٍ قَالَ سَمِعْتُهُ يَقُوْلُ قَالَ جَرِيْرُ بْنُ عَبْدِ اللهِ مَا حَجَبَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مُنْذُ أَسْلَمْتُ وَلَا رَآنِيْ إِلَّا ضَحِكَ

জারীর ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ইসলাম গ্রহণ করার পর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর গৃহে প্রবেশ করতে কোনদিন আমাকে বাধা প্রদান করেননি এবং যখনই আমাকে দেখেছেন, মুচকি হাসি দিয়েছেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪০ প্রথমাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৬ প্রথমাংশ)

৩৮২৩
وَعَنْ قَيْسٍ عَنْ جَرِيْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ كَانَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ بَيْتٌ يُقَالُ لَهُ ذُو الْخَلَصَةِ وَكَانَ يُقَالُ لَهُ الْكَعْبَةُ الْيَمَانِيَةُ أَوْ الْكَعْبَةُ الشَّأْمِيَّةُ فَقَالَ لِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَلْ أَنْتَ مُرِيْحِيْ مِنْ ذِي الْخَلَصَةِ قَالَ فَنَفَرْتُ إِلَيْهِ فِيْ خَمْسِيْنَ وَمِائَةِ فَارِسٍ مِنْ أَحْمَسَ قَالَ فَكَسَرْنَا وَقَتَلْنَا مَنْ وَجَدْنَا عِنْدَهُ فَأَتَيْنَاهُ فَأَخْبَرْنَاهُ فَدَعَا لَنَا وَلِأَحْمَسَ

জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

জারীর (রাঃ) আরো বলেন, জাহিলী যুগে যুল-খালাসা নামে একটি ঘর ছিল। যাকে কা‘বায়ে ইয়ামানী ও কা‘বায়ে শামী বলা হত। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, তুমি কি যুল-খালাসার ব্যাপারে আমাকে শান্তি দিতে পার? জারীর (রাঃ) বলেন, আমি আহমাস গোত্রের একশ পঞ্চাশ জন ঘোড়-সওয়ার সৈন্য নিয়ে যাত্রা করলাম এবং (প্রতীমা ঘরটি) বিধ্বস্ত করে দিলাম। সেখানে যাদেরকে পেলাম হত্যা করলাম। এসে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে খবর জানালাম। তিনি আমাদের জন্য এবং আহমাস গোত্রের জন্য দু‘আ করলেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪০ শেষাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৬ শেষাংশ)

৬৩/২২. অধ্যায়ঃ
হুযাইফাহ ইব্‌নুল ইয়ামান ‘আবসী (রাঃ) – এর উল্লেখ।

৩৮২৪
حَدَّثَنِيْ إِسْمَاعِيْلُ بْنُ خَلِيْلٍ أَخْبَرَنَا سَلَمَةُ بْنُ رَجَاءٍ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ لَمَّا كَانَ يَوْمُ أُحُدٍ هُزِمَ الْمُشْرِكُوْنَ هَزِيْمَةً بَيِّنَةً فَصَاحَ إِبْلِيْسُ أَيْ عِبَادَ اللهِ أُخْرَاكُمْ فَرَجَعَتْ أُوْلَاهُمْ عَلَى أُخْرَاهُمْ فَاجْتَلَدَتْ أُخْرَاهُمْ فَنَظَرَ حُذَيْفَةُ فَإِذَا هُوَ بِأَبِيْهِ فَنَادَى أَيْ عِبَادَ اللهِ أَبِيْ أَبِيْ فَقَالَتْ فَوَاللهِ مَا احْتَجَزُوْا حَتَّى قَتَلُوْهُ فَقَالَ حُذَيْفَةُ غَفَرَ اللهُ لَكُمْ قَالَ أَبِيْ فَوَاللهِ مَا زَالَتْ فِيْ حُذَيْفَةَ مِنْهَا بَقِيَّةُ خَيْرٍ حَتَّى لَقِيَ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ওহুদ যুদ্ধে মুশরিকগণ যখন শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়ে পড়লো, তখন ইব্‌লীস চীৎকার করে (মুসলমানগণকে) বলল, হে আল্লাহ্‌র বান্দাগণ! পিছনের দিকে লক্ষ্য কর। তখন অগ্রগামী দল পিছন দিকে ফিরে গেল (শত্রুদল মনে করে) নিজদলের উপর আক্রমণ করে বসল এবং একে অন্যকে হত্যা করতে লাগল। এমন সময় হুযাইফাহ (রাঃ) পিছনের দলে তাঁর পিতাকে দেখতে পেয়ে চীৎকার করে বলতে লাগলেন, হে আল্লাহ্‌র বান্দাগণ! এই যে আমার পিতা, এই যে আমার পিতা। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্‌র শপথ, কিন্তু তারা কেউই বিরত হয়নি। অবশেষে তাঁকে হত্যা করে ফেলল। হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিন। (অধস্তন রাবী হিশাম বলেন) আমার পিতা উরওয়াহ (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্‌র কসম, এ কথার কারণে হুযাইফাহ (রাঃ) – এর মধ্যে তাঁর জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত কল্যাণের চিহ্ন বিদ্যমান ছিল।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৭)

৬৩/২৩. অধ্যায়ঃ
উতবাহ ইব্‌নু রাবী‘আহ্‌র কন্যা হিন্দ (রাঃ) – এর আলোচনা।

৩৮২৫
وَقَالَ عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا يُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنِيْ عُرْوَةُ أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ جَاءَتْ هِنْدٌ بِنْتُ عُتْبَةَ قَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا كَانَ عَلَى ظَهْرِ الأَرْضِ مِنْ أَهْلِ خِبَاءٍ أَحَبُّ إِلَيَّ أَنْ يَذِلُّوْا مِنْ أَهْلِ خِبَائِكَ ثُمَّ مَا أَصْبَحَ الْيَوْمَ عَلَى ظَهْرِ الْأَرْضِ أَهْلُ خِبَاءٍ أَحَبَّ إِلَيَّ أَنْ يَعِزُّوْا مِنْ أَهْلِ خِبَائِكَ قَالَتْ وَأَيْضًا وَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ قَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ أَبَا سُفْيَانَ رَجُلٌ مِسِّيكٌ فَهَلْ عَلَيَّ حَرَجٌ أَنْ أُطْعِمَ مِنْ الَّذِيْ لَهُ عِيَالَنَا قَالَ لَا أُرَاهُ إِلَّا بِالْمَعْرُوفِ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উতবাহ্‌র মেয়ে হিন্দ (রাঃ) এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! এক সময় আমার মনের অবস্থা পৃথিবীর বুকে কোন পরিবারের লাঞ্ছিত হতে দেখা আমার নিকট আপনার পরিবারের অপমানিত দেখার চেয়ে অধিক কাঙ্ক্ষিত ছিল না। কিন্তু এখন আমার অবস্থা এমন হয়েছে যে দুনিয়ার বুকে কোন পরিবারের সম্মানিত হতে দেখা আমার নিকট আপনার পরিবারের সম্মানিত দেখার চেয়ে বেশি প্রিয় নয়। তিনি বললেন, সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ। তারপর সে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আবূ সুফইয়ান (রাঃ) একজন কৃপণ ব্যক্তি। যদি তার মাল আমি ছেলে-মেয়েদের জন্য ব্যয় করি তবে তাতে কি আমার কিছু হবে? তিনি বললেন, না, যদি যথাযথ ব্যয় করা হয়।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ২১৩৩ পরিচ্ছেদ)

৬৩/২৪. অধ্যায়ঃ
যায়দ ইব্‌নু ‘আমর ইব্‌নু নুফায়ল (রাঃ) – এর ঘটনা।

৩৮২৬
حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ أَبِيْ بَكْرٍ حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ عُقْبَةَ حَدَّثَنَا سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَقِيَ زَيْدَ بْنَ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ بِأَسْفَلِ بَلْدَحٍ قَبْلَ أَنْ يَنْزِلَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الْوَحْيُ فَقُدِّمَتْ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم سُفْرَةٌ فَأَبَى أَنْ يَأْكُلَ مِنْهَا ثُمَّ قَالَ زَيْدٌ إِنِّيْ لَسْتُ آكُلُ مِمَّا تَذْبَحُوْنَ عَلَى أَنْصَابِكُمْ وَلَا آكُلُ إِلَّا مَا ذُكِرَ اسْمُ اللهِ عَلَيْهِ وَأَنَّ زَيْدَ بْنَ عَمْرٍو كَانَ يَعِيْبُ عَلَى قُرَيْشٍ ذَبَائِحَهُمْ وَيَقُوْلُ الشَّاةُ خَلَقَهَا اللهُ وَأَنْزَلَ لَهَا مِنْ السَّمَاءِ الْمَاءَ وَأَنْبَتَ لَهَا مِنْ الأَرْضِ ثُمَّ تَذْبَحُوْنَهَا عَلَى غَيْرِ اسْمِ اللهِ إِنْكَارًا لِذَلِكَ وَإِعْظَامًا لَهُ

আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, ওয়াহী নাযিল হওয়ার পূর্বে একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কার নিম্ন অঞ্চলের বালদাহ নামক জায়গায় যায়দ ইব্‌নু ‘আমর ইব্‌নু নুফায়লের সাথে সাক্ষাৎ করলেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সামনে খাদ্য পূর্ণ একটি ‘খানচা’ পেশ করা হল। তিনি তা হতে কিছু খেতে অস্বীকার করলেন। এরপর যায়দ (রাঃ) বললেন, আমিও ঐ সব জন্তুর গোশ্‌ত খাই না যা তোমরা তোমাদের দেব-দেবীর নামে যবেহ কর। আল্লাহ্‌র নামে যবেহকৃত ছাড়া অন্যের নামে যবেহ করা জন্তুর গোশ্‌ত আমি কিছুতেই খাই না। যায়দ ইব্‌নু ‘আমর কুরাইশের যবেহকৃত জন্তু সম্পর্কে তাদের উপর দোষারোপ করতেন এবং বলতেন; বকরীকে সৃষ্টি করলেন আল্লাহ্‌, তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আকাশ হতে বারি বর্ষণ করলেন। ভূমি হতে উৎপন্ন করলেন তৃণ-লতা অথচ তোমরা আল্লাহ্‌ তা‘আলার সমূহদান অস্বীকার করে প্রতিমার প্রতি সম্মান করে আল্লাহ্‌র নাম ছাড়া অন্যের নামে যবেহ করছ। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৩ প্রথমাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৮ প্রথমাংশ)

৩৮২৭
قَالَ مُوْسَى حَدَّثَنِيْ سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ وَلَا أَعْلَمُهُ إِلَّا تَحَدَّثَ بِهِ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ زَيْدَ بْنَ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ خَرَجَ إِلَى الشَّأْمِ يَسْأَلُ عَنْ الدِّينِ وَيَتْبَعُهُ فَلَقِيَ عَالِمًا مِنْ الْيَهُوْدِ فَسَأَلَهُ عَنْ دِيْنِهِمْ فَقَالَ إِنِّيْ لَعَلِّيْ أَنْ أَدِيْنَ دِيْنَكُمْ فَأَخْبِرْنِيْ فَقَالَ لَا تَكُوْنُ عَلَى دِيْنِنَا حَتَّى تَأْخُذَ بِنَصِيْبِكَ مِنْ غَضَبِ اللهِ قَالَ زَيْدٌ مَا أَفِرُّ إِلَّا مِنْ غَضَبِ اللهِ وَلَا أَحْمِلُ مِنْ غَضَبِ اللهِ شَيْئًا أَبَدًا وَأَنَّى أَسْتَطِيْعُهُ فَهَلْ تَدُلُّنِيْ عَلَى غَيْرِهِ قَالَ مَا أَعْلَمُهُ إِلَّا أَنْ يَكُوْنَ حَنِيْفًا قَالَ زَيْدٌ وَمَا الْحَنِيْفُ قَالَ دِيْنُ إِبْرَاهِيْمَ لَمْ يَكُنْ يَهُوْدِيًّا وَلَا نَصْرَانِيًّا وَلَا يَعْبُدُ إِلَّا اللهَ فَخَرَجَ زَيْدٌ فَلَقِيَ عَالِمًا مِنْ النَّصَارَى فَذَكَرَ مِثْلَهُ فَقَالَ لَنْ تَكُوْنَ عَلَى دِيْنِنَا حَتَّى تَأْخُذَ بِنَصِيْبِكَ مِنْ لَعْنَةِ اللهِ قَالَ مَا أَفِرُّ إِلَّا مِنْ لَعْنَةِ اللهِ وَلَا أَحْمِلُ مِنْ لَعْنَةِ اللهِ وَلَا مِنْ غَضَبِهِ شَيْئًا أَبَدًا وَأَنَّى أَسْتَطِيْعُ فَهَلْ تَدُلُّنِيْ عَلَى غَيْرِهِ قَالَ مَا أَعْلَمُهُ إِلَّا أَنْ يَكُوْنَ حَنِيْفًا قَالَ وَمَا الْحَنِيْفُ قَالَ دِيْنُ إِبْرَاهِيْمَ لَمْ يَكُنْ يَهُوْدِيًّا وَلَا نَصْرَانِيًّا وَلَا يَعْبُدُ إِلَّا اللهَ فَلَمَّا رَأَى زَيْدٌ قَوْلَهُمْ فِيْ إِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَام خَرَجَ فَلَمَّا بَرَزَ رَفَعَ يَدَيْهِ فَقَالَ اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَشْهَدُ أَنِّيْ عَلَى دِيْنِ إِبْرَاهِيْمَ وَقَالَ اللَّيْثُ كَتَبَ إِلَيَّ هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِيْ بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَتْ رَأَيْتُ زَيْدَ بْنَ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ قَائِمًا مُسْنِدًا ظَهْرَهُ إِلَى الْكَعْبَةِ يَقُوْلُ يَا مَعَاشِرَ قُرَيْشٍ وَاللهِ مَا مِنْكُمْ عَلَى دِيْنِ إِبْرَاهِيْمَ غَيْرِيْ وَكَانَ يُحْيِي الْمَوْءُوْدَةَ يَقُوْلُ لِلرَّجُلِ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَقْتُلَ ابْنَتَهُ لَا تَقْتُلْهَا أَنَا أَكْفِيكَهَا مَئُوْنَتَهَا فَيَأْخُذُهَا فَإِذَا تَرَعْرَعَتْ قَالَ لِأَبِيْهَا إِنْ شِئْتَ دَفَعْتُهَا إِلَيْكَ وَإِنْ شِئْتَ كَفَيْتُكَ مَئُوْنَتَهَا

আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মূসা (সনদসহ) বলেন, সালিম ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) আমার নিকট বর্ণনা করেছেন। মূসা (রহঃ) বলেন, আমার জানা মতে তিনি ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) হতে এ ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন যে, যায়দ ইব্‌নু ‘আমর সঠিক তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত দ্বীনের খোঁজে সিরিয়ায় যান। সে সময় একজন ইয়াহূদী আলেমের সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হল। তিনি তার নিকট তাদের দ্বীন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন এবং বললেন, হয়ত আমি তোমাদের দ্বীনের অনুসারী হব, আমাকে সে সম্পর্কে জানাও। তিনি বললেন, তুমি আমাদের দ্বীন গ্রহন করবে না। গ্রহণ করলে যতখানি গ্রহণ করবে সে পরিমাণ আল্লাহ্‌র গযব তোমার উপর পতিত হবে। যায়দ বললেন, আমি তো আল্লাহ্‌র গযব হতে পালিয়ে আসছি। আমি যথাসাধ্য আল্লাহ্‌র সামান্য পরিমাণ গযবও বহন করব না। আর আমার কি তা বহনের শক্তি-সামার্থ্য আছে? তুমি কি আমাকে এছাড়া অন্য কোন পথের দিশা দিতে পার? সে বলল, আমি তা জানি না, তবে তুমি দীনে হানীফ কবুল করে নাও। যায়দ জিজ্ঞেস করলেন (দ্বীনে) হানীফ কী? সে বলল, তা হল ইব্‌রাহীম (আঃ) – এর দীন। তিনি ইয়াহূদীও ছিলেন না, নাসারাও ছিলেন না। তিনি আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করতেন না। তখন যায়দ বের হলেন এবং তাঁর সাথে একজন খ্রিস্টান আলিমের সাক্ষাত হল। ইয়াহূদী ‘আলিমের নিকট ইতিপূর্বে তিনি যা যা বলেছিলেন তার কাছেও তা বললেন। তিনি বললেন, তুমি আমাদের দ্বীন গ্রহণ করবে না। গ্রহণ করলে যত পরিমাণ গ্রহণ করবে তত পরিমাণ আল্লাহ্‌র লা‘নত তোমার উপর পতিত হবে। যায়দ বললেন, আমি তো আল্লাহ্‌র লা‘নত হতে পালিয়ে আসছি। আর আমি যথাসাধ্য সামান্য আল্লাহ্‌র লা‘নতও বহন করব না। আমি কি তা বহনের শক্তি রাখি? তুমি কি আমাকে এছাড়া অন্য কোন পথের দিশা দেবে? সে বলল, আমি অন্য কিছু জানি না। শুধু এতটুকু বলতে পারি যে, তুমি দীনে হানীফ গ্রহণ কর। তিনি বললেন, হানীফ কী? উত্তরে তিনি বললেন, তা হল ইব্‌রাহীম (আঃ) – এর দীন, তিনি ইয়াহূদীও ছিলেন না এবং খ্রিস্টানও ছিলেন না এবং আল্লাহ্‌ ছাড়া আর কারো ইবাদত করতেন না। যায়দ যখন ইব্‌রাহীম (আঃ) সম্পর্কে তাদের মন্তব্য জানতে পারলেন, তখন তিনি বেরিয়ে পড়ে দু’হাত তুলে বললেন, হে আল্লাহ্‌! আমি তোমাকে সাক্ষী রেখে বলছি আমি দ্বীনে ইব্‌রাহীম (আঃ) – এর উপর আছি।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৩ মধ্যমাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৮ মধ্যমাংশ)

৩৮২৮
قَالَ مُوْسَى حَدَّثَنِيْ سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ وَلَا أَعْلَمُهُ إِلَّا تَحَدَّثَ بِهِ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ زَيْدَ بْنَ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ خَرَجَ إِلَى الشَّأْمِ يَسْأَلُ عَنْ الدِّينِ وَيَتْبَعُهُ فَلَقِيَ عَالِمًا مِنْ الْيَهُوْدِ فَسَأَلَهُ عَنْ دِيْنِهِمْ فَقَالَ إِنِّيْ لَعَلِّيْ أَنْ أَدِيْنَ دِيْنَكُمْ فَأَخْبِرْنِيْ فَقَالَ لَا تَكُوْنُ عَلَى دِيْنِنَا حَتَّى تَأْخُذَ بِنَصِيْبِكَ مِنْ غَضَبِ اللهِ قَالَ زَيْدٌ مَا أَفِرُّ إِلَّا مِنْ غَضَبِ اللهِ وَلَا أَحْمِلُ مِنْ غَضَبِ اللهِ شَيْئًا أَبَدًا وَأَنَّى أَسْتَطِيْعُهُ فَهَلْ تَدُلُّنِيْ عَلَى غَيْرِهِ قَالَ مَا أَعْلَمُهُ إِلَّا أَنْ يَكُوْنَ حَنِيْفًا قَالَ زَيْدٌ وَمَا الْحَنِيْفُ قَالَ دِيْنُ إِبْرَاهِيْمَ لَمْ يَكُنْ يَهُوْدِيًّا وَلَا نَصْرَانِيًّا وَلَا يَعْبُدُ إِلَّا اللهَ فَخَرَجَ زَيْدٌ فَلَقِيَ عَالِمًا مِنْ النَّصَارَى فَذَكَرَ مِثْلَهُ فَقَالَ لَنْ تَكُوْنَ عَلَى دِيْنِنَا حَتَّى تَأْخُذَ بِنَصِيْبِكَ مِنْ لَعْنَةِ اللهِ قَالَ مَا أَفِرُّ إِلَّا مِنْ لَعْنَةِ اللهِ وَلَا أَحْمِلُ مِنْ لَعْنَةِ اللهِ وَلَا مِنْ غَضَبِهِ شَيْئًا أَبَدًا وَأَنَّى أَسْتَطِيْعُ فَهَلْ تَدُلُّنِيْ عَلَى غَيْرِهِ قَالَ مَا أَعْلَمُهُ إِلَّا أَنْ يَكُوْنَ حَنِيْفًا قَالَ وَمَا الْحَنِيْفُ قَالَ دِيْنُ إِبْرَاهِيْمَ لَمْ يَكُنْ يَهُوْدِيًّا وَلَا نَصْرَانِيًّا وَلَا يَعْبُدُ إِلَّا اللهَ فَلَمَّا رَأَى زَيْدٌ قَوْلَهُمْ فِيْ إِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَام خَرَجَ فَلَمَّا بَرَزَ رَفَعَ يَدَيْهِ فَقَالَ اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَشْهَدُ أَنِّيْ عَلَى دِيْنِ إِبْرَاهِيْمَ وَقَالَ اللَّيْثُ كَتَبَ إِلَيَّ هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِيْ بَكْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَتْ رَأَيْتُ زَيْدَ بْنَ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ قَائِمًا مُسْنِدًا ظَهْرَهُ إِلَى الْكَعْبَةِ يَقُوْلُ يَا مَعَاشِرَ قُرَيْشٍ وَاللهِ مَا مِنْكُمْ عَلَى دِيْنِ إِبْرَاهِيْمَ غَيْرِيْ وَكَانَ يُحْيِي الْمَوْءُوْدَةَ يَقُوْلُ لِلرَّجُلِ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَقْتُلَ ابْنَتَهُ لَا تَقْتُلْهَا أَنَا أَكْفِيكَهَا مَئُوْنَتَهَا فَيَأْخُذُهَا فَإِذَا تَرَعْرَعَتْ قَالَ لِأَبِيْهَا إِنْ شِئْتَ دَفَعْتُهَا إِلَيْكَ وَإِنْ شِئْتَ كَفَيْتُكَ مَئُوْنَتَهَا

লায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

লায়স (রহঃ) বলেন হিশাম তাঁর পিতা সূত্রে তিনি আসমা বিন্‌ত আবূ বকর (রাঃ) হতে বর্ণনা করতে গিয়ে আমার কাছে লিখছেন যে, তিনি (আসমা) বলেন, আমি দেখলাম যায়দ ইব্‌নু ‘আমর ইব্‌নু নুফায়ল কা’বা শরীফের দেয়ালে পিঠ লাগিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন এবং বলছেন, হে কুরাইশ গোত্র, আল্লাহ্‌র কসম, আমি ব্যতীত তোমাদের কেউ-ই দ্বীনে ইব্‌রাহীমের উপর নেই। আর তিনি যেসব কন্যা সন্তানকে জীবন্ত কবর দেয়ার জন্য নেয়া হত তাদেরকে তিনি বাঁচাবার ব্যবস্থা করতেন। যখন কোন লোক তার কন্যা সন্তানকে হত্যা করার জন্য ইচ্ছা করত, তখন তিনি এসে বলতেন, হত্যা করো না, আমি তার জীবিকার ব্যয়ভার গ্রহণ করবো। এ বলে তিনি শিশুটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসতেন। শিশুটি বড় হলে তার পিতাকে বলতেন, তুমি যদি তোমার কন্যাকে নিয়ে যেতে চাও তাহলে আমি দিয়ে দেব। আর তুমি যদি নিতে না চাও, তবে আমিই এর সকল ব্যয় ভার বহন করে যাব।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৮ শেষাংশ)

৬৩/২৫. অধ্যায়ঃ
কা‘বা নির্মাণ।

৩৮২৯
حَدَّثَنِيْ مَحْمُوْدٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ قَالَ أَخْبَرَنِيْ ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ دِيْنَارٍ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَمَّا بُنِيَتْ الْكَعْبَةُ ذَهَبَ النَّبِيُّ وَعَبَّاسٌ يَنْقُلَانِ الْحِجَارَةَ فَقَالَ عَبَّاسٌ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم اجْعَلْ إِزَارَكَ عَلَى رَقَبَتِكَ يَقِيكَ مِنْ الْحِجَارَةِ فَخَرَّ إِلَى الأَرْضِ وَطَمَحَتْ عَيْنَاهُ إِلَى السَّمَاءِ ثُمَّ أَفَاقَ فَقَالَ إِزَارِيْ إِزَارِيْ فَشَدَّ عَلَيْهِ إِزَارَهُ

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন কা‘বা গৃহ পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছিল তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ‘আব্বাস (রাঃ) পাথর বয়ে আনছিলেন। ‘আব্বাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে বললেন, তোমার লুঙ্গিটি কাঁধের উপর রাখ, পাথরের ঘর্ষণ হতে তোমাকে রক্ষা করবে। (লুঙ্গি খুলতেই) তিনি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে গেলেন। তাঁর চোখ দু’টি আকাশের দিকে নিবিষ্ট ছিল। তাঁর চেতনা ফিরে এল, তখন তিনি বলতে লাগলেন, আমার লুঙ্গি, আমার লুঙ্গি। তৎক্ষণাৎ তাঁর লুঙ্গি পরিয়ে দেয়া হল।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৪৯)

৩৮৩০
حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِيْنَارٍ وَعُبَيْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ يَزِيْدَ قَالَا لَمْ يَكُنْ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَوْلَ الْبَيْتِ حَائِطٌ كَانُوْا يُصَلُّوْنَ حَوْلَ الْبَيْتِ حَتَّى كَانَ عُمَرُ فَبَنَى حَوْلَهُ حَائِطًا قَالَ عُبَيْدُ اللهِ جَدْرُهُ قَصِيْرٌ فَبَنَاهُ ابْنُ الزُّبَيْرِ

আমর ইব্‌নু দীনার ও ‘উবাইদুল্লাহ ইব্‌নু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তারা বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর যুগে কা‘বা ঘরের চারিপাশে কোন প্রাচীর ছিল না। লোকজন কা‘বা ঘরকে কেন্দ্র করে তার চারপাশে সলাত আদায় করত। ‘উমার (রাঃ) কা‘বার চতুষ্পার্শ্বে প্রাচীর নির্মাণ করেন। ‘উবাইদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, এ প্রাচীর ছিল নীচু, অতঃপর ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু যুবায়র (রাঃ) তা নির্মাণ করেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫০)

৬৩/২৬. অধ্যায়ঃ
জাহিলীয়্যাতের যুগ।

৩৮৩১
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا هِشَامٌ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ يَوْمُ عَاشُوْرَاءَ يَوْمًا تَصُومُهُ قُرَيْشٌ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَصُومُهُ فَلَمَّا قَدِمَ الْمَدِيْنَةَ صَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ فَلَمَّا نَزَلَ رَمَضَانُ كَانَ مَنْ شَاءَ صَامَهُ وَمَنْ شَاءَ لَا يَصُومُهُ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জাহিলী যুগে আশুরার দিন কুরাইশগণ ও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাওম পালন করতেন। যখন হিজরত করে মদীনায় আগমন করলেন, তখন তিনি নিজেও আশুরার সাওম পালন করতেন এবং অন্যকেও তা পালনের নির্দেশ দিতেন। যখন রমাযানের সাওম ফরয করা হল তখন যার ইচ্ছা (আশুরা) সওম করতেন আর যার ইচ্ছা করতেন না।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫১)

৩৮৩২
حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا ابْنُ طَاوُسٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانُوْا يَرَوْنَ أَنَّ الْعُمْرَةَ فِيْ أَشْهُرِ الْحَجِّ مِنْ الْفُجُوْرِ فِي الأَرْضِ وَكَانُوْا يُسَمُّوْنَ الْمُحَرَّمَ صَفَرًا وَيَقُوْلُوْنَ إِذَا بَرَا الدَّبَرْ وَعَفَا الأَثَرْ حَلَّتْ الْعُمْرَةُ لِمَنْ اعْتَمَرْ قَالَ فَقَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ رَابِعَةً مُهِلِّيْنَ بِالْحَجِّ وَأَمَرَهُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَجْعَلُوْهَا عُمْرَةً قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَيُّ الْحِلِّ قَالَ الْحِلُّ كُلُّهُ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হাজ্জের মাসগুলোতে ‘উমরাহ পালন করাকে কুরাইশগণ পাপ কাজ বলে মনে করত। তারা মুহাররম মাসের নামকে পরিবর্তন করে সফর মাস নাম দিত এবং বলত, (উটের) যখম যখন শুকিয়ে যাবে এবং পায়ের চিহ্ন মুছে যাবে তখন ‘উমরাহ পালন করা হালাল হবে যারা পালন করতে চায়। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সঙ্গী সাথীগণ যিলহাজ্জ মাসের চার তারিখে হাজ্জের তালবিয়াহ পড়তে পড়তে মক্কায় হাযির হলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তারঁ সঙ্গী-সাথীদেরকে বললেন, তোমরা ‘উমরায় পরিণত করে নেও। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমাদের জন্য কোন্‌ কোন্‌ বিষয় হালাল হবে? তিনি বললেন, সকল বিষয় হালাল হয়ে যাবে।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫২)

৩৮৩৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ كَانَ عَمْرٌو يَقُوْلُ حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ جَاءَ سَيْلٌ فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَكَسَا مَا بَيْنَ الْجَبَلَيْنِ قَالَ سُفْيَانُ وَيَقُوْلُ إِنَّ هَذَا لَحَدِيْثٌ لَهُ شَأْنٌ

সা‘ঈদ ইব্‌নু মুসাইয়্যাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

সা‘ঈদ ইব্‌নু মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতার মাধ্যমে দাদা হতে বর্ণনা করেন যে, জাহিলীয়্যাতের যুগে একটি বন্যা হয়েছিল। যাতে মক্কায় দু’টি পাহাড়ের মধ্যস্থল সম্পূর্ন প্লাবিত হয়েছিল। সুফ্‌ইয়ান (রহঃ) বলেন, ‘আমর ইব্‌নু দীনার বলতেন, এ হাদীসটির একটি দীর্ঘ পটভূমি আছে।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৩)

৩৮৩৪
حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنْ بَيَانٍ أَبِيْ بِشْرٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِيْ حَازِمٍ قَالَ دَخَلَ أَبُوْ بَكْرٍ عَلَى امْرَأَةٍ مِنْ أَحْمَسَ يُقَالُ لَهَا زَيْنَبُ فَرَآهَا لَا تَكَلَّمُ فَقَالَ مَا لَهَا لَا تَكَلَّمُ قَالُوْا حَجَّتْ مُصْمِتَةً قَالَ لَهَا تَكَلَّمِيْ فَإِنَّ هَذَا لَا يَحِلُّ هَذَا مِنْ عَمَلِ الْجَاهِلِيَّةِ فَتَكَلَّمَتْ فَقَالَتْ مَنْ أَنْتَ قَالَ امْرُؤٌ مِنْ الْمُهَاجِرِيْنَ قَالَتْ أَيُّ الْمُهَاجِرِيْنَ قَالَ مِنْ قُرَيْشٍ قَالَتْ مِنْ أَيِّ قُرَيْشٍ أَنْتَ قَالَ إِنَّكِ لَسَئُوْلٌ أَنَا أَبُوْ بَكْرٍ قَالَتْ مَا بَقَاؤُنَا عَلَى هَذَا الأَمْرِ الصَّالِحِ الَّذِيْ جَاءَ اللهُ بِهِ بَعْدَ الْجَاهِلِيَّةِ قَالَ بَقَاؤُكُمْ عَلَيْهِ مَا اسْتَقَامَتْ بِكُمْ أَئِمَّتُكُمْ قَالَتْ وَمَا الأَئِمَّةُ قَالَ أَمَا كَانَ لِقَوْمِكِ رُءُوْسٌ وَأَشْرَافٌ يَأْمُرُوْنَهُمْ فَيُطِيْعُوْنَهُمْ قَالَتْ بَلَى قَالَ فَهُمْ أُوْلَئِكِ عَلَى النَّاسِ

কাইস ইব্‌নু আবূ হাযিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন আবূ বকর (রাঃ) আহমাস গোত্রের যায়নাব নামের এক নারীর নিকট গেলেন। তিনি গিয়ে দেখতে পেলেন, নারীটি কথাবার্তা বলছে না। তিনি (লোকজনকে) জিজ্ঞেস করলেন, নারীটির এ অবস্থা কেন, কথাবার্তা বলছে না কেন? তারা তাঁকে জানালেন, এ নারী নীরব থেকে থেকে হাজ্জ পালন করে আসছেন। আবূ বকর (রাঃ) তাঁকে বললেন, কথা বল, কেননা এটা হালাল নয়। এটা জাহিলীয়্যাত যুগের কাজ। তখন নারীটি কথাবার্তা বলল। জিজ্ঞেস করল, আপনি কে? আবূ বকর (রাঃ) উত্তরে বললেন, আমি একজন মুহাজির লোক। মহিলাটি জিজ্ঞেস করল, আপনি কোন গোত্রের মুহাজির? আবূ বকর (রাঃ) বললেন, কুরাইশ গোত্রের। মহিলাটি জিজ্ঞেস করলেন, কোন কুরাইশের কোন শাখার আপনি? আবূ বকর (রাঃ) বললেন, তুমি তো অত্যধিক উত্তম প্রশ্নকারিণী। আমি আবূ বকর। তখন মহিলাটি তাঁকে জিজ্ঞেস করল, জাহিলীয়্যা যুগের পর যে উত্তম দ্বীন ও কল্যাণময় জীবন বিধান আল্লাহ আমাদেরকে দান করেছেন সে দ্বীনের উপর আমরা কতদিন সঠিকভাবে টিকে থাকতে পারব? আবূ বকর (রাঃ) বললেন, যতদিন তোমাদের ইমামগণ তোমাদেরকে নিয়ে দ্বীনের উপর অটল থাকবেন। মহিলা জিজ্ঞেস করল, ইমামগণ কারা? আবূ বকর (রাঃ) বললেন, তোমাদের গোত্রে ও সমাজে এমন সম্ভ্রান্ত ও নেতৃস্থানীয় লোক কি দেখনি যারা নির্দেশ দিলে সকলেই তা মেনে চলে? নারীটি উত্তর দিল, হাঁ। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, এরাই হলেন জনগণের ইমাম।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৪৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৪)

৩৮৩৫
حَدَّثَنِيْ فَرْوَةُ بْنُ أَبِي الْمَغْرَاءِ أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ أَسْلَمَتْ امْرَأَةٌ سَوْدَاءُ لِبَعْضِ الْعَرَبِ وَكَانَ لَهَا حِفْشٌ فِي الْمَسْجِدِ قَالَتْ فَكَانَتْ تَأْتِيْنَا فَتَحَدَّثُ عِنْدَنَا فَإِذَا فَرَغَتْ مِنْ حَدِيْثِهَا قَالَتْ وَيَوْمُ الْوِشَاحِ مِنْ تَعَاجِيْبِ رَبِّنَا أَلَا إِنَّهُ مِنْ بَلْدَةِ الْكُفْرِ أَنْجَانِيْ فَلَمَّا أَكْثَرَتْ قَالَتْ لَهَا عَائِشَةُ وَمَا يَوْمُ الْوِشَاحِ قَالَتْ خَرَجَتْ جُوَيْرِيَةٌ لِبَعْضِ أَهْلِيْ وَعَلَيْهَا وِشَاحٌ مِنْ أَدَمٍ فَسَقَطَ مِنْهَا فَانْحَطَّتْ عَلَيْهِ الْحُدَيَّا وَهِيَ تَحْسِبُهُ لَحْمًا فَأَخَذَتْهُ فَاتَّهَمُونِيْ بِهِ فَعَذَّبُوْنِيْ حَتَّى بَلَغَ مِنْ أَمْرِيْ أَنَّهُمْ طَلَبُوْا فِيْ قُبُلِيْ فَبَيْنَاهُمْ حَوْلِيْ وَأَنَا فِيْ كَرْبِيْ إِذْ أَقْبَلَتْ الْحُدَيَّا حَتَّى وَازَتْ بِرُءُوْسِنَا ثُمَّ أَلْقَتْهُ فَأَخَذُوْهُ فَقُلْتُ لَهُمْ هَذَا الَّذِيْ اتَّهَمْتُمُونِيْ بِهِ وَأَنَا مِنْهُ بَرِيئَةٌ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আরবের কোন এক গোত্রের এক (মুক্তিপ্রাপ্ত) কৃষ্ণকায় মহিলা ইসলাম গ্রহণ করেন। মসজিদের পাশে ছিল তার একটি ছোট ঘর। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, সে আমদের নিকট আসত এবং আমাদের সাথে কথাবার্তা বলত। যখন তার বাক্যালাপ শেষ হত তখন প্রায়ই বলতো, ইয়াওমূল বিশাহ (মণিমুক্তা খচিত হারের দিন) আমাদের রবের পক্ষ হতে আশ্চর্যজনক ঘটনাবলীর একটি দিন জেনে রাখুন! আমার রব আমাকে কুফর এর দেশ হতে মুক্তি দিয়েছেন। সে এ কথাটি প্রায়ই বলত। একদিন ‘আয়িশা (রাঃ) ঐ মহিলাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইয়াওমূল বিশাহ’ কী? তখন সে বলল যে, আমার মুনিবের পরিবারের এক শিশু কন্যা ঘর হতে বের হল। তার গলায় চামড়ার (উপর মনিমুক্তা খচিত) একটি হার ছিল। হারটি (ছিড়ে) গলা হতে পড়ে গেল। তখন একটি চিল ওটা গোশ্‌তের টুকরা মনে করে ছোঁ মেরে নিয়ে গেল। তারা আমাকে হার চুরির সন্দেহে শাস্তি ও নির্যাতন করতে লাগল। অবশেষে তারা আমার লজ্জাস্থানে তল্লাশী চালাল। যখন তারা আমার চারপাশে ছিল এবং আমি চরম দুঃখে ছিলাম এমন সময় একটি চিল কোত্থেকে উড়ে আসল এবং আমাদের মাথার উপরে এসে হারটি ফেলে দিল। তারা হারটি তুলে নিল। তখন আমি বললাম, এটা হল সেই হার যেটা চুরির জন্য আমার উপর অপবাদ দিয়েছ, অথচ এ ব্যাপারে আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৫)

৩৮৩৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَلَا مَنْ كَانَ حَالِفًا فَلَا يَحْلِفْ إِلَّا بِاللهِ فَكَانَتْ قُرَيْشٌ تَحْلِفُ بِآبَائِهَا فَقَالَ لَا تَحْلِفُوْا بِآبَائِكُمْ

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাবধান! যদি তোমাদের কসম করতে হয় তাহলে আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করো না। লোকজন তাদের বাপ-দাদার নামে কসম করত। তিনি বললেন, সাবধান! বাপ-দাদার নামে কসম করো না।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৬)

৩৮৩৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ قَالَ حَدَّثَنِيْ ابْنُ وَهْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَمْرٌو أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ الْقَاسِمِ حَدَّثَهُ أَنَّ الْقَاسِمَ كَانَ يَمْشِيْ بَيْنَ يَدَيْ الْجَنَازَةِ وَلَا يَقُومُ لَهَا وَيُخْبِرُ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ أَهْلُ الْجَاهِلِيَّةِ يَقُومُوْنَ لَهَا يَقُوْلُوْنَ إِذَا رَأَوْهَا كُنْتِ فِيْ أَهْلِكِ مَا أَنْتِ مَرَّتَيْنِ

‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, ‘আবদুর রাহমান ইব্‌নু কাসিম (রাঃ) তার কাছে বলেছেন যে, কাসিম জানাযা বহন করার সময় আগে আগে চলতেন। জানাযা দেখলে তিনি দাঁড়াতেন না [১] এবং তিনি বর্ণনা করেছেন যে, ‘আয়িশা (রাঃ) বলতেন, জাহিলী যুগে মুশরিকগণ জানাযা দেখলে দাঁড়াত এবং মৃত ব্যক্তির রূহকে লক্ষ্য করে বলত, তুমি তোমার আপন জনদের সাথেই আছ যেমন তোমার জীবদ্দশায় ছিলে। এ কথাটি তার দু’বার বলত।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৭)


[১] ১৩১১, ১৩১২, ১৩১৩ নং হাদীস এর বৈপরিত্য লক্ষ্য করা যায়। উক্ত হাদীসগুলোতে জানাযা দেখে দাঁড়ানোর প্রমান পাওয়া যায়। এব্যাপারে ইব্‌নু হাজার আসকালানী (রহঃ) – এর ফাতহুল বারীতে আছে, যে সকল মাসাআলার সাথে অন্যান্য সাহাবীর সঙ্গে মা ‘আয়িশা (রাঃ) – এর মত পার্থক্য ছিল এটি তার অন্তর্গত। তবে এখানে উক্ত হাদীসত্রয়ের আলোকে যা মা ‘আয়িশার মতের চেয়ে অন্যান্য সাহাবীর মতই প্রাধান্য পায়।

(ফাতহুল বারী ৭ম খন্ড ১৯২ পৃষ্ঠা )

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩৮৩৮
حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ عَبَّاسٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ قَالَ قَالَ عُمَرُ إِنَّ الْمُشْرِكِيْنَ كَانُوْا لَا يُفِيْضُوْنَ مِنْ جَمْعٍ حَتَّى تَشْرُقَ الشَّمْسُ عَلَى ثَبِيْرٍ فَخَالَفَهُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَفَاضَ قَبْلَ أَنْ تَطْلُعَ الشَّمْسُ

আমর ইব্‌নু মায়মূন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘উমার ইব্‌নুল খাত্তাব (রাঃ) বলেন, মুশরিকগণ সাবীর পাহাড়ের উপর সূর্যের কিরণ না পড়া পর্যন্ত মুয্‌দালাফা হতে রওয়ানা হত না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূর্য উঠার আগে রাওয়ানা হয়ে তাদের প্রথার খেলাফ করেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৮)

৩৮৩৯
حَدَّثَنِيْ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ قُلْتُ لِأَبِيْ أُسَامَةَ حَدَّثَكُمْ يَحْيَى بْنُ الْمُهَلَّبِ حَدَّثَنَا حُصَيْنٌ عَنْ عِكْرِمَةَ وَكَأْسًا دِهَاقًا قَالَ مَلأَى مُتَتَابِعَةً قَالَ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ سَمِعْتُ أَبِيْ يَقُوْلُ فِي الْجَاهِلِيَّةِ اسْقِنَا كَأْسًا دِهَاقًا (النبا : 34)

ইকরিমাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইকরিমাহ (রহঃ) বলেন, আল্লাহর বাণীঃ كَأْسًا دِهَاقًا (আন-নাবাঃ ৩৪) এর তাফসীর প্রসঙ্গে বলেন, একের পর এক শরাবে পূর্ণ পেয়ালা। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৪ প্রথমাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৯ প্রথমাংশ)

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৪ প্রথমাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৯ প্রথমাংশ)

৩৮৪০
حَدَّثَنِيْ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ قُلْتُ لِأَبِيْ أُسَامَةَ حَدَّثَكُمْ يَحْيَى بْنُ الْمُهَلَّبِ حَدَّثَنَا حُصَيْنٌ عَنْ عِكْرِمَةَ وَكَأْسًا دِهَاقًا قَالَ مَلأَى مُتَتَابِعَةً قَالَ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ سَمِعْتُ أَبِيْ يَقُوْلُ فِي الْجَاهِلِيَّةِ اسْقِنَا كَأْسًا دِهَاقًا

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমার পিতা ‘আব্বাস (রাঃ) – কে ইসলামের পূর্ব যুগে বলতে শুনেছি, আমাদেরকে পাত্র ভর্তি শরাব একের পর এক পান করাও।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৫৯ শেষাংশ)

৩৮৪১
حَدَّثَنَا أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَصْدَقُ كَلِمَةٍ قَالَهَا الشَّاعِرُ كَلِمَةُ لَبِيْدٍ أَلَا كُلُّ شَيْءٍ مَا خَلَا اللهَ بَاطِلٌ وَكَادَ أُمَيَّةُ بْنُ أَبِي الصَّلْتِ أَنْ يُسْلِمَ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সবচেয়ে সঠিক বাক্য যা কোন কবি বলেছেন তা হল লাবীদ এর এ পংক্তিটি – সাবধান, আল্লাহ্‌ ছাড়া সব জিনিসই বাতিল ও অসার। এবং কবি উমাইয়্যা ইব্‌নু আবূ সাল্‌ত ইসলাম গ্রহণের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬০)

৩৮৪২
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ حَدَّثَنِيْ أَخِيْ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلَالٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنْ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ لِأَبِيْ بَكْرٍ غُلَامٌ يُخْرِجُ لَهُ الْخَرَاجَ وَكَانَ أَبُوْ بَكْرٍ يَأْكُلُ مِنْ خَرَاجِهِ فَجَاءَ يَوْمًا بِشَيْءٍ فَأَكَلَ مِنْهُ أَبُوْ بَكْرٍ فَقَالَ لَهُ الْغُلَامُ أَتَدْرِيْ مَا هَذَا فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ وَمَا هُوَ قَالَ كُنْتُ تَكَهَّنْتُ لِإِنْسَانٍ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَمَا أُحْسِنُ الْكِهَانَةَ إِلَّا أَنِّيْ خَدَعْتُهُ فَلَقِيَنِيْ فَأَعْطَانِيْ بِذَلِكَ فَهَذَا الَّذِيْ أَكَلْتَ مِنْهُ فَأَدْخَلَ أَبُوْ بَكْرٍ يَدَهُ فَقَاءَ كُلَّ شَيْءٍ فِيْ بَطْنِهِ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবূ বকর (রাঃ) – এর একজন ক্রীতদাস ছিল। সে প্রতিদিন তার উপর ধার্য কর আদায় করত। আর আবূ বকর (রাঃ) তার দেওয়া কর হতে আহার করতেন। একদিন সে কিছু খাবার জিনিস এনে দিল। তা হতে তিনি আহার করলেন। তারপর গোলাম বলল, আপনি জানেন কি ওটা কিভাবে উপার্জিত করা হয়েছে যা আপনি খেয়েছেন? তিনি বললেন, বলত কিভাবে? গোলাম উত্তরে বলল, আমি জাহিলী যুগে এক ব্যক্তির ভবিষ্যৎ গণনা করে দিয়েছিলাম। কিন্তু ভবিষ্যৎ গণনা আমার ভালভাবে জানা ছিল না। তথাপি প্রতারণা করে তা করেছিলাম। আমার সাথে তার দেখা হলে গণনার বিনিময়ে এ দ্রব্যাদি সে আমাকে হাদীয়া দিল যা হতে আপনি আহার করলেন। আবূ বকর (রাঃ) এটা শুনামাত্র মুখের ভিতর হাত ঢুকিয়ে দিলেন এবং পেটের ভিতর যা কিছু ছিল সবই বমি করে দিলেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬১)

৩৮৪৩
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ عُبَيْدِ اللهِ أَخْبَرَنِيْ نَافِعٌ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ أَهْلُ الْجَاهِلِيَّةِ يَتَبَايَعُوْنَ لُحُومَ الْجَزُوْرِ إِلَى حَبَلِ الْحَبَلَةِ قَالَ وَحَبَلُ الْحَبَلَةِ أَنْ تُنْتَجَ النَّاقَةُ مَا فِيْ بَطْنِهَا ثُمَّ تَحْمِلَ الَّتِيْ نُتِجَتْ فَنَهَاهُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ ذَلِكَ

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইসলামের পূর্ব যুগে মানুষ ‘হাবালুল হাবালা’ রুপে উটের গোশ্‌ত ক্রয়-বিক্রয় করত। রাবী বলেন, হাবালুল হাবালার অর্থ হল – তারা উট কেনা বেচা করত এই শর্তে যে, কোন নিদিষ্ট গর্ভবতী উটনী বাচ্চা প্রসব করলে পর ঐ প্রসব করা বাচ্চা যখন গর্ভবতী হবে তখন উটের দাম পরিশোধ করা হবে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে এরুপ কেনা বেচা করতে নিষেধ করে দিলেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬২)

৩৮৪৪
حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا مَهْدِيٌّ قَالَ غَيْلَانُ بْنُ جَرِيْرٍ كُنَّا نَأْتِيْ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ فَيُحَدِّثُنَا عَنْ الأَنْصَارِ وَكَانَ يَقُوْلُ لِيْ فَعَلَ قَوْمُكَ كَذَا وَكَذَا يَوْمَ كَذَا وَكَذَا وَفَعَلَ قَوْمُكَ كَذَا وَكَذَا يَوْمَ كَذَا وَكَذَا

গায়লান ইব্‌নু জারীর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমরা আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) – এর কাছে গেলে তিনি আমাদের কাছে আনসারদের ঘটনা বর্ণনা করতেন। রাবী বলেন, আমাকে লক্ষ্য করে তিনি বলতেন, তোমার জাতি অমুক অমুক দিন অমুক অমুক কাজ করেছে, অমুক অমুক দিন অমুক অমুক কাজ করেছে।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬৩)

৬৩/২৭. অধ্যায়ঃ
জাহিলী যুগের কাসামাহ ( শপথ গ্রহণ )

৩৮৪৫
حَدَّثَنَا أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا قَطَنٌ أَبُو الْهَيْثَمِ حَدَّثَنَا أَبُوْ يَزِيْدَ الْمَدَنِيُّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ إِنَّ أَوَّلَ قَسَامَةٍ كَانَتْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ لَفِيْنَا بَنِيْ هَاشِمٍ كَانَ رَجُلٌ مِنْ بَنِيْ هَاشِمٍ اسْتَأْجَرَهُ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ مِنْ فَخِذٍ أُخْرَى فَانْطَلَقَ مَعَهُ فِيْ إِبِلِهِ فَمَرَّ رَجُلٌ بِهِ مِنْ بَنِيْ هَاشِمٍ قَدْ انْقَطَعَتْ عُرْوَةُ جُوَالِقِهِ فَقَالَ أَغِثْنِيْ بِعِقَالٍ أَشُدُّ بِهِ عُرْوَةَ جُوَالِقِيْ لَا تَنْفِرُ الْإِبِلُ فَأَعْطَاهُ عِقَالًا فَشَدَّ بِهِ عُرْوَةَ جُوَالِقِهِ فَلَمَّا نَزَلُوْا عُقِلَتْ الْإِبِلُ إِلَّا بَعِيْرًا وَاحِدًا فَقَالَ الَّذِيْ اسْتَأْجَرَهُ مَا شَأْنُ هَذَا الْبَعِيْرِ لَمْ يُعْقَلْ مِنْ بَيْنِ الْإِبِلِ قَالَ لَيْسَ لَهُ عِقَالٌ قَالَ فَأَيْنَ عِقَالُهُ قَالَ فَحَذَفَهُ بِعَصًا كَانَ فِيْهَا أَجَلُهُ فَمَرَّ بِهِ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْيَمَنِ فَقَالَ أَتَشْهَدُ الْمَوْسِمَ قَالَ مَا أَشْهَدُ وَرُبَّمَا شَهِدْتُهُ قَالَ هَلْ أَنْتَ مُبْلِغٌ عَنِّيْ رِسَالَةً مَرَّةً مِنْ الدَّهْرِ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَكَتَبَ إِذَا أَنْتَ شَهِدْتَ الْمَوْسِمَ فَنَادِ يَا آلَ قُرَيْشٍ فَإِذَا أَجَابُوكَ فَنَادِ يَا آلَ بَنِيْ هَاشِمٍ فَإِنْ أَجَابُوكَ فَسَلْ عَنْ أَبِيْ طَالِبٍ فَأَخْبِرْهُ أَنَّ فُلَانًا قَتَلَنِيْ فِيْ عِقَالٍ وَمَاتَ الْمُسْتَأْجَرُ فَلَمَّا قَدِمَ الَّذِيْ اسْتَأْجَرَهُ أَتَاهُ أَبُوْ طَالِبٍ فَقَالَ مَا فَعَلَ صَاحِبُنَا قَالَ مَرِضَ فَأَحْسَنْتُ الْقِيَامَ عَلَيْهِ فَوَلِيْتُ دَفْنَهُ قَالَ قَدْ كَانَ أَهْلَ ذَاكَ مِنْكَ فَمَكُثَ حِيْنًا ثُمَّ إِنَّ الرَّجُلَ الَّذِيْ أَوْصَى إِلَيْهِ أَنْ يُبْلِغَ عَنْهُ وَافَى الْمَوْسِمَ فَقَالَ يَا آلَ قُرَيْشٍ قَالُوْا هَذِهِ قُرَيْشٌ قَالَ يَا آلَ بَنِيْ هَاشِمٍ قَالُوْا هَذِهِ بَنُوْ هَاشِمٍ قَالَ أَيْنَ أَبُوْ طَالِبٍ قَالُوْا هَذَا أَبُوْ طَالِبٍ قَالَ أَمَرَنِيْ فُلَانٌ أَنْ أُبْلِغَكَ رِسَالَةً أَنَّ فُلَانًا قَتَلَهُ فِيْ عِقَالٍ فَأَتَاهُ أَبُوْ طَالِبٍ فَقَالَ لَهُ اخْتَرْ مِنَّا إِحْدَى ثَلَاثٍ إِنْ شِئْتَ أَنْ تُؤَدِّيَ مِائَةً مِنْ الْإِبِلِ فَإِنَّكَ قَتَلْتَ صَاحِبَنَا وَإِنْ شِئْتَ حَلَفَ خَمْسُوْنَ مِنْ قَوْمِكَ إِنَّكَ لَمْ تَقْتُلْهُ فَإِنْ أَبَيْتَ قَتَلْنَاكَ بِهِ فَأَتَى قَوْمَهُ فَقَالُوْا نَحْلِفُ فَأَتَتْهُ امْرَأَةٌ مِنْ بَنِيْ هَاشِمٍ كَانَتْ تَحْتَ رَجُلٍ مِنْهُمْ قَدْ وَلَدَتْ لَهُ فَقَالَتْ يَا أَبَا طَالِبٍ أُحِبُّ أَنْ تُجِيْزَ ابْنِيْ هَذَا بِرَجُلٍ مِنْ الْخَمْسِيْنَ وَلَا تُصْبِرْ يَمِيْنَهُ حَيْثُ تُصْبَرُ الأَيْمَانُ فَفَعَلَ فَأَتَاهُ رَجُلٌ مِنْهُمْ فَقَالَ يَا أَبَا طَالِبٍ أَرَدْتَ خَمْسِيْنَ رَجُلًا أَنْ يَحْلِفُوْا مَكَانَ مِائَةٍ مِنْ الْإِبِلِ يُصِيْبُ كُلَّ رَجُلٍ بَعِيْرَانِ هَذَانِ بَعِيْرَانِ فَاقْبَلْهُمَا عَنِّيْ وَلَا تُصْبِرْ يَمِيْنِيْ حَيْثُ تُصْبَرُ الأَيْمَانُ فَقَبِلَهُمَا وَجَاءَ ثَمَانِيَةٌ وَأَرْبَعُوْنَ فَحَلَفُوْا قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَوَالَّذِيْ نَفْسِيْ بِيَدِهِ مَا حَالَ الْحَوْلُ وَمِنْ الثَّمَانِيَةِ وَأَرْبَعِيْنَ عَيْنٌ تَطْرِفُ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সর্বপ্রথম কাসামাহ হত্যাকারী গোত্রের লোকের (শপথ গ্রহণ) জাহিলী যুগে অনুষ্ঠিত হয় আমাদের হাশেম গোত্রে। কুরাইশের কোন একটি শাখা গোত্রের একজন লোক বনু হাশিমের একজন মানুষকে মজুর হিসাবে নিয়োগ করল। ঐ মজুর তার সাথে উটগুলির নিকট গমন করল। ঘটনাক্রমে বনু হাশিমের অপর এক ব্যক্তি তাদের নিকট দিয়ে যাচ্ছিল। তাদের নিকটবর্তী হওয়ার পর খাদ্যপূর্ণ বস্তার বাঁধন ছিড়ে গেল। তখন সে মজুর ব্যক্তিটিকে বলল, আমাকে একটি রশি দিয়ে সাহায্য কর, যেন আমার বস্তার মুখ বাঁধতে পারি এবং উটটিও যেন পালিয়ে যেতে না পারে। মজুর তাকে একটি রশি দিল। ঐ ব্যক্তি তার বস্তার মুখ বেঁধে নিল। যখন তারা অবতরণ করল তখন একটি ছাড়া সকল উট বেঁধে রাখা হল। মজুর নিয়োগকারী মজুরকে জিজ্ঞেস করল, সকল উট বাঁধা কিন্তু এ উটটি বাঁধা হল না কেন? মজুর উত্তরে বলল, এ উটটি বাঁধার কোন রশি নেই। তখন সে বলল, এই উটটির রশি কোথায়? রাবী বলেন, এ কথা শুনে মালিক মজুরকে লাঠি দিয়ে এমনভাবে আঘাত করল যে শেষ পর্যন্ত এ আঘাতেই তার মৃত্যু হল। আহত মজুরটি যখন মুমূর্ষ অবস্থায় মৃত্যুর প্রহর গুণছিল, তখন ইয়ামানের একজন লোক তার নিকট দিয়ে যাচ্ছিল। আহত মজুর তাকে জিজ্ঞেস করল, আপনি কি এবার হাজ্জে যাবেন? সে বলল, না, তবে অনেকবার গিয়েছি। আহত মজুরটি বলল, আপনি কি আমার সংবাদটি আপনার জীবনে যে কোন সময় পৌছে দিতে পারেন? ইয়ামানী লোকটি উত্তরে বলল, হাঁ তা পারব। তারপর মজুরটি বলল, আপনি যখন হজ্জ উপলক্ষে মক্কায় উপস্থিত হবেন তখন হে কুরাইশের লোকজন বলে ঘোষণা দিবেন। যখন তারা আপনার ডাকে সাড়া দিবে, তখন আপনি বনু হাশিম গোত্রকে ডাক দিবেন, যদি তারা আপনার ডাকে সাড়া দেয়, তবে আপনি তাদেরকে আবূ তালিব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন এবং তাকে পেলে জানিয়ে দিবেন যে, অমুক ব্যক্তি একটি রশির কারণে আমাকে হত্যা করেছে। কিছুক্ষণ পর আহত মজুরটি মৃত্যু হল। মজুর নিয়োগকারী যখন মক্কায় ফিরে এল তখন আবূ তালিব তার নিকট গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন আমাদের ভাইটি কোথায়? তার কি হয়েছে? এখনও ফিরছে না কেন? সে বলল, আপনার ভাই হঠাৎ ভীষণ রোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত মারা গেছে। আমি যথাসাধ্য সেবা শুশ্রূষা করেছি। মারা যাওয়ার পর আমি তাকে যথারীতি সমাহিত করেছি। আবূ তালিব বললেন, তুমি এরূপ করবে আমরা এ আশাই পোষণ করি। এভাবে কিছুদিন কেটে গেল। তারপর ঐ ইয়ামানী ব্যক্তি যাকে সংবাদ পৌছে দেয়ার জন্য মজুর ব্যক্তিটি অসিয়াত করেছিল, হজ্জব্রত পালনে মক্কায় উপস্থিত হল এবং ‘হে কুরাইশগণ’ বলে ডাক দিল। তখন তাকে বলা হল, এই যে, কুরাইশ। সে আবার বলল, হে বনু হাশিম, বলা হল; এই যে, বনু হাশিম। সে জিজ্ঞেস করল, আবূ তালিব কোথায়? লোকজন আবূ তালিবকে দেখিয়ে দিল। তখন ইয়ামানী লোকটি বলল, আপনাদের অমুক ব্যক্তি আপনার নিকট এ সংবাদটি পৌছে দেয়ার জন্য আমাকে অসিয়াত করেছিল যে অমুক ব্যক্তি মাত্র একটি রশির কারণে তাকে হত্যা করেছে। এ কথা শুনে আবূ তালিব মজুর নিয়োগকারী ব্যক্তির নিকট গমন করে বলল; (তুমি আমাদের ভাইকে হত্যা করেছ) কাজেই আমদের তিনটি প্রস্তাবের যে কোন একটি তোমাকে মেনে নিতে হবে। তুমি হয়ত হত্যার বিনিময়ে একশ’ উট দিবে অথবা তোমার গোত্রের বিশ্বাসযোগ্য পঞ্চাশ জন লোক হলফ করে বলবে যে তুমি তাকে হত্যা করনি। যদি তুমি এও করতে অস্বীকার কর তবে আমরা তোমাকে হত্যার বিনিময়ে হত্যা করব। তখন হত্যাকরী ব্যক্তিটি নিজ গোত্রীয় লোকদের নিকট গমন করে ঘটনা বর্ণনা করল। ঘটনা শুনে তারা বলল, আমরা হলফ করে বলব। তখন বনু হাশিম গোত্রের এক মহিলা যার বিবাহ হত্যাকারীর গোত্রে হয়েছিল এবং তার একটি সন্তানও হয়েছিল, আবূ তালিবের নিকট এসে বলল, হে আবূ তালিব, আমি এ আশা নিয়ে এসেছি যে, আপনি পঞ্চাশ জন হলফকারী হতে আমার এ সন্তানটিকে রেহাই দিবেন এবং ঐ স্থানে তার হলফ নিবেন না যে স্থানে হলফ নেয়া হয়। আবূ তালিব তার আবদারটি মনজুর করলেন। তারপর হত্যাকারীর গোত্রের এক পুরুষ আবূ তালিবের নিকট এসে বলল, হে আবূ তালিব, আপনি একশ’ উটের পরিবর্তে পঞ্চাশ জনের হলফ নিতে চাচ্ছেন, এ হিসাব অনুযায়ী প্রতিটি হলফকারীর উপর দু’টি উট পড়ে। আমার দু’টি উট গ্রহণ করুন এবং যেখানে হলফ করার জন্য দাঁড় করানো হয় সেখানে দাঁড় করানো হতে আমাকে অব্যাহতি দেন। অপর আট চল্লিশজন এসে যথাস্থানে হলফ করল। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম, হলফ করার পর একটি বছর অতিবাহিত হওয়ার পূর্বেই ঐ আটচল্লিশ জনের একজনও বেঁচে ছিল না।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৫৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬৪)

৩৮৪৬
حَدَّثَنِيْ عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ يَوْمُ بُعَاثٍ يَوْمًا قَدَّمَهُ اللهُ لِرَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم فَقَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ افْتَرَقَ مَلَؤُهُمْ وَقُتِّلَتْ سَرَوَاتُهُمْ وَجُرِّحُوْا قَدَّمَهُ اللهُ لِرَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ دُخُوْلِهِمْ فِي الْإِسْلَامِ وَقَالَ ابْنُ وَهْبٍ أَخْبَرَنَا عَمْرٌو عَنْ بُكَيْرِ بْنِ الأَشَجِّ أَنَّ كُرَيْبًا مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ حَدَّثَهُ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَيْسَ السَّعْيُ بِبَطْنِ الْوَادِيْ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ سُنَّةً إِنَّمَا كَانَ أَهْلُ الْجَاهِلِيَّةِ يَسْعَوْنَهَا وَيَقُوْلُوْنَ لَا نُجِيْزُ الْبَطْحَاءَ إِلَّا شَدًّا

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বু’আস যুদ্ধ এমন একটি যুদ্ধ ছিল যা আল্লাহ্‌ তা’আলা তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর অনুকূলে হিজরতের পূর্বেই সংঘটিত করেছিলেন। এ যুদ্ধের কারণে তারা বিভিন্ন দলে উপদলে বিভক্ত হয়েছিল এবং এদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এই যুদ্ধে নিহত ও আহত হয়েছিল। আল্লাহ্‌ তা’আলা এ যুদ্ধ ঘটিয়ে ছিলেন এ কারণে যেন তারা ইসলাম গ্রহণ করে নেয়।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৬০ শেষাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬৫ শেষাংশ)

৩৮৪৭
حَدَّثَنِيْ عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ يَوْمُ بُعَاثٍ يَوْمًا قَدَّمَهُ اللهُ لِرَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم فَقَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ وَقَدْ افْتَرَقَ مَلَؤُهُمْ وَقُتِّلَتْ سَرَوَاتُهُمْ وَجُرِّحُوْا قَدَّمَهُ اللهُ لِرَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ دُخُوْلِهِمْ فِي الْإِسْلَامِ وَقَالَ ابْنُ وَهْبٍ أَخْبَرَنَا عَمْرٌو عَنْ بُكَيْرِ بْنِ الأَشَجِّ أَنَّ كُرَيْبًا مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ حَدَّثَهُ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَيْسَ السَّعْيُ بِبَطْنِ الْوَادِيْ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ سُنَّةً إِنَّمَا كَانَ أَهْلُ الْجَاهِلِيَّةِ يَسْعَوْنَهَا وَيَقُوْلُوْنَ لَا نُجِيْزُ الْبَطْحَاءَ إِلَّا شَدًّا

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, সাফা ও মারওয়ার মধ্যে অবস্থিত বাতনে ওয়াদী নামক স্থানে সাঈ (দৌড়ান) করা সুন্নাত নয়। ‎জাহিলী যুগের লোকেরাই কেবল সেখানে সাঈ করত এবং বলত, আমরা বাতহা নামক জায়গাটি তাড়াতাড়ি দৌড়ে পার ‎হব।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৬০ শেষাংশ, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬৫ শেষাংশ)

৩৮৪৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْجُعْفِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ أَخْبَرَنَا مُطَرِّفٌ سَمِعْتُ أَبَا السَّفَرِ يَقُوْلُ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ يَا أَيُّهَا النَّاسُ اسْمَعُوْا مِنِّيْ مَا أَقُوْلُ لَكُمْ وَأَسْمِعُونِيْ مَا تَقُوْلُوْنَ وَلَا تَذْهَبُوْا فَتَقُوْلُوْا قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ مَنْ طَافَ بِالْبَيْتِ فَلْيَطُفْ مِنْ وَرَاءِ الْحِجْرِ وَلَا تَقُوْلُوْا الْحَطِيْمُ فَإِنَّ الرَّجُلَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ كَانَ يَحْلِفُ فَيُلْقِيْ سَوْطَهُ أَوْ نَعْلَهُ أَوْ قَوْسَهُ

আবুস্‌ সাফার (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবুস্‌ সাফার (রহঃ) বলেন, আমি ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) – কে এ কথা বলতে শুনেছি, হে লোকেরা! আমি যা বলছি তা মনোযোগ দিয়ে শোন এবং তোমরা যা বলতে চাও তাও আমকে শুনাও এবং এমন যেন না হয় যে তোমরা এখান হতে চলে গিয়ে বলবে ইব্‌নু ‘আব্বাস এমন বলেছেন। যে ব্যক্তি বাইতুল্লাহ শরীফের তাওয়াফ করতে ইচ্ছা করে সে যেন হিজর এর বাহির হতে তাওয়াফ করে এবং এ জায়গাকে হাতীম বলবে না কারণ, জাহিলী যুগে কোন লোক এ জায়গাটিতে তার চাবুক, জুতা, তীর, ধনু ইত্যাদি নিক্ষেপ করে হলফ করত।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৬১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬৬)

৩৮৪৯
حَدَّثَنَا نُعَيْمُ بْنُ حَمَّادٍ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ عَنْ حُصَيْنٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُونٍ قَالَ رَأَيْتُ فِي الْجَاهِلِيَّةِ قِرْدَةً اجْتَمَعَ عَلَيْهَا قِرَدَةٌ قَدْ زَنَتْ فَرَجَمُوْهَا فَرَجَمْتُهَا مَعَهُمْ

আমর ইব্‌নু মাইমূন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি জাহিলীয়্যাতের যুগে দেখেছি, একটি বানরী ব্যাভিচার করার কারণে অনেকগুলো বানর একত্র হয়ে প্রস্তর নিক্ষেপে তাকে হত্যা করল। আমিও তাদের সাথে প্রস্তর নিক্ষেপ করলাম।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৬২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬৭)

৩৮৫০
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ سَمِعَ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ خِلَالٌ مِنْ خِلَالِ الْجَاهِلِيَّةِ الطَّعْنُ فِي الأَنْسَابِ وَالنِّيَاحَةُ وَنَسِيَ الثَّالِثَةَ قَالَ سُفْيَانُ وَيَقُوْلُوْنَ إِنَّهَا الِاسْتِسْقَاءُ بِالأَنْوَاءِ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জাহিলী যুগের কাজের মধ্যে একটি হলঃ কারো বংশ-কুল নিয়ে খুঁটা দেয়া, কারো মৃত্যুতে বিলাপ করা। তৃতীয়টি (বারী ‘উবাইদুল্লাহ) ভুলে গেছেন। তবে সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, তৃতীয় কাজটি হল, তারকার সাহায্যে বৃষ্টি চাওয়া।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৫৬৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৫৬৮)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]