সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আনসারগণের মর্যাদা অধ্যায় ৩য় ভাগ হাদিস নং ৩৯২৪ – ৩৯৪৮

৬৩/৪৬. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহাবীবর্গের মদীনা উপস্থিতি

৩৯২৪
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ أَنْبَأَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ سَمِعَ الْبَرَاءَ قَالَ أَوَّلُ مَنْ قَدِمَ عَلَيْنَا مُصْعَبُ بْنُ عُمَيْرٍ وَابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ ثُمَّ قَدِمَ عَلَيْنَا عَمَّارُ بْنُ يَاسِرٍ وَبِلَالٌ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمْ

বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সর্বাগ্রে আমাদের মধ্যে মদীনায় আগমন করেন মুস’আব ইব্‌নু উমায়ের ও ইব্‌নু উম্মু মাকতুম (রাঃ)। অতঃপর আমাদের কাছে আসেন আম্মার ইব্‌নু ইয়াসির ও বিলাল (রাঃ)।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৩৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৩৭)

৩৯২৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَوَّلُ مَنْ قَدِمَ عَلَيْنَا مُصْعَبُ بْنُ عُمَيْرٍ وَابْنُ أُمِّ مَكْتُومٍ وَكَانَا يُقْرِئَانِ النَّاسَ فَقَدِمَ بِلَالٌ وَسَعْدٌ وَعَمَّارُ بْنُ يَاسِرٍ ثُمَّ قَدِمَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فِيْ عِشْرِيْنَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَمَا رَأَيْتُ أَهْلَ الْمَدِيْنَةِ فَرِحُوْا بِشَيْءٍ فَرَحَهُمْ بِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى جَعَلَ الْإِمَاءُ يَقُلْنَ قَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَمَا قَدِمَ حَتَّى قَرَأْتُ سَبِّحْ اسْمَ رَبِّكَ الأَعْلَى فِيْ سُوَرٍ مِنْ الْمُفَصَّلِ

বারা’ ইব্‌নু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সর্বাগ্রে আমাদের মধ্যে মদীনায় আসলেন মুস’আব ইব্‌নু উমায়ের এবং ইব্‌নু উম্মু মাকতুম। তারা লোকদের কুরআন পড়াতেন। তারপর আসলেন, বিলাল, সা’দ ও আম্মার ইব্‌নু ইয়াসির (রাঃ) এরপর ‘উমার ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর বিশজন সাহাবীসহ মদীনায় আসলেন। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আগমন করলেন। তাঁর আগমনে মদীনাবাসী যতখানি আনন্দিত হয়েছিল ততখানি আনন্দিত হতে কখনো দেখিনি। এমনকি দাসীগনও বলছিল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শুভাগমন করেছেন। বারা (রাঃ) বলেন, তাঁর আগমনের পূর্বেই মুফাস্‌সালের [২] কয়েকটি সূরাহসহ আমি (আরবী) সূরাহ পর্যন্ত পড়ে ফেলেছিলাম।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৩৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৩৮)


[২] কুরআন মাজীদের শেষ অংশের সূরাহ সমূহকে মুফাস্‌সাল বলা হয়, কেননা তাতে প্রতিটি সূরাহ এর মধ্যে ছোট ছোট ধারায় বিভিন্ন বিষয়ের বর্ননা করা হয়েছে। আর মুফাস্‌সালের শুরু হচ্ছেঃ সূরাহ আল হুজরাত। অতঃপর মুফাস্‌সালকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছেঃ (১) তিওয়ালু মুফাস্‌সালঃ আল হুজরাত হতে আল বুরুজ পর্যন্ত। (২) ওয়াসাতু মুফাসসালঃ আল বুরুজ হতে আল্‌ বাইয়্যিনাহ পর্যন্ত। (৩) ক্বিসারু মুফাসসালঃ আল বাইয়্যিনাহ হতে আল ফুরকানের শেষ পর্যন্ত। (সূত্রঃ ইতহাফুল কিয়াম-তা’লীক-বুলিগুল মারাম ৮৫ পৃষ্ঠা)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩৯২৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّهَا قَالَتْ لَمَّا قَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِيْنَةَ وُعِكَ أَبُوْ بَكْرٍ وَبِلَالٌ قَالَتْ فَدَخَلْتُ عَلَيْهِمَا فَقُلْتُ يَا أَبَتِ كَيْفَ تَجِدُكَ وَيَا بِلَالُ كَيْفَ تَجِدُكَ قَالَتْ فَكَانَ أَبُوْ بَكْرٍ إِذَا أَخَذَتْهُ الْحُمَّى يَقُوْلُ :

كُلُّ امْرِئٍ مُصَبَّحٌ فِيْ أَهْلِهِ وَالْمَوْتُ أَدْنَى مِنْ شِرَاكِ نَعْلِهِ

وَكَانَ بِلَالٌ إِذَا أَقْلَعَ عَنْهُ الْحُمَّى يَرْفَعُ عَقِيْرَتَهُ وَيَقُوْلُ :

أَلَا لَيْتَ شِعْرِيْ هَلْ أَبِيْتَنَّ لَيْلَـةً بِوَادٍ وَحَوْلِيْ إِذْخِرٌ وَجَـلِيْلُ

وَهَلْ أَرِدَنْ يَوْمًا مِيَاهَ مَــجَنَّةٍ وَهَلْ يَبْدُوَنْ لِيْ شَامَةٌ وَطَـفِيْلُ

قَالَتْ عَائِشَةُ فَجِئْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ اللَّهُمَّ حَبِّبْ إِلَيْنَا الْمَدِيْنَةَ كَحُبِّنَا مَكَّةَ أَوْ أَشَدَّ وَصَحِّحْهَا وَبَارِكْ لَنَا فِيْ صَاعِهَا وَمُدِّهَا وَانْقُلْ حُمَّاهَا فَاجْعَلْهَا بِالْجُحْفَةِ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনায় আসলেন, তখন আবূ বক্‌র ও বিলাল (রাঃ) ভীষন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়লেন। আমি তাদেরকে দেখতে গেলাম এবং বললাম, আব্বাজান, কেমন আছেন? হে বিলাল, আপনি কেমন আছেন? ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আবূ বকর (রাঃ) জ্বরে পড়লেই এ পংক্তিগুলি আবৃতি করতেন।

“প্রতিটি ব্যক্তিকে নিজ পরিবারে সুপ্রভাত বলা হয়

অথচ মৃত্যু তার জুতার ফিতার চাইতেও অতি নিকটে।”

আর বিলাল (রাঃ) – এর অবস্থা ছিল এই যখন তার জ্বর ছেড়ে যেত তখন কন্ঠস্বর উঁচু করে এ কবিতাটি আবৃতি করতেনঃ

“হায়, আমি যদি জানতাম আমি এ মক্কা উপত্যকায় আবার রাত্রি কাটাতে পারব কিনা

যেখানে ইয্‌খির ও জলীল ঘাস আমার চারপাশের বিরাজমান থাকত।

হায়, আর কি আমার ভাগ্যে জুটবে যে, আমি মাজান্নাহ নামক কূপের পানি পান করতে পারব! এবং শামাহ ও তাফিল পাহাড় কি আর আমার চোখে পড়বে!”

‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট গিয়ে এ সংবাদ জানালাম। তখন তিনি এ দু’আ করলেন, হে আল্লাহ্‌! মদীনাকে আমাদের প্রিয় করে দাও যেমন প্রিয় ছিল আমাদের মক্কা বরং তার থেকেও অধিক প্রিয় করে দাও। আমাদের জন্য মদীনাকে স্বাস্থ্যকর করে দাও। মদীনার সা ও মুদ এর মধ্যে বরকত দান কর। আর এখানকার জ্বরকে সরিয়ে জুহ্‌ফায় নিয়ে যাও।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৩৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৩৯)

৩৯২৭
حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّ عُبَيْدَ اللهِ بْنَ عَدِيِّ بْنِ الْخِيَارِ أَخْبَرَهُ دَخَلْتُ عَلَى عُثْمَانَ وَقَالَ بِشْرُ بْنُ شُعَيْبٍ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّ عُبَيْدَ اللهِ بْنَ عَدِيِّ بْنِ خِيَارٍ أَخْبَرَهُ قَالَ دَخَلْتُ عَلَى عُثْمَانَ فَتَشَهَّدَ ثُمَّ قَالَ أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّ اللهَ بَعَثَ مُحَمَّدًا بِالْحَقِّ وَكُنْتُ مِمَّنْ اسْتَجَابَ لِلهِ وَلِرَسُوْلِهِ وَآمَنَ بِمَا بُعِثَ بِهِ مُحَمَّدٌ ثُمَّ هَاجَرْتُ هِجْرَتَيْنِ وَنِلْتُ صِهْرَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَبَايَعْتُهُ فَوَاللهِ مَا عَصَيْتُهُ وَلَا غَشَشْتُهُ حَتَّى تَوَفَّاهُ اللهُ

تَابَعَهُ إِسْحَاقُ الْكَلْبِيُّ حَدَّثَنِي الزُّهْرِيُّ مِثْلَهُ

উবাইদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আদী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উবাইদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আদী (রহঃ) বলেন, আমি ‘উসমান (রাঃ)- এর ঘরে প্রবেশ করলাম। তিনি আমার বক্তব্য শুনার পর তাশাহ্‌হুদ পাঠের পর বললেন, আম্মা বা’দু। আল্লাহ্‌ তা’আলা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে সত্যসহ প্রেরণ করেছেন। যারা আল্লাহ্‌ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর আহ্বানে সাড়া দিয়েছিলেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে যে সত্যসহ প্রেরণ করা হয়েছিল তৎপ্রতি ঈমান এনেছিলেন আমিও তাঁদের মধ্যে ছিলাম। উভয় হিজরতে [১] অংশ নিয়েছি। আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর জামাতা হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেছি। আমি তাঁর হাতে বায়’আত করেছি, আল্লাহর শপথ আমি কখনো তাঁর নাফরমানী করিনি তাঁর সাথে প্রতারণা করিনি। এই অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। (৩৬৯৬)

ইসহাক কালবী শু’য়ায়বের অনুসরণ করে যুহরী সূত্রে এ রকমই বর্ণনা করেছেন। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৩৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৪০)


[১] উভয় হিজরত বলতে আবিসিনিয়া ও মদীনা দু’স্থানের হিজরত।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩৯২৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنِيْ ابْنُ وَهْبٍ حَدَّثَنَا مَالِكٌ وَأَخْبَرَنِيْ يُونُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ أَخْبَرَهُ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْفٍ رَجَعَ إِلَى أَهْلِهِ وَهُوَ بِمِنًى فِيْ آخِرِ حَجَّةٍ حَجَّهَا عُمَرُ فَوَجَدَنِيْ فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ فَقُلْتُ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ إِنَّ الْمَوْسِمَ يَجْمَعُ رَعَاعَ النَّاسِ وَغَوْغَاءَهُمْ وَإِنِّيْ أَرَى أَنْ تُمْهِلَ حَتَّى تَقْدَمَ الْمَدِيْنَةَ فَإِنَّهَا دَارُ الْهِجْرَةِ وَالسُّنَّةِ وَالسَّلَامَةِ وَتَخْلُصَ لِأَهْلِ الْفِقْهِ وَأَشْرَافِ النَّاسِ وَذَوِيْ رَأْيِهِمْ قَالَ عُمَرُ لَاقُومَنَّ فِيْ أَوَّلِ مَقَامٍ أَقُومُهُ بِالْمَدِيْنَةِ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, যে বছর ‘উমার (রাঃ) শেষ হাজ্জ আদায় করেন সে বছর ‘আবদুর রহমান ইব্‌নু ‘আউফ (রাঃ) মিনায় তাঁর পরিবারের কাছে ফিরে আসেন এবং সেখানে আমার সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। ‘আবদুর রহমান (রাঃ) বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন, হাজ্জ মওসুমে বুদ্ধিমান ও বুদ্ধিহীন সব রকমের মানুষ জড় হয়। তাই আমার বিবেচনায় আপনি ভাষণ দান করবেন না এবং মদীনা গিয়ে ভাষণ দান করুন। মদীনা হল দারুল হিজরত, (হিজরতের স্থান) রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সুন্নাতের পবিত্র ভূমি। সেখানে আপনি অনেক জ্ঞানী, গুণী ও বুদ্ধিদীপ্ত লোককে একত্রে পাবেন। ‘উমার (রাঃ) বললেন, মদীনায় গিয়েই প্রথমেই অবশ্যই আমার ভাষণ দিব।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৩৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৪১)

৩৯২৯
حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ عَنْ خَارِجَةَ بْنِ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ أَنَّ أُمَّ الْعَلَاءِ امْرَأَةً مِنْ نِسَائِهِمْ بَايَعَتْ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ أَنَّ عُثْمَانَ بْنَ مَظْعُونٍ طَارَ لَهُمْ فِي السُّكْنَى حِيْنَ اقْتَرَعَتْ الأَنْصَارُ عَلَى سُكْنَى الْمُهَاجِرِيْنَ قَالَتْ أُمُّ الْعَلَاءِ فَاشْتَكَى عُثْمَانُ عِنْدَنَا فَمَرَّضْتُهُ حَتَّى تُوُفِّيَ وَجَعَلْنَاهُ فِيْ أَثْوَابِهِ فَدَخَلَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْكَ أَبَا السَّائِبِ شَهَادَتِيْ عَلَيْكَ لَقَدْ أَكْرَمَكَ اللهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَمَا يُدْرِيكِ أَنَّ اللهَ أَكْرَمَهُ قَالَتْ قُلْتُ لَا أَدْرِيْ بِأَبِيْ أَنْتَ وَأُمِّيْ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَمَنْ قَالَ أَمَّا هُوَ فَقَدْ جَاءَهُ وَاللهِ الْيَقِيْنُ وَاللهِ إِنِّيْ لَارْجُوْ لَهُ الْخَيْرَ وَمَا أَدْرِيْ وَاللهِ وَأَنَا رَسُوْلُ اللَّه مَا يُفْعَلُ بِيْ قَالَتْ فَوَاللهِ لَا أُزَكِّيْ أَحَدًا بَعْدَهُ قَالَتْ فَأَحْزَنَنِيْ ذَلِكَ فَنِمْتُ فَرِيْتُ لِعُثْمَانَ بْنِ مَظْعُونٍ عَيْنًا تَجْرِيْ فَجِئْتُ رَسُوْلَ اللهِ فَأَخْبَرْتُهُ فَقَالَ ذَلِكِ عَمَلُهُ

খারিজাহ ইব্‌নু যায়দ ইব্‌নু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

খারিজাহ ইব্‌নু যায়দ ইব্‌নু সাবিত (রাঃ) বলেন, উম্মুল ‘আলা’ (রাঃ) নাম্নী এক আনসারী মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর হাতে বায়’আত করেন। তিনি বর্ণনা করেন, যখন মুহাজিরদের বাসস্থানের ব্যাপারে আনসারদের মধ্যে লটারী হয় তখন ‘উসমান ইব্‌নু মায’উনের বসবাস আমাদের অংশে পড়ল। উম্মুল ‘আলা (রাঃ) বলেন, এরপর তিনি আমাদের এখানে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমি তার সেবা শুশ্রূষা করলাম, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর মৃত্যু হয়ে গেল। আমরা কাফনের কাপড় পরিয়ে দিলাম। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের এখানে আসলেন। ঐ সময় আমি ‘উসমান (রাঃ)- কে লক্ষ্য করে বলছিলাম। হে আবূ সায়িব! তোমার উপর আল্লাহর রহমত হোক। তোমার সম্পর্কে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ্‌ নিশ্চয়ই তোমাকে সম্মানিত করেছেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কেমন করে জানলে যে, আল্লাহ্‌ তাকে সম্মানিত করেছেন? আমি বললাম, আমার মাতা-পিতা আপনার উপর কুরবান হোক। হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি তো জানি না। তবে কাকে আল্লাহ্‌ সম্মানিত করবেন? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ্‌র শপথ! ‘উসমানের মৃত্যু হয়ে গেছে। আল্লাহ্‌র কসম! আমি তার সম্পর্কে কল্যাণের আশা পোষণ করছি। আল্লাহ্‌র কসম, আমি আল্লাহ্‌র রসূল হওয়া সত্ত্বেও জানিনা আল্লাহ আমার সাথে কী ব্যবহার করবেন। উম্মুল ‘আলা’ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্‌র শপথ, আমি এ কথা শুনার পর আর কাউকে পূত-পবিত্র বলব না। উম্মুল ‘আলা’ (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর এ কথা আমাকে চিন্তিত করল। এরপর আমি স্বপ্নে দেখতে পেলাম যে, ‘উসমান ইব্‌নু মায’উন (রাঃ) – এর জন্য একটি নহর জারি রয়েছে। আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট গিয়ে আমার স্বপ্নটি বললে তিনি বললেন, এ হচ্ছে তার সৎ ‘আমাল’।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৩৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৪২)

৩৯৩০
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ يَوْمُ بُعَاثٍ يَوْمًا قَدَّمَهُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ لِرَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم فَقَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِيْنَةَ وَقَدْ افْتَرَقَ مَلَؤُهُمْ وَقُتِلَتْ سَرَاتُهُمْ فِيْ دُخُوْلِهِمْ فِي الْإِسْلَامِ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বু’আস যুদ্ধ এমন একটি যুদ্ধ ছিল যা আল্লাহ্‌ তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর পক্ষে তাঁর হিজরতের পূর্বেই সংঘটিত করিয়েছিলেন, যা তাদের ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে সহায়ক হয়েছিল। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনায় আসলেন তখন তাদের গোত্রগুলো ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে নানা দলে ভাগ হয়ে গিয়েছিল এবং তাদের অনেক নেতা নিহত হয়েছিল।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৪০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৪৩)

৩৯৩১
حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ دَخَلَ عَلَيْهَا وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عِنْدَهَا يَوْمَ فِطْرٍ أَوْ أَضْحًى وَعِنْدَهَا قَيْنَتَانِ تُغَنِّيَانِ بِمَا تَقَاذَفَتْ الأَنْصَارُ يَوْمَ بُعَاثٍ فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ مِزْمَارُ الشَّيْطَانِ مَرَّتَيْنِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم دَعْهُمَا يَا أَبَا بَكْرٍ إِنَّ لِكُلِّ قَوْمٍ عِيْدًا وَإِنَّ عِيْدَنَا هَذَا الْيَوْمُ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, আবূ বকর (রাঃ) ঈদুল ফিত্‌র অথবা ঈদুল আযহার দিনে তাঁকে দেখতে এলেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আয়িশা (রাঃ)- এর বাড়ীতে অবস্থান করছিলেন। এ সময় দু’জন অল্প বয়স্কা বালিকা এ কবিতাটি উচ্চঃস্বরে আবৃত্তি করছিল যা আনসারগণ বু’আস যুদ্ধে আবৃত্তি করেছিল। তখন আবূ বাকর (রাঃ) দু’বার বললেন, এ হল শয়তানের ঢাল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আবূ বাকর, ওদেরকে ছাড়। প্রত্যেক সম্প্রদায়েরই ‘ঈদ আছে আর আজ হল আমাদের ‘ঈদের দিন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৪১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৪৪)

৩৯৩২
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ ح و حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُوْرٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ قَالَ سَمِعْتُ أَبِيْ يُحَدِّثُ حَدَّثَنَا أَبُو التَّيَّاحِ يَزِيْدُ بْنُ حُمَيْدٍ الضُّبَعِيُّ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ قَالَ لَمَّا قَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِيْنَةَ نَزَلَ فِيْ عُلْوِ الْمَدِيْنَةِ فِيْ حَيٍّ يُقَالُ لَهُمْ بَنُوْ عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ قَالَ فَأَقَامَ فِيْهِمْ أَرْبَعَ عَشْرَةَ لَيْلَةً ثُمَّ أَرْسَلَ إِلَى مَلَا بَنِي النَّجَّارِ قَالَ فَجَاءُوْا مُتَقَلِّدِيْ سُيُوفِهِمْ قَالَ وَكَأَنِّيْ أَنْظُرُ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى رَاحِلَتِهِ وَأَبُوْ بَكْرٍ رِدْفَهُ وَمَلَا بَنِي النَّجَّارِ حَوْلَهُ حَتَّى أَلْقَى بِفِنَاءِ أَبِيْ أَيُّوْبَ قَالَ فَكَانَ يُصَلِّيْ حَيْثُ أَدْرَكَتْهُ الصَّلَاةُ وَيُصَلِّيْ فِيْ مَرَابِضِ الْغَنَمِ قَالَ ثُمَّ إِنَّهُ أَمَرَ بِبِنَاءِ الْمَسْجِدِ فَأَرْسَلَ إِلَى مَلَا بَنِي النَّجَّارِ فَجَاءُوْا فَقَالَ يَا بَنِي النَّجَّارِ ثَامِنُوْنِيْ حَائِطَكُمْ هَذَا فَقَالُوْا لَا وَاللهِ لَا نَطْلُبُ ثَمَنَهُ إِلَّا إِلَى اللهِ قَالَ فَكَانَ فِيْهِ مَا أَقُوْلُ لَكُمْ كَانَتْ فِيْهِ قُبُوْرُ الْمُشْرِكِيْنَ وَكَانَتْ فِيْهِ خِرَبٌ وَكَانَ فِيْهِ نَخْلٌ فَأَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِقُبُوْرِ الْمُشْرِكِيْنَ فَنُبِشَتْ وَبِالْخِرَبِ فَسُوِّيَتْ وَبِالنَّخْلِ فَقُطِعَ قَالَ فَصَفُّوْا النَّخْلَ قِبْلَةَ الْمَسْجِدِ قَالَ وَجَعَلُوْا عِضَادَتَيْهِ حِجَارَةً قَالَ قَالَ جَعَلُوْا يَنْقُلُوْنَ ذَاكَ الصَّخْرَ وَهُمْ يَرْتَجِزُوْنَ وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَعَهُمْ يَقُوْلُوْنَ :

اللَّهُمَّ إِنَّهُ لَا خَيْرَ إِلَّا خَيْرُ الآخِرَهْ فَانْصُرْ الأَنْصَارَ وَالْمُهَاجِرَهْ

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনায় আসলেন তখন মদীনার উঁচু এলাকার ‘আমর ইব্‌নু ‘আউফ গোত্রে অবস্থান করলেন। আনাস (রাঃ) বলেন, সেখানে তিনি চৌদ্দ দিন থাকলেন। এরপর তিনি বানু নাজ্জারের নেতৃস্থানীয় লোকদের কাছে খবর পাঠালেন। তারা সকলেই তরবারি ঝুলিয়ে হাযির হলেন। আনাস (রাঃ) বলেন, সেই দৃশ্য এখনো যেন আমি দেখতে পাচ্ছি। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সওয়ারীর উপর এবং আবূ বাকর (রাঃ) তাঁর পিছনে উপবিষ্ট রয়েছেন, আর বনু নাজ্জারের নেতাগণ রয়েছেন তাদের পার্শ্বে। অবশেষে আবূ আইউব (রাঃ)- এর বাড়ির চত্বরে তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর মালপত্র নামালেন। রাবী বলেন, ঐ সময় রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেখানেই সলাতের সময় হত সেখানেই সলাত আদায় করে নিতেন। এবং তিনি কোন কোন সময় ছাগল-ভেড়ার খোঁয়াড়েও সলাত আদায় করতেন। রাবী বলেন, তারপর তিনি মসজিদ তৈরির নির্দেশ দিলেন। তিনি বনী নাজ্জারের নেতাদের ডাকলেন এবং তারা এলে তিনি বললেন, তোমাদের এ বাগানটি আমার নিকট বিক্রি কর। তারা বলল, আল্লাহ্‌র শপথ, আমরা বিক্রি করব না। আল্লাহ শপথ-এর বিনিময় আল্লাহ্‌র নিকটই চাই। রাবী বলেন, এখানে কি ছিল, আমি তোমাদের বলছি স্থানে তখন ছিল মুশরিকদের পুরাতন কবর, বাড়ী ঘরের কিছু ভগ্নাবশেষ কয়েকটি খেজুরের গাছ। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নির্দেশে মুশরিকদের কবরগুলি মিশিয়ে দেয়া হল। ভগ্ন চিহ্ন সমতল করা হল, খেজুর গাছগুলি কেটে ফেলা হল। রাবী বলেন, কাটা খেজুর গাছের কান্ডগুলি মসজিদের কেবলার দিকে এর খুঁটি হিসেবে এক লাইনে স্থাপন করা হল এবং খুঁটির ফাঁকা স্থানে রাখা হল পাথর। তখন সাহাবাগণ পাথর বয়ে আনছিলেন এবং ছন্দ যুক্ত কবিতা আবৃত্তি করছিলেনঃ আর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন তাদের সঙ্গে ছিলেন এবং বলছিলেন,

হে আল্লাহ্‌! আসল কল্যাণ কেবলমাত্র আখিরাতের কল্যাণ।

হে আল্লাহ্‌! তুমি মুহাজির ও আনসারদের সাহায্য কর।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৪২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৪৫)

৬৩/৪৭. অধ্যায়ঃ
হাজ্জ সমাধার পর মুহাজিরগণের মক্কায় অবস্থান।

৩৯৩৩
حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ حَمْزَةَ حَدَّثَنَا حَاتِمٌ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ حُمَيْدٍ الزُّهْرِيِّ قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيْزِ يَسْأَلُ السَّائِبَ ابْنَ أُخْتِ الْنَّمِرِ مَا سَمِعْتَ فِيْ سُكْنَى مَكَّةَ قَالَ سَمِعْتُ الْعَلَاءَ بْنَ الْحَضْرَمِيِّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ثَلَاثٌ لِلْمُهَاجِرِ بَعْدَ الصَّدَرِ

উমার ইব্‌নু আবদুল ‘আযীয (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উমার ইব্‌নু আবদুল ‘আযীয (রহঃ) হতে বর্ণিত। তিনি সাইব ইব্‌নু উখতিননাম্‌র (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি মক্কায় অবস্থান ব্যাপারে কী শুনেছেন? তিনি বললেন, আমি ‘আলা ইবনুল হাযরামী (রাঃ)- এর কাছে শুনেছি, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মুহাজিরদের জন্য তাওয়াফে সদর [১] আদায় করার পর তিন দিন মক্কায় থাকার অনুমতি আছে। [২]

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৪৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৪৬)


[১] হাজ্জ কার্যসমূহ সমাপন করে মিনা হতে প্রত্যাবর্তন করার পর কাবা ঘরের যে তাওয়াফ করা হয় তাকে বুঝানো হয়েছে।

[২] মক্কা বিজয়ের পূর্বে যারা হিজরত করেছিলেন তাদের জন্য পুনরায় মক্কায় অবস্থান করা হারাম ছিল। কিন্তু যারা হাজ্জ বা ‘উমরাহ এর উদ্দেশ্যে মক্কায় আসবে তারা তাদের হাজ্জ ‘উমরাহ এর কাজ সমাধা করে মাত্র তিন দিন প্রয়োজন হলে অবস্থান করতে পারবে-তাতে নিষেধ নেই।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৩/৪৮. অধ্যায়ঃ
তারিখ, কোথা হতে তারিখ

৩৯৩৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ مَا عَدُّوْا مِنْ مَبْعَثِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَلَا مِنْ وَفَاتِهِ مَا عَدُّوْا إِلَّا مِنْ مَقْدَمِهِ الْمَدِيْنَةَ

সাহল ইব্‌নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

সাহল ইব্‌নু সা’দ (রাঃ) বর্ণনা করেন, লোকেরা বছর গণনা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নবুয়াত প্রাপ্তির দিন হতে করেনি এবং তাঁর মৃত্যুর দিন থেকেও করেনি বরং তাঁর মদীনায় হিজরত হতে বছর গণনা করা হয়েছে।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৪৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৪৭)

৩৯৩৫
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ فُرِضَتْ الصَّلَاةُ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ هَاجَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَفُرِضَتْ أَرْبَعًا وَتُرِكَتْ صَلَاةُ السَّفَرِ عَلَى الأُوْلَى تَابَعَهُ عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, প্রথম অবস্থায় দু’ দু’ রাক’আত করে সলাত ফরয করা হয়েছিল। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন হিজরত করলেন, ঐ সময় সলাত চার রাক’আত করে দেয়া হয়। এবং সফর কালে আগের অবস্থা অর্থাৎ দু’ রাক’আত বহাল রাখা হয়। আব্দুর রাজ্জাক (রহঃ) মা’মার সূত্রে রিওয়ায়াত বর্ণনায় ইয়াযীদ ইব্‌নু যরায়-এর অনুসরণ করেছেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৪৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৪৮)

৬৩/৪৯. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর উক্তি, হে আল্লাহ্! আমার সহাবাগণের হিজরতকে অটুট রাখুন এবং মক্কায় মৃত সাহাবীদের উদ্দেশ্যে শোক জ্ঞাপন।

৩৯৩৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ قَزَعَةَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ عَادَنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَامَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ مِنْ مَرَضٍ أَشْفَيْتُ مِنْهُ عَلَى الْمَوْتِ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ بَلَغَ بِيْ مِنْ الْوَجَعِ مَا تَرَى وَأَنَا ذُوْ مَالٍ وَلَا يَرِثُنِيْ إِلَّا ابْنَةٌ لِيْ وَاحِدَةٌ أَفَأَتَصَدَّقُ بِثُلُثَيْ مَالِيْ قَالَ لَا قَالَ فَأَتَصَدَّقُ بِشَطْرِهِ قَالَ الثُّلُثُ يَا سَعْدُ وَالثُّلُثُ كَثِيْرٌ إِنَّكَ أَنْ تَذَرَ ذُرِّيَّتَكَ أَغْنِيَاءَ خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَذَرَهُمْ عَالَةً يَتَكَفَّفُوْنَ النَّاسَ وَلَسْتَ بِنَافِقٍ نَفَقَةً تَبْتَغِيْ بِهَا وَجْهَ اللهِ إِلَّا آجَرَكَ اللهُ بِهَا حَتَّى اللُّقْمَةَ تَجْعَلُهَا فِيْ فِيْ امْرَأَتِكَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أُخَلَّفُ بَعْدَ أَصْحَابِيْ قَالَ إِنَّكَ لَنْ تُخَلَّفَ فَتَعْمَلَ عَمَلًا تَبْتَغِيْ بِهَا وَجْهَ اللهِ إِلَّا ازْدَدْتَ بِهِ دَرَجَةً وَرِفْعَةً وَلَعَلَّكَ تُخَلَّفُ حَتَّى يَنْتَفِعَ بِكَ أَقْوَامٌ وَيُضَرَّ بِكَ آخَرُوْنَ اللَّهُمَّ أَمْضِ لِأَصْحَابِيْ هِجْرَتَهُمْ وَلَا تَرُدَّهُمْ عَلَى أَعْقَابِهِمْ لَكِنْ الْبَائِسُ سَعْدُ بْنُ خَوْلَةَ يَرْثِيْ لَهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ تُوُفِّيَ بِمَكَّةَ وَقَالَ أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ وَمُوْسَى عَنْ إِبْرَاهِيْمَ أَنْ تَذَرَ وَرَثَتَكَ

সা’দ ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

বিদায় হাজ্জের বছর আমি ভয়ানক রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কাছাকাঠি হই তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখতে আসেন। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার রোগ কি পর্যায় পৌছেছে তা আপনি দেখতে পাচ্ছেন। আমি একজন সম্পদশালী। আমার ওয়ারিশ হচ্ছে একটি মাত্র কন্যা। আমি আমার সম্পদের দুই-তৃতীয়াংশ আল্লাহর রাস্তায় সাদকা করে দিব? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তবে কি অর্ধেক? তিনি বললেন, হে সা‘দ, এক তৃতীয়াংশ দান কর। এবং এক তৃতীয়াংশই অনেক বেশি। তুমি তোমার ছেলে-মেয়েদেরকে সম্পদশালী রেখে যাও তা-ই উত্তম, এর চেয়ে তুমি তাদেরকে নিঃস্ব রেখে গেলে যে তারা অন্যের নিকট ভিক্ষে করে। আহ্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহ.)…..ইব্রাহীম (রহ.) হতে এ কথাগুলোও বর্ণনা করেছেন। তুমি তোমার ওয়ারিশদের সম্পদশালী রেখে যাবে আর তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যা কিছু ব্যয় করবে, আল্লাহ্ তার প্রতিদান তোমাকে দেবেন। তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যে লোকমাটি তুলে দিবে এর প্রতিদানও আল্লাহ্ তোমাকে দেবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি আমার সাথী সঙ্গীদের হতে পশ্চাতে থাকব? তিনি বললেন, তুমি কক্ষণো পিছে পড়ে থাকবে না আর এ অবস্থায় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশে তুমি যে কোন নেক ‘আমাল করবে তাহলে তোমার সম্মান ও মর্যাদা আরো বৃদ্ধি হবে। সম্ভবতঃ তুমি বয়স বেশি পাবে এবং এর ফলে তোমার দ্বারা অনেক মানুষ উপকৃত এবং অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হে আল্লাহ্! আমার সাহাবীদের হিজরাতকে অটুট রাখুন। তাদেরকে পশ্চাৎমুখী করে ফিরিয়ে নিবেন না। কিন্তু অভাবগ্রস্ত সা‘দ ইবনু খাওলাহর মক্কা্য় মৃত্যুর কারণে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহ.) ও মূসা (রহ.) ইব্রাহীম সূত্রে বর্ণনা করেছেন, أَنْ تَذَرَ وَرَثَتَكَ তোমার ওয়ারিশদের রেখে যাওয়া….। (৫৬)

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৪৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৪৯)

৬৩/৫০. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিভাবে তাঁর সাহাবীদের ভিতর ভ্রাতৃবন্ধন মজবুত করলেন।

‘আবদুর রাহমান ইব্‌নু ‘আউফ (রাঃ) বলেন, আমরা যখন মদীনা এলাম তখন আমার ও সা’দ ইব্‌নু রাবী’র মধ্যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভ্রাতৃত্ব বন্ধন জুড়ে দেন এবং আবূ জুহাইফাহ (রাঃ) বলেন, সালমান ও আবূদ্ দারদা (রাঃ) – এর মধ্যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভ্রাতৃত্ব বন্ধন জুড়ে দিয়েছিলেন।

৩৯৩৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ حُمَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَدِمَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ الْمَدِيْنَةَ فَآخَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُ وَبَيْنَ سَعْدِ بْنِ الرَّبِيْعِ الأَنْصَارِيِّ فَعَرَضَ عَلَيْهِ أَنْ يُنَاصِفَهُ أَهْلَهُ وَمَالَهُ فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بَارَكَ اللهُ لَكَ فِيْ أَهْلِكَ وَمَالِكَ دُلَّنِيْ عَلَى السُّوقِ فَرَبِحَ شَيْئًا مِنْ أَقِطٍ وَسَمْنٍ فَرَآهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ أَيَّامٍ وَعَلَيْهِ وَضَرٌ مِنْ صُفْرَةٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَهْيَمْ يَا عَبْدَ الرَّحْمَنِ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ تَزَوَّجْتُ امْرَأَةً مِنْ الأَنْصَارِ قَالَ فَمَا سُقْتَ فِيْهَا فَقَالَ وَزْنَ نَوَاةٍ مِنْ ذَهَبٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَوْلِمْ وَلَوْ بِشَاةٍ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবদুর রহমান ইব্‌নু ‘আউফ (রাঃ) যখন মদীনায় আসলেন, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ও সা’দ ইব্‌নু রাবী’ আনসারী (রাঃ) – এর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন জুড়ে দিলেন। সা’দ (রাঃ) তার সম্পদ ভাগ করে অর্ধেক সম্পদ এবং দু’জন স্ত্রীর যে কোন একজন নিয়ে যাওয়ার জন্য ‘আবদুর রহমানকে অনুরোধ করলেন। তিনি উত্তরে বললেন, আল্লাহ্‌ আপনার পরিবারবর্গ ও ধন-সম্পদে বরকত দান করুন। আমাকে এখানকার বাজারের রাস্তাটি দেখিয়ে দিন। তিনি মুনাফা হিসেবে কিছু ঘি ও পনির লাভ করলেন। কিছুদিন পরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সঙ্গে তার দেখা হল। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন তার গায়ে ও কাপড়ে হলুদ রং-এর চিহ্ন দেখতে পেয়ে বললেন, হে আবদুর রাহমান, ব্যাপার কি! তিনি বললেন, আমি একজন আনসারী মহিলাকে বিয়ে করেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তাকে কি পরিমাণ মোহর দিয়েছ? তিনি বললেন, তাকে খেজুর বিচির পরিমাণ সোনা দিয়েছি। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, একটি বকরি দিয়ে হলেও ওয়ালীমাহ করে নাও।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৪৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৫০)

৬৩/৫১. অধ্যায়ঃ


৩৯৩৮
بَاب حَدَّثَنِيْ حَامِدُ بْنُ عُمَرَ عَنْ بِشْرِ بْنِ الْمُفَضَّلِ حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ حَدَّثَنَا أَنَسٌ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ سَلَامٍ بَلَغَهُ مَقْدَمُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الْمَدِيْنَةَ فَأَتَاهُ يَسْأَلُهُ عَنْ أَشْيَاءَ فَقَالَ إِنِّيْ سَائِلُكَ عَنْ ثَلَاثٍ لَا يَعْلَمُهُنَّ إِلَّا نَبِيٌّ مَا أَوَّلُ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ وَمَا أَوَّلُ طَعَامٍ يَأْكُلُهُ أَهْلُ الْجَنَّةِ وَمَا بَالُ الْوَلَدِ يَنْزِعُ إِلَى أَبِيْهِ أَوْ إِلَى أُمِّهِ قَالَ أَخْبَرَنِيْ بِهِ جِبْرِيْلُ آنِفًا قَالَ ابْنُ سَلَامٍ ذَاكَ عَدُوُّ الْيَهُوْدِ مِنْ الْمَلَائِكَةِ قَالَ أَمَّا أَوَّلُ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ فَنَارٌ تَحْشُرُهُمْ مِنْ الْمَشْرِقِ إِلَى الْمَغْرِبِ وَأَمَّا أَوَّلُ طَعَامٍ يَأْكُلُهُ أَهْلُ الْجَنَّةِ فَزِيَادَةُ كَبِدِ الْحُوْتِ وَأَمَّا الْوَلَدُ فَإِذَا سَبَقَ مَاءُ الرَّجُلِ مَاءَ الْمَرْأَةِ نَزَعَ الْوَلَدَ وَإِذَا سَبَقَ مَاءُ الْمَرْأَةِ مَاءَ الرَّجُلِ نَزَعَتْ الْوَلَدَ قَالَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّكَ رَسُوْلُ اللهِ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ الْيَهُوْدَ قَوْمٌ بُهُتٌ فَاسْأَلْهُمْ عَنِّيْ قَبْلَ أَنْ يَعْلَمُوْا بِإِسْلَامِيْ فَجَاءَتْ الْيَهُوْدُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَيُّ رَجُلٍ عَبْدُ اللهِ بْنُ سَلَامٍ فِيكُمْ قَالُوْا خَيْرُنَا وَابْنُ خَيْرِنَا وَأَفْضَلُنَا وَابْنُ أَفْضَلِنَا فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَسْلَمَ عَبْدُ اللهِ بْنُ سَلَامٍ قَالُوْا أَعَاذَهُ اللهُ مِنْ ذَلِكَ فَأَعَادَ عَلَيْهِمْ فَقَالُوْا مِثْلَ ذَلِكَ فَخَرَجَ إِلَيْهِمْ عَبْدُ اللهِ فَقَالَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلٰهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اللهِ قَالُوْا شَرُّنَا وَابْنُ شَرِّنَا وَتَنَقَّصُوْهُ قَالَ هَذَا كُنْتُ أَخَافُ يَا رَسُوْلَ اللهِ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ)-এর নিকট নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মদিনায় আসার খবর পৌঁছলে তিনি এসে তাঁকে কয়েকটি প্রশ্ন করলেন। তিনি বললেন, আমি আপনাকে তিনটি প্রশ্ন করছি। এগুলোর ঠিক উত্তর নাবী ছাড়া অন্য কেউ জানে না।

(১) কিয়ামতের সর্বপ্রথম ‘আলামত কী?

(২) জান্নাতবাসীদের সর্বপ্রথম খাদ্য কী?

(৩) কী কারণে সন্তান আকৃতিতে কখনও পিতার মত কখনো বা মায়ের মত হয়? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ বিষয়গুলি সম্পর্কে এই মাত্র জিব্রাঈল (আঃ) আমাকে জানিয়ে গেলেন। আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) একথা শুনে বললেন, তিনিই ফেরেশ্তাদের মধ্যে ইয়াহূদীদের দুশমন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,

(১) কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার সর্বপ্রথম আলামত লেলিহান অগ্নি যা মানুষকে পূর্বদিক হতে পশ্চিম দিকে ধাবিত করে নিয়ে যাবে এবং সবাইকে একত্র করবে।

(২) সর্বপ্রথম খাদ্য যা জান্নাতবাসী খাবে তা হল মাছের কলিজার বাড়তি অংশ।

(৩) যদি নারীর আগে পুরুষের বীর্যপাত ঘটে তবে সন্তান পিতার মত হয় আর যদি পুরুষের আগে নারীর বীর্যপাত ঘটে তবে সন্তান মায়ের মত হয়। ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ্ ছাড়া কোন মাবুদ নেই এবং নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসূল। হে আল্লাহর রাসূল, ইয়াহূদীগণ এমন একটি জাতি যারা অন্যের কুৎসা রটনায় খুব পটু। আমার ইসলাম গ্রহণ প্রকাশ হওয়ার পূর্বে আমার অবস্থা সম্পর্কে তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে ডাকলেন, তারা হাযির হল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের মাঝে ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম কেমন লোক? তারা বলল, তিনি আমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি এবং সর্বোত্তম ব্যক্তির সন্তান। তিনি আমাদের সবচেয়ে মর্যাদাবা/পাশান এবং সবচেয়ে মর্যাদাবা/পাশান ব্যক্তির সন্তান। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আচ্ছা বলত, যদি ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু সালাম ইসলাম কবুল করে তাহলে কেমন হবে? তোমরা তখন কি করবে? তারা বলল, আল্লাহ্ তাকে একাজ হতে রক্ষা করুন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবার এ কথাটি বললেন, তারাও আগের মত উত্তর দিল। তখন ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম বেরিয়ে আসলেন, এবং বললেন,

أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اللهِ

তা শুনে ইয়াহূদীগণ বলতে লাগল, সে আমাদের মধ্যে খারাপ লোক এবং খারাপ লোকের সন্তান। অতঃপর তারা তাকে তুচ্ছ করার উদ্দেশে আরো অনেক কথাবার্তা বলল। ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি এটাই আশংকা করেছিলাম। (৩৩২৯)

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৪৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৫১)

৩৯৩৯
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو سَمِعَ أَبَا الْمِنْهَالِ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ مُطْعِمٍ قَالَ بَاعَ شَرِيكٌ لِيْ دَرَاهِمَ فِي السُّوقِ نَسِيئَةً فَقُلْتُ سُبْحَانَ اللهِ أَيَصْلُحُ هَذَا فَقَالَ سُبْحَانَ اللهِ وَاللهِ لَقَدْ بِعْتُهَا فِي السُّوقِ فَمَا عَابَهُ أَحَدٌ فَسَأَلْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ فَقَالَ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ نَتَبَايَعُ هَذَا الْبَيْعَ فَقَالَ مَا كَانَ يَدًا بِيَدٍ فَلَيْسَ بِهِ بَأْسٌ وَمَا كَانَ نَسِيئَةً فَلَا يَصْلُحُ وَالْقَ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ فَاسْأَلْهُ فَإِنَّهُ كَانَ أَعْظَمَنَا تِجَارَةً فَسَأَلْتُ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ فَقَالَ مِثْلَهُ وَقَالَ سُفْيَانُ مَرَّةً فَقَالَ قَدِمَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمَدِيْنَةَ وَنَحْنُ نَتَبَايَعُ وَقَالَ نَسِيئَةً إِلَى الْمَوْسِمِ أَوْ الْحَجِّ

আবদুর রাহমান ইব্‌নু মুত্‌’ঈম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুর রাহমান ইব্‌নু মুত্‌’ঈম (রাঃ) বলেন, আমার ব্যবসায়ের একজন অংশীদার কিছু দিরহাম বাজারে নিয়ে বাকীতে বিক্রি করে। আমি বললাম, সুবহানাল্লাহ! এমন কেনাবেচা কি জায়িয? তিনিও বললেন, সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ্‌র শপথ, আমি তা খোলা বাজারে বিক্রি করেছি তাতে কেউ ত আপত্তি করেন নি। এরপর আমি বারা’ ইব্‌নু ‘আযিব (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনায় আসলেন তখন আমরা এরকম বাকীতে কেনাবেচা করতাম; তখন তিনি বললেন যদি নগদ হয় তবে তাতে কোন বাধা নেই। আর যদি ধারে হয় তবে জায়িয হবে না। তুমি যায়েদ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ) – এর সাথে সাক্ষাৎ করে তাকে জিজ্ঞেস করে নাও। কেননা তিনি আমাদের মধ্যে একজন বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। এরপর আমি যায়দ ইব্‌নু আরকামকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনিও এ রকমই বললেন। রাবী সুফইয়ান (রহঃ) হাদীসটি কখনও এভাবে বর্ণনা করেন “…” নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনায় আমাদের কাছে আসেন, তখন আমরা হাজ্জের মৌসুম পর্যন্ত মিয়াদে বাকীতে কেনাবেচা করতাম।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৪৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৫২)

৩৯৪০
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو سَمِعَ أَبَا الْمِنْهَالِ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ مُطْعِمٍ قَالَ بَاعَ شَرِيكٌ لِيْ دَرَاهِمَ فِي السُّوقِ نَسِيئَةً فَقُلْتُ سُبْحَانَ اللهِ أَيَصْلُحُ هَذَا فَقَالَ سُبْحَانَ اللهِ وَاللهِ لَقَدْ بِعْتُهَا فِي السُّوقِ فَمَا عَابَهُ أَحَدٌ فَسَأَلْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ فَقَالَ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَنَحْنُ نَتَبَايَعُ هَذَا الْبَيْعَ فَقَالَ مَا كَانَ يَدًا بِيَدٍ فَلَيْسَ بِهِ بَأْسٌ وَمَا كَانَ نَسِيئَةً فَلَا يَصْلُحُ وَالْقَ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ فَاسْأَلْهُ فَإِنَّهُ كَانَ أَعْظَمَنَا تِجَارَةً فَسَأَلْتُ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ فَقَالَ مِثْلَهُ وَقَالَ سُفْيَانُ مَرَّةً فَقَالَ قَدِمَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمَدِيْنَةَ وَنَحْنُ نَتَبَايَعُ وَقَالَ نَسِيئَةً إِلَى الْمَوْسِمِ أَوْ الْحَجِّ

আবদুর রাহমান ইব্‌নু মুত্‌’ঈম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুর রাহমান ইব্‌নু মুত্‌’ঈম (রাঃ) বলেন, আমার ব্যবসায়ের একজন অংশীদার কিছু দিরহাম বাজারে নিয়ে বাকীতে বিক্রি করে। আমি বললাম, সুবহানাল্লাহ! এমন কেনাবেচা কি জায়িয? তিনিও বললেন, সুবহানাল্লাহ! আল্লাহ্‌র শপথ, আমি তা খোলা বাজারে বিক্রি করেছি তাতে কেউ ত আপত্তি করেন নি। এরপর আমি বারা’ ইব্‌নু ‘আযিব (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনায় আসলেন তখন আমরা এরকম বাকীতে কেনাবেচা করতাম; তখন তিনি বললেন যদি নগদ হয় তবে তাতে কোন বাধা নেই। আর যদি ধারে হয় তবে জায়িয হবে না। তুমি যায়েদ ইব্‌নু আরকাম (রাঃ) – এর সাথে সাক্ষাৎ করে তাকে জিজ্ঞেস করে নাও। কেননা তিনি আমাদের মধ্যে একজন বড় ব্যবসায়ী ছিলেন। এরপর আমি যায়দ ইব্‌নু আরকামকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনিও এ রকমই বললেন। রাবী সুফইয়ান (রহঃ) হাদীসটি কখনও এভাবে বর্ণনা করেন “…” নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনায় আমাদের কাছে আসেন, তখন আমরা হাজ্জের মৌসুম পর্যন্ত মিয়াদে বাকীতে কেনাবেচা করতাম।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৪৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৫২)

৬৩/৫২. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর মদীনায় আগমনে তাঁর নিকট ইয়াহুদীদের উপস্থিতি।

(আরবী) অর্থ ইয়াহূদী হয়ে গেছে। (আরবী) অর্থ আমরা তাওবা করেছি। (আরবী) অর্থ তাওবাকারী।

৩৯৪১
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا قُرَّةُ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَوْ آمَنَ بِيْ عَشَرَةٌ مِنْ الْيَهُوْدِ لآمَنَ بِي الْيَهُوْدُ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, যদি আমার উপর দশজন ইয়াহূদী ঈমান আনত তবে গোটা ইয়াহূদী সম্প্রদায়ই ঈমান আনত। [১]

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৫০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৫৩)


[১] উক্ত হাদীসে দু’প্রকার তাৎপর্য বর্ণনা করা হয়ে থাকে (১) উক্ত হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে সময়ে বলেন, সে সময় পর্যন্ত যদি দশজন ইয়াহুদী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর প্রতি ঈমান আনত তবে সমগ্র ইয়াহুদী জাতী ঈমান আনত। (২) উক্ত হাদীসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিশেষ দশজন ইয়াহুদী নেতার প্রতি ইঙ্গিত করেন যারা সকলে ঈমান আনলে তাদের প্রভাবে তাদের সম্প্রদায়ের সকলেই ঈমান আনত। কিন্তু বাস্তবে তাদের মধ্য হতে খুব অল্প সংখ্যক ঈমান এনেছিল। তন্মধ্যে প্রসিদ্ধ ও উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি হচ্ছেনঃ ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু সালাম। (ফাতহুল বারী ৭ম খণ্ড ৩৫০ পৃষ্ঠা)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩৯৪২
حَدَّثَنِيْ أَحْمَدُ أَوْ مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ الْغُدَانِيُّ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ أُسَامَةَ أَخْبَرَنَا أَبُوْ عُمَيْسٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى قَالَ دَخَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمَدِيْنَةَ وَإِذَا أُنَاسٌ مِنْ الْيَهُوْدِ يُعَظِّمُوْنَ عَاشُوْرَاءَ وَيَصُومُوْنَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم نَحْنُ أَحَقُّ بِصَوْمِهِ فَأَمَرَ بِصَوْمِهِ

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনায় আসলেন, তখন ইয়াহূদী সম্প্রদায়ের কিছু লোক আশুরার দিনকে খুব সম্মান করত এবং সেদিন তারা সাওম পালন করত। এতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ইয়াহূদীদের চেয়ে ঐ দিন সাওম পালন করার আমরা বেশি হকদার। তারপর তিনি সবাইকে সাওম পালন করার নির্দেশ দিলেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৫১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৫৪)

৩৯৪৩
حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ أَيُّوْبَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ بِشْرٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَمَّا قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمَدِيْنَةَ وَجَدَ الْيَهُوْدَ يَصُومُوْنَ عَاشُوْرَاءَ فَسُئِلُوْا عَنْ ذَلِكَ فَقَالُوْا هَذَا الْيَوْمُ الَّذِيْ أَظْفَرَ اللهُ فِيْهِ مُوْسَى وَبَنِيْ إِسْرَائِيْلَ عَلَى فِرْعَوْنَ وَنَحْنُ نَصُومُهُ تَعْظِيْمًا لَهُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَحْنُ أَوْلَى بِمُوْسَى مِنْكُمْ ثُمَّ أَمَرَ بِصَوْمِهِ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনায় আসেন তখন দেখতে পেলেন ইয়াহূদীরা ‘আশুরা দিবসে সাওম পালন করে। তাদেরকে সাওম পালনের কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা বলল, এদিনই আল্লাহ্‌ তা’আলা মূসা (আঃ) ও বনী ইসরাঈলকে ফিরাউনের উপর বিজয় দিয়েছিলেন। তাই আমরা ঐ দিনের সম্মানে সাওম পালন করি। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমাদের চেয়ে আমরা মূসা (আঃ)- এর বেশি নিকটবর্তী। এরপর তিনি সাওম পালনের নির্দেশ দিলেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৫২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৫৫)

৩৯৪৪
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ عَنْ يُونُسَ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَسْدِلُ شَعْرَهُ وَكَانَ الْمُشْرِكُوْنَ يَفْرُقُوْنَ رُءُوْسَهُمْ وَكَانَ أَهْلُ الْكِتَابِ يَسْدِلُوْنَ رُءُوْسَهُمْ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُحِبُّ مُوَافَقَةَ أَهْلِ الْكِتَابِ فِيْمَا لَمْ يُؤْمَرْ فِيْهِ بِشَيْءٍ ثُمَّ فَرَقَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم رَأْسَهُ

আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুলে সিঁথি না কেটে সোজা পিছনে দিতেন। আর মুশরিকরা তাদের চুলে সিঁথি কাটত। আহলে কিতাব সিঁথি কাটত না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্‌র নিকট হতে কোন নির্দেশ না আসা পর্যন্ত আহলে কিতাবের অনুকরণ পছন্দ করতেন। তারপর (ওয়াহী মোতাবেক) তাঁর মাথায় সিঁথি কাটলেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৫৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৫৬)

৩৯৪৫
حَدَّثَنِيْ زِيَادُ بْنُ أَيُّوْبَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ أَخْبَرَنَا أَبُوْ بِشْرٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ هُمْ أَهْلُ الْكِتَابِ جَزَّءُوْهُ أَجْزَاءً فَآمَنُوْا بِبَعْضِهِ وَكَفَرُوْا بِبَعْضِهِ يَعْنِيْ قَوْلَ اللهِ تَعَالَى اَلَّذِيْنَ جَعَلُوا الْقُرْاٰنَ عِضِيْنَ (الحجر : 91)

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এরাই তো সেই আহলে কিতাব যারা ভাগাভাগি করে ফেলেছে, কোন কোন বিষয়ের উপর ঈমান এনেছে আর কোন কোন বিষয়কে অস্বীকার করেছে। রাবী আল্লাহর এ বাণী বুঝাতে চেয়েছেন – “যারা কুরআনকে খণ্ড খণ্ড করেছে” (সূরাহ আল-হিজরঃ ৯১)

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৫৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৫৭)

৬৩/৫৩. অধ্যায়ঃ
সালমান ফারসী (রাঃ) – এর ইসলাম গ্রহণ।

৩৯৪৬
حَدَّثَنِي الْحَسَنُ بْنُ عُمَرَ بْنِ شَقِيْقٍ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ قَالَ أَبِيْ وَحَدَّثَنَا أَبُوْ عُثْمَانَ عَنْ سَلْمَانَ الْفَارِسِيِّ أَنَّهُ تَدَاوَلَهُ بِضْعَةَ عَشَرَ مِنْ رَبٍّ إِلَى رَبٍّ

সালমান ফারসী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি দশ জনেরও অধিক মালিকের অধীনে হাত বদল হতে থাকেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৫৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৫৮)

৩৯৪৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَوْفٍ عَنْ أَبِيْ عُثْمَانَ قَالَ سَمِعْتُ سَلْمَانَ يَقُوْلُ أَنَا مِنْ رَامَ هُرْمُزَ

আবূ ‘উসমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ ‘উসমান (রাঃ) বলেন, আমি সালমান (রাঃ) – কে বলতে শুনেছি; তিনি বলেন, আমি রাম হুরমুয এর বাসিন্দা।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৫৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৫৯)।

৩৯৪৮
حَدَّثَنِي الْحَسَنُ بْنُ مُدْرِكٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمَّادٍ أَخْبَرَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ عَنْ أَبِيْ عُثْمَانَ عَنْ سَلْمَانَ قَالَ فَتْرَةٌ بَيْنَ عِيْسَى وَمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِمَا وَسَلَّمَ سِتُّ مِائَةِ سَنَةٍ

সালমান ফারসী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

সালমান ফারসী (রাঃ) বলেন, ‘ঈসা এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর মধ্যে ছয় শত বছরের পার্থক্য ছিল।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৬৫৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৬৬০)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]