সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস মাগাযী অধ্যায় ৫ম ভাগ হাদিস নং ৪০৯৭ – ৪১২৪

৬৪/৩০. অধ্যায়ঃ
খন্দকের যুদ্ধ [৩৬]। এ যুদ্ধকে আহযাবের যুদ্ধ ও বলা হয়

মূসা ইবনু ‘উকবাহ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, এ যুদ্ধ ৪র্থ হিজরী সনের শাওয়াল মাসে হয়েছিল।

[৩৬] মুসলিমদের সামরিক তৎপরতা চালানোর ফলে জাজিরাতুল আরাবে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। চারিদিকে মুসলিমদের প্রভাব প্রতিপত্তির বিস্তার ঘটে। এ সময় ইয়াহুদীরা তাদের ঘৃন্য আচরণ, ষড়যন্ত্র, এবং বিশ্বাসঘাতকতার নানা ধরনের অবমাননা ও অসম্মানের সম্মুখীন হয়। কিন্তু তবু তাদের ‘আকল হয়নি। খায়বারে নির্বাসনের পর ইয়াহুদীরা সুযোগের অপেক্ষায় থাকে, কিন্তু উত্তরোত্তর দূর দূরান্তে ইসলামের জয়জয়কার ছড়িয়ে পড়ার ফলে ইয়াহুদীরা হিংসায় জ্বলে পুড়ে ছারখার হতে লাগল। হিজরী পঞ্চম সনের ঘটনা। যেহেতু বনু নাযীর খায়বারে নির্বাসিত হয়েও নিশ্চুপে বসে ছিল না সেহেতু তারা মুসলিমদের মুলোৎপাটনের জন্য এক সম্মলিত চেষ্টা চালাবার দৃঢ় সংকল্প করেছিল, যার মধ্যে আরবের সমস্ত গোত্র-উপগোত্রের বীর যোদ্ধা শামিল থাকে।

তারা বিশ জন নেতার উপর এই দায়িত্ব অর্পন করে যে, তারা সমস্ত গোত্রকে আক্রমণের জন্যে উত্তেজিত করবে। এই চেষ্টার ফল এই দাঁড়াল যে, হিজরী পঞ্চম সনের যুলকা‘দাহ মাসে (যাদুল মাআ‘দ, ১ম খন্ড, ৩৬৭ পৃষ্ঠা) দশ হাজার রক্ত পিপাসু সৈন্য, যাদের মধ্যে মূর্তিপূজক, ইয়াহুদী প্রভৃতি সবাই শামিল ছিল, মাদীনাহ্র উপর আক্রমণ করে। কুরআন মাজীদে এই যুদ্ধের নাম হচ্ছে আহযাবের যুদ্ধ। যুদ্ধে অংশগ্রহনকারী গোত্রগুলি হলঃ

১। কুরাইশ, বানু কিনানাহ, আহলে তিহামাহ, -সেনাপতি সুফইয়ান ইবনু র্হাব।

২। বানু ফাযারাহ-সেনাপতি উকবা ইবনু হুসায়ন।

৩। বানু মুররাহ-সেনাপতি হারিস ইবনু আওফ।

৪। বানু আশজা‘ ও আহলি নাজদ-সেনাপতি মাস‘উদ ইবনু দাখীলা।

মুসলিমরা যখন দেখলেন যে, এই সেনাবাহিনীর সাথে মুকাবালা করার শক্তি তাদের নেই তখন তারা শহরের চতুর্দিকে খন্দক খনন করলেন। দশ দশজন লোক চল্লিশ গজ করে খন্দক খনন করেছিলেন। (তবারী, ২য় খন্ড)

মুসলিমদের সংখ্যা ছিল মাত্র তিন হাজার। ইসলামী সেনাবাহিনী মাদীনাহর ভিতরেই এভাবে অবস্থান করলেন যে, সামনে ছিল খন্দক এবং পিছনে ছিল সালা (যাদুল মাআ‘দ, ৩৬৭ পৃষ্ঠা) পর্বত। আর ইয়াহুদী, বানু কুরাইযাহ-যারা মাদীনাহয় বসবাস করতো এবং যাদের চুক্তি অনুযায়ী মুসলিমদের সাথে যোগ দেয়া একান্ত যরুরী ছিল-তাদের সাথে রাত্রির অন্ধাকারে বানূ নাযীর ইয়াহুদীদের নেতা হুইয়াই ইবনু আখতাব মিলিত হলো এবং চুক্তি ভঙ্গ করার জন্যে উত্তেজিত করে নিজের দিকে ডেকে নিলো। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে বুঝাবার জন্যে নিজের কয়েকজন দলপতিকে তাদের নিকট বার বার প্রেরণ করলেন। কিন্তু তারা পরিষ্কারভাবে বরে দিলোঃ “মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে যে, আমরা তাঁর কথা মেনে চলবো? তাঁর সাথে আমাদের কোনই চুক্তি ও অঙ্গীকার নেই। (ইবনু হিশাম, ২য় খন্ড, ১৪১ পৃষ্ঠা)

এরপর বানূ কুরাইযাহ শহরের নিরাপত্তায় বাধা সৃষ্টি করল এবং মুসলিম মহিলা ও শিশুদেরকে বিপদে ফেলে দিল। সুতরাং বাধ্য হয়ে তিন হাজার মুসলিম সৈন্যের মধ্য হতেও একটি অংশকে শহরের সাধারণ নিরাপত্তা রক্ষার জন্যে পৃথক করতে হলো। বানূ কুরাইযাহ মনে করেছিল যে, যখন বাহির হতে শত্রু পক্ষের দশ হাজার বীর যোদ্ধার আক্রমণ সংঘটিত হবে এবং তারা শহরের মধ্যে বিশ্বাসঘাতকতা ছড়িয়ে দিয়ে মুসলিমদের নিরাপত্তা নষ্ট করে দিবে তখন দুনিয়ায় মুসলিমদের নাম নিশানা ও বাকী থাকবে না।

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেহেতু স্বাভাবিক যুদ্ধকে ঘৃনার চোখে দেখতেন, সেহেতু তিনি সাহাবীদের সাথে পরামর্শ করলেন যে, উৎপাদিত ফলের এক তৃতীয়াংশ প্রদানের শর্তে আক্রমনমুখী গাতফান নেতৃবর্গের সাথে সন্ধি করে নেয়া হোক। কিন্তু আনসার দল যুদ্ধকেই প্রাধান্য দিলেন। সা‘দ ইবনু মু‘আয (রাঃ) এবং সা‘দ ইবনু উবাইদাহ (রাঃ) এই প্রস্তুতি সম্পর্কে ভাষন দিতে গিয়ে বলেনঃ “যে সময় প্রদান করিনি। আর আজ যখন মহান আল্লাহ আমাদেরকে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় দান করেছেন তখন কী করে আমরা তাদেরকে আমাদের উৎপাদিত ফলের এক তৃতীয়াংশ প্রদান করতে পারি? তাদের জন্যে আমাদের কাছে তরবারি ছাড়া কিছুই নেই।” আক্রমণকারী সৈন্যদের অবরোধ এক মাস বা এক মাসের কাছাকাছি পর্যন্ত ছিল। মাঝে মাঝে দু‘একটি খন্ডযুদ্ধও সংঘটিত হয়। আমর ইবনু আবদে ওদ, যে নিজেকে এক হাজার বীর পুরুষের সমান মনে করতো, আল্লাহর সিংহ, আলীর (রাঃ) হাতে নিহত হয়।

নওফিল ইবনু আবুদিল্লাহ ইবনু মুগীরাও মুকাবালায় মারা যায়। মক্কাবাসীরা নওফিলের মৃতদেহ নেয়ার জন্যে দশ হাজার দিরহাম মুসলিমদের সামনে পেশ করে। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদেরকে বলেনঃ “মৃতদেহ দিয়ে দাও, মুল্যের প্রয়োজন নেই।” (ইবনু হিশাম।)

যখন তারা অবরুদ্ধ মুসলিমদের কোনই ক্ষতি সাধন করতে পারলো না তখন তাদের সাহস হারিয়ে গেল। পৌত্তলিকদের জোটে ভাঙ্গন ধরার পর এবং তাদের মধ্যে হতাশা ও পারস্পরিক অবিশ্বাস সৃষ্টির পর আল্লাহ তাদের উপর ঝড়ো বাতাস পাঠিয়ে দিলেন। বাতাস কাফিরদের সব কিছু তছনছ করে দিল। অবশেষে তারা ময়দান ছেড়ে পালিয়ে গেল।

৪০৯৭
يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ قَالَ أَخْبَرَنِيْ نَافِعٌ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَرَضَهُ يَوْمَ أُحُدٍ وَهُوَ ابْنُ أَرْبَعَ عَشْرَةَ سَنَةً فَلَمْ يُجِزْهُ وَعَرَضَهُ يَوْمَ الْخَنْدَقِ وَهُوَ ابْنُ خَمْسَ عَشْرَةَ سَنَةً فَأَجَازَهُ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উহূদ যুদ্ধের দিন তিনি (যুদ্ধের জন্য) নিজেকে পেশ করার পর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে অনুমতি দেননি। তখন তাঁর বয়স ছিল চৌদ্দ বছর। তবে খন্দক যুদ্ধের দিন তিনি নিজেকে পেশ করলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে অনুমতি দিলেন। তখন তাঁর বয়স পনের বছর।

[২৬৬৪] (আ.প্র. ৩৭৯১ ই.ফা. ৩৭৯৪)

৪০৯৮
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ عَنْ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْخَنْدَقِ وَهُمْ يَحْفِرُوْنَ وَنَحْنُ نَنْقُلُ التُّرَابَ عَلَى أَكْتَادِنَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم اللهُمَّ لَا عَيْشَ إِلَّا عَيْشُ الْآخِرَهْ فَاغْفِرْ لِلْمُهَاجِرِيْنَ وَالأَنْصَارِ

সাহল ইবনু সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, পরিখা খননের কাজে আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে অংশ নিয়েছিলাম। তাঁরা পরিখা খুঁড়ছিলেন আর আমরা কাঁধে মাটি বহন করছিলাম। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু‘আ করেছিলেন, হে আল্লাহ! আখিরাতের শান্তি ব্যতীত প্রকৃত কোন শান্তি নেই। আপনি মুহাজির এবং আনসারদেরকে ক্ষমা করে দিন।

[৩৭৯৭] (আ.প্র. ৩৭৯২, ই.ফা. ৩৭৯৫)

৪০৯৯
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا مُعَاوِيَةُ بْنُ عَمْرٍو حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ عَنْ حُمَيْدٍ سَمِعْتُ أَنَسًا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى الْخَنْدَقِ فَإِذَا الْمُهَاجِرُوْنَ وَالأَنْصَارُ يَحْفِرُوْنَ فِيْ غَدَاةٍ بَارِدَةٍ فَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ عَبِيْدٌ يَعْمَلُوْنَ ذَلِكَ لَهُمْ فَلَمَّا رَأَى مَا بِهِمْ مِنْ النَّصَبِ وَالْجُوْعِ قَالَ اللَّهُمَّ إِنَّ الْعَيْشَ عَيْشُ الْآخِرَهْ فَاغْفِرْ لِلْأَنْصَارِ وَالْمُهَاجِرَهْ

فَقَالُوْا مُجِيْبِيْنَ لَهُ :

نَحْنُ الَّذِيْنَ بَايَـعُوْا مُحَـمَّـدَا عَـلَى الْجِـهَـادِ مَـا بـَقِيْنَا أَبَـدَا

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হয়ে পরিখা খননের স্থানে উপস্থিত হন। আনসার ও মুহাজিরগণ একদিন ভোরে তীব্র শীতের মধ্যে পরিখা খনন করেছিলেন। তাদের কোন গোলাম বা ক্রীতদাস ছিল না যে, তারা তাদেরকে এ কাজে নিয়োগ করবেন। ঠিক এমনি সময়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের মাঝে উপস্থিত হলেন। তাদের অনাহার ক্লিষ্টতা ও কষ্ট দেখে তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আখিরাতের সুখ শান্তিই প্রকৃত সুখ শান্তি। তুমি আনসার ও মুহাজিরদেরকে ক্ষমা করে দাও। সাহাবীগন এর উত্তরে বললেন-

“আমরা সে সব লোক, যারা মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাতে বাই‘আত গ্রহন করেছি,

যতদিন আমরা জীবিত থাকি জিহাদের জন্য।”

[২৮৩৪] (আ.প্র. ৩৭৯৩, ই.ফা. ৩৭৯৬)

৪১০০
أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيْزِ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ جَعَلَ الْمُهَاجِرُوْنَ وَالأَنْصَارُ يَحْفِرُوْنَ الْخَنْدَقَ حَوْلَ الْمَدِيْنَةِ وَيَنْقُلُوْنَ التُّرَابَ عَلَى مُتُوْنِهِمْ وَهُمْ يَقُوْلُوْنَ:

نَحْنُ الَّذِيْنَ بَايَـعُوْا مُحَـمّـَدَا عَـلَى الإِسْـلَامِ مَـا بـَقِيْنَا أَبَـدَا.

قَالَ يَقُوْلُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يُجِيْبُهُمْ اللهُمَّ إِنَّهُ لَا خَيْرَ إِلَّا خَيْرُ الْآخِرَهْ فَبَارِكْ فِي الْأَنْصَارِ وَالْمُهَاجِرَهْ قَالَ يُؤْتَوْنَ بِمِلْءِ كَفِّيْ مِنْ الشَّعِيْرِ فَيُصْنَعُ لَهُمْ بِإِهَالَةٍ سَنِخَةٍ تُوْضَعُ بَيْنَ يَدَيْ الْقَوْمِ وَالْقَوْمُ جِيَاعٌ وَهِيَ بَشِعَةٌ فِي الْحَلْقِ وَلَهَا رِيْحٌ مُنْتِن

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আনসার ও মুহাজিরগণ মদীনার চারপাশে খাল খনন করছিলেণ আর পিঠে মাটি বহন করছিলেন। আর (খুশিতে) আবৃত্তি করছিলেন-

“আমরা সে সব লোক, যারা মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাতে বাই‘আত গ্রহন করেছি,

যতদিন আমরা জীবিত থাকি জিহাদের জন্য।”

বর্ণনাকারী বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের এ কথার উত্তরে বলতেন, হে আল্লাহ! আখিরাতের কল্যাণ ব্যতীত আর কোন কল্যাণ নেই, তাই আনসার ও মুহাজিরদের কাজে বারাকাত দান করুন।

বর্ণনাকারী [আনাস (রাঃ)] বর্ণনা করছেন যে, তাদেরকে এক মুষ্টি ভরে যব দেয়া হত। তা বাসি, স্বাদবিকৃত চর্বিতে মিশিয়ে খাবার রান্না করে ক্ষুধার্ত লোকগুলোর সামনে পরিবেশন করা হত। যদিও এ খাদ্য ছিল একেবারে স্বাদহীন ও ভীষন দুর্গন্ধময়।

[২৮৩৪] (আ.প্র. ৩৭৯৪, ই.ফা. ৩৭৯৭)

৪১০১
خَلَّادُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ أَيْمَنَ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ أَتَيْتُ جَابِرًا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ فَقَالَ إِنَّا يَوْمَ الْخَنْدَقِ نَحْفِرُ فَعَرَضَتْ كُدْيَةٌ شَدِيْدَةٌ فَجَاءُوا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوْا هَذِهِ كُدْيَةٌ عَرَضَتْ فِي الْخَنْدَقِ فَقَالَ أَنَا نَازِلٌ ثُمَّ قَامَ وَبَطْنُهُ مَعْصُوْبٌ بِحَجَرٍ وَلَبِثْنَا ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ لَا نَذُوْقُ ذَوَاقًا فَأَخَذَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمِعْوَلَ فَضَرَبَ فَعَادَ كَثِيْبًا أَهْيَلَ أَوْ أَهْيَمَ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ ائْذَنْ لِيْ إِلَى الْبَيْتِ فَقُلْتُ لِامْرَأَتِيْ رَأَيْتُ بِالنَّبِيِّ شَيْئًا مَا كَانَ فِيْ ذَلِكَ صَبْرٌ فَعِنْدَكِ شَيْءٌ قَالَتْ عِنْدِيْ شَعِيْرٌ وَعَنَاقٌ فَذَبَحَتْ الْعَنَاقَ وَطَحَنَتْ الشَّعِيْرَ حَتَّى جَعَلْنَا اللَّحْمَ فِي الْبُرْمَةِ ثُمَّ جِئْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَالْعَجِيْنُ قَدْ انْكَسَرَ وَالْبُرْمَةُ بَيْنَ الْأَثَافِيِّ قَدْ كَادَتْ أَنْ تَنْضَجَ فَقُلْتُ طُعَيِّمٌ لِيْ فَقُمْ أَنْتَ يَا رَسُوْلَ اللهِ وَرَجُلٌ أَوْ رَجُلَانِ قَالَ كَمْ هُوَ فَذَكَرْتُ لَهُ قَالَ كَثِيْرٌ طَيِّبٌ قَالَ قُلْ لَهَا لَا تَنْزِعُ الْبُرْمَةَ وَلَا الْخُبْزَ مِنْ التَّنُّوْرِ حَتَّى آتِيَ فَقَالَ قُوْمُوْا فَقَامَ الْمُهَاجِرُوْنَ وَالأَنْصَارُ فَلَمَّا دَخَلَ عَلَى امْرَأَتِهِ قَالَ وَيْحَكِ جَاءَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِالْمُهَاجِرِيْنَ وَالأَنْصَارِ وَمَنْ مَعَهُمْ قَالَتْ هَلْ سَأَلَكَ قُلْتُ نَعَمْ فَقَالَ ادْخُلُوْا وَلَا تَضَاغَطُوْا فَجَعَلَ يَكْسِرُ الْخُبْزَ وَيَجْعَلُ عَلَيْهِ اللَّحْمَ وَيُخَمِّرُ الْبُرْمَةَ وَالتَّنُّوْرَ إِذَا أَخَذَ مِنْهُ وَيُقَرِّبُ إِلَى أَصْحَابِهِ ثُمَّ يَنْزِعُ فَلَمْ يَزَلْ يَكْسِرُ الْخُبْزَ وَيَغْرِفُ حَتَّى شَبِعُوْا وَبَقِيَ بَقِيَّةٌ قَالَ كُلِيْ هَذَا وَأَهْدِيْ فَإِنَّ النَّاسَ أَصَابَتْهُمْ مَجَاعَةٌ

আইমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি জাবির (রাঃ) এর নিকট গেলে তিনি বললেন, খন্দকের দিন আমরা পরিখা খনন করছিলাম। এ সময় একখন্ড কঠিন পাথর বেরিয়ে আসলে তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এসে বললেন, খন্দকের ভিতর একটি শক্ত পাথর বেরিয়েছে। তখন তিনি বললেন, আমি নিজে খন্দকে নামব। অতঃপর তিনি দাঁড়ালেন। আর তাঁর পেটে একটি পাথর বাঁধা ছিল। আর আমরা ও তিন দিন ধরে অনাহারী ছিলাম। কোন কিছুর স্বাদই চাখিনি। তখন নবী (সা, ) একখানা কোদাল হাতে নিয়ে পাথরটিকে আঘাত করলেন। ফলে তৎক্ষনাৎ তা চূর্ণ হয়ে বালুকারাশিতে পরিণত হল। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে বাড়ি যাওয়ার জন্য অনুমতি দিন। (বাড়ি পৌছে) আমি আমার স্ত্রীকে বললাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মধ্যে আমি এমন কিছু দেখলাম যা আমি সহ্য করতে পারছি না। তোমার নিকট কোন খাবার আছে কি? সে বলল, আমার কাছে কিছু যব ও একটি বর্কীর বাচ্চা আছে। তখন বাক্রীর বাচ্চাটি আমি যবহ করলাম এবং সে যব পিষে দিল। এরপর গোশত ডেকচিতে দিয়ে আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলাম। এ সময় আটা খামির হচিছল এবং ডেকচি চুলার উপর ছিল ও গোশত প্রায় রান্না হয়ে আসছিল। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমার (বাড়ীতে) সামান্য কিছু খাবার আছে। আপনি একজন দুজন সঙ্গে নিয়ে চলুন। তিনি বললেন, কী পরিমাণ খাবার আছে? আমি তাঁর কাছে সব খুলে বললাম। তিনি বললেন, এ-তো অনেক বেশ ভাল। তিনি বললেন, তোমার স্ত্রীকে গিয়ে বল, আমি না আসা পর্যন্ত উনান থেকে ডেকচি ও রুটি যেন না নামায়। এরপর তিনি বললেন উঠ! মুহাজির ও আনসারগণ উঠলেন। জাবির (রাঃ) তার স্ত্রীর কাছে গিয়ে বললেন, তোমার সর্বনাশ হোক! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তো মুহাজির, আনসার আর তাঁদের সাথীদের নিয়ে চলে এসেছেন। তিনি (জাবিরের স্ত্রী) বললেন, তিনি কি আপনাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন? আমি বললাম, হ্যাঁ। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (উপস্থিত হয়ে) বললেন, তোমরা সকলেই প্রবেশ কর কিন্তু ভিড় করো না। এ ব‘লে তিনি রুটি টুকরো করে এর উপর গোশত দিয়ে সাহাবীগণের মাঝে বিতরণ করতে শুরু করলেন। তিনি ডেকচি এবং উনান ঢেকে রেখেছিলেন। এমনি করে তিনি রুটি টুকরো করে হাত ভরে বিতরণ করতে লাগলেন। এতে সকলে পেট পুরে খাওয়ার পরে ও কিছু বাকী রয়ে গেল। তিনি (জাবিরের স্ত্রীকে) বললেন, এ তুমি খাও এবং অন্যকে হাদিয়া দাও। কেননা লোকদের ও ক্ষুধা পেয়েছে। [৩০৭০] (আ.প্র. ৩৭৯৫, ই.ফা. ৩৭৯৮)

৪১০২
عَمْرُوْ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَاصِمٍ أَخْبَرَنَا حَنْظَلَةُ بْنُ أَبِيْ سُفْيَانَ أَخْبَرَنَا سَعِيْدُ بْنُ مِيْنَاءَ قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَمَّا حُفِرَ الْخَنْدَقُ رَأَيْتُ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم خَمَصًا شَدِيْدًا فَانْكَفَأْتُ إِلَى امْرَأَتِيْ فَقُلْتُ هَلْ عِنْدَكِ شَيْءٌ فَإِنِّيْ رَأَيْتُ بِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَمَصًا شَدِيْدًا فَأَخْرَجَتْ إِلَيَّ جِرَابًا فِيْهِ صَاعٌ مِنْ شَعِيْرٍ وَلَنَا بُهَيْمَةٌ دَاجِنٌ فَذَبَحْتُهَا وَطَحَنَتْ الشَّعِيْرَ فَفَرَغَتْ إِلَى فَرَاغِيْ وَقَطَّعْتُهَا فِيْ بُرْمَتِهَا ثُمَّ وَلَّيْتُ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ لَا تَفْضَحْنِيْ بِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَبِمَنْ مَعَهُ فَجِئْتُهُ فَسَارَرْتُهُ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ ذَبَحْنَا بُهَيْمَةً لَنَا وَطَحَنَّا صَاعًا مِنْ شَعِيْرٍ كَانَ عِنْدَنَا فَتَعَالَ أَنْتَ وَنَفَرٌ مَعَكَ فَصَاحَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا أَهْلَ الْخَنْدَقِ إِنَّ جَابِرًا قَدْ صَنَعَ سُوْرًا فَحَيَّ هَلًا بِهَلّكُمْ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَا تُنْزِلُنَّ بُرْمَتَكُمْ وَلَا تَخْبِزُنَّ عَجِيْنَكُمْ حَتَّى أَجِيْءَ فَجِئْتُ وَجَاءَ رَسُوْلُ اللهِ يَقْدُمُ النَّاسَ حَتَّى جِئْتُ امْرَأَتِيْ فَقَالَتْ بِكَ وَبِكَ فَقُلْتُ قَدْ فَعَلْتُ الَّذِيْ قُلْتِ فَأَخْرَجَتْ لَهُ عَجِيْنًا فَبَصَقَ فِيْهِ وَبَارَكَ ثُمَّ عَمَدَ إِلَى بُرْمَتِنَا فَبَصَقَ وَبَارَكَ ثُمَّ قَالَ ادْعُ خَابِزَةً فَلْتَخْبِزْ مَعِيْ وَاقْدَحِيْ مِنْ بُرْمَتِكُمْ وَلَا تُنْزِلُوْهَا وَهُمْ أَلْفٌ فَأُقْسِمُ بِاللهِ لَقَدْ أَكَلُوْا حَتَّى تَرَكُوْهُ وَانْحَرَفُوْا وَإِنَّ بُرْمَتَنَا لَتَغِطُّ كَمَا هِيَ وَإِنَّ عَجِيْنَنَا لَيُخْبَزُ كَمَا هُوَ

জাবির ইবনু ‘আবদূল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন পরিখা খনন করা হচ্ছিল তখন আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ভীষন ক্ষুধার্ত অবস্থায় দেখতে পেলাম। তখন আমি আমার স্ত্রীর কাছে ফিরে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তোমার কাছে কোন কিছু আছে কি? আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দারুন ক্ষুধার্ত দেখেছি। তিনি একটি চামড়ার পাত্র এনে তা থেকে এক সা পরিমাণ যব বের করে দিলেন। আমার বাড়ীতে একটা বাক্রীর বাচ্চা ছিল। আমি সেটি যবহ করলাম। আর সে (আমার স্ত্রী) যব পিষে দিল। আমি আমার কাজ শেষ করার সঙ্গে সঙ্গে সেও তার কাজ শেষ করল এবং গোশত কেটে কেটে ডেকচিতে ভরলাম। এর পর আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে ফিরে চললাম। তখন সে (স্ত্রী) বলল, আমাকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীদের নিকট লজ্জিত করবেন না। এরপর আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গিয়ে চুপে চুপে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমরা আমাদের একটি বাক্রীর বাচ্চা যবহ করেছি এবং আমাদের ঘরে এক সা যব ছিল। তা আমার স্ত্রী পিষে দিয়েছে। আপনি আরো কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আসুন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উচ্চৈঃস্বরে সবাইকে বললেন, হে পরিখা খননকারীরা! জাবির খানার ব্যবস্থা করেছে। এসো, তোমরা সকলেই চল। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার আসার পূর্বে তোমাদের ডেকচি নামাবে না এবং খামির থেকে রুটিও তৈরী করবে না। আমি (বাড়ীতে) আসলাম এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবা-ই-কিরামসহ আসলেন। এরপর আমি আমার স্ত্রীর নিকট আসলে সে বলল, আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন। আমি বললাম, তুমি যা বলেছ আমি তাই করেছি। এরপর সে রসূলুল্লাহ এর সামনে আটার খামির বের করে দিলে তিনি তাতে মুখের লালা মিশিয়ে দিলেন, এবং বারাকাতের জন্য দু‘আ করলেন। এরপর তিনি ডেকচির কাছে এগিয়ে গেলেন এবং তাতে মুখের লালা মিশিয়ে এরজন্য বারাকাতের দু‘আ করলেন। তারপর বললেন, রুটি প্রস্তুতকারিণীকে ডাক। সে আমার কাছে বসে রুটি প্রস্তুত করুক এবং ডেকচি থেকে পেয়ালা ভরে গোশত বেড়ে দিক। তবে (উনুন হতে) ডেকচি নামাবে না। তাঁরা ছিলেন সংখ্যায় এক হাজার। আমি আল্লাহর কসম করে বলছি, তাঁরা সকলেই তৃপ্তি সহকারে খেয়ে বাকী খাদ্য রেখে চলে গেলেন। অথচ আমাদের ডেকচি আগের মতই টগবগ করছিলো আর আমাদের আটার খামির থেকেও আগের মতই রুটি তৈরী হচ্ছিলো। [৩০৭০] (আ., প্র ৩৭৯৬, ই, ফা, ৩৭৯৯)

৪১০৩
عُثْمَانُ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا عَبْدَةُ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا {إِذْ جَآءُوْكُمْ مِّنْ فَوْقِكُمْ وَمِنْ أَسْفَلَ مِنْكُمْ وَإِذْ زَاغَتِ الْأَبْصَارُ وَبَلَغَتِ الْقُلُوْبُ الْحَنَاجِرَ} قَالَتْ كَانَ ذَاكَ يَوْمَ الْخَنْدَقِ

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, “যখন তারা তোমাদের বিরুদ্ধে সমাগত হয়েছিল উচুঁ অঞ্চল ও নীচু অঞ্চল হতে এবং তোমাদের চক্ষু বিস্ফোরিত হয়েছিল…………..”-(সূরা আল আহযাব ৩৩/১০) তিনি বলেন, এ আয়াতখানা খন্দকের যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছে। (আ.প্র. ৩৭৯৭, ই, ফা. ৩৮০০)

৪১০৪
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَنْقُلُ التُّرَابَ يَوْمَ الْخَنْدَقِ حَتَّى أَغْمَرَ بَطْنَهُ أَوْ اغْبَرَّ بَطْنُهُ يَقُوْلُ:

وَاللهِ لَـوْلَا اللهُ مَـا اهْـتَـدَيْـنَـا وَلَا تَصَـدَّقـْنـَا وَلَا صَـلّـَيـْنـَا

فَأَنْـزِلَنْ سَكِيْنَـةً عَـلَـيْـنَـا وَثَـبِّـتِ الْأَقْـدَامَ إِنْ لَاقَـيْـنَـا

إِنَّ الْأُلَى قَـدْ بَـغَـوْا عـَلـَيـْنـَا إِذَا أَرَادُوْا فِــتْــنَـةً أَبَـيْـنَـا

وَرَفَعَ بِهَا صَوْتَهُ أَبَيْنَا أَبَيْنَا

বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খন্দক যুদ্ধের দিন মাটি বহন করেছিলেন। এমনকি মাটি তাঁর পেট ঢেকে ফেলেছিল অথবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) তাঁর পেট ধূলোয় আচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিল। এ সময় তিনি বলছিলেনঃ

আল্লাহর কসম! আল্লাহ হিদায়াত না করলে আমরা হিদায়াত পেতাম না,

দান সদাকাহ করতাম না এবং সালাতও আদায় করতাম না।

সুতরাং (হে আল্লাহ!) আমাদের প্রতি রাহমাত অবতীর্ণ করুন

এবং আমাদেরকে শত্রুর সঙ্গে মুকাবালা করার সময় দৃঢ়পদ রাখুন।

নিশ্চয় মক্কাবাসীরা আমাদের প্রতি বিদ্রোহ করেছে।

যখনই তারা ফিতনার প্রয়াস পেয়েছে তখনই আমরা এড়িয়ে গেছি।

শেষের কথাগুলো বলার সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উচ্চৈঃস্বরে “এড়িয়ে গেছি”, “এড়িয়ে গেছি” বলে উঠেছেন। [২৮৩৬] (আ.প্র. ৩৭৯৮, ই.ফা. ৩৮০১)

৪১০৫
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ عَنْ شُعْبَةَ قَالَ حَدَّثَنِي الْحَكَمُ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ نُصِرْتُ بِالصَّبَا وَأُهْلِكَتْ عَادٌ بِالدَّبُوْرِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে পূবের বাতাস দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে, আর আদ জাতিকে পশ্চিমা বাতাস দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। [৩৭] [১০৩৫] (আ.প্র. ৩৭৯৯, ই.ফা. ৩৮০২)


[৩৭] কাফিরদের সম্মিলিত বাহিনী যখন মাদীনাহকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল এ্ই আশায় যে, তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখলে তাদের যখন রসদ ফুরিয়ে যাবে তখন তারা এমনিতেই আত্মসমর্পন করবে। কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমাতে একদিন রাতের বেলা পশ্চিম দিক থেকে আসা প্রবল মরু ঝড় কাফিরদের তাঁবুর খুটি উপড়ে ফেলে এবং সবকিছু লন্ডভন্ড করে দেয়। ফলে তারা অবরোধ উঠিয়ে নিয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৪১০৬
أَحْمَدُ بْنُ عُثْمَانَ حَدَّثَنَا شُرَيْحُ بْنُ مَسْلَمَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ يُوْسُفَ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ يُحَدِّثُ قَالَ لَمَّا كَانَ يَوْمُ الْأَحْزَابِ وَخَنْدَقَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَأَيْتُهُ يَنْقُلُ مِنْ تُرَابِ الْخَنْدَقِ حَتَّى وَارَى عَنِّيْ الْغُبَارُ جِلْدَةَ بَطْنِهِ وَكَانَ كَثِيْرَ الشَّعَرِ فَسَمِعْتُهُ يَرْتَجِزُ بِكَلِمَاتِ ابْنِ رَوَاحَةَ وَهُوَ يَنْقُلُ مِنْ التُّرَابِ يَقُوْلُ:

اللهُمَّ لَـوْلَا أَنْتَ مَـا اهْـتَـدَيْـنَـا وَلَا تَصَـدَّقـْنـَا وَلَا صَـلّـَيـْنـَا

فَأَنْـزِلَنْ سَـكِيْنَـةً عَـلَـيْـنَـا وَثَـبِّـتِ الْأَقْـدَامَ إِنْ لَاقَـيْـنَـا

إِنَّ الْأُلَى قَـدْ بَـغَـوْا عـَلـَيـْنـَا إِذَا أَرَادُوْا فِــتْــنَـةً أَبَـيْـنَـا

قَالَ ثُمَّ يَمُدُّ صَوْتَهُ بِآخِرِهَا

বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আহযাব (খন্দক) যুদ্ধের সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরিখা খনন করেছেন। আমি তাঁকে খন্দকের মাটি বহন করতে দেখেছি। এমনকি ধূলাবালি পড়ার কারণে তার পেটের চামড়া ঢেকে গিয়েছিল। তিনি অধিকতর পশম বিশিষ্ট ছিলেন। সে সময় আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে মাটি বহন রত অবস্থায় ইবনু রাওয়াহার কবিতা আবৃত্তি করে শুনেছি। তিনি বলছিলেনঃ

হে আল্লাহ! আপনি যদি হিদায়াত না করতেন তাহলে আমরা হিদায়াত পেতাম না,

আমরা সদাকাহ করতাম না এবং আমরা সালাতও আদায় করতাম না।

সুতরাং আমাদের প্রতি আপনার শান্তি অবতীর্ণ করুন,

এবং দুশমনের সম্মুখীন হওয়ার সময় আমাদেরকে দৃঢ়পদ রাখুন।

অবশ্য মক্কাবাসীরাই আমাদের প্রতি বাড়াবাড়ি করেছে,

তারা ফিতনা বিস্তার করতে চাইলে আমরা তা প্রত্যাখ্যান করেছি।

বর্ণনাকারী (বারাআ) বলেন, শেষের কথাগুলি তিনি টেনে আবৃত্তি করছিলেন। [২৮৩৬] (আ.প্র. ৩৮০০, ই.ফা. ৩৮০৩)

৪১০৭
عَبْدَةُ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ هُوَ ابْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِيْنَارٍ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَوَّلُ يَوْمٍ شَهِدْتُهُ يَوْمُ الْخَنْدَقِ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, প্রথমে যে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম সেটা খন্দকের যদ্ধ ছিল। (আ.প্র. ৩৮০১ ই.ফা. ৩৮০৪)

৪১০৮
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ.

قَالَ : وَأَخْبَرَنِي ابْنُ طَاوُسٍ عَنْ عِكْرِمَةَ بْنِ خَالِدٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ دَخَلْتُ عَلَى حَفْصَةَ وَنَسْوَاتُهَا تَنْطُفُ قُلْتُ قَدْ كَانَ مِنْ أَمْرِ النَّاسِ مَا تَرَيْنَ فَلَمْ يُجْعَلْ لِيْ مِنَ الْأَمْرِ شَيْءٌ فَقَالَتِ الْحَقْ فَإِنَّهُمْ يَنْتَظِرُوْنَكَ وَأَخْشَى أَنْ يَكُوْنَ فِي احْتِبَاسِكَ عَنْهُمْ فُرْقَةٌ فَلَمْ تَدَعْهُ حَتَّى ذَهَبَ فَلَمَّا تَفَرَّقَ النَّاسُ خَطَبَ مُعَاوِيَةُ قَالَ مَنْ كَانَ يُرِيْدُ أَنْ يَتَكَلَّمَ فِيْ هَذَا الْأَمْرِ فَلْيُطْلِعْ لَنَا قَرْنَهُ فَلَنَحْنُ أَحَقُّ بِهِ مِنْهُ وَمِنْ أَبِيْهِ قَالَ حَبِيْبُ بْنُ مَسْلَمَةَ فَهَلَّا أَجَبْتَهُ قَالَ عَبْدُ اللهِ فَحَلَلْتُ حُبْوَتِيْ وَهَمَمْتُ أَنْ أَقُوْلَ أَحَقُّ بِهَذَا الْأَمْرِ مِنْكَ مَنْ قَاتَلَكَ وَأَبَاكَ عَلَى الإِسْلَامِ فَخَشِيْتُ أَنْ أَقُوْلَ كَلِمَةً تُفَرِّقُ بَيْنَ الْجَمْعِ وَتَسْفِكُ الدَّمَ وَيُحْمَلُ عَنِّيْ غَيْرُ ذَلِكَ فَذَكَرْتُ مَا أَعَدَّ اللهُ فِي الْجِنَانِ قَالَ حَبِيْبٌ حُفِظْتَ وَعُصِمْتَ قَالَ مَحْمُوْدٌ عَنْ عَبْدِ الرَّزَّاقِ وَنَوْسَاتُهَا

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আমি হাফসাহ (রাঃ)-এর কাছে গেলাম। সে সময় তাঁর চুলের বেণি থেকে ফোঁটা পানি ঝরছিল। আমি তাঁকে বললাম, আপনি দেখছেন, (নেতৃত্বের ব্যাপারে) লোকজন কী সব করছে। নেতৃত্বের কোন অংশই আমার জন্য নির্দিষ্ট করা হয়নি। তখন তিনি বললেন, আপনি তাদের সঙ্গে যোগ দিন। কেননা তাঁরা আপনার অপেক্ষা করছে। আপনি তাদের থেকে পৃথক থাকলে বিচ্ছিন্নতা ঘটতে পারে বলে আমি আশঙ্কা করছি। হাফসাহ (রাঃ) তাঁকে বলতেই থাকলেন। শেষে তিনি গেলেন। এরপর লোকজন ওখান থেকে চলে গেলে মু’আবিয়াহ (রাঃ) বক্তৃতা করে বললেন, ইমারতের ব্যাপারে কারো কিছু বলার ইচ্ছা হলে সে আমাদের সামনে মাথা তুলুক। এ ব্যাপারে আমরাই তাঁর ও তাঁর পিতার চেয়ে অধিক হাকদার। তখন হাবীব ইবনু মাসলামাহ (রহঃ) তাঁকে বললেন আপনি এ কথার জবাব দেননি কেন? তখন ‘আবদুল্লাহ (ইবনু ‘উমার) বললেন, আমি তখন আমার গায়ের চাদর ঠিক করলাম এবং এ কথা বলার ইচ্ছা করলাম যে, এ বিষয়ে ঐ ব্যক্তি অধিক হাকদার যে ইসলামের জন্য আপনার ও আপনার পিতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। তবে আমার এ কথাই ঐক্যৈ ফাটল ধরবে, রক্তপাত ঘটবে এবং আমার এ কথার অন্য রকম অর্থ করা হবে এ আশঙ্কা করলাম এবং আল্লাহ জান্নাতে যে নি’আমাত তৈরি করে রেখেছেন তা স্মরণ করলাম ব’লে কথা বলা থেকে বিরত থাকলাম। তখন হাবীব (রহঃ) বললেন, আপনি (ফিতনা থেকে) রক্ষা পেয়েছন এবং বেঁচে গেছেন। (আ.প্র. ৩৮০২ ই.ফা. ৩৮০৫)

৪১০৯
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ صُرَدٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ الْأَحْزَابِ نَغْزُوْهُمْ وَلَا يَغْزُوْنَنَا

সুলায়মান ইবনু সুবাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, খন্দক যুদ্ধের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, এখন আমরা তাদেরকে আক্রমন করব, তারা আমাদের প্রতি আক্রমন করতে পারবে না। (৪১১০) (আ.প্র. ৩৮০৩, ই.ফা. ৩৮০৬)

৪১১০
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ سَمِعْتُ أَبَا إِسْحَاقَ يَقُوْلُ سَمِعْتُ سُلَيْمَانَ بْنَ صُرَدٍ يَقُوْلُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ حِيْنَ أَجْلَى الْأَحْزَابَ عَنْهُ الْآنَ نَغْزُوْهُمْ وَلَا يَغْزُوْنَنَا نَحْنُ نَسِيْرُ إِلَيْهِمْ

সুলাইমান ইবনু সুবাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আহযাব যুদ্ধের দিন কাফিরদের সম্মিলিত বাহিনী মাদীনাহ ছেড়ে যেতে বাধ্য হলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছি যে, এখন থেকে আমরাই তাদেরকে আক্রমন করব। তারা আমাদের উপর আক্রমন করতে পারবে না। আর আমরা তাদের এলাকায় গিয়ে আক্রমন চালাব। (৪১০৯) (আ.প্র. ৩৮০৪, ই.ফা. ৩৮০৭)

৪১১১
إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا رَوْحٌ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ عَبِيْدَةَ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ يَوْمَ الْخَنْدَقِ مَلَا اللهُ عَلَيْهِمْ بُيُوْتَهُمْ وَقُبُوْرَهُمْ نَارًا كَمَا شَغَلُوْنَا عَنْ صَلَاةِ الْوُسْطَى حَتَّى غَابَتْ الشَّمْسُ

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত যে, তিনি খন্দকের যুদ্ধের দিন বদদু’আ করে বলছিলেন, আল্লাহ তাদের ঘরবাড়ি ও কবর আগুন দ্বারা ভরে দিন। কারণ তারা আমাদেরকে মধ্যবর্তী সলাতের সময় ব্যস্ত করে রেখেছে, এমনকি সূর্য অস্তমিত হয়ে গেছে। (২৯৩১) (আ.প্র. ৩৮০৫, ই.ফা. ৩৮০৮)

৪১১২
الْمَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ يَحْيَى عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ جَاءَ يَوْمَ الْخَنْدَقِ بَعْدَ مَا غَرَبَتْ الشَّمْسُ جَعَلَ يَسُبُّ كُفَّارَ قُرَيْشٍ وَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا كِدْتُ أَنْ أُصَلِّيَ حَتَّى كَادَتْ الشَّمْسُ أَنْ تَغْرُبَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَاللهِ مَا صَلَّيْتُهَا فَنَزَلْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بُطْحَانَ فَتَوَضَّأَ لِلصَّلَاةِ وَتَوَضَّأْنَا لَهَا فَصَلَّى الْعَصْرَ بَعْدَمَا غَرَبَتْ الشَّمْسُ ثُمَّ صَلَّى بَعْدَهَا الْمَغْرِبَ

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

খন্দকের দিন সূর্যাস্তের পর ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এসে কুরায়শ কাফিরদের গালি দিতে লাগলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রসূল! সূর্যাস্তের পূর্বে আমি সালাত আদায় করতে পারিনি। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ্‌র শপথ! আমিও আজ এ সালাত আদায় করতে পারিনি। [বর্ণনাকারী বলেন!] অতঃপর আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে বুতহান উপত্যকায় গেলাম। তিনি সলাতের জন্য ‘উযূ করলেন। তিনি সূর্যাস্তের পর আসরের সালাত আদায় করলেন তারপর মাগরিবের সালাত আদায় করলেন। (৫৯৬) (আ.প্র. ৩৮০৬, ই.ফা. ৩৮০৯)

৪১১৩
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ ابْنِ الْمُنْكَدِرِ قَالَ سَمِعْتُ جَابِرًا يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ الْأَحْزَابِ مَنْ يَأْتِيْنَا بِخَبَرِ الْقَوْمِ فَقَالَ الزُّبَيْرُ أَنَا ثُمَّ قَالَ مَنْ يَأْتِيْنَا بِخَبَرِ الْقَوْمِ فَقَالَ الزُّبَيْرُ أَنَا ثُمَّ قَالَ مَنْ يَأْتِيْنَا بِخَبَرِ الْقَوْمِ فَقَالَ الزُّبَيْرُ أَنَا ثُمَّ قَالَ إِنَّ لِكُلِّ نَبِيٍّ حَوَارِيَّ وَإِنَّ حَوَارِيَّ الزُّبَيْرُ

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আহযাব যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কুরায়শ কাফিরদের খবর আমাদের নিকট কে এনে দিতে পারবে? যুবায়র (রাঃ) বললেন, আমি। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার বললেন, কুরায়শদের খবর আমাদের নিকট কে এনে দিতে পারবে? তখনও যুবায়র (রাঃ) বললেন, আমি। তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পুনরায় বললেন, কুরায়শদের সংবাদ আমাদের নিকট কে এনে দিতে পারবে? এবারও যুবায়র (রাঃ) বললেন, আমি। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, প্রত্যেক নাবীরই হাওয়াবী (বিশেষ সাহায্যকারী) ছিল। আমার হাওয়াবী হল যুবায়র। (২৮৪৬) (আ.প্র. ৩৮০৭, ই.ফা. ৩৮১০)

৪১১৪
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ أَبِيْ سَعِيْدٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُوْلُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ أَعَزَّ جُنْدَهُ وَنَصَرَ عَبْدَهُ وَغَلَبَ الْأَحْزَابَ وَحْدَهُ فَلَا شَيْءَ بَعْدَهُ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (খন্দকের যুদ্ধের সময়) বলতেন, এক আল্লাহ ব্যতীত সত্যিকার অর্থে কোন ইলাহ নেই। তিনিই তাঁর বাহিনীকে মর্যাদাবান করেছেন, তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন এবং তিনি একাই সম্মিলিত বাহিনীকে পরাভূত করেছেন। এরপর শত্রু ভয় বলতে কিছুই থাকল না। (মুসলিম ৪৮/১৮, হাঃ ২৭২৪, আহমাদ ১০৪১১) (আ.প্র. ৩৮০৮, ই.ফা. ৩৮১১)

৪১১৫
مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنَا الْفَزَارِيُّ وَعَبْدَةُ عَنْ إِسْمَاعِيْلَ بْنِ أَبِيْ خَالِدٍ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ أَبِيْ أَوْفَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ دَعَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى الْأَحْزَابِ فَقَالَ اللهُمَّ مُنْزِلَ الْكِتَابِ سَرِيْعَ الْحِسَابِ اهْزِمْ الْأَحْزَابَ اللهُمَّ اهْزِمْهُمْ وَزَلْزِلْهُمْ

আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (আঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্মিলিত বাহিনীর বিরুদ্ধে দু’আ করে বলেছেন, হে কিতাব অবতীর্ণকারী ও তৎপর হিসাব গ্রহণকারী আল্লাহ! আপনি সম্মিলিত বাহিনীকে পরাজিত করুন। হে আল্লাহ! তাদেরকে পরাজিত এবং তাদেরকে প্রকম্পিত করুন। (২৯৩৩) (আ.প্র. ৩৮০৯, ই.ফা. ৩৮১২)

৪১১৬
مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا مُوْسَى بْنُ عُقْبَةَ عَنْ سَالِمٍ وَنَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا قَفَلَ مِنَ الْغَزْوِ أَوِ الْحَجِّ أَوِ الْعُمْرَةِ يَبْدَأُ فَيُكَبِّرُ ثَلَاثَ مِرَارٍ ثُمَّ يَقُوْلُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ آيِبُوْنَ تَائِبُوْنَ عَابِدُوْنَ سَاجِدُوْنَ لِرَبِّنَا حَامِدُوْنَ صَدَقَ اللهُ وَعْدَهُ وَنَصَرَ عَبْدَهُ وَهَزَمَ الْأَحْزَابَ وَحْدَهُ

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুদ্ধ, হাজ্জ, বা ‘উমরাহ্ থেকে ফিরে আসতেন তখন প্রথমে তিনবার তাকবীর বলতেন। এরপর বলতেন, সত্যিকার অর্থে আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। তিনি এক, তাঁর কোন শারীক নেই। রাজত্ব এবং প্রশংসা একমাত্র তাঁরই। সব বিষয়ে তিনিই সর্বশক্তিমান। আমরা তাঁরই কাছে প্রত্যাবর্তনকারী, তওবাহ্কারী, তাঁরই ইবাদাতকারী। আমরা আমাদের প্রভুর কাছে সাজদাহ্কারী, তাঁরই প্রশংসাকারী। আল্লাহ তাঁর ওয়াদা সত্যে পরিণত করেছেন। তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন এবং সম্মিলিত বাহিনীকে পরাভূত করেছেন। (১৭৯৭) (আ.প্র. ৩৮১০, ই.ফা. ৩৮১৩)

৬৪/৩১. অধ্যায়ঃ
আহযাব নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রত্যাবর্তন এবং তাঁর বনূ কুরাইযাহ অভিযান ও তাদের অবরোধ

৪১১৭
عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ لَمَّا رَجَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْخَنْدَقِ وَوَضَعَ السِّلَاحَ وَاغْتَسَلَ أَتَاهُ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَام فَقَالَ قَدْ وَضَعْتَ السِّلَاحَ وَاللهِ مَا وَضَعْنَاهُ فَاخْرُجْ إِلَيْهِمْ قَالَ فَإِلَى أَيْنَ قَالَ هَا هُنَا وَأَشَارَ إِلَى بَنِيْ قُرَيْظَةَ فَخَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَيْهِمْ

আয়েশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খন্দক যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে অস্ত্র রেখে গোসল করেছেন। এমনি মুহূর্তে তাঁর কাছে জিবরীল (আঃ) এসে বললেন, আপনি অস্ত্র রেখে দিয়েছেন। আল্লাহর কসম! আমরা তা খুলিনি। তাদের বিরুদ্ধে অভিযানে চলুন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, কোথায় যেতে হবে? তিনি বনূ কুরাইযার প্রতি ইশারা করে বললেন, ঐ দিকে। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের বিরুদ্ধে অভিযানে বেরিয়ে পড়লেন। (৪৬৩) (আ.প্র. ৩৮১২, ই.ফা. ৩৮১৪)

৪১১৮
مُوْسَى حَدَّثَنَا جَرِيْرُ بْنُ حَازِمٍ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ هِلَالٍ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَأَنِّيْ أَنْظُرُ إِلَى الْغُبَارِ سَاطِعًا فِيْ زُقَاقِ بَنِيْ غَنْمٍ مَوْكِبَ جِبْرِيْلَ صَلَوَاتُ اللهِ عَلَيْهِ حِيْنَ سَارَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى بَنِيْ قُرَيْظَةَ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বনূ গান্‌ম গোত্রের গলিতে জিবরীল বাহিনীর গমনে উত্থিত ধূলারাশি এখনো দেখতে পাচ্ছি, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন বনূ কুরাইযার দিকে যাচ্ছিলেন। (৩২১৪) (আ.প্র. ৩৮১২, ই.ফা. ৩৮১৫)

৪১১৯
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ بْنُ أَسْمَاءَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ الْأَحْزَابِ لَا يُصَلِّيَنَّ أَحَدٌ الْعَصْرَ إِلَّا فِيْ بَنِيْ قُرَيْظَةَ فَأَدْرَكَ بَعْضُهُمْ الْعَصْرَ فِي الطَّرِيْقِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لَا نُصَلِّيْ حَتَّى نَأْتِيَهَا وَقَالَ بَعْضُهُمْ بَلْ نُصَلِّيْ لَمْ يُرِدْ مِنَّا ذَلِكَ فَذُكِرَ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يُعَنِّفْ وَاحِدًا مِنْهُمْ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আহযাব যুদ্ধের দিন (যুদ্ধ শেষে) বললেন, বনূ কুরাইযায় না পৌছে কেউ ‘আসরের সালাত আদায় করবে না। [৩৮] তাদের একাংশের পথিমধ্যে আসরের সলাতের সময় হয়ে গেলে কেউ কেউ বললেন, আমরা সেখানে পৌছার আগে সালাত আদায় করব না। আবার কেউ কেউ বললেন, আমরা এখনই সালাত আদায় করব, সময় হলেও রাস্তায় সালাত আদায় করা যাবে না উদ্দেশ্য তা নয়। বিষয়টি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে বলা হলে তিনি তাদের কোন দলের প্রতি অসন্তুষ্টি ব্যক্ত করেননি। [৯৪৬] (আ.প্র. ৩৮১৩ ই.ফা. ৩৮১৬)


[৩৮]বনূ কুরাইযাহ্র বিশ্বাসঘাতকতার কারণে আহযাব যুদ্ধের দিন যুদ্ধ শেষে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ মতে মুসলিম বাহিনী বনূ কুরাইযা রওয়ানা হন। নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বনূ কুরাইযাহ্কে তাদের কৃতকর্মের কারণ দর্শানোর জন্য ডেকে পাঠান। কিন্তু নবূ করাইযা তখন দূর্গদ্বার বন্ধ করে দেয় এবং যুদ্ধের পরোপুরি প্রস্তুতি গ্রহন করে। এ সময় মুসলিমগণ জানতে পারেন যে, বনূ নাযীরের নেতা হুইয়াই ইবনু আখতাব যে বনূ কুরাইযাহ্কে মুসস্লিমদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিতে এসেছিল সেও দূর্গের মধ্যে বিদ্যমান। বনূ কুরাইযাহ্র বিশ্বাসঘাতকতার এটাই প্রথম ঘটনা ছিল না। বাদ্‌র যুদ্ধেও এরা কুরায়শদেরকে অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সাহায্য করলেও রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে ক্ষ্মা করে দিয়েছিলেন। তারা দূর্গা বন্ধ করে দেয়ায় বাধ্য হয়ে মুসলমানদের যুদ্ধ করতে হয়েছে। যিলহাজ্জ মাসে তাদের দূর্গ অবরোধ করা হয়েছিল যা পঁচিশ দিন স্থায়ী ছিল। এ অবরোধের ফলে তারা কঠিন সংকটে পতিত হয়।ফলে তারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সম্মত করে নিল, তাউস গোত্রের সা’আদ ইবনু মু’আযাকে বিচারক বানিয়ে দেয়া হোক। এবং তিনি যে মীমাংসা দিবেন সেটাকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ও মেনে নিবেন। হয়ত তারা এটা ভেবেছিল যে, যেহেতু তাউস গোত্রের মুসলমানদের সাথে তাদের পূর্বে বন্ধত্ব ছিল তাই তারা মনে করলো যে, নিশ্চয়ই তারা তাদের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অপেক্ষা হালকা শাস্তি দিবে। আল্লাহই ভাল জানেন। কিন্তু সব দিক বিচার বিশ্লেষণ করে তিনি যে ফায়সালা দিলেন তা হলোঃ (১) বনূ কুরাইযাহ্র পুরুষ যোদ্ধাদের হত্যা করা হবে। (২) মহিলা ও শিশুদের দাস-দাসী বানিয়ে নেয়া হবে। (৩) ধন-সম্পদ বন্টন করে নেয়া হবে। কিন্তু আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) যে বর্ণনা করেছেন তাতে তাদের মহিলা ও শিশুদেরকে দাস দাসী বানিয়ে নেয়ার কথা উল্লেখ নেই।

তাদের নিজেদের মনোনীত ও নির্বাচিত বিচারক ঠিক ঐ ফায়সালই দিলেন যা ইয়াহূদীরা তাদের শত্রুদেরকে দিইয়ে থাকতো, যা তাদের শরী’আতে আছে। (উর্দু তরজুমা কাদীম হিন্দুস্তান কী তাহযীব)

এ ব্যাপারে যথেষ্ট প্রমাণ বিদ্যমান আছে যে, যদি বনূ কুরাইযা তাদের ব্যাপারটা রসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর অর্পণ করতো তাহলে তাদের তিনি বড়জোর এ শাস্তি দিতেন যে, তাদেরকে বলতেনঃ “যাও তোমরা খায়বারে গিয়ে বসতি স্থাপন কর।“ যেমনটি করেছিলেন বনূ কাইনুক ও বনূ নাযীরের ব্যাপারে। কেননা এরূপ ফায়সালার পরও রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বনূ কুরায়যার কয়েকজনের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে ভিন্ন ফায়ফালা কার্যকর করেছিলেন। যেমন ইয়াহূদী যুবায়রের জন্য নির্দেশ ছিল যে, তাঁর স্ত্রী-পুত্র, পরিবার ও ধনমাল সহ মুক্ত করে দেয়া হোক।অনুরূপ রিফা’আহজ ইবনু শামূঈল নামক ইয়াহূদীকেও তিনি রেহাই দিইয়েছিলেন। (তারীখে তাবারী ৫৭ ও ৫৮ পৃষ্ঠা)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৪১২০
ابْنُ أَبِي الْأَسْوَدِ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ ح و حَدَّثَنِيْ خَلِيْفَةُ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ قَالَ سَمِعْتُ أَبِيْ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَانَ الرَّجُلُ يَجْعَلُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم النَّخَلَاتِ حَتَّى افْتَتَحَ قُرَيْظَةَ وَالنَّضِيْرَ وَإِنَّ أَهْلِيْ أَمَرُوْنِيْ أَنْ آتِيَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَسْأَلَهُ الَّذِيْ كَانُوْا أَعْطَوْهُ أَوْ بَعْضَهُ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَدْ أَعْطَاهُ أُمَّ أَيْمَنَ فَجَاءَتْ أُمُّ أَيْمَنَ فَجَعَلَتْ الثَّوْبَ فِيْ عُنُقِيْ تَقُوْلُ كَلَّا وَالَّذِيْ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ لَا يُعْطِيْكَهُمْ وَقَدْ أَعْطَانِيْهَا أَوْ كَمَا قَالَتْ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ لَكِ كَذَا وَتَقُوْلُ كَلَّا وَاللهِ حَتَّى أَعْطَاهَا حَسِبْتُ أَنَّهُ قَالَ عَشَرَةَ أَمْثَالِهِ أَوْ كَمَا قَالَ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, লোকেরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে খেজুর গাছ হাদিয়া দিতেন। অতঃপর যখন তিনি বানূ কুরাইযার উপর জয়লাভ করলেন তখন আমার পরিবারের লোকেরা আমাকে নির্দেশ দিল, যেন আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে গিয়ে তাদের দেয়া সবগুলো খেজুর গাছ অথবা কিছু সংখ্যক খেজুর গাছ তাঁর নিকট থেকে ফেরত গ্রহনের ব্যাপারে নিবেদন করি। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ গাছগুলো উম্মু আইমান (রাঃ)-কে দান করেছিলেন। উম্মু আইমান (রাঃ) আসলেন এবং আমার গলায় কাপড় লাগিয়ে বললেন, এটা কক্ষনো হতে পারে না। সেই আল্লাহর কসম! যিনি ব্যাতীত কোন ইলাহ নেই। তিনি ঐ গাছগুলো তোমাকে আর দেবেন না। তিনি এগুলো আমাকে দিয়ে দিয়েছেন। অথবা (রাবীর সন্দেহ) যেমন তিনি বলেছেন। এদিকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলছিলেন, তুমি ঐ গাছগুলোর বদলে আমার নিকট থেকে এত এত পাবে। কিন্তু উম্মু আইমান (রাঃ) বলছিলেন, আল্লাহর কসম! এটা কক্ষনো হতে পারে না। অবশেষে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে দিলেন। বর্ণনাকারী আনাস (রাঃ) বলেন, আমার মনে হই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এর দশগুন অথবা যেমন তিনি বলেছেন। [২৬৩০; মুসলিম ৩২/২৪, হাঃ ১৭৭১] (আ.প্র. ৩৮১৪, ই.ফা. ৩৮১৭)

৪১২১
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ سَعْدٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا أُمَامَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَعِيْدٍ الْخُدْرِيَّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ نَزَلَ أَهْلُ قُرَيْظَةَ عَلَى حُكْمِ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ فَأَرْسَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى سَعْدٍ فَأَتَى عَلَى حِمَارٍ فَلَمَّا دَنَا مِنَ الْمَسْجِدِ قَالَ لِلأَنْصَارِ قُوْمُوْا إِلَى سَيِّدِكُمْ أَوْ خَيْرِكُمْ فَقَالَ هَؤُلَاءِ نَزَلُوْا عَلَى حُكْمِكَ فَقَالَ تَقْتُلُ مُقَاتِلَتَهُمْ وَتَسْبِيْ ذَرَارِيَّهُمْ قَالَ قَضَيْتَ بِحُكْمِ اللهِ وَرُبَّمَا قَالَ بِحُكْمِ الْمَلِكِ

আবূ সা’ঈদ খুদ্‌রী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সা’দ ইবনু মু’আয (রাঃ)-এর বিচার মতে বানী কুরাইযাহ গোত্রের লোকেরা দূর্গ থেকে বেরিয়ে আসল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সা’দকে আনার জন্য লোক পাঠালেন। তিনি গাধায় চড়ে আসলেন। তিনি মসজিদে নাবাবীর নিকটবর্তী হলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনসার সাহাবীগণের লক্ষ্য করে বলেলেন, তোমরা তোমাদের নেতা ও সর্বোত্তম লোককে স্বাগত জানানোর জন্য দাঁড়িয়ে যাও। (অতঃপর) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এরা তোমরা ফায়সালা মেনে নিয়ে দূর্গ থাকে নিচে নেমে এসেছে। তখন তিনি বললেন, তাদের যোদ্ধাদের হত্যা করা হবে এবং তাদের সন্তানদেরকে বন্দী করা হবে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে সা’দ! তুমি আল্লাহ্‌র নির্দেশ অনুসারে ফায়সালা দিয়েছ। কোন কোন সময় তিনি বলেছেন, তুমি সকল রাজার রাজা আল্লাহ্‌র নির্দেশ মুতাবিক ফায়সালা করেছ। [৩০৪৩] (আ.প্র. ৩৮১৫ ই.ফা. ৩৮১৮)

৪১২২
زَكَرِيَّاءُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ نُمَيْرٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ أُصِيْبَ سَعْدٌ يَوْمَ الْخَنْدَقِ رَمَاهُ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ يُقَالُ لَهُ حِبَّانُ بْنُ الْعَرِقَةِ وَهُوَ حِبَّانُ بْنُ قَيْسٍ مِنْ بَنِيْ مَعِيْصِ بْنِ عَامِرِ بْنِ لُؤَيٍّ رَمَاهُ فِي الْأَكْحَلِ فَضَرَبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَيْمَةً فِي الْمَسْجِدِ لِيَعُوْدَهُ مِنْ قَرِيْبٍ فَلَمَّا رَجَعَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْخَنْدَقِ وَضَعَ السِّلَاحَ وَاغْتَسَلَ فَأَتَاهُ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَام وَهُوَ يَنْفُضُ رَأْسَهُ مِنَ الْغُبَارِ فَقَالَ قَدْ وَضَعْتَ السِّلَاحَ وَاللهِ مَا وَضَعْتُهُ اخْرُجْ إِلَيْهِمْ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَيْنَ فَأَشَارَ إِلَى بَنِيْ قُرَيْظَةَ فَأَتَاهُمْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَنَزَلُوْا عَلَى حُكْمِهِ فَرَدَّ الْحُكْمَ إِلَى سَعْدٍ قَالَ فَإِنِّيْ أَحْكُمُ فِيْهِمْ أَنْ تُقْتَلَ الْمُقَاتِلَةُ وَأَنْ تُسْبَى النِّسَاءُ وَالذُّرِّيَّةُ وَأَنْ تُقْسَمَ أَمْوَالُهُمْ قَالَ هِشَامٌ فَأَخْبَرَنِيْ أَبِيْ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ سَعْدًا قَالَ اللهُمَّ إِنَّكَ تَعْلَمُ أَنَّهُ لَيْسَ أَحَدٌ أَحَبَّ إِلَيَّ أَنْ أُجَاهِدَهُمْ فِيْكَ مِنْ قَوْمٍ كَذَّبُوْا رَسُوْلَكَ وَأَخْرَجُوْهُ اللهُمَّ فَإِنِّيْ أَظُنُّ أَنَّكَ قَدْ وَضَعْتَ الْحَرْبَ بَيْنَنَا وَبَيْنَهُمْ فَإِنْ كَانَ بَقِيَ مِنْ حَرْبِ قُرَيْشٍ شَيْءٌ فَأَبْقِنِيْ لَهُ حَتَّى أُجَاهِدَهُمْ فِيْكَ وَإِنْ كُنْتَ وَضَعْتَ الْحَرْبَ فَافْجُرْهَا وَاجْعَلْ مَوْتَتِيْ فِيْهَا فَانْفَجَرَتْ مِنْ لَبَّتِهِ فَلَمْ يَرُعْهُمْ وَفِي الْمَسْجِدِ خَيْمَةٌ مِنْ بَنِيْ غِفَارٍ إِلَّا الدَّمُ يَسِيْلُ إِلَيْهِمْ فَقَالُوْا يَا أَهْلَ الْخَيْمَةِ مَا هَذَا الَّذِيْ يَأْتِيْنَا مِنْ قِبَلِكُمْ فَإِذَا سَعْدٌ يَغْذُوْ جُرْحُهُ دَمًا فَمَاتَ مِنْهَا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ

আয়েশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধে সা’দ (রাঃ) আহত হয়েছিলেন। কুরাইশ গোত্রের হিব্বান ইবনু আরেকা নামক এক ব্যক্তি তাঁর উভয় বাহুর মধ্যবর্তী রগে তীর বিদ্ধ করেছিল। নিকট থেকে তার সেবা করার জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাসজিদে নাববীতে একটি তাঁবু তৈরি করেছিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খন্দকের যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে যখন হাতিয়ার গোসল শেষ করলেন তখন জিব্‌রীল (আঃ) নিজ মাথার ধূলাবালি ঝাড়তে ঝাড়তে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে হাজির হলেন এবং বললেন, আপনি হাতিয়ার রেখে দিয়েছেন, কিন্তু আল্লাহ্‌র কসম! আমি এখনো তা রেখে দেইনি। চলুন তাদের দিকে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন কোথায়? তিনি বানী কুরাইযা গোত্রের প্রতি ইশারা করলেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বনু কুরাইযার মহল্লায় এলেন। অবশেষে তারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ফায়সালা মান্য করে দূর্গ থেকে নিচে নেমে এল। কিন্তু তিনি ফয়সালার ভার সা’দ (রাঃ)-এর উপর ন্যস্ত করলেন। তখন সা’দ (রাঃ) বললেন, তাদের ব্যাপারে আমি এই ফায়সালা দিচ্ছি যে, তাদের যোদ্ধাদেরকে হত্যা করা হবে, নারী ও সন্তানদেরকে বন্দি করা হবে এবং তাদের ধন সম্পদ বন্টন করা হবে। বর্ণনকারী হিশাম (রহঃ) বলেন, আমার পিতা ‘আয়েশাহ (রাঃ) থেকে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, সা’দ (রাঃ) আল্লাহ্‌র কাছে দু’আ করেছিলেন, হে আল্লাহ! আপনি তো জানেন, আপনার সন্তুষ্টির জন্য তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার চেয়ে কোন কিছুই আমার কাছে অধিক প্রিয় নয়। যে সম্প্রদায় আপনার রসূলকে মিথ্যাচারী বলেছে এবং দেশ থেকে বের করে দিয়েছে হে আল্লাহ! আমি মনে করি (খন্দক যুদ্ধের পর) আপনি তো আমাদের ও তাদের যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটিয়েছেন। যদি এখনো কুরায়শদের বরুদ্ধে কোন যুদ্ধ বাকী থেকে থাকে তাহলে আমাকে বাঁচিয়ে রাখুন, যাতে আমি আপনার রাস্তায় তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে পারি। আর যদি যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটিয়ে থাকেন তাহলে ক্ষত হতে রক্ত প্রবাহিত করুন আর আমার তাতেই মৃত্যু দিন। এরপর তাঁর ক্ষত থেকে রক্তক্ষরণ হয়ে প্রবাহিত হতে লাগল। মাসজিদে বানী গিফার গোত্রের একটি তাঁবু ছিল। তাদের দিকে রক্ত প্রবাহিত হতে দেখে তারা বললেন, হে তাঁবুবাসীগণ! আপনাদের দিক থেকে এসব কী আমাদের দিকে আসতেছে? পরে তাঁরা জানালেন যে, সা’দ (রাঃ)-এর ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এ জখমের কারণেই তিনি মারা যান, আল্লাহ তাঁর উপর সন্তুষ্ট থাকুন। [৪৬৩, মুসলিম ৩২/২২, হাঃ ১৭৬৯, আহমাদ ২৪৩৪৯] (আ.প্র. ৩৮১৬, ই.ফা. ৩৮২০)

৪১২৩
الْحَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَدِيٌّ أَنَّهُ سَمِعَ الْبَرَاءَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِحَسَّانَ اهْجُهُمْ أَوْ هَاجِهِمْ وَجِبْرِيْلُ مَعَكَ

আদী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বারাআ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাস্‌সান (রাঃ)-কে বলছেন, কবিতার দ্বারা তাদের (কাফিরদের) দোষত্রুটি বর্ণনা কর অথবা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) তাদের দোষত্রুটি বর্ণনা করার জবাব দাও। জিবরীল (আঃ) তোমার সঙ্গে থাকবেন। [৩২১৩] (আ.প্র. ৩৮১৭, ই.ফা. ৩৮২০)

৪১২৪
وَزَادَ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ طَهْمَانَ عَنْ الشَّيْبَانِيِّ عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ قُرَيْظَةَ لِحَسَّانَ بْنِ ثَابِتٍ اهْجُ الْمُشْرِكِيْنَ فَإِنَّ جِبْرِيْلَ مَعَكَ

ইবরাহীম ইবনু তাহ্‌মান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

বারাআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে অধিক বর্ণনা করে বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বানু কুরাইযাহ’র সঙ্গে যুদ্ধের দিন হাস্‌সান ইবনু সাবিত [৩৯] (রাঃ) বলেছিলেন (কবিতা আবৃতি করে) মুশরিকদের দোষত্রুটি তুলে ধর। এ ব্যাপারে জিবরীল (আঃ) তোমার সঙ্গী। [৩২১৩] (আ.প্র. ৩৮১৭, ই.ফা. ৩৮২০)


[৩৯] হাসসান ইবনু সাবিত (রাঃ)-কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কবি বা ইসলামের কবি বলা হতো। কারণ, কাফির কবিরা যেমন আল্লাহর রসূল ও ইসলামের বিরুদ্ধে কুৎসা ও বদনাম করতো তেমনি তিনিও কাফিরদেরকে কবিতা ও সাহিত্যের মাধ্যমে তার জবাব দিতেন।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]