সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস মাগাযী অধ্যায় ৯ম ভাগ হাদিস নং ৪২৬৯ – ৪৩১৩

৬৪/৪৬. অধ্যায়ঃ
জুহাইনাহ গোত্রের শাখা ‘হুরুকাত’ [৬৫] উপগোত্রের বিরুদ্ধে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক ইবনু যায়িদ (রাঃ)-কে প্রেরণের বর্ণনা

[৬৫] আরবীতে হুরকাতুন শব্দের অর্থ আগুনে পোড়ানো। তারা একটি গোত্রকে নৃশংশভাবে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল। তাই এই উপগোত্রটি হুরকাহ নামে প্রসিদ্ধ ছিল।

৪২৬৯
عَمْرُوْ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ أَخْبَرَنَا حُصَيْنٌ أَخْبَرَنَا أَبُوْ ظَبْيَانَ قَالَ سَمِعْتُ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ بَعَثَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى الْحُرَقَةِ فَصَبَّحْنَا الْقَوْمَ فَهَزَمْنَاهُمْ وَلَحِقْتُ أَنَا وَرَجُلٌ مِنَ الْأَنْصَارِ رَجُلًا مِنْهُمْ فَلَمَّا غَشِيْنَاهُ قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ فَكَفَّ الْأَنْصَارِيُّ فَطَعَنْتُهُ بِرُمْحِيْ حَتَّى قَتَلْتُهُ فَلَمَّا قَدِمْنَا بَلَغَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا أُسَامَةُ أَقَتَلْتَهُ بَعْدَ مَا قَالَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ قُلْتُ كَانَ مُتَعَوِّذًا فَمَا زَالَ يُكَرِّرُهَا حَتَّى تَمَنَّيْتُ أَنِّيْ لَمْ أَكُنْ أَسْلَمْتُ قَبْلَ ذَلِكَ الْيَوْمِ.

উসামাহ ইবনু যায়িদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে হুরকা গোত্রের বিরুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন। আমরা প্রত্যুষে গোত্রটির উপর আক্রমণ করি এবং তাদেরকে পরাজিত করি। এ সময়ে আনসারদের এক ব্যক্তি ও আমি তাদের (হুরকাদের) একজনের পিছু ধাওয়া করলাম। আমরা যখন তাকে ঘিরে ফেললাম তখন সে বলে উঠল ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। এ বাক্য শুনে আনসারী তার অস্ত্র সামনে নিলেন। কিন্তু আমি তাকে আমার বর্শা দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে ফেললাম। আমরা মদিনায় ফিরার পর এ সংবাদ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত পৌঁছালে তিনি বললেন, হে উসামাহ! ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার পরেও তুমি তাকে হত্যা করেছ? আমি বললাম, সে তো জান বাঁচানোর জন্য কালিমা পড়েছিল। এর পরেও তিনি এ কথাটি ‘হে উসামাহ! ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার পরেও তুমি তাকে হত্যা করেছ’ বারবার বলতে থাকলেন। এতে আমার মন চাছিল যে, হায়, যদি সেই দিনটির পূর্বে আমি ইসলামই গ্রহণ না করতাম! [৬৬] [৬৮৭২; মুসলিম ১/৪১, হাঃ ৯৬, আহমাদ ২১৮০৪] (আ.প্র. ৩৯৩৬, ই.ফা. ৩৯৪০)

[৬৬] লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠকারী ব্যক্তিকেও হত্যা করার ফলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অত্যন্ত ব্যথিত হন। তাই উসামা (রাঃ) চরম অনুতপ্ত হয়ে এ কথা বলেছিলেন। তিনি বুঝাতে চেয়েছেন যে, ঐদিনের পর ইসলাম গ্রহণ করলে এত বড় কঠিন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হতো না আর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও এত কষ্ট পেতেন না।

৪২৭০
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا حَاتِمٌ عَنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِيْ عُبَيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ سَلَمَةَ بْنَ الْأَكْوَعِ يَقُوْلُ غَزَوْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم سَبْعَ غَزَوَاتٍ وَخَرَجْتُ فِيْمَا يَبْعَثُ مِنَ الْبُعُوْثِ تِسْعَ غَزَوَاتٍ مَرَّةً عَلَيْنَا أَبُوْ بَكْرٍ وَمَرَّةً عَلَيْنَا أُسَامَةُ.

সালামাহ ইবনু আকওয়া’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সাতটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। আর তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেসব অভিযান প্রেরণ করেছেন তন্মধ্যে নয়টি অভিযানে আমি অংশ নিয়েছি। এসব অভিযানে একবার আবূ বকর (রাঃ) আমাদের অধিনায়ক থাকতেন, আরেকবার উসামাহ (রাঃ) আমাদের অধিনায়ক থাকতেন। [৪২৭১-৪২৭৩] (আ.প্র. ৩৯৩৭, ই.ফা. ৩৯৪১)

৪২৭১
وَقَالَ عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ عَنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِيْ عُبَيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ سَلَمَةَ يَقُوْلُ غَزَوْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم سَبْعَ غَزَوَاتٍ وَخَرَجْتُ فِيْمَا يَبْعَثُ مِنَ الْبَعْثِ تِسْعَ غَزَوَاتٍ عَلَيْنَا مَرَّةً أَبُوْ بَكْرٍ وَمَرَّةً أُسَامَةُ.

উমার ইবনু হাফ্‌স ইবনু গিয়াস (রহঃ) তাঁর পিতা হাফস্‌ থেকে বর্ণিতঃ

ইয়াযীদ ইবনু আবী ‘উবাইদাহ (রাঃ)-এর মাধ্যমে সালামাহ ইবনুল আকওয়া’ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সাতটি যুদ্ধে অংশ নিয়েছি। আর তিনি যেসব সেনাভিযান পাঠিয়েছিলেন এর নয়টি সেনাভিযানে অংশ নিয়েছি। এ সব সেনাভিযানে একবার আবূ বকর (রাঃ) আমাদের অধিনায়ক থাকতেন। আরেকবার উসামাহ (রাঃ) আমাদের অধিনায়ক থাকতেন। [৪২৭০; মুসলিম ৩২/৪৯, হাঃ ১৮১৫] (আ.প্র. ৩৯৩৭, ই.ফা.৩৯৪১)

৪২৭২
أَبُوْ عَاصِمٍ الضَّحَّاكُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا يَزِيْدُ بْنُ أَبِيْ عُبَيْدٍ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الْأَكْوَعِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ غَزَوْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم سَبْعَ غَزَوَاتٍ وَغَزَوْتُ مَعَ ابْنِ حَارِثَةَ اسْتَعْمَلَهُ عَلَيْنَا.

সালামাহ ইবনু আকওয়া’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সাতটি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি এবং যায়দ ইবনু হারিসাহ্‌ (রাঃ)-এর সঙ্গেও যুদ্ধে অংশ নিয়েছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে (যায়দকে) আমাদের সেনাধ্যক্ষ নিয়োগ করেছিলেন। [৪২৭০] (আ.প্র. ৩৯৩৮, ই.ফা. ৩৯৪২)

৪২৭৩
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ مَسْعَدَةَ عَنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِيْ عُبَيْدٍ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الْأَكْوَعِ قَالَ غَزَوْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم سَبْعَ غَزَوَاتٍ فَذَكَرَ خَيْبَرَ وَالْحُدَيْبِيَةَ وَيَوْمَ حُنَيْنٍ وَيَوْمَ الْقَرَدِ قَالَ يَزِيْدُ وَنَسِيْتُ بَقِيَّتَهُمْ.

সালামাহ ইবনু আকওয়া’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সাতটি যুদ্ধে অংশ নিয়েছি। এতে তিনি খাইবার, হুদাইবিয়াহ, হুনায়ন ও যি-কারাদের যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেছেন। বর্ণনাকারী ইয়াযীদ (রহঃ) বলেন, অবশিষ্ট যুদ্ধগুলোর নাম আমি ভুলে গেছি। [৪২৭০] (আ.প্র. ৩৯৩৯, ই.ফা. ৩৯৪৩)

৬৪/৪৭. অধায়ঃ
মাক্কাহ্‌য় বিজয়াভিযান

এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অভিযানের ব্যাপারে খবর জানিয়ে মক্কাবাসীদের নিকট হাতিব ইবনু আবূ বালতা’আর লোক প্রেরণের ঘটনা ।

৪২৭৪
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِيْنَارٍ قَالَ أَخْبَرَنِي الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ أَنَّهُ سَمِعَ عُبَيْدَ اللهِ بْنَ أَبِيْ رَافِعٍ يَقُوْلُ سَمِعْتُ عَلِيًّا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ بَعَثَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ أَنَا وَالزُّبَيْرَ وَالْمِقْدَادَ فَقَالَ انْطَلِقُوْا حَتَّى تَأْتُوْا رَوْضَةَ خَاخٍ فَإِنَّ بِهَا ظَعِيْنَةً مَعَهَا كِتَابٌ فَخُذُوْا مِنْهَا قَالَ فَانْطَلَقْنَا تَعَادَى بِنَا خَيْلُنَا حَتَّى أَتَيْنَا الرَّوْضَةَ فَإِذَا نَحْنُ بِالظَّعِيْنَةِ قُلْنَا لَهَا أَخْرِجِي الْكِتَابَ قَالَتْ مَا مَعِيْ كِتَابٌ فَقُلْنَا لَتُخْرِجِنَّ الْكِتَابَ أَوْ لَنُلْقِيَنَّ الثِّيَابَ قَالَ فَأَخْرَجَتْهُ مِنْ عِقَاصِهَا فَأَتَيْنَا بِهِ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا فِيْهِ مِنْ حَاطِبِ بْنِ أَبِيْ بَلْتَعَةَ إِلَى نَاسٍ بِمَكَّةَ مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ يُخْبِرُهُمْ بِبَعْضِ أَمْرِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَا حَاطِبُ مَا هَذَا قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ لَا تَعْجَلْ عَلَيَّ إِنِّيْ كُنْتُ امْرًَا مُلْصَقًا فِيْ قُرَيْشٍ يَقُوْلُ كُنْتُ حَلِيْفًا وَلَمْ أَكُنْ مِنْ أَنْفُسِهَا وَكَانَ مَنْ مَعَكَ مِنَ الْمُهَاجِرِيْنَ مَنْ لَهُمْ قَرَابَاتٌ يَحْمُوْنَ أَهْلِيْهِمْ وَأَمْوَالَهُمْ فَأَحْبَبْتُ إِذْ فَاتَنِيْ ذَلِكَ مِنْ النَّسَبِ فِيْهِمْ أَنْ أَتَّخِذَ عِنْدَهُمْ يَدًا يَحْمُوْنَ قَرَابَتِيْ وَلَمْ أَفْعَلْهُ ارْتِدَادًا عَنْ دِيْنِيْ وَلَا رِضًا بِالْكُفْرِ بَعْدَ الإِسْلَامِ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَا إِنَّهُ قَدْ صَدَقَكُمْ فَقَالَ عُمَرُ يَا رَسُوْلَ اللهِ دَعْنِيْ أَضْرِبْ عُنُقَ هَذَا الْمُنَافِقِ فَقَالَ إِنَّهُ قَدْ شَهِدَ بَدْرًا وَمَا يُدْرِيْكَ لَعَلَّ اللهَ اطَّلَعَ عَلَى مَنْ شَهِدَ بَدْرًا فَقَالَ اعْمَلُوْا مَا شِئْتُمْ فَقَدْ غَفَرْتُ لَكُمْ فَأَنْزَلَ اللهُ السُّوْرَةَ {يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَتَّخِذُوْا عَدُوِّيْ وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَآءَ تُلْقُوْنَ إِلَيْهِمْ بِالْمَوَدَّةِ وَقَدْ كَفَرُوْا بِمَا جَآءَكُمْ مِّنَ الْحَقِّ} إِلَى قَوْلِهِ {فَقَدْ ضَلَّ سَوَآءَ السَّبِيْلِ}.

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমাকে এবং যুবায়র ও মিকদাদ (রাঃ)-কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথা বলে পাঠালেন যে, তোমরা রওয়ানা হয়ে রাওযায়ে খাখ পর্যন্ত চলে যাও, সেখানে সাওয়ারীর পৃষ্ঠে হাওদায় উপবিষ্টা জনৈকা মহিলার নিকট একখানা পত্র আছে। তোমরা ঐ পত্রটি তার থেকে নিয়ে আসবে। ‘আলী (রাঃ) বলেন, আমরা রওয়ানা দিলাম। আর আমাদের অশ্বগুলো আমাদের নিয়ে খুব দ্রুত ছুটে চলল। শেষ পর্যন্ত আমরা রাওযায়ে খাখ-এ পৌঁছে গেলাম। গিয়েই আমরা হাওদায় আরোহিণী মহিলাটিকে পেয়ে গেলাম। আমরা বললাম, পত্রটি বের কর। সে বললঃ আমার কাছে কোন পত্র নেই। আমরা বললাম, তুমি অবশ্যই পত্রটি বের করবে, অন্যথায় আমরা তোমার কাপড়-চোপড় খুলে তালাশ করব। রাবী বলেন, মহিলাটি তখন তার চুলের খোপা থেকে পত্রটি বের করল। আমরা পত্রটি নিয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আসলাম। দেখা গেল এটি হাতিব ইবনু আবূ বালতা’আ (রাঃ)-এর পক্ষ থেকে মক্কার কতিপয় মুশরিকের কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি এতে মক্কার কাফিরদের বিরুদ্ধে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কিছু তৎপরতার সংবাদ দিয়েছেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে হাতিব! এ কী কাজ করেছ? তিনি বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! (দয়া করে) আমার ব্যাপারে তাড়াতাড়ি কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না। আমি কুরাইশদের সঙ্গে স্বগোত্রীয় কেউ ছিলাম না বরং তাদের বন্ধু অর্থাৎ তাদের মিত্র গোত্রের একজন ছিলাম। আপনার সঙ্গে যেসব মুহাজির আছেন কুরায়শ গোত্রে তাঁদের অনেক আত্মীয়-স্বজন রয়েছেন। যারা এদের পরিবার-পরিজন, ধন-সম্পদের হিফাযাত করছে। আর কুরাইশ গোত্রে যেহেতু আমার বংশগত কোন সম্পর্ক নেই, তাই আমি ভাবলাম, যদি আমি তাদের কোন উপকার করে দেই তাহলে তারা আমার পরিবার-পরিজনের হিফাযাতে এগিয়ে আসবে। কখনো আমি আমার দ্বীন পরিত্যাগ করা কিংবা ইসলাম গ্রহনের পর কুফরকে গ্রহণ করার জন্য এ কাজ করিনি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বললেন, সে (হাতিব) তোমাদের কাছে সত্য কথাই বলেছে। ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমাকে অনুমতি দিন, আমি এ মুনাফিকের গর্দান উড়িয়ে দেব। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, দেখ সে বদর যুদ্ধে যোগদান করেছে। তুমি তো জান না, হয়তো আল্লাহ তা’আলা বাদ্‌রে যোগদানকারীদের উপর সন্তুষ্ট হয়ে বলে দিয়েছেন, তোমরা যা খুশী করতে থাক, আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছি। তখন আল্লাহ তা’আলা এ সূরাহ অবতীর্ণ করেনঃ “ওহে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা আমার শত্রু ও তোমাদের শত্রুকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমারা তো তাদের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও, অথচ তারা তোমাদের কাছে যে সত্য এসেছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা রসূলকে এবং তোমাদেরকে মাক্কাহ থেকে নির্বাসিত করেছে এ কারণে যে, তোমরা তোমাদের রব আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান রাখ। যদি তোমরা বের হয়ে থাক আমার পথে জিহাদ করার উদ্দেশে এবং আমার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য, তবে কেন গোপনে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাও? আর তোমরা যা গোপন কর এবং যা প্রকাশ কর তা আমি ভাল জানি। তোমরদের যে কেউ এরূপ করে, সে তো সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যায়”-(সূরাহ আল-মুমতাহিনাহ ৬০/১)। [৩০০৭] (আ.প্র. ৩৯৪০, ই.ফা. ৩৯৪৪)

৬৪/৪৮. অধ্যায়ঃ
রমযান মাসে সংঘটিত মাক্কাহ বিজয়ের যুদ্ধ

৪২৭৫
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি জানিয়েছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমাযান মাসে মাক্কাহ বিজয়ের যুদ্ধ করেছেন। বর্ণনাকারী যুহরী (রাঃ) বলেন, আমি সা’ঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব (রহঃ)-কেও একই রকম বর্ণনা করতে শুনেছি। আরেকটি সূত্র দিয়ে তিনি ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু ‘আবব্দুল্লাহ (রহঃ)-এর মাধ্যমে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, ‘আবব্দুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস বলেছেন, (মাক্কাহ অভিমুখে রওয়ানা হয়ে) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওম পালন করছিলেন। অবশেষে তিনি যখন কুদাইদ এবং উস্‌ফান নামক স্থানদ্বয়ের মাঝে কাদীদ নামক জায়গায় ঝরণার কাছে পৌঁছেন তখন তিনি ইফতার করেন। এরপর রমাযান মাস শেষ হওয়া পর্যন্ত তিনি সওম পালন করেননি। [১৯৪৪] (আ.প্র. ৩৯৪১, ই.ফা. ৩৯৪৫)

৪২৭৬
مَحْمُوْدٌ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ قَالَ أَخْبَرَنِي الزُّهْرِيُّ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ فِيْ رَمَضَانَ مِنَ الْمَدِيْنَةِ وَمَعَهُ عَشَرَةُ آلَافٍ وَذَلِكَ عَلَى رَأْسِ ثَمَانِ سِنِيْنَ وَنِصْفٍ مِنْ مَقْدَمِهِ الْمَدِيْنَةَ فَسَارَ هُوَ وَمَنْ مَعَهُ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ إِلَى مَكَّةَ يَصُوْمُ وَيَصُوْمُوْنَ حَتَّى بَلَغَ الْكَدِيْدَ وَهُوَ مَاءٌ بَيْنَ عُسْفَانَ وَقُدَيْدٍ أَفْطَرَ وَأَفْطَرُوْا قَالَ الزُّهْرِيُّ وَإِنَّمَا يُؤْخَذُ مِنْ أَمْرِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْآخِرُ فَالْآخِرُ.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমাযান মাসে মাদীনাহ থেকে (মাক্কাহ অভিযানে) রওয়ানা হন। তাঁর সঙ্গে ছিল দশ হাজার সহাবী। তখন হিজরাত করে চলে আসার সাড়ে আট বছর পার হয়ে গিয়েছিল। তিনি ও তাঁর সঙ্গী মুসলিমগণ সওম অবস্থায়ই মাক্কাহ অভিমুখে রওয়ানা হন। অবশেষে তিনি যখন উস্‌ফান এবং কুদাইদ স্থানদ্বয়ের মধ্যবর্তী কাদীদ নামক জায়গায় ঝরণার নিকট পৌঁছলেন তখন তিনি ও সঙ্গী মুসলিমগণ ইফতার করলেন। যুহরী (রহঃ) বলেছেনঃ উম্মতের জীবনযাত্রায় গ্রহণ করার ব্যাপারে রসূল্ললাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাজকর্মের শেষোক্ত ‘আমালটিকেই চূড়ান্ত দলীল হিসাবে গণ্য করা হয়। [৬৭] [১৯৪৪] (আ.প্র. ৩৯৪২, ই.ফা. ৩৯৪৬)

[৬৭] রসূল্ললাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন সময় একটি কাজ করে থাকলেও পরে যদি তার ব্যতিক্রম কোন কাজ করে থাকেন, তাহলে পরবর্তীটিই দলীল হিসাবে গণ্য হবে। এবং পূর্বের কাজটি মানসূখ (রহিত) হিসাবে পরিগণিত হবে।

৪২৭৭
عَيَّاشُ بْنُ الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْأَعْلَى حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ رَمَضَانَ إِلَى حُنَيْنٍ وَالنَّاسُ مُخْتَلِفُوْنَ فَصَائِمٌ وَمُفْطِرٌ فَلَمَّا اسْتَوَى عَلَى رَاحِلَتِهِ دَعَا بِإِنَاءٍ مِنْ لَبَنٍ أَوْ مَاءٍ فَوَضَعَهُ عَلَى رَاحَتِهِ أَوْ عَلَى رَاحِلَتِهِ ثُمَّ نَظَرَ إِلَى النَّاسِ فَقَالَ الْمُفْطِرُوْنَ لِلصُّوَّامِ أَفْطِرُوْا.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমাযান মাসে হুনাইনের দিকে রওয়ানা হয়েছিলেন। সঙ্গী মুসলিমদের অবস্থা ছিল ভিন্ন ভিন্ন। কেউ ছিলেন সওমরত। কেউ ছিলেন সওমহীন। তাই তিনি যখন সওয়ারীর উপর বসলেন তখন তিনি একপাত্র দুধ কিংবা পানি আনতে বললেন। তারপর তিনি পাত্রটি হাতের উপর কিংবা সওয়ারীর উপর রেখে লোকজনের দিকে তাকালেন। এ অবস্থা দেখে সওমবিহীন লোকেরা সওমরত লোকদেরকে ডেকে বললেনঃ তোমরা সওম ভেঙ্গে ফেল। [১৯৪৪] (আ.প্র. ৩৯৪৩, ই.ফা. ৩৯৪৭)

৪২৭৮
وَقَالَ عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَامَ الْفَتْحِ وَقَالَ حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .

ইবনু ‘আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘আবদুর রায্যাক, মা‘মার, আইয়ুব, ‘ইকরিমা (রহ.) সূত্রে ইবনু ‘আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, মক্কা বিজয়ের বছর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অভিযানে বের হয়েছিলেন। এভাবে হাম্মাদ ইবনু যায়িদ আইয়ূব, ‘ইকরিমাহ (রহ.) ইবনু ‘আববাস (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেও বিষয়টি বর্ণনা করেছেন। [১৯৪৪] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৪৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৪৭)

৪২৭৯
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ طَاوُسٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ سَافَرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ رَمَضَانَ فَصَامَ حَتَّى بَلَغَ عُسْفَانَ ثُمَّ دَعَا بِإِنَاءٍ مِنْ مَاءٍ فَشَرِبَ نَهَارًا لِيُرِيَهُ النَّاسَ فَأَفْطَرَ حَتَّى قَدِمَ مَكَّةَ قَالَ وَكَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ يَقُوْلُ صَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي السَّفَرِ وَأَفْطَرَ فَمَنْ شَاءَ صَامَ وَمَنْ شَاءَ أَفْطَرَ.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমাযান মাসে সওয়মরত অবস্থায় (মাক্কাহ আভিমুখে) সফর করেছেন। অবশেষে তিনি উস্‌ফান নামক স্থানে পৌঁছলে একপাত্র পানি দিতে বললেন। তারপর দিনের বেলাতেই সে পানি পান করলেন যেন তিনি লোকজনকে তাঁর সওমবিহীন অবস্থা দেখাতে পারেন। এরপর মাক্কাহ পৌঁছা পর্যন্ত তিনি আর সওম পালন করেননি। বর্ণনাকারী বলেছেন, পরবর্তীকালে ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলতেন সফরে কোন সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওম পালন করতেন আবার কোন সময় তিনি সওমবিহীন আবস্থায়ও ছিলেন। তাই সফরে যার ইচ্ছা সওম পালন করবে যার ইচ্ছে সওমবিহীন অবস্থায় থাকবে। (সফর শেষে বাসস্থানে তা আদায় করে নিতে হবে)। [১৯৪৪] (আ.প্র. ৩৯৪৪, ই.ফা. ৩৯৪৮)

৬৪/৪৯. অধ্যায়ঃ
মাক্কাহ বিজয়ের দিনে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোথায় ঝাণ্ডা স্থাপন করেছিলেন

৪২৮০
عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ لَمَّا سَارَ رَسُوْلُ اللهِ عَامَ الْفَتْحِ فَبَلَغَ ذَلِكَ قُرَيْشًا خَرَجَ أَبُوْ سُفْيَانَ بْنُ حَرْبٍ وَحَكِيْمُ بْنُ حِزَامٍ وَبُدَيْلُ بْنُ وَرْقَاءَ يَلْتَمِسُوْنَ الْخَبَرَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَقْبَلُوْا يَسِيْرُوْنَ حَتَّى أَتَوْا مَرَّ الظَّهْرَانِ فَإِذَا هُمْ بِنِيْرَانٍ كَأَنَّهَا نِيْرَانُ عَرَفَةَ فَقَالَ أَبُوْ سُفْيَانَ مَا هَذِهِ لَكَأَنَّهَا نِيْرَانُ عَرَفَةَ فَقَالَ بُدَيْلُ بْنُ وَرْقَاءَ نِيْرَانُ بَنِيْ عَمْرٍو فَقَالَ أَبُوْ سُفْيَانَ عَمْرٌو أَقَلُّ مِنْ ذَلِكَ فَرَآهُمْ نَاسٌ مِنْ حَرَسِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَدْرَكُوْهُمْ فَأَخَذُوْهُمْ فَأَتَوْا بِهِمْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَسْلَمَ أَبُوْ سُفْيَانَ فَلَمَّا سَارَ قَالَ لِلْعَبَّاسِ احْبِسْ أَبَا سُفْيَانَ عِنْدَ حَطْمِ الْخَيْلِ حَتَّى يَنْظُرَ إِلَى الْمُسْلِمِيْنَ فَحَبَسَهُ الْعَبَّاسُ فَجَعَلَتْ الْقَبَائِلُ تَمُرُّ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم تَمُرُّ كَتِيْبَةً كَتِيْبَةً عَلَى أَبِيْ سُفْيَانَ فَمَرَّتْ كَتِيْبَةٌ قَالَ يَا عَبَّاسُ مَنْ هَذِهِ قَالَ هَذِهِ غِفَارُ قَالَ مَا لِيْ وَلِغِفَارَ ثُمَّ مَرَّتْ جُهَيْنَةُ قَالَ مِثْلَ ذَلِكَ ثُمَّ مَرَّتْ سَعْدُ بْنُ هُذَيْمٍ فَقَالَ مِثْلَ ذَلِكَ وَمَرَّتْ سُلَيْمُ فَقَالَ مِثْلَ ذَلِكَ حَتَّى أَقْبَلَتْ كَتِيْبَةٌ لَمْ يَرَ مِثْلَهَا قَالَ مَنْ هَذِهِ قَالَ هَؤُلَاءِ الْأَنْصَارُ عَلَيْهِمْ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ مَعَهُ الرَّايَةُ فَقَالَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ يَا أَبَا سُفْيَانَ الْيَوْمَ يَوْمُ الْمَلْحَمَةِ الْيَوْمَ تُسْتَحَلُّ الْكَعْبَةُ فَقَالَ أَبُوْ سُفْيَانَ يَا عَبَّاسُ حَبَّذَا يَوْمُ الذِّمَارِ ثُمَّ جَاءَتْ كَتِيْبَةٌ وَهِيَ أَقَلُّ الْكَتَائِبِ فِيْهِمْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ وَرَايَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَعَ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ فَلَمَّا مَرَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِأَبِيْ سُفْيَانَ قَالَ أَلَمْ تَعْلَمْ مَا قَالَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ قَالَ مَا قَالَ قَالَ كَذَا وَكَذَا فَقَالَ كَذَبَ سَعْدٌ وَلَكِنْ هَذَا يَوْمٌ يُعَظِّمُ اللهُ فِيْهِ الْكَعْبَةَ وَيَوْمٌ تُكْسَى فِيْهِ الْكَعْبَةُ قَالَ وَأَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ تُرْكَزَ رَايَتُهُ بِالْحَجُوْنِ قَالَ عُرْوَةُ وَأَخْبَرَنِيْ نَافِعُ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ قَالَ سَمِعْتُ الْعَبَّاسَ يَقُوْلُ لِلزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ يَا أَبَا عَبْدِ اللهِ هَا هُنَا أَمَرَكَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ تَرْكُزَ الرَّايَةَ قَالَ وَأَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَئِذٍ خَالِدَ بْنَ الْوَلِيْدِ أَنْ يَدْخُلَ مِنْ أَعْلَى مَكَّةَ مِنْ كَدَاءٍ وَدَخَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ كُدَا فَقُتِلَ مِنْ خَيْلِ خَالِدِ بْنِ الْوَلِيْدِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَوْمَئِذٍ رَجُلَانِ حُبَيْشُ بْنُ الْأَشْعَرِ وَكُرْزُ بْنُ جابِرٍ الْفِهْرِيُّ.

হিশামের পিতা [‘উরওয়াহ ইবনু যুবায়র (রাঃ)] থেকে বর্ণিতঃ

মাক্কাহ বিজয়ের বছর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (মাক্কাহ অভিমুখে) রওয়ানা করেছেন। এ সংবাদ কুরাইশদের কাছে পৌঁছালে আবূ সুফ্‌ইয়ান ইবনু হার্‌ব, হাকীম ইবনু হিযাম এবং বুদাইল ইবনু ওয়ারকা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সংবাদ জানার জন্য রাতের বেলা সামনের দিকে অগ্রসর হয়ে (মক্কার অদূরে) মাররুয জাহ্‌রান নামক স্থান পর্যন্ত এসে পৌঁছালে তারা আরাফার ময়দানে প্রজ্জ্বলিত আলোর মতো অসংখ্য আগুন দেখতে পেল। আবূ সুফ্‌ইয়ান বলে উঠল, ঠিক আরাফাহ্‌র ময়দানে প্রজ্জ্বলিত আলোর মতো এ সব কিসের আলো? বুদাইল ইবনু ওয়ারকা উত্তর করল, এগুলো ‘আমর গোত্রের (চুলার) আলো। আবূ সুফ্‌ইয়ান বলল, ‘আমর গোত্রের লোক সংখ্যা এর চেয়ে অনেক কম। এমতাবস্থায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কয়েকজন প্রহরী তাদেরকে দেখে ফেলল এবং কাছে গিয়ে তাদেরকে পাকড়াও করে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে নিয়ে এল। এ সময় আবূ সুফ্‌ইয়ান ইসলাম গ্রহণ করল। এরপর তিনি [রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] যখন (সেনাবাহিনী সহ) রওয়ানা হলেন তখন ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বললেন, আবূ সুফ্‌ইয়ানকে পথের একটি সংকীর্ণ জায়গায় দাঁড় করাবে, যেন সে মুসলিমদের পুরো সেনাদলটি দেখতে পায়। তাই ‘আব্বাস (রাঃ) তাকে যথাস্থানে থামিয়ে রাখলেন। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে আগমনকারী বিভিন্ন গোত্রের লোকজন আলাদা আলাদাভাবে খণ্ড দলে আবূ সুফইয়ানের স্মমুখ দিয়ে অতিক্রম করতে লাগল। (প্রথমে) একটি দল অতিক্রম করে গেল। আবূ সুফ্‌ইয়ান বললেন, হে ‘আব্বাস (রাঃ) এরা কারা? ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, এরা গিফার গোত্রের লোক। আবূ সুফ্‌ইয়ান বললেন, আমার এবং গিফার গোত্রের মধ্যে কোন যুদ্ধ-বিগ্রহ ছিল না। এরপর জুহাইনা গোত্রের লোকেরা অতিক্রম করে গেলেন, আবূ সুফ্‌ইয়ান অনুরূপ বললেন। তারপর সা’দ ইবনু হুযাইম গোত্র অতিক্রম করল, তখনো আবূ সুফ্‌ইয়ান অনুরূপ বললেন। তারপর সুলাইম গোত্র অতিক্রম করলেও আবূ সুফ্‌ইয়ান অনুরূপ বললেন। অবশেষে একটি বিরাট বাহিনী তার সামনে এল যে, এত বিরাট বাহিনী এ সময় তিনি আর দেখেননি। তাই জিজ্ঞেস করলেন, এরা কারা? ‘আব্বাস (রাঃ) উত্তর দিলেন, এরাই আনসারবৃন্দ। সা’দ ইবনু ‘উবাদাহ (রাঃ) তাঁদের দলপতি। তাঁর হাতেই রয়েছে তাঁদের পতাকা। সা’দ ইবনু ‘উবাদাহ (রাঃ) বললেন, হে আবূ সুফইয়ান! আজকের দিন রক্তপাতের দিন, আজকের দিন কা’বার অভ্যন্তরে রাক্তপাত হালাল হওয়ার দিন। আবূ সুফ্‌ইয়ান বললেন, হে ‘আব্বাস! আজ হারাম ও তার অধিবাসীদের প্রতি তোমাদের করুণা প্রদর্শনেরও কত উত্তম দিন। তারপর আরেকটি দল আসল। এটি ছিল সবচেয়ে ছোট দল। আর এদের মধ্যেই ছিলেন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীগণ। যুবায়র ইবনুল আওয়াম (রাঃ)-এর হাতে ছিল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পতাকা। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন আবূ সুফ্‌ইয়ানের সামনে দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, তখন আবূ সুফ্‌ইয়ান বললেন, সা’দ ইবনু ‘উবাদাহ কী বলছে আপনি তা কি জানেন? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে কী বলেছে? আবূ সুফ্‌ইয়ান বললেন, সে এ রকম বলেছে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সা’দ ঠিক বলেনি বরং আজ এমন একটি দিন যে দিন আল্লাহ কা’বাকে মর্যাদায় সমুন্নত করবেন। আজকের দিনে কা’বাকে গিলাফে আচ্ছাদিত করা হবে। বর্ণনাকারী বলেন, (মক্কায়) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাজুন নামক স্থানে তাঁর পতাকা স্থাপনের নির্দেশ দেন। বর্ণনাকারী উরওয়া নাফি’ ইবনু যুবায়র ইবনু মুত্‌ঈম ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি যুবায়র ইবনু আওয়াম (রাঃ)-কে (মাক্কাহ বিজয়ের পর একদা) বললেন, হে আবূ ‘আবদুল্লাহ! রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনাকে এ জায়গায়ই পতাকা স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। ‘উরওয়াহ (রাঃ) আরো বলেন, সে দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খালিদ ইবনু ওয়ালীদকে মক্কার উঁচু এলাকা কাদার দিক থেকে প্রবেশ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুদার দিক দিয়ে প্রবেশ করেছিলেন। সেদিন খালিদ ইবনু ওয়ালীদের অশ্বারোহী সৈন্যদের মধ্য থেকে হুবায়শ ইবনুল আশআর এবং কুরয ইবনু জাবির ফিহ্‌রী (রাঃ)-এ দু’জন শহীদ হয়েছিলেন। [২৯৭৬] (আ.প্র. ৩৯৪৫, ই.ফা. ৩৯৪৯)

৪২৮১
أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ قُرَّةَ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ مُغَفَّلٍ يَقُوْلُ رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ عَلَى نَاقَتِهِ وَهُوَ يَقْرَأُ سُوْرَةَ الْفَتْحِ يُرَجِّعُ وَقَالَ لَوْلَا أَنْ يَجْتَمِعَ النَّاسُ حَوْلِيْ لَرَجَّعْتُ كَمَا رَجَّعَ.

আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফ্‌ফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মাক্কাহ বিজয়ের দিন আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর উটনীর উপর দেখেছি, তিনি ‘তারজী’ অর্থাৎ পূর্ণ তাজভীদ সহকারে সূরাহ আল-ফাত্‌হ তিলাওয়াত করছেন। বর্ণনাকারী মু’আবিয়াহ ইবনু কুররাহ (রহঃ) বলেন, যদি আমার চারপাশে লোকজন জমায়েত হওয়ার আশঙ্কা না থাকত, তা হলে ‘উবাইদুল্লাহ ইবনু মুগাফ্‌ফাল (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর তিলাওয়াত বর্ণনা করতে যেভাবে তারজী করেছিলেন আমিও ঠিক সে রকমে তারজী করে তিলওয়াত করতাম। [৪৮৩৫, ৫০৩৪, ৫০৪৭, ৭৫৪০] (আ.প্র. ৩৯৪৬, ই.ফা. ৩৯৫০)

৪২৮২
سُلَيْمَانُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ حَدَّثَنَا سَعْدَانُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِيْ حَفْصَةَ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَلِيِّ بْنِ حُسَيْنٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ عُثْمَانَ عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ أَنَّهُ قَالَ زَمَنَ الْفَتْحِ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَيْنَ تَنْزِلُ غَدًا قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَهَلْ تَرَكَ لَنَا عَقِيْلٌ مِنْ مَنْزِلٍ؟

উসামাহ ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি মাক্কাহ বিজয়ের কালে বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আগামীকাল আপনি কোথায় অবস্থান করবেন? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আকীল কি আমাদের জন্য কোন বাড়ি অবশিষ্ট রেখে গেছে? [১৫৮৮] (আ.প্র. ৩৯৪৭, ই.ফা. ৩৯৫১)

৪২৮৪
أَبُو الْيَمَانِ حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْزِلُنَا إِنْ شَاءَ اللهُ إِذَا فَتَحَ اللهُ الْخَيْفُ حَيْثُ تَقَاسَمُوْا عَلَى الْكُفْرِ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, (মাক্কাহ বিজয়ের পূর্বে) রসূল্লুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ আমাদেরকে বিজয় দান করলে ইনশাআল্লাহ ‘খাইফ’ হবে আমাদের অবস্থানস্থল, যেখানে কাফিররা কুফরীর উপর পরস্পরের শপথ গ্রহণ করেছিল। [৬৯] [১৫৮৯] (আ.প্র. ৩৯৪৮, ই.ফা. ৩৯৫২)

[৬৯] হিজরাতের পূর্বে কাফিররা সম্মিলিতভাবে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) , বানূ হাশিম ও বনূ মুত্তালিবকে মাক্কাহ হতে বহিষ্কার করে খাইফ এলাকায় নির্বাসন দেয়ার ফয়সালা করেছিল। পরিশেষে তারা পরস্পর শপথ করে একটি চুক্তিনামাও স্বাক্ষর করেছিলেন। নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এদিকেই ইশারা করেছিলেন।

৪২৮৫
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ أَرَادَ حُنَيْنًا مَنْزِلُنَا غَدًا إِنْ شَاءَ اللهُ بِخَيْفِ بَنِيْ كِنَانَةَ حَيْثُ تَقَاسَمُوْا عَلَى الْكُفْرِ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূল্লুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হুনাইনের উদ্দেশে রওয়ানা হয়ে বললেন, বানী কিনানার খায়ফ নামক স্থানই হবে আমাদের আগামীকালের আবস্থানস্থল, যেখানে কাফিররা কুফরের উপর পরস্পরের শপথ গ্রহণ করেছিল। [১৫৮৯] (আ.প্র. ৩৯৪৯, ই.ফা. ৩৯৫৩)

৪২৮৬
يَحْيَى بْنُ قَزَعَةَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ مَكَّةَ يَوْمَ الْفَتْحِ وَعَلَى رَأْسِهِ الْمِغْفَرُ فَلَمَّا نَزَعَهُ جَاءَ رَجُلٌ فَقَالَ ابْنُ خَطَلٍ مُتَعَلِّقٌ بِأَسْتَارِ الْكَعْبَةِ فَقَالَ اقْتُلْهُ قَالَ مَالِكٌ وَلَمْ يَكُنْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْمَا نُرَى وَاللهُ أَعْلَمُ يَوْمَئِذٍ مُحْرِمًا.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মাক্কাহ বিজয়ের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাথায় লোহার টুপি পরিহিত অবস্থায় মক্কায় প্রবেশ করেছেন। তিনি সবেমাত্র টুপি খুলেছেন এ সময় এক ব্যক্তি এসে বলল, ইবনু খাতাল কা’বার গিলাফ ধরে দাঁড়িয়ে আছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাকে হত্যা কর। [৭০] ইমাম মালিক (রহঃ) বলেছেন, আমাদের ধারণামতে সেদিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইহ্‌রাম অবস্থায় ছিলেন না। তবে আল্লাহ আমাদের চেয়ে ভাল জানেন। [১৮৪৬] (আ.প্র. ৩৯৫০, ই.ফা. ৩৯৫৪)

[৭০] খাতাল কুফর ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণ করেছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে পুনরায় মুরতাদ হয়ে যায় এবং অন্যায়ভাবে কয়েকজন মুসলিমকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এ জন্যই নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মাক্কাহ বিজয় করেন তখন তিনি তাকে হত্যার নির্দেশ দেন। তাকে যমযম কূপ ও মাকামে ইবরাহীমের মধ্যবর্তী স্থানে হত্যা করা হয়।

৪২৮৭
صَدَقَةُ بْنُ الْفَضْلِ أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ ابْنِ أَبِيْ نَجِيْحٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ أَبِيْ مَعْمَرٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ دَخَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَكَّةَ يَوْمَ الْفَتْحِ وَحَوْلَ الْبَيْتِ سِتُّوْنَ وَثَلَاثُ مِائَةِ نُصُبٍ فَجَعَلَ يَطْعُنُهَا بِعُوْدٍ فِيْ يَدِهِ وَيَقُوْلُ جَاءَ الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ جَاءَ الْحَقُّ وَمَا يُبْدِئُ الْبَاطِلُ وَمَا يُعِيْدُ.

আবদুল্লাহ [ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মাক্কাহ বিজয়ের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মক্কায় প্রবেশ করলেন, তখন বাইতুল্লাহর চারপাশ ঘিরে তিনশত ষাটটি প্রতিমা স্থাপিত ছিল। তিনি হাতে একটি লাঠি নিয়ে প্রতিমাগুলোকে আঘাত করতে থাকলেন আর বলতে থাকলেন, হাক এসেছে, বাতিল অপসৃত হয়েছে। হাক এসেছে, বাতিলের উদ্ভব বা পুনরুত্থান আর ঘটবে না। [২৪৭৮] (আ.প্র. ৩৯৫১, ই.ফা. ৩৯৫৫)

৪২৮৮
إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ حَدَّثَنَا أَيُّوْبُ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَمَّا قَدِمَ مَكَّةَ أَبَى أَنْ يَدْخُلَ الْبَيْتَ وَفِيْهِ الْآلِهَةُ فَأَمَرَ بِهَا فَأُخْرِجَتْ فَأُخْرِجَ صُوْرَةُ إِبْرَاهِيْمَ وَإِسْمَاعِيْلَ فِيْ أَيْدِيْهِمَا مِنَ الْأَزْلَامِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَاتَلَهُمْ اللهُ لَقَدْ عَلِمُوْا مَا اسْتَقْسَمَا بِهَا قَطُّ ثُمَّ دَخَلَ الْبَيْتَ فَكَبَّرَ فِيْ نَوَاحِي الْبَيْتِ وَخَرَجَ وَلَمْ يُصَلِّ فِيْهِ تَابَعَهُ مَعْمَرٌ عَنْ أَيُّوْبَ وَقَالَ وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا أَيُّوْبُ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মক্কায় আগমন করার পর তৎক্ষনাৎ বাইতুল্লাহ্‌র ভিতরে প্রবেশ করা থেকে বিরত রইলেন, কেননা সে সময় বাইতুল্লাহর ভিতরে অনেক প্রতিমা স্থাপিত ছিল। প্রতিমাগুলো বের করে ফেলা হল। তখন ইব্‌রাহীম ও ইসমাঈল (আঃ)-এর মূর্তিও বেরিয়ে আসল। তাদের উভয়ের হাতে ছিল মুশরিকদের ভাগ্য নির্ণয়ের কয়েকটি তীর। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন। তারা অবশ্যই জানত যে, ইব্‌রাহীম (আঃ) ও ইসমাঈল (আঃ) কক্ষনো তীর দিয়ে ভাগ্য নির্ণয় করেননি। এরপর তিনি বাইতুল্লাহ্‌র ভিতরে প্রবেশ করলেন। আর প্রত্যেক কোণায় কোণায় গিয়ে আল্লাহু আকবার ধ্বনি দিলেন এবং বেরিয়ে আসলেন। আর সেখানে সলাত আদায় করেননি। মা’মার (রহঃ) আইয়ুব (রহঃ) সূত্রে এবং ওয়াহায়ব (রহঃ) আইয়ুব (রহঃ)-এর মাধ্যমে ‘ইকরামাহ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। [৩৯৮] (আ.প্র. ৩৯৫২, ই.ফা. ৩৯৫৬)

৬৪/৫০. অধ্যায়ঃ
মাক্কাহ নগরীর উঁচু এলাকার দিক দিয়ে নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রবেশের বর্ণনা

৪২৮৯
وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِيْ يُوْنُسُ قَالَ أَخْبَرَنِيْ نَافِعٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَقْبَلَ يَوْمَ الْفَتْحِ مِنْ أَعْلَى مَكَّةَ عَلَى رَاحِلَتِهِ مُرْدِفًا أُسَامَةَ بْنَ زَيْدٍ وَمَعَهُ بِلَالٌ وَمَعَهُ عُثْمَانُ بْنُ طَلْحَةَ مِنَ الْحَجَبَةِ حَتَّى أَنَاخَ فِي الْمَسْجِدِ فَأَمَرَهُ أَنْ يَأْتِيَ بِمِفْتَاحِ الْبَيْتِ فَدَخَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَعَهُ أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ وَبِلَالٌ وَعُثْمَانُ بْنُ طَلْحَةَ فَمَكَثَ فِيْهِ نَهَارًا طَوِيْلًا ثُمَّ خَرَجَ فَاسْتَبَقَ النَّاسُ فَكَانَ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ أَوَّلَ مَنْ دَخَلَ فَوَجَدَ بِلَالًا وَرَاءَ الْبَابِ قَائِمًا فَسَأَلَهُ أَيْنَ صَلَّى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَشَارَ لَهُ إِلَى الْمَكَانِ الَّذِيْ صَلَّى فِيْهِ قَالَ عَبْدُ اللهِ فَنَسِيْتُ أَنْ أَسْأَلَهُ كَمْ صَلَّى مِنْ سَجْدَةٍ.

আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মাক্কাহ বিজয়ের দিন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর সওয়ারীতে আরোহণ করে উসামাহ ইবনু যায়িদকে নিজের পিছনে বসিয়ে মাক্কাহ নগরীর উঁচু এলাকার দিক দিয়ে মক্কায় প্রবেশ করেছেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিলাল এবং বাইতুল্লাহর চাবি রক্ষক ‘উসমান ইবনু ত্ব্লহা। অবশেষে তিনি [নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)] মাসজিদে হারামের সামনে সওয়ারী থামালেন এবং ‘উসমান ইবনু ত্ব্লহাকে চাবি এনে (দরজা খোলার) আদেশ করলেন। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (কা’বায়) প্রবেশ করলেন। সে সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন উসামাহ ইবনু যায়্দ, বিলাল এবং ‘উসমান ইবনু ত্ব্লহা (রাঃ)। সেখানে তিনি দিনের দীর্ঘ সময় পর্যন্ত অবস্থান করে (সলাত আদায়, তাকবীর ও অনান্য দু’আ করার পর) বের হয়ে এলেন। তখন অনান্য লোক দ্রুত ছুটে এল। তন্মধ্যে ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) প্রথমেই প্রবেশ করলেন এবং বিলাল (রাঃ)-কে দরজার পাশে দাঁড়ানো পেয়ে জিজ্ঞাসা করলেন-রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোন জায়গায় সলাত আদায় করেছেন? তখন বিলাল তাকে তাঁর সলাতের জায়গাটি ইশারা করে দেখিয়ে দিলেন। ‘আব্দুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কত রাক’আত আদায় করেছিলেন বিলাল (রাঃ)-কে আমি এ কথাটি জিজ্ঞেস করতে ভুলে গিয়েছিলাম। [৩৯৭] (আ.প্র. ৩৯৫৩, ই.ফা. ৩৯৫৬)

৪২৯০
الْهَيْثَمُ بْنُ خَارِجَةَ حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ مَيْسَرَةَ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَخْبَرَتْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ عَامَ الْفَتْحِ مِنْ كَدَاءٍ الَّتِيْ بِأَعْلَى مَكَّةَ تَابَعَهُ أَبُوْ أُسَامَةَ وَوُهَيْبٌ فِيْ كَدَاءٍ.

আয়িশাহ [রা.] থেকে বর্ণিতঃ

মাক্কাহ বিজয়ের বছর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মক্কার উঁচু এলাকা ‘কাদা’-এর দিক দিয়ে প্রবেশ করেছেন। আবূ উসামাহ এবং ওহাইব (রহঃ) ‘কাদা’-এর দিক দিয়ে প্রবেশ করার বর্ণনায় হাফস্‌ ইবনু মাইসারাহ (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন। [১৫৭৭] (অ.প্র. ৩৯৫৩, ই.ফা. ৩৯৫৬)

৪২৯১
عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ دَخَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَامَ الْفَتْحِ مِنْ أَعْلَى مَكَّةَ مِنْ كَدَاءٍ.

হিশামের পিতা থেকে বর্ণিতঃ

মাক্কাহ জয়ের বছর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মক্কার উঁচু এলাকা অর্থাৎ ‘কাদা’ নামক স্থান দিয়ে প্রবেশ করেছিলেন। [১৫৭৭] (আ.প্র. ৩৯৫৪, ই.ফা. ৩৯৫৭)

৬৪/৫১. অধ্যায়ঃ
মাক্কাহ বিজয়ের দিন নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অবস্থানস্হল

৪২৯২
أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَمْرٍو عَنْ ابْنِ أَبِيْ لَيْلَى مَا أَخْبَرَنَا أَحَدٌ أَنَّهُ رَأَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّيْ الضُّحَى غَيْرَ أُمِّ هَانِئٍ فَإِنَّهَا ذَكَرَتْ أَنَّهُ يَوْمَ فَتْحِ مَكَّةَ اغْتَسَلَ فِيْ بَيْتِهَا ثُمَّ صَلَّى ثَمَانِيَ رَكَعَاتٍ قَالَتْ لَمْ أَرَهُ صَلَّى صَلَاةً أَخَفَّ مِنْهَا غَيْرَ أَنَّهُ يُتِمُّ الرُّكُوْعَ وَالسُّجُوْدَ.

ইবনু আবী লাইলা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে চাশতের সলাত আদায় করতে দেখেছে-এ কথাটি একমাত্র উম্মু হানী (রাঃ) ব্যতীত অন্য কেউ আমাদের কাছে বর্ণনা করেননি। তিনি বলেছেন যে, মাক্কাহ বিজয়ের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর বাড়িতে গোসল করেছিলেন, এরপর তিনি আট রাক’আত সলাত আদায় করেছেন। উম্মু হানী (রাঃ) বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে এ সলাত অপেক্ষা হালকাভাবে অন্য কোন সলাত আদায় করতে দেখিনি। তবে তিনি রুকূ’, সাজদাহ্‌ পুরোপুরিই আদায় করেছিলেন। [১১০৩] (আ.প্র. ৩৯৫৫, ই.ফা. ৩৯৫৮)

৬৪/৫২. অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নেই

৪২৯৩
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ أَبِي الضُّحَى عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ فِيْ رُكُوْعِهِ وَسُجُوْدِهِ سُبْحَانَكَ اللهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اللهُمَّ اغْفِرْ لِي.

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর সলাতের রুকূ ও সাজদাহ্‌য় পড়তেন, সুবহানাকা আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া বিহামদিকাল্লাহুম্মা গফির লী অর্থাৎ অতি পবিত্র। হে আল্লাহ! হে আমাদের প্রভু! আমি তোমারই প্রশংসা করছি। হে আল্লাহ, আমাকে ক্ষমা করে দাও। [৭৯৪] (আ.প্র. নাই, ই.ফা. ৩৯৬০)

৪২৯৪
أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنْ أَبِيْ بِشْرٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ عُمَرُ يُدْخِلُنِيْ مَعَ أَشْيَاخِ بَدْرٍ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لِمَ تُدْخِلُ هَذَا الْفَتَى مَعَنَا وَلَنَا أَبْنَاءٌ مِثْلُهُ فَقَالَ إِنَّهُ مِمَّنْ قَدْ عَلِمْتُمْ قَالَ فَدَعَاهُمْ ذَاتَ يَوْمٍ وَدَعَانِيْ مَعَهُمْ قَالَ وَمَا رُئِيْتُهُ دَعَانِيْ يَوْمَئِذٍ إِلَّا لِيُرِيَهُمْ مِنِّيْ فَقَالَ مَا تَقُوْلُوْنَ فِيْ {إِذَا جَآءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُوْنَ فِيْ دِيْنِ اللهِ أَفْوَاجًا} حَتَّى خَتَمَ السُّوْرَةَ فَقَالَ بَعْضُهُمْ أُمِرْنَا أَنْ نَحْمَدَ اللهَ وَنَسْتَغْفِرَهُ إِذَا نُصِرْنَا وَفُتِحَ عَلَيْنَا وَقَالَ بَعْضُهُمْ لَا نَدْرِيْ أَوْ لَمْ يَقُلْ بَعْضُهُمْ شَيْئًا فَقَالَ لِيْ يَا ابْنَ عَبَّاسٍ أَكَذَاكَ تَقُوْلُ قُلْتُ لَا قَالَ فَمَا تَقُوْلُ قُلْتُ هُوَ أَجَلُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَعْلَمَهُ اللهُ لَهُ {إِذَا جَآءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ}فَتْحُ مَكَّةَ فَذَاكَ عَلَامَةُ أَجَلِكَ {فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّه” كَانَ تَوَّابًا} قَالَ عُمَرُ مَا أَعْلَمُ مِنْهَا إِلَّا مَا تَعْلَمُ.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) তাঁর (পরামর্শ মজলিসে) বাদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বর্ষীয়ান সহাবাদের সঙ্গে আমাকেও শামিল করতেন। তাই তাঁদের কেউ কেউ বললেন, আপনি এ তরুণকে কেন আমাদের সঙ্গে মজলিসে শামিল করেন। তার মতো সন্তান তো আমাদেরও আছে। তখন ‘উমার (রাঃ) বললেন, ইবনু ‘আববাস (রাঃ) ঐ সব মানুষের একজন যাদের (মর্যাদা) সম্পর্কে আপনারা অবহিত আছেন। ইবনু ‘আববাস বলেন, একদিন তিনি (‘উমার) তাদেরকে পরামর্শ মজলিসে আহবান করলেন এবং তাঁদের সঙ্গে তিনি আমাকেও ডাকলেন। তিনি (ইবনু ‘আববাস) বলেন, আমার মনে হয় সেদিন তিনি তাঁদেরকে আমার ইল্ম দেখানোর জন্যই ডেকেছিলেন। ‘উমার বলেন, إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ وَرَأَيْتَ النَّاسَ يَدْخُلُوْنَ فِيْ دِيْنِ اللهِ أَفْوَاجًا এভাবে সূরাটি শেষ পর্যন্ত তিলাওয়াত করে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ সূরাহ সম্পর্কে আপনাদের কী বক্তব্য? তখন তাদের মধ্যে কেউ কেউ বললেন, এখানে আমাদেরকে আদেশ করা হয়েছে যে, যখন আমাদেরকে সাহায্য করা হবে এবং বিজয় দান করা হবে তখন যেন আমরা আল্লাহর প্রশংসা করি এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি। আর কেউ কেউ বললেন, আমরা অবগত নই। আবার কেউ কেউ কোন কথাই বলেননি। এ সময় ‘উমার (রাঃ) আমাকে বললেন, ওহে ইবনু ‘আববাস! তুমি কি এ রকমই মনে কর? আমি বললাম, জ্বী, না। তিনি বললেন, তা হলে তুমি কী বলতে চাও? আমি বললাম, এটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর ওফাতের সংবাদ। আল্লাহ তাঁকে তা জানিয়ে দিয়েছেন। ‘‘যখন আল্লাহর সাহায্য এবং বিজয় আসবে’’ অর্থাৎ মক্কা বিজয়। সেটাই হবে আপনার ওফাতের নিদর্শন। সুতরাং এ সময়ে আপনি আপনার প্রতিপালকের প্রশংসা ও পবিত্রতা বর্ণনা করবেন এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। অবশ্যই তিনি তাওবা কবুলকারী। এ কথা শুনে ‘উমার (রাঃ) বললেন, এ সূরাহ থেকে তুমি যা বুঝেছ আমি তা ব্যতীত আর অন্য কিছুই বুঝিনি। [৩৬২৭] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৫৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৯৬১)

৪২৯৫
سَعِيْدُ بْنُ شُرَحْبِيْلَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنِ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِيْ شُرَيْحٍ الْعَدَوِيِّ أَنَّهُ قَالَ لِعَمْرِو بْنِ سَعِيْدٍ وَهُوَ يَبْعَثُ الْبُعُوْثَ إِلَى مَكَّةَ ائْذَنْ لِيْ أَيُّهَا الْأَمِيْرُ أُحَدِّثْكَ قَوْلًا قَامَ بِهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْغَدَ يَوْمَ الْفَتْحِ سَمِعَتْهُ أُذُنَايَ وَوَعَاهُ قَلْبِيْ وَأَبْصَرَتْهُ عَيْنَايَ حِيْنَ تَكَلَّمَ بِهِ إِنَّهُ حَمِدَ اللهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ قَالَ إِنْ مَكَّةَ حَرَّمَهَا اللهُ وَلَمْ يُحَرِّمْهَا النَّاسُ لَا يَحِلُّ لِامْرِئٍ يُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ أَنْ يَسْفِكَ بِهَا دَمًا وَلَا يَعْضِدَ بِهَا شَجَرًا فَإِنْ أَحَدٌ تَرَخَّصَ لِقِتَالِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْهَا فَقُوْلُوْا لَهُ إِنَّ اللهَ أَذِنَ لِرَسُوْلِهِ وَلَمْ يَأْذَنْ لَكُمْ وَإِنَّمَا أَذِنَ لِيْ فِيْهَا سَاعَةً مِنْ نَهَارٍ وَقَدْ عَادَتْ حُرْمَتُهَا الْيَوْمَ كَحُرْمَتِهَا بِالأَمْسِ وَلْيُبَلِّغْ الشَّاهِدُ الْغَائِبَ فَقِيْلَ لِأَبِيْ شُرَيْحٍ مَاذَا قَالَ لَكَ عَمْرٌو قَالَ قَالَ أَنَا أَعْلَمُ بِذَلِكَ مِنْكَ يَا أَبَا شُرَيْحٍ إِنَّ الْحَرَمَ لَا يُعِيْذُ عَاصِيًا وَلَا فَارًّا بِدَمٍ وَلَا فَارًّا بِخَرْبَةٍ.

قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ الْخَرْبَةُ الْبَلِيَّةُ.

আবূ শুরাইহিল আদবী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

(মাদীনাহ্‌র শাসনকর্তা) আমর ইবনু সা’ঈদ যে সময় মাক্কাহ অভিমুখে সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করেছিলেন তখন আবূ শুরায়হিল আদবী (রাঃ) তাকে বলেছিলেন, হে আমাদের আমীর! আপনি আমাকে একটু অনুমতি দিন, আমি আপনাকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর একটি বাণী শোনাব, যেটি তিনি মাক্কাহ বিজয়ের পরের দিন বলেছিলেন। সেই বাণীটি আমার দু’কান শুনেছে। আমার হৃদয় তা হিফাযাত করে রেখেছে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন সে কথাটি বলেছিলেন তখন আমার দু’চোখ তাঁকে অবলোকন করেছে। প্রথমে তিনি [নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)] আলাহ্‌র প্রশংসা করেন এবং সানা পাঠ করেন। এরপর তিনি বলেন, আল্লাহ নিজে মক্কাকে হারাম ঘোষণা করেছেন। কোন মানুষ এ ঘোষণা দেয়নি। কাজেই ব্যক্তি আল্লাহ এবং ক্বিয়ামাত দিবসের উপর ঈমান এনেছে তার পক্ষে সেখানে রক্তপাত করা কিংবা এখানকার গাছপালা কর্তন করা কিছুতেই হালাল নয়। আর আল্লাহ্‌র রসূলের সে স্থানে লড়াইয়ের কথা বলে যদি কেউ নিজের জন্যও সুযোগ নিতে চায় তবে তোমরা তাকে বলে দিও, আল্লাহ তাঁর রসূলের ক্ষেত্রে (বিশেষভাবে) অনুমতি দিয়েছিলেন, তোমাদের জন্য কোন অনুমতি দেননি। আর আমার ক্ষেত্রেও তা একদিনের কিছু নির্দিষ্ট সময়ের জন্যই কেবল অনুমতি দেয়া হযেছিল। এরপর সেদিনই তা পুনরায় সেরূপ হারাম হয়ে গেছে যেরূপে তা একদিন পূর্বে হারাম ছিল। উপস্থিত লোকজন (এ কথাটি) অনুপস্থিত লোকের কাছে পৌঁছিয়ে দেবে| (বর্ননাকারী বলেন) পরবর্তী সময়ে আবু শুরায়হ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল যে, ‘আমর ইবনু সা’ঈদ আপনাকে কী উত্তর করেছিলেন? তিনি বললেন, ‘আম্‌র আমাকে বললেন, হে আবূ শুরায়হ্‌! হাদীসটির বিষয় আমি তোমার চেয়ে অধিক অবগত আছি। হারামে মাক্কাহ কোন অপরাধী বা খুনী পলাতককে কিংবা কোন বিপর্যয় সৃষ্টিকারী ফেরারীকে প্রশ্রয় দেয় না। আর ‘আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আল খারবাহ’ অর্থ বিপর্যয় সৃষ্টিকারী। [১০৪] (আ.প্র. ৩৯৫৭, ই.ফা. ৩৯৬২)

৪২৯৬
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِيْ حَبِيْبٍ عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِيْ رَبَاحٍ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ عَامَ الْفَتْحِ وَهُوَ بِمَكَّةَ إِنَّ اللهَ وَرَسُوْلَهُ حَرَّمَ بَيْعَ الْخَمْرِ.

জাবির ইবনু ‘আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মাক্কাহ বিজয়ের বছর তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে মক্কায় এ কথা বলতে শুনেছেন যে, আল্লাহ এবং তাঁর রসূল মদের ক্রয়-বিক্রয় হারাম করে দিয়েছেন। [৭১] [২২৩৬] (আ.প্র. ৩৯৫৮, ই.ফা. ৩৯৬৩)

[৭১] মদ পান যেমন হারাম তেমনি তার ক্রয়-বিক্রয়ও হারাম।

৬৪/৫৩. অধ্যায়ঃ
মাক্কাহ বিজয়ের সময় নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সেখানে অবস্থানকালের পরিমাণ

৪২৯৭
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ ح حَدَّثَنَا قَبِيْصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أَقَمْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَشْرًا نَقْصُرُ الصَّلَاةَ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে মক্কায় দশদিন অবস্থান করেছিলাম। সে সময় আমরা সলাত কসর করতাম। [৭২] [১০৮১] (আ.প্র. ৩৯৫৯, ই.ফা. ৩৯৬৪)

[৭২] আল্লাহ তা’আলা আল-কুরানে ঘোষণা দিয়েছেন-

”যখন তোমরা যমীনে ভ্রমণ করবে তখন সলাত কসর করলে তাতে কোন সমস্যা নেই।” (সূরা অন-নিসাঃ ১০১)

উক্ত আয়াতে এরূপ প্রমাণ মিলে না যে, কি পরিমাণ সফর করলে কসর করা যাবে। এ কারণেই সহাবীগণের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ইবনু ‘উমার ও ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে, ‘তারা চার বুরুদ (১৬ ফারসাখ সমান ৪৮ মাইল) পরিমান সফর করলে সলাত কসর করতেন এবং সওম ভেঙ্গে দিতেন। পক্ষান্তরে ইবনু ‘উমার হতে সহীহ বর্ণনায় সাব্যস্ত হয়েছে তিনি বলেন, “তিন মাইল সফর করলে সলাত কসর করা যাবে”। সহীহ সানাদে তার থেকে আরো বর্ণিত হয়েছে, ‘তিনি মাক্কাহ’য় অবস্থানকালীন যখন মিনায় যেতেন তখন কসর করতেন’। এমনকি সহীহ সুত্রে ইবনু ‘উমার হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, ‘আমি যদি এক মাইল পথের জন্য বের হতাম তাহলেও সলাত করতাম’। তিনি আরো বললেন, আমি দিনের কিছু সময় সফর করতাম এবং কসর করতাম। এসব আসারের সুত্রগুলো সহীহ। বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন ”ফাতহুল বারী” ও শাইখ আলবানীর ”ইরওয়াউল গালীল” (৩/১৪-২০)

এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, সহাবীগণ এ বিষয়ে একমত ছিলেন না। বরং তাদের মধ্যে মতভেদ সংঘটিত হয়েছিল। অতএব আমাদেরকে দেখা দরকার এ ব্যাপারে রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ‘আমল কি ছিল? আমরা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ‘আমলের এর দিকে লক্ষ্য করলে দেখছি ইবনু ‘উমর (রাঃ) এর ‘আমল তাঁর ‘আমলের সাথে অনেকাংশেই মিলে যাচ্ছে। যদিও তাঁর থেকে এ ব্যাপারে কোন মৌখিক হাদীছ বর্ণিত হয়নি। কারণ আনাস (রাঃ) নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর আমল বর্ননা করেছেন। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াযিদ আল হুনাই বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)-কে কসর করার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি বলেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিন মাইল বা তিন ফারসাখ পরিমাণ পথ সফর করলেই দু’রাক’আত সলাত আদায় করতেন। (নিম্নের বর্ণনাকারী শু’বাহ সন্দেহ বশতঃ তিন মাইল বা তিন ফারসাখ বলেছেন) ।

হাদীছটি ইমাম মুসলিম (২/১৪৫) , আবু আওয়ানাহ (২/৩৪৬) , আবু দাউদ, ইবনু আবী শাইবাহ (২/১০৮/১-২) , বায়হাক্বী (৩/১৪৬) ও আহমাদ (৩/১২৯) বর্ননা করেছেন।

উল্লেখ এক ফারসাখ সমান তিন মাইল। অতএব তিন ফারসাখ সমান ৯ মাইল। যেহেতু মুসলিম সহ অনান্য হাদীছগ্রন্থে বর্ণিত এ হাদীছটিতে তিন মাইল বা ৯ মাইল এর কথা বলা হয়েছে। যা নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ‘আমল হিসেবে প্রমাণিত। অতএব আমরা সতর্কতার স্বার্থে তিন মাইল গ্রহণ না করে ৯ মাইলকে গ্রহণ করব এবং ৯ মাইল পরিমান পথ সফর করলেই নির্দ্বিধায় সলাত কসর করব।

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য দেখুন ফিকহুস সুন্নাহ ইরওয়াউল গালীল ৩য় খণ্ড ফতহুল বারী প্রমুখ গ্রন্থসমূহের সলাত অধ্যায়। (দেখুন মুসলিম হাঃ নং ৬৯১, সহীহ আবূ দাউদ ১২০১, আহমাদ ১১৯০৪, সিলসিলা সহীহা হাঃ নং ১৬৩)

৪২৯৮
عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا عَاصِمٌ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِمَكَّةَ تِسْعَةَ عَشَرَ يَوْمًا يُصَلِّيْ رَكْعَتَيْنِ.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, (মাক্কাহ বিজয়ের সময়ে) নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঊনিশ দিন মক্কায় অবস্থান করেছিলেন, তিনি সে সময় দু’রাক’আত সলাত আদায় করতেন। [১০৮০] (আ.প্র. ৩৯৬০, ই.ফা. ৩৯৬৫)

৪২৯৯
أَحْمَدُ بْنُ يُوْنُسَ حَدَّثَنَا أَبُوْ شِهَابٍ عَنْ عَاصِمٍ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَقَمْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ سَفَرٍ تِسْعَ عَشْرَةَ نَقْصُرُ الصَّلَاةَ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ وَنَحْنُ نَقْصُرُ مَا بَيْنَنَا وَبَيْنَ تِسْعَ عَشْرَةَ فَإِذَا زِدْنَا أَتْمَمْنَا.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সফরে আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ঊনিশ দিন (মক্কা বিজয়্কালে) অবস্থান করেছিলাম। [৭৩] ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, আমরা সফরে উনিশ দিন পর্যন্ত কসর করতাম। এর চেয়ে অধিক দিন থাকলে আমরা পূর্ণ সলাত আদায় করতাম। [১০৮০] (আ.প্র. ৩৯৬১, ই.ফা. ৩৯৬৬)

[৭৩] হাদীসের পণ্ডিতগণের মতে আনাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে বিদায় হাজ্জের সফরে এবং ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বর্ণিত হাদীসে মাক্কাহ বিজয়্কালে মাক্কায় অবস্থানের মেয়াদ উল্লেখ করা হয়েছে।

৬৪/৫৪. অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নেই

৪৩০০
وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِيْ يُوْنُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ ثَعْلَبَةَ بْنِ صُعَيْرٍ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَدْ مَسَحَ وَجْهَهُ عَامَ الْفَتْحِ.

লায়্স [ইবনু সা’দ (রহঃ)] থেকে বর্ণিতঃ

ইউনুস আমার কাছে ইবনু শিহাব থেকে বর্ননা করেন যে, তিনি বলেছেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাবাহ ইবনু সু’আয়র (রাঃ) আমার নিকট বর্ননা করেছেন, আর মাক্কাহ বিজয়ের বছর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর মুখমণ্ডল মাসহ করেছিলেন। [৬৩৫৬] (আ.প্র. অনুচ্ছেদ, ই.ফা. অনুচ্ছেদ)

৪৩০১
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سُنَيْنٍ أَبِيْ جَمِيْلَةَ قَالَ أَخْبَرَنَا وَنَحْنُ مَعَ ابْنِ الْمُسَيَّبِ قَالَ وَزَعَمَ أَبُوْ جَمِيْلَةَ أَنَّهُ أَدْرَكَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَخَرَجَ مَعَهُ عَامَ الْفَتْحِ.

যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি সুনায়ন আবূ জামীলাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। যুহরী (রহঃ) বলেন, আমরা (সাঈ’দ) ইব্‌ন মুসায়্যাব (রহঃ)-এর সঙ্গে ছিলাম। এ সময় আবূ জামীলাহ (রাঃ) দাবি করেন যে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাক্ষাৎ লাভ করেছেন এবং তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে মাক্কাহ বিজয়ের বছর (যুদ্ধের জন্য) বেরিয়েছিলেন। (আ.প্র. ৩৯৬২, ই.ফা. ৩৯৬৭)

৪৩০২
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ أَبِيْ قِلَابَةَ عَنْ عَمْرِو بْنِ سَلَمَةَ قَالَ قَالَ لِيْ أَبُوْ قِلَابَةَ أَلَا تَلْقَاهُ فَتَسْأَلَهُ قَالَ فَلَقِيْتُهُ فَسَأَلْتُهُ فَقَالَ كُنَّا بِمَاءٍ مَمَرَّ النَّاسِ وَكَانَ يَمُرُّ بِنَا الرُّكْبَانُ فَنَسْأَلُهُمْ مَا لِلنَّاسِ مَا لِلنَّاسِ مَا هَذَا الرَّجُلُ فَيَقُوْلُوْنَ يَزْعُمُ أَنَّ اللهَ أَرْسَلَهُ أَوْحَى إِلَيْهِ أَوْ أَوْحَى اللهُ بِكَذَا فَكُنْتُ أَحْفَظُ ذَلِكَ الْكَلَامَ وَكَأَنَّمَا يُقَرُّ فِيْ صَدْرِيْ وَكَانَتْ الْعَرَبُ تَلَوَّمُ بِإِسْلَامِهِمْ الْفَتْحَ فَيَقُوْلُوْنَ اتْرُكُوْهُ وَقَوْمَهُ فَإِنَّهُ إِنْ ظَهَرَ عَلَيْهِمْ فَهُوَ نَبِيٌّ صَادِقٌ فَلَمَّا كَانَتْ وَقْعَةُ أَهْلِ الْفَتْحِ بَادَرَ كُلُّ قَوْمٍ بِإِسْلَامِهِمْ وَبَدَرَ أَبِيْ قَوْمِيْ بِإِسْلَامِهِمْ فَلَمَّا قَدِمَ قَالَ جِئْتُكُمْ وَاللهِ مِنْ عِنْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَقًّا فَقَالَ صَلُّوْا صَلَاةَ كَذَا فِيْ حِيْنِ كَذَا وَصَلُّوْا صَلَاةَ كَذَا فِيْ حِيْنِ كَذَا فَإِذَا حَضَرَتْ الصَّلَاةُ فَلْيُؤَذِّنْ أَحَدُكُمْ وَلْيَؤُمَّكُمْ أَكْثَرُكُمْ قُرْآنًا فَنَظَرُوْا فَلَمْ يَكُنْ أَحَدٌ أَكْثَرَ قُرْآنًا مِنِّيْ لِمَا كُنْتُ أَتَلَقَّى مِنْ الرُّكْبَانِ فَقَدَّمُوْنِيْ بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَأَنَا ابْنُ سِتٍّ أَوْ سَبْعِ سِنِيْنَ وَكَانَتْ عَلَيَّ بُرْدَةٌ كُنْتُ إِذَا سَجَدْتُ تَقَلَّصَتْ عَنِّيْ فَقَالَتْ امْرَأَةٌ مِنَ الْحَيِّ أَلَا تُغَطُّوْا عَنَّا اسْتَ قَارِئِكُمْ فَاشْتَرَوْا فَقَطَعُوْا لِيْ قَمِيْصًا فَمَا فَرِحْتُ بِشَيْءٍ فَرَحِيْ بِذَلِكَ الْقَمِيْصِ.

আম্‌র ইবনু সালামাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আইয়ুব (রহঃ) বলেছেন, আবূ কিলাবাহ আমাকে বললেন, তুমি ‘আম্‌র ইবনু সালামাহ’র সঙ্গে সাক্ষাৎ করে (তাঁর ইসলাম গ্রহণের ঘটনা সম্পর্কে) জিজ্ঞাস কর না কেন? আবূ কিলাবাহ (রহঃ) বলেন, অতঃপর আমি ‘আম্‌র ইবনু সালামাহ্‌র সঙ্গে দেখা করে তাঁকে (তাঁর ইসলাম গ্রহণের ঘটনা সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, আমরা লোকজনের চলার পথের পাশে একটি ঝরণার কাছে বাস করতাম। আমাদের পাশ দিয়ে অনেক কাফেলা চলাচল করত। তখন আমরা তাদেরকে জিজ্ঞেস করতাম, (মক্কার) লোকজনের অবস্থা কী? মক্কার লোকজনের অবস্থা কী? আর ঐ লোকটির কী অবস্থা? তারা বলত, ঐ ব্যক্তি তো দাবী করে যে, আল্লাহ তাঁকে রসূল বানিয়ে পাঠিয়েছেন, তাঁর প্রতি ওয়াহী অবতীর্ণ করেছেন। (কুরআনের কিছু অংশ পাঠ করে বলত) তাঁর কাছে আল্লাহ এ রকম ওয়াহী অবতীর্ণ করেছেন। (‘আম্‌র ইবনু সালামা’হ বলেন) তখন আমি সে বাণীগুলো মুখস্থ করে নিতাম যেন তা আমার হৃদয়ে গেঁথে থাকত। সমগ্র আরব ইসলাম গ্রহণের জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিজয়ের অপেক্ষা করছিল। তারা বলত, তাঁকে তার নিজ গোত্রের লোকেদের সঙ্গে (আগে) বোঝাপড়া করতে দাও। অতঃপর তিনি যদি তাদের উপর বিজয়ী হন তবে তিনি সত্য নাবী। এরপর মাক্কাহ বিজয়ের ঘটনা ঘটল। এবার সব গোত্রই তাড়াহুড়া করে ইসলাম গ্রহণ করতে লাগল। আমাদের কাওমের ইসলাম গ্রহণ করার ব্যাপারে আমার পিতা বেশ তাড়াহুড়া করলেন। তিনি ইসলাম গ্রহণের পর ফিরে এসে বললেন, আল্লাহ্‌র শপথ! আমি সত্য নাবীর নিকট থেকে তোমাদের কাছে এসেছি। তিনি বলে দিয়েছেন যে, অমুক সময়ে তোমরা অমুক সলাত এবং অমুক সময় অমুক সলাত আদায় করবে। এভাবে সলাতের সময় হলে তোমাদের একজন আযান দিবে এবং তোমাদের মধ্যে যে কুরআন অধিক জানে সে সলাতের ইমামাত করবে। সবাই এ রকম একজন লোক খুঁজলেন। কিন্তু আমার চেয়ে অধিক কুরআন জানা একজনকেও পাওয়া গেল না। কেননা আমি কাফেলার লোকদের থেকে কুরআন শিখেছিলাম। কাজেই সকলে আমাকেই তাদের সামনে এগিয়ে দিল। অথচ তখনো আমি ছয় কিংবা সাত বছরের বালক। আমার একটি চাদর ছিল, যখন আমি সাজদাহ্‌য় যেতাম তখন চাদরটি আমার গায়ের সঙ্গে জড়িয়ে উপরের দিকে উঠে যেত। তখন গোত্রের জনৈকা মহিলা বলল, তোমরা আমাদের দৃষ্টি থেকে তোমাদের ক্বারীর নিতম্ব আবৃত করে দাও না কেন? তারা কাপড় খরিদ করে আমাকে একটি জামা তৈরি করে দিল। এ জামা পেয়ে আমি এত খুশি হয়েছিলাম যে, আর কিছুতে এত খুশি হইনি। (আ.প্র. ৩৯৬৩, ই.ফা. ৩৯৬৮)

৪৩০৩
عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِيْ يُوْنُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَخْبَرَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ عُتْبَةُ بْنُ أَبِيْ وَقَّاصٍ عَهِدَ إِلَى أَخِيْهِ سَعْدٍ أَنْ يَقْبِضَ ابْنَ وَلِيْدَةِ زَمْعَةَ وَقَالَ عُتْبَةُ إِنَّهُ ابْنِيْ فَلَمَّا قَدِمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَكَّةَ فِي الْفَتْحِ أَخَذَ سَعْدُ بْنُ أَبِيْ وَقَّاصٍ ابْنَ وَلِيْدَةِ زَمْعَةَ فَأَقْبَلَ بِهِ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَقْبَلَ مَعَهُ عَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ فَقَالَ سَعْدُ بْنُ أَبِيْ وَقَّاصٍ هَذَا ابْنُ أَخِيْ عَهِدَ إِلَيَّ أَنَّهُ ابْنُهُ قَالَ عَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ يَا رَسُوْلَ اللهِ هَذَا أَخِيْ هَذَا ابْنُ زَمْعَةَ وُلِدَ عَلَى فِرَاشِهِ فَنَظَرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى ابْنِ وَلِيْدَةِ زَمْعَةَ فَإِذَا أَشْبَهُ النَّاسِ بِعُتْبَةَ بْنِ أَبِيْ وَقَّاصٍ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هُوَ لَكَ هُوَ أَخُوْكَ يَا عَبْدُ بْنَ زَمْعَةَ مِنْ أَجْلِ أَنَّهُ وُلِدَ عَلَى فِرَاشِهِ وَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم احْتَجِبِيْ مِنْهُ يَا سَوْدَةُ لِمَا رَأَى مِنْ شَبَهِ عُتْبَةَ بْنِ أَبِيْ وَقَّاصٍ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ قَالَتْ عَائِشَةُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْوَلَدُ لِلْفِرَاشِ وَلِلْعَاهِرِ الْحَجَرُ وَقَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَكَانَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ يَصِيْحُ بِذَلِكَ.

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘উত্‌বাহ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) তার ভাই সা’দ [ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ)]-কে ওয়াসিয়াত করে গিয়েছিল যে, সে যেন যাম’আহ্‌র বাঁদীর সন্তানটি তাঁর নিজের কাছে নিয়ে নেয়। ‘উত্‌বাহ বলেছিল, পুত্রটি আমার ঔরসজাত। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মাক্কাহ বিজয়কালে সেখানে আগমন করলেন তখন সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস যাম’আহ্‌র বাঁদীর সন্তানটি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে উপস্থিত করলেন। তাঁর সঙ্গে আবদ্‌ ইবনু যাম’আহ (যামআর পুত্র)-ও আসলেন। সা’দ ইবনু আবী ওয়াক্কাস বললেন, সন্তানটি তো আমার ভাতিজা। আমার ভাই আমাকে বলে গিয়েছেন যে, এ সন্তান তার ঔরসজাত কিন্তু আবদ্‌ ইবনু যাম’আহ তার দাবী পেশ করে বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! এ আমার ভাই, এ যাম’আহ্‌র সন্তান, তাঁর বিছানায় এর জম্ম হয়েছে। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন যাম’আহ্‌র ক্রীতদাসীর সন্তানের প্রতি নযর দিয়ে দেখলেন যে, সন্তানটি আকৃতিতে ‘উত্‌বাহ ইবনু আবূ ওয়াক্কাসের সঙ্গেই অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আব্‌দ ইবনু যাম’আহ! একে নিয়ে যাও। সে তোমার ভাই। কেননা সে তার (তোমার পিতা যাম’আহ্‌র) বিছানায় জম্মগ্রহণ করেছে। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ সন্তানটির আকৃতি ‘উত্‌বাহ ইবনু আবী ওয়াক্কাসের আকৃতির মত হওয়ার কারণে (তাঁর স্ত্রী) সাওদা বিনতে যাম’আহ (রাঃ)-কে বললেন, হে সওদা! তুমি তার থেকে পর্দা করবে। ইবনু শিহাব যুহরী (রহঃ) বলেন, ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেছেন যে, এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, শয্যা যার, ছেলে তার। আর ব্যভিচারীর জন্য আছে পাথর। ইবনু শিহাব যুহরী (রহঃ) বলেছেন, আবূ হুরাইরা (রাঃ)-এ কথাটি উচ্চৈঃস্বরে বলতেন। [২০৫৩] (আ.প্র. ৩৯৬৪, ই.ফা. ৩৯৬৯)

৪৩০৪
مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا يُوْنُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّ امْرَأَةً سَرَقَتْ فِيْ عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ غَزْوَةِ الْفَتْحِ فَفَزِعَ قَوْمُهَا إِلَى أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ يَسْتَشْفِعُوْنَهُ قَالَ عُرْوَةُ فَلَمَّا كَلَّمَهُ أُسَامَةُ فِيْهَا تَلَوَّنَ وَجْهُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَتُكَلِّمُنِيْ فِيْ حَدٍّ مِنْ حُدُوْدِ اللهِ قَالَ أُسَامَةُ اسْتَغْفِرْ لِيْ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَلَمَّا كَانَ الْعَشِيُّ قَامَ رَسُوْلُ اللهِ خَطِيْبًا فَأَثْنَى عَلَى اللهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قَالَ أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّمَا أَهْلَكَ النَّاسَ قَبْلَكُمْ أَنَّهُمْ كَانُوْا إِذَا سَرَقَ فِيْهِمْ الشَّرِيْفُ تَرَكُوْهُ وَإِذَا سَرَقَ فِيْهِمْ الضَّعِيْفُ أَقَامُوْا عَلَيْهِ الْحَدَّ وَالَّذِيْ نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَوْ أَنَّ فَاطِمَةَ بِنْتَ مُحَمَّدٍ سَرَقَتْ لَقَطَعْتُ يَدَهَا ثُمَّ أَمَرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِتِلْكَ الْمَرْأَةِ فَقُطِعَتْ يَدُهَا فَحَسُنَتْ تَوْبَتُهَا بَعْدَ ذَلِكَ وَتَزَوَّجَتْ قَالَتْ عَائِشَةُ فَكَانَتْ تَأْتِيْ بَعْدَ ذَلِكَ فَأَرْفَعُ حَاجَتَهَا إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم .

উরওয়াহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর যামানায় মক্কা বিজয় অভিযানের সময়ে এক স্ত্রীলোক চুরি করেছিল। তাই তার গোত্রের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে উসামাহ ইবনু যায়দ (রাঃ)- এর কাছে এসে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট সুপারিশ করার জন্য অনুরোধ জানালো। ‘উরওয়াহ (রাঃ) বলেন, উসামাহ (রাঃ)- এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে কথা বলা মাত্র তাঁর চেহারার রং পরিবর্তিত হয়ে গেল। তিনি উসামাহ (রাঃ)- কে বললেন, তুমি কি আল্লাহ্‌র নির্ধারিত শাস্তিগুলোর একটি শাস্তির ব্যাপারে আমার কাছে সুপারিশ করছ? উসামাহ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার জন্য আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। এরপর সন্ধ্যা হলে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুতবা দিতে দাঁড়ালেন। যথাযথভাবে আল্লাহ্‌র হাম্দ-সানা করে বললেন, “আম্মা বা’দ” তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতরা এ জন্য ধ্বংস হয়েছিল যে, তারা তাদের মধ্যকার উচ্চ শ্রেণীর কোন লোক চুরি করলে তাকে ছেড়ে দিত। পক্ষান্তরে কোন দুর্বল লোক চুরি করলে তার উপর নির্ধারিত শাস্তি প্রয়োগ করত। যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ তাঁর শপথ, যদি মুহাম্মাদের কন্যা ফাতিমাও চুরি করত তা হলে আমি তার হাত কেটে দিতাম। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেই মহিলাটির ব্যাপারে আদেশ দিলেন। ফলে তার হাত কেটে দেওয়া হল। অবশ্য পরবর্তীকালে সে উত্তম তওবার অধিকারিণী হয়েছিল এবং বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিল। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এরপর সে আমার কাছে প্রায়ই আসত। আমি তার প্রয়োজনাদি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে তুলে ধরতাম। [২৬৪৮] (আ.প্র. ৩৯৬৫ , ই.ফা. ৩৯৭০)

৪৩০৯
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِيْ بِشْرٍ عَنْ مُجَاهِدٍ قُلْتُ لِابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا إِنِّيْ أُرِيْدُ أَنْ أُهَاجِرَ إِلَى الشَّأْمِ قَالَ لَا هِجْرَةَ وَلَكِنْ جِهَادٌ فَانْطَلِقْ فَاعْرِضْ نَفْسَكَ فَإِنْ وَجَدْتَ شَيْئًا وَإِلَّا رَجَعْتَ.

মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ইবনু ‘উমার (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু)- কে বললাম, আমি সিরিয়া দেশে হিজরাত করার ইচ্ছা করেছি। তিনি বললেন, এখন হিজরাত নয়, এখন জিহাদ। সুতরাং যাও, নিজ অন্তরের সঙ্গে বুঝে দেখ, জিহাদের সাহস খুঁজে পাও কিনা, তা না হলে হিজরাতের ইচ্ছা থেকে ফিরে আস। (৩৮৯৯) (আ.প্র. ৩৯৬৮, ই.ফা. ৩৯৭৩)

৪৩১০
وَقَالَ النَّضْرُ أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ أَخْبَرَنَا أَبُوْ بِشْرٍ سَمِعْتُ مُجَاهِدًا قُلْتُ لِابْنِ عُمَرَ فَقَالَ لَا هِجْرَةَ الْيَوْمَ أَوْ بَعْدَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ.

নায্‌র [ইবনু শুমায়ল (রহঃ)] থেকে বর্ণিতঃ

মুজাহিদ (রহঃ) হতে বর্ণিত। (তিনি বলেছেন) আমি ইবনু ‘উমার (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু)- কে বললে তিনি উত্তরে বললেন, বর্তমানে হিজরাতের কোন প্রয়োজন নেই, অথবা তিনি বলেছেনঃ রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর পরে কোন হিজরাত নেই। অতঃপর তিনি উপরোল্লিখিত হাদীসের মত বর্ণনা করেন। [৩৮৯৯] (আ.প্র. ৩৯৬৮, ই.ফা. ৩৯৭৩)

৪৩১১
إِسْحَاقُ بْنُ يَزِيْدَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ عَمْرٍو الْأَوْزَاعِيُّ عَنْ عَبْدَةَ بْنِ أَبِيْ لُبَابَةَ عَنْ مُجَاهِدِ بْنِ جَبْرٍ الْمَكِّيِّ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا كَانَ يَقُوْلُ لَا هِجْرَةَ بَعْدَ الْفَتْحِ.

মুজাহিদ ইবনু জাব্‌র আল-মাক্কী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) বলতেনঃ মাক্কাহ বিজয়ের পর আর কোন হিজরাত নেই। [৩৮৯৯] (আ.প্র. ৩৯৬৯, ই.ফা. ৩৯৭৪)

৪৩১২
إِسْحَاقُ بْنُ يَزِيْدَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ قَالَ حَدَّثَنِي الْأَوْزَاعِيُّ عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِيْ رَبَاحٍ قَالَ زُرْتُ عَائِشَةَ مَعَ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ فَسَأَلَهَا عَنِ الْهِجْرَةِ فَقَالَتْ لَا هِجْرَةَ الْيَوْمَ كَانَ الْمُؤْمِنُ يَفِرُّ أَحَدُهُمْ بِدِيْنِهِ إِلَى اللهِ وَإِلَى رَسُوْلِهِ صلى الله عليه وسلم مَخَافَةَ أَنْ يُفْتَنَ عَلَيْهِ فَأَمَّا الْيَوْمَ فَقَدْ أَظْهَرَ اللهُ الإِسْلَامَ فَالْمُؤْمِنُ يَعْبُدُ رَبَّهُ حَيْثُ شَاءَ وَلَكِنْ جِهَادٌ وَنِيَّةٌ.

আত্বা ইবনু আবূ রাবাহ্‌ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘উবায়দ ইবনু ‘উমায়র (রহঃ) সহ ‘আয়িশা (রাযিআল্লাহু আনহা)- এর সাক্ষাতে গিয়েছিলাম। সে সময় ‘উবায়দ (রহঃ) তাঁকে হিজরাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, বর্তমানে কোন হিজরাত নেই। আগে মু’মিন ব্যক্তি তার দ্বীনকে ফিতনার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আল্লাহ এবং তাঁর রসূলের দিকে (মদিনায়) পালিয়ে যেত। কিন্তু বর্তমানে আল্লাহ ইসলামকে বিজয় দান করেছেন। তাই এখন মু’মিন যেখানে চায় আল্লাহ্‌র ‘ইবাদাত করতে পারে। তবে বর্তমানে জিহাদ এবং নিয়্যাত করা যাবে। [৩০৮০] (আ.প্র. ৩৯৭০, ই.ফা. ৩৯৭৫)

৪৩১৩
إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَاصِمٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ حَسَنُ بْنُ مُسْلِمٍ عَنْ مُجَاهِدٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَامَ يَوْمَ الْفَتْحِ فَقَالَ إِنَّ اللهَ حَرَّمَ مَكَّةَ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ فَهِيَ حَرَامٌ بِحَرَامِ اللهِ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ لَمْ تَحِلَّ لِأَحَدٍ قَبْلِيْ وَلَا تَحِلُّ لِأَحَدٍ بَعْدِيْ وَلَمْ تَحْلِلْ لِيْ قَطُّ إِلَّا سَاعَةً مِنْ الدَّهْرِ لَا يُنَفَّرُ صَيْدُهَا وَلَا يُعْضَدُ شَوْكُهَا وَلَا يُخْتَلَى خَلَاهَا وَلَا تَحِلُّ لُقَطَتُهَا إِلَّا لِمُنْشِدٍ فَقَالَ الْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ إِلَّا الإِذْخِرَ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَإِنَّهُ لَا بُدَّ مِنْهُ لِلْقَيْنِ وَالْبُيُوْتِ فَسَكَتَ ثُمَّ قَالَ إِلَّا الإِذْخِرَ فَإِنَّهُ حَلَالٌ وَعَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِيْ عَبْدُ الْكَرِيْمِ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ بِمِثْلِ هَذَا أَوْ نَحْوِ هَذَا رَوَاهُ أَبُوْ هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .

মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মাক্কাহ বিজয়ের দিন রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খুতবার জন্য দাঁড়িয়ে বললেন, যেদিন আল্লাহ সমুদয় আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন, সেই দিন থেকেই তিনি মাক্কাহ নগরীকে সম্মান দান করেছেন। তাই আল্লাহ কর্তৃক এ সম্মান প্রদানের কারণে এটি ক্বিয়ামাত দিবস পর্যন্ত সম্মানিত থাকবে। আমার পূর্বে কারো জন্য তা হালাল করা হয়নি, আমার পরে কারো জন্যও তা হালাল করা হবে না। আর আমার জন্যও মাত্র একদিনের সামান্য অংশের জন্যই তা হালাল করা হয়েছিল। তার শিকারযোগ্য প্রাণীকে বিতাড়িত করা যাবে না। ঘাস সংগৃহীত হবে না। বিজ্ঞপ্তির উদ্দেশ্য ব্যতীত রাস্তায় পতিত বস্তু উত্তোলিত হবে না। তখন ‘আব্বাস ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! ইয্‌খির ঘাস ব্যতীত। কেননা ইয্‌খির ঘাস আমাদের কর্মকার ও বাড়ির (ছাউনির) কাজে লাগে। তখন রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুপ থাকলেন। এর কিছুক্ষণ পরে বললেন, ইয্‌খির ব্যতীত। ইয্‌খির ঘাস কাটা অনুমোদিত। অন্য সানাদে ইবনু জুরায়জ (রহঃ)….. ইবনু ‘আব্বাস (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে এভাবেই বর্ণিত হয়েছে। তাছাড়া এ হাদীস আবূ হুরায়রা (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) ও নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। [১৩৪৯] (আ.প্র. ৩৯৭১, ই.ফা. ৩৯৭৬)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]