সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস মাগাযী অধ্যায় ১১শ ভাগ হাদিস নং ৪৩৩৮ – ৪৩৭১

৬৪/৫৮. অধ্যায়ঃ
নাজদের দিকে প্রেরিত অভিযান

৪৩৩৮
أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ حَدَّثَنَا أَيُّوْبُ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَرِيَّةً قِبَلَ نَجْدٍ فَكُنْتُ فِيْهَا فَبَلَغَتْ سِهَامُنَا اثْنَيْ عَشَرَ بَعِيْرًا وَنُفِّلْنَا بَعِيْرًا بَعِيْرًا فَرَجَعْنَا بِثَلَاثَةَ عَشَرَ بَعِيْرًا.

ইবনু ‘উমার (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাজদের দিকে একটি সৈন্যদল প্রেরিত হয়েছিল, তাতে আমিও ছিলাম। আমাদের সবার ভাগে (গানীমাতের) বারোটি করে উট পৌঁছল। আর একটি একটি করে উট অধিকও দেয়া হল। নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে পাঠিয়েছিলেন আর আমরা তেরোটি করে উট নিয়ে ফিরে আসলাম। [৩১৩৪] (আ.প্র. ৩৯৯৫, ই.ফা. ৩৯৯৯)

৬৪/৫৯. অধ্যায়ঃ
নাবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক খালিদ ইবনু ওয়ালিদ (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু)- কে জাযীমাহ্‌র দিকে প্রেরণ

৪৩৩৯
مَحْمُوْدٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ ح و حَدَّثَنِيْ نُعَيْمٌ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَالِدَ بْنَ الْوَلِيْدِ إِلَى بَنِيْ جَذِيْمَةَ فَدَعَاهُمْ إِلَى الإِسْلَامِ فَلَمْ يُحْسِنُوْا أَنْ يَقُوْلُوْا أَسْلَمْنَا فَجَعَلُوْا يَقُوْلُوْنَ صَبَأْنَا صَبَأْنَا فَجَعَلَ خَالِدٌ يَقْتُلُ مِنْهُمْ وَيَأْسِرُ وَدَفَعَ إِلَى كُلِّ رَجُلٍ مِنَّا أَسِيْرَهُ حَتَّى إِذَا كَانَ يَوْمٌ أَمَرَ خَالِدٌ أَنْ يَقْتُلَ كُلُّ رَجُلٍ مِنَّا أَسِيْرَهُ فَقُلْتُ وَاللهِ لَا أَقْتُلُ أَسِيْرِيْ وَلَا يَقْتُلُ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِيْ أَسِيْرَهُ حَتَّى قَدِمْنَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرْنَاهُ فَرَفَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَدَهُ فَقَالَ اللهُمَّ إِنِّيْ أَبْرَأُ إِلَيْكَ مِمَّا صَنَعَ خَالِدٌ مَرَّتَيْنِ.

সালিমের পিতা [‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু)] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) এক অভিযানে খালিদ ইবনু ওয়ালিদ (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু)- কে বানী জাযিমার বিরুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন। (সেখানে পৌঁছে) খালিদ (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) তাদেরকে ইসলামের দা’ওয়াত দিলেন। কিন্তু ‘আমরা ইসলাম কবূল করলাম’, এ কথাটি তারা ভালভাবে বুঝিয়ে বলতে পারছিল না। তাই তারা বলতে লাগল, আমরা স্বধর্ম ত্যাগ করলাম, আমরা স্বধর্ম ত্যাগ করলাম। খালিদ তাদেরকে হত্যা ও বন্দী করতে থাকলেন এবং আমাদের প্রত্যকের কাছে বন্দীদেরকে সোপর্দ করতে থাকলেন। অবশেষে একদিন তিনি আদেশ দিলেন আমাদের সবাই যেন নিজ নিজ বন্দীকে হত্যা করে ফেলি। আমি বললাম, আল্লাহ্‌র কসম! আমি আমার বন্দীকে হত্যা করব না। আর আমার সঙ্গীদের কেউই তাঁর বন্দীকে হত্যা করবে না। অবশেষে আমরা নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে ফিরে আসলাম। আমরা তাঁর কাছে এ ব্যাপারটি উল্লেখ করলাম। নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) তখন দু’হাত তুলে বললেন, হে আল্লাহ! খালিদ যা করেছে আমি তার দায় থেকে মুক্ত হওয়ার কথা তোমার নিকট জ্ঞাপন করছি। এ কথাটি তিনি দু’বার বললেন। [৭১৮৯] (আ.প্র. ৩৯৯৬, ই.ফা. ৪০০০)

৬৪/৬০. অধ্যায়ঃ
‘আবদুল্লাহ ইবনু হুযাফা সাহমী এবং আলকামাহ ইবনু মুজাযযিল মুদাল্লিজীর সৈন্যাভিযান, যাকে আনসারদের সৈন্যাভিযানও বলা হয়

৪৩৪০
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ قَالَ حَدَّثَنِيْ سَعْدُ بْنُ عُبَيْدَةَ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَرِيَّةً فَاسْتَعْمَلَ رَجُلًا مِنَ الْأَنْصَارِ وَأَمَرَهُمْ أَنْ يُطِيْعُوْهُ فَغَضِبَ فَقَالَ أَلَيْسَ أَمَرَكُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ تُطِيْعُوْنِيْ قَالُوْا بَلَى قَالَ فَاجْمَعُوْا لِيْ حَطَبًا فَجَمَعُوْا فَقَالَ أَوْقِدُوْا نَارًا فَأَوْقَدُوْهَا فَقَالَ ادْخُلُوْهَا فَهَمُّوْا وَجَعَلَ بَعْضُهُمْ يُمْسِكُ بَعْضًا وَيَقُوْلُوْنَ فَرَرْنَا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ النَّارِ فَمَا زَالُوْا حَتَّى خَمَدَتْ النَّارُ فَسَكَنَ غَضَبُهُ فَبَلَغَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَوْ دَخَلُوْهَا مَا خَرَجُوْا مِنْهَا إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ الطَّاعَةُ فِي الْمَعْرُوْفِ.

আলী (ইবনু আবূ ত্বলিব) (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) একটি সেনাবাহিনী প্রেরণ করেন এবং আনসারদের এক ব্যক্তিকে তার সেনাপতি নিযুক্ত করে তিনি তাদেরকে তাঁর (সেনাপতির) আনুগত্য করার নির্দেশ দেন। (কোন কারণে) আমীর রাগান্বিত হয়ে যান। তিনি বললেন, নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) কি তোমাদেরকে আমার আনুগত্য করতে নির্দেশ দেননি? তাঁরা বললেন, অবশ্যই। তিনি বললেন, তাহলে তোমরা কিছু কাঠ সংগ্রহ করে আনো। তাঁরা কাঠ সংগ্রহ করলেন। তিনি বললেন, এগুলোতে আগুন লাগিয়ে দাও। তাঁরা ওতে আগুন লাগালেন। তখন তিনি বললেন, এবার তোমরা সকলে এ আগুনে প্রবেশ কর। তাঁরা আগুনে প্রবেশ করতে সংকল্প করে ফেললেন। কিন্তু তাদের কয়েকজন অন্যদের বাধা দিয়ে বলতে লাগলেন, আগুন থেকেই তো আমরা পালিয়ে গিয়ে নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এভাবে ইতস্তত করতে করতে আগুন নিভে গেল এবং তার ক্রোধও ঠান্ডা হল। এরপর এ সংবাদ নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে পৌঁছল তিনি বললেন, যদি তারা আগুনে ঝাঁপ দিত তা হলে ক্বিয়ামাতের দিন পর্যন্ত এ আগুন থেকে বের হতে পারত না। আনুগত্য (করতে হবে) কেবল সৎ কাজের। (আ.প্র. ৩৯৯৭, ই.ফা. ৪০০১)

৬৪/৬১. অধ্যায়ঃ
বিদায় হাজ্জের পূর্বে আবূ মূসা আশ’আরী (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) এবং মু’আয [ইবনু জাবল (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু)]- কে ইয়ামানে প্রেরণ

৪৩৪১
مُوْسَى حَدَّثَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ عَنْ أَبِيْ بُرْدَةَ قَالَ بَعَثَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَبَا مُوْسَى وَمُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ إِلَى الْيَمَنِ قَالَ وَبَعَثَ كُلَّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا عَلَى مِخْلَافٍ قَالَ وَالْيَمَنُ مِخْلَافَانِ ثُمَّ قَالَ يَسِّرَا وَلَا تُعَسِّرَا وَبَشِّرَا وَلَا تُنَفِّرَا فَانْطَلَقَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا إِلَى عَمَلِهِ وَكَانَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا إِذَا سَارَ فِيْ أَرْضِهِ كَانَ قَرِيْبًا مِنْ صَاحِبِهِ أَحْدَثَ بِهِ عَهْدًا فَسَلَّمَ عَلَيْهِ فَسَارَ مُعَاذٌ فِيْ أَرْضِهِ قَرِيْبًا مِنْ صَاحِبِهِ أَبِيْ مُوْسَى فَجَاءَ يَسِيْرُ عَلَى بَغْلَتِهِ حَتَّى انْتَهَى إِلَيْهِ وَإِذَا هُوَ جَالِسٌ وَقَدْ اجْتَمَعَ إِلَيْهِ النَّاسُ وَإِذَا رَجُلٌ عِنْدَهُ قَدْ جُمِعَتْ يَدَاهُ إِلَى عُنُقِهِ فَقَالَ لَهُ مُعَاذٌ يَا عَبْدَ اللهِ بْنَ قَيْسٍ أَيُّمَ هَذَا قَالَ هَذَا رَجُلٌ كَفَرَ بَعْدَ إِسْلَامِهِ قَالَ لَا أَنْزِلُ حَتَّى يُقْتَلَ قَالَ إِنَّمَا جِيْءَ بِهِ لِذَلِكَ فَانْزِلْ قَالَ مَا أَنْزِلُ حَتَّى يُقْتَلَ فَأَمَرَ بِهِ فَقُتِلَ ثُمَّ نَزَلَ فَقَالَ يَا عَبْدَ اللهِ كَيْفَ تَقْرَأُ الْقُرْآنَ قَالَ أَتَفَوَّقُهُ تَفَوُّقًا قَالَ فَكَيْفَ تَقْرَأُ أَنْتَ يَا مُعَاذُ قَالَ أَنَامُ أَوَّلَ اللَّيْلِ فَأَقُوْمُ وَقَدْ قَضَيْتُ جُزْئِيْ مِنْ النَّوْمِ فَأَقْرَأُ مَا كَتَبَ اللهُ لِيْ فَأَحْتَسِبُ نَوْمَتِيْ كَمَا أَحْتَسِبُ قَوْمَتِي.

আবূ বুরদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ মূসা এবং মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ)-কে ইয়ামানে পাঠালেন। বর্ণনাকারী বলেন, তৎকালে ইয়ামানে দু’টি প্রদেশ ছিল। তিনি তাদের প্রত্যেককে ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশে পাঠিয়ে বলে দিলেন, তোমরা কোমল হবে, কঠোর হবে না। অনীহা সৃষ্টি হতে দেবে না। এরপর তাঁরা দু’জনে নিজ নিজ কর্ম এলাকায় চলে গেলেন। আবূ বুরদা (রাঃ) বললেন, তাঁদের প্রত্যেকেই যখন নিজ নিজ এলাকায় সফর করতেন এবং অন্যজনের কাছাকাছি স্থানে পৌঁছে যেতেন তখন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে সালাম বিনিময় করতেন। এভাবে মু‘আয (রাঃ) একবার তাঁর এলাকায় এমন স্থানে সফর করছিলেন, যে স্থানটি তাঁর সাথী আবূ মূসা (রাঃ)-এর এলাকার নিকটবর্তী ছিল। সুযোগ পেয়ে তিনি খচ্চরের পিঠে চড়ে (আবূ মূসার এলাকায়) পৌঁছে গেলেন। তখন তিনি দেখলেন যে, আবূ মূসা (রাঃ) বসে আছেন আর তাঁর চারপাশে অনেক লোক জমায়েত হয়ে আছে। আরো দেখলেন, পাশে এক লোককে তার গলার সঙ্গে উভয় হাত বেঁধে রাখা হয়েছে। মু‘আয (রাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে ‘আবদুল্লাহ ইবনু কায়স (আবূ মূসা)। এ লোকটি কে? তিনি উত্তর দিলেন, এ লোকটি ইসলাম গ্রহণ করার পর মুরতাদ হয়ে গেছে। মু‘আয (রাঃ) বললেন, তাকে হত্যা না করা পর্যন্ত আমি সাওয়ারী থেকে নামব না। আবূ মূসা (রাঃ) বললেন, এ উদ্দেশেই তাকে আনা হয়েছে, কাজেই আপনি নামুন। তিনি বললেন, না তাকে হত্যা না করা পর্যন্ত আমি নামব না। ফলে আবূ মূসা (রাঃ) হুকুম করলেন এবং লোকটিকে হত্যা করা হল। এরপর মু‘আয (রাঃ) নামলেন। মু‘আয (রাঃ) বললেন, ওহে ‘আবদুল্লাহ! আপনি কীভাবে কুরআন তিলাওয়াত করেন? তিনি বললেন, আমি (দিবা-রাত্রি) কিছুক্ষণ পরপর কিছু অংশ করে তিলাওয়াত করে থাকি। তিনি বললেন, আর আপনি কীভাবে তিলাওয়াত করেন, হে মু‘আয? উত্তরে তিনি বললেন, আমি রাতের প্রথমাংশে শুয়ে পড়ি এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঘুমিয়ে আমি উঠে পড়ি। এরপর আল্লাহ আমাকে যতটুকু তাওফীক দান করেন তিলাওয়াত করতে থাকি। এতে আমি আমার নিদ্রার অংশকেও (সওয়াবের বিষয় বলে) মনে করি, আমি আমার দাঁড়িয়ে তিলাওয়াতকে যেমনি (সাওয়াবের বিষয় বলে) মনে করি। [৪৩৪৫; মুসলিম ৩২/৩, হাঃ ১৭৩৩, আহমাদ ১৯৭৬৩] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৯৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০০২)

৪৩৪২
مُوْسَى حَدَّثَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ عَنْ أَبِيْ بُرْدَةَ قَالَ بَعَثَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَبَا مُوْسَى وَمُعَاذَ بْنَ جَبَلٍ إِلَى الْيَمَنِ قَالَ وَبَعَثَ كُلَّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا عَلَى مِخْلَافٍ قَالَ وَالْيَمَنُ مِخْلَافَانِ ثُمَّ قَالَ يَسِّرَا وَلَا تُعَسِّرَا وَبَشِّرَا وَلَا تُنَفِّرَا فَانْطَلَقَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا إِلَى عَمَلِهِ وَكَانَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا إِذَا سَارَ فِيْ أَرْضِهِ كَانَ قَرِيْبًا مِنْ صَاحِبِهِ أَحْدَثَ بِهِ عَهْدًا فَسَلَّمَ عَلَيْهِ فَسَارَ مُعَاذٌ فِيْ أَرْضِهِ قَرِيْبًا مِنْ صَاحِبِهِ أَبِيْ مُوْسَى فَجَاءَ يَسِيْرُ عَلَى بَغْلَتِهِ حَتَّى انْتَهَى إِلَيْهِ وَإِذَا هُوَ جَالِسٌ وَقَدْ اجْتَمَعَ إِلَيْهِ النَّاسُ وَإِذَا رَجُلٌ عِنْدَهُ قَدْ جُمِعَتْ يَدَاهُ إِلَى عُنُقِهِ فَقَالَ لَهُ مُعَاذٌ يَا عَبْدَ اللهِ بْنَ قَيْسٍ أَيُّمَ هَذَا قَالَ هَذَا رَجُلٌ كَفَرَ بَعْدَ إِسْلَامِهِ قَالَ لَا أَنْزِلُ حَتَّى يُقْتَلَ قَالَ إِنَّمَا جِيْءَ بِهِ لِذَلِكَ فَانْزِلْ قَالَ مَا أَنْزِلُ حَتَّى يُقْتَلَ فَأَمَرَ بِهِ فَقُتِلَ ثُمَّ نَزَلَ فَقَالَ يَا عَبْدَ اللهِ كَيْفَ تَقْرَأُ الْقُرْآنَ قَالَ أَتَفَوَّقُهُ تَفَوُّقًا قَالَ فَكَيْفَ تَقْرَأُ أَنْتَ يَا مُعَاذُ قَالَ أَنَامُ أَوَّلَ اللَّيْلِ فَأَقُوْمُ وَقَدْ قَضَيْتُ جُزْئِيْ مِنْ النَّوْمِ فَأَقْرَأُ مَا كَتَبَ اللهُ لِيْ فَأَحْتَسِبُ نَوْمَتِيْ كَمَا أَحْتَسِبُ قَوْمَتِي.

আবূ বুরদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ মূসা এবং মু‘আয ইবনু জাবাল (রাঃ)-কে ইয়ামানে পাঠালেন। বর্ণনাকারী বলেন, তৎকালে ইয়ামানে দু’টি প্রদেশ ছিল। তিনি তাদের প্রত্যেককে ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশে পাঠিয়ে বলে দিলেন, তোমরা কোমল হবে, কঠোর হবে না। অনীহা সৃষ্টি হতে দেবে না। এরপর তাঁরা দু’জনে নিজ নিজ কর্ম এলাকায় চলে গেলেন। আবূ বুরদা (রাঃ) বললেন, তাঁদের প্রত্যেকেই যখন নিজ নিজ এলাকায় সফর করতেন এবং অন্যজনের কাছাকাছি স্থানে পৌঁছে যেতেন তখন তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে সালাম বিনিময় করতেন। এভাবে মু‘আয (রাঃ) একবার তাঁর এলাকায় এমন স্থানে সফর করছিলেন, যে স্থানটি তাঁর সাথী আবূ মূসা (রাঃ)-এর এলাকার নিকটবর্তী ছিল। সুযোগ পেয়ে তিনি খচ্চরের পিঠে চড়ে (আবূ মূসার এলাকায়) পৌঁছে গেলেন। তখন তিনি দেখলেন যে, আবূ মূসা (রাঃ) বসে আছেন আর তাঁর চারপাশে অনেক লোক জমায়েত হয়ে আছে। আরো দেখলেন, পাশে এক লোককে তার গলার সঙ্গে উভয় হাত বেঁধে রাখা হয়েছে। মু‘আয (রাঃ) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, হে ‘আবদুল্লাহ ইবনু কায়স (আবূ মূসা)। এ লোকটি কে? তিনি উত্তর দিলেন, এ লোকটি ইসলাম গ্রহণ করার পর মুরতাদ হয়ে গেছে। মু‘আয (রাঃ) বললেন, তাকে হত্যা না করা পর্যন্ত আমি সাওয়ারী থেকে নামব না। আবূ মূসা (রাঃ) বললেন, এ উদ্দেশেই তাকে আনা হয়েছে, কাজেই আপনি নামুন। তিনি বললেন, না তাকে হত্যা না করা পর্যন্ত আমি নামব না। ফলে আবূ মূসা (রাঃ) হুকুম করলেন এবং লোকটিকে হত্যা করা হল। এরপর মু‘আয (রাঃ) নামলেন। মু‘আয (রাঃ) বললেন, ওহে ‘আবদুল্লাহ! আপনি কীভাবে কুরআন তিলাওয়াত করেন? তিনি বললেন, আমি (দিবা-রাত্রি) কিছুক্ষণ পরপর কিছু অংশ করে তিলাওয়াত করে থাকি। তিনি বললেন, আর আপনি কীভাবে তিলাওয়াত করেন, হে মু‘আয? উত্তরে তিনি বললেন, আমি রাতের প্রথমাংশে শুয়ে পড়ি এবং নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঘুমিয়ে আমি উঠে পড়ি। এরপর আল্লাহ আমাকে যতটুকু তাওফীক দান করেন তিলাওয়াত করতে থাকি। এতে আমি আমার নিদ্রার অংশকেও (সওয়াবের বিষয় বলে) মনে করি, আমি আমার দাঁড়িয়ে তিলাওয়াতকে যেমনি (সাওয়াবের বিষয় বলে) মনে করি। [৪৩৪৫; মুসলিম ৩২/৩, হাঃ ১৭৩৩, আহমাদ ১৯৭৬৩] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৯৯৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০০২)

৪৩৪৩
إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ الشَّيْبَانِيِّ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى الْأَشْعَرِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعَثَهُ إِلَى الْيَمَنِ فَسَأَلَهُ عَنْ أَشْرِبَةٍ تُصْنَعُ بِهَا فَقَالَ وَمَا هِيَ قَالَ الْبِتْعُ وَالْمِزْرُ فَقُلْتُ لِأَبِيْ بُرْدَةَ مَا الْبِتْعُ قَالَ نَبِيْذُ الْعَسَلِ وَالْمِزْرُ نَبِيْذُ الشَّعِيْرِ فَقَالَ كُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ رَوَاهُ جَرِيْرٌ وَعَبْدُ الْوَاحِدِ عَنْ الشَّيْبَانِيِّ عَنْ أَبِيْ بُرْدَةَ.

আবূ মূসা আশ’আরী (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) তাঁকে (আবূ মূসাকে গভর্নর নিযুক্ত করে) ইয়ামানে পাঠিয়েছেন। তখন তিনি ইয়ামানে তৈরি করা হয় এমন কতিপয় শরাব সম্পর্কে নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)- কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বললেন, ঐগুলো কী কী? আবূ মূসা (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) বললেন, তা হল বিত্‌উ ও মিয্‌র শরাব। বর্ণনাকারী সা’ঈদ (রহঃ) বলেন, আমি আবূ বুরদাহকে জিজ্ঞেস করলাম বিত্‌উ কী? তিনি বললেন, বিত্‌উ হল মধু থেকে গ্যাঁজানো রস আর মিয্‌র হল যবের গ্যাঁজানো রস। (সা’ঈদ বলেন) তখন নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বললেন, সকল নেশা উৎপাদক বস্তুই হারাম। হাদীসটি জারীর এবং ‘আবদুল ওয়াহিদ শাইবানী (রহঃ)- এর মাধ্যমে আবূ বুরদা (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) সূত্রেও বর্ণনা করেছেন। [২২৬১] (আ.প্র. ৩৯৯৯, ই.ফা. ৪০০৩)

৪৩৪৪
مُسْلِمٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم جَدَّهُ أَبَا مُوْسَى وَمُعَاذًا إِلَى الْيَمَنِ فَقَالَ يَسِّرَا وَلَا تُعَسِّرَا وَبَشِّرَا وَلَا تُنَفِّرَا وَتَطَاوَعَا فَقَالَ أَبُوْ مُوْسَى يَا نَبِيَّ اللهِ إِنَّ أَرْضَنَا بِهَا شَرَابٌ مِنْ الشَّعِيْرِ الْمِزْرُ وَشَرَابٌ مِنَ الْعَسَلِ الْبِتْعُ فَقَالَ كُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ فَانْطَلَقَا فَقَالَ مُعَاذٌ لِأَبِيْ مُوْسَى كَيْفَ تَقْرَأُ الْقُرْآنَ قَالَ قَائِمًا وَقَاعِدًا وَعَلَى رَاحِلَتِيْ وَأَتَفَوَّقُهُ تَفَوُّقًا قَالَ أَمَّا أَنَا فَأَنَامُ وَأَقُوْمُ فَأَحْتَسِبُ نَوْمَتِيْ كَمَا أَحْتَسِبُ قَوْمَتِيْ وَضَرَبَ فُسْطَاطًا فَجَعَلَا يَتَزَاوَرَانِ فَزَارَ مُعَاذٌ أَبَا مُوْسَى فَإِذَا رَجُلٌ مُوْثَقٌ فَقَالَ مَا هَذَا فَقَالَ أَبُوْ مُوْسَى يَهُوْدِيٌّ أَسْلَمَ ثُمَّ ارْتَدَّ فَقَالَ مُعَاذٌ لَأَضْرِبَنَّ عُنُقَهُ تَابَعَهُ الْعَقَدِيُّ وَوَهْبٌ عَنْ شُعْبَةَ وَقَالَ وَكِيْعٌ وَالْنَّضْرُ وَأَبُوْ دَاوُدَ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ سَعِيْدٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم رَوَاهُ جَرِيْرُ بْنُ عَبْدِ الْحَمِيْدِ عَنْ الشَّيْبَانِيِّ عَنْ أَبِيْ بُرْدَةَ.

আবূ বুরদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তার দাদা আবূ মূসা ও মু‘আয (রাঃ)-কে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম (শাসক হিসেবে) ইয়ামানে পাঠালেন। এ সময় তিনি বললেন, তোমরা লোকজনের সঙ্গে সহজ আচরণ করবে। কখনো কঠিন আচরণ করবে না। মানুষের মনে সুসংবাদের মাধ্যমে উৎসাহ সৃষ্টি করবে। কখনো তাদের মনে অনীহা সৃষ্টি করবে না এবং একে অপরকে মেনে চলবে। আবূ মূসা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর নাবী! আমাদের এলাকায় মিয্র নামের এক প্রকার শরাব যব থেকে তৈরি করা হয় আর বিত্উ নামের এক প্রকার শরাব মধু থেকে তৈরি করা হয় (এগুলো সম্পর্কে হুকুম দিন)। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নেশা সৃষ্টিকারী সকল বস্তুই হারাম। এরপর দু’জনেই চলে গেলেন। মু‘আয আবূ মূসাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কীভাবে কুরআন তিলাওয়াত করেন? তিনি উত্তর দিলেন, দাঁড়িয়ে, বসে, সাওয়ারীর পিঠে সাওয়ার অবস্থায় এবং কিছুক্ষণ পরপরই তিলাওয়াত করি। তিনি বললেন, আর আমি রাতের প্রথমদিকে ঘুমিয়ে পড়ি তারপর (শেষ ভাগে তিলাওয়াতের জন্য সালাতে) দাঁড়িয়ে যাই। এভাবে আমি আমার নিদ্রার সময়কেও আমার সালাতে দাঁড়ানোর মতই সওয়াবের বিষয় মনে করে থাকি। এরপর (উভয়েই নিজ শাসন এলাকায়) তাঁবু খাটালেন এবং পরস্পরের সাক্ষাৎ বজায় রেখে চললেন। (এক সময়) মু‘আয (রাঃ) আবূ মূসা (রাঃ)-এর সাক্ষাতে এসে দেখলেন, সেখানে এক ব্যক্তি হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ লোকটি কে? আবূ মূসা (রাঃ) বললেন, লোকটি ইয়াহূদী ছিল, ইসলাম গ্রহণ করার পর মুরতাদ হয়ে গেছে। মু‘আয (রাঃ) বললেন, আমি ওর গর্দান উড়িয়ে দেবো। শু‘বাহ থেকে আকাদী এবং ওয়াহ্ব এভাবেই বর্ণনা করেছেন। আর ওকী (রহ.) নযর ও আবূ দাঊদ (রহ.) এ হাদীসের সানাদে শু’বাহ (রহ.) সা‘ঈদ-সাঈদের পিতা-সাঈদের দাদা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি জারীর ইবনু ‘আবদুল হামীদ (রহ.) শাইবানী (রহ.)-এর মাধ্যমে আবূ বুরদার সূত্রে বর্ণনা করেছেন। [২২৬১, ৪৩৪২] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০০০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০০৪)

৪৩৪৫
مُسْلِمٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ أَبِيْ بُرْدَةَ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم جَدَّهُ أَبَا مُوْسَى وَمُعَاذًا إِلَى الْيَمَنِ فَقَالَ يَسِّرَا وَلَا تُعَسِّرَا وَبَشِّرَا وَلَا تُنَفِّرَا وَتَطَاوَعَا فَقَالَ أَبُوْ مُوْسَى يَا نَبِيَّ اللهِ إِنَّ أَرْضَنَا بِهَا شَرَابٌ مِنْ الشَّعِيْرِ الْمِزْرُ وَشَرَابٌ مِنَ الْعَسَلِ الْبِتْعُ فَقَالَ كُلُّ مُسْكِرٍ حَرَامٌ فَانْطَلَقَا فَقَالَ مُعَاذٌ لِأَبِيْ مُوْسَى كَيْفَ تَقْرَأُ الْقُرْآنَ قَالَ قَائِمًا وَقَاعِدًا وَعَلَى رَاحِلَتِيْ وَأَتَفَوَّقُهُ تَفَوُّقًا قَالَ أَمَّا أَنَا فَأَنَامُ وَأَقُوْمُ فَأَحْتَسِبُ نَوْمَتِيْ كَمَا أَحْتَسِبُ قَوْمَتِيْ وَضَرَبَ فُسْطَاطًا فَجَعَلَا يَتَزَاوَرَانِ فَزَارَ مُعَاذٌ أَبَا مُوْسَى فَإِذَا رَجُلٌ مُوْثَقٌ فَقَالَ مَا هَذَا فَقَالَ أَبُوْ مُوْسَى يَهُوْدِيٌّ أَسْلَمَ ثُمَّ ارْتَدَّ فَقَالَ مُعَاذٌ لَأَضْرِبَنَّ عُنُقَهُ تَابَعَهُ الْعَقَدِيُّ وَوَهْبٌ عَنْ شُعْبَةَ وَقَالَ وَكِيْعٌ وَالْنَّضْرُ وَأَبُوْ دَاوُدَ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ سَعِيْدٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ جَدِّهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم رَوَاهُ جَرِيْرُ بْنُ عَبْدِ الْحَمِيْدِ عَنْ الشَّيْبَانِيِّ عَنْ أَبِيْ بُرْدَةَ.

আবূ বুরদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তার দাদা আবূ মূসা ও মু‘আয (রাঃ)-কে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম (শাসক হিসেবে) ইয়ামানে পাঠালেন। এ সময় তিনি বললেন, তোমরা লোকজনের সঙ্গে সহজ আচরণ করবে। কখনো কঠিন আচরণ করবে না। মানুষের মনে সুসংবাদের মাধ্যমে উৎসাহ সৃষ্টি করবে। কখনো তাদের মনে অনীহা সৃষ্টি করবে না এবং একে অপরকে মেনে চলবে। আবূ মূসা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর নাবী! আমাদের এলাকায় মিয্র নামের এক প্রকার শরাব যব থেকে তৈরি করা হয় আর বিত্উ নামের এক প্রকার শরাব মধু থেকে তৈরি করা হয় (এগুলো সম্পর্কে হুকুম দিন)। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, নেশা সৃষ্টিকারী সকল বস্তুই হারাম। এরপর দু’জনেই চলে গেলেন। মু‘আয আবূ মূসাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কীভাবে কুরআন তিলাওয়াত করেন? তিনি উত্তর দিলেন, দাঁড়িয়ে, বসে, সাওয়ারীর পিঠে সাওয়ার অবস্থায় এবং কিছুক্ষণ পরপরই তিলাওয়াত করি। তিনি বললেন, আর আমি রাতের প্রথমদিকে ঘুমিয়ে পড়ি তারপর (শেষ ভাগে তিলাওয়াতের জন্য সালাতে) দাঁড়িয়ে যাই। এভাবে আমি আমার নিদ্রার সময়কেও আমার সালাতে দাঁড়ানোর মতই সওয়াবের বিষয় মনে করে থাকি। এরপর (উভয়েই নিজ শাসন এলাকায়) তাঁবু খাটালেন এবং পরস্পরের সাক্ষাৎ বজায় রেখে চললেন। (এক সময়) মু‘আয (রাঃ) আবূ মূসা (রাঃ)-এর সাক্ষাতে এসে দেখলেন, সেখানে এক ব্যক্তি হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এ লোকটি কে? আবূ মূসা (রাঃ) বললেন, লোকটি ইয়াহূদী ছিল, ইসলাম গ্রহণ করার পর মুরতাদ হয়ে গেছে। মু‘আয (রাঃ) বললেন, আমি ওর গর্দান উড়িয়ে দেবো। শু‘বাহ থেকে আকাদী এবং ওয়াহ্ব এভাবেই বর্ণনা করেছেন। আর ওকী (রহ.) নযর ও আবূ দাঊদ (রহ.) এ হাদীসের সানাদে শু’বাহ (রহ.) সা‘ঈদ-সাঈদের পিতা-সাঈদের দাদা নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি জারীর ইবনু ‘আবদুল হামীদ (রহ.) শাইবানী (রহ.)-এর মাধ্যমে আবূ বুরদার সূত্রে বর্ণনা করেছেন। [২২৬১, ৪৩৪২] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০০০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০০৪)

৪৩৪৬
عَبَّاسُ بْنُ الْوَلِيْدِ هُوَ النَّرْسِيُّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ عَنْ أَيُّوْبَ بْنِ عَائِذٍ حَدَّثَنَا قَيْسُ بْنُ مُسْلِمٍ قَالَ سَمِعْتُ طَارِقَ بْنَ شِهَابٍ يَقُوْلُ حَدَّثَنِيْ أَبُوْ مُوْسَى الْأَشْعَرِيُّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بَعَثَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى أَرْضِ قَوْمِيْ فَجِئْتُ وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مُنِيخٌ بِالأَبْطَحِ فَقَالَ أَحَجَجْتَ يَا عَبْدَ اللهِ بْنَ قَيْسٍ قُلْتُ نَعَمْ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ كَيْفَ قُلْتَ قَالَ قُلْتُ لَبَّيْكَ إِهْلَالًا كَإِهْلَالِكَ قَالَ فَهَلْ سُقْتَ مَعَكَ هَدْيًا قُلْتُ لَمْ أَسُقْ قَالَ فَطُفْ بِالْبَيْتِ وَاسْعَ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ ثُمَّ حِلَّ فَفَعَلْتُ حَتَّى مَشَطَتْ لِي امْرَأَةٌ مِنْ نِسَاءِ بَنِيْ قَيْسٍ وَمَكُثْنَا بِذَلِكَ حَتَّى اسْتُخْلِفَ عُمَرُ

আবূ মূসা আশ’আরী (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) আমাকে আমার গোত্রের এলাকায় (শাসক করে) পাঠালেন। (বিদায় হাজ্জের বছর) রসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) আবতাহ নামক স্থানে অবস্থান করার সময় আমি তাঁর সাক্ষাতে উপস্থিত হলাম। তিনি আমাকে বললেন, হে ‘আবদুল্লাহ ইবনু কায়স! তুমি ইহরাম বেঁধেছ কি? আমি বললাম, জী হ্যাঁ, হে আল্লাহ্‌র রসূল! তিনি বললেন, (তালবিয়া) কীভাবে বলেছিলে? আমি উত্তর দিলাম, আমি এরূপ বলেছি যে, হে আল্লাহ! আমি হাযির হয়েছি এবং আপনার [নাবী (সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম)- এর] ইহরামের মতো ইহ্‌রাম বাঁধলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, বাইতুল্লাহ তাওয়াফ কর এবং সাফা ও মারওয়ার সায়ী আদায় কর, তারপর হালাল হয়ে যাও। আমি সে রকমই করলাম। এমনকি বানী কাইসের জনৈকা মহিলা আমার চুল পর্যন্ত আঁচড়িয়ে দিয়েছিল। আর আমরা ‘উমার (রাযিআল্লাহু তাআলা আনহু)- এর খিলাফত কাল পর্যন্ত এভাবেই ‘আমাল করতে থাকলাম। [১৫৫৯] (আ.প্র. ৪০০১, ই.ফা. ৪০০৫)

৪৩৪৭
حِبَّانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ عَنْ زَكَرِيَّاءَ بْنِ إِسْحَاقَ عَنْ يَحْيَى بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ صَيْفِيٍّ عَنْ أَبِيْ مَعْبَدٍ مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِمُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ حِيْنَ بَعَثَهُ إِلَى الْيَمَنِ إِنَّكَ سَتَأْتِيْ قَوْمًا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ فَإِذَا جِئْتَهُمْ فَادْعُهُمْ إِلَى أَنْ يَشْهَدُوْا أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اللهِ فَإِنْ هُمْ طَاعُوْا لَكَ بِذَلِكَ فَأَخْبِرْهُمْ أَنَّ اللهَ قَدْ فَرَضَ عَلَيْهِمْ خَمْسَ صَلَوَاتٍ فِيْ كُلِّ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ فَإِنْ هُمْ طَاعُوْا لَكَ بِذَلِكَ فَأَخْبِرْهُمْ أَنَّ اللهَ قَدْ فَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ فَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ فَإِنْ هُمْ طَاعُوْا لَكَ بِذَلِكَ فَإِيَّاكَ وَكَرَائِمَ أَمْوَالِهِمْ وَاتَّقِ دَعْوَةَ الْمَظْلُوْمِ فَإِنَّهُ لَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ اللهِ حِجَابٌ.

قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ طَوَّعَتْ طَاعَتْ وَأَطَاعَتْ لُغَةٌ طِعْتُ وَطُعْتُ وَأَطَعْتُ.

ইবনু ‘আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু‘আয ইবনু জাবালকে ইয়ামানে পাঠানোর সময় তাঁকে বললেন, অচিরেই তুমি আহলে কিতাবদের এক গোত্রের কাছে যাচ্ছ। যখন তুমি তাদের কাছে গিয়ে পৌঁছবে তখন তাদেরকে এ দা‘ওয়াত দেবে তারা যেন সাক্ষ্য দেয় যে ‘আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল’, এরপর তারা যদি তোমার এ কথা মেনে নেয়, তখন তাদেরকে এ কথা জানিয়ে দেবে যে, আল্লাহ তোমাদের উপর দিনে ও রাতে পাঁচবার সালাত ফরয করে দিয়েছেন। তারা তোমার এ কথা মেনে নিলে তুমি তাদেরকে জানিয়ে দেবে যে, আল্লাহ তোমাদের উপর যাকাত ফরয করে দিয়েছেন, যা তাদের বিত্তশালীদের নিকট হতে গ্রহণ করা হবে এবং তাদের অভাবগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হবে। যদি তারা তোমার এ কথা মেনে নেয়, তা হলে (যাকাত গ্রহণ কালে) তাদের মালের উৎকৃষ্টতম অংশ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবে। মাযলুমদের বদদু‘আকে ভয় করবে, কেননা মাযলুমের বদদু‘আ এবং আল্লাহর মাঝখানে কোন আড়াল থাকে না। [১৩৯৫] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০০২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০০৬)



আবূ ‘আবদুল্লাহ [ইমাম বুখারী (রহ.)] বলেন, طَوَّعَتْ، طَاعَتْ এবং أَطَاعَتْ সমার্থবোধক শব্দ, طِعْتُ، طُعْتُ এবং أَطَعْتُ -এগুলোর একই অর্থ।

৪৩৪৮
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ حَبِيْبِ بْنِ أَبِيْ ثَابِتٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ مَيْمُوْنٍ أَنَّ مُعَاذًا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ لَمَّا قَدِمَ الْيَمَنَ صَلَّى بِهِمْ الصُّبْحَ فَقَرَأَ {وَاتَّخَذَ اللهُ إِبْرَاهِيْمَ خَلِيْلًا} فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ لَقَدْ قَرَّتْ عَيْنُ أُمِّ إِبْرَاهِيْمَ.

زَادَ مُعَاذٌ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ حَبِيْبٍ عَنْ سَعِيْدٍ عَنْ عَمْرٍو أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ مُعَاذًا إِلَى الْيَمَنِ فَقَرَأَ مُعَاذٌ فِيْ صَلَاةِ الصُّبْحِ سُوْرَةَ النِّسَاءِ فَلَمَّا قَالَ {وَاتَّخَذَ اللهُ إِبْرَاهِيْمَ خَلِيْلًا} قَالَ رَجُلٌ خَلْفَهُ قَرَّتْ عَيْنُ أُمِّ إِبْرَاهِيْمَ.

আম্‌র ইবনু মাইমূন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মু‘আয (ইবনু জাবাল) (রাঃ) ইয়ামানে পৌঁছার পর লোকজনকে নিয়ে ফাজ্রের সালাত আদায় করলেন। তাতে তিনি وَاتَّخَذَ اللهُ إِبْرَاهِيْمَ خَلِيْلًا অর্থাৎ আল্লাহ ইবরাহীমকে বন্ধু বানিয়ে নিলেন- (সূরাহ আন্-নিসা ৪/১২৫) আয়াতটি তিলাওয়াত করলেন। তখন কাওমের এক ব্যক্তি বলে উঠল, ইবরাহীমের মায়ের চোখ ঠান্ডা হয়ে গেছে।



মু‘আয (রাঃ) আরও অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন ‘আমর (রাঃ) থেকে। নিশ্চয়ই নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু‘আয (ইবনু জাবাল) (রাঃ)-কে ইয়ামানে পাঠালেন। সেখানে মু‘আয (রাঃ) ফাজ্রের সালাতে সূরাহ নিসা তিলাওয়াত করলেন। যখন তিনি পড়লেন وَاتَّخَذَ اللهُ إِبْرَاهِيْمَ خَلِيْلًا তখন তাঁর পেছনে এক ব্যক্তি বলে উঠল, ইবরাহীমের মায়ের চোখ ঠান্ডা হয়ে গেছে। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০০৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০০৭)

৬৪/৬২. অধ্যায়ঃ
বিদায় হাজ্জের পূর্বে ‘আলী ইবনু আবু ত্বলিব এবং খালিদ ইবনু ওয়ালিদ (রা.)- কে ইয়ামানে প্রেরণ

৪৩৪৯
أَحْمَدُ بْنُ عُثْمَانَ حَدَّثَنَا شُرَيْحُ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ يُوْسُفَ بْنِ إِسْحَاقَ بْنِ أَبِيْ إِسْحَاقَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ بَعَثَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَعَ خَالِدِ بْنِ الْوَلِيْدِ إِلَى الْيَمَنِ قَالَ ثُمَّ بَعَثَ عَلِيًّا بَعْدَ ذَلِكَ مَكَانَهُ فَقَالَ مُرْ أَصْحَابَ خَالِدٍ مَنْ شَاءَ مِنْهُمْ أَنْ يُعَقِّبَ مَعَكَ فَلْيُعَقِّبْ وَمَنْ شَاءَ فَلْيُقْبِلْ فَكُنْتُ فِيْمَنْ عَقَّبَ مَعَهُ قَالَ فَغَنِمْتُ أَوَاقٍ ذَوَاتِ عَدَدٍ.

আহমাদ ইবনু ‘উসমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

বারাআ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে খালিদ ইবনু ওয়ালিদ (রাঃ)- এর সঙ্গে ইয়ামানে পাঠালেন। বারাআ (রাঃ) বলেন, তিনি খালিদ (রাঃ)- এর স্থলে ‘আলী (রাঃ)- কে পাঠিয়ে বলে দিলেন যে, খালিদ (রাঃ)- এর সাথীদেরকে বলবে, তাদের মধ্যে যে তোমার সঙ্গে (ইয়ামানের দিকে) যেতে ইচ্ছা করে সে যেন তোমার সাথে চলে যায়, আর যে (মদিনায়) ফিরে যেতে চায় সে যেন ফিরে যায়। (রাবী বলেন) তখন আমি ‘আলী (রাঃ)- এর অনুগামীদের মধ্যে থাকলাম। ফলে আমি গানীমাত হিসেবে অনেক পরিমাণ উকিয়া [৭৮] লাভ করলাম। (আ.প্র. ৪০০৪, ই.ফা. ৪০০৮)

[৭৮] এক উকিয়া = ৪০ দিরহাম সমপরিমাণ।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৪৩৫০
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ سُوَيْدِ بْنِ مَنْجُوْفٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُرَيْدَةَ عَنْ أَبِيْهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلِيًّا إِلَى خَالِدٍ لِيَقْبِضَ الْخُمُسَ وَكُنْتُ أُبْغِضُ عَلِيًّا وَقَدْ اغْتَسَلَ فَقُلْتُ لِخَالِدٍ أَلَا تَرَى إِلَى هَذَا فَلَمَّا قَدِمْنَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ذَكَرْتُ ذَلِكَ لَهُ فَقَالَ يَا بُرَيْدَةُ أَتُبْغِضُ عَلِيًّا فَقُلْتُ نَعَمْ قَالَ لَا تُبْغِضْهُ فَإِنَّ لَهُ فِي الْخُمُسِ أَكْثَرَ مِنْ ذَلِكَ.

বুরাইদাহ (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আলী (রাঃ)- কে খুমুস (গানীমাতের এক-পঞ্চমাংশ) নিয়ে আসার জন্য খালিদ (রাঃ)- এর কাছে পাঠালেন। (রাবী বুরাইদাহ বলেন,) আমি ‘আলী (রাঃ)- এর প্রতি অসন্তুষ্ট, আর তিনি গোসলও করেছেন। (রাবী বলেন) তাই আমি খালিদ (রাঃ)- কে বললাম, আপনি কি তার দিকে দেখছেন না? এরপর আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে ফিরে আসলে আমি তাঁর কাছে বিষয়টি জানালাম। তখন তিনি বললেন, হে বুরাইদাহ! তুমি কি ‘আলীর প্রতি অসন্তুষ্ট? আমি বললাম জ্বী, হ্যাঁ। তিনি বলেলন, তার উপর অসন্তুষ্ট থেক না। কারণ খুমুসে তার প্রাপ্য এর চেয়েও অধিক আছে। (আ.প্র. ৪০০৫, ই.ফা. ৪০০৯)

৪৩৫১
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ بْنِ شُبْرُمَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِيْ نُعْمٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَعِيْدٍ الْخُدْرِيَّ يَقُوْلُ بَعَثَ عَلِيُّ بْنُ أَبِيْ طَالِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْيَمَنِ بِذُهَيْبَةٍ فِيْ أَدِيْمٍ مَقْرُوْظٍ لَمْ تُحَصَّلْ مِنْ تُرَابِهَا قَالَ فَقَسَمَهَا بَيْنَ أَرْبَعَةِ نَفَرٍ بَيْنَ عُيَيْنَةَ بْنِ بَدْرٍ وَأَقْرَعَ بْنِ حابِسٍ وَزَيْدِ الْخَيْلِ وَالرَّابِعُ إِمَّا عَلْقَمَةُ وَإِمَّا عَامِرُ بْنُ الطُّفَيْلِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِهِ كُنَّا نَحْنُ أَحَقَّ بِهَذَا مِنْ هَؤُلَاءِ قَالَ فَبَلَغَ ذَلِكَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَلَا تَأْمَنُوْنِيْ وَأَنَا أَمِيْنُ مَنْ فِي السَّمَاءِ يَأْتِيْنِيْ خَبَرُ السَّمَاءِ صَبَاحًا وَمَسَاءً قَالَ فَقَامَ رَجُلٌ غَائِرُ الْعَيْنَيْنِ مُشْرِفُ الْوَجْنَتَيْنِ نَاشِزُ الْجَبْهَةِ كَثُّ اللِّحْيَةِ مَحْلُوْقُ الرَّأْسِ مُشَمَّرُ الإِزَارِ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ اتَّقِ اللهَ قَالَ وَيْلَكَ أَوَلَسْتُ أَحَقَّ أَهْلِ الْأَرْضِ أَنْ يَتَّقِيَ اللهَ قَالَ ثُمَّ وَلَّى الرَّجُلُ قَالَ خَالِدُ بْنُ الْوَلِيْدِ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلَا أَضْرِبُ عُنُقَهُ قَالَ لَا لَعَلَّهُ أَنْ يَكُوْنَ يُصَلِّيْ فَقَالَ خَالِدٌ وَكَمْ مِنْ مُصَلٍّ يَقُوْلُ بِلِسَانِهِ مَا لَيْسَ فِيْ قَلْبِهِ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنِّيْ لَمْ أُوْمَرْ أَنْ أَنْقُبَ عَنْ قُلُوْبِ النَّاسِ وَلَا أَشُقَّ بُطُوْنَهُمْ قَالَ ثُمَّ نَظَرَ إِلَيْهِ وَهُوَ مُقَفٍّ فَقَالَ إِنَّهُ يَخْرُجُ مِنْ ضِئْضِئِ هَذَا قَوْمٌ يَتْلُوْنَ كِتَابَ اللهِ رَطْبًا لَا يُجَاوِزُ حَنَاجِرَهُمْ يَمْرُقُوْنَ مِنْ الدِّيْنِ كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنْ الرَّمِيَّةِ وَأَظُنُّهُ قَالَ لَئِنْ أَدْرَكْتُهُمْ لَأَقْتُلَنَّهُمْ قَتْلَ ثَمُوْدَ.

আবূ সা’ঈদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আলী ইবনু আবূ ত্বলিব (রাঃ) ইয়ামান থেকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে এক প্রকার (রঙিন) চামড়ার থলে করে সামান্য কিছু স্বর্ণ পাঠিয়েছিলেন। তখনও এগুলো থেকে সংযুক্ত মাটি পরিষ্কার করা হয়নি। আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চার জনের মাঝে স্বর্ণখণ্ডটি বণ্টন করে দিলেন। তারা হলেন, ‘উয়াইনাহ ইবনু বাদ্র, আকরা ইবনু হাবিস, যায়দ আল-খায়ল এবং চতুর্থ জন ‘আলক্বামাহ কিংবা ‘আমির ইবনু তুফায়ল (রাঃ)। তখন সাহাবীগণের মধ্য থেকে একজন বললেন, এটা পাওয়ার ব্যাপারে তাঁদের অপেক্ষা আমরাই অধিক হাকদার ছিলাম। (রাবী) বলেন, কথাতি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছল। তাই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা কি আমার উপর আস্থা রাখ না অথচ আমি আসমানের অধিবাসীদের আস্থাভাজন, সকাল-বিকাল আমার কাছে আসমানের সংবাদ আসছে। রাবী বলেন, এমন সময়ে এক ব্যাক্তি উঠে দাঁড়াল। লোকটির চোখ দু’টি ছিল কোটরাগত, চোয়ালের হাড় যেন বেরিয়ে পড়ছে, উঁচু কপাল বিশিষ্ট, দাড়ি অতি ঘন, মাথাটি ন্যাড়া, পরনের লুঙ্গী উপরে উত্থিত। সে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আল্লাহ্‌কে ভয় করুন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার জন্য আফসোস! আল্লাহ্‌কে ভয় করার ব্যাপারে দুনিয়াবাসীদের মধ্যে আমি কি অধিক হাকদার নই? রাবী আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, লোকটি চলে গেলে খালিদ বিন ওয়ালীদ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি কি লোকটির গর্দান উড়িয়ে দেব না? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ না হতে পারে সে সলাত আদায় করে। খালিদ (রাঃ) বললেন, অনেক সলাত আদায়কারী এমন আছে যারা মুখে এমন এমন কথা উচ্চারণ করে যা তাদের অন্তরে নেই। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমাকে মানুষের দিল ছিদ্র করে, পেট ফেড়ে দেখার জন্য বলা হয়নি। তারপর তিনি লোকটির দিকে তাকিয়ে দেখলেন। তখন লোকটি পিঠ ফিরিয়ে চলে যাচ্ছে। তিনি বললেন, এ ব্যাক্তির বংশ থেকে এমন জাতির উদ্ভব হবে যারা শ্রুতিমধুর কণ্ঠে আল্লাহ্‌র কিতাব তিলাওয়াত করবে অথচ আল্লাহ্‌র বাণী তাদের গলদেশের নিচে নামবে না। তারা দ্বীন থকে এভাবে বেরিয়ে যাবে যেভাবে লক্ষ্যবস্তুর দেহ ভেদ করে তীর বেরিয়ে যায়। (বর্ণনাকারী বলেন) আমার মনে হয় তিনি এ কথাও বলেছেন, যদি আমি তাদেরকে পাই তাহলে অবশ্যই আমি তাদেরকে সামূদ জাতির মতো হত্যা করে দেব। [৩৩৪৪; মুসলিম ১২/৪৭, হাঃ ১০৬৪, আহমাদ ১১৬৯৫] (আ.প্র. ৪০০৬, ই.ফা. ৪০১০)

৪৩৫২
الْمَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ عَطَاءٌ قَالَ جَابِرٌ أَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلِيًّا أَنْ يُقِيْمَ عَلَى إِحْرَامِهِ زَادَ مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ عَطَاءٌ قَالَ جَابِرٌ فَقَدِمَ عَلِيُّ بْنُ أَبِيْ طَالِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ بِسِعَايَتِهِ قَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِمَ أَهْلَلْتَ يَا عَلِيُّ قَالَ بِمَا أَهَلَّ بِهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَأَهْدِ وَامْكُثْ حَرَامًا كَمَا أَنْتَ قَالَ وَأَهْدَى لَهُ عَلِيٌّ هَدْيًا.

জাবির (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আলী (রাঃ)- কে তাঁর কৃত ইহরামের উপর স্থির থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। মুহাম্মাদ ইবনু বাক্র জুরায়জ-‘আত্বা (রহঃ)-জাবির (রাঃ) সূত্রে আরও বর্ণনা করেন যে, জাবির (রাঃ) বলেছেনঃ ‘আলী ইবনু আবূ ত্বলিব তাঁর আদায়কৃত কর খুমুস নিয়ে (মাক্কায়) আসলেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, হে ‘আলী! তুমি কিসের ইহ্‌রাম বেঁধেছ? তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেটির ইহ্‌রাম বেঁধেছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তা হলে তুমি কুরবানীর পশু পাঠিয়ে দাও এবং ইহ্‌রাম বাঁধা এ অবস্থায় অবস্থান করতে থাক। বর্ণনাকারী [জাবির (রাঃ)] বলেন, সে সময় ‘আলী (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর জন্য কুরবানীর পশু পাঠিয়েছিলেন। [১৫৫৭; মুসলিম ১৫/১৭, হাঃ ১২১৬] (আ.প্র. ৪০০৭, ই.ফা. ৪০১১)

৪৩৫৩
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيْلِ حَدَّثَنَا بَكْرٌ أَنَّهُ ذَكَرَ لِابْنِ عُمَرَ أَنَّ أَنَسًا حَدَّثَهُمْ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَهَلَّ بِعُمْرَةٍ وَحَجَّةٍ فَقَالَ أَهَلَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِالْحَجِّ وَأَهْلَلْنَا بِهِ مَعَهُ فَلَمَّا قَدِمْنَا مَكَّةَ قَالَ مَنْ لَمْ يَكُنْ مَعَهُ هَدْيٌ فَلْيَجْعَلْهَا عُمْرَةً وَكَانَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هَدْيٌ فَقَدِمَ عَلَيْنَا عَلِيُّ بْنُ أَبِيْ طَالِبٍ مِنَ الْيَمَنِ حَاجًّا فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِمَ أَهْلَلْتَ فَإِنَّ مَعَنَا أَهْلَكَ قَالَ أَهْلَلْتُ بِمَا أَهَلَّ بِهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَأَمْسِكْ فَإِنَّ مَعَنَا هَدْيًا.

বাকর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর কাছে এ কথা উল্লেখ করা হল, ‘আনাস (রাঃ) লোকেদের কাছে বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজ্জ ও ‘উমরাহর জন্য ইহরাম বেঁধেছিলেন। তখন ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজ্জের জন্য ইহরাম বেঁধেছেন, তাঁর সঙ্গে আমরাও হাজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধি। যখন আমরা মক্কা্য় পৌঁছলাম তিনি বললেন, তোমাদের যার সঙ্গে কুরবানীর পশু নেই সে যেন তার হাজ্জের ইহরাম ‘উমরাহর ইহরামে পরিণত করে। অবশ্য নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে কুরবানীর পশু ছিল। অতঃপর ‘আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) হাজ্জের উদ্দেশে ইয়ামান থেকে আসলেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম (তাঁকে) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কিসের ইহরাম বেঁধেছ? কারণ আমাদের সঙ্গে তোমার স্ত্রী পরিবার আছে। তিনি উত্তর দিলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেটির ইহরাম বেঁধেছেন আমি সেটিরই ইহরাম বেঁধেছি। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে (এ অবস্থায়ই) থাক, কেননা আমাদের সঙ্গে কুরবানীর পশু আছে। [মুসলিম ১৫/২৭, হাঃ ১২৩১, ১২৩২] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০০৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০১২)

৪৩৫৪
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيْلِ حَدَّثَنَا بَكْرٌ أَنَّهُ ذَكَرَ لِابْنِ عُمَرَ أَنَّ أَنَسًا حَدَّثَهُمْ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَهَلَّ بِعُمْرَةٍ وَحَجَّةٍ فَقَالَ أَهَلَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِالْحَجِّ وَأَهْلَلْنَا بِهِ مَعَهُ فَلَمَّا قَدِمْنَا مَكَّةَ قَالَ مَنْ لَمْ يَكُنْ مَعَهُ هَدْيٌ فَلْيَجْعَلْهَا عُمْرَةً وَكَانَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هَدْيٌ فَقَدِمَ عَلَيْنَا عَلِيُّ بْنُ أَبِيْ طَالِبٍ مِنَ الْيَمَنِ حَاجًّا فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِمَ أَهْلَلْتَ فَإِنَّ مَعَنَا أَهْلَكَ قَالَ أَهْلَلْتُ بِمَا أَهَلَّ بِهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَأَمْسِكْ فَإِنَّ مَعَنَا هَدْيًا.

বাকর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইবনু ‘উমার (রাঃ)-এর কাছে এ কথা উল্লেখ করা হল, ‘আনাস (রাঃ) লোকেদের কাছে বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজ্জ ও ‘উমরাহর জন্য ইহরাম বেঁধেছিলেন। তখন ইবনু ‘উমার (রাঃ) বললেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাজ্জের জন্য ইহরাম বেঁধেছেন, তাঁর সঙ্গে আমরাও হাজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধি। যখন আমরা মক্কা্য় পৌঁছলাম তিনি বললেন, তোমাদের যার সঙ্গে কুরবানীর পশু নেই সে যেন তার হাজ্জের ইহরাম ‘উমরাহর ইহরামে পরিণত করে। অবশ্য নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে কুরবানীর পশু ছিল। অতঃপর ‘আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) হাজ্জের উদ্দেশে ইয়ামান থেকে আসলেন। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম (তাঁকে) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কিসের ইহরাম বেঁধেছ? কারণ আমাদের সঙ্গে তোমার স্ত্রী পরিবার আছে। তিনি উত্তর দিলেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেটির ইহরাম বেঁধেছেন আমি সেটিরই ইহরাম বেঁধেছি। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাহলে (এ অবস্থায়ই) থাক, কেননা আমাদের সঙ্গে কুরবানীর পশু আছে। [মুসলিম ১৫/২৭, হাঃ ১২৩১, ১২৩২] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০০৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০১২)

৬৪/৬৩. অধ্যায়ঃ
যুল খালাসার যুদ্ধ

৪৩৫৫
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا خَالِدٌ حَدَّثَنَا بَيَانٌ عَنْ قَيْسٍ عَنْ جَرِيْرٍ قَالَ كَانَ بَيْتٌ فِي الْجَاهِلِيَّةِ يُقَالُ لَهُ ذُو الْخَلَصَةِ وَالْكَعْبَةُ الْيَمانِيَةُ وَالْكَعْبَةُ الشَّأْمِيَّةُ فَقَالَ لِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَلَا تُرِيْحُنِيْ مِنْ ذِي الْخَلَصَةِ فَنَفَرْتُ فِيْ مِائَةٍ وَخَمْسِيْنَ رَاكِبًا فَكَسَرْنَاهُ وَقَتَلْنَا مَنْ وَجَدْنَا عِنْدَهُ فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْتُهُ فَدَعَا لَنَا وَلِأَحْمَسَ.

জারীর (ইবনু ‘আবদুল্লাহ্‌ বাজালী) (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জাহিলিয়্যাতের যুগে একটি ঘর ছিল যাকে বলে ‘যুল খালাসা’, ইয়ামানী কা’বা এবং সিরীয় কা’বা [৭৯] বলা হত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, তুমি কি যুল-খালাসা থেকে আমাকে স্বস্তি দেবে না? এ কথা শুনে আমি একশ’ পঞ্চাশ জন অশ্বারোহী নিয়ে ছুটে চললাম। আর এ ঘরটি ভেঙ্গে টুকরা করে দিলাম এবং যাদেরকে পেলাম তাদের হত্যা করে ফেললাম। অবশেষে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে ফিরে এসে তাঁকে এ সংবাদ জানালাম। তিনি আমাদের জন্য এবং (আমাদের গোত্র) আহমাসের জন্য দু’আ করলেন। [৩০২০] (আ.প্র. ৪০০৯, ই.ফা. ৪০১৩)

[৭৯] এটি একটি মাসজিদের মত। সম্ভবত মাক্কাহ্‌র বাইতুল্লাহ্‌র ঘরটি তৈরী করা হয়েছিল। সেখানে আল্লাহ্‌র মুকাবালায় দেবদেবীর পূজা হোত। ইয়ামনী কা’বা বলার অর্থ হচ্ছে এটির অবস্থান ছিল ইয়ামানে আর সিরীয় কা’বা বলার অর্থ ছিল এর দরজা খুলতো সিরিয়ার দিকে। কাযী ইয়ায বলেন, কোন বর্ণনায় কা’বা ইয়ামানী ও কা’বা সিরীয় এর মাঝখানে ওয়াও হরফটি নেই। এর অর্থ হচ্ছে একে কখনো ইয়ামানী কা’বা আবার কখনো সিরীয় কা’বা বলা হয়তো।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৪৩৫৬
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ حَدَّثَنَا قَيْسٌ قَالَ قَالَ لِيْ جَرِيْرٌ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَلَا تُرِيْحُنِيْ مِنْ ذِي الْخَلَصَةِ وَكَانَ بَيْتًا فِيْ خَثْعَمَ يُسَمَّى الْكَعْبَةَ الْيَمانِيَةَ فَانْطَلَقْتُ فِيْ خَمْسِيْنَ وَمِائَةِ فَارِسٍ مِنْ أَحْمَسَ وَكَانُوْا أَصْحَابَ خَيْلٍ وَكُنْتُ لَا أَثْبُتُ عَلَى الْخَيْلِ فَضَرَبَ فِيْ صَدْرِيْ حَتَّى رَأَيْتُ أَثَرَ أَصَابِعِهِ فِيْ صَدْرِيْ وَقَالَ اللهُمَّ ثَبِّتْهُ وَاجْعَلْهُ هَادِيًا مَهْدِيًّا فَانْطَلَقَ إِلَيْهَا فَكَسَرَهَا وَحَرَّقَهَا ثُمَّ بَعَثَ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ رَسُوْلُ جَرِيْرٍ وَالَّذِيْ بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا جِئْتُكَ حَتَّى تَرَكْتُهَا كَأَنَّهَا جَمَلٌ أَجْرَبُ قَالَ فَبَارَكَ فِيْ خَيْلِ أَحْمَسَ وَرِجَالِهَا خَمْسَ مَرَّاتٍ.

ক্বায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জারীর (রাঃ) থেকে আমাকে বলেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেন, তুমি কি আমাকে যুল খালাসা থেকে স্বস্তি দেবে না? যুল খালাসা ছিল খাসআম গোত্রের একটি ঘর, যার নাম দেয়া হয়েছিল ইয়ামানী কা’বা। এ কথা শুনে আমি আহ্‌মাস গোত্র থেকে একশ’ পঞ্চাশ জন অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে চললাম। তাঁদের সকলেই অশ্ব পরিচালনায় পারদর্শী ছিল। আর আমি তখন ঘোড়ার পিঠে স্থিরভাবে বসতে পারছিলাম না। কাজেই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার বুকের উপর হাত দিয়ে আঘাত করলেন। এমন কি আমি আমার বুকের উপর তার আঙ্গুলগুলোর ছাপ পর্যন্ত দেখতে পেলাম। তিনি দু’আ করলেন, হে আল্লাহ! একে স্থির রাখুন এবং তাকে হিদায়াত দানকারী ও হিদায়াত লাভকারী বানিয়ে দিন। এরপর জারীর (রাঃ) সেখানে গেলেন এবং ঘরটি ভেঙ্গে দিলেন আর তা জ্বালিয়ে দিলেন। এরপর তিনি [জারীর (রাঃ)] রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে দূত পাঠালেন। তখন জারীদের দূত [রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে] বলল, সেই মহান সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্য বাণী দিয়ে পাঠিয়েছেন, আমি ঘরটিকে চর্মরোগে আক্রান্ত কাল উটের মতো রেখে আপনার কাছে এসেছি। রাবী বলেন, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আহমাস গোত্রের অশ্বারোহী ও পদাতিক বাহিনীর জন্য পাঁচবার বারাকাতের দু’আ করলেন। [৩০২০] (আ.প্র. ৪০১০, ই.ফা. ৪০১৪)

৪৩৫৭
يُوْسُفُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ إِسْمَاعِيْلَ بْنِ أَبِيْ خَالِدٍ عَنْ قَيْسٍ عَنْ جَرِيْرٍ قَالَ قَالَ لِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَلَا تُرِيْحُنِيْ مِنْ ذِي الْخَلَصَةِ فَقُلْتُ بَلَى فَانْطَلَقْتُ فِيْ خَمْسِيْنَ وَمِائَةِ فَارِسٍ مِنْ أَحْمَسَ وَكَانُوْا أَصْحَابَ خَيْلٍ وَكُنْتُ لَا أَثْبُتُ عَلَى الْخَيْلِ فَذَكَرْتُ ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَضَرَبَ يَدَهُ عَلَى صَدْرِيْ حَتَّى رَأَيْتُ أَثَرَ يَدِهِ فِيْ صَدْرِيْ وَقَالَ اللهُمَّ ثَبِّتْهُ وَاجْعَلْهُ هَادِيًا مَهْدِيًّا قَالَ فَمَا وَقَعْتُ عَنْ فَرَسٍ بَعْدُ قَالَ وَكَانَ ذُو الْخَلَصَةِ بَيْتًا بِالْيَمَنِ لِخَثْعَمَ وَبَجِيْلَةَ فِيْهِ نُصُبٌ تُعْبَدُ يُقَالُ لَهُ الْكَعْبَةُ قَالَ فَأَتَاهَا فَحَرَّقَهَا بِالنَّارِ وَكَسَرَهَا قَالَ وَلَمَّا قَدِمَ جَرِيْرٌ الْيَمَنَ كَانَ بِهَا رَجُلٌ يَسْتَقْسِمُ بِالأَزْلَامِ فَقِيْلَ لَهُ إِنَّ رَسُوْلَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَا هُنَا فَإِنْ قَدَرَ عَلَيْكَ ضَرَبَ عُنُقَكَ قَالَ فَبَيْنَمَا هُوَ يَضْرِبُ بِهَا إِذْ وَقَفَ عَلَيْهِ جَرِيْرٌ فَقَالَ لَتَكْسِرَنَّهَا وَلَتَشْهَدَنَّ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ أَوْ لَأَضْرِبَنَّ عُنُقَكَ قَالَ فَكَسَرَهَا وَشَهِدَ ثُمَّ بَعَثَ جَرِيْرٌ رَجُلًا مِنْ أَحْمَسَ يُكْنَى أَبَا أَرْطَاةَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يُبَشِّرُهُ بِذَلِكَ فَلَمَّا أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ وَالَّذِيْ بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا جِئْتُ حَتَّى تَرَكْتُهَا كَأَنَّهَا جَمَلٌ أَجْرَبُ قَالَ فَبَرَّكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى خَيْلِ أَحْمَسَ وَرِجَالِهَا خَمْسَ مَرَّاتٍ.

জারীর (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমাকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি কি আমকে যুল খালাসা থেকে স্বস্তি দেবে না? আমি বললামঃ অবশ্যই। এরপর আমি (আমাদের) আহমাস গোত্র থেকে একশ’ পঞ্চাশ জন অশ্বারোহী সৈনিক নিয়ে চললাম। তাদের সবাই ছিল অভিজ্ঞ অশ্বচালক। কিন্তু আমি ঘোড়ার উপর স্থির হয়ে বসতে পারতাম না। এ সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে জানালাম। তিনি তাঁর হাত দিয়ে আমার বুকের উপর আঘাত করলেন। এমনকি আমি আমার বুকে তাঁর হাতের চিহ্ন পর্যন্ত দেখতে পেলাম। তিনি দু’আ করলেনঃ হে আল্লাহ! একে স্থির রাখুন এবং তাকে হিদায়াতদানকারী ও হিদায়াত লাভকারী বানিয়ে দিন। জারীর (রাঃ) বলেনঃ এরপর আর কখনো আমি আমার ঘোড়া থকে পড়ে যাইনি। তিনি আরো বলেছেন যে, যুল খালাসা ছিল ইয়ামানের অন্তর্গত খাসআম ও বাজীলা গোত্রের একটি ঘর। সেখানে কতগুলো মূর্তি ছিল যেগুলোর পূজা করা হত এবং এ ঘরটিকে বলা হত কা’বা। রাবী (কায়স্‌) বলেন, এরপর তিনি সেখানে গেলেন এবং ঘরটি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিলেন আর একে ভেঙ্গে চুরে ফেললেন। রাবী আরও বলেন, আর যখন জারীর (রাঃ) ইয়ামানে গিয়ে উঠলেন তখন সেখানে এক লোক থাকত, সে তীরের সাহায্যে ভাগ্য নির্ণয় করত। লোকটিকে বলা হল, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর প্রতিনিধি এখানে আছেন, তিনি যদি তোমাকে পাকড়াও করেন তাহলে তোমার গর্দান উড়িয়ে দেবেন। রাবী বলেন, এরপর যখন সে ভাগ্য নির্ণয়ের কাজে লিপ্ত ছিল, সেই অবস্থায় জারীর (রাঃ) সেখানে পৌঁছে গেলেন। তিনি বললেন, তীরগুলো ভেঙ্গে ফেল এবং আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন উপাস্য নেই- এ কথার সাক্ষ্য দাও, অন্যথায় তোমার গর্দান উড়িয়ে দেব। লোকটি তখন তীরগুলো ভেঙ্গে ফেলল এবং কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করল। এরপর জারীর (রাঃ) আবূ আরতাত ডাক নাম বিশিষ্ট আহমাস গোত্রের এক ব্যক্তিকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট পাঠালেন এ সংবাদ শোনানোর জন্য। লোকটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! সে সত্তার কসম করে বলছি, যিনি আপনাকে সত্য বাণী সহকারে পাঠিয়েছেন, ঘরটিকে চর্মরোগে আক্রান্ত উটের মতো আমি কালো করে রেখে আমি এসেছি। বর্ণনাকারী বলেন, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আহমাস গোত্রের অশ্বারোহী এবং পদাতিক সৈনিকদের বারাকাতের জন্য পাঁচবার দু’আ করলেন। [৩০২০] (আ.প্র. ৪০১১, ই.ফা. ৪০১৫)

৬৪/৬৪. অধ্যায়ঃ
যাতুস্‌ সালাসিল যুদ্ধ

ইসমাঈল ইবনু আবূ খালিদ (রহঃ)- এর মতে, এটি লাখম ও জুযাম গোত্রের বিরুদ্ধে সংঘটিত যুদ্ধ।

ইবনু ইসহাক (রহঃ) ইয়াযীদ (রহঃ)- এর মাধ্যমে ‘উরওয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, যাতুস্‌ সালাসিল হল বালী, উযরা এবং বনিল কাইন গোত্রসমূহের নির্মিত নগর।

৪৩৫৮
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ عَنْ أَبِيْ عُثْمَانَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ عَمْرَو بْنَ الْعَاصِ عَلَى جَيْشِ ذَاتِ السُّلَاسِلِ قَالَ فَأَتَيْتُهُ فَقُلْتُ أَيُّ النَّاسِ أَحَبُّ إِلَيْكَ قَالَ عَائِشَةُ قُلْتُ مِنْ الرِّجَالِ قَالَ أَبُوْهَا قُلْتُ ثُمَّ مَنْ قَالَ عُمَرُ فَعَدَّ رِجَالًا فَسَكَتُّ مَخَافَةَ أَنْ يَجْعَلَنِيْ فِيْ آخِرِهِمْ.

আবূ ‘উসমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমর ইবনুল আস (রাঃ)- কে (সেনাপতি হিসেবে) যাতুস্ সালাসিল [৮০] বাহিনীর বিরুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন। আমর ইবনুল আস বলেনঃ (যুদ্ধ শেষে) আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট এসে তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনার কাছে কোন্‌ লোকটি অধিকতর প্রিয়? তিনি উত্তর দিলেন, ‘আয়িশাহ (রাঃ)। আমি বললাম, পুরুষদের মধ্যে কে? তিনি বললেন, তার (‘আয়িশাহ্‌র) পিতা। আমি বললাম, তারপর কে? তিনি বললেন, ‘উমার (রাঃ)। এভাবে তিনি পর পর আরো কয়েকজনের নাম বললেন। আমি চুপ হয়ে গেলাম এ ভয়ে যে, আমাকে না তিনি সকলের শেষে গণ্য করে বসেন। [৩৬৬২] (আ.প্র. ৪০১২, ই.ফা. ৪০১৬)

[৮০] অর্থাৎ শিকল যুদ্ধ। শিকল যুদ্ধ বলার কারণ হিসেবে জালালুদ্দীন সুয়ূতী কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন। অষ্টম হিজরীর জুমাদাল আখির মাসে সংঘটিত এ যুদ্ধে বিপক্ষ দলের সৈন্যরা জীবনপণ যুদ্ধ করার জন্য এবং যাতে কেউ যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে পলায়ন করতে না পারে সে জন্য পরস্পর পরস্পরকে শিকল দিয়ে সংযুক্ত করে রেখেছিল।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৪/৬৫. অধ্যায়ঃ
জারীর (রাঃ)- এর ইয়ামান গমন

৪৩৫৯
عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ الْعَبْسِيُّ حَدَّثَنَا ابْنُ إِدْرِيْسَ عَنْ إِسْمَاعِيْلَ بْنِ أَبِيْ خَالِدٍ عَنْ قَيْسٍ عَنْ جَرِيْرٍ قَالَ كُنْتُ بِالْيَمَنِ فَلَقِيْتُ رَجُلَيْنِ مِنْ أَهْلِ الْيَمَنِ ذَا كَلَاعٍ وَذَا عَمْرٍو فَجَعَلْتُ أُحَدِّثُهُمْ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَهُ ذُوْ عَمْرٍو لَئِنْ كَانَ الَّذِيْ تَذْكُرُ مِنْ أَمْرِ صَاحِبِكَ لَقَدْ مَرَّ عَلَى أَجَلِهِ مُنْذُ ثَلَاثٍ وَأَقْبَلَا مَعِيْ حَتَّى إِذَا كُنَّا فِيْ بَعْضِ الطَّرِيْقِ رُفِعَ لَنَا رَكْبٌ مِنْ قِبَلِ الْمَدِيْنَةِ فَسَأَلْنَاهُمْ فَقَالُوْا قُبِضَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَاسْتُخْلِفَ أَبُوْ بَكْرٍ وَالنَّاسُ صَالِحُوْنَ فَقَالَا أَخْبِرْ صَاحِبَكَ أَنَّا قَدْ جِئْنَا وَلَعَلَّنَا سَنَعُوْدُ إِنْ شَاءَ اللهُ وَرَجَعَا إِلَى الْيَمَنِ فَأَخْبَرْتُ أَبَا بَكْرٍ بِحَدِيْثِهِمْ قَالَ أَفَلَا جِئْتَ بِهِمْ فَلَمَّا كَانَ بَعْدُ قَالَ لِيْ ذُوْ عَمْرٍو يَا جَرِيْرُ إِنَّ بِكَ عَلَيَّ كَرَامَةً وَإِنِّيْ مُخْبِرُكَ خَبَرًا إِنَّكُمْ مَعْشَرَ الْعَرَبِ لَنْ تَزَالُوْا بِخَيْرٍ مَا كُنْتُمْ إِذَا هَلَكَ أَمِيْرٌ تَأَمَّرْتُمْ فِيْ آخَرَ فَإِذَا كَانَتْ بِالسَّيْفِ كَانُوْا مُلُوْكًا يَغْضَبُوْنَ غَضَبَ الْمُلُوْكِ وَيَرْضَوْنَ رِضَا الْمُلُوْكِ.

জারীর (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ইয়ামানে ছিলাম। এ সময়ে একদা যুকালা ও যু’আমর নামে ইয়ামানের দু’ব্যক্তির সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হল। আমি তাদেরকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর হাদীস শোনাতে লাগলাম। (বর্ণনাকারী বলেন) এমন সময়ে যু’আমর জারীর (রাঃ)- কে বললেন, তুমি যা বর্ণনা করছ তা যদি তোমার সাথীরই [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর] কথা হয়ে থাকে তা হলে জেনে নাও যে, তিনদিন আগে তিনি ইন্তিকাল করে গেছেন। [৮১] (জারীর বলেন, এ কথা শুনে আমি মদীনার দিকে ছুটলাম) তারা দু’জনেও আমার সঙ্গে সম্মুখের দিকে চললেন। অতঃপর আমরা একটি রাস্তার ধারে পৌঁছলে মদীনার দিক থেকে আসা একদল সওয়ারীর সাক্ষাৎ পেলাম। আমরা তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে তারা বলল, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর ওফাত হয়ে গেছে। মুসলিমদের পরামর্শক্রমে আবূ বাক্‌র (রাঃ) খলীফা নির্বাচিত হয়েছেন। তারপর তারা দু’জন (আমাকে) বলল, (মদিনায়) তোমার সাথী [আবূ বাক্‌র (রাঃ)]- কে বলবে যে, আমরা কিছুদূর পর্যন্ত এসেছিলাম। সম্ভবত আবার আসব ইনশাআল্লাহ, এ কথা বলে তারা দু’জনে ইয়ামানের দিকে ফিরে গেল। এরপর আমি আবূ বাক্‌র (রাঃ)- কে তাদের কথা জানালাম। তিনি বললেন, তাদেরকে তুমি নিয়ে আসলে না কেন? পরে আরেক সময় যু’আমর আমাকে বললেন, হে জারীর! তুমি আমার চেয়ে অধিক সম্মানী। তবুও আমি তোমাকে একটা কথা জানিয়ে দিচ্ছি যে, তোমরা আরব জাতি ততক্ষণ পর্যন্ত কল্যাণের মধ্যে থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা একজন আমীর মারা গেলে অপরজনকে (পরামর্শের ভিত্তিতে) আমীর বানিয়ে নেবে। আর তা যদি তরবারির জোরে ফায়সালা হয় তা হলে তোমাদের আমীরগণ রাজা বাদশাহর মতোই হয়ে যাবে। তারা রাজাদের রাগ করার মতই রাগ করবে। রাজাদের খুশি হওয়ার মতই খুশি হবে। (আ.প্র. ৪০১৩, ই.ফা. ৪০১৭)

[৮১] যু’আমর সম্ভবত কারো মুখে পূর্বেই অবগত হয়েছিলেন অথবা এও হতে পারে যে, তিনি জাহেলী যুগে জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী ছিলেন এবং সেই জ্ঞানের ভিত্তিতে এ কথা বলেছিলেন। আল্লহই ভাল জানেন।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৪/৬৬. অধ্যায়ঃ
সীফুল বাহরের যুদ্ধ

এ যুদ্ধে মুসলিমগণ কুরাইশের একটি কাফেলার প্রতিক্ষায় ছিল এবং তাঁদের সেনাপতি ছিলেন আবূ ‘উবাইদাহ (রাঃ)।

৪৩৬০
إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ مَالِكٌ عَنْ وَهْبِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ قَالَ بَعَثَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَعْثًا قِبَلَ السَّاحِلِ وَأَمَّرَ عَلَيْهِمْ أَبَا عُبَيْدَةَ بْنَ الْجَرَّاحِ وَهُمْ ثَلَاثُ مِائَةٍ فَخَرَجْنَا وَكُنَّا بِبَعْضِ الطَّرِيْقِ فَنِيَ الزَّادُ فَأَمَرَ أَبُوْ عُبَيْدَةَ بِأَزْوَادِ الْجَيْشِ فَجُمِعَ فَكَانَ مِزْوَدَيْ تَمْرٍ فَكَانَ يَقُوْتُنَا كُلَّ يَوْمٍ قَلِيْلٌ قَلِيْلٌ حَتَّى فَنِيَ فَلَمْ يَكُنْ يُصِيْبُنَا إِلَّا تَمْرَةٌ تَمْرَةٌ فَقُلْتُ مَا تُغْنِيْ عَنْكُمْ تَمْرَةٌ فَقَالَ لَقَدْ وَجَدْنَا فَقْدَهَا حِيْنَ فَنِيَتْ ثُمَّ انْتَهَيْنَا إِلَى الْبَحْرِ فَإِذَا حُوْتٌ مِثْلُ الظَّرِبِ فَأَكَلَ مِنْهَا الْقَوْمُ ثَمَانِيَ عَشْرَةَ لَيْلَةً ثُمَّ أَمَرَ أَبُوْ عُبَيْدَةَ بِضِلَعَيْنِ مِنْ أَضْلَاعِهِ فَنُصِبَا ثُمَّ أَمَرَ بِرَاحِلَةٍ فَرُحِلَتْ ثُمَّ مَرَّتْ تَحْتَهُمَا فَلَمْ تُصِبْهُمَا.

জাবির ইবনু ‘আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সমুদ্র তীরের দিকে একটি সৈন্যবাহিনী পাঠালেন। আবূ ‘উবাইয়দাহ ইবনুল জাররাহ্ (রাঃ)-কে তাদের আমীর নিযুক্ত করে দিলেন। তাঁরা সংখ্যায় ছিল তিনশ’। (রাবী বলেন) আমরা বেরিয়ে পড়লাম। আমরা এক রাস্তায় ছিলাম তখন আমাদের রসদপত্র শেষ হয়ে গেল, তাই আবূ উবাইদাহ (রাঃ) আদেশ দিলেন সমগ্র সেনাদলের অবশিষ্ট পাথেয় একত্রিত করতে। অতএব সব একত্রিত করা হল। মাত্র দু’থলে খেজুর হল। এরপর তিনি প্রত্যহ অল্প অল্প করে আমাদের মধ্যে খাদ্য সরবরাহ করতে লাগলেন। যখন তাও শেষ হয়ে গেল। তখন কেবল একটি করে খেজুর আমরা পেতাম। (বর্ণনাকারী বলেন) আমি জাবির (রাঃ)-কে বললাম, একটি করে খেজুর খেয়ে আপনাদের কতটুকু ক্ষুধা মিটত? তিনি বললেন, আল্লাহ্‌র কসম! একটি খেজুর পাওয়াও বন্ধ হয়ে গেলে আমরা একটির কদরও বুঝতে পারলাম। এরপর আমরা সমুদ্র পর্যন্ত পৌঁছে গেলাম। তখন আমরা পর্বতের মতো বড় একটি মাছ পেয়ে গেলাম। বাহিনীর সকলে আঠারো দিন পর্যন্ত তা খেল। তারপর আবূ উবাইদা (রাঃ) মাছটির পাঁজরের দু’টি হাড় আনতে হুকুম দিলেন। (দু’টি হাড় আনা হলে) সেগুলো দাঁড় করানো হল। এরপর তিনি একটি সওয়ারী প্রস্তুত করতে বললেন। সাওয়ারী প্রস্তুত হল এবং হাড় দু’টির নিচ দিয়ে সওয়ারীটি অতিক্রম করল। কিন্তু হাড় দু’টিতে কোনই স্পর্শ লাগল না। [২৪৮৩] (আ.প্র. ৪০১৪, ই.ফা. ৪০১৮)

৪৩৬১
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ الَّذِيْ حَفِظْنَاهُ مِنْ عَمْرِو بْنِ دِيْنَارٍ قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ يَقُوْلُ بَعَثَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ثَلَاثَ مِائَةِ رَاكِبٍ أَمِيْرُنَا أَبُوْ عُبَيْدَةَ بْنُ الْجَرَّاحِ نَرْصُدُ عِيْرَ قُرَيْشٍ فَأَقَمْنَا بِالسَّاحِلِ نِصْفَ شَهْرٍ فَأَصَابَنَا جُوْعٌ شَدِيْدٌ حَتَّى أَكَلْنَا الْخَبَطَ فَسُمِّيَ ذَلِكَ الْجَيْشُ جَيْشَ الْخَبَطِ فَأَلْقَى لَنَا الْبَحْرُ دَابَّةً يُقَالُ لَهَا الْعَنْبَرُ فَأَكَلْنَا مِنْهُ نِصْفَ شَهْرٍ وَادَّهَنَّا مِنْ وَدَكِهِ حَتَّى ثَابَتْ إِلَيْنَا أَجْسَامُنَا فَأَخَذَ أَبُوْ عُبَيْدَةَ ضِلَعًا مِنْ أَضْلَاعِهِ فَنَصَبَهُ فَعَمَدَ إِلَى أَطْوَلِ رَجُلٍ مَعَهُ قَالَ سُفْيَانُ مَرَّةً ضِلَعًا مِنْ أَضْلَاعِهِ فَنَصَبَهُ وَأَخَذَ رَجُلًا وَبَعِيْرًا فَمَرَّ تَحْتَهُ قَالَ جَابِرٌ وَكَانَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ نَحَرَ ثَلَاثَ جَزَائِرَ ثُمَّ نَحَرَ ثَلَاثَ جَزَائِرَ ثُمَّ نَحَرَ ثَلَاثَ جَزَائِرَ ثُمَّ إِنَّ أَبَا عُبَيْدَةَ نَهَاهُ وَكَانَ عَمْرٌو يَقُوْلُ أَخْبَرَنَا أَبُوْ صَالِحٍ أَنَّ قَيْسَ بْنَ سَعْدٍ قَالَ لِأَبِيْهِ كُنْتُ فِي الْجَيْشِ فَجَاعُوْا قَالَ انْحَرْ قَالَ نَحَرْتُ قَالَ ثُمَّ جَاعُوْا قَالَ انْحَرْ قَالَ نَحَرْتُ قَالَ ثُمَّ جَاعُوْا قَالَ انْحَرْ قَالَ نَحَرْتُ ثُمَّ جَاعُوْا قَالَ انْحَرْ قَالَ نُهِيْتُ.

জাবির ইবনু ‘আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের তিনশ’ সাওয়ারীর একটি সৈন্যবাহিনীকে কুরাইশদের একটি কাফেলার উপর সুযোগ মতো আক্রমন চালানোর জন্য পাঠিয়েছিলেন। আবূ ‘উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ্ (রাঃ) ছিলেন আমাদের সেনাপতি। আমরা অর্ধমাস সমুদ্র তীরে অবস্থান করলাম। ভয়ানক ক্ষুধা আমাদেরকে পেয়ে বসল। ক্ষুধার জ্বালায় গাছের পাতা খেতে থাকলাম। এ জন্যই এ সৈন্যবাহিনীর নাম রাখা হয়েছে জায়শুল খাবাত অর্থাৎ পাতাওয়ালা সেনাদল। এরপর সমুদ্র আমাদের জন্য আম্বর নামক একটি প্রাণী নিক্ষেপ করল। আমরা অর্ধমাস ধরে তা থেকে খেলাম। এর চর্বি শরীরে লাগালাম। ফলে আমাদের শরীর পূর্বের মত হৃষ্টপুষ্ট হয়ে গেল। এরপর আবূ ‘উবাইদাহ (রাঃ) আম্বরটির শরীর থেকে একটি পাঁজর ধরে খাড়া করালেন। এরপর তাঁর সাথীদের মধ্যকার সবচেয়ে লম্বা লোকটিকে আসতে বললেন। সুফ্ইয়ান (রাঃ) আরেক বর্ণনায় বলেছেন, আবূ ‘উবাইদাহ (রাঃ) আম্বরটির পাঁজরের হারগুলোর মধ্য থেকে একটি হাড় ধরে খাড়া করালেন এবং (ঐ) লোকটিতে উটের পিঠে বসিয়ে এর নিচ দিয়ে অতিক্রম করালেন। জাবির (রাঃ) বলেন, সেনাদলের এক ব্যক্তি (খাদ্যের অভাভ দেখে) প্রথমে তিনটি উট যবহ করেছিলেন, তারপর আরো তিনটি উট যবেহ করেছিলেন, তারপর আরো তিনটি উট যবহ করেছিলেন। এরপর ‘আবূ উবাইদাহ (রাঃ) তাকে (উট যবহ করতে) নিষেধ করলেন। আমর ইবনু দীনার (রাঃ) বলতেন , আবূ সালিহ (রহঃ) আমাদের জানিয়েছেন হে, কায়স ইবনু সা’দ (রাঃ) (অভিযান থেকে ফিরে এসে) তাঁর পিতার কাছে বর্ণনা করেছিলেন যে, সেনাদলে আমিও ছিলাম, সেনাদল ক্ষুধার্ত হয়ে পরল, (কথাটা শোনামাত্র কায়সের পিতা) সা’দ বললেন, এমতাবস্থায় তুমি উট যবহ করে দিতে। কায়স বললেন, (হ্যাঁ) আমি উট যবেহ করেছি। তিনি বললেন, তারপর আবার সবাই ক্ষুধার্ত হয়ে গেল। এবারো তার পিতা বললেন, তুমি যবহ করতে। তিনি বললেন, (হ্যাঁ) যবহ করেছি। তিনি বললেন, তারপর আবার সবাই ক্ষুধার্ত হল। সা’দ বললেন, এবারো উট যবহ করতে। তিনি বললেন, (হ্যাঁ) যবহ করেছি। তিনি বললেন, এরপরও আবার সবাই ক্ষুধার্ত হল। সা’দ (রাঃ) বললেন, উট যবহ করতে। যখন কায়স ইবনু সা’দ (রাঃ) বললেন, তখন আমাকে (যবহ করতে) নিষেধ করা হল। [৮২] [২৪৮৩; মুসলিম ৩৪/৪, হাঃ ১৯৩৫, আহমাদ ১৪৩১৯] (আ.প্র. ৪০১৫, ই.ফা. ৪০১৯)

[৮২] নিষেধ করার কারণ ছিল এই যে, উতগুলো কায়স ইবনু সা’দ এর ছিল না এবং তার পিতা সা’দ (রা.)-এর ছিল। পিতার অনুমতি ব্যতীত পুত্র পিতার সম্পদ হতে খরচ করতে পারে না।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৪৩৬২
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَمْرٌو أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرًا رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ غَزَوْنَا جَيْشَ الْخَبَطِ وَأُمِّرَ أَبُوْ عُبَيْدَةَ فَجُعْنَا جُوْعًا شَدِيْدًا فَأَلْقَى الْبَحْرُ حُوْتًا مَيِّتًا لَمْ نَرَ مِثْلَهُ يُقَالُ لَهُ الْعَنْبَرُ فَأَكَلْنَا مِنْهُ نِصْفَ شَهْرٍ فَأَخَذَ أَبُوْ عُبَيْدَةَ عَظْمًا مِنْ عِظَامِهِ فَمَرَّ الرَّاكِبُ تَحْتَهُ فَأَخْبَرَنِيْ أَبُو الزُّبَيْرِ أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرًا يَقُوْلُ قَالَ أَبُوْ عُبَيْدَةَ كُلُوْا فَلَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِيْنَةَ ذَكَرْنَا ذَلِكَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ كُلُوْا رِزْقًا أَخْرَجَهُ اللهُ أَطْعِمُوْنَا إِنْ كَانَ مَعَكُمْ فَأَتَاهُ بَعْضُهُمْ فَأَكَلَهُ.

জাবির (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা জাইশুল খাবাত-এর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম, আবূ উবাইদাহ (রাঃ)-কে আমাদের সেনাপতি নিযুক্ত করা হয়েছিল। পথে আমরা ভীষণ ক্ষুধায় ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ি। তখন সমুদ্র আমাদের জন্য একটি মরা মাছ তীরে নিক্ষেপ করে দিল। এত বড় মাছ আমরা আর কখনো দেখিনি, একে আমবার বলা হয়। এরপর মাছটি থেকে আমারা অর্ধমাস আহার করলাম। একবার আবূ ‘উবাইদাহ (রাঃ) মাছটির হাড়গুলোর একটি হাড় তুলে ধরলেন আর সওয়ারীর পিঠে চড়ে একজন হারটির নিচ দিয়ে অতিক্রম করল। (ইবনু জুরায়জ বলেন) আবূ যুবায়র (রহঃ) আমাকে জানিয়েছেন যে, তিনি জাবির (রাঃ) থেকে শুনেছেন, জাবির (রাঃ) বলেনঃ ঐ সময়ে আবূ ‘উবাইদাহ (রাঃ) বললেনঃ তোমারা মাছটি আহার কর। এরপর আমরা মাদীনাহ ফিরে আসলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বিষয়টি অবগত করলাম। তিনি বললেন, খাও। এটি তোমাদের জন্য রিয্‌ক, আল্লাহ পাঠিয়ে দিয়েছেন। আর তোমাদের কাছে কিছু অবশিষ্ট থাকলে আমাদেরকেও খাওয়াও। মাছটির কিছু অংশ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে এনে দেয়া হল। তিনি তা খেলেন। [২৪৮৩] (আ.প্র. ৪০১৬, ই.ফা. ৪০২০)

৬৪/৬৭.অধ্যায়ঃ
হিজরাতের নবম বছর লোকজনসহ আবূ বাক্‌র (রাঃ)-এর হাজ্জ পালন

৪৩৬৩
سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ أَبُو الرَّبِيْعِ حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ الصِّدِّيْقَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ بَعَثَهُ فِي الْحَجَّةِ الَّتِيْ أَمَّرَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهَا قَبْلَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ يَوْمَ النَّحْرِ فِيْ رَهْطٍ يُؤَذِّنُ فِي النَّاسِ لَا يَحُجُّ بَعْدَ الْعَامِ مُشْرِكٌ وَلَا يَطُوْفُ بِالْبَيْتِ عُرْيَانٌ.

আবূ হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

বিদায় হাজ্জের পূর্ববর্তী হাজ্জে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বাক্‌র সিদ্দীক (রাঃ)-কে আমীরুল হাজ্জ নিযুক্ত করেছিলেন। সে সময় দশ তারিখে আবূ বাক্‌র (রাঃ) তাঁকে [আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে] একটি ছোট দলসহ লোকজনের মধ্যে এ ঘোষণা দেয়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন যে, আগামী বছর কোন মুশরিক হাজ্জ করতে পারবে না। আর উলঙ্গ অবস্থায় কেউ বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করতে পারবে না।[৮৩] (আ.প্র. ৪০১৭, ই.ফা. ৪০২১)

[৮৩] পূর্বে নারী পুরুষ নির্বিশেষে উলঙ্গ হয়ে কা’বা তাওয়াফ করতো। তাই এহেন জঘন্য কাজ না করার ঘোষণা পাঠিয়েছিলেন।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৪৩৬৪
عَبْدُ اللهِ بْنُ رَجَاءٍ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ آخِرُ سُوْرَةٍ نَزَلَتْ كَامِلَةً بَرَاءَةٌ وَآخِرُ سُوْرَةٍ نَزَلَتْ خَاتِمَةُ سُوْرَةِ {النِّسَآ‍ءِ يَسْتَفْتُوْنَكَ قُلْ اللهُ يُفْتِيْكُمْ فِي الْكَلَالَةِ}.

বারাআ (ইবনু আযিব) (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সর্বশেষ যে সূরাটি পূর্ণরূপে অবতীর্ণ হয়েছিল তা ছিল সূরাহ বারাআত। আর সর্বশেষ যে আয়াতটি সমাপ্তিরূপে অবতীর্ণ হয়েছিল সেটি ছিল সূরা আন-নিসার এ আয়াতঃ অর্থাৎ লোকেরা আপনার কাছে সমাধান জানতে চায়, বলুন পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি সম্পর্কে তোমাদেরকে আল্লাহ সমাধান জানাচ্ছেন- (সূরাহ আন-নিসা ৪/১৭৬) [৪৬০৫, ৪৬৫৪,৬৭৪৪] (আ.প্র. ৪০১৮, ই.ফা. ৪০২২)

৬৪/৬৮. অধ্যায়ঃ
বানী তামীমের প্রতিনিধি দল

৪৩৬৫
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِيْ صَخْرَةَ عَنْ صَفْوَانَ بْنِ مُحْرِزٍ الْمَازِنِيِّ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَتَى نَفَرٌ مِنْ بَنِيْ تَمِيْمٍ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ اقْبَلُوا الْبُشْرَى يَا بَنِيْ تَمِيْمٍ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ قَدْ بَشَّرْتَنَا فَأَعْطِنَا فَرُئِيَ ذَلِكَ فِيْ وَجْهِهِ فَجَاءَ نَفَرٌ مِنَ الْيَمَنِ فَقَالَ اقْبَلُوا الْبُشْرَى إِذْ لَمْ يَقْبَلْهَا بَنُوْ تَمِيْمٍ قَالُوْا قَدْ قَبِلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ.

ইমরান ইবনু হুসাইন (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বানু তামীমের একটি প্রতিনিধি দল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে আসলে তিনি তাদেরকে বললেন, হে বানু তামীম! সুসংবাদ গ্রহণ কর। তারা বললঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি সুসংবাদ দিয়ে থাকেন, এবার আমাদেরকে কিছু (অর্থ-সম্পদ) দিন। কথাটি শুনে তাঁর চেহারায় অসন্তোষের ভাব প্রকাশ পেল। এরপর ইয়ামানের একটি প্রতিনিধি দল আসলে তিনি তাঁদেরকে বললেন, বানু তামীম যখন সুসংবাদ গ্রহণ করলই না তখন তোমরা সেটি গ্রহণ কর। তারা বললেন, আমরা তা গ্রহণ করলাম হে আল্লাহ্‌র রসূল! [৩১৯০] (আ.প্র. ৪০১৯, ই.ফা. ৪০২৩)

৬৪/৬৯. অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নেই

বানু তামীমের উপগোত্র বানু আমবার-এর বিরুদ্ধে ‘উইয়াইনাহ ইবনু হিস্‌ন ইবনু হুযাইফাহ ইবনু বাদ্‌রের যুদ্ধ। ইবনু ইসহাক (রহঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘উইয়াইনাহ (রাঃ)-কে এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য পাঠিয়েছেন। তারপর তিনি রাতের শেষ ভাগে তাদের উপর আক্রমন চালিয়ে কিছু লোককে হত্যা করেন এবং তাদের মহিলাদেরকে বন্দী করেন।

৪৩৬৬
زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ عَنْ أَبِيْ زُرْعَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَا أَزَالُ أُحِبُّ بَنِيْ تَمِيْمٍ بَعْدَ ثَلَاثٍ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُهَا فِيْهِمْ هُمْ أَشَدُّ أُمَّتِيْ عَلَى الدَّجَّالِ وَكَانَتْ فِيْهِمْ سَبِيَّةٌ عِنْدَ عَائِشَةَ فَقَالَ أَعْتِقِيْهَا فَإِنَّهَا مِنْ وَلَدِ إِسْمَاعِيْلَ وَجَاءَتْ صَدَقَاتُهُمْ فَقَالَ هَذِهِ صَدَقَاتُ قَوْمٍ أَوْ قَوْمِي.

আবূ হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট থেকে তিনটি কথা শুনার পর থেকে আমি বানী তামীমকে ভালবাসতে থাকি। (তিনি বলেছেন) তারা আমার উম্মাতের মধ্যে দাজ্জালের বিরোধিতায় সবচেয়ে অধিক কঠোর হবে। তাদের গোত্রের একটি বাঁদী ‘আয়িশাহ (রাঃ)- এর কাছে ছিল। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, একে আযাদ করে দাও, কারণ সে ইসমাঈল (আ.)- এর বংশধর। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে তাদের সাদকাহ্‌র অর্থ-সম্পদ আসলে তিনি বললেন, এটি একটি কাওমের সদাকাহ বা তিনি বললেন, এটি আমার কাওমের সদাকাহ। [২৫৪৩] (আ.প্র. ৪০২০, ই.ফা. ৪০২৪)

৪৩৬৭
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوْسَى حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ يُوْسُفَ أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ الزُّبَيْرِ أَخْبَرَهُمْ أَنَّهُ قَدِمَ رَكْبٌ مِنْ بَنِيْ تَمِيْمٍ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَبُوْ بَكْرٍ أَمِّرْ الْقَعْقَاعَ بْنَ مَعْبَدِ بْنِ زُرَارَةَ قَالَ عُمَرُ بَلْ أَمِّرْ الْأَقْرَعَ بْنَ حَابِسٍ قَالَ أَبُوْ بَكْرٍ مَا أَرَدْتَ إِلَّا خِلَافِيْ قَالَ عُمَرُ مَا أَرَدْتُ خِلَافَكَ فَتَمَارَيَا حَتَّى ارْتَفَعَتْ أَصْوَاتُهُمَا فَنَزَلَ فِيْ {ذٰلِكَ يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تُقَدِّمُوْا} حَتَّى انْقَضَتْ.

আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

বানী তামীম গোত্র থেকে একটি অশ্বারোহী দল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে আসল। আবূ বাকর (রাঃ) প্রস্তাব দিলেন, কা’কা ইবনু মা’বাদ ইবনু যারারা (রাঃ)-কে এদের আমীর নিযুক্ত করে দিন। ‘উমার (রাঃ) বললেন, বরং আকরা ইবনু হাবিস (রাঃ)-কে আমীর বানিয়ে দিন। আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, আমার বিরোধিতা করাই তোমার উদ্দেশ্য। ‘উমার (রাঃ) বললেন, আপনার বিরোধিতা করার ইচ্ছা আমি কখনো করি না। এর উপর দু’জনের বাক-বিতণ্ডা চলতে চলতে শেষ পর্যায়ে উভয়ের আওয়াজ উঁচু হয়ে গেল। ফলে এ সম্পর্কে এ আয়াত অবতীর্ণ হল, “হে মুমিনগণ! আল্লাহ এবং তার রসূলের সামনে তোমরা কোন ব্যাপারে অগ্রবর্তী হয়ো না। বরং আল্লাহকে ভয় কর, আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। হে মু’মিনগণ! তোমরা নাবীর কন্ঠস্বরের উপর নিজেদের কন্ঠস্বর উঁচু করো না এবং নিজেদের মধ্যে যেভাবে উচ্চৈঃস্বরে কথা বল তাঁর সঙ্গে সেরূপ উচ্চৈঃস্বরে কথা বলো না। কারণ এতে তোমাদের ‘আমাল নিস্ফল হয়ে যাবে তোমাদের অজ্ঞাতসারে”- (সূরাহ আল-হুজুরাত ৪৯/১-২)। [৪৮৪৫, ৪৮৪৭, ৭৩০২] (আ.প্র. ৪০২১, ই.ফা. ৪০২৫)

৬৪/৭০ অধ্যায়ঃ
‘আবদুল কায়স গোত্রের প্রতিনিধি দল

৪৩৬৮
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا أَبُوْ عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ حَدَّثَنَا قُرَّةُ عَنْ أَبِيْ جَمْرَةَ قُلْتُ لِابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا إِنَّ لِيْ جَرَّةً يُنْتَبَذُ لِيْ نَبِيْذٌ فَأَشْرَبُهُ حُلْوًا فِيْ جَرٍّ إِنْ أَكْثَرْتُ مِنْهُ فَجَالَسْتُ الْقَوْمَ فَأَطَلْتُ الْجُلُوْسَ خَشِيْتُ أَنْ أَفْتَضِحَ فَقَالَ قَدِمَ وَفْدُ عَبْدِ الْقَيْسِ عَلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَرْحَبًا بِالْقَوْمِ غَيْرَ خَزَايَا وَلَا النَّدَامَى فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ بَيْنَنَا وَبَيْنَكَ الْمُشْرِكِيْنَ مِنْ مُضَرَ وَإِنَّا لَا نَصِلُ إِلَيْكَ إِلَّا فِيْ أَشْهُرِ الْحُرُمِ حَدِّثْنَا بِجُمَلٍ مِنَ الْأَمْرِ إِنْ عَمِلْنَا بِهِ دَخَلْنَا الْجَنَّةَ وَنَدْعُوْ بِهِ مَنْ وَرَاءَنَا قَالَ آمُرُكُمْ بِأَرْبَعٍ وَأَنْهَاكُمْ عَنْ أَرْبَعٍ الإِيْمَانِ بِاللهِ هَلْ تَدْرُوْنَ مَا الإِيْمَانُ بِاللهِ شَهَادَةُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَإِقَامُ الصَّلَاةِ وَإِيْتَاءُ الزَّكَاةِ وَصَوْمُ رَمَضَانَ وَأَنْ تُعْطُوْا مِنَ الْمَغَانِمِ الْخُمُسَ وَأَنْهَاكُمْ عَنْ أَرْبَعٍ مَا انْتُبِذَ فِي الدُّبَّاءِ وَالنَّقِيْرِ وَالْحَنْتَمِ وَالْمُزَفَّتِ.

আবূ জামরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

(তিনি বলেন) আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বললামঃ আমার একটি কলসী আছে। তাতে আমার জন্য (খেজুর ভিজিয়ে) নাবীয তৈরী করা হয় এবং পানি মিঠা হলে আমি তা আরেকটি পাত্রে ঢেলে পানি করি। কিন্তু কখনো যদি ঐ পানি অধিক পরিমাণ পান করে লোকজনের সঙ্গে বসে যাই এবং দীর্ঘ সময় মাসজিদে বসে থাকি তখন আমার ভয় হয় যে, (নেশার কারণে) আমি অপমাণিত হব। তখন ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, ‘আবদুল কায়স গোত্রের একটি প্রতিনিধি দল রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে আসলে তিনি বললেন, কাওমের জন্য খোশ-আমদেদ যাদের আগমণ না ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় হয়েছে, না অপমানিত অবস্থায়। তারা আরয করল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমাদের ও আপনার মধ্যে মুদার গোত্রের মুশরিকরা প্রতিবন্ধক হয়ে আছে। এ জন্য আমিরা আপনার কাছে নিশিদ্ধ মাসসমূহ ব্যতীত অন্য সময়ে আসতে পারি না। কাজেই আমাদেরকে সংক্ষিপ্ত কয়েকটি কথা বলে দিন, যেগুলোর উপর ‘আমাল করলে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। আর যারা আমাদের পেছনে (বাড়িতে) রয়ে গেছে তাদেরকে এর দা’ওয়াত দেব। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি তোমাদেরকে চারটি জিনিস পালন করার নির্দেশ দিচ্ছি। আর চারটি জিনিস থেকে বিরত থাকতে বলছি। আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনার নির্দেশ দিচ্ছি। তোমরা কি জান আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনা কাকে বলে? তা হলঃ ‘আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই’- এ কথার সাক্ষ্য দেয়া, আর সালাত আদায় করা, যাকাত দেয়া, রমাযানের সওম পালন করা এবং গানীমাতের মালের এক-পঞ্চমাংশ জমা দেয়ার নির্দেশ দিচ্ছি। আর চারটি জিনিস- লাউয়ের পাত্র, কাঠের তৈরী নাকীর নামক পাত্র, সবুজ কলসী এবং মুযাফফাত নামক তৈল মাখানো পাত্রে নাবীয [৮৪] তৈরী করা থেকে নিষেধ করছি। [৫৩] (আ.প্র. ৪০২২, ই.ফা. ৪০২৬)

[৮৪]- খেজুরের পানি থেকে তৈরী খুবই নেশা সৃষ্টিকারী এক জাতীয় মদকে নাবীয বলা হয় এবং উপরোক্ত পাত্রগুলো ব্যবহারই হতো মদ প্রস্তুতের জন্য। এ কারণে এগুলোর ব্যবহার নিষেধ করা হয়েছে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৪৩৬৯
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَبِيْ جَمْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ يَقُوْلُ قَدِمَ وَفْدُ عَبْدِ الْقَيْسِ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّا هَذَا الْحَيَّ مِنْ رَبِيْعَةَ وَقَدْ حَالَتْ بَيْنَنَا وَبَيْنَكَ كُفَّارُ مُضَرَ فَلَسْنَا نَخْلُصُ إِلَيْكَ إِلَّا فِيْ شَهْرٍ حَرَامٍ فَمُرْنَا بِأَشْيَاءَ نَأْخُذُ بِهَا وَنَدْعُوْ إِلَيْهَا مَنْ وَرَاءَنَا قَالَ آمُرُكُمْ بِأَرْبَعٍ وَأَنْهَاكُمْ عَنْ أَرْبَعٍ الإِيْمَانِ بِاللهِ شَهَادَةِ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَعَقَدَ وَاحِدَةً وَإِقَامِ الصَّلَاةِ وَإِيْتَاءِ الزَّكَاةِ وَأَنْ تُؤَدُّوْا لِلهِ خُمْسَ مَا غَنِمْتُمْ وَأَنْهَاكُمْ عَنْ الدُّبَّاءِ وَالنَّقِيْرِ وَالْحَنْتَمِ وَالْمُزَفَّتِ.

আবূ জামরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন- আবদুল কায়স গোত্রে একটি প্রতিনিধি দল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দরবারে এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমরা অর্থাৎ এই ছোট্ট দল রাবী’আহ’র গোত্র। আমাদের এবং আপনার মাঝখানে প্রতিবন্ধক হয়ে আছে মুদার গোত্রের মুশরিকরা। কাজেই আমরা নিষিদ্ধ মাসগুলো ব্যতীত অন্য সময়ে আপনার কাছে আসতে পারি না। এ জন্য আপনি আমাদেরকে এমন কিছু বিষয়ের নির্দেশ দিয়ে দিন যেগুলোর উপর আমরা ‘আমাল করতে থাকব এবং যারা আমাদের পেছনে রয়েছে তাদেরকেও সেই দিকে আহ্বান জানাব। তিনি বললেন, আমি তোমাদেরকে চারটি বিষয়ের হুকুম দিচ্ছি এবং চারটি বিষয় থেকে নিষেধ করছি। (বিষয়গুলো হল) আল্লাহ্‌র উপর ঈমান আনা অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই এ কথার সাক্ষ্য দেয়া। (কথাটি বলে) তিনি আঙ্গুলের সাহায্যে এক গুণলেন। আর সলাত আদায় করা, যাকাত দেয়া এবং তোমরা যে গানীমাত লাভ করবে তার এক-পঞ্চমাংশ আল্লাহ্‌র জন্য জমা দেয়া। আর আমি তোমাদেরকে লাউয়ের পাত্র, নাকীর নামক খোদাইকৃত কাঠের পাত্র, সবুজ কলসী এবং মুযাফফাত নামক তৈল মাখানো পাত্র ব্যবহার থেকে নিষেধ করছি। [৫৩] (আ.প্র. ৪০২৩, ই.ফা. ৪০২৭)

৪৩৭০
يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ أَخْبَرَنِيْ عَمْرٌو وَقَالَ بَكْرُ بْنُ مُضَرَ عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ عَنْ بُكَيْرٍ أَنَّ كُرَيْبًا مَوْلَى ابْنِ عَبَّاسٍ حَدَّثَهُ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ وَعَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ أَزْهَرَ وَالْمِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ أَرْسَلُوْا إِلَى عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا فَقَالُوا اقْرَأْ عَلَيْهَا السَّلَامَ مِنَّا جَمِيْعًا وَسَلْهَا عَنْ الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعَصْرِ وَإِنَّا أُخْبِرْنَا أَنَّكِ تُصَلِّيْهَا وَقَدْ بَلَغَنَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْهَا قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ وَكُنْتُ أَضْرِبُ مَعَ عُمَرَ النَّاسَ عَنْهُمَا قَالَ كُرَيْبٌ فَدَخَلْتُ عَلَيْهَا وَبَلَّغْتُهَا مَا أَرْسَلُوْنِيْ فَقَالَتْ سَلْ أُمَّ سَلَمَةَ فَأَخْبَرْتُهُمْ فَرَدُّوْنِيْ إِلَى أُمِّ سَلَمَةَ بِمِثْلِ مَا أَرْسَلُوْنِيْ إِلَى عَائِشَةَ فَقَالَتْ أُمُّ سَلَمَةَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَنْهَى عَنْهُمَا وَإِنَّهُ صَلَّى الْعَصْرَ ثُمَّ دَخَلَ عَلَيَّ وَعِنْدِيْ نِسْوَةٌ مِنْ بَنِيْ حَرَامٍ مِنَ الْأَنْصَارِ فَصَلَّاهُمَا فَأَرْسَلْتُ إِلَيْهِ الْخَادِمَ فَقُلْتُ قُوْمِيْ إِلَى جَنْبِهِ فَقُوْلِيْ تَقُوْلُ أُمُّ سَلَمَةَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلَمْ أَسْمَعْكَ تَنْهَى عَنْ هَاتَيْنِ الرَّكْعَتَيْنِ فَأَرَاكَ تُصَلِّيْهِمَا فَإِنْ أَشَارَ بِيَدِهِ فَاسْتَأْخِرِيْ فَفَعَلَتْ الْجَارِيَةُ فَأَشَارَ بِيَدِهِ فَاسْتَأْخَرَتْ عَنْهُ فَلَمَّا انْصَرَفَ قَالَ يَا بِنْتَ أَبِيْ أُمَيَّةَ سَأَلْتِ عَنْ الرَّكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعَصْرِ إِنَّهُ أَتَانِيْ أُنَاسٌ مِنْ عَبْدِ الْقَيْسِ بِالإِسْلَامِ مِنْ قَوْمِهِمْ فَشَغَلُوْنِيْ عَنْ الرَّكْعَتَيْنِ اللَّتَيْنِ بَعْدَ الظُّهْرِ فَهُمَا هَاتَانِ.

বুকায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর আযাদকৃত গোলাম কুরাইব (রহঃ) তাকে বর্ণনা করেছেন যে, ইবনু ‘আব্বাস, আবদুর রহমান ইবনু আযহার এবং মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) (এ তিনজনে) আমাকে ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর কাছে পাঠিয়ে বললেন, তাঁকে আমাদের সবার পক্ষ থেকে সালাম জানাবে এবং তাঁকে আসরের পরের দু’রাক’আত সলাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে। কারণ আমরা অবহিত হয়েছি যে, আপনি নাকি এই দু’রাক’আত সলাত আদায় করেন অথচ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ দু’রাক’আত সলাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন- এ হাদীসও আমাদের কাছে পৌঁছেছে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি ‘উমার (রাঃ)-এর উপস্থিতিতে এ দু’রাক’আত সলাত আদায়কারী লোকদেরকে প্রহার করতাম। কুরায়ব (রহঃ) বলেন, আমি তাঁর [‘আয়িশাহ (রাঃ) কাছে গেলাম এবং তারা আমাকে যে ব্যাপারে পাঠিয়েছেন তা জানালাম। তিনি বললেন, বিষয়টি উম্মু সালামাহ (রাঃ)-এর কাছে জিজ্ঞেস কর। এরপর আমি তাঁদেরকে জানালে তাঁরা আবার আমাকে উম্মু সালামাহ (রাঃ)-এর কাছে পাঠালেন যেভাবে তারা আমাকে ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর কাছে পাঠিয়েছিলেন। তখন উম্মু সালামাহ (রাঃ) বললেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শুনেছি, তিনি দু’রাক’আত সলাত আদায় করা থেকে নিষেধ করেছেন। কিন্তু একদিন তিনি ‘আসরের সলাত আদায় করে আমার ঘরে ঘরে প্রবেশ করলেন। এ সময় আমার কাছে ছিল আনসারদের বানী হারাম গোত্রের কতিপয় মহিলা। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’রাক’আত সলাত আদায় করলেন। আমি তখন পরিচারিকাদের পাঠিয়ে বললাম, তুমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পাশে গিয়ে দাঁড়াবে এবং বলবে, “উম্মু সালামাহ (রাঃ) আপনাকে এ কথা বলছেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি কি আপনাকে এ দু’রাক’আত আদায় করা থেকে নিষেধ করতে শুনিনি অথচ দেখতে পাচ্ছি আপনি সে দু’রাক’আত আদায় করছেন?” এরপর যদি তিনি হাত দিয়ে ইঙ্গিত করেন তাহলে পিছনে সরে যাবে। পরিচারিকা গিয়ে সেভাবেই বলল। তিনি হাত দিয়ে ইংগিত করলেন। পরিচারিকা পেছনের দিকে সরে গেল। সলাত সম্পাদন করে তিনি বললেন, হে আবূ উমাইয়্যার কন্যা! (উম্মু সালামাহ) তুমি আমাকে আসরের পরের দু’রাক’আত সলাতের কথা জিজ্ঞেস করছে। আসলে আজ ‘আবদুল কায়স গোত্র থেকে তাদের কতিপয় লোক আমার কাছে ইসলাম গ্রহণ করতে এসেছিল। তাঁরা আমাকে ব্যস্ত রাখার কারণে যুহরের পরের দু’আক’আত সলাত করতে পারিনি। সেই দু’রাক’আত হল এ দু’রাক’আত সলাত। [১২৩৩] (আ.প্র. ৪০২৪, ই.ফা. ৪০২৮)

৪৩৭১
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْجُعْفِيُّ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَامِرٍ عَبْدُ الْمَلِكِ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ هُوَ ابْنُ طَهْمَانَ عَنْ أَبِيْ جَمْرَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَوَّلُ جُمُعَةٍ جُمِّعَتْ بَعْدَ جُمُعَةٍ جُمِّعَتْ فِيْ مَسْجِدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ مَسْجِدِ عَبْدِ الْقَيْسِ بِجُوَاثَى يَعْنِيْ قَرْيَةً مِنَ الْبَحْرَيْنِ.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাসজিদে জুমু’আহর সলাত জারী করার পরে সর্বপ্রথম যে মাসজিদে জুমু’আহর সলাত জারী করা হয়েছিল তা হল বাহরাইনের জুয়াসা এলাকায় অবস্থিত ‘আবদুল ক্বায়স গোত্রের মাসজিদ। [৮৯২] (আ.প্র. ৪০২৫, ই.ফা. ৪০২৯)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]