সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস মাগাযী অধ্যায় ১২শ ভাগ হাদিস নং ৪৩৭২ – ৪৪১৪

৬৪/৭১ অধ্যায়ঃ
বানু হানীফার প্রতিনিধি দল এবং সুমামাহ ইবনু উসাল (রাঃ)-এর ঘটনা

৪৩৭২
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ أَبِيْ سَعِيْدٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَيْلًا قِبَلَ نَجْدٍ فَجَاءَتْ بِرَجُلٍ مِنْ بَنِيْ حَنِيْفَةَ يُقَالُ لَهُ ثُمَامَةُ بْنُ أُثَالٍ فَرَبَطُوْهُ بِسَارِيَةٍ مِنْ سَوَارِي الْمَسْجِدِ فَخَرَجَ إِلَيْهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا عِنْدَكَ يَا ثُمَامَةُ فَقَالَ عِنْدِيْ خَيْرٌ يَا مُحَمَّدُ إِنْ تَقْتُلْنِيْ تَقْتُلْ ذَا دَمٍ وَإِنْ تُنْعِمْ تُنْعِمْ عَلَى شَاكِرٍ وَإِنْ كُنْتَ تُرِيْدُ الْمَالَ فَسَلْ مِنْهُ مَا شِئْتَ فَتُرِكَ حَتَّى كَانَ الْغَدُ ثُمَّ قَالَ لَهُ مَا عِنْدَكَ يَا ثُمَامَةُ قَالَ مَا قُلْتُ لَكَ إِنْ تُنْعِمْ تُنْعِمْ عَلَى شَاكِرٍ فَتَرَكَهُ حَتَّى كَانَ بَعْدَ الْغَدِ فَقَالَ مَا عِنْدَكَ يَا ثُمَامَةُ فَقَالَ عِنْدِيْ مَا قُلْتُ لَكَ فَقَالَ أَطْلِقُوْا ثُمَامَةَ فَانْطَلَقَ إِلَى نَجْلٍ قَرِيْبٍ مِنَ الْمَسْجِدِ فَاغْتَسَلَ ثُمَّ دَخَلَ الْمَسْجِدَ فَقَالَ أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُوْلُ اللهِ يَا مُحَمَّدُ وَاللهِ مَا كَانَ عَلَى الْأَرْضِ وَجْهٌ أَبْغَضَ إِلَيَّ مِنْ وَجْهِكَ فَقَدْ أَصْبَحَ وَجْهُكَ أَحَبَّ الْوُجُوْهِ إِلَيَّ وَاللهِ مَا كَانَ مِنْ دِيْنٍ أَبْغَضَ إِلَيَّ مِنْ دِيْنِكَ فَأَصْبَحَ دِيْنُكَ أَحَبَّ الدِّيْنِ إِلَيَّ وَاللهِ مَا كَانَ مِنْ بَلَدٍ أَبْغَضُ إِلَيَّ مِنْ بَلَدِكَ فَأَصْبَحَ بَلَدُكَ أَحَبَّ الْبِلَادِ إِلَيَّ وَإِنَّ خَيْلَكَ أَخَذَتْنِيْ وَأَنَا أُرِيْدُ الْعُمْرَةَ فَمَاذَا تَرَى فَبَشَّرَهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَمَرَهُ أَنْ يَعْتَمِرَ فَلَمَّا قَدِمَ مَكَّةَ قَالَ لَهُ قَائِلٌ صَبَوْتَ قَالَ لَا وَلَكِنْ أَسْلَمْتُ مَعَ مُحَمَّدٍ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلَا وَاللهِ لَا يَأْتِيْكُمْ مِنَ الْيَمَامَةِ حَبَّةُ حِنْطَةٍ حَتَّى يَأْذَنَ فِيْهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم .

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদল অশ্বারোহী সৈন্য নজদের দিকে পাঠিয়েছিলেন। তারা সুমামাহ ইবনু উসাল নামক বনু হানীফার এক লোককে ধরে আনলেন এবং মাসজিদে নাববীর একটি খুঁটির সঙ্গে তাঁকে বেঁধে রাখলেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কাছে গিয়ে বললেন, ওহে সুমামাহ! তোমার কাছে কেমন মনে হচ্ছে? সে উত্তর দিল, হে মুহাম্মাদ! আমার কাছে তো ভালই মনে হচ্ছে। যদি আমাকে হত্যা করেন তাহলে আপনি একজন খুনিকে হত্যা করবেন। আর যদিকে আপনি অনুগ্রহ করেন তাহলে একজন কৃতজ্ঞ ব্যক্তিকে অনুগ্রহ করবেন। আর যদি আপনি অর্থ সম্পদ পেতে চান তাহলে যতটা ইচ্ছা দাবী করুন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে সেই অবস্থার উপর রেখে দিলেন। এভাবে পরের দিন আসল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার তাকে বললেন, ওহে সুমামাহ! তোমার কাছে কেমন মনে হচ্ছে? সে বলল, আমার কাছে সেটিই মনে হচ্ছে যা আমি আপনাকে বলেছিলাম যে, যদি আপনি অনুগ্রহ করেন তাহলে একজন কৃতজ্ঞ ব্যক্তির উপর অনুগ্রহ করবেন। তিনি তাকে সেই অবস্থায় রেখে দিলেন। এভাবে এর পরের দিনও আসল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে সুমামাহ! তোমার কাছে কেমন মনে হচ্ছে? সে বলল, আমার কাছে তা-ই মনে হচ্ছে যা আমি পূর্বেই বলেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা সুমামাহর বন্ধন ছেড়ে দাও। এবার সুমামাহ মাসজিদে নাববীতে প্রবেশ করল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্‌র রসূল। (তিনি বললেন) হে মুহাম্মাদ! আল্লাহ্‌র কসম! ইতোপূর্বে আমার কাছে যমীনের উপর আপনার চেহারার চেয়ে অধিক অপছন্দনীয় আর কোন চেহারা ছিল না। কিন্তু এখন আপনার চেহারাই আমার কাছে সকল চেহারা অপেক্ষা অধিক প্রিয়। আল্লাহ্‌র কসম! আমার কাছে আপনার দ্বীন অপেক্ষা অধিক ঘৃণিত অন্য কোন দ্বীন ছিল না। এখন আপনার দীনই আমার কাছে সকল দ্বীনের চেয়ে প্রিয়তম। আল্লাহ্‌র কসম! আমার মনে আপনার শহরের চেয়ে অধিক খারাপ শহর আর কোনটি ছিল না। কিন্তু এখন আপনার শহরটিই আমার কাছে সকল শহরের চেয়ে অধিক প্রিয়। আপনার অশ্বারোহী সৈনিকগণ আমাকে ধরে এনেছে, সে সময় আমি ‘উমরাহর উদ্দেশ্যে বেরিয়ে ছিলাম। এখন আপনি আমাকে কী হুকুম করেন? তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে সু-সংবাদ প্রদান করলেন এবং ‘উমরাহ আদায়ের নির্দেশ দিলেন। এরপর তিনি যখন মক্কায় আসলেন তখন এক ব্যক্তি তাকে বলল, বেদ্বীন হয়ে গেছ? তিনি উত্তর করলেন, না, বরং আমি মুহাম্মাদ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে ইসলাম গ্রহণ করেছি। আর আল্লাহ্‌র কসম! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অনুমতি ব্যতীত তোমাদের কাছে ইয়ামামাহ থেকে গমের একটি দানাও আসবে না। [৪৬২; মুসলিম ৩২/১৯, হাঃ ১৭৬৪] (আ.প্র. ৪০২৬, ই.ফা. ৪০৩০)

৪৩৭৩
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ حُسَيْنٍ حَدَّثَنَا نَافِعُ بْنُ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَدِمَ مُسَيْلِمَةُ الْكَذَّابُ عَلَى عَهْدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلَ يَقُوْلُ إِنْ جَعَلَ لِيْ مُحَمَّدٌ الْأَمْرَ مِنْ بَعْدِهِ تَبِعْتُهُ وَقَدِمَهَا فِيْ بَشَرٍ كَثِيْرٍ مِنْ قَوْمِهِ فَأَقْبَلَ إِلَيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَعَهُ ثَابِتُ بْنُ قَيْسِ بْنِ شَمَّاسٍ وَفِيْ يَدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قِطْعَةُ جَرِيْدٍ حَتَّى وَقَفَ عَلَى مُسَيْلِمَةَ فِيْ أَصْحَابِهِ فَقَالَ لَوْ سَأَلْتَنِيْ هَذِهِ الْقِطْعَةَ مَا أَعْطَيْتُكَهَا وَلَنْ تَعْدُوَ أَمْرَ اللهِ فِيْكَ وَلَئِنْ أَدْبَرْتَ لَيَعْقِرَنَّكَ اللهُ وَإِنِّيْ لَأَرَاكَ الَّذِيْ أُرِيْتُ فِيْهِ مَا رَأَيْتُ وَهَذَا ثَابِتٌ يُجِيْبُكَ عَنِّيْ ثُمَّ انْصَرَفَ عَنْهُ.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে একবার মিথ্যুক মুসাইলামাহ (মাদীনাহয়) এসেছিল। সে বলতে লাগল, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যদি আমাকে তাঁর পরে তাঁর স্থলাভিষিক্ত করে যায় তাহলে আমি তাঁর অনুগত হয়ে যাব। সে তার গোত্রের বহু লোকজনসহ এসেছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাবিত ইবনু কায়স ইবনু সাম্মাসকে সঙ্গে নিয়ে তার দিকে অগ্রসর হলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাতে ছিল একটি খেজুরের ডাল। মুসাইলামাহ তার সঙ্গী-সাথীদের মাঝে ছিল, এই অবস্থায় তিনি তার কাছে পৌঁছলেন। তিনি বললেন, যদি তুমি আমার কাছে এ ডালটিও চাও তবে তাও আমি তোমাকে দেব না। তোমার ব্যাপারে আল্লাহ্‌র নির্দেশ কক্ষনো লঙ্ঘিত হবে না। যদি তুমি আমার আনুগত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও তাহলে অবশ্যই আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করে দিবেন। আমি তোমাকে ঠিক তেমনই দেখতে পাচ্ছি যেমনটি আমাকে (স্বপ্নে) দেখানো হয়েছে। এই সাবিত আমার পক্ষ হতে তোমাকে জবাব দেবে। এরপর তিনি তার নিকট হতে চলে আসলেন। [৩৬২০] (আ.প্র. ৪০২৭, ই.ফা. ৪০৩১)

৪৩৭৪
قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَسَأَلْتُ عَنْ قَوْلِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّكَ أُرَى الَّذِيْ أُرِيْتُ فِيْهِ مَا أَرَيْتُ فَأَخْبَرَنِيْ أَبُوْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُ فِيْ يَدَيَّ سِوَارَيْنِ مِنْ ذَهَبٍ فَأَهَمَّنِيْ شَأْنُهُمَا فَأُوْحِيَ إِلَيَّ فِي الْمَنَامِ أَنْ انْفُخْهُمَا فَنَفَخْتُهُمَا فَطَارَا فَأَوَّلْتُهُمَا كَذَّابَيْنِ يَخْرُجَانِ بَعْدِيْ أَحَدُهُمَا الْعَنْسِيُّ وَالْآخَرُ مُسَيْلِمَةُ.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উক্তি “আমি তোমাকে তেমনই দেখতে পাচ্ছি যেমন আমাকে দেখানো হয়েছিল” সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে আবূ হুরায়রা (রাঃ) আমাকে জানালেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, একদিন আমি ঘুমাচ্ছিলাম তখন স্বপ্নে দেখলাম, আমার দু’হাতে স্বর্ণের দু’টি কঙ্কন। কঙ্কন দু’টি আমাকে চিন্তিত করল। তখন ঘুমের মধ্যেই আমার প্রতি ওয়াহী করা হল, কাঁকন দু’টিতে ফুঁ দাও। আমি সে দু’টিতে ফুঁ দিলে তা উড়ে গেল। আমি এর ব্যাখ্যা করেছি দু’জন মিথ্যাচারী (নাবী) যারা আমার পরে বের হবে। তাদের একজন ‘আনসী, অন্যজন মুসাইলামাহ। [৩৬২১] (আ.প্র. ৪০২৭, ই.ফা. ৪০৩১)

৪৩৭৫
إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ هَمَّامٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ أُتِيْتُ بِخَزَائِنِ الْأَرْضِ فَوُضِعَ فِيْ كَفِّيْ سِوَارَانِ مِنْ ذَهَبٍ فَكَبُرَا عَلَيَّ فَأَوْحَى اللهُ إِلَيَّ أَنْ انْفُخْهُمَا فَنَفَخْتُهُمَا فَذَهَبَا فَأَوَّلْتُهُمَا الْكَذَّابَيْنِ اللَّذَيْنِ أَنَا بَيْنَهُمَا صَاحِبَ صَنْعَاءَ وَصَاحِبَ الْيَمَامَةِ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমি ঘুমাচ্ছিলাম এমতাবস্থায় (স্বপ্নে) আমাকে পৃথিবীর সকল দেয়া হল এবং আমার হাতে দু’টি স্বর্ণ কঙ্কন রাখা হল। এ দু’টি আমার কাছে গুরুতর মনে হল। তখন ওয়াহী যোগে আমাকে জানানো হল যে, ও দু’টিতে ফুঁ দাও। আমি ফুঁ দিলাম, তখন ও দু’টি উধাও হয়ে গেল। আমি এ দু’টির ব্যাখ্যা করলাম যে, এরা সেই দু’ মিথ্যাচারী (নাবী) যাদের মাঝখানে আমি অবস্থান করছি। অর্থাৎ সান’আর অধিবাসী (আসওয়াদ আনসী) এবং ইয়ামামার অধিবাসী (মুসাইলামাতুল কাযযাব)। [৩৬২১; মুসলিম ৪২/৪, হাঃ ২২৭৪, আহমাদ ১১৮১৪] (আ.প্র. ৪০২৮, ই.ফা. ৪০৩২)

৪৩৭৬
الصَّلْتُ بْنُ مُحَمَّدٍ قَالَ سَمِعْتُ مَهْدِيَّ بْنَ مَيْمُوْنٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا رَجَاءٍ الْعُطَارِدِيَّ يَقُوْلُ كُنَّا نَعْبُدُ الْحَجَرَ فَإِذَا وَجَدْنَا حَجَرًا هُوَ أَخْيَرُ مِنْهُ أَلْقَيْنَاهُ وَأَخَذْنَا الْآخَرَ فَإِذَا لَمْ نَجِدْ حَجَرًا جَمَعْنَا جُثْوَةً مِنْ تُرَابٍ ثُمَّ جِئْنَا بِالشَّاةِ فَحَلَبْنَاهُ عَلَيْهِ ثُمَّ طُفْنَا بِهِ فَإِذَا دَخَلَ شَهْرُ رَجَبٍ قُلْنَا مُنَصِّلُ الْأَسِنَّةِ فَلَا نَدَعُ رُمْحًا فِيْهِ حَدِيْدَةٌ وَلَا سَهْمًا فِيْهِ حَدِيْدَةٌ إِلَّا نَزَعْنَاهُ وَأَلْقَيْنَاهُ شَهْرَ رَجَبٍ.

আবূ রাজা উতারিদী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

(ইসলাম পূর্ব যুগে) আমরা একটি পাথরের পূজা করতাম। যখন এ অপেক্ষা উত্তম কোন পাথর পেতাম তখন এটিকে নিক্ষেপ করে দিয়ে অপরটির পূজা আরম্ভ করতাম। কোন পাথর না পেলে কিছু মাটি একত্রিত করে স্তুপ বানিয়ে নিতাম। তারপর একটি বাকরী এনে সেই স্তুপের উপর দোহন করতাম তারপর এর চারপাশে তাওয়াফ করতাম। আর রজব মাস এলে আমরা বলতাম, এটা তীর থেকে ফলা বিচ্ছিন্ন করার মাস। কাজেই আমরা রজব মাসে সব ক’টি তীর ও বর্শা থেকে এর তীক্ষ্ণাংশ খুলে রেখে দিতাম। রজব মাসব্যাপী আমরা এগুলো খুলে নিক্ষেপ করতাম। (আ.প্র. ৪০২৯, ই.ফা. ৪০৩৩)

৪৩৭৭
وَسَمِعْتُ أَبَا رَجَاءٍ يَقُوْلُ كُنْتُ يَوْمَ بُعِثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم غُلَامًا أَرْعَى الإِبِلَ عَلَى أَهْلِيْ فَلَمَّا سَمِعْنَا بِخُرُوْجِهِ فَرَرْنَا إِلَى النَّارِ إِلَى مُسَيْلِمَةَ الْكَذَّابِ.

রাবী মাহদী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি আবূ রাজা (রহঃ)- কে বলতে শুনেছি যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নবুয়ত লাভের সময় আমি ছিলাম অল্প বয়স্ক বালক। আমি আমাদের উট চরাতাম। যখন আমরা তাঁর অভিযানের কথা শুনলাম তখন আমরা পালিয়ে এলাম জাহান্নামের দিকে অর্থ্যাত মিথ্যাচারী (নাবী) মুসাইলামাহ্‌র দিকে। (আ.প্র. ৪০২৯, ই.ফা. ৪০৩৩)

৬৪/৭২. অধ্যায়ঃ
আসওয়াদ ‘আনসীর ঘটনা

৪৩৭৮
سَعِيْدُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْجَرْمِيُّ حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا أَبِيْ عَنْ صَالِحٍ عَنْ ابْنِ عُبَيْدَةَ بْنِ نَشِيْطٍ وَكَانَ فِيْ مَوْضِعٍ آخَرَ اسْمُهُ عَبْدُ اللهِ أَنَّ عُبَيْدَ اللهِ بْنَ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ قَالَ بَلَغَنَا أَنَّ مُسَيْلِمَةَ الْكَذَّابَ قَدِمَ الْمَدِيْنَةَ فَنَزَلَ فِيْ دَارِ بِنْتِ الْحَارِثِ وَكَانَ تَحْتَهُ بِنْتُ الْحَارِثِ بْنِ كُرَيْزٍ وَهِيَ أُمُّ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَامِرٍ فَأَتَاهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَعَهُ ثَابِتُ بْنُ قَيْسِ بْنِ شَمَّاسٍ وَهُوَ الَّذِيْ يُقَالُ لَهُ خَطِيْبُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَفِيْ يَدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَضِيْبٌ فَوَقَفَ عَلَيْهِ فَكَلَّمَهُ فَقَالَ لَهُ مُسَيْلِمَةُ إِنْ شِئْتَ خَلَّيْتَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ الْأَمْرِ ثُمَّ جَعَلْتَهُ لَنَا بَعْدَكَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَوْ سَأَلْتَنِيْ هَذَا الْقَضِيْبَ مَا أَعْطَيْتُكَهُ وَإِنِّيْ لَأَرَاكَ الَّذِيْ أُرِيْتُ فِيْهِ مَا أُرِيْتُ وَهَذَا ثَابِتُ بْنُ قَيْسٍ وَسَيُجِيْبُكَ عَنِّيْ فَانْصَرَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم .

উবাইদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উত্‌বাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমাদের কাছে এ খবর পৌঁছে যে, [রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর যামানায়] মিথ্যাচারী মুসাইলামাহ একবার মদিনায় এসে হারিসের কন্যার ঘরে অবস্থান করেছিল। হারিস ইবনু কুরাইয়ের কন্যা তথা ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমিরের মা ছিল তার (মুসাইলামাহ্‌র) স্ত্রী। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কাছে আসলেন। তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন সাবিত ইবনু কায়স ইবনু শাম্মাস (রাঃ) আর তিনি হলেন সেই ব্যাক্তি যাঁকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর খতীর বলা হত। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর হাতে ছিল একটি খেজুরের ডাল। তিনি তার কাছে গিয়ে তার সঙ্গে কথাবার্তা বললেন। মুসাইলামাহ তাঁকে [রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে] বলল, আপনি ইচ্ছা করলে আমার এবং রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বের মাঝে বাধা এভাবে তুলে দিতে পারেন যে, আপনার পরে তা আমার জন্য নির্দিষ্ট করে দিবেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, তুমি যদি এ ডালটিও আমার কাছে চাও, তাও আমি তোমাকে দেব না। আমি তোমাকে ঠিক তেমনই দেখছি যেমনটি আমাকে (স্বপ্নযোগে) দেখানো হয়েছে। এই সাবিত ইবনু কায়স আমার পক্ষ থেকে তোমার জবাব দেবে। এ কথা বলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চলে গেলেন। [৩৬২০] (আ.প্র. ৪০৩০, ই.ফা. ৪০৩৪)

৪৩৭৯
قَالَ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ سَأَلْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ عَنْ رُؤْيَا رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم الَّتِيْ ذَكَرَ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ ذُكِرَ لِيْ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ أُرِيْتُ أَنَّهُ وُضِعَ فِيْ يَدَيَّ سِوَارَانِ مِنْ ذَهَبٍ فَفُظِعْتُهُمَا وَكَرِهْتُهُمَا فَأُذِنَ لِيْ فَنَفَخْتُهُمَا فَطَارَا فَأَوَّلْتُهُمَا كَذَّابَيْنِ يَخْرُجَانِ فَقَالَ عُبَيْدُ اللهِ أَحَدُهُمَا الْعَنْسِيُّ الَّذِيْ قَتَلَهُ فَيْرُوْزُ بِالْيَمَنِ وَالْآخَرُ مُسَيْلِمَةُ الْكَذَّابُ.

উবাইদুল্লাহ ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি “আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)- কে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর উল্লেখিত স্বপ্ন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, [আবু হুরায়রা কর্তৃক] আমাকে বলা হয়েছে যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমি ঘুমাচ্ছিলাম এমতাবস্থায় আমাকে দেখানো হল যে, আমার দু’হাতে দু’টি সোনার কাঁকন রাখা হয়েছে। ও দু’টি আমার কাছে বীভৎস ঠেকল এবং তা অপছন্দ করলাম। আমাকে (ফুঁ দিতে ) বলা হলে আমি ও দু’টিকে ফুঁ দিলাম। সে দু’টি উড়ে গেল। আমি এ দু’টির ব্যাখ্যা করলাম যে, দু’টি মিথ্যাচারী (নাবী) আবির্ভূত হবে। ‘উবাইদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, এ দু’জনের একজন হল আসওয়াদ আল’আনসী, যাকে ফাইরুয নামক এক ব্যাক্তি ইয়ামানে হত্যা করে আর অপরজন হল মুসাইলামাহ। [৩৬২১] (আ.প্র. ৪০৩০, ই.ফা. ৪০৩৪)

৬৪/৭৩. অধ্যায়ঃ
নাজরান অধিবাসীদের ঘটনা

৪৩৮০
عَبَّاسُ بْنُ الْحُسَيْنِ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ صِلَةَ بْنِ زُفَرَ عَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ جَاءَ الْعَاقِبُ وَالسَّيِّدُ صَاحِبَا نَجْرَانَ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُرِيْدَانِ أَنْ يُلَاعِنَاهُ قَالَ فَقَالَ أَحَدُهُمَا لِصَاحِبِهِ لَا تَفْعَلْ فَوَاللهِ لَئِنْ كَانَ نَبِيًّا فَلَاعَنَّا لَا نُفْلِحُ نَحْنُ وَلَا عَقِبُنَا مِنْ بَعْدِنَا قَالَا إِنَّا نُعْطِيْكَ مَا سَأَلْتَنَا وَابْعَثْ مَعَنَا رَجُلًا أَمِيْنًا وَلَا تَبْعَثْ مَعَنَا إِلَّا أَمِيْنًا فَقَالَ لَأَبْعَثَنَّ مَعَكُمْ رَجُلًا أَمِيْنًا حَقَّ أَمِيْنٍ فَاسْتَشْرَفَ لَهُ أَصْحَابُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ قُمْ يَا أَبَا عُبَيْدَةَ بْنَ الْجَرَّاحِ فَلَمَّا قَامَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَذَا أَمِيْنُ هَذِهِ الْأُمَّةِ.

হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাজরান এলাকার দু’জন সরদার আকিব এবং সাইয়িদ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে এসে তাঁর সঙ্গে মুবাহালা করতে চেয়েছিল। বর্ণনাকারী হুযাইফাহ (রাঃ) বলেন, তখন তাদের একজন তার সঙ্গীকে বলল, এরুপ করো না। কারণ আল্লাহ্‌র কসম! তিনি যদি নবী হয়ে থাকেন আর আমরা তাঁর সঙ্গে মুবাহালা [৭৯] করি তাহলে আমরা এবং আমাদের পরবর্তী সন্তান-সন্ততি (কেউ) রক্ষা পাবে না। তারা উভয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বলল, আপনি আমাদের নিকট হতে যা চাবেন আপনাকে আমরা তা-ই দেব। তবে এর জন্য আপনি আমাদের সঙ্গে একজন আমানতদার ব্যক্তিকে পাঠিয়ে দিন। আমানতদার ব্যাতীত অন্য কোন ব্যক্তিকে আমাদের সঙ্গে পাঠাবেন না। তিন বললেন, আমি তোমাদের সঙ্গে এমন একজন আমানতদার পাঠাবো যে প্রকৃতই আমানতদার এবং পাক্কা আমানতদার। এ পদে ভূষিত হওয়ার জন্য রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সাহাবীগণ আগ্রহান্বিত হলেন। তখন তিনি বললেন, যে আবূ ‘উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ্‌! তুমি উঠে দাঁড়াও। তিনি যখন দাঁড়ালেন, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ হচ্ছে উম্মতের সত্যিকার আমানতদার। [৩৭৪৫] (আ.প্র. ৪০৩১, ই.ফা. ৪০৩৫)

[৭৯] পরস্পর পরস্পরকে নির্দিষ্ট পদ্বতিতে অভিসম্পাত করাকে মুবাহালা বলা হয়ে থাকে। পদ্বতিটি হলোঃ উভয় পক্ষ স্বীয় পরিবার পরিজনসহ লোকালয় ত্যাগ করে জঙ্গলে চলে যাবে এবং সেখানে এ বলে আল্লাহ্‌র নিকট দু’আ করবে যে, আমাদের মাধ্যে যে মিথ্যাবাদী তার প্রতি ধ্বংস নেমে আসুক।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৪৩৮১
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا إِسْحَاقَ عَنْ صِلَةَ بْنِ زُفَرَ عَنْ حُذَيْفَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ جَاءَ أَهْلُ نَجْرَانَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا ابْعَثْ لَنَا رَجُلًا أَمِيْنًا فَقَالَ لَأَبْعَثَنَّ إِلَيْكُمْ رَجُلًا أَمِيْنًا حَقَّ أَمِيْنٍ فَاسْتَشْرَفَ لَهُ النَّاسُ فَبَعَثَ أَبَا عُبَيْدَةَ بْنَ الْجَرَّاحِ.

হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাজরান অধিবাসীরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল, আমাদের জন্য একজন আমানতদার ব্যক্তি পাঠিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ তোমাদের কাছে আমি একজন আমানতদার ব্যক্তিকেই পাঠাব যিনি সত্যিই আমানতদার। লোকেরা এ সম্মান অর্জনের জন্য আগ্রহান্বিত হল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন আবূ উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ্‌ (রাঃ)- কে পাঠালেন। [৩৭৪৫] (আ.প্র. ৪০৩২, ই.ফা. ৪০৩৬)

৪৩৮২
أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ خَالِدٍ عَنْ أَبِيْ قِلَابَةَ عَنْ أَنَسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِكُلِّ أُمَّةٍ أَمِيْنٌ وَأَمِيْنُ هَذِهِ الْأُمَّةِ أَبُوْ عُبَيْدَةَ بْنُ الْجَرَّاحِ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ প্রত্যেক উম্মতের জন্য একজন আমানতদার রয়েছে। আর এ উম্মাতের আমানতদার হল আমূ ‘উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ্‌। [৩৭৪৪] (আ.প্র. ৪০৩৩, ই.ফা. ৪০৩৭)

৬৪/৭৪. অধ্যায়ঃ
ওমান ও বাহরাইনের ঘটনা

৪৩৮৩
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ سَمِعَ ابْنُ الْمُنْكَدِرِ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا يَقُوْلُ قَالَ لِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَوْ قَدْ جَاءَ مَالُ الْبَحْرَيْنِ لَقَدْ أَعْطَيْتُكَ هَكَذَا وَهَكَذَا ثَلَاثًا فَلَمْ يَقْدَمْ مَالُ الْبَحْرَيْنِ حَتَّى قُبِضَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا قَدِمَ عَلَى أَبِيْ بَكْرٍ أَمَرَ مُنَادِيًا فَنَادَى مَنْ كَانَ لَهُ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم دَيْنٌ أَوْ عِدَةٌ فَلْيَأْتِنِيْ قَالَ جَابِرٌ فَجِئْتُ أَبَا بَكْرٍ فَأَخْبَرْتُهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَوْ جَاءَ مَالُ الْبَحْرَيْنِ أَعْطَيْتُكَ هَكَذَا وَهَكَذَا ثَلَاثًا قَالَ فَأَعْطَانِيْ قَالَ جَابِرٌ فَلَقِيْتُ أَبَا بَكْرٍ بَعْدَ ذَلِكَ فَسَأَلْتُهُ فَلَمْ يُعْطِنِيْ ثُمَّ أَتَيْتُهُ فَلَمْ يُعْطِنِيْ ثُمَّ أَتَيْتُهُ الثَّالِثَةَ فَلَمْ يُعْطِنِيْ فَقُلْتُ لَهُ قَدْ أَتَيْتُكَ فَلَمْ تُعْطِنِيْ ثُمَّ أَتَيْتُكَ فَلَمْ تُعْطِنِيْ ثُمَّ أَتَيْتُكَ فَلَمْ تُعْطِنِيْ فَإِمَّا أَنْ تُعْطِيَنِيْ وَإِمَّا أَنْ تَبْخَلَ عَنِّيْ فَقَالَ أَقُلْتَ تَبْخَلُ عَنِّيْ وَأَيُّ دَاءٍ أَدْوَأُ مِنَ الْبُخْلِ قَالَهَا ثَلَاثًا مَا مَنَعْتُكَ مِنْ مَرَّةٍ إِلَّا وَأَنَا أُرِيْدُ أَنْ أُعْطِيَكَ وَعَنْ عَمْرٍو عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيٍّ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ يَقُوْلُ جِئْتُهُ فَقَالَ لِيْ أَبُوْ بَكْرٍ عُدَّهَا فَعَدَدْتُهَا فَوَجَدْتُهَا خَمْسَ مِائَةٍ فَقَالَ خُذْ مِثْلَهَا مَرَّتَيْنِ.

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, বাহরাইনের অর্থ-সম্পদ (জিযিয়া) আসলে তোমাকে এত দেব, এত দেব এত দেব। তিনবার বললেন। এরপর বাহরাইন থেকে আর কোন অর্থ-সম্পদ আসেনি। আমতাবস্থায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর ওফাত হয়ে গেল। এরপর আবূ বাকরের যুগে যখন সেই অর্থ সম্পদ আসল তখন তিনি একজন ঘোষণাকারীকে নির্দেশ দিলেন। সে ঘোষণা করলঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে যার প্রাপ্য ঋণ আছে কিংবা কোন ওয়াদা অপূর্ণ আছে সে যেন আমার কাছে আসে। জাবির (রাঃ) বলেনঃ আমি আবূ বাকর (রাঃ)- এর কাছে এসে তাঁকে জানালাম যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেছিলেন, যদি বাহরাইন থেকে অর্থ-সম্পদ আসে তা হলে তোমাকে আমি এত দেব, এত দেব এত দেব। তিনবার বললেন। জাবির (রাঃ) বলেনঃ তখন আবূ বকর (রাঃ) আমাকে অর্থ-সম্পদ দিলেন। জাবির (রাঃ) বলেন, এরপর (আবার) আমি আবূ বকর (রাঃ)- এর সঙ্গে সাক্ষাত করলাম এবং তার কাছে মাল চাইলাম। কিন্তু তিনি আমাকে কিছুই দিলেন না। এরপর আমি তাঁর কাছে দ্বিতীয়বার আসি, তিনি আমাকে কিছুই দেননি। এরপর আমি তাঁর কাছে তৃতীয়বার এলাম। তখনো তিনি আমাকে কিছুই দিলেন না। কাজেই আমি তাঁকে বললামঃ আমি আপনার কাছে এসেছিলাম কিন্তু আপনি আমাকে দেননি। তারপর (আবার) এসেছিলাম তখনো দেননি। এরপরেও এসেছিলাম তখনো আমাকে আপনি দেননি। কাজেই এখন হয় আপনি আমাকে সম্পদ দিবেন নয়তো আমি মনে করবঃ আপনি আমার ব্যাপারে কৃপণতা করছেন। তখন তিনি বললেনঃ এ কী বলছ ‘আমার ব্যাপারে কৃপণতা করছেন’। কৃপণতা থেকে মারাত্মক ব্যাধি আর কি হতে পারে। কথাটি তিনি তিনবার বললেন। (এরপর তিনি বললেন) যতবারই আমি তোমাকে সম্পদ দেয়া থেকে বিরত রয়েছি ততবারই আমার ইচ্ছা ছিল যে, তোমাকে দেব। ‘আম্‌র [ইবনু দীনার (রহঃ)] মুহাম্মাদ ইবনু ‘আলী (রাঃ)- এর কাছে আসলে তিনি আমাকে বললেন, এ (আশরাফী) গুলো গুণো, আমি এগুলো গুণে দেখলাম এখানে পাঁচশ’ (আশরাফী) রয়েছে। তিনি বললেন, এ পরিমাণ আরো দু’বার উঠিয়ে নাও। [২২৯৬](আ.প্র. ৪০৩৪, ই.ফা. ৪০৩৮)

৬৪/৭৫. অধ্যায়ঃ
আশ’আরী ও ইয়ামানবাসীদের আগমন

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে আবূ আশ’আরী (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আশ’আরীগণ আমার অন্তর্ভুক্ত আর আমি তাদের অন্তর্ভূক্ত।

৪৩৮৪
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ وَإِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ قَالَا حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ زَائِدَةَ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْأَسْوَدِ بْنِ يَزِيْدَ عَنْ أَبِيْ مُوْسَى رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَدِمْتُ أَنَا وَأَخِيْ مِنَ الْيَمَنِ فَمَكَثْنَا حِيْنًا مَا نُرَى ابْنَ مَسْعُوْدٍ وَأُمَّهُ إِلَّا مِنْ أَهْلِ الْبَيْتِ مِنْ كَثْرَةِ دُخُوْلِهِمْ وَلُزُوْمِهِمْ لَهُ.

আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি এবং আমার ভাই ইয়ামান থেকে এসে দীর্ঘ দিন পর্যন্ত অবস্থান করেছি। এ সময়ে ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) ও তাঁর মায়ের অধিক আসা-যাওয়া ও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে আমরা তাঁদরকে আহলে বাইতের অন্তর্ভুক্ত মনে করেছিলাম। [৩৭৬৩] (আ.প্র. ৪০৩৫, ই.ফা. ৪০৩৯)

৪৩৮৫
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ السَّلَامِ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ أَبِيْ قِلَابَةَ عَنْ زَهْدَمٍ قَالَ لَمَّا قَدِمَ أَبُوْ مُوْسَى أَكْرَمَ هَذَا الْحَيَّ مِنْ جَرْمٍ وَإِنَّا لَجُلُوْسٌ عِنْدَهُ وَهُوَ يَتَغَدَّى دَجَاجًا وَفِي الْقَوْمِ رَجُلٌ جَالِسٌ فَدَعَاهُ إِلَى الْغَدَاءِ فَقَالَ إِنِّيْ رَأَيْتُهُ يَأْكُلُ شَيْئًا فَقَذِرْتُهُ فَقَالَ هَلُمَّ فَإِنِّيْ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَأْكُلُهُ فَقَالَ إِنِّيْ حَلَفْتُ لَا آكُلُهُ فَقَالَ هَلُمَّ أُخْبِرْكَ عَنْ يَمِيْنِكَ إِنَّا أَتَيْنَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَفَرٌ مِنَ الْأَشْعَرِيِّيْنَ فَاسْتَحْمَلْنَاهُ فَأَبَى أَنْ يَحْمِلَنَا فَاسْتَحْمَلْنَاهُ فَحَلَفَ أَنْ لَا يَحْمِلَنَا ثُمَّ لَمْ يَلْبَثْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ أُتِيَ بِنَهْبِ إِبِلٍ فَأَمَرَ لَنَا بِخَمْسِ ذَوْدٍ فَلَمَّا قَبَضْنَاهَا قُلْنَا تَغَفَّلْنَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَمِيْنَهُ لَا نُفْلِحُ بَعْدَهَا أَبَدًا فَأَتَيْتُهُ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّكَ حَلَفْتَ أَنْ لَا تَحْمِلَنَا وَقَدْ حَمَلْتَنَا قَالَ أَجَلْ وَلَكِنْ لَا أَحْلِفُ عَلَى يَمِيْنٍ فَأَرَى غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا إِلَّا أَتَيْتُ الَّذِيْ هُوَ خَيْرٌ مِنْهَا.

যাহদাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবূ মূসা (রাঃ) এ এলাকায় এসে জারম গোত্রের লোকদেরকে সম্মানিত করেছেন। একদা আমারা তাঁর কাছে বসা ছিলাম। এ সময়ে তিনি মুরগীর গোশ্‌ত দিয়ে দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। লোকদের মধ্যে এক ব্যক্তি বসা ছিল। তিনি তাকে খানা খেতে ডাকলেন। সে বলল, আমি মুরগীটিকে এমন জিনিস খেতে দেখেছি যার জন্য খেতে আমার অরুচি লাগছে। তিনি বললেন, এসো। কেননা আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে মুরগী খেতে দেখেছি। সে বলল, আমি শপথ করে ফেলছি যে, এটি খাব না। তিনি বললেন, এসে পড়। তোমার শপথ সম্বন্ধে আমি তোমাকে জানাচ্ছি যে, আমরা আশ’আরীদের একটি দল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর দরবারে এসে তাঁর কাছে সাওয়ারী চেয়েছিলাম। তিনি আমাদেরকে সওয়ারী দিতে অস্বীকার করলেন। এরপর আমরা (আবার) তাঁর কাছে সাওয়ারী চাইলাম। তিনি তখন শপথ করে বললেন যে, আমাদেরকে তিনি সওয়ারী দেবেন না। কিছুক্ষণ পরেই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে গানীমাতের কিছু উট আনা হল। তিনি আমাদেরকে পাঁচটি করে উট দেয়ার আদেশ দিলেন। উটগুলো হাতে নেয়ার পর আমরা পরস্পর বললাম, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে তাঁর শপথ থেকে অমনোযোগী করে ফেলছি এমন অবস্থায় আর কখনো আমরা কামিয়াব হতে পারব না। কাজেই আমি তাঁর কাছে এসে বললাম। হে আল্লাহ্‌র রাসুল! আপনি শপথ করেছিলেন যে, আমাদের সাওয়ারী দেবেন না। এখন তো আপনি আমাদের সাওয়ারী দিলেন। তিনি বললেন, নিশ্চয়ই। তবে আমার নিয়ম হল, আমি যদি কোন ব্যাপারে শপথ করি আর এর বিপরীতে কোনটিকে এ অপেক্ষা উত্তম মনে করি তাহলে উত্তমটিকেই গ্রহণ করে নেই। [৩১৩৩] (আ.প্র. ৪০৩৬, ই.ফা. ৪০৪০)

৪৩৮৬
عَمْرُوْ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَاصِمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا أَبُوْ صَخْرَةَ جَامِعُ بْنُ شَدَّادٍ حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ مُحْرِزٍ الْمَازِنِيُّ حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ حُصَيْنٍ قَالَ جَاءَتْ بَنُوْ تَمِيْمٍ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَبْشِرُوْا يَا بَنِيْ تَمِيْمٍ قَالُوْا أَمَّا إِذْ بَشَّرْتَنَا فَأَعْطِنَا فَتَغَيَّرَ وَجْهُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَجَاءَ نَاسٌ مِنْ أَهْلِ الْيَمَنِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم اقْبَلُوا الْبُشْرَى إِذْ لَمْ يَقْبَلْهَا بَنُوْ تَمِيْمٍ قَالُوْا قَدْ قَبِلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ.

ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বানী তামীমের লোকজন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে আসলে তিনি তাদেরকে বললেন, হে বানী তামীম! সুসংবাদ গ্রহণ কর। তারা বলল, আপনি সুসংবাদ তো দিলেন, কিন্তু আমাদের (কিছু অর্থ-সম্পদ) দান করুন। কথাটি শুনে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। এমন সময়ে ইয়ামানী কিছু লোক আসল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, বানী তামীম যখন সুসংবাদ গ্রহণ করল না, তাহলে তোমরাই তা গ্রহণ কর। তাঁরা বলল, হে আল্লাহ্‌র রসুল! আমরা তা গ্রহণ করলাম। [৩১৯০] (আ.প্র. ৪০৩৭, ই.ফা. ৪০৪১)

৪৩৮৭
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْجُعْفِيُّ حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيْرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ إِسْمَاعِيْلَ بْنِ أَبِيْ خَالِدٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ أَبِيْ مَسْعُوْدٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الإِيْمَانُ هَا هُنَا وَأَشَارَ بِيَدِهِ إِلَى الْيَمَنِ وَالْجَفَاءُ وَغِلَظُ الْقُلُوْبِ فِي الْفَدَّادِيْنَ عِنْدَ أُصُوْلِ أَذْنَابِ الإِبِلِ مِنْ حَيْثُ يَطْلُعُ قَرْنَا الشَّيْطَانِ رَبِيْعَةَ وَمُضَرَ.

আবু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইয়ামানের দিকে তাঁর হাত দিয়ে ইশারা করে বলেছেন, ঈমান হল ওখানে। [৮০] আর কঠোরতা ও হৃদয়হীনতা হল রাবী’আহ ও মুযার গোত্রদ্বয়ের সেসব মানুষের মধ্যে যারা উটের লেজের কাছে দাঁড়িয়ে চীৎকার দেয়, যেখান থেকে শয়তানের দু’ শিং উদিত হয়। [৮১] [৩৩০২] (আ.প্র. ৪০৩৮, ই.ফা. ৪০৪২)

[৮০] ইয়ামানের দিকে ইংগিত করার কোন গভীর অর্থও থাকতে পারে। তবে আপাত দৃষ্টিতে যা মনে হয় ,এখানে ইয়ামানবাসীদের দ্রুত ও সুন্দরভাবে ঈমান আনার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে ইয়ামানবাসীদের ঈমানের প্রতি কোন নেতিবাচক ইঙ্গিত নেই।



[৮১] বিভিন্ন হাদীসে ইয়ামান থেকে ফিতনার আবির্ভাবের কথা বলা হয়েছে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৪৩৮৮
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ عَدِيٍّ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ ذَكْوَانَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَتَاكُمْ أَهْلُ الْيَمَنِ هُمْ أَرَقُّ أَفْئِدَةً وَأَلْيَنُ قُلُوْبًا الإِيْمَانُ يَمَانٍ وَالْحِكْمَةُ يَمَانِيَةٌ وَالْفَخْرُ وَالْخُيَلَاءُ فِيْ أَصْحَابِ الإِبِلِ وَالسَّكِيْنَةُ وَالْوَقَارُ فِيْ أَهْلِ الْغَنَمِ.

وَقَالَ غُنْدَرٌ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ سُلَيْمَانَ سَمِعْتُ ذَكْوَانَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم .

আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়ামানবাসীরা তোমাদের কাছে এসেছে। তাঁরা অন্তরের দিক থেকে অত্যন্ত কোমল ও দরদী। ঈমান হল ইয়ামানীদের, হিকমাত হল ইয়ামানীদের, গরিমা ও অহংকার রয়েছে উট-ওয়ালাদের মধ্যে, বাক্‌রী পালকদের মধ্যে আছে প্রশান্তি ও গাম্ভীর্য।

গুনদার (রহঃ) এ হাদীসটি শু’বাহ-সুলাইমান-যাকওয়ান (রহঃ) আবু হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। [৩৩০১] (আ.প্র. ৪০৩৯, ই.ফা. ৪০৪৩)

৪৩৮৯
إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَخِيْ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ ثَوْرِ بْنِ زَيْدٍ عَنْ أَبِي الْغَيْثِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الإِيْمَانُ يَمَانٍ وَالْفِتْنَةُ هَا هُنَا هَا هُنَا يَطْلُعُ قَرْنُ الشَّيْطَانِ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ঈমান হল ইয়ামানীদের। আর ফিতনা হল ওখানে, যেখানে উদিত হল শয়তানের শিং। [৩৩০১] (আ.প্র. ৪০৪০, ই.ফা. ৪০৪৪)

৪৩৯০
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ عَنِ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَتَاكُمْ أَهْلُ الْيَمَنِ أَضْعَفُ قُلُوْبًا وَأَرَقُّ أَفْئِدَةً الْفِقْهُ يَمَانٍ وَالْحِكْمَةُ يَمَانِيَةٌ.

আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়ামানবাসীরা তোমাদের কাছে এসেছে। তাঁরা অন্তরের দিক থেকে অত্যন্ত কোমল। আর মনের দিক থেকে অত্যন্ত দয়ার্দ্র। ফিকহ্‌ হল ইয়ামানীদের আর হিকমাত হল ইয়ামানীদের। [৩৩০১] (আ.প্র. ৪০৪১, ই.ফা. ৪০৪৫)

৪৩৯১
عَبْدَانُ عَنْ أَبِيْ حَمْزَةَ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ قَالَ كُنَّا جُلُوْسًا مَعَ ابْنِ مَسْعُوْدٍ فَجَاءَ خَبَّابٌ فَقَالَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَيَسْتَطِيْعُ هَؤُلَاءِ الشَّبَابُ أَنْ يَقْرَءُوْا كَمَا تَقْرَأُ قَالَ أَمَا إِنَّكَ لَوْ شِئْتَ أَمَرْتُ بَعْضَهُمْ يَقْرَأُ عَلَيْكَ قَالَ أَجَلْ قَالَ اقْرَأْ يَا عَلْقَمَةُ فَقَالَ زَيْدُ بْنُ حُدَيْرٍ أَخُوْ زِيَادِ بْنِ حُدَيْرٍ أَتَأْمُرُ عَلْقَمَةَ أَنْ يَقْرَأَ وَلَيْسَ بِأَقْرَئِنَا قَالَ أَمَا إِنَّكَ إِنْ شِئْتَ أَخْبَرْتُكَ بِمَا قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ قَوْمِكَ وَقَوْمِهِ فَقَرَأْتُ خَمْسِيْنَ آيَةً مِنْ سُوْرَةِ مَرْيَمَ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ كَيْفَ تَرَى قَالَ قَدْ أَحْسَنَ قَالَ عَبْدُ اللهِ مَا أَقْرَأُ شَيْئًا إِلَّا وَهُوَ يَقْرَؤُهُ ثُمَّ الْتَفَتَ إِلَى خَبَّابٍ وَعَلَيْهِ خَاتَمٌ مِنْ ذَهَبٍ فَقَالَ أَلَمْ يَأْنِ لِهَذَا الْخَاتَمِ أَنْ يُلْقَى قَالَ أَمَا إِنَّكَ لَنْ تَرَاهُ عَلَيَّ بَعْدَ الْيَوْمِ فَأَلْقَاهُ.

رَوَاهُ غُنْدَرٌ عَنْ شُعْبَةَ.

আলক্বামাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ)- এর কাছে বসা ছিলাম। তখন সেখানে ‘আব্বাস (রাঃ) এসে বললেন, হে আবূ ‘আবদুর রহমান (‘আবদুর রহমানের পিতা ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ [৮২])! এসব তরুণ কি আপনার তিলাওয়াতের মতো তিলাওয়াত করতে পারে? তিনি বললেনঃ আপনি যদি চান তাহলে একজনকে হুকুম দেই যে, সে আপনাকে তিলাওয়াত করে শুনাবে। তিনি বললেন, অবশ্যই। ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) বললেন, ওহে ‘আলকামাহ, পড়। তখন যিয়াদ ইবনু হুদাইরের ভাই যায়দ ইবনু হুদাইর বলল, আপনি আলকামাহ্‌কে পড়তে হুকুম করেছেন, অথচ সে তো আমাদের মধ্যে ভাল তিলাওয়াতকারী নয়। ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) বললেন, যদি তুমি চাও তাহলে আমি তোমার গোত্র ও তার গোত্র সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কী বলেছেন তা জানিয়ে দিতে পারি। (আলকামাহ বলেন) এরপর আমি সূরায়ে মারইয়াম থেকে পঞ্চাশ আয়াত তিলাওয়াত করলাম। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, আপনার কেমন মনে হয়? তিনি বললেন, বেশ ভালই পরেছে। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, আমি যা কিছু পড়ি তার সবই সে পড়ে। এরপর তিনি খাব্বাবের দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলেন, তার হাতে একটি সোনার আংটি। তিনি বললেন, এখনো কি এ আংটি খুলে ফেলার সময় হয়নি? খাব্বাব (রাঃ) বললেন, আজকের পর আর এটি আমার হাতে দেখতে পাবেন না। অতঃপর তিনি আংটিটি ফেলে দিলেন।

হাদীসটি গুনদার (রহঃ) শু’বাহ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। (আ.প্র. ৪০৪২, ই.ফা. ৪০৪৬)

[৮২] তিনি অত্যন্ত সুললিত কন্ঠে কুরআন তিলাওয়াত করতে পারতেন। রসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে সকল সহাবী থেকে কুরআন শিখার জন্য বলেছিলেন তিনি ছিলেন তাদের অন্যতম।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৪/৭৬. অধ্যায়ঃ
দাউস গোত্র এবং তুফাইল ইবনু ‘আমর দাউসীর ঘটনা

৪৩৯২
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ ابْنِ ذَكْوَانَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ جَاءَ الطُّفَيْلُ بْنُ عَمْرٍو إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّ دَوْسًا قَدْ هَلَكَتْ عَصَتْ وَأَبَتْ فَادْعُ اللهَ عَلَيْهِمْ فَقَالَ اللهُمَّ اهْدِ دَوْسًا وَأْتِ بِهِمْ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তুফায়ল ইবনু ‘আমর (রাঃ) নবী (রাঃ)- এর কাছে এসে বললেন, দাওস গোত্র হালাক হয়ে গেছেন। তারা নাফরমানী করেছে এবং (দ্বীনের দাওয়াত) গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। সুতরাং আপনি তাদের প্রতি বদদু’আ করুন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আল্লাহ! দাওস গোত্রকে হিদায়াত দান করুন এবং দ্বীনের পথে নিয়ে আসুন। [২৯৩৭] (আ.প্র. ৪০৪৩, ই.ফা. ৪০৪৭)

৪৩৯৩
مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلَاءِ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ عَنْ قَيْسٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ لَمَّا قَدِمْتُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قُلْتُ فِي الطَّرِيْقِ:

يَا لَيْـلَـةً مِـنْ طُوْلِـهَـا وَعَنَائِهَا عَلَى أَنَّهَا مِنْ دَارَةِ الْكُفْرِ نَجَّتِ

وَأَبَقَ غُلَامٌ لِيْ فِي الطَّرِيْقِ فَلَمَّا قَدِمْتُ عَلَى النَّبِيِّ فَبَايَعْتُهُ فَبَيْنَا أَنَا عِنْدَهُ إِذْ طَلَعَ الْغُلَامُ فَقَالَ لِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَا أَبَا هُرَيْرَةَ هَذَا غُلَامُكَ فَقُلْتُ هُوَ لِوَجْهِ اللهِ فَأَعْتَقْتُهُ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে আশার জন্য রওয়ানা হয়ে রাস্তার মধ্যে বলেছিলাম-

হে সুদীর্ঘ ও চরম পরিশ্রমের রাত!

এ রাত আমাকে দারুল কুফর থেকে মুক্তি দিয়েছে।

আমার একটি গোলাম ছিল। পথে সে পালিয়ে গেল। এরপর আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে এসে বাই’আত করলাম। অতঃপর একদিন আমি তাঁর নিকট বসা ছিলাম। এমন সময় গোলামটি এসে হাযির। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, হে আবূ হুরায়রা! এই যে তোমার গোলাম। আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির উদ্দেশে সে আযাদ- এ কথা বলে আমি তাকে আযাদ করে দিলাম। [২৫৩০] (আ.প্র. ৪০৪৪, ই.ফা. ৪০৪৮)

৬৪/৭৭. অধ্যায়ঃ
তায়ী গোত্রের প্রতিনিধি দল এবং ‘আদী ইবনু হাতিম [৮৩]-এর কাহিনী

[৮৩] দাতা হাতেম তাঈ নামে বিখ্যাত তাঈ গোত্রের শাসক এর পুত্র হচ্ছে ‘আদী ইবনু হাতীম। রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নির্দেশক্রমে সে এলাকায় অভিযান চালালে তিনি স্বীয় পরিজন নিয়ে পলায়ন করেন। পরে তিনি স্বয়ং মাদীনাহ্‌য় এসে রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট ইসলাম গ্রহণ করেন।

৪৩৯৪
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ عَنْ عَمْرِو بْنِ حُرَيْثٍ عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ قَالَ أَتَيْنَا عُمَرَ فِيْ وَفْدٍ فَجَعَلَ يَدْعُوْ رَجُلًا رَجُلًا وَيُسَمِّيْهِمْ فَقُلْتُ أَمَا تَعْرِفُنِيْ يَا أَمِيْرَ الْمُؤْمِنِيْنَ قَالَ بَلَى أَسْلَمْتَ إِذْ كَفَرُوْا وَأَقْبَلْتَ إِذْ أَدْبَرُوْا وَوَفَيْتَ إِذْ غَدَرُوْا وَعَرَفْتَ إِذْ أَنْكَرُوْا فَقَالَ عَدِيٌّ فَلَا أُبَالِيْ إِذًا.

আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা একটি প্রতিনিধি দলসহ ‘উমার (রাঃ)- এর দরবারে আসলাম। তিনি প্রত্যেকের নাম নিয়ে একজন একজন করে ডাকতে শুরু করলেন। তাই আমি বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনি কি আমাকে চিনেন? তিনি বললেন, হাঁ চিনি। লোকজন যখন ইসলামকে অস্বীকার করেছিল তখন তুমি ইসলাম গ্রহণ করেছ। লোকজন যখন পিঠ ফিরিয়ে নিয়েছে তখন তুমি সম্মুখে অগ্রসর হয়েছ। লোকেরা যখন বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তুমি তখন ইসলাম পালনের ওয়াদা পূরণ করেছ। লোকেরা যখন দ্বীনকে অস্বীকার করেছে তুমি তখন দ্বীনকে চিনে নিয়ে গ্রহণ করেছ। এ সব কথা শুনে আদী (রাঃ) বললেন, তাহলে আমার আর কোন চিন্তা নেই। (আ.প্র. ৪০৪৫, ই.ফা. ৪০৪৯)

৬৪/৭৮. অধ্যায়ঃ
বিদায় হাজ্জ

৪৩৯৫
إِسْمَاعِيْلُ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ خَرَجْنَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ فَأَهْلَلْنَا بِعُمْرَةٍ ثُمَّ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَ مَعَهُ هَدْيٌ فَلْيُهْلِلْ بِالْحَجِّ مَعَ الْعُمْرَةِ ثُمَّ لَا يَحِلَّ حَتَّى يَحِلَّ مِنْهُمَا جَمِيْعًا فَقَدِمْتُ مَعَهُ مَكَّةَ وَأَنَا حَائِضٌ وَلَمْ أَطُفْ بِالْبَيْتِ وَلَا بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ فَشَكَوْتُ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ انْقُضِيْ رَأْسَكِ وَامْتَشِطِيْ وَأَهِلِّيْ بِالْحَجِّ وَدَعِي الْعُمْرَةَ فَفَعَلْتُ فَلَمَّا قَضَيْنَا الْحَجَّ أَرْسَلَنِيْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَعَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِيْ بَكْرٍ الصِّدِّيْقِ إِلَى التَّنْعِيْمِ فَاعْتَمَرْتُ فَقَالَ هَذِهِ مَكَانَ عُمْرَتِكِ قَالَتْ فَطَافَ الَّذِيْنَ أَهَلُّوْا بِالْعُمْرَةِ بِالْبَيْتِ وَبَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ ثُمَّ حَلُّوْا ثُمَّ طَافُوْا طَوَافًا آخَرَ بَعْدَ أَنْ رَجَعُوْا مِنْ مِنًى وَأَمَّا الَّذِيْنَ جَمَعُوا الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ فَإِنَّمَا طَافُوْا طَوَافًا وَاحِدًا.

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সঙ্গে বিদায় হাজ্জে রওয়ানা হই। তখন আমরা ‘উমরাহ্‌র (নিয়তে) ইহ্‌রাম বাঁধি। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘোষণা দিলেন, যাদের সঙ্গে কুরবানীর পশু রয়েছে, তাঁরা যেন হাজ্জ ও ‘উমরাহ্‌ উভয়ের একসঙ্গে ইহরামের নিয়ত করে এবং হাজ্জ ও ‘উমরাহ্‌র উভয়টি সমাধা করার পূর্বে হালাল না হয়। এভাবে তাঁর সঙ্গে আমি মক্কায় পৌঁছে এবং ঋতুবতী হয়ে পড়ি। এ কারণে আমি বাইতুল্লাহর তওয়াফ এবং সাফা ও মারওয়ার সায়ী করতে পারলাম না। এ দুঃখ আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে অবহিত করলাম। তখন তিনি বললেন, তুমি তোমার মাথার ছুল ছেড়ে দাও এবং মাথা (চিরুনী দ্বারা) আঁচড়াও আর কেবল হাজ্জের ইহ্‌রাম বাঁধ ও ‘উমরাহ্‌ ছেরে দাও। আমি তাই করলাম। এরপর আমরা যখন হাজ্জের কাজসমূহ সম্পন্ন করলাম, তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে আবু বাক্‌র সিদ্দীক (রাঃ)- এর পুত্র ‘আবদুর রহমান (রাঃ)- এর সঙ্গে তানঈম-এ পাঠিয়ে দিলেন। (সেখান থেকে ইহ্‌রাম বেঁধে) ‘উমরাহ্‌ আদায় করলাম। তখন তিনি [রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] বললেন, এই ‘উমরাহ্‌ তোমার পূর্বের কাযা ‘উমরাহ্‌ পূর্ণ করল। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, যারা ‘উমরাহ্‌র ইহ্‌রাম বেঁধেছিলেন তারা বাইতুল্লাহ্‌ তওয়াফ করে এবং সাফা ও মারওয়া সায়ী করার পর হালাল হয়ে যান এবং পরে মিনা থেকে প্রত্যাবর্তন করার পর আর এক তওয়াফ আদায় করেন। আর যাঁরা হাজ্জ ও ‘উমরাহ্‌র ইহ্‌রাম এক সঙ্গে বাঁধেন, তাঁরা কেবল এক তওয়াফ আদায় করেন। [২৯৪] (আ.প্র. ৪০৪৬, ই.ফা. ৪০৫০)

৪৩৯৬
عَمْرُوْ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَطَاءٌ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ إِذَا طَافَ بِالْبَيْتِ فَقَدْ حَلَّ فَقُلْتُ مِنْ أَيْنَ قَالَ هَذَا ابْنُ عَبَّاسٍ قَالَ مِنْ قَوْلِ اللهِ تَعَالَى {ثُمَّ مَحِلُّهَا إِلَى الْبَيْتِ الْعَتِيْقِ} وَمِنْ أَمْرِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَصْحَابَهُ أَنْ يَحِلُّوْا فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ قُلْتُ إِنَّمَا كَانَ ذَلِكَ بَعْدَ الْمُعَرَّفِ قَالَ كَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ يَرَاهُ قَبْلُ وَبَعْدُ.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মুহরিম ব্যক্তি যখন বাইতুল্লাহ তওয়াফ করল তখন সে তাঁর ইহ্‌রাম থেকে হালাল হয়ে গেল। আমি (ইবনু জুরায়জ) জিজ্ঞেস করলাম যে, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) এ কথা কী করে বলতে পারেন? রাবী ‘আত্বা (রহঃ) উত্তরে বলেন, আল্লাহ তা’আলার এই কালামের দলীল থেকে যে, এরপর তার হালাল হওয়ার স্থল হচ্ছে বাইতুল্লাহ এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক তাঁর সহাবীদের বিদায় হাজ্জের (এ কাজের পর) হালাল হয়ে যাওয়ার হুকুম দেয়ার ঘটনা থেকে। আমি বললামঃ এ হুকুম তো ‘আরাফাহ-এ উকূফ করার পর প্রযোজ্য। তখন ‘আত্বা (রহঃ) বললেন, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)- এর মতে উকূফে ‘আরাফাহ্‌র পূর্বাপর উভয় অবস্থার জন্য এ হুকুম। [মুসলিম ১৫/৩২, হাঃ ১২৪৫] (আ.প্র. ৪০৪৭, ই.ফা. ৪০৫১)

৪৩৯৭
بَيَانٌ حَدَّثَنَا النَّضْرُ أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَيْسٍ قَالَ سَمِعْتُ طَارِقًا عَنْ أَبِيْ مُوْسَى الْأَشْعَرِيِّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَدِمْتُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِالْبَطْحَاءِ فَقَالَ أَحَجَجْتَ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ كَيْفَ أَهْلَلْتَ قُلْتُ لَبَّيْكَ بِإِهْلَالٍ كَإِهْلَالِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ طُفْ بِالْبَيْتِ وَبِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ ثُمَّ حِلَّ فَطُفْتُ بِالْبَيْتِ وَبِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ وَأَتَيْتُ امْرَأَةً مِنْ قَيْسٍ فَفَلَتْ رَأْسِي.

আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি (বিদায় হাজ্জে) মক্কার বাত্‌হা নামক স্থানে নাবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সঙ্গে মিলিত হলাম। তখন তিনি আমাকে জিজ্ঞস করলেন, ‘তুমি কি হাজ্জের ইহ্‌রাম বেঁধেছ? আমি বললাম, হাঁ। তখন তিনি আমাকে (পুনরায়) জিজ্ঞেস করলেন। কোন্ প্রকারে হাজ্জের ইহরামের নিয়ত করেছ? আমি বললাম, ‘আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর ইহরামের মতো ইহরামের নিয়ত করে তালবিয়াহ পড়েছি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, বাইতুল্লাহ তওয়াফ কর এবং সফা ও মারওয়াহ্ সায়ী কর। এরপর (ইহ্‌রাম খুলে) হালাল হয়ে যাও। তখন আমি বাইতুল্লাহ্‌ তওয়াফ করলাম ও সফা এবং মারওয়াহ্ সায়ী করলাম। এরপর আমি ক্বায়স গোত্রের এক মহিলার কাছে গেলাম, সে আমার চুল আঁচড়ে দিল (তাতে আমি ইহরাম থেকে মুক্ত হয়ে গেলাম)। [১৫৫৯] (আ.প্র. ৪০৪৮, ই.ফা. ৪০৫২)

৪৩৯৮
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ الْمُنْذِرِ أَخْبَرَنَا أَنَسُ بْنُ عِيَاضٍ حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ عُقْبَةَ عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ أَخْبَرَهُ أَنَّ حَفْصَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ أَزْوَاجَهُ أَنْ يَحْلِلْنَ عَامَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ فَقَالَتْ حَفْصَةُ فَمَا يَمْنَعُكَ فَقَالَ لَبَّدْتُ رَأْسِيْ وَقَلَّدْتُ هَدْيِيْ فَلَسْتُ أَحِلُّ حَتَّى أَنْحَرَ هَدْيِي.

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সহধর্মিণী হাফসাহ (রাঃ) ইবনু ‘উমার (রাঃ)- কে জানিয়েছেন যে, বিদায় হাজ্জের বছর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীদের হালাল হয়ে যেতে নির্দেশ দেন। তখন হাফসাহ (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কী কারণে হালাল হচ্ছেন না? তদুত্তরে তিনি বললেন, আমি আঠা জাতীয় বস্তু দ্বারা আমার মাথার চুল জমাট করে ফেলেছি এবং কুরবানীর পশুর গলায় কিলাদাহ [৮৪] বেঁধে দিয়েছি। কাজেই, আমি আমার কুরবানীর পশু যবহ করার পূর্বে হালাল হতে পারব না। [১৫৬৬] (আ.প্র. ৪০৪৯, ই.ফা. ৪০৫৩)

[৮৪] বিশেষ এক ধরনের মালা যা দেখে বুঝা যেতো যে, এটিকে হাজ্জে কুরবানী করা হবে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৪৩৯৯
أَبُو الْيَمَانِ قَالَ حَدَّثَنِيْ شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ وَقَالَ مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا الْأَوْزَاعِيُّ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ شِهَابٍ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ امْرَأَةً مِنْ خَثْعَمَ اسْتَفْتَتْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ وَالْفَضْلُ بْنُ عَبَّاسٍ رَدِيْفُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ فَرِيْضَةَ اللهِ عَلَى عِبَادِهِ أَدْرَكَتْ أَبِيْ شَيْخًا كَبِيْرًا لَا يَسْتَطِيْعُ أَنْ يَسْتَوِيَ عَلَى الرَّاحِلَةِ فَهَلْ يَقْضِيْ أَنْ أَحُجَّ عَنْهُ قَالَ نَعَمْ.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আশ’আম গোত্রের এ মহিলা বিদায় হাজ্জের সময় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট জিজ্ঞেস করে। এ সময় ফদল ইবনু ‘আব্বাস(রাঃ) (সওয়ারীতে) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর পেছনে উপবিষ্ট ছিলেন। মহিলাটি আবেদন করল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি হাজ্জ ফরয করেছেন। আমার পিতার উপর তা এমন অবস্থায় ফরয হল যে, তিনি অতীব বয়োবৃদ্ধ, যে কারণে সওয়ারীর উপর ঠিক হয়ে বসতেও সমর্থ নন। এমতাবস্থায় আমি তাঁর পক্ষ থেকে হাজ্জ আদায় করলে তা আদায় হবে কি? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হাঁ। [১৫১৩] (আ.প্র. ৪০৫০, ই.ফা. ৪০৫৪)

৪৪০০
مُحَمَّدٌ حَدَّثَنَا سُرَيْجُ بْنُ النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَقْبَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَامَ الْفَتْحِ وَهُوَ مُرْدِفٌ أُسَامَةَ عَلَى الْقَصْوَاءِ وَمَعَهُ بِلَالٌ وَعُثْمَانُ بْنُ طَلْحَةَ حَتَّى أَنَاخَ عِنْدَ الْبَيْتِ ثُمَّ قَالَ لِعُثْمَانَ ائْتِنَا بِالْمِفْتَاحِ فَجَاءَهُ بِالْمِفْتَاحِ فَفَتَحَ لَهُ الْبَابَ فَدَخَلَ النَّبِيُّ وَأُسَامَةُ وَبِلَالٌ وَعُثْمَانُ ثُمَّ أَغْلَقُوْا عَلَيْهِمْ الْبَابَ فَمَكَثَ نَهَارًا طَوِيْلًا ثُمَّ خَرَجَ وَابْتَدَرَ النَّاسُ الدُّخُوْلَ فَسَبَقْتُهُمْ فَوَجَدْتُ بِلَالًا قَائِمًا مِنْ وَرَاءِ الْبَابِ فَقُلْتُ لَهُ أَيْنَ صَلَّى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ صَلَّى بَيْنَ ذَيْنِكَ الْعَمُوْدَيْنِ الْمُقَدَّمَيْنِ وَكَانَ الْبَيْتُ عَلَى سِتَّةِ أَعْمِدَةٍ سَطْرَيْنِ صَلَّى بَيْنَ الْعَمُوْدَيْنِ مِنْ السَّطْرِ الْمُقَدَّمِ وَجَعَلَ بَابَ الْبَيْتِ خَلْفَ ظَهْرِهِ وَاسْتَقْبَلَ بِوَجْهِهِ الَّذِيْ يَسْتَقْبِلُكَ حِيْنَ تَلِجُ الْبَيْتَ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجِدَارِ قَالَ وَنَسِيْتُ أَنْ أَسْأَلَهُ كَمْ صَلَّى وَعِنْدَ الْمَكَانِ الَّذِيْ صَلَّى فِيْهِ مَرْمَرَةٌ حَمْرَاءُ.

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ফতেহ মক্কার বছর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এগিয়ে চললেন। তিনি (তাঁর) কসওয়া নামক উটনীর উপর উসামাহ (রাঃ)- কে পিছনে বসালেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিলাল ও ‘উসমান ইবনু ত্বলহা (রাঃ)। অবশেষে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (তাঁর বাহনকে) বাইতুল্লাহ্‌র নিকট বসালেন। তারপর ‘উসমান (ইবনু ত্বলহা) (রাঃ)- কে বললেন, আমার কাছে চাবি নিয়ে এসো। তিনি তাঁকে চাবি এনে দিলেন। এরপর কা’বা শরীফের দরজা তাঁর জন্য খোলা হল। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), উসামাহ, বিলাল এবং ‘উসমান (রাঃ) কা’বা ঘরে প্রবেশ করলেন। তারপর দরজা বন্ধ করে দেয়া হল। এরপর তিনি দিবা ভাগের দীর্ঘ সময় পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন এবং পরে বের হয়ে আসেন। তখন লোকেরা কা’বার অভ্যন্তরে প্রবেশ করার জন্য তাড়াহুড়া করতে থাকে। আর আমি তাদের অগ্রণী হই এবং বিলাল (রাঃ)- কে কা’বার দরজার পিছনে দাঁড়ানো অবস্থায় পাই। তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন্ স্থানে সলাত আদায় করেছেন? তিনি বললেন, ঐ সামনের দু’স্তম্ভের মাঝখানে। এ সময় বাইতুল্লাহ্‌র দুই সারিতে ছয়টি স্তম্ভ ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সামনের সারির দু’খামের মাঝখানে সলাত আদায় করেছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাইতুল্লাহ্‌র দরজা তার পিছনে রেখেছিলেন এবং তাঁর চেহারা ছিল বাইতুল্লাহ্‌য় প্রবেশকালে সামনে যে দেয়াল পড়ে সেদিকে। ইবনু ‘উমার (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কয় রাক’আত সলাত আদায় করেছেন তা জিজ্ঞেস করতে আমি ভুলে গিয়েছিলাম। আর যে স্থানে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সলাত আদায় করছিলেন সেখানে লাল বর্ণের মর্মর পাথর ছিল। [৩৯৭] (আ.প্র ৪০৫১, ই.ফা. ৪০৫৫)

৪৪০১
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ وَأَبُوْ سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهُمَا أَنَّ صَفِيَّةَ بِنْتَ حُيَيٍّ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَاضَتْ فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَحَابِسَتُنَا هِيَ فَقُلْتُ إِنَّهَا قَدْ أَفَاضَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ وَطَافَتْ بِالْبَيْتِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَلْتَنْفِرْ.

নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘ আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী হুয়াই-এর কন্যা সাফিয়া (রাঃ) বিদায় হাজ্জের সময় ঋতুবতী হয়ে পড়েন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে কি আমাদের (মাদীনাহ প্রত্যাবর্তনে) বাধা হয়ে দাঁড়াল? তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! তিনি তো তওয়াফে যিয়ারাহ্ করে নিয়েছেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাহলে সেও রওয়ানা করুক। [২৯৪] (আ.প্র. ৪০৫২, ই.ফা. ৪০৫৬)

৪৪০২
يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ وَهْبٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُمَرُ بْنُ مُحَمَّدٍ أَنَّ أَبَاهُ حَدَّثَهُ عَنْ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كُنَّا نَتَحَدَّثُ بِحَجَّةِ الْوَدَاعِ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ أَظْهُرِنَا وَلَا نَدْرِيْ مَا حَجَّةُ الْوَدَاعِ فَحَمِدَ اللهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ ثُمَّ ذَكَرَ الْمَسِيْحَ الدَّجَّالَ فَأَطْنَبَ فِيْ ذِكْرِهِ وَقَالَ مَا بَعَثَ اللهُ مِنْ نَبِيٍّ إِلَّا أَنْذَرَ أُمَّتَهُ أَنْذَرَهُ نُوْحٌ وَالنَّبِيُّوْنَ مِنْ بَعْدِهِ وَإِنَّهُ يَخْرُجُ فِيْكُمْ فَمَا خَفِيَ عَلَيْكُمْ مِنْ شَأْنِهِ فَلَيْسَ يَخْفَى عَلَيْكُمْ أَنَّ رَبَّكُمْ لَيْسَ عَلَى مَا يَخْفَى عَلَيْكُمْ ثَلَاثًا إِنَّ رَبَّكُمْ لَيْسَ بِأَعْوَرَ وَإِنَّهُ أَعْوَرُ عَيْنِ الْيُمْنَى كَأَنَّ عَيْنَهُ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মাঝে উপস্থিত থাকাবস্থায় আমরা বিদায় হাজ্জ সম্পর্কে আলোচনা করতাম। আর আমরা বিদায় হাজ্জ কাকে বলে তা জানতাম না। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্‌র প্রশংসা ও মহিমা বর্ণনা করেন। তারপর তিনি মাসীহ্ দাজ্জাল সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা করেন এবং বলেন, আল্লাহ এমন কোন নবী প্রেরণ করেননি যিনি তাঁর উম্মতকে (দাজ্জাল সম্পর্কে) সতর্ক করেননি। নূহ (আঃ) এবং তাঁর পরবর্তী নাবীগণও তাঁদের উম্মতগণকে এ সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। সে তোমাদের মধ্যে প্রকাশিত হবে। তার অবস্থা তোমাদের নিকট অপ্রকাশিত থাকবে না। তোমাদের কাছে এও অস্পষ্ট নয় যে, তোমাদের রব কানা নন। আর দাজ্জালের ডান চোখ কানা হবে। যেন তার চোখ একটি ফোলা আঙ্গুর। [৩০৫৭] (আ.প্র. ৪০৫৩, ই.ফা. ৪০৫৮)

৪৪০৩
أَلَا إِنَّ اللهَ حَرَّمَ عَلَيْكُمْ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِيْ بَلَدِكُمْ هَذَا فِيْ شَهْرِكُمْ هَذَا أَلَا هَلْ بَلَّغْتُ قَالُوْا نَعَمْ قَالَ اللهُمَّ اشْهَدْ ثَلَاثًا وَيْلَكُمْ أَوْ وَيْحَكُمْ انْظُرُوْا لَا تَرْجِعُوْا بَعْدِيْ كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ.

বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

তোমরা সতর্ক থাক। আজকের এ দিনের মত, এ শহরের মত এবং এ মাসের মতো আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের রক্তকে ও তোমাদের সম্পদকে তোমাদের উপর হারাম করেছেন। বল তো, আমি কি আল্লাহর পয়গাম পৌঁছে দিয়েছি। সমবেত সকলে বললেন, হ্যাঁ। তিনি বললেন, হে আল্লাহ! আপনি সাক্ষী থাকুন। এ কথা তিনবার বললেন, (তারপর বললেন), তোমাদের জন্য পরিতাপ অথবা তিনি বললেন, তোমাদের জন্য আফসোস, সতর্ক থেকো, আমার পরে তোমরা কুফরের দিকে ফিরে যেয়ো না যে, একে অন্যের গর্দান মারবে। [১৭৪২] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৫৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০৫৮)

৪৪০৪
عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ قَالَ حَدَّثَنِيْ زَيْدُ بْنُ أَرْقَمَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم غَزَا تِسْعَ عَشْرَةَ غَزْوَةً وَأَنَّهُ حَجَّ بَعْدَ مَا هَاجَرَ حَجَّةً وَاحِدَةً لَمْ يَحُجَّ بَعْدَهَا حَجَّةَ الْوَدَاعِ قَالَ أَبُوْ إِسْحَاقَ وَبِمَكَّةَ أُخْرَى.

যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঊনিশটি যুদ্ধে স্বয়ং অংশগ্রহণ করেন। আর হিজরাতের পর তিনি হাজ্জ আদায় করেন মাত্র একটি হাজ্জে। এরপর তিনি আর কোন হাজ্জ আদায় করেননি এবং তা হল বিদায় হাজ্জ। আবূ ইসহাক (রহঃ) বলেন, মক্কায় অবস্থানকালে তিনি আরেকটি হাজ্জ করেছিলেন। [৩৯৪৯] (আ.প্র. ৪০৫৪, ই.ফা. ৪০৫৮)

৪৪০৫
حَفْصُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَلِيِّ بْنِ مُدْرِكٍ عَنْ أَبِيْ زُرْعَةَ بْنِ عَمْرِو بْنِ جَرِيْرٍ عَنْ جَرِيْرٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ لِجَرِيْرٍ اسْتَنْصِتْ النَّاسَ فَقَالَ لَا تَرْجِعُوْا بَعْدِيْ كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ.

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জারীর (রাঃ)- কে বিদায় হাজ্জে বললেন, লোকজনকে চুপ থাকতে বল। তারপর বললেন, আমার ইন্তিকালের পর তোমরা কুফরীর দিকে ফিরে যেয়ো না যে, একে অন্যের গর্দান উড়াবে। [১২১] (আ.প্র. ৪০৫৫, ই.ফা. ৪০৫৯)

৪৪০৬
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا أَيُّوْبُ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ ابْنِ أَبِيْ بَكْرَةَ عَنْ أَبِيْ بَكْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الزَّمَانُ قَدْ اسْتَدَارَ كَهَيْئَةِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ السَّنَةُ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ثَلَاثَةٌ مُتَوَالِيَاتٌ ذُو الْقَعْدَةِ وَذُو الْحِجَّةِ وَالْمُحَرَّمُ وَرَجَبُ مُضَرَ الَّذِيْ بَيْنَ جُمَادَى وَشَعْبَانَ أَيُّ شَهْرٍ هَذَا قُلْنَا اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ فَسَكَتَ حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ سَيُسَمِّيْهِ بِغَيْرِ اسْمِهِ قَالَ أَلَيْسَ ذُو الْحِجَّةِ قُلْنَا بَلَى قَالَ فَأَيُّ بَلَدٍ هَذَا قُلْنَا اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ فَسَكَتَ حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ سَيُسَمِّيْهِ بِغَيْرِ اسْمِهِ قَالَ أَلَيْسَ الْبَلْدَةَ قُلْنَا بَلَى قَالَ فَأَيُّ يَوْمٍ هَذَا قُلْنَا اللهُ وَرَسُوْلُهُ أَعْلَمُ فَسَكَتَ حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ سَيُسَمِّيْهِ بِغَيْرِ اسْمِهِ قَالَ أَلَيْسَ يَوْمَ النَّحْرِ قُلْنَا بَلَى قَالَ فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ قَالَ مُحَمَّدٌ وَأَحْسِبُهُ قَالَ وَأَعْرَاضَكُمْ عَلَيْكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِيْ بَلَدِكُمْ هَذَا فِيْ شَهْرِكُمْ هَذَا وَسَتَلْقَوْنَ رَبَّكُمْ فَسَيَسْأَلُكُمْ عَنْ أَعْمَالِكُمْ أَلَا فَلَا تَرْجِعُوْا بَعْدِيْ ضُلَّالًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ أَلَا لِيُبَلِّغْ الشَّاهِدُ الْغَائِبَ فَلَعَلَّ بَعْضَ مَنْ يُبَلَّغُهُ أَنْ يَكُوْنَ أَوْعَى لَهُ مِنْ بَعْضِ مَنْ سَمِعَهُ فَكَانَ مُحَمَّدٌ إِذَا ذَكَرَهُ يَقُوْلُ صَدَقَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قَالَ أَلَا هَلْ بَلَّغْتُ مَرَّتَيْنِ.

আবূ বাক্‌রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, সময় ও কাল আবর্তিত হয় নিজ চক্রে। যেদিন থেকে আল্লাহ আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন। এক বছর হয় বার মাসে। এর মধ্যে চার মাস সন্মানিত। তিনমাস ক্রমান্বয়ে আসে-যেমন যিলকদ, যিলহাজ্জ ও মুহার্‌রম এবং রজব মুদার বা জমাদিউল আখির ও শাবান মাসের মাঝে হয়ে থাকে। (এরপর তিনি প্রশ্ন করলেন) এটি কোন্ মাস? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই অধিক জানেন। এরপর তিনি চুপ থাকলেন। এমনকি আমরা ধারণা করলাম যে, হয়তো তিনি এ মাসের অন্য কোন নাম রাখবেন। (তারপর) তিনি বললেন, এ কি যিলহাজ্জ মাস নয়? আমরা বললামঃ হ্যাঁ। তারপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এটি কোন্ শহর? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-ই অধিক জানেন। তারপর তিনি চুপ থাকলেন। আমরা ধারণা করলাম যে, হয়তো তিনি এ শহরের অন্য কোন নাম রাখবেন। তারপর তিনি বললেন,এটি কি (মক্কাহ্) শহর নয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, এটি কোন্ দিন? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রসূল-ই ভাল জানেন। তারপর তিনি চুপ থাকলেন। এতে আমরা মনে করলাম যে, তিনি এ দিনটির অন্য কোন নামকরণ করবেন। তারপর তিনি বললেন, এটি কি কুরবানীর দিন নয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ। এরপর তিনি বললেন, তোমাদের রক্ত তোমাদের সম্পদ। রাবী মুহাম্মাদ বলেন, আমার ধারণা যে, তিনি আরও বলেছিলেন, তোমাদের মান-ইজ্জত- তোমাদের উপর পবিত্র, যেমন পবিত্র তোমাদের আজকের এই দিন, তোমাদের এই শহর ও তোমাদের এই মাস। তোমরা শীঘ্রই তোমাদের রবের সঙ্গে মিলিত হবে। তখন তিনি তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। খবরদার! তোমরা আমার ইন্তিকালের পরে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ো না যে, একে অন্যের গর্দান উড়াবে। শোন, তোমাদের উপস্থিত ব্যক্তি অনুপস্থিত ব্যক্তিকে আমার পয়গাম পৌঁছে দেবে। অনেক সময় যে প্রত্যক্ষভাবে শ্রবণ করেছে তার থেকেও তার মাধ্যমে খবর-পাওয়া ব্যক্তি অধিকতর সংরক্ষণকারী হয়ে থাকে। রাবী মুহাম্মাদ [ইবনু সীরীন (রহঃ)] যখনই এ হাদীস বর্ণনা করতেন তখন তিনি বলতেন-মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্যই বলেছেন। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা শোন, আমি কি (আল্লাহ্‌র পায়গাম) পৌঁছিয়ে দিয়েছি? এভাবে দু’বার বললেন। [মুসলিম ২৮/৯, হাঃ ১৬৭৯, আহমাদ ২০৪০৮] (আ.প্র. ৪০৫৬, ই.ফা. ৪০৬০)

৪৪০৭
مُحَمَّدُ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ عَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ أَنَّ أُنَاسًا مِنَ الْيَهُوْدِ قَالُوْا لَوْ نَزَلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ فِيْنَا لَاتَّخَذْنَا ذَلِكَ الْيَوْمَ عِيْدًا فَقَالَ عُمَرُ أَيَّةُ آيَةٍ {فَقَالُوا الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِيْ وَرَضِيْتُ لَكُمْ الْإِسْلَامَ دِيْنًا} فَقَالَ عُمَرُ إِنِّيْ لَأَعْلَمُ أَيَّ مَكَانٍ أُنْزِلَتْ أُنْزِلَتْ وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَاقِفٌ بِعَرَفَةَ.

ত্বরিক ইবনু শিহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদল ইয়াহূদী বলল, যদি এ আয়াত আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হত, তাহলে আমরা উক্ত অবতরণের দিনকে ‘ঈদের দিন হিসেবে উদযাপন করতাম। তখন ‘উমার (রাঃ) তাদের জিজ্ঞেস করলেন, কোন্ আয়াত? তারা বলল, এই আয়াতঃ فَقَالُوا الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِيْنَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِيْ وَرَضِيْتُ لَكُمْ الإِسْلَامَ دِيْنًا ‘‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন (জীবন-বিধান)-কে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম এবং তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামাত পরিপূর্ণ করলাম’’- (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/৩)। তখন ‘উমার (রাঃ) বললেন, কোন্ স্থানে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়েছিল তা আমি জানি। এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরাফাহ্য় দন্ডায়মান অবস্থায় ছিলেন। [৪৫, ৬৭] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪০৫৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪০৬১)

৪৪০৮
عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ أَبِي الْأَسْوَدِ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ نَوْفَلٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ خَرَجْنَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَمِنَّا مَنْ أَهَلَّ بِعُمْرَةٍ وَمِنَّا مَنْ أَهَلَّ بِحَجَّةٍ وَمِنَّا مَنْ أَهَلَّ بِحَجٍّ وَعُمْرَةٍ وَأَهَلَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِالْحَجِّ فَأَمَّا مَنْ أَهَلَّ بِالْحَجِّ أَوْ جَمَعَ الْحَجَّ وَالْعُمْرَةَ فَلَمْ يَحِلُّوْا حَتَّى يَوْمِ النَّحْرِ.

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ وَقَالَ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ حَدَّثَنَا مَالِكٌ مِثْلَهُ.

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,আমরা (মাদীনাহ মুনাওয়ারা থেকে) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে রওয়ানা হলাম। আমাদের মধ্যে কেউ কেউ ‘উমরাহ্‌র ইহ্‌রাম বেঁধেছিলেন আর কেউ কেউ হাজ্জের ইহ্‌রাম, আবার কেউ কেউ হজ্জ ও ‘উমরাহ্‌ উভয়ের ইহ্‌রাম বেঁধেছিলেন। আর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাজ্জের ইহ্‌রাম বেঁধেছিলেন। যাঁরা শুধু হাজ্জের ইহ্‌রাম বেঁধেছিলেন অথবা হাজ্জ ও ‘উমরাহ্‌র ইহ্‌রাম একসঙ্গে বেঁধেছিলেন, তারা কুরবানীর দিনের পূর্বে হালাল হতে পারেননি। (আ.প্র. ৪০৫৮, ই.ফা. ৪০৬২)

মালিক (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি উপরোক্ত হাদীসটিকে এভাবে বর্ণনা করেছেনঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে বিদায় হাজ্জকালীন সময়ে। [২৯৪] (আ.প্র. ৪০৫৯, ই.ফা. ৪০৬৩)

ইসমা’ঈল (রহঃ) সূত্রেও মালিক (রহঃ) থেকে এভাবে বর্ণিত আছে। (আ.প্র. ৪০৬০, ই.ফা. ৪০৬৩)

৪৪০৯
أَحْمَدُ بْنُ يُوْنُسَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ هُوَ ابْنُ سَعْدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ عَنْ عَامِرِ بْنِ سَعْدٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ عَادَنِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ مِنْ وَجَعٍ أَشْفَيْتُ مِنْهُ عَلَى الْمَوْتِ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ بَلَغَ بِيْ مِنَ الْوَجَعِ مَا تَرَى وَأَنَا ذُوْ مَالٍ وَلَا يَرِثُنِيْ إِلَّا ابْنَةٌ لِيْ وَاحِدَةٌ أَفَأَتَصَدَّقُ بِثُلُثَيْ مَالِيْ قَالَ لَا قُلْتُ أَفَأَتَصَدَّقُ بِشَطْرِهِ قَالَ لَا قُلْتُ فَالثُّلُثِ قَالَ وَالثُّلُثُ كَثِيْرٌ إِنَّكَ أَنْ تَذَرَ وَرَثَتَكَ أَغْنِيَاءَ خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَذَرَهُمْ عَالَةً يَتَكَفَّفُوْنَ النَّاسَ وَلَسْتَ تُنْفِقُ نَفَقَةً تَبْتَغِيْ بِهَا وَجْهَ اللهِ إِلَّا أُجِرْتَ بِهَا حَتَّى اللُّقْمَةَ تَجْعَلُهَا فِيْ فِي امْرَأَتِكَ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ آأُخَلَّفُ بَعْدَ أَصْحَابِيْ قَالَ إِنَّكَ لَنْ تُخَلَّفَ فَتَعْمَلَ عَمَلًا تَبْتَغِيْ بِهِ وَجْهَ اللهِ إِلَّا ازْدَدْتَ بِهِ دَرَجَةً وَرِفْعَةً وَلَعَلَّكَ تُخَلَّفُ حَتَّى يَنْتَفِعَ بِكَ أَقْوَامٌ وَيُضَرَّ بِكَ آخَرُوْنَ اللهُمَّ أَمْضِ لِأَصْحَابِيْ هِجْرَتَهُمْ وَلَا تَرُدَّهُمْ عَلَى أَعْقَابِهِمْ لَكِنْ الْبَائِسُ سَعْدُ بْنُ خَوْلَةَ رَثَى لَهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ تُوُفِّيَ بِمَكَّةَ.

সা’দ (ইবনু আবূ ওয়াক্কাস) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বিদায় হাজ্জের সময় আমি বেদনার কারনে মরণ রোগে আক্রান্ত হলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে দেখতে এলেন। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার রোগ যে মারাত্মক হয়ে গেছে তা আপনি দেখতে পাচ্ছেন। আমি একজন সম্পদশালী লোক কিন্তু আমার একমাত্র কন্যা ব্যতীত অন্য কোন উত্তরাধিকারী নেই। কাজেই আমি কি আমার সম্পত্তির দুই-তৃতীয়াংশ সদাকাহ করে দেব? তিনি বললেন, ‘না’। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তবে কি আমি সম্পদের অর্ধেক সদাকাহ করে দেব? তিনি বললেন, ‘না’। আমি বললাম, তাহলে এক-তৃতীয়াংশ, তখন তিনি বললেন, এক-তৃতীয়াংশই ঢের। তুমি যদি তোমার উত্তরাধিকারীদের সচ্ছল অবস্থায় ছেড়ে যাও তবে তা তাদেরকে অভাবী অবস্থায় রেখে যাওয়ার চেয়ে উত্তম-যাতে তারা মানুষের কাছে হাত পেতে বেড়াবে। আর তুমি যা-ই আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির নিমিত্ত খরচ কর, তার বিনিময়ে তোমাকে প্রতিদান দেয়া হবে। এমনকি যে লোকমা তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে ধর তারও। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি কি আমার সাথীদের পিছনে পড়ে থাকব? তিনি বললেন, তোমাকে কক্ষণো পেছনে ছেড়ে যাওয়া হবে না, আর (তুমি পিছনে পড়ে গেলেও) আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশে ‘আমাল করবে তা দ্বারা তোমার মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে ও সমুন্নত হবে। সম্ভবত তুমি আরো জীবিত থাকবে। ফলে তোমার দ্বারা এক সম্প্রদায় উপকৃত হবে। অন্য সম্প্রদায় (মুসলিমরা) ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হে আল্লাহ! আমার সহাবীদের হিজরাত আপনি জারী রাখুন এবং তাদের পিছনের দিকে ফিরিয়ে দিবেন না। কিন্তু আফসোস সা’দ ইবনু খাওলা (রাঃ)-এর জন্য, (রাবী বলেন) মক্কায় তার মৃত্যু হওয়ায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মনে কষ্ট পেয়েছিলেন। [৫৬](আ.প্র. ৪০৬১, ই.ফা. ৪০৬৪)

৪৪১০
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا أَبُوْ ضَمْرَةَ حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ عُقْبَةَ عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُمْ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَلَقَ رَأْسَهُ فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ.

নাফি’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) তাঁদেরকে অবহিত করেছেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিদায় হাজ্জে তাঁর মাথা মুণ্ডন করেছিলেন। [১৭২৬](আ.প্র. ৪০৬২, ই.ফা. ৪০৬৫)

৪৪১১
عُبَيْدُ اللهِ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِيْ مُوْسَى بْنُ عُقْبَةَ عَنْ نَافِعٍ أَخْبَرَهُ ابْنُ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم حَلَقَ فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ وَأُنَاسٌ مِنْ أَصْحَابِهِ وَقَصَّرَ بَعْضُهُمْ.

নাফি’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইবনু ‘উমার (রাঃ) তাঁকে অবহিত করেন যে, বিদায় হাজ্জে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং তাঁর সহাবীদের অনেকেই মাথা মুণ্ডন করেন আর তাঁদের কেউ কেউ মাথার চুল ছেটেঁ ফেলেন। [১৭২৬](আ.প্র. ৪০৬৩, ই.ফা. ৪০৬৬)

৪৪১২
يَحْيَى بْنُ قَزَعَةَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِيْ يُوْنُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ حَدَّثَنِيْ عُبَيْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ أَنَّهُ أَقْبَلَ يَسِيْرُ عَلَى حِمَارٍ وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَائِمٌ بِمِنًى فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ يُصَلِّيْ بِالنَّاسِ فَسَارَ الْحِمَارُ بَيْنَ يَدَيْ بَعْضِ الصَّفِّ ثُمَّ نَزَلَ عَنْهُ فَصَفَّ مَعَ النَّاسِ.

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি গাধায় চড়ে রওয়ানা হন এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিদায় হাজ্জকালে মিনায় দাঁড়িয়ে লোকদের নিয়ে সলাত আদায় করছিলেন। তখন গাধাটি সলাতের একটি কাতারের সামনে এসে পড়ে। এরপর তিনি গাধার পিঠ থেকে নেমে পড়েন এবং তিনি লোকদের সঙ্গে সলাতের কাতারে সামিল হন। [৭৬] (আ.প্র. ৪০৬৪, ই.ফা. ৪০৬৭)

৪৪১৩
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ هِشَامٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ قَالَ سُئِلَ أُسَامَةُ وَأَنَا شَاهِدٌ عَنْ سَيْرِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ حَجَّتِهِ فَقَالَ الْعَنَقَ فَإِذَا وَجَدَ فَجْوَةً نَصَّ.

হিশামের পিতা [‘উরওয়াহ (রহঃ)] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার উপস্থিতিতে উসামাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিদায় হাজ্জের সওয়ারী চালনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হলে বললেন, মধ্যম গতিতে চলেছেন আবার প্রশস্ত পথ পেলে দ্রুতগতিতে চলেছেন। [১৬৬৬] (আ.প্র. ৪০৬৫, ই.ফা. ৪০৬৮)

৪৪১৪
عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ يَزِيْدَ الْخَطْمِيِّ أَنَّ أَبَا أَيُّوْبَ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ صَلَّى مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ حَجَّةِ الْوَدَاعِ الْمَغْرِبَ وَالْعِشَاءَ جَمِيْعًا.

আবূ আইয়ূব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে বিদায় হাজ্জে (মুযদালিফায়) মাগরিব ও ঈশার সলাত এক সঙ্গে আদায় করেছেন। [৮৫] [১৬৭৪] (আ.প্র. ৪০৬৬, ই.ফা. ৪০৬৯)

[৮৫] সফরের অবস্থায় দু ওয়াক্তের সলাত আদায় করলে কসর সহ করতে হবে। মুকীম অবস্থায় বৃষ্টি বাদল, যে কোন শংকা, কিংবা অসুবিধা সৃষ্টিকারী কারণে দু ওয়াক্তের সলাতকে জমা করে আদায় করলে সলাতের রাক’আত সংখ্যা পূর্ণ আদায় করতে হবে।

ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে আট রাক’আত একত্রে (যুহ্‌র ও আসরের) এবং সাত রাক’আত একত্রে (মাগরিব-‘ইশার) সলাত আদায় করেছি। (বুখারী পর্ব ১৯: /৩০ হাঃ ১১৭৪, মুসলিম হাঃ, লুলু ওয়াল মারজান হাদীস নং ৪১১)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]