সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস তাফসীর অধ্যায় ১০ম ভাগ হাদিস নং ৪৭৪৫ – ৪৭৯৯

৬৫/২৬/১.অধ্যায়ঃ
‘‘আমাকে লাঞ্ছিত করো না পুনরুত্থান দিবসে।’’ (সূরাহ শু‘আরা ২৬/৮৭)

সূরাহ (২৬) : শু‘আরা

মুজাহিদ (রহ.) বলেন-تَعْبَثُوْنَতোমরা নির্মাণ করে থাক। هَضِيْمٌ স্পর্শ করা মাত্রই চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। مُسَحَّرِيْنَ জাদুগ্রস্ত। اللَّيْكَةُ ওالأَيْكَةُأَيْكَةٍএর বহুবচন যার অর্থ বৃক্ষে পরিপূর্ণ। يَوْمِالظُّلَّةِ যেদিনে শাস্তি তাদের ছেয়ে ফেলবে। مَوْزُوْنٍ জ্ঞাত। كَالطَّوْدِ পর্বতের ন্যায়। অন্যরা বলেন, الَشِرْذِمَةٌ ছোট দল। فِيالسَّاجِدِيْنَ সালাত আদায়কারী। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন لَعَلَّكُمْتَخْلُدُوْنَ যেন তোমরা স্থায়ী থাকবে। الرِّيعُযমীনের উঁচু অংশ। এর বহুবচন رِيَعَةٌএবং أَرْيَاعٌতার একবচনرِيْعَةٌ।مَصَانِعَপ্রত্যেক ইমারতকে مَصْنَعَةٌবলা হয়। فَرِهِيْنَঅহংকারীরা। مَرِحِيْنَفَارِهِيْنَএকই অর্থের। فَارِهِيْنَবলা হয় দক্ষদের। تَعْثَوْا ভয়ঙ্কর ফ্যাসাদ। এটি يَا দ্বারাও ব্যবহৃত হয়। যথা-عَاثَيَعِيْثُعَيْثًا।الْجِبِلَّةَ সৃষ্টি جُبِلَ এর অর্থ-সৃষ্টি করা হয়েছে। جُبُلًا وَجِبِلًا وَجُبْلًا সবগুলোর অর্থ সৃষ্টি।

৪৭৬৮
وَقَالَ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ طَهْمَانَ عَنْ ابْنِ أَبِيْ ذِئْبٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ إِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ يَرَى أَبَاهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَيْهِ الْغَبَرَةُ وَالْقَتَرَةُ الْغَبَرَةُ هِيَ الْقَتَرَةُ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ক্বিয়ামাত দিবসে ইব্রাহীম (‘আ.) তাঁর পিতাকে ধূলি-মলিন অবস্থায় দেখতে পাবেন।الْغَبَرَةُ ধূলি-ময়লা। [৩৩৫০] (আ.প্র. অনুচ্ছেদ, ই.ফা. অনুচ্ছেদ)

৪৭৬৯
إِسْمَاعِيْلُ حَدَّثَنَا أَخِيْ عَنْ ابْنِ أَبِيْ ذِئْبٍ عَنْ سَعِيْدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَلْقَى إِبْرَاهِيْمُ أَبَاهُ فَيَقُوْلُ يَا رَبِّ إِنَّكَ وَعَدْتَنِيْ أَنْ لَا تُخْزِيَنِيْ يَوْمَ يُبْعَثُوْنَ فَيَقُوْلُ اللهُ إِنِّيْ حَرَّمْتُ الْجَنَّةَ عَلَى الْكَافِرِيْنَ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, (হাশরের ময়দানে ইব্রাহীম (‘আ.) তাঁর পিতার সাক্ষাৎ পেয়ে বলবেন, ইয়া রব! আপনি আমার সঙ্গে ওয়া‘দা করেছেন যে, ক্বিয়ামাতের দিন আমাকে লাঞ্ছিত করবেন না। আল্লাহ্ তা’আলা বলবেন, আমি কাফিরদের উপর জান্নাত হারাম করে দিয়েছি। [৩৩৫০] (আ.প্র. ৪৪০৫, ই.ফা. ৪৪০৭)

৬৫/২৬/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ তোমার নিকট আত্মীয়বর্গকে সতর্ক করে দাও এবং (মু’মিনদের প্রতি) বিনয়ী হও। (সূরাহ শু‘আরা ২৬/২১৪-২১৫)

اخْفِضْ جَنَاحَكَ ‘‘তোমার পার্শ্ব নম্র রাখ।

৪৭৭০
عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ مُرَّةَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ {وَأَنْذِرْ عَشِيْرَتَكَ الْأَقْرَبِيْنَ} صَعِدَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى الصَّفَا فَجَعَلَ يُنَادِيْ يَا بَنِيْ فِهْرٍ يَا بَنِيْ عَدِيٍّ لِبُطُوْنِ قُرَيْشٍ حَتَّى اجْتَمَعُوْا فَجَعَلَ الرَّجُلُ إِذَا لَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يَخْرُجَ أَرْسَلَ رَسُوْلًا لِيَنْظُرَ مَا هُوَ فَجَاءَ أَبُوْ لَهَبٍ وَقُرَيْشٌ فَقَالَ أَرَأَيْتَكُمْ لَوْ أَخْبَرْتُكُمْ أَنَّ خَيْلًا بِالْوَادِيْ تُرِيْدُ أَنْ تُغِيْرَ عَلَيْكُمْ أَكُنْتُمْ مُصَدِّقِيَّ قَالُوْا نَعَمْ مَا جَرَّبْنَا عَلَيْكَ إِلَّا صِدْقًا قَالَ فَإِنِّيْ نَذِيْرٌ لَكُمْ بَيْنَ يَدَيْ عَذَابٍ شَدِيْدٍ فَقَالَ أَبُوْ لَهَبٍ تَبًّا لَكَ سَائِرَ الْيَوْمِ أَلِهَذَا جَمَعْتَنَا فَنَزَلَتْ {تَبَّتْ يَدَآ أَبِيْ لَهَبٍ وَّتَبَّ ط (1) مَآ أَغْنٰى عَنْهُ مَالُه” وَمَا كَسَبَ ط}.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ এ আয়াত অবতীর্ণ হল, তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাফা (পর্বতে) আরোহণ করলেন এবং আহ্বান জানালেন, হে বানী ফিহর! হে বানী আদী! কুরাইশদের বিভিন্ন গোত্রকে। অবশেষে তারা জমায়েত হল। যে নিজে আসতে পারল না, সে তার প্রতিনিধি পাঠাল, যাতে দেখতে পায়, ব্যাপার কী? সেখানে আবূ লাহাব ও কুরাইশগণও আসল। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, বল তো, আমি যদি তোমাদের বলি যে, শত্রুসৈন্য উপত্যকায় চলে এসেছে, তারা তোমাদের উপর হঠাৎ আক্রমণ করতে প্রস্তুত, তোমরা কি আমাকে বিশ্বাস করবে? তারা বলল, হাঁ আমরা আপনাকে সর্বদা সত্য পেয়েছি। তখন তিনি বললেন, “আমি তোমাদেরকে কঠিন শাস্তির ভয় প্রদর্শন করছি।” আবূ লাহাব [রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে] বলল, সারাদিন তোমার উপর ধ্বংস নামুক! এজন্যই কি তুমি আমাদের জমায়েত করেছ? তখন অবতীর্ণ হল, “ধ্বংস হোক আবূ লাহাবের হস্ত দু’টি এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও। তার ধন-সম্পদ ও তার অর্জন তার কোন উপকারে লাগেনি।” [১৩৯৪] (আ.প্র. , ই.ফা. ৪৪০৮)

৪৭৭১
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ وَأَبُوْ سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ قَامَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ أَنْزَلَ اللهُ {وَأَنْذِرْ عَشِيْرَتَكَ الْأَقْرَبِيْنَ} قَالَ يَا مَعْشَرَ قُرَيْشٍ أَوْ كَلِمَةً نَحْوَهَا اشْتَرُوْا أَنْفُسَكُمْ لَا أُغْنِيْ عَنْكُمْ مِنْ اللهِ شَيْئًا يَا بَنِيْ عَبْدِ مَنَافٍ لَا أُغْنِيْ عَنْكُمْ مِنْ اللهِ شَيْئًا يَا عَبَّاسُ بْنَ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ لَا أُغْنِيْ عَنْكَ مِنْ اللهِ شَيْئًا وَيَا صَفِيَّةُ عَمَّةَ رَسُوْلِ اللهِ لَا أُغْنِيْ عَنْكِ مِنْ اللهِ شَيْئًا وَيَا فَاطِمَةُ بِنْتَ مُحَمَّدٍ سَلِيْنِيْ مَا شِئْتِ مِنْ مَالِيْ لَا أُغْنِيْ عَنْكِ مِنْ اللهِ شَيْئًا تَابَعَهُ أَصْبَغُ عَنْ ابْنِ وَهْبٍ عَنْ يُوْنُسَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ (তোমার নিকটাত্মীয়দের সতর্ক কর) এ আয়াত অবতীর্ণ হল, তখন রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দাঁড়ালেন এবং বললেন, হে কুরাইশ সম্প্রদায়! অথবা অনুরূপ বাক্য, নিজেদের কিনে নাও। আমি আল্লাহ্‌র নিকট তোমাদের কোন উপকারে আসব না। হে বানী আব্দে মানাফ! আল্লাহ্‌র নিকট আমি তোমাদের কোন উপকারে আসব না। হে ‘আব্বাস ইব্‌নু আবদুল মুত্তালিব! আমি আল্লাহ্‌র নিকট তোমার কোনই উপকারে আসব না। হে আল্লাহ্‌র রসূলের ফুফু সফীয়্যাহ! আমি তোমার কোনই উপকার করতে পারব না। হে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কন্যা ফাতিমা! আমার ধন-সম্পদ থেকে যা ইচ্ছে চাও, কিন্তু আল্লাহ্‌র নিকট আমি তোমার কোনই উপকারে আসব না।

আস্বাগ (রহ.)…..ইব্‌নু শিহাব (রহ.) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। [২৭৫৩] (আ.প্র. ৪৪০৬, ই.ফা. ৪৪০৯)

৬৫/২৮/১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ আপনি যাকে ভালোবাসেন, ইচ্ছা করলেই তাকে হিদায়াত করতে পারবেন না; তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা হিদায়াত করে থাকেন। (সূরাহ ক্বাসাস ২৮/৫৬)

সূরাহ (২৭) : নামল

وَالْخَبْءُযা তুমি গোপন কর। لَا قِبَلَ لَهُمْতাদের কোন শক্তি নেই।[১]الصَّرْحُকাঁচ মিশ্রিত গারা এবং الصَّرْحُ প্রাসাদকেও বলা হয়। এর বহুবচন صُرُوْحٌ। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, وَلَهَا عَرْشٌতার সিংহাসন অতি সম্মানিত, শিল্প কর্মে উত্তম এবং বহু মূল্যবান। يَأْتُوْنِيْ مُسْلِمِيْنَঅনুগত হয়ে আমার নিকট আসবে। رَدِفَনিকটবর্তী হয়েছে। جَامِدَةًস্থির। أَوْزِعْنِيْআমাকে বানিয়ে দাও। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, نَكِّرُوْاপরিবর্তন করে দাও। وَأُوْتِيْنَا (আমাদের জ্ঞান দেয়া হয়েছে) এ কথা সুলাইমান (আঃ) বলেন, الصَّرْحُপানির একটি হাউয। সুলাইমান (আঃ) সেটি কাঁচ দিয়ে ঢেকে দিয়েছিলেন।

সূরাহ (২৮) : ক্বাসাস

يُقَالَ {كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلَّا وَجْهَه”} إِلَّا مُلْكَهُ وَيُقَالُ إِلَّا مَا أُرِيْدَ بِهِ وَجْهُ اللهِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ فَعَمِيَتْ عَلَيْهِمْ {الأَنْبَآءُ} الْحُجَجُ.

আল্লাহর চেহারা ব্যতীত সব কিছু ধ্বংস হবে। ইমাম বুখারী বলেছেন, এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, তাঁর রাজত্ব [2] ব্যতীত এবং এও বলা হয়েছে যে, যে ‘আমাল দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন উদ্দেশ্য তা ব্যতীত সবই ধ্বংস হবে। অতঃপর তাদের কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যাবে। মুজাহিদ (রহ.) الْأَنْبَاءُ শব্দের অর্থ বলেছেন প্রমাণাদি।

৪৭৭২
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ لَمَّا حَضَرَتْ أَبَا طَالِبٍ الْوَفَاةُ جَاءَهُ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَوَجَدَ عِنْدَهُ أَبَا جَهْلٍ وَعَبْدَ اللهِ بْنَ أَبِيْ أُمَيَّةَ بْنِ الْمُغِيْرَةِ فَقَالَ أَيْ عَمِّ قُلْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ كَلِمَةً أُحَاجُّ لَكَ بِهَا عِنْدَ اللهِ فَقَالَ أَبُوْ جَهْلٍ وَعَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِيْ أُمَيَّةَ أَتَرْغَبُ عَنْ مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَلَمْ يَزَلْ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَعْرِضُهَا عَلَيْهِ وَيُعِيْدَانِهِ بِتِلْكَ الْمَقَالَةِ حَتَّى قَالَ أَبُوْ طَالِبٍ آخِرَ مَا كَلَّمَهُمْ عَلَى مِلَّةِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ وَأَبَى أَنْ يَقُوْلَ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَاللهِ لَأَسْتَغْفِرَنَّ لَكَ مَا لَمْ أُنْهَ عَنْكَ فَأَنْزَلَ {اللهُ مَا كَانَ لِلنَّبِيِّ وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا أَنْ يَّسْتَغْفِرُوْا لِلْمُشْرِكِيْنَ} وَأَنْزَلَ اللهُ فِيْ أَبِيْ طَالِبٍ فَقَالَ لِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ {وَسَلَّمَ إِنَّكَ لَا تَهْدِيْ مَنْ أَحْبَبْتَ وَلٰكِنَّ اللهَ يَهْدِيْ مَنْ يَّشَآءُ}

قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {أُولِي الْقُوَّة}لَا يَرْفَعُهَا الْعُصْبَةُ مِنْ الرِّجَالِ {لَتَنُوْءُ}لَتُثْقِلُ {فَارِغًا} إِلَّا مِنْ ذِكْرِ مُوْسَى {الْفَرِحِيْنَ} الْمَرِحِيْنَ {قُصِّيْهِ} اتَّبِعِيْ أَثَرَهُ وَقَدْ يَكُوْنُ أَنْ يَقُصَّ الْكَلَامَ {نَحْنُ نَقُصُّ عَلَيْكَ عَنْ جُنُبٍ} عَنْ بُعْدٍ عَنْ جَنَابَةٍ وَاحِدٌ وَعَنْ اجْتِنَابٍ أَيْضًا {يَبْطِشُ} وَيَبْطُشُ {يَأْتَمِرُوْنَ}يَتَشَاوَرُوْنَ {الْعُدْوَانُ} وَالْعَدَاءُ وَالتَّعَدِّيْ وَاحِدٌ {آنَسَ} أَبْصَرَ {الْجِذْوَةُ} قِطْعَةٌ غَلِيْظَةٌ مِنَ الْخَشَبِ لَيْسَ فِيْهَا لَهَبٌ وَالشِّهَابُ فِيْهِ لَهَبٌ ……. وَالْحَيَّاتُ أَجْنَاسٌ الْجَانُّ وَالأَفَاعِيْ وَالأَسَاوِدُ {رِدْءًا} مُعِيْنًا قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ يُصَدِّقُنِيْ وَقَالَ غَيْرُهُ {سَنَشُدُّ} سَنُعِيْنُكَ كُلَّمَا عَزَّزْتَ شَيْئًا فَقَدْ جَعَلْتَ لَهُ عَضُدًا {مَقْبُوْحِيْنَ} مُهْلَكِيْنَ {وَصَّلْنَا} بَيَّنَّاهُ وَأَتْمَمْنَاهُ {يُجْبَى} يُجْلَبُ {بَطِرَتْ} أَشِرَتْ {فِيْ أُمِّهَا رَسُوْلًا} أُمُّ الْقُرَى مَكَّةُ وَمَا حَوْلَهَا {تُكِنُّ}تُخْفِيْ أَكْنَنْتُ الشَّيْءَ أَخْفَيْتُهُ وَكَنَنْتُهُ أَخْفَيْتُهُ وَأَظْهَرْتُهُ {وَيْكَأَنَّ اللهَ} مِثْلُ {أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّ اللهَ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَّشَآءُ وَيَقْدِر} يُوَسِّعُ عَلَيْهِ وَيُضَيِّقُ عَلَيْهِ.

মুসাইয়্যাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন আবূ ত্বলিবের মৃত্যু নিকটবর্তী হল, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর কাছে আসলেন। তিনি সেখানে আবূ জাহ্ল এবং ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু আবূ ‘উমাইয়াহ ইব্‌নু মুগীরাকে পেলেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হে চাচা! আপনি বলুন “লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ।” এ ‘কালেমা’ দ্বারা আমি আপনার জন্য (ক্বিয়ামাতে) আল্লাহ্‌র কাছে ওযর পেশ করতে পারব। আবূ জাহ্ল এবং ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু আবূ ‘উমাইয়াহ বলল, তুমি কি ‘আবদুল মুত্তালিবের ধর্ম ত্যাগ করবে? রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বারবার তার কাছে এ ‘কালিমা’ পেশ করতেই থাকলেন। আর তারা তাদের কথা বারবার বলেই চলল। অবশেষে আবূ ত্বলিব তাঁদের সঙ্গে সর্বশেষ এ কথা বললেন, আমি ‘আবদুল মুত্তালিবের মিল্লাতের উপর আছি, এবং কালিমা “লা- ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ” পাঠ করতে অস্বীকৃতি জানালেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহ্‌র কসম! আমাকে নিষেধ না করা অবধি আপনার জন্য ক্ষমা চাইতেই থাকব। তারপর আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন, নাবী ও মু’মিনদের জন্য এটা শোভনীয় নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে। আর আল্লাহ্ তা‘আলা আবূ ত্বলিব সম্পর্কে অবতীর্ণ করেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে সম্বোধন করে আল্লাহ্ তা‘আলা বললেন, “তুমি যাকে ভালবাস তাকেই সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্ যাকে ইচ্ছা হিদায়াত দান করেন।”

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন أُولِي الْقُوَّة লোকের একটি দল সে চাবিগুলো বহন করতে সক্ষম ছিল না। لَتَنُوءُ বহন করা কষ্টসাধ্য ছিল। فَارِغًا মূসা (‘আ.)-এর স্মরণ ব্যতীত সব কিছু থেকে খালি ছিল। الْفَرِحِينَ দম্ভকারীরা! قُصِّيهِ তার চিহ্ন অনুসরণ কর। কথার বর্ণনা অর্থেও প্রয়োগ হয়। نَحْنُ نَقُصُّ عَلَيْكَ عَنْ جُنُبٍ এখানে جُنُبٍ অর্থ দূর থেকে। عَنْ جَنَابَةٍ، عَنْ اجْتِنَابٍ এর একই অর্থবোধক।يَبْطِشُ ـ يَبْطُشُ উভয়ই পড়া হয়। يَأْتَمِرُونَ পরস্পর পরামর্শ করছে। الْعُدْوَانُ ـ وَالْعَدَاءُ وَالتَّعَدِّي (শব্দ তিনটির) অর্থ একই ; সীমা অতিক্রম করা। آنَسَ দেখা الْجِذْوَةُ কাঠের মোটা টুকরা যাতে শিখা নেই। الشِّهَابُ যাতে শিখা আছে। الْحَيَّاتُ বহু প্রকার সাপ; যেমন, চিকন জাতি, অজগর, কালনাগ (ইত্যাদি) رِدْءًا সাহায্যকারী। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, يُصَدِّقُنِي (তিনি قاف-কে পেশ দিয়ে পড়েন। অন্য হতে বর্ণিত سَنَشُدُّ আমরা শীঘ্র তোমাকে সাহায্য করব। যখন তুমি কোন জিনিসকে শক্তিশালী করলে, তখন তুমি যেন তার জন্য বাহুবল প্রদান করলে। যখন আরবগণ কাউকে সাহায্য করেন তখন বলে থাকেন جَعَلْتَ لَهُ عَضُدًا (বাহুবল প্রদান করলে) مَقْبُوحِينَ ধ্বংসপ্রাপ্ত। وَصَّلْنَا আমি বর্ণনা করেছি; আমি তা পূর্ণ করেছি। يُجْبَى আমদানি করা হয়। بَطِرَتْ দম্ভ করল। فِي أُمِّهَا رَسُولاً মক্কা এবং তার চতুষ্পার্শকে বলা হয়। تُكِنُّ গোপন করছ। আরবগণ বলে থাকেন أَكْنَنْتُ الشَّيْءَ আমি তা গোপন করেছি। كَنَنْتُهُআমি তা লুকিয়েছি; আমি প্রকাশ করেছি। وَيْكَأَنَّ اللهَ আর أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّ اللهَ সমার্থক (তারা কি দেখেনি?) يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَشَاءُ وَيَقْدِر আল্লাহ্ যার জন্য চান খাদ্য প্রসারিত করে দেন, আর যার থেকে চান সংকুচিত করে দেন। [১৩৬০] (আ.প্র. ৪৪০৮, ই.ফা. ৪৪১০)


[১] অট্টালিকার ইট-পাথরের গাঁথুনি ও প্রয়োজনীয় উপাদান।

[১] ইমাম বুখারী যে তাফসীর করেছেন সেটি আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামা‘আতের আকীদাহ অনুপাতে হয়নি। প্রকৃতপক্ষে এখানে وجهه থেকে আহলুসসুন্নাহ ওয়াল জামা‘আত وجهه শব্দের ব্যাখায় ‘‘তার সত্ত্বা’’ কথাটিই গ্রহণ করেছেন। যেমন সূরা আর রহমানে বলা হয়েছে। كُلُّمَنْعَلَيْهَافَانٍ – وَيَبْقَىوَجْهُرَبِّكَذُوالْجَلَالِوَالْإِكْرَامِ (২৭-২৬) سورةالرحمن ভূপৃষ্ঠে যা কিছু আছে সবই ধ্বংস হবে। শুধুমাত্র মহিমাময় মহানুভব প্রতিপালকের চেহারা (সত্ত্বা) অবশিষ্ট থাকবে। (সূরাহ আর-রহমানঃ ২৬-২৭)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৫/২৮/২.অধ্যায়ঃ
যে আল্লাহ্ আপনার প্রতি কুরআনকে ফরয করেছেন।’’ (সূরাহ ক্বাসাস ২৮/৮৫)

৪৭৭৩
مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا يَعْلَى حَدَّثَنَا سُفْيَانُ الْعُصْفُرِيُّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ {لَرَآدُّكَ إِلٰى مَعَادٍ} قَالَ إِلَى مَكَّةَ.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, لَرَادُّكَ إِلَى مَعَادٍ এর অর্থ মাক্কাহর পানে। (আ.প্র. ৪৪০৯, ই.ফা. ৪৪১১)

৬৫/২৯.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

সূরাহ (২৯) : আনকাবূত

মুজাহিদ বলেছেন, وَكَانُوْا مُسْتَبْصِرِيْنَ অর্থাৎ পথহারা। অন্যরা বলেছেন, الْحَيَوَانُ এবং الْحَيُّ শব্দ দু’টি একই। فَلَيَعْلَمَنَّ اللهُ আল্লাহ্ আগে থেকেই তা জানতেন। এখানে ব্যবহৃত হয়েছে فَلِيَمِيْزَاللهُ (যেন আল্লাহ্ তা‘আলা চিহ্নিত করেন)-এর অর্থে। যেমন, আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ لِيَمِيْزَ اللهُ الْخَبِيْثَ مِنَالطَّيِّبِ أَثْقَالًا مَّعَ أَثْقَالِهِمْ (যেন আল্লাহ্ তা‘আলা খবীছকে ভাল থেকে পৃথক করেন) অর্থাৎ তাদের অপরাধের সঙ্গে।

সূরাহ (৩০) : রূম (আলিফ-লাম-মীম গুলিবাতির)

فَلَا يَرْبُوْ অর্থাৎ যে এ আশায় দান করে যে, এর চেয়ে উত্তম বিনিময় পাবে, এতে কোন সওয়াব নেই। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, يُحْبَرُوْنَ তারা নিয়ামত প্রাপ্ত হবে। يَمْهَدُوْنَ তাদের আরাম আয়েশের জায়গা প্রস্ত্তত করবে। الْوَدْقُ বৃষ্টি। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, هَلْ لَّكُمْ مِمَّا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ এ আয়াত ইলাহ সম্পর্কে। تَخَافُوْنَهُمْ তোমরা কি পছন্দ কর যে, তোমাদের দাস-দাসী তোমাদের অংশীদার হোক, যেমন তোমরা পরস্পরের উত্তরাধিকার হও। يَصَّدَّعُوْنَ পৃথক পৃথক হয়ে যাবে। فَاصْدَعْস্পষ্ট বর্ণনা কর। ইবনু ‘আববাস ব্যতীত অন্যে বলেন, ضُعْفٌ এবং ضَعْفٌউভয়ের অর্থ একই। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, السُّوأَى অপরাধীকে যথাযোগ্য শাস্তি দেয়া।

৪৭৭৪
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا مَنْصُوْرٌ وَالأَعْمَشُ عَنْ أَبِي الضُّحَى عَنْ مَسْرُوْقٍ قَالَ بَيْنَمَا رَجُلٌ يُحَدِّثُ فِيْ كِنْدَةَ فَقَالَ يَجِيْءُ دُخَانٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَأْخُذُ بِأَسْمَاعِ الْمُنَافِقِيْنَ وَأَبْصَارِهِمْ و يَأْخُذُ الْمُؤْمِنَ كَهَيْئَةِ الزُّكَامِ فَفَزِعْنَا فَأَتَيْتُ ابْنَ مَسْعُوْدٍ وَكَانَ مُتَّكِئًا فَغَضِبَ فَجَلَسَ فَقَالَ مَنْ عَلِمَ فَلْيَقُلْ وَمَنْ لَمْ يَعْلَمْ فَلْيَقُلْ اللهُ أَعْلَمُ فَإِنَّ مِنَ الْعِلْمِ أَنْ يَقُوْلَ لِمَا لَا يَعْلَمُ لَا أَعْلَمُ فَإِنَّ اللهَ قَالَ لِنَبِيِّهِ صلى الله عليه وسلم قُلْ مَآ أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ مِنْ أَجْرٍ وَّمَآ أَنَا مِنَ الْمُتَكَلِّفِيْنَ} وَإِنَّ قُرَيْشًا أَبْطَئُوْا عَنِ الإِسْلَامِ فَدَعَا عَلَيْهِمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ اللهُمَّ أَعِنِّيْ عَلَيْهِمْ بِسَبْعٍ كَسَبْعِ يُوْسُفَ فَأَخَذَتْهُمْ سَنَةٌ حَتَّى هَلَكُوْا فِيْهَا وَأَكَلُوا الْمَيْتَةَ وَالْعِظَامَ وَيَرَى الرَّجُلُ مَا بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ كَهَيْئَةِ الدُّخَانِ فَجَاءَهُ أَبُوْ سُفْيَانَ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ جِئْتَ تَأْمُرُنَا بِصِلَةِ الرَّحِمِ وَإِنَّ قَوْمَكَ قَدْ هَلَكُوْا فَادْعُ اللهَ فَقَرَأَ {فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَآءُ بِدُخَانٍ مُّبِيْنٍ} إِلَى قَوْلِهِ {عَائِدُوْنَ} أَفَيُكْشَفُ عَنْهُمْ عَذَابُ الْآخِرَةِ إِذَا جَاءَ ثُمَّ عَادُوْا إِلَى كُفْرِهِمْ فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى {يَوْمَ نَبْطِشُ الْبَطْشَةَ الْكُبْرٰى} يَوْمَ بَدْرٍ وَ {لِزَامًا} يَوْمَ بَدْرٍ {الم غُلِبَتْ الرُّوْمُ} إِلَى {سَيَغْلِبُوْنَ} وَالرُّوْمُ قَدْ مَضَى.

মাসরূক (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি কিন্দাবাসীদের সামনে বলছিল, ক্বিয়ামাতের দিন ধোঁয়া আসবে এবং মুনাফিকদের শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে দেবে। আর মু’মিনের কাছে মনে হবে সর্দি লেগে থাকা অবস্থার ন্যায়। এ কথা শুনে আমরা ভীত হয়ে গেলাম। এরপর আমি ইব্‌নু মাস‘উদ (রাঃ)-এর নিকট গেলাম। তখন তিনি তাকিয়ায় হেলান দিয়ে বসেছিলেন। এ সব কথা শুনে তিনি রাগানি¦ত হয়ে উঠে বসলেন এবং বললেন, যার জানা আছে সেও যেন তা বলে, আর যে না জানে সে যেন বলে, আল্লাহ্ তা‘আলাই ভাল জানেন। জ্ঞানের মধ্যে এটাও একটা জ্ঞান যে, যার যে বিষয় জানা নেই সে বলবে “আমি এ বিষয়ে জানি না।” আল্লাহ্ তা‘আলা নাবীকে বলেছেন, হে নাবী! আপনি বলুন, “আমি আল্লাহ্‌র দ্বীনের দিকে ডাকার জন্য তোমাদের নিকট কোন পারিশ্রমিক চাই না এবং যারা মিথ্যা দাবী করে আমি তাদের মধ্যে নই। কুরায়শগণ ইসলাম গ্রহণে দেরী করতে লাগল, সুতরাং রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের জন্য এই বলে বদদু‘আ করলেন। “হে আল্লাহ্! আপনি তাদের উপর ইউসুফ (‘আ.)-এর মত সাত বছর (দুর্ভিক্ষ) দিয়ে আমাকে সাহায্য করুন।” তারপর তারা এমন ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে পতিত হলো যে, তারা তাতে ধ্বংস হয়ে গেল এবং মরা জন্তু ও তার হাড় খেতে বাধ্য হলো। তারা (দুর্ভিক্ষের কারণে) আকাশও পৃথিবীর মধ্যস্থলে ধোঁয়ার মত দেখতে পেল। তারপর আবূ সুফ্ইয়ান তাঁর কাছে এসে বলল, হে মুহাম্মাদ! তুমি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার আদেশ দিচ্ছ, অথচ তোমার গোত্রের লোকেরা এখন ধ্বংস হয়ে গেল। সুতরাং আমাদের (এ দুর্ভিক্ষ থেকে) বাঁচার জন্য দু‘আ কর। তখন তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ إِلَى قَوْلِهِ عَائِدُونَ “অতএব, তুমি অপেক্ষা কর সেদিনের, যেদিন স্পষ্ট ধূম্রাচ্ছন্ন হবে আকাশ….. তোমরা তো তোমাদের পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে।” অবশেষে দুর্ভিক্ষের অবসান ঘটল কিন্তু তারা কুফরীর দিকে ফিরে গেল। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা এদের ব্যাপারেই অবতীর্ণ করলেন, যেদিন আমি তোমাদের শক্তভাবে পাকড়াও করব। الْبَطْشَةَ এবং لِزَامًا দ্বারা বাদ্রের যুদ্ধ বোঝানো হয়েছে। আল্লাহ্ তা‘আলার বাণী ঃ আলিফ, লাম, মীম। রোমানরা পরাজিত হয়েছে। …..এবং পরাজয়ের পর শীঘ্রই বিজয়ী হবে। রোমানদের ঘটনা অতিক্রান্ত হয়েছে। [১০০৭] (আ.প্র. ৪৪১০, ই.ফা. ৪৪১২)

৬৫/৩০/২.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

{لَا تَبْدِيْلَ لِخَلْقِ اللهِ} لِدِيْنِ اللهِ {خُلُقُ الْأَوَّلِيْنَ} دِيْنُ الْأَوَّلِيْنَ وَالْفِطْرَةُ الإِسْلَامُ.

আল্লাহর সৃষ্টির কোনই পরিবর্তন নেই। (সূরাহ রূম ৩০/৩০)

خَلْقِ اللهِ (আল্লাহর সৃষ্টি) এর অর্থ-আল্লাহর দ্বীন। যেমন خُلُقُ الْأَوَّلِيْنَ অর্থাৎ دِيْنُ الْأَوَّلِيْنَ পূর্ববর্তীদের দ্বীন। فِطْرَةُ ইসলাম।

৬৫/৩১/১.অধ্যায়ঃ
‘‘আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শারীক কর না। নিশ্চয়ই শিরক তো মহাপাপ।’’ (সূরাহ লুক্বমান ৩১/১৩)

৪৭৭৬
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ {الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَلَمْ يَلْبِسُوْآ إِيْمَانَهُمْ بِظُلْمٍ} شَقَّ ذَلِكَ عَلَى أَصْحَابِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالُوْا أَيُّنَا لَمْ يَلْبِسْ إِيْمَانَهُ بِظُلْمٍ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّهُ لَيْسَ بِذَاكَ أَلَا تَسْمَعُ إِلَى قَوْلِ لُقْمَانَ لِابْنِهِ {إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيْمٌ}.

‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হল (আল্লাহ্‌র বাণী) ঃ যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে যুল্ম দ্বারা কলুষিত করেনি। এটি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহাবীদের উপর খুবই কঠিন মনে হল। তখন তাঁরা বললেন, আমাদের মধ্যে এমন কে আছে যে, তারা তাদের ঈমানকে যুল্ম দ্বারা কলুষিত করেনি? রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এ আয়াত দ্বারা এ অর্থ বুঝানো হয়নি। তোমরা কি লুকমানের কথা শুননি যা তিনি তাঁর পুত্রকে বলেছিলেন? إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ নিশ্চয় র্শিক হচ্ছে বড় যুল্ম। [৩২] (আ.প্র. ৪৪১২, ই.ফা. ৪৪১৪)

৬৫/৩১/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ নিশ্চয় আল্লাহরই কাছে রয়েছে ক্বিয়ামাত সম্বন্ধীয় জ্ঞান (অর্থাৎ কখন ঘটবে)। (সূরাহ লুক্বমান ৩১/৩৪)

৪৭৭৭
إِسْحَاقُ عَنْ جَرِيْرٍ عَنْ أَبِيْ حَيَّانَ عَنْ أَبِيْ زُرْعَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَوْمًا بَارِزًا لِلنَّاسِ إِذْ أَتَاهُ رَجُلٌ يَمْشِيْ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا الإِيْمَانُ قَالَ الإِيْمَانُ أَنْ تُؤْمِنَ بِاللهِ وَمَلَائِكَتِهِ وَكُتُبِهِ وَرُسُلِهِ وَلِقَائِهِ وَتُؤْمِنَ بِالْبَعْثِ الآخِرِ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا الإِسْلَامُ قَالَ الإِسْلَامُ أَنْ تَعْبُدَ اللهَ وَلَا تُشْرِكَ بِهِ شَيْئًا وَتُقِيْمَ الصَّلَاةَ وَتُؤْتِيَ الزَّكَاةَ الْمَفْرُوْضَةَ وَتَصُوْمَ رَمَضَانَ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا الإِحْسَانُ قَالَ الإِحْسَانُ أَنْ تَعْبُدiَ اللهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَتَى السَّاعَةُ قَالَ مَا الْمَسْئُوْلُ عَنْهَا بِأَعْلَمَ مِنْ السَّائِلِ وَلَكِنْ سَأُحَدِّثُكَ عَنْ أَشْرَاطِهَا إِذَا وَلَدَتْ الْمَرْأَةُ رَبَّتَهَا فَذَاكَ مِنْ أَشْرَاطِهَا وَإِذَا كَانَ الْحُفَاةُ الْعُرَاةُ رُءُوْسَ النَّاسِ فَذَاكَ مِنْ أَشْرَاطِهَا فِيْ خَمْسٍ لَا يَعْلَمُهُنَّ إِلَّا اللهُ {إِنَّ اللهَ عِنْدَه” عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنْزِلُ الْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الْأَرْحَامِ} ثُمَّ انْصَرَفَ الرَّجُلُ فَقَالَ رُدُّوْا عَلَيَّ فَأَخَذُوْا لِيَرُدُّوْا فَلَمْ يَرَوْا شَيْئًا فَقَالَ هَذَا جِبْرِيْلُ جَاءَ لِيُعَلِّمَ النَّاسَ دِيْنَهُمْ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদিন রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) লোকদের সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলেন। এক ব্যক্তি তাঁর নিকট এসে জিজ্ঞেস করল, ঈমান কী? তিনি বললেন, “আল্লাহতে ঈমান আনবে এবং তাঁর মালায়িকাহ, তাঁর নাবী-রসূলগণের প্রতি ঈমান আনবে এবং আল্লাহ্‌র দর্শন ও পুনরুত্থানের ওপর ঈমান আনবে।” লোকটি জিজ্ঞেস করল, ইসলাম কী? তিনি বললেন, ইসলাম (হল) আল্লাহ্‌র ‘ইবাদাত করবে ও তাঁর সঙ্গে অন্য কাউকে শরীক করবে না এবং সলাত কায়িম করবে, ফারয্ যাকাত দিবে ও রমাযানের সিয়াম পালন করবে। লোকটি জিজ্ঞেস করল, ইহ্সান কী? তিনি বললেন, ইহ্সান হচ্ছে আল্লাহ্‌র ‘ইবাদাত এমন নিষ্ঠার সঙ্গে করবে, যেন তুমি তাঁকে দেখছ। আর যদি তুমি তাঁকে দেখতে না পাও, তবে (জানবে) আল্লাহ্ তোমাকে দেখছেন। লোকটি আরও জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রসূল! কখন ক্বিয়ামাত ঘটবে? রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এ ব্যাপারে প্রশ্নকারীর চেয়ে যাকে প্রশ্ন করা হয়েছে, সে অধিক জানে না। তবে আমি তোমার কাছে এর কতগুলো নিদর্শন বলছি। তা হল, যখন দাসী তার মনিবকে জন্ম দিবে, এটা তার একটি নিদর্শন। আর যখন দেখবে, নগ্নপদ ও নগ্নদেহ বিশিষ্ট লোকেরা মানুষের নেতা হবে, এও তার একটি নিদর্শন। এটি ঐ পাঁচটি বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত, যা আল্লাহ্ ব্যতীত আর কেউ জানেন না ঃ (১) ক্বিয়ামাত সম্পর্কিত জ্ঞান কেবল আল্লাহর নিকটই রয়েছে। (২) তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন, (৩) তিনিই জানেন, মাতৃগর্ভে কী আছে। এরপরে সে লোকটি চলে গেল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তাঁকে আমার নিকট ফিরিয়ে আন। সহাবীগণ তাঁকে ফিরিয়ে আনতে গেলেন, কিন্তু কিছুই দেখতে পেলেন না। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তিনি হলেন জিব্রাঈল, লোকেদেরকে শিক্ষা দেয়ার জন্য এসেছিলেন। [৫০] (আ.প্র. ৪৪১৩, ই.ফা. ৪৪১৫)র

৪৭৭৮
يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ قَالَ حَدَّثَنِيْ عُمَرُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ زَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ أَبَاهُ حَدَّثَهُ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَفَاتِيْحُ الْغَيْبِ خَمْسٌ ثُمَّ قَرَأَ {إِنَّ اللهَ عِنْدَه” عِلْمُ السَّاعَةِ}.

‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, গায়বের চাবি পাঁচটি। এরপর তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন ঃ ক্বিয়ামাত সম্পর্কিত জ্ঞান কেবল আল্লাহ্ তা‘আলারই আছে। [১০৩৯] (আ.প্র. ৪৪১৪, ই.ফা. ৪৪১৬)

৬৫/৩২/১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ কেউই জানে না তাদের জন্য নয়ন জুড়ানো কী কী সামগ্রী লুকিয়ে রাখা হয়েছে …..? (সূরাহ আস্-সাজদাহ ৩২/১৭)

সূরাহ (৩২) : আস্-সাজদাহ

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, مَهِيْنٍ দুর্বল অর্থাৎ পুরুষের বীর্য। ضَلَلْنَا আমরা ধ্বংস হয়েছি। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, الْجُرُزُ ঐ মাটি যেখানে এত অল্প বৃষ্টি হয়, যাতে তা কোন উপকারে আসে না। نَهْدِ তাকে সঠিক পথ বলে দিয়েছি।

৪৭৭৯
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنِ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ قَالَ اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى أَعْدَدْتُ لِعِبَادِي الصَّالِحِيْنَ مَا لَا عَيْنٌ رَأَتْ وَلَا أُذُنٌ سَمِعَتْ وَلَا خَطَرَ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ قَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ اقْرَءُوْا إِنْ شِئْتُمْ {فَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَّآ أُخْفِيَ لَهُمْ مِّنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ}

و حَدَّثَنَا عَلِيٌّ قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ عَنِ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ اللهُ مِثْلَهُ قِيْلَ لِسُفْيَانَ رِوَايَةً قَالَ فَأَيُّ شَيْءٍ؟ قَالَ أَبُوْ مُعَاوِيَةَ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ قَرَأَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ قُرَّاتِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, আমি আমার নেক বান্দাদের জন্য এমন সব বস্তু বানিয়ে রেখেছি, যা কোন চোখ দেখেনি, কোন কান শোনেনি এবং কোন অন্তঃকরণ চিন্তা করেনি। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেছেন, তোমরা চাইলে এ আয়াত তিলাওয়াত কর ঃ “কেউ জানে না তাদের জন্য চোখ জুড়ানো কোন্ বিষয় লুকিয়ে রাখা হয়েছে” (আস্-সাজদাহ ৩২/১৭)। (আ.প্র. ৪৪১৫)

সুফ্ইয়ান (রহ.)…..আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, পরের অংশ আগের হাদীসের মত। আবূ সুফ্ইয়ান (রাঃ)-এর কাছে জিজ্ঞেস করা হল, আপনি কি এ হাদীস রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন? তিনি বললেন, তা ছাড়া আর কী?

আবূ মু‘আবীয়াহ (রহ.)…..আবূ সালিহ্ (রহ.) হতে বর্ণিত। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) قُرَاتِ “আলিফ” এবং লম্বা ‘তা’ সহ) পড়েছিলেন। [৩২৪৪] (ই.ফা. ৪৪১৭)

৪৭৮০
إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنِ الْأَعْمَشِ حَدَّثَنَا أَبُوْ صَالِحٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ اللهُ تَعَالَى أَعْدَدْتُ لِعِبَادِي الصَّالِحِيْنَ مَا لَا عَيْنٌ رَأَتْ وَلَا أُذُنٌ سَمِعَتْ وَلَا خَطَرَ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ ذُخْرًا بَلْهَ مَا أُطْلِعْتُمْ عَلَيْهِ ثُمَّ قَرَأَ {فَلَا تَعْلَمُ نَفْسٌ مَّآ أُخْفِيَ لَهُمْ مِّنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍجَزَآءًمبِمَا كَانُوْا يَعْمَلُوْنَ}.قَالَ أَبُو مُعَاوِيَةَ عَنْ الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ قَرَأَ أَبُو هُرَيْرَةَ قُرَّاتِ أَعْيُنٍ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, আমি আমার নেক বান্দাদের জন্য এমন সব বস্তুরাজি তৈরি করে রেখেছি, যা কোন চোখ দেখেনি, কোন কান শোনেনি এবং কোন ব্যক্তির মন কল্পনা করেনি। এসব ছাড়া যা কিছুই তোমরা দেখছ, তার কোন মূল্যই নেই। তারপর এ আয়াত পাঠ করলেন, কেউ জানে না তাদের জন্য নয়ন তৃপ্তিকর কী লুক্কায়িত রাখা হয়েছে, তাদের কৃতকর্মের পারিতোষিক হিসেবে। [৩২৪৪] (আ.প্র. ৪৪১৬, ই.ফা. ৪৪১৮)

৬৫/৩৩/১.অধ্যায়ঃ
নাবী মু’মিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা ঘনিষ্ঠতর এবং তার পত্নীগণ তাদের মাতা। (সূরা আহযাব ৩৩/৬)

সূরাহ (৩৩) : আহযাব

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {صَيَاصِيْهِمْ} قُصُوْرِهِمْ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, صَيَاصِيْهِمْ তাদের মহল।

৪৭৮১
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُلَيْحٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ عَنْ هِلَالِ بْنِ عَلِيٍّ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِيْ عَمْرَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا مِنْ مُؤْمِنٍ إِلَّا وَأَنَا أَوْلَى النَّاسِ بِهِ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ اقْرَءُوْا إِنْ شِئْتُمْ {النَّبِيُّ أَوْلٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ أَنْفُسِهِمْ} فَأَيُّمَا مُؤْمِنٍ تَرَكَ مَالًا فَلْيَرِثْهُ عَصَبَتُهُ مَنْ كَانُوْا فَإِنْ تَرَكَ دَيْنًا أَوْ ضَيَاعًا فَلْيَأْتِنِيْ فَأَنَا مَوْلَاهُ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, দুনিয়া ও আখিরাতে সকল মানুষের চেয়ে মু’মিনের জন্য আমিই ঘনিষ্ঠতম। তোমরা ইচ্ছা করলে এ আয়াত পাঠ করতে পার “নাবী মু’মিনদের নিকট তাদের নিজেদের চেয়ে অধিক ঘনিষ্ঠ।” সুতরাং কোন মু’মিন কোন ধন-সম্পদ রেখে গেলে তার নিকটআত্মীয় সে যে-ই হোক, তার উত্তরাধিকারী হবে, আর যদি ঋণ অথবা অসহায় সন্তানাদি রেখে যায় সে যেন আমার কাছে আসে, আমি তার অভিভাবক। [২২৯৮] (আ.প্র. ৪৪১৭, ই.ফা. ৪৪১৯)

৬৫/৩৩/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ তোমরা তাদেরকে ডাক তাদের প্রকৃত পিতৃ পরিচয়ে। (সূরাহ আহযাব ৩৩/৫)

৪৭৮২
مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ الْمُخْتَارِ حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ عُقْبَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ سَالِمٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ زَيْدَ بْنَ حَارِثَةَ مَوْلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا كُنَّا نَدْعُوْهُ إِلَّا زَيْدَ بْنَ مُحَمَّدٍ حَتَّى نَزَلَ الْقُرْآنُ {اُدْعُوْهُمْ لِاٰبَائِهِمْ هُوَ أَقْسَطُ عِنْدَ اللهِ}.

‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর আযাদকৃত গোলাম যায়দ ইব্‌নু হারিসাহ্কে আমরা “যায়দ ইব্‌নু মুহাম্মদ-ই” ডাকতাম, যে পর্যন্ত না এ আয়াত নাযিল হয়। তোমরা তাদের পিতৃপরিচয়ে ডাক, আল্লাহ্‌র দৃষ্টিতে এটিই অধিক ন্যায়সঙ্গত। [মুসলিম ৪৪/১০, হাঃ ২৪২৫, আহমাদ ৫৪৮০] (আ.প্র. ৪৪১৮, ই.ফা. ৪৪২০)

৬৫/৩৩/৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ মু’মিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সঙ্গে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। তাদের কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষা করছে। তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেনি। (সূরাহ আহযাব ৩৩/২৩)

{نَحْبَه”} عَهْدَهُ {أَقْطَارِهَا} جَوَانِبُهَا الْفِتْنَةَ لآَتَوْهَا لَأَعْطَوْهَا.

نَحْبَه তার অঙ্গীকার। أَقْطَارِهَا তার পার্শ্বসমূহ। الْفِتْنَةَ لَاٰتَوْهَا তারা তা গ্রহণ করত।

৪৭৮৩
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيُّ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَبِيْ عَنْ ثُمَامَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ نُرَى هَذِهِ الْآيَةَ نَزَلَتْ فِيْ أَنَسِ بْنِ النَّضْرِ {مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ رِجَالٌ صَدَقُوْا مَا عَاهَدُوا اللهَ عَلَيْهِ}.

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা মনে করি, এ আয়াত আনাস ইব্‌নু নায্র সম্পর্কে নাযিল হয়েছে ঃ “মু’মিনদের মধ্যে কতক আল্লাহ্‌র সঙ্গে তাদের কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে।” [২৮০৫] (আ.প্র. ৪৪১৯, ই.ফা. ৪৪২১)

৪৭৮৪
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ خَارِجَةُ بْنُ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ أَنَّ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ قَالَ لَمَّا نَسَخْنَا الصُّحُفَ فِي الْمَصَاحِفِ فَقَدْتُ آيَةً مِنْ سُوْرَةِ الْأَحْزَابِ كُنْتُ كَثِيْرًا أَسْمَعُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقْرَؤُهَا لَمْ أَجِدْهَا مَعَ أَحَدٍ إِلَّا مَعَ خُزَيْمَةَ الْأَنْصَارِيِّ الَّذِيْ جَعَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم شَهَادَتَهُ شَهَادَةَ رَجُلَيْنِ {مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ رِجَالٌ صَدَقُوْا مَا عَاهَدُوا اللهَ عَلَيْهِ}.

যায়দ ইব্‌নু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা যখন সহীফা থেকে কুরআন লিপিবদ্ধ করছিলাম তখন সূরাহ আহযাবের একটি আয়াত পেলাম না, যা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে তিলাওয়াত করতে শুনেছি। শেষে সেটি খুযায়মা আনসারী ছাড়া অন্য কারও কাছে পেলাম না; যার সাক্ষ্য রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দু’জন পুরুষ সাক্ষীর সমান গণ্য করেছেন। (আয়াতটি হল) مِنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللهَ عَلَيْهِ [২৮০৭] (আ.প্র. ৪৪২০, ই.ফা. ৪৪২২)

৬৫/৩৩/৪.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

{يٰٓأَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِّأَزْوَاجِكَ إِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ الْحَيٰوةَ الدُّنْيَا وَزِيْنَتَهَا فَتَعَالَيْنَ أُمَتِّعْكُنَّ وَأُسَرِّحْكُنَّ سَرَاحًا جَمِيْلًا}

‘‘হে নাবী! আপনার পত্নীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার বিলাসিতা কামনা কর, তবে এসো, আমি তোমাদের ভোগের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদেরকে বিদায় দেই।’’ (সূরাহ আহযাব ৩৩/২৮)

وَقَالَ مَعْمَرٌ {التَّبَرُّجُ} أَنْ تُخْرِجَ مَحَاسِنَهَا {سُنَّةَاللهِ} اسْتَنَّهَا جَعَلَهَا.

التَّبَرُّجُ আপন সৌন্দর্য প্রকাশ করা। سُنَّةَ اللهِ যে নীতি আল্লাহ্ নির্ধারণ করেছেন।

৪৭৮৫
দুঃখিত! আরবী অংশ এখনো সংযুক্ত করা হয়নি।

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর কাছে এলেন, যখন আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর সহধর্মিণীগণকে দু’টি পন্থার মধ্যে একটি পন্থা বেছে নেয়ার নির্দেশ দিলেন, তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সর্বপ্রথম আমা হতে শুরু করলেন এবং বললেন, আমি তোমার কাছে একটি কথা উল্লেখ করছি। তাড়াহুড়ো না করে তোমার পিতা-মাতার সঙ্গে পরামর্শ করে উত্তর দেবে। তিনি এ কথা ভালভাবেই জানতেন যে, আমার আব্বা-আম্মা তাঁর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে আমাকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরামর্শ কখনও দিবেন না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তিনি [রসূলূল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)] বললেন, আল্লাহ্ বলছেন, “হে নাবী! আপনি আপনার স্ত্রীদের বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার ভূষণ কামনা কর…..। তখন আমি তাঁকে বললাম, এ ব্যাপারে আমার আব্বা-আম্মা থেকে পরামর্শ নেবার কী আছে? আমি তো আল্লাহ্ তাঁর রসূল এবং আখিরাতের জীবনই কামনা করি। [৪৭৮৬; মুসলিম ১৮/৪, হাঃ ১৪৭৫] (আ.প্র. ৪৪২১, ই.ফা. ৪৪২৩)


[১] খায়বারের যুদ্ধের পর রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ তাদের ভরণ-পোষণে অর্থ বৃদ্ধির অনুরোধ জানান। এ বিষয়ের প্রতি এখানে ইঙ্গিত করা হয়েছে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৫/৩৩/৫.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ

{وَإِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ اللهَ وَرَسُوْلَه” وَالدَّارَ الْاٰخِرَةَ فَإِنَّ اللهَ أَعَدَّ لِلْمُحْسِنٰتِ مِنْكُنَّ أَجْرًا عَظِيْمًا}

পক্ষান্তরে যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রসূল ও পরকাল কামনা কর, তবে তোমাদের সৎকর্মপরায়ণদের জন্য আল্লাহ মহা পুরস্কার প্রস্তুত করে রেখেছেন। (সূরাহ আহযাব ৩৩/২৯)

وَقَالَ قَتَادَةُ {وَاذْكُرْنَ مَا يُتْلٰى فِيْ بُيُوْتِكُنَّ مِنْ اٰيٰتِ اللهِ وَالْحِكْمَةِ} الْقُرْآنِ وَالْحِكْمَةُ السُّنَّةُ.

ক্বাতাদাহ (রাঃ) বলেন, وَاذْكُرْنَ مَا يُتْلٰى فِيْ بُيُوْتِكُنَّ مِنْاٰيٰتِ اللهِ وَالْحِكْمَةِ এর মধ্যে اٰيٰتِ দ্বারা কুরআন, সুন্নাত এবং হিকমত বোঝানো হয়েছে।

৪৭৮৬
وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِيْ يُوْنُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ لَمَّا أُمِرَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِتَخْيِيْرِ أَزْوَاجِهِ بَدَأَ بِيْ فَقَالَ إِنِّيْ ذَاكِرٌ لَكِ أَمْرًا فَلَا عَلَيْكِ أَنْ لَا تَعْجَلِيْ حَتَّى تَسْتَأْمِرِيْ أَبَوَيْكِ قَالَتْ وَقَدْ عَلِمَ أَنَّ أَبَوَيَّ لَمْ يَكُوْنَا يَأْمُرَانِيْ بِفِرَاقِهِ قَالَتْ ثُمَّ قَالَ إِنَّ اللهَ جَلَّ ثَنَاؤُهُ قَالَ {وَإِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ اللهَ وَرَسُوْلَه” وَالدَّارَ الْاٰخِرَةَ فَإِنَّ اللهَ أَعَدَّ لِلْمُحْسِنٰتِ مِنْكُنَّ أَجْرًا عَظِيْمًا} قَالَتْ فَقُلْتُ فَفِيْ أَيِّ هَذَا أَسْتَأْمِرُ أَبَوَيَّ فَإِنِّيْ أُرِيْدُ اللهَ وَرَسُوْلَهُ وَالدَّارَ الآخِرَةَ قَالَتْ ثُمَّ فَعَلَ أَزْوَاجُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَ مَا فَعَلْتُ تَابَعَهُ مُوْسَى بْنُ أَعْيَنَ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبُوْ سَلَمَةَ وَقَالَ عَبْدُ الرَّزَّاقِ وَأَبُوْ سُفْيَانَ الْمَعْمَرِيُّ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ

লায়স (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, যখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে তাঁর সহধর্মিণীদের ব্যাপারে দু’টি পন্থার একটি পন্থা বেছে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হল, তখন তিনি প্রথমে আমাকে বললেন, তোমাকে একটি বিষয় সম্পর্কে বলব। তাড়াহুড়ো না করে তুমি তোমার আব্বা ও আম্মার সঙ্গে পরামর্শ করে নিবে। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, তিনি অবশ্যই জানতেন, আমার আব্বা-আম্মা তাঁর থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা বলবেন না। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এরপর তিনি বললেন, আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেনঃ يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ قُلْ لِأَزْوَاجِكَ إِنْ كُنْتُنَّ تُرِدْنَ الْحَيَاةَ الدُّنْيَا وَزِينَتَهَا إِلَى أَجْرًا عَظِيمًا “হে নাবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার ভূষণ কামনা কর…..মহা প্রতিদান পর্যন্ত। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এ ব্যাপারে আমার আব্বা-আম্মার সঙ্গে পরামর্শের কী আছে? আমি তো আল্লাহ্, তাঁর রসূল এবং আখিরাতের জীবন কামনা করি। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন ঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর অন্যান্য সহধর্মিণী আমার মতই জবাব দিলেন। [৪৭৮৫] (আ.প্র. অনুচ্ছেদ. ই.ফা. অনুচ্ছেদ)

৬৫/৩৩/৬.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ

{وَتُخْفِيْ فِيْ نَفْسِكَ مَا اللهُ مُبْدِيْهِ وَتَخْشَى النَّاسَ وَاللهُ أَحَقُّ أَنْ تَخْشَاهُ}

আপনি আপনার অন্তরে এমন বিষয় গোপন করছিলেন, যা আল্লাহ তা‘আলা প্রকাশ করে দিবেন। আর আপনি লোক নিন্দার ভয় করছিলেন, অথচ আল্লাহ্কেই ভয় করা আপনার পক্ষে অধিকতর উচিত ছিল…..। (সূরাহ আহযাব ৩৩/৩৭)

৪৭৮৭
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحِيْمِ حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ مَنْصُوْرٍ عَنْ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ حَدَّثَنَا ثَابِتٌ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ هَذِهِ الْآيَةَ {وَتُخْفِيْ فِيْ نَفْسِكَ مَا اللهُ مُبْدِيْهِ} نَزَلَتْ فِيْ شَأْنِ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ وَزَيْدِ بْنِ حَارِثَةَ.

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এ আয়াতটি, “(তুমি তোমার অন্তরে যা গোপন করছ, আল্লাহ্ তা প্রকাশ করে দিচ্ছেন।)” যায়নাব বিনতে জাহ্শ এবং যায়দ ইব্‌নু হারিসাহ্ সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। [৭৪২০] (আ.প্র. ৪৪২২, ই.ফা. ৪৪২৪)

৬৫/৩৩/৭.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ

৪৭৮৯
حِبَّانُ بْنُ مُوْسَى أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا عَاصِمٌ الْأَحْوَلُ عَنْ مُعَاذَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَسْتَأْذِنُ فِيْ يَوْمِ الْمَرْأَةِ مِنَّا بَعْدَ أَنْ أُنْزِلَتْ هَذِهِ الْآيَةُ {تُرْجِئُ مَنْ تَشَآءُ مِنْهُنَّ وَتُؤْوِيْٓ إِلَيْكَ مَنْ تَشَآءُ وَمَنِ ابْتَغَيْتَ مِمَّنْ عَزَلْتَ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكَ} فَقُلْتُ لَهَا مَا كُنْتِ تَقُوْلِيْنَ قَالَتْ كُنْتُ أَقُوْلُ لَهُ إِنْ كَانَ ذَاكَ إِلَيَّ فَإِنِّيْ لَا أُرِيْدُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَنْ أُوْثِرَ عَلَيْكَ أَحَدًا تَابَعَهُ عَبَّادُ بْنُ عَبَّادٍ سَمِعَ عَاصِمًا.

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) স্ত্রীদের সঙ্গে অবস্থানের পালার ব্যাপারে আমাদের থেকে অনুমতি চাইতেন এ আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পরও, আপনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা আপনার নিকট হতে দূরে রাখতে পারেন এবং যাকে ইচ্ছা আপনার নিকট স্থান দিতে পারেন এবং আপনি যাকে দূরে রেখেছেন তাকে কামনা করলে আপনার কোন অপরাধ নেই। এ আয়াতটি নাযিল হওয়ার পর মু‘আয বলেন, আমি ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি এর উত্তরে কী বলতেন? তিনি বললেন, আমি তাঁকে বলতাম, এ বিষয়ের অধিকার যদি আমার থেকে থাকে তাহলে হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি আপনার ব্যাপারে অন্য কাউকে অগ্রাধিকার দিতে চাই না। ‘আব্বাদ বিন আব্বাদ ‘আসেম থেকে এরূপ শুনেছেন। [মুসলিম ১৮/৪, হাঃ ১৪৭৬] (আ.প্র. ৪৪২৪, ই.ফা. ৪৪২৬)

৬৫/৩৩/৮.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ

হে মু’মিনগণ! তোমরা খাওয়ার জন্য খাবার প্রস্তুতির অপেক্ষা না করে নাবীর ঘরে তোমাদেরকে অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত প্রবেশ করবে না; তবে তোমাদেরকে ডাকা হলে তোমরা প্রবেশ করবে এবং খাওয়া শেষ হলে নিজেরাই চলে যাবে, কথাবার্তায় মাশগুল হয়ে পড়বে না। তোমাদের এ আচরণ অবশ্যই নাবীকে পীড়া দেয়। তিনি তোমাদেরকে উঠিয়ে দিতে সংকোচ বোধ করেন। কিন্তু আল্লাহ সত্য বলতে সংকোচবোধ করেন না। তোমরা যখন তাঁর পত্নীদের নিকট হতে কোন কিছু চাইবে, তখন পর্দার অন্তরাল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্র উপায়। আল্লাহর রসূলকে কষ্ট দেয়া এবং তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর পত্নীদেরকে বিবাহ করা তোমাদের কারও পক্ষে কখনও বৈধ নয়। এটা আল্লাহর কাছে সাংঘাতিক অপরাধ। (সূরাহ আহযাব ৩৩/৫৩)

يُقَالُ {إِنَاهُ} إِدْرَاكُهُ أَنَى يَأْنِيْ أَنَاةً فَهُوَ آنٍ {لَعَلَّ السَّاعَةَ تَكُوْنُ قَرِيْبًا} إِذَا وَصَفْتَ صِفَةَ الْمُؤَنَّثِ قُلْتَ قَرِيْبَةً وَإِذَا جَعَلْتَهُ ظَرْفًا وَبَدَلًا وَلَمْ تُرِدْ الصِّفَةَ نَزَعْتَ الْهَاءَ مِنَ الْمُؤَنَّثِ وَكَذَلِكَ لَفْظُهَا فِي الْوَاحِدِ وَالِاثْنَيْنِ وَالْجَمِيْعِ لِلذَّكَرِ وَالْأُنْثَى.

বলা হয় إِنَاهُ খাদ্য পরিপাক হওয়া। এটা أَنَى يَأْنِيْ أَنَاةًথেকে গঠিত। لَعَلَّ السَّاعَةَ تَكُوْنُ قَرِيْبًا সম্ভবত ক্বিয়ামাত অতি নিকটবর্তী। যদি তুমি স্ত্রী লিঙ্গ হিসেবে ব্যবহার কর, তবে قَرِيْبَةً বলবে। আর যদি الصِّفَةَ না ধর ظَرْفًا বা بَدَلًا হিসেবে ব্যবহার কর তবে ‘তা’ নিয়ে যুক্ত করবে না। তেমনি এ শব্দটি একবচন, দ্বি-বচন, বহুবচন এবং নারী-পুরুষ সকল ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়।

৪৭৯০
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ حُمَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ عُمَرُ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ يَدْخُلُ عَلَيْكَ الْبَرُّ وَالْفَاجِرُ فَلَوْ أَمَرْتَ أُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِيْنَ بِالْحِجَابِ فَأَنْزَلَ اللهُ آيَةَ الْحِجَابِ.

‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বললাম, আপনার কাছে ভাল ও মন্দ লোক আসে। আপনি যদি উম্মাহাতুল মু’মিনীদের ব্যাপারে পর্দার নির্দেশ দিতেন। তারপর আল্লাহ্ তা‘আলা পর্দার আয়াত অবতীর্ণ করলেন। [৪০২] (আ.প্র. ৪৪২৫, ই.ফা. ৪৪২৭)

৪৭৯১
مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الرَّقَاشِيُّ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ قَالَ سَمِعْتُ أَبِيْ يَقُوْلُ حَدَّثَنَا أَبُوْ مِجْلَزٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا تَزَوَّجَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم زَيْنَبَ بِنْتَ جَحْشٍ دَعَا الْقَوْمَ فَطَعِمُوْا ثُمَّ جَلَسُوْا يَتَحَدَّثُوْنَ وَإِذَا هُوَ كَأَنَّهُ يَتَهَيَّأُ لِلْقِيَامِ فَلَمْ يَقُوْمُوْا فَلَمَّا رَأَى ذَلِكَ قَامَ فَلَمَّا قَامَ قَامَ مَنْ قَامَ وَقَعَدَ ثَلَاثَةُ نَفَرٍ فَجَاءَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِيَدْخُلَ فَإِذَا الْقَوْمُ جُلُوْسٌ ثُمَّ إِنَّهُمْ قَامُوْا فَانْطَلَقْتُ فَجِئْتُ فَأَخْبَرْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُمْ قَدْ انْطَلَقُوْا فَجَاءَ حَتَّى دَخَلَ فَذَهَبْتُ أَدْخُلُ فَأَلْقَى الْحِجَابَ بَيْنِيْ وَبَيْنَهُ فَأَنْزَلَ اللهُ {يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَدْخُلُوْا بُيُوْتَ النَّبِيِّ}الْآيَةَ

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

বর্ণিত। তিনি বলেন, যয়নাব বিন্ত জাহশ্কে যখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিয়ে করেন, তখন তিনি লোকদের দাওয়াত করলেন। লোকেরা আহারের পর বসে কথাবার্তা বলতে লাগল। তিনি উঠে যেতে চাচ্ছিলেন, কিন্তু লোকেরা উঠছিল না। এ অবস্থা দেখে তিনি উঠে দাঁড়ালেন। তিনি উঠে যাওয়ার পর যারা উঠবার তারা উঠল। কিন্তু তিন ব্যক্তি বসেই থাকল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘরে প্রবেশের জন্য ফিরে এসে দেখেন, তারা তখনও বসে রয়েছে। অতঃপর তারাও উঠে গেল। আমি গিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে তাদের চলে যাওয়ার সংবাদ দিলাম। তারপর তিনি এসে প্রবেশ করলেন। এরপরও আমি প্রবেশ করতে চাইলে তিনি আমার ও তার মাঝে পর্দা ঝুলিয়ে দিলেন। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করেন ঃ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَدْخُلُوا بُيُوتَ النَّبِيِّ “হে মু’মিনগণ! তোমরা নাবীর গৃহে প্রবেশ করো না…..শেষ পর্যন্ত। [৪৭৯২, ৪৭৯৩, ৪৭৯৪, ৫১৫৪, ৫১৬৩, ৫১৬৬, ৫১৬৮, ৫১৭০, ৫১৭১, ৫৪৬৬, ৬২৩৮, ৬২৩৯, ৬২৭১, ৭৪২১; মুসলিম ১৬/১৪, হাঃ ১৪২৮, আহমাদ ১৩৪৭৮] (আ.প্র. ৪৪২৬, ই.ফা. ৪৪২৮)

৪৭৯২
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ أَبِيْ قِلَابَةَ قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ أَنَا أَعْلَمُ النَّاسِ بِهَذِهِ الْآيَةِ آيَةِ الْحِجَابِ لَمَّا أُهْدِيَتْ زَيْنَبُ بِنْتُ جَحْشٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَتْ مَعَهُ فِي الْبَيْتِ صَنَعَ طَعَامًا وَدَعَا الْقَوْمَ فَقَعَدُوْا يَتَحَدَّثُوْنَ فَجَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَخْرُجُ ثُمَّ يَرْجِعُ وَهُمْ قُعُوْدٌ يَتَحَدَّثُوْنَ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَىيٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَدْخُلُوْا بُيُوْتَ النَّبِيِّ إِلَّآ أَنْ يُّؤْذَنَ لَكُمْ إِلٰى طَعَامٍ غَيْرَ نٰظِرِيْنَ إِنٰهُ} إِلَى قَوْلِهِ {مِنْ وَّرَآءِ حِجَابٍ} فَضُرِبَ الْحِجَابُ وَقَامَ الْقَوْمُ.

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি পর্দার আয়াত সম্বন্ধে লোকদের চেয়ে অধিক জানি। যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর নিকট যাইনাবকে বাসর যাপনের জন্য পাঠানো হয় এবং তিনি তাঁর ঘরে তাঁর সঙ্গে অবস্থান করেন, তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খাবার তৈরি করে লোকদের দাওয়াত করলেন। তারা (খাওযার পর) বসে কথাবার্তা বলতে লাগল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বাইরে গিয়ে আবার ঘরে ফিরে এলেন, তখনও তারা বসে কথাবার্তা বলছিল। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করেন, “হে মু’মিনগণ! তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া না হলে তোমরা আহার্য প্রস্তুতির জন্য অপেক্ষা না করে আহারের জন্য নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গৃহে প্রবেশ করবে না।”…..পর্দার আড়াল থেকে’ পর্যন্ত। এরপর পর্দার বিধান কার্যকর হল এবং লোকেরা নিস্ক্রান্ত হল। [৪৭৯১] (আ.প্র. ৪৪২৭, ই.ফা. ৪৪২৯)

৪৭৯৩
أَبُوْ مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ صُهَيْبٍ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ بُنِيَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِزَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ بِخُبْزٍ وَلَحْمٍ فَأُرْسِلْتُ عَلَى الطَّعَامِ دَاعِيًا فَيَجِيْءُ قَوْمٌ فَيَأْكُلُوْنَ وَيَخْرُجُوْنَ ثُمَّ يَجِيْءُ قَوْمٌ فَيَأْكُلُوْنَ وَيَخْرُجُوْنَ فَدَعَوْتُ حَتَّى مَا أَجِدُ أَحَدًا أَدْعُوْ فَقُلْتُ يَا نَبِيَّ اللهِ مَا أَجِدُ أَحَدًا أَدْعُوْهُ قَالَ ارْفَعُوْا طَعَامَكُمْ وَبَقِيَ ثَلَاثَةُ رَهْطٍ يَتَحَدَّثُوْنَ فِي الْبَيْتِ فَخَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَانْطَلَقَ إِلَى حُجْرَةِ عَائِشَةَ فَقَالَ السَّلَامُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الْبَيْتِ وَرَحْمَةُ اللهِ فَقَالَتْ وَعَلَيْكَ السَّلَامُ وَرَحْمَةُ اللهِ كَيْفَ وَجَدْتَ أَهْلَكَ بَارَكَ اللهُ لَكَ فَتَقَرَّى حُجَرَ نِسَائِهِ كُلِّهِنَّ يَقُوْلُ لَهُنَّ كَمَا يَقُوْلُ لِعَائِشَةَ وَيَقُلْنَ لَهُ كَمَا قَالَتْ عَائِشَةُ ثُمَّ رَجَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَإِذَا ثَلَاثَةٌ مِنْ رَهْطٍ فِي الْبَيْتِ يَتَحَدَّثُوْنَ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم شَدِيْدَ الْحَيَاءِ فَخَرَجَ مُنْطَلِقًا نَحْوَ حُجْرَةِ عَائِشَةَ فَمَا أَدْرِيْ آخْبَرْتُهُ أَوْ أُخْبِرَ أَنَّ الْقَوْمَ خَرَجُوْا فَرَجَعَ حَتَّى إِذَا وَضَعَ رِجْلَهُ فِيْ أُسْكُفَّةِ الْبَابِ دَاخِلَةً وَأُخْرَى خَارِجَةً أَرْخَى السِّتْرَ بَيْنِيْ وَبَيْنَهُ وَأُنْزِلَتْ آيَةُ الْحِجَابِ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যায়নাব বিনতে জাহশের সাথে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর বাসর যাপন উপলক্ষে কিছু গোশত ও রুটির ব্যবস্থা করা হল। তারপর খানা খাওয়ানোর জন্য আমাকে লোকদের ডেকে আনতে পাঠালেন। একদল লোক এসে খেয়ে চলে গেল। তারপর আর একদল এসে খেয়ে চলে গেল। এরপর আবার আমি ডাকতে গেলাম, কিন্তু কাউকে আর ডেকে পেলাম না। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আর কাউকে ডেকে পাচ্ছি না। তিনি বললেন, খানা উঠিয়ে নাও। তখন তিন ব্যক্তি ঘরে রয়ে গেল, তারা কথাবার্তা বলছিল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বের হয়ে ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর ঘরের দিকে গেলেন এবং বললেন, আস্সালামু ‘আলায়কুম ইয়া আহলাল বায়ত ওয়া রহমাতুল্লাহ্! ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, ওয়া আলায়কাস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ্। আল্লাহ্ আপনাকে বারাকাত দিন, আপনার স্ত্রীকে কেমন পেলেন? এভাবে তিনি পর্যায়ক্রমে সব স্ত্রীর ঘরে গেলেন এবং ‘আয়িশাহ্কে যেমন বলেছিলেন তাদেরও তেমনি বললেন। আর তাঁরা তাঁকে সে জবাবই দিয়েছিলেন, যেমন ‘আয়িশাহ (রাঃ) দিয়েছিলেন। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ফিরে এসে সে তিন ব্যক্তিকেই ঘরে কথাবার্তা বলতে দেখতে পেলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খুব লাজুক ছিলেন। (লজ্জা পেয়ে) আবার ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর ঘরের দিকে গেলেন। তখন, আমি স্মরণ করতে পারছি না, অন্য কেউ না আমি তঁ াকে লোকদের বের হয়ে যাওয়ার খবর দিলাম। তিনি ফিরে এসে দরজার চৌকাঠের ভিতরে এক পা ও বাইরে এক পা রেখে আমার ও তাঁর মধ্যে পর্দা ঝুলিয়ে দিলেন এবং আল্লাহ্ তা‘আলা পর্দার আয়াত অবতীর্ণ করলেন। [৪৭৯১] (আ.প্র. ৪৪২৮, ই.ফা. ৪৪৩০)

৪৭৯৪
إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُوْرٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ بَكْرٍ السَّهْمِيُّ حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أَوْلَمَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِيْنَ بَنَى بِزَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ فَأَشْبَعَ النَّاسَ خُبْزًا وَلَحْمًا ثُمَّ خَرَجَ إِلَى حُجَرِ أُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِيْنَ كَمَا كَانَ يَصْنَعُ صَبِيْحَةَ بِنَائِهِ فَيُسَلِّمُ عَلَيْهِنَّ وَيُسَلِّمْنَ عَلَيْهِ وَيَدْعُوْ لَهُنَّ وَيَدْعُوْنَ لَهُ فَلَمَّا رَجَعَ إِلَى بَيْتِهِ رَأَى رَجُلَيْنِ جَرَى بِهِمَا الْحَدِيْثُ فَلَمَّا رَآهُمَا رَجَعَ عَنْ بَيْتِهِ فَلَمَّا رَأَى الرَّجُلَانِ نَبِيَّ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَجَعَ عَنْ بَيْتِهِ وَثَبَا مُسْرِعَيْنِ فَمَا أَدْرِيْ أَنَا أَخْبَرْتُهُ بِخُرُوْجِهِمَا أَمْ أُخْبِرَ فَرَجَعَ حَتَّى دَخَلَ الْبَيْتَ وَأَرْخَى السِّتْرَ بَيْنِيْ وَبَيْنَهُ وَأُنْزِلَتْ آيَةُ الْحِجَابِ وَقَالَ ابْنُ أَبِيْ مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا يَحْيَى حَدَّثَنِيْ حُمَيْدٌ سَمِعَ أَنَسًا عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

আনাস্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যয়নাব বিন্ত জাহশের সঙ্গে বাসর উদ্যাপনের সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ওয়ালীমা করলেন। লোকদের তিনি গোশ্ত-রুটি তৃপ্তি সহকারে খাওয়ালেন। তারপর তিনি উম্মুল মু’মিনীনদের কক্ষে যাওয়ার জন্য বের হলেন। যেমন বাসর রাত্রির ভোরে তার অভ্যাস ছিল যে, তিনি তাঁদের সালাম দিতেন ও তাঁদের জন্য দু‘আ করতেন এবং তাঁরাও তাঁকে সালাম করতেন, তাঁর জন্য দু‘আ করতেন। তারপর ঘরে ফিরে এসে দু’ব্যক্তিকে কথাবার্তায় রত দেখতে পেলেন। তাদের দেখে তিনি ঘর থেকে ফিরে চলে গেলেন। সে দু’জন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে ঘর থেকে ফিরে যেতে দেখে জলদি বের হয়ে গেল। এরপরে, আমার মনে নেই যে আমি তাঁকে তাদের বের হয়ে যাওয়ার খবর দিলাম, না অন্য কেউ দিল। তখন তিনি ফিরে এসে ঘরে প্রবেশ করলেন এবং আমার ও তাঁর মধ্যে পর্দা লটকিয়ে দিলেন এবং পর্দার আয়াত নাযিল হল। [৪৭৯১] (আ.প্র. ৪৪২৯, ই.ফা. ৪৪৩১)

৪৭৯৫
زَكَرِيَّاءُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ خَرَجَتْ سَوْدَةُ بَعْدَمَا ضُرِبَ الْحِجَابُ لِحَاجَتِهَا وَكَانَتْ امْرَأَةً جَسِيْمَةً لَا تَخْفَى عَلَى مَنْ يَعْرِفُهَا فَرَآهَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَقَالَ يَا سَوْدَةُ أَمَا وَاللهِ مَا تَخْفَيْنَ عَلَيْنَا فَانْظُرِيْ كَيْفَ تَخْرُجِيْنَ قَالَتْ فَانْكَفَأَتْ رَاجِعَةً وَرَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ بَيْتِيْ وَإِنَّهُ لَيَتَعَشَّى وَفِيْ يَدِهِ عَرْقٌ فَدَخَلَتْ فَقَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّيْ خَرَجْتُ لِبَعْضِ حَاجَتِيْ فَقَالَ لِيْ عُمَرُ كَذَا وَكَذَا قَالَتْ فَأَوْحَى اللهُ إِلَيْهِ ثُمَّ رُفِعَ عَنْهُ وَإِنَّ الْعَرْقَ فِيْ يَدِهِ مَا وَضَعَهُ فَقَالَ إِنَّهُ قَدْ أُذِنَ لَكُنَّ أَنْ تَخْرُجْنَ لِحَاجَتِكُنَّ.

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, পর্দার বিধান নাযিল হওয়ার পর সাওদাহ প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বাইরে গেলেন। সাওদাহ এমন স্থূল শরীরের অধিকারিণী ছিলেন যে, পরিচিত লোকদের থেকে তিনি নিজেকে গোপন রাখতে পারতেন না। ‘উমার ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ) তাঁকে দেখে বললেন, হে সাওদাহ! জেনে রাখ, আল্লাহ্‌র কসম! আমাদের নযর থেকে গোপন থাকতে পারবে না। এখন দেখ তো, কীভাবে বাইরে যাবে? ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, সাওদাহ (রাঃ) ফিরে আসলেন। আর এ সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার ঘরে রাতের খানা খাচ্ছিলেন। তাঁর হাতে ছিল টুকরা হাড়। সাওদাহ (রাঃ) ঘরে প্রবেশ করে বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বাইরে গিয়েছিলাম। তখন ‘উমার (রাঃ) আমাকে এমন এমন কথা বলেছে। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, এ সময় আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর নিকট ওয়াহী অবতীর্ণ করেন। ওয়াহী অবতীর্ণ হওয়া শেষ হল, হাড় টুকরা তখনও তাঁর হাতেই ছিল, তিনি তা রেখে দেননি। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, অবশ্য দরকার হলে তোমাদেরকে বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। [১৪৬; মুসলিম ৩৯/৭, হাঃ ২১৭০, আহমাদ ২৪৩৪৪] (আ.প্র. ৪৪৩০, ই.ফা. ৪৪৩২)

৬৫/৩৩/৯.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ

যদি তোমরা কোন বিষয় প্রকাশ কর কিংবা তা গোপন রাখ, তবে তো আল্লাহ প্রত্যেক বিষয়ে সবিশেষ অবগত আছেন। নাবী-পত্নীদের জন্য কোন গুনাহ নেই তাদের নিজ নিজ পিতা, পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগিনীপুত্র, স্বধর্মাবলম্বিনী নারী এবং স্বীয় অধিকারভুক্ত দাসদাসীদের সামনে পর্দা পালন না করায়। হে নাবী-পত্নীগণ! তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয় প্রত্যক্ষ করেন।

৪৭৯৬
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنِيْ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ اسْتَأْذَنَ عَلَيَّ أَفْلَحُ أَخُوْ أَبِي الْقُعَيْسِ بَعْدَمَا أُنْزِلَ الْحِجَابُ فَقُلْتُ لَا آذَنُ لَهُ حَتَّى أَسْتَأْذِنَ فِيْهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَإِنَّ أَخَاهُ أَبَا الْقُعَيْسِ لَيْسَ هُوَ أَرْضَعَنِيْ وَلَكِنْ أَرْضَعَتْنِي امْرَأَةُ أَبِي الْقُعَيْسِ فَدَخَلَ عَلَيَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ لَهُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ أَفْلَحَ أَخَا أَبِي الْقُعَيْسِ اسْتَأْذَنَ فَأَبَيْتُ أَنْ آذَنَ لَهُ حَتَّى أَسْتَأْذِنَكَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَمَا مَنَعَكِ أَنْ تَأْذَنِيْ عَمُّكِ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ الرَّجُلَ لَيْسَ هُوَ أَرْضَعَنِيْ وَلَكِنْ أَرْضَعَتْنِي امْرَأَةُ أَبِي الْقُعَيْسِ فَقَالَ ائْذَنِيْ لَهُ فَإِنَّهُ عَمُّكِ تَرِبَتْ يَمِيْنُكِ قَالَ عُرْوَةُ فَلِذَلِكَ كَانَتْ عَائِشَةُ تَقُوْلُ حَرِّمُوْا مِنْ الرَّضَاعَةِ مَا تُحَرِّمُوْنَ مِنْ النَّسَبِ.

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, পর্দার আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর, আবুল কু’আয়স এর ভাই-আফ্লাহ আমার কাছে প্রবেশ করার অনুমতি চায়। আমি বললাম, এ ব্যাপারে যতক্ষণ রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অনুমতি না দিবেন, ততক্ষণ আমি অনুমতি দিতে পারি না। কেননা তার ভাই আবূ কু‘আয়স নিজে আমাকে দুধ পান করাননি। কিন্তু আবুল কু’আয়সের স্ত্রী আমাকে দুধ পান করিয়েছেন। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের কাছে আসলেন। আমি তাঁকে বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আবুল কু’আয়সের ভাই-আফরাহ্ আমার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চাইছিল। আমি এ বলে অস্বীকার করেছি যে, যতক্ষণ আপনি এ ব্যাপারে অনুমতি না দিবেন, ততক্ষণ আমি অনুমতি দিব না। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার চাচাকে (দেখা করার) অনুমতি দিতে কিসে বাধা দিয়েছে? আমি বললাম, সে ব্যক্তি তো আমাকে দুধ পান করাননি; কিন্তু আবুল কু’আয়াসের স্ত্রী আমাকে দুধ পান করিয়েছে। এরপর তিনি [রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)] বললেন, তোমার হাত ধুলায় ধূসরিত হোক, তাকে অনুমতি দাও, কেননা, সে তোমার চাচা। ‘উরওয়াহ বলেন, এ কারণে ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলতেন বংশ সম্বন্ধের কারণে যাকে তোমরা হারাম জান, দুগ্ধ-পানের কারণেও তাকে হারাম জানবে। [২৬৪৪; মুসলিম ১৭/২, হাঃ ১৪৪৫, আহমাদ ২৪১০৯] (আ.প্র. ৪৪৩১, ই.ফা. ৪৪৩৩)

৬৫/৩৩/১০.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ

{إِنَّ اللهَ وَمَلٰٓئِكَتَه” يُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِيِّ ط يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا صَلُّوْا عَلَيْهِ وَسَلِّمُوْا تَسْلِيْمًا}

নিশ্চয় আল্লাহ এবং তাঁর মালাইকা নাবীর জন্য রহমাত প্রার্থনা করে। হে মু’মিনগণ! তোমরাও নাবীর জন্য রাহমাত প্রার্থনা কর এবং তার প্রতি প্রচুর পরিমাণে সালাম পাঠাতে থাক। (সূরাহ আহযাব ৩৩/৫৬)

قَالَ أَبُو الْعَالِيَةِ صَلَاةُ اللهِ ثَنَاؤُهُ عَلَيْهِ عِنْدَ الْمَلَائِكَةِ وَصَلَاةُ الْمَلَائِكَةِ الدُّعَاءُ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {يُصَلُّوْنَ} يُبَرِّكُوْنَ {لَنُغْرِيَنَّكَ} لَنُسَلِّطَنَّكَ.

আবুল ‘আলীয়া (রহ.) বলেন, আল্লাহর সালাতের অর্থ মালায়িকার সম্মুখে নাবীর প্রতি আল্লাহর প্রশংসা। মালাইকা সালাতের অর্থ- দু‘আ। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, يُصَلُّوْنَ -এর অর্থ-বারকাতের দু‘আ করছেন। لَنُغْرِيَنَّكَ আমি তোমাকে বিজয়ী করব।

৪৭৯৭
سَعِيْدُ بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ عَنِ الْحَكَمِ عَنْ ابْنِ أَبِيْ لَيْلَى عَنْ كَعْبِ بْنِ عُجْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قِيْلَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَمَّا السَّلَامُ عَلَيْكَ فَقَدْ عَرَفْنَاهُ فَكَيْفَ الصَّلَاةُ عَلَيْكَ قَالَ قُوْلُوا اللهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ اللهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَجِيْدٌ.

কা‘ব ইব্‌নু উজরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

বলা হল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনার উপর সালাম (সম্পর্কে) আমরা অবগত হয়েছি; কিন্তু সলাত কীভাবে? তিনি বললেন, তোমরা বলবে, “হে আল্লাহ্! তুমি মুহাম্মাদ এবং মুহাম্মাদের পরিবারবর্গের উপর রহমাত নাযিল কর, যেমনিভাবে ইব্রাহীম-এর পরিবারবর্গের উপর তুমি রহমাত নাযিল করেছ। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত, মর্যাদাবান। হে আল্লাহ্! তুমি মুহাম্মদ-এর উপর এবং মুহাম্মাদ-এর পরিবারবর্গের প্রতি বারাকাত নাযিল কর। যেমনিভাবে তুমি বারাকাত নাযিল করেছ ইব্রাহীমের পরিবারবর্গের প্রতি। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত, মর্যাদাবান। [৩৩৭০] (আ.প্র. ৪৪৩২, ই.ফা. ৪৪৩৪)

৪৭৯৮
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ خَبَّابٍ عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ قُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ هَذَا التَّسْلِيْمُ فَكَيْفَ نُصَلِّيْ عَلَيْكَ قَالَ قُوْلُوا اللهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ عَبْدِكَ وَرَسُوْلِكَ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ قَالَ أَبُوْ صَالِحٍ عَنْ اللَّيْثِ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى آلِ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ حَمْزَةَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِيْ حَازِمٍ وَالدَّرَاوَرْدِيُّ عَنْ يَزِيْدَ وَقَالَ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَبَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيْمَ وَآلِ إِبْرَاهِيْمَ

আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা বললাম, এ তো হল সালাম পাঠ; কিন্তু কেমন করে আমরা আপনার প্রতি দরূদ পড়ব? তিনি বললেন, তোমরা বলবে, “হে আল্লাহ্! আপনার বান্দা ও আপনার রসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি রাহমাত নাযিল করুন, যেভাবে রহমাত নাযিল করেছেন ইব্রাহীমের পরিবারবর্গের প্রতি এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর প্রতি ও মুহাম্মাদের পরিবারবর্গের প্রতি বারকাত নাযিল করুন, যেভাবে বারকাত অবতীর্ণ করেছেন ইব্রাহীম (‘আ.)-এর প্রতি। তবে বর্ণনাকারী আবূ সালিহ লায়স থেকে বর্ণনা করেছেন মুহাম্মাদ ও তার পরিবারবর্গের প্রতি বারাকাত নাযিল করুন যেমন আপনি বারকাত নাযিল করেছেন ইব্রাহীমের পরিবারবর্গের প্রতি। (আ.প্র. ৪৪৩৩, ই.ফা. ৪৪৩৫)

ইয়াযীদ হতে বর্ণিত। তিনি (এমনিভাবে) বলেন, যেমনভাবে ইব্রাহীম (‘আ.)-এর উপর রহমাত অবতীর্ণ করেছেন। আর বারাকাত অবতীর্ণ করুন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি এবং মুহাম্মাদের পরিবারবর্গের প্রতি, যেভাবে বারাকাত নাযিল করেছেন ইব্রাহীম (‘আ.)-এর প্রতি এবং ইব্রাহীমের পরিবারের প্রতি। [৬৩৫৮] (আ.প্র. ৪৪৩৪)

৬৫/৩৩/১১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা মূসা (আঃ)-কে কষ্ট দিয়েছে। (সুরাহ আহযাব ৩৩/৬৯)

৪৭৯৯
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ أَخْبَرَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ حَدَّثَنَا عَوْفٌ عَنِ الْحَسَنِ وَمُحَمَّدٍ وَخِلَاسٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ مُوْسَى كَانَ رَجُلًا حَيِيًّا وَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى {يٰٓأَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تَكُوْنُوْا كَالَّذِيْنَ اٰذَوْا مُوْسٰى} فَبَرَّأَهُ اللهُ مِمَّا قَالُوْا {وَكَانَ عِنْدَ اللهِ وَجِيْهًا}.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “মূসা (‘আ.) ছিলেন খুব লজ্জাশীল”। আর এ প্রেক্ষিতে আল্লাহ্‌র এ বাণী, হে মু’মিনগণ! তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা মূসা (‘আ.)-কে কষ্ট দিয়েছে। তারপর আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁকে ওদের অভিযোগ থেকে পবিত্র করেছেন। আর তিনি ছিলেন আল্লাহ্‌র কাছে অতি সম্মানিত। [২৭৮[ (আ.প্র. ৪৪৩৫, ই.ফা. ৪৪৩৬)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]