সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস তাফসীর অধ্যায় ১৫শ ভাগ হাদিস নং ৪৯২২ – ৪৯৫৪

৬৫/৭৪/১.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

(73) سُوْرَةُ الْمُزَّمِّلِ

সূরাহ (৭৩) : আল-মুযযাম্মিল

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {وَتَبَتَّلْ} أَخْلِصْ وَقَالَ الْحَسَنُ {أَنْكَالًا} قُيُوْدًا مُنْفَطِرٌ بِهِ {مُثْقَلَةٌبِهٰ} وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {كَثِيْبًامَّهِيْلًا} الرَّمْلُ السَّائِلُ {وَبِيْلًا} شَدِيْدًا.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, وَتَبَتَّلْ একনিষ্ঠভাবে মগ্ন হওয়া। হাসান (রহ.) বলেন, أَنْكَالًا শৃঙ্খল। مُثْقَلَةٌبِهٰ ভারে অবনত। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, كَثِيْبًامَّهِيْلًا বহমান বালুকারাশি। وَبِيْلًا কঠিন।

(74) سُوْرَةُ الْمُدَّثِّرِ

সূরাহ (৭৪) : আল-মুদদাসসির

قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {عَسِيْرٌ} شَدِيْدٌ {قَسْوَرَةٌ} رِكْزُ النَّاسِ وَأَصْوَاتُهُمْ وَكُلُّ شَدِيْدٍ قَسْوَرَةٌ وَقَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ الْقَسْوَرَةُ قَسْوَرٌ الْأَسَدُ الرِّكْزُ الصَّوْتُ {مُسْتَنْفِرَةٌ} نَافِرَةٌ مَذْعُوْرَةٌ.

ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, عَسِيْرٌ কঠিন। قَسْوَرَةٌ মানুষের কোলাহল, আওয়াজ। আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) বলেন, قَسْوَرَةٌবাঘ। প্রত্যেক কঠিন বস্তুকে الْقَسْوَرَةُ বলা হয়। مُسْتَنْفِرَةٌ ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পলায়নপর।

৪৯২২
يَحْيَى حَدَّثَنَا وَكِيْعٌ عَنْ عَلِيِّ بْنِ الْمُبَارَكِ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِيْ كَثِيْرٍ سَأَلْتُ أَبَا سَلَمَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَوَّلِ مَا نَزَلَ مِنَ الْقُرْآنِ قَالَ {يٰٓأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ} قُلْتُ يَقُوْلُوْنَ {اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ} فَقَالَ أَبُوْ سَلَمَةَ سَأَلْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ ذَلِكَ وَقُلْتُ لَهُ مِثْلَ الَّذِيْ قُلْتَ فَقَالَ جَابِرٌ لَا أُحَدِّثُكَ إِلَّا مَا حَدَّثَنَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ جَاوَرْتُ بِحِرَاءٍ فَلَمَّا قَضَيْتُ جِوَارِيْ هَبَطْتُ فَنُوْدِيْتُ فَنَظَرْتُ عَنْ يَمِيْنِيْ فَلَمْ أَرَ شَيْئًا وَنَظَرْتُ عَنْ شِمَالِيْ فَلَمْ أَرَ شَيْئًا وَنَظَرْتُ أَمَامِيْ فَلَمْ أَرَ شَيْئًا وَنَظَرْتُ خَلْفِيْ فَلَمْ أَرَ شَيْئًا فَرَفَعْتُ رَأْسِيْ فَرَأَيْتُ شَيْئًا فَأَتَيْتُ خَدِيْجَةَ فَقُلْتُ دَثِّرُوْنِيْ وَصُبُّوْا عَلَيَّ مَاءً بَارِدًا قَالَ فَدَثَّرُوْنِيْ وَصَبُّوْا عَلَيَّ مَاءً بَارِدًا قَالَ فَنَزَلَتْ{يٰٓأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ قُمْ فَأَنْذِرْ وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ}.

ইয়াহ্ইয়াহ ইব্‌নু কাসীর (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবূ সালামাহ ইব্‌নু আবদুর রহমান (রহ.)-কে কুরআন মাজীদের কোন্ আয়াতটি সর্বপ্রথম অবতীর্ণ হয়েছে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছে। আমি বললাম, লোকেরা তো বলে اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছে। তখন আবূ সালামাহ বললেন, আমি এ বিষয়ে জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম এবং তুমি যা বললে আমিও তাকে হুবহু তাই বলেছিলাম। জবাবে জাবির (রাঃ) বলেছিলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদেরকে যা বলেছিলেন, আমিও হুবহু তাই বলব। তিনি বলেছেন, আমি হেরা গুহায় ই’তিকাফ করতে লাগলাম। আমার ই’তিকাফ শেষ হলে আমি সেখান থেকে নামলাম। তখন আমাকে আওয়াজ দেয়া হল। আমি ডানে তাকালাম; কিন্তু কিছু দেখতে পেলাম না, বামে তাকালাম, কিন্তু এদিকেও কিছু দেখলাম না। এরপর সামনে তাকালাম, এদিকেও কিছু দেখলাম না। এরপর পেছনে তাকালাম, কিন্তু এদিওক আমি কিছু দেখলাম না। শেষে আমি উপরের দিকে তাকালাম, এবার একটা বস্তু দেখতে পেলাম। এরপর আমি খাদীজা (রাঃ)-এর কাছে এলাম এবং তাকে বললাম, আমাকে বস্ত্রাচ্ছাদিত কর এবং আমার শরীরে ঠাণ্ডা পানি ঢাল। তিনি বলেন, তারপর তারা আমাকে বস্ত্রাচ্ছাদিত করে এবং ঠাণ্ডা পানি ঢালে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, এরপর অবতীর্ণ হল ঃ ‘হে বস্ত্রাচ্ছাদিত! উঠ, সতর্কবাণী প্রচার কর এবং তোমার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর। [৪] (আ.প্র. ৪৫৫৩, ই.ফা. ৪৫৫৭)


হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৫/৭৪/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ উঠুন, সতর্ক করুন। (সূরাহ আল-মুদ্দাস্সির ৭৪/২)

৪৯২৩
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ وَغَيْرُهُ قَالَا حَدَّثَنَا حَرْبُ بْنُ شَدَّادٍ عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِيْ كَثِيْرٍ عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ جَاوَرْتُ بِحِرَاءٍ مِثْلَ حَدِيْثِ عُثْمَانَ بْنِ عُمَرَ عَنْ عَلِيِّ بْنِ الْمُبَارَكِ.

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমি হেরা গুহায় ইতিকাফ করেছিলাম। ‘উসমান ইব্‌নু ‘উমার ‘আলী ইব্‌নু মুবারক (রহ.) থেকে যে হাদীস বর্ণনা করেছেন তিনিও একই রকম হাদীস বর্ণনা করেছেন। [৪] (আ.প্র. ৪৫৫৪, ই.ফা. ৪৫৫৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৫/৭৪/৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আর আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন। (সূরাহ আল-মুদ্দাস্সির ৭৪/৩)

৪৯২৪
إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُوْرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ حَدَّثَنَا حَرْبٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى قَالَ سَأَلْتُ أَبَا سَلَمَةَ أَيُّ الْقُرْآنِ أُنْزِلَ أَوَّلُ فَقَالَ {يٰٓأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ} فَقُلْتُ أُنْبِئْتُ أَنَّهُ {اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ} فَقَالَ أَبُوْ سَلَمَةَ سَأَلْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ أَيُّ الْقُرْآنِ أُنْزِلَ أَوَّلُ فَقَالَ {يٰٓأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ} فَقُلْتُ أُنْبِئْتُ أَنَّهُ {اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ} فَقَالَ لَا أُخْبِرُكَ إِلَّا بِمَا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم جَاوَرْتُ فِيْ حِرَاءٍ فَلَمَّا قَضَيْتُ جِوَارِيْ هَبَطْتُ فَاسْتَبْطَنْتُ الْوَادِيَ فَنُوْدِيْتُ فَنَظَرْتُ أَمَامِيْ وَخَلْفِيْ وَعَنْ يَمِيْنِيْ وَعَنْ شِمَالِيْ فَإِذَا هُوَ جَالِسٌ عَلَى كُرْسِيٍّ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ فَأَتَيْتُ خَدِيْجَةَ فَقُلْتُ دَثِّرُوْنِيْ وَصُبُّوْا عَلَيَّ مَاءً بَارِدًا وَأُنْزِلَ عَلَيَّ {يٰٓأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ قُمْ فَأَنْذِرْ وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ}.

ইয়াহ্ইয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবূ সালামাহ (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, কুরআনের কোন্ আয়াতটি প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল? তিনি বললেন, يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। আমি বললাম, আমাকে বলা হয়েছে اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। এ কথা শুনে আবূ সালামাহ (রহ.) বললেন, কুরআনের কোন্ আয়াতটি প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল, এ সম্পর্কে আমি জাবির (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করার পর তিনি বলেছেন يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। তখন আমি বললাম, আমাকে বলা হয়েছে যে اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ প্রথম অবতীর্ণ হয়েছিল। তখন তিনি বললেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যা বলেছেন, আমি তোমাকে তাই বলছি। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আমি হেরা গুহায় ইতিকাফ করেছিলাম। ইতিকাফ শেষ হলে আমি সেখান থেকে নেমে উপত্যকার মাঝে পৌঁছলে আমাকে আওয়াজ দেয়া হল। আমি তখন সামনে, পেছনে, ডানে ও বামে তাকালাম। দেখলাম, সে আসমান ও যমীনের মধ্যস্থলে রক্ষিত একটি আসনে উপবিষ্ট আছে। এরপর আমি খাদীজা (রাঃ)-এর কাছে এসে বললাম, আমাকে বস্ত্রাচ্ছাদিত কর এবং আমার শরীরে ঠাণ্ডা পানি ঢাল। তখন আমার প্রতি অবতীর্ণ করা হল ঃ “হে বস্ত্রাচ্ছাদিত! সতর্কবাণী প্রচার কর এবং তোমার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর।” [৪] (আ.প্র. ৪৫৫৫, ই.ফা. ৪৫৫৯)


হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৫/৭৪/৪.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ এবং স্বীয় পরিধেয় বস্ত্র পবিত্র রাখুন। (সূরাহ আল-মুদ্দাস্সির ৭৪/৪)

৪৯২৫
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ ح و حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ قَالَ الزُّهْرِيُّ فَأَخْبَرَنِيْ أَبُوْ سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يُحَدِّثُ عَنْ فَتْرَةِ الْوَحْيِ فَقَالَ فِيْ حَدِيْثِهِ فَبَيْنَا أَنَا أَمْشِيْ إِذْ سَمِعْتُ صَوْتًا مِنْ السَّمَاءِ فَرَفَعْتُ رَأْسِيْ فَإِذَا الْمَلَكُ الَّذِيْ جَاءَنِيْ بِحِرَاءٍ جَالِسٌ عَلَى كُرْسِيٍّ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ فَجَئِثْتُ مِنْهُ رُعْبًا فَرَجَعْتُ فَقُلْتُ زَمِّلُوْنِيْ زَمِّلُوْنِيْ فَدَثَّرُوْنِيْ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {يٰٓأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ} إِلَى {وَالرِّجْزَفَاهْجُرْ} قَبْلَ أَنْ تُفْرَضَ الصَّلَاةُ وَهِيَ الْأَوْثَانُ.

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে শুনেছি। তিনি ওয়াহী বন্ধ থাকার সময়কাল সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন। তিনি তাঁর আলোচনার মাঝে বললেন, একদা আমি চলছিলাম, এমন সময় আকাশ থেকে একটি আওয়াজ শুনতে পেলাম। মাথা উঠাতেই আমি দেখলাম, যে মালাক হেরা গুহায় আমার কাছে এসেছিল সে আসমান-যমীনের মাঝে একটি কুসরীতে বসা আছে। আমি তাঁর ভয়ে ভীত হয়ে পড়লাম। এরপর আমি বাড়িতে ফিরে বললাম, আমাকে বস্ত্রাবৃত কর; আমাকে বস্ত্রাবৃত কর। তাঁরা আমাকে বস্ত্রাবৃত করল। তখন আল্লাহ্ অবতীর্ণ করলেন, “হে বস্ত্রাবৃত! উঠ…..অপবিত্রতা হতে দূরে থাক।” এ আয়াতগুলো সলাত ফরয হওয়ার পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছিল। الرِّجْزَ মূর্তিসমূহ। [৪] (আ.প্র. ৪৫৫৬, ই.ফা. ৪৫৬০)


হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৫/৭৪/৫.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ وَالرِّجْزَ فَاهْجُرْ এবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকুন- (সূরাহ আল-মুদ্দাস্সির ৭৪/৫)।

৪৯২৬
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ قَالَ أَخْبَرَنِيْ جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُحَدِّثُ عَنْ فَتْرَةِ الْوَحْيِ فَبَيْنَا أَنَا أَمْشِيْ سَمِعْتُ صَوْتًا مِنْ السَّمَاءِ فَرَفَعْتُ بَصَرِيْ قِبَلَ السَّمَاءِ فَإِذَا الْمَلَكُ الَّذِيْ جَاءَنِيْ بِحِرَاءٍ قَاعِدٌ عَلَى كُرْسِيٍّ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ فَجَئِثْتُ مِنْهُ حَتَّى هَوَيْتُ إِلَى الْأَرْضِ فَجِئْتُ أَهْلِيْ فَقُلْتُ زَمِّلُوْنِيْ زَمِّلُوْنِيْ فَزَمَّلُوْنِيْ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {يٰٓأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ قُمْ فَأَنْذِرْ} إِلَى قَوْلِهِ {فَاهْجُرْ} قَالَ أَبُوْ سَلَمَةَ وَالرِّجْزَ الْأَوْثَانَ ثُمَّ حَمِيَ الْوَحْيُ وَتَتَابَعَ

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে ওয়াহী বন্ধ হওয়া সম্পর্কে আলোচনা করতে শুনেছেন। তিনি বলেছেন, একদা আমি পথ চলছিলাম, এমন সময় আকাশ থেকে একটি আওয়াজ শুনতে পেলাম। এরপর আমি আকাশের দিকে চোখ তুলে দেখলাম, যে ফেরেশতা হেরা গুহায় আমার কাছে আসত, সে আসমান-যমীনের মাঝে একটি কুরসীতে উপবিষ্ট আছে। তাকে দেখে আমি ভীষণ ভয় পেলাম। এমনকি যমীনে পড়ে গেলাম। তারপর আমি আমার স্ত্রীর কাছে গেলাম এবং বললাম, আমাকে বস্ত্রাবৃত কর। আমাকে বস্ত্রাবৃত কর। তারা আমাকে বস্ত্রাবৃত করল। এরপর আল্লাহ্ অবতীর্ণ করলেন ঃ “হে বস্ত্রাবৃত!…..অপবিত্রতা হতে দূরে থাক।” আবূ সালামাহ (রহ.) বলেন, الرِّجْزَ মূর্তিসমূহ। এরপর অধিক হারে ওয়াহী অবতীর্ণ হতে লাগল এবং লাগাতার ওয়াহী আসতে থাকল। [৪] (আ.প্র. ৪৫৫৭, ই.ফা. ৪৫৬১)


হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৫/৭৫/১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ ওয়াহী দ্রুত আয়ত্ত করার জন্য আপনি ওয়াহী অবতীর্ণ হওয়ার সময় আপনার জিহবা নাড়বে না। (সূরাহ আল-ক্বিয়ামাহ ৭৫/১৬)

(75) سُوْرَةُ الْقِيَامَةِ

সূরাহ (৭৫) : আল-ক্বিয়ামাহ

وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {لِيَفْجُرَ أَمَامَهُ} سَوْفَ أَتُوْبُ سَوْفَ أَعْمَلُ {لَاوَزَرَ} لَا حِصْنَ سُدًى هَمَلًا.

ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, , لِيَفْجُرَ أَمَامَهُ শীঘ্রই তওবাহ করব, শীঘ্রই ‘আমাল করব। لَاوَزَرَ কোন আশ্রয়স্থল নেই, سُدًى নিরর্থক ও উদ্দেশ্যহীন ।

৪৯২৭
الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا مُوْسَى بْنُ أَبِيْ عَائِشَةَ وَكَانَ ثِقَةً عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا نَزَلَ عَلَيْهِ الْوَحْيُ حَرَّكَ بِهِ لِسَانَهُ وَوَصَفَ سُفْيَانُ يُرِيْدُ أَنْ يَحْفَظَهُ فَأَنْزَلَ اللهُ {لَا تُحَرِّكْ بِهٰ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهٰ}.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি যখন ওয়াহী অবতীর্ণ করা হত, তখন তিনি দ্রুত তাঁর জিহ্বা নাড়তেন। রাবী সুফ্ইয়ান বলেন, এভাবে করার পেছনে তাঁর উদ্দেশ্য ছিল ওয়াহী মুখস্থ করা। তারপর আল্লাহ্ অবতীর্ণ করলেন ঃ তাড়াতাড়ি ওয়াহী আয়ত্ত করার জন্য তুমি তোমার জিহ্বা সঞ্চালন করবে না। [৫] (আ.প্র. ৪৫৫৮, ই.ফা. ৪৫৬২)


হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৫/৭৫/২.অধ্যায়ঃ
‘‘নিশ্চয় এর একত্রীকরণ ও পাঠ করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমার।’’ (সূর আল-ক্বিয়ামাহ ৭৫/১৭)

৪৯২৮
عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوْسَى عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ مُوْسَى بْنِ أَبِيْ عَائِشَةَ أَنَّهُ سَأَلَ سَعِيْدَ بْنَ جُبَيْرٍ عَنْ قَوْلِهِ تَعَالَى {لَا تُحَرِّكْ بِهٰ لِسَانَكَ} قَالَ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ كَانَ يُحَرِّكُ شَفَتَيْهِ إِذَا أُنْزِلَ عَلَيْهِ فَقِيْلَ لَهُ {لَا تُحَرِّكْ بِهٰ لِسَانَكَ} يَخْشَى أَنْ يَنْفَلِتَ مِنْهُ {إِنَّ عَلَيْنَا جَمْعَه” وَقُرْاٰنَه} أَنْ نَجْمَعَهُ فِيْ صَدْرِكَ وَقُرْآنَهُ أَنْ تَقْرَأَهُ {فَإِذَا قَرَأْنَاهُ} يَقُوْلُ أُنْزِلَ عَلَيْهِ {فَاتَّبِعْ قُرْاٰنَه” ج -ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا بَيَانَه”} أَنْ نُبَيِّنَهُ عَلَى لِسَانِكَ.

মূসা ইব্‌নু আবূ ‘আয়িশাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি لاَ تُحَرِّكْ بِهِ لِسَانَكَ আল্লাহ্‌র এই বাণী সম্পর্কে সা‘ঈদ ইব্‌নু যুবায়র (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করার পর তিনি বললেন, ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি যখন ওয়াহী অবতীর্ণ করা হত, তখন তিনি তাঁর ঠোঁট দু’টো দ্রুত নাড়তেন। তখন তাঁকে বলা হল, তাড়াতাড়ি ওয়াহী আয়ত্ত করার জন্য তুমি তোমার জিহ্বা নাড়বে না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ওয়াহী ভুলে যাবার আশংকায় এমন করতেন। নিশ্চয়ই এ কুরআন সংরক্ষণ ও পাঠ করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমারই। অর্থাৎ আমি নিজেই তাকে তোমার স্মৃতিতে সংরক্ষণ করব। তাই আমি যখন তা পাঠ করব অর্থাৎ যখন তোমার প্রতি ওয়াহী অবতীর্ণ হতে থাকবে, তখন তুমি তার অনুসরণ করবে। এরপর তা বর্ণনা করার দাযিত্ব আমারই অর্থাৎ এ কুরআনকে তোমার মুখ দিয়ে বর্ণনা করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমার। [৫] (আ.প্র. ৪৫৫৯, ই.ফা. ৪৫৬৩)


হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৫/৭৫/৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ সুতরাং আমি যখন তা পাঠ করি, তখন আপনি সেই পাঠের অনুসরণ করুন। (সূরাহ আল-ক্বিয়ামাহ ৭৫/১৮)

قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {قَرَأْنَاهُ} بَيَّنَّاهُ {قَرَأْنَاهُ}اعْمَلْ بِهِ.

ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, قَرَأْنَاهُ আমি যখন তা বর্ণনা করি قَرَأْنَاهُ তদনুযায়ী ‘আমাল কর।

৪৯২৯
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ مُوْسَى بْنِ أَبِيْ عَائِشَةَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ فِيْ قَوْلِهِ {لَا تُحَرِّكْ بِهٰ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهٰ} قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا نَزَلَ جِبْرِيْلُ بِالْوَحْيِ وَكَانَ مِمَّا يُحَرِّكُ بِهِ لِسَانَهُ وَشَفَتَيْهِ فَيَشْتَدُّ عَلَيْهِ وَكَانَ يُعْرَفُ مِنْهُ فَأَنْزَلَ اللهُ الْآيَةَ الَّتِيْ فِيْ {لَآ أُقْسِمُ بِيَوْمِ الْقِيٰمَةِ لَا تُحَرِّكْ بِهٰ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهٰط- إِنَّ عَلَيْنَا جَمْعَه” وَقُرْاٰنَه} قَالَ عَلَيْنَا أَنْ نَجْمَعَهُ فِيْ صَدْرِكَ وَقُرْآنَهُ {فَإِذَا قَرَأْنَاهُ فَاتَّبِعْ قُرْآنَهُ} فَإِذَا أَنْزَلْنَاهُ فَاسْتَمِعْ {) ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا بَيَانَه”} عَلَيْنَا أَنْ نُبَيِّنَهُ بِلِسَانِكَ قَالَ فَكَانَ إِذَا أَتَاهُ جِبْرِيْلُ أَطْرَقَ فَإِذَا ذَهَبَ قَرَأَهُ كَمَا وَعَدَهُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {أَوْلٰى لَكَ فَأَوْلٰى} تَوَعُّدٌ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি আল্লাহ্‌র বাণী ঃ لاَ تُحَرِّكْ بِهِ لِسَانَكَ لِتَعْجَلَ بِهِ এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন যে, জিবরীল (‘আ.) যখন ওয়াহী নিয়ে আসতেন তখন রসূল তাঁর জিহ্বা ও ঠোঁট দু’টো দ্রুত নাড়তেন। এটা তাঁর জন্য কষ্টসাধ্য হত এবং তাঁর চেহারা দেখেই বোঝা যেত। তাই আল্লাহ্ তা‘আলা ঃ “তাড়াতাড়ি ওয়াহী আয়ত্ত করার জন্য তোমার জিহ্বা সঞ্চালন করবে না; এ কুরআন সংরক্ষণ ও পাঠ করিয়ে দেয়ার দায়িত্ব আমারই” অবতীর্ণ করলেন। এতে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন ঃ এ কুরআনকে আপনার বক্ষে সংরক্ষিত করা ও পড়িয়ে দেয়ার ভার আমার উপর। সুতরাং আমি যখন তা পাঠ করি, তুমি সে পাঠের অনুসরণ কর, অর্থাৎ আমি যখন ওয়াহী অবতীর্ণ করি তখন তুমি মনোযোগ দিয়ে শুন। তারপর এর বিস্তারিত ব্যাখ্যার দায়িত্ব আমারই। অর্থাৎ তোমার মুখে তা বর্ণনা করার দায়িত্ব আমারই। রাবী বলেন, এরপর জিব্রীল (‘আ.) চলে গেলে আল্লাহ্‌র ওয়াদা ثُمَّ إِنَّ عَلَيْنَا بَيَانَهُ মুতাবিক তিনি তা পাঠ করতেন। أَوْلَى لَكَ فَأَوْلَى দুর্ভোগ তোমার জন্য, দুর্ভোগ! تَوَعُّدٌ এ আয়াতে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। [৫; মুসলিম ৪/৩২, হাঃ ৪৪৮, আহমাদ ৩১৯১] (আ.প্র. ৪৫৬০, ই.ফা. ৪৫৬৪)


হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৫/৭৭/১.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

(76) سُوْرَةُ الإنسان [هَلْ أَتَى عَلَى الإِنْسَانِ]

সূরাহ (৭৬) : ইনসান (আদ্-দাহর) ‘‘কালের প্রবাহে মানুষের উপর এমন এক সময় এসেছিল কি?’’

يُقَالُ مَعْنَاهُ أَتَى عَلَى الإِنْسَانِ وَهَلْ تَكُوْنُ جَحْدًا وَتَكُوْنُ خَبَرًا وَهَذَا مِنَ الْخَبَرِ يَقُوْلُ كَانَ شَيْئًا فَلَمْ يَكُنْ مَذْكُوْرًا وَذَلِكَ مِنْ حِيْنِ خَلَقَهُ مِنْ طِيْنٍ إِلَى أَنْ يُنْفَخَ فِيْهِ الرُّوْحُ {أَمْشَاجٍ} الْأَخْلَاطُ مَاءُ الْمَرْأَةِ وَمَاءُ الرَّجُلِ الدَّمُ وَالْعَلَقَةُ وَيُقَالُ إِذَا خُلِطَ مَشِيْجٌ كَقَوْلِكَ خَلِيْطٌ وَمَمْشُوْجٌ مِثْلُ مَخْلُوْطٍ وَيُقَالُ {سَلَاسِلًا وَأَغْلَالًا} وَلَمْ يُجْرِ بَعْضُهُمْ {مُسْتَطِيْرًا} مُمْتَدًّا الْبَلَاءُ {وَالْقَمْطَرِيْرُ} الشَّدِيْدُ يُقَالُ يَوْمٌ قَمْطَرِيْرٌ وَيَوْمٌ قُمَاطِرٌ وَالْعَبُوْسُ وَالْقَمْطَرِيْرُ وَالْقُمَاطِرُ وَالْعَصِيْبُ أَشَدُّ مَا يَكُوْنُ مِنَ الْأَيَّامِ فِي الْبَلَاءِ وَقَالَ الْحَسَنُ {النُّضْرَةُ} فِي الْوَجْهِ وَالسُّرُوْرُ فِي الْقَلْبِ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {الأَرَآئِكِ} السُّرُرُ وَقَالَ الْبَرَاءُ {وَذُلِّلَتْ قُطُوْفُهَا} يَقْطِفُوْنَ كَيْفَ شَاءُوْا وَقَالَ مَعْمَرٌ {أَسْرَهُمْ} شِدَّةُ الْخَلْقِ وَكُلُّ شَيْءٍ شَدَدْتَهُ مِنْ قَتَبٍ وَغَبِيْطٍ فَهُوَ مَأْسُوْرٌ.

অর্থাৎ কালের প্রবাহে মানুষের উপর এক সময় এসেছিল। هَلْ শব্দটি কখনো নেতিবাচক, আবার কখনো ইতিবাচক অর্থে ব্যবহৃত হয়। তবে এখানে অবহিতকরণ তথা ইতিবাচক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। আল্লাহ্ বলেন, এক সময় মানুষের অস্তিত্ব ছিল কিন্তু উল্লেখযোগ্য কোন বস্তু ছিল না। আর ঐ সময়টা হল মাটি থেকে সৃষ্টি করা হতে তার মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করা পর্যন্ত। أَمْشَاجٍ সংমিশ্রণ। অর্থাৎ মাতৃগর্ভে পুরুষ ও মহিলার বীর্যের সংমিশ্রণে রক্ত এবং পরে জমাট বাঁধা রক্ত সৃষ্টি হওয়াকে أَمْشَاجٍ বলা হয়েছে। এক বস্তুর অপর বস্তুর সঙ্গে মিশ্রিত হলে তাকে مَشِيْجٌ বলে। তাকে خَلِيْطٌ ও বলা হয়। আর مَمْشُوْجٌ ও مَخْلُوْطٍ এর অর্থ একই। কেউ কেউ سَلَاسِلًا وَأَغْلَالًا পড়ে থাকেন। কিন্তু কেউ কেউ এভাবে পড়াকে জায়িয মনে করেন না। مُسْتَطِيْرًا দীর্ঘস্থায়ী বিপদ। الْقَمْطَرِيْرُ ভয়ংকর ও কঠিন। সুতরাং يَوْمٌ قَمْطَرِيْرٌ এবং يَوْمٌ قُمَاطِرٌ উভয়ই ব্যবহৃত হয়। الْعَبُوْسُ، الْقَمْطَرِيْرُ، الْقُمَاطِرُ، এবং الْعَصِيْبُ বিপদের সবচেয়ে কঠিনতম দিনকে বলা হয়। হাসান (রহ.) বলেন, النُّضْرَةُ চেহারায় সজীবতা ও হৃদয়ে আনন্দ। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, الْأَرَآئِكِ খাট-পালঙ্ক। আর বারা (রাঃ) বলেন, وَذُلِّلَتْ قُطُوْفُهَا তাদের ইচ্ছেমাফিক ফল পাড়বে। মা‘মার (রহ.) বলেন, أَسْرَهُمْ সুদৃঢ় গঠন। উটের গদির সঙ্গে শক্ত করে যে জিনিস বাঁধা থাকে তাকে مَأْسُوْرٌ বলা হয় ।

(77) سُوْرَةُ وَالْمُرْسَلَاتِ

সূরাহ (৭৭) : আল-মুরসালাত

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {جِمَالَاتٌ} قَالَ مُجَاهِدٌ حِبَالٌ {ارْكَعُوْا} صَلُّوْا لَا يَرْكَعُوْنَ لَا يُصَلُّوْنَ وَسُئِلَ ابْنُ عَبَّاسٍ عَنْ قَوْلِهِ : {لَايَنْطِقُوْنَ}{وَاللهِ رَبِّنَا مَا كُنَّا مُشْرِكِيْنَ}{الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلٰٓىأَفْوَاهِهِمْ} فَقَالَ إِنَّهُ ذُوْ أَلْوَانٍ مَرَّةً يَنْطِقُوْنَ وَمَرَّةً يُخْتَمُ عَلَيْهِمْ

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, جِمَالَاتٌ উটের সারি। ارْكَعُوْا সালাত আদায় কর। لَا يَرْكَعُوْنَ তারা সালাত আদায় করে না। لَايَنْطِقُوْنَ (তার কথা বলতে সক্ষম হবে না), وَاللهِ رَبِّنَا مَا كُنَّا مُشْرِكِيْنَ (আল্লাহর শপথ! আমরা কখনো মুশরিক ছিলাম না) এবং الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلٓٓى أَفْوَاهِهِمْ (আমি আজ মোহর লাগিয়ে দেব) এ আয়াত সম্বন্ধে ইবনু ‘আববাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি বললেন, ক্বিয়ামাতের দিন বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষের বিভিন্ন অবস্থা ঘটবে। কখনো সে কথা বলতে পারবে এবং নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে, আবার কখনো তার মুখে মোহর লাগিয়ে দেয়া হবে। তখন সে আর কোন কথা বলতে পারবে না।

৪৯৩০
مَحْمُوْدٌ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأُنْزِلَتْ عَلَيْهِ {وَالْمُرْسَلَاتِ} وَإِنَّا لَنَتَلَقَّاهَا مِنْ فِيْهِ فَخَرَجَتْ حَيَّةٌ فَابْتَدَرْنَاهَا فَسَبَقَتْنَا فَدَخَلَتْ جُحْرَهَا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وُقِيَتْ شَرَّكُمْ كَمَا وُقِيْتُمْ شَرَّهَا.

‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। এমন সময় তাঁর প্রতি অবতীর্ণ হল সূরাহ মুরসলাত। আমরা তাঁর মুখে শুনে সেটি শিখছিলাম। তখন একটি সাপ বেরিয়ে এল। আমরা ওদিকে দৌড়ে গেলাম, কিন্তু সাপটি আমাদের থেকে দ্রুত চলে গিয়ে গর্তে ঢুকে পড়ল। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ওটাও তোমাদের অনিষ্ট হতে বেঁচে গেল, তোমরা যেন ওটার অনিষ্ট হতে রক্ষা পেলে। [১৮৩০; মুসলিম ৩৯/৩৭, হাঃ ২২৩৪, আহমাদ ৪৩৫৭] (আ.প্র. ৪৫৬১, ই.ফা. ৪৫৬৫)


হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৪৯৩১
عَبْدَةُ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ عَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنْ مَنْصُوْرٍ بِهَذَا وَعَنْ إِسْرَائِيْلَ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ مِثْلَهُ وَتَابَعَهُ أَسْوَدُ بْنُ عَامِرٍ عَنْ إِسْرَائِيْلَ وَقَالَ حَفْصٌ وَأَبُوْ مُعَاوِيَةَ وَسُلَيْمَانُ بْنُ قَرْمٍ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنِ الْأَسْوَدِ قَالَ يَحْيَى بْنُ حَمَّادٍ أَخْبَرَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنْ مُغِيْرَةَ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ وَقَالَ ابْنُ إِسْحَاقَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْأَسْوَدِ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ.

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنِ الْأَسْوَدِ قَالَ قَالَ عَبْدُ اللهِ بَيْنَا نَحْنُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ غَارٍ إِذْ نَزَلَتْ عَلَيْهِ {وَالْمُرْسَلَاتِ} فَتَلَقَّيْنَاهَا مِنْ فِيْهِ وَإِنَّ فَاهُ لَرَطْبٌ بِهَا إِذْ خَرَجَتْ حَيَّةٌ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلَيْكُمْ اقْتُلُوْهَا قَالَ فَابْتَدَرْنَاهَا فَسَبَقَتْنَا قَالَ فَقَالَ وُقِيَتْ شَرَّكُمْ كَمَا وُقِيْتُمْ شَرَّهَا.

‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইসরাঈল সূত্রে আসওয়াদ ইব্‌নু ‘আমির পূর্বের হাদীসটির অনুসরণ করেছেন। (অন্য সানাদে) হাফ্স, আবূ মু‘আবীয়াহ এবং সুলাইমান ইব্‌নু কারম (রহ.)….‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (অপর এক সানাদে) ইব্‌নু ইসহাক (রহ.)….‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে ঠিক এমনি বর্ণনা করেছেন। [১৮৩০] (ই.ফা. ৪৫৬৬)

‘আবদুল্লাহ্ (ইব্‌নু মাস‘ঊদ) (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, এক গুহার মধ্যে আমরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। এমন সময় তাঁর প্রতি অবতীর্ণ হল সূরাহ ওয়াল মুরসলাত। আমরা তাঁর মুখ থেকে সেটা গ্রহণ করছিলাম। এ সুরার তিলাওয়াতে তখনও রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মুখ সিক্ত ছিঁঁল, হঠাৎ একটি সাপ বেরিয়ে এল। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, “তোমরা ওটাকে মেরে ফেল।” ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) বলেন, আমরা সেদিকে দৌড়ে গেলাম, কিন্তু সাপটি আমাদের আগে চলে গেল। বর্ণনাকারী বলেন, তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ওটা তোমাদের অনিষ্ট হতে বেঁচে গেল যেমনি তোমরা এর অনিষ্ট হতে বেঁচে গেলে। (আ.প্র. ৪৫৬২, ই.ফা. ৪৫৬৭)


হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৫/৭৭/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ যা অট্টালিকা সদৃশ বড় বড় স্ফুলিঙ্গ নিক্ষেপ করবে। (সূরাহ আল-মুরসলাত ৭৭/৩২)

৪৯৩২
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَابِسٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ {إِنَّهَا تَرْمِيْ بِشَرَرٍ كَالْقَصَرِ} قَالَ كُنَّا نَرْفَعُ الْخَشَبَ بِقَصَرٍ ثَلَاثَةَ أَذْرُعِ أَوْ أَقَلَّ فَنَرْفَعُهُ لِلشِّتَاءِ فَنُسَمِّيْهِ الْقَصَرَ.

‘আবদুর রহমান ইব্‌নু আবিস (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ঐ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, আমরা তিন গজ বা এর চেয়ে ছোট কাঠের খণ্ড জোগাড় করে শীতকালের জন্য উঠিয়ে রাখতাম। এটাকেই আমরা বলতাম الْقَصَرَ। [৪৯৩৩] (আ.প্র. ৪৫৬৩, ই.ফা. ৪৫৬৮)


হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৫/৭৭/৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ যেন তা পীত বর্ণের বড় বড় উট। (সূরাহ আল-মুরসলাত ৭৭/৩৩)

৪৯৩৩
عَمْرُوْ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا يَحْيَى أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنِيْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَابِسٍ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا {تَرْمِيْ بِشَرَرٍ كَالْقَصَرِ} قَالَ كُنَّا نَعْمِدُ إِلَى الْخَشَبَةِ ثَلَاثَةَ أَذْرُعٍ أَوْ فَوْقَ ذَلِكَ فَنَرْفَعُهُ لِلشِّتَاءِ فَنُسَمِّيْهِ الْقَصَرَ كَأَنَّهُ جِمَالَاتٌ صُفْرٌ حِبَالُ السُّفُنِ تُجْمَعُ حَتَّى تَكُوْنَ كَأَوْسَاطِ الرِّجَالِ.

‘আবদুর রহমান ইব্‌নু আবিস (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি এ আয়াত সম্পর্কে ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমরা তিন গজ বা তার চেয়ে অধিক লম্বা কাষ্ঠ জড়ো করে শীতকালের জন্য উঠিয়ে রাখতাম। এটাকেই আমরা বলতাম الْقَصَرَ। جِمَالاَتٌ صُفْرٌ জাহাজের রশি, যা জমা করে রাখা হত। এমনকি তা মাঝারি গড়নের মানুষের সমান উঁচু হয়ে যেত। [৪৯৩২] (আ.প্র. ৪৫৬৪, ই.ফা. ৪৫৬৯)


হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৫/৭৭/৪.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ এটা এমন দিন, যে দিন তারা কথা বলতে পারবে না। (সূরাহ আল-মুরসলাত ৭৭/৩৫)

৪৯৩৪
عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ عَنِ الْأَسْوَدِ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ غَارٍ إِذْ نَزَلَتْ عَلَيْهِ {وَالْمُرْسَلَاتِ} فَإِنَّهُ لَيَتْلُوْهَا وَإِنِّيْ لَأَتَلَقَّاهَا مِنْ فِيْهِ وَإِنَّ فَاهُ لَرَطْبٌ بِهَا إِذْ وَثَبَتْ عَلَيْنَا حَيَّةٌ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم اقْتُلُوْهَا فَابْتَدَرْنَاهَا فَذَهَبَتْ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وُقِيَتْ شَرَّكُمْ كَمَا وُقِيْتُمْ شَرَّهَا قَالَ عُمَرُ حَفِظْتُهُ مِنْ أَبِيْ فِيْ غَارٍ بِمِنًى.

‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক গুহায় আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। এমন সময় তাঁর প্রতি অবতীর্ণ হল ‘সূরাহ ওয়াল মুরসলাত’। তিনি তা তিলাওয়াত করছিলেন, আর আমি তাঁর মুখ থেকে তা শিখছিলাম। তিলাওয়াতে তখনো তাঁর মুখ সিক্ত ছিল। হঠাৎ আমাদের সামনে একটি সাপ বেরিয়ে এলো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ওটাকে মেরে ফেল। আমরা ওদিকে দৌড়িয়ে গেলাম। কিন্তু সাপটি চলে গেল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, ওটা তোমাদের অনিষ্ট থেকে বেঁচে গেল তোমরা যেমন তার অনিষ্ট থেকে রক্ষা পেলে। ‘উমার ইব্‌নু হাফস্ বলেন, এ হাদীসটি আমি আমার পিতার নিকট হতে শুনে মুখস্থ করেছি। গুহাটি মিনায় অবস্থিত বলে উল্লেখ আছে। [১৮৩০] (আ.প্র. ৪৫৬৫, ই.ফা. ৪৫৭০)


হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৬৫/৭৮/১.অধ্যায়ঃ
‘‘সে দিন শিংগায় ফুঁ দেয়া হবে, তখন তোমরা দলে দলে আসবে।’’ (সূরাহ আন্নাবা ৭৮/১৮)

(78) سُوْرَةُ النبأ {عَمَّ يَتَسَاءَلُوْنَ}

সূরাহ (৭৮) : আননাবা

قَالَ مُجَاهِدٌ {لَا يَرْجُوْنَ حِسَابًا} لَا يَخَافُوْنَهُ {لَا يَمْلِكُوْنَ مِنْهُ خِطَابًا} لَا يُكَلِّمُوْنَهُ إِلَّا أَنْ يَأْذَنَ لَهُمْ {صَوَابًا} حَقًّا فِي الدُّنْيَا وَعَمِلَ بِهِ {لَا يَمْلِكُوْنَ مِنْهُ خِطَابًا} وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {ثَجاجًا} مُنْصَبًّا. {ألْفافًا} : مُلْتَفَّةً. وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ : {وَهَّاجًا} مُضِيئًا وَقَالَ غَيْرُهُ {غَسَّاقًا}غَسَقَتْ عَيْنُهُ وَيَغْسِقُ الْجُرْحُ يَسِيْلُ كَأَنَّ الْغَسَاقَ وَالْغَسِيْقَ وَاحِدٌ {عَطَاءًحِسَابًا} جَزَاءً كَافِيًا أَعْطَانِيْ مَا أَحْسَبَنِيْ أَيْ كَفَانِي.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, لَا يَرْجُوْنَ حِسَابًا তারা কখনও হিসাবের ভয় করত না। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, ثَجاجًا অবিরাম বর্ষণ। ألْفافًا ঘন সন্নিবিষ্ট। لَا يَمْلِكُوْنَ مِنْهُ خِطَابًا যাদেরকে আল্লাহ্ অনুমতি দিবেন, তাদের ছাড়া তাঁর কাছে আবেদন-নিবেদনের ক্ষমতা কারো থাকবে না। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, وَهَّاجًا উজ্জ্বল, ইবনু ‘আববাস ব্যতীত অন্যরা বলেন, غَسَّاقًا যেমন আরবরা বলে, চোখে পিষ্টি হয়েছে এবং ক্ষত হতে পূঁজ চুয়ে চুয়ে পড়ছে। الْغَسَاقَ এবং الْغَسِيْقَ একই অর্থ বহন করে। عَطَاءً حِسَابًا যথোচিত দান। যেমন বলা হয়, أَعْطَانِيْ مَا أَحْسَبَنِيْ অর্থাৎ সে আমাকে যথেষ্ট দিয়েছে।

৪৯৩৫
مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنَا أَبُوْ مُعَاوِيَةَ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا بَيْنَ النَّفْخَتَيْنِ أَرْبَعُوْنَ قَالَ أَرْبَعُوْنَ يَوْمًا قَالَ أَبَيْتُ قَالَ أَرْبَعُوْنَ شَهْرًا قَالَ أَبَيْتُ قَالَ أَرْبَعُوْنَ سَنَةً قَالَ أَبَيْتُ قَالَ ثُمَّ يُنْزِلُ اللهُ مِنْ السَّمَاءِ مَاءً فَيَنْبُتُوْنَ كَمَا يَنْبُتُ الْبَقْلُ لَيْسَ مِنَ الإِنْسَانِ شَيْءٌ إِلَّا يَبْلَى إِلَّا عَظْمًا وَاحِدًا وَهُوَ عَجْبُ الذَّنَبِ وَمِنْهُ يُرَكَّبُ الْخَلْقُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, প্রথম ও দ্বিতীয়বার শিঙ্গায় ফুৎকারের মধ্যে চল্লিশের ব্যবধান হবে। [আবূ হুরাইরাহ (রাঃ)]-এর জনৈক ছাত্র বললেন, চল্লিশ বলে-চল্লিশ দিন বোঝানো হয়েছে কি? তিনি বলেন, আমি অস্বীকার করলাম। তারপর পুনরায় তিনি জিজ্ঞেস করলেন, চল্লিশ বলে চল্লিশ মাস বোঝানো হয়েছে কি? তিনি বলেন, এবারও অস্বীকার করলাম। তারপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন, চল্লিশ বছর বোঝানো হয়েছে কি? তিনি বলেন, এবারও আমি অস্বীকার করলাম। এরপর আল্লাহ্ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করবেন। এতে মৃতরা জীবিত হয়ে উঠবে, যেমন বৃষ্টির পানিতে উদ্ভিদরাজি উৎপন্ন হয়ে থাকে। তখন শিরদাঁড়ার হাড় ছাড়া মানুষের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পচে গলে শেষ হয়ে যাবে। ক্বিয়ামাতের দিন ঐ হাড়খণ্ড থেকেই আবার মানুষকে সৃষ্টি করা হবে। [৪৮১৪] (আ.প্র. ৪৫৬৬, ই.ফা. ৪৫৭১)

৬৫/৭৯/১.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

(79) سُوْرَةُ وَالنَّازِعَاتِ

সূরাহ (৭৯) : আন্-নাযি‘আত

{زَجْرَةٌ} : صَيْحَةٌ. وَقَالَ مُجَاهِدٌ : {تَرْجُفُ الرَّاجِفَةُ} : هِيَ الزَّلْزَلَةُ. وَقَالَ مُجَاهِدٌ {الْاٰيَةَ الْكُبْرٰى} عَصَاهُ وَيَدُهُ. {سَمكَهَا} : بَنَاها بِغَيْرِ عَمَدٍ. {طَغٰى} عَصَى. يُقَالُ النَّاخِرَةُ وَالنَّخِرَةُ سَوَاءٌ مِثْلُ الطَّامِعِ وَالطَّمِعِ وَالْبَاخِلِ وَالْبَخِيْلِ وَقَالَ بَعْضُهُمْ النَّخِرَةُ الْبَالِيَةُ وَالنَّاخِرَةُ الْعَظْمُ الْمُجَوَّفُ الَّذِيْ تَمُرُّ فِيْهِ الرِّيْحُ فَيَنْخَرُ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {الْحَافِرَةِ} الَّتِيْ أَمْرُنَا الْأَوَّلُ إِلَى الْحَيَاةِ وَقَالَ غَيْرُهُ {أَيَّانَ مُرْسٰهَا} مَتَى مُنْتَهَاهَا وَمُرْسَى السَّفِيْنَةِ حَيْثُ تَنْتَهِي الطَّامَّةُ تَطِمُّ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ.

زَجْرَةٌ আওয়াজ বা শব্দ। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, تَرْجُفُ الرَّاجِفَةُ দ্বারা ভূমিকম্প বোঝানো হয়েছে। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, الْاٰيَةَ الْكُبْرَى তার [মূসা (আঃ)] লাঠি এবং তার হাত। سَمكَها আকাশকে স্তম্ভ ব্যতীত নির্মাণ করেছেন। طَغَى লাঠি। النَّاخِرَةُ ও النَّخِرَةُ সমার্থবোধক শব্দ। যেমন الطَّامِعِ ও الطَّمِعِ এবং الْبَاخِلِ ও الْبَخِيْلِএক অর্থবোধক শব্দ। কোন কোন মুফাস্সির বলেছেন, النَّخِرَةُ গলিত (হাড্ডি) এবং النَّاخِرَةُ খোল হাড্ডি, যার মধ্যে বাতাস ঢোকার পর আওয়াজ সৃষ্টি হয়। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, الْحَافِرَةِ পূর্ব জীবন। ইবনু ‘আববাস ছাড়া অন্যান্য মুফাস্সির বলেছেন,أَيَّانَ مُرْسٰهَا ক্বিয়ামাতের শেষ কোথায়? যেমন (আরবী ভাষায়) জাহাজ নোঙ্গর করার স্থানকে مُرْسَى السَّفِيْنَةِ বলে।

৪৯৩৬
أَحْمَدُ بْنُ الْمِقْدَامِ حَدَّثَنَا الْفُضَيْلُ بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا أَبُوْ حَازِمٍ حَدَّثَنَا سَهْلُ بْنُ سَعْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بِإِصْبَعَيْهِ هَكَذَا بِالْوُسْطَى وَالَّتِيْ تَلِي الإِبْهَامَ بُعِثْتُ وَالسَّاعَةُ كَهَاتَيْنِ.

সাহল ইব্‌নু সা‘দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি দেখেছি, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর মধ্যমা ও বুড়ো আঙ্গুলের নিকটবর্তী অঙ্গুলিদ্বয় এভাবে একত্র করে বললেন, ক্বিয়ামাত ও আমাকে এমনিভাবে পাঠানো হয়েছে। [৫৩০১, ৬৫০৩; মুসলিম ৫২/২৬, হাঃ ২৯৫০, আহমাদ ২২৮৬০] (আ.প্র. ৪৫৬৭, ই.ফা. ৪৫৭২)

৬৫/৮০/১.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

(80) سُوْرَةُ عَبَسَ

সূরাহ (৮০) : ‘আবাসা

{عَبَسَ} وَتَوَلَّى كَلَحَ وَأَعْرَضَ وَقَالَ غَيْرُهُ مُطَهَّرَةٍ لَا يَمَسُّهَا إِلَّا الْمُطَهَّرُوْنَ وَهُمْ الْمَلَائِكَةُ وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ {فَالْمُدَبِّرَاتِ أَمْرًا} جَعَلَ الْمَلَائِكَةَ وَالصُّحُفَ مُطَهَّرَةً لِأَنَّ الصُّحُفَ يَقَعُ عَلَيْهَا التَّطْهِيْرُ فَجُعِلَ التَّطْهِيْرُ لِمَنْ حَمَلَهَا أَيْضًا {سَفَرَةٍ} الْمَلَائِكَةُ وَاحِدُهُمْ سَافِرٌ سَفَرْتُ أَصْلَحْتُ بَيْنَهُمْ وَجُعِلَتْ الْمَلَائِكَةُ إِذَا نَزَلَتْ بِوَحْيِ اللهِ وَتَأْدِيَتِهِ كَالسَّفِيْرِ الَّذِيْ يُصْلِحُ بَيْنَ الْقَوْمِ وَقَالَ غَيْرُهُ {تَصَدَّى} تَغَافَلَ عَنْهُ وَقَالَ مُجَاهِدٌ لَمَّا يَقْضِ {لمَاَّ يَقْضِي} أَحَدٌ مَا أُمِرَ بِهِ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {تَرْهَقُهَا} تَغْشَاهَا شِدَّةٌ {مُسْفِرَةٌ} مُشْرِقَةٌ {بِأَيْدِيْ سَفَرَةٍ} وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ كَتَبَةٍ {أَسْفَارًا} كُتُبًا {تَلَهَّى} تَشَاغَلَ يُقَالُ وَاحِدُ الْأَسْفَارِ سِفْرٌ.

عَبَسَ সে ভ্রূকুঞ্চিত করল এবং মুখ ফিরিয়ে নিল। مُطَهَّرَة অর্থ যারা পূত-পবিত্র, তারা ব্যতীত অন্য কেউ তা স্পর্শ করে না। এখানে পূত-পবিত্র বলে মালাইকাকে বোঝানো হয়েছে। উল্লিখিত আয়াতটি আল্লাহর বাণীঃ فَالْمُدَبِّرَاتِ أَمْرًا এর অনুরূপ। পূর্বের আয়াতে মালাক এবং সহীফা উভয়কেই مُطَهَّرَةً বলা হয়েছে। অথচ التَّطْهِيْرُ এর সম্পর্ক মূলতঃ সহীফার সঙ্গে, মালায়িকার সঙ্গে নয়। তবে মালাক যেহেতু উক্ত সহীফার হামিল ও বাহক, এই হিসাবে মালাককেও مُطَهَّرَةً বলা হয়েছে। سَفَرَةٍ অর্থ মালাক (ফেরেশতা)। এর এক বচন হচ্ছে سَافِرٌ।سَفَرْتُ أَصْلَحْتُ بَيْنَهُمْ আমি তাদের বিবাদ মিটিয়ে দিয়েছি। ওয়াহী অবতীর্ণ করত তা নাবীদের (নবীদের) পর্যন্ত পৌঁছানোর দায়িত্ব অর্পণ করে আল্লাহ্ রাববুল আলামীন মালাকগণকে السَّفِيْرِ (দূত) সদৃশ ঘোষণা করেছেন যিনি কওমের পরস্পর বিবাদ মীগোশতা করেন। অন্যান্য মুফাস্সির বলেছেন, تَصَدَّى সে এর থেকে অমনোযোগিতা প্রকাশ করেছে। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, لمَاَّ يَقْضِيْ তিনি তাকে যা আদেশ করেছেন, সে এখনও তা পুরাপুরি করেনি। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, تَرْهَقُهَا মানে সেগুলোকে আচ্ছন্ন করবে এক মহাবিপদ। مُسْفِرَةٌ উজ্জ্বল। بِأَيْدِيْ سَفَرَةٍ লিপিবদ্ধকারী ফেরেশতা। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) আরো বলেন, أَسْفَارًا কিতাবসমূহ। تَلَهَّى তুমি ব্যস্ত হলে। বলা হয়أَسْفَارِ এর একবচন سِفْرٌ।

৪৯৩৭
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ قَالَ سَمِعْتُ زُرَارَةَ بْنَ أَوْفَى يُحَدِّثُ عَنْ سَعْدِ بْنِ هِشَامٍ عَنْ عَائِشَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَثَلُ الَّذِيْ يَقْرَأُ الْقُرْآنَ وَهُوَ حَافِظٌ لَهُ مَعَ السَّفَرَةِ الْكِرَامِ الْبَرَرَةِ وَمَثَلُ الَّذِيْ يَقْرَأُ وَهُوَ يَتَعَاهَدُهُ وَهُوَ عَلَيْهِ شَدِيْدٌ فَلَهُ أَجْرَانِ.

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন, কুরআনের হাফিয পাঠক লিপিকর সম্মানিত মালাকের মত। খুব কষ্টদায়ক হওয়া সত্ত্বেও যে বারবার কুরআন মাজীদ পাঠ করে, সে দ্বিগুণ পুরস্কার পাবে। [মুসলিম ৬/৩৮, হাঃ ৭৯৮, আহমাদ ২৪৭২১] (আ.প্র. ৪৫৬৮, ই.ফা. ৪৫৭৩)

৬৫/৮৩/১.অধ্যায়ঃ
যেদিন সব মানুষ জগতসমূহের প্রতিপালকের সামনে দাঁড়াবে। (সূরাহ মুতাফ্ফিফীন ৮৩/৬)

(81) سُوْرَةُ إِذَا الشَّمْسُ كُوِّرَتْ

সূরাহ (৮১) : ইযাশশামসু কূউইরাত (আত্-তাকভীর)

{انْكَدَرَتْ} انْتَثَرَتْ وَقَالَ الْحَسَنُ {سُجِّرَتْ} ذَهَبَ مَاؤُهَا فَلَا يَبْقَى قَطْرَةٌ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {الْمَسْجُوْرُ} الْمَمْلُوْءُ وَقَالَ غَيْرُهُ {سُجِرَتْ} أَفْضَى بَعْضُهَا إِلَى بَعْضٍ فَصَارَتْ بَحْرًا وَاحِدًا {وَالْخُنَّسُ} تَخْنِسُ فِيْ مُجْرَاهَا تَرْجِعُ وَتَكْنِسُ تَسْتَتِرُ كَمَا تَكْنِسُ الظِّبَاءُ {تَنَفَّسَ} ارْتَفَعَ النَّهَارُ {وَالظَّنِيْنُ} الْمُتَّهَمُ وَالضَّنِيْنُ يَضَنُّ بِهِ وَقَالَ عُمَرُ {وَإِذَا النُّفُوْسُ زُوِّجَتْ} يُزَوَّجُ نَظِيْرَهُ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ ثُمَّ قَرَأَ {احْشُرُوا الَّذِيْنَ ظَلَمُوْا وَأَزْوَاجَهُمْ عَسْعَسَ} أَدْبَرَ.

انْكَدَرَتْ অর্থ বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়বে। হাসান (রহ.) বলেন, سُجِّرَتْ অর্থ পানি নিঃশেষ হয়ে যাবে, এক বিন্দু পানিও বাকী থাকবে না। মুহাজিদ (রহ.) বলেন, الْمَسْجُوْرُ অর্থ কানায় কানায় ভর্তি। মুজাহিদ ব্যতীত অন্যান্য মুফাসসির বলেছেন, سُجِرَتْ অর্থ একটি সমুদ্র আরেকটির সঙ্গে মিলিত হয়ে এক সমুদ্রে পরিণত হবে। وَالْخُنَّسُ অর্থ নিজের গতিপথে পশ্চাদপসরণকারী।تَكْنِسُ মানে সূর্যের আলোতে অদৃশ্য হয়ে যায়, যেমন হরিণ গা ঢাকা দেয়। تَنَفَّسَ অর্থ যখন দিনের আলো উদ্ভাসিত হয়। الظَّنِيْنُ অপবাদ দানকারী। الضَّنِيْنُ অর্থ বখিল, কৃপণ। ‘উমার (রাঃ) বলেছেন, وَإِذَا النُّفُوْسُ زُوِّجَتْ অর্থ প্রত্যেককে তার মত চরিত্রের লোকের সঙ্গে জান্নাত ও জাহান্নামে জুড়ে দেয়া হবে। পরে এ কথার সমর্থনে তিনি احْشُرُواالَّذِيْنَ ظَلَمُوْا وَأَزْوَاجَهُمْ عَسْعَسَ (একত্র করে যালিম ও তাদের সহচরগণকে) আয়াতংশটি পাঠ করলেন। عَسْعَسَ অর্থ অবসান হয়েছে, পশ্চাদপসরণ করেছে।

(82) سُوْرَةُ إِذَا السَّمَاءُ انْفَطَرَتْ

সূরাহ (৮২) : ইযাসসামাউ আনফাতারাত (আল-ইনফিতার)

وَقَالَ الرَّبِيْعُ بْنُ خُثَيْمٍ {فُجِّرَتْ} فَاضَتْ وَقَرَأَ الْأَعْمَشُ وَعَاصِمٌ {فَعَدَلَكَ} بِالتَّخْفِيْفِ وَقَرَأَهُ أَهْلُ الْحِجَازِ بِالتَّشْدِيْدِ وَأَرَادَ مُعْتَدِلَ الْخَلْقِ وَمَنْ خَفَّفَ يَعْنِيْ فِيْ أَيِّ صُوْرَةٍ شَاءَ إِمَّا حَسَنٌ وَإِمَّا قَبِيْحٌ أَوْ طَوِيْلٌ أَوْ قَصِيْرٌ.

রাবী ইবনু খুশাইম (রহ.) বলেন, فُجِّرَتْ অর্থ-প্রবাহিত হবে, আ‘মাশ এবং ওয়াসিম (রহ.) فَعَدَلَكَ তাখফীফ-এর সঙ্গে পড়তেন এবং হিজাযের অধিবাসী فَعَدَّلَكَ তাশদীদ-এর সঙ্গে পড়তেন। অর্থ তিনি তোমাকে সামঞ্জস্যপূর্ণ সৃষ্টি করেছেন। যারা فَعَدَلَكَ তাখফীফ-এর সঙ্গে পড়তেন, তারা বলেন, এর অর্থ হল, তিনি তোমাকে সুন্দর বা কুৎসিৎ; লম্বা খাটো যে আকারে ইচ্ছে, সৃষ্টি করেছেন।

(83) سُوْرَةُ وَيْلٌ لِلْمُطَفِّفِيْنَ

সূরাহ (৮৩) : ওয়াইলুললিল মুত্বাফফিফীন (মুতাফফিফীন)

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {بَلْ رَانَ} ثَبْتُ الْخَطَايَا {ثُوِّبَ} جُوْزِيَ وَقَالَ غَيْرُهُ {الْمُطَفِّفُ} لَا يُوَفِّيْ غَيْرَهُ. الرَّحِيْقُ : الخَمْرُ،{خِتامُه” مِسْكٌ}: طِيْنَهُ. {التَّسْنِيْمُ} : يَعْلو شَرَابَ أَهْلِ الجَنَّةِ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, بَلْرَانَ অর্থ গুনাহের জন্য। ثُوِّبَ অর্থ প্রতিদান দেয়া হল। মুজাহিদ ছাড়া অপরাপর মুসাসসির বলেছেন, الْمُطَفِّفُ ঐ লোক যে অন্যকে মাপে পূর্ণ মাত্রায় দেয় না। الرَّحِيْقُমদ বা পানীয়, خِتامُهচمِسْكٌ জান্নাতের মেশক এর সুগন্ধযুক্ত মাটি দ্বারা মোহর করা হয়েছে التَّسْنِيْمُ জান্নাতীদের জন্য উন্নতমানের পানীয়।

৪৯৩৮
إِبْرَاهِيْمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا مَعْنٌ قَالَ حَدَّثَنِيْ مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ {يَوْمَ يَقُوْمُ النَّاسُ لِرَبِّ الْعٰلَمِيْنَ} حَتَّى يَغِيْبَ أَحَدُهُمْ فِيْ رَشْحِهِ إِلَى أَنْصَافِ أُذُنَيْهِ.

‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) “যেদিন সব মানুষ জগতসমূহের প্রতিপালকের সামনে দাঁড়াবে” (সূরাহ মুতাফ্ফিফীন ৮৩/৬)-এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, সেদিন প্রত্যেক ব্যক্তির কানের লতা পর্যন্ত ঘামে ডুবে যাবে। [৬৫৩১; মুসলিম ৫১/১৫, হাঃ ২৮৬২, আহমাদ ৬০৭২] (আ.প্র. ৪৫৬৯, ই.ফা. ৪৫৭৪)

৬৫/৮৪/১.অধ্যায়ঃ
তার হিসাব-নিকাশ সহজেই নেয়া হবে। (সূরা আল-ইন্শিকাক ৮৪/৮)

(84) سُوْرَةُ إِذَا السَّمَاءُ انْشَقَّتْ

সূরাহ (৮৪) : ইযাসসামাউন্ শাকক্বাত (আল-ইনশিকাক)

قَالَ مُجَاهِدٌ {كِتَابَهُ بِشِمَالِهٰ} يَأْخُذُ كِتَابَهُ مِنْ وَرَاءِ ظَهْرِهِ {وَسَقَ} جَمَعَ مِنْ دَابَّةٍ {ظَنَّ أَنْ لَّنْ يَّحُوْرَ} أنْ لَا يَرْجِعَ إِلَيْنَا وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {يُوْعُوْنَ} يُسِرُّوْنَ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, كِتَابَهُ بِشِمَالِهٰ অর্থাৎ সে পেছন দিক হতে নিজের ‘আমালনামা গ্রহণ করবে। وَسَقَ অর্থ সে যেসব জীবজন্তুর সমাবেশ ঘটায়। ظَنَّ أَنْ لَّنْ يَّحُوْرَ অর্থ সে মনে করত যে, সে কখনই আমার কাছে ফিরে আসবে না। ইবনু ‘আববাস বলেন, يُوْعُوْنَ যা তারা গোপন রাখে।

৪৯৩৯
عَمْرُوْ بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ عُثْمَانَ بْنِ الْأَسْوَدِ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِيْ مُلَيْكَةَ سَمِعْتُ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم ح وحَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنْ عَائِشَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ح وحَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ عَنْ يَحْيَى عَنْ أَبِيْ يُوْنُسَ حَاتِمِ بْنِ أَبِيْ صَغِيْرَةَ عَنْ ابْنِ أَبِيْ مُلَيْكَةَ عَنِ الْقَاسِمِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَيْسَ أَحَدٌ يُحَاسَبُ إِلَّا هَلَكَ قَالَتْ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ جَعَلَنِي اللهُ فِدَاءَكَ أَلَيْسَ يَقُوْلُ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {فَأَمَّا مَنْ أُوْتِيَ كِتٰبَه” بِيَمِيْنِهٰلا – فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَّسِيْرًا} قَالَ ذَاكَ الْعَرْضُ يُعْرَضُوْنَ وَمَنْ نُوْقِشَ الْحِسَابَ هَلَكَ.

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, ক্বিয়ামাতের দিন যে ব্যক্তিরই হিসাব নেয়া হবে, সে ধ্বংস হয়ে যাবে। তিনি বলেন, তখন আমি বললাম, আল্লাহ্ আমাকে আপনার জন্য কুরবান করুন। আল্লাহ্ কি বলেননি, فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَسَوْفَ يُحَاسَبُ حِسَابًا يَسِيرًا “যার ‘আমালনামা তার ডান হস্তে দেয়া হবে, তার হিসাব নিকাশ সহজেই নেয়া হবে। এ কথা শুনে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এ আয়াতে ‘আমালনামা কীভাবে দেয়া হবে সে ব্যাপারে উল্লেখ করা হয়েছে, নতুবা যার খুঁটিনাটি হিসাব নেয়া হবে সে ধ্বংস হয়ে যাবে। [১০৩] (আ.প্র. ৪৫৭০, ই.ফা. ৪৫৭৫)

৬৫/৮৪/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ অবশ্যই তোমরা এক অবস্থা থেকে অন্যাবস্থায় উপনীত হবে। (সূরাহ আল-ইন্শিকাক ৮৪/১৯)

৪৯৪০
سَعِيْدُ بْنُ النَّضْرِ أَخْبَرَنَا هُشَيْمٌ أَخْبَرَنَا أَبُوْ بِشْرٍ جَعْفَرُ بْنُ إِيَاسٍ عَنْ مُجَاهِدٍ قَالَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {لَتَرْكَبُنَّ طَبَقًا عَنْ طَبَقٍ} حَالًا بَعْدَ حَالٍ قَالَ هَذَا نَبِيُّكُمْ صلى الله عليه وسلم

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, لَتَرْكَبُنَّ طَبَقًا عَنْ طَبَقٍ এর অর্থ হচ্ছে, এক অবস্থার পর আরেক অবস্থা। তোমাদের নাবীই (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এটা বলেছেন। (আ.প্র. ৪৫৭১, ই.ফা. ৪৫৭৬)

৬৫/৮৭/১.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

(85) سُوْرَةُ الْبُرُوْجِ

সূরাহ (৮৫) : আল-বুরূজ

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {الأُخْدُوْدِ} شَقٌّ فِي الْأَرْضِ {فَتَنُوْا} عَذَّبُوْا. وَقَالَ ابنُ عَبَّاسٍ : {الْوَدُوْدُ}. الحَبِيْبُ المَجِيْدُ الكَرِيْمُ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, الْأُخْدُوْدِ যমীনে ফাটল। فَتَنُوْا তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে। আর ইবনু ‘অববাস বলেন, الْوَدُوْدُ সম্মানিত দয়ালু বন্ধু

(86) سُوْرَةُ الطَّارِقِ

সূরাহ (৮৬) : আত্-তরিক্ব

هٌوَ النَّجْمُ، وَمَا أَتَاكَ لَيْلًا فَهُوَ طَارِقٌ. {النَّجْمُ الثَّاقِبُ} المُضِيْءُ. وَقَالَ مُجَاهِدٌ : {الثَّاقِبُ} الَّذِيْ يَتَوَهَّجُ. وَقَالَ مُجَاهِدٌ {ذَاتِ الرَّجْعِ} سَحَابٌ يَرْجِعُ بِالْمَطَرِ {ذَاتِ الصَّدْعِ} الْأرْضُ تَتَصَدَّعُ بِالنَّبَاتِ. وَقَالَ ابنُ عَبَّاسٍ : {لَقَوْل فَضْلٌ} : لَحقٌّ. {لَّمَّاعَلَيْهَاحَافِظٌ} إلَّا عَلَيْهَا حَافِظٌ.

সেটি নক্ষত্র, আর যা তোমার নিকট রাতের বেলায় আসে তাই হচ্ছে তরিক। النَّجْمُ الثَّاقِبُ উজ্জ্বল নক্ষত্র। মুজাহিদ বলেন, الثَّاقِبُ যা চকমক করে। মুজাহিদ বলেন, ذَاتِ الرَّجْعِ অর্থ ঐ মেঘ যা বৃষ্টি নিয়ে আসে। ذَاتِ الصَّدْعِ অর্থ ঐ যমীন যা উদ্ভিদ বের হওয়ার সময় ফেটে যায়। আর ইবনু ‘আববাস বলেন, لَقَوْل فَضْلٌ অবশ্যই তা সত্য কথা। لَمَّا عَلَيْهَا حَافِظٌ প্রত্যেক আত্মার উপর রক্ষণাবেক্ষণকারী আছে।

(87) سُوْرَةُ سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلٰى

সূরাহ (৮৭) : সাবিবহিস্মা রাবিবকাল আ‘লা (আল-আ‘লা)

وَقَالَ مُجَاهِدٌ : {قَدَّرَ فَهَدٰى} قَدَّرَ للإنْسَانِ الشقاءَ والسَّعادَةَ وَهَدَى الْأنْعَامَ لِمَرَاتِعها.وَقَالَ ابنُ عَبَّاسٍ {غُثَآءً أَحْوٰى}هَشِيْمًا مُتَغَيِّرًا

মুজাহিদ বলেন, قَدَّرَ فَهَدٰى মানুষের জন্য ভাল-মন্দের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন। পশুপালকে চারণভূমিতে পথ দেখিয়েছেন। এবং ইবনু ‘আববাস বলেন, غُثَآءً أَحْوٰى চূর্ণ বিচূর্ণ তৃণাদি যা পরিবর্তিত হয়ে গেছে।

৪৯৪১
عَبْدَانُ قَالَ أَخْبَرَنِيْ أَبِيْ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنِ الْبَرَاءِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ أَوَّلُ مَنْ قَدِمَ عَلَيْنَا مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مُصْعَبُ بْنُ عُمَيْرٍ وَابْنُ أُمِّ مَكْتُوْمٍ فَجَعَلَا يُقْرِئَانِنَا الْقُرْآنَ ثُمَّ جَاءَ عَمَّارٌ وَبِلَالٌ وَسَعْدٌ ثُمَّ جَاءَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فِيْ عِشْرِيْنَ ثُمَّ جَاءَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَمَا رَأَيْتُ أَهْلَ الْمَدِيْنَةِ فَرِحُوْا بِشَيْءٍ فَرَحَهُمْ بِهِ حَتَّى رَأَيْتُ الْوَلَائِدَ وَالصِّبْيـَانَ يَقُوْلُوْنَ هَـذَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ جَاءَ فَمَا جَاءَ حَتَّى قَرَأْتُ {سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلٰى} فِيْ سُوَرٍ مِثْلِهَا.

বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহাবীদের মধ্যে সর্ব প্রথম হিজরাত করে আমাদের কাছে এসেছিলেন, তাঁরা হলেন মুস‘আব ইব্‌নু ‘উমায়র (রাঃ) ও ইব্‌নু উম্মু মাকতূম (রাঃ)। তাঁরা দু’জন এসেই আমাদেরকে কুরআন পড়াতে শুরু করেন। এরপর এলেন, আম্মার, বিলাল ও সা‘দ (রাঃ)। অতঃপর আসলেন বিশজন সাহাবীসহ ‘উমার ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ)। অতঃপর এলেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। বারাআ (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর আগমনে মাদীনাহ্বাসীকে এত অধিক খুশী হতে দেখেছি যে, অন্য কোন বিষয়ে তাদেরকে ততটা খুশী হতে আর কখনো দেখিনি। এমনকি আমি দেখেছি, ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা পর্যন্ত বলছিল যে, ইনিই তো আল্লাহ্‌র সেই রসূল, যিনি আগমন করেছেন। বারাআ ইব্‌নু ‘আযিব (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মদিনায় আসার আগেই আমি سَبِّحْ اسْمَ رَبِّكَ الأَعْلَى এবং ও রকম আরো কিছু সূরাহ শিখে নিয়েছিলাম। (আ.প্র. ৪৫৭২, ই.ফা. ৪৫৭৭)

৬৫/৯১/১.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

(88) سُوْرَةُ هَلْ أَتَاكَ حَدِيْثُ الْغَاشِيَةِ

সূরাহ (৮৮) : হাল ‘আত্বা-কা হাদীসুল গাশিয়াহ (আল-গাশিয়াহ)

وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {عَامِلَةٌ نَّاصِبَةٌ} النَّصَارَى وَقَالَ مُجَاهِدٌ {عَيْنٍ اٰنِيَةٍ}بَلَغَ إِنَاهَا وَحَانَ شُرْبُهَا {حَمِيْمٍ اٰنٍ} بَلَغَ إِنَاهُ {لَا تَسْمَعُ فِيْهَا لَاغِيَةً} شَتْمًا وَيُقَالُ {الضَّرِيْعُ} نَبْتٌ يُقَالُ لَهُ الشِّبْرِقُ يُسَمِّيْهِ أَهْلُ الْحِجَازِ الضَّرِيْعَ إِذَا يَبِسَ وَهُوَ سُمٌّ {بِمُسَيْطِرٍ} بِمُسَلَّطٍ وَيُقْرَأُ بِالصَّادِ وَالسِّيْنِ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {إِيَابَهُمْ} مَرْجِعَهُمْ.

ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, عَامِلَةٌ نَّاصِبَةٌ (ক্লিষ্ট-ক্লান্ত) বলে খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে বোঝানো হয়েছে। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, عَيْنٍاٰنِيَةٍটগবগে গরম পানিতে কানায় কানায় ভর্তি ঝরণাধারা। حَمِيْمٍاٰنٍ চরম ফুটন্ত পানি। لَا تَسْمَعُ فِيْهَا لَاغِيَةً সেখানে তারা গালি-গালাজ শুনবে না। الشِّبْرِقُএক প্রকার কাঁটাওয়ালা গুল্ম। (তা যখন সবুজ থাকে তখন) তাকে الضَّرِيْعَবলা হয়, আর যখন শুকিয়ে যায়, তখন হিজাযবাসীরা একেই الضَّرِيْعُ বলে। এ এক প্রকার বিষাক্ত আগাছা। بِمُسَيْطِرٍ কর্মবিধায়ক। শব্দটি س ও ص উভয় বর্ণ দিয়েই পড়া হয়। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, إِيَابَهُمْ তাদের ফিরে আসার জায়গা।

(89) سُوْرَةُ وَالْفَجْرِ

সূরাহ (৮৯) আল-ফাজর

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {الْوَتْرُ} اللهُ {إِرَمَ ذَاتِ الْعِمَادِ} يَعْنِي الْقَدِيْمَةَ وَالْعِمَادُ أَهْلُ عَمُوْدٍ لَا يُقِيْمُوْنَ {سَوْطَعَذَابٍ} الَّذِيْ عُذِّبُوْا بِهِ {أَكْلًا لَّمًّا} السَّفُّ وَ{جَمًّا} الْكَثِيْرُ وَقَالَ مُجَاهِدٌ كُلُّ شَيْءٍ خَلَقَهُ فَهُوَ شَفْعٌ السَّمَاءُ شَفْعٌ {وَالْوَتْرُ} اللهُ تَبَارَكَ وَتَعَالَى وَقَالَ غَيْرُهُ {سَوْطَ عَذَابٍ} كَلِمَةٌ تَقُوْلُهَا الْعَرَبُ لِكُلِّ نَوْعٍ مِنَ الْعَذَابِ يَدْخُلُ فِيْهِ السَّوْطُ {لَبِالْمِرْصَادِ} إِلَيْهِ الْمَصِيْرُ {تَحَآضُّوْنَ} تُحَافِظُوْنَ وَتَحُضُّوْنَ تَأْمُرُوْنَ بِإِطْعَامِهِ {الْمُطْمَئِنَّةُ} الْمُصَدِّقَةُ بِالثَّوَابِ وَقَالَ الْحَسَنُ {يٰٓأَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ} إِذَا أَرَادَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ قَبْضَهَا اطْمَأَنَّتْ إِلَى اللهِ وَاطْمَأَنَّ اللهُ إِلَيْهَا وَرَضِيَتْ عَنْ اللهِ وَرَضِيَ اللهُ عَنْهَا فَأَمَرَ بِقَبْضِ رُوْحِهَا وَأَدْخَلَهَا اللهُ الْجَنَّةَ وَجَعَلَهُ مِنْ عِبَادِهِ الصَّالِحِيْنَ وَقَالَ غَيْرُهُ {جَابُوْا} نَقَبُوْا مِنْ جِيْبَ الْقَمِيْصُ قُطِعَ لَهُ جَيْبٌ يَجُوْبُ الْفَلَاةَ يَقْطَعُهَا {لَمًّا} لَمَمْتُهُ أَجْمَعَ أَتَيْتُ عَلَى آخِرِهِ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, الْوَتْرُ মানে বেজোড়। এর দ্বারা আল্লাহ্ তা‘আলাকে বোঝানো হয়েছে। إِرَمَذَاتِ الْعِمَادِ দ্বারা প্রাচীন এক জাতিকে বোঝানো হয়েছে। وَالْعِمَادُ খুঁটি ও স্তম্ভের মালিক, যারা স্থায়ীভাবে কোথাও বসবাস করে না; তারা তাঁবু পেতে জীবন যাপন করে (যাযাবর)। سَوْطَعَذَابٍ যাদেরকে তা দিয়ে শাস্তি প্রদান করা হবে।أَكْلًا لَّمًّاসম্পূর্ণরূপে ভক্ষণ করা। جَمًّا অতিশয়। মুহাজিদ (রহ.) বলেন, আল্লাহর সকল সৃষ্টিই হল জোড়ায় জোড়ায়। সুতরাং আসমানও জোড়া বাঁধা; وَالْوَتْرُ তবে একমাত্র আল্লাহ্ তা‘আলাই হলেন বেজোড়। মুজাহিদ (রহ.) ব্যতীত অন্য সকলেই বলেছেন, আরবরা যাবতীয় শাস্তির ব্যাপারে سَوْطَعَذَابٍ শব্দটি ব্যবাহর করে থাকে। যে কোন শাস্তি سَوْطَ عَذَابٍ এর অন্তর্ভুক্ত। لَبِالْمِرْصَادِ তাঁর কাছেই ফিরে যেতে হবে। تَحَاضُّوْنَ তোমরা হেফাজত করে থাক। تَحَآضُّوْنَ তোমরা খাদ্য দান করতে আদেশ করে থাক। الْمُطْمَئِنَّةُ সওয়াবকে সত্য বলে বিশ্বাসকারী। হাসান (রাঃ) বলেন, يٓٓأَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ দ্বারা এমন আত্মাকে বোঝানো হয়েছে, যে আত্মাকে আল্লাহ্ মৃত্যুদানের ইচ্ছে করলে সে আল্লাহর প্রতি এবং আল্লাহ্ও তার প্রতি পুরোপুরি প্রশান্ত থাকেন। এরপর আল্লাহ্ তার রূহ কবয করার নির্দেশ দেন এবং জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে তাকে তাঁর সৎকর্মশীল বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। হাসান (রহ.) ব্যতীত অন্যরা বলেছেন جَابُوْا তারা ছিদ্র করেছে; যে শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে جِيْبَالْقَمِيْص থেকে । যার অর্থ হচ্ছে, জামার পকেট কাটা হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ বলা হয়ে থাকে يَجُوْبُالْفَلَاةَ সে মাঠ অতিক্রম করছে। لَمَّالَمَمْتُهُأَجْمَعَ বলা হলে এর অর্থ হবে- আমি এর শেষ প্রান্তে চলে এসেছি।

(90) سُوْرَةُ لَا أُقْسِمُ

সূরাহ (৯০) : লা- উক্বসিমু (আল-বালাদ)

وَقَالَ مُجَاهِدٌ وَأَنْتَ حِلٌّ {بِهٰذَا الْبَلَدِ} بِمَكَّةَ لَيْسَ عَلَيْكَ مَا عَلَى النَّاسِ فِيْهِ مِنْ الإِثْمِ {وَوَالِدٍ} آدَمَ {وَمَا وَلَدَ}{لِبَدًا} كَثِيْرًا {وَالنَّجْدَيْنِ} الْخَيْرُ وَالشَّرُّ {مَسْغَبَةٍ} مَجَاعَةٍ {مَتْرَبَةٍ} السَّاقِطُ فِي التُّرَابِ يُقَالُ {فَلَا اقْتَحَمَ الْعَقَبَةَ} فَلَمْ يَقْتَحِمْ الْعَقَبَةَ فِي الدُّنْيَا ثُمَّ فَسَّرَ الْعَقَبَةَ فَقَالَ {وَمَآ أَدْرَاكَ مَا الْعَقَبَةُ فَكُّ رَقَبَةٍ أَوْ إِطْعَامٌ فِيْ يَوْمٍ ذِيْ مَسْغَبَةٍ}{فيكَبَدٍ} : شِدَّة.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, بِهٰذَا الْبَلَدِ দ্বারা মক্কা্কে বোঝানো হয়েছে। অর্থাৎ একানে যুদ্ধ কররে অন্য মানুষের উপর যে গুনাহ হবে, তোমার তা হবে না। وَوَالِدٍ আদম (আঃ)। وَمَا وَلَدَ যাসে জন্ম দেয়, لِبَدًا প্রচুর। وَ النَّجْدَيْنِ ভাল-মন্দ, কল্যাণ-অকল্যাণ। مَسْغَبَةٍ ক্ষুধা। مَتْرَبَةٍ ধূলি লুন্ঠিত। বলা হয় فَلَااقْتَحَمَ الْعَقَبَةَ সে দুনিয়ায় দুর্গম গিরিপথে চলাচল করেনি। এরপর আল্লাহর তা‘আলা এর ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ইরশাদ করেছেন, তুমি কি জান দুর্গম গিরিপথ কী? তা হচ্ছে দাস মুক্ত করা, অথবা দুর্ভিক্ষের দিনে আহার্য দান।

(91) سُوْرَةُ وَالشَّمْسِ وَضُحَاهَا

সূরাহ (৯১) : ওয়াশশামসি ওয়াযুহা-হা (আশ্-শাম্স)

وَقَالَ مُجَاهِدٌ : {ضُحَاهَا} ضَوْءَها {إذَاتَلَاهَا} تَبِعَها. وَ{طَحَاهَا} دَحَاها {دَسَّاهَا} أغْوَاها. {فَألْهَمَهَا} : عَرَّفَها الشقَّاءَ وَالسَّعادَةَ. وَقَالَ مُجَاهِدٌ : {بِطَغْوَاهَا}بِمعاصيها{وَلَايَخَافُعُقْبَاهَا} عُقْبَى أحَدٍ

মুহাজিদ (রহ.) বলেন, ضُحَاهَا তার (সূর্যের) রশ্নি। إذَا تَلاَهَا যখন (চন্দ্র) তার অনুসরণ করে। طَحَاهَا যিনি তাকে (যমীনকে) বিস্তৃত করেছেন। دَسَّاهَا যে তাকে (আত্মাকে) ভ্রষ্টতায় নিক্ষেপ করেছে। فَألْهَمَهَا অতঃপর তার (আত্মার) সৌভাগ্য ও দুর্ভাগ্যের পরিচয় দান করেছেন। بِطَغْوَاهَا অবাধ্যতা বা নাফরমানীর কারণে। وَلَايَخَافُعُقْبَاهَا কারো পরিণামের জন্য আল্লাহ্ আশংকা করেন না।

৪৯৪২
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ أَنَّهُ أَخْبَرَهُ عَبْدُ اللهِ بْنُ زَمْعَةَ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَخْطُبُ وَذَكَرَ النَّاقَةَ وَالَّذِيْ عَقَرَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم{إِذْمانْبَعَثَ أَشْقَاهَا} انْبَعَثَ لَهَا رَجُلٌ عَزِيْزٌ عَارِمٌ مَنِيْعٌ فِيْ رَهْطِهِ مِثْلُ أَبِيْ زَمْعَةَ وَذَكَرَ النِّسَاءَ فَقَالَ يَعْمِدُ أَحَدُكُمْ فَيَجْلِدُ امْرَأَتَهُ جَلْدَ الْعَبْدِ فَلَعَلَّهُ يُضَاجِعُهَا مِنْ آخِرِ يَوْمِهِ ثُمَّ وَعَظَهُمْ فِيْ ضَحِكِهِمْ مِنْ الضَّرْطَةِ وَقَالَ لِمَ يَضْحَكُ أَحَدُكُمْ مِمَّا يَفْعَلُ وَقَالَ أَبُوْ مُعَاوِيَةَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ زَمْعَةَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِثْلُ أَبِيْ زَمْعَةَ عَمِّ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ.

‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু যাম‘আহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে খুতবাহ দিতে শুনেছেন, খুতবায় তিনি কওমে সামূদের প্রতি প্রেরিত উষ্ট্রী ও তার পা কাটার কথা উল্লেখ করলেন। তারপর রসূল إِذْ انْبَعَثَ أَشْقَاهَا-এর ব্যাখ্যায় বললেন, ঐ উষ্ট্রীটিকে হত্যা করার জন্য এক হতভাগ্য শক্তিশালী ব্যক্তি তৎপর হয়ে উঠ যে সে সমাজের মধ্যে আবূ যাম‘আর মত প্রভাবশালী ও অত্যন্ত শক্তিধর ছিল। এ খুতবায় তিনি মেয়েদের সম্পর্কে আলোচনা করেছিলেন। তিনি বলেছেন, তোমাদের মধ্যে এমন লোকও আছে যে তার স্ত্রীকে ক্রীতদাসের মত মারপিট করে; কিন্তু ঐ দিনের শেষেই সে আবার তার সঙ্গে এক বিছানায় মিলিত হয়। তারপর তিনি বায়ু নিঃসরণের পর হাসি দেয়া সম্পর্কে বললেন, তোমাদের কেউ কেউ হাসে সে কাজটির জন্য যে কাজটি সে নিজেও করে। (অন্য সনদে) আবূ মু‘আবীয়াহ (রহ.)….‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু আবূ যাম‘আ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যুবায়র ইব্‌নু আওআমের চাচা আবূ যাম‘আর মত। [৩৩৭৭; মুসলিম ৫১/১৩, হাঃ ২৮৫৫, আহমাদ ১৬২২২] (আ.প্র. ৪৫৭৩, ই.ফা. ৪৫৭৮)

৬৫/৯২/১.অধ্যায়ঃ
‘‘শপথ দিবাভাগের, যখন তা উদ্ভাসিত হয়।’’ (সূরাহ আল-লাইল ৯২/২)

(92) سُوْرَةُ وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى

সূরাহ (৯২) : ওয়াল লাইলি ইযা ইয়াগশা- (আল-লায়ল)

وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {وَكَذَّبَ بِالْحُسْنٰى} بِالْخَلَفِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {تَرَدّٰى} مَاتَ وَ {تَلَظّٰى} تَوَهَّجُ وَقَرَأَ عُبَيْدُ بْنُ عُمَيْرٍ تَتَلَظَّى.

ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, وَكَذَّبَ بِالْحُسْنٰى অর্থ প্রতিদানে অস্বীকার করল। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, تَرَدّٰى যখন যে মরে যাবে। تَلَظّٰى মানে লেলিহান অগ্নি্। ‘উবায়দ ইবনু উমায়র (রাঃ) শব্দটিকে تَتَلَظّٰى পড়তেন।

৪৯৪৩
قَبِيْصَةُ بْنُ عُقْبَةَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَلْقَمَةَ قَالَ دَخَلْتُ فِيْ نَفَرٍ مِنْ أَصْحَابِ عَبْدِ اللهِ الشَّأْمَ فَسَمِعَ بِنَا أَبُو الدَّرْدَاءِ فَأَتَانَا فَقَالَ أَفِيْكُمْ مَنْ يَقْرَأُ فَقُلْنَا نَعَمْ قَالَ فَأَيُّكُمْ أَقْرَأُ فَأَشَارُوْا إِلَيَّ فَقَالَ اقْرَأْ فَقَرَأْتُ {وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشٰى لا – وَالنَّهَارِ إِذَا تَجَلّٰى لا – وَمَا خَلَقَ الذَّكَرَ وَالْأُنْثٰٓى لا} قَالَ أَنْتَ سَمِعْتَهَا مِنْ فِيْ صَاحِبِكَ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ وَأَنَا سَمِعْتُهَا مِنْ فِي النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهَؤُلَاءِ يَأْبَوْنَ عَلَيْنَا.

‘আলক্বামাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ)-এর একদল সাথীর সঙ্গে সিরিয়া গেলাম। আবূদ্ দারদা আমাদের কাছে এসে বললেন, কুরআন পাঠ করতে পারেন, এমন কেউ আছেন কি? আমরা বললাম, হাঁ, আছে। এরপর তিনি বললেন, তাহলে আপনাদের মাঝে উত্তম কারী কে? লোকেরা ইশারা করে আমাকে দেখিয়ে দিলে তিনি আমাকে বললেন, পড়ুন, আমি পড়লাম وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى وَالنَّهَارِ إِذَا تَجَلَّى وَالذَّكَرِ وَالأُنْثَى তিলাওয়াত শুনে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি এ সূরাহ আপনার উস্তাদ ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু মাস‘উদের মুখে শুনেছেন? আমি বললাম, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, আমি এ সূরাটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মুখে শুনেছি। কিন্তু তারা (সিরিয়াবাসী) তা অস্বীকার করছে। [৩২৮৭] (আ.প্র. ৪৫৭৪, ই.ফা. ৪৫৭৯)

৬৫/৯২/২.অধ্যায়ঃ
‘‘এবং শপথ তাঁর, যিনি নর ও নারী সৃষ্টি করেছেন।’’ (সূরাহ আল-লায়ল ৯৩/৩)

৪৯৪৪
عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ قَدِمَ أَصْحَابُ عَبْدِ اللهِ عَلَى أَبِي الدَّرْدَاءِ فَطَلَبَهُمْ فَوَجَدَهُمْ فَقَالَ أَيُّكُمْ يَقْرَأُ عَلَى قِرَاءَةِ عَبْدِ اللهِ قَالَ كُلُّنَا قَالَ فَأَيُّكُمْ أَحْفَظُ فَأَشَارُوْا إِلَى عَلْقَمَةَ قَالَ كَيْفَ سَمِعْتَهُ يَقْرَأُ {وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشٰى} قَالَ عَلْقَمَةُ {وَالذَّكَرِ وَالْأُنْثٰى} قَالَ أَشْهَدُ أَنِّيْ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ هَكَذَا وَهَؤُلَاءِ يُرِيْدُوْنِيْ عَلَى أَنْ أَقْرَأَ {وَمَا خَلَقَ الذَّكَرَ وَالْأُنْثٰى} وَاللهِ لَا أُتَابِعُهُمْ.

ইব্রাহীম (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু মাস‘ঊদ (রাঃ)-এর কতক সঙ্গী আবুদ্ দারদা (রাঃ)-এর কাছে আসলেন। তিনিও তাদেরকে তালাশ করে পেয়ে গেলেন। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের মধ্যে ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু মাস‘ঊদ (রাঃ)-এর কিরাআত অনুযায়ী কে কুরআন পাঠ করতে পারে। ‘আলক্বামাহ (রহ.) বললেন, আমরা সকলেই। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস কররেন, তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে ভাল হাফিয কে? সকলেই ‘আলক্বামার প্রতি ইশারা করলে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু মাস‘ঊদকে وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَى কীভাবে পড়তে শুনেছেন? ‘আলক্বামাহ (রহ.) বললেন, আমি তাকে وَالذَّكَرِ وَالْأُنْثَى পড়তে শুনেছি। এ কথা শুনে আবুদ্ দারদা (রাঃ) বললেন, তোমরা সাক্ষী থাক, আমিও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে এভাবেই পড়তে শুনেছি। অথচ এসব (সিরিয়াবাসী) লোকেরা চাচ্ছে, আমি যেন আয়াতটি وَمَا خَلَقَ الذَّكَرَ وَالْأُنْثَى পড়ি। আল্লাহ্‌র কসম! আমি তাদের কথা মানবো না। [৩২৮৭] (আ.প্র. ৪৫৭৫, ই.ফা. ৪৫৮০)

৬৫/৯২/৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ সুতরাং কেউ দান করলে মুত্তাকী হলে। (সূরাহ আল-লাইল ৯২/৫)

৪৯৪৫
أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيْ بَقِيْعِ الْغَرْقَدِ فِيْ جَنَازَةٍ فَقَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا وَقَدْ كُتِبَ مَقْعَدُهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَمَقْعَدُهُ مِنْ النَّارِ فَقَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَلَا نَتَّكِلُ فَقَالَ اعْمَلُوْا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ ثُمَّ قَرَأَ {فَأَمَّا مَنْ أَعْطٰى وَاتَّقٰى لا (5) وَصَدَّقَ بِالْـحُسْنٰى لا (6) فَسَنُيَسِّرُه” لِلْيُسْرٰى}. إلى قَوْلِهِ : {لِلْعُسْرٰى}.

‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বাকীউল গারকাদ নামক স্থানে এক জানাযায় আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম। সে সময় তিনি বলেছিলেন, তোমাদের মধ্যে এমন কোন ব্যক্তি নেই, যার স্থান জান্নাত বা জাহান্নামে নির্ধারিত হয়নি। এ কথা শুনে সকলেই বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! তাহলে কি আমরা ভাগ্যের উপর নির্ভর করে বসে থাকব? উত্তরে তিনি বললেন, তোমরা ‘আমাল করতে থাক। কারণ, যাকে যে ‘আমালের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য সে ‘আমাল সহজ করে দেয়া হয়েছে। এরপর তিনি পাঠ কররেন, সুতরাং কেউ দান করলে, মুত্তাকী হলে এবং যা উত্তম তা গ্রহণ করলে, আমি তার জন্য সুগম করে দেব সহজ পথ এবং কেউ কার্পণ্য করলেও নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে, যার যা উত্তম তা ত্যাগ করলে, তার জন্য আমি সহজ করে দেব কঠোর পরিণামের পথ। [১৩৬২] (আ.প্র. ৪৫৪৭৬, ই.ফা. ৪৫৮১)

৬৫/৯২/৪.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ এবং যা উত্তম তা সত্য বলে গ্রহণ করলে। (সূরাহ আল-লাইল ৯২/৬)

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا قُعُوْدًا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ الْحَدِيْثَ نَحْوَهُ.

‘আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে উপবিষ্ট ছিলাম। তারপর তিনি উপরোক্ত হাদীসটি বর্ণনা করলেন। (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৫৪৭৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৫৮২)

৬৫/৯২/৫.অধ্যায়ঃ
‘‘আমি তার জন্য সুগম করে দেব সহজ পথ।’’ (সূরাহ আল-লাইল ৯২/৭)

৪৯৪৬
بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ فِيْ جَنَازَةٍ فَأَخَذَ عُوْدًا يَنْكُتُ فِي الْأَرْضِ فَقَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا وَقَدْ كُتِبَ مَقْعَدُهُ مِنْ النَّارِ أَوْ مِنَ الْجَنَّةِ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَلَا نَتَّكِلُ قَالَ اعْمَلُوْا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ {فَأَمَّا مَنْ أَعْطٰى وَاتَّقٰى لا (5) وَصَدَّقَ بِالْـحُسْنٰى} الْآيَةَ قَالَ شُعْبَةُ وَحَدَّثَنِيْ بِهِ مَنْصُوْرٌ فَلَمْ أُنْكِرْهُ مِنْ حَدِيْثِ سُلَيْمَانَ.

‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি কোন একটি জানাযায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। এরপর তিনি একটি কাঠি হাতে নিয়ে এর দ্বারা মাটি খোঁচাতে খোঁচাতে বললেন, তোমাদের মাঝে এমন কেউ নেই, যার স্থান জান্নাতে বা জাহান্নামে নির্দিষ্ট হয়নি। এ কথা শুনে সকলেই বললেন, তাহলে কি আমরা ভাগ্যের উপর ভরসা করে বসে থাকব? উত্তরে তিনি বললেন, তোমরা ‘আমাল করতে থাক। কারণ, যাকে যে ‘আমালের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য সে ‘আমালকে সহজ করে দেয়া হবে। এরপর তিনি পাঠ করলেন, সুতরাং কেউ দান করলে, মুতআকী হলে এবং যা উত্তম তা গ্রহণ করলে, আমি তার জন্য সুগম করে দেব সহজপথ। আর কেউ কার্পণ্য কররে, নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে ও যার যা উত্তম তা ত্যাগ করলে তার জন্য আমি সুগম করে দেব কঠোর পরিণামের পথ। শু‘বাহ (রহ.) বলেন, উপরোক্ত হাদীসটি আমার কাছে মানসূর বর্ণনা করেছেন। তাকে আমি সুলায়মানের হাদীসের উল্টো মনে করেনি। [১৩৬২] (আ.প্র. ৪৫৭৮, ই.ফা. ৪৫৮৩)

৬৫/৯২/৬.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ এবং কেউ কার্পণ্য করলে ও নিজকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে। (সূরাহ আল-লাইল ৯২/৮)

৪৯৪৭
يَحْيَى حَدَّثَنَا وَكِيْعٌ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ عَلِيٍّ عَلَيْهِ السَّلَام قَالَ كُنَّا جُلُوْسًا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا وَقَدْ كُتِبَ مَقْعَدُهُ مِنَ الْجَنَّةِ وَمَقْعَدُهُ مِنْ النَّارِ فَقُلْنَا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَلَا نَتَّكِلُ قَالَ لَا اعْمَلُوْا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ ثُمَّ قَرَأَ {فَأَمَّا مَنْ أَعْطٰى وَاتَّقٰى لا (5) وَصَدَّقَ بِالْـحُسْنٰى لا (6) فَسَنُيَسِّرُه” لِلْيُسْرٰى} إِلَى قَوْلِهِ {فَسَنُيَسِّرُهُ لِلْعُسْرٰى}.

‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে উপবিষ্ট ছিলাম। এ সময় তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার স্থান জান্নাতে বা জাহান্নামে নির্দিষ্ট হয়নি। এ কথা শুনে আমরা বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! তাহলে কি আমরা ভাগ্যের উপর নির্ভর করে বসে থাকব? তিনি বললেন, না তোমরা ‘আমাল করতে থাক। কারণ, যাকে যে ‘আমালের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে তার জন্য সে ‘আমালকে সহজ করে দেয়া হবে। এরপর তিনি পাঠ করলেন, কাজেই কেউ দান করলে, মুত্তাকী হলে এবং যা উত্তম তা গ্রহণ করলে আমি তার জন্য সুগম করে দেব সহজ পথ এবং কেউ কার্পণ্য করলে, নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে, আর যা উত্তম তা ত্যাগ করলে, তার জন্য আমি সুগম করে দেব কঠোর পরিণামের পথ। [১৩৬২] (আ.প্র. ৪৫৭৯, ই.ফা. ৪৫৮৪)

৬৫/৯২/৭.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আর যা উত্তম তা অস্বীকার করলে। (সূরাহ আল-লাইল ৯২/৯)

৪৯৪৮
عُثْمَانُ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كُنَّا فِيْ جَنَازَةٍ فِيْ بَقِيْعِ الْغَرْقَدِ فَأَتَانَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَعَدَ وَقَعَدْنَا حَوْلَهُ وَمَعَهُ مِخْصَرَةٌ فَنَكَّسَ فَجَعَلَ يَنْكُتُ بِمِخْصَرَتِهِ ثُمَّ قَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ وَمَا مِنْ نَفْسٍ مَنْفُوْسَةٍ إِلَّا كُتِبَ مَكَانُهَا مِنَ الْجَنَّةِ وَالنَّارِ وَإِلَّا قَدْ كُتِبَتْ شَقِيَّةً أَوْ سَعِيْدَةً قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَلَا نَتَّكِلُ عَلَى كِتَابِنَا وَنَدَعُ الْعَمَلَ فَمَنْ كَانَ مِنَّا مِنْ أَهْلِ السَّعَادَةِ فَسَيَصِيْرُ إِلَى عَمَلِ أَهْلِ السَّعَادَةِ وَمَنْ كَانَ مِنَّا مِنْ أَهْلِ الشَّقَاءِ فَسَيَصِيْرُ إِلَى عَمَلِ أَهْلِ الشَّقَاوَةِ قَالَ أَمَّا أَهْلُ السَّعَادَةِ فَيُيَسَّرُوْنَ لِعَمَلِ أَهْلِ السَّعَادَةِ وَأَمَّا أَهْلُ الشَّقَاوَةِ فَيُيَسَّرُوْنَ لِعَمَلِ أَهْلِ الشَّقَاءِ ثُمَّ قَرَأَ {فَأَمَّا مَنْ أَعْطٰى وَاتَّقٰى لا (5) وَصَدَّقَ بِالْـحُسْنٰى}الْآيَةَ.

‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা বাকীউল গারকাদ নামক স্থানে একটি জানাযায় উপস্থিত ছিলাম। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের কাছে এসে বসলেন। আমরাও তাঁর চারপাশে গিয়ে বসলাম। এ সয় তাঁর হাতে একটি ছড়ি ছিল। তিনি তার মাতাখানা নামিয়ে, এর দ্বারা মাটি খুঁড়তে শুরু করলেন। এরপর বললেন, তোমাদের কেউ এমন নেই অথবা বললেন, কোন সৃষ্টি এমন নেই) জান্নাতে বা জাহান্নামে যার স্থান নির্দিষ্ট হয়নি। কিংবা তাকে ভাগ্যবান বা হতভাগা লেখা হয়নি। এ কথা শুনে এক সহাবী বললেন, আমরা তাহলে ‘আমাল ত্যাগ করে আমাদের লিখিত ভাগ্যের উপর কি নির্ভয় করে বসব? আমাদের মধ্যে যে সৌভাগ্যবান, সে তো সৌভাগ্যবান ব্যক্তিদের মাঝেই শামিল হয়ে যাবে, আর আমাদের মাঝে যে হতভাগ্য, সে তো হতভাগা লোকদের আমলের দিকেই এগিয়ে যাবে। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সৌভাগ্যের অধিকারী লোকদের জন্য সৌভাগ্য লাভ করার মত ‘আমাল সহজ করে দেয়া হবে। আর দুর্ভাগ্যের অধিকারী লোকদের জন্য দুর্ভাগ্য লাভ করার মত ‘আমাল সহজ করে দেয়া হবে। এরপর তিনি পাঠ করলেন, “সুতরাং কেউ দান করলে, মুত্তাকী হলে এবং যা উত্তম তা গ্রহণ করলে।” [১৩৬২] (আ.প্র. ৪৫৮০, ই.ফা. ৪৫৮৫)

৬৫/৯২/৮.অধ্যায়ঃ
‘‘আমি তার জন্য সুগম করে দেব সহজ পথ।’’ (সূরাহ আল-লাইল ৯২/৭)

৪৯৪৯
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنِ الْأَعْمَشِ قَالَ سَمِعْتُ سَعْدَ بْنَ عُبَيْدَةَ يُحَدِّثُ عَنْ أَبِيْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ السُّلَمِيِّ عَنْ عَلِيٍّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ جَنَازَةٍ فَأَخَذَ شَيْئًا فَجَعَلَ يَنْكُتُ بِهِ الْأَرْضَ فَقَالَ مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلَّا وَقَدْ كُتِبَ مَقْعَدُهُ مِنْ النَّارِ وَمَقْعَدُهُ مِنَ الْجَنَّةِ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَلَا نَتَّكِلُ عَلَى كِتَابِنَا وَنَدَعُ الْعَمَلَ قَالَ اعْمَلُوْا فَكُلٌّ مُيَسَّرٌ لِمَا خُلِقَ لَهُ أَمَّا مَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ السَّعَادَةِ فَيُيَسَّرُ لِعَمَلِ أَهْلِ السَّعَادَةِ وَأَمَّا مَنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الشَّقَاءِ فَيُيَسَّرُ لِعَمَلِ أَهْلِ الشَّقَاوَةِ ثُمَّ قَرَأَ {فَأَمَّا مَنْ أَعْطٰى وَاتَّقٰى لا (5) وَصَدَّقَ بِالْـحُسْنٰى} الْآيَةَ.

‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক জানাযায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তিনি কিছু একটা হাতে নিয়ে তা দিয়ে মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন কোন ব্যক্তি নেই, যার স্থান হয় জান্নাতে বা জাহান্নামে নির্দিষ্ট করে রাখা হয়নি। এ কথা শুনে সবাই বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমরা তাহলে ‘আমাল বাদ দিয়ে আমাদের লিখিত ভাগ্যের উপর কি ভরসা করব? উত্তরে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমরা ‘আমাল করতে থাক, কারণ, যাকে যে ‘আমালের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য সে ‘আমালকে সহজ করে দেয়া হবে। যে ব্যক্তি সৌভাগ্যের অধিকারী হবে, তার জন্য সৌভাগ্যের অধিকারী লোকদের ‘আমালকে সহজ করে দেয়া হবে। আর যে দুর্ভাগ্যের অধিকারী হবে, তার জন্য দুর্ভাগা লোকদের ‘আমালকে সহজ করে দেয়া হবে। এরপর তিনি পাঠ করলেন, সুতরাং কেউ দান করলে, মুত্তাকী হলে এবং যা উত্তম তা গ্রহণ করলে, আমি তার জন্য সুগম করে দেব সহজ পথ। এবং কেউ কার্পণ্য করলে, নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলে, আর যা উত্তম তা ত্যাগ করলে, তার জন্য আমি সুগম করে দেব কঠোর পরিণামের পথ)। (আ.প্র. ৪৫৮১, ই.ফা. ৪৫৮৬)

৬৫/৯৩/১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আপনার রব আপনাকে ত্যাগও করেননি এবং আপনার সঙ্গে দুশমনীও করেননি। (সূরাহ ওয়াদ্ দুহা ৯৩/৩)

(93) سُوْرَةُ وَالضُّحَى

সূরাহ (৯৩) : ওয়াদ্-দুহা

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {إِذَا سَجٰى} اسْتَوَى وَقَالَ غَيْرُهُ سَجَى أَظْلَمَ وَسَكَنَ عَائِلًا ذُوْ عِيَالٍ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, إِذَا سَجٰى ‘‘যখন তা সমান সমান হয়’’, মুজাহিদ (রহ.) ব্যতীত অন্যরা বলেন, سَجٰى মানে যখন তা নিঝুম ও অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়। عَآئِلًا নিঃস্ব।

৪৯৫০
أَحْمَدُ بْنُ يُوْنُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا الْأَسْوَدُ بْنُ قَيْسٍ قَالَ سَمِعْتُ جُنْدُبَ بْنَ سُفْيَانَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ اشْتَكَى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يَقُمْ لَيْلَتَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا فَجَاءَتْ امْرَأَةٌ فَقَالَتْ يَا مُحَمَّدُ إِنِّيْ لَأَرْجُوْ أَنْ يَكُوْنَ شَيْطَانُكَ قَدْ تَرَكَكَ لَمْ أَرَهُ قَرِبَكَ مُنْذُ لَيْلَتَيْنِ أَوْ ثَلَاثَةٍ فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {وَالضُّحٰى لا (1) وَاللَّيْلِ إِذَا سَجٰى لا (2) مَا وَدَّعَكَ رَبُّكَ وَمَا قَلٰى}.

জুনদুব ইব্‌নু সুফ্ইয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, অসুস্থতার কারণে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দুই বা তিন রাত তাহাজ্জুদের জন্য উঠতে পারেননি। এ সময় এক মহিলা এসে বলল, হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আমার মনে হয়, তোমার শয়তান তোমাকে ত্যাগ করেছে। দুই কিংবা তিনদিন যাবৎ তাকে আমি তোমার কাছে আসতে দেখতে পাচ্ছি না। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা অবতীর্ণ করলেন, শপথ পূর্বাহ্নের, “শপথ রজনীর যখন তা হয় নিঝুম, তোমার প্রতিপালক তোমাকে পরিত্যাগ করেননি এবং তোমার প্রতি বিরূপও হননি” (সূরাহ ওয়াদ্ দুহা ৯৩/৩)। [১১২৪; মুসলিম ৩২/৩৯, হাঃ ১৭৯৭, আহমাদ ১৮৮২৪] (আ.প্র. ৪৫৮২, ই.ফা. ৪৫৮৭)

৬৫/৯৩/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আপনার রব আপনাকে ত্যাগও করেননি এবং আপনার সঙ্গে দুশমনীও করেননি। (সূরাহ ওয়াদ্ দুহা ৯৩/৩)

تُقْرَأُ بِالتَّشْدِيْدِ وَالتَّخْفِيْفِ بِمَعْنًى وَاحِدٍ مَا تَرَكَكَ رَبُّكَ وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ مَا تَرَكَكَ وَمَا أَبْغَضَكَ.

وَدَّعَكَ শব্দটির দাল অক্ষরটিতে তাশদীদ ও তাশদীদ ছাড়া উভয়ই পড়া যায়। উভয়টির একইঃ ‘‘তোমাকে রব পরিত্যাগ করেননি।’’ ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, এর অর্থ হচ্ছে, তোমাকে তোমার রব ত্যাগ করেননি এবং তোমার প্রতি মনোক্ষুণ্ণও হননি।

৪৯৫১
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنِ الْأَسْوَدِ بْنِ قَيْسٍ قَالَ سَمِعْتُ جُنْدُبًا الْبَجَلِيَّ قَالَتْ امْرَأَةٌ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا أُرَى صَاحِبَكَ إِلَّا أَبْطَأَكَ فَنَزَلَتْ {مَا وَدَّعَكَ رَبُّكَ وَمَا قَلٰى}.

জুনদুব বাজালী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক মহিলা এসে বলল, আমি দেখছি, আপনার সঙ্গী আপনার কাছে ওয়াহী নিয়ে আসতে দেরী করে ফেলছে। তখনই অবতীর্ণ হলঃ তোমার প্রতিপালক তোমাকে ত্যাগ করেননি এবং তোমার প্রতি মনোক্ষুন্ন হননি। [১১২৪] (আ.প্র. ৪৫৮৩, ই.ফা. ৪৫৮৮)

৬৫/৯৫/১.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

(94) سُوْرَةُ أَلَمْ نَشْرَحْ لَكَ

সূরাহ (৯৪) : আলাম নাশরাহ্ লাকা (আল-ইনশিরাহ্)

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {وِزْرَكَ}فِي الْجَاهِلِيَّةِ {أَنْقَضَ}أَثْقَلَ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ أَيْ {مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا} آخَرَ كَقَوْلِهِ {هَلْ تَرَبَّصُوْنَ بِنَآ إِلَّآ إِحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ} وَلَنْ يَغْلِبَ عُسْرٌ يُسْرَيْنِ وَقَالَ مُجَاهِدٌ {فَانْصَبْ} فِيْ حَاجَتِكَ إِلَى رَبِّكَ وَيُذْكَرُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ {أَلَمْ نَشْرَحْ لَكَ صَدْرَكَ} شَرَحَ اللهُ صَدْرَهُ لِلْإِسْلَامِ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, وِزْرَكَ জাহিলী যুগের বোঝা। أَنْقَضَ মানে অতিশয় কষ্টদায়ক। مَعَالْعُسْرِيُسْرًا এর ব্যাখ্যায় ইবনু উয়াইয়াহ (রহ.) বলেন, এ কঠিন অবস্থার পরই আরেকটি সহজঅবস্থা আছে। যেমন আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন, هَلْ تَرَبَّصُوْنَ بِنَآ إِلَّآ إِحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ তোমরা আমাদের দু’টি কল্যাণের একটির অপেক্ষা করছ। একটি কঠিন অবস্থা দু’টি সহজ অবস্থাকে কখনো পরাভূত করতে পারবে না। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, فَانْصَبْ অর্থ-প্রয়োজন পূরণের জন্য তুমি তোমার রবের কাছে কাকুতি-মিনতি করে প্রার্থনা কর। ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু ‘আববাস (রাঃ)أَلَمْ نَشْرَحْ لَكَ صَدْرَكَ এর ব্যাখ্যায় বর্ণিত আছে যে, আল্লাহ্ রাববুল আলামীন নাবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বক্ষকে ইসলামের জন্য প্রশস্ত করে দিয়েছেন।

(95) سُوْرَةُ وَالتِّيْنِ

সূরাহ (৯৫) : ওয়াত্-তীন

وَقَالَ مُجَاهِدٌ هُوَ {التِّيْنُ وَالزَّيْتُوْنُ} الَّذِيْ يَأْكُلُ النَّاسُ يُقَالُ {فَمَا يُكَذِّبُكَ} فَمَا الَّذِيْ يُكَذِّبُكَ بِأَنَّ النَّاسَ يُدَانُوْنَ بِأَعْمَالِهِمْ كَأَنَّهُ قَالَ وَمَنْ يَقْدِرُ عَلَى تَكْذِيْبِكَ بِالثَّوَابِ وَالْعِقَابِ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, আয়াতের মধ্যে التِّيْنُ وَالزَّيْتُوْنُ বলে ঐ তীন ও যায়তূনকে বোঝানো হয়েছে, যা মানুষ খেয়ে থাকে। فَمَا يُكَذِّبُكَ মানুষকে তাদের ‘আমালের প্রতিদান দেয়া হবে এ ব্যাপারে কোন জিনিস তোমাকে অবিশ্বাসী করে। অর্থাৎ শাস্তি কিংবা পুরস্কার দানের ব্যাপারে তোমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করার ক্ষমতা রাখে কে?

৪৯৫২
حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ أَخْبَرَنِيْ عَدِيٌّ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ فِيْ سَفَرٍ فَقَرَأَ فِي الْعِشَاءِ فِيْ إِحْدَى الرَّكْعَتَيْنِ بِالتِّيْنِ وَالزَّيْتُوْنِ تَقْوِيْمٍ الْخَلْقِ.

বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সফরে থাকাকালীন ‘ইশার সলাতের দুই রাকআতের কোন এক রাকআতে ‘সূরাহ তীন’ পাঠ করেছেন। [৭৬৭] (আ.প্র. ৪৫৮৪, ই.ফা. ৪৫৮৯)

৬৫/৯৬/১.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

(96) سُوْرَةُ اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ

সূরাহ (৯৬) : ইক্বরা বিসমি রবিবকাল লাযী খলাক্ব (আলাক্)

وقال قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ يَحْيَى بْنِ عَتِيْقٍ عَنِ الْحَسَنِ قَالَ اكْتُبْ فِي الْمُصْحَفِ فِيْ أَوَّلِ الإِمَامِ بِسْمِ اللهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ وَاجْعَلْ بَيْنَ السُّوْرَتَيْنِ خَطًّا

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {نَادِيَهُ} عَشِيْرَتَهُ {الزَّبَانِيَةَ} الْمَلَائِكَةَ وَقَالَ مَعْمَرٌ {الرُّجْعٰى} الْمَرْجِعُ {لَنَسْفَعَنْ} قَالَ لَنَأْخُذَنْ وَلَنَسْفَعَنْ بِالنُّوْنِ وَهِيَ الْخَفِيْفَةُ سَفَعْتُ بِيَدِهِ أَخَذْتُ.

কুতাইবাহ (রহ.)…..হাসান বসরী (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, কুরআন মাজীদের শুরুতে ‘বিস্মিল্লা-হির রহমা-নির রহীম’ লিখ এবং দু’ সূরার মধ্যে একটি রেখা টেনে দাও।

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, نَادِيَهُ গোত্র। الزَّبَانِيَةَ ফেরেশতা। মা‘মার (রা বলেন, الرُّجْعٰى ফিরে আসার জায়গা। لَنَسْفَعَنْ আমি অবশ্যই পাকড়াও করব। لَنَسْفَعَنْ শব্দটি نون خفيفة এর সঙ্গে। سَفَعْتُبِيَدِهِ আমি তাকে হাত দ্বারা ধরলাম।

৪৯৫৩
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ ح و حَدَّثَنِيْ سَعِيْدُ بْنُ مَرْوَانَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيْزِ بْنِ أَبِيْ رِزْمَةَ أَخْبَرَنَا أَبُوْ صَالِحٍ سَلْمَوَيْهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ عَنْ يُوْنُسَ بْنِ يَزِيْدَ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ شِهَابٍ أَنَّ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ أَخْبَرَهُ أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ كَانَ أَوَّلَ مَا بُدِئَ بِهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الرُّؤْيَا الصَّادِقَةُ فِي النَّوْمِ فَكَانَ لَا يَرَى رُؤْيَا إِلَّا جَاءَتْ مِثْلَ فَلَقِ الصُّبْحِ ثُمَّ حُبِّبَ إِلَيْهِ الْخَلَاءُ فَكَانَ يَلْحَقُ بِغَارِ حِرَاءٍ فَيَتَحَنَّثُ فِيْهِ قَالَ وَالتَّحَنُّثُ التَّعَبُّدُ اللَّيَالِيَ ذَوَاتِ الْعَدَدِ قَبْلَ أَنْ يَرْجِعَ إِلَى أَهْلِهِ وَيَتَزَوَّدُ لِذَلِكَ ثُمَّ يَرْجِعُ إِلَى خَدِيْجَةَ فَيَتَزَوَّدُ بِمِثْلِهَا حَتَّى فَجِئَهُ الْحَقُّ وَهُوَ فِيْ غَارِ حِرَاءٍ فَجَاءَهُ الْمَلَكُ فَقَالَ اقْرَأْ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا أَنَا بِقَارِئٍ قَالَ فَأَخَذَنِيْ فَغَطَّنِيْ حَتَّى بَلَغَ مِنِّيْ الْجُهْدَ ثُمَّ أَرْسَلَنِيْ فَقَالَ اقْرَأْ قُلْتُ مَا أَنَا بِقَارِئٍ فَأَخَذَنِيْ فَغَطَّنِي الثَّانِيَةَ حَتَّى بَلَغَ مِنِّيْ الْجُهْدَ ثُمَّ أَرْسَلَنِيْ فَقَالَ اقْرَأْ قُلْتُ مَا أَنَا بِقَارِئٍ فَأَخَذَنِيْ فَغَطَّنِي الثَّالِثَةَ حَتَّى بَلَغَ مِنِّيْ الْجُهْدَ ثُمَّ أَرْسَلَنِيْ فَقَالَ {اِقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ ج – خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ ج – اِقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ لا – الَّذِيْ عَلَّمَ بِالْقَلَمِ} الْآيَاتِ إِلَى قَوْلِهِ {عَلَّمَ الْإِنْسَانَ مَا لَمْ يَعْلَمْ} فَرَجَعَ بِهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَرْجُفُ بَوَادِرُهُ حَتَّى دَخَلَ عَلَى خَدِيْجَةَ فَقَالَ زَمِّلُوْنِيْ زَمِّلُوْنِيْ فَزَمَّلُوْهُ حَتَّى ذَهَبَ عَنْهُ الرَّوْعُ قَالَ لِخَدِيْجَةَ أَيْ خَدِيْجَةُ مَا لِيْ لَقَدْ خَشِيْتُ عَلَى نَفْسِيْ فَأَخْبَرَهَا الْخَبَرَ قَالَتْ خَدِيْجَةُ كَلَّا أَبْشِرْ فَوَاللهِ لَا يُخْزِيْكَ اللهُ أَبَدًا فَوَاللهِ إِنَّكَ لَتَصِلُ الرَّحِمَ وَتَصْدُقُ الْحَدِيْثَ وَتَحْمِلُ الْكَلَّ وَتَكْسِبُ الْمَعْدُوْمَ وَتَقْرِي الضَّيْفَ وَتُعِيْنُ عَلَى نَوَائِبِ الْحَقِّ فَانْطَلَقَتْ بِهِ خَدِيْجَةُ حَتَّى أَتَتْ بِهِ وَرَقَةَ بْنَ نَوْفَلٍ وَهُوَ ابْنُ عَمِّ خَدِيْجَةَ أَخِيْ أَبِيْهَا وَكَانَ امْرًَا تَنَصَّرَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكَانَ يَكْتُبُ الْكِتَابَ الْعَرَبِيَّ وَيَكْتُبُ مِنَ الإِنْجِيْلِ بِالْعَرَبِيَّةِ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَكْتُبَ وَكَانَ شَيْخًا كَبِيْرًا قَدْ عَمِيَ فَقَالَتْ خَدِيْجَةُ يَا ابْنَ عَمِّ اسْمَعْ مِنْ ابْنِ أَخِيْكَ قَالَ وَرَقَةُ يَا ابْنَ أَخِيْ مَاذَا تَرَى فَأَخْبَرَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَبَرَ مَا رَأَى فَقَالَ وَرَقَةُ هَذَا النَّامُوْسُ الَّذِيْ أُنْزِلَ عَلَى مُوْسَى لَيْتَنِيْ فِيْهَا جَذَعًا لَيْتَنِيْ أَكُوْنُ حَيًّا ذَكَرَ حَرْفًا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَوَمُخْرِجِيَّ هُمْ قَالَ وَرَقَةُ نَعَمْ لَمْ يَأْتِ رَجُلٌ بِمَا جِئْتَ بِهِ إِلَّا أُوْذِيَ وَإِنْ يُدْرِكْنِيْ يَوْمُكَ حَيًّا أَنْصُرْكَ نَصْرًا مُؤَزَّرًا ثُمَّ لَمْ يَنْشَبْ وَرَقَةُ أَنْ تُوُفِّيَ وَفَتَرَ الْوَحْيُ فَتْرَةً حَتَّى حَزِنَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ঘুমের অবস্থায় সত্য স্বপ্নের মাধ্যমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি ওয়াহী শুরু করা হয়েছিল। ঐ সময় তিনি যে স্বপ্ন দেখতেন, তা সকালের আলোর মতই সুস্পষ্ট হত। এরপর নির্জনতা তার কাছে প্রিয় হয়ে উঠল। তিনি হেরা গুহায় চলে যেতেন এবং পরিবার-পরিজনের কাছে আসার পূর্বে সেখানে লাগাতার কয়েকদিন পর্যন্ত তাহান্নুছ করতেন। তাহান্নুছ মানে বিশেষ পদ্ধতিতে ‘ইবাদাত করা। এ জন্য তিনি কিছু খাবার নিয়ে যেতেন। এরপর তিনি খাদীজাহ (রাঃ)-এর কাছে ফিরে এসে আবার ওরকম কিছু কিছু খাবার নিয়ে যেতেন। শেষে হেরা গুহায় থাকা অবস্থায় হঠাৎ তার কাছে সত্যবাণী এসে পৌঁছল। ফেরেশতা তাঁর কাছে এসে বললেন, পড়ুন। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আমি পড়তে পারি না। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, এরপর তিনি আমাকে ধরে খুব জোরে আলিঙ্গণ করলেন। এতে আমি প্রাণান্তকর কষ্ট অনুভব করলাম। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পড়ুন। আমি বললাম, আমি তো পড়তে পারি না। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, এরপর তিনি আমাকে ধরে দ্বিতীয়বার খুব জোরে আলিঙ্গণ করলেন। এতেও আমি ভীষণ কষ্ট অনুভব করলাম। এরপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পড়ুন। আমি বললাম, আমি পড়তে পারি না। এরপর তিনি আমাকে দরে তৃতীয়বার খুব জোরে আলিঙ্গণ করলেন। এবারও আমি খুব কষ্ট অনুভব করলাম। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পাঠ কর তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে আলাক হতে। পাঠ কর, আর তোমার প্রতিপালক মহিমান্বিত। যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন। শিক্ষা দিয়েছেন, মানুষকে যা সে জানত না। এরপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ আয়াতগুলো নিয়ে বাড়ি ফিরলেন। এ সময় তাঁর কাঁধের গোশ্ত ভয়ে থরথর করে কাঁপছিল। খাদীজার কাছে পৌঁছেই তিনি বললেন, আমাকে বস্ত্রাবৃত কর, আমাকে বস্ত্রাবৃত কর। তখন সকলেই তাঁকে বস্ত্রাবৃত করে দিল। অবশেষে তার ভীতিভাব দূর হলে তিনি খাদীজাকে বললেন, খাদীজা আমার কী হল? আমি আমার নিজের সম্পর্কে আশংকাবোধ করছি। এরপর তিনি তাঁকে সব কথা খুলে বললেন। এ কথা শুনে খাদীজাহ (রাঃ) বললেন, কখনো নয়। আপনি সুসংবাদ নিন। আল্লাহ্‌র শপথ, আল্লাহ্ কখনো আপনাকে লাঞ্ছিত করবেন না। আপনি আত্মীয়দের খোঁজ-খবর নেন, সত্য কথা বলেন, সহায়হীন লোকদের বোঝা লাঘব করে দেন, নিঃস্ব লোকদেরকে উপার্জন করে দেন, মেহমানদের আপ্যায়ন করেন এবং হকের পথে আসা বিপদাপদে পতিত লোকদেরকে সাহায্য করে থাকে। তারপর খাদীজাহ তাঁকে নিয়ে তাঁর চাচাত ভাই আরাকা ইব্‌নু নাওফালের কাছে গেলেন। তিনি জাহিলী যুগে খৃস্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি আরবী ভাষায় কিতাব লিখতেন। আর তিনি আল্লাহ্‌র ইচ্ছা মাফিক আরবী ভাষায় ইনজীল কিতাব অনুবাদ করে লিখতেন। তিনি খুব বৃদ্ধ ও অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। খাদীজাহ (রাঃ) তাঁকে বললেন, হে আমার চাচাত ভাই। আপনার ভাতিজা কী বলেন একটু শুনুন। তখন ওয়ারাকা বললেন, ভাতিজা, কী হয়েছে তোমার? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যা দেখেছিলেন, সব কিছুর ব্যাপারে তাকে জানালেন। সব কথা শুনে ওয়ারাকা বললেন, ইনিই সেই ফেরেশতা, যাকে মূসার কাছে পাঠানো হয়েছিল। আহ! সে সময় আমি যদি যুবক হতাম। আহ্! সে সময় আমিযদি জীবিত থাকতাম। তারপর তিনি একটি গুরুতর বিষয় উল্লেখ করলে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সত্যিই তারা কি আমাকে বের করে দেবে? ওয়ারাকা বললেন, হ্যাঁ, তারা তোমাকে বের করে দেবে। তুমি যে দাওয়াত নিয়ে এসেছ, এ দাওয়াত যে-ই নিয়ে এসেছে তাকেই কষ্ট দেয়া হয়েছে। তোমার নবুয়তকালে আমি জীবিত থাকলে অবশ্যই আমি তোমাকে প্রবল ও সর্বতোভাবে সাহায্য করতাম। এরপর ওয়ারাকা অধিক দিন বাঁচেননি; বরং অল্পদিনের মধ্যেই তিনি মারা গেলেন। দীর্ঘ সময়ের জন্য ওয়াহী বন্ধ হয়ে গেল। এতে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খুবই চিন্তাযুক্ত হয়ে পড়লেন। [৩] (আ.প্র. ৪৫৮৫, ই.ফা. ৪৫৯০)

৪৯৫৪
قَالَ مُحَمَّدُ بْنُ شِهَابٍ فَأَخْبَرَنِيْ أَبُوْ سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ الْأَنْصَارِيَّ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ يُحَدِّثُ عَنْ فَتْرَةِ الْوَحْيِ قَالَ فِيْ حَدِيْثِهِ بَيْنَا أَنَا أَمْشِيْ سَمِعْتُ صَوْتًا مِنْ السَّمَاءِ فَرَفَعْتُ بَصَرِيْ فَإِذَا الْمَلَكُ الَّذِيْ جَاءَنِيْ بِحِرَاءٍ جَالِسٌ عَلَى كُرْسِيٍّ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ فَفَرِقْتُ مِنْهُ فَرَجَعْتُ فَقُلْتُ زَمِّلُوْنِيْ زَمِّلُوْنِيْ فَدَثَّرُوْهُ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {يٰٓأَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ لا – قُمْ فَأَنْذِرْ لا – وَرَبَّكَ فَكَبِّرْ لا – وَثِيَابَكَ فَطَهِّرْ لا – وَالرُّجْزَ فَاهْجُرْ} قَالَ أَبُوْ سَلَمَةَ وَهِيَ الْأَوْثَانُ الَّتِيْ كَانَ أَهْلُ الْجَاهِلِيَّةِ يَعْبُدُوْنَ قَالَ ثُمَّ تَتَابَعَ الْوَحْيُ.

মুহাম্মাদ ইব্‌নু শিহাব (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ সালামাহ ইব্‌নু ‘আবদুর রহমান (রাঃ)-এর মাধ্যমে জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ওয়াহী বন্ধ হওয়া প্রসঙ্গে বলেছেন, এক সময় আমি পথ চলছিলাম। হঠাৎ আকাশ থেকে একটি শব্দ শুনতে পেলাম। আমি মাথা তুলে তাকালাম। দেখলাম, যে ফেরেশতা আমার কাছে হেরা গুহায় আসতেন, তিনিই আসমান ও যমীনের মাঝে বিদ্যমান কুরসীতে বসে আছেন। এতে আমি ভয় পেয়ে গেলাম। তাই বাড়িতে ফিরে বললাম, আমাকে বস্ত্রাবৃত কর, আমাকে বস্ত্রাবৃত কর। সুতরাং সকলেই আমাকে বস্ত্রাবৃত করল। তখন আল্লাহ্ তা’আলা অবতীর্ণ করলেন, “হে বস্ত্রাবৃত রসূল! উঠুন, সতর্ক করুন, আর আপনার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন, এবং স্বীয় পরিধেয় বস্ত্র পবিত্র রাখুন এবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকুন” (সূরাহ আল-মুদ্দাস্সির ৭৪/১-৫)। আবূ সালামাহ (রাঃ) বলেন, আরবরা জাহিলী যুগে যে সব মূর্তির পূজা করত الرِّجْزَ বলে ঐ সব মূর্তিকেই বোঝানো হয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর থেকে ওয়াহীর ধারা চলতে থাকে। [৪] (আ.প্র. ৪৫৮৫, ই.ফা. ৪৫৯০)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]