সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস তাফসীর অধ্যায় ১৫শ ভাগ হাদিস নং ৪৯৫৫– ৪৯৭৭

৬৫/৯৬/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত পিন্ড থেকে। (সূরাহ ‘আলাক ৯৬/২)

৪৯৫৫
ابْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ أَوَّلُ مَا بُدِئَ بِهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الرُّؤْيَا الصَّالِحَةُ فَجَاءَهُ الْمَلَكُ فَقَالَ {اِقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ ج (1) خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ ج (2) اِقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ}.

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, প্রথমত রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি ওয়াহী আরম্ভ হয়েছিল সত্য স্বপ্নের মাধ্যমে। এরপর তাঁর কাছে ফেরেশতা এসে বললেন, পাঠ করুন আপনার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত পিণ্ড থেকে। পাঠ করুন, আর আপনার রব অতিশয় দয়ালু” (সূরাহ আলাক ৯৬/১-৫)। [৩] (আ.প্র. ৪৫৮৬, ই.ফা. ৪৫৯১)

৬৫/৯৬/৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ পাঠ করুন, আর আপনার রব অতিশয় দয়ালু। (সূরাহ আলাক ৯৬/৫)

৪৯৫৬
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ ح وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِيْ عُقَيْلٌ قَالَ مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنِيْ عُرْوَةُ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا أَوَّلُ مَا بُدِئَ بِهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الرُّؤْيَا الصَّادِقَةُ جَاءَهُ الْمَلَكُ فَقَالَ {اِقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِيْ خَلَقَ ج (1) خَلَقَ الْإِنْسَانَ مِنْ عَلَقٍ ج (2) اِقْرَأْ وَرَبُّكَ الْأَكْرَمُ لا (3) الَّذِيْ عَلَّمَ بِالْقَلَمِ}.

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি সত্য স্বপ্নের মাধ্যমে ওয়াহীর শুরু হয়। এরপর তাঁর কাছে ফেরেশতা এসে বললেন, “পাঠ কর, তোমার প্রতিপালকের নামে , যিনি সৃষ্টি করেছেন, সৃষ্টি করেছেন মানুষকে আলাক হতে। পাঠ কর, আর তোমার প্রতিপালক মহা মহিমান্বিত” (সূরাহ আলাক ৯৬/১-৫)। [৩] (আ.প্র. ৪৫৮৭, ই.ফা. ৪৫৯২)

৬৫/৯৫/৪.অধ্যায়ঃ
‘‘যিনি শিক্ষা দিয়েছেন কলমের সাহায্যে।’’ (সূরাহ আলাক ৯৬/৪)

৪৯৫৭
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ سَمِعْتُ عُرْوَةَ قَالَتْ عَائِشَةُ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا فَرَجَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى خَدِيْجَةَ فَقَالَ زَمِّلُوْنِيْ زَمِّلُوْنِيْ فَذَكَرَ الْحَدِيْثَ.

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এরপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) খাদীজা (রাঃ)-এর কাছে ফিরে এসে বললেন, আমাকে বস্ত্রাবৃত কর, আমাকে বস্ত্রাবৃত কর। এরপর রাবী সম্পূর্ণ হাদীসটি বর্ণনা করলেন। [৩] (আ.প্র. ৪৫৮৮, ই.ফা. ৪৫৯৩)

৬৫/৯৬/৫.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ তার এরূপ করা কখনই উচিত নয়, যদি সে এরূপ করা থেকে ফিরিয়ে না আসে, তবে আমি অবশ্যই তাকে কপালের কেশগুচ্ছ ধরে হিঁচড়ে নিয়ে যাবো। যে কেশগুচ্ছ মিথ্যাচারী, পাপাচারীর। (সূরাহ আলাক ৯৬/১৫-১৬)

৪৯৫৮
يَحْيَى حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ عَبْدِ الْكَرِيْمِ الْجَزَرِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ قَالَ أَبُوْ جَهْلٍ لَئِنْ رَأَيْتُ مُحَمَّدًا يُصَلِّيْ عِنْدَ الْكَعْبَةِ لَأَطَأَنَّ عَلَى عُنُقِهِ فَبَلَغَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَوْ فَعَلَهُ لَأَخَذَتْهُ الْمَلَائِكَةُ تَابَعَهُ عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ عَبْدِ الْكَرِيْمِ.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবূ জাহ্ল বলেছিল, আমি যদি মুহাম্মাদকে কা‘বার পাশে সলাত আদায় করতে দেখি তাহলে অবশ্যই আমি তার ঘাড় পদদলিত করব। এ খবর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে পৌঁছার পর তিনি বললেন, সে যদি তা করে তাহলে অবশ্যই ফেরেশতা তাকে পাকড়াও করবে। ‘উবাইদুল্লাহর মাধ্যমে ‘আবদুল থেকে আমর ইব্‌নু খালিদ এ হাদীস বর্ণনা করতে গিয়ে উপরোক্ত হাদীসের মতই বর্ণনা করেছেন। (আ.প্র. ৪৫৮৯, ই.ফা. ৪৫৯৪)

৬৫/৯৮/১.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

(97) سُوْرَةُ القدر

সূরাহ (৯৭) : ক্বদর

يُقَالُ الْمَطْلَعُ هُوَ الطُّلُوْعُ وَالْمَطْلِعُ الْمَوْضِعُ الَّذِيْ يُطْلَعُ مِنْهُ {أَنْزَلْنَاهُ} الْهَاءُ كِنَايَةٌ عَنِ الْقُرْآنِ إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ خَرَجَ مَخْرَجَ الْجَمِيْعِ وَالْمُنْزِلُ هُوَ اللهُ وَالْعَرَبُ تُوَكِّدُ فِعْلَ الْوَاحِدِ فَتَجْعَلُهُ بِلَفْظِ الْجَمِيْعِ لِيَكُوْنَ أَثْبَتَ وَأَوْكَدَ.

الْمَطْلَعُ বলা হয় উদয় হওয়াকে, পক্ষান্তরে, الْمَطْلِعُ মানে উদয়স্থল। أَنْزَلْنَاهُ এর ه দ্বারা আল-কুরআনের প্রতি ইশারা করা হয়েছে। এখানে বহুবচনের শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও একবচনের গ্রহণ করা হয়েছে। কেননা, কুরআন অবতীর্ণকারী হলেন আল্লাহ্ তা‘আলা। বস্তুত কোন বস্তুর গুরুত্ব প্রকাশ বা জোরালো ভাব প্রকামের জন্য আরবরা একবচনের স্থলে বহুবচনে ব্যবহার করে থাকে।

(98) سُوْرَةُ البينة [لَمْ يَكُنْ]

সূরাহ (৯৮) : বাইয়্যিনাহ

مُنْفَكِّيْنَ زَائِلِيْنَ قَيِّمَةٌ الْقَائِمَةُ دِيْنُ الْقَيِّمَةِ أَضَافَ الدِّيْنَ إِلَى الْمُؤَنَّثِ

مُنْفَكِّيْنَবিচলিত ও পদস্খলিত। قَيِّمَةٌ সঠিক। دِيْنُالْقَيِّمَةِ এর মাঝে دِيْنُ শব্দটিকে স্ত্রী লিঙ্গের দিকে اضافت করা হয়েছে।

৪৯৫৯
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ سَمِعْتُ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِأُبَيٍّ إِنَّ اللهَ أَمَرَنِيْ أَنْ أَقْرَأَ عَلَيْكَ {لَمْ يَكُنِ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا} قَالَ وَسَمَّانِيْ قَالَ نَعَمْ فَبَكَى.

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) বলেছিলেন, তোমাকে لَمْ يَكُنْ الَّذِينَ كَفَرُوا (সূরা) পড়ে শোনানোর জন্য আল্লাহ্ তা‘আলা আমাকে আদেশ করেছেন। উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্ তা‘আলা কি আমার নাম উল্লেখ করে বলেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ; এ কথা শুনে উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) কাঁদতে লাগলেন। [৩৮০৯] (আ.প্র. ৪৫৯০, ই.ফা. ৪৫৯৫)

৬৫/৯৮/২.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

৪৯৬০
حَسَّانُ بْنُ حَسَّانَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِأُبَيٍّ إِنَّ اللهَ أَمَرَنِيْ أَنْ أَقْرَأَ عَلَيْكَ الْقُرْآنَ قَالَ أُبَيٌّ أَاللهُ سَمَّانِيْ لَكَ قَالَ اللهُ سَمَّاكَ لِيْ فَجَعَلَ أُبَيٌّ يَبْكِيْ قَالَ قَتَادَةُ فَأُنْبِئْتُ أَنَّهُ قَرَأَ عَلَيْهِ {لَمْ يَكُنِ الَّذِيْنَ كَفَرُوْا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ}.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ)-কে বলেছিলেন, তোমাকে কুরআন পড়ে শোনানোর জন্য আল্লাহ্ তা‘আলা আমাকে আদেশ করেছেন। উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্ তা‘আলা কি আপনার কাছে আমার নাম উল্লেখ করেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহ্ তা‘আলা তোমার নাম উল্লেখ করেছেন। এ কথা শুনে উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) কাঁদতে বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহ্ তা‘আলা তোমার নাম উল্লেখ করেছেন। এ কথা শুনে উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) কাঁদতে শুরু করলেন। ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেন, আমাকে জানানো হয়েছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে لَمْ يَكُنْ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ পাঠ করে শুনিয়েছিলেন। [৩৮০৯] (আ.প্র. ৪৫৯১, ই.ফা. ৪৫৯৬)

৬৫/৯৮/৩.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

৪৯৬১
إحمد بن أبي داؤد، أَبُوْ جَعْفَرٍ الْمُنَادِيْ حَدَّثَنَا رَوْحٌ حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ أَبِيْ عَرُوْبَةَ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ نَبِيَّ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِأُبَيِّ بْنِ كَعْبٍ إِنَّ اللهَ أَمَرَنِيْ أَنْ أُقْرِئَكَ الْقُرْآنَ قَالَ أَاللهُ سَمَّانِيْ لَكَ قَالَ نَعَمْ قَالَ وَقَدْ ذُكِرْتُ عِنْدَ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ قَالَ نَعَمْ فَذَرَفَتْ عَيْنَاهُ.

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ)-কে বলেছিলেন, তোমাকে কুরআন পাঠ করে শোনানোর জন্য আল্লাহ্ তা‘আলা আমাকে আদেশ করেছেন। এ কথা শুনে তিনি বললেন, আল্লাহ তা‘আলা কি আপনার কাছে আমার নাম উল্লেখ করেছেন? তিনি বললেন,হ্যাঁ। তখন উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) বিস্মিত হয়ে আবার জিজ্ঞেস করলেন, বিশ্বজাহানের প্রতিপালকের কাছে কি আমার ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে? উত্তরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ। এ কথা শুনে তা দু’চোখ অশ্রুতে ভরে উঠল। [৩৮০৯] (আ.প্র. ৪৫৯২, ই.ফা. ৪৫৯৭)

৬৫/৯৯/১.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ অতএব, কেউ অণূ পরিমাণ নেক কাজ করে থাকলে, সে তা দেখতে পাবে। (সূরাহ যিলযাল ৯৯/৭)

(99) سُوْرَةُ إِذَا زُلْزِلَتْ الْأَرْضُ {زِلْزَالَهَا}

সূরাহ (৯৯) : ইযা যুলযিলাতিল আরযু (যিল্যাল)

يُقَالُ {أَوْحٰى لَهَا} أَوْحَى إِلَيْهَا وَوَحَى لَهَا وَوَحَى إِلَيْهَا وَاحِدٌ.

বলা হয়, وَوَحَى لَهَا ও وَوَحَى إِلَيْهَا শব্দ দু’টির অর্থ একই।

৪৯৬২
إِسْمَاعِيْلُ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ السَّمَّانِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْخَيْلُ لِثَلَاثَةٍ لِرَجُلٍ أَجْرٌ وَلِرَجُلٍ سِتْرٌ وَعَلَى رَجُلٍ وِزْرٌ فَأَمَّا الَّذِيْ لَهُ أَجْرٌ فَرَجُلٌ رَبَطَهَا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ فَأَطَالَ لَهَا فِيْ مَرْجٍ أَوْ رَوْضَةٍ فَمَا أَصَابَتْ فِيْ طِيَلِهَا ذَلِكَ فِي الْمَرْجِ وَالرَّوْضَةِ كَانَ لَهُ حَسَنَاتٍ وَلَوْ أَنَّهَا قَطَعَتْ طِيَلَهَا فَاسْتَنَّتْ شَرَفًا أَوْ شَرَفَيْنِ كَانَتْ آثَارُهَا وَأَرْوَاثُهَا حَسَنَاتٍ لَهُ وَلَوْ أَنَّهَا مَرَّتْ بِنَهَرٍ فَشَرِبَتْ مِنْهُ وَلَمْ يُرِدْ أَنْ يَسْقِيَ بِهِ كَانَ ذَلِكَ حَسَنَاتٍ لَهُ فَهِيَ لِذَلِكَ الرَّجُلِ أَجْرٌ وَرَجُلٌ رَبَطَهَا تَغَنِّيًا وَتَعَفُّفًا وَلَمْ يَنْسَ حَقَّ اللهِ فِيْ رِقَابِهَا وَلَا ظُهُوْرِهَا فَهِيَ لَهُ سِتْرٌ وَرَجُلٌ رَبَطَهَا فَخْرًا وَرِئَاءً وَنِوَاءً فَهِيَ عَلَى ذَلِكَ وِزْرٌ فَسُئِلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْحُمُرِ قَالَ مَا أَنْزَلَ اللهُ عَلَيَّ فِيْهَا إِلَّا هَذِهِ الْآيَةَ الْفَاذَّةَ الْجَامِعَةَ {فَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَّرَه” وَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَّرَه”}.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তিন শ্রেণীর মানুষের ঘোড়া থাকে। এক শ্রেণীর মানুষের জন্য তা সওয়াব ও পুরস্কারের কারণ হয়, এক শ্রেণীর মানুষের জন্য তা (গুনাহ্ থেকে) আবরণস্বরূপ এবং এক শ্রেণীর মানুষের প্রতি তা হয় গুনাহর কারণ। যার জন্য তা সওয়াবের কারণ হয়, তারা সেসব লোক, যারা আল্লাহ্‌র পথে জিহাদের জন্য তা প্রস্তুত করে রাখে এবং কোন চারণ ক্ষেত্রে বা বাগানে লম্বা দড়ি দিয়ে তাকে বেঁধে রাখে। দড়ির আওতায় চারণ ক্ষেত্রে বা বাগানে সে যা কিছু খায় তা ঐ ব্যক্তির জন্য নেকী হিসাবে গণ্য হয়। যদি ঘোড়াটি দড়ি ছিঁড়ে ফেলে এবং নিজ স্থান পার হয়ে এক/দু’ উঁচু স্থানে চলে যায়, তাহলে তার পদচিহ্ন ও গোবরের বিনিময়েও ঐ ব্যক্তি সওয়াব লাভ করবে। আর ঘোড়াটি যদি কোন নহরের কিনারায় গিয়ে নিজে নিজেই পানি পান করে নেয়-মালিকের সেখান থেকে পানি পান করানোর ইচ্ছা না থাকলেও সে ব্যক্তি এর বিনিময়ে সওয়াবের অধিকারী হবে। এ ঘোড়া এ ব্যক্তির জন্য হল সওয়াবের কারণ; আরেক শ্রেণীর লোক যাদের জন্য এ ঘোড়া (গুনাহ্ হতে) আড়াল, তারা ঐ ব্যক্তি যারা মানুষের থেকে মুখাপেক্ষী না থাকার জন্য এবং মানুষের কাছে হাত পাতা থেকে বেঁচে থাকার জন্য তা পালন করে থাকে। কিন্তু তাতে আল্লাহ্‌র যে হক রয়েছেতা দিয়ে ভুলে যায় না। এ শ্রেণীর মানুষের জন্য এ ঘোড়া হচ্ছে পর্দা। আরেক শ্রেণীর ঘোড়ার মালিক যারা গর্ব দেখানোর মনোভাব ও দুশমনির উদ্দেশে ঘোড়া রাখে। এ ঘোড়া হচ্ছে গুনাহর কারণ। এরপর রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে গাধা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, একক ও ব্যাপক অর্থবোধক এ একটি মাত্র আয়াত ব্যতীত এ বিষয়ে আল্লাহ্ তা‘আলা আমার প্রতি আর কোন আয়াত অবতীর্ণ করেননি। আয়াতটি এই ঃ “কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে সে তা দেখবে এবং অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে সে তাও দেখবে” (সূরাহ যিলযাল ৯৯/৭-৮)। [২৩৭১] (আ.প্র. ৪৫৯৩, ই.ফা. ৪৫৯৮)

৬৫/৯৯/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আর কেউ অণু পরিমাণ বদ কাজ করে থাকলে, সে তাও দেখতে পাবে। (সূরাহ যিলযাল ৯৯/৮)

৪৯৬৩
يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِيْ مَالِكٌ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ أَبِيْ صَالِحٍ السَّمَّانِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْحُمُرِ فَقَالَ لَمْ يُنْزَلْ عَلَيَّ فِيْهَا شَيْءٌ إِلَّا هَذِهِ الْآيَةُ الْجَامِعَةُ الْفَاذَّةُ {فَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَّرَه” وَمَنْ يَّعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَّرَه”}.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে গাধা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, এ বিষয়ে একক ও ব্যাপক অর্থবোধক এই আয়াতটি ছাড়া আমার প্রতি আর কোন আয়াতই অবতীর্ণ করা হয়নি। আয়াতটি হচ্ছে এই ঃ “কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলে সে তা দেখবে এবং কেউ অণু পরিমাণ অসৎকর্ম করলে সে তাও দেখবে” (সূরাহ যিলযাল ৯৯/৭-৮)। [২৩৭১] (আ.প্র. ৪৫৯৪, ই.ফা. ৪৫৯৯)

৬৫/১০৮/১.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

(100) سُوْرَةُ وَالْعَادِيَاتِ

সূরাহ (১০০) : ওয়াল‘আদিয়াত

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {الْكَنُوْدُ} الْكَفُوْرُ يُقَالُ {فَأَثَرْنَ بِهٰ نَقْعًا} رَفَعْنَا بِهِ غُبَارًا {لِحُبِّ الْخَيْرِ} مِنْ أَجْلِ حُبِّ الْخَيْرِ لَشَدِيْدٌ لَبَخِيْلٌ وَيُقَالُ لِلْبَخِيْلِ شَدِيْدٌ {حُصِّلَ} مُيِّزَ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, الْكَنُوْدُ অকৃতজ্ঞ। فَأَثَرْنَ بِهٰ نَقْعًا -সে সময় ধূলি উৎক্ষিপ্ত করে। لِحُبِّ الْخَيْرِধন-সম্পদের প্রতি ভালবাসার কারণে। لَشَدِيْدٌ মানে অবশ্যই কৃপণ। কৃপণকে আরবী ভাষায় شَدِيْدٌ বলা হয়। حُصِّلَ আলাদা করা হবে।

(101) سُوْرَةُ الْقَارِعَةِ

সূরাহ (১০১) : আল-ক্বারি‘আহ

{كَالْفَرَاشِ الْمَبْثُوْثِ} كَغَوْغَاءِ الْجَرَادِ يَرْكَبُ بَعْضُهُ بَعْضًا كَذَلِكَ النَّاسُ يَجُوْلُ بَعْضُهُمْ فِيْ بَعْضٍ كَالْعِهْنِ كَأَلْوَانِ الْعِهْنِ وَقَرَأَ عَبْدُ اللهِ كَالصُّوْفِ.

كَالْفَرَاشِ الْمَبْثُوْثِ মানে বিক্ষিপ্ত পতঙ্গের মত। পতঙ্গ যেমন একটি আরেকটির ওপর পড়ে, ঠিক তেমনিভাবে একজন মানুষ আরেকজনের ওপর পড়বে। كَالْعِهْنِ নানা রঙের তুলার ন্যায়। ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ)كَالصُّوْفِ পড়েছেন।

(102) سُوْرَةُ أَلْهَاكُمْ

সূরাহ (১০২) : আততাকাসুর

وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {التَّكَاثُرُ} مِنَ الْأَمْوَالِ وَالأَوْلَادِ.

ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, التَّكَاثُرُ ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির আধিক্য।

(103) سُوْرَةُ وَالْعَصْرِ

সূরাহ (১০৩) : আল-‘আসর

وَقَالَ يَحْيَى الْعَصْرُ الدَّهْرُ أَقْسَمَ بِهِ.

বলা হয় الْعَصْرُ কাল বা সময়। আল্লাহ্ তা‘আলা এখানে কালের শপথ করেছেন।

(104) سُوْرَةُ هُمَزَةٍ

সূরাহ (১০৪) : আল-হুমাযাহ

{الْحُطَمَةُ} اسْمُ النَّارِ مِثْلُ سَقَرَ وَ لَظَى.

الْحُطَمَةُ ‘লাযা’ ও ‘সাকার’ যেমন জাহান্নামের নাম, তেমনি ‘হুতামা’ও একটি জাহান্নামের নাম।

(105) سُوْرَةُ أَلَمْ تَرَ

সূরাহ (১০৫) : আলামতারা (ফীল)

قَالَ مُجَاهِدٌ {أَلَمْ تَرَ} أَلَمْ تَعْلَمْ قَالَ مُجَاهِدٌ {أَبَابِيْلَ} مُتَتَابِعَةً مُجْتَمِعَةً وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ {مِنْ سِجِّيْلٍ} هِيَ سَنْكِ وَكِلْ.

মুজাহিদ বলেন, أَلَمْ تَرَ অর্থাৎ তোমরা কি জাননা?, মুজাহিদ বলেন, أَبَابِيْلَ ঝাঁকে ঝাঁকে ও একত্রিত। ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, مِنْ سِجِّيْلٍ শব্দটি سَنْكِ ও كِلْ থেকে আরবীকৃত আরবী শব্দ (এর অর্থ হল পাথর ও মাটির ঢিল)।

(106) سُوْرَةُ لِإِيْلَافِ قُرَيْشٍ

সূরাহ (১০৬) : লি ই-লাফি (কুরাইশ)

وَقَالَ مُجَاهِدٌ {لِإِيْلَافِ} أَلِفُوْا ذَلِكَ فَلَا يَشُقُّ عَلَيْهِمْ فِي الشِّتَاءِ وَالصَّيْفِ وَآمَنَهُمْ مِنْ كُلِّ عَدُوِّهِمْ فِيْ حَرَمِهِمْ قَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ {لِإِيْلَافِ} لِنِعْمَتِيْ عَلَى قُرَيْشٍ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, لِإِيْلَافِ মানে তারা এ বিষয়ে অভ্যস্ত ছিল। ফলে, শীত ও গ্রীষ্মে তা তাদের জন্য কষ্টকর হয় না। وَاٰمَنَهُمْ আল্লাহ্ তা‘আলা হারামের মাধ্যমে তাদের যাবতীয় শত্রু থেকে নিরাপত্তা দিয়েছেন। ইবনু উআয়না (রহ.) বলেন, لِإِيْلَافِ কুরাইশদের প্রতি আমার নি‘মাতের কারণে।

(107) سُوْرَةُ الماعون

সূরাহ (১০৭) : আল-মা‘উন

وقال مُجَاهِدٌ {يَدُعٌ} يَدْفَعُ عنْ حقٍّه، ويُقالُ : هُوَ مِنْ دَعَعْتُ، يُدَعُّوْنَ يُدْفَعُوْنَ. {ساهُوْنَ} لاهُوْنَ. والماعُوْنُ : المَعْرُوْف كلهُ. وقال بَعْضُ العَرَابِ : الماعُوْنُ الماءُ، وقال عِكْرِمَةُ : أعْلَاها الزّّكاةُ المَفْرُوْضَةُ وأدْناها عارِيَّةُ المَتاعِ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, يَدُعٌ সে তাকে হাক না দিয়ে ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। বলা হয় এ শব্দটি শব্দ থেকে উদ্ভূত। يُدَعُّوْنَ তাদেরকে বাধা দেয়া হয়। ساهُوْنَ উদাসীন। الماعُوْن সর্বপ্রকার কল্যাণকর কাজ। কোন কোন আরবী ভাষা বিশেষজ্ঞ বলেন, الماعُوْنُ পানি। ‘ইকরামাহ (রাঃ) বলেন, মাউনের অন্তর্ভুক্ত সর্বোচ্চ স্তরের বিষয় হচ্ছে যাকাত প্রদান করা এবং সর্বনিম্ন পর্যায়ের বিষয় হচ্ছে গৃহস্তালির প্রয়োজনীয় ছোট খাট জিনিস ধার দেয়া।

(108) سورَةُ الكوثر

সূরাহ (১০৮) : আল-কাউসার

وقال ابنُ عَبَّاسٍ {شانِئَكَ} : عَدّوَّكَ.

ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেন, شانِئَكَ তোমার শত্রু।

৪৯৬৪
آدَمُ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ أَنَسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ لَمَّا عُرِجَ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى السَّمَاءِ قَالَ أَتَيْتُ عَلَى نَهَرٍ حَافَتَاهُ قِبَابُ اللُّؤْلُؤِ مُجَوَّفًا فَقُلْتُ مَا هَذَا يَا جِبْرِيْلُ قَالَ هَذَا الْكَوْثَرُ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আকাশের দিকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর মি‘রাজ হলে তিনি বলেন, আমি একটি নহরের ধারে পৌঁছলাম, যার উভয় তীরে ফাঁপা মোতির তৈরি গম্বুজসমূহ রয়েছে। আমি বললাম, হে জিব্রীল! এটা কী? তিনি বললেন, এটাই (হাওযে) কাউছার। [৩৫৭০] (আ.প্র. ৪৫৯৫, ই.ফা. ৪৬০০)

৬৫/১০৮/২.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

৪৯৬৫
خَالِدُ بْنُ يَزِيْدَ الْكَاهِلِيُّ حَدَّثَنَا إِسْرَائِيْلُ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ أَبِيْ عُبَيْدَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَ سَأَلْتُهَا عَنْ قَوْلِهِ تَعَالَى {إِنَّآ أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ} قَالَتْ نَهَرٌ أُعْطِيَهُ نَبِيُّكُمْ صلى الله عليه وسلم شَاطِئَاهُ عَلَيْهِ دُرٌّ مُجَوَّفٌ آنِيَتُهُ كَعَدَدِ النُّجُوْمِ رَوَاهُ زَكَرِيَّاءُ وَأَبُو الْأَحْوَصِ وَمُطَرِّفٌ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ.

আবূ ‘উবাইদাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে আল্লাহ্ তা‘আলার বাণী إِنَّا أَعْطَيْنَاكَ الْكَوْثَرَ-এর ব্যাখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে, তিনি বললেন, কাউছার একটি নহর যা তোমার নাবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে প্রদান করা হয়েছে। এর দু’টো পাড় রয়েছে। উভয় পাড়ে বিছানো আছে ফাঁপা মোতি। এর পাত্রের সংখ্যা তারকারাজির মত। (অন্য সানাদে) যাকারিয়া (রহ.)…..আবূ ইসহাক (রহ.) থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। (আ.প্র. ৪৫৯৬, ই.ফা. ৪৬০১)

৬৫/১০৮/৩.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

৪৯৬৬
يَعْقُوْبُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ بِشْرٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّهُ قَالَ فِي الْكَوْثَرِ هُوَ الْخَيْرُ الَّذِيْ أَعْطَاهُ اللهُ إِيَّاهُ قَالَ أَبُوْ بِشْرٍ قُلْتُ لِسَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ فَإِنَّ النَّاسَ يَزْعُمُوْنَ أَنَّهُ نَهَرٌ فِي الْجَنَّةِ فَقَالَ سَعِيْدٌ النَّهَرُ الَّذِيْ فِي الْجَنَّةِ مِنَ الْخَيْرِ الَّذِيْ أَعْطَاهُ اللهُ إِيَّاهُ.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি কাউসার সম্পর্কে বলেছেন যে, এটা এমন একটি কল্যাণ যা আল্লাহ্ তাঁকে দান করেছেন। বর্ণনাকারী আবূ বিশর (রহ.) বলেন, আমি সা‘ঈদ ইব্‌নু যুবায়র (রহ.)-কে বললাম, লোকেরা ধারণা করে যে, কাউসার হল জান্নাতের একটি নহর। এ কথা শুনে সা‘ঈদ (রহ.) বললেন, জান্নাতের নহরটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে দেয়া কল্যাণের একটি। [৬৫৭৮] (আ.প্র. ৪৫৯৭, ই.ফা. ৪৬০২)

৬৫/১১০/১.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

(109) سُوْرَةُ الْكَافِرُوْنَ

সূরাহ (১০৯) : কাফিরূন

يُقَالُ {لَكُمْ دِيْنُكُمْ} الْكُفْرُ {وَلِيَ دِيْنِ} الإِسْلَامُ وَلَمْ يَقُلْ دِيْنِيْ لِأَنَّ الْآيَاتِ بِالنُّوْنِ فَحُذِفَتْ الْيَاءُ كَمَا قَالَ يَهْدِيْنِ وَ يَشْفِيْنِ وَقَالَ غَيْرُهُ {لَآ أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُوْنَ} الآنَ وَلَا أُجِيْبُكُمْ فِيْمَا بَقِيَ مِنْ عُمُرِيْ {وَلَا أَنْتُمْ عَابِدُوْنَ مَا أَعْبُدُ} وَهُمْ الَّذِيْنَ قَالَ {وَلَيَزِيْدَنَّ كَثِيْرًا مِّنْهُمْ مَآ أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَّبِّكَ طُغْيَانًا وَّكُفْرًا}.

বলা হয় لَكُمْ دِيْنُكُمْ তোমাদের দ্বীন তোমাদের, অর্থাৎ কুফর। আর وَلِيَ دِيْنِ আমাদের দ্বীন ইসলাম। এখানে دِيْنِيْ বলা হয়নি। পূর্বের আয়াতগুলো نঅক্ষরের উপর যেহেতু শেষ করা হয়েছে, তাই পূর্বের আয়াতগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষা করার জন্য ياঅক্ষরটিকে মুছে ফেলে এ আয়াতটিকেও ن অক্ষরের ওপর সমাপ্ত করা হয়েছে। যেমন অন্য স্থানে আল্লাহ্ তা‘আলা يَهْدِيْنِ এবং يَشْفِيْنِ ব্যবহার করেছেন। (মুজাহিদ ব্যতীত) অপরাপর মুফাসসির বলেছেন, لَآ أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُوْنَ -এর মর্মার্থ হচ্ছেঃ তোমরা বর্তমানে যার ‘ইবাদাত কর, আমি তার ‘ইবাদাত করি না এবং অবশিষ্ট জীবনেও আমি তোমাদের এ আহবানে সাড়া দেব না। وَلَآ أَنْتُمْ عَابِدُوْنَ مَآ أَعْبُدُ এবং তোমরাও তাঁর ‘ইবাদাতকারী নও- ‘যাঁর ‘ইবাদাত আমি করি।’ তারা ঐ সমস্ত লোক, যাদের ব্যাপারে আল্লাহ্ তা‘আলা অন্যত্র ইরশাদ করেছেনঃ وَلَيَزِيْدَنَّ كَثِيْرًا مِّنْهُمْ مَّآ أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَّبِّكَ طُغْيَانًا وَّكُفْرًا ‘‘তোমার প্রতিপালকের নিকট হতে তোমার প্রতি যা নাযিল হয়েছে তা তাদের অনেকের ধর্মদ্রোহিতা ও অবিশ্বাসই বাড়িয়ে দিয়েছে।’’

(সূরাহ (৫) : আল-মায়িদাহঃ ৬৪)

(110) سُوْرَةُ الفتح

সূরাহ (১১০) : নাসর

৪৯৬৭
الْحَسَنُ بْنُ الرَّبِيْعِ حَدَّثَنَا أَبُو الْأَحْوَصِ عَنِ الْأَعْمَشِ عَنْ أَبِي الضُّحَى عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ مَا صَلَّى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم صَلَاةً بَعْدَ أَنْ نَزَلَتْ عَلَيْهِ {إِذَا جَآءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ} إِلَّا يَقُوْلُ فِيْهَا سُبْحَانَكَ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اللهُمَّ اغْفِرْ لِي .

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ সূরাহ অবতীর্ণ হবার পর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) (রুকু‘ ও সাজদাহতে) নিম্নোক্ত দু‘আটি পাঠ ব্যতীত (রুকু‘ ও সাজদাহতে অন্য কোন দু‘আ দ্বারা) সলাত আদায় করেন নি। (আর তা হচ্ছেঃ) سُبْحَانَكَ اللهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اللهُمَّ اغْفِرْ لِي “হে আল্লাহ্! তুমি পবিত্র, তুমিই আমার রব। সকল প্রশংসা তোমারই জন্য নির্ধারিত। হে আল্লাহ্! তুমি আমাকে ক্ষমা কর।” [৭৯৪] (আ.প্র. ৪৫৯৮, ই.ফা. ৪৬০৩)


১. আধুনিক প্রকাশনীর ৭৫০ নম্বর হাদীসের টীকায় লিখা হয়েছে “রুকূ‘ ও সাজদাহ্য় এ দু‘আ নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইসলামের প্রথম দিকে পড়তেন। তখন রুকু‘তে সুবহানা রব্বিয়াল ‘আযীম ও সাজদাহ্য় সুবহানা রব্বিয়াল আ‘লা পড়ার নির্দেশ হয়নি। পরে এ দু’টি দু‘আ নাযিল হলে এবং তা পড়বার আদেশ হলে পূর্বে উল্লেখিত দু‘আ মানসূখ বা বাতিল হয়ে যায়।”

এটি একেবারেই মনগড়া ও হাদীস বিরোধী কথা যার কোন দলীল নেই। ইমাম ইবনু কাইয়্যিম যাদুল মা‘আদে এবং নাসিরউদ্দিন আলবানী স্বীয় সিফাত গ্রন্থে রুকু‘ ও সাজদাহর দু‘আর অর্থের পর লিখেছেনঃ “তিনি কুরআনের উপর ‘আমাল করতঃ রুকু‘ ও সাজদাহ্তে এ দু‘আটি বেশী বেশী করে পড়তেন।” (বুখারী হাদীস নং ৮১৭) আর এ সূরাহ্টি নাযিল হয়েছে আল্লাহর রসূলের ইন্তিকালের অল্প কিছুদিন পূর্বে। সূরা নাসর হচ্ছে সর্বশেষ নাযিলকৃত সূরাহ্। তাই উক্ত টীকার দাবী সম্পূর্ণ অসত্য ও অজ্ঞতাপূর্ণ। অত্র হাদীস হতেও বোঝা যায় যে, অত্র আয়াতটি অবতীর্ণ হবার পর তিনি মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত উপরোক্ত দু‘আটিই পাঠ, করেছেন অন্য কোন দু‘আ নয়।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৬৫/১১০/২.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

৪৯৬৮
عُثْمَانُ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيْرٌ عَنْ مَنْصُوْرٍ عَنْ أَبِي الضُّحَى عَنْ مَسْرُوْقٍ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُكْثِرُ أَنْ يَقُوْلَ فِيْ رُكُوْعِهِ وَسُجُوْدِهِ سُبْحَانَكَ اللهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اللهُمَّ اغْفِرْ لِيْ يَتَأَوَّلُ الْقُرْآنَ.

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সূরাহ নাসর অবতীর্ণ হবার পর রসূল سُبْحَانَكَ اللهُمَّ رَبَّنَا وَبِحَمْدِكَ اللهُمَّ اغْفِرْ لِي (হে আল্লাহ্! তুমি পবিত্র, তুমিই আমার রব, সমস্ত প্রশংসা তোমারই জন্য নির্দিষ্ট। তুমি আমাকে করে দাও।) দু‘আটি রুকূ-সাজদাহর মধ্যে অধিক অধিক পাঠ করতেন। [৭৯৪] (আ.প্র. ৪৫৯৯, ই.ফা. ৪৬০৪)

৬৫/১১০/৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ এবং আপনি লোকদেরকে দলে দলে আল্লাহর দ্বীনে প্রবেশ করতে দেখবেন। (সূরাহ নাসর ১১০/২)

৪৯৬৯
عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِيْ شَيْبَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ حَبِيْبِ بْنِ أَبِيْ ثَابِتٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ سَأَلَهُمْ عَنْ قَوْلِهِ تَعَالَى {إِذَا جَآءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ} قَالُوْا فَتْحُ الْمَدَائِنِ وَالْقُصُوْرِ قَالَ مَا تَقُوْلُ يَا ابْنَ عَبَّاسٍ قَالَ أَجَلٌ أَوْ مَثَلٌ ضُرِبَ لِمُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم نُعِيَتْ لَهُ نَفْسُهُ.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) লোকদেরকে আল্লাহ্‌র বাণী إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ -এর ব্যাখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তারা বললেন, এ আয়াতে শহর এবং প্রাসাদসমূহের বিজয় গাঁথা বর্ণিত হয়েছে। এ কথা শুনে ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে ইব্‌নু ‘আব্বাস! তুমি কী বল? তিনি বললেন, এ আয়াতে ওফাত অথবা মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর দৃষ্টান্ত এবং তাঁর শান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। [৩৬২৭] (আ.প্র. ৪৬০০, ই.ফা. ৪৬০৫)

৬৫/১১০/৪.অধ্যায়ঃ
তখন আপনি আপনার রবের প্রশংসার সহিত পবিত্রতা-মহিমা বর্ণনা করতে থাকুন এবং তাঁর সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকুন। বস্তুতঃ তিনি তো অতিশয় তাওবা ক্বুবূলকারী।’’ (সূরাহ নাসর ১১০/৩)

تَوَّابٌ عَلَى الْعِبَادِ وَالتَّوَّابُ مِنَ النَّاسِ التَّائِبُ مِنْ الذَّنْبِ.

تَوَّابٌ বান্দাদের তওবা কবূলকারী। التَّوَّابُ ঐ ব্যক্তিকে বলা হয় যে গুনাহ থেকে তওবা করে।

৪৯৭০
مُوْسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا أَبُوْ عَوَانَةَ عَنْ أَبِيْ بِشْرٍ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ عُمَرُ يُدْخِلُنِيْ مَعَ أَشْيَاخِ بَدْرٍ فَكَأَنَّ بَعْضَهُمْ وَجَدَ فِيْ نَفْسِهِ فَقَالَ لِمَ تُدْخِلُ هَذَا مَعَنَا وَلَنَا أَبْنَاءٌ مِثْلُهُ فَقَالَ عُمَرُ إِنَّهُ مَنْ قَدْ عَلِمْتُمْ فَدَعَاهُ ذَاتَ يَوْمٍ فَأَدْخَلَهُ مَعَهُمْ فَمَا رُئِيْتُ أَنَّهُ دَعَانِيْ يَوْمَئِذٍ إِلَّا لِيُرِيَهُمْ قَالَ مَا تَقُوْلُوْنَ فِيْ قَوْلِ اللهِ تَعَالَى {إِذَا جَآءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ} فَقَالَ بَعْضُهُمْ أُمِرْنَا أَنْ نَحْمَدَ اللهَ وَنَسْتَغْفِرَهُ إِذَا نُصِرْنَا وَفُتِحَ عَلَيْنَا وَسَكَتَ بَعْضُهُمْ فَلَمْ يَقُلْ شَيْئًا فَقَالَ لِيْ أَكَذَاكَ تَقُوْلُ يَا ابْنَ عَبَّاسٍ فَقُلْتُ لَا قَالَ فَمَا تَقُوْلُ قُلْتُ هُوَ أَجَلُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَعْلَمَهُ لَهُ قَالَ {إِذَا جَآءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ} وَذَلِكَ عَلَامَةُ أَجَلِكَ {فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ ط ل إِنَّه” كَانَ تَوَّابًا} فَقَالَ عُمَرُ مَا أَعْلَمُ مِنْهَا إِلَّا مَا تَقُوْلُ.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) বদর যুদ্ধে যোগদানকারী প্রবীণ সহাবীদের সঙ্গে আমাকেও শামিল করতেন। এ কারণে কারো কারো মনে প্রশ্ন দেখা দিল। একজন বললেন, আপনি তাকে আমাদের সঙ্গে কেন শামিল করছেন। আমাদের তো তার মত সন্তানই রয়েছে। ‘উমার (রাঃ) বললেন, এর কারণ তো আপনারাও অবগত আছেন। সুতরাং একদিন তিনি তাঁকে ডাকলেন এবং তাঁদের সঙ্গে বসালেন। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি বুঝতে পারলাম, আজকে তিনি আমাকে ডেকেছেন এজন্য যে, তিনি আমার প্রজ্ঞা তাঁদেরকে দেখাবেন। তিনি তাদেরকে বললেন ঃ-

আল্লাহ্‌র বাণী ঃ إِذَا جَاءَ نَصْرُ اللهِ وَالْفَتْحُ এর ব্যাখ্যা সম্পর্কে আপনারা কী বলেন, তখন তাঁদের কেউ বললেন, আমরা সাহায্য প্রাপ্ত হলে এবং আমরা বিজয় লাভ করলে এ আয়াতে আমাদেরকে আল্লাহ্‌র প্রশংসা এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য আদেশ করা হয়েছে। আবার কেউ কিছু না বলে চুপ করে থাকলেন। এরপর তিনি আমাকে বললেন, হে ইব্‌নু ‘আব্বাস! তুমিও কি তাই বল? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, তাহলে তুমি কী চলতে চাও? উত্তরে আমি বললাম, এ আয়াতে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে তাঁর ইন্তিকালের সংবাদ জানিয়েছেন। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন, ‘আল্লাহ্‌র সাহায্য ও বিজয় আসলে’ এটিই হবে তোমার মৃত্যুর নিদর্শন। فَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ وَاسْتَغْفِرْهُ إِنَّهُ كَانَ تَوَّابًا “তখন তুমি তোমার প্রতিপালকের প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি তো তাওবাহ কবূলকারী।” এ কথা শুনে ‘উমার (রাঃ) বললেন, তুমি যা বলছ, এ আয়াতের ব্যাখ্যা আমিও তা-ই জানি। [৩৬২৭] (আ.প্র. ৪৬০১, ই.ফা. ৪৬০৬)

৬৫/১১১/১.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

(111) سُوْرَةُ المسد

সূরাহ (১১১) : আল-মাসাদ (লাহাব)

{وَتَبَّ}َّ خَسِرَ تَبَاتٌ خُسْرَانٌ تَتْبِيْبٌ تَدْمِيْرٌ.

وَتَبَّ ক্ষতি, تَبَاتٌ ধ্বংস। تَتْبِيْبٌ বিধ্বস্ত করা।

৪৯৭১
يُوْسُفُ بْنُ مُوْسَى حَدَّثَنَا أَبُوْ أُسَامَةَ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ مُرَّةَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ {وَأَنْذِرْ عَشِيْرَتَكَ الْأَقْرَبِيْنَ} وَرَهْطَكَ مِنْهُمْ الْمُخْلَصِيْنَ خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى صَعِدَ الصَّفَا فَهَتَفَ يَا صَبَاحَاهْ فَقَالُوْا مَنْ هَذَا فَاجْتَمَعُوْا إِلَيْهِ فَقَالَ أَرَأَيْتُمْ إِنْ أَخْبَرْتُكُمْ أَنَّ خَيْلًا تَخْرُجُ مِنْ سَفْحِ هَذَا الْجَبَلِ أَكُنْتُمْ مُصَدِّقِيَّ قَالُوْا مَا جَرَّبْنَا عَلَيْكَ كَذِبًا قَالَ فَإِنِّيْ {نَذِيْرٌ لَّكُمْ بَيْنَ يَدَيْ عَذَابٍ شَدِيْدٍ} قَالَ أَبُوْ لَهَبٍ تَبًّا لَكَ مَا جَمَعْتَنَا إِلَّا لِهَذَا ثُمَّ قَامَ فَنَزَلَت{تَبَّتْ يَدَآ أَبِيْ لَهَبٍ وَّتَبَّ} وَقَدْ تَبَّ هَكَذَا قَرَأَهَا الْأَعْمَشُ يَوْمَئِذٍ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ “তুমি তোমার কাছে আত্মীয়-স্বজনকে সতর্ক করে দাও” আয়াতটি অবতীর্ণ হলে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বের হয়ে সাফা পর্বতে গিয়ে উঠলেন এবং يَا صَبَاحَاهْ (সকাল বেলার বিপদ সাবধান) বলে উচ্চৈঃস্বরে ডাক দিলেন। আওয়াজ শুনে তারা বলল, এ কে? তারপর সবাই তাঁর কাছে গিয়ে সমবেত হল। তিনি বললেন, আমি যদি তোমাদেরকে বলি, একটি অশ্বারোহী সেনাবাহিনী এ পর্বতের পেছনে তোমাদের উপর আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে, তাহলে কি তোমরা আমার কথা বিশ্বাস করবে? সকলেই বলল, আপনার মিথ্যা বলার ব্যাপারে আমাদের অভিজ্ঞতা নেই। তখন তিনি বললেন, نَذِيرٌ لَكُمْ بَيْنَ يَدَيْ عَذَابٍ شَدِيدٍ “আমি তোমাদের আসন্ন কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সাবধান করছি।” (সূরাহ (৩৪) ঃ সাবা ৪৬) এ কথা শুনে আবূ লাহাব বলল, তোমার ধ্বংস হোক। তুমি কি এ জন্যই আমাদেরকে একত্র করেছ? অতঃপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দাঁড়ালেন। তারপর অবতীর্ণ হল ঃ تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ ‘ধ্বংস হোক আবূ লাহাবের দু’ হাত এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও।” আমাশ (রহ.) আয়াতটি تَبَّ শব্দের পূর্বে وَقَدْ সংযোগ করে وَقَدْ تَبَّ পড়েছেন। [১৩৯৪] (আ.প্র. ৪৬০২, ই.ফা. ৪৬০৭)

৬৫/১১১/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ ধ্বংস হোক আবূ লাহাবের হাত দু’টি এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও। তার মাল-দৌলাত এবং সে যা উপার্জন করেছে তার কোন কাজে আসেনি। (সূরাহ লাহাব ১১১/১-২)

৪৯৭২
مُحَمَّدُ بْنُ سَلَامٍ أَخْبَرَنَا أَبُوْ مُعَاوِيَةَ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ إِلَى الْبَطْحَاءِ فَصَعِدَ إِلَى الْجَبَلِ فَنَادَى يَا صَبَاحَاهْ فَاجْتَمَعَتْ إِلَيْهِ قُرَيْشٌ فَقَالَ أَرَأَيْتُمْ إِنْ حَدَّثْتُكُمْ أَنَّ الْعَدُوَّ مُصَبِّحُكُمْ أَوْ مُمَسِّيْكُمْ أَكُنْتُمْ تُصَدِّقُوْنِيْ قَالُوْا نَعَمْ قَالَ فَإِنِّيْ {نَذِيْرٌ لَكُمْ بَيْنَ يَدَيْ عَذَابٍ شَدِيْدٍ} فَقَالَ أَبُوْ لَهَبٍ أَلِهَذَا جَمَعْتَنَا تَبًّا لَكَ فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ {تَبَّتْ يَدَآ أَبِيْ لَهَبٍ وَّتَبَّ} إِلَى آخِرِهَا.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বাত্হা প্রান্তরের দিকে চলে গেলেন এবং পর্বতে উঠে يَا صَبَاحَاهْ বলে উচ্চৈঃস্বরে ডাকলেন। কুরাইশরা তাঁর কাছে জমায়েত হল। তিনি বললেন, আমি যদি তোমাদেরকে বলি, শত্রু সৈন্যরা সকালে বা সন্ধ্যায় তোমাদের উপর আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে, তাহলে কি তোমরা আমাকে সত্য বলে বিশ্বাস করেবে? তারা সকলেই বলল, হাঁ, আমরা বিশ্বাস করব। তখন তিনি বললেন, আমি তোমাদেরকে আসন্ন কঠিন শাস্তি সম্পর্কে সাবধান করছি। এ কথা শুনে আবূ লাহাব বলল, তুমি কি এজন্যই আমাদেরকে একত্রিত করেছ? তোমার ধ্বংস হোক। তখন আল্লাহ্ তা‘আলা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সূরাহ লাহাব অবতীর্ণ করলেন, ধ্বংস হোক আবূ লাহাবের দুই হস্ত এবং ধ্বংস হোক সে নিজেও। তার ধন-সম্পদ এবং উপার্জন তার কোন কাজে আসেনি। অচিরে সে দগ্ধ হবে লেলিহান অগ্নিতে এবং তার স্ত্রীও, যে ইন্ধন বহন করে, তার গলায় পাকান দড়ি। [১৩৯৪] (আ.প্র. ৪৬০৩, ই.ফা. ৪৬০৮)

৬৫/১১১/৩.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ শীঘ্রই সে দগ্ধ হবে লেলিহান আগুনে। (সূরাহ লাহাব ১১১/৩)

৪৯৭৩
عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ مُرَّةَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَبُوْ لَهَبٍ تَبًّا لَكَ أَلِهَذَا جَمَعْتَنَا فَنَزَلَتْ {تَبَّتْ يَدَآ أَبِيْ لَهَبٍ وَّتَبَّ} إِلَى آخِرِهَا.عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِيْ حَدَّثَنَا الْأَعْمَشُ حَدَّثَنِيْ عَمْرُوْ بْنُ مُرَّةَ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ أَبُوْ لَهَبٍ تَبًّا لَكَ أَلِهَذَا جَمَعْتَنَا فَنَزَلَتْ {تَبَّتْ يَدَآ أَبِيْ لَهَبٍ وَّتَبَّ} إِلَى آخِرِهَا.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবূ লাহাব নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বললো, তোমার ধ্বংস হোক, তুমি কি এ জন্যই আমাদেরকে একত্রিত করেছ? তখন تَبَّتْ يَدَا أَبِي لَهَبٍ وَتَبَّ সূরাটি অবতীর্ণ হলো। [১৩৯৪] (আ.প্র. ৪৬০৪, ই.ফা. ৪৬০৯)

৬৫/১১১/৪.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ এবং তার স্ত্রীও যে কাঠের বোঝা বহন করে। (সূরাহ লাহাব ১১/৪)

وَقَالَ مُجَاهِدٌ حَمَّالَةُ الْحَطَبِ تَمْشِيْ بِالنَّمِيْمَةِ{فِيْ جِيْدِهَا حَبْلٌ مِّنْ مَّسَدٍ} يُقَالُ مِنْ مَسَدٍ لِيْفِ الْمُقْلِ وَهِيَ السِّلْسِلَةُ الَّتِيْ فِي النَّارِ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, حَمَّالَةَ الْحَطَبِ এমন মহিলা যে পরের নিন্দা করে বেড়ায়। فِيْ جِيْدِهَا حَبْلٌ مِّنْ مَّسَدٍ তার গলদেশে থাকবে পাকানো রশি। বলা হয় مَسَدٍপাকানো মোটা শক্ত দড়ি। (কারো কারো মতে) এর দ্বারা জাহান্নামের ঐ শৃঙ্খলকে বোঝানো হয়েছে, যা তার গলদেশে লাগানো হবে।

৬৫/১১২/১.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

সূরাহ (১১২) : ইখলাস

يُقَالُ لَا يُنَوَّنُ أَحَدٌ أَيْ وَاحِدٌ

বলা হয়, أَحَدٌ শব্দটি (যখন তৎপরবর্তী শব্দের সঙ্গে মিলিয়ে পড়া হবে তখন) تنوين পড়া হয় না। أَحَدٌ ও وَاحِدٌ এর অর্থ একই।

৪৯৭৪
أَبُو الْيَمَانِ حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ عَنِ الْأَعْرَجِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ قَالَ اللهُ كَذَّبَنِي ابْنُ آدَمَ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ ذَلِكَ وَشَتَمَنِيْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ ذَلِكَ فَأَمَّا تَكْذِيْبُهُ إِيَّايَ فَقَوْلُهُ لَنْ يُعِيْدَنِيْ كَمَا بَدَأَنِيْ وَلَيْسَ أَوَّلُ الْخَلْقِ بِأَهْوَنَ عَلَيَّ مِنْ إِعَادَتِهِ وَأَمَّا شَتْمُهُ إِيَّايَ فَقَوْلُهُ{اتَّخَذَ اللهُ وَلَدًا} وَأَنَا الْأَحَدُ الصَّمَدُ لَمْ أَلِدْ وَلَمْ أُوْلَدْ وَلَمْ يَكُنْ لِيْ كُفْئًا أَحَدٌ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেন, “বানী আদম আমার প্রতি মিথ্যারোপ করেছে; অথচ এরূপ করা তার জন্য সঠিক হয়নি। বানী আদম আমাকে গালি দিয়েছে; অথচ এমন করা তার জন্য উচিত হয়নি। আমার প্রতি মিথ্যারোপ করার অর্থ হচ্ছে এই যে, সে বলে, আল্লাহ্ আমাকে যে রকম প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন, তেমনি তিনি আমাকে দ্বিতীয়বার জীবিত করবেন না। অথচ তাকে আবার জীবিত করা অপেক্ষা প্রথমবার সৃষ্টি করা আমার জন্য সহজ ছিল না। আমাকে তার গালি দেয়ার অর্থ হল, সে বলে, আল্লাহ্ তা‘আলা সন্তান গ্রহণ করেছেন; অথচ আমি একক, কারো মুখাপেক্ষী নই। আমি কাউকে জন্ম দেইনি, আমাকেও জন্ম দেয়া হয়নি এবং কেউ আমার সমকক্ষ নয়।” [৩১৯৩] (আ.প্র. ৪৬০৫, ই.ফা. ৪৬১০)

৬৫/১১২/২.অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ্ কারো মুখাপেক্ষী নন। (সূরাহ ইখলাস ১১২/২)

وَالْعَرَبُ تُسَمِّيْ أَشْرَافَهَا الصَّمَدَ قَالَ أَبُوْ وَائِلٍ هُوَ السَّيِّدُ الَّذِي انْتَهَى سُوْدَدُهُ.

আরবীয় লোকেরা তাদের নেতাদেরকে الصَّمَدَ বলে থাকেন। আবূ ওয়াইল (রহ.) বলেন, এমন নেতাকে বলা হয় যার নেতৃত্ব চূড়ান্ত বা যার উপর নেতৃত্বের সমাপ্তি ঘটে।

৬৫/১১২/৩.অধ্যায়ঃ
তিনি কাউকেও জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি। এবং তাঁর সমতুল্য কেউই নাই। (সূরাহ ইখলাস ১১২/৩-৪)

৪৯৭৫
إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُوْرٍ قَالَ وَحَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ هَمَّامٍ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ اللهُ كَذَّبَنِي ابْنُ آدَمَ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ ذَلِكَ وَشَتَمَنِيْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ ذَلِكَ أَمَّا تَكْذِيْبُهُ إِيَّايَ أَنْ يَقُوْلَ إِنِّيْ لَنْ أُعِيْدَهُ كَمَا بَدَأْتُهُ وَأَمَّا شَتْمُهُ إِيَّايَ أَنْ يَقُوْلَ اتَّخَذَ اللهُ وَلَدًا وَأَنَا الصَّمَدُ الَّذِيْ لَمْ أَلِدْ وَلَمْ أُوْلَدْ وَلَمْ يَكُنْ لِيْ كُفُؤًا أَحَدٌ{لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُوْلَدْ لا (3) وَلَمْ يَكُنْ لَّه” كُفُوًا} وَكَفِيئًا وَكِفَاءً وَاحِدٌ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেছেন, আদাম সন্তান আমার প্রতি মিথ্যারোপ করেছে; অথচ এরূপ করা তার জন্য সঠিক হয়নি। সে আমাকে গালি দিয়েছে; অথচ এমন করা তার পক্ষে উচিত হয়নি। আমার প্রতি তার মিথ্যারোপ করার অর্থ হচ্ছে, সে বলে, আমি আবার জীবিত করতে সক্ষম নই যেমনিভাবে আমি তাকে প্রথমে সৃষ্টি করেছি। আমাকে তার গালি দেয়া হচ্ছে এই যে, সে বলে, আল্লাহ্ তা‘আলা সন্তান গ্রহণ করেছেন; অথচ আমি কারো মুখাপেক্ষী নই। আমি এমন এক সত্তা যে, আমি কাউকে জন্ম দেইনি, আমাকেও কেউ জন্ম দেয়নি এবং আমার সমতুল্য কেউ নেই। ইমাম বুখারী (রহ.) বলেন, كَفِيئًاএবং كِفَاءًএকই অর্থবোধক শব্দ। [৩১৯৩] (আ.প্র. ৪৬০৬, ই.ফা. ৪৬১১)

৬৫/১১৩/১.অধ্যায়ঃ
পরিচ্ছেদ নাই।

সুরাহ (১১৩) : ক্বুল আ‘উযু বিরাবিবকাল ফালাক্ব (ফালাক্ব)

وَقَالَ مُجَاهِدٌ{الْفَلَقُ} الصُّبْحُ وَ{غَاسِقٍ} اللَّيْلُ إِذَا وَقَبَ غُرُوْبُ الشَّمْسِ يُقَالُ أَبْيَنُ مِنْ فَرَقِ وَفَلَقِ الصُّبْحِ وَقَبَ إِذَا دَخَلَ فِيْ كُلِّ شَيْءٍ وَأَظْلَمَ.

মুজাহিদ (রহ.) বলেন, الْفَلَقُ রাত। غَاسِقٍ সূর্য অস্তমিত হওয়া। আরবীতে فَلَقِ ও فَرَقِ একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। তাই বলা হয়, أَبْيَنُ مِنْ فَرَقِ وَفَلَقِ الصُّبْحِ ভোরের আলো প্রকাশিত হওয়ার চেয়েও তা স্পষ্ট। وَقَبَ অন্ধকার সব জায়গায় প্রবেশ করে এবং আচ্ছন্ন করে ফেলে।

৪৯৭৬
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيْدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَاصِمٍ وَعَبْدَةَ عَنْ زِرِّ بْنِ حُبَيْشٍ قَالَ سَأَلْتُ أُبَيَّ بْنَ كَعْبٍ عَنِ الْمُعَوِّذَتَيْنِ فَقَالَ سَأَلْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ قِيْلَ لِيْ فَقُلْتُ فَنَحْنُ نَقُوْلُ كَمَا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم.

যির ইব্‌নু হুবাইশ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি উবাই ইব্‌নু কা‘বকে الْمُعَوِّذَتَيْنِ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার পর তিনি বললেন, এ বিষয়ে আমি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বলেছেন, আমাকে বলা হয়েছে, তাই আমি বলছি। উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যে রকম বলেছেন, আমরাও ঠিক সে রকম বলছি। [৪৯৭৭] (আ.প্র. ৪৬০৭, ই.ফা. ৪৬১২)

৪৯৭৭
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ أَبِيْ لُبَابَةَ عَنْ زِرِّ بْنِ حُبَيْشٍ ح وَحَدَّثَنَا عَاصِمٌ عَنْ زِرٍّ قَالَ سَأَلْتُ أُبَيَّ بْنَ كَعْبٍ قُلْتُ يَا أَبَا الْمُنْذِرِ إِنَّ أَخَاكَ ابْنَ مَسْعُوْدٍ يَقُوْلُ كَذَا وَكَذَا فَقَالَ أُبَيٌّ سَأَلْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لِيْ قِيْلَ لِيْ فَقُلْتُ قَالَ فَنَحْنُ نَقُوْلُ كَمَا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم.

যির ইব্‌নু হুবাইশ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আবুল মুনযির! আপনার ভাই ইব্‌নু মাস‘উদ (রাঃ) তো এ রকম কথা বলে থাকেন। তখন উবাই (রাঃ) বললেন, আমি এ সম্পর্কে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি আমাকে বললেন, আমাকে বলা হয়েছে তাই আমি বলেছি। উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) বলেন, কাজেই রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যা বলেছেন আমরাও তাই বলি। [৪৯৭৬] (আ.প্র. ৪৬০৮, ই.ফা. ৪৬১৩)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]