সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস বিয়ে শাদী অধ্যায় ২য় ভাগ হাদিস নং ৫১১৫– ৫১৫০

৬৭/৩২. অধ্যায়ঃ
অবশেষে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুত’আহ বিয়ে নিষেধ করেছেন।

৫১১৫
مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ أَنَّه“ سَمِعَ الزُّهْرِيَّ يَقُوْلُ أَخْبَرَنِي الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ عَلِيٍّ وَأَخُوه“ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ عَنْ أَبِيْهِمَا أَنَّ عَلِيًّا قَالَ لِابْنِ عَبَّاسٍ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهٰى عَنِ الْمُتْعَةِ وَعَنْ لُحُومِ الْحُمُرِ الأَهْلِيَّةِ زَمَنَ خَيْبَرَ.

হাসান ইব্‌নু মুহাম্মাদ ইব্‌নু ‘আলী ও তাঁর ভাই ‘আবদুল্লাহ্‌ তাঁদের পিতা থেকে বর্ণিতঃ

‘আলী (রাঃ) ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) – কে বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বর যুদ্ধে মুত’আহ বিয়ে এবং গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত খাওয়া নিষেধ করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪২)

৫১১৬
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِي جَمْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ سُئِلَ عَنْ مُتْعَةِ النِّسَاءِ فَرَخَّصَ فَقَالَ لَه“ مَوْلًى لَه“ إِنَّمَا ذ‘لِكَ فِي الْحَالِ الشَّدِيدِ وَفِي النِّسَاءِ قِلَّةٌ أَوْ نَحْوَه“ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ نَعَمْ.

আবূ জামরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি মহিলাদের মুত’আহ বিয়ে সম্পর্কে ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে প্রশ্ন করতে শুনেছি, তখন তিনি তার অনুমতি দেন। তাঁর আযাদকৃত গোলাম তাঁকে বললেন যে, এরূপ হুকুম নিতান্ত প্রয়োজন ও মহিলাদের স্বল্পতা ইত্যাদির কারণেই ছিল? ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, হাঁ। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৩)

৫১১৭
عَلِيٌّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ عَمْرٌو عَنِ الْحَسَنِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ وَسَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ قَالاَ كُنَّا فِي جَيْشٍ فَأَتَانَا رَسُوْلُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّه“ قَدْ أُذِنَ لَكُمْ أَنْ تَسْتَمْتِعُوا فَاسْتَمْتِعُوا.

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্ এবং সালাম আকওয়া‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমরা কোন এক সেনাবাহিনীতে ছিলাম এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রেরিত এক ব্যক্তি আমাদের নিকট এসে বললেন, তোমাদেরকে মুত‘আহ বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা মুত‘আহ করতে পার। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৪)

৫১১৮
عَلِيٌّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ عَمْرٌو عَنِ الْحَسَنِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ وَسَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ قَالاَ كُنَّا فِي جَيْشٍ فَأَتَانَا رَسُوْلُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّه“ قَدْ أُذِنَ لَكُمْ أَنْ تَسْتَمْتِعُوا فَاسْتَمْتِعُوا.

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ এবং সালাম আকওয়া‘ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমরা কোন এক সেনাবাহিনীতে ছিলাম এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রেরিত এক ব্যক্তি আমাদের নিকট এসে বললেন, তোমাদেরকে মুত‘আহ বিয়ের অনুমতি দেয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা মুত‘আহ করতে পার। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৪)

৫১১৯
وَقَالَ ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنِي إِيَاسُ بْنُ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَيُّمَا رَجُلٍ وَامْرَأَةٍ تَوَافَقَا فَعِشْرَةُ مَا بَيْنَهُمَا ثَلاَثُ لَيَالٍ فَإِنْ أَحَبَّا أَنْ يَتَزَايَدَا أَوْ يَتَتَارَكَا تَتَارَكَا فَمَا أَدْرِي أَشَيْءٌ كَانَ لَنَا خَاصَّةً أَمْ لِلنَّاسِ عَامَّ.

قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ وَبَيَّنَه“ عَلِيٌّ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّه“ مَنْسُوخٌ.

ইব্‌নু আবূ যিব থেকে বর্ণিতঃ

আয়াস ইবনু সালামাহ ইবনু আকওয়া‘ তার পিতা সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন, যে কোন পুরুষ এবং মহিলা উভয়ে (মুত‘আহ করতে) একমত হলে তাদের পরস্পরের এ সম্পর্ক তিন রাতের জন্য গণ্য হবে। এরপর তারা ইচ্ছে করলে এর চেয়ে অধিক সময় স্থায়ী করতে পারে অথবা বিচ্ছিন্ন হতে চাইলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। (বর্ণনাকারী বলেন) আমরা জানি না এ ব্যবস্থা শুধু আমাদের জন্য নির্দিষ্ট ছিল, না সকল মানুষের জন্য ছিল।[মুসলিম ১৬/২, হাঃ ১৪০৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৪)







আবূ ‘আবদুল্লাহ্ (ইমাম বুখারী) বলেন, ‘আলী (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এটা পরিষ্কার করে ব’লে দিয়েছেন, মুতা‘আ বিবাহ প্রথা রহিত হয়ে গেছে। [মুসলিম ১৬/২, হাঃ ১৪০৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৪)

৬৭/৩৩. অধ্যায়ঃ
স্ত্রীলোকের সৎ পুরুষের কাছে নিজেকে (বিয়ের উদ্দেশে) পেশ করা।

৫১২০
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مَرْحُومُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ مِهْرَانَ قَالَ سَمِعْتُ ثَابِتًا الْبُنَانِيَّ قَالَ كُنْتُ عِنْدَ أَنَسٍ وَعِنْدَه“ ابْنَةٌ لَه“ قَالَ أَنَسٌ جَاءَتْ امْرَأَةٌ إِلٰى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَعْرِضُ عَلَيْهِ نَفْسَهَا قَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَلَكَ بِي حَاجَةٌ فَقَالَتْ بِنْتُ أَنَسٍ مَا أَقَلَّ حَيَاءَهَا وَا سَوْأَتَاهْ وَا سَوْأَتَاهْ قَالَ هِيَ خَيْرٌ مِنْكِ رَغِبَتْ فِي النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَعَرَضَتْ عَلَيْهِ نَفْسَهَا.

সাবিত আল বুনানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ) – এর কাছে ছিলাম। তখন তাঁর কাছে তাঁর কন্যাও ছিলেন। আনাস (রাঃ) বললেন, একজন মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে নিজেকে সমর্পণ করতে এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনার কি আমার প্রয়োজন আছে? এ কথা শুনে আনাস (রাঃ) – এর কন্যা বললেন, সেই মহিলা কতই না নির্লজ্জ, ছি: লজ্জার কথা। আনাস (রাঃ) বললেন, সে মহিলা তোমার চেয়ে উত্তম, সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সাহচর্য পেতে অনুরাগী হয়েছিল। এ কারনেই সে নিজেকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে পেশ করেছে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৫)

৫১২১
سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ حَدَّثَنَا أَبُو غَسَّانَ قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ أَنَّ امْرَأَةً عَرَضَتْ نَفْسَهَا عَلَى النَّبِيِّصلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَه“ رَجُلٌ يَا رَسُوْلَ اللهِ زَوِّجْنِيهَا فَقَالَ مَا عِنْدَكَ قَالَ مَا عِنْدِي شَيْءٌ قَالَ اذْهَبْ فَالْتَمِسْ وَلَوْ خَاتَمًا مِنْ حَدِيدٍ فَذَهَبَ ثُمَّ رَجَعَ فَقَالَ لاَ وَاللهِ مَا وَجَدْتُ شَيْئًا وَلاَ خَاتَمًا مِنْ حَدِيدٍ وَلٰكِنْ هٰذَا إِزَارِي وَلَهَا نِصْفُه“ قَالَ سَهْلٌ وَمَا لَه“ رِدَاءٌ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَمَا تَصْنَعُ بِإِزَارِكَ إِنْ لَبِسْتَه“ لَمْ يَكُنْ عَلَيْهَا مِنْه“ شَيْءٌ وَإِنْ لَبِسَتْه“ لَمْ يَكُنْ عَلَيْكَ مِنْه“ شَيْءٌ فَجَلَسَ الرَّجُلُ حَتّٰى إِذَا طَالَ مَجْلِسُه“ قَامَ فَرَآهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلمفَدَعَاه“أَوْ دُعِيَ لَه“ فَقَالَ لَه“ مَاذَا مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ فَقَالَ مَعِي سُورَةُ كَذَا وَسُورَةُ كَذَا لِسُوَرٍ يُعَدِّدُهَا فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَمْلَكْنَاكَهَا بِمَا مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ.

সাহ্‌ল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একজন মহিলা এসে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে নিজেকে পেশ করলেন। এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রসূল! তাকে আমার সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ করিয়ে দিন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার কাছে কি আছে? সে উত্তর দিল, আমার কাছে কিছুই নেই। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যাও, তালাশ কর, কোন কিছু পাও কিনা? দেখ যদি একটি লোহার আংটিও পাও। লোকটি চলে গেল এবং ফিরে এসে বলল, কিছুই পেলাম না এমনকি একটি লোহার আংটিও না; কিন্তু আমার এ তহবন্দখানা আছে। এর অর্ধেকাংশ তার জন্য। সাহ্‌ল (রাঃ) বলেন, তার দেহে কোন চাদর ছিল না। অতএব নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার তহবন্দ দিয়ে সে কি করবে? যদি তুমি এটা পর, মহিলার শরীরে কিছুই থাকবে না, আর যদি এটা সে পরে তবে তোমার শরীরে কিছুই থাকবে না। এরপর লোকটি অনেকক্ষণ বসে রইল। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে চলে যেতে দেখে ডাকলেন বা তাকে ডাকানো হল এবং বললেন, তুমি কুরআন কতটুকু জান? সে বলল, আমার অমুক অমুক সূরা মূখস্থ আছে এবং সে সূরাগুলোর উল্লেখ করল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি যে পরিমাণ কুরআন জান, তার বিনিময়ে তোমাকে এর সঙ্গে বিয়ে দিলাম। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৬)

৬৭/৩৪. অধ্যায়ঃ
নিজের কন্যা অথবা বোনকে বিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে কোন নেক্‌কার পরহেজগার ব্যক্তির সামনে পেশ করা।

৫১২২
عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّه“ سَمِعَ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَ رَ يُحَدِّثُ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ حِينَ تَأَيَّمَتْ حَفْصَةُ بِنْتُ عُمَرَ مِنْ خُنَيْسِ بْنِ حُذَافَةَ السَّهْمِيِّ وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَتُوُفِّيَ بِالْمَدِينَةِ فَقَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ أَتَيْتُ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ فَعَرَضْتُ عَلَيْهِ حَفْصَةَ فَقَالَ سَأَنْظُرُ فِي أَمْرِي فَلَبِثْتُ لَيَالِيَ ثُمَّ لَقِيَنِي فَقَالَ قَدْ بَدَا لِي أَنْ لاَ أَتَزَوَّجَ يَوْمِي هٰذَا قَالَ عُمَرُ فَلَقِيتُ أَبَا بَكْرٍ الصِّدِّيقَ فَقُلْتُ إِنْ شِئْتَ زَوَّجْتُكَ حَفْصَةَ بِنْتَ عُمَرَ فَصَمَتَ أَبُو بَكْرٍ فَلَمْ يَرْجِعْ إِلَيَّ شَيْئًا وَكُنْتُ أَوْجَدَ عَلَيْهِ مِنِّي عَلٰى عُثْمَانَ فَلَبِثْتُ لَيَالِيَ ثُمَّ خَطَبَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَنْكَحْتُهَا إِيَّاه“ فَلَقِيَنِي أَبُو بَكْرٍ فَقَالَ لَعَلَّكَ وَجَدْتَ عَلَيَّ حِينَ عَرَضْتَ عَلَيَّ حَفْصَةَ فَلَمْ أَرْجِعْ إِلَيْكَ شَيْئًا قَالَ عُمَرُ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ أَبُو بَكْرٍ فَإِنَّه“ لَمْ يَمْنَعْنِي أَنْ أَرْجِعَ إِلَيْكَ فِيمَا عَرَضْتَ عَلَيَّ إِلاَّ أَنِّي كُنْتُ عَلِمْتُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ ذَكَرَهَا فَلَمْ أَكُنْ لِأُفْشِيَ سِرَّ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلَوْ تَرَكَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَبِلْتُهَا.

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যখন ‘উমার (রাঃ) – এর কন্যা হাফসাহ (রাঃ) খুনায়স ইব্‌নু হুযাইফাহ সাহমীর মৃত্যুতে বিধবা হলেন, তিনি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর একজন সাহাবী ছিলেন এবং মদীনায় ইন্তিকাল করেন। ‘উমার ইব্‌নুল খাত্তাব (রাঃ) বলেন, আমি ‘উসমান ইব্‌নু ‘আফ্‌ফান (রাঃ) – এর কাছে গেলাম এবং হাফসাকে বিয়ে করার জন্য প্রস্তাব দিলাম; তখন তিনি বললেন, আমি এ ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করে দেখি। এরপর আমি কয়েক রাত অপেক্ষা করলাম, তারপর আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললেন, আমার কাছে এটা প্রকাশ পেয়েছে যে, যেন এখন আমি তাকে বিয়ে না করি। ‘উমার (রাঃ) বলেন, তারপর আমি আবূ বক্‌র সিদ্দিক (রাঃ) – এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম এবং বললাম, যদি আপনি চান তাহলে আপনার সঙ্গে ‘উমরের কন্যা হাফসাকে বিয়ে দেই। আবূ বকর (রাঃ) নিরব থাকলেন এবং প্রতি-উত্তরে আমাকে কিছুই বললেন না। এতে আমি ‘উসমান (রাঃ) – এর চেয়ে অধিক অসন্তুষ্ট হলাম, তারপর আমি কয়েক রাত অপেক্ষা করলাম। তারপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাফসাকে বিয়ের জন্য প্রস্তাব পাঠালেন এবং হাফসাকে আমি তার সঙ্গে বিয়ে দিলাম। এরপর আবূ বকর (রাঃ) আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললেন, সম্ভবত আপনি আমার উপর অসন্তুষ্ট হয়েছেন। আপনি যখন হাফসাকে আমার জন্য পেশ করেন তখন আমি কোন উত্তর দেইনি। ‘উমার (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হাঁ। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আপনার প্রস্তাবে সাড়া দিতে কোন কিছুই আমাকে বিরত করেনি; এ ছাড়া যে, আমি জানি, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাফসার বিষয় উল্লেখ করেছেন আর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর গোপন ভেদ প্রকাশ আমার পক্ষে কখনও সম্ভব নয়। যদি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা ত্যাগ করতেন তাহলে আমি হাফসাকে গ্রহন করতাম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৭)

৫১২৩
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ عَنْ عِرَاكِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ زَيْنَبَ بِنْتَ أَبِي سَلَمَةَ أَخْبَرَتْه“ أَنَّ أُمَّ حَبِيبَةَ قَالَتْ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّا قَدْ تَحَدَّثْنَا أَنَّكَ نَاكِحٌ دُرَّةَ بِنْتَ أَبِي سَلَمَةَ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَعَلٰى أُمِّ سَلَمَةَ لَوْ لَمْ أَنْكِحْ أُمَّ سَلَمَةَ مَا حَلَّتْ لِي إِنَّ أَبَاهَا أَخِي مِنَ الرَّضَاعَةِ.

ইরাক ইব্‌নু মালিক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যাইনাব বিন্‌তে আবূ সালামাহ (রাঃ) তাঁর কাছে বর্ণনা করেছেন যে, উম্মু হাবীবা (রাঃ) রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে বলেছেন, আপনি দুররাহ্‌ বিন্‌তে আবূ সালামাকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন। এ কথা আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, উম্মু সালামাহ থাকতে আমি তাকে বিয়ে করব? যদি আমি উম্মু সালামাকে বিয়ে না-ও করতাম, তবুও সে আমার জন্য হালাল হত না। কেননা তার পিতা আমার দুধভাই। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৮)

৬৭/৩৫. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্‌র বাণী: তোমাদের প্রতি গুনাহ নেই যদি তোমরা কথার ইশারায় নারীদেরকে বিবাহের প্রস্তাব পাঠাও, কিংবা নিজেদের মনে গোপন রাখ। আল্লাহ অবগত আছেন ……… ক্ষমাকারী এবং ধৈর্যশীল। (সূরাহ আল-বাক্বারাহ ২/২৩৫)

(আরবী) আরবী অর্থ – তোমরা গোপনে মনে পোষণ কর, প্রত্যেক বস্তু যা তুমি গোপনে রাখ তা হলো ‘মাকনূন’।

৫১২৪
وَقَالَ لِي طَلْقٌ حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، ‏{‏فِيمَا عَرَّضْتُمْ‏}‏ يَقُولُ إِنِّي أُرِيدُ التَّزْوِيجَ، وَلَوَدِدْتُ أَنَّهُ تَيَسَّرَ لِي امْرَأَةٌ صَالِحَةٌ‏.‏ وَقَالَ الْقَاسِمُ يَقُولُ إِنَّكِ عَلَىَّ كَرِيمَةٌ، وَإِنِّي فِيكِ لَرَاغِبٌ، وَإِنَّ اللَّهَ لَسَائِقٌ إِلَيْكِ خَيْرًا‏.‏ أَوْ نَحْوَ هَذَا‏.‏ وَقَالَ عَطَاءٌ يُعَرِّضُ وَلاَ يَبُوحُ يَقُولُ إِنَّ لِي حَاجَةً وَأَبْشِرِي، وَأَنْتِ بِحَمْدِ اللَّهِ نَافِقَةٌ‏.‏ وَتَقُولُ هِيَ قَدْ أَسْمَعُ مَا تَقُولُ‏.‏ وَلاَ تَعِدُ شَيْئًا وَلاَ يُوَاعِدُ وَلِيُّهَا بِغَيْرِ عِلْمِهَا، وَإِنْ وَاعَدَتْ رَجُلاً فِي عِدَّتِهَا ثُمَّ نَكَحَهَا بَعْدُ لَمْ يُفَرَّقْ بَيْنَهُمَا‏.‏ وَقَالَ الْحَسَنُ ‏{‏لاَ تُوَاعِدُوهُنَّ سِرًّا‏}‏ الزِّنَا‏.‏ وَيُذْكَرُ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ‏{‏الْكِتَابُ أَجَلَهُ‏}‏ تَنْقَضِي الْعِدَّةُ‏.‏

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

“যদি কোন ব্যক্তি ইদ্দত পালনকারী কোন মহিলাকে বলে যে, আমার বিয়ে করার ইচ্ছে আছে। আমি কোন নেক্‌কার মহিলাকে পেতে ইচ্ছে পোষণ করি।” কাসিম (রহঃ) বলেন, এ আয়াতের ব্যাখ্যা হচ্ছে, যেন কোন ব্যক্তি বলল, তুমি আমার কাছে খুবই সম্মানিতা এবং আমি তোমাকে পছন্দ করি। আল্লাহ্‌ তোমার জন্য কল্যাণ বর্ষণ করুন। অথবা এ ধরনের উক্তি। ‘আত্বা (রহঃ) বলেন, বিয়ের ইচ্ছে ইশারায় ব্যক্ত করা উচিত, খোলাখুলি এ ধরণের কোন কথা বলা ঠিক নয়। কেউ এ ধরণের বলতে পারে, আমার এ সকল গুণের প্রয়োজন আছে। আর তোমার জন্য সুখবর সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য আপনি পুন: বিয়ের উপযুক্ত। সে মহিলাও বলতে পারে- আপনি যা বলেছেন, তা আমি শুনেছি কিন্তু এর অধিক ওয়াদা করা ঠিক নয়। তার অভিভাবকদেরও তার অজ্ঞাতে কোন প্রকার ওয়াদা দেয়া ঠিক নয়। কিন্তু যদি কেউ ইদ্দাতের মাঝে কাউকে বিয়ের কোন প্রকার ওয়াদা করে এবং ইদ্দত শেষে সে ব্যক্তি যদি তাকে বিয়ে করে তবে সেই বিয়ে বিচ্ছেদ করতে হবে না। হাসান (রহঃ) বলেছেন, (আরবি) এর অর্থ হল: ব্যভিচার। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-এর উদ্ধৃতি দিয়ে এ কথা বলা হয় যে, (আরবি) অর্থ হল- ‘ইদ্দত পূর্ণ হওয়া।(আধুনিক প্রকাশনী- অনুচ্ছেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- অনুচ্ছেদ)

৬৭/৩৬. অধ্যায়ঃ
বিয়ে করার পূর্বে মেয়ে দেখে নেয়া।

৫১২৫
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ لِي رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَأَيْتُكِ فِي الْمَنَامِ يَجِيءُ بِكِ الْمَلَكُ فِي سَرَقَةٍ مِنْ حَرِيرٍ فَقَالَ لِيهٰذِه„ امْرَأَتُكَ فَكَشَفْتُ عَنْ وَجْهِكِ الثَّوْبَ فَإِذَا أَنْتِ هِيَ فَقُلْتُ إِنْ يَكُ هٰذَا مِنْ عِنْدِ اللهِ يُمْضِه„.

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেছেন, আমি তোমাকে স্বপ্নের মধ্যে দেখেছি, একজন ফেরেশতা তোমাকে রেশমী চাদরে জড়িয়ে আমার কাছে নিয়ে এসে বলল, এ হচ্ছে আপনার স্ত্রী। এরপর আমি তোমার মুখমন্ডল থেকে চাদর খুলে ফেলে তোমাকে দেখতে পেলাম। তখন আমি বললাম, যদি স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই তা বাস্তবায়িত হবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৪৯)

৫১২৬
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ عَنْ أَبِي حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ أَنَّ امْرَأَةً جَاءَتْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ جِئْتُ لِأَهَبَ لَكَ نَفْسِي فَنَظَرَ إِلَيْهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَصَعَّدَ النَّظَرَ إِلَيْهَا وَصَوَّبَه“ ثُمَّ طَأْطَأَ رَأْسَه“ فَلَمَّا رَأَتْ الْمَرْأَةُ أَنَّه“ لَمْ يَقْضِ فِيهَا شَيْئًا جَلَسَتْ فَقَامَ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِه„ فَقَالَ أَيْ رَسُوْلَ اللهِ إِنْ لَمْ تَكُنْ لَكَ بِهَا حَاجَةٌ فَزَوِّجْنِيهَا فَقَالَ هَلْ عِنْدَكَ مِنْ شَيْءٍ قَالَ لاَ وَاللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ اذْهَبْ إِلٰى أَهْلِكَ فَانْظُرْ هَلْ تَجِدُ شَيْئًا فَذَهَبَ ثُمَّ رَجَعَ فَقَالَ لاَ وَاللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ مَا وَجَدْتُ شَيْئًا قَالَ انْظُرْ وَلَوْ خَاتَمًا مِنْ حَدِيدٍ فَذَهَبَ ثُمَّ رَجَعَ فَقَالَ لاَ وَاللهِ يَا رَسُوْلَ اللهِ وَلاَ خَاتَمًا مِنْ حَدِيدٍ وَلٰكِنْ هٰذَا إِزَارِي قَالَ سَهْلٌ مَا لَه“ رِدَاءٌ فَلَهَا نِصْفُه“ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا تَصْنَعُ بِإِزَارِكَ إِنْ لَبِسْتَه“ لَمْ يَكُنْ عَلَيْهَا مِنْه“ شَيْءٌ وَإِنْ لَبِسَتْه“ لَمْ يَكُنْ عَلَيْكَ مِنْه“ شَيْءٌ فَجَلَسَ الرَّجُلُ حَتّٰى طَالَ مَجْلِسُه“ ثُمَّ قَامَ فَرَآه“ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مُوَلِّيًا فَأَمَرَ بِه„ فَدُعِيَ فَلَمَّا جَاءَ قَالَ مَاذَا مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ قَالَ مَعِي سُورَةُ كَذَا وَسُوْرَةُ كَذَا وَسُوْرَةُ كَذَا عَدَّدَهَا قَالَ أَتَقْرَؤُهُنَّ عَنْ ظَهْرِ قَلْبِكَ قَالَ نَعَمْ قَالَ اذْهَبْ فَقَدْ مَلَّكْتُكَهَا بِمَا مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ.

সাহল ইব্‌নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একজন মহিলা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি নিজেকে আপনার কাছে সমর্পণ করতে এসেছি। এরপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার দিকে দেখলেন এবং অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে দৃষ্টি দিলেন। আপাদমস্তক দেখা শেষ করে তিনি মাথা নিচু করলেন। যখন মহিলা দেখতে পেল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সম্পর্কে কোন ফয়সালা দিচ্ছেন না, তখন সে বসে পড়ল। তারপর একজন সাহাবী দাঁড়িয়ে অনুরোধ করলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! যদি আপনার এ মহিলার কোন প্রয়োজন না থাকে, তাহলে আমার সঙ্গে তাকে বিয়ে দিয়ে দিন। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার কাছে কোন সম্পদ আছে কি? সে বলল – না আল্লাহ্‌র কসম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার কাছে কোন সম্পদ নেই। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি তোমার পরিবারের কাছে গিয়ে দেখ, কোন কিছু পাও কিনা? তারপর সে চলে গেল, ফিরে এসে বলল, না, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি কিছুই পেলাম না। তখন তিনি বললেন, দেখ একটি লোহার আংটি পাও কিনা! এরপর সে চলে গেল। ফিরে এসে বলল, না, হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহ্‌র কসম, একটি লোহার আংটিও পেলাম না; কিন্তু এই আমার তহবন্দ আছে। [বর্ণনাকারী সাহল (রাঃ) বলেন তার কোন চাদর ছিল না] এর অর্ধেক তাকে দিয়ে দেব। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমার এ তহবন্দ দ্বারা কি হবে? যদি তুমি পর তবে তার জন্য কিছুই থাকবে না, আর যদি সে পরে তাহলে তোমার জন্য কিছুই থাকবে না। এরপর লোকটি বসে পড়ল। দীর্ঘক্ষণ পরে সে চলে যাবার জন্য উদ্যত হলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে দেখলেন এবং ডেকে এনে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কুরআন কতটুকু জানা আছে? সে বলল, হ্যাঁ, আমার অমুক, অমুক, অমুক সূরা জানা আছে। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি কি এগুলো মুখস্থ পড়তে পার? সে বলল, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, যাও, যে পরিমাণ কুরআন মাজীদ মুখস্থ জান, এর বিনিময়ে এই মহিলাকে তোমার সঙ্গে বিয়ে করিয়ে দিলাম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫০)

৬৭/৩৭. অধ্যায়ঃ
যারা বলে, ওয়ালী বা অভিভাবক ছাড়া বিয়ে শুদ্ধ হয় না, তারা আল্লাহ্‌ তা’আলার কালাম দলীল হিসাবে পেশ করে:

“যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দাও, তারপর তাদের ইদ্দৎ পূর্ণ হয়ে যায়, সে অবস্থায় তারা স্বামীদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চাইলে তাদেরকে বাধা দিও না।” -(সুরাহ আল-বাক্বারাহ ২/২৩২) এ নির্দেশের আওতায় বয়স্কা বিবাহিতা মহিলারা যেমন, তেমনি কুমারী মেয়েরাও এসে গেছে। মহান আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, “তোমরা মুশরিক মহিলাদের কখনও বিয়ে করবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা ঈমান না আনবে”- (সূরাহ আল-বাক্বারাহ ২/২২১)। আল্লাহ তা’আলা আরও বলেন, “তোমাদের ভিতরে যারা অবিবাহিতা আছে তাদের বিয়ে দিয়ে দাও” – (সূরাহ আন-নূর ২৪/৩২)।

৫১২৭
قَالَ يَحْيٰى بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ عَنْ يُونُسَ ح و حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ حَدَّثَنَا يُونُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ أَنَّ عَائِشَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْه“ أَنَّ النِّكَاحَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ كَانَ عَلٰى أَرْبَعَةِ أَنْحَاءٍ فَنِكَاحٌ مِنْهَا نِكَاحُ النَّاسِ الْيَوْمَ يَخْطُبُ الرَّجُلُ إِلَى الرَّجُلِ وَلِيَّتَه“ أَوْ ابْنَتَه“ فَيُصْدِقُهَا ثُمَّ يَنْكِحُهَا وَنِكَاحٌ آخَرُ كَانَ الرَّجُلُ يَقُوْلُ لِامْرَأَتِه„ إِذَا طَهُرَتْ مِنْ طَمْثِهَا أَرْسِلِي إِلٰى فُلاَنٍ فَاسْتَبْضِعِي مِنْه“ وَيَعْتَزِلُهَا زَوْجُهَا وَلاَ يَمَسُّهَا أَبَدًا حَتّٰى يَتَبَيَّنَ حَمْلُهَا مِنْ ذ‘لِكَ الرَّجُلِ الَّذِي تَسْتَبْضِعُ مِنْه“ فَإِذَا تَبَيَّنَ حَمْلُهَا أَصَابَهَا زَوْجُهَا إِذَا أَحَبَّ وَإِنَّمَا يَفْعَلُ ذ‘لِكَ رَغْبَةً فِي نَجَابَةِ الْوَلَدِ فَكَانَ هٰذَا النِّكَاحُ نِكَاحَ الِاسْتِبْضَاعِ وَنِكَاحٌ آخَرُ يَجْتَمِعُ الرَّهْطُ مَا دُونَ الْعَشَرَةِ فَيَدْخُلُونَ عَلَى الْمَرْأَةِ كُلُّهُمْ يُصِيبُهَا فَإِذَا حَمَلَتْ وَوَضَعَتْ وَمَرَّ عَلَيْهَا لَيَالٍ بَعْدَ أَنْ تَضَعَ حَمْلَهَا أَرْسَلَتْ إِلَيْهِمْ فَلَمْ يَسْتَطِعْ رَجُلٌ مِنْهُمْ أَنْ يَمْتَنِعَ حَتّٰى يَجْتَمِعُوا عِنْدَهَا تَقُولُ لَهُمْ قَدْ عَرَفْتُمْ الَّذِي كَانَ مِنْ أَمْرِكُمْ وَقَدْ وَلَدْتُ فَهُوَ ابْنُكَ يَا فُلاَنُ تُسَمِّي مَنْ أَحَبَّتْ بِاسْمِه„ فَيَلْحَقُ بِه„ وَلَدُهَا لاَ يَسْتَطِيعُ أَنْ يَمْتَنِعَ بِه„ الرَّجُلُ وَنِكَاحُ الرَّابِعِ يَجْتَمِعُ النَّاسُ الْكَثِيرُ فَيَدْخُلُونَ عَلَى الْمَرْأَةِ لاَ تَمْتَنِعُ مِمَّنْ جَاءَهَا وَهُنَّ الْبَغَايَا كُنَّ يَنْصِبْنَ عَلٰى أَبْوَابِهِنَّ رَايَاتٍ تَكُونُ عَلَمًا فَمَنْ أَرَادَهُنَّ دَخَلَ عَلَيْهِنَّ فَإِذَا حَمَلَتْ إِحْدَاهُنَّ وَوَضَعَتْ حَمْلَهَا جُمِعُوا لَهَا وَدَعَوْا لَهُمْ الْقَافَةَ ثُمَّ أَلْحَقُوا وَلَدَهَا بِالَّذِي يَرَوْنَ فَالْتَاطَ بِه„ وَدُعِيَ ابْنَه“ لاَ يَمْتَنِعُ مِنْ ذ‘لِكَ فَلَمَّا بُعِثَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم بِالْحَقِّ هَدَمَ نِكَاحَ الْجَاهِلِيَّةِ كُلَّه“ إِلاَّ نِكَاحَ النَّاسِ الْيَوْمَ.

‘উরওয়া ইব্‌নু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তাঁকে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সহধর্মিণী ‘আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, জাহিলী যুগে চার প্রকারের বিয়ে প্রচলিত ছিল। এক প্রকার হচ্ছে, বর্তমান যে ব্যবস্থা চলছে অর্থাৎ কোন ব্যক্তি কোন মহিলার অভিভাবকের নিকট তার অধীনস্থ মহিলা অথবা তার কন্যার জন্য বিবাহের প্রস্তাব দিবে এবং তার মোহর নির্ধারণের পর বিবাহ করবে। দ্বিতীয় হচ্ছে, কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে মাসিক ঋতু থেকে মুক্ত হবার পর এ কথা বলত যে, তুমি অমুক ব্যক্তির কাছে যাও এবং তার সঙ্গে যৌন মিলন কর। এরপর স্ত্রী তার স্বামীর থেকে পৃথক থাকত এবং কখনও এক বিছানায় ঘুমাত না, যতক্ষণ না সে অন্য ব্যক্তির দ্বারা গর্ভবতী হত, যার সঙ্গে তার যৌন মিলন হত। যখন তার গর্ভ সুস্পষ্টভাবে ইচ্ছে করলে স্বামী তার স্ত্রীর সাথে যৌন সঙ্গম করত। এটা ছিল তার স্বামীর অভ্যাস। এতে উদ্দেশ্য ছিল যাতে করে সে একটি উন্নত জাতের সন্তান লাভ করতে পারে। এ ধরনের বিয়েকে ‘নিকাহুল ইস্‌তিবদা’ বলা হত। তৃতীয় প্রথা ছিল যে, দশ জনের কম কয়েক ব্যক্তি একত্রিত হয়ে পালাক্রমে একই মহিলার সঙ্গে যৌনমিলনে লিপ্ত হত। যদি মহিলা এর ফলে গর্ভবতী হত এবং সন্তান ভূমিষ্ট হবার পর কিছুদিন অতিবাহিত হত, সেই মহিলা এ সকল ব্যক্তিকে ডেকে পাঠাত এবং কেউই আসতে অস্বীকৃতি জানাতে পারত না। যখন সকলেই সেই মহিলার সামনে একত্রিত হত, তখন সে তাদেরকে বলত, তোমরা সকলেই জান- তোমরা কী করেছ! এখন আমি সন্তান প্রসব করেছি, সুতরাং হে অমুক! এটা তোমার সন্তান। ঐ মহিলা যাকে খুশি তার নাম ধরে ডাকত, তখন ঐ ব্যক্তি উক্ত শিশুটিকে গ্রহণ করতে বাধ্য থাকত এবং ঐ মহিলা তার স্ত্রীরূপে গণ্য হত। চতুর্থ প্রকারের বিবাহ হচ্ছে, বহু পুরুষ ঐ মহিলার সঙ্গে যৌন মিলনে লিপ্ত হত এবং ঐ মহিলা তার আছে যত পুরুষ আসত, কাউকে শয্যা-সঙ্গী করতে অস্বীকার করত না। এরা ছিল পতিতা, যার চিহ্ন হিসেবে নিজ ঘরের সামনে পতাকা উড়িয়ে রাখত। যে কেউ ইচ্ছে করলে অবাধে এদের সঙ্গে যৌন মিলনে লিপ্ত হওয়া সকল কাফাহ্‌ পুরুষ এবং একজন ‘কাফাহ্‌’ (এমন একজন বিশেষজ্ঞ, যারা সন্তানের মুখ অথবা শরীরের কোন অঙ্গ দেখে বলতে পারত- অমুকের ঔরসজাত সন্তান)-কে ডেকে আনা হত। সে সন্তানটির যে লোকটির সঙ্গে সাদৃশ্য দেখতে পেত তাকে বলত, এটি তোমার সন্তান। তখন ঐ লোকটি ঐ সন্তানকে নিজের হিসেবে গ্রহণ করতে বাধ্য হত এবং লোকে ঐ সন্তানকে তার সন্তান হিসেবে আখ্যা দিত এবং সে এই সন্তানকে অস্বীকার করতে পারত না। যখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে সত্য দ্বীনসহ পাঠানো হল তখন তিনি বর্তমানে প্রচলিত ব্যবস্থা ছাড়া জাহিলী যুগের সমস্ত বিবাহের রীতি বাতিল করে দিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- অনুচ্ছেদ ৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫১)

৫১২৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، ‏{‏وَمَا يُتْلَى عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِ فِي يَتَامَى النِّسَاءِ اللاَّتِي لاَ تُؤْتُونَهُنَّ مَا كُتِبَ لَهُنَّ وَتَرْغَبُونَ أَنْ تَنْكِحُوهُنَّ‏}‏‏.‏ قَالَتْ هَذَا فِي الْيَتِيمَةِ الَّتِي تَكُونُ عِنْدَ الرَّجُلِ، لَعَلَّهَا أَنْ تَكُونَ شَرِيكَتَهُ فِي مَالِهِ، وَهْوَ أَوْلَى بِهَا، فَيَرْغَبُ أَنْ يَنْكِحَهَا، فَيَعْضُلَهَا لِمَالِهَا، وَلاَ يُنْكِحَهَا غَيْرَهُ، كَرَاهِيَةَ أَنْ يَشْرَكَهُ أَحَدٌ فِي مَالِهَا‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এ আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আল্লাহ তাদের সম্বন্ধে তোমাদেরকে বিধান জানিয়ে দিচ্ছেন সেসব নারী সম্পর্কে যাদের প্রাপ্য তোমরা প্রদান কর না অথচ তাদেরকে বিয়ে করতে চাও” (সূরা আন-নিসাঃ ১২৭) তিনি বলেন, এ আয়াত হচ্ছে ঐ ইয়াতীম নারীদের সম্পর্কে, যারা কোন অভিভাবকের আওতাধীন রয়েছে এবং তার ধন-সম্পদে সে মালিকানা রাখে কিন্তু তাকে বিয়ে করা পছন্দ করে না এবং তার সম্পদের জন্য অন্যের কাছে বিয়ে দিতে আগ্রহীও নয়, যাতে করে অন্য লোক এ সম্পত্তিতে তাদের সঙ্গে অংশীদার হয়ে না বসে (উক্ত আয়াতে অভিভাবকদের এরূপ অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫২)

৫১২৯
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ قَالَ أَخْبَرَنِي سَالِمٌ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ أَخْبَرَه“ أَنَّ عُمَرَ حِينَ تَأَيَّمَتْ حَفْصَةُ بِنْتُ عُمَرَ مِنْ ابْنِ حُذَافَةَ السَّهْمِيِّ وَكَانَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ أَهْلِ بَدْرٍ تُوُفِّيَ بِالْمَدِينَةِ فَقَالَ عُمَرُ لَقِيتُ عُثْمَانَ بْنَ عَفَّانَ فَعَرَضْتُ عَلَيْهِ فَقُلْتُ إِنْ شِئْتَ أَنْكَحْتُكَ حَفْصَةَ فَقَالَ سَأَنْظُرُ فِي أَمْرِي فَلَبِثْتُ لَيَالِيَ ثُمَّ لَقِيَنِي فَقَالَ بَدَا لِي أَنْ لاَ أَتَزَوَّجَ يَوْمِي هٰذَا قَالَ عُمَرُ فَلَقِيتُ أَبَا بَكْرٍ فَقُلْتُ إِنْ شِئْتَ أَنْكَحْتُكَ حَفْصَةَ.

‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘উমর (রাঃ) – এর কন্যা হাফসা (রাঃ) যখন তার স্বামী খুনায়স ইব্‌নু হুযাফা আস্‌সাহ্‌মীর মৃত্যুর ফলে বিধবা হল, ইনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সাহাবী ছিলেন এবং বদরের যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন এবং মদীনায় ইন্তিকাল করেন। ‘উমর (রাঃ) বলেন, আমি ‘উসমান ইব্‌নু ‘আফ্‌ফান (রাঃ) –এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম এবং তাঁর কাছে হাফসার বিয়ের প্রস্তাব করলাম এই ব’লে যে, যদি আপনি ইচ্ছা করেন, তবে হাফসাকে আপনার সঙ্গে বিয়ে দিব। তিনি বললেন, আমি এ ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করে দেখি। আমি কয়েকদিন অপেক্ষা করলাম। তারপর তিনি আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললেন, আমি বর্তমানে বিয়ে না করার জন্য মনস্থির করেছি। ‘উমর (রাঃ) আরো বলেন, আমি আবূ বকর (রাঃ) –এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বললাম, আপনি যদি চান, তাহলে হাফসাকে আপনার সঙ্গে বিয়ে দিব।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৩)

৫১৩০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ أَبِي عَمْرٍو، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ الْحَسَنِ، ‏{‏فَلاَ تَعْضُلُوهُنَّ‏}‏ قَالَ حَدَّثَنِي مَعْقِلُ بْنُ يَسَارٍ، أَنَّهَا نَزَلَتْ فِيهِ قَالَ زَوَّجْتُ أُخْتًا لِي مِنْ رَجُلٍ فَطَلَّقَهَا، حَتَّى إِذَا انْقَضَتْ عِدَّتُهَا جَاءَ يَخْطُبُهَا، فَقُلْتُ لَهُ زَوَّجْتُكَ وَفَرَشْتُكَ وَأَكْرَمْتُكَ، فَطَلَّقْتَهَا، ثُمَّ جِئْتَ تَخْطُبُهَا، لاَ وَاللَّهِ لاَ تَعُودُ إِلَيْكَ أَبَدًا، وَكَانَ رَجُلاً لاَ بَأْسَ بِهِ وَكَانَتِ الْمَرْأَةُ تُرِيدُ أَنَّ تَرْجِعَ إِلَيْهِ فَأَنْزَلَ اللَّهُ هَذِهِ الآيَةَ ‏{‏فَلاَ تَعْضُلُوهُنَّ‏}‏ فَقُلْتُ الآنَ أَفْعَلُ يَا رَسُولَ اللَّهِ‏.‏ قَالَ فَزَوَّجَهَا إِيَّاهُ‏.‏

আল হাসান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি “তোমরা তাদেরকে আটকে রেখো না” – এ আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে বলেন, মা’কিল ইব্‌নু ইয়াসার (রাঃ) বলেছেন যে, উক্ত আয়াত তাঁর সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি বলেন, আমি আমার বোনকে এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে দেই, সে তাকে তালাক দিয়ে দেয়। যখন তাঁর ইদ্দতকাল অতিক্রান্ত হয় তখন সেই ব্যক্তি আমার কাছে আসে এবং তাকে পুনরায় বিয়ের পয়গাম দেয়। কিন্তু আমি তাকে বলে দিই, আমি তাকে তোমার সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলাম এবং তোমরা মেলামেশা করেছ এবং আমি তোমাকে মর্যাদা দিয়েছি। তারপরেও তুমি তাকে তালাক দিলে? পুনরায় তুমি তাকে চাওয়ার জন্য এসেছ? আল্লাহ্‌র কসম, সে আবারও কখনও তোমার কাছে ফিরে যাবে না। মা’কিল বলেন, সে লোকটি অবশ্য খারাপ ছিল না এবং তার স্ত্রীও তার কাছে ফিরে যেতে আগ্রহী ছিল। এমতাবস্থায় আল্লাহ্‌ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ “তাদেরকে বাধা দিও না,” এরপর আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি আমার বোনকে তার কাছে বিয়ে দেব। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি তাকে তার সঙ্গে পুনরায় বিয়ে দিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৪)

৬৭/৩৮. অধ্যায়ঃ
ওয়ালী বা অভিভাবক নিজেই যদি বিয়ের প্রার্থী হয়।

মুগীরা ইব্‌নু শু’বাহ (রাঃ) এমন এক মহিলার সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব দেন, যার নিকটতম অভিভাবক তিনিই ছিলেন। সুতরাং তিনি অন্য একজনকে তার বিয়ে বন্ধনের আদেশ দিলে সে ব্যক্তি তার সঙ্গে বিয়ে করিয়ে দিলেন।

‘আবদুর রহমান ইব্‌নু ‘আওফ (রাঃ) উম্মু হাকীম বিন্‌তে কারিয (রাঃ) -কে বললেন, তুমি কি তোমার বিয়ের ব্যাপারে আমাকে দায়িত্ব দেবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। ‘আবদুর রহমান (রাঃ) বললেন, আমি তোমাকে বিয়ে করলাম। ‘আত্বা বলেন, অভিভাবক লোকদেরকে সাক্ষী রেখে বলবে, আমি তোমাকে বিয়ে করলাম, অথবা ঐ মহিলার নিকটতম আত্মীয়দের কাউকে তার কাছে তাকে বিয়ে দেয়ার জন্য বলবে।

সাহ্‌ল (রাঃ) বলেন, একজন মহিলা এসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে বলল, আমি নিজেকে আপনার কাছে সমর্পণ করলাম। এরপর একজন লোক বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! এই মহিলাকে যদি আপনার প্রয়োজন না থাকে তাহলে আমার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিন।

৫১৩১
حَدَّثَنَا ابْنُ سَلاَمٍ، أَخْبَرَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ فِي قَوْلِهِ ‏{‏وَيَسْتَفْتُونَكَ فِي النِّسَاءِ قُلِ اللَّهُ يُفْتِيكُمْ فِيهِنَّ‏}‏ إِلَى آخِرِ الآيَةِ، قَالَتْ هِيَ الْيَتِيمَةُ تَكُونُ فِي حَجْرِ الرَّجُلِ، قَدْ شَرِكَتْهُ فِي مَالِهِ، فَيَرْغَبُ عَنْهَا أَنْ يَتَزَوَّجَهَا، وَيَكْرَهُ أَنْ يُزَوِّجَهَا غَيْرَهُ، فَيَدْخُلَ عَلَيْهِ فِي مَالِهِ، فَيَحْبِسُهَا، فَنَهَاهُمُ اللَّهُ عَنْ ذَلِكَ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এ আয়াত হচ্ছে “লোকেরা তোমার কাছে নারীদের সম্বন্ধে বিধান জানতে চাচ্ছে। বলে দাও, ‘আল্লাহ তাদের সম্বন্ধে তোমাদেরকে বিধান জানিয়ে দিচ্ছেন……” –(সূরা আন্‌-নিসা ৪/১২৭)। এ আয়াত হচ্ছে ইয়াতিম বালিকাদের সম্পর্কে, যারা কোন অভিভাবকদের অধীনে আছে এবং তারা ঐ অভিভাবকের ধন-সম্পদেও অংশীদার; অথচ সে নিজে ওকে বিয়ে করতে ইচ্ছুক নয় এবং অন্য কেউ তাদেরকে বিয়ে করুক এবং ধন-সম্পদে ভাগ বসাক তাও সে পছন্দ করে না। তাই সে তার বিয়েতে বাধার সৃষ্টি করে। সুতরাং আল্লাহ তা’আলা এই ব্যপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৫)

৫১৩২
أَحْمَدُ بْنُ الْمِقْدَامِ حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا أَبُو حَازِمٍ حَدَّثَنَا سَهْلُ بْنُ سَعْدٍ كُنَّا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم جُلُوسًا فَجَاءَتْه“ امْرَأَةٌ تَعْرِضُ نَفْسَهَا عَلَيْهِ فَخَفَّضَ فِيهَا النَّظَرَ وَرَفَعَه“ فَلَمْ يُرِدْهَا فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ أَصْحَابِه„ زَوِّجْنِيهَا يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ أَعِنْدَكَ مِنْ شَيْءٍ قَالَ مَا عِنْدِي مِنْ شَيْءٍ قَالَ وَلاَ خَاتَمٌ مِنْ حَدِيدٍ قَالَ وَلاَ خَاتَمٌ مِنْ حَدِيدٍ وَلٰكِنْ أَشُقُّ بُرْدَتِي هٰذِه„ فَأُعْطِيهَا النِّصْفَ وَآخُذُ النِّصْفَ قَالَ لاَ هَلْ مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ شَيْءٌ قَالَ نَعَمْ قَالَ اذْهَبْ فَقَدْ زَوَّجْتُكَهَا بِمَا مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ.

সাহ্‌ল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদা আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট বসা ছিলাম। এমন সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট একজন মহিলা এসে নিজেকে পেশ করল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার আপাদমস্তক ভাল করে দেখলেন; কিন্তু তার কথার কোন উত্তর দিলেন না। একজন সাহাবী আরজ করলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! তাকে আমার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দিন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কাছে কিছু আছে কি? লোকটি উত্তর করল, না, আমার কাছে কিছু নেই। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, একটি লোহার আংটিও নেই? লোকটি উত্তর করল, না, আমার একটি লোহার আংটিও নেই। কিন্তু আমি আমার পরিধানের তহবন্দের অর্ধেক তাকে দেব আর অর্ধেক নিজে পরব। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, না। তোমার কুরআন মাজীদের কিছু জানা আছে? সে বলল, হ্যাঁ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি যে পরিমাণ কুরআন জান, তার পরিবর্তে আমি তাকে তোমার সাথে বিয়ে দিলাম। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৬)

৬৭/৩৯. অধ্যায়ঃ
কার জন্য ছোট শিশুদের বিয়ে দেয়া বৈধ।

আল্লাহ তা’আলার কালাম “এবং যারা ঋতুবতী হয়নি” –(সূরা আত-ত্বলাকঃ ৪) এই আয়াতকে দলীল হিসাবে ধরে নাবালেগার ইদ্দাত তিন মাস নির্ধারণ করা হয়েছে।

৫১৩৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم تَزَوَّجَهَا وَهْىَ بِنْتُ سِتِّ سِنِينَ، وَأُدْخِلَتْ عَلَيْهِ وَهْىَ بِنْتُ تِسْعٍ، وَمَكَثَتْ عِنْدَهُ تِسْعًا‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন তাঁকে বিয়ে করেন তখন তার বয়স ছিল ৬ বছর এবং নয় বছর বয়সে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সঙ্গে বাসর ঘর করেন এবং তিনি তাঁর সান্নিধ্যে নয় বছরকাল ছিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৭)

৬৭/৪০. অধ্যায়ঃ
আপন পিতা কর্তৃক নিজ কন্যাকে কোন ইমামের সঙ্গে বিয়ে দেয়া।

‘উমর (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার কন্যা-হাফসাহ্‌র সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব দিলে আমি তাকে তাঁর সঙ্গে বিয়ে দেই।

৫১৩৪
مُعَلّٰى بْنُ أَسَدٍ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم تَزَوَّجَهَا وَهِيَ بِنْتُ سِتِّ سِنِينَ وَبَنٰى بِهَا وَهِيَ بِنْتُ تِسْعِ سِنِينَ قَالَ هِشَامٌ وَأُنْبِئْتُ أَنَّهَا كَانَتْ عِنْدَه“ تِسْعَ سِنِينَ.

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যখন তাঁর ছয় বছর বয়স তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বিয়ে করেন। তিনি তাঁর সঙ্গে বাসর করেন নয় বছর বয়সে। হিশাম (রহঃ) বলেন, আমি জেনেছি যে, ‘আয়িশা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে নয় বছর ছিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৮)

৬৭/৪১. অধ্যায়ঃ
সুলতানই ওলী (যার কোন ওলী নাই)। এর প্রমাণ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর হাদীসঃ আমি তাকে তোমার কাছে জানা কুরআনের বিনিময়ে বিয়ে দিলাম।

৫১৩৫
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ أَبِي حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ جَاءَتْ امْرَأَةٌ إِلٰى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ إِنِّي وَهَبْتُ مِنْ نَفْسِي فَقَامَتْ طَوِيلاً فَقَالَ رَجُلٌ زَوِّجْنِيهَا إِنْ لَمْ تَكُنْ لَكَ بِهَا حَاجَةٌ قَالَ هَلْ عِنْدَكَ مِنْ شَيْءٍ تُصْدِقُهَا قَالَ مَا عِنْدِي إِلاَّ إِزَارِي فَقَالَ إِنْ أَعْطَيْتَهَا إِيَّاه“ جَلَسْتَ لاَ إِزَارَ لَكَ فَالْتَمِسْ شَيْئًا فَقَالَ مَا أَجِدُ شَيْئًا فَقَالَ الْتَمِسْ وَلَوْ خَاتَمًا مِنْ حَدِيدٍ فَلَمْ يَجِدْ فَقَالَ أَمَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ شَيْءٌ قَالَ نَعَمْ سُورَةُ كَذَا وَسُورَةُ كَذَا لِسُوَرٍ سَمَّاهَا فَقَالَ قَدْ زَوَّجْنَاكَهَا بِمَا مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ.

সাহ্‌ল ইব্‌নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

কোন এক মহিলা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে এসে বলল, আমি আমার নিজেকে আপনার কাছে দান করলাম। এরপর সে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকল। তখন একজন লোক বলল, আপনার দরকার না হলে, আমার সঙ্গে এর বিয়ে দিয়ে দিন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কাছে মোহর দেয়ার মত কি কিছু আছে? লোকটি বলল, আমার এ তহবন্দ ছাড়া আর কিছুই নেই। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যদি তুমি তহবন্দখানা তাঁকে দিয়ে দাও, তাহলে তোমার কিছু থাকবে না। কাজেই তুমি অন্য কিছু খুঁজে আন। লোকটি বলল, আমি কোন কিছুই পেলাম না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, খুঁজে দেখ, যদি একটি লোহার আংটিও পাও। সে কিছুই পেল না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, কুরআনের কিছু অংশ তোমার জানা আছে কি? লোকটি বলল হ্যাঁ! অমুক অমুক সূরা আমার জানা আছে এবং সে সূরাগুলোর নাম বলল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কুরআনের যা তোমার জানা আছে, তার বিনিময়ে আমি তাকে তোমার নিকট বিয়ে দিলাম। [২৩১০; মুসলিম ১৬/১২, হাঃ ১৪২৫, আহমাদ ২২৯১৩](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৫৯)

৬৭/৪২. অধ্যায়ঃ
পিতা বা অভিভাবক কুমারী অথবা বিবাহিতা মেয়েকে তাদের সম্মতি ছাড়া বিবাহ দিতে পারে না।

৫১৩৬
مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ يَحْيٰى عَنْ أَبِي سَلَمَةَ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ حَدَّثَهُمْ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ تُنْكَحُ الأَيِّمُ حَتّٰى تُسْتَأْمَرَ وَلاَ تُنْكَحُ الْبِكْرُ حَتّٰى تُسْتَأْذَنَ قَالُوا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَكَيْفَ إِذْنُهَا قَالَ أَنْ تَسْكُتَ.

আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

বর্ণিত। আবূ হুরায়রা (রাঃ) তাদের কাছে বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন বিধবা নারীকে তার সম্মতি ব্যতীত বিয়ে দেয়া যাবে না এবং কুমারী মহিলাকে তাঁর অনুমতি ছাড়া বিয়ে দিতে পারবে না। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! কেমন করে তার অনুমতি নেয়া হবে। তিনি বললেন, তার চুপ থাকাটাই তার অনুমতি।[৬৯৭০; মুসলিম ১৬/৮, হাঃ ১৪১৯, আহমাদ ৯৬১১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬০)






[১৫] এ হাদীসের উপর ভিত্তি করে ইমাম আবূ হানীফা (রহঃ) বলেছেন – অলী বিবাহিত ও অবিবাহিত মেয়েকে কোন নির্দিষ্ট ছেলেকে বিয়ে করতে বাধ্য করতে পারে না। অতএব পূর্বে বিবাহিত মেয়েদের কাছ থেকে বিয়ের জন্য রীতিমত আদেশ পেতে হবে এবং অবিবাহিত বালেগ মেয়ে থেকে যথারীতি অনুমতি নিতে হবে। এ সম্পর্কে ইমাম মুসলিম হাদীস বর্ণনা করেছেন- পূর্বে বিবাহিত মেয়েরা তাদের নিজেদের বিয়ের মত জানানোর ব্যপারে তাদের অলী অপেক্ষাও বেশি অধিকার রাখে। আর পূর্বে অবিবাহিত মেয়েদের নিকট তাদের পিতা বিয়ের মত জানতে চাইলে তাদের চুপ থাকাই তাদের অনুমতিজ্ঞাপক।

কিন্তু বড়ই দুর্ভাগ্যের ব্যাপার বর্তমান অধঃপতিত মুসলিম সমাজে মেয়েদের এ অধিকার বাস্তব ক্ষেত্রে কার্যকর হচ্ছে না। এর অপর একটি দিক বর্তমানে খুবই প্রাবল্য লাভ করেছে। আধুনিক ছেলেমেয়েরা তাদের বিয়ের ব্যাপারে তাদের বাপ-মা-গার্জিয়ানদের কোন তোয়াক্কাই রাখে না। তাদের কোন পরোয়াই করা হয় না। ‘বিয়ে নিজের পছন্দেই ঠিক’ এ কথার সত্যতা অস্বীকার করা হচ্ছে না, তেমনি এ কথাও এ কথাও অস্বীকার করার উপায় নেই, আধুনিক যুবক যুবতীরা যৌবনের উদ্দামতায় অবাধ মেলামেশার গড্ডালিকা প্রবাহে পড়ে দিশেহারা হয়ে যেতে পারে এবং ভাল-মন্দ, শোভন-অশোভন বিচারশূন্য হয়ে যেখানে সেখানে আত্মদান করে বসতে পারে। তাই উদ্দাম-উৎসাহের সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ বিচার বিবেচনারও বিশেষ প্রয়োজন। কেননা বিয়ে কেবলমাত্র যৌন পরিতৃপ্তির মাধ্যম নয়; ঘর, পরিবার, সন্তান, সমাজ, জাতি ও দেশ সর্বপরি নৈতিকতার প্রশ্নও তাঁর সাথে গভীরভাবে জড়িত। তাই বিয়ের ব্যপারে ছেলেমেয়ের পিতা বা অলীর মতামতের গুরুত্ব আছে। কেননা সাধারণতঃ অলী-পিতা-মাতা নিজেদের ছেলেমেয়েদের কখনও অকল্যাণকামী হতে পারে না। তাই বাস্তব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পিতামাতার মতের গুরুত্ব কিছুতেই অস্বীকার করা চলেনা।

ছেলেরা বিয়েতে অলী তথা অভভাবকের বাধ্য বাধকতা নেই কিন্তু মেয়ের জন্য বাধ্যবাধকতা রয়েছে। মেয়ের বৈধ অলী থাকাবস্থায় তাকে না জানিয়ে নকল অলী বানিয়ে কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে যত বিবাহ হয়ে থাকে তা সবই বাতিল। তাদের দাম্পত্য জীবন হবে ব্যভিচারী জীবনের মত। তাদের অর্জিত সন্তান সন্ততি জারজ হিসেবে পরিগণিত হবে। এ অভিশপ্ত জীবন থেকে পরিত্রাণের জন্য তাদের বৈধ অলীর মাধ্যমে পুনর্বিবাহ পড়াতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় অলী বর্তমান থাকা সত্বেও তাকে গুরুত্ব না দিয়ে এবং তাঁর নির্দেশ ও সম্মতি ব্যতিরেকে অন্য কোন লোককে অলী হিসিবে দাঁড় করিয়ে বিবাহ কার্য সম্পন্ন করা হয়, এটা না-জায়িয। বরং মূল অলী নিজেই অথবা তার অবর্তমানে যাকে দায়িত্ব দিবে সে অলী হিসেবে বিবাহ কার্য সম্পাদন করবে।

উল্লেখ্য অলী কর্তৃক মেয়ের পক্ষ থেকে পূর্ব অনুমতি বা সমর্থন নিতে হবে ঠিক আছে। কিন্তু বৈধ অলীর [অভিভাবকের] সমর্থন ও অনুমতি ব্যতীত কোন মেয়ের বিয়েই বৈধ হবে না। কারণ আয়েশা হতে বর্ণিত হয়েছে তিনি বলেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (আরবী) “যে মেয়েকে তার অভিভাবক বিয়ে না দিবে [সে নিজে বিয়ে করলে] তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল, তার বিয়ে বাতিল…।“ [হাদীসটি ইবনু মাজাহ্‌ বর্ণনা করেছেন, হাদীসটি সহীহ্‌, দেখুন “সহীহ্‌ ইবনু মাজাহ্‌” (১৮৭৯)।

অন্য বর্ণনায় আয়েশা(রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (আরবী) “যে মেয়েই তার অভিভাবকের অনুমতি ব্যতীত বিয়ে করবে তার বিয়ে বাতিল। এ কথাটি তিনবার উল্লেখ করেন।“ [এ ভাষায় হাদীসটি ইমাম আবূ দাউদ (২০৮৩), তিরমিযী (১১০২) বর্ণনা করেছেন। হাদীসটি সহীহ্‌, দেখুন “সহীহ্‌ আবূ দাউদ”, “সহীহ্‌ তিরমিযী”, “সহীহ্‌ জামে’ইস সাগীর” (২৭০৯) ও “মিশকাত” (৩১৩১)]।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৫১৩৭
عَمْرُو بْنُ الرَّبِيعِ بْنِ طَارِقٍ قَالَ أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ عَنْ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ عَنْ أَبِي عَمْرٍو مَوْلَى. عَائِشَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّهَا قَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ الْبِكْرَ تَسْتَحِي قَالَ رِضَاهَا صَمْتُهَا.

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! নিশ্চয়ই কুমারী মেয়েরা লজ্জা করে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, চুপ থাকাটাই হচ্ছে তার সম্মতি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬১)

৬৭/৪৩. অধ্যায়ঃ
কন্যার অসন্তুষ্টিতে পিতা তার বিয়ে দিলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে।

৫১৩৮
إِسْمَاعِيلُ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ وَمُجَمِّعٍ ابْنَيْ يَزِيدَ بْنِ جَارِيَةَ عَنْ خَنْسَاءَ بِنْتِ خِذَامٍ الأَنْصَارِيَّةِ أَنَّ أَبَاهَا زَوَّجَهَا وَهِيَ ثَيِّبٌ فَكَرِهَتْ ذ‘لِكَ فَأَتَتْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَرَدَّ نِكَاحَهُ.

খান্‌সা বিনতে খিযাম আল আনসারইয়্যাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বর্ণনা করেন যে, যখন তিনি অকুমারী ছিলেন তখন তার পিতা তাকে বিয়ে দেন। এ বিয়ে তিনি অপছন্দ করলেন। এরপর তিনি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আসলেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ বিয়ে বাতিল করে দিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬২)

৫১৩৯
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا يَزِيدُ أَخْبَرَنَا يَحْيٰى أَنَّ الْقَاسِمَ بْنَ مُحَمَّدٍ حَدَّثَه“ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمٰنِ بْنَ يَزِيدَ وَمُجَمِّعَ بْنَ يَزِيدَ حَدَّثَاه“ أَنَّ رَجُلاً يُدْعٰى خِذَامًا أَنْكَحَ ابْنَةً لَه“ نَحْوَهُ.

‘আবদুর রহমান ইব্‌নু ইয়াযীদ এবং মুজাম্মি’ ইব্‌নু ইয়াযীদ থেকে বর্ণিতঃ

‘খিযামা’ নামীয় এক লোক তার মেয়েকে তার অনুমতি ব্যতীত বিয়ে দেন। পরবর্তী অংশ পূর্বোক্ত হাদীসের ন্যায়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৩)

৬৭/৪৪. অধ্যায়ঃ
ইয়াতীম বালিকার বিয়ে দেয়া।

আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “যদি তোমরা ভয় কর যে ইয়াতীম বালিকাদের প্রতি পূর্ণ ইনসাফ করতে পারবে না, তাহলে তোমরা পছন্দ মতো অন্য কাউকে বিয়ে কর।” –(সূরা আন্‌-নিসা ৪/৩)। কেউ কোন অভিভাবককে যদি বলে, অমুক মহিলাকে আমার সঙ্গে বিয়ে দিন এবং সে যদি চুপ থাকে অথবা তাকে বলে তোমার কাছে কী আছে?সে উত্তরে বলে আমার কাছে এই এই আছে অথবা নীরব থাকে। এরপর অভিভাবক বলেন, আমি তাকে তোমার কাছে বিয়ে দিলাম, তাহলে তা বৈধ। এ ব্যাপারে সাহ্‌ল (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন।

৫১৪০
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ،‏.‏ وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَأَلَ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَ لَهَا يَا أُمَّتَاهْ ‏{‏وَإِنْ خِفْتُمْ أَنْ لاَ تُقْسِطُوا فِي الْيَتَامَى‏}‏ إِلَى ‏{‏مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ‏}‏ قَالَتْ عَائِشَةُ يَا ابْنَ أُخْتِي هَذِهِ الْيَتِيمَةُ تَكُونُ فِي حَجْرِ وَلِيِّهَا، فَيَرْغَبُ فِي جَمَالِهَا وَمَالِهَا، وَيُرِيدُ أَنْ يَنْتَقِصَ مِنْ صَدَاقِهَا، فَنُهُوا عَنْ نِكَاحِهِنَّ‏.‏ إِلاَّ أَنْ يُقْسِطُوا لَهُنَّ فِي إِكْمَالِ الصَّدَاقِ وَأُمِرُوا بِنِكَاحِ مَنْ سِوَاهُنَّ مِنَ النِّسَاءِ، قَالَتْ عَائِشَةُ اسْتَفْتَى النَّاسُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعْدَ ذَلِكَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ ‏{‏وَيَسْتَفْتُونَكَ فِي النِّسَاءِ‏}‏ إِلَى ‏{‏وَتَرْغَبُونَ‏}‏ فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ لَهُمْ فِي هَذِهِ الآيَةِ أَنَّ الْيَتِيمَةَ إِذَا كَانَتْ ذَاتَ مَالٍ وَجَمَالٍ، رَغِبُوا فِي نِكَاحِهَا وَنَسَبِهَا وَالصَّدَاقِ، وَإِذَا كَانَتْ مَرْغُوبًا عَنْهَا فِي قِلَّةِ الْمَالِ وَالْجَمَالِ، تَرَكُوهَا وَأَخَذُوا غَيْرَهَا مِنَ النِّسَاءِ ـ قَالَتْ ـ فَكَمَا يَتْرُكُونَهَا حِينَ يَرْغَبُونَ عَنْهَا، فَلَيْسَ لَهُمْ أَنْ يَنْكِحُوهَا إِذَا رَغِبُوا فِيهَا، إِلاَّ أَنْ يُقْسِطُوا لَهَا وَيُعْطُوهَا حَقَّهَا الأَوْفَى مِنَ الصَّدَاقِ‏.‏

‘উরওয়া ইব্‌নু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) – কে জিজ্ঞেস করেন, হে খালা! “যদি তোমরা ভয় কর যে, ইয়াতীম বালিকাদের প্রতি ন্যায় বিচার করতে পারবে না তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যার মালিক……।” (সূরা আন-নিসাঃ ৪/৩) এ আয়াত কোন্‌ প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে? ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন, হে আমার ভাগ্নে! এ আয়াত ঐ ইয়াতীম বালিকাদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে, যারা তার অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে রয়েছে এবং সেই অভিভাবক তার রূপ ও সম্পদে আকৃষ্ট হয়ে তাকে বিয়ে করতে চায়; কিন্তু মোহর কম দিতে চায়। এ আয়াতের মাধ্যমে উক্ত বালিকাদের বিয়ে করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং তাদের ব্যতীত অন্য নারীদের বিয়ে করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। অবশ্য যদি সে এদের পূর্ণ মোহর আদায় করে দেয় তবে সে বিয়ে করতে পারবে। ‘আয়িশা (রাঃ) আরো বলেন, পরবর্তী সময় লোকেরা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে জিজ্ঞেস করলে আল্লাহ্‌ তা’আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ “তারা তোমার কাছে মহিলাদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে… এবং তোমরা যাদের বিয়ে করতে চাও” (সূরা আন-নিসাঃ ৪/১২৭) আল্লাহ তা’আলা এদের জন্য এ আয়াত অবতীর্ণ করেন; যদি কোন ইয়াতীম বালিকার সৌন্দর্য এবং সম্পদ থাকে, তাহলে এরা তাদেরকে বিয়ে করতে চায় এবং এদের স্বীয় আভিজাত্যের ব্যাপারেও এ ইচ্ছা পোষণ করে এবং মোহর কম দিতে চায়। কিন্তু সে যদি তাদের পছন্দমতো পাত্রী না হয়, তার সম্পদ ও রূপ কম হবার কারণে এদেরকে ত্যাগ করে অন্য মেয়ে বিয়ে করে। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, যেমনিভাবে এদের প্রতি অনীহার সময় এদের পরিত্যাগ করতে চায় তেমনি যে সময় আকর্ষণ থাকবে, সে সময়েও যেন তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করে পূর্ণ মোহর আদায় করে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৪)

৬৭/৪৫. অধ্যায়ঃ
যদি কোন বিয়ে প্রার্থী পুরুষ অভিভাবককে বলে, অমুক মেয়েকে আমার কাছে বিয়ে দিন এবং মেয়ের অভিভাবক বলে, তাকে এত মোহরের বিনিময়ে তোমার সঙ্গে বিয়ে দিলাম, তাহলে এই বিয়ে বৈধ হবে যদিও সে জিজ্ঞেস না করে, তুমি কি রাযী আছ? তুমি কি কবুল করেছ?

৫১৪১
أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ أَبِي حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ أَنَّ امْرَأَةً أَتَتْ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَعَرَضَتْ عَلَيْهِ نَفْسَهَا فَقَالَ مَا لِي الْيَوْمَ فِي النِّسَاءِ مِنْ حَاجَةٍ فَقَالَ رَجُلٌ يَا رَسُوْلَ اللهِ زَوِّجْنِيهَا قَالَ مَا عِنْدَكَ قَالَ مَا عِنْدِي شَيْءٌ قَالَ أَعْطِهَا وَلَوْ خَاتَمًا مِنْ حَدِيدٍ قَالَ مَا عِنْدِي شَيْءٌ قَالَ فَمَا عِنْدَكَ مِنَ الْقُرْآنِ قَالَ كَذَا وَكَذَا قَالَ فَقَدْ مَلَّكْتُكَهَا بِمَا مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ.

সাহ্‌ল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে এলো এবং বিয়ের জন্য নিজেকে তাঁর কাছে পেশ করল। তিনি বললেন, এখন আমার কোন মহিলার প্রয়োজন নেই। এরপর উপস্থিত একজন লোক বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! তাকে আমার সঙ্গে বিয়ে দিন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কী আছে? লোকটি বলল আমার কিছু নেই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাকে একটি লোহার আংটি হলেও দাও। লোকটি বলল, আমার কাছে কিছুই নেই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার কাছে কী পরিমাণ কুরআন আছে? লোকটি বলল, এই এই পরিমাণ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি কুরআনের যা জান, তার বিনিময়ে এই মহিলাকে তোমার মালিকানায় দিয়ে দিলাম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৫)

৬৭/৪৬. অধ্যায়ঃ
কারো প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব দেবে না, যতক্ষণ না তার বিয়ে হবে কিংবা প্রস্তাব ত্যাগ করবে।

৫১৪২
(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৬)

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ভাই দরদাম করলে অন্যকে তার দরদাম করতে নিষেধ করেছেন এবং এক মুসলিম ভাইয়ের বিয়ের প্রস্তাবের ওপরে অন্য ভাইকে প্রস্তাব দিতে নিষেধ করেছেন, যতক্ষণ না প্রথম প্রস্তাবকারী তার প্রস্তাব উঠিয়ে নেবে বা তাকে অনুমতি দেবে।

৫১৪৩
يَحْيٰى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ جَعْفَرِ بْنِ رَبِيعَةَ عَنْ الأَعْرَجِ قَالَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ يَأْثُرُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِيَّاكُمْ وَالظَّنَّ فَإِنَّ الظَّنَّ أَكْذَبُ الْحَدِيثِ وَلاَ تَجَسَّسُوا وَلاَ تَحَسَّسُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَكُونُوا عبادَ الله إِخْوَانًا.

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তোমরা কারো প্রতি খারাপ ধারনা পোষণ করো না। কেননা, খারাপ ধারনা সবচেয়ে বড় মিথ্যা। একে অপরের দোষ-ত্রুটি খুঁজিও না, একে অন্যের ব্যাপারে মন্দ কথায় কান দিও না এবং একে অপরের প্রতি শত্রুতা পোষণ করো না; বরং ভাই ভাই হয়ে যাও।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৭)

৫১৪৪
وَلاَ يَخْطُبُ الرَّجُلُ عَلٰى خِطْبَةِ أَخِيهِ حَتّٰى يَنْكِحَ أَوْ يَتْرُكَ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক ভাইয়ের বিয়ের প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব করো না; যতক্ষণ না সে তাকে বিয়ে করে অথবা বাদ দেয়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৭)

৬৭/৪৭. অধ্যায়ঃ
বিয়ের প্রস্তাব বাতিলের ব্যাখ্যা।

৫১৪৫
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّه“ سَمِعَ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ يُحَدِّثُ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ حِينَ تَأَيَّمَتْ حَفْصَةُ قَالَ عُمَرُ لَقِيتُ أَبَا بَكْرٍ فَقُلْتُ إِنْ شِئْتَ أَنْكَحْتُكَ حَفْصَةَ بِنْتَ عُمَرَ فَلَبِثْتُ لَيَالِيَ ثُمَّ خَطَبَهَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَقِيَنِي أَبُو بَكْرٍ فَقَالَ إِنَّه“ لَمْ يَمْنَعْنِي أَنْ أَرْجِعَ إِلَيْكَ فِيمَا عَرَضْتَ إِلاَّ أَنِّي قَدْ عَلِمْتُ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ ذَكَرَهَا فَلَمْ أَكُنْ لِأُفْشِيَ سِرَّ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلَوْ تَرَكَهَا لَقَبِلْتُهَا تَابَعَه“ يُونُسُ وَمُوسٰى بْنُ عُقْبَةَ وَابْنُ أَبِي عَتِيقٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ.

‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘উমর (রাঃ) বলেন, হাফসা (রাঃ) বিধবা হলে আমি আবূ বকর (রাঃ) – এর সঙ্গে দেখা করে তাকে বললাম, আপনি যদি চান তবে হাফসা বিন্‌ত ‘উমরকে আপনার কাছে বিয়ে দিতে পারি। আমি কয়েকদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। তারপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বিয়ের জন্য পয়গাম পাঠালেন। পরে আবূ বকর (রাঃ) আমার সাথে সাক্ষাৎ করে বললেন, আপনার প্রস্তাবের উত্তর দিতে কিছুই আমাকে বাধা দেয়নি এ ছাড়া যে, আমি জেনেছিলাম রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সম্পর্কে আলোচনা করেছেন এবং আমি কখনও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর গোপন তথ্য প্রকাশ করতে পারি না। তিনি যদি তাকে বাদ দিতেন, তাহলে আমি তাকে গ্রহণ করতাম। ইউনুস, মূসা ইব্‌নু ‘উকবাহ এবং আতীক যুহরীর সূত্রে উক্ত হাদীসের সমর্থন করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৮)

৬৭/৪৮. অধ্যায়ঃ
বিয়ের খুৎবাহ

৫১৪৬
قَبِيصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ يَقُوْلُ جَاءَ رَجُلاَنِ مِنَ الْمَشْرِقِ فَخَطَبَا فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ مِنَ الْبَيَانِ لَسِحْرًا.

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

পূর্বাঞ্চল থেকে দু’ব্যক্তি এসে বক্তৃতা দিল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কোন কোন বক্তৃতায় যাদু আছে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৬৯)

৬৭/৪৯. অধ্যায়ঃ
বিয়ে ও ওয়ালীমায় দফ বাজানো।

৫১৪৭
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ ذَكْوَانَ قَالَ قَالَتْ الرُّبَيِّعُ بِنْتُ مُعَوِّذِ بْنِ عَفْرَاءَ جَاءَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَدَخَلَ حِينَ بُنِيَ عَلَيَّ فَجَلَسَ عَلٰى فِرَاشِي كَمَجْلِسِكَ مِنِّي فَجَعَلَتْ جُوَيْرِيَاتٌ لَنَا يَضْرِبْنَ بِالدُّفِّ وَيَنْدُبْنَ مَنْ قُتِلَ مِنْ آبَائِي يَوْمَ بَدْرٍ إِذْ قَالَتْ إِحْدَاهُنَّ وَفِينَا نَبِيٌّ يَعْلَمُ مَا فِي غَدٍ فَقَالَ دَعِي هٰذِه„ وَقُولِي بِالَّذِي كُنْتِ تَقُولِينَ.

রুবাই বিন্‌ত মুআব্বিয ইব্‌নু আফরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার বাসর রাতের পরের দিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এলেন এবং আমার বিছানার ওপর বসলেন, যেমন বর্তমানে তুমি আমার কাছে বসে আছ। সে সময় আমাদের ছোট মেয়েরা দফ বাজাচ্ছিল এবং বাদ্‌রের যুদ্ধে শাহাদাত প্রাপ্ত আমার বাপ-চাচাদের শোকগাঁথা গাচ্ছিল।[১৬] তাদের একজন বলে বসল, আমাদের মধ্যে এক নবী আছেন, যিনি আগামী দিনের কথা জানেন। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ কথা বাদ দাও, আগে যা বলছিলে, তাই বল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭০)

৬৭/৫০. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ এবং তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সন্তুষ্টচিত্তে মাহ্‌র পরিশোধ কর। (সূরাহ আন-নিসা ৪/৪)

আর অধিক মাহ্‌র এবং সর্বনিম্ন মাহ্‌র কত এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, “এবং তোমরা যদি তাদের একজনকে অগাধ অর্থও দিয়ে থাক, তবুও তা থেকে কিছুই গ্রহণ করো না।” (সূরাহ আন্‌-নিসা ৪/২০) এবং আল্লাহ্‌ তা’আলা আরো বলেন, “অথবা তোমরা তাদের মাহ্‌রের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দাও।” (সূরাহ আল-বাকারাহঃ ২/২৩৬)

সাহ্‌ল (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে বললেন, যদি একটি লোহার আংটিও হয়, তবে মাহ্‌র হিসাবে যোগাড় করে দাও।

৫১৪৮
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمٰنِ بْنَ عَوْفٍ تَزَوَّجَ امْرَأَةً عَلٰى وَزْنِ نَوَاةٍ فَرَأٰى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَشَاشَةَ الْعُرْسِ فَسَأَلَه“ فَقَالَ إِنِّي تَزَوَّجْتُ امْرَأَةً عَلٰى وَزْنِ نَوَاةٍ

وَعَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمٰنِ بْنَ عَوْفٍ تَزَوَّجَ امْرَأَةً عَلٰى وَزْنِ نَوَاةٍ مِنْ ذَهَبٍ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আবদুর রহমান ইব্‌নু ‘আওফ (রাঃ) কোন এক মহিলাকে বিয়ে করলেন এবং তাকে মাহ্‌র হিসাবে খেজুর দানার পরিমাণ স্বর্ণ দিলেন। যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার মুখে বিয়ের খুশির ছাপ দেখলেন তখন তাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন; তখন সে বললঃ আমি এক নারীকে খেজুর আঁটি পরিমাণ স্বর্ণ দিয়ে বিয়ে করেছি। [২০৪৯]

ক্বাতাদাহ আনাস থেকে বর্ণনা করেন যে, ‘আবদুর রহমান বিন ‘আওফ (রাঃ) খেজুরের দানা পরিমাণ স্বর্ণ মাহ্‌র হিসাবে দিয়ে কোন মহিলাকে বিয়ে করেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭১)

৬৭/৫১. অধ্যায়ঃ
কুরআন শিক্ষা দেয়ার বিনিময়ে মাহ্‌র ব্যতীত বিবাহ প্রদান।

৫১৪৯
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ سَمِعْتُ أَبَا حَازِمٍ يَقُوْلُ سَمِعْتُ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ السَّاعِدِيَّ يَقُوْلُ إِنِّي لَفِي الْقَوْمِ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ قَامَتْ امْرَأَةٌ فَقَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّهَا قَدْ وَهَبَتْ نَفْسَهَا لَكَ فَرَ فِيهَا رَأْيَكَ فَلَمْ يُجِبْهَا شَيْئًا ثُمَّ قَامَتْ فَقَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّهَا قَدْ وَهَبَتْ نَفْسَهَا لَكَ فَرَ فِيهَا رَأْيَكَ فَلَمْ يُجِبْهَا شَيْئًا ثُمَّ قَامَتْ الثَّالِثَةَ فَقَالَتْ إِنَّهَا قَدْ وَهَبَتْ نَفْسَهَا لَكَ فَرَ فِيهَا رَأْيَكَ فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَنْكِحْنِيهَا قَالَ هَلْ عِنْدَكَ مِنْ شَيْءٍ قَالَ لاَ قَالَ اذْهَبْ فَاطْلُبْ وَلَوْ خَاتَمًا مِنْ حَدِيدٍ فَذَهَبَ فَطَلَبَ ثُمَّ جَاءَ فَقَالَ مَا وَجَدْتُ شَيْئًا وَلاَ خَاتَمًا مِنْ حَدِيدٍ فَقَالَ هَلْ مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ شَيْءٌ قَالَ مَعِي سُورَةُ كَذَا وَسُورَةُ كَذَا قَالَ اذْهَبْ فَقَدْ أَنْكَحْتُكَهَا بِمَا مَعَكَ مِنَ الْقُرْآنِ.

সাহ্‌ল ইব্‌নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি অন্যান্য লোকের সঙ্গে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে বসা ছিলাম। এমন সময় একজন মহিলা দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি নিজেকে আপনার কাছে পেশ করছি, এখন আপনার মতামত দিন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন উত্তর দিলেন না। এরপর মহিলাটি পুনরায় দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি আমার জীবনকে আপনার কাছে পেশ করছি। আপনার মতামত দিন। তিনি কোন উত্তর করলেন না। তারপর তৃতীয় বারে দাঁড়িয়ে বলল, আমি আমার জীবন আপনার কাছে সোপর্দ করছি। আপনার মতামত দিন। এরপর একজন লোক দাঁড়িয়ে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল, এ মহিলাকে আমার সঙ্গে বিয়ে দিন। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার কাছে কিছু আছে কি? লোকটি বলল, না। তিনি বললেন, যাও খুঁজে দেখ, একটি লোহার আংটি হলেও নিয়ে এসো। লোকটি চলে গেল এবং খুঁজে দেখল। এরপর এসে বলল, আমি কিছুই পেলাম না; এমনকি একটি লোহার আংটিও না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার কি কিছু কুরআন জানা আছে? সে বলল, অমুক অমুক সূরা আমার মুখস্থ আছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমার যে পরিমাণ কুরআন মুখস্থ আছে, তার বিনিময়ে এ মহিলাকে তোমার সঙ্গে বিয়ে দিলাম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭২)

৬৭/৫২. অধ্যায়ঃ
মাহ্‌র হিসাবে দ্রব্যসামগ্রী এবং লোহার আংটি।

৫১৫০
يَحْيٰى حَدَّثَنَا وَكِيعٌ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ أَبِي حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِرَجُلٍ تَزَوَّجْ وَلَوْ بِخَاتَمٍ مِنْ حَدِيدٍ.

সাহ্‌ল ইব্‌নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে বললেন, তুমি বিয়ে কর একটি লোহার আংটির বিনিময়ে হলেও।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৭৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৩)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]