সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস বিয়ে শাদী অধ্যায় ৩য় ভাগ হাদিস নং ৫২০১ – ৫২৫০

৬৭/৯২. অধ্যায়ঃ
পুরুষগণ নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের এককে অন্যের উপর মর্যাদা প্রদান করেছেন……… নিশ্চয় আল্লাহ সর্বোচ্চ, সর্বশ্রেষ্ঠ। (সূরাহ আন্‌-নিসা ৪/৩৪)

৫২০১
خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ قَالَ حَدَّثَنِي حُمَيْدٌ عَنْ أَنَسٍ قَالَ آلٰى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ نِسَائِه„ شَهْرًا وَقَعَدَ فِي مَشْرُبَةٍ لَه“ فَنَزَلَ لِتِسْعٍ وَعِشْرِينَ فَقِيلَ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّكَ آلَيْتَ عَلٰى شَهْرٍ قَالَ إِنَّ الشَّهْرَ تِسْعٌ وَعِشْرُونَ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শপথ করলেন যে, এক মাসের মধ্যে তিনি স্ত্রীদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করবেন না। তিনি নিজস্ব একটি উঁচু কামরায় অবস্থান করছিলেন। ঊনত্রিশ দিন অতিবাহিত হলে তিনি সেখান থেকে নিচে নেমে এলেন। তাঁকে বলা হলো, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি শপথ করেছেন যে, এক মাসের মধ্যে কোন স্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করবেন না। তিনি বললেন, মাস ঊনত্রিশ দিনেও হয়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২২)

৬৭/৯৩. অধ্যয়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর আপন স্ত্রীদের সঙ্গে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত এবং তাদের কক্ষের বাইরে অন্য কক্ষে অবস্থানের ঘটনা।

মু’আবিয়াহ ইবনু হাইদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমার স্ত্রী থেকে স্বতন্ত্র শয্যা গ্রহণ করলে তা একই ঘরে হওয়া উচিৎ। প্রথম হাদীসটি অধিকতর সহীহ।

৫২০২
أَبُو عَاصِمٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ ح و حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِي يَحْيٰى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ صَيْفِيٍّ أَنَّ عِكْرِمَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْحَارِثِ أَخْبَرَه“ أَنَّ أُمَّ سَلَمَةَ أَخْبَرَتْه“ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم حَلَفَ لاَ يَدْخُلُ عَلٰى بَعْضِ أَهْلِه„ شَهْرًا فَلَمَّا مَضٰى تِسْعَةٌ وَعِشْرُونَ يَوْمًا غَدَا عَلَيْهِنَّ أَوْ رَاحَ فَقِيلَ لَه“ يَا نَبِيَّ اللهِ حَلَفْتَ أَنْ لاَ تَدْخُلَ عَلَيْهِنَّ شَهْرًا قَالَ إِنَّ الشَّهْرَ يَكُونُ تِسْعَةً وَعِشْرِينَ يَوْمًا.

উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শপথ গ্রহণ করলেন যে, এক মাসের মধ্যে তাঁর কতিপয় স্ত্রীর নিকট তিনি গমন করবেন না। কিন্তু যখন ঊনত্রিশ দিন অতিবাহিত হল তখন তিনি সকালে কিংবা বিকালে তাঁদের কাছে গেলেন। কোন একজন তাঁকে বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি শপথ করেছেন এক মাসের মধ্যে কোন স্ত্রীর কাছে যাবেন না। তিনি বললেন, মাস ঊনত্রিশ দিনেও হয়। [১৯১০; মুসলিম ১৩/৪, হাঃ ১০৮৫, আহমাদ ২৬৭৪৫](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৩)

৫২০৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا مَرْوَانُ بْنُ مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو يَعْفُورٍ، قَالَ تَذَاكَرْنَا عِنْدَ أَبِي الضُّحَى فَقَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ عَبَّاسٍ، قَالَ أَصْبَحْنَا يَوْمًا وَنِسَاءُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَبْكِينَ، عِنْدَ كُلِّ امْرَأَةٍ مِنْهُنَّ أَهْلُهَا، فَخَرَجْتُ إِلَى الْمَسْجِدِ، فَإِذَا هُوَ مَلآنُ مِنَ النَّاسِ فَجَاءَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَصَعِدَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم وَهْوَ فِي غُرْفَةٍ لَهُ، فَسَلَّمَ فَلَمْ يُجِبْهُ أَحَدٌ، ثُمَّ سَلَّمَ فَلَمْ يُجِبْهُ أَحَدٌ، ثُمَّ سَلَّمَ فَلَمْ يُجِبْهُ أَحَدٌ، فَنَادَاهُ فَدَخَلَ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَطَلَّقْتَ نِسَاءَكَ فَقَالَ ‏ “‏ لاَ وَلَكِنْ آلَيْتُ مِنْهُنَّ شَهْرًا ‏”‏‏.‏ فَمَكَثَ تِسْعًا وَعِشْرِينَ، ثُمَّ دَخَلَ عَلَى نِسَائِهِ‏.‏

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা একদিন প্রত্যুষে দেখতে পেলাম নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর স্ত্রীগণ কাঁদছেন এবং তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে পরিবারের লোকজনও রয়েছে। আমি মসজিদে গেলাম এবং সেখানকার অবস্থা ছিল জনাকীর্ণ। ‘উমার ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ) সেখানে এলেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর উপরস্থিত কক্ষে আরোহণ করলেন এবং সালাম করলেন, কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন উত্তর দিলেন না। পুনরায় তিনি সালাম দিলেন; কিন্তু কোনরূপ সাড়া দিল না। আবার তিনি সালাম দিলেন; কিন্তু কেউ কোনরূপ জবাব দিল না। এরপর খাদিমকে ডাকলেন এবং তিনি ভেতরে প্রবেশ করলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি আপনার স্ত্রীগণকে ত্বলাক্ব দিয়েছেন? তিনি বললেন, না, কিন্তু আমি শপথ করেছি যে, তাদের কাছে এক মাস পর্যন্ত যাব না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঊনত্রিশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করে তাঁর স্ত্রীগণের কাছে গমণ করেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৪)

৬৭/৯৪. অধ্যায়ঃ
স্ত্রীদের প্রহার করা নিন্দনীয় কাজ এবং আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেনঃ (প্রয়োজনে) “তাদেরকে মৃদু প্রহার কর।” (সূরাহ আন-নিসাঃ ৪/৩৪)

৫২০৪
مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ زَمْعَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ يَجْلِدُ أَحَدُكُمْ امْرَأَتَه“ جَلْدَ الْعَبْدِ ثُمَّ يُجَامِعُهَا فِي آخِرِ الْيَوْمِ.

‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু যাম’আহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা কেউ নিজ স্ত্রীদেরকে গোলামের মত প্রহার করো না। কেননা, দিনের শেষে তার সঙ্গে তো মিলিত হবে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৫)

৬৭/৯৫. অধ্যায়ঃ
অবৈধ কাজে স্ত্রী স্বামীর আনুগত্য করবে না।

৫২০৫
خَلاَّدُ بْنُ يَحْيٰى حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ نَافِعٍ عَنِ الْحَسَنِ هُوَ ابْنُ مُسْلِمٍ عَنْ صَفِيَّةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ امْرَأَةً مِنَ الأَنْصَارِ زَوَّجَتْ ابْنَتَهَا فَتَمَعَّطَ شَعَرُ رَأْسِهَا فَجَاءَتْ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَتْ ذ‘لِكَ لَه“ فَقَالَتْ إِنَّ زَوْجَهَا أَمَرَنِي أَنْ أَصِلَ فِي شَعَرِهَا فَقَالَ لاَ إِنَّه“ قَدْ لُعِنَ الْمُوصِلاَتُ.

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন এক আনসারী মহিলা তার মেয়েকে বিয়ে দিলেন। কিন্তু তার মাথার চুলগুলো উঠে যেতে লাগলো। এরপর সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে এসে এ ঘটনা বর্ণনা করে বলল, তার স্বামী আমাকে বলেছে আমি যেন আমার মেয়ের মাথায় কৃত্রিম চুল পরিধান করাই। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, না তা করো না, কারণ, আল্লাহ্‌ তা’আলা এ ধরনের মহিলাদের ওপর লা’নত বর্ষণ করেন, যারা মাথায় কৃত্রিম চুল পরিধান করে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৬)

৬৭/৯৬. অধ্যায়ঃ
এবং যদি কোন নারী স্বীয় স্বামী হতে রূঢ়তা কিংবা উপেক্ষার আশঙ্কা করে। (সূরাহ আন্‌-নিসা ৪/১২৮)

৫২০৬
حَدَّثَنَا ابْنُ سَلاَمٍ، أَخْبَرَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ ‏{‏وَإِنِ امْرَأَةٌ خَافَتْ مِنْ بَعْلِهَا نُشُوزًا أَوْ إِعْرَاضًا‏}‏ قَالَتْ هِيَ الْمَرْأَةُ تَكُونُ عِنْدَ الرَّجُلِ، لاَ يَسْتَكْثِرُ مِنْهَا فَيُرِيدُ طَلاَقَهَا، وَيَتَزَوَّجُ غَيْرَهَا، تَقُولُ لَهُ أَمْسِكْنِي وَلاَ تُطَلِّقْنِي، ثُمَّ تَزَوَّجْ غَيْرِي، فَأَنْتَ فِي حِلٍّ مِنَ النَّفَقَةِ عَلَىَّ وَالْقِسْمَةِ لِي، فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى ‏{‏فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَنْ يَصَّالَحَا بَيْنَهُمَا صُلْحًا وَالصُّلْحُ خَيْرٌ‏}‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

“এবং যদি কোন নারী স্বীয় স্বামী হতে রূঢ়তা কিংবা উপেক্ষার আশঙ্কা করে” এ আয়াত প্রসঙ্গে বলেন, এ আয়াত হচ্ছে ঐ মহিলা সম্পর্কে, যার স্বামী তার স্ত্রীকে নিজের কাছে রাখতে চায় না; বরং তাকে ত্বলাক্ব দিয়ে অন্য কোন মহিলাকে বিয়ে করতে চায়। তখন তার স্ত্রী তাকে বলে, আমাকে রাখ এবং ত্বলাক্ব দিও না বরং অন্য কোন মহিলাকে বিয়ে করে নাও এবং তুমি ইচ্ছে করলে আমাকে খোরপোষ না-ও দিতে পার, আর আমাকে শয্যাসঙ্গিনী না-ও করতে পার। আল্লাহ্‌ তা’আলার উক্ত আয়াত দ্বারা বোঝা যায় যে, “তবে তারা পরস্পর আপোষ করলে তাদের কোন গুনাহ নেই, বস্তুতঃ আপোষ করাই উত্তম।” (সূরাহ আন-নিসাঃ ৪/১২৮) (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৭)

৬৭/৯৭. অধ্যায়ঃ
‘আয্‌ল প্রসঙ্গে

৫২০৭
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيٰى بْنُ سَعِيدٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ جَابِرٍ قَالَ كُنَّا نَعْزِلُ عَلٰى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে আমরা ‘আযল করতাম। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৮)

৫২০৮
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ عَمْرٌو أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ سَمِعَ جَابِرًا قَالَ كُنَّا نَعْزِلُ وَالْقُرْآنُ يَنْزِلُ.

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা ‘আযল করতাম। সে সময় কুরআন অবতীর্ণ হচ্ছিল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৯)

৫২০৯
وَعَنْ عَمْرٍو عَنْ عَطَاءٍ عَنْ جَابِرٍ قَالَ كُنَّا نَعْزِلُ عَلٰى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالْقُرْآنُ يَنْزِلُ.

অন্য সূত্র থেকেও জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর যুগে এবং কুরআন অবতীর্ণ হওয়াকালে ‘আযল করতাম।[৫২০৭; মুসলিম ত্বলাক/২১, হাঃ ১৪৪০, আহমাদ ১৪৩২২](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৯)

৫২১০
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ عَنْ مَالِكِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ ابْنِ مُحَيْرِيزٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ أَصَبْنَا سَبْيًا فَكُنَّا نَعْزِلُ فَسَأَلْنَا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَوَإِنَّكُمْ لَتَفْعَلُونَ قَالَهَا ثَلاَثًا مَا مِنْ نَسَمَةٍ كَائِنَةٍ إِلٰى يَوْمِ الْقِيَامَةِ إِلاَّ هِيَ كَائِنَةٌ.

আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধকালীন সময়ে গানীমাত হিসাবে কিছু দাসী পেয়েছিলাম। আমরা তাদের সঙ্গে ‘আয্ল করতাম। এরপর আমরা এ সম্পর্কে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি উত্তরে বললেনঃ কী! তোমারা কি এমন কাজও কর? একই প্রশ্ন তিনি তিনবার করলেন এবং পরে বললেন, ক্বিয়ামাত পর্যন্ত যে রূহ পয়দা হবার, তা অবশ্যই পয়দা হবে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩০)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 ব্যাখ্যা
  সরাসরি

৬৭/৯৮. অধ্যায়ঃ
সফরে যেতে ইচ্ছে করলে স্ত্রীদের মধ্যে লটারী করে নেবে।

৫২১১
أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ أَيْمَنَ قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ عَنِ الْقَاسِمِ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا خَرَجَ أَقْرَعَ بَيْنَ نِسَائِه„ فَطَارَتِ الْقُرْعَةُ لِعَائِشَةَ وَحَفْصَةَ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا كَانَ بِاللَّيْلِ سَارَ مَعَ عَائِشَةَ يَتَحَدَّثُ فَقَالَتْ حَفْصَةُ أَلاَ تَرْكَبِينَ اللَّيْلَةَ بَعِيرِي وَأَرْكَبُ بَعِيرَكِ تَنْظُرِينَ وَأَنْظُرُ فَقَالَتْ بَلٰى فَرَكِبَتْ فَجَاءَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلٰى جَمَلِ عَائِشَةَ وَعَلَيْهِ حَفْصَةُ فَسَلَّمَ عَلَيْهَا ثُمَّ سَارَ حَتّٰى نَزَلُوا وَافْتَقَدَتْه“ عَائِشَةُ فَلَمَّا نَزَلُوا جَعَلَتْ رِجْلَيْهَا بَيْنَ الإِذْخِرِ وَتَقُولُ يَا رَبِّ سَلِّطْ عَلَيَّ عَقْرَبًا أَوْ حَيَّةً تَلْدَغُنِي وَلاَ أَسْتَطِيعُ أَنْ أَقُولَ لَه“ شَيْئًا.

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখনই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরে যাবার ইরাদা করতেন, তখনই স্ত্রীগণের মাঝে লটারী করতেন। এক সফরের সময় ‘আয়িশা (রাঃ) এবং হাফসাহ (রাঃ) – এর নাম লটারীতে ওঠে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর রীতি ছিল যখন রাত হত তখন ‘আয়িশা (রাঃ) – এর সঙ্গে এক সওয়ারীতে আরোহণ করতেন এবং তাঁর সাথে কথা বলতে বলতে পথ চলতেন। এক রাতে হাফসাহ (রাঃ) ‘আয়িশা (রাঃ) – কে বললেন, আজ রাতে তুমি কি আমার উটে আরোহণ করবে এবং আমি তোমার উটে, যাতে করে আমি তোমাকে এবং তুমি আমাকে এক নতুন অবস্থায় দেখতে পাবে? ‘আয়িশা (রাঃ) উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, আমি রাযী আছি। সে হিসাবে ‘আয়িশা (রাঃ) হাফসাহ (রাঃ) – এর উটে এবং হাফসাহ (রাঃ) ‘আয়িশা (রাঃ) – এর উটে সওয়ার হলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আয়িশা (রাঃ)-এর নির্ধারিত উটের কাছে এলেন, যার ওপর হাফসাহ (রাঃ) বসা ছিলেন। তিনি তাকে সালাম দিলেন এবং তাঁর পার্শ্বে বসে সফর করলেন। পথিমধ্যে এক স্থানে সবাই অবতরণ করলেন। ‘আয়িশা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত হলেন। যখন তাঁরা সকলেই অবতরণ করলেন তখন ‘আয়িশা (রাঃ) নিজ পা দু’টি ‘ইযখির’ নামক ঘাসের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে বলতে লাগলেন, হে আল্লাহ্! তুমি আমার জন্য কোন সাপ বা বিচ্ছু পাঠিয়ে দাও, যাতে আমাকে দংশন করে। কেননা, আমি এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে কিছু বলতে পারব না। [মুসলিম ৪৪/১৩, হাঃ ২৪৪৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩১)

৬৭/৯৯. অধ্যায়ঃ
যে স্ত্রী স্বামীকে নিজের পালার দিন সতীনকে দিয়ে দেয় এবং এটা কীভাবে ভাগ করতে হবে?

৫২১২
مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ سَوْدَةَ بِنْتَ زَمْعَةَ وَهَبَتْ يَوْمَهَا لِعَائِشَةَ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقْسِمُ لِعَائِشَةَ بِيَوْمِهَا وَيَوْمِ سَوْدَةَ.

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সওদা বিনতে যাম‘আহ (রাঃ) তাঁর পালার রাত ‘আয়িশা (রাঃ) – কে দান করেছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আয়িশা (রাঃ) – এর জন্য দু’দিন বরাদ্দ করেন- ‘আয়িশা (রাঃ)-’র দিন এবং সওদা (রাঃ)-’র দিন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩২)

৬৭/১০০. অধ্যায়ঃ
আপন স্ত্রীদের মধ্যে ইনসাফ করা।

আল্লাহ্ বলেন, “তোমরা কক্ষনো স্ত্রীদের মধ্যে সমতা রক্ষা করতে পারবে না যদিও প্রবল ইচ্ছে কর… আল্লাহ প্রশস্ততার অধিকারী, মহাকুশলী।” (সূরাহ আন্-নিসা ৪/১২৯-১৩০)

৬৭/১০১. অধ্যায়ঃ
যখন কেউ সাইয়্যেবা স্ত্রী [২০] থাকা অবস্থায় কুমারী মেয়ে বিয়ে করে।

[২০] যে স্বামী মারা যাবার পর বা তালাকপ্রাপ্তা হবার পর পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে।

৫২১৩
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا بِشْرٌ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ عَنْ أَنَسٍ وَلَوْ شِئْتُ أَنْ أَقُولَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلموَلٰكِنْ قَالَ السُّنَّةُ إِذَا تَزَوَّجَ الْبِكْرَ أَقَامَ عِنْدَهَا سَبْعًا وَإِذَا تَزَوَّجَ الثَّيِّبَ أَقَامَ عِنْدَهَا ثَلاَثًا.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সুন্নত এই যে, যদি কেউ কুমারী মেয়ে বিয়ে করে, তবে তার সাথে সাত দিন-রাত্রি যাপন করতে হবে আর যদি কেউ কোন বিধবা মহিলাকে বিয়ে করে, তাহলে তার সঙ্গে তিন দিন যাপন করতে হবে।[৫২১৪; মুসলিম ১৭/১২, হাঃ ১৪৬১, আহমাদ ১২৯৭০](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৩)

৬৭/১০২. অধ্যায়ঃ
যখন কেউ কুমারী স্ত্রী থাকা অবস্থায় কোন বিধবাকে বিয়ে করে।

৫২১৪
يُوسُفُ بْنُ رَاشِدٍ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ عَنْ سُفْيَانَ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ وَخَالِدٌ عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ عَنْ أَنَسٍ قَالَ مِنَ السُّنَّةِ إِذَا تَزَوَّجَ الرَّجُلُ الْبِكْرَ عَلَى الثَّيِّبِ أَقَامَ عِنْدَهَا سَبْعًا وَقَسَمَ وَإِذَا تَزَوَّجَ الثَّيِّبَ عَلَى الْبِكْرِ أَقَامَ عِنْدَهَا ثَلاَثًا ثُمَّ قَسَمَ قَالَ أَبُو قِلاَبَةَ وَلَوْ شِئْتُ لَقُلْتُ إِنَّ أَنَسًا رَفَعَه“ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَيُّوبَ وَخَالِدٍ قَالَ خَالِدٌ وَلَوْ شِئْتُ قُلْتُ رَفَعَه“ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সুন্নাত হচ্ছে, যদি কেউ বিধবা স্ত্রী থাকা অবস্থায় কুমারী বিয়ে করে তবে সে যেন তার সঙ্গে সাত দিন অতিবাহিত করে এবং এরপর পালা অনুসারে এবং কেউ যদি কোন বিধবাকে বিয়ে করে এবং তার ঘরে পূর্ব থেকেই কুমারী স্ত্রী থাকে তবে সে যেন তার সঙ্গে তিন দিন কাটায় এবং তারপর পালাক্রমে। আবূ কিলাবাহ (রহঃ) বলেন, আমি ইচ্ছে করলে বলতে পারতাম যে, আনাস (রাঃ) এ হাদীসে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন। ‘আবদুর রাযযাক (রাহ.) বলেন, আমি ইচ্ছে করলে বলতে পারতাম যে, খালেদ হাদীস রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত পৌঁছিয়েছেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৪)

৬৭/১০৩. অধ্যায়ঃ
যে ব্যাক্তি একই গোসলে একাধিক স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয়।

৫২১৫
عَبْدُ الأَعْلٰى بْنُ حَمَّادٍ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ عَنْ قَتَادَةَ أَنَّ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ حَدَّثَهُمْ أَنَّ نَبِيَّ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَطُوفُ عَلٰى نِسَائِه„ فِي اللَّيْلَةِ الْوَاحِدَةِ وَلَه“ يَوْمَئِذٍ تِسْعُ نِسْوَةٍ.

ক্বাতাদাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই রাত্রে সকল স্ত্রীর নিকট গমন করেছেন। ঐ সময় তাঁর ন’জন স্ত্রী ছিল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৫)

৬৭/১০৪. অধ্যায়ঃ
দিনের বেলা স্ত্রীদের নিকট গমন করা।

৫২১৬
فَرْوَةُ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَة َ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا انْصَرَفَ مِنَ الْعَصْرِ دَخَلَ عَلٰى نِسَائِه„ فَيَدْنُو مِنْ إِحْدَاهُنَّ فَدَخَلَ عَلٰى حَفْصَةَ فَاحْتَبَسَ أَكْثَرَ مِمَّا كَانَ يَحْتَبِسُ.

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আসরের সলাত শেষ করতেন, তখন স্বীয় স্ত্রীদের মধ্য থেকে যে কোন একজনের নিকট গমন করতেন। একদিন তিনি স্ত্রী হাফসাহ (রাঃ) – এর কাছে গেলেন এবং সাধারণতঃ যে সময় কাটান তার চেয়ে বেশি সময় কাটালেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৬)

৬৭/ ১০৫. অধ্যায়ঃ
কেউ যদি অসুস্থ হয়ে স্ত্রীদের অনুমতি নিয়ে এক স্ত্রীর কাছে সেবা-শুশ্রূষার জন্য থাকে যদি তাকে সবাই অনুমতি দেয়।

৫২১৭
إِسْمَاعِيلُ قَالَ حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ قَالَ هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ أَخْبَرَنِي أَبِي عَنْ عَائِشَة َ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَسْأَلُ فِي مَرَضِهِ الَّذِي مَاتَ فِيهِ أَيْنَ أَنَا غَدًا أَيْنَ أَنَا غَدًا يُرِيدُ يَوْمَ عَائِشَةَ فَأَذِنَ لَه“ أَزْوَاجُه“ يَكُونُ حَيْثُ شَاءَ فَكَانَ فِي بَيْتِ عَائِشَةَ حَتّٰى مَاتَ عِنْدَهَا قَالَتْ عَائِشَةُ فَمَاتَ فِي الْيَوْمِ الَّذِي كَانَ يَدُورُ عَلَيَّ فِيهِ فِي بَيْتِي فَقَبَضَه“ اللهُ وَإِنَّ رَأْسَه“ لَبَيْنَ نَحْرِي وَسَحْرِي وَخَالَطَ رِيقُه“ رِيقِي.

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর যে অসুখে ইন্তিকাল করেছিলেন, সেই অসুখের সময় জিজ্ঞেস করতেন, আগামীকাল আমার কার কাছে থাকার পালা? আগামীকার আমার কার কাছে থাকার পালা? তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) – এর পালার জন্য এরূপ বলতেন। সুতরাং উম্মাহাতুল মু’মিনীন তাঁকে যার ঘরে ইচ্ছে থাকার অনুমতি দিলেন এবং তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) – এর ঘরেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমার পালার দিনই আল্লাহ তাঁকে নিজের কাছে নিয়ে গেলেন এ অবস্থায় যে, আমার বুক ও গলার মাঝখানে তাঁর বুক ও মাথা ছিল এবং তাঁর মুখের লালা আমার মুখের লালার সঙ্গে মিশেছিল। [২১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৭)

[২১] ‘আয়িশা (রাঃ) কাঁচা মিসওয়াক চিবিয়ে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে দিলেন এবং তিনি নিজ দাঁত দ্বারা চিবালেন, এভাবে একজনের মুখের লালা অন্যের মুখের লালার সঙ্গে মিশ্রিত হল।

৬৭/১০৬. অধ্যায়ঃ
এক স্ত্রীকে অন্য স্ত্রীর চেয়ে অধিক ভালবাসা

৫২১৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ حُنَيْنٍ، سَمِعَ ابْنَ عَبَّاسٍ، عَنْ عُمَرَ ـ رضى الله عنهم ـ دَخَلَ عَلَى حَفْصَةَ فَقَالَ يَا بُنَيَّةِ لاَ يَغُرَّنَّكِ هَذِهِ الَّتِي أَعْجَبَهَا حُسْنُهَا حُبُّ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِيَّاهَا ـ يُرِيدُ عَائِشَةَ ـ فَقَصَصْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَتَبَسَّمَ‏.‏

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘উমার (রাঃ) হাফসাহ (রাঃ) – এর কাছে প্রবেশ করলেন এবং বললেন, হে আমার কন্যা! তার আচরণ-ব্যবহার দ্বারা বিভ্রান্ত হয়ো না, কারণ সে তার সৌন্দর্য ও তার প্রতি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর ভালবাসার কারণে গর্ব অনুভর করে। এ কথার দ্বারা তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) – কে বুঝিয়েছিলেন। তিনি আরো বললেন, আমি এ ঘটনা আল্লাহ্‌র রসূলের কাছে বললাম। তিনি এ কথা শুনে মুচকি হাসলেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৮)

৬৭/১০৭. অধ্যায়ঃ
কোন নারীর কৃত্রিম সাজ-সজ্জা করা এবং সতীনের মুকাবিলায় গর্ব প্রকাশ করা নিষেধ।

৫২১৯
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ هِشَامٍ عَنْ فَاطِمَةَ عَنْ أَسْمَاءَ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ح حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنّٰى حَدَّثَنَا يَحْيٰى عَنْ هِشَامٍ حَدَّثَتْنِي فَاطِمَةُ عَنْ أَسْمَاءَ أَنَّ امْرَأَةً قَالَتْ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ لِي ضَرَّةً فَهَلْ عَلَيَّ جُنَاحٌ إِنْ تَشَبَّعْتُ مِنْ زَوْجِي غَيْرَ الَّذِي يُعْطِينِي فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُتَشَبِّعُ بِمَا لَمْ يُعْطَ كَلاَبِسِ ثَوْبَيْ زُورٍ.

আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন যে, কোন এক মহিলা বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার সতীন আছে। এখন তাকে রাগানোর জন্য যদি আমার স্বামী আমাকে যা দেয়নি তা বাড়িয়ে বলি, তাকে কি কোন দোষ আছে? রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃযা তোমাকে দেয়া হয়নি, তা দেয়া হয়েছে বলা ঐরূপ প্রতারকের কাজ, যে প্রতারণার জন্য দুপ্রস্থ মিথ্যার পোশাক পরিধান করল।[মুসলিম ৩৭/৩৫, হাঃ ২১৩০, আহমাদ ২৬৯৮৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৯)

৬৭/১০৮. অধ্যায়ঃ
আত্মমর্যাদাবোধ।

সা‘দ ইব্‌নু ‘উবাদাহ (রাঃ) বললেন, আমি যদি অন্য কোন পুরুষকে আমার স্ত্রীর সঙ্গে দেখতে পাই; তাহলে আমি তাকে তরবারির ধারালো দিক দিয়ে আঘাত করব অর্থাৎ হত্যা করব। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সাহাবিগণকে বললেন, তোমরা কি সা’দের আত্মমর্যাদাবোধের কারণে আশ্চর্যান্বিত হচ্ছ? (আল্লাহ্‌র কসম!) আমার আত্মমর্যাদাবোধ তার চেয়েও অনেক অধিক এবং আল্লাহ্‌র আত্মমর্যাদাবোধ আমার চেয়েও অনেক অধিক।

৫২২০
عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِي حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ عَنْ شَقِيقٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا مِنْ أَحَدٍ أَغْيَرُ مِنَ اللهِ مِنْ أَجْلِ ذ‘لِكَ حَرَّمَ الْفَوَاحِشَ وَمَا أَحَدٌ أَحَبَّ إِلَيْهِ الْمَدْحُ مِنَ الله.ِ

‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ্‌র চেয়ে অধিক আত্মমর্যাদাশীল কেউ নয় এবং এ কারণেই তিনি সকল অশ্লীল কাজ হারাম করেছেন আর (আল্লাহ্‌র) প্রশংসার চেয়ে আল্লাহ্‌র অধিক প্রিয় কিছু নেই।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪০)

৫২২১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ يَا أُمَّةَ مُحَمَّدٍ مَا أَحَدٌ أَغْيَرَ مِنَ اللَّهِ أَنْ يَرَى عَبْدَهُ أَوْ أَمَتَهُ تَزْنِي يَا أُمَّةَ مُحَمَّدٍ لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا ‏”‏‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, হে উম্মতে মুহাম্মদী! আল্লাহ্‌র চেয়ে অধিক আত্মমর্যাদাবোধ আর কারো নেই। তিনি তাঁর কোন বান্দা নর হোক কি নারী হোক তার ব্যভিচার তিনি দেখতে চান না। হে উম্মতে মুহাম্মদী! যা আমি জানি, তা যদি তোমরা জানতে, তাহলে হাসতে খুব কম এবং কাঁদতে অধিক অধিক।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪১)

৫২২২
مُوسٰى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ عَنْ يَحْيٰى عَنْ أَبِي سَلَمَةَ أَنَّ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ حَدَّثَه“ عَنْ أُمِّه„ أَسْمَاءَ أَنَّهَا سَمِعَتْ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ لاَ شَيْءَ أَغْيَرُ مِنَ اللهِ

আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে বলতে শুনেছি: আল্লাহ্‌র চেয়ে অধিক আত্মমর্যাদাবোধ আর কারো নেই।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪২)

৫২২৩
وَعَنْ يَحْيَى، أَنَّ أَبَا سَلَمَةَ، حَدَّثَهُ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ حَدَّثَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم‏.‏ حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ‏ “‏ إِنَّ اللَّهَ يَغَارُ وَغَيْرَةُ اللَّهِ أَنْ يَأْتِيَ الْمُؤْمِنُ مَا حَرَّمَ اللَّهُ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, আল্লাহ্ তা‘আলার আত্মমর্যাদাবোধ আছে এবং আল্লাহ্‌র আত্মমর্যাদাবোধ এই যে, যেন কোন মু‘মিন বান্দা হারাম কাজে লিপ্ত হয়ে না পড়ে।[মুসলিম ৪৯/৬, হাঃ ২৭৬২, আহমাদ ৯০৩৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৩)

৫২২৪
مَحْمُودٌ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ قَالَتْ تَزَوَّجَنِي الزُّبَيْرُ وَمَا لَه“ فِي الأَرْضِ مِنْ مَالٍ وَلاَ مَمْلُوكٍ وَلاَ شَيْءٍ غَيْرَ نَاضِحٍ وَغَيْرَ فَرَسِه„ فَكُنْتُ أَعْلِفُ فَرَسَه“ وَأَسْتَقِي الْمَاءَ وَأَخْرِزُ غَرْبَه“ وَأَعْجِنُ وَلَمْ أَكُنْ أُحْسِنُ أَخْبِزُ وَكَانَ يَخْبِزُ جَارَاتٌ لِي مِنَ الأَنْصَارِ وَكُنَّ نِسْوَةَ صِدْقٍ وَكُنْتُ أَنْقُلُ النَّو‘ى مِنْ أَرْضِ الزُّبَيْرِ الَّتِي أَقْطَعَه“ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلٰى رَأْسِي وَهِيَ مِنِّي عَلٰى ثُلُثَيْ فَرْسَخٍ فَجِئْتُ يَوْمًا وَالنَّو‘ى عَلٰى رَأْسِي فَلَقِيتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَعَه“ نَفَرٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَدَعَانِي ثُمَّ قَالَ إِخْ إِخْ لِيَحْمِلَنِي خَلْفَه“ فَاسْتَحْيَيْتُ أَنْ أَسِيرَ مَعَ الرِّجَالِ وَذَكَرْتُ الزُّبَيْرَ وَغَيْرَتَه“ وَكَانَ أَغْيَرَ النَّاسِ فَعَرَفَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنِّي قَدْ اسْتَحْيَيْتُ فَمَضٰى فَجِئْتُ الزُّبَيْرَ فَقُلْتُ لَقِيَنِي رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَعَلٰى رَأْسِي النَّو‘ى وَمَعَه“ نَفَرٌ مِنْ أَصْحَابِه„ فَأَنَاخَ لأَ÷رْكَبَ فَاسْتَحْيَيْتُ مِنْه“ وَعَرَفْتُ غَيْرَتَكَ فَقَالَ وَاللهِ لَحَمْلُكِ النَّو‘ى كَانَ أَشَدَّ عَلَيَّ مِنْ رُكُوبِكِ مَعَه“ قَالَتْ حَتّٰى أَرْسَلَ إِلَيَّ أَبُو بَكْرٍ بَعْدَ ذ‘لِكَ بِخَادِمٍ تَكْفِينِي سِيَاسَةَ الْفَرَسِ فَكَأَنَّمَا أَعْتَقَنِي.

আসমা বিন্‌তে আবূ বক্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন যুবায়র (রাঃ) আমাকে বিয়ে করলেন, তখন তার কাছে কোন ধন-সম্পদ ছিল না, এমন কি কোন স্থাবর জমি-জমা, দাস-দাসীও ছিল না; শুধুমাত্র কুয়ো থেকে পানি উত্তেলনকারী একটি উট ও একটি ঘোড়া ছিল। আমি তাঁর উট ও ঘোড়া চরাতাম, পানি পান করাতাম এবং পানি উত্তোলনকারী মশক ছিঁড়ে গেলে সেলাই করতাম, আটা পিষতাম, কিন্তু ভালো রুটি তৈরি করতে পারতাম না। তাই আনসারী প্রতিবেশী মহিলারা আমার রুটি তৈরিতে সাহায্য করত। আর তারা ছিল খুবই উত্তম নারী। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুবায়র (রাঃ) – কে একখন্ড জমি দিয়েছিলেন। আমি সেখান থেকে মাথায় করে খেজুরের আঁটির বোঝা বহন করে আনতাম। ঐ জমির দূরত্ব ছিল প্রায় দু‘মাইল। একদিন আমি মাথায় করে খেজুরের আঁটি বহন করে নিয়ে আসছিলাম। এমন সময় রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সাক্ষাৎ হল, তখন রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সঙ্গে কয়েকজন আনসারও ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে ডাকলেন এবং আমাকে তাঁর উটের পিঠে বসার জন্য তাঁর উটকে আখ্! আখ্! বললেন, যাতে উটটি বসে এবং আমি তাঁর পিঠে আরোহণ করতে পারি। আমি পরপুরুষের সঙ্গে একত্রে যাওয়ার ব্যাপারে লজ্জাবোধ করতে লাগলাম এবং যুবায়র (রাঃ) – এর আত্মসম্মানবোধের কথা আমার মনে পড়ল। কেননা, সে ছিল খুব আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বুঝতে পারলেন, আমি খুব লজ্জাবোধ করছি। সুতরাং তিনি এগিয়ে চললেন। আমি যুবায়ার (রাঃ) – এর কাছে পৌছালাম এবং বললাম, আমি খেজুরের আঁটির বোঝা মাথায় নিয়ে আসার সময় পথিমধ্যে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সঙ্গে আমার দেখা হয় এবং তাঁর সঙ্গে কিছু সংখ্যক সহাবী ছিলেন। তিনি তাঁর উটকে হাঁটু গেড়ে বসালেন, যেন আমি তাতে সওয়ার হতে পারি। কিন্তু আমি তোমার আত্মসম্মানের কথা চিন্তা করে লজ্জা অনুভব করলাম। এ কথা শুনে যুবায়ের (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্‌র কসম! খেজুরের আঁটির বোঝা মাথায় বহন করা তাঁর সঙ্গে উট চড়ার চেয়ে আমার কাছে অধিক লজ্জাজনক। এরপর আবূ বক্‌র সিদ্দীক (রাঃ) ঘোড়ার দেখাশুনার জন্য আমার সাহায্যের নিমিত্ত একজন খাদিম পাঠিয়ে দিলেন। এরপরই আমি যেন মুক্ত হলাম। [৩১৫১; মুসলিম ৩৯/১৪, হাঃ ২১৮২, আহমাদ ২৭০০৩] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৪)

৫২২৫
عَلِيٌّ حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ عَنْ حُمَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عِنْدَ بَعْضِ نِسَائِه„ فَأَرْسَلَتْ إِحْد‘ى أُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِينَ بِصَحْفَةٍ فِيهَا طَعَامٌ فَضَرَبَتْ الَّتِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي بَيْتِهَا يَدَ الْخَادِمِ فَسَقَطَتْ الصَّحْفَةُ فَانْفَلَقَتْ فَجَمَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِلَقَ الصَّحْفَةِ ثُمَّ جَعَلَ يَجْمَعُ فِيهَا الطَّعَامَ الَّذِي كَانَ فِي الصَّحْفَةِ وَيَقُوْلُ غَارَتْ أُمُّكُمْ ثُمَّ حَبَسَ الْخَادِمَ حَتّٰى أُتِيَ بِصَحْفَةٍ مِنْ عِنْدِ الَّتِي هُوَ فِي بَيْتِهَا فَدَفَعَ الصَّحْفَةَ الصَّحِيحَةَ إِلٰى الَّتِي كُسِرَتْ صَحْفَتُهَا وَأَمْسَكَ الْمَكْسُورَةَ فِي بَيْتِ الَّتِي كَسَرَتْ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন এক সময় রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার একজন স্ত্রীর কাছে ছিলেন। ঐ সময় উম্মুহাতুল মু’মিনীনের আর একজন একটি পাত্রে কিছু খাদ্য পাঠালেন। যে স্ত্রীর ঘরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবস্থান করছিলেন সে স্ত্রী খাদিমের হাতে আঘাত করলেন। ফলে খাদ্যের পাত্রটি পড়ে ভেঙ্গে গেল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাত্রের ভাঙ্গা টুকরোগুলো কুড়িয়ে একত্রিত করলেন, তারপর খাদ্যগুলো কুড়িয়ে তাতে রাখলেন এবং বললেন, তোমাদের আম্মাজীর আত্মমর্যাদাবোধে আঘাত লেগেছে। তারপর তিনি খাদিমকে অপেক্ষা করতে বললেন এবং যে স্ত্রীর কাছে ছিলেন তাঁর নিকট হতে একটি পাত্র নিয়ে যার পাত্র ভেঙ্গেছিল, তার কাছে পাঠালেন এবং ভাঙ্গা পাত্রটি যে ভেঙ্গেছিল তার ঘরেই রাখলেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৫)

৫২২৬
مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ الْمُقَدَّمِيُّ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ الْمُنْكَدِرِ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ الله ِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ دَخَلْتُ الْجَنَّةَ أَوْ أَتَيْتُ الْجَنَّةَ فَأَبْصَرْتُ قَصْرًا فَقُلْتُ لِمَنْ هٰذَا قَالُوا لِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ فَأَرَدْتُ أَنْ أَدْخُلَه“ فَلَمْ يَمْنَعْنِي إِلاَّ عِلْمِي بِغَيْرَتِكَ قَالَ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ يَا رَسُوْلَ اللهِ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي يَا نَبِيَّ اللهِ أَوَعَلَيْكَ أَغَارُ.

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি জান্নাতে প্রবেশ করে একটি প্রাসাদ দেখতে পেলাম এবং জিজ্ঞেস করলাম, এটি কার প্রাসাদ? তাঁরা (ফেরেশতাগণ) বললেন, এ প্রাসাদটি ‘উমার ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ) – এর। আমি তার মধ্যে প্রবেশ করতে চাইলাম; কিন্তু [তিনি সেখান উপস্থিত ‘উমার (রাঃ) – এর উদ্দেশে বললেন] তোমার আত্মমর্যাদাবোধ আমাকে সেখানে প্রবেশে বাধা দিল। এ কথা শুনে ‘উমার (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! আপানার কাছেও আমি (‘উমার) আত্মমর্যাদাবোধ প্রকাশ করব?(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৬)

৫২২৭
عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ عَنْ يُونُسَ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم جُلُوسٌ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَمَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُنِي فِي الْجَنَّةِ فَإِذَا امْرَأَةٌ تَتَوَضَّأُ إِلٰى جَانِبِ قَصْرٍ فَقُلْتُ لِمَنْ هٰذَا قَالُوا هٰذَا لِعُمَرَ فَذَكَرْتُ غَيْرَتَكَ فَوَلَّيْتُ مُدْبِرًا فَبَكٰى عُمَرُ وَهُوَ فِي الْمَجْلِسِ ثُمَّ قَالَ أَوَعَلَيْكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَغَارُ.

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন আমরা রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে বসা ছিলাম। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি একদিন ঘুমন্ত অবস্থায় জান্নাতে একটি প্রাসাদের পার্শ্বে একজন মহিলাকে ওযু করতে দেখলাম। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এই প্রাসাদটি কার? আমাকে বলা হলো, এটা ‘উমার (রাঃ) – এর। তখন আমি ‘উমারের আত্মমর্যাদার কথা স্মরন করে পিছন ফিরে চলে এলাম। এ কথা শুনে উমার (রাঃ) সেই মজলিসেই কাঁদতে লাগলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনার কাছেও কি আত্মসম্মানবোধ প্রকাশ করব।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৭)

৬৭/১০৯. অধ্যায়ঃ
মহিলাদের বিরোধিতা এবং তাদের ক্রোধ।

৫২২৮
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ إِنِّي لأَعْلَمُ إِذَا كُنْتِ عَنِّي رَاضِيَةً، وَإِذَا كُنْتِ عَلَىَّ غَضْبَى ‏”‏‏.‏ قَالَتْ فَقُلْتُ مِنْ أَيْنَ تَعْرِفُ ذَلِكَ فَقَالَ ‏”‏ أَمَّا إِذَا كُنْتِ عَنِّي رَاضِيَةً فَإِنَّكِ تَقُولِينَ لاَ وَرَبِّ مُحَمَّدٍ، وَإِذَا كُنْتِ غَضْبَى قُلْتِ لاَ وَرَبِّ إِبْرَاهِيمَ ‏”‏‏.‏ قَالَتْ قُلْتُ أَجَلْ وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا أَهْجُرُ إِلاَّ اسْمَكَ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন, “আমি জানি কখন তুমি আমার প্রতি খুশী থাক এবং কখন রাগান্বিত হও।” আমি বললাম, কি করে আপনি তা বুঝতে সক্ষম হন? তিনি বললেন, তুমি প্রসন্ন থাকলে বল, না! মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর রব-এর কসম! কিন্তু তুমি আমার প্রতি নারাজ থাকলে বল, না! ইব্‌রাহীম (আঃ) – এর রব-এর কসম! শুনে আমি বললাম, আপনি ঠিকই বলেছেন। আল্লাহ্‌র কসম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! সে ক্ষেত্রে শুধু আপনার নাম উচ্চারণ করা থেকেই বিরত থাকি। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৮)

৫২২৯
حَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ أَبِي رَجَاءٍ، حَدَّثَنَا النَّضْرُ، عَنْ هِشَامٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ مَا غِرْتُ عَلَى امْرَأَةٍ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَمَا غِرْتُ عَلَى خَدِيجَةَ، لِكَثْرَةِ ذِكْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِيَّاهَا وَثَنَائِهِ عَلَيْهَا، وَقَدْ أُوحِيَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُبَشِّرَهَا بِبَيْتٍ لَهَا فِي الْجَنَّةِ مِنْ قَصَبٍ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর স্ত্রীগণের মধ্য থেকে খাদীজাহ (রাঃ) – এর চেয়ে অন্য কোন স্ত্রীর প্রতি অধিক হিংসা করিনি। কারণ, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রায় তাঁর কথা স্মরণ করতেন এবং তাঁর প্রশংসা করতেন। তাছাড়াও রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে ওয়াহীর মাধ্যমে তাঁকে [খাদীজাহ (রাঃ)] – কে জান্নাতের মধ্যে একটি মতির প্রাসাদের সুসংবাদ দেবার জন্য জ্ঞাত করানো হয়েছিল।[২৬৪৪, ৩৮১৬; মুসলিম ৪৪/১৩, হাঃ ২৪৩৯, আহমাদ ২৪৩৭২](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৯)

৬৭/১১০. অধ্যায়ঃ
কন্যার মধ্যে ঈর্ষা সৃষ্টি হওয়া থেকে বাধা প্রদান এবং ইনসাফমূলক কথা।

৫২৩০
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ عَنِ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ إِنَّ بَنِي هِشَامِ بْنِ الْمُغِيرَةِ اسْتَأْذَنُوا فِي أَنْ يُنْكِحُوا ابْنَتَهُمْ عَلِيَّ بْنَ أَبِي طَالِبٍ فَلاَ آذَنُ ثُمَّ لاَ آذَنُ ثُمَّ لاَ آذَنُ إِلاَّ أَنْ يُرِيدَ ابْنُ أَبِي طَالِبٍ أَنْ يُطَلِّقَ ابْنَتِي وَيَنْكِحَ ابْنَتَهُمْ فَإِنَّمَا هِيَ بَضْعَةٌ مِنِّي يُرِيبُنِي مَا أَرَابَهَا وَيُؤْذِينِي مَا آذَاهَا.

মিসওয়ার ইব্‌নু মাখরামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে মিম্বরে বসে বলতে শুনেছি যে, বনি হিশাম ইব্‌নু মুগীরাহ, ‘আলী ইব্‌নু আবূ ত্বলিবের কাছে তাদের মেয়ে বিয়ে দেবার জন্য আমার কাছে অনুমতি চেয়েছে; কিন্তু আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, আমি অনুমতি দেব না, যতক্ষণ পর্যন্ত না ‘আলী ইব্‌নু আবূ ত্বলিব আমার কন্যাকে ত্বলাক দেয় এবং এর পরেই সে তাদের মেয়েকে বিয়ে করতে পারে। কেননা, ফাতিমা হচ্ছে আমার কলিজার টুকরা এবং সে যা ঘৃণা করে; আমিও তা ঘৃণা করি এবং তাকে যা কষ্ট দেয়, তা আমাকেও কষ্ট দেয়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫০)

৬৭/১১১. অধ্যায়ঃ
পুরুষের সংখ্যা কম হবে এবং নারীর সংখ্যা বেড়ে যাবে।

আবূ মূসা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, (এমন একটা সময় আসবে যখন) একজন পুরষকে দেখতে পাবে তার পেছনে চল্লিশজন নারী অনুসরন করছে আশ্রয়ের জন্য। কেননা, তখন পুরুষের সংখ্যা অনেক কমে যাবে আর নারীর সংখ্যা বর্ধিত হবে।

৫২৩১
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ الْحَوْضِيُّ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ لأُحَدِّثَنَّكُمْ حَدِيثًا سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لاَ يُحَدِّثُكُمْ بِهِ أَحَدٌ غَيْرِي، سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ إِنَّ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ يُرْفَعَ الْعِلْمُ، وَيَكْثُرَ الْجَهْلُ وَيَكْثُرَ الزِّنَا، وَيَكْثُرَ شُرْبُ الْخَمْرِ، وَيَقِلَّ الرِّجَالُ، وَيَكْثُرَ النِّسَاءُ حَتَّى يَكُونَ لِخَمْسِينَ امْرَأَةً الْقَيِّمُ الْوَاحِدُ ‏”‏‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি তোমাদের কাছে একটি হাদীস বর্ণনা করব, যা আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে শুনেছি এবং আমি ব্যতীত আর কেউ সে হাদীস বলতে পারবে না। আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে বলতে শুনেছি, ক্বিয়ামতের আলামতের মধে রয়েছে ইল্‌ম ওঠে যাবে, অজ্ঞতা বেড়ে যাবে, ব্যভিচার বৃদ্ধি পাবে, মদ্য পানের মাত্রা বেড়ে যাবে, পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে এবং নারীদের সংখ্যা বেড়ে যাবে যে, একজন পুরুষকে পঞ্চাশজন নারীর দেখাশোনা করতে হবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫১)

৬৭/১১২. অধ্যায়ঃ
‘মাহ্‌রাম’ অর্থাৎ যার সঙ্গে বিয়ে হারাম সে ব্যতীত অন্য কোন পুরুষের সঙ্গে কোন নারী নির্জনে দেখা করবে না এবং স্বামীর অসাক্ষাতে কোন নারীর কাছে কোন পুরুষের গমন (হারাম)।

৫২৩২
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا لَيْثٌ عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ عَنْ أَبِي الْخَيْرِ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِيَّاكُمْ وَالدُّخُولَ عَلٰى النِّسَاءِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَفَرَأَيْتَ الْحَمْوَ قَالَ الْحَمْوُ الْمَوْتُ.

‘উকবাহ ইব্‌নু ‘আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মহিলাদের নিকট একাকী যাওয়া থেকে বিরত থাক। এক আনসার জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! দেবরের ব্যাপারে কি হুকুম? তিনি উত্তর দিলেন দেবর হচ্ছে মৃত্যুতুল্য। [মুসলিম ৩৯/৮, হাঃ ২১৭২, আহমাদ ১৭৩৫২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫২)

[২২] ———- শব্দের অর্থের ব্যাপারে ইমাম তিরমিযী বলেছেন- ‘হামো’ মানে স্বামীর ভাই –স্বামীর ছোট হোক বা বড়। ইমাম লাইস বলেছেন- ‘হামো’ হচ্ছে স্বামীর ভাই, আর তার মত স্বামীর অপরাপর নিকটবর্তী লোকেরা যেমন চাচাত, মামাত, ফুফাত ভাই ইত্যাদি। বরং এর সঠিক অর্থে বুঝা যায় – স্বামীর ভাই, স্বামীর ভাই পো, স্বামীর চাচা, চাচাতো ভাই, ভাগ্নে এবং এদেরই মত অন্যসব পুরুষ যাদের সাথে এ মেয়েলোকের বিয়ে হতে পারে- যদি না সে বিবাহিতা হয়। কিন্তু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এদের মৃত্যু বা মৃত্যুদূত বললেন কেন? এর কারণস্বরূপ বলা হয়েছে –

সাধারন প্রচলিত নিয়ম ও লোকদের অভ্যাসই হচ্ছে যে, এসব নিকটাত্মীয়ের ব্যাপারে উপেক্ষা প্রদর্শন করা হয়। (এবং এদের পারস্পরিক মেলামেশায় কোন দোষ মনে করা হয় না) ফলে ভাই ভাইর বউ – এর সাথে একাকীত্বে মিলিত হয়। এভাবে একাকীত্বে মিলিত হওয়াকে তোমরা ভয় কর যেমনভাবে তোমরা মৃত্যুকে ভয় কর। আল্লামা কাযী ইয়ায বলেছেন – স্বামীর এসব নিকটাত্মীয়ের সাথে স্ত্রীর (কিংবা স্ত্রীর এসব নিকটাত্মীয়ের সঙ্গে স্বামীর) গোপন মেলামেশা নৈতিক ধ্বংস টেনে আনে। ইমাম কুরতুবী বলেছেন- এ ধরনের লোকদের সাথে গোপন মিলন নীতি ও ধর্মের মৃত্যু ঘটায় কিংবা স্বামীর আত্মসম্মানবোধ তীব্র হওয়ার পরিণামে তাকে তালাক দেয় বলে তার দাম্পত্য জীবনের মৃত্যু ঘটে। কিংবা এদের কারো সাথে যদি জ্বেনায় লিপ্ত হয়, তাহলে তাকে সঙ্গেসার করার দন্ড দেয়া হয়, ফলে তার জৈবিক মৃত্যুও ঘটে। আল্লামা তাবারী বলেছেন, যে কোন অপছন্দনীয় ব্যাপারকে আরবরা মৃত্যু বলে আখ্যায়িত করত।

৫২৩৩
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَمْرٌو عَنْ أَبِي مَعْبَدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ النَّبِيِّصلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ يَخْلُوَنَّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ إِلاَّ مَعَ ذِي مَحْرَمٍ فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ امْرَأَتِي خَرَجَتْ حَاجَّةً وَاكْتُتِبْتُ فِي غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا قَالَ ارْجِعْ فَحُجَّ مَعَ امْرَأَتِكَ.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মাহ্‌রামের বিনা উপস্থিতিতে কোন পুরুষ কোন নারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে না। এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার স্ত্রী হাজ্জ করার জন্য বেরিয়ে গেছে এবং অমুক অমুক জিহাদে অংশগ্রহনের জন্য আমার নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ফিরে যাও এবং তোমার স্ত্রীর সঙ্গে হাজ্জ সম্পন্ন কর। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৩)

৬৭/১১৩. অধ্যায়ঃ
লোকজন না থাকলে স্ত্রীলোকের সঙ্গে পুরুষের কথা বলা জায়িজ।

৫২৩৪
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ هِشَامٍ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ قَالَ جَاءَتْ امْرَأَةٌ مِنَالأَنْصَارِ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَخَلاَ بِهَا فَقَالَ وَاللهِ إِنَّكُنَّ لأَحَبُّ النَّاسِ إِلَيَّ.

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন এক আনসারী মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট এলে, তিনি তাকে একান্তে বললেন, আল্লাহ্‌র কসম! তোমরা (আনসাররা) আমার কাছে সকল লোকের চেয়ে অধিক প্রিয়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৫১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৪)

৬৭/১১৪. অধ্যায়ঃ
নারীর বেশধারী পুরুষের নিকট নারীর প্রবেশ নিষিদ্ধ।

৫২৩৫
عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا عَبْدَةُ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ أُمِّ سَلَمَةَ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ عِنْدَهَا وَفِي الْبَيْتِ مُخَنَّثٌ فَقَالَ الْمُخَنَّثُ لِأَخِي أُمِّ سَلَمَةَ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي أُمَيَّةَ إِنْ فَتَحَ اللهُ لَكُمْ الطَّائِفَ غَدًا أَدُلُّكَ عَلٰى بِنْتِ غَيْلاَنَ فَإِنَّهَا تُقْبِلُ بِأَرْبَعٍ وَتُدْبِرُ بِثَمَانٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاَ يَدْخُلَنَّ هٰذَا عَلَيْكُنَّ.

উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার কাছে থাকাকালে সেখানে একজন মেয়েলী পুরুষ ছিল। ঐ মেয়েলী পুরুষটি উম্মু সালামার ভাই ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু আবূ উমাইয়াকে বলল, যদি আগামীকাল আপনাদেরকে আল্লাহ্‌ তায়েফ বিজয় দান করেন, তবে আমি আপনাকে গায়লানের মেয়েকে গ্রহণ করার পরামর্শ দিচ্ছি। কেননা, সে এত মেদবহুল যে, সে সম্মুখ দিকে আগমন করলে তার পেটে চার ভাঁজ পড়ে আর পিছু ফিরে যাবার সময় আট ভাঁজ পড়ে। এ কথা শুনে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে যেন কখনো তোমাদের কাছে আর না আসে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৫২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৫)

৬৭/১১৫. অধ্যায়ঃ
সন্দেহজনক না হলে হাব্‌শী বা অনুরূপ লোকদের প্রতি মহিলারা দৃষ্টি দিতে পারবে।

৫২৩৬
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الْحَنْظَلِيُّ عَنْ عِيسٰى عَنِالأَوْزَاعِيِّ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَسْتُرُنِي بِرِدَائِه„ وَأَنَا أَنْظُرُ إِلَى الْحَبَشَةِ يَلْعَبُونَ فِي الْمَسْجِدِ حَتّٰى أَكُونَ أَنَا الَّتِي أَسْأَمُ فَاقْدُرُوا قَدْرَ الْجَارِيَةِ الْحَدِيثَةِ السِّنِّ الْحَرِيصَةِ عَلٰى اللَّهْوِ.

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি একদিন হাবশীদের খেলা দেখছিলাম। তারা মসজিদের আঙ্গিনায় খেলা খেলছিল। আমি খেলা দেখে ক্লান্ত না হওয়া পর্যন্ত দেখছিলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চাদর দিয়ে আমাকে আড়াল করে রেখেছিলেন। তোমরা অনুমান কর যে, অল্পবয়স্কা মেয়েরা খেলাধূলা দেখতে কী পরিমান আগ্রহী!(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৬)

৬৭/১১৬. অধ্যায়ঃ
প্রয়োজন দেখা দিলে মেয়েদের ঘরের বাইরে যাতায়াত।

৫২৩৭
فَرْوَةُ بْنُ أَبِي الْمَغْرَاءِ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ خَرَجَتْ سَوْدَةُ بِنْتُ زَمْعَةَ لَيْلاً فَرَآهَا عُمَرُ فَعَرَفَهَا فَقَالَ إِنَّكِ وَاللهِ يَا سَوْدَةُ مَا تَخْفَيْنَ عَلَيْنَا فَرَجَعَتْ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَتْ ذ‘لِكَ لَه“ وَهُوَ فِي حُجْرَتِي يَتَعَشّٰى وَإِنَّ فِي يَدِه„ لَعَرْقًا فَأَنْزَلَ اللهُ عَلَيْهِ فَرُفِعَ عَنْه“ وَهُوَ يَقُوْلُ قَدْ أَذِنَ اللهُ لَكُنَّ أَنْ تَخْرُجْنَ لِحَوَائِجِكُنَّ.

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক রাতে উম্মুহাতুল মু’মিনীন সওদা বিন্‌ত জাম’আ (রাঃ) কোন কারণে বাইরে গেলেন। ‘উমার (রাঃ) তাঁকে দেখে চিনে ফেললেন। তিনি বললেন, আল্লাহ্‌র কসম! হে সাওদা! তুমি নিজেকে আমাদের নিকট হতে লুকাতে পারনি। এতে তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট ফিরে গেলেন এবং উক্ত ঘটনা তাঁর কাছে বললেন। তিনি তখন আমার ঘরে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন এবং তাঁর হাতে গোশ্‌তওয়ালা একখানা হাড় ছিল। এমন তাঁর কাছে ওয়াহী অবতীর্ণ হল। ওয়াহী শেষ হলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আল্লাহ্‌ তা’আলা প্রয়োজনে তোমাদেরেকে বাইরে যাবার অনুমতি দিয়েছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৫৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৭)

৬৭/১১৭. অধ্যায়ঃ
মসজিদে অথবা অন্য কোথাও যাবার জন্য মহিলাদের স্বামীর অনুমতি গ্রহণ।

৫২৩৮
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذَا اسْتَأْذَنَتْ امْرَأَةُ أَحَدِكُمْ إِلَى الْمَسْجِدِ فَلاَ يَمْنَعْهَا.

সালিমের পিতা [ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ)] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কারো স্ত্রী মসজিদে যাবার অনুমতি চাইলে তাকে নিষেধ করো না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৮)

৬৭/১১৮. অধ্যায়ঃ
দুধ সম্পর্কীয় মহিলাদের নিকট গমন করা এবং তাদের দিকে দৃষ্টিপাত করার বৈধতা সম্পর্কে।

৫২৩৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّهَا قَالَتْ جَاءَ عَمِّي مِنَ الرَّضَاعَةِ فَاسْتَأْذَنَ عَلَىَّ فَأَبَيْتُ أَنْ آذَنَ لَهُ حَتَّى أَسْأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجَاءَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلْتُهُ عَنْ ذَلِكَ فَقَالَ ‏”‏ إِنَّهُ عَمُّكِ فَأْذَنِي لَهُ ‏”‏ قَالَتْ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّمَا أَرْضَعَتْنِي الْمَرْأَةُ وَلَمْ يُرْضِعْنِي الرَّجُلُ‏.‏ قَالَتْ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ إِنَّهُ عَمُّكِ فَلْيَلِجْ عَلَيْكِ ‏”‏‏.‏ قَالَتْ عَائِشَةُ وَذَلِكَ بَعْدَ أَنْ ضُرِبَ عَلَيْنَا الْحِجَابُ‏.‏ قَالَتْ عَائِشَةُ يَحْرُمُ مِنَ الرَّضَاعَةِ مَا يَحْرُمُ مِنَ الْوِلاَدَةِ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার দুধ সম্পর্কের চাচা এলেন এবং আমার কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন; কিন্তু আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে অনুমতি নেয়া ব্যতিত তাকে প্রবেশের অনুমতি দিতে অস্বীকার করলাম। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসার পর তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, তিনি হচ্ছে তোমার চাচা। কাজেই তাকে ভিতরে আসার অনুমতি দাও। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমাকে মহিলা দুধ পান করিয়েছেন, কোন পুরুষ আমাকে দুধ পান করায়নি। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে তোমার চাচা, কাজেই তাঁকে তোমার কাছে আসার অনুমতি দাও। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, এটা – পর্দার আয়াত অবতীর্ণ হবার পরের ঘটনা। তিনি আরও বলেন, জন্মসূত্রে যারা হারাম, দুধ সম্পর্কেও তারা হারাম। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৯)

৬৭/১১৯. অধ্যায়ঃ
কোন মহিলা তার দেখা আরেক মহিলার দেহের বর্ণনা নিজের স্বামীর কাছে দিবে না।

৫২৪০
مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ أَبِي وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مَسْعُودٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاَ تُبَاشِرُ الْمَرْأَةُ الْمَرْأَةَ فَتَنْعَتَهَا لِزَوْجِهَا كَأَنَّه“ يَنْظُرُ إِلَيْهَا.

‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: কোন নারী যেন তার দেখা অন্য নারীর দেহের বর্ণনা নিজ স্বামীর নিকট এমনভাবে না দেয়, যেন সে তাকে (ঐ নারীকে) চাক্ষুস দেখতে পাচ্ছে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৫৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬০)

৫২৪১
عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا أَبِي حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ قَالَ حَدَّثَنِي شَقِيقٌ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاَ تُبَاشِرْ الْمَرْأَةُ الْمَرْأَةَ فَتَنْعَتَهَا لِزَوْجِهَا كَأَنَّه“ يَنْظُرُ إِلَيْهَا.

‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: কোন নারী যেন তার দেখা অন্য নারীর দেহের বর্ণনা নিজ স্বামীর নিকট এমনভাবে না দেয়, যেন সে তাকে (ঐ নারীকে) দেখতে পাচ্ছে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬১)

৬৭/১২০. অধ্যায়ঃ
কোন ব্যক্তির এ কথা বলা যে, নিশ্চয়ই আজ রাতে সে তার সকল স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হবে।

৫২৪২
مَحْمُودٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ ابْنِ طَاوُسٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ عَلَيْهِمَا السَّلاَم لأَطُوفَنَّ اللَّيْلَةَ بِمِائَةِ امْرَأَةٍ تَلِدُ كُلُّ امْرَأَةٍ غُلاَمًا يُقَاتِلُ فِي سَبِيلِ اللهِ فَقَالَ لَهُ الْمَلَكُ قُلْ إِنْ شَاءَ اللهُ فَلَمْ يَقُلْ وَنَسِيَ فَأَطَافَ بِهِنَّ وَلَمْ تَلِدْ مِنْهُنَّ إِلاَّ امْرَأَةٌ نِصْفَ إِنْسَانٍ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَوْ قَالَ إِنْ شَاءَ اللهُ لَمْ يَحْنَثْ وَكَانَ أَرْجٰى لِحَاجَتِهِ.

আবূ হুরায়রার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, দাউদ (আঃ) – এর পুত্র সুলায়মান (আঃ) একদা বলেছিলেন, নিশ্চয়ই আজ রাতে আমি আমার একশ’ স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হব এবং তাদের প্রত্যেকেই একটি করে পুত্র সন্তান প্রসব করবে, যারা আল্লাহ্‌র পথে জিহাদ করবে। এ কথা শুনে একজন ফেরেশতা বলেছিলেন, আপনি ‘ইন্‌শাআল্লাহ্‌’ বলুন; কিন্তু তিনি এ কথা ভুলক্রমে বলেননি। এরপর তিনি তার স্ত্রীগণের সঙ্গে মিলিত হলেন; কিন্তু তাদের কেউ কোন সন্তান প্রসব করল না। কেবল এক স্ত্রী একটি অপূর্ণাঙ্গ সন্তান প্রসব করল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যদি সুলায়মান (আঃ) ‘ইন্‌শাআল্লাহ্‌’ বলেতেন, তাহলে তাঁর শপথ ভঙ্গ হত না। আর তাতেই ভালোভাবে তার আশা মিটত।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৪৮৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬২)

৬৭/১২১. অধ্যায়ঃ
দীর্ঘ অনুপস্থিতির পর রাতে পরিবারের নিকট ঘরে প্রবেশ করা উচিত নয়, যাতে করে কোন কিছু তাকে আপন পরিবার সম্পর্কে সন্দিহান করে তোলে, অথবা তাদের অপ্রীতিকর কিছু চোখে পড়ে।

৫২৪৩
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا مُحَارِبُ بْنُ دِثَارٍ قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَكْرَه“ أَنْ يَأْتِيَ الرَّجُلُ أَهْلَه“ طُرُوقًا.

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফর থেকে এসে রাতে ঘরে প্রবেশ করা অপছন্দ করতেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৩)

৫২৪৪
مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا عَاصِمُ بْنُ سُلَيْمَانَ عَنْ الشَّعْبِيِّ أَنَّه“ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَطَالَ أَحَدُكُمْ الْغَيْبَةَ فَلاَ يَطْرُقْ أَهْلَه“ لَيْلاً.

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কেউ দীর্ঘদিন প্রবাসে কাটিয়ে রাতে আকস্মিকভাবে তার ঘরে যেন প্রবেশ না করে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৪)

৬৭/১২২. অধ্যায়ঃ
সন্তান কামনা করা।

৫২৪৫
مُسَدَّدٌ عَنْ هُشَيْمٍ عَنْ سَيَّارٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ جَابِرٍ قَالَ كُنْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزْوَةٍ فَلَمَّا قَفَلْنَا تَعَجَّلْتُ عَلٰى بَعِيرٍ قَطُوفٍ فَلَحِقَنِي رَاكِبٌ مِنْ خَلْفِي فَالْتَفَتُّ فَإِذَا أَنَا بِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَا يُعْجِلُكَ قُلْتُ إِنِّي حَدِيثُ عَهْدٍ بِعُرْسٍ قَالَ فَبِكْرًا تَزَوَّجْتَ أَمْ ثَيِّبًا قُلْتُ بَلْ ثَيِّبًا قَالَ فَهَلاَّ جَارِيَةً تُلاَعِبُهَا وَتُلاَعِبُكَ قَالَ فَلَمَّا قَدِمْنَا ذَهَبْنَا لِنَدْخُلَ فَقَالَ أَمْهِلُوا حَتّٰى تَدْخُلُوا لَيْلاً أَيْ عِشَاءً لِكَيْ تَمْتَشِطَ الشَّعِثَةُ وَتَسْتَحِدَّ الْمُغِيبَةُ قَالَ وَحَدَّثَنِي الثِّقَةُ أَنَّه“ قَالَ فِي هٰذَا الْحَدِيثِ الْكَيْسَ الْكَيْسَ يَا جَابِرُ يَعْنِي الْوَلَدَ.

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন এক যুদ্ধে আমি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সঙ্গে ছিলাম। যখন আমরা ফিরে আসছিলাম, আমি আমার ধীর গতিসম্পন্ন উটকে দ্রুত হাঁকালাম। তখন আমার পিছনে একজন আরোহী এসে মিলিত হলেন। তাকিয়ে দেখলাম যে, তিনি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। তিনি বললেন, তোমার এ ব্যস্ততা কেন? আমি বললাম, আমি সদ্য বিয়ে করেছি। তিনি বললেন, কুমারী, না পুর্ব-বিবাহিতা বিয়ে করেছ? আমি বললাম, পূর্ব বিবাহিতা। তিনি বললেন, কুমারী করলে না কেন? তুমি তার সঙ্গে আমোদ-প্রমোদ করতে, আর সেও তোমার সঙ্গে আমোদ-প্রমোদ করত। (রাবী) বলেন, আমরা মদীনায় পৌঁছে নিজ নিজ বাড়িতে প্রবেশ করতে চাইলাম। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা অপেক্ষা কর – পরে রাতে অর্থাৎ এশা নাগাদ ঘরে যাবে, যাতে নারী তার অবিন্যস্ত চুল আঁচড়ে নিতে পারে এবং প্রবাসী স্বামীর স্ত্রী ক্ষুর ব্যবহার করতে পারে। (রাবী) বলেন, আমাকে নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি বলেছেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ হাদীসে এও বলেছেন যে, হে জাবির। বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দাও, বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দাও। অর্থাৎ সন্তান কামনা কর। [২৩](আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৫)

[২৩] আল্লাহ্‌র একজন সচেতন বান্দাহ সর্বক্ষণ সওয়াব হাসিল করতে থাকে। সলাত, সওম, হাজ্জ ও যাকাতের মাধ্যমেই সে শুধু নেকী হাসিল করে না, সে তার চলাফেরা, উঠা বসা, খাওয়া দাওয়া, ব্যবসা বাণিজ্য এমনকি দৈনন্দিনের মলমূত্র ত্যাগের মাধ্যমেও নেকী হাসিল করতে থাকে। স্বীয় স্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশা, হাসি তামাশা ও তার মুখে খাবার তুলে দিয়ে একই সাথে সে অপার আনন্দ ও সওয়াব হাসিল করতে থাকে। কেবল শর্ত হল এসব জায়িয কাজগুলো আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের নিয়তে তাঁরই শেখানো পদ্ধতিতে করতে হবে। আল্লাহর কথা ভুলে গিয়ে একজন কাফিরের মত কিংবা জন্তু-জানোয়ারের মত এসব কাজ করলে তাতে কোন সওয়াব পাওয়া যাবে না।

৫২৪৬
مُحَمَّدُ بْنُ الْوَلِيدِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ سَيَّارٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا دَخَلْتَ لَيْلاً فَلاَ تَدْخُلْ عَلٰى أَهْلِكَ حَتّٰى تَسْتَحِدَّ الْمُغِيبَةُ وَتَمْتَشِطَ الشَّعِثَةُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَعَلَيْكَ بِالْكَيْسِ الْكَيْسِ

تَابَعَه“ عُبَيْدُ اللهِ عَنْ وَهْبٍ عَنْ جَابِرٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الْكَيْسِ.

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সফর থেকে রাতে প্রত্যাবর্তন করে গৃহে প্রবেশ করবে না, যতক্ষণ না অনুপস্থিত স্বামীর স্ত্রী ক্ষুর ব্যবহার করতে পারে এবং এলোকেশী স্ত্রী চিরুনি করে নিতে পারে। (রাবী), বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমার কর্তব্য সন্তান কামনা করা, সন্তান কামনা করা। [৪৪৩]

‘উবাইদুল্লাহ্‌ (রহঃ) ওয়াহাব (রহঃ) থেকে জাবির (রাঃ) – এর সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে ‘সন্তান অন্বেষণ’ শব্দটি উল্লেখ করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৬)

৬৭/১২৩. অধ্যায়ঃ
অনুপস্থিত স্বামীর স্ত্রী ক্ষুর ব্যবহার করবে এবং এলোকেশী নারী (মাথায়) চিরুনি করে নিবে।

৫২৪৭
يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ أَخْبَرَنَا سَيَّارٌ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي غَزْوَةٍ فَلَمَّا قَفَلْنَا كُنَّا قَرِيبًا مِنَ الْمَدِينَةِ تَعَجَّلْتُ عَلٰى بَعِيرٍ لِي قَطُوفٍ فَلَحِقَنِي رَاكِبٌ مِنْ خَلْفِي فَنَخَسَ بَعِيرِي بِعَنَزَةٍ كَانَتْ مَعَه“ فَسَارَ بَعِيرِي كَأَحْسَنِ مَا أَنْتَ رَاءٍ مِنَ الإِبِلِ فَالْتَفَتُّ فَإِذَا أَنَا بِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنِّي حَدِيثُ عَهْدٍ بِعُرْسٍ قَالَ أَتَزَوَّجْتَ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ أَبِكْرًا أَمْ ثَيِّبًا قَالَ قُلْتُ بَلْ ثَيِّبًا قَالَ فَهَلاَّ بِكْرًا تُلاَعِبُهَا وَتُلاَعِبُكَ قَالَ فَلَمَّا قَدِمْنَا ذَهَبْنَا لِنَدْخُلَ فَقَالَ أَمْهِلُوا حَتّٰى تَدْخُلُوا لَيْلاً أَيْ عِشَاءً لِكَيْ تَمْتَشِطَ الشَّعِثَةُ وَتَسْتَحِدَّ الْمُغِيبَةُ.

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সঙ্গে এক যুদ্ধে ছিলাম। যুদ্ধ শেষে ফেরার পথে আমরা মদীনার নিকটবর্তী হলাম, আমি আমার ধীর গতি উটকে দ্রুত হাঁকালাম। একটু পরেই এক আরোহী আমার পিছনে এসে মিলিত হলেন এবং তাঁর লাঠি দ্বারা আমার উটটিকে খোঁচা দিলেন। এতে আমার উটটি সর্বোৎকৃষ্ট উটের মত চলতে লাগল যেমনভাবে উত্কৃষ্ঠ উটকে তোমরা চলতে দেখ। মুখ ফিরিয়ে দেখলাম যে, তিনি রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি সদ্য বিয়ে করেছি। তিনি বললেন, বিয়ে করেছ? বললাম, জি-হ্যাঁ। তিনি বললেন, কুমারী, না পূর্ব-বিবাহিতা? আমি বললাম বরং পূর্ব-বিবাহিতা। তিনি বললেন, কুমারী করলে না কেন? তুমি তার সঙ্গে আমোদ-প্রমোদ করতে আর সেও তোমার সঙ্গে আমোদ-প্রমোদ করত। রাবী বলেন, এরপর আমরা মদীনায় পৌঁছে (নিজ নিজ গৃহে) প্রবেশ করতে উদ্যত হলাম, তখন তিনি বললেন, অপেক্ষা কর, সকলে রাতে অর্থাৎ সন্ধ্যায় প্রবেশ করবে, যাতে এলোকেশী নারী চিরুনি করে নিতে পারে এবং অনুপস্থিত স্বামীর স্ত্রী ক্ষুর ব্যবহার করতে পারে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৭)

৬৭/১২৪. অধ্যায়ঃ
“তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাই – এর ছেলে, বোনের ছেলে, নিজেদের মহিলাগণ, স্বীয় মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনামুক্ত পুরুষ আর নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া অন্যের কাছে নিজেদের শোভা সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।” (সূরাহ আন্‌-নূর ২৪/৩১)

৫২৪৮
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِي حَازِمٍ قَالَ اخْتَلَفَ النَّاسُ بِأَيِّ شَيْءٍ دُووِيَ جُرْحُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ فَسَأَلُوا سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ السَّاعِدِيَّ وَكَانَ مِنْ آخِرِ مَنْ بَقِيَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِالْمَدِينَةِ فَقَالَ وَمَا بَقِيَ مِنَ النَّاسِ أَحَدٌ أَعْلَمُ بِه„ مِنِّي كَانَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلاَم تَغْسِلُ الدَّمَ عَنْ وَجْهِه„ وَعَلِيٌّ يَأْتِي بِالْمَاءِ عَلٰى تُرْسِه„ فَأُخِذَ حَصِيرٌ فَحُرِّقَ فَحُشِيَ بِه„ جُرْحُهُ.

আবূ হাযিম থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উহুদের দিন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর ক্ষতস্থানে কী ঔষধ লাগানো হয়েছিল, এ নিয়ে লোকদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হল। পরে তারা সাহ্‌ল ইব্‌নু সা’দ সা’ঈদীকে জিজ্ঞেস করল, যিনি মদীনার অবশিষ্ট নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সাহাবীগণের সর্বশেষ ছিলেন। তিনি বললেন, এ ব্যপারে আমার চেয়ে অধিক অভিজ্ঞ কোন ব্যক্তি অবশিষ্ট নেই। ফাতিমাহ (রাঃ) তাঁর মুখমণ্ডল হতে রক্ত ধুয়ে দিচ্ছিলেন আর ‘আলী (রাঃ) ঢালে করে পানি আনছিলেন। পরে একটি চাটাই পুড়িয়ে, তা ক্ষতস্থানে চারপাশে লাগিয়ে দেয়া হল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৮)

৬৭/১২৫. অধ্যায়ঃ
যারা বয়ঃপ্রাপ্ত হয়নি। (সুরাহ্‌ আন্‌-নূর ২৪/৫৮)

৫২৪৯
أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ عَابِسٍ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ سَأَلَه“ رَجُلٌ شَهِدْتَ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْعِيدَ أَضْحًى أَوْ فِطْرًا قَالَ نَعَمْ وَلَوْلاَ مَكَانِي مِنْه“ مَا شَهِدْتُه“ يَعْنِي مِنْ صِغَرِه„ قَالَ خَرَجَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَصَلّٰى ثُمَّ خَطَبَ وَلَمْ يَذْكُرْ أَذَانًا وَلاَ إِقَامَةً ثُمَّ أَتٰى النِّسَاءَ فَوَعَظَهُنَّ وَذَكَّرَهُنَّ وَأَمَرَهُنَّ بِالصَّدَقَةِ فَرَأَيْتُهُنَّ يَهْوِينَ إِلٰى آذَانِهِنَّ وَحُلُوقِهِنَّ يَدْفَعْنَ إِلٰى بِلاَلٍ ثُمَّ ارْتَفَعَ هُوَ وَبِلاَلٌ إِلٰى بَيْتِهِ.

‘আবদুর রহমান ইব্‌নু আব্বাস থেকে বর্ণিতঃ

আমি এক ব্যক্তিকে ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) – এর নিকট প্রশ্ন করতে শুনেছি যে, আপনি আযহা বা ফিতরের কোন ঈদে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন? তিনি উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ’। অবশ্য তাঁর সঙ্গে আমার এত ঘনিষ্ঠতা না থাকলে স্বল্প বয়সের কারণে আমি তাঁর সঙ্গে উপস্থিত হতে পারতাম না। তিনি (আরও) বলেন, রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হলেন। তারপর সলাত আদায় করলেন, এরপর খুৎবাহ দিলেন। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) আযান ও ইকামাতের কথা উল্লেখ করেননি। এরপর তিনি মহিলাদের কাছে এলেন এবং তাদেরকে ওয়াজ ও নাসীহাত করলেন ও তাদেরকে সদাকাহ করার আদেশ দিলেন। (রাবী বলেন,) আমি দেখলাম, তারা তাদের কর্ণ ও কন্ঠের দিকে হাত প্রসারিত করে (গয়নাগুলো) বিলালের কাছে অর্পণ করছে। এরপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও বিলাল (রাঃ) গৃহে প্রত্যাবর্তন করলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৯)

৬৭/১২৬. অধ্যায়ঃ
কোন ব্যক্তি তার সাথীকে বলা যে, তোমরা কি গত রাতে যৌন সঙ্গম করেছ? এবং ধমক দেয়া কালে কোন ব্যক্তির নিজ কন্যার কোমরে আঘাত করা।

৫২৫০
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ عَاتَبَنِي أَبُو بَكْرٍ وَجَعَلَ يَطْعُنُنِي بِيَدِه„ فِي خَاصِرَتِي فَلاَ يَمْنَعُنِي مِنَ التَّحَرُّكِ إِلاَّ مَكَانُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَرَأْسُه“ عَلٰى فَخِذِي.

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবূ বকর (রাঃ) আমাকে ভৎর্সনা করলেন এবং আমার কোমরে তাঁর হাত দ্বারা খোঁচা দিলেন। আমার ঊরুর ওপর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর মস্তক থাকার কারণে আমি নড়াচড়া করতে পারিনি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭০)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]