সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস তালাক অধ্যায় ২য় ভাগ হাদিস নং ৫২৯২ – ৫৩১৭

৬৮/২২. অধ্যায়ঃ
নিরুদ্দিষ্ট ব্যক্তির পরিবার ও তার সম্পদের বিধান।

ইবনু মুসাইয়্যাব (রহঃ) বলেন, যুদ্ধের ব্যূহ থেকে কোন ব্যক্তি নিরুদ্দেশ হলে তার স্ত্রী এক বছর অপেক্ষা করবে।

ইবনু মাস’উদ (রাঃ) একটি দাসী ক্রয় করে এক বছর পর্যন্ত তার মালিককে খুঁজলেন (মূল্য পরিশোধ করার জন্য)। তিনি তাকে পেলেন না, সে নিখোঁজ হয়ে যায়। তিনি এক দিরহাম, দু‘দিরহাম করে দান করতেন এবং বলতেনঃ হে আল্লাহ! এটা অমুকের পক্ষ থেকে দিচ্ছি। যদি মালিক এসে যায়, তবে এর সওয়াব আমি পাব, আর তার টাকা পরিশোধ করার দায়িত্ব হবে আমার। তিনি বলেনঃ হারানো বস্তু প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও তোমরা এমন কাজ করবে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)- ও এরূপ মত ব্যক্ত করেছেন। যুহরী সেই বন্দী ব্যক্তি সম্পর্কে বলেন, যার অবস্থান সম্পর্কে জানা গেছে তার স্ত্রী বিয়ে করতে পারবে না এবং তার সম্পদও বন্টন করা যাবে না। তবে তার সংবাদ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে, তাঁর সম্পর্কে নিখোঁজ ব্যক্তির বিধান বলবৎ হবে।

৫২৯২
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ يَحْيٰى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ يَزِيدَ مَوْلَى الْمُنْبَعِثِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنْ ضَالَّةِ الْغَنَمِ فَقَالَ خُذْهَا فَإِنَّمَا هِيَ لَكَ أَوْ لأَ÷خِيكَ أَوْ لِلذِّئْبِ وَسُئِلَ عَنْ ضَالَّةِ الإِبِلِ فَغَضِبَ وَاحْمَرَّتْ وَجْنَتَاه“ وَقَالَ مَا لَكَ وَلَهَا مَعَهَا الْحِذَاءُ وَالسِّقَاءُ تَشْرَبُ الْمَاءَ وَتَأْكُلُ الشَّجَرَ حَتّٰى يَلْقَاهَا رَبُّهَا وَسُئِلَ عَنْ اللُّقَطَةِ فَقَالَ اعْرِفْ وِكَاءَهَا وَعِفَاصَهَا وَعَرِّفْهَا سَنَةً فَإِنْ جَاءَ مَنْ يَعْرِفُهَا وَإِلاَّ فَاخْلِطْهَا بِمَالِكَ قَالَ سُفْيَانُ فَلَقِيتُ رَبِيعَةَ بْنَ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمٰنِ قَالَ سُفْيَانُ وَلَمْ أَحْفَظْ عَنْه“ شَيْئًا غَيْرَ هٰذَا فَقُلْتُ أَرَأَيْتَ حَدِيثَ يَزِيدَ مَوْلٰى المُنْبَعِثِ فِي أَمْرِ الضَّالَّةِ هُوَ عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ قَالَ نَعَمْ قَالَ يَحْيٰى وَيَقُوْلُ رَبِيعَةُ عَنْ يَزِيدَ مَوْلَى الْمُنْبَعِثِ عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ قَالَ سُفْيَانُ فَلَقِيتُ رَبِيعَةَ فَقُلْتُ لَهُ.

মুনবাইস-এর আযাদকৃত গোলাম ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে হারানো বকরীর ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ ওটাকে ধরে নাও। কেননা, ওটা হয় তোমার জন্য, না হয় তোমার (অন্য) ভাইয়ের জন্য অথবা নেকড়ের জন্য। তাঁকে হারানো উটের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি রেগে গেলেন এবং তাঁর উভয় গন্ডদেশ লাল হয়ে গেল। এরপর তিনি বললেনঃ ওটা নিয়ে তোমার চিন্তা কেন? তার সঙ্গে (চলার জন্য) পায়ের তলায় ক্ষুর ও (পানাহারের জন্য) পেটে মশক আছে। সে পানি পান করতে থাকবে এবং বৃক্ষ-লতা খেতে থাকবে, আর এর মধ্যে মালিক তার সন্ধান লাভ করবে। তাঁকে লুকাতা (হারানো প্রাপ্তি) সম্বন্ধে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ প্রাপ্ত বস্তুর থলে ও মাথার বন্ধনটা চিনে নাও এবং এক বছর পর্যন্ত এর ঘোষণা দিতে থাক। যদি এর শনাক্তকারী (মালিক) আসে, তবে ভালো কথা, নচেৎ এটাকে তোমার মালের সাথে মিলিয়ে নাও। সুফ্‌ইয়ান বলেনঃ আমি রাবী‘আ ইবনু আবূ ‘আবদুর রহমানের সঙ্গে দেখা করে উল্লিখিত কথাগুলো ছাড়া আর কিছুই পাইনি। আমি বললামঃ হারানো প্রাণীর ব্যাপারে মুনবাইস এর আযাদকৃত গোলাম ইয়াযীদের হাদীসটি কি যায়দ ইবনু খালিদ হতে বর্ণিত? তিনি বললেন, হাঁ। ইয়াহইয়া বলেন, রাবী‘আ বলতেনঃ হাদীসটি মুনবাইস-এর আযাদকৃত গোলাম ইয়াযীদ-এর মাধ্যমে যায়দ ইবনু খালিদ হতে বর্ণনাকৃত। সুফ্‌ইয়ান বললেনঃ আমি রাবী‘আর সঙ্গে দেখা করে এ সম্পর্কে আলোচনা করলাম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯৮)

৬৮/২৩. অধ্যায়ঃ
যিহার [২৮]

(আল্লাহ বলেছেন): আল্লাহ তার কথা শুনেছেন যে নারী (খাওলাহ বিন্‌ত সা‘লাবাহ) তার স্বামীর বিষয়ে তোমার সাথে বাদানুবাদ করছে আর আল্লাহ্‌র কাছে ফরিয়াদ জানাচ্ছে, আল্লাহ তোমাদের দু’জনের কথা শুনছেন …… আর যে তা করতে পারবে না, সে ষাট জন মিসকিনকে খাবার খাওয়াবে।’ পর্যন্ত। (সূরাহ মুজাদালাহ ৫৮/১-৪)

[বুখারী (রহঃ) বলেন]: ইসমাঈল আমাকে বলেছেন, মালিক (রহঃ) তাঁর কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, তিনি ইবনু শিহাবকে গোলামের যিহার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। উত্তরে তিনি বললেনঃ আযাদ ব্যক্তির মত। মালিক (রহঃ) বলেনঃ গোলাম ব্যক্তি দু’মাস সওম পালন করবে। হাসান ইবনুল হুর্‌র বলেনঃ আযাদ নারী বা বাঁদীর সঙ্গে আযাদ পুরুষ বা গোলামের যিহার একই রকম। ইকরামাহ বলেনঃ বাঁদীর সঙ্গে যিহার করলে কিছু হবে না। যিহার তো কেবল মুক্ত নারীর ব্যাপারেই প্রযোজ্য।

আরবীতে ………..“তারা যা উক্তি করেছিল”। ………………………… এর অর্থে ব্যবহৃত হয় অর্থাৎ “তারা যে সম্পর্কে উক্তি করেছিল তা থেকে …..” এবং এরূপই ভাল, কারণ আল্লাহ তা‘আলা অন্যায় ও ভিত্তিহীন কথার পথ দেখান না।





[২৮] আওস বিন সামিত (রাঃ) তাঁর স্ত্রী খাওলা বিনতে সাআলাবা (রাঃ)- কে বলেছিলেন, তুমি আমার মায়ের পিঠের মত। এরূপ বললে কাফফারা পরিশোধের পূর্বে স্ত্রী সহবাস হালাল হবে না।

এখন খাওলা বিনতে সাআলাবা (রাঃ) আউস বিন সামিতের (রাঃ) স্ত্রী আল্লাহর রসূলের (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট এসে চুপে চুপে বলেনঃ আমার স্বামী আমাকে এই কথা বলেছেন। এদিকে আমার জীবন যৌবন তার কাছে শেষ করেছি, আবার ছেলে মেয়েও রয়েছে, এই বুড়ি বয়সে কোথায় যাব কী করবো? তা ভেবে দিশেহারা হয়ে গেছি। আপনি এর সুরাহা কিছু একটা বাতলিয়ে দেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন তুমি চিরদিনের জন্য তোমার স্বামীর জন্য হারাম হয়ে গেছ। এরূপ বিধান জাহিলিয়াতে প্রচলিত ছিল। মহিলাটি একথা শুনে কাঁদতে লাগলেন এবং আল্লাহর কাছে আবেদন নিবেদন জানাতে লাগলেন। পরক্ষণেই জিবরীল (আঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট হাজির হলেন। সাথে খাওলা বিনতে সাআলাবা ঘর থেকে বের হওয়ার পূর্বেই তার শানে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে সূরা মুজাদেলার প্রথম হতে চার আয়াত নাযিল হল। অবতীর্ণ বাণী পেয়ে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেনঃ তোমার স্বামীকে বল একটি দাস মুক্ত করতে। মহিলা বললেন সেতো অপারগ। তাহলে পরপর দু‘মাস রোযা রাখতে বল। খাওলা (রাঃ) বললেন পরপর দু‘মাস রোযা রাখতে পারলে এ ঘটনা ঘটত তা। তাহলে যাও কিছু খেজুর ষাটজন গরীবদের মধ্যে বিতরণ করতে বল। খাওলা (রাঃ) বলেন তাতেও আমাদের অসুবিধা। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ৩০ কেজির মত খেজুর দিয়ে বললেন, যাও এগুলো বিতরণ করে দাও। তাই করলো, এবারে তার স্ত্রী সহবাসের জন্য হালাল হলো।

‘আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলার সমস্ত প্রশংসা ও গুণগান যিনি সকল রকমের শব্দ শুনতে পান। আমি খাওলা বিনতে সাআলাবার কথা শুনতে পাচ্ছিলাম সে আমার নিকট থেকে তার কিছু কিছু কথা গোপন করছিল। সে রসূলুল্লাহ্‌র (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট তার স্বামী আওস বিন সামিত (রাঃ) এর বিপক্ষে অভিযোগ উত্থাপন করে বলছিলঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল! সে [আওস বিন সামিত (রাঃ)] আমার যৌবন খেয়ে ফেলেছে এবং তার জন্য আমার পেট বহু সন্তান প্রসব করেছে। অতঃপর আমার বয়স যখন বেশী হয়ে গেল এবং আমার সন্তান হওয়াও বন্ধ হয়ে গেল তখন সে আমার সাথে যিহার করল। হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে অভিযোগ উত্থাপন করছি। সে ঘর থেকে বের হওয়ার পূর্বেই জিবরীল এ আয়াতগুলো নিয়ে আগমন করলেন {—————————}। হাদীসটি ইব্‌নু মাজাহ (২০৬৩) ও সংক্ষেপে নাসাঈ (৩৪৬০) বর্ণনা করেছেন, হাদীসটিকে শাইখ আলবানী সহীহ্‌ আখ্যা দিয়েছেন]।

৬৮/২৪. অধ্যায়ঃ
ইশারার মাধ্যমে ত্বলাক্ব ও অন্যান্য কাজ।

ইবনু ‘উমার (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইশারা করলেন। কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আসমা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূর্যগ্রহণের সলাত আদায় করেন। ‘আয়িশা (রাঃ) সলাত আদায় করছিলেন। এ অবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম ব্যাপার কী? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের দিকে ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রাঃ) বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্‌র (রাঃ)- এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুহরিম- এর (ইহ্‌রামকারী) শিকার সম্বন্ধে বললেন, তোমাদের কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইঙ্গিত করেছিল? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।

৫২৯৩
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عَمْرٍو حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ عَنْ خَالِدٍ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ طَافَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَلٰى بَعِيرِه„ وَكَانَ كُلَّمَا أَتٰى عَلٰى الرُّكْنِ أَشَارَ إِلَيْهِ وَكَبَّرَ وَقَالَتْ زَيْنَبُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فُتِحَ مِنْ رَدْمِ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ مِثْلُ هٰذِه„ وَعَقَدَ تِسْعِينَ.

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর উটে চড়ে তাওয়াফ করলেন। তিনি যখনই ‘রুকনের’ কাছে আসতেন, তখনই এর প্রতি ইঙ্গিত করতেন এবং “আল্লাহু আকবার” বলতেন। যাইনাব (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “ইয়াজুজ ও মাজূজ” এদের দরজা এভাবে খুলে গেছে; এই বলে তিনি (তাঁর আঙ্গুলকে) নব্বই এর মত করলেন। (অর্থাৎ শাহাদাত আঙ্গুলের মাথা বৃদ্ধাঙ্গুলির গোড়ায় রাখলেন।)(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৯৯)






আওস বিন সামিত রাঃ) তাঁর স্ত্রী খাওলা বিনতে সাআলাবা রাযি.)-কে বলেছিলেন, তুমি আমার মায়ের পিঠের মত। এরূপ বললে কাফফারা পরিশোধের পূর্বে স্ত্রী সহবাস হালাল হবে না।



এখন খাওলা বিনতে সাআলাবা রাঃ) আউস বিন সামিতের রাঃ) স্ত্রী আল্লাহর রসূলের ﷺ নিকট এসে চুপে চুপে বলেনঃ আমার স্বামী আমাকে এই কথা বলেছেন। এদিকে আমার জীবন যৌবন তার কাছে শেষ করেছি, আবার ছেলে মেয়েও রয়েছে, এই বুড়ি বয়সে কোথায় যাব কী করবো? তা ভেবে দিশেহারা হয়ে গেছি। আপনি এর সুরাহা কিছু একটা বাতলিয়ে দেন। রসূলুল্লাহ ﷺ বললেন তুমি চিরদিনের জন্য তোমার স্বামীর জন্য হারাম হয়ে গেছ। এরূপ বিধান জাহিলিয়াতে প্রচলিত ছিল। মহিলাটি একথা শুনে কাঁদতে লাগলেন এবং আল্লাহর কাছে আবেদন নিবেদন জানাতে লাগলেন। পরক্ষণেই জিবরীল ‘আ.) নাবী ﷺ এর নিকট হাজির হলেন। সাথে খাওলা বিনতে সাআলাবা ঘর থেকে বের হওয়ার পূর্বেই তার শানে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে সূরা মুজাদেলার প্রথম হতে চার আয়াত নাযিল হল। অবতীর্ণ বাণী পেয়ে রসূলুল্লাহ ﷺ তাঁকে বললেনঃ তোমার স্বামীকে বল একটি দাস মুক্ত করতে। মহিলা বললেন সেতো অপারগ। তাহলে পরপর দু’মাস রোযা রাখতে বল। খাওলা (রাঃ) বললেন পরপর দু’মাস রোযা রাখতে পারলে এ ঘটনা ঘটত না। তাহলে যাও কিছু খেজুর ষাটজন গরীবদের মধ্যে বিতরণ করতে বল। খাওলা (রাঃ) বলেন তাতেও আমাদের অসুবিধা। অতঃপর আল্লাহর রসূল ﷺ ৩০ কেজির মত খেজুর দিয়ে বললেন, যাও এগুলো বিতরণ করে দাও। তাই করলো, এবারে তার স্ত্রী সহবাসের জন্য হালাল হলো।



‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেনঃ আল্লাহ তা‘আলার সমস্ত প্রশংসা ও গুণগান যিনি সকল রকমের শব্দ শুনতে পান। আমি খাওলা বিনতে সাআলাবার কথা শুনতে পাচ্ছিলাম সে আমার নিকট থেকে তার কিছু কিছু কথা গোপন করছিল। সে রসূলুল্লাহর ﷺ নিকট তার স্বামী আওস বিন সামিত রাঃ) এর বিপক্ষে অভিযোগ উত্থাপন করে বলছিলঃ হেআল্লাহর রসূল! সে [আওস বিন সামিত রাঃ)] আমার যৌবন খেয়ে ফেলেছে এবং তার জন্য আমার পেট বহু সন্তান প্রসব করেছে। অতঃপর আমার বয়স যখন বেশী হয়ে গেল এবং আমার সন্তান হওয়াও বন্ধ হয়ে গেল তখন সে আমার সাথে যিহার করল। হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে অভিযোগ উত্থাপন করছি। সে ঘর থেকে বের হওয়ার পূর্বেই জিবরীল এ আয়াতগুলো নিয়ে আগমন করলেন {قد سمع الله…………}। [হাদীসটি ইবনু মাজাহ্ ২০৬৩) ও সংক্ষেপে নাসাঈ ৩৪৬০) বর্ণনা করেছেন, হাদীসটিকে শাইখ আলবানী সহীহ্ আখ্যা দিয়েছেন]।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৫২৯৪
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ الْمُفَضَّلِ حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ عَلْقَمَةَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ أَبُو الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم فِي الْجُمُعَةِ سَاعَةٌ لاَ يُوَافِقُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ قَائِمٌ يُصَلِّي فَسَأَلَ اللهَ خَيْرًا إِلاَّ أَعْطَاه“ وَقَالَ بِيَدِه„ وَوَضَعَ أُنْمُلَتَه“ عَلٰى بَطْنِ الْوُسْطٰى وَالْخِنْصِرِ قُلْنَا يُزَهِّدُهَا

আবূ হুরায়রা (রাঃ) ও যায়দ ইব্‌নু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জুমু‘আহ্‌র দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে, যে মুহূর্তে কোন মুসলমান দাঁড়িয়ে সলাত আদায় করে আল্লাহ্‌র কাছে যে কোন কল্যাণ চায় আল্লাহ অবশ্যই তা মঞ্জুর করে থাকেন। তিনি নিজ হাত দ্বারা ইশারা করেন এবং তাঁর আঙ্গুলগুলো মধ্যমা ও কনিষ্ঠা আঙ্গুলের পেটে রাখেন। আমরা বললামঃ তিনি স্বল্পতা বুঝাতে চাচ্ছেন।

৫২৯৫
وَقَالَ الأُوَيْسِيُّ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ شُعْبَةَ بْنِ الْحَجَّاجِ، عَنْ هِشَامِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ عَدَا يَهُودِيٌّ فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى جَارِيَةٍ، فَأَخَذَ أَوْضَاحًا كَانَتْ عَلَيْهَا وَرَضَخَ رَأْسَهَا، فَأَتَى بِهَا أَهْلُهَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهْىَ فِي آخِرِ رَمَقٍ، وَقَدْ أُصْمِتَتْ، فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَنْ قَتَلَكِ فُلاَنٌ ‏”‏‏.‏ لِغَيْرِ الَّذِي قَتَلَهَا، فَأَشَارَتْ بِرَأْسِهَا أَنْ لاَ، قَالَ فَقَالَ لِرَجُلٍ آخَرَ غَيْرِ الَّذِي قَتَلَهَا، فَأَشَارَتْ أَنْ لاَ، فَقَالَ ‏”‏ فَفُلاَنٌ ‏”‏‏.‏ لِقَاتِلِهَا فَأَشَارَتْ أَنْ نَعَمْ، فَأَمَرَ بِهِ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَرُضِخَ رَأْسُهُ بَيْنَ حَجَرَيْنِ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উওয়ায়সী (রহঃ) বলেনঃ ইবরাহীম ইবনু সা‘দ শু‘বাহ ইবনু হাজ্জাজ থেকে , তিনি হিশাম ইবনু যায়দ থেকে, তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর যুগে এক ইয়াহূদী একটি বালিকার উপর নির্যাতন করে তার অলঙ্কারাদি ছিনিয়ে নেয়। আর (পাথর দ্বারা) তার মস্তক চূর্ণ করে। সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার পূর্ব মুহূর্তে তার পরিবারের লোকেরা তাকে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে নিয়ে আসে। তখন সে চুপচাপ ছিল। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (এক নির্দোষ ব্যক্তির নাম ধরে) তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমাকে কি অমুক হত্যা করেছে? সে মাথার ইশারায় বললঃ না। তিনি অন্য এক নিরপরাধ লোকের নাম ধরে বললেন, তবে কি অমুক? সে ইশারায় জানাল, না। এবার রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হত্যাকারীর নাম ধরে বললেনঃ তবে অমুক ব্যক্তি মেরেছে কি? সে মাথা হেলিয়ে বললঃ জি, হ্যাঁ। এরপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নির্দেশক্রমে উক্ত ব্যক্তির মাথা দু’পাথরের মাঝে রেখে চূর্ণ করা হলো।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০০)

৫২৯৬
قَبِيصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِينَارٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ الْفِتْنَةُ مِنْ هَا هُنَا وَأَشَارَ إِلَى الْمَشْرِقِ.

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বলতে শুনেছি, ফিত্‌না (বিপর্যয়) এদিক থেকে আসবে। তিনি পূর্ব দিকে ইশারা করলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০১)

৫২৯৭
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ عَبْدِ الْحَمِيدِ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ الشَّيْبَانِيِّ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي أَوْفٰى قَالَ كُنَّا فِي سَفَرٍ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا غَرَبَتْ الشَّمْسُ قَالَ لِرَجُلٍ انْزِلْ فَاجْدَحْ لِي قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ لَوْ أَمْسَيْتَ ثُمَّ قَالَ انْزِلْ فَاجْدَحْ قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ لَوْ أَمْسَيْتَ إِنَّ عَلَيْكَ نَهَارًا ثُمَّ قَالَ انْزِلْ فَاجْدَحْ فَنَزَلَ فَجَدَحَ لَه“ فِي الثَّالِثَةِ فَشَرِبَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ أَوْمَأَ بِيَدِه„ إِلَى الْمَشْرِقِ فَقَالَ إِذَا رَأَيْتُمْ اللَّيْلَ قَدْ أَقْبَلَ مِنْ هَا هُنَا فَقَدْ أَفْطَرَ الصَّائِمُ.

আবব্দুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা কোন এক সফরে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সঙ্গে ছিলাম। সূর্য অস্তমিত হতে তিনি এক ব্যক্তি (বিলাল)- কে বললেনঃ নেমে যাও, আমার জন্য ছাতু প্রস্তুত কর। সে বললঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল! যদি আপনি সন্ধ্যা নাগাদ অপেক্ষা করতেন। (তাহলে সওম পূর্ণ হত)। তিনি পুনরায় বললেনঃ নেমে গিয়ে ছাতু মাখ। সে বললঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! যদি সন্ধ্যা হতে দিতেন! এখনো তো দিন রয়ে গেছে। তিনি আবার বললেনঃ যাও, গিয়ে ছাতু প্রস্তুত কর। তৃতীয়বার আদেশ দেয়ার পর সে নামল এবং তাঁর জন্য ছাতু প্রস্তুত করল। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা খেলেন। এরপর তিনি পূর্বদিকে হাত দিয়ে ইশারা করে বললেনঃ যখন তোমরা ওদিক থেকে রাত্রি নেমে আসতে দেখবে, তখন সওমকারী ইফতার করবে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০২)

৫২৯৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لاَ يَمْنَعَنَّ أَحَدًا مِنْكُمْ نِدَاءُ بِلاَلٍ ـ أَوْ قَالَ أَذَانُهُ ـ مِنْ سَحُورِهِ، فَإِنَّمَا يُنَادِي أَوْ قَالَ يُؤَذِّنُ لِيَرْجِعَ قَائِمُكُمْ ‏”‏‏.‏ وَلَيْسَ أَنْ يَقُولَ كَأَنَّهُ يَعْنِي الصُّبْحَ أَوِ الْفَجْرَ، وَأَظْهَرَ يَزِيدُ يَدَيْهِ ثُمَّ مَدَّ إِحْدَاهُمَا مِنَ الأُخْرَى‏.‏

আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বিলালের আহবান বা তার আযান যেন তোমাদের কাউকে সাহ্‌রী থেকে বিরত না রাখে। কারণ, সে আযান দেয়, যাতে তোমাদের রাত্রি জাগরণকারীরা কিছু আরাম করতে পারে। সকাল বা ফজর হয়েছে এটা বুঝানো তার উদ্দেশ্য নয়। ইয়াযীদ তার হাত দু’টি সামনে বিস্তার করে দু’দিকে ছড়িয়ে দিলেন। (সুব্‌হে সাদিক কিভাবে উদ্ভাসিত হয় তা দেখানোর জন্য)।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৩)

৫২৯৯
وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي جَعْفَرُ بْنُ رَبِيعَةَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ هُرْمُزَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَثَلُ الْبَخِيلِ وَالْمُنْفِقِ كَمَثَلِ رَجُلَيْنِ عَلَيْهِمَا جُبَّتَانِ مِنْ حَدِيدٍ مِنْ لَدُنْ ثَدْيَيْهِمَا إِلٰى تَرَاقِيهِمَا فَأَمَّا الْمُنْفِقُ فَلاَ يُنْفِقُ شَيْئًا إِلاَّ مَادَّتْ عَلٰى جِلْدِه„ حَتّٰى تُجِنَّ بَنَانَه“ وَتَعْفُوَ أَثَرَه“ وَأَمَّا الْبَخِيلُ فَلاَ يُرِيدُ يُنْفِقُ إِلاَّ لَزِمَتْ كُلُّ حَلْقَةٍ مَوْضِعَهَا فَهُوَ يُوسِعُهَا فَلاَ تَتَّسِعُ وَيُشِيرُ بِإِصْبَعِه„ إِلٰى حَلْقِهِ.

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

লায়স (রহঃ) বলেন, জা’ফর ইবনু রাবী’আ, ‘আবদুর রহমান ইব্‌নু হুরমুয থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ)- এর কাছে শুনেছেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ বখিল ও দাতা ব্যক্তির উদাহরণ হচ্ছে এমন দু’ব্যক্তির মত, যাদের পরিধানে বুক থেকে গলার হাড় পর্যন্ত লৌহ-নির্মিত পোশাক রয়েছে। দানকারী যখনই কিছু দান করে, তখনই তার শরীরের পোশাকটি বড় ও প্রশস্ত হতে থাকে, এমনকি এটা তার আঙ্গুল ও অন্যান্য অঙ্গগুলোকে ঢেকে ফেলে। অন্যদিকে, বখিল যখনই দান করার ইচ্ছা করে, তখনই তার পোশাকে তার কণ্ঠনালীর প্রতিটি অংশ সংকুচিত হয়ে যায়। সে প্রশস্ত করার চেষ্টা করলেও সেটা প্রশস্ত হয় না। এ কথা বলে তিনি নিজের আঙ্গুল দ্বারা কণ্ঠনালীর প্রতি ইশারা করলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৩)

৬৮/২৫. অধ্যায়ঃ
লি’আন [২৯] (অভিসম্পাত সহকারে শপথ)।

মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ “আর যারা নিজেদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ দেয়, কিন্তু নিজেদের ছাড়া তাদের অন্য কোন সাক্ষী না থাকে … থেকে- “যদি সে সত্যবাদী হয়” (সূরা আন-নূর ২৪ : ৬-৯) পর্যন্ত !

যদি কোন বোবা লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফরয বিষয়াবলীতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। এটা হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও মত। আল্লাহ বলেছেনঃ “সে (মারইয়াম) সন্তানের প্রতি ইঙ্গিত করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সঙ্গে আমরা কীভাবে কথা বলব? (সূরা মারইয়ামঃ ২৯) যাহ্‌হাক বলেনঃ (اِلارَمُزً) অর্থ “ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে।” (সূরা আলু-‘ইমরানঃ ৪১)

কিছু লোক বলেছেনঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্‌ (শর’ঈ দণ্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে ত্বলাক্ব দেয়া জায়িয আছে। অথচ ত্বলাক্ব এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ব্যতীত তো অপবাদ দেয়া সম্ভব নয়। তাবে তাকে বলা হবে তাহলে তো অনুরূপভাবে কথা বলা ব্যতীত ত্বলাক্ব দেয়াও না জায়িয। অন্যথায় তো ত্বলাক্ব দেয়া, অপবাদ দেয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়িয হতে পারে না। অনুরূপভাবে বধির ব্যক্তিও লি’আন করতে পারে। শা’বী ও ক্বাতাদাহ (রহঃ) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি ত্বলাক্বপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইবরাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি নিজ হাতে ত্বলাক্ব পত্র লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই ত্বলাক্ব হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইঙ্গিতে বললেও জায়িয হবে।





[২৯] লি’আন অর্থ একে অপরকে অভিশাপ করা। শরীয়াতের পরিভাষায় এর অর্থঃ যে ব্যক্তি আপন স্ত্রীকে ব্যভিচারের অপবাদ দেয়, কিন্তু এ ব্যাপারে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করতে পারছে না।

আল্লাহ তা’য়ালা সূরা নূরের ৬ নং আয়াত হতে ৯ নং আয়াতে উক্ত সমস্যার সমাধান উল্লেখ করেছেন। হাদীসে রসূলেও তার বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। সূরা নূরের কয়েকটি আয়াতে বলা হয়েছে-

(আরবি)

“আর যারা তাদের স্ত্রীদের উপর (যিনার) অপবাদ আরোপ করে এবং তাদের নিকট নিজ (ব্যতীত) অন্য কোন সাক্ষী না থাকে তবে তাদের সাক্ষী এই যে, চারবার আল্লাহর নামে কসম করে বলবে নিশ্চয় আমি সত্যবাদী এবং পঞ্চমবারে বলবে আমার উপর আল্লাহর লানত হোক, আমি যদি মিথ্যাবাদী হই। আর সেই স্ত্রীর শাস্তি রহিত হয়ে যাবে যদি সে আল্লাহর কসম খেয়ে চারবার এ কথা বলে সাক্ষী দেয় যে, তার স্বামী অবশ্যই মিথ্যাবাদী এবং পঞ্চমবারে বলবে যে, যদি তার স্বামী সত্যবাদী হয় তাহলে আমার উপর আল্লাহর গযব হোক। (সূরা আন-নূর ২৪ : ৬-৯)

বুখারী ও মুসলিমে উল্লেখ আছে- সাহল বিন সা’দ সা’ঈদী (রাঃ) বলেন, একদিন উমাইমির আজলানী এসে বললেনঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি কী বলেন, যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে অপর ব্যক্তিকে পায়, তবে কি সে তাকে হত্যা করবে? অতঃপর নিহতদের আত্মীয়রা তাকে হত্যা করবে। অথবা সে কী করবে? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন তোমার ও তোমার স্ত্রীর (ন্যায় ব্যক্তিদের) ব্যাপারেই সূরা নূরের আয়াত নাযিল হয়েছে। যাও! তোমার স্ত্রীকে নিয়ে আস। সাদ বলেন, তারা মসজিদে এসে লি’আন করল। আমি তখন লোকের সাথে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’র নিকট ছিলাম। (রাবী বলেন) যখন তারা লি’আন হতে অবসর গ্রহণ করল ওয়াইমির বললঃ এরপর যদি আমি তাকে রাখি তাহলে ধরতে হবে যে, আমি তার উপর মিথ্যা আরোপ করছি। অতঃপর তিনি তার লি’আনকৃতা স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে বিদায় করে দিলেন।

উল্লেখ্য এ হাদীসের মধ্যে সহাবী তিন তালাক এ কারণে দিয়েছিলেন যে, তিনি মনে করেছিলেন যে, মনে হয় লি’আনের পরেও তার স্ত্রীর উপর তার অধিকার রয়েছে। কিন্তু লি’আনের পরে স্বামীর স্ত্রীর উপর আর কোন অধিকার থাকে না। অতঃপর তালাক দেয়ার অধিকারও থাকে না। কারণ হাদীসের মধ্যে রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “তোমার তার উপরে কোন অধিকার নেই।”

লি’আন করার পর ত্বলাক্বের প্রয়োজন হয় না। আর কোন দিন তারা একে অপরকে বিবাহ করতে পারবে না। লি’আন করার পর তাদের দুনিয়াতে কোন শাস্তি নেই। লি’আনের পর যে প্রকৃত মিথ্যাবাদী প্রমাণিত হবে তার জন্য রয়েছে পরকালীন শাস্তি। এমনিভাবে তাকে দুনিয়াতে ব্যভিচারিণী ও তার সন্তানকে জারয বলা হতে বিরত থাকতে হবে। বিচারকমণ্ডলী তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ করে দিবেন। স্বামীর লি’আনের পর আর কিছু করতে হবে না। তবে উক্ত স্ত্রীলোক যদি ইদ্দত অতিক্রম করার পর অন্যত্র বিবাহ করতে চায় তাহলে বিবাহ করতে পারবে। আল্লাহ আমাদের উক্ত নোংরামি থেকে হিফাযাতে রাখুন !

৫৩০০
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا لَيْثٌ عَنْ يَحْيٰى بْنِ سَعِيدٍ الأَنْصَارِيِّ أَنَّه“ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِخَيْرِ دُورِ الأَنْصَارِ قَالُوا بَلٰى يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ بَنُو النَّجَّارِ ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ بَنُو عَبْدِ الأَشْهَلِ ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ بَنُو الْحَارِثِ بْنِ الْخَزْرَجِ ثُمَّ الَّذِينَ يَلُونَهُمْ بَنُو سَاعِدَةَ ثُمَّ قَالَ بِيَدِه„ فَقَبَضَ أَصَابِعَه“ ثُمَّ بَسَطَهُنَّ كَالرَّامِي بِيَدِه„ ثُمَّ قَالَ وَفِي كُلِّ دُورِ الأَنْصَارِ خَيْرٌ.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি তোমাদের বলব কি, আনসারদের সব চেয়ে উত্তম গোত্র কোন্‌টি? তারা বললেনঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাঁ বলুন। তিনি বললেনঃ তারা বনূ নাজ্জার। এরপর যারা তাদের নিকটবর্তী বনূ আবদুল আশ্‌হাল, এরপর তাদের নিকটবর্তী যারা বনূ হারিস ইবনু খাযরাজ। এরপর তাদের সন্নিকটে বনূ সা’ঈদা। এরপর তিনি হাত দ্বারা ইশারা করলেন। হাতের আঙ্গুলগুলোকে সঙ্কুচিত করে আবার তা সম্প্রসারিত করলেন। যেমন কেউ কিছু হাতের দ্বারা নিক্ষেপ করার সময় করে থাকে। এরপর বলেনঃ আনসারদের প্রতিটি গোত্রেই কল্যাণ নিহিত আছে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৪)






লি‘আনঃ



লি‘আন অর্থ একে অপরকে অভিশাপ করা। শারীয়াতের পরিভাষায় এর অর্থঃ যে ব্যক্তি আপন স্ত্রীকে ব্যভিচারের অপবাদ দেয়, কিন্তু এ ব্যাপারে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করতে পারছে না।



আল্লাহ তা‘আলা সূরা নূরের ৬নং আয়াত হতে ৯নং আয়াতে উক্ত সমস্যার সমাধান উল্লেখ করেছেন। হাদীসে রসূলেও তার বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। সূরা নূরের কয়েকটি আয়াতে বলা হয়েছে-



وَالَّذِينَ يَرْمُونَ أَزْوَاجَهُمْ وَلَمْ يَكُنْ لَهُمْ شُهَدَاءُ إِلَّا أَنْفُسُهُمْ فَشَهَادَةُ أَحَدِهِمْ أَرْبَعُ شَهَادَاتٍ بِاللَّهِ ۙ إِنَّهُ لَمِنَ الصَّادِقِينَ



وَالْخَامِسَةُ أَنَّ لَعْنَتَ اللَّهِ عَلَيْهِ إِنْ كَانَ مِنَ الْكَاذِبِينَ



وَالْخَامِسَةَ أَنَّ غَضَبَ اللَّهِ عَلَيْهَا إِنْ كَانَ مِنَ الصَّادِقِينَ



‘‘আর যারা তাদের স্ত্রীদের উপর যিনার) অপবাদ আরোপ করে এবং তাদের নিকট নিজ ব্যতীত) অন্য কোন সাক্ষী না থাকে তবে তাদের সাক্ষী এই যে, চারবার আল্লাহর নামে কসম করে বলবে নিশ্চয় আমি সত্যবাদী এবং পঞ্চমবারে বলবে আমার উপর আল্লাহর লানত হোক, আমি যদি মিথ্যাবাদী হই। আর সেই স্ত্রীর শাস্তি রহিত হয়ে যাবে যদি সে আল্লাহর কসম খেয়ে চারবার এ কথা ব’লে সাক্ষী দেয় যে, তার স্বামী অবশ্যই মিথ্যাবাদী এবং পঞ্চমবারে বলবে যে, যদি তার স্বামী সত্যবাদী হয় তাহলে আমার উপর আল্লাহর গযব হোক।সূরা আন-নূর ২৪ঃ ৬-৯)



বুখারী ও মুসলিমে উল্লেখ আছে- সাহল বিন সা‘দ সা‘ঈদী রাযি.) বলেন, একদিন উমাইমির আজলানী এসে বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কী বলেন, যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে অপর ব্যক্তিকে পায়, তবে কি সে তাকে হত্যা করবে? অতঃপর নিহতদের আত্মীয়রা তাকে হত্যা করবে। অথবা সে কী করবে? নাবী ﷺ বললেন তোমার ও তোমার স্ত্রীর ন্যায় ব্যক্তিদের) ব্যাপারেই সূরা নূরের আয়াত নাযিল হয়েছে। যাও! তোমার স্ত্রীকে নিয়ে আস। সাদ বলেন, তারা মাসজিদে এসে লি‘আন করল। আমি তখন লোকের সাথে রসূলুল্লাহ ﷺ’র নিকট ছিলাম। রাবী বলেন) যখন তারা লি‘আন হতে অবসর গ্রহণ করল ওয়াইমির বললঃ এরপর যদি আমি তাকে রাখি তাহলে ধরতে হবে যে, আমি তার উপর মিথ্যা আরোপ করেছি। অতঃপর তিনি তার লি‘আনকৃতা স্ত্রীকে তিন তালাক দিয়ে বিদায় করে দিলেন।



উল্লেখ্য এ হাদীসের মধ্যে সহাবী তিন তালাক এ কারণে দিয়েছিলেন যে, তিনি মনে করেছিলেন যে, মনে হয় লি‘আনের পরেও তার স্ত্রীর উপর তার অধিকার রয়েছে। কিন্তু লি‘আনের পরে স্বামীর স্ত্রীর উপর আর কোন অধিকার থাকে না। অতঃপর তালাক দেয়ার অধিকারও থাকে না। কারণ হাদীসের মধ্যে রসূল বলেছেনঃ ‘‘তোমার তার উপরে কোন অধিকার নেই।’’



লি‘আন করার পর তালাকের প্রয়োজন হয় না। আর কোন দিন তারা একে অপরকে বিবাহ করতে পারবে না। লি‘আন করার পর তাদের দুনিয়াতে কোন শাস্তি নেই। লি‘আনের পর যে প্রকৃত মিথ্যাবাদী প্রমাণিত হবে তার জন্য রয়েছে পরকালীন শাস্তি। এমনিভাবে তাকে দুনিয়াতে ব্যভিচারিণী ও তার সন্তানকে জারয বলা হতে বিরত থাকতে হবে। বিচারকমন্ডলী তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ করে দিবেন। স্বামীর লি‘আনের পর আর কিছু করতে হবে না। তবে উক্ত স্ত্রীলোক যদি ইদ্দত অতিক্রম করার পর অন্যত্র বিবাহ করতে চায় তাহলে বিবাহ করতে পারবে। আল্লাহ আমাদের উক্ত নোংরামি থেকে হিফাযাতে রাখুন!

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৫৩০১
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ أَبُو حَازِمٍ سَمِعْتُه“ مِنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ صَاحِبِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بُعِثْتُ أَنَا وَالسَّاعَةَ كَهٰذِه„ مِنْ هٰذِه„ أَوْ كَهَاتَيْنِ وَقَرَنَ بَيْنَ السَّبَّابَةِ وَالْوُسْطَى.

সাহ্‌ল ইব্‌নু সা’দ-সা’ঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সহাবী সাহ্‌ল ইব্‌নু সা’দ-সা’ঈদী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার আগমন এবং কিয়ামতের মাঝে দুরত্ব এ আঙ্গুল থেকে এ আঙ্গুলের দুরত্বের মত। কিংবা তিনি বলেনঃ এ দু’টির দুরত্বের মত। এই বলে তিনি শাহাদাত ও মধ্যমা আঙ্গুল দুটি মিলিত করলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৫)

৫৩০২
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا جَبَلَةُ بْنُ سُحَيْمٍ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ يَقُوْلُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الشَّهْرُ هٰكَذَا وَهٰكَذَا وَهٰكَذَا يَعْنِي ثَلاَثِينَ ثُمَّ قَالَ وَهٰكَذَا وَهٰكَذَا وَهٰكَذَا يَعْنِي تِسْعًا وَعِشْرِينَ يَقُوْلُ مَرَّةً ثَلاَثِينَ وَمَرَّةً تِسْعًا وَعِشْرِينَ.

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মাস এত, এত এবং এত দিনে হয়, অর্থাৎ ত্রিশ দিনে। তিনি আবার বললেনঃ মাস এত, এত ও এত দিনেও হয়। অর্থাৎ ঊনত্রিশ দিনে। তিনি বলতেনঃ কখনও ত্রিশ দিনে আবার কখনও ঊনত্রিশ দিনে মাস হয়।[১৯০৮; মুসলিম ১৩/২, হাঃ ১০৮০, আহমাদ ৪৬১১] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৬)

৫৩০৩
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنّٰى حَدَّثَنَا يَحْيٰى بْنُ سَعِيدٍ عَنْ إِسْمَاعِيلَ عَنْ قَيْسٍ عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ قَالَ وَأَشَارَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِيَدِه„ نَحْوَ الْيَمَنِ الإِيمَانُ هَا هُنَا مَرَّتَيْنِ أَلاَ وَإِنَّ الْقَسْوَةَ وَغِلَظَ الْقُلُوبِ فِي الْفَدَّادِينَ حَيْثُ يَطْلُعُ قَرْنَا الشَّيْطَانِ رَبِيعَةَ وَمُضَرَ.

আবূ মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ হাত দিয়ে ইয়ামানের দিকে ইঙ্গিত করে দু’বার বললেনঃ ঈমান ওখানে। জেনে রেখ! অন্তরের কঠোরতা ও কাঠিন্য উট পালনকারীদের মধ্যে (কৃষকদের মাঝে)। যে দিকে শয়তানের দুটি শিং উদিত হবে তাহলো (কঠোর হৃদয়) রাবী’আ গোত্র ও মুযারা গোত্র।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯১২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৭)

৫৩০৪
عَمْرُو بْنُ زُرَارَةَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ أَبِي حَازِمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ سَهْلٍ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَنَا وَكَافِلُ الْيَتِيمِ فِي الْجَنَّةِ هٰكَذَا وَأَشَارَ بِالسَّبَّابَةِ وَالْوُسْطٰى وَفَرَّجَ بَيْنَهُمَا شَيْئًا.

সাহ্‌ল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি ও ইয়াতীমের প্রতিপালনকারী জান্নাতে এমনিভাবে নিকটে থাকবে। এই বলে তিনি শাহাদাত ও মধ্যমা আঙ্গুল দু’টি দ্বারা ইঙ্গিত করলেন এবং এ দুটির মাঝে কিঞ্চিত ফাঁক রাখলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৮)

৬৮/২৬. অধ্যায়ঃ
ইঙ্গিতে সন্তান অস্বীকার করা।

৫৩০৫
يَحْيٰى بْنُ قَزَعَةَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَجُلاً أَتٰى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ وُلِدَ لِي غُلاَمٌ أَسْوَدُ فَقَالَ هَلْ لَكَ مِنْ إِبِلٍ قَالَ نَعَمْ قَالَ مَا أَلْوَانُهَا قَالَ حُمْرٌ قَالَ هَلْ فِيهَا مِنْ أَوْرَقَ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَأَنّٰى ذ‘لِكَ قَالَ لَعَلَّه“ نَزَعَه“ عِرْقٌ قَالَ فَلَعَلَّ ابْنَكَ هٰذَا نَزَعَهُ.

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে বললঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার একটি কালো সন্তান জন্মেছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার কিছু উট আছে কি? সে জবাব দিল হাঁ। তিনি বললেনঃ সেগুলোর রং কেমন? সে বললঃ লাল। তিনি বললেনঃ সেগুলোর মধ্যে কোনটি ছাই বর্ণের আছে কি? সে বললঃ হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তাহলে সেটিতে এমন রং কোত্থেকে এলো। লোকটি বললঃ সম্ভবত পূর্ববর্তী বংশের কারণে এমন হয়েছে। তিনি বললেনঃ তাহলে হতে পারে, তোমার এ সন্তানও বংশগত কারণে এমন হয়েছে। [৬৮৪৭, ৭৩১৪; মুসলিম ১৯/হাঃ ১৫০০, আহমাদ ৭২৬৮] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮০৯)

৬৮/২৭. অধ্যায়ঃ
লি’আনকারীকে শপথ করানো।

৫৩০৬
مُوسٰى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ أَنَّ رَجُلاً مِنَ الأَنْصَارِ قَذَفَ امْرَأَتَه“ فَأَحْلَفَهُمَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ فَرَّقَ بَيْنَهُمَا.

‘আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, আনসারদের এক তার স্ত্রীকে অপবাদ দিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’জনকেই শপথ করালেন এবং তাদেরকে পৃথক করেন দিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১০)

৬৮/২৮. অধ্যায়ঃ
পুরুষকে প্রথমে লি’আন করানো হবে।

৫৩০৭
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ عَنْ هِشَامِ بْنِ حَسَّانَ حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ هِلاَلَ بْنَ أُمَيَّةَ قَذَفَ امْرَأَتَه“ فَجَاءَ فَشَهِدَ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلميَقُوْلُ إِنَّ اللهَ يَعْلَمُ أَنَّ أَحَدَكُمَا كَاذِبٌ فَهَلْ مِنْكُمَا تَائِبٌ ثُمَّ قَامَتْ فَشَهِدَتْ.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, হিলাল ইবনু উমাইয়্যা তার স্ত্রীকে (যিনার) অপবাদ দেয়। তিনি এসে সাক্ষ্য দিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতে লাগলেনঃ আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই জানেন তোমাদের দু’জনের একজন তো মিথ্যাচারী। অতএব কে তোমাদের দু’জনের মধ্যে তাওবাহ করতে প্রস্তুত আছ? এরপর স্ত্রী লোকটি দাঁড়াল এবং (নিজের দোষমুক্তির) সাক্ষ্য দিল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১১)

৬৮/২৯. অধ্যায়ঃ
লি’আন এবং লি’আনের পর ত্বলাক্ব দেয়া।

৫৩০৮
إِسْمَاعِيلُ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ السَّاعِدِيَّ أَخْبَرَه“ أَنَّ عُوَيْمِرًا الْعَجْلاَنِيَّ جَاءَ إِلٰى عَاصِمِ بْنِ عَدِيٍّالأَنْصَارِيِّ فَقَالَ لَه“ يَا عَاصِمُ أَرَأَيْتَ رَجُلاً وَجَدَ مَعَ امْرَأَتِه„ رَجُلاً أَيَقْتُلُه“ فَتَقْتُلُونَه“ أَمْ كَيْفَ يَفْعَلُ سَلْ لِي يَا عَاصِمُ عَنْ ذ‘لِكَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَ عَاصِمٌ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ ذ‘لِكَ فَكَرِهَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمَسَائِلَ وَعَابَهَا حَتّٰى كَبُرَ عَلٰى عَاصِمٍ مَا سَمِعَ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا رَجَعَ عَاصِمٌ إِلٰى أَهْلِه„ جَاءَه“ عُوَيْمِرٌ فَقَالَ يَا عَاصِمُ مَاذَا قَالَ لَكَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ عَاصِمٌ لِعُوَيْمِرٍ لَمْ تَأْتِنِي بِخَيْرٍ قَدْ كَرِهَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمَسْأَلَةَ الَّتِي سَأَلْتُه“ عَنْهَا فَقَالَ عُوَيْمِرٌ وَاللهِ لاَ أَنْتَهِي حَتّٰى أَسْأَلَه“ عَنْهَا فَأَقْبَلَ عُوَيْمِرٌ حَتّٰى جَاءَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَسَطَ النَّاسِ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَرَأَيْتَ رَجُلاً وَجَدَ مَعَ امْرَأَتِه„ رَجُلاً أَيَقْتُلُه“ فَتَقْتُلُونَه“ أَمْ كَيْفَ يَفْعَلُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ أُنْزِلَ فِيكَ وَفِي صَاحِبَتِكَ فَاذْهَبْ فَأْتِ بِهَا قَالَ سَهْلٌ فَتَلاَعَنَا وَأَنَا مَعَ النَّاسِ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا فَرَغَا مِنْ تَلاَعُنِهِمَا قَالَ عُوَيْمِرٌ كَذَبْتُ عَلَيْهَا يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنْ أَمْسَكْتُهَا فَطَلَّقَهَا ثَلاَثًا قَبْلَ أَنْ يَأْمُرَه“ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ابْنُ شِهَابٍ فَكَانَتْ سُنَّةَ الْمُتَلاَعِنَيْنِ.

সাহ্‌ল ইবনু সা’দ সা’ঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, উওয়াইমির আজলানী (রাঃ) ‘আসিম ইবনু আদী আনসারী (রাঃ)- এর কাছে এসে বললেনঃ হে আসিম! কী বল, যদি কেউ তার স্ত্রীর সঙ্গে অপর লোককে (ব্যভিচার-রত অবস্থায়) পায়, তবে সে কি তাকে হত্যা করবে? আর এতে তোমরাও কি তাকে হত্যা করবে? (যদি সে হত্যা না করে) তাহলে কী করবে? হে আসিম! আমার এ ব্যাপারটি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে জিজ্ঞেস কর। এরপর আসিম (রাঃ) এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে জিজ্ঞেস করলেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ ধরনের জিজ্ঞাসাবাদ অপছন্দ করলেন এবং অশোভনীয় মনে করলেন। এমন কি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে আসিম (রাঃ) যা শুনলেন, তাতে তার খুব খারাপ লাগল। আসিম (রাঃ) বাড়ি ফিরলে উওয়াইমির এসে জিজ্ঞেস করলঃ হে আসিম?! রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাকে কী উত্তর দিলেন? আসিম (রাঃ) উওয়াইমিরকে বললেনঃ তুমি আমার কাছে কোন ভাল কাজ নিয়ে আসনি। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ ধরনের জিজ্ঞাসাকে অপছন্দ করেছেন, সে সম্বন্ধে আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছি। উওয়াইমির (রাঃ) বললেন, আল্লাহ্‌র শপথ! তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস না করে ক্ষান্ত হব না। এরপর উওয়াইমির (রাঃ) রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট এসে তাঁকে লোকদের মাঝে পেলেন এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহ্‌র রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! কী বলেন, কেউ যদি তার স্ত্রীর সঙ্গে অন্য লোককে (ব্যভিচার-রত) দেখতে পায়, সে কি তাকে হত্যা করবে? আর আপনারাও কি তাকে হত্যার বদলে হত্যা করবেন? না হলে সে কী করবে? রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার ও তোমার স্ত্রীর সম্পর্কে আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে, যাও তাকে নিয়ে এসো। সাহ্‌ল (রাঃ) বলেন, তারা উভয়ে লি’আন করল। যে সময় আমি লোকদের সঙ্গে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকটে ছিলাম। উভয়ে লি’আন করা শেষ করলে উওয়াইমির বললঃ হে আল্লাহ্‌র রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! যদি আমি তাকে (স্ত্রী হিসাবে) রাখি, তবে আমি তার উপর মিথ্যারোপ করেছি বলে প্রমাণিত হবে। এরপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে নির্দেশ দেয়ার আগেই তিনি স্ত্রীকে তিন ত্বলাক্ব দিলেন। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেনঃ উভয়কে বিচ্ছিন্ন করে দেয়াই পরবর্তীতে লি’আনকারীদ্বয়ের সম্পর্কিত বিধান প্রচলিত হয়ে গেল হিসাবে পরিগণিত হলো। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১২)

৬৮/৩০. অধ্যায়ঃ
মসজিদে লি’আন করা।

৫৩০৯
يَحْيٰى أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ شِهَابٍ عَنِ الْمُلاَعَنَةِ وَعَنْ السُّنَّةِ فِيهَا عَنْ حَدِيثِ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ أَخِي بَنِي سَاعِدَةَ أَنَّ رَجُلاً مِنَ الأَنْصَارِ جَاءَ إِلٰى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَرَأَيْتَ رَجُلاً وَجَدَ مَعَ امْرَأَتِه„ رَجُلاً أَيَقْتُلُه“ أَمْ كَيْفَ يَفْعَلُ فَأَنْزَلَ اللهُ فِي شَأْنِه„ مَا ذَكَرَ فِي الْقُرْآنِ مِنْ أَمْرِ الْمُتَلاَعِنَيْنِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَدْ قَضٰى اللهُ فِيكَ وَفِي امْرَأَتِكَ قَالَ فَتَلاَعَنَا فِي الْمَسْجِدِ وَأَنَا شَاهِدٌ فَلَمَّا فَرَغَا قَالَ كَذَبْتُ عَلَيْهَا يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنْ أَمْسَكْتُهَا فَطَلَّقَهَا ثَلاَثًا قَبْلَ أَنْ يَأْمُرَه“ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ فَرَغَا مِنَ التَّلاَعُنِ فَفَارَقَهَا عِنْدَ النَّبِيِّصلى الله عليه وسلمفَقَالَ ذَاكَ تَفْرِيقٌ بَيْنَ كُلِّ مُتَلاَعِنَيْنِ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ فَكَانَتْ السُّنَّةُ بَعْدَهُمَا أَنْ يُفَرَّقَ بَيْنَ الْمُتَلاَعِنَيْنِ وَكَانَتْ حَامِلاً وَكَانَ ابْنُهَا يُدْعٰى لِأُمِه„ قَالَ ثُمَّ جَرَتْ السُّنَّةُ فِي مِيرَاثِهَا أَنَّهَا تَرِثُه“ وَيَرِثُ مِنْهَا مَا فَرَضَ اللهُ لَهُ.

قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ فِي هٰذَا الْحَدِيثِ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنْ جَاءَتْ بِه„ أَحْمَرَ قَصِيرًا كَأَنَّه“ وَحَرَةٌ فَلاَ أُرَاهَا إِلاَّ قَدْ صَدَقَتْ وَكَذَبَ عَلَيْهَا وَإِنْ جَاءَتْ بِه„ أَسْوَدَ أَعْيَنَ ذَا أَلْيَتَيْنِ فَلاَ أُرَاه“ إِلاَّ قَدْ صَدَقَ عَلَيْهَا فَجَاءَتْ بِه„ عَلَى الْمَكْرُوهِ مِنْ ذَلِكَ.

ইবনু জুরাইজ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমাকে ইবনু শিহাব (রহঃ) লি’আন ও তার হুকুম সম্বন্ধে সা’দ গোত্রের সাহ্‌ল ইব্‌নু সা’দ (রাঃ) থেকে হাদীস বর্ণনা করেন যে, আনসারদের এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে বললঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি কী বলেন, যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীর সঙ্গে অন্য লোককে দেখতে পায়, তবে কি সে তাকে হত্যা করবে? অথবা কী করবে? এরপর আল্লাহ তা’আলা তার ব্যাপারে কুরআনে উল্লেখিত লি’আনের বিধান অবতীর্ণ করেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ তোমার ও তোমার স্ত্রীর ব্যাপারে ফয়সালা দিয়েছেন। রাবী বলেনঃ আমি উপস্থিত থাকতেই তারা উভয়ে মসজিদে লি’আন করল। উভয়ের লি’আন করা শেষ হলে সে ব্যক্তি বললঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল! যদি আমি তাকে স্ত্রী হিসাবে রেখে দেই; তবে তার উপর মিথ্যারোপ করেছি বলে গণ্য হবে। এরপর রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে নির্দেশ দেয়ার আগেই সে তার স্ত্রীকে তিন ত্বলাক্ব দিল। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সামনেই সে তার থেকে পৃথক হয়ে গেল। তিনি বললেনঃ এই সম্পর্কচ্ছেদই প্রত্যেক লি’আনকারীদ্বয়ের জন্য বিধান। ইবনু জুরাইজ বলেন, ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেছেনঃ তাদের পর লি’আনকারীদ্বয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানোর হুকুম চালু হয়। মহিলাটি ছিল গর্ভবতী। তার বাচ্চাকে মায়ের পরিচয়ে ডাকা হত। বর্ণনাকারী বলেনঃ এরপর ওয়ারিশের ব্যাপারেও হুকুম জারি হল যে, মহিলা সন্তানের ওয়ারিশ হবে এবং সন্তানও তার ওয়ারিশ হবে, যতটুকু আল্লাহ তা’আলা নির্ধারণ করেছেন।

ইবনু জুরাইজ, ইবনু শিহাবের সূত্রে সাহ্‌ল ইবনু সা’দ সা’ঈদী থেকে এ হাদীস সম্পর্কে বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি ঐ স্ত্রীলোকটি ওহ্‌রার (এক রকম ছোট প্রাণীর) মতো লাল ও বেঁটে সন্তান জন্ম দেয়, তবে বুঝব মহিলাই সত্য বলেছে, আর লোকটি তার উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। আর যদি সে কালো চক্ষু বিশিষ্ট বড় নিতম্বযুক্ত সন্তান জন্ম দেয়, তবে বুঝব, লোকটি সত্যই বলেছে। উক্ত মহিলা অপছন্দনীয় আকৃতির বাচ্চা প্রসব করে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১৩)

৬৮/৩১. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর উক্তি আমি যদি সুস্পষ্ট প্রমাণ ব্যতীত রজম করতাম।

৫৩১০
سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ عَنْ يَحْيٰى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّه“ ذُكِرَ التَّلاَعُنُ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ عَاصِمُ بْنُ عَدِيٍّ فِي ذ‘لِكَ قَوْلاً ثُمَّ انْصَرَفَ فَأَتَاه“ رَجُلٌ مِنْ قَوْمِه„ يَشْكُو إِلَيْهِ أَنَّه“ قَدْ وَجَدَ مَعَ امْرَأَتِه„ رَجُلاً فَقَالَ عَاصِمٌ مَا ابْتُلِيتُ بِهٰذَا الأَمْرِ إِلاَّ لِقَوْلِي فَذَهَبَ بِه„ إِلَى النَّبِيِّصلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَه“ بِالَّذِي وَجَدَ عَلَيْهِ امْرَأَتَه“ وَكَانَ ذ‘لِكَ الرَّجُلُ مُصْفَرًّا قَلِيلَ اللَّحْمِ سَبْطَ الشَّعَرِ وَكَانَ الَّذِي ادَّعٰى عَلَيْهِ أَنَّه“ وَجَدَه“ عِنْدَ أَهْلِه„ خَدْلاً آدَمَ كَثِيرَ اللَّحْمِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلماللَّهُمَّ بَيِّنْ فَجَاءَتْ شَبِيهًا بِالرَّجُلِ الَّذِي ذَكَرَ زَوْجُهَا أَنَّه“ وَجَدَه“ فَلاَعَنَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُمَا قَالَ رَجُلٌ لِابْنِ عَبَّاسٍ فِي الْمَجْلِسِ هِيَ الَّتِي قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَوْ رَجَمْتُ أَحَدًا بِغَيْرِ بَيِّنَةٍ رَجَمْتُ هٰذِه„ فَقَالَ لاَ تِلْكَ امْرَأَةٌ كَانَتْ تُظْهِرُ فِي الإِسْلاَمِ السُّوءَ قَالَ أَبُو صَالِحٍ وَعَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ آدَمَ خَدِلاً.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে লি’আন করার ব্যাপারটি আলোচিত হল। ‘আসিম ইবনু আদী (রাঃ) এ ব্যাপারে একটি কথা জিজ্ঞেস করে চলে গেলেন। এরপর তাঁর গোত্রের এক ব্যক্তি তার কাছে এসে অভিযোগ করল যে, সে তার স্ত্রীর সাথে অন্য এক লোককে পেয়েছে। ‘আসিম (রাঃ) বললেনঃ অযথা জিজ্ঞাসার কারণেই আমি এ ধরনের বিপদে পড়তাম। এরপর তিনি লোকটিকে নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে গেলেন এবং অভিযোগকারীর ব্যাপারটি তাঁকে জানালেন। লোকটি ছিল হলদে শীর্ণকায় ও সোজা চুল বিশিষ্ট। আর ঐ লোকটি যাকে তার স্ত্রীর কাছে পেয়েছে বলে সে অভিযুক্ত করে সে ছিল প্রায় কালো, স্থুল দেহের অধিকারী। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ হে আল্লাহ ! সমস্যাটি সমাধান করে দিন। এরপর মহিলা ঐ লোকটির আকৃতি বিশিষ্ট সন্তান জন্ম দিল, যাকে তার স্বামী তার কাছে পেয়েছে বলে উল্লেখ করেছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের (স্বামী-স্ত্রী) উভয়কে লি’আন করালেন। এক ব্যক্তি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)- কে সে মসলিসেই জিজ্ঞেস করলঃ এ মহিলা সম্বন্ধেই কি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেন? “আমি যদি কাউকে বিনা প্রমাণে রজম করতাম, তবে একেই রজম করতাম।” ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেনঃ না, সে ছিল এক মহিলা, যে মুসলিম সমাজে প্রকাশ্যে ব্যভিচারে লিপ্ত থাকত। আবু সলিহ ও ‘আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফের বর্ণনায় خَدِلاَ اَدَمَ শব্দ এসেছে। [৫৩১৬, ৬৮৫৫, ৬৮৫৬, ৭২৩৮; মুসলিম ১৯/হাঃ ১৪৯৭, আহমাদ ৩৩৬০] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১৪)

৬৮/৩২. অধ্যায়ঃ
লি’আনকারীণীর মোহ্‌র।

৫৩১১
عَمْرُو بْنُ زُرَارَةَ أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ قُلْتُ لِابْنِ عُمَرَ رَجُلٌ قَذَفَ امْرَأَتَه“ فَقَالَ فَرَّقَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ أَخَوَيْ بَنِي الْعَجْلاَنِ وَقَالَ اللهُ يَعْلَمُ أَنَّ أَحَدَكُمَا كَاذِبٌ فَهَلْ مِنْكُمَا تَائِبٌ فَأَبَيَا وَقَالَ اللهُ يَعْلَمُ أَنَّ أَحَدَكُمَا كَاذِبٌ فَهَلْ مِنْكُمَا تَائِبٌ فَأَبَيَا فَقَالَ اللهُ يَعْلَمُ أَنَّ أَحَدَكُمَا كَاذِبٌ فَهَلْ مِنْكُمَا تَائِبٌ فَأَبَيَا فَفَرَّقَ بَيْنَهُمَا قَالَ أَيُّوبُ فَقَالَ لِي عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ إِنَّ فِي الْحَدِيثِ شَيْئًا لاَ أَرَاكَ تُحَدِّثُه“ قَالَ قَالَ الرَّجُلُ مَالِي قَالَ قِيلَ لاَ مَالَ لَكَ إِنْ كُنْتَ صَادِقًا فَقَدْ دَخَلْتَ بِهَا وَإِنْ كُنْتَ كَاذِبًا فَهُوَ أَبْعَدُ مِنْكَ.

সা’ঈদ ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ইবনু ‘উমারকে জিজ্ঞেস করলাম, এক লোক তার স্ত্রীকে অপবাদ দিল- (তার বিধান কী?) তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বনূ ‘আজলানের স্বামী-স্ত্রীর দুজনকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলেন এবং তিনি বলেছিলেনঃ আল্লাহ তা’আলা জানেন তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাচারী। কাজেই তোমাদের কেউ তাওবাহ করতে রাযী আছ কি? তারা দু’জনেই অস্বীকার করল। তিনি পুনরায় বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা অবহিত আছেন তোমাদের একজন মিথ্যাচারী, সুতরাং কেউ তাওবাহ করতে প্রস্তুত আছ কি? তারা আবারও অস্বীকার করল। তিনি পুনরায় বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা অবহিত আছেন তোমাদের একজন মিথ্যাচারী সুতরাং কেউ তাওবাহ করতে প্রস্তুত আছ কি? তারা আবারও অস্বীকার করল। এরপর তিনি তাদেরকে পৃথক করে দেন। আইয়ুব বলেনঃ আমাকে ‘আম্‌র ইব্‌নু দীনার (রহঃ) বললেন, এ হাদীসে আরও কিছু কথা আছে, তোমাকে তা বর্ণনা করতে দেখছি না কেন? তিনি বলেন, লোকটি বললঃ আমার (দেয়া) মালের কী হবে? তাকে বলা হল তোমার মাল ফিরে পাবে না। যদি তুমি সত্যবাদী হও, (তবুও পাবে না)। (কেননা) তুমি তার সঙ্গে সহবাস করেছ। আর যদি তুমি মিথ্যাচারী হও, তবে তা পাওয়া তো বহু দূরের ব্যাপার।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১৫)

৬৮/৩৩. অধ্যায়ঃ
লি’আনকারীদ্বয়কে ইমামের এ কথা বলা যে, নিশ্চয় তোমাদের কোন একজন মিথ্যাচারী, তাই তোমাদের কে তাওবা করতে প্রস্তুত আছ ?

৫৩১২
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ عَمْرٌو سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عُمَرَ عَنْ حَدِيثِ الْمُتَلاَعِنَيْنِ فَقَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِلْمُتَلاَعِنَيْنِ حِسَابُكُمَا عَلَى اللهِ أَحَدُكُمَا كَاذِبٌ لاَ سَبِيلَ لَكَ عَلَيْهَا قَالَ مَالِي قَالَ لاَ مَالَ لَكَ إِنْ كُنْتَ صَدَقْتَ عَلَيْهَا فَهُوَ بِمَا اسْتَحْلَلْتَ مِنْ فَرْجِهَا وَإِنْ كُنْتَ كَذَبْتَ عَلَيْهَا فَذَاكَ أَبْعَدُ لَكَ قَالَ سُفْيَانُ حَفِظْتُه“ مِنْ عَمْرٍو وَقَالَ أَيُّوبُ سَمِعْتُ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ قَالَ قُلْتُ لِابْنِ عُمَرَ رَجُلٌ لاَعَنَ امْرَأَتَه“ فَقَالَ بِإِصْبَعَيْهِ وَفَرَّقَ سُفْيَانُ بَيْنَ إِصْبَعَيْهِ السَّبَّابَةِ وَالْوُسْطٰى فَرَّقَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ أَخَوَيْ بَنِي الْعَجْلاَنِ وَقَالَ اللهُ يَعْلَمُ إِنَّ أَحَدَكُمَا كَاذِبٌ فَهَلْ مِنْكُمَا تَائِبٌ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ قَالَ سُفْيَانُ حَفِظْتُه“ مِنْ عَمْرٍو وَأَيُّوبَ كَمَا أَخْبَرْتُكَ.

সা’ঈদ ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি লি’আনকারীদ্বয় সম্পর্কে ইবনু ‘উমারকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি বললেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লি’আনকারীদ্বয়কে লক্ষ্য করে বলেছিলেনঃ তোমাদের হিসাব নেয়ার দায়িত্ব আল্লাহ্‌রই। তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাচারী। স্ত্রীর উপর তোমার কোন অধিকার নেই। লোকটি বললঃ তবে আমার মালের কী হবে? তিনি বললেনঃ তুমি কোন মাল পাবে না। যদি তুমি সত্যবাদী হও তাহলে এর বদলে তুমি তার লজ্জাস্থানকে হালাল করে নিয়েছিলে। আর যদি তার উপর মিথ্যারোপ করে থাক, তবে তা তো বহুদূরের ব্যাপার। সুফ্‌ইয়ান বলেনঃ আমি এ হাদীস ‘আম্‌র (রাঃ)- এর নিকট হতে মুখস্থ করেছি। আইয়ুব বলেন, সা’ঈদ ইবনু যুবায়র-এর কাছে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি ইবনু ‘উমার (রাঃ)- কে জিজ্ঞেস করলামঃ এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর সঙ্গে লি’আন করল (এখন তাদের বিধান কী?) তিনি তাঁর দু আঙ্গুল ইশারা করে বললেন, সুফ্‌ইয়ান তার তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল ফাঁক করে বললেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বনূ ‘আজলানের এক দম্পত্তির বৈবাহিক সম্পর্ক এভাবে ছিন্ন করে দেন এবং বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা জানেন যে, তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাচারী। সুতরাং কেউ তাওবাহ করতে প্রস্তুত আছ কি? এভাবে তিনি তিনবার বললেন। সুফ্‌ইয়ান বলেনঃ আমি তোমাকে যেভাবে হাদীসটি শুনাচ্ছি এভাবেই আমি ‘আমর ও আইয়ুব (রাঃ) থেকে মুখস্থ করেছি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১৬)

৬৮/৩৪. অধ্যায়ঃ
লি’আনকারীদ্বয়কে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া।

৫৩১৩
إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ عِيَاضٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ أَخْبَرَه“ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَرَّقَ بَيْنَ رَجُلٍ وَامْرَأَةٍ قَذَفَهَا وَأَحْلَفَهُمَا.

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, জনৈক পুরুষ তার স্ত্রীকে অপবাদ দিলে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উভয়কে শপথ করান, এরপর বিচ্ছিন্ন করে দেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১৭)

৫৩১৪
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيٰى عَنْ عُبَيْدِ اللهِ أَخْبَرَنِي نَافِعٌ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ لاَعَنَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ رَجُلٍ وَامْرَأَةٍ مِنَ الأَنْصَارِ وَفَرَّقَ بَيْنَهُمَا.

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক আনসার ও তার স্ত্রীকে লি’আন করান এবং তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১৮)

৬৮/৩৫. অধ্যায়ঃ
লি’আনকারিণীকে সন্তান অর্পণ করা হবে।

৫৩১৫
يَحْيٰى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا مَالِكٌ قَالَ حَدَّثَنِي نَافِعٌ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لاَعَنَ بَيْنَ رَجُلٍ وَامْرَأَتِه„ فَانْتَفٰى مِنْ وَلَدِهَا فَفَرَّقَ بَيْنَهُمَا وَأَلْحَقَ الْوَلَدَ بِالْمَرْأَةِ.

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক লোক ও তার স্ত্রীকে লি’আন করালেন এবং সন্তানের পৈত্রিক সম্পর্ক ছিন্ন করে উভয়কে বিচ্ছিন্ন করে দিলেন। আর সন্তান মহিলাকে দিয়ে দিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮১৯)

৬৮/৩৬. অধ্যায়ঃ
ইমামের উক্তিঃ হে আল্লাহ! সত্য প্রকাশ করে দিন।

৫৩১৬
إِسْمَاعِيلُ قَالَ حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ عَنْ يَحْيٰى بْنِ سَعِيدٍ قَالَ أَخْبَرَنِي عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ الْقَاسِمِ عَنِ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّه“ قَالَ ذُكِرَ الْمُتَلاَعِنَانِ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ عَاصِمُ بْنُ عَدِيٍّ فِي ذ‘لِكَ قَوْلاً ثُمَّ انْصَرَفَ فَأَتَاه“ رَجُلٌ مِنْ قَوْمِه„ فَذَكَرَ لَه“ أَنَّه“ وَجَدَ مَعَ امْرَأَتِه„ رَجُلاً فَقَالَ عَاصِمٌ مَا ابْتُلِيتُ بِهٰذَا الأَمْرِ إِلاَّ لِقَوْلِي فَذَهَبَ بِه„ إِلٰى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَه“ بِالَّذِي وَجَدَ عَلَيْهِ امْرَأَتَه“ وَكَانَ ذ‘لِكَ الرَّجُلُ مُصْفَرًّا قَلِيلَ اللَّحْمِ سَبْطَ الشَّعَرِ وَكَانَ الَّذِي وَجَدَ عِنْدَ أَهْلِه„ آدَمَ خَدْلاً كَثِيرَ اللَّحْمِ جَعْدًا قَطَطًا فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلماللَّهُمَّ بَيِّنْ فَوَضَعَتْ شَبِيهًا بِالرَّجُلِ الَّذِي ذَكَرَ زَوْجُهَا أَنَّه“ وَجَدَ عِنْدَهَا فَلاَعَنَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُمَا فَقَالَ رَجُلٌ لِابْنِ عَبَّاسٍ فِي الْمَجْلِسِ هِيَ الَّتِي قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَوْ رَجَمْتُ أَحَدًا بِغَيْرِ بَيِّنَةٍ لَرَجَمْتُ هٰذِه„ فَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ لاَ تِلْكَ امْرَأَةٌ كَانَتْ تُظْهِرُ السُّوءَ فِي الإِسْلاَمِ.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, লি’আনকারী দম্পতিদ্বয় সম্পর্কে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সম্মুখে আলোচনা হচ্ছিল। ইতোমধ্যে আসিম ইবনু আদী (রাঃ) এ ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করে চলে গেলেন। এরপর তার গোত্রের এক লোক তার কাছে এসে জানাল যে, সে তার স্ত্রীর সঙ্গে এক লোককে পেয়েছে। আসিম বললেন, অযথা জিজ্ঞাসাবাদের দরুনই আমি এ বিপদে পড়লাম। এরপর তিনি তাকে নিয়ে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে গেলেন এবং যে লোকটিকে সে তার স্ত্রীর সঙ্গে পেয়েছে, তার সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে জানালেন। অভিযোগকারী ছিলেন হলদে শীর্ণকায় ও সোজা চুল বিশিষ্ট। আর তার স্ত্রীর কাছে পাওয়া লোকটি ছিল মোটা ধরনের স্থুলকায় ও খুব কোঁকড়ানো চুল বিশিষ্ট। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আল্লাহ! আপনি সত্য প্রকাশ করে দিন। এরপর মহিলা ঐ লোকটির আকৃতির একটি সন্তান জন্ম দেয়, যাকে তার স্বামী তার সঙ্গে পেয়েছে বলে উল্লেখ করেছিলেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উভয়কেই লি’আন করালেন। এক ব্যক্তি ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)- কে সেই মজলিসেই জিজ্ঞেস করল, ঐ মহিলা সম্বন্ধেই কি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছিলেনঃ আমি যদি বিনা প্রমাণে কাউকে রজম করতাম তাহলে একে রজম করতাম? ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ না, সে ছিল অন্য এক মহিলা সে মুসলিম সমাজে প্রকাশ্যে ব্যভিচারে লিপ্ত থাকত।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২০)

৬৮/৩৭. অধ্যায়ঃ
যদি মহিলাকে তিন তালাক দেয় অতঃপর ইদ্দাত শেষে সে অন্য স্বামীর কাছে বিয়ে বসে, কিন্তু সে তাঁকে স্পর্শ (সঙ্গম) করল না।

৫৩১৭
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ عَائِشَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم‏.‏ حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ رِفَاعَةَ، الْقُرَظِيَّ تَزَوَّجَ امْرَأَةً، ثُمَّ طَلَّقَهَا فَتَزَوَّجَتْ آخَرَ فَأَتَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَتْ لَهُ أَنَّهُ لاَ يَأْتِيهَا، وَإِنَّهُ لَيْسَ مَعَهُ إِلاَّ مِثْلُ هُدْبَةٍ فَقَالَ ‏ “‏ لاَ حَتَّى تَذُوقِي عُسَيْلَتَهُ، وَيَذُوقَ عُسَيْلَتَكِ ‏”‏‏.‏

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন। (হাদীসটি নিম্নলিখিত হাদীসের মতই)।



আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, রিফা’আহ কুরাযী এক স্ত্রীলোককে বিয়ে করে পরে ত্বলাক্ব দেয়। এরপর স্ত্রীলোকটি অন্য স্বামী গ্রহণ করে। পরে সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে এসে তাঁকে জানালো যে, সে (স্বামী) তার কাছে আসে না, আর তার কাছে কাপড়ের কিনারার মত বস্তু ছাড়া কিছুই নেই। তিনি বললেনঃ তা হবে না, যে পর্যন্ত তুমি তার কিছু মধু আস্বাদন না করবে, আর সেও তোমার কিঞ্চিত মধু আস্বাদন না করবে (ততক্ষণ প্রথম স্বামীর কাছে যাওয়া যাবে না)।(আধুনিক প্রকাশনী- ৪৯২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২২)

৬৮/৩৮. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ “তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের হায়িয বন্ধ হয়ে গেছে………. যদি তোমাদের সন্দেহ দেখা দেয় তাদের ইদ্দাত তিন মাস এবং তাদেরও যাদের এখনও হায়িয আসা আরম্ভ হয়নি।” (সূরাহ আত্-ত্বলাকঃ ৪)

মুজাহিদ বলেনঃ যদিও তোমারা না জান যে, তাদের হায়িয হবে কিনা। যাদের ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গেছে এবং যাদের এখনো আরম্ভ হয়নি, তাদের ইদ্দাত তিন মাস।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]