সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস পোশাক পরিচ্ছদ অধ্যায় ২য় ভাগ হাদিস নং ৫৮২৮ – ৫৮৭০

৭৭/২৫. অধ্যায়ঃ
পুরুষের জন্য রেশমী পোশাক পরা, রেশমী চাদর বিছানো এবং কী পরিমাণ রেশমী কাপড় ব্যবহার জায়িয।

৫৮২৮
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا عُثْمَانَ النَّهْدِيَّ أَتَانَا كِتَابُ عُمَرَ وَنَحْنُ مَعَ عُتْبَةَ بْنِ فَرْقَدٍ بِأَذْرَبِيجَانَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَهٰى عَنْ الْحَرِيرِ إِلاَّ هٰكَذَا وَأَشَارَ بِإِصْبَعَيْهِ اللَّتَيْنِ تَلِيَانِ الإِبْهَامَ قَالَ فِيمَا عَلِمْنَا أَنَّه“ يَعْنِي الأَعْلاَمَ.

ক্বাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবূ ‘উসমান নাহদী (রাঃ) -এর থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ আমাদের কাছে ‘উমার (রাঃ) -এর পক্ষ থেকে এক পত্র আসে, এ সময় আমরা ‘উত্‌বাহ ইবনু ফারকাদের সঙ্গে আযারবাইজানে অবস্থান করছিলাম। (পত্রে লেখা ছিলঃ) রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রেশম ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন, তবে এটুকু এবং ইঙ্গিত দিলেন বুড়ো আঙ্গুলের সাথে মিলিত দু’আঙ্গুল দ্বারা (বর্ণনাকারী বলেনঃ ) আমরা বুঝতে পারলাম যে (কতটুকু জায়িয তা) জানিয়ে তিনি পাড় ইত্যাদি বুঝাতে চেয়েছেন।[৫৮২৯, ৫৮৩০, ৫৮৩৪, ৫৮৩৫; মুসলিম পর্ব ৩৭/হাঃ ২০৬৯, আহমাদ ৩৬৫] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৯৮)

৫৮২৯
أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا عَاصِمٌ عَنْ أَبِي عُثْمَانَ قَالَ كَتَبَ إِلَيْنَا عُمَرُ وَنَحْنُ بِأَذْرَبِيجَانَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهٰى عَنْ لُبْسِ الْحَرِيرِ إِلاَّ هٰكَذَا وَصَفَّ لَنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِصْبَعَيْهِ وَرَفَعَ زُهَيْرٌ الْوُسْطٰى وَالسَّبَّابَةَ.

আবূ ‘উসমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা আযারবাইজানে অবস্থান করছিলাম। এ সময় ‘উমার (রাঃ) আমাদের কাছে লিখে পাঠান যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রেশমী কাপড় পরতে নিষেধ করেছেন; কিন্তু এটুকু এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর দু’আঙ্গুল দিয়ে এর পরিমাণ আমাদের বলে দিয়েছেন। যুহাইর মধ্যমা ও শাহাদাত আঙ্গুল তুলে দেখিয়েছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫২৯৯)

৫৮৩০
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيٰى عَنْ التَّيْمِيِّ عَنْ أَبِي عُثْمَانَ قَالَ كُنَّا مَعَ عُتْبَةَ فَكَتَبَ إِلَيْهِ عُمَرُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ يُلْبَسُ الْحَرِيرُ فِي الدُّنْيَا إِلاَّ لَمْ يُلْبَسْ فِي الآخِرَةِ مِنْه“ الْحَسَنُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ حَدَّثَنَا أَبِي حَدَّثَنَا أَبُو عُثْمَانَ وَأَشَارَ أَبُو عُثْمَانَ بِإِصْبَعَيْهِ الْمُسَبِّحَةِ وَالْوُسْطَى.

আবূ ‘উসমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, আমরা উত্‌বাহ্‌র সাথে ছিলাম। ‘উমার (রাঃ) তার কাছে লিখে পাঠান যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যাকে আখিরাতে রেশম পরানো হবে না, সে ব্যতীত অন্য কেউ দুনিয়ায় রেশম পরবে না।

আবূ ‘উসমান (রহঃ) তার দু’আঙ্গুল অর্থাৎ শাহাদাত ও মধ্যমা দ্বারা ইশারা করলেন। [৫৮২৮; মুসলিম পর্ব ৩৭/হাঃ ২০৬৯, আহমাদ ৩৬৫]] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩০০)

৫৮৩১
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ الْحَكَمِ عَنْ ابْنِ أَبِي لَيْلٰى قَالَ كَانَ حُذَيْفَةُ بِالْمَدَايِنِ فَاسْتَسْقٰى فَأَتَاه“ دِهْقَانٌ بِمَاءٍ فِي إِنَاءٍ مِنْ فِضَّةٍ فَرَمَاه“ بِه„ وَقَالَ إِنِّي لَمْ أَرْمِه„ إِلاَّ أَنِّي نَهَيْتُه“ فَلَمْ يَنْتَهِ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الذَّهَبُ وَالْفِضَّةُ وَالْحَرِيرُ وَالدِّيبَاجُ هِيَ لَهُمْ فِي الدُّنْيَا وَلَكُمْ فِي الآخِرَةِ.

ইবনু আবূ লাইলা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হুযাইফাহ (রাঃ) মাদাইনে অবস্থান করেছিলেন। তিনি পানি পান করতে চাইলেন। এক গ্রাম্য লোক একটি রৌপ্য পাত্রে কিছু পানি নিয়ে আসল। হুযাইফা (রাঃ) তা ছুঁড়ে ফেললেন এবং বললেনঃ আমি ছুঁড়ে ফেলতাম না; কিন্তু আমি তাকে নিষেধ করেছি, সে নিবৃত হয়নি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ স্বর্ণ, রৌপ্য, পাতলা ও মোটা রেশম তাদের (অর্থাৎ কাফিরদের জন্য) দুনিয়ায় এবং তোমাদের (মুসলিমদের) জন্য আখিরাতে। [১](আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩০২ [১])






[১] ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৫৩০১ ক্রমিক ছুটে গেছে যদিও হাদীসের ধারাবাহিকতা ঠিক আছে সেজন্য একটি নম্বর বাদ পড়েছে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৫৮৩২
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ صُهَيْبٍ قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ قَالَ شُعْبَةُ فَقُلْتُ أَعَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ شَدِيدًا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَنْ لَبِسَ الْحَرِيرَ فِي الدُّنْيَا فَلَنْ يَلْبَسَه“ فِي الآخِرَةِ.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

শু’বাহ (রহঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলামঃ এ কথা কি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত? তিনি জোর দিয়ে বললেনঃ হ্যাঁ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। যে ব্যক্তি দুনিয়ায় রেশমী কাপড় পরবে, সে আখিরাতে তা কখনও পরতে পারবে না। [মুসলিম পর্ব ৩৭/হাঃ ৬০৭৩, আহমাদ ১১৯৮৫] আধুনিক প্রকাশনী- ৫০৪৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩০৩)

৫৮৩৩
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ ثَابِتٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ الزُّبَيْرِ يَخْطُبُ يَقُوْلُ قَالَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم مَنْ لَبِسَ الْحَرِيرَ فِي الدُّنْيَا لَمْ يَلْبَسْه“ فِي الآخِرَةِ.

খালীফাহ ইবনু কা’ব থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইরকে খুতবায় বলতে শুনেছি। তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক দুনিয়ায় রেশমী কাপড় পরবে, আখিরাতে সে তা পরতে পারবে না।(আধুনিক প্রকাশনী- নাই, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- নাই)

৫৮৩৪
عَلِيُّ بْنُ الْجَعْدِ أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِي ذِبْيَانَ خَلِيفَةَ بْنِ كَعْبٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ الزُّبَيْرِ يَقُوْلُ سَمِعْتُ عُمَرَ يَقُوْلُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَنْ لَبِسَ الْحَرِيرَ فِي الدُّنْيَا لَمْ يَلْبَسْه“ فِي الآخِرَةِ

وَقَالَ لَنَا أَبُو مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ عَنْ يَزِيدَ قَالَتْ مُعَاذَةُ أَخْبَرَتْنِي أُمُّ عَمْرٍو بِنْتُ عَبْدِ اللهِ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ الزُّبَيْرِ سَمِعَ عُمَرَ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ.

উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক দুনিয়ায় রেশমী কাপড় পরবে, আখিরাতে সে তা পরতে পারবে না। (আ. প্র. ৫৪০৮, ই. ফা. ৫৩০৪)

আবূ মা’মার আমাদের বলেছেন ……………… ‘উমার (রাঃ) নবী হতে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- নাই, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- নাই)

৫৮৩৫
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْمُبَارَكِ عَنْ يَحْيٰى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حِطَّانَ قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ عَنْ الْحَرِيرِ فَقَالَتْ ائْتِ ابْنَ عَبَّاسٍ فَسَلْه“ قَالَ فَسَأَلْتُه“ فَقَالَ سَلْ ابْنَ عُمَرَ قَالَ فَسَأَلْتُ ابْنَ عُمَرَ فَقَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو حَفْصٍ يَعْنِي عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّمَا يَلْبَسُ الْحَرِيرَ فِي الدُّنْيَا مَنْ لاَ خَلاَقَ لَه“ فِي الآخِرَةِ فَقُلْتُ صَدَقَ وَمَا كَذَبَ أَبُو حَفْصٍ عَلٰى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ رَجَاءٍ حَدَّثَنَا حَرْبٌ عَنْ يَحْيٰى حَدَّثَنِي عِمْرَانُ وَقَصَّ الْحَدِيثَ.

ইমরান ইবনু হিত্তান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ) -এর নিকট রেশম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) -এর নিকট যাও এবং তাকে জিজ্ঞেস কর। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলামঃ তিনি বললেন, ইবনু ‘উমারের নিকট জিজ্ঞেস কর। ইবনু ‘উমারকে জিজ্ঞেস করলাম; তিনি বললেন, আবূ হাফস অর্থাৎ ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বলেছেন যে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দুনিয়ায় যে ব্যক্তিই রেশমী কাপড় পরবে, তার আখিরাতে কোন অংশ নেই। আমি বললামঃ তিনি সত্য বলেছেন। আবূ হাফ্‌স রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উপর মিথ্যারোপ করেননি।

‘ইমরানের সূত্রে ঐ রকমই হাদীস বর্ণনা করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩০৫)

৭৭/২৬. অধ্যায়ঃ
পরিধান না করে রেশমী কাপড় স্পর্শ করা।

এ সম্পর্কে যুবাইদীর সূত্রে আনাস (রাঃ) থেকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর হাদীস বর্ণিত আছে।

৫৮৩৬
عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسٰى عَنْ إِسْرَائِيلَ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ عَنْ الْبَرَاءِ قَالَ أُهْدِيَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثَوْبُ حَرِيرٍ فَجَعَلْنَا نَلْمُسُه“ وَنَتَعَجَّبُ مِنْه“ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَتَعْجَبُونَ مِنْ هٰذَا قُلْنَا نَعَمْ قَالَ مَنَادِيلُ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ فِي الْجَنَّةِ خَيْرٌ مِنْ هٰذَا.

বারা’আ’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর জন্যে একখানা রেশমী বস্ত্র উপহার পাঠানো হয়। আমরা তা স্পর্শ করলাম এবং বিস্ময় প্রকাশ করলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা এতে বিস্ময় প্রকাশ করছো? আমরা বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ জান্নাতে সা’দ ইবনু মু’আযের রুমাল এর চেয়ে উৎকৃষ্ট হবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩০৬)

৭৭/২৭. অধ্যায়ঃ
রেশমী কাপড় বিছানো।

‘আবীদাহ বলেন, এটা পরিধানের মতই ।

৫৮৩৭
عَلِيٌّ حَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِي نَجِيحٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ ابْنِ أَبِي لَيْلٰى عَنْ حُذَيْفَةَ قَالَ نَهَانَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ نَشْرَبَ فِي آنِيَةِ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ وَأَنْ نَأْكُلَ فِيهَا وَعَنْ لُبْسِ الْحَرِيرِ وَالدِّيبَاجِ وَأَنْ نَجْلِسَ عَلَيْهِ.

হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের স্বর্ণ ও রৌপ্যের পাত্রে পানাহার করতে নিষেধ করেছেন এবং তিনি মোটা ও চিকন রেশমী বস্ত্র পরিধান করতে ও তাতে উপবেশন করতে নিষেধ করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩০৭)

৭৭/২৮. অধ্যায়ঃ
কাসসী পরিধান করা।

আসিম (রাঃ) আবূ বুরদাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ‘আলী (রাঃ) -কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কাসসী’ কী? তিনি বললেন, এক প্রকার কাপড়- যা শাম (সিরিয়া) অথবা মিসর থেকে আমাদের দেশে আমদানী হয়ে থাকে। চওড়া দিক থেকে নক্শী করা হয়, তাতে রেশম থাকে এবং উৎরুনজের মত তা কারুকার্যখচিত হয়। আর মীসারা এমন বস্ত্র, যা স্ত্রী লোকেরা তাদের স্বামীদের জন্যে প্রস্তুত করে, মখমলের চাদরের মত তা হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে। জারীর ইয়াযীদ থেকে বর্ণনা করেন, তাঁর বর্ণনায় আছে- কাসসী হচ্ছে নক্‌শী বস্ত্র যা মিসর থেকে আমদানী হয়, তাতে রেশম থাকে। আর মীসারা হলো হিংস্র জন্তুর চামড়া।

৫৮৩৮
مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَشْعَثَ بْنِ أَبِي الشَّعْثَاءِ مُعَاوِيَةُ بْنُ سُوَيْدِ بْنِ مُقَرِّنٍ عَنْ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ نَهَانَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ الْمَيَاثِرِ الْحُمْرِ وَالْقَسِّيِّ.

বারা’আ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের লাল বর্ণের মীসারা ও কাসসী পরিধান করতে নিষেধ করেছেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪১২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩০৮)

৭৭/২৯. অধ্যায়ঃ
চর্মরোগের কারণে পুরুষের জন্য রেশমী কাপড়ের অনুমতি প্রসঙ্গে।

৫৮৩৯
مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنَا وَكِيعٌ أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ قَالَ رَخَّصَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِلزُّبَيْرِ وَعَبْدِ الرَّحْمٰنِ فِي لُبْسِ الْحَرِيرِ لِحِكَّةٍ بِهِمَا.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যুবায়র ও ‘আবদুর রহমান –কে তাদের চর্মরোগের কারণে রেশমী কাপড় পরিধান করার অনুমতি প্রদান করেছিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩০৯)

৭৭/৩০. অধ্যায়ঃ
স্ত্রীলোকের রেশমী কাপড় পরিধান করা।

৫৮৪০
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ح و حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ مَيْسَرَةَ عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ عَنْ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ قَالَ كَسَانِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حُلَّةً سِيَرَاءَ فَخَرَجْتُ فِيهَا فَرَأَيْتُ الْغَضَبَ فِي وَجْهِه„ فَشَقَّقْتُهَا بَيْنَ نِسَائِي

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে একটি রেশমী হুল্লা পরতে দেন। আমি তা পরে বের হই। কিন্তু তাঁর [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] মুখমন্ডলে গোস্বার ভাব আমি লক্ষ্য করি। কাজেই আমি তা টুকরো করে আমার পরিবারের মহিলাদের মধ্যে বেঁটে দেই।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১০)

৫৮৪১
مُوسٰى بْنُ إِسْمَاعِيلَ قَالَ حَدَّثَنِي جُوَيْرِيَةُ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ أَنَّ عُمَرَ رَأٰى حُلَّةَ سِيَرَاءَ تُبَاعُ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ لَوْ ابْتَعْتَهَا تَلْبَسُهَا لِلْوَفْدِ إِذَا أَتَوْكَ وَالْجُمُعَةِ قَالَ إِنَّمَا يَلْبَسُ هٰذِه„ مَنْ لاَ خَلاَقَ لَه“ وَأَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ بَعْدَ ذ‘لِكَ إِلٰى عُمَرَ حُلَّةَ سِيَرَاءَ حَرِيرٍ كَسَاهَا إِيَّاه“ فَقَالَ عُمَرُ كَسَوْتَنِيهَا وَقَدْ سَمِعْتُكَ تَقُولُ فِيهَا مَا قُلْتَ فَقَالَ إِنَّمَا بَعَثْتُ إِلَيْكَ لِتَبِيعَهَا أَوْ تَكْسُوَهَا.

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। ‘উমার (রাঃ) একটি রেশমী হুল্লা বিক্রি হতে দেখে বললেনঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি যদি এটি কিনতেন, তাহলে কোন প্রতিনিধি দল আপনার কাছে আসলে এবং জুমু‘আর দিনে পরিধান করতে পারতেন। তিনি বললেনঃ এটা সে ব্যক্তিই পরতে পারে যার আখিরাতে কোন হিস্যা নেই। পরবর্তী সময়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘উমার (রাঃ) -এর নিকট ডোরাকাটা রেশমী হুল্লা পাঠান। তিনি কেবল তাঁকেই পরতে দেন। ‘উমার (রাঃ) বললেনঃ আপনি আমাকে পরিধান করতে দিয়েছেন, অথচ এ ব্যাপারে যা বলার তা আমি আপনাকে বলতে শুনেছি। তিনি বললেনঃ আমি তোমার কাছে এজন্য পাঠিয়েছি যে, তুমি এটি বিক্রি করে দিবে অথবা কাউকে পরতে দিবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১১)

৫৮৪২
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ أَنَّه“ رَأٰى عَلٰى أُمِّ كُلْثُومٍ عَلَيْهَا السَّلاَم بِنْتِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم بُرْدَ حَرِيرٍ سِيَرَاءَ.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কন্যা উম্মে কুলসূমের পরনে হালকা নক্‌শা করা রেশমী চাদর দেখেছেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১২)

৭৭/৩১. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কী ধরনের পোশাক ও বিছানা গ্রহণ করতেন।

৫৮৪৩
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ يَحْيٰى بْنِ سَعِيدٍ عَنْ عُبَيْدِ بْنِ حُنَيْنٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ لَبِثْتُ سَنَةً وَأَنَا أُرِيدُ أَنْ أَسْأَلَ عُمَرَ عَنْ الْمَرْأَتَيْنِ اللَّتَيْنِ تَظَاهَرَتَا عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَجَعَلْتُ أَهَابُه“ فَنَزَلَ يَوْمًا مَنْزِلاً فَدَخَلَ الأَرَاكَ فَلَمَّا خَرَجَ سَأَلْتُه“ فَقَالَ عَائِشَةُ وَحَفْصَةُ ثُمَّ قَالَ كُنَّا فِي الْجَاهِلِيَّةِ لاَ نَعُدُّ النِّسَاءَ شَيْئًا فَلَمَّا جَاءَ الإِسْلاَمُ وَذَكَرَهُنَّ اللهُ رَأَيْنَا لَهُنَّ بِذ‘لِكَ عَلَيْنَا حَقًّا مِنْ غَيْرِ أَنْ نُدْخِلَهُنَّ فِي شَيْءٍ مِنْ أُمُورِنَا وَكَانَ بَيْنِي وَبَيْنَ امْرَأَتِي كَلاَمٌ فَأَغْلَظَتْ لِي فَقُلْتُ لَهَا وَإِنَّكِ لَهُنَاكِ قَالَتْ تَقُولُ هٰذَا لِي وَابْنَتُكَ تُؤْذِي النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَتَيْتُ حَفْصَةَ فَقُلْتُ لَهَا إِنِّي أُحَذِّرُكِ أَنْ تَعْصِي اللهَ وَرَسُوْلَه“ وَتَقَدَّمْتُ إِلَيْهَا فِي أَذَاه“ فَأَتَيْتُ أُمَّ سَلَمَةَ فَقُلْتُ لَهَا فَقَالَتْ أَعْجَبُ مِنْكَ يَا عُمَرُ قَدْ دَخَلْتَ فِي أُمُورِنَا فَلَمْ يَبْقَ إِلاَّ أَنْ تَدْخُلَ بَيْنَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَزْوَاجِه„ فَرَدَّدَتْ وَكَانَ رَجُلٌ مِنْ الأَنْصَارِ إِذَا غَابَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَشَهِدْتُه“ أَتَيْتُه“ بِمَا يَكُونُ وَإِذَا غِبْتُ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَشَهِدَ أَتَانِي بِمَا يَكُونُ مِنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ مَنْ حَوْلَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ اسْتَقَامَ لَه“ فَلَمْ يَبْقَ إِلاَّ مَلِكُ غَسَّانَ بِالشَّأْمِ كُنَّا نَخَافُ أَنْ يَأْتِيَنَا فَمَا شَعَرْتُ إِلاَّ بِالأَنْصَارِيِّ وَهُوَ يَقُوْلُ إِنَّه“ قَدْ حَدَثَ أَمْرٌ قُلْتُ لَه“ وَمَا هُوَ أَجَاءَ الْغَسَّانِيُّ قَالَ أَعْظَمُ مِنْ ذَاكَ طَلَّقَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم نِسَاءَه“ فَجِئْتُ فَإِذَا الْبُكَاءُ مِنْ حُجَرِهِنَّ كُلِّهَا وَإِذَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَدْ صَعِدَ فِي مَشْرُبَةٍ لَه“ وَعَلٰى بَابِ الْمَشْرُبَةِ وَصِيفٌ فَأَتَيْتُه“ فَقُلْتُ اسْتَأْذِنْ لِي فَأَذِنَ لِي فَدَخَلْتُ فَإِذَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلٰى حَصِيرٍ قَدْ أَثَّرَ فِي جَنْبِه„ وَتَحْتَ رَأْسِه„ مِرْفَقَةٌ مِنْ أَدَمٍ حَشْوُهَا لِيفٌ وَإِذَا أُهُبٌ مُعَلَّقَةٌ وَقَرَظٌ فَذَكَرْتُ الَّذِي قُلْتُ لِحَفْصَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ وَالَّذِي رَدَّتْ عَلَيَّ أُمُّ سَلَمَةَ فَضَحِكَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَلَبِثَ تِسْعًا وَعِشْرِينَ لَيْلَةً ثُمَّ نَزَلَ.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি এক বছর যাবৎ অপেক্ষায় ছিলাম যে ‘উমার (রাঃ) -এর কাছে সে দু’টি মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবো যারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বিরুদ্ধে জোট বদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু আমি তাঁকে খুব ভয় করে চলতাম। একদিন তিনি কোন এক স্থানে নামলেন এবং (প্রাকৃতিক প্রয়োজনে) আরাক গাছের নিকটে গেলেন। যখন তিনি বেরিয়ে এলেন, আমি তাকে (সে সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ (তাঁরা হলেন) ‘আয়িশা ও হাফ্‌সাহ। এরপর তিনি বললেনঃ জাহিলী যুগে আমরা নারীদের কোন কিছু বলে গণ্যই করতাম না। যখন ইসলাম আবির্ভূত হলো এবং (কুরআনে) আল্লাহ তাদের (মর্যাদার কথা) উল্লেখ করলেন, তাতে আমরা দেখলাম যে, আমাদের উপর তাদের হক আছে এবং এতে আমাদের হস্তক্ষেপ করা চলবে না। একদা আমার স্ত্রী ও আমার মধ্যে কিছু কথাবার্তা হচ্ছিল। সে আমার উপর শক্ত ভাষা ব্যবহার করলো। আমি তাকে বললামঃ তুমি তো সে স্থানেই। স্ত্রী বললেনঃ তুমি আমাকে এমন বলছ, অথচ তোমার কন্যা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে কষ্ট দিচ্ছে। এরপর আমি হাফসাহ্‌র কাছে এলাম এবং বললামঃ আল্লাহ ও আল্লাহ্‌র রসূলের নাফরমানী করা থেকে আমি তোমাকে সতর্ক করে দিচ্ছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে কষ্ট দেয়ায় আমি হাফসার কাছেই প্রথমে আসি। এরপর আমি উম্মু সালমাহ (রাঃ) -এর কাছে এলাম এবং তাঁকেও তেমনি বললাম। তিনি বললেনঃ তোমার প্রতি আমার বিস্ময় হে উমার! তুমি আমার সকল ব্যাপারেই হস্তক্ষেপ করছ, কিছুই বাকী রাখনি, এমনকি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর স্ত্রীদের ব্যাপারেও হস্তক্ষেপ করছ। এ কথা বলে তিনি (আমাকে) প্রত্যাখ্যান করলেন। এক লোক ছিলেন আনসারী। তিনি যখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মজলিস থেকে দূরে থাকতেন এবং আমি উপস্থিত থাকতাম, যা কিছু হতো সে সব আমি তাঁকে জানাতাম। আর আমি যখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মজলিস থেকে অনুপস্থিত থাকতাম, আর তখন তিনি উপস্থিত থাকতেন, তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর এখানে যা কিছু ঘটতো তা এসে আমাকে জানাতেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর চারপাশে যারা (রাজা-সম্রাট) ছিল তাঁদের উপর রসুলের কর্তৃত্ব কায়িম হয়েছিল। কেবল বাকী ছিল শামের (সিরিয়ার) গাস্‌সান শাসক। তার আক্রমনের আমরা আশঙ্কা করতাম। হঠাৎ আনসারী যখন বললঃ এক বড় ঘটনা ঘটে গেছে। আমি তাকে বললামঃ কী সে ঘটনা! গাস্‌সানী কি এসে পড়েছে? তিনি বললেনঃ এর চেয়েও ভয়াবহ। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর সকল স্ত্রীকে তালাক দিয়েছেন। আমি সেখানে গেলাম। দেখলাম সকল কক্ষ থেকে কান্নার শব্দ আসছে। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কক্ষের কুঠুরিতে অবস্থান করছেন। প্রবেশ দ্বারে অল্প বয়স্ক একজন খাদিম বসে আছেন। আমি তার কাছে গেলাম এবং বললামঃ আমার জন্যে অনুমতি চাও। অনুমতি পেয়ে আমি ভিতরে ঢুকলাম। দেখলাম নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি চাটাইয়ের উপর শুয়ে আছেন, যাতে তাঁর পার্শ্বদেশে দাগ পড়ে গেছে। তাঁর মাথার নীচে চামড়ার একটি বালিশ, তার ভেতরে রয়েছে খেজুর গাছের ছাল। কয়েকটি চামড়া ঝুলানো রয়েছে এবং বিশেষ গাছের পাতা। এরপর হাফসাহ ও উম্মু সালামাকে আমি যা বলেছিলাম এবং উম্মু সালামাহ আমাকে যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, সে সব আমি তাঁর কাছে ব্যক্ত করলাম। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাসলেন। তিনি ঊনত্রিশ রাত সেখানে থাকার পর নামলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১৩)

৫৮৪৪
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَتْنِي هِنْدُ بِنْتُ الْحَارِثِ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ قَالَتْ اسْتَيْقَظَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ اللَّيْلِ وَهُوَ يَقُوْلُ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ مَاذَا أُنْزِلَ اللَّيْلَةَ مِنْ الْفِتْنَةِ مَاذَا أُنْزِلَ مِنْ الْخَزَائِنِ مَنْ يُوقِظُ صَوَاحِبَ الْحُجُرَاتِ كَمْ مِنْ كَاسِيَةٍ فِي الدُّنْيَا عَارِيَةٍ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ الزُّهْرِيُّ وَكَانَتْ هِنْدٌ لَهَا أَزْرَارٌ فِي كُمَّيْهَا بَيْنَ أَصَابِعِهَا.

উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক রাতে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুম থেকে জাগ্রত হলেন। তখন তিনি বলছিলেনঃ আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, কত যে ফিত্‌না এ রাতে অবতীর্ণ হয়েছে। আরও কত যে ফিত্‌না অবতীর্ণ হয়েছে, কে আছে এমন যে, এ কক্ষবাসীগণকে ঘুম থেকে জাগ্রত করবে। পৃথিবীতে এমন অনেক পোশাক পরিহিতা মহিলাও আছে যারা কিয়ামতের দিন বিবস্ত্র থাকবে। যুহরী (রহঃ) বলেন, হিন্দ বিন্‌ত হারিস-এর জামার আস্তিনদ্বয়ের বুতাম লাগানো ছিল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১৪)

৭৭/৩২. অধ্যায়ঃ
নতুন বস্ত্র পরিধানকারীর জন্য কী দু‘আ করা হবে?

৫৮৪৫
أَبُو الْوَلِيدِ حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ سَعِيدِ بْنِ الْعَاصِ قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ حَدَّثَتْنِي أُمُّ خَالِدٍ بِنْتُ خَالِدٍ قَالَتْ أُتِيَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِثِيَابٍ فِيهَا خَمِيصَةٌ سَوْدَاءُ قَالَ مَنْ تَرَوْنَ نَكْسُوهَا هٰذِهِ الْخَمِيصَةَ فَأُسْكِتَ الْقَوْمُ قَالَ ائْتُونِي بِأُمِّ خَالِدٍ فَأُتِيَ بِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَلْبَسَنِيهَا بِيَدِه„ وَقَالَ أَبْلِي وَأَخْلِقِي مَرَّتَيْنِ فَجَعَلَ يَنْظُرُ إِلٰى عَلَمِ الْخَمِيصَةِ وَيُشِيرُ بِيَدِه„ إِلَيَّ وَيَقُوْلُ يَا أُمَّ خَالِدٍ هٰذَا سَنَا وَيَا أُمَّ خَالِدٍ هٰذَا سَنَا وَالسَّنَا بِلِسَانِ الْحَبَشِيَّةِ الْحَسَنُ قَالَ إِسْحَاقُ حَدَّثَتْنِي امْرَأَةٌ مِنْ أَهْلِي أَنَّهَا رَأَتْه“ عَلٰى أُمِّ خَالِدٍ.

খালিদের কন্যা উম্মু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট কিছু কাপড় আনা হয়। তাতে একটি নক্‌শাওয়ালা কালো চাদর ছিল। তিনি বললেনঃ আমি এ চাদরটি কাকে পরাব এ সম্পর্কে তোমাদের অভিমত কী? সবাই চুপ থাকল। তিনি বললেনঃ উম্মু খালিদকে আমার কাছে নিয়ে এসো। সুতরাং তাঁকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে নিয়ে আসা হলো। তিনি নিজ হাতে তাঁকে ঐ চাদর পরিয়ে দিয়ে বললেনঃ পুরাতন কর ও দীর্ঘদিন ব্যবহার কর। তারপর তিনি চাদরের নক্‌শার দিকে তাকাতে লাগলেন এবং হাতের দ্বারা আমাকে ইশারা করে বলতে থাকলেনঃ হে উম্মু খালিদ! এ সানা। হাবশী ভাষায় ‘সানা’ অর্থ সুন্দর।

ইসহাক (রহঃ) বলেনঃ আমার পরিবারের এক স্ত্রীলোক আমাকে বলেছে, সে ঐ চাদর উম্মু খালিদের পরনে দেখেছে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১৫)

৭৭/৩৩. অধ্যায়ঃ
পুরুষের জন্য জাফরানী রং-এর বস্ত্র পরিধান প্রসঙ্গে।

৫৮৪৬
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ عَنْ أَنَسٍ قَالَ نَهٰى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَتَزَعْفَرَ الرَّجُلُ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পুরুষদের জাফরানী রং-এর কাপড় পরতে নিষেধ করেছেন। [মুসলিম ৩৭/২৩, হাঃ ২১০১, আহমাদ ১২৯৪১] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১৬)

৭৭/৩৪. অধ্যায়ঃ
জাফরানী রং-এর রঙিন বস্ত্র।

৫৮৪৭
أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِينَارٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ نَهٰى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَلْبَسَ الْمُحْرِمُ ثَوْبًا مَصْبُوغًا بِوَرْسٍ أَوْ بِزَعْفَرَانٍ.

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন, মুহ্‌রিম যেন ওয়ারস্‌ ঘাসের কিংবা জাফরানের রং দ্বারা রঙানো কাপড় না পরে। [১৩৪](আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১৭)

৭৭/৩৫. অধ্যায়ঃ
লাল কাপড় প্রসঙ্গে।

৫৮৪৮
أَبُو الْوَلِيدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ سَمِعَ الْبَرَاءَ يَقُوْلُ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَرْبُوعًا وَقَدْ رَأَيْتُه“ فِي حُلَّةٍ حَمْرَاءَ مَا رَأَيْتُ شَيْئًا أَحْسَنَ مِنْهُ.

বারা’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন মাঝারি আকৃতির। আমি তাঁকে লাল হুল্লা পরা অবস্থায় দেখেছি। তাঁর চেয়ে অধিক সুন্দর আর কিছু আমি দেখিনি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১৮)

৭৭/৩৬. অধ্যায়ঃ
লাল ‘মীসারা’ প্রসঙ্গে।

৫৮৪৯
قَبِيصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَشْعَثَ عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ سُوَيْدِ بْنِ مُقَرِّنٍ عَنْ الْبَرَاءِ قَالَ أَمَرَنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِسَبْعٍ عِيَادَةِ الْمَرِيضِ وَاتِّبَاعِ الْجَنَائِزِ وَتَشْمِيتِ الْعَاطِسِ وَنَهَانَا عَنْ سَبْعٍ عَنْ لُبْسِ الْحَرِيرِ وَالدِّيبَاجِ وَالْقَسِّيِّ وَالإِسْتَبْرَقِ وَالْمَيَاثِرِ الْحُمْرِ.

বারা’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সাতটি বিষয়ের নির্দেশ দিয়েছেনঃ রোগীর শুশ্রুষা, জানাযায় শরীক হওয়া এবং হাঁচিদাতার জবাব দান। [৪] আর তিনি আমাদের সাতটি হতে নিষেধ করেছেনঃ রেশমী বস্ত্র, মিহিন রেশমী বস্ত্র, রেশম মিশ্রিত কাতান বস্ত্র, মোটা বস্ত্র এবং লাল ‘মীসারা’ বস্ত্র পরিধান করতে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩১৯)






[৪] অর্থাৎ হাঁচিদাতা ‘আলহামদু লিল্লাহ’ বললে জবাবে ‘ইয়ারহামু কাল্লাহ’ বলা। এখানে তিনটির উল্লেখ আছে, অন্য হাদীস থেকে জানা যায় বাকী চারটি হলঃ দা’ওয়াত গ্রহণ করা, সালামের জবাব দেয়া, অত্যাচারিত ব্যক্তিকে সাহায্য করা ও কসমকারীকে মুক্ত করা।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৭৭/৩৭. অধ্যায়ঃ
পশমহীন চামড়ার জুতা ও অন্যান্য জুতা।

৫৮৫০
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ سَعِيدٍ أَبِي مَسْلَمَةَ قَالَ سَأَلْتُ أَنَسًا أَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي فِي نَعْلَيْهِ قَالَ نَعَمْ.

আবূ মাসলামা সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ) -কে জিজ্ঞেস করেছি, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘না‘লাই’ [৫] পায়ে রেখে সালাত আদায় করেছেন কি? তিনি বলেছেনঃ হ্যাঁ।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩২০)






[৫] বিশেষ এক ধরনের সেন্ডেল

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৫৮৫১
عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ عُبَيْدِ بْنِ جُرَيْجٍ أَنَّه“ قَالَ لِعَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَأَيْتُكَ تَصْنَعُ أَرْبَعًا لَمْ أَرَ أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِكَ يَصْنَعُهَا قَالَ مَا هِيَ يَا ابْنَ جُرَيْجٍ قَالَ رَأَيْتُكَ لاَ تَمَسُّ مِنْ الأَرْكَانِ إِلاَّ الْيَمَانِيَيْنِ وَرَأَيْتُكَ تَلْبَسُ النِّعَالَ السِّبْتِيَّةَ وَرَأَيْتُكَ تَصْبُغُ بِالصُّفْرَةِ وَرَأَيْتُكَ إِذَا كُنْتَ بِمَكَّةَ أَهَلَّ النَّاسُ إِذَا رَأَوْا الْهِلاَلَ وَلَمْ تُهِلَّ أَنْتَ حَتّٰى كَانَ يَوْمُ التَّرْوِيَةِ فَقَالَ لَه“ عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ أَمَّا الأَرْكَانُ فَإِنِّي لَمْ أَرَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَمَسُّ إِلاَّ الْيَمَانِيَيْنِ وَأَمَّا النِّعَالُ السِّبْتِيَّةُ فَإِنِّي رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَلْبَسُ النِّعَالَ الَّتِي لَيْسَ فِيهَا شَعَرٌ وَيَتَوَضَّأُ فِيهَا فَأَنَا أُحِبُّ أَنْ أَلْبَسَهَا وَأَمَّا الصُّفْرَةُ فَإِنِّي رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَصْبُغُ بِهَا فَأَنَا أُحِبُّ أَنْ أَصْبُغَ بِهَا وَأَمَّا الإِهْلاَلُ فَإِنِّي لَمْ أَرَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُهِلُّ حَتّٰى تَنْبَعِثَ بِه„ رَاحِلَتُهُ.

‘উবায়দ ইবনু জুরাইজ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার –কে বলেনঃ আমি আপনাকে এমন চারটি কাজ করতে দেখেছি, যা আপনার সঙ্গীদের মধ্যে কাউকে করতে দেখিনি। তিনি বললেনঃ সেগুলো কী, হে ইবনু জুরাইজ? তিনি বললেনঃ আমি দেখেছি আপনি তাওয়াফ করার সময় (কা‘বার) রু’কুনগুলোর মধ্য হতে ইয়ামানী দু’টো রুকন ব্যতীত অন্যগুলোকে স্পর্শ করেন না। আমি দেখেছি, আপনি পশমহীন চামড়ার জুতা পরিধান করেন। আমি দেখেছি আপনি হলুদ রঙের কাপড় পরেন এবং যখন আপনি মক্কায় ছিলেন তখন দেখেছি, অন্য লোকেরা (যিলহাজ্জের) চাঁদ দেখেই ইহরাম বাঁধতো, আর আপনি তালবিয়ার দিন (অর্থাৎ আট তারিখ) না আসা পর্যন্ত ইহ্‌রাম বাঁধতেন না। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) তাঁকে বললেনঃ আরকান সম্পর্কে কথা এই যে, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে ইয়ামানী দু’টি রুকন ছাড়া অন্য কোনটি স্পর্শ করতে দেখিনি। আর পশমহীন চামড়ার জুতার ব্যাপার হলো, আমি দেখেছি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন জুতা পরতেন, যাতে কোন পশম থাকতো না এবং তিনি জুতা পরা অবস্থাতেই অযূ করতেন (অর্থাৎ পা ধুতেন)। তাই আমি সে রকম জুতা পরতেই পছন্দ করি। আর হলুদ বর্ণের কথা হলো, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে এ রং দিয়ে রঙিণ করতে দেখেছি। সুতরাং আমিও এর দ্বারাই রং করতে ভালবাসি। আর ইহ্‌রাম সম্পর্কে কথা এই যে, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে তাঁর বাহনে হাজ্জের কাজ আরম্ভ করার জন্য উঠার আগে ইহ্‌রাম বাঁধতে দেখিনি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩২১)

৫৮৫২
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِينَارٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ نَهٰى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَلْبَسَ الْمُحْرِمُ ثَوْبًا مَصْبُوغًا بِزَعْفَرَانٍ أَوْ وَرْسٍ وَقَالَ مَنْ لَمْ يَجِدْ نَعْلَيْنِ فَلْيَلْبَسْ خُفَّيْنِ وَلْيَقْطَعْهُمَا أَسْفَلَ مِنْ الْكَعْبَيْنِ.

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন, ইহ্‌রাম বাঁধা ব্যক্তি যেন জাফরান কিংবা ওয়ার্‌স ঘাস দ্বারা রং করা কাপড় না পরে। তিনি বলেছেনঃ যার জুতা নেই, সে যেন মোজা পরে এবং পায়ের গোড়ালির নীচ থেকে (মোজার উপরের অংশ) কেটে ফেলে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩২২)

৫৮৫৩
مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ عَنْ جَابِرِ بْنِ زَيْدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَنْ لَمْ يَكُنْ لَه“ إِزَارٌ فَلْيَلْبَسْ السَّرَاوِيلَ وَمَنْ لَمْ يَكُنْ لَه“ نَعْلاَنِ فَلْيَلْبَسْ خُفَّيْنِ.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (মুহরিম অবস্থায়) যে লোকের ইযার নেই, সে যেন পায়জামা পরে, আর যার জুতা নেই, সে যেন মোজা পরে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩২৩)

৭৭/৩৮. অধ্যায়ঃ
ডান দিক থেকে জুতা পরা আরম্ভ করা।

৫৮৫৪
حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَشْعَثُ بْنُ سُلَيْمٍ، سَمِعْتُ أَبِي يُحَدِّثُ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُحِبُّ التَّيَمُّنَ فِي طُهُورِهِ وَتَرَجُّلِهِ وَتَنَعُّلِهِ‏.‏

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পবিত্রতা লাভ করতে, মাথা আঁচড়াতে ও জুতা পায়ে দিতে ডান দিক থেকে আরম্ভ করা পছন্দ করতেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩২৪)

৭৭/৩৯. অধ্যায়ঃ
বাঁ পায়ের জুতা খোলা প্রসঙ্গে।

৫৮৫৫
عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا انْتَعَلَ أَحَدُكُمْ فَلْيَبْدَأْ بِالْيَمِينِ وَإِذَا نَزَعَ فَلْيَبْدَأْ بِالشِّمَالِ لِيَكُنْ الْيُمْنٰى أَوَّلَهُمَا تُنْعَلُ وَآخِرَهُمَا تُنْزَعُ.

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ জুতা পরে তখন সে যেন ডান দিক থেকে শুরু করে, আর যখন খোলে তখন সে যেন বাম দিকে শুরু করে, যাতে পরার সময় উভয় পায়ের মধ্যে ডান পা প্রথমে হয় এবং খোলার সময় শেষে হয়।[মুসলিম ৩৭/১৯, হাঃ ২০৯৭, আহমাদ ৭১৮২] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩২৫)

৭৭/৪০. অধ্যায়ঃ
এক পায়ে জুতা পরে হাঁটবে না।

৫৮৫৬
عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ يَمْشِي أَحَدُكُمْ فِي نَعْلٍ وَاحِدَةٍ لِيُحْفِهِمَا جَمِيعًا أَوْ لِيُنْعِلْهُمَا جَمِيعًا.

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন এক পায়ে জুতা পরে না হাঁটে। হয় দু’পা-ই খোলা রাখবে অথবা দু’ পায়ে পরবে। [মুসলিম ৩৭/১৯, হাঃ ২০৯৭] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩২৬)

৭৭/৪১. অধ্যায়ঃ
এক চপ্পলে দু’ ফিতা লাগান, কারও মতে এক ফিতা লাগানও বৈধ।

৫৮৫৭
حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ عَنْ قَتَادَةَ حَدَّثَنَا أَنَسٌ أَنَّ نَعْلَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم كَانَ لَهَا قِبَالاَنِ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর চপ্পলে দু’টো করে ফিতা ছিল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩২৭)

৫৮৫৮
مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا عِيسٰى بْنُ طَهْمَانَ قَالَ خَرَجَ إِلَيْنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ بِنَعْلَيْنِ لَهُمَا قِبَالاَنِ فَقَالَ ثَابِتٌ الْبُنَانِيُّ هٰذِه„ نَعْلُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.

ঈসা ইবনু তাহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একবার আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এমন দু’টো চপ্পল আমাদের কাছে আনলেন যার দু’টো করে ফিতা ছিল। তখন সাবিত বুনানী বললেনঃ এটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর চপ্পল ছিল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩২৮)

৭৭/৪২. অধ্যায়ঃ
লাল রঙের চামড়ার তাঁবু।

৫৮৫৯
مُحَمَّدُ بْنُ عَرْعَرَةَ قَالَ حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ أَبِي زَائِدَةَ عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِي جُحَيْفَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ فِي قُبَّةٍ حَمْرَاءَ مِنْ أَدَمٍ وَرَأَيْتُ بِلاَلاً أَخَذَ وَضُوءَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ يَبْتَدِرُونَ الْوَضُوءَ فَمَنْ أَصَابَ مِنْه“ شَيْئًا تَمَسَّحَ بِه„ وَمَنْ لَمْ يُصِبْ مِنْه“ شَيْئًا أَخَذَ مِنْ بَلَلِ يَدِ صَاحِبِهِ.

আওনের পিতা (ওয়াহ্‌ব ইবনু ‘আবদুল্লাহ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে এলাম। তখন তিনি একটি লাল রঙের চামড়ার তাঁবুতে ছিলেন। আর বিলালকে দেখলাম তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর অযুর পানি উঠিয়ে দিচ্ছেন এবং লোকজন অযুর পানি নেয়ার জন্য দৌড়াদৌড়ি করছে। যে তাথেকে কিছু পায়, সে তা মেখে নেয়। আর যে সেখান হতে কিছু পায় না, সে তার সাথীর ভিজা হাত হতে কিছু গ্রহণ করে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩২৯)

৫৮৬০
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي يُونُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ قَالَ أَرْسَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلٰى الأَنْصَارِ وَجَمَعَهُمْ فِي قُبَّةٍ مِنْ أَدَمٍ.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনসারদের নিকট সংবাদ প্রেরণ করেন এবং তাদের চামড়ার একটি তাঁবুতে জমায়েত করেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩০)

৭৭/৪৩. অধ্যায়ঃ
চাটাই বা তদ্রূপ কোন জিনিসের উপর বসা।

৫৮৬১
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَحْتَجِرُ حَصِيرًا بِاللَّيْلِ فَيُصَلِّي، وَيَبْسُطُهُ بِالنَّهَارِ فَيَجْلِسُ عَلَيْهِ، فَجَعَلَ النَّاسُ يَثُوبُونَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم فَيُصَلُّونَ بِصَلاَتِهِ حَتَّى كَثُرُوا فَأَقْبَلَ فَقَالَ ‏ “‏ يَا أَيُّهَا النَّاسُ خُذُوا مِنَ الأَعْمَالِ مَا تُطِيقُونَ، فَإِنَّ اللَّهَ لاَ يَمَلُّ حَتَّى تَمَلُّوا، وَإِنَّ أَحَبَّ الأَعْمَالِ إِلَى اللَّهِ مَا دَامَ وَإِنْ قَلَّ ‏”‏‏.‏

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতের বেলা চাটাই দিয়ে ঘেরাও দিয়ে সলাত আদায় করতেন। আর দিনের বেলা তা বিছিয়ে তার উপর বসতেন। লোকজন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট একত্রিত হয়ে তাঁর সঙ্গে সলাত আদায় করতে লাগল। এমনকি বহু লোক একত্রিত হল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের উদ্দেশ্যে বললেনঃ হে লোক সকল! তোমরা ‘আমল করতে থাক তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী। কারণ, আল্লাহ তা’আলা ক্লান্ত হন না, বরং তোমরাই ক্লান্ত হয়ে পড়বে। আর আল্লাহ্‌র নিকট ঐ ‘আমাল সবচেয়ে প্রিয়, যা সর্বদা করা হয়, তা কম হলেও।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩১)

৭৭/৪৪. অধ্যায়ঃ
স্বর্ণখচিত গুটি

৫৮৬২
وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ عَنْ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ أَنَّ أَبَاه“ مَخْرَمَةَ قَالَ لَه“ يَا بُنَيِّ إِنَّه“ بَلَغَنِي أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَدِمَتْ عَلَيْهِ أَقْبِيَةٌ فَهُوَ يَقْسِمُهَا فَاذْهَبْ بِنَا إِلَيْهِ فَذَهَبْنَا فَوَجَدْنَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فِي مَنْزِلِه„ فَقَالَ لِي يَا بُنَيِّ ادْعُ لِي النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَعْظَمْتُ ذ‘لِكَ فَقُلْتُ أَدْعُو لَكَ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا بُنَيِّ إِنَّه“ لَيْسَ بِجَبَّارٍ فَدَعَوْتُه“ فَخَرَجَ وَعَلَيْهِ قَبَاءٌ مِنْ دِيبَاجٍ مُزَرَّرٌ بِالذَّهَبِ فَقَالَ يَا مَخْرَمَةُ هٰذَا خَبَأْنَاه“ لَكَ فَأَعْطَاه“ إِيَّاهُ.

মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, তার পিতা মাখরামা (একদা) তাকে বললেনঃ হে প্রিয় বৎস! আমার কাছে খবর এসেছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট কিছু কাবা এসেছে। তিনি সেগুলো বণ্টন করেছেন। চলো, আমরা তাঁর কাছে যাই। আমরা গেলাম এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে তাঁর বাসগৃহে পেলাম। আমাকে (আমার পিতা) বললেনঃ বৎস! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে আমার কাছে ডাক। আমার নিকট কাজটি অতি কঠিন বলে মনে হল। আমি বললামঃ আপনার কাছে রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে ডাকবো? তিনি বললেনঃ বৎস, তিনি তো কঠোর স্বভাবের লোক নন। যা হোক, আমি তাঁকে ডাকলাম। তিনি বেরিয়ে এলেন। তাঁর গায়ে তখন স্বর্ণের বোতাম লাগান মিহি রেশমী কাপড়ের কাবা ছিল। তিনি বললেনঃ হে মাখরামা! এটা আমি তোমার জন্যে সংরক্ষণ করেছিলাম। এরপর তিনি ওটা তাকে দিয়ে দিলেন। [৬](আধুনিক প্রকাশনী- অনুচ্ছেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- অনুচ্ছেদ)






[৬] সম্ভবতঃ এটি পুরুষের জন্য রেশম হারাম হওয়ার পূর্বের ঘটনা।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৭৭/৪৫. অধ্যায়ঃ
স্বর্ণের আংটি

৫৮৬৩
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا أَشْعَثُ بْنُ سُلَيْمٍ قَالَ سَمِعْتُ مُعَاوِيَةَ بْنَ سُوَيْدِ بْنِ مُقَرِّنٍ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ يَقُوْلُ نَهَانَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ سَبْعٍ نَهَانَا عَنْ خَاتَمِ الذَّهَبِ أَوْ قَالَ حَلْقَةِ الذَّهَبِ وَعَنْ الْحَرِيرِ وَالإِسْتَبْرَقِ وَالدِّيبَاجِ وَالْمِيثَرَةِ الْحَمْرَاءِ وَالْقَسِّيِّ وَآنِيَةِ الْفِضَّةِ وَأَمَرَنَا بِسَبْعٍ بِعِيَادَةِ الْمَرِيضِ وَاتِّبَاعِ الْجَنَائِزِ وَتَشْمِيتِ الْعَاطِسِ وَرَدِّ السَّلاَمِ وَإِجَابَةِ الدَّاعِي وَإِبْرَارِ الْمُقْسِمِ وَنَصْرِ الْمَظْلُومِ.

বারা’আ ইবনু ‘আযিব (রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সাতটি জিনিস থেকে নিষেধ করেছেনঃ স্বর্ণের আংটি বা তিনি বলেছেন, স্বর্ণের বলয়, মিহি রেশম, মোটা রেশম ও রেশম মিশ্রিত কাপড়, রেশম এর তৈরী লাল রঙের হাওদা, রেশম মিশ্রিত কিস্‌সী কাপড় ও রৌপ্য পাত্র। আর তিনি আমাদের সাতটি কাজের নির্দেশ দিয়েছেনঃ রোগীর শুশ্রূষা, জানাযার অনুসরণ করা, হাঁচির উত্তর দেয়া, সালামের জবাব দেয়া, দা’ওয়াত গ্রহণ করা, শপথকারীর শপথ পূরণে সাহায্য করা এবং মাযলূম ব্যক্তির সাহায্য করা।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩২)

৫৮৬৪
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ النَّضْرِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ بَشِيرِ بْنِ نَهِيكٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّه“ نَهٰى عَنْ خَاتَمِ الذَّهَبِ وَقَالَ عَمْرٌو أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ سَمِعَ النَّضْرَ سَمِعَ بَشِيرًا مِثْلَهُ.

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন।

‘আম্‌র (রহঃ) বাশীর (রহঃ) -কে রকমই বর্ণনা করতে শুনেছেন। [মুসলিম ৩৭/১১, হাঃ ২০৮৯] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩৩)

৫৮৬৫
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيٰى عَنْ عُبَيْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِي نَافِعٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم اتَّخَذَ خَاتَمًا مِنْ ذَهَبٍ وَجَعَلَ فَصَّه“ مِمَّا يَلِي كَفَّه“ فَاتَّخَذَهُ النَّاسُ فَرَمٰى بِه„ وَاتَّخَذَ خَاتَمًا مِنْ وَرِقٍ أَوْ فِضَّةٍ.

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বর্ণের একটি আংটি ব্যবহার করেন। আংটির মোহর হাতের তালুর দিকে ঘুরিয়ে রাখেন। লোকেরা ঐ রকমই (আংটি) ব্যবহার করা শুরু করল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বর্ণের আংটিটি ফেলে দিয়ে রৌপ্যের আংটি বানিয়ে নিলেন। [৫৮৬৬, ৫৮৬৭, ৫৮৭৩, ৫৮৭৬, ৬৬৫১, ৭২৯৮; মুসলিম ৩৭/১১, হাঃ ২০৯১, আহমাদ ৫৮৫৫] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩৪)

৭৭/৪৬. অধ্যায়ঃ
রূপার আংটি প্রসঙ্গে।

৫৮৬৬
يُوسُفُ بْنُ مُوسٰى حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم اتَّخَذَ خَاتَمًا مِنْ ذَهَبٍ أَوْ فِضَّةٍ وَجَعَلَ فَصَّه“ مِمَّا يَلِي كَفَّه“ وَنَقَشَ فِيهِ مُحَمَّدٌ رَسُوْلُ اللهِ فَاتَّخَذَ النَّاسُ مِثْلَه“ فَلَمَّا رَآهُمْ قَدْ اتَّخَذُوهَا رَمٰى بِه„ وَقَالَ لاَ أَلْبَسُه“ أَبَدًا ثُمَّ اتَّخَذَ خَاتَمًا مِنْ فِضَّةٍ فَاتَّخَذَ النَّاسُ خَوَاتِيمَ الْفِضَّةِ.

قَالَ ابْنُ عُمَرَ فَلَبِسَ الْخَاتَمَ بَعْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَبُو بَكْرٍ ثُمَّ عُمَرُ ثُمَّ عُثْمَانُ حَتّٰى وَقَعَ مِنْ عُثْمَانَ فِي بِئْرِ أَرِيسَ.

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বর্ণের একটি আংটি পরেন। আংটিটির মোহর হাতের তালুর ভিতরের দিকে ঘুরিয়ে রাখেন। তাতে তিনি مُحَمَّدٌ رَسُوْلُ اللهِ খোদাই করেছিলেন। লোকেরাও এ রকম আংটি ব্যবহার করতে শুরু করেন। যখন তিনি দেখলেন যে, তারাও ঐ রকম আংটি ব্যবহার করছে, তখন তিনি তা ছুঁড়ে ফেলে দেন এবং বলেনঃ আমি আর কখনও এটা ব্যবহার করব না। এরপর তিনি একটি রূপার আংটি ব্যবহার করেন। লোকেরাও রূপার আংটি পরা শুরু করে। ইবনু ‘উমার বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পরে আবূ বাকর , তারপর ‘উমার ও তারপর ‘উসমান তা ব্যবহার করেছেন। শেষে ‘উসমান -এর হাত) থেকে আংটিটি ‘আরীস’ নামক কূপের মধ্যে পড়ে যায়। [৫৮৬৫] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩৫)

৭৭/৪৭. অধ্যায়ঃ
আংটি খুলে ফেলা

৫৮৬৭
عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ دِينَارٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ كَانَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَلْبَسُ خَاتَمًا مِنْ ذَهَبٍ فَنَبَذَه“ فَقَالَ لاَ أَلْبَسُه“ أَبَدًا فَنَبَذَ النَّاسُ خَوَاتِيمَهُمْ.

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বর্ণের একটি আংটি ব্যবহার করতেন। এরপর তা বাদ দেন এবং বলেনঃ আমি আর কখনো সেটা ব্যবহার করব না। লোকেরাও তাদের আংটি খুলে ফেলে দেয়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩৬)

৫৮৬৮
يَحْيٰى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ يُونُسَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ حَدَّثَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ أَنَّه“ رَأٰى فِي يَدِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَاتَمًا مِنْ وَرِقٍ يَوْمًا وَاحِدًا ثُمَّ إِنَّ النَّاسَ اصْطَنَعُوا الْخَوَاتِيمَ مِنْ وَرِقٍ وَلَبِسُوهَا فَطَرَحَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَاتَمَه“ فَطَرَحَ النَّاسُ خَوَاتِيمَهُمْ تَابَعَهُ ابْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ وَزِيَادٌ وَشُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ وَقَالَ ابْنُ مُسَافِرٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَر‘ى خَاتَمًا مِنْ وَرِقٍ.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, তিনি একদিন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর হাতে রৌপ্যের একটি আংটি দেখেছেন। তারপর লোকেরাও রৌপ্যের আংটি তৈরি করে এবং ব্যবহার করে। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরে তাঁর আংটি বর্জন করেন। লোকেরাও তাদের আংটি বর্জন করেন।

যুহরীর সূত্রে ইবরাহীম ইবনু সা’দ, যিয়াদ ও শু’আয়ব (রহঃ) -ও এ রকম বর্ণনা করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩৭)

৭৭/৪৮. অধ্যায়ঃ
আংটির মোহর প্রসঙ্গে।

৫৮৬৯
عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ أَخْبَرَنَا حُمَيْدٌ قَالَ سُئِلَ أَنَسٌ هَلْ اتَّخَذَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَاتَمًا قَالَ أَخَّرَ لَيْلَةً صَلاَةَ الْعِشَاءِ إِلٰى شَطْرِ اللَّيْلِ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِه„ فَكَأَنِّي أَنْظُرُ إِلٰى وَبِيصِ خَاتَمِه„ قَالَ إِنَّ النَّاسَ قَدْ صَلَّوْا وَنَامُوا وَإِنَّكُمْ لَمْ تَزَالُوا فِي صَلاَةٍ مَا انْتَظَرْتُمُوهَا.

হুমাইদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আনাস (রাঃ) -এর নিকট জিজ্ঞেস করা হয় যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আংটি পরেছেন কিনা? তিনি বললেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক রাতে এশার সলাত আদায় করতে অর্ধরাত পর্যন্ত দেরী করেন। এরপর তিনি আমাদের মাঝে আসলেন। আমি যেন তাঁর আংটির ঔজ্জ্বল্য দেখতে লাগলাম। তিনি বললেনঃ লোকজন সলাত আদায় করে শুয়ে গেছে। আর যতক্ষণ থেকে তোমরা সলাতের জন্য অপেক্ষারত আছ; ততক্ষণ তোমরা সলাতের ভিতরেই আছ। [৫৭২; মুসলিম ৫/৩৯, হাঃ ৬৪০, আহমাদ ১৩৮২০] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩৮)

৫৮৭০
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا مُعْتَمِرٌ قَالَ سَمِعْتُ حُمَيْدًا يُحَدِّثُ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ خَاتَمُه“ مِنْ فِضَّةٍ وَكَانَ فَصُّه“ مِنْهُ.

وَقَالَ يَحْيٰى بْنُ أَيُّوبَ حَدَّثَنِي حُمَيْدٌ سَمِعَ أَنَسًا عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, আল্লাহ্‌র নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর আংটি ছিল রৌপ্যের। আর তাঁর নাগিনাটিও ছিল রৌপ্যের।

ইয়াহ্‌ইয়া ইবনু আইউব, হুমায়দ, আনাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকেও বর্ণনা করেছেন। [৬৫; মুসলিম ৩৭/১১, হাঃ ২০৯২] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৪৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৩৩৯)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]