সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস দুআ অধ্যায় ১ম ভাগ হাদিস নং ৬৩০৪ – ৬৩৪০

৮০/১. অধ্যায়ঃ
প্রত্যেক নবীর মাকবুল দু’আ আছে।

৬৩০৪
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ”‏ لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ يَدْعُو بِهَا، وَأُرِيدُ أَنْ أَخْتَبِئَ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لأُمَّتِي فِي الآخِرَةِ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক নবীর এমন একটি দু’আ রয়েছে, যা (আল্লাহ্‌র নিকট) গৃহীত হয় আর নবী সে দু’আ করে থাকেন। আমার ইচ্ছা, আমি আমার সে দু’আর অধিকার আখিরাতে আমার উম্মাতের শাফায়াতের জন্য মুলতবি রাখি।[৭৪৭৪; মুসলিম ১/৮৬, হাঃ ১৯৮, ১৯৯, আহমাদ ৮৯৬৮] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৩)

৬৩০৫
وَقَالَ لِي خَلِيفَةُ قَالَ مُعْتَمِرٌ سَمِعْتُ أَبِي عَنْ أَنَسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ كُلُّ نَبِيٍّ سَأَلَ سُؤْلاً أَوْ قَالَ لِكُلِّ نَبِيٍّ دَعْوَةٌ قَدْ دَعَا بِهَا فَاسْتُجِيبَ فَجَعَلْتُ دَعْوَتِي شَفَاعَةً لأ÷ُمَّتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন যে, প্রত্যেক নবীই যা চাওয়ার চেয়ে নিয়েছেন। অথবা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক নবীকে যে দু’আর অধিকার দেয়া হয়েছিল তিনি সে দু’আ করে নিয়েছেন এবং তা কবূলও করা হয়েছে। কিন্তু আমি আমার দু’আকে ক্বিয়ামতের দিনে আমার উম্মাতের শাফায়াতের জন্য রেখে দিয়েছি। [মুসলিম ১/৮৬, হাঃ ২০০, আহমাদ ১৩৭০৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৩)

৮০/২. অধ্যায়ঃ
শ্রেষ্ঠতম ইস্তিগফার আল্লাহ্‌র বাণীঃ

“আমি বলেছি- ‘তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও, তিনি বড়ই ক্ষমাশীল। (তোমরা তা করলে) তিনি অজস্র ধারায় তোমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, তোমাদের ধন সম্পদ ও সন্তানাদি বাড়িয়ে দেবেন, তোমাদের জন্য বাগান সৃষ্টি করবেন এবং তোমাদের জন্য নদীনালা প্রবাহিত করবেন।” (সূরা নূহ ৭১/১০-১২)

“যারা কোন পাপ কাজ করে ফেললে কিংবা নিজেদের প্রতি যুল্‌ম করলে আল্লাহ্‌কে স্মরণ করে এবং নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে…..।” (সূরা আল ইমরান ৩/১৩৫)

৬৩০৬
أَبُو مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ بُرَيْدَةَ قَالَ حَدَّثَنِي بُشَيْرُ بْنُ كَعْبٍ الْعَدَوِيُّ قَالَ حَدَّثَنِي شَدَّادُ بْنُ أَوْسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم سَيِّدُ الِاسْتِغْفَارِ أَنْ تَقُولَ اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لاَ إِلٰهَ إِلاَّ أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلٰى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّه“ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ قَالَ وَمَنْ قَالَهَا مِنْ النَّهَارِ مُوقِنًا بِهَا فَمَاتَ مِنْ يَوْمِه„ قَبْلَ أَنْ يُمْسِيَ فَهُوَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ وَمَنْ قَالَهَا مِنْ اللَّيْلِ وَهُوَ مُوقِنٌ بِهَا فَمَاتَ قَبْلَ أَنْ يُصْبِ فَهُوَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ.

শাদ্দাদ ইবনু আউস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার হলো বান্দার এ দু’আ পড়া- “হে আল্লাহ! তুমি আমার প্রতিপালক। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই গোলাম। আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে কৃত প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নি’য়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গুনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা কর।” যে ব্যক্তি দিনে (সকালে) দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ ইসতিগফার পড়বে আর সন্ধ্যা হবার আগেই সে মারা যাবে, সে জান্নাতী হবে। আর যে ব্যক্তি রাতে (প্রথম ভাগে) দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে এ দু’আ পড়ে নেবে আর সে ভোর হবার আগেই মারা যাবে সে জান্নাতী হবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৪)

৮০/৩. অধ্যায়ঃ
দিনে ও রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর ইস্তিগফার।

৬৩০৭
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ قَالَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُوْلُ وَاللهِ إِنِّي لأَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ فِي الْيَوْمِ أَكْثَرَ مِنْ سَبْعِينَ مَرَّةً.

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ্‌র শপথ! আমি প্রতিদিন আল্লাহ্‌র কাছে সত্তরবারেরও অধিক ইস্তিগফার ও তাওবাহ করে থাকি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৪)

৮০/৪. অধ্যায়ঃ
তাওবাহ করা।

ক্বাতাদাহ (রহঃ) বলেন, মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ “তোমরা সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে আল্লাহ্‌র কাছে তাওবাহ করো।” (সূরাহ আত্‌-তাহরীম ৬৬/৮)

৬৩০৮
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا أَبُو شِهَابٍ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ عُمَارَةَ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ سُوَيْدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ، حَدِيثَيْنِ أَحَدُهُمَا عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالآخَرُ عَنْ نَفْسِهِ، قَالَ ‏”‏ إِنَّ الْمُؤْمِنَ يَرَى ذُنُوبَهُ كَأَنَّهُ قَاعِدٌ تَحْتَ جَبَلٍ يَخَافُ أَنْ يَقَعَ عَلَيْهِ، وَإِنَّ الْفَاجِرَ يَرَى ذُنُوبَهُ كَذُبَابٍ مَرَّ عَلَى أَنْفِهِ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ بِهِ هَكَذَا قَالَ أَبُو شِهَابٍ بِيَدِهِ فَوْقَ أَنْفِهِ‏.‏ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ لَلَّهُ أَفْرَحُ بِتَوْبَةِ عَبْدِهِ مِنْ رَجُلٍ نَزَلَ مَنْزِلاً، وَبِهِ مَهْلَكَةٌ، وَمَعَهُ رَاحِلَتُهُ عَلَيْهَا طَعَامُهُ وَشَرَابُهُ، فَوَضَعَ رَأْسَهُ فَنَامَ نَوْمَةً، فَاسْتَيْقَظَ وَقَدْ ذَهَبَتْ رَاحِلَتُهُ، حَتَّى اشْتَدَّ عَلَيْهِ الْحَرُّ وَالْعَطَشُ أَوْ مَا شَاءَ اللَّهُ، قَالَ أَرْجِعُ إِلَى مَكَانِي‏.‏ فَرَجَعَ فَنَامَ نَوْمَةً، ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ، فَإِذَا رَاحِلَتُهُ عِنْدَهُ ‏”‏‏.‏ تَابَعَهُ أَبُو عَوَانَةَ وَجَرِيرٌ عَنِ الأَعْمَشِ‏.‏ وَقَالَ أَبُو أُسَامَةَ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ حَدَّثَنَا عُمَارَةُ سَمِعْتُ الْحَارِثَ‏.‏ وَقَالَ شُعْبَةُ وَأَبُو مُسْلِمٍ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ عَنِ الْحَارِثِ بْنِ سُوَيْدٍ‏.‏ وَقَالَ أَبُو مُعَاوِيَةَ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ عَنْ عُمَارَةَ عَنِ الأَسْوَدِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ وَعَنْ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ عَنِ الْحَارِثِ بْنِ سُوَيْدٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ‏.‏

আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) দু’টি হাদীস বর্ণনা করেছেন। একটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে আর অন্যটি তাঁর নিজ থেকে। তিনি বলেন, ঈমানদার ব্যক্তি তার গুনাহগুলোকে এত বিরাট মনে করে, যেন সে একটা পর্বতের নীচে উপবিষ্ট আছে, আর সে আশঙ্কা করছে যে, সম্ভবত পর্বতটা তার উপর ধ্বসে পড়বে। আর পাপিষ্ঠ ব্যক্তি তার গুনাহগুলোকে মাছির মত মনে করে, যা তার নাকে বসে চলে যায়। এ কথাটি আবূ শিহাব নিজ নাকে হাত দিয়ে দেখিয়ে বলেন। তারপর [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হতে বর্ণিত হাদীসটি বর্ণনা করে বলেন] নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ মনে কর কোন এক ব্যক্তি (সফরের) কোন এক স্থানে অবতরণ করলো, সেখানে প্রাণেরও ভয় ছিল। তার সঙ্গে তার সফরের বাহন ছিল। যার উপর তার খাদ্য ও পানীয় ছিল, সে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো এবং জেগে দেখলো তার বাহন চলে গেছে। তখন সে গরমে ও পিপাসায় কাতর হয়ে পড়লো। রাবী বলেনঃ আল্লাহ যা চাইলেন তা হলো। তখন সে বললো যে, আমি যে স্থানে ছিলাম সেখানেই ফিরে যাই। এরপর সে নিজ স্থানে ফিরে এসে আবার ঘুমিয়ে পড়লো। তারপর জেগে দেখলো যে, তার বাহনটি তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। তখন সে ব্যক্তি যতটা খুশি হলো, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তাঁর বান্দার তাওবাহ করার কারণে এর চেয়েও অনেক অধিক খুশি হন। আবূ আওয়ানাহ ও জারীর আ’মাশ (রহঃ) থেকে এ রকমই বর্ণনা করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৬)

৬৩০৯
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، أَخْبَرَنَا حَبَّانُ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم‏.‏ وَحَدَّثَنَا هُدْبَةُ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ اللَّهُ أَفْرَحُ بِتَوْبَةِ عَبْدِهِ مِنْ أَحَدِكُمْ سَقَطَ عَلَى بَعِيرِهِ، وَقَدْ أَضَلَّهُ فِي أَرْضِ فَلاَةٍ ‏”‏‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা বান্দার তাওবাহ্‌র কারণে সেই লোকটির চেয়েও অধিক খুশি হন, যে লোকটি মরুভূমিতে তাঁর উট হারিয়ে পরে তা পেয়ে যায়। [মুসলিম ৪৯/১, হাঃ ২৭৪৭]আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৭)

৮০/৫. অধ্যায়ঃ
ডান পাশে শয়ন করা।

৬৩১০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي مِنَ اللَّيْلِ إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً، فَإِذَا طَلَعَ الْفَجْرُ صَلَّى رَكْعَتَيْنِ خَفِيفَتَيْنِ، ثُمَّ اضْطَجَعَ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ، حَتَّى يَجِيءَ الْمُؤَذِّنُ فَيُؤْذِنَهُ‏.‏

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রাতের শেষভাগে এগার রাক’আত সলাত আদায় করতেন। তারপর যখন সুবহি সাদিক হতো, তখন তিনি হালকা দু’রাক’আত সালাত আদায় করতেন। অতঃপর তিনি নিজের ডান পার্শ্বে কাত হয়ে বিশ্রাম নিতেন। যতক্ষণ না মুয়ায্‌যিন এসে তাঁকে সলাতের খবর দিতেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৮)

৮০/৬. অধ্যায়ঃ
পবিত্র অবস্থায় রাত কাটানো।

৬৩১১
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ قَالَ سَمِعْتُ مَنْصُورًا عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَيْدَةَ قَالَ حَدَّثَنِي الْبَرَاءُ بْنُ عَازِبٍ قَالَ قَالَ لِي رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَتَيْتَ مَضْجَعَكَ فَتَوَضَّأْ وَضُوءَكَ لِلصَّلاَةِ ثُمَّ اضْطَجِعْ عَلٰى شِقِّكَ الأَيْمَنِ وَقُلْ اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِي إِلَيْكَ وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ رَهْبَةً وَرَغْبَةً إِلَيْكَ لاَ مَلْجَأَ وَلاَ مَنْجَا مِنْكَ إِلاَّ إِلَيْكَ آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ فَإِنْ مُتَّ مُتَّ عَلَى الْفِطْرَةِ فَاجْعَلْهُنَّ آخِرَ مَا تَقُولُ فَقُلْتُ أَسْتَذْكِرُهُنَّ وَبِرَسُوْلِكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ قَالَ لاَ وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ.

বারাআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ যখন তুমি শোয়ার বিছানায় যেতে চাও, তখন তুমি সালাতের অযূর মত অযূ করবে। এরপর ডান পাশের উপর কাত হয়ে শুয়ে পড়বে। আর এ দু‘আ পড়বে, হে আল্লাহ! আমি আমার চেহারাকে অর্থাৎ যাবতীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে) তোমার হস্তে সমর্পণ করলাম। আর আমার সকল বিষয় তোমারই নিকট সমর্পণ করলাম এবং আমার পৃষ্ঠদেশ তোমার আশ্রয়ে সোপর্দ করলাম। আমি তোমার গযবের ভয়ে ভীত ও তোমার রাহমাতের আশায় আশান্বিত। তোমার নিকট ব্যতীত কোন আশ্রয়স্থল নেই এবং নেই মুক্তি পাওয়ার স্থান। তুমি যে কিতাব অবতীর্ণ করেছ, আমি তার উপর ঈমান এনেছি এবং তুমি যে নাবী পাঠিয়েছ আমি তাঁর উপর ঈমান এনেছি। যদি তুমি এ রাতেই মরে যাও, তোমার সে মৃত্যু স্বভাবধর্ম ইসলামের উপরই গণ্য হবে। অতএব তোমার এ দু‘আগুলো যেন তোমার এ রাতের সর্বশেষ কথা হয়। রাবী বারাআ বলেন, আমি বললামঃ আমি এ কথা মনে রাখবো। তবে بِرَسُوْلِكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ সহ। রাসূলুল্লাহ বললেন, না ওভাবে নয়, তুমি বলবে وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ। [২৪৭] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৫৯) [১]






[২২] উক্ত সহাবী সম্ভবত মনে করেছিলেন, নবীর চেয়ে রাসূলের মর্যাদা বেশী এবং যিনি শিক্ষা দিচ্ছেন তিনিতো রাসূলও বটে। তাই তিনি জিজ্ঞেস করলেন, নাবিয়্যিকা’র স্থলে রাসূলিকা বলা যাবে কিনা। কিন্তু রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজেই শব্দ পরিবর্তন করতে নিষেধ করলেন। উক্ত হাদীস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর পঠিত ও শিখানো দু’আর মধ্যে কোনরূপ শব্দ পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে দু’আ যাবে না। এমনকি বচন বা লিঙ্গ পরিবর্তন করাও ঠিক নয়।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৮০/৭. অধ্যায়ঃ
ঘুমানোর সময় কী দু’আ পড়বে।

৬৩১২
حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ، عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ قَالَ ‏”‏ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا ‏”‏‏.‏ وَإِذَا قَامَ قَالَ ‏”‏ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ ‏”‏‏.‏

হুযাইফাহ ইবনু ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন বিছানায় আশ্রয় গ্রহণ করতে যেতেন, তখন তিনি এ দু’আ পড়তেনঃ হে আল্লাহ! আপনারই নাম নিয়ে মরি আর আপনার নাম নিয়েই বাঁচি। আর তিনি জেগে উঠতেন তখন পড়তেনঃ যাবতীয় প্রশংসা সেই আল্লাহ্‌র জন্য যিনি আমাদের মৃত্যুদানের পর আবার আমাদের পুনর্জীবিত করেছেন। আর প্রত্যাবর্তন তাঁর পানেই।(আধুনিক প্রকাশনী- ,৫৮৬৭ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬০)

৬৩১৩
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ الرَّبِيعِ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَرْعَرَةَ، قَالاَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، سَمِعَ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ رَجُلاً‏.‏ وَحَدَّثَنَا آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ الْهَمْدَانِيُّ عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَوْصَى رَجُلاً فَقَالَ ‏ “‏ إِذَا أَرَدْتَ مَضْجَعَكَ فَقُلِ اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِي إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ، وَوَجَّهْتُ وَجْهِي إِلَيْكَ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ، رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ، لاَ مَلْجَأَ وَلاَ مَنْجَا مِنْكَ إِلاَّ إِلَيْكَ، آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ، وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ‏.‏ فَإِنْ مُتَّ مُتَّ عَلَى الْفِطْرَةِ ‏”‏‏.‏

বারাআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক লোককে নির্দেশ দিলেন। অন্য সূত্রে বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক ব্যক্তিকে অসিয়ত করলেন যে, যখন তুমি বিছানায় ঘুমাতে যাবে, তখন তুমি এ দু’আ পড়বে ‘হে আল্লাহ! আমি আমার প্রাণকে আপনার কাছে সমর্পণ করলাম, আর আমার বিষয় ন্যস্ত করলাম আপনার দিকে এবং আমার চেহারা আপনার দিকে ফিরিয়ে দিলাম, আপনার রাহমাতের আশায় এবং আপনার গযবের ভয়ে। আপনার নিকট ব্যতীত আপনার গযব থেকে পালিয়ে যাবার এবং আপনার আযাব থেকে বাঁচার আর কোন স্থান নেই। আপনি যে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, আমি তার উপর দৃঢ় বিশ্বাস করছি এবং আপনি যে নবী পাঠিয়েছেন, আমি তাঁর উপর পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করেছি। যদি তুমি এ অবস্থায়ই মরে যাও, তবে তুমি স্বভাবধর্ম ইসলামের উপর মৃত্যুবরণ করবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬১)

৮০/৮. অধ্যায়ঃ
ডান গালের নীচে ডান হাত রাখা।

৬৩১৪
حَدَّثَنِي مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ، عَنْ رِبْعِيٍّ، عَنْ حُذَيْفَةَ ـ رضى الله عنه قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَخَذَ مَضْجَعَهُ مِنَ اللَّيْلِ وَضَعَ يَدَهُ تَحْتَ خَدِّهِ ثُمَّ يَقُولُ ‏”‏ اللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا ‏”‏‏.‏ وَإِذَا اسْتَيْقَظَ قَالَ ‏”‏ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ ‏”‏‏.‏

হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রাতে নিজ বিছানায় শোয়ার সময় নিজ হাত গালের নীচে রাখতেন, তারপর বলতেনঃ হে আল্লাহ! আপনার নামেই মরি, আপনার নামেই জীবিত হই। আর যখন জাগতেন তখন বলতেনঃ সে আল্লাহ্‌র জন্য প্রশংসা, যিনি মৃত্যুর পর আমাদের জীবন দান করলেন এবং তাঁরই দিকে আমাদের পুনরুত্থান।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬২)

৮০/৯. অধ্যায়ঃ
ডান পাশের উপর ঘুমানো

৬৩১৫
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، حَدَّثَنَا الْعَلاَءُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَوَى إِلَى فِرَاشِهِ نَامَ عَلَى شِقِّهِ الأَيْمَنِ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ اللَّهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِي إِلَيْكَ، وَوَجَّهْتُ وَجْهِي إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِي إِلَيْكَ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِي إِلَيْكَ، رَغْبَةً وَرَهْبَةً إِلَيْكَ، لاَ مَلْجَأَ وَلاَ مَنْجَا مِنْكَ إِلاَّ إِلَيْكَ، آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِي أَنْزَلْتَ، وَنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ‏.‏ وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَنْ قَالَهُنَّ ثُمَّ مَاتَ تَحْتَ لَيْلَتِهِ مَاتَ عَلَى الْفِطْرَةِ ‏”‏‏.‏ ‏{‏اسْتَرْهَبُوهُمْ‏}‏ مِنَ الرَّهْبَةِ، مَلَكُوتٌ مُلْكٌ مَثَلُ رَهَبُوتٌ خَيْرٌ مِنْ رَحَمُوتٍ، تَقُولُ تَرْهَبُ خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَرْحَمَ‏.‏

বারাআ ইবনু ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন নিজ বিছানায় বিশ্রাম নিতে যেতেন, তখন তিনি ডান পাশের উপত নিদ্রা যেতেন এবং বলতেনঃ হে আল্লাহ! আমি আমার সত্তাকে আপনার কাছে সমর্পণ করলাম, আর আমার বিষয় ন্যস্ত করলাম আপনার দিকে এবং আমার চেহারা আপনারই দিকে ফিরিয়ে দিলাম, আপনার রাহমাতের আশায়। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি শয়নকালে এ দু’আগুলো পড়বে, আর এ রাতেই তার মৃত্যু হবে সে স্বভাব ধর্ম ইসলামের উপরই মরবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬৩)

৮০/১০. অধ্যায়ঃ
রাত্রে নিদ্রা হতে জাগ্রত হওয়ার পর দু’আ

৬৩১৬
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا ابْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ سَلَمَةَ، عَنْ كُرَيْبٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ بِتُّ عِنْدَ مَيْمُونَةَ فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَتَى حَاجَتَهُ، غَسَلَ وَجْهَهُ وَيَدَيْهِ، ثُمَّ نَامَ، ثُمَّ قَامَ فَأَتَى الْقِرْبَةَ فَأَطْلَقَ شِنَاقَهَا، ثُمَّ تَوَضَّأَ وُضُوءًا بَيْنَ وُضُوءَيْنِ لَمْ يُكْثِرْ، وَقَدْ أَبْلَغَ، فَصَلَّى، فَقُمْتُ فَتَمَطَّيْتُ كَرَاهِيَةَ أَنْ يَرَى أَنِّي كُنْتُ أَتَّقِيهِ، فَتَوَضَّأْتُ، فَقَامَ يُصَلِّي، فَقُمْتُ عَنْ يَسَارِهِ، فَأَخَذَ بِأُذُنِي فَأَدَارَنِي عَنْ يَمِينِهِ، فَتَتَامَّتْ صَلاَتُهُ ثَلاَثَ عَشْرَةَ رَكْعَةً ثُمَّ اضْطَجَعَ فَنَامَ حَتَّى نَفَخَ ـ وَكَانَ إِذَا نَامَ نَفَخَ ـ فَآذَنَهُ بِلاَلٌ بِالصَّلاَةِ، فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ، وَكَانَ يَقُولُ فِي دُعَائِهِ ‏ “‏ اللَّهُمَّ اجْعَلْ فِي قَلْبِي نُورًا، وَفِي بَصَرِي نُورًا، وَفِي سَمْعِي نُورًا، وَعَنْ يَمِينِي نُورًا، وَعَنْ يَسَارِي نُورًا، وَفَوْقِي نُورًا، وَتَحْتِي نُورًا، وَأَمَامِي نُورًا، وَخَلْفِي نُورًا، وَاجْعَلْ لِي نُورًا ‏”‏‏.‏ قَالَ كُرَيْبٌ وَسَبْعٌ فِي التَّابُوتِ‏.‏ فَلَقِيتُ رَجُلاً مِنْ وَلَدِ الْعَبَّاسِ فَحَدَّثَنِي بِهِنَّ، فَذَكَرَ عَصَبِي وَلَحْمِي وَدَمِي وَشَعَرِي وَبَشَرِي، وَذَكَرَ خَصْلَتَيْنِ‏.‏

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আমি মাইমূনাহ (রাঃ) -এর ঘরে রাত্রি অতিবাহিত করলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উঠে তাঁর প্রয়োজনাদি সেরে মুখ-হাত ধুয়ে শুয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পরে আবার জাগ্রত হয়ে পানির মশকের নিকট গিয়ে এর মুখ খুললেন। এরপর মাঝারি রকমের এমন অযূ করলেন যে, তাতে অধিক পানি লাগালেন না। অথচ পুরা ‘উযূই করলেন। তারপর তিনি সালাত আদায় করতে লাগলেন। তখন আমিও জেগে উঠলাম। তবে আমি কিছু বিলম্বে উঠলাম। এজন্য যে, আমি এটা পছন্দ করলাম না যে, তিনি আমার অনুসরণকে দেখে ফেলেন। যা হোক, আমি অযূ করলাম। তখনও তিনি দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করছিলেন। সুতরাং আমি গিয়ে তাঁর বাম পার্শ্বে দাঁড়িয়ে গেলাম। তখন তিনি আমার কান ধরে তাঁর ডান দিকে আমাকে ঘুরিয়ে নিলেন। এরপর তাঁর তেরো রাক’আত সলাত পূর্ণ হলো। তারপর তিনি আবার কাত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। এমনকি নাক ডাকতেও লাগলেন। তাঁর অভ্যাস ছিল যে, তিনি ঘুমালে নাক ডাকতেন। এরপর বিলাল (রাঃ) এসে তাঁকে জাগালেন। তখন তিনি নতুন অযূ না করেই সলাত আদায় করলেন। তাঁর দু’আর মধ্যে এ দু’আও ছিলঃ “হে আল্লাহ! আপনি আমার অন্তরে, আমার চোখে, আমার কানে, আমার ডানে-বামে, আমার উপর-নীচে, আমার সামনে-পেছনে, আমার জন্য নূর দান করুন।”

কুরায়ব (রহঃ) বলেন, এ সাতটি আমার তাবূতের মত। এরপর আমি ‘আব্বাসের জনৈক পুত্রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলাম, তিনি আমাকে এ সাতটি অঙ্গের কথা বর্ণনা করলেন এবং রগ, গোশ্‌ত, চুল ও চামড়ার উল্লেখ করলেন এবং আরো দু’টির কথা উল্লেখ করেন। [১১৭; মুসলিম ৬/২৬, হাঃ ৭৬৩, আহমাদ ২০৮৩] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৭১ , ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬৪)

৬৩১৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، سَمِعْتُ سُلَيْمَانَ بْنَ أَبِي مُسْلِمٍ، عَنْ طَاوُسٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ يَتَهَجَّدُ قَالَ ‏ “‏ اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ، أَنْتَ نُورُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ، وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ قَيِّمُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ، وَلَكَ الْحَمْدُ، أَنْتَ الْحَقُّ وَوَعْدُكَ حَقٌّ، وَقَوْلُكَ حَقٌّ، وَلِقَاؤُكَ حَقٌّ، وَالْجَنَّةُ حَقٌّ، وَالنَّارُ حَقٌّ، وَالسَّاعَةُ حَقٌّ، وَالنَّبِيُّونَ حَقٌّ، وَمُحَمَّدٌ حَقٌّ، اللَّهُمَّ لَكَ أَسْلَمْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ وَبِكَ آمَنْتُ، وَإِلَيْكَ أَنَبْتُ، وَبِكَ خَاصَمْتُ، وَإِلَيْكَ حَاكَمْتُ، فَاغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ، وَمَا أَسْرَرْتُ، وَمَا أَعْلَنْتُ، أَنْتَ الْمُقَدِّمُ وَأَنْتَ الْمُؤَخِّرُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ ـ أَوْ ـ لاَ إِلَهَ غَيْرُكَ ‏”‏‏.‏

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাহাজ্জুদের সলাতে দাঁড়াতেন, তখন বলতেনঃ হে আল্লাহ! সমস্ত প্রশংসা আপনারই জন্য, আপনি রক্ষক আসমান ও যমীনের এবং যা কিছু এগুলোর মধ্যে আছে, আপনিই তাদের নূর। আর যাবতীয় প্রশংসা শুধু আপনারই। আসমান যমীন এবং এ দু’এর মধ্যে যা আছে, এসব কিছুকে সুদৃঢ় ও কায়িম রাখার একমাত্র মালিক আপনিই। আর সমূহ প্রশংসা একমাত্র আপনারই। আপনিই সত্য, আপনার ওয়াদা সত্য, আখিরাতে আপনার সাক্ষাৎ লাভ করা সত্য, বেহেশ্‌ত সত্য, দোযখ সত্য, ক্বিয়ামাত সত্য, পয়গম্বরগণ সত্য এবং মুহাম্মাদ সত্য। হে আল্লাহ! আপনারই কাছে আত্মসমর্পণ করেছি। আমি একমাত্র আপনারই উপর ভরসা রাখি। একমাত্র আপনারই উপর ঈমান এনেছি। আপনারই দিকে ফিরে চলছি। শত্রুদের সঙ্গে আপনারই সন্তুষ্টির জন্য শত্রুতা করি। আপনারই নিকট বিচার চাই। অতএব আমার আগের পরের এবং লুক্কায়িত প্রকাশ্য গুনাহসমূহ আপনি ক্ষমা করে দিন। আপনি কোন ব্যক্তিকে অগ্রসরমান করেন, আর কোন ব্যক্তিকে পশ্চাদপদ করেন, আপনি ব্যতীত সত্যিকারের কোন মাবূদ নেই।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৭২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬৫)

৮০/১১. অধ্যায়ঃ
ঘুমানোর সময়ের তাসবীহ ও তাকবীর বলা।

৬৩১৮
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنِ ابْنِ أَبِي لَيْلَى، عَنْ عَلِيٍّ، أَنَّ فَاطِمَةَ ـ عَلَيْهِمَا السَّلاَمُ ـ شَكَتْ مَا تَلْقَى فِي يَدِهَا مِنَ الرَّحَى، فَأَتَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم تَسْأَلُهُ خَادِمًا، فَلَمْ تَجِدْهُ، فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لِعَائِشَةَ، فَلَمَّا جَاءَ أَخْبَرَتْهُ‏.‏ قَالَ فَجَاءَنَا وَقَدْ أَخَذْنَا مَضَاجِعَنَا، فَذَهَبْتُ أَقُومُ فَقَالَ ‏”‏ مَكَانَكِ ‏”‏‏.‏ فَجَلَسَ بَيْنَنَا حَتَّى وَجَدْتُ بَرْدَ قَدَمَيْهِ عَلَى صَدْرِي فَقَالَ ‏”‏ أَلاَ أَدُلُّكُمَا عَلَى مَا هُوَ خَيْرٌ لَكُمَا مِنْ خَادِمٍ، إِذَا أَوَيْتُمَا إِلَى فِرَاشِكُمَا، أَوْ أَخَذْتُمَا مَضَاجِعَكُمَا، فَكَبِّرَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، وَسَبِّحَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، وَاحْمَدَا ثَلاَثًا وَثَلاَثِينَ، فَهَذَا خَيْرٌ لَكُمَا مِنْ خَادِمٍ ‏”‏‏.‏ وَعَنْ شُعْبَةَ عَنْ خَالِدٍ عَنِ ابْنِ سِيرِينَ قَالَ التَّسْبِيحُ أَرْبَعٌ وَثَلاَثُونَ‏.‏

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একবার গম পেষার যাঁতা ঘুরানোর কারণে ফাতেমাহ (রাঃ) এর হাতে ফোস্কা পড়ে গেল। তখন তিনি একটি খাদিম চেয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর কাছে এলেন। কিন্তু তিনি তাঁকে পেলেন না। তখন তিনি আসার উদ্দেশ্যটি ‘আয়িশাহ (রাঃ) -এর নিকট ব্যক্ত করে গেলেন। এরপর তিনি যখন গৃহে ফিরলেন তখন ‘আয়িশাহ (রাঃ) এ বিষয়টি তাঁকে জানালেন। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের কাছে এমন সময় আগমন করলেন যখন আমরা বিশ্রাম গ্রহণ করেছি। তখন আমি উঠতে চাইলে তিনি বললেনঃ নিজ স্থানেই অবস্থান কর। তারপর আমাদের মাঝখানেই তিনি এমনিভাবে বসে গেলেন যে, আমি তার দু’পায়ের শীতল স্পর্শ আমার বুকে অনুভব করলাম। তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাদের এমন একটি ‘আমাল বলে দেব না, যা তোমাদের জন্য একটি খাদিমের চেয়েও অনেক অধিক উত্তম। যখন তোমরা শয্যা গ্রহণ করতে যাবে, তখন তোমারা আল্লাহু আকবর ৩৩ বার, সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আল্‌হামদু লিল্লাহ ৩৩ বার পড়বে। এটা তোমাদের জন্য একটি খাদিমের চেয়েও অনেক অধিক কল্যাণকর। ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেনঃ তাসবীহ হলো ৩৪ বার।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৭৩,ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬৬)

৮০/১২. অধ্যায়ঃ
ঘুমানোর সময় আল্লাহ্‌র আশ্রয় প্রার্থণা এবং কুরআন পাঠ।

৬৩১৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، قَالَ حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا أَخَذَ مَضْجَعَهُ نَفَثَ فِي يَدَيْهِ، وَقَرَأَ بِالْمُعَوِّذَاتِ، وَمَسَحَ بِهِمَا جَسَدَهُ‏.‏

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন বিছানায় যেতেন, তখন মুয়াওবিযাত (ফালাক ও নাস) পাঠ করতেনঃ তারপর তাঁর দু’ হাতে ফুঁক দিয়ে তা শরীরে মাসহ করতেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬৭)

৮০/১৩. অধ্যায়ঃ
বিছানা পরিষ্কার করা

৬৩২০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم”‏ إِذَا أَوَى أَحَدُكُمْ إِلَى فِرَاشِهِ فَلْيَنْفُضْ فِرَاشَهُ بِدَاخِلَةِ إِزَارِهِ، فَإِنَّهُ لاَ يَدْرِي مَا خَلَفَهُ عَلَيْهِ، ثُمَّ يَقُولُ بِاسْمِكَ رَبِّ وَضَعْتُ جَنْبِي، وَبِكَ أَرْفَعُهُ، إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِي فَارْحَمْهَا، وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ ‏”‏‏.‏ تَابَعَهُ أَبُو ضَمْرَةَ وَإِسْمَاعِيلُ بْنُ زَكَرِيَّاءَ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ‏.‏ وَقَالَ يَحْيَى وَبِشْرٌ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ سَعِيدٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏ وَرَوَاهُ مَالِكٌ وَابْنُ عَجْلاَنَ عَنْ سَعِيدٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যদি তোমাদের কোন ব্যক্তি শয্যা গ্রহণ করতে যায়, তখন সে যেন তার লুঙ্গির ভেতর দিক দিয়ে নিজ বিছানাটা ঝেড়ে নেয়। কারণ, সে জানে না যে, বিছানার উপর তার অনুপস্থিতিতে পীড়াদায়ক কোন কিছু আছে কিনা। তারপর পড়বেঃ হে আমার রব্ব! আপনারই নামে আমার শরীরটা বিছানায় রাখলাম এবং আপনারই নামে আবার উঠবো। যদি আপনি ইতোমধ্যে আমার জান কব্‌য করে নেন তা হলে, তার উপর রহম করবেন। আর যদি তা আমাকে ফিরিয়ে দেন, তবে তাকে এমনভাবে হিফাযত করবেন, যেভাবে আপনি আপনার নেক বান্দাদের হিফাযাত করে থাকেন।[৭৩৯৩; মুসলিম ৪৮/১৭, হাঃ ২৭১৪, আহমাদ ৯৫৯৫] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৭৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬৮)

৮০/১৪. অধ্যায়ঃ
মাঝ রাতের দু’আ

৬৩২১
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي عَبْدِ اللَّهِ الأَغَرِّ، وَأَبِي، سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ يَتَنَزَّلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الآخِرُ يَقُولُ مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ، مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ، وَمَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ?”‏‏‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেনঃ প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকতে আমাদের পরওয়ারদেগার আমাদের নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে ঘোষণা করতে থাকেনঃ আমার নিকট দু’আ করবে কে? আমি তার দু’আ কবুল করবো। আমার নিকট কে চাবে? আমি তাকে দান করবো। আমার কাছে কে তার গুনাহ ক্ষমা চাবে? আমি তাকে ক্ষমা করে দেবো।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৭৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৬৯)

৮০/১৫.অধ্যায়ঃ
পায়খানায় প্রবেশের দু’আ

৬৩২২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَرْعَرَةَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ صُهَيْبٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا دَخَلَ الْخَلاَءَ قَالَ “‏ اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ ‏”‏‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন পায়খানায় প্রবেশ করতেন, তখন তিনি বলতেনঃ হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে যাবতীয় পুরুষ ও স্ত্রী শয়তানদের থেকে আশ্রয় প্রার্থণা করছি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৭৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৭০)

৮০/১৬. অধ্যায়ঃ
সকাল হলে কী দু’আ পড়বে।

৬৩২৩
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بُرَيْدَةَ، عَنْ بُشَيْرِ بْنِ كَعْبٍ، عَنْ شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ سَيِّدُ الاِسْتِغْفَارِ اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ، وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي، فَاغْفِرْ لِي، فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ‏.‏ إِذَا قَالَ حِينَ يُمْسِي فَمَاتَ دَخَلَ الْجَنَّةَ ـ أَوْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ ـ وَإِذَا قَالَ حِينَ يُصْبِحُ فَمَاتَ مِنْ يَوْمِهِ ‏”‏‏.‏ مِثْلَهُ‏.‏

শাদ্দাদ ইবনু আওস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার হলোঃ “হে আল্লাহ! আপনিই আমার রব্ব। আপনি ব্যতীত আর কোন মাবূদ নেই। আপনিই আমাকে সৃষ্টি করেছেন, আর আমি আপনারই গোলাম। আর আমি আমার সাধ্য মত আপনার সঙ্গে কৃত প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর সুদৃঢ়ভাবে কায়িম আছি। আমি আমার প্রতি আপনার নি’য়ামত স্বীকার করছি এবং কৃতগুনাহসমূহকে স্বীকার করছি। সুতরাং আমাকে মাফ করে দিন। কারণ আপনি ব্যতীত মাফ করার আর কেউ নেই। আমি আমার কৃতগুনাহের মন্দ ফলাফল থেকে আপনার কাছে আশ্রয় চাচ্ছি।” যে লোক সন্ধ্যা বেলায় এ দু’আ পড়বে, আর এ রাতেই মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। রাবী বলেন, অথবা তিনি বলেছেনঃ সে হবে জান্নাতী। আর যে লোক সকালে এ দু’আ পড়বে, আর এ দিনেই মারা যাবে সেও তেমনি জান্নাতী হবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৭১)

৬৩২৪
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ، عَنْ حُذَيْفَةَ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَرَادَ أَنْ يَنَامَ قَالَ ‏”‏ بِاسْمِكَ اللَّهُمَّ أَمُوتُ وَأَحْيَا ‏”‏‏.‏ وَإِذَا اسْتَيْقَظَ مِنْ مَنَامِهِ قَالَ ‏”‏ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا، وَإِلَيْهِ النُّشُورُ ‏”‏‏.‏

হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন ঘুমাতে চাইতেন, তখন বলতেনঃ “হে আল্লাহ! আমি আপনার নামেই মরি এবং জীবিত হই।” আর তিনি যখন নিদ্রা থেকে জেগে উঠতেন তখন বলতেনঃ “আল্লাহ তা’আলারই সকল প্রশংসা যিনি আমাদের (নিদ্রা জাতীয়) ওফাত দেয়ার পর আবার নতুন জীবন দান করেছেন। আর সর্বশেষে তাঁরই কাছে আমাদের পুনরুত্থান হবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৭২)

৬৩২৫
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ، عَنْ خَرَشَةَ بْنِ الْحُرِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَخَذَ مَضْجَعَهُ مِنَ اللَّيْلِ قَالَ ‏”‏ اللَّهُمَّ بِاسْمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا ‏”‏‏.‏ فَإِذَا اسْتَيْقَظَ قَالَ ‏”‏ الْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ ‏”‏‏.‏

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন রাতে বিছানায় যেতেন তখন দু’আ পড়তেনঃ “হে আল্লাহ! আমি আপনারই নামে মরি এবং জীবিত হই।” আর যখন তিনি সজাগ হতেন তখন বলতেনঃ “সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌রই যিনি আমাদের জীবিত করেছেন, (নিদ্রা স্বরূপ) মৃত্যুর পর এবং তাঁরই কাছে অবশ্যই পুনরুত্থান সুনিশ্চিত।”(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৮০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৭৩)

৮০/১৭. অধ্যায়ঃ
সলাতের ভিতর দু’আ পাঠ

৬৩২৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، قَالَ حَدَّثَنِي يَزِيدُ، عَنْ أَبِي الْخَيْرِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، عَنْ أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّهُ قَالَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَلِّمْنِي دُعَاءً أَدْعُو بِهِ فِي صَلاَتِي‏.‏ قَالَ ‏ “‏ قُلِ اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا، وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ، وَارْحَمْنِي، إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ ‏”‏‏.‏ وَقَالَ عَمْرٌو عَنْ يَزِيدَ، عَنْ أَبِي الْخَيْرِ، إِنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو، قَالَ أَبُو بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.

আবূ বাক্‌র সিদ্দিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একবার তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর নিকট বললেন, আপনি আমাকে এমন একটি দু’আ শিখিয়ে দিন, যা দিয়ে আমি সলাতে দু’আ করব। তিনি বললেন, তুমি সালাতে পড়বেঃ “হে আল্লাহ! আমি আমার নিজের উপর অনেক অধিক যুল্‌ম করেছি। আপনি ছাড়া আমার গুনাহ মাফ করার আর কেউ নেই। অতএব আপনি আপনার পক্ষ থেকে আমাকে ক্ষমা করে দিন। আর আমার প্রতি দয়া করুন। নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল ও অতি দয়ালু।”(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৮১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৭৪)

৬৩২৭
حَدَّثَنَا عَلِيٌّ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ سُعَيْرٍ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، ‏{‏وَلاَ تَجْهَرْ بِصَلاَتِكَ وَلاَ تُخَافِتْ بِهَا‏}‏ أُنْزِلَتْ فِي الدُّعَاءِ‏.‏

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, (আল্লাহ্‌রবাণী) – “…… সালাতে স্বর উঁচু করবে না আর অতি ক্ষীণও করবে না……।” (সূরা আল-ইসরাঃ ১১০) এ আয়াতটি দু’আ সম্পর্কেই অবতীর্ণ করা হয়েছে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৭৫)

৬৩২৮
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كُنَّا نَقُولُ فِي الصَّلاَةِ السَّلاَمُ عَلَى اللَّهِ، السَّلاَمُ عَلَى فُلاَنٍ‏.‏ فَقَالَ لَنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ يَوْمٍ ‏ “‏ إِنَّ اللَّهَ هُوَ السَّلاَمُ، فَإِذَا قَعَدَ أَحَدُكُمْ فِي الصَّلاَةِ فَلْيَقُلِ التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ إِلَى قَوْلِهِ الصَّالِحِينَ‏.‏ فَإِذَا قَالَهَا أَصَابَ كُلَّ عَبْدٍ لِلَّهِ فِي السَّمَاءِ وَالأَرْضِ صَالِحٍ، أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ‏.‏ ثُمَّ يَتَخَيَّرُ مِنَ الثَّنَاءِ مَا شَاءَ ‏”‏‏.‏

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমরা সালাতে বলতামঃ ‘‘আস্সালামু আলাল্লাহ, আস্সালামু আলা ফুলানিন্।’’ তখন একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বললেনঃ আল্লাহ তা‘আলা নিজেই সালাম। সুতরাং তোমাদের কেউ যখন সালাতে বসবে, তখন সে যেন التَّحِيَّاتُ للهِ÷ إِلٰى قَوْلِهِ الصَّالِحِينَ পর্যন্ত পড়ে। সে যখন এতটুকু পড়বে তখন আসমান যমীনের আল্লাহর সব নেক বান্দাদের নিকট তা পৌঁছে যাবে। তারপর বলবে, أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدٍا عَبْدُه” وَرَسُوْلُه” তারপর হাম্দ সানা যা ,ইচ্ছে পড়তে পারবে। [৮৩১] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৭৬)

৮০/১৮. অধ্যায়ঃ
সালাতের পরে দু’আ। [২৩]

২৩ ফরয সালাতের পর পঠিতব্য দু’আ ও যিকরগুলো একাকী পড়তে হবে, দলবদ্ধভাবে নয়। কারণ, হাদীসে এ ক্ষেত্রে পঠিতব্য দু’আগুলো প্রায়ই সবই এক বচনের শব্দে এসেছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ভারত বর্ষের প্রায় সকল মুসলিম জনগণ (আলিম ও সাধারণ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কর্তৃক সালাতের পর পঠিতব্য দু’আর তালিকাটি আংশিক বা পুরোপুরি বাদ দিয়ে নিজেরাই বিভিন্ন দু’আ নির্বাচন ও সংযুক্ত করেছে। এর সাথে আরো যোগ করেছে দলবদ্ধ ও সম্মিলিত রূপ। ফলে সালাতের পরে দু’আর নামে সম্মিলিত মুনাজাতের মাধ্যমে অনেকগুলো সুন্নাত উৎখাত হয়েছে। প্রথমতঃ যে সুন্নাতটি উঠেছে সেটা হলো, ফরয সালাতের পর যে নির্দিষ্ট কিছু দু’আ ও যিকর রয়েছে এটার জ্ঞানই অধিকাংশ লোকের নেই। যার জন্য ওগুলো কণ্ঠস্থ করার তাদের সুযোগ হয়নি। ঐ সকল দু’আ ও যিকর সম্বলিত হাদীসগুলো পড়ার কিংবা ইমাম সাহেবের মাধ্যমে শোনার অবকাশ হয়নি বা নেই। এ সকল দু’আ প্রাপ্তির জন্য কয়েকটি রিফারেন্স দেয়া হলোঃ সহীহুল বুখারী, আযান পর্ব, অধ্যায়ঃ যিকর বা’দাস সালাত, মুসলিম সালাত পর্ব, অধ্যায়ঃ যিকর বা’দাস সালাত, আবূ দাউদ, অধ্যায়ঃ মা ইয়াকূলুর রাজুলু ইযা সাল্লামা, ইত্যাদি।

৬৩২৯
حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ، أَخْبَرَنَا يَزِيدُ، أَخْبَرَنَا وَرْقَاءُ، عَنْ سُمَىٍّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ،‏.‏ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ ذَهَبَ أَهْلُ الدُّثُورِ بِالدَّرَجَاتِ وَالنَّعِيمِ الْمُقِيمِ‏.‏ قَالَ ‏”‏ كَيْفَ ذَاكَ ‏”‏‏.‏ قَالَ صَلَّوْا كَمَا صَلَّيْنَا، وَجَاهَدُوا كَمَا جَاهَدْنَا، وَأَنْفَقُوا مِنْ فُضُولِ أَمْوَالِهِمْ، وَلَيْسَتْ لَنَا أَمْوَالٌ‏.‏ قَالَ ‏”‏ أَفَلاَ أُخْبِرُكُمْ بِأَمْرٍ تُدْرِكُونَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ، وَتَسْبِقُونَ مَنْ جَاءَ بَعْدَكُمْ، وَلاَ يَأْتِي أَحَدٌ بِمِثْلِ مَا جِئْتُمْ، إِلاَّ مَنْ جَاءَ بِمِثْلِهِ، تُسَبِّحُونَ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلاَةٍ عَشْرًا، وَتَحْمَدُونَ عَشْرًا، وَتُكَبِّرُونَ عَشْرًا ‏”‏‏.‏ تَابَعَهُ عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ عَنْ سُمَىٍّ وَرَوَاهُ ابْنُ عَجْلاَنَ عَنْ سُمَىٍّ وَرَجَاءِ بْنِ حَيْوَةَ‏.‏ وَرَوَاهُ جَرِيرٌ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ رُفَيْعٍ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ‏.‏ وَرَوَاهُ سُهَيْلٌ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

গরীব সাহাবীগণ বললেনঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! ধনী লোকেরা তো উচ্চমর্যাদা ও চিরস্থায়ী নি’য়ামত নিয়ে আমাদের থেকে এগিয়ে গেলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তা কেমন করে? তাঁরা বললেনঃ আমরা যে রকম সলাত আদায় করি, তাঁরাও সে রকম সলাত আদায় করেন। আমরা যেমন জিহাদ করি, তাঁরাও তেমন জিহাদ করেন এবং তাঁরাও তাদের অতিরিক্ত মাল দিয়ে সদাকাহ-খয়রাত করেন; কিন্তু আমাদের কাছে সম্পদ নেই। তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাদের একটি ‘আমাল বাতলে দেব না, যে ‘আমাল দ্বারা তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের মর্যাদা লাভ করতে পারবে, আর তোমাদের পরবর্তীদের চেয়ে এগিয়ে যেতে পারবে, আর তোমাদের মত ‘আমাল কেউ করতে পারবে না, কেবলমাত্র যারা তোমাদের মত ‘আমাল করবে তারা ব্যতীত। সে ‘আমাল হলো তোমরা প্রত্যেক সালাতের পর ১০ বার ‘সুবহানাল্লাহ’, ১০ বার ‘আলহামদু লিল্লাহ’ এবং ১০ বার ‘আল্লাহু আকবার’ পাঠ করবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৮৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৭৭)

৬৩৩০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنِ الْمُسَيَّبِ بْنِ رَافِعٍ، عَنْ وَرَّادٍ، مَوْلَى الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ قَالَ كَتَبَ الْمُغِيرَةُ إِلَى مُعَاوِيَةَ بْنِ أَبِي سُفْيَانَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُولُ فِي دُبُرِ كُلِّ صَلاَةٍ إِذَا سَلَّمَ ‏ “‏ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهْوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ، اللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ، وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ، وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ ‏”‏‏.‏ وَقَالَ شُعْبَةُ عَنْ مَنْصُورٍ قَالَ سَمِعْتُ الْمُسَيَّبَ‏.‏

মুগীরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মুগীরাহ (রাঃ) আবূ সুফ্‌ইয়ানের পুত্র মু’আবিয়াহ (রাঃ) -এর নিকট এক পত্রে লিখেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রত্যেক সালাতে সালাম ফিরানোর পর বলতেনঃ আল্লাহ ব্যতীত আর কোন মা’বূদ নেই। তিনি একক। তাঁর কোন শরীক নেই। মূলক্‌ তাঁরই, প্রশংসা তাঁরই। তিনি সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান। হে আল্লাহ্‌ আপনি কাউকে যা দান করেন তাতে বাধা দেয়ার কেউ নেই। আর আপনি যাকে কোন কিছু দিতে বিরত থাকেন তাকে তা দেয়ার মতো কেউ নেই। ধনীর ধন তাকে তোমা হতে উপকার দিতে পারে না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৭৮)

৮০/১৯. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তুমি দু’আ করবে…… (সূরা আত্‌ তাওবাহ ৯/১০৩) আর যিনি নিজেকে বাদ দিয়ে কেবল নিজের ভাই-এর জন্য দু’আ করেন

আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দু’আ করেন, হে আল্লাহ! আপনি ‘উবায়দ আবূ ‘আমিরকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! আপনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ক্বায়সের গুনাহ ক্ষমা করে দিন।

৬৩৩১
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي عُبَيْدٍ، مَوْلَى سَلَمَةَ حَدَّثَنَا سَلَمَةُ بْنُ الأَكْوَعِ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى خَيْبَرَ، قَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ أَيَا عَامِرُ لَوْ أَسْمَعْتَنَا مِنْ هُنَيْهَاتِكَ‏.‏ فَنَزَلَ يَحْدُو بِهِمْ يُذَكِّرُ‏.‏ تَاللَّهِ لَوْلاَ اللَّهُ مَا اهْتَدَيْنَا‏.‏ وَذَكَرَ شِعْرًا غَيْرَ هَذَا، وَلَكِنِّي لَمْ أَحْفَظْهُ‏.‏ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَنْ هَذَا السَّائِقُ ‏”‏‏.‏ قَالُوا عَامِرُ بْنُ الأَكْوَعِ‏.‏ قَالَ ‏”‏ يَرْحَمُهُ اللَّهُ ‏”‏‏.‏ وَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوْلاَ مَتَّعْتَنَا بِهِ، فَلَمَّا صَافَّ الْقَوْمَ قَاتَلُوهُمْ، فَأُصِيبَ عَامِرٌ بِقَائِمَةِ سَيْفِ نَفْسِهِ فَمَاتَ، فَلَمَّا أَمْسَوْا أَوْقَدُوا نَارًا كَثِيرَةً فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَا هَذِهِ النَّارُ عَلَى أَىِّ شَىْءٍ تُوقِدُونَ ‏”‏‏.‏ قَالُوا عَلَى حُمُرٍ إِنْسِيَّةٍ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ أَهْرِيقُوا مَا فِيهَا، وَكَسِّرُوهَا ‏”‏‏.‏ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَلاَ نُهَرِيقُ مَا فِيهَا وَنَغْسِلُهَا قَالَ ‏”‏ أَوْ ذَاكَ ‏”‏‏.‏

সালামাহ ইবনু আকওয়া’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ একবার আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর সঙ্গে খায়বার অভিযানে বের হলাম। সেনাবাহিনীর এক ব্যক্তি বললেনঃ ওহে ‘আমির! যদি আপনি আপনার ছোট ছোট কবিতা থেকে কিছুটা আমাদের শুনাতেন? তখন তিনি সওয়ারী থেকে নেমে হুদী গাইতে গাইতে বাহন হাঁকিয়ে নিতে শুরু করলেন। তাতে উল্লেখ করলেনঃ আল্লাহ তা’আলা না হলে আমরা হিদায়াত পেতাম না। (রাবী বলেন) এছাড়া আরও কিছু কবিতা তিনি আবৃত্তি করলেন, যা আমি স্মরণ রাখতে পারিনি। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেনঃ এ উট চালক লোকটি কে? সাথীরা বললেনঃ উনি ‘আমির ইবনু আকওয়া’। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তার উপর রহম করুন। তখন দলের একজন বললেনঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি তার দু’আয় আমাদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করলে ভাল হতো না? এরপর যখন মুজাহিদগণ কাতারবন্দী হয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন, এ সময় ‘আমির (রাঃ) তাঁর নিজের তলোয়ারের অগ্রভাগের আঘাতে আহত হলেন এবং এ আঘাতের ফলে তিনি মারা গেলেন। এদিন লোকেরা সন্ধ্যার পর (পাকের জন্য) বিভিন্নভাবে অনেক আগুন জ্বালালেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেনঃ এ সব আগুন কিসের? এসব আগুন দিয়ে তোমরা কী জ্বাল দিচ্ছ। তারা বললেনঃ আমরা গৃহপালিত গাধার মাংস জ্বাল দিচ্ছি। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ হাঁড়িতে যা আছে, তা সব ফেলে দাও এবং হাঁড়িগুলোও ভেঙ্গে ফেল। এক ব্যক্তি বললেনঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল! হাঁড়িতে যা আছে তা ফেলে দিলে এবং পাত্রগুলো ধুয়ে নিলে চলবে না? তিনি বললেনঃ তবে তাই কর।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৮৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৭৯)

৬৩৩২
حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَمْرٍو، سَمِعْتُ ابْنَ أَبِي أَوْفَى ـ رضى الله عنهما كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَتَاهُ رَجُلٌ بِصَدَقَةٍ قَالَ ‏”‏ اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى آلِ فُلاَنٍ ‏”‏‏.‏ فَأَتَاهُ أَبِي فَقَالَ ‏”‏ اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى آلِ أَبِي أَوْفَى ‏”‏‏.‏

ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) বর্ণনা করতেন, যখন কেউ কোন সদাকাহ নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর নিকট আসতো তখন তিনি দু’আ করতেনঃ হে আল্লাহ্‌! আপনি অমুকের পরিবারের উপর রহম অবতীর্ণ করেন। একবার আমার আব্বা তাঁর কাছে কিছু সদাকাহ নিয়ে এলে তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! আপনি আবূ আওফার পরিবারের উপর দয়া করুন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৮০)

৬৩৩৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ قَيْسٍ، قَالَ سَمِعْتُ جَرِيرًا، قَالَ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ أَلاَ تُرِيحُنِي مِنْ ذِي الْخَلَصَةِ ‏”‏‏.‏ وَهْوَ نُصُبٌ كَانُوا يَعْبُدُونَهُ يُسَمَّى الْكَعْبَةَ الْيَمَانِيَةَ‏.‏ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي رَجُلٌ لاَ أَثْبُتُ عَلَى الْخَيْلِ، فَصَكَّ فِي صَدْرِي فَقَالَ ‏”‏ اللَّهُمَّ ثَبِّتْهُ وَاجْعَلْهُ هَادِيًا مَهْدِيًّا ‏”‏‏.‏ قَالَ فَخَرَجْتُ فِي خَمْسِينَ مِنْ أَحْمَسَ مِنْ قَوْمِي ـ وَرُبَّمَا قَالَ سُفْيَانُ فَانْطَلَقْتُ فِي عُصْبَةٍ مِنْ قَوْمِي ـ فَأَتَيْتُهَا فَأَحْرَقْتُهَا، ثُمَّ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَاللَّهِ مَا أَتَيْتُكَ حَتَّى تَرَكْتُهَا مِثْلَ الْجَمَلِ الأَجْرَبِ‏.‏ فَدَعَا لأَحْمَسَ وَخَيْلِهَا‏.‏

জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তুমি কি যুল-খালাসাহকে ধ্বংস করে আমাকে চিন্তামুক্ত করবে? সেটা ছিল এক মূর্তি। লোকেরা এর পূজা করতো। সেটাকে বলা হতো ইয়ামানী কা’বা। আমি বললামঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি অশ্ব পৃষ্ঠে স্থির থাকতে পারি না। তখন তিনি আমাকে বুকে জোরে একটা থাবা মারলেন এবং বললেনঃ হে আল্লাহ! আপনি তাকে স্থির রাখুন এবং তাকে হিদায়াতকারী ও হিদায়াতপ্রাপ্ত বানিয়ে দিন। তখন আমি আমারই গোত্র আহমাসের পঞ্চাশ জন যোদ্ধাসহ বের হলাম। সুফ্‌ইয়ান (রহঃ) বলেন, তিনি কোন কোন সময় বলেছেনঃ আমি তোমার গোত্রের একদল যোদ্ধার মধ্যে গেলাম। তারপর আমি সেই মূর্তিটার কাছে গিয়ে সেটা জ্বালিয়ে ফেললাম। এরপর আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর কাছে এসে বললামঃ হে আল্লাহ্‌র রসূল! আল্লাহ্‌র কসম! আমি যুল-খালাসাহ্‌কে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে পাঁচড়াযুক্ত উটের মত করে আপনার কাছে এসেছি। তখন তিনি আহমাস গোত্র ও তার যোদ্ধাদের জন্য দু’আ করলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৮৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৮১)

৬৩৩৪
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ الرَّبِيعِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا، قَالَ قَالَتْ أُمُّ سُلَيْمٍ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَسٌ خَادِمُكَ‏.‏ قَالَ ‏ “‏ اللَّهُمَّ أَكْثِرْ مَالَهُ وَوَلَدَهُ، وَبَارِكْ لَهُ فِيمَا أَعْطَيْتَهُ ‏”‏‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন উম্মু সুলায়ম (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -কে বললেনঃ আনাস তো আপনারই খাদিম। তখন তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! আপনি তার সম্পদ ও সন্তানাদি বাড়িয়ে দিন এবং আপনি তাকে যা কিছু দান করেছেন, তাতে বারাকাত দিন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৮৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৮২)

৬৩৩৫
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ سَمِعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم رَجُلاً يَقْرَأُ فِي الْمَسْجِدِ فَقَالَ ‏ “‏ رَحِمَهُ اللَّهُ، لَقَدْ أَذْكَرَنِي كَذَا وَكَذَا آيَةً أَسْقَطْتُهَا فِي سُورَةِ كَذَا وَكَذَا ‏”‏‏.‏

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এক লোককে মাসজিদে কুরআন তিলাওয়াত করতে শুনলেন। তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহ তার উপর দয়া করুন। সে আমাকে অমুক অমুক আয়াত মনে করিয়ে দিয়েছে, যা আমি অমুক অমুক সূরা থেকে ভুলে গিয়েছিলাম।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৮৩)

৬৩৩৬
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ أَخْبَرَنِي سُلَيْمَانُ عَنْ أَبِي وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ قَسَمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَسْمًا فَقَالَ رَجُلٌ إِنَّ هَذِهِ لَقِسْمَةٌ مَا أُرِيدَ بِهَا وَجْهُ اللَّهِ فَأَخْبَرْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلمفَغَضِبَ حَتَّى رَأَيْتُ الْغَضَبَ فِي وَجْهِهِ وَقَالَ يَرْحَمُ اللَّهُ مُوسَى لَقَدْ أُوذِيَ بِأَكْثَرَ مِنْ هَذَا فَصَبَرَ

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গানীমতের মাল বণ্টন করে দিলে এক লোক মন্তব্য করলেনঃ এটা এমন বণ্টন যার মধ্যে আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির খেয়াল রাখা হয়নি। আমি তা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জানালে তিনি রাগান্বিত হলেন। এমনকি আমি তাঁর চেহারার মধ্যে গোস্বার চিহ্ন দেখতে পেলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহ মুসা (‘আঃ) -এর প্রতি দয়া করুন, তাঁকে এর চেয়ে বেশী কষ্ট দেয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি ধৈর্যধারণ করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৮৪)

৮০/২০. অধ্যায়ঃ দু
দু’আর মধ্যে ছন্দযুক্ত শব্দ ব্যবহার অপছন্দ করা হয়েছে ।

৬৩৩৭
يَحْيَى بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ السَّكَنِ حَدَّثَنَا حَبَّانُ بْنُ هِلَالٍ أَبُو حَبِيبٍ حَدَّثَنَا هَارُونُ الْمُقْرِئُ حَدَّثَنَا الزُّبَيْرُ بْنُ الْخِرِّيتِ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ حَدِّثْ النَّاسَ كُلَّ جُمُعَةٍ مَرَّةً فَإِنْ أَبَيْتَ فَمَرَّتَيْنِ فَإِنْ أَكْثَرْتَ فَثَلَاثَ مِرَارٍ وَلَا تُمِلَّ النَّاسَ هَذَا الْقُرْآنَ وَلَا أُلْفِيَنَّكَ تَأْتِي الْقَوْمَ وَهُمْ فِي حَدِيثٍ مِنْ حَدِيثِهِمْ فَتَقُصُّ عَلَيْهِمْ فَتَقْطَعُ عَلَيْهِمْ حَدِيثَهُمْ فَتُمِلُّهُمْ وَلَكِنْ أَنْصِتْ فَإِذَا أَمَرُوكَ فَحَدِّثْهُمْ وَهُمْ يَشْتَهُونَهُ فَانْظُرْ السَّجْعَ مِنْ الدُّعَاءِ فَاجْتَنِبْهُ فَإِنِّي عَهِدْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابَهُ لَا يَفْعَلُونَ إِلَّا ذَلِكَ يَعْنِي لَا يَفْعَلُونَ إِلَّا ذَلِكَ الِاجْتِنَابَ.

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন যে, তুমি প্রতি জুমু’আহ্‌য় লোকেদের হাদীস শোনাবে। যদি এতে তুমি ক্লান্ত না হও তবে সপ্তাহে দু’ বার। আরও অধিক করতে চাও তবে তিনবার। আরও অধিক নাসীহাত করে এ কুরআনের প্রতি মানুষের মনে বিরক্তি সৃষ্টি করো না। লোকেরা তাদের কথাবার্তায় ব্যস্ত থাকা অবস্থায় তুমি তাদের কাছে এসে তাদের নির্দেশ দেবে- আমি যেন এমন হালাতে তোমাকে না পাই। কারণ এতে তাদের কথায় বিঘ্ন সৃষ্টি হবে এবং তারা বিরক্ত হবে। বরং তুমি এ সময় নীরব থাকবে। যদি তারা আগ্রহ নিয়ে তোমাকে নাসীহাত দিতে বলে তাহলে তুমি তাদের নাসীহাত দেবে। আর তুমি দু’আর মধ্যে ছন্দযুক্ত কবিতা বর্জন করবে। কারণ আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীগণকে তা বর্জন করতে দেখেছি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৮৫)

৮০/২১. অধ্যায়ঃ
কবূল হবার দৃঢ় আশা নিয়ে দু’আ করবে। কারণ কবূল করতে আল্লাহ্‌কে বাধা দানকারী কেউ নেই।

৬৩৩৮
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِذَا دَعَا أَحَدُكُمْ فَلْيَعْزِمِ الْمَسْأَلَةَ، وَلاَ يَقُولَنَّ اللَّهُمَّ إِنْ شِئْتَ فَأَعْطِنِي‏.‏ فَإِنَّهُ لاَ مُسْتَكْرِهَ لَهُ ‏”‏‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ দু’আ করলে দু’আর সময় দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে দু’আ করবে এবং এ কথা বলবে না হে আল্লাহ! আপনার ইচ্ছে হলে আমাকে কিছু দিন। কারণ আল্লাহ্‌কে বাধ্য করার কেউ নেই।[৭৪৬৪; মুসলিম ৪৫/৩৭, হাঃ ২৬১৮] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৯৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৮৬)

৬৩৩৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لاَ يَقُولَنَّ أَحَدُكُمُ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي، اللَّهُمَّ ارْحَمْنِي، إِنْ شِئْتَ‏.‏ لِيَعْزِمِ الْمَسْأَلَةَ، فَإِنَّهُ لاَ مُكْرِهَ لَهُ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কখনো এ কথা বলবে না যে, হে আল্লাহ! আপনার ইচ্ছে হলে আমাকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! আপনার ইচ্ছে হলে আমাকে দয়া করুন। বরং দৃঢ় আশা নিয়ে দু’আ করবে। কারণ আল্লাহ্‌কে বাধ্য করার কেউ নেই।[৭৪৭৭; মুসলিম ৪৮/৩, হাঃ ২৬৭৯, আহমাদ ৯৯৭৫] আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৮৭)

৮০/২২. অধ্যায়ঃ
তাড়াহুড়া না করলে বান্দার দু’আ কবূল হয়ে থাকে।

৬৩৪০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي عُبَيْدٍ، مَوْلَى ابْنِ أَزْهَرَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ يُسْتَجَابُ لأَحَدِكُمْ مَا لَمْ يَعْجَلْ يَقُولُ دَعَوْتُ فَلَمْ يُسْتَجَبْ لِي ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের প্রত্যেক ব্যক্তির দু’আ কবূল হয়ে থাকে। যদি সে তাড়াহুড়া না করে আর বলে যে, আমি দু’আ করলাম। কিন্তু আমার দু’আ তো কবূল হলো না।[মুসলিম ৪৮/২৪, হাঃ ২৭৩৫, আহমাদ ১৩০০৭]আধুনিক প্রকাশনী- ৫৮৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৭৮৮)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]