সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস কোমল হওয়া অধ্যায় ২য় ভাগ হাদিস নং ৬৪৫২– ৬৫০০

৮১/১৭. অধ্যায় :
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন ।

৬৪৫২
أَبُو نُعَيْمٍ بِنَحْوٍ مِنْ نِصْفِ هَذَا الْحَدِيثِ حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ ذَرٍّ حَدَّثَنَا مُجَاهِدٌ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ كَانَ يَقُولُ أَاللهِ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ إِنْ كُنْتُ لأعْتَمِدُ بِكَبِدِي عَلَى الأَرْضِ مِنْ الْجُوعِ وَإِنْ كُنْتُ لأشُدُّ الْحَجَرَ عَلَى بَطْنِي مِنْ الْجُوعِ وَلَقَدْ قَعَدْتُ يَوْمًا عَلَى طَرِيقِهِمْ الَّذِي يَخْرُجُونَ مِنْهُ فَمَرَّ أَبُو بَكْرٍ فَسَأَلْتُهُ عَنْ آيَةٍ مِنْ كِتَابِ اللهِ مَا سَأَلْتُهُ إِلاَّ لِيُشْبِعَنِي فَمَرَّ وَلَمْ يَفْعَلْ ثُمَّ مَرَّ بِي عُمَرُ فَسَأَلْتُهُ عَنْ آيَةٍ مِنْ كِتَابِ اللهِ مَا سَأَلْتُهُ إِلاَّ لِيُشْبِعَنِي فَمَرَّ فَلَمْ يَفْعَلْ ثُمَّ مَرَّ بِي أَبُو الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم فَتَبَسَّمَ حِينَ رَآنِي وَعَرَفَ مَا فِي نَفْسِي وَمَا فِي وَجْهِي ثُمَّ قَالَ يَا أَبَا هِرٍّ قُلْتُ لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْحَقْ وَمَضَى فَتَبِعْتُهُ فَدَخَلَ فَاسْتَأْذَنَ فَأَذِنَ لِي فَدَخَلَ فَوَجَدَ لَبَنًا فِي قَدَحٍ فَقَالَ مِنْ أَيْنَ هَذَا اللَّبَنُ قَالُوا أَهْدَاهُ لَكَ فُلاَنٌ أَوْ فُلاَنَةُ قَالَ أَبَا هِرٍّ قُلْتُ لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْحَقْ إِلَى أَهْلِ الصُّفَّةِ فَادْعُهُمْ لِي قَالَ وَأَهْلُ الصُّفَّةِ أَضْيَافُ الإِسْلاَمِ لاَ يَأْوُونَ إِلَى أَهْلٍ وَلاَ مَالٍ وَلاَ عَلَى أَحَدٍ إِذَا أَتَتْهُ صَدَقَةٌ بَعَثَ بِهَا إِلَيْهِمْ وَلَمْ يَتَنَاوَلْ مِنْهَا شَيْئًا وَإِذَا أَتَتْهُ هَدِيَّةٌ أَرْسَلَ إِلَيْهِمْ وَأَصَابَ مِنْهَا وَأَشْرَكَهُمْ فِيهَا فَسَاءَنِي ذَلِكَ فَقُلْتُ وَمَا هَذَا اللَّبَنُ فِي أَهْلِ الصُّفَّةِ كُنْتُ أَحَقُّ أَنَا أَنْ أُصِيبَ مِنْ هَذَا اللَّبَنِ شَرْبَةً أَتَقَوَّى بِهَا فَإِذَا جَاءَ أَمَرَنِي فَكُنْتُ أَنَا أُعْطِيهِمْ وَمَا عَسَى أَنْ يَبْلُغَنِي مِنْ هَذَا اللَّبَنِ وَلَمْ يَكُنْ مِنْ طَاعَةِ اللهِ وَطَاعَةِ رَسُولِهِ صلى الله عليه وسلم بُدٌّ فَأَتَيْتُهُمْ فَدَعَوْتُهُمْ فَأَقْبَلُوا فَاسْتَأْذَنُوا فَأَذِنَ لَهُمْ وَأَخَذُوا مَجَالِسَهُمْ مِنْ الْبَيْتِ قَالَ يَا أَبَا هِرٍّ قُلْتُ لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ خُذْ فَأَعْطِهِمْ قَالَ فَأَخَذْتُ الْقَدَحَ فَجَعَلْتُ أُعْطِيهِ الرَّجُلَ فَيَشْرَبُ حَتَّى يَرْوَى ثُمَّ يَرُدُّ عَلَيَّ الْقَدَحَ فَأُعْطِيهِ الرَّجُلَ فَيَشْرَبُ حَتَّى يَرْوَى ثُمَّ يَرُدُّ عَلَيَّ الْقَدَحَ فَيَشْرَبُ حَتَّى يَرْوَى ثُمَّ يَرُدُّ عَلَيَّ الْقَدَحَ حَتَّى انْتَهَيْتُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ رَوِيَ الْقَوْمُ كُلُّهُمْ فَأَخَذَ الْقَدَحَ فَوَضَعَهُ عَلَى يَدِهِ فَنَظَرَ إِلَيَّ فَتَبَسَّمَ فَقَالَ أَبَا هِرٍّ قُلْتُ لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ بَقِيتُ أَنَا وَأَنْتَ قُلْتُ صَدَقْتَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ اقْعُدْ فَاشْرَبْ فَقَعَدْتُ فَشَرِبْتُ فَقَالَ اشْرَبْ فَشَرِبْتُ فَمَا زَالَ يَقُولُ اشْرَبْ حَتَّى قُلْتُ لاَ وَالَّذِي بَعَثَكَ بِالْحَقِّ مَا أَجِدُ لَهُ مَسْلَكًا قَالَ فَأَرِنِي فَأَعْطَيْتُهُ الْقَدَحَ فَحَمِدَ اللهَ وَسَمَّى وَشَرِبَ الْفَضْلَةَ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলতেন : আল্লাহ্‌র কসম! যিনি ব্যতীত কোন মাবূদ নেই। আমি ক্ষুধার তাড়নায় উপুড় হয়ে পড়ে থাকতাম। আর কখনও পেটে পাথর বেঁধে রাখতাম। একদিন আমি (ক্ষুধার যন্ত্রণায় বাধ্য হয়ে) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও সাহাবীগণের রাস্তায় বসে থাকলাম। আবূ বকর (রাঃ) যাচ্ছিলেন। আমি কুরআনের একটা আয়াত সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। আমি তাঁকে প্রশ্ন করলাম এই উদ্দেশ্যে যে, তিনি আমাকে পরিতৃপ্ত করে খাওয়াবেন। কিন্তু তিনি কিছু করলেন না। অতঃপর ‘উমার (রাঃ) যাচ্ছিলেন। আমি তাঁকে কুরআনের একটি আয়াত সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। আমি প্রশ্ন করলাম এ উদ্দেশ্যে যে, তিনি আমাকে পরিতৃপ্ত করে খাওয়াবেন। কিন্তু তিনি চলে গেলেন। কিছু করলেন না। অতঃপর আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাচ্ছিলেন। তিনি আমাকে দেখেই মুচ্‌কি হাসলেন এবং আমার প্রাণের এবং আমার চেহারার অবস্থা কী তিনি তা আঁচ করতে পারলেন। অতঃপর বললেন, হে আবূ হির! আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি হাযির, তিনি বললেনঃ তুমি আমার সঙ্গে চল। এ বলে তিনি চললেন, আমিও তাঁর অনুসরণ করলাম। তিনি ঘরে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন এবং আমাকে প্রবেশের অনুমতি দিলেন। তারপর তিনি ঘরে প্রবেশ করে একটি পেয়ালায় কিছু দুধ পেলেন। তিনি বললেনঃ এ দুধ কোত্থেকে এসেছে? তাঁরা বললেন, এটা আপনাকে অমুক পুরুষ বা অমুক মহিলা হাদিয়া দিয়েছেন। তিনি বললেনঃ হে আবূ হির! আমি বললাম, আমি হাযির হে আল্লাহ্‌র রসূল! তুমি সুফ্ফাবাসীদের কাছে যাও এবং তাদেরকে আমার কাছে ডেকে নিয়ে এসো। রাবী বলেন, সুফ্ফাবাসীরা ছিলেন ইসলামের মেহমান। তাদের ছিল না কোন পরিবার, ছিল না কোন সম্পদ এবং কারো উপর ভরসা করার মত তাদের কেউ ছিল না। যখন তাঁর কাছে কোন সদাকাহ আসত তখন তিনি তা তাদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। তিনি এর থেকে কিছুই গ্রহণ করতেন না। আর যখন কোন হাদিয়া আসত, তখন তার কিছু অংশ তাদেরকে দিয়ে দিতেন এবং নিজের জন্য কিছু রাখতেন। এর মধ্যে তাদেরকে শরীক করতেন। এ আদেশ শুনে আমি নিরাশ হয়ে গেলাম। মনে মনে ভাবলাম যে, এ সামান্য দুধ দ্বারা সুফ্ফাবাসীদের কী হবে? এ সামান্য দুধ আমার জন্যই যথেষ্ট হতো। এটা পান করে আমার শরীরে শক্তি আসত। যখন তাঁরা এসে গেলেন, তখন তিনি আমাকে আদেশ দিলেন, আমিই যেন তাঁদেরকে দেই। আর আমার আশা রইল না যে, এ দুধ থেকে আমি কিছু পাব। কিন্তু আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশ না মেনে কোন উপায় নেই। তাই তাঁদের কাছে গিয়ে তাঁদেরকে ডেকে আনলাম। তাঁরা এসে ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি চাইলে তিনি অনুমতি দিলেন। তাঁরা এসে আসন গ্রহণ করলেন। তিনি বললেনঃ হে আবূ হির! আমি বললাম, আমি হাযির হে আল্লাহ্‌র রসূল! তিনি বললেন, তুমি পেয়ালাটি নাও আর তাদেরকে দাও। আমি পেয়ালা নিয়ে একজনকে দিলাম। তিনি তা তৃপ্ত হয়ে পান করে পেয়ালাটি আমাকে ফিরিয়ে দিলেন। আমি আরেকজনকে পেয়ালাটি দিলাম। তিনিও তৃপ্ত হয়ে পান করে পেয়ালাটি আমাকে ফিরিয়ে দিলেন। এমন কি আমি এভাবে দিতে দিতে শেষতক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পর্যন্ত পৌছলাম। তাঁরা সবাই তৃপ্ত হলেন। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পেয়ালাটি নিজ হাতে নিয়ে রেখে মৃদু হাসলেন। আর বললেনঃ হে আবূ হির! আমি বললাম, আমি হাযির, হে আল্লাহ্‌র রসূল! তিনি বললেনঃ এখন তো আমি আছি আর তুমি আছ। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি ঠিক বলেছেন। তিনি বললেন, এখন তুমি বস এবং পান কর। তখন আমি বসে পান করলাম। তিনি বললেন, তুমি আরও পান কর। আমি আরও পান করলাম। তিনি আমাকে পান করার নির্দেশ দিতেই থাকলেন। এমন কি আমি বললাম যে, আর না। যে সত্তা আপনাকে সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন, তাঁর কসম। আমার পেটে আর জায়গা পাচ্ছি না। তিনি বললেন, তাহলে আমাকে দাও। আমি পেয়ালাটি তাঁকে দিলাম। তিনি আল্লাহ্‌র প্রশংসা করলেন ও বিসমিল্লাহ্ বলে বাকী পান করলেন। [২০](আধুনিক প্রকাশনী- ৬০০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০০৮)

[২০] হাদীসটি হতে জানা যায় : (১) বসে পান করা মুস্তাহাব । (২) মেহমানদের কিছু পান করানোর সময় খাদিম নিজে পরিবেশন না করে পাত্র তাদের হাতে এভাবে ছেড়ে দেয়া যে, একজনের পান করা শেষ হলে সে তার পাশের সাথীকে পান করতে দিবে, এটা উচিত নয় । কেননা এটা মেহমানকে অসম্মানের শামিল । (৩) এর মধ্যে বিরাট মু’জিযা নিহিত রয়েছে । (৪) অভাব অনটনের কথা প্রকাশ করা ও ঘোষনা দেয়া থেকে তা গোপন রাখা বা এর ইঙ্গিত দেয়া শ্রেষ্ঠতর । (৫) রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উদারতা ও তাঁর নিজের, তাঁর খাদিমের ও তাঁর পরিবার পরিজনের স্বার্থ ত্যাগ । (৬) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর যুগে কিছু কিছু সাহাবীর অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল সঙ্কটময় । (৭) আহলে সুফ্ফার ফযীলাত । (৮) আমন্ত্রিত ব্যক্তি আমন্ত্রণকারীর বাড়ীতে এসে বিনা অনুমতিতে যেন বাড়ীতে প্রবেশ না করে । (৯) আবু বাক্‌র (রাঃ) ও উমার (রাঃ); নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সর্ব সময়ের সহযোগী-এর প্রমাণ বহন করে । (১০) বড়রা তাদের খাদেমের উপনাম ধরে ডাকতে পারে । (১১) কাউকে ডাকার সময় নাম সংক্ষিপ্ত করা যায় । যেমন আবু হুরাইরাহ্ (রাঃ)-কে রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইয়া আবা হির্ বলে ডাকতেন । (১২) নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাদীয়া বা উপঢৌকন গ্রহন করতেন এবং খেতেন । কিন্তু সাদাকা খেতেন না বরং তা হক্বদারদের মাঝে বন্টন করে দিতেন । (১৩) আহবানকারীর ডাকে সাড়া দিতে সম্বোধিত ব্যক্তি ‘লাব্বাইকা’ বলা । (১৪) খাদিমকে মালিকের ঘরে প্রবেশকালে অনুমতি নিতে হবে । (১৫) পরিবেশনকারী শেষে পান করবে আর বাড়ীর মালিক তার পরে পান করবে । (ফাতহুল বারী)

৬৪৫৩
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا قَيْسٌ قَالَ سَمِعْتُ سَعْدًا يَقُولُ إِنِّي لأوَّلُ الْعَرَبِ رَمَى بِسَهْمٍ فِي سَبِيلِ اللهِ وَرَأَيْتُنَا نَغْزُو وَمَا لَنَا طَعَامٌ إِلاَّ وَرَقُ الْحُبْلَةِ وَهَذَا السَّمُرُ وَإِنَّ أَحَدَنَا لَيَضَعُ كَمَا تَضَعُ الشَّاةُ مَا لَهُ خِلْطٌ ثُمَّ أَصْبَحَتْ بَنُو أَسَدٍ تُعَزِّرُنِي عَلَى الإِسْلاَمِ خِبْتُ إِذًا وَضَلَّ سَعْيِي.

কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

কায়স (রহঃ) বর্ণনা করেন, আমি সা‘দ ইব্‌নু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, আমিই সর্বপ্রথম আরব যে আল্লাহ্‌র পথে তীর নিক্ষেপ করেছে। যুদ্ধের সময় আমাদের অবস্থা দেখেছি যে হুবলা পাতা ও ঝাউগাছ ব্যতীত খাবারের কিছুই ছিল না। আমাদের মল বকরির মলের মত হয়ে গিয়েছিল। যা ছিল সম্পূর্ন শুক্‌নো। আর এখন আবার বনূ আসাদ এসে ইসলামের উপর চলার জন্য আমাকে তিরস্কার করছে। এখন আমি শংকিত যে আমার পূর্বেকার চেষ্টা সাধনা ব্যর্থ হয়ে গেল।[মুসলিম পর্ব ৫৩/হাঃ ২৯৬৬, আহমাদ ১৪৯৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০০৯)

৬৪৫৪
عُثْمَانُ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ الأَسْوَدِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ مَا شَبِعَ آلُ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم مُنْذُ قَدِمَ الْمَدِينَةَ مِنْ طَعَامِ بُرٍّ ثَلاَثَ لَيَالٍ تِبَاعًا حَتَّى قُبِضَ.

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আয়িশাহ (রাঃ) বর্ণনা করেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবারবর্গ মদিনায় আসার পর থেকে এক নাগাড়ে তিন দিন গমের রুটি পরিতৃপ্ত হয়ে খাননি। এবং এ অবস্থায় তাঁর ওফাত হয়ে গেল। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০১০)

৬৪৫৫
إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ هُوَ الأَزْرَقُ عَنْ مِسْعَرِ بْنِ كِدَامٍ عَنْ هِلاَلٍ الْوَزَّانِ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ مَا أَكَلَ آلُ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم أَكْلَتَيْنِ فِي يَوْمٍ إِلاَّ إِحْدَاهُمَا تَمْرٌ.

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবারবর্গ একদিনে দু’বেলা খানা খেয়ে একবেলা শুধু খুর্মা খেয়েই কাটিয়ে দিতেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬০০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০১১)

৬৪৫৬
أَحْمَدُ ابْنُ أَبِي رَجَاءٍ حَدَّثَنَا النَّضْرُ عَنْ هِشَامٍ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ فِرَاشُ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ أَدَمٍ وَحَشْوُهُ مِنْ لِيفٍ.

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিছানা ছিল চামড়ার তৈরী এবং তার ভেতরে ছিল খেজুরের ছাল (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০১২)

৬৪৫৭
هُدْبَةُ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا هَمَّامُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا قَتَادَةُ قَالَ كُنَّا نَأْتِي أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ وَخَبَّازُهُ قَائِمٌ وَقَالَ كُلُوا فَمَا أَعْلَمُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَأَى رَغِيفًا مُرَقَّقًا حَتَّى لَحِقَ بِاللهِ وَلاَ رَأَى شَاةً سَمِيطًا بِعَيْنِهِ قَطُّ.

ক্বাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ)-এর কাছে এমন অবস্থায় গেলাম যে, তাঁর পাচক (মেহমানদারির জন্য) ছিল দাঁড়ানো। আনাস (রাঃ) বললেন, আপনারা খান। আমি জানি না, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইন্তিকালের সময় পর্যন্ত পাতলা রুটি দেখেছেন কিনা। আর তিনি কখনও ভুনা বকরির গোশত্‌ দেখেননি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬০০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০১৩)

৬৪৫৮
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا هِشَامٌ أَخْبَرَنِي أَبِي عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ يَأْتِي عَلَيْنَا الشَّهْرُ مَا نُوقِدُ فِيهِ نَارًا إِنَّمَا هُوَ التَّمْرُ وَالْمَاءُ إِلاَّ أَنْ نُؤْتَى بِاللُّحَيْمِ.

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমাদের উপর দিয়ে মাস কেটে যেত, আমরা এর মধ্যে ঘরে (রান্নার) আগুন জ্বালাতাম না। আমরা কেবল খুরমা ও পানির উপর চলতাম। তবে যৎ সামান্য গোশত্‌ আমাদের নিকট এসে যেত। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০১৪)

৬৪৫৯
عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْأُوَيْسِيُّ حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي حَازِمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ يَزِيدَ بْنِ رُومَانَ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّهَا قَالَتْ لِعُرْوَةَ ابْنَ أُخْتِي إِنْ كُنَّا لَنَنْظُرُ إِلَى الْهِلاَلِ ثَلاَثَةَ أَهِلَّةٍ فِي شَهْرَيْنِ وَمَا أُوقِدَتْ فِي أَبْيَاتِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَارٌ فَقُلْتُ مَا كَانَ يُعِيشُكُمْ قَالَتْ الأَسْوَدَانِ التَّمْرُ وَالْمَاءُ إِلاَّ أَنَّهُ قَدْ كَانَ لِرَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم جِيرَانٌ مِنْ الأَنْصَارِ كَانَ لَهُمْ مَنَائِحُ وَكَانُوا يَمْنَحُونَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم مِنْ أَبْيَاتِهِمْ فَيَسْقِينَاهُ.

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি একবার ‘উরওয়াহ (রাঃ)-কে বললেন, বোন পুত্র! আমরা দু’মাসে তিনটি নতুন চাঁদ দেখতাম। কিন্তু (এর মধ্যে) আল্লাহ্‌র রাসূলের ঘরগুলোতে আগুন জ্বলত না। আমি বলললাম, আপনারা কিভাবে দিনাতিপাত করতেন? তিনি বললেন, কালো দু’টি বস্তু। খেজুর আর পানি। অবশ্য রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কিছু আনসার প্রতিবেশীর কতকগুলো দুধেল প্রাণী ছিল। তারা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তা দিত। আর আমরা তাই পান করতাম। [২১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০১৫)

[২১] ৬৪৪৯ হতে ৬৪৫৯ নং হাদীসগুলো ধনীদের জন্য সাবধানবাণী ও দরিদ্রদের জন্য সুসংবাদবাহী । ধনী ব্যক্তিরা যেন মনে না করেন যে, আল্লাহ্‌ তাদের প্রতি খুব সন্তুষ্ট, এজন্য তাদেরকে ধনী বানিয়ে দিয়েছেন । কারণ একজন মুসলিমের জন্য দুনিয়া লাভ করা মূখ্য বিষয় নয় বরং মূখ্য বিষয় হচ্ছে আখেরাতে জান্নাত লাভ করা । আর আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সাহাবীদের চেয়ে আল্লাহ্‌র নিকট অধিক প্রিয় আর কে হবে? কিন্তু তাঁরা ছিলেন অত্যন্ত গরীব । এ রকম গরীব ঈমানদার লোক দিয়েই জান্নাতকে পূর্ণ করা হবে । (ফাতহুল বারী)

৬৪৬০
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عُمَارَةَ عَنْ أَبِي زُرْعَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم اللهُمَّ ارْزُقْ آلَ مُحَمَّدٍ قُوتًا.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু‘আ করতেন : হে আল্লাহ্‌! মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবারবর্গকে জীবিকা দান কর।[মুসলিম ১২/৪৩, হাঃ ১০৫৫, আহমাদ ১০২৪১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০১৬)

৮১/১৮. অধ্যায় :
আমলে মাঝারি পন্থা গ্রহণ এবং নিয়মিত কাজ সম্পাদন

৬৪৬১
عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا أَبِي عَنْ شُعْبَةَ عَنْ أَشْعَثَ قَالَ سَمِعْتُ أَبِي قَالَ سَمِعْتُ مَسْرُوقًا قَالَ سَأَلْتُ عَائِشَةَ أَيُّ الْعَمَلِ كَانَ أَحَبَّ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ الدَّائِمُ قَالَ قُلْتُ فَأَيَّ حِينٍ كَانَ يَقُومُ قَالَتْ كَانَ يَقُومُ إِذَا سَمِعَ الصَّارِخَ.

মাসরূক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে কোন্‌ ‘আমাল সবচেয়ে বেশি প্রিয় ছিল? তিনি বললেন, যা সর্বদা নিয়মিত করা হয়। আমি বললাম, তিনি রাতে কখন উঠতেন? তিনি বললেন, তিনি উঠতেন যখন তিনি মোরগের ডাক শুনতেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬০১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০১৭)

৬৪৬২
قُتَيْبَةُ عَنْ مَالِكٍ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّهَا قَالَتْ كَانَ أَحَبُّ الْعَمَلِ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم الَّذِي يَدُومُ عَلَيْهِ صَاحِبُهُ.

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় ছিল সে ‘আমাল যা সব সময় নিয়মিত করা হয়। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০১২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০১৮)

৬৪৬৩
آدَمُ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم لَنْ يُنَجِّيَ أَحَدًا مِنْكُمْ عَمَلُهُ قَالُوا وَلاَ أَنْتَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ وَلاَ أَنَا إِلاَّ أَنْ يَتَغَمَّدَنِي اللهُ بِرَحْمَةٍ سَدِّدُوا وَقَارِبُوا وَاغْدُوا وَرُوحُوا وَشَيْءٌ مِنْ الدُّلْجَةِ وَالْقَصْدَ الْقَصْدُ تَبْلُغُوا.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কস্মিনকালেও তোমাদের কাউকে তার নিজের ‘আমাল কক্ষনো নাজাত দিবে না। তাঁরা বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনাকেও না? তিনি বললেনঃ আমাকেও না। তবে আল্লাহ্‌ আমাকে তাঁর রহমত দিয়ে আবৃত রেখেছেন। তোমরা যথারীতি ‘আমাল করে নৈকট্য লাভ কর। তোমরা সকালে, বিকালে এবং রাতের শেষভাগে আল্লাহ্‌র ইবাদাত কর। মধ্য পন্থা অবলম্বন কর। মধ্য পন্থা তোমাদেরকে লক্ষ্যে পৌঁছাবে। [২২][৩৯; মুসলিম ৫০/১৭, হাঃ ২৮১৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০১৯)

[২২] হাদীসটি প্রমাণ করে যে, আল্লাহ্‌র রহমত ব্যতীত শুধু আমলের দ্বারা কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না । (ফাতহুল বারী)

৬৪৬৪
عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ سَدِّدُوا وَقَارِبُوا وَاعْلَمُوا أَنْ لَنْ يُدْخِلَ أَحَدَكُمْ عَمَلُهُ الْجَنَّةَ وَأَنَّ أَحَبَّ الأَعْمَالِ إِلَى اللهِ أَدْوَمُهَا وَإِنْ قَلَّ.

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা ঠিকভাবে নিষ্ঠাসহ কাজ করে নৈকট্য লাভ কর। জেনে রেখ, তোমাদের কাউকে তার ‘আমাল জান্নাতে প্রবেশ করাবে না এবং আল্লাহ্‌র কাছে সর্বাধিক প্রিয় ‘আমাল হলো, যা সদাসর্বদা নিয়মিত করা হয় যদিও তা অল্প হয়। [৬৪৬৭; মুসলিম ৫০/১৭, হাঃ ২৮১৮, আহমাদ ২৪৯৯৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০২০)

৬৪৬৫
مُحَمَّدُ بْنُ عَرْعَرَةَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّهَا قَالَتْ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَيُّ الأَعْمَالِ أَحَبُّ إِلَى اللهِ قَالَ أَدْوَمُهَا وَإِنْ قَلَّ وَقَالَ اكْلَفُوا مِنْ الأَعْمَالِ مَا تُطِيقُونَ.

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, আল্লাহ্‌র কাছে সর্বাধিক প্রিয় ‘আমাল কি? তিনি বললেনঃ যে ‘আমাল সদাসর্বদা নিয়মিত করা হয়। যদিও তা অল্প হয়। তিনি আরও বললেন, তোমরা সাধ্যের অতীত কাজ নিজের উপর চাপিয়ে নিও না। [২৩] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০১৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০২১)

[২৩] এখানে পরস্পর কয়েকটি হাদীসে সৎ আমলের ধারাবাহিকতা বা স্থায়ীত্বের উপর উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে, যদিও সৎ আমলগুলো অল্প হয় । (ফাতহুল বারী)

৬৪৬৬
عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَلْقَمَةَ قَالَ سَأَلْتُ أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ عَائِشَةَ قُلْتُ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ كَيْفَ كَانَ عَمَلُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هَلْ كَانَ يَخُصُّ شَيْئًا مِنْ الأَيَّامِ قَالَتْ لاَ كَانَ عَمَلُهُ دِيمَةً وَأَيُّكُمْ يَسْتَطِيعُ مَا كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَسْتَطِيعُ.

আলক্বামাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ‘আমাল কেমন ছিল? তিনি কি কোন ইবাদাতের জন্য কোন দিন নির্দিষ্ট করতেন? তিনি বললেন, না। তাঁর ‘আমাল ছিল সার্বক্ষনিক ও নিয়মিত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা করতে পারতেন, তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে যে তা করতে পারবে? (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০১৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০২২)

৬৪৬৭
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الزِّبْرِقَانِ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ عَائِشَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ سَدِّدُوا وَقَارِبُوا وَأَبْشِرُوا فَإِنَّهُ لاَ يُدْخِلُ أَحَدًا الْجَنَّةَ عَمَلُهُ قَالُوا وَلاَ أَنْتَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ وَلاَ أَنَا إِلاَّ أَنْ يَتَغَمَّدَنِي اللهُ بِمَغْفِرَةٍ وَرَحْمَةٍ قَالَ أَظُنُّهُ عَنْ أَبِي النَّضْرِ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ عَائِشَةَ وَقَالَ عَفَّانُ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ عَنْ عَائِشَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم سَدِّدُوا وَأَبْشِرُوا قَالَ مُجَاهِدٌ قَوْلاً سَدِيدًا وَسَدَادًا صِدْقًا.

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেনঃ তোমরা ঠিক ঠিকভাবে নিয়মিত কাজ করে যাও। আর সুসংবাদ নাও। কিন্তু (জেনে রেখো) কারো ‘আমাল তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে না। তাঁরা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাকেও না? তিনি বললেনঃ আমাকেও না। তবে আল্লাহ্ আমাকে তাঁর ক্ষমা ও রহমতে আবৃত রেখেছেন। তিনি বলেছেন, এটি আমি ধারণা করছি আবূ নায্র….. ‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। ‘আফ্ফান (রহ.)….. ‘আয়িশাহ (রাঃ)…..নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তোমরা যথাযথ ‘আমাল কর আর সুসংবাদ নাও। মুজাহিদ বলেছেন, سَدِيدًا وَسَدَادًا শব্দগুলোর অর্থ সত্য। [৬৪৬৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০২৩)

৬৪৬৮
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُلَيْحٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ هِلاَلِ بْنِ عَلِيٍّ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ سَمِعْتُهُ يَقُولُ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَلَّى لَنَا يَوْمًا الصَّلاَةَ، ثُمَّ رَقِيَ الْمِنْبَرَ فَأَشَارَ بِيَدِهِ قِبَلَ قِبْلَةِ الْمَسْجِدِ، فَقَالَ ‏ “‏ قَدْ أُرِيتُ الآنَ ـ مُنْذُ صَلَّيْتُ لَكُمُ الصَّلاَةَ ـ الْجَنَّةَ وَالنَّارَ مُمَثَّلَتَيْنِ فِي قُبُلِ هَذَا الْجِدَارِ، فَلَمْ أَرَ كَالْيَوْمِ فِي الْخَيْرِ وَالشَّرِّ، فَلَمْ أَرَ كَالْيَوْمِ فِي الْخَيْرِ وَالشَّرِّ ‏”‏‏.‏

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন আমাদেরকে নিয়ে সলাত আদায় করলেন। এরপর মিম্বারে উঠলেন এবং মাসজিদের কিবলার দিকে হাত দিয়ে ইংগিত করে বললেনঃ এইমাত্র যখন আমি তোমাদের নিয়ে সলাত আদায় করছিলাম, তখন এ দেয়ালের সামনে আমাকে জান্নাত ও জাহান্নাম দেখানো হলো। আমি অদ্যকার ন্যায় ভাল ও মন্দ আর কোন দিন দেখিনি। কথাটি দু’বার বললেন। [২৪](আধুনিক প্রকাশনী- ৬০১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০২৪)

[২৪] আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মতই রক্ত মাংসের মানুষ হওয়া সত্ত্বেও তিনি মানুষকে যে সত্যের দিকে আহবান জানাতেন তা তাঁকে হর হামেশাই দেখানো হত । ফেরেশতাদের শ্রেষ্ঠ জিবরীল তাঁর কাছে সব সময় আসতেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জান্নাত-জাহান্নাম দেখানো হত । তদুপরি তাঁকে সাত আসমানের উপরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তিনি পূর্ববর্তী অনেক নাবীকে দেখেছেন, পরকালের বহু দৃশ্যাবলী তাঁকে দেখানো হয়েছে, তাঁকে জান্নাতী খাবারও খাওয়ানো হয়েছে ।

৮১/১৯. অধ্যায় :
ভয়ের সঙ্গে আশা রাখা ।

সুফ্ইয়ান (রহঃ) বলেন, কুরআনের মধ্যে আমার কাছে এত্থেকে কঠিন আয়াত দ্বিতীয়টি নেই : তাওরাত, ইঞ্জিল আর তোমাদের রবের নিকট হতে যা তোমাদের প্রতি নাযিল হয়েছে তার বিধি-বিধান প্রতিষ্ঠিত না করা পর্যন্ত তোমরা কোন ভিত্তির উপরই দণ্ডায়মান নও । (সূরাহ মায়িদাহ ৫/৬৮)

৬৪৬৯
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبِي عَمْرٍو عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُولُ إِنَّ اللهَ خَلَقَ الرَّحْمٰةَ يَوْمَ خَلَقَهَا مِائَةَ رَحْمَةٍ فَأَمْسَكَ عِنْدَهُ تِسْعًا وَتِسْعِينَ رَحْمَةً وَأَرْسَلَ فِي خَلْقِهِ كُلِّهِمْ رَحْمَةً وَاحِدَةً فَلَوْ يَعْلَمُ الْكَافِرُ بِكُلِّ الَّذِي عِنْدَ اللهِ مِنْ الرَّحْمٰةِ لَمْ يَيْئَسْ مِنْ الْجَنَّةِ وَلَوْ يَعْلَمُ الْمُؤْمِنُ بِكُلِّ الَّذِي عِنْدَ اللهِ مِنْ الْعَذَابِ لَمْ يَأْمَنْ مِنْ النَّارِ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি। আল্লাহ্‌ যেদিন রহমত সৃষ্টি করেন সেদিন একশটি রহমত সৃষ্টি করেছেন। নিরানব্বইটি তাঁর কাছে রেখে দিয়েছেন এবং একটি রহমত সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে পাঠিয়ে দিয়েছেন। যদি কাফির আল্লাহ্‌র কাছে সুরক্ষিত রহমত সম্পর্কে জানে তাহলে সে জান্নাত লাভে নিরাশ হবে না। আর মু’মিন যদি আল্লাহ্‌র কাছে যে শাস্তি আছে সে সম্পর্কে জানে তা হলে সে জাহান্নাম থেকে নিজেকে নিরাপদ মনে করবে না। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০২৫)

৮১/২০. অধ্যায় :
আল্লাহ্‌র নিষেধাবলীর ব্যাপারে ধৈর্য ধারণ করা । (আল্লাহ্‌র বাণী) : ধৈর্যশীলদেরকে তাদের পুরস্কার অপরিমিতভাবে দিয়ে থাকি । (সূরাহ আয্ যুমার ৩৯/১০)

উমার (রাঃ) বলেন, আমরা উত্তম জীবন লাভ করেছিলাম ধৈর্য ধরার কারণেই ।

৬৪৭০
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَطَاءُ بْنُ يَزِيدَ، أَنَّ أَبَا سَعِيدٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّ أُنَاسًا مِنَ الأَنْصَارِ سَأَلُوا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يَسْأَلْهُ أَحَدٌ مِنْهُمْ إِلاَّ أَعْطَاهُ حَتَّى نَفِدَ مَا عِنْدَهُ فَقَالَ لَهُمْ حِينَ نَفِدَ كُلُّ شَىْءٍ أَنْفَقَ بِيَدَيْهِ ‏ “‏ مَا يَكُنْ عِنْدِي مِنْ خَيْرٍ لاَ أَدَّخِرْهُ عَنْكُمْ، وَإِنَّهُ مَنْ يَسْتَعِفَّ يُعِفُّهُ اللَّهُ، وَمَنْ يَتَصَبَّرْ يُصَبِّرْهُ اللَّهُ، وَمَنْ يَسْتَغْنِ يُغْنِهِ اللَّهُ، وَلَنْ تُعْطَوْا عَطَاءً خَيْرًا وَأَوْسَعَ مِنَ الصَّبْرِ ‏”‏‏.‏

আবূ সা‘ঈদ খুদ্‌রী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একবার আনসারদের কিছু সংখ্যক লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে সাহায্য চাইলেন। তাদের যে যা চাইলেন, তিনি তা-ই দিলেন, এমন কি তাঁর কাছে যা কিছু ছিল নিঃশেষ হয়ে গেল। যখন তাঁর দু’হাতে দান করার পর সবকিছু শেষ হয়ে গেল, তখন তিনি বললেনঃ আমার কাছে যা কিছু থাকে, তা থেকে আমি কিছুই সঞ্চয় করি না। অবশ্য যে নিজেকে চাওয়া থেকে বাঁচিয়ে রাখতে চায়, আল্লাহ্‌ তাঁকে বাঁচিয়ে রাখেন; আর যে ব্যক্তি ধৈর্য ধরে তিনি তাকে ধৈর্যশীলই রাখেন। আর যে অমুখাপেক্ষী হতে চায়, আল্লাহ্‌ তাকে অভাবমুক্ত রাখেন। সবরের চেয়ে বেশি প্রশস্ত ও কল্যাণকর কিছু কক্ষনো তোমাদের দান করা হবে না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬০২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০২৬)

৬৪৭১
خَلاَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ حَدَّثَنَا زِيَادُ بْنُ عِلاَقَةَ قَالَ سَمِعْتُ الْمُغِيرَةَ بْنَ شُعْبَةَ يَقُولُ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي حَتَّى تَرِمَ أَوْ تَنْتَفِخَ قَدَمَاهُ فَيُقَالُ لَهُ فَيَقُولُ أَفَلاَ أَكُونُ عَبْدًا شَكُورًا.

মুগীরাহ ইব্‌নু শু‘বাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মুগীরাহ ইব্‌নু শু‘বাহ (রাঃ)-কে বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এত (দীর্ঘ সময় ধরে) সলাত আদায় করতেন যে, তাঁর দু’পা ফুলে যেত। তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ আমি কি শুকরগুযার বান্দা হবো না?(আধুনিক প্রকাশনী- ৬০২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০২৭)

৮১/২১. অধ্যায় :
যে কেউ আল্লাহ্‌র উপর ভরসা করে, তবে তার জন্য তিনিই যথেষ্ট । (সূরাহ ত্বলাক ৬৫/৩)

রাবী ইবনে খুসাইম বলেন, (এটা) সকল বিপদের ক্ষেত্রে, মানুষের উপর যা ঘটতে পারে ।

৬৪৭২
إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ سَمِعْتُ حُصَيْنَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ قَالَ كُنْتُ قَاعِدًا عِنْدَ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ فَقَالَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِي سَبْعُونَ أَلْفًا بِغَيْرِ حِسَابٍ هُمْ الَّذِينَ لاَ يَسْتَرْقُونَ وَلاَ يَتَطَيَّرُونَ وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাতের সত্তর হাজার লোক বিনা হিসেবেই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারা হবে এমন লোক, যারা ঝাড়ফুঁকের আশ্রয় নেয় না, শূভ অশুভ মানে না এবং তাদের প্রতিপালকের উপরই ভরসা রাখে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬০২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০২৮)

৮১/২২. অধ্যায় :
নিরর্থক বাদানুবাদ অপছন্দনীয়

৬৪৭৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا غَيْرُ، وَاحِدٍ، مِنْهُمْ مُغِيرَةُ وَفُلاَنٌ وَرَجُلٌ ثَالِثٌ أَيْضًا عَنِ الشَّعْبِيِّ عَنْ وَرَّادٍ كَاتِبِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ أَنَّ مُعَاوِيَةَ كَتَبَ إِلَى الْمُغِيرَةِ أَنِ اكْتُبْ إِلَىَّ بِحَدِيثٍ سَمِعْتَهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَكَتَبَ إِلَيْهِ الْمُغِيرَةُ أَنِّي سَمِعْتُهُ يَقُولُ عِنْدَ انْصِرَافِهِ مِنَ الصَّلاَةِ ‏ “‏ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهْوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ ‏”‏‏.‏ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ قَالَ وَكَانَ يَنْهَى عَنْ قِيلَ وَقَالَ وَكَثْرَةِ السُّؤَالِ، وَإِضَاعَةِ الْمَالِ، وَمَنْعٍ وَهَاتِ، وَعُقُوقِ الأُمَّهَاتِ، وَوَأْدِ الْبَنَاتِ‏.‏ وَعَنْ هُشَيْمٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عُمَيْرٍ قَالَ سَمِعْتُ وَرَّادًا يُحَدِّثُ هَذَا الْحَدِيثَ عَنِ الْمُغِيرَةِ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏

মুগীরাহ ইব্‌নু শু‘বাহ (রাঃ)-এর কাতিব্‌ ওয়াররাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মু‘আবিয়াহ (রাঃ) মুগীরাহ ইবনু শু‘বাহ (রাঃ)-কে চিঠি লিখলেন যে, আপনি আমার কাছে একটা হাদীস লিখে পাঠান, যা আপনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, তখন মুগীরাহ ইবনু শু‘বাহ (রাঃ) তাঁর কাছে লিখে পাঠালেন, আমি নিশ্চয় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে সালাত থেকে ফিরার সময় বলতে শুনেছি।



لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ



(অর্থাৎ আল্লাহ্ ব্যতীত কোন মাবূদ নেই। তিনি একক ও অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই এবং হাম্দ তাঁরই। তিনি সবার উপর শক্তিমান। আর তিনি নিষেধ করতেন অনর্থক কথা নিয়ে বাদানুবাদ করা হতে, অধিক প্রশ্ন করা হতে, মালের অপচয় করা হতে, আর তিনি নিষেধ করেছেন, কৃপনতা ও ভিক্ষা বৃত্তি হতে, মাতাপিতার অবাধ্যতা এবং কন্যাদেরকে জীবন্ত প্রোথিত করা হতে। [৮৪৪]



হুশায়ম (রহ.)…..আবদুল মালিক (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ওয়াররাদ (রাঃ)-কে আল মুগীরা…..নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে এ হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০২৯)

৮১/২৩. অধ্যায় :
যবান সংযত করা ।

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’র বাণী : আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে । আল্লাহ্‌র বাণী : যে কথাই মানুষ উচ্চারণ করে (তা সংরক্ষণের জন্য) তার নিকটে একজন সদা তৎপর প্রহরী আছে । (সূরাহ ক্বাফ ৫০/১৮)

৬৪৭৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ الْمُقَدَّمِيُّ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ عَلِيٍّ، سَمِعَ أَبَا حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ مَنْ يَضْمَنْ لِي مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ وَمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أَضْمَنْ لَهُ الْجَنَّةَ ‏”‏‏.‏

সাহ্‌ল ইব্‌নু সা‘দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার দু’চোয়ালের মাঝের বস্তু (জিহ্‌বা) এবং দু’রানের মাঝখানের বস্তু (লজ্জাস্থান) এর জামানত আমাকে দিবে, আমি তাঁর জান্নাতের যিম্মাদার। [২৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৩০)

[২৫] দুনিয়াতে যত ফিতনা ফাসাদ ও অপকর্ম সংঘটিত হয় তার অধিকাংশই হয়ে থাকে জিহ্‌বা ও লজ্জা স্থানের দ্বারা । এ দুটোকে যে সংযত করবে, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জান্নাতে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ।

৬৪৭৫
حَدَّثَنِي عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا، أَوْ لِيَصْمُتْ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلاَ يُؤْذِ جَارَهُ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে আল্লাহ্‌ এবং শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে নতুবা চুপ থাকে। এবং যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌ ও শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে ক্লেশ না দেয়। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার মেহমানের সম্মান করে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৩১)

৬৪৭৬
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ، عَنْ أَبِي شُرَيْحٍ الْخُزَاعِيِّ، قَالَ سَمِعَ أُذُنَاىَ، وَوَعَاهُ، قَلْبِي النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏”‏ الضِّيَافَةُ ثَلاَثَةُ أَيَّامٍ جَائِزَتُهُ ‏”‏‏.‏ قِيلَ مَا جَائِزَتُهُ قَالَ ‏”‏ يَوْمٌ وَلَيْلَةٌ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا، أَوْ لِيَسْكُتْ ‏”‏‏.‏

আবূ শুরাইহ্‌ আল খুযায়ী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার দু’কান নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছে এবং আমার অন্তর তা হিফাযাত করে রেখেছে, মেহমানদারী তিন দিন, ভদ্রতার সঙ্গে। জিজ্ঞেস করা হল, ভদ্রতা কী? তিনি বললেন, একদিন ও এক রাত (বিশেষ মেহমানদারী)। যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার মেহমানের সম্মান করে আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অথবা নীরব থাকে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৩২)

৬৪৭৭
إِبْرَاهِيمُ بْنُ حَمْزَةَ حَدَّثَنِي ابْنُ أَبِي حَازِمٍ عَنْ يَزِيدَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عِيسَى بْنِ طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ التَّيْمِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ سَمِعَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُولُ إِنَّ الْعَبْدَ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مَا يَتَبَيَّنُ فِيهَا يَزِلُّ بِهَا فِي النَّارِ أَبْعَدَ مِمَّا بَيْنَ الْمَشْرِقِ.

আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, নিশ্চয় বান্দা পরিণাম চিন্তা ব্যতিরেকেই এমন কথা বলে যে কথার কারণে সে ঢুকে যাবে জাহান্নামের এমন গভীরে যার দূরত্ব পূর্ব (পশ্চিম) এর দূরত্বের চেয়েও বেশী। [২৬][৬৪৭৮; মুসলিম ৫৩/৬, হাঃ ২৯৮৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৩৩)

[২৬] নেক আমল করা সত্ত্বেও কোন ব্যক্তি কুফরি কথাবার্তা বললে তা তাকে জাহান্নামের সর্বশেষ স্তরে পৌঁছে দিবে ।

৬৪৭৮
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُنِيرٍ سَمِعَ أَبَا النَّضْرِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ عَبْدِ اللهِ يَعْني ابْنَ دِينَارٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ الْعَبْدَ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مِنْ رِضْوَانِ اللهِ لاَ يُلْقِي لَهَا بَالاً يَرْفَعُهُ اللهُ بِهَا دَرَجَاتٍ وَإِنَّ الْعَبْدَ لَيَتَكَلَّمُ بِالْكَلِمَةِ مِنْ سَخَطِ اللهِ لاَ يُلْقِي لَهَا بَالاً يَهْوِي بِهَا فِي جَهَنَّمَ.

আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিশ্চয় বান্দা কখনও আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির কোন কথা বলে অথচ সে কথা সম্পর্কে তার চেতনা নেই। কিন্তু এ কথার দ্বারা আল্লাহ্ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। আবার বান্দা কখনও আল্লাহ্‌র অসন্তুষ্টির কথা বলে ফেলে যার পরিণতি সম্পর্কে তার ধারণা নেই, অথচ সে কথার কারণে সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।[৬৪৭৭; মুসলিম ৫৩/৬, হাঃ ২৯৮৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৩৪)

৮১/২৪. অধ্যায় :
আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দন করা ।

৬৪৭৯
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ عُبَيْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِي خُبَيْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمْ اللهُ رَجُلٌ ذَكَرَ اللهَ فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সাত প্রকার লোককে আল্লাহ্‌ ছায়া দান করবেন। (তন্মধ্যে) এমন এক ব্যক্তি যে আল্লাহ্‌র যিক্‌র করে অতঃপর তার দু’টি চোখ অশ্রুসিক্ত হয়। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৩৫)

৮১/২৫. অধ্যায় :
আল্লাহ্-ভীতি

৬৪৮০
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ رِبْعِيٍّ، عَنْ حُذَيْفَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ كَانَ رَجُلٌ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ يُسِيءُ الظَّنَّ بِعَمَلِهِ، فَقَالَ لأَهْلِهِ إِذَا أَنَا مُتُّ فَخُذُونِي فَذَرُّونِي، فِي الْبَحْرِ فِي يَوْمٍ صَائِفٍ، فَفَعَلُوا بِهِ، فَجَمَعَهُ اللَّهُ ثُمَّ قَالَ مَا حَمَلَكَ عَلَى الَّذِي صَنَعْتَ قَالَ مَا حَمَلَنِي إِلاَّ مَخَافَتُكَ‏.‏ فَغَفَرَ لَهُ ‏”‏‏.‏

হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের পূর্বের উম্মাতের এক লোক ছিল, যে তার ‘আমাল সম্পর্কে আশংকা পোষণ করত। সে তার পরিবারের লোকদের বলল, আমি মারা গেলে তখন তোমরা আমাকে জ্বালিয়ে দিয়ে অতঃপর প্রচণ্ড গরমের দিনে আমার ছাই সমুদ্রে ছিটিয়ে দেবে। তারা সে অনুযায়ী কাজ করলো। অতঃপর আল্লাহ্‌ সেই ছাই জমা করে তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমাকে এ কাজে কিসে প্ররোচিত করলো? সে বললো, একমাত্র আপনার ভয়ই আমাকে এ কাজ করতে বাধ্য করেছে। তখন আল্লাহ্‌ তাকে মাফ করে দিলেন। [২৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৩৬)

[২৭] উল্লেখিত একটি দেহকে একত্র করা এটাই প্রমাণ করে যে, মহান আল্লাহ্‌ তা‘আলার শক্তি ক্ষমতা কত বড়! সুতরাং যারা কিয়ামত দিবস, হিসাব ইত্যাদিকে অস্বীকার করে তাদের শিক্ষা নেয়া উচিত । আল্লাহ্‌কে ভয় করাই হচ্ছে সকল ইবাদতের প্রাণ । ভয়-শূন্য ও বেপরোয়াভাবে কৃত কোন আমলই আল্লাহ্‌ কবুল করবেন না । আল্লাহ্‌র প্রতি ভয় ভীতিপূর্ণ যথাযথ কম পরিমাণ ইবাদতও মানুষকে জান্নাতে পৌঁছে দিতে পারে ।

৬৪৮১
مُوسَى حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ سَمِعْتُ أَبِي حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَبْدِ الْغَافِرِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ذَكَرَ رَجُلاً فِيمَنْ كَانَ سَلَفَ أَوْ قَبْلَكُمْ آتَاهُ اللهُ مَالاً وَوَلَدًا يَعْنِي أَعْطَاهُ قَالَ فَلَمَّا حُضِرَ قَالَ لِبَنِيهِ أَيَّ أَبٍ كُنْتُ لَكُمْ قَالُوا خَيْرَ أَبٍ قَالَ فَإِنَّهُ لَمْ يَبْتَئِرْ عِنْدَ اللهِ خَيْرًا فَسَّرَهَا قَتَادَةُ لَمْ يَدَّخِرْ وَإِنْ يَقْدَمْ عَلَى اللهِ يُعَذِّبْهُ فَانْظُرُوا فَإِذَا مُتُّ فَأَحْرِقُونِي حَتّٰى إِذَا صِرْتُ فَحْمًا فَاسْحَقُونِي أَوْ قَالَ فَاسْهَكُونِي ثُمَّ إِذَا كَانَ رِيحٌ عَاصِفٌ فَأَذْرُونِي فِيهَا فَأَخَذَ مَوَاثِيقَهُمْ عَلَى ذ‘لِكَ وَرَبِّي فَفَعَلُوا فَقَالَ اللهُ كُنْ فَإِذَا رَجُلٌ قَائِمٌ ثُمَّ قَالَ أَيْ عَبْدِي مَا حَمَلَكَ عَلَى مَا فَعَلْتَ قَالَ مَخَافَتُكَ أَوْ فَرَقٌ مِنْكَ فَمَا تَلاَفَاهُ أَنْ رَحِمَهُ اللهُ فَحَدَّثْتُ أَبَا عُثْمَانَ فَقَالَ سَمِعْتُ سَلْمَانَ غَيْرَ أَنَّهُ زَادَ فَأَذْرُونِي فِي الْبَحْرِ أَوْ كَمَا حَدَّثَ وَقَالَ مُعَاذٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ سَمِعْتُ عُقْبَةَ سَمِعْتُ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.

আবূ সা‘ঈদ খুদ্‌রী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আগের অথবা পূর্ব যুগের এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন। আল্লাহ্‌ তাকে ধন-সম্পদ ও সন্তানাদি দান করেছিলেন। মৃত্যুর সময় হাজির হলে সে তার সন্তানদেরকে জিজ্ঞেস করলো, আমি কেমন পিতা ছিলাম? তারা বলল, উত্তম। সে বললো, যে আল্লাহ্‌র কাছে কোন সম্পদ জমা রাখেনি, সে আল্লাহ্‌র কাছে হাজির হলে তিনি তাকে শাস্তি দেবেন। তোমরা খেয়াল রাখবে, আমি মারা গেলে আমাকে জ্বালিয়ে দেবে। আমি যখন কয়লা হয়ে যাব তাকে ছাই করে ফেলবে। অতঃপর যখন প্রবল বাতাস বইবে, তখন তোমরা তা উড়িয়ে দেবে। এ ব্যাপারে সে তাদের কাছ থেকে দৃঢ় অঙ্গীকার নিল। রাবী বলেন, আমার প্রতিপালকের কসম! তারা তাই করল। অতঃপর আল্লাহ্‌ বললেন, এসে যাও। হঠাৎ সে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে গেল। তখন তিনি বললেন, হে আমার বান্দা! এ কাজে কিসে তোমাকে প্রেরণা দিল? সে বলল, আপনার ভীতি অথবা আপনার থেকে সরে থাকার কারণে। তখন তিনি এর প্রতিদানে তাকে ক্ষমা করে দিলেন। আমি আবূ ‘উসমানকে বর্ণনা করেছি, তিনি বলেছেন, আমি সালমানকে শুনেছি, তিনি এছাড়া অতিরিক্ত করেছেন…..আমার ছাইগুলো সমুদ্রে ছিটিয়ে দেবে। অথবা তিনি যেমনটি বর্ণনা করেছেন। মু‘আয (রহঃ)…..‘উক্‌বাহ (রহঃ) বলেনঃ আমি আবূ সা‘ঈদ (রাঃ)-কে শুনেছি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৩৭)

৮১/২৬. অধ্যায় :
গুনাহ হতে বেঁচে থাকা

৬৪৮২
مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي بُرْدَةَ عَنْ أَبِي بُرْدَةَ عَنْ أَبِي مُوسَى قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم مَثَلِي وَمَثَلُ مَا بَعَثَنِي اللهُ كَمَثَلِ رَجُلٍ أَتَى قَوْمًا فَقَالَ رَأَيْتُ الْجَيْشَ بِعَيْنَيَّ وَإِنِّي أَنَا النَّذِيرُ الْعُرْيَانُ فَالنَّجَا النَّجَاءَ فَأَطَاعَتْهُ طَائِفَةٌ فَأَدْلَجُوا عَلَى مَهْلِهِمْ فَنَجَوْا وَكَذَّبَتْهُ طَائِفَةٌ فَصَبَّحَهُمْ الْجَيْشُ فَاجْتَاحَهُمْ.

আবূ মূসা আশ‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি ও আমাকে যা দিয়ে আল্লাহ্‌ পাঠিয়েছেন তার উদাহরণ এমন এক লোকের মত, যে তার সম্প্রদায়ের কাছে এসে বলল, আমি আমার চোখ দিয়ে শত্রুদলকে দেখেছি আর আমি স্পষ্ট সতর্ককারী। সুতরাং তোমরা সত্বর আত্মরক্ষার ব্যবস্থা কর। অতঃপর একদল তার কথা মান্য করে রাতের অন্ধকারে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিল। এদিকে আরেক দল তাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করল, যদ্দরুন ভোর বেলায় শত্রুসেনা এসে তাদেরকে বিধ্বস্ত করে দিল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৩৮)

৬৪৮৩
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ أَنَّهُ حَدَّثَهُ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُولُ إِنَّمَا مَثَلِي وَمَثَلُ النَّاسِ كَمَثَلِ رَجُلٍ اسْتَوْقَدَ نَارًا فَلَمَّا أَضَاءَتْ مَا حَوْلَهُ جَعَلَ الْفَرَاشُ وَهَذِهِ الدَّوَابُّ الَّتِي تَقَعُ فِي النَّارِ يَقَعْنَ فِيهَا فَجَعَلَ يَنْزِعُهُنَّ وَيَغْلِبْنَهُ فَيَقْتَحِمْنَ فِيهَا فَأَنَا آخُذُ بِحُجَزِكُمْ عَنْ النَّارِ وَهُمْ يَقْتَحِمُونَ فِيهَا.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, আমার ও লোকদের উদাহরণ এমন লোকের মত, যে আগুন জ্বালালো আর যখন তার চারদিক আলোকিত হয়ে গেল, তখন পতঙ্গ ও ঐ সমস্ত প্রাণী যেগুলো আগুনে পুড়ে, তারা তাতে পুড়তে লাগল। তখন সে সেগুলোকে আগুন থেকে ফিরানোর চেষ্টা করল। কিন্তু সেগুলো আগুনে তাকে পরাজয় করল এবং আগুনে পতিত হল। (তদ্রূপ) আমিও তোমাদের কোমর ধরে আগুন থেকে বাঁচাবার চেষ্টা করছি। কিন্তু তোমরা তাতেই পতিত হচ্ছ।[মুসলিম ৪৩/৬, হাঃ ২২৮৪, আহমাদ ৮১২৩] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৩৯)

৬৪৮৪
أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ عَنْ عَامِرٍ قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ عَمْرٍو يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ وَالْمُهَاجِرُ مَنْ هَجَرَ مَا نَهَى اللهُ عَنْهُ.

আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘আম্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মুসলিম (প্রকৃত) সেই, যার যবান ও হাত থেকে মুসলমানগণ নিরাপদ থাকে। আর (প্রকৃত) মুহাজির সেই, আল্লাহ্‌ যা নিষেধ করেছেন তা যে পরিত্যাগ করে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৪০)

৮১/২৭. অধ্যায় :
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণী : আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তাহলে তোমরা খুব অল্পই হাসতে

৬৪৮৫
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ كَانَ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলতেন। রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তবে তোমরা খুব কমই হাসতে এবং খুব বেশি কাঁদতে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৪১)

৬৪৮৬
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مُوسَى بْنِ أَنَسٍ عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَوْ تَعْلَمُونَ مَا أَعْلَمُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তবে তোমরা খুব কমই হাসতে এবং খুব বেশি কাঁদতে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬০২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৪২)

৮১/২৮. অধ্যায় :
কামনা-বাসনা দিয়ে জাহান্নামকে বেষ্টন করা হয়েছে

৬৪৮৭
إِسْمَاعِيلُ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم قَالَ حُجِبَتْ النَّارُ بِالشَّهَوَاتِ وَحُجِبَتْ الْجَنَّةُ بِالْمَكَارِهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জাহান্নাম কামনা বাসনা দ্বারা বেষ্টিত। আর জান্নাত বেষ্টিত দুঃখ-মুসিবত দ্বারা। [২৮] [মুসলিম পর্ব ৫১/হাঃ ২৮২২, ২৮২৩, আহমাদ ১২৫৬০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০২৭, ই. ৬০৪৩)

[২৮] যারা নিজেদের খেয়াল-খুশি কামনা-বাসনা পূরণ করার কাজে লিপ্ত হবে তারা জাহান্নামে গিয়ে পৌঁছবে । সৎ আমল করা, সত্যের পথে দৃঢ় থাকা ও সৎ জীবন-যাপন করার জন্য বহু দুঃখ-কষ্ট মুসীবত সহ্য করতে হয় । এ পথ পাড়ি দিতে পারলেই জান্নাতে পৌঁছা সম্ভব হবে ।

৮১/২৯. অধ্যায় :
জান্নাত তোমাদের জুতার ফিতার থেকেও সন্নিকটে আর জাহান্নামও সেই রকম

৬৪৮৮
حَدَّثَنِي مُوسَى بْنُ مَسْعُودٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ، وَالأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ الْجَنَّةُ أَقْرَبُ إِلَى أَحَدِكُمْ مِنْ شِرَاكِ نَعْلِهِ، وَالنَّارُ مِثْلُ ذَلِكَ ‏”‏‏.‏

আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাত তোমাদের জুতার ফিতার চেয়েও বেশি নিকটে আর জাহান্নামও সেইরকম। [২৯](আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৪৪)

[২৯] মানুষের মৃত্যু অতি নিকটবর্তী । আর মৃত্যুর সাথে সাথেই কবরে তার কাছে পৌঁছে যাবে জাহান্নামের ভয়ানক শাস্তি কিংবা জান্নাতের অফুরন্ত শান্তি ।

৬৪৮৯
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَصْدَقُ بَيْتٍ قَالَهُ الشَّاعِرُ أَلاَ كُلُّ شَيْءٍ مَا خَلاَ اللهَ بَاطِلُ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কবি তার কবিতায় সর্বাধিক সত্য যে কথাটি বলেছেন তা হলঃ “জেনে রেখো আল্লাহ্ ব্যতীত যা কিছু আছে সবই বাতিল।” [৩০](আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৪৫)

[৩০] হাদীসটি আল্লাহ্ তা‘আলার এ বাণীরই প্রতিধ্বনি করছে-পৃথিবীর উপর যা কিছু আছে সবই ধ্বংস হয়ে যাবে, মাহাত্ম্য ও সম্মানে পরিপূর্ণ তোমার প্রতিপালকের মুখমণ্ডলই কেবল চির বিরাজমান থাকবে- (আর রহমান ২৬-২৭) ।

৮১/৩০. অধ্যায় :
মানুষ যেন নিজের অপেক্ষা নিম্ন স্তরের ব্যক্তির প্রতি তাকায় এবং নিজের অপেক্ষা উচ্চ স্তরের ব্যক্তির প্রতি যেন না তাকায় ।

৬৪৯০
إِسْمَاعِيلُ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا نَظَرَ أَحَدُكُمْ إِلَى مَنْ فُضِّلَ عَلَيْهِ فِي الْمَالِ وَالْخَلْقِ فَلْيَنْظُرْ إِلَى مَنْ هُوَ أَسْفَلَ مِنْهُ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কারো নজর যদি এমন লোকের উপর পড়ে, যাকে মাল-ধন ও দৈহিক গঠনে অধিক মর্যাদা দেয়া হয়েছে তবে সে যেন এমন লোকের দিকে নজর দেয়, যে তার চেয়ে নিম্ন স্তরে রয়েছে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৪৬)

৮১/৩১. অধ্যায় :
যে ব্যক্তি ভাল বা মন্দের ইচ্ছা করল ।

৬৪৯১
أَبُو مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا جَعْدُ بْنُ دِينَارٍ أَبُو عُثْمَانَ حَدَّثَنَا أَبُو رَجَاءٍ الْعُطَارِدِيُّ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِيمَا يَرْوِي عَنْ رَبِّهِ عَزَّ وَجَلَّ قَالَ قَالَ إِنَّ اللهَ كَتَبَ الْحَسَنَاتِ وَالسَّيِّئَاتِ ثُمَّ بَيَّنَ ذَلِكَ فَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللهُ لَهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً فَإِنْ هُوَ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللهُ لَهُ عِنْدَهُ عَشْرَ حَسَنَاتٍ إِلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ إِلَى أَضْعَافٍ كَثِيرَةٍ وَمَنْ هَمَّ بِسَيِّئَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللهُ لَهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً فَإِنْ هُوَ هَمَّ بِهَا فَعَمِلَهَا كَتَبَهَا اللهُ لَهُ سَيِّئَةً وَاحِدَةً

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (হাদীসে কুদ্‌সী স্বরূপ) তাঁর প্রতিপালক হতে বর্ণনা করে বলেন যে, আল্লাহ্ ভাল-মন্দ লিখে দিয়েছেন। এরপর সেগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন। সুতরাং যে ব্যক্তি কোন সৎ কাজের ইচ্ছা করল, কিন্তু তা বাস্তবে করল না, আল্লাহ্ তাঁর কাছে এর জন্য পূর্ণ সওয়াব লিখবেন। আর সে ভাল কাজের ইচ্ছা করল এবং তা বাস্তবেও করল তবে আল্লাহ্ তাঁর কাছে তার জন্য দশ গুণ থেকে সাতশ’ গুণ পর্যন্ত এমন কি এর চেয়েও অধিক সওয়াব লিখে দেন। আর যে কোন মন্দ কাজের ইচ্ছা করল, কিন্তু তা বাস্তবে পরিণত করল না, আল্লাহ্ তাঁর কাছে তার জন্য পূর্ণ সওয়াব লিখবেন। আর যদি সে মন্দ কাজের ইচ্ছা করার পর বাস্তবেও তা করে, তবে তার জন্য আল্লাহ্ মাত্র একটা গুনাহ লিখেন।[মুসলিম ১/৫৯, হাঃ ১৩১, আহমাদ ৩৪০২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৪৭)

৮১/৩২. অধ্যায় :
গুনাহকে নগণ্য মনে করা থেকে বেঁচে থাকা ।

৬৪৯২
أَبُو الْوَلِيدِ حَدَّثَنَا مَهْدِيٌّ عَنْ غَيْلاَنَ عَنْ أَنَسٍ قَالَ إِنَّكُمْ لَتَعْمَلُونَ أَعْمَالاً هِيَ أَدَقُّ فِي أَعْيُنِكُمْ مِنْ الشَّعَرِ إِنْ كُنَّا لَنَعُدُّهَا عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ الْمُوبِقَاتِ قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ يَعْنِي بِذ‘لِكَ الْمُهْلِكَاتِ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তোমরা এমন সব কাজ করে থাক, যা তোমাদের দৃষ্টিতে চুল থেকেও চিকন। কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময়ে আমরা এগুলোকে ধ্বংসকারী মনে করতাম। আবূ ‘আবদুল্লাহ বুখারী (রহ.) বলেন অর্থাৎ الْمُهْلِكَاتِ ধ্বংসকারী। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৪৮)

৮১/৩৩. অধ্যায় :
আমাল শেষ অবস্থার উপর নির্ভরশীল, আর এ ব্যাপারে ভয় রাখা ।

৬৪৯৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَيَّاشٍ، حَدَّثَنَا أَبُو غَسَّانَ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ، قَالَ نَظَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى رَجُلٍ يُقَاتِلُ الْمُشْرِكِينَ، وَكَانَ مِنْ أَعْظَمِ الْمُسْلِمِينَ غَنَاءً عَنْهُمْ فَقَالَ ‏”‏ مَنْ أَحَبَّ أَنْ يَنْظُرَ إِلَى رَجُلٍ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَلْيَنْظُرْ إِلَى هَذَا ‏”‏‏.‏ فَتَبِعَهُ رَجُلٌ فَلَمْ يَزَلْ عَلَى ذَلِكَ حَتَّى جُرِحَ، فَاسْتَعْجَلَ الْمَوْتَ‏.‏ فَقَالَ بِذُبَابَةِ سَيْفِهِ، فَوَضَعَهُ بَيْنَ ثَدْيَيْهِ، فَتَحَامَلَ عَلَيْهِ، حَتَّى خَرَجَ مِنْ بَيْنِ كَتِفَيْهِ‏.‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ إِنَّ الْعَبْدَ لَيَعْمَلُ فِيمَا يَرَى النَّاسُ عَمَلَ أَهْلِ الْجَنَّةِ، وَإِنَّهُ لَمِنْ أَهْلِ النَّارِ، وَيَعْمَلُ فِيمَا يَرَى النَّاسُ عَمَلَ أَهْلِ النَّارِ وَهْوَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ، وَإِنَّمَا الأَعْمَالُ بِخَوَاتِيمِهَا ‏”‏‏.‏

সাহল ইব্‌নু সা‘দ আস-সা‘ঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুশরিকদের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত এক ব্যক্তির দিকে তাকালেন। লোকটি ছিল ধনী এবং প্রভাবশালী লোকদের অন্তর্ভুক্ত। তিনি বললেনঃ কেউ জাহান্নামী লোক দেখতে চাইলে, সে যেন এই লোকটিকে দেখে। (ফলে) এক লোক তার পেছনে পেছনে যেতে লাগল। সে যুদ্ধ করতে থাকল অবশেষে আহত হয়ে গেল। তখন সে শিঘ্র মৃত্যু কামনা করল, সে তারই তরবারীর অগ্রভাগ বুকের উপর রেখে সজোরে এমনভাবে চাপ দিল যে, তলোয়ারটি তার বক্ষ ভেদ করে পৃষ্ঠদেশ পার হয়ে গেল। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কোন লোক এমন কাজ করে যায়, যা দেখে লোকেরা একে জান্নাতী লোকের কাজ বলে মনে করে। কিন্তু (আসলে) সে জাহান্নামবাসীদের অন্তর্ভুক্ত। আর কোন বান্দা এমন কাজ করে যায়, যা দেখে লোকেরা একে জাহান্নামীদের কাজ বলে মনে করে। অথচ সে জান্নাতী লোকদের অন্তর্ভুক্ত। বস্তুতঃ শেষ অবস্থার উপরই ‘আমালের ফলাফল নির্ভর করে। [৩১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৪৯)

[৩১] ইব্‌নু বাত্তাল বলেন : বান্দার শেষ আমল কেমন হবে তা গোপন রাখার মধ্যে রয়েছে বিরাট হিকমত ও সূক্ষ্ম পরিকল্পনা । কারণ সে যদি জানতো যে, সে নাজাতপ্রাপ্ত তবে সে আনন্দিত হত এবং সে সৎ আমল করতে অলসতা করত । আর যদি জানতো যে, সে ধ্বংসপ্রাপ্ত তবে সে অবাধ্যতা ও কুফরীর মাত্রা বাড়িয়ে দিত । (ফাতহুল বারী)

৮১/৩৪. অধ্যায় :
অসৎ সংসর্গ হতে নির্জনতা শান্তিপ্রদ ।

৬৪৯৪
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ حَدَّثَنِي عَطَاءُ بْنُ يَزِيدَ أَنَّ أَبَا سَعِيدٍ حَدَّثَهُ قَالَ قِيلَ يَا رَسُولَ اللهِ وَقَالَ مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ جَاءَ أَعْرَابِيٌّ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَيُّ النَّاسِ خَيْرٌ قَالَ رَجُلٌ جَاهَدَ بِنَفْسِهِ وَمَالِهِ وَرَجُلٌ فِي شِعْبٍ مِنْ الشِّعَابِ يَعْبُدُ رَبَّهُ وَيَدَعُ النَّاسَ مِنْ شَرِّهِ تَابَعَهُ الزُّبَيْدِيُّ وَسُلَيْمَانُ بْنُ كَثِيرٍ وَالنُّعْمَانُ عَنْ الزُّهْرِيِّ وَقَالَ مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَطَاءٍ أَوْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ يُونُسُ وَابْنُ مُسَافِرٍ وَيَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ بَعْضِ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم

আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক বেদুঈন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! কোন ব্যক্তি সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি স্বীয় জান ও মাল দ্বারা জিহাদ করে, আর সে ব্যক্তি যে পর্বত গুহায় তার রবের ‘ইবাদত করতে থাকে এবং মানুষকে তার অনিষ্ট থেকে নিরাপদ রাখে। যুবায়দী সুলায়মান (রহঃ) ও নু‘মান (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে শু‘আইব (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন। মা‘মার (রহঃ)…..আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। ইউনুস (রহঃ), ইব্‌নু মুসাফির (রহঃ) ও ইয়াহইয়া ইব্‌নু সা‘ঈদ (রহঃ) এক সহাবী কর্তৃক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে অর্থাৎ আবুল ইয়ামানের হাদীসের মত “কোন ব্যক্তি সর্বোত্তম বর্ণনা করেছেন।’’(আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৫০)

৬৪৯৫
أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا الْمَاجِشُونُ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ أَبِي صَعْصَعَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُ سَمِعَهُ يَقُولُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ يَأْتِي عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ خَيْرُ مَالِ الرَّجُلِ الْمُسْلِمِ الْغَنَمُ يَتْبَعُ بِهَا شَعَفَ الْجِبَالِ وَمَوَاقِعَ الْقَطْرِ يَفِرُّ بِدِينِهِ مِنْ الْفِتَنِ

আবূ সা‘ঈদ খুদ্‌রী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, মানুষের উপর এক যামানা আসবে যখন বকরিই হবে মুসলমানের উত্তম সম্পদ। সে তাঁর দীনকে নিয়ে ফিত্‌না থেকে দূরে থাকার উদ্দেশ্যে পর্বত শৃঙ্গে ও বৃষ্টিপাতের স্থানে চলে যাবে। [৩২](আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৫১)

[৩২] ফিতনা-ফাসাদ থেকে রক্ষা পাওয়ার উদ্দেশ্যে ঈমানদার ব্যক্তি লোকালয় ছেড়ে পাহাড়ে চলে যাবে ।

৮১/৩৫. অধ্যায় :
আমানতদারী উঠে যাওয়া ।

৬৪৯৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ، حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا هِلاَلُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ إِذَا ضُيِّعَتِ الأَمَانَةُ فَانْتَظِرِ السَّاعَةَ ‏”‏‏.‏ قَالَ كَيْفَ إِضَاعَتُهَا يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏”‏ إِذَا أُسْنِدَ الأَمْرُ إِلَى غَيْرِ أَهْلِهِ، فَانْتَظِرِ السَّاعَةَ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন আমানত নষ্ট হয়ে যাবে তখন ক্বিয়ামাতের অপেক্ষা করবে। সে বলল : হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমানত কিভাবে নষ্ট হয়ে যাবে? তিনি বললেনঃ যখন কোন দায়িত্ব অযোগ্য ব্যক্তির উপর ন্যস্ত করা হবে, তখনই ক্বিয়ামাতের অপেক্ষা করবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৫৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৫২)

৬৪৯৭
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ حَدَّثَنَا حُذَيْفَةُ قَالَ حَدَّثَنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم حَدِيثَيْنِ رَأَيْتُ أَحَدَهُمَا وَأَنَا أَنْتَظِرُ الْآخَرَ حَدَّثَنَا أَنَّ الأَمَانَةَ نَزَلَتْ فِي جَذْرِ قُلُوبِ الرِّجَالِ ثُمَّ عَلِمُوا مِنْ الْقُرْآنِ ثُمَّ عَلِمُوا مِنْ السُّنَّةِ وَحَدَّثَنَا عَنْ رَفْعِهَا قَالَ يَنَامُ الرَّجُلُ النَّوْمَةَ فَتُقْبَضُ الأَمَانَةُ مِنْ قَلْبِهِ فَيَظَلُّ أَثَرُهَا مِثْلَ أَثَرِ الْوَكْتِ ثُمَّ يَنَامُ النَّوْمَةَ فَتُقْبَضُ فَيَبْقَى أَثَرُهَا مِثْلَ الْمَجْلِ كَجَمْرٍ دَحْرَجْتَهُ عَلَى رِجْلِكَ فَنَفِطَ فَتَرَاهُ مُنْتَبِرًا وَلَيْسَ فِيهِ شَيْءٌ فَيُصْبِحُ النَّاسُ يَتَبَايَعُونَ فَلاَ يَكَادُ أَحَدٌ يُؤَدِّي الأَمَانَةَ فَيُقَالُ إِنَّ فِي بَنِي فُلاَنٍ رَجُلاً أَمِينًا وَيُقَالُ لِلرَّجُلِ مَا أَعْقَلَهُ وَمَا أَظْرَفَهُ وَمَا أَجْلَدَهُ وَمَا فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةِ خَرْدَلٍ مِنْ إِيمَانٍ وَلَقَدْ أَتَى عَلَيَّ زَمَانٌ وَمَا أُبَالِي أَيَّكُمْ بَايَعْتُ لَئِنْ كَانَ مُسْلِمًا رَدَّهُ عَلَيَّ الإِسْلاَمُ وَإِنْ كَانَ نَصْرَانِيًّا رَدَّهُ عَلَيَّ سَاعِيهِ فَأَمَّا الْيَوْمَ فَمَا كُنْتُ أُبَايِعُ إِلاَّ فُلاَنًا وَفُلاَنًا

হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের কাছে দু’টি হাদীস বর্ণনা করেছেন। একটির (বাস্তবায়ন) আমি দেখেছি এবং দ্বিতীয়টির অপেক্ষা করছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন যে, আমানত মানুষের অন্তরের কেন্দ্রে সংরক্ষিত। তারপর তারা কুরআন থেকে জ্ঞান লাভ করে। অতঃপর তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাহ থেকে জ্ঞান লাভ করে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার বর্ণনা করেছেন আমানত তুলে নেয়া সম্পর্কে, যে ব্যক্তিটি এক সময় নিদ্রা গেলে, তার অন্তর থেকে আমানত উঠিয়ে নেয়া হবে, তখন একটি বিন্দুর মত চিহ্ন অবশিষ্ট থাকবে। আবার ঘুমাবে। তখন আবার উঠিয়ে নেয়া হবে। অতঃপর তার চিহ্ন ফোস্কার মত অবশিষ্ট থাকবে। তোমার পায়ের উপর গড়িয়ে পরা অঙ্গার সৃষ্ট চিহ্ন, যেটিকে তুমি ফোলা মনে করবে, প্রকৃতপক্ষে তাতে কিছুই থাকবে না। মানুষ বেচাকেনা করতে থাকবে বটে, কিন্তু কেও আমানত আদায় করবে না। তারপর লোকেরা বলাবলি করবে যে, অমুক বংশে একজন আমানতদার লোক আছে। সে ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, সে কতই না জ্ঞানী, কতই না হুশিয়ার, কতই না বাহাদুর? অথচ তার অন্তরে সরিষা দানার পরিমাণ ঈমানও থাকবে না।

(বর্ণনাকারী বলেন) আমার উপর এমন একটি সময় অতিবাহিত হয়েছে যে, আমি তোমাদের কারো সঙ্গে বেচাকেনা করতে একটুও চিন্তা করতাম না। কারন সে মুসলিম হলে ইসলামই তাকে (প্রতারণা হতে) ফিরিয়ে রাখবে। আর সে খ্রীষ্টান হলে তার শাসকই তাকে (প্রতারণা হতে) ফিরিয়ে রাখবে। অথচ এখন অবস্থা এমন যে, আমি অমুক অমুককে ব্যতীত বেচাকেনা করি না। [৩৩] [৭০৭৬, ৭২৭৬; মুসলিম ১/৬৪, হাঃ ১৪৩, আহমাদ ২৩৩১৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৪৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৫৩)

[৩৩] উটের কাজ হল ভার বহন করা । যে উট বোঝা বইতে পারে না সেটা নিজেই বোঝা- উট নয় । তেমনি মানুষ আজ কেবল নামে মাত্র মানুষ । শত শত মানুষের মধ্যেও মানুষের প্রকৃত গুণ বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাওয়া যায় না ।

৬৪৯৮
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم يَقُولُ إِنَّمَا النَّاسُ كَالإِبِلِ الْمِائَةِ لاَ تَكَادُ تَجِدُ فِيهَا رَاحِلَةً

আব্দুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আব্দুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে শুনেছি, তিনি বলতেন : নিশ্চয়ই মানুষ এমন শত উটের মত, যাদের মধ্যে থেকে তুমি একটিকেও বাহনের উপযোগী পাবে না।[মুসলিম ৪৪/৫৯, হাঃ ২৫৪৭, আহমাদ ৫৬২৩] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৪৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৫৪)

৮১/৩৬. অধ্যায় :
লোকদেখানো ও শোনানো ‘ইবাদাত ।

৬৪৯৯
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ حَدَّثَنِي سَلَمَةُ بْنُ كُهَيْلٍ ح و حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ جُنْدَبًا يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ أَسْمَعْ أَحَدًا يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم غَيْرَهُ فَدَنَوْتُ مِنْهُ فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَنْ سَمَّعَ سَمَّعَ اللهُ بِهِ وَمَنْ يُرَائِي يُرَائِي اللهُ بِهِ

সালামাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি জুনদুবকে বলতে শুনেছি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন। তিনি ছাড়া আমি অন্য কাউকে ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন’ এমন বলতে শুনিনি। আমি তাঁর নিকট গেলাম এবং তাঁকে বলতে শুনলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি লোক শোনানো ‘ইবাদাত করে আল্লাহ্‌ এর বিনিময়ে তার ‘লোক-শোনানোর উদ্দেশ্য প্রকাশ করে দিবেন’। আর যে ব্যক্তি লোক-দেখানো ‘ইবাদাত করবে আল্লাহ্ এর বিনিময়ে তার ‘লোক দেখানোর উদ্দেশ্য প্রকাশ করে দিবেন’। [৩৪] [৭১৫২; মুসলিম ৫৩/৫, হাঃ ২৯৮৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৪৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৫৫)

[৩৪] কিয়ামাতের দিন আল্লাহ্‌ কারো লোককে শোনানোর ও লোককে দেখানোর উদ্দেশ্য প্রকাশ করে দিবেন ।

৮১/৩৭. অধ্যায় :
যে আল্লাহ্‌র আনুগত্য করার জন্য স্বীয় নফসের সঙ্গে জিহাদ করে

৬৫০০
هُدْبَةُ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ قَالَ بَيْنَمَا أَنَا رَدِيفُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَيْسَ بَيْنِي وَبَيْنَهُ إِلاَّ آخِرَةُ الرَّحْلِ فَقَالَ يَا مُعَاذُ قُلْتُ لَبَّيْكَ يَا رَسُولَ اللهِ وَسَعْدَيْكَ ثُمَّ سَارَ سَاعَةً ثُمَّ قَالَ يَا مُعَاذُ قُلْتُ لَبَّيْكَ رَسُولَ اللهِ وَسَعْدَيْكَ ثُمَّ سَارَ سَاعَةً ثُمَّ قَالَ يَا مُعَاذُ بْنَ جَبَلٍ قُلْتُ لَبَّيْكَ رَسُولَ اللهِ وَسَعْدَيْكَ قَالَ هَلْ تَدْرِي مَا حَقُّ اللهِ عَلَى عِبَادِهِ قُلْتُ اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ قَالَ حَقُّ اللهِ عَلَى عِبَادِهِ أَنْ يَعْبُدُوهُ وَلاَ يُشْرِكُوا بِهِ شَيْئًا ثُمَّ سَارَ سَاعَةً ثُمَّ قَالَ يَا مُعَاذُ بْنَ جَبَلٍ قُلْتُ لَبَّيْكَ رَسُولَ اللهِ وَسَعْدَيْكَ قَالَ هَلْ تَدْرِي مَا حَقُّ الْعِبَادِ عَلَى اللهِ إِذَا فَعَلُوهُ قُلْتُ اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ قَالَ حَقُّ الْعِبَادِ عَلَى اللهِ أَنْ لاَ يُعَذِّبَهُمْ

মুয়ায ইব্‌নু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে তাঁর উটের পিছনে বসলাম। অথচ আমার ও তাঁর মাঝখানে ব্যবধান ছিল শুধু সাওয়ারীর গদির কাষ্ঠ-খণ্ড। তিনি বললেনঃ হে মুয়ায! আমি বললাম, আপনার নিকটে আপনার খিদমতে আমি হাজির হে আল্লাহ্‌র রসূল! তারপর আরও কিছুক্ষণ চলার পরে আবার বললেনঃ হে মুয়ায ইব্‌নু জাবাল! আমিও আবার বললাম, আপনার নিকটে আপনার খিদমতে আমি হাজির হে আল্লাহ্‌র রসূল! তখন তিনি বললেনঃ তুমি কি জানো যে, বান্দার উপর আল্লাহ্‌র হক কী? আমি বললাম, আল্লাহ্‌ এবং তাঁর রসূল বেশি ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ বান্দার উপর আল্লাহ্‌র হক এই যে, সে তাঁরই ‘ইবাদাত করবে, তাঁর সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না। এরপর আরও কিছুক্ষণ পথ চলার পর আবার ডাকলেন, হে মুয়ায ইব্‌ন জাবাল! আমি বললাম, আপনার নিকটে আপনার খিদমতে আমি হাজির হে আল্লাহ্‌র রসূল! তিনি বললেনঃ যদি বান্দা তা করে আল্লাহ্‌র কাছে বান্দার প্রাপ্য কী হবে, তা কি তুমি জান? আমি বললাম, আল্লাহ্‌ ও তাঁর রসূলই বেশি ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ তখন আল্লাহ্‌র কাছে বান্দার হক হল তাদেরকে শাস্তি না দেয়া। [৩৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬০৫০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬০৫৬)

[৩৫] আল্লাহ্‌র প্রাপ্য হল- বান্দা শির্কমুক্ত তাঁর ইবাদাত করবে, আর বান্দার প্রাপ্য হল আল্লাহ্‌ তাকে শাস্তিমুক্ত করে দেবেন ।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]