সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস রক্তপণ অধ্যায় ২য় ভাগ হাদিস নং ৬৮৪২– ৬৯১৭

৮৬/৩৯. অধ্যায়ঃ
বিচারক ও লোকদের নিকট স্বীয় স্ত্রী বা অন্যের স্ত্রীর ব্যাপারে যখন যিনার অভিযোগ করা হয় তখন বিচারকের জন্য কি জরুরী নয় যে, তার নিকট পাঠিয়ে তাকে ঐ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করবে, যে বিষয়ে তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে?

৬৮৪২
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ أَنَّهُمَا أَخْبَرَاهُ أَنَّ رَجُلَيْنِ اخْتَصَمَا إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَحَدُهُمَا اقْضِ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللهِ وَقَالَ الْآخَرُ وَهُوَ أَفْقَهُهُمَا أَجَلْ يَا رَسُولَ اللهِ فَاقْضِ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللهِ وَأْذَنْ لِي أَنْ أَتَكَلَّمَ قَالَ تَكَلَّمْ قَالَ إِنَّ ابْنِي كَانَ عَسِيفًا عَلَى هَذَا قَالَ مَالِكٌ وَالْعَسِيفُ الأَجِيرُ فَزَنَى بِامْرَأَتِهِ فَأَخْبَرُونِي أَنَّ عَلَى ابْنِي الرَّجْمَ فَافْتَدَيْتُ مِنْهُ بِمِائَةِ شَاةٍ وَبِجَارِيَةٍ لِي ثُمَّ إِنِّي سَأَلْتُ أَهْلَ الْعِلْمِ فَأَخْبَرُونِي أَنَّ مَا عَلَى ابْنِي جَلْدُ مِائَةٍ وَتَغْرِيبُ عَامٍ وَإِنَّمَا الرَّجْمُ عَلَى امْرَأَتِهِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَا وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لأقْضِيَنَّ بَيْنَكُمَا بِكِتَابِ اللهِ أَمَّا غَنَمُكَ وَجَارِيَتُكَ فَرَدٌّ عَلَيْكَ وَجَلَدَ ابْنَهُ مِائَةً وَغَرَّبَهُ عَامًا وَأَمَرَ أُنَيْسًا الأَسْلَمِيَّ أَنْ يَأْتِيَ امْرَأَةَ الْآخَرِ فَإِنْ اعْتَرَفَتْ فَارْجُمْهَا فَاعْتَرَفَتْ فَرَجَمَهَا.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) ও যায়দ ইব্‌নু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

দু’জন লোক রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট তাদের বিবাদ নিয়ে আসল। তাদের একজন বলল, আমাদের মধ্যে আল্লাহ্‌র কিতাব মুতাবিক ফায়সালা করে দিন। অন্যজন বলল – আর সে ছিল দু’জনের মাঝে অধিক বিজ্ঞ – হাঁ, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আল্লাহ্‌র কিতাব মুতাবিক আমাদের বিচার করে দিন। আর আমাকে কথা বলার অনুমতি দিন। তিনি বললেন, বল। সে বলল, আমার ছেলে তার মজুর ছিল। মালিক (রাবী) (রহঃ) বলেন, ‘আসীফ’ অর্থ মজুর। সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে ফেলে। লোকেরা আমাকে বলল যে, আমার ছেলের ওপর বর্তাবে রজম। আমি এর বিনিময়ে তাকে একশ’ ছাগল ও আমার একজন দাসী দিয়ে দেই। তারপর আলিমদেরকে জিজ্ঞেস করি। তাঁরা আমাকে বললেন যে, আমার ছেলের শাস্তি একশ’ বেত্রাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। আর রজম তার স্ত্রীর ওপর-ই বর্তাবে। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ জেনে রেখ! কসম ঐ সত্তার যাঁর হাতে আমার প্রাণ! অবশ্যই আমি আল্লাহ্‌র কিতাব মুতাবিক তোমাদের উভয়ের মাঝে ফায়সালা করব। তোমার ছাগল ও দাসী তোমাকে ফেরত দেয়া হবে এবং তার ছেলেকে একশ’ বেত্রাঘাত করলেন ও এক বছরের জন্য নির্বাসিত করলেন। আর উনাইস আস্‌লামী (রাঃ) – কে আদেশ করলেন যেন সে অপর ব্যক্তির স্ত্রীর কাছে যায় এবং যদি সে স্বীকার করে তবে যেন তাকে রজম করে। সে স্বীকার করল। ফলে তাকে সে রজম করল। [১১০](আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৯)

[১১০] যদি কোন ব্যক্তি স্বীয় স্ত্রী অথবা অন্য কোন মহিলাকে যেনার অপবাদ য়ে এবং এ ব্যাপারে প্রমাণ পেশ করতে না পারে তবে ঐ অপবাদদাতার উপর অপবাদের হাদ্দ কায়িম করা ওয়াজিব। কিন্তু যদি মহিলা তার যিনার কথা স্বীকার করে তাহলে সেই মহিলার উপর যেনার হাদ্দ কায়েম করতে হবে। আর এ জন্যই বিচারকের উপর ওয়াজিব দায়িত্ব হল, সে ঐ মহিলার নিকট কাউকে প্রেরণ করবে তার কাছে অপবাদের সত্যতা জানতে। হাদীসে উল্লেখিত উনাইসাকে ঐ মহিলার কাছে প্রেরণের আসল উদ্দেশ্যই এটা। কারণ ঐ মহিলা যদি তার যেনার কথা স্বীকার না করতেন তবে আসিফের পিতার উপর অপবাদের হাদ্দ কায়েম করা ওয়াজিব হয়ে যেত। (ফাতহুল বারী)

৬৮৪৩
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ أَنَّهُمَا أَخْبَرَاهُ أَنَّ رَجُلَيْنِ اخْتَصَمَا إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَحَدُهُمَا اقْضِ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللهِ وَقَالَ الْآخَرُ وَهُوَ أَفْقَهُهُمَا أَجَلْ يَا رَسُولَ اللهِ فَاقْضِ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللهِ وَأْذَنْ لِي أَنْ أَتَكَلَّمَ قَالَ تَكَلَّمْ قَالَ إِنَّ ابْنِي كَانَ عَسِيفًا عَلَى هَذَا قَالَ مَالِكٌ وَالْعَسِيفُ الأَجِيرُ فَزَنَى بِامْرَأَتِهِ فَأَخْبَرُونِي أَنَّ عَلَى ابْنِي الرَّجْمَ فَافْتَدَيْتُ مِنْهُ بِمِائَةِ شَاةٍ وَبِجَارِيَةٍ لِي ثُمَّ إِنِّي سَأَلْتُ أَهْلَ الْعِلْمِ فَأَخْبَرُونِي أَنَّ مَا عَلَى ابْنِي جَلْدُ مِائَةٍ وَتَغْرِيبُ عَامٍ وَإِنَّمَا الرَّجْمُ عَلَى امْرَأَتِهِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَا وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لأقْضِيَنَّ بَيْنَكُمَا بِكِتَابِ اللهِ أَمَّا غَنَمُكَ وَجَارِيَتُكَ فَرَدٌّ عَلَيْكَ وَجَلَدَ ابْنَهُ مِائَةً وَغَرَّبَهُ عَامًا وَأَمَرَ أُنَيْسًا الأَسْلَمِيَّ أَنْ يَأْتِيَ امْرَأَةَ الْآخَرِ فَإِنْ اعْتَرَفَتْ فَارْجُمْهَا فَاعْتَرَفَتْ فَرَجَمَهَا.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) ও যায়দ ইব্‌নু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

দু’জন লোক রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট তাদের বিবাদ নিয়ে আসল। তাদের একজন বলল, আমাদের মধ্যে আল্লাহ্‌র কিতাব মুতাবিক ফায়সালা করে দিন। অন্যজন বলল – আর সে ছিল দু’জনের মাঝে অধিক বিজ্ঞ – হাঁ, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আল্লাহ্‌র কিতাব মুতাবিক আমাদের বিচার করে দিন। আর আমাকে কথা বলার অনুমতি দিন। তিনি বললেন, বল। সে বলল, আমার ছেলে তার মজুর ছিল। মালিক (রাবী) (রহঃ) বলেন, ‘আসীফ’ অর্থ মজুর। সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে ফেলে। লোকেরা আমাকে বলল যে, আমার ছেলের ওপর বর্তাবে রজম। আমি এর বিনিময়ে তাকে একশ’ ছাগল ও আমার একজন দাসী দিয়ে দেই। তারপর আলিমদেরকে জিজ্ঞেস করি। তাঁরা আমাকে বললেন যে, আমার ছেলের শাস্তি একশ’ বেত্রাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। আর রজম তার স্ত্রীর ওপর-ই বর্তাবে। তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ জেনে রেখ! কসম ঐ সত্তার যাঁর হাতে আমার প্রাণ! অবশ্যই আমি আল্লাহ্‌র কিতাব মুতাবিক তোমাদের উভয়ের মাঝে ফায়সালা করব। তোমার ছাগল ও দাসী তোমাকে ফেরত দেয়া হবে এবং তার ছেলেকে একশ’ বেত্রাঘাত করলেন ও এক বছরের জন্য নির্বাসিত করলেন। আর উনাইস আস্‌লামী (রাঃ) – কে আদেশ করলেন যেন সে অপর ব্যক্তির স্ত্রীর কাছে যায় এবং যদি সে স্বীকার করে তবে যেন তাকে রজম করে। সে স্বীকার করল। ফলে তাকে সে রজম করল। [১১০](আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৭৯)

[১১০] যদি কোন ব্যক্তি স্বীয় স্ত্রী অথবা অন্য কোন মহিলাকে যেনার অপবাদ য়ে এবং এ ব্যাপারে প্রমাণ পেশ করতে না পারে তবে ঐ অপবাদদাতার উপর অপবাদের হাদ্দ কায়িম করা ওয়াজিব। কিন্তু যদি মহিলা তার যিনার কথা স্বীকার করে তাহলে সেই মহিলার উপর যেনার হাদ্দ কায়েম করতে হবে। আর এ জন্যই বিচারকের উপর ওয়াজিব দায়িত্ব হল, সে ঐ মহিলার নিকট কাউকে প্রেরণ করবে তার কাছে অপবাদের সত্যতা জানতে। হাদীসে উল্লেখিত উনাইসাকে ঐ মহিলার কাছে প্রেরণের আসল উদ্দেশ্যই এটা। কারণ ঐ মহিলা যদি তার যেনার কথা স্বীকার না করতেন তবে আসিফের পিতার উপর অপবাদের হাদ্দ কায়েম করা ওয়াজিব হয়ে যেত। (ফাতহুল বারী)

৮৬/৪০. অধ্যায়ঃ
শাসক ব্যতীত অন্য কেউ যদি নিজ পরিবার কিংবা অন্য কাউকে শাসন করে।

আবূ সা’ঈদ (রাঃ) নাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন যে, কেউ সলাত আদায় করে আর কোন ব্যক্তি তার সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করার ইচ্ছে করে, তাহলে সে যেন তাকে বাধা দেয়। সে যদি বাধা না মানে তাহলে যেন তার সঙ্গে লড়াই করে। আবূ সা’ঈদ (রাঃ) এমন করেছেন।

৬৮৪৪
إِسْمَاعِيلُ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ جَاءَ أَبُو بَكْرٍ وَرَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَاضِعٌ رَأْسَهُ عَلَى فَخِذِي فَقَالَ حَبَسْتِ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسَ وَلَيْسُوا عَلَى مَاءٍ فَعَاتَبَنِي وَجَعَلَ يَطْعُنُ بِيَدِهِ فِي خَاصِرَتِي وَلاَ يَمْنَعُنِي مِنْ التَّحَرُّكِ إِلاَّ مَكَانُ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَنْزَلَ اللهُ آيَةَ التَّيَمُّمِ.

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আবূ বকর (রাঃ) এলেন। এ সময় রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্বীয় মাথা আমার উরুর ওপর রেখে আছেন। তখন তিনি বললেন, তুমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও লোকদেরকে আটকে রেখেছ, এদিকে তাদের পানির কোন ব্যবস্থা নেই। তিনি আমাকে তিরস্কার করলেন ও নিজ হাত দ্বারা আমার কোমরে আঘাত করতে লাগলেন। আর রসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর অবস্থানই আমাকে নড়াচড়া হতে বিরত রেখেছিল। তখন আল্লাহ্‌ তায়াম্মুমের আয়াত অবতীর্ণ করলেন। [১১১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮০)

[১১১] আল্লাহ তা’আলা মুহাম্মাদ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’র উম্মাতের উপর যে সমস্ত রাহমাত বর্ষণ করেছেন তার একটি হল এই তায়াম্মুমের বিধান। তায়াম্মুমের বিধান আল্লাহ না দিলে ইবাদাত বন্দেগী অনেক সময় দুঃসাধ্য হয়ে পড়ত।

৬৮৪৫
يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ أَخْبَرَنِي عَمْرٌو أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمٰنِ بْنَ الْقَاسِمِ حَدَّثَهُ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ أَقْبَلَ أَبُو بَكْرٍ فَلَكَزَنِي لَكْزَةً شَدِيدَةً وَقَالَ حَبَسْتِ النَّاسَ فِي قِلاَدَةٍ فَبِي الْمَوْتُ لِمَكَانِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ أَوْجَعَنِي نَحْوَهُ لَكَزَ وَوَكَزَ وَاحِدٌ.

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আবূ বাকর (রাঃ) এলেন ও আমাকে খুব জোরে ঘুষি মারলেন আর বললেন, তুমি লোকজনকে একটি হারের জন্য আটকে রেখেছ। আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অবস্থানের দরুন মরার মত ছিলাম। অথচ তা আমাকে খুবই কষ্ট দিয়েছে। সামনে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। لَكَزَ- وَوَكَزَ একই অর্থের। [৪৪৩] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮১)

৮৬/৪১. অধ্যায়ঃ
যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে পরপুরুষকে দেখে এবং তাকে হত্যা করে ফেলে।

৬৮৪৬
مُوسَى حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ عَنْ وَرَّادٍ كَاتِبِ الْمُغِيرَةِ عَنْ الْمُغِيرَةِ قَالَ قَالَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ لَوْ رَأَيْتُ رَجُلاً مَعَ امْرَأَتِي لَضَرَبْتُهُ بِالسَّيْفِ غَيْرَ مُصْفَحٍ فَبَلَغَ ذَلِكَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَتَعْجَبُونَ مِنْ غَيْرَةِ سَعْدٍ لأَنَا أَغْيَرُ مِنْهُ وَاللهُ أَغْيَرُ مِنِّي.

মুগীরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সা’দ ইব্‌নু ‘উবাদাহ (রাঃ) বলেছেন, যদি আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে কোন পরপুরুষকে দেখি তবে আমি তাকে তরবারীর ধারালো দিক দিয়ে আঘাত করব। তার এ উক্তি রসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে পৌঁছল। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা কি সা’দ এর আত্মমর্যাদাবোধে আশ্চর্য হচ্ছ? আমি ওর থেকে অধিক আত্মসম্মানী। আর আল্লাহ্‌ আমার থেকেও অধিক আত্মসম্মানের অধিকারী।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮২)

৮৬/৪২. অধ্যায়ঃ
কোন বিষয়ে অস্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করা

৬৮৪৭
إِسْمَاعِيلُ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم جَاءَهُ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ امْرَأَتِي وَلَدَتْ غُلاَمًا أَسْوَدَ فَقَالَ هَلْ لَكَ مِنْ إِبِلٍ قَالَ نَعَمْ قَالَ مَا أَلْوَانُهَا قَالَ حُمْرٌ قَالَ هَلْ فِيهَا مِنْ أَوْرَقَ قَالَ نَعَمْ قَالَ فَأَنَّى كَانَ ذَلِكَ قَالَ أُرَاهُ عِرْقٌ نَزَعَهُ قَالَ فَلَعَلَّ ابْنَكَ هَذَا نَزَعَهُ عِرْقٌ.

আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

যে, জনৈক বেদুঈন রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে এলে বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমার স্ত্রী একটি কালো ছেলে জন্ম দিয়েছে। তখন তিনি বললেনঃ তোমার কোন উট আছে কি? সে বলল, হ্যাঁ আছে। তিনি বললেনঃ সেগুলোর রং কি? সে বলল, লাল। তিনি বললেনঃ সেগুলোর মধ্যে কি ছাই বর্ণের কোন উট আছে? সে বলল, হ্যাঁ আছে। তিনি বললেনঃ এটা কোথা থেকে হল? সে বলল, আমার ধারণা যে, কোন শিরা (বংশমূল) একে টেনে এনেছে। তিনি বললেন, তাহলে হয়ত তোমার এ পুত্র কোন শিরা (বংশমূল) টেনে এনেছে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৩)

৮৬/৪৩. অধ্যায়ঃ
শাস্তি ও শাসনের পরিমাণ কতটুকু

৬৮৪৮
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ حَدَّثَنِي يَزِيدُ بْنُ أَبِي حَبِيبٍ عَنْ بُكَيْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ أَبِي بُرْدةَ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لاَ يُجْلَدُ فَوْقَ عَشْرِ جَلَدَاتٍ إِلاَّ فِي حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللهِ.

আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌ন ইউসুফ (র.)… … আবূ বুর্‌দা (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতেনঃ আল্লাহ্‌র নির্ধারিত হদসমূহের কোন হদ ব্যতীত অন্য ক্ষেত্রে দশ কশাঘাতের ঊর্ধ্বে দণ্ড প্রয়োগ করা যাবে না। [৬৮৪৯, ৬৮৫০; মুসলিম ২৯/৯, হাঃ ১৭০৮, আহমাদ ১৬৪৮৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৪)

৬৮৪৯
عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ جَابِرٍ عَمَّنْ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ عُقُوبَةَ فَوْقَ عَشْرِ ضَرَبَاتٍ إِلاَّ فِي حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللهِ.

আম্‌র ইব্‌ন আলী(রা.)… … আবদুর রহমান ইব্‌ন জাবীর (র.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি এমন একজন থেকে বর্ণনা করেন যিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, আল্লাহ্‌র নির্ধারিত হদসমূহের কোন হদ ব্যতীত অন্য ক্ষেত্রে দশ প্রহারের বেশি শাস্তি নেই।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৭২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৫)

৬৮৫০
يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ أَخْبَرَنِي عَمْرٌو أَنَّ بُكَيْرًا حَدَّثَهُ قَالَ بَيْنَمَا أَنَا جَالِسٌ عِنْدَ سُلَيْمَانَ بْنِ يَسَارٍ إِذْ جَاءَ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ جَابِرٍ فَحَدَّثَ سُلَيْمَانَ بْنَ يَسَارٍ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا سُلَيْمَانُ بْنُ يَسَارٍ فَقَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ جَابِرٍ أَنَّ أَبَاهُ حَدَّثَهُ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا بُرْدَةَ الأَنْصَارِيَّ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لاَ تَجْلِدُوا فَوْقَ عَشْرَةِ أَسْوَاطٍ إِلاَّ فِي حَدٍّ مِنْ حُدُودِ اللهِ.

ইয়াহইয়া ইব্‌ন সুলায়মান (র.)… … আবূ বুরদা আনসারী (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ্‌র নির্ধারিত হদসমূহের কোন হদ ব্যতীত অন্যত্র দশ কশাঘাতের বেশি প্রয়োগ করা যাবে না।[৬৮৪৮; মুসলিম ২৯/৯, হাঃ ১৭০৮, আহমাদ ১৬৪৮৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৬)

৬৮৫১
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ نَهَى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ الْوِصَالِ فَقَالَ لَهُ رِجَالٌ مِنْ الْمُسْلِمِينَ فَإِنَّكَ يَا رَسُولَ اللهِ تُوَاصِلُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَيُّكُمْ مِثْلِي إِنِّي أَبِيتُ يُطْعِمُنِي رَبِّي وَيَسْقِينِ فَلَمَّا أَبَوْا أَنْ يَنْتَهُوا عَنْ الْوِصَالِ وَاصَلَ بِهِمْ يَوْمًا ثُمَّ يَوْمًا ثُمَّ رَأَوْا الْهِلاَلَ فَقَالَ لَوْ تَأَخَّرَ لَزِدْتُكُمْ كَالْمُنَكِّلِ بِهِمْ حِينَ أَبَوْا تَابَعَهُ شُعَيْبٌ وَيَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ وَيُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ وَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ خَالِدٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيدٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.

ইয়াহ্‌ইয়া ইব্‌ন বুকায়র (র.)…… আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লাগাতার সিয়াম পালন থেকে নিষেধ করেছেন। তখন মুসলমানদের থেকে এক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল ! আপনি তো লাগাতার সিয়াম পালন করেন। এ সময় রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমার মত তোমাদের মধ্যে কে আছে? আমি তো রাত্রি যাপন করি এমন অবস্থায় যে, আমার রব আমাকে পানাহার করান। যখন তারা লাগাতার সিয়াম পালন করা থেকে বিরত থাকল না তখন তিনি একদিন তাদের সাথে লাগাতার (দিনের পর দিন) সিয়াম পালন করতে থাকলেন। এরপর যখন তারা নতুন চাঁদ দেখল তখন তিনি বললেনঃ যাদি তা আরো দেরি হত তাহলে আমি তোমাদের আরো বাড়িয়ে দিতাম। কথাটি যেন শাসন স্বরূপ বললেন,যাখন তারা বিরত রইল না। শুআয়ব, ইয়াহয়া ইব্‌ন সাঈদ ও ইউনুস (র.) যুহরী (র.) থেকে উকায়ল (র.) এর অনুসরণ করেছেন। আবদুর রহমান ইব্‌ন খালিদ (র.)…… আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৭)

৬৮৫২
عَيَّاشُ بْنُ الْوَلِيدِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّهُمْ كَانُوا يُضْرَبُونَ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا اشْتَرَوْا طَعَامًا جِزَافًا أَنْ يَبِيعُوهُ فِي مَكَانِهِمْ حَتَّى يُؤْوُوهُ إِلَى رِحَالِهِمْ.

আইয়া’শ ইব্‌ন ওয়ালীদ (র.)…… আব্দুল্লাহ ইব্‌ন উমর (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তাদেরকে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে প্রহার করা হত যখন তারা অনুমানের ভিত্তিতে খাদ্যদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করত। তারা তা যেন তাদের স্থানে বিক্রি না করে যে পর্যন্ত না তারা তা আপন বিক্রয়স্থলে ওঠায়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৭৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৮)

৬৮৫৩
عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا يُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ مَا انْتَقَمَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِنَفْسِهِ فِي شَيْءٍ يُؤْتَى إِلَيْهِ حَتَّى يُنْتَهَكَ مِنْ حُرُمَاتِ اللهِ فَيَنْتَقِمَ لِلَّهِ.

আবদান (র.)…… ‘আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের জন্য তার উপর আপতিত বিষয়ের কোন প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি, যে পর্যন্ত না আল্লাহ্‌র অলঙ্ঘনীয় সীমালঙ্ঘন করা হয়। এমন হলে তিনি আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যে প্রতিশোধ গ্রহণ করতেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৭৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৮৯)

৮৬/৪৪. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি প্রমাণ ব্যতীত অশ্লীলতা ও অন্যের কলংকিত হওয়াকে প্রকাশ করে এবং অপবাদ রটায়

৬৮৫৪
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ الزُّهْرِيُّ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ قَالَ شَهِدْتُ الْمُتَلاَعِنَيْنِ وَأَنَا ابْنُ خَمْسَ عَشْرَةَ سَنَةً فَرَّقَ بَيْنَهُمَا فَقَالَ زَوْجُهَا كَذَبْتُ عَلَيْهَا إِنْ أَمْسَكْتُهَا قَالَ فَحَفِظْتُ ذَاكَ مِنَ الزُّهْرِيِّ إِنْ جَاءَتْ بِهِ كَذَا وَكَذَا فَهُوَ وَإِنْ جَاءَتْ بِهِ كَذَا وَكَذَا كَأَنَّهُ وَحَرَةٌ فَهُوَ وَسَمِعْتُ الزُّهْرِيَّ يَقُولُ جَاءَتْ بِهِ لِلَّذِي يُكْرَهُ.

আলী (র.)…… সাহ্‌ল ইব্‌ন সা’দ (র.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি দু’জন লি’আনকারীর ব্যাপারে দেখেছি যে, তাদের উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানো হয়েছে। আমি তখন পনের বছরের যুবক ছিলাম। এরপর স্বামী বলল, আমি যদি তাকে রেখে দেই তাহলে তার উপর আমি মিথ্যা আরোপ করেছি। বর্ণনাকারী বলেন, আমি যুহ্‌রী (র.) থেকে তা স্মরণ রেখেছিযে, যদি সে এই এই আকৃতির সন্তান জন্ম দেয় তাহলে সে সত্যবাদী। আর যদি এই এই আকৃতির সন্তান জন্ম দেয় যেন টিকটিকির ন্যায় লাল, তাহলে সে মিথ্যাবাদী। আমি যুহ্‌রী (র.)-কে বলতে শুনেছি যে, সে সন্তানটি ঘৃণ্য আকৃতির জন্ম নেয়। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৭৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯০)

৬৮৫৫
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ عَنْ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ قَالَ ذَكَرَ ابْنُ عَبَّاسٍ الْمُتَلاَعِنَيْنِ فَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ شَدَّادٍ هِيَ الَّتِي قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَوْ كُنْتُ رَاجِمًا امْرَأَةً عَنْ غَيْرِ بَيِّنَةٍ قَالَ لاَ تِلْكَ امْرَأَةٌ أَعْلَنَتْ.

আলী ইব্‌ন আবদুল্লাহ্‌ (র.)…… কাসিম ইব্‌ন মুহাম্মদ (র.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন যে, ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ) দু’জন লি’আনকারী সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তখন আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌ন সাদ্দাদ (র.) বললেন, এ কি সে মহিলা যার সম্বন্ধে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি যদি কোন মহিলাকে বিনা প্রমাণে রজম করতাম……? তিনি বললেন, না। ওটা ঐ মহিলা যে প্রকাশ্যে অপকর্ম করত। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯১)

৬৮৫৬
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْقَاسِمِ عَنْ الْقَاسِمِ بْنِ مُحَمَّدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ ذُكِرَ التَّلاَعُنُ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ عَاصِمُ بْنُ عَدِيٍّ فِي ذَلِكَ قَوْلاً ثُمَّ انْصَرَفَ وَأَتَاهُ رَجُلٌ مِنْ قَوْمِهِ يَشْكُو أَنَّهُ وَجَدَ مَعَ أَهْلِهِ رَجُلاً فَقَالَ عَاصِمٌ مَا ابْتُلِيتُ بِهَذَا إِلاَّ لِقَوْلِي فَذَهَبَ بِهِ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَهُ بِالَّذِي وَجَدَ عَلَيْهِ امْرَأَتَهُ وَكَانَ ذَلِكَ الرَّجُلُ مُصْفَرًّا قَلِيلَ اللَّحْمِ سَبِطَ الشَّعَرِ وَكَانَ الَّذِي ادَّعَى عَلَيْهِ أَنَّهُ وَجَدَهُ عِنْدَ أَهْلِهِ آدَمَ خَدِلاً كَثِيرَ اللَّحْمِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم اللهُمَّ بَيِّنْ فَوَضَعَتْ شَبِيهًا بِالرَّجُلِ الَّذِي ذَكَرَ زَوْجُهَا أَنَّهُ وَجَدَهُ عِنْدَهَا فَلاَعَنَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُمَا فَقَالَ رَجُلٌ لِابْنِ عَبَّاسٍ فِي الْمَجْلِسِ هِيَ الَّتِي قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَوْ رَجَمْتُ أَحَدًا بِغَيْرِ بَيِّنَةٍ رَجَمْتُ هَذِهِ فَقَالَ لاَ تِلْكَ امْرَأَةٌ كَانَتْ تُظْهِرُ فِي الإِسْلاَمِ السُّوءَ.

আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌ন ইউসুফ (র.)…… ইব্‌ন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

নবী রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর নিকটে লি’আনকারীদের সম্পর্কে আলোচনা করা হল। তখন আসিম ইব্‌নআদী (রাঃ) তার সম্বন্ধে কিছু কটুক্তি করলেন। তারপর তিনি ফিরে গেলেন। তখন তার স্বগোত্রের এক ব্যক্তি তার কাছে এসে অভিযোগ করল যে, সে তার স্ত্রীর কাছে অন্য এক ব্যক্তিকে পেয়েছে। আসিম (রাঃ) বলেন, আমি আমার এ উক্তির দরুনই এ পরীক্ষায় পড়েছি। এরপর তিনি তাকে নবী রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর কাছে নিয়ে গেলেন। আর সে তাঁকে ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে জানাল যার সাথে তার স্ত্রীকে পেয়েছে। এ ব্যক্তিটি গৌর বর্ণ, হালকা-পাতলা, সোজা চুল বিশিষ্ট ছিল। আর যে ব্যক্তি সম্বন্ধে দাবি করেছে যে, সে তাকে তার স্ত্রীর কাছে পেয়েছে সে ছিল মেটে বর্ণের, মোটা গোড়ালী, স্থুল গোশ্‌তবিশিষ্ট। তখন নবী রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হে আল্লাহ্‌! স্পষ্ট করে দিন। ফলে সে মহিলাটি ঐ ব্যক্তি সদৃশ সন্তান জন্ম দিল যার কথা তার স্বামী উল্লেখ করেছিল যে, তাকে তার স্ত্রীর সাথে পেয়েছে। তখন নবী রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উভয়ের মধ্যে লি’আন কার্যকর করলেন। তখন এক ব্যক্তি এ মজলিসেই ইব্‌ন আব্বাস (রাঃ)- কে বলল, এটা কি সে মহিলা যার সম্পর্কে নবী রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি আমি কাউকে বিনা প্রমাণে রজম করতাম তাহলে একে রজম করতাম। তিনি বলেন, না। ওটা ঐ মহিলা যে ইসলামে থাকা অবস্থায় প্রকাশ্যে অপকর্ম করত। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯২)

৮৬/৪৫. অধ্যায়ঃ
সাধ্বী রমণীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করা।

আর যারা সাধ্বী রমনীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে এবং স্বপক্ষে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদেরকে আশিটি কশাঘাত কর……ক্ষমাশীল দয়ালু পর্যন্ত। (২৪ : ৪-৫) যারা সাধ্বী, সরলমনা ও বিশ্বাসী নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে… আয়াতের শেষ পর্যন্ত (২৪ : ২৩)

৬৮৫৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ، عَنْ ثَوْرِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَبِي الْغَيْثِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ اجْتَنِبُوا السَّبْعَ الْمُوبِقَاتِ ‏”‏‏.‏ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا هُنَّ قَالَ ‏”‏ الشِّرْكُ بِاللَّهِ، وَالسِّحْرُ، وَقَتْلُ النَّفْسِ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ، وَأَكْلُ الرِّبَا، وَأَكْلُ مَالِ الْيَتِيمِ، وَالتَّوَلِّي يَوْمَ الزَّحْفِ، وَقَذْفُ الْمُحْصَنَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ الْغَافِلاَتِ ‏”‏‏.‏

আবদুল আযীয ইব্‌ন আবদুল্লাহ্‌ (র.)…… আবূ হুরায়রা (র.) থেকে বর্ণিতঃ

আবদুল আযীয ইব্‌ন আবদুল্লাহ্‌ (র.)…… আবূ হুরায়রা (র.) সূত্রে নবী রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ তোমরা সাতটি ধ্বংসকারী বস্তু থেকে বেঁচে থাক। তারা বললেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল ! সেগুলো কি? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্‌র সাথে শরীক করা, জাদু, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে কাউকে হত্যা করা, যা আল্লাহ্‌ হারাম করেছেন, সুদ খাওয়া, ইয়াতীমের মাল ভক্ষণ করা, জিহাদের ময়দান থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করা, সাধ্বী সরলমনা রমণীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করা। [১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৮০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯৩)

[১] হাদীসে উল্লেখিত موبقة বা ধ্বংসাত্মক বিষয় দ্বারা বড় কবীরা গুনাহ উদ্দেশ্য, যা আবু হুরায়রার (রাঃ) অন্য সূত্রে বর্ণিত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। যেমন ইমাম বায্যার ও ইবনুল মুনযির আবু হুরায়রার সূত্রে বর্ণনা করেন, الكبائر الشرك بالله وقتل النفس এবং ইমাম নাসায়ী, ইমাম ত্বরাবানী সুহাইবের সূত্রে আবু হুরায়রা ও আবু সাঈদ থেকে বর্ণনা করেন,

قال رسول الله صلى الله عليه وسلم مامن عبد يصلي الخمس ويجتنب الكبائر السبع الا فتحت له أبواب الجنة।

হাদীসটিকে ইবনে হিববান ও হাকেম সহীহ বলেছেন। কিন্তু উল্লেখিত হাদীসের সব ব্যাখ্যা করেননি। অন্যদিকে ইসমাঈল আল কাজী সহীহ সনদে সাঈদ ইবনু মুসায়্যিব হতে ১০টির কথা উল্লেখ করেন। তিনি হাদীসে উল্লেখিত মূল ৭টির সাথে যা অতিরিক্ত বর্ণনা করেন তা হল, وعقوق الوالدين- واليمين الغموس وشرب الخمر কবীরা গুনাহের সংখ্যা নিরুপণ নিয়ে রয়েছে বিশদ মতভেদ। ইমাম ত্ববারী ও ইসমাঈল ইবনু আববাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন, তাঁকে ৭টি কবীরা গুনাহ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ কবীরা গুনাহ ৭৭টিরও অধিক। অন্য আরেক বর্ণনায় ওগুলো প্রায় ৭০টি, আবার আরেকটি বর্ণনায় রয়েছে, ওগুলোর সংখ্যা ৭শ’টি। (ফাতহুল বারী)

৮৬/৪৬. অধ্যায়ঃ
ক্রীতদাসদের প্রতি অপবাদ আরোপ করা

৬৮৫৮
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ عَنْ فُضَيْلِ بْنِ غَزْوَانَ عَنْ ابْنِ أَبِي نُعْمٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ مَنْ قَذَفَ مَمْلُوكَهُ وَهُوَ بَرِيءٌ مِمَّا قَالَ جُلِدَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ كَمَا قَالَ.

মুসাদ্দাদ (র.)…… আবূহুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবুল কাসিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে বলতে শুনেছি যে, কেউ আপন ক্রীতদাসের প্রতি অপবাদ আরোপ করল। অথচ সে তা থেকে পবিত্র যা সে বলেছে। কিয়ামত দিবসে তাকে কশাঘাত করা হবে। তবে যদি এমনি হয় যেমন সে বলেছে (সে ক্ষেত্রে কশাঘাত করা হবে না)। [মুসলিম ২৭/৯, হাঃ ১৬৬০, আহমাদ ৯৫৭২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৮১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯৪)

৮৬/৪৭. অধ্যায়ঃ
ইমাম থেকে অনুপস্থিত ব্যক্তির ওপর হদ প্রয়োগ করার জন্য তিনি কোন ব্যক্তিকে নির্দেশ করতে পারেন কি? উমর (রা.) এমনটা করেছেন

৬৮৫৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ، قَالاَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَنْشُدُكَ اللَّهَ إِلاَّ قَضَيْتَ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللَّهِ‏.‏ فَقَامَ خَصْمُهُ وَكَانَ أَفْقَهَ مِنْهُ فَقَالَ صَدَقَ، اقْضِ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللَّهِ، وَأْذَنْ لِي يَا رَسُولَ اللَّهِ‏.‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ قُلْ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ إِنَّ ابْنِي كَانَ عَسِيفًا فِي أَهْلِ، هَذَا فَزَنَى بِامْرَأَتِهِ، فَافْتَدَيْتُ مِنْهُ بِمِائَةِ شَاةٍ وَخَادِمٍ وَإِنِّي سَأَلْتُ رِجَالاً مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ فَأَخْبَرُونِي أَنَّ عَلَى ابْنِي جَلْدَ مِائَةٍ وَتَغْرِيبَ عَامٍ، وَأَنَّ عَلَى امْرَأَةِ هَذَا الرَّجْمَ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لأَقْضِيَنَّ بَيْنَكُمَا بِكِتَابِ اللَّهِ، الْمِائَةُ وَالْخَادِمُ رَدٌّ عَلَيْكَ، وَعَلَى ابْنِكَ جَلْدُ مِائَةٍ وَتَغْرِيبُ عَامٍ، وَيَا أُنَيْسُ اغْدُ عَلَى امْرَأَةِ هَذَا فَسَلْهَا، فَإِنِ اعْتَرَفَتْ فَارْجُمْهَا ‏”‏‏.‏ فَاعْتَرَفَتْ فَرَجَمَهَا‏.‏

মুহাম্মদ ইব্‌ন ইউসুফ (র.)…… আবূহুরায়রা ও যায়িদইব্‌ন খালিদ জুহানী (রা.) থেকে বর্ণিতঃ
৮৭/১. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্‌র বাণী : কেউ ইচ্ছা পূর্বক কোন মু’মিন ব্যক্তিকে হত্যা করলে তার শাস্তি হল জাহান্নাম। (সূরা আন্-নিসা ৪/৯৩)

৬৮৬১
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي وَائِلٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ شُرَحْبِيلَ قَالَ قَالَ عَبْدُ اللهِ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَيُّ الذَّنْبِ أَكْبَرُ عِنْدَ اللهِ قَالَ أَنْ تَدْعُوَ لِلَّهِ نِدًّا وَهُوَ خَلَقَكَ قَالَ ثُمَّ أَيٌّ قَالَ ثُمَّ أَنْ تَقْتُلَ وَلَدَكَ خَشْيَةَ أَنْ يَطْعَمَ مَعَكَ قَالَ ثُمَّ أَيٌّ قَالَ ثُمَّ أَنْ تُزَانِيَ بِحَلِيلَةِ جَارِكَ فَأَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ تَصْدِيقَهَا {وَالَّذِينَ لاَ يَدْعُونَ مَعَ اللهِ إِلَهًا آخَرَ وَلاَ يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللهُ إِلاَّ بِالْحَقِّ وَلاَ يَزْنُونَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًا} الْآيَةَ.

‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক লোক বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্‌র নিকট সবচেয়ে বড় গুনাহ্ কোন্‌টি? তিনি বললেনঃ তুমি আল্লাহ্‌র সঙ্গে কাউকে সমকক্ষ গণ্য কর অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। লোকটি বলল, তারপর কোন্‌টি? তিনি বললেনঃ তারপর হলো, তুমি তোমার সন্তানকে এ ভয়ে হত্যা কর যে, সে তোমার সঙ্গে খাদ্য খাবে। লোকটি বলল, তারপর কোন্‌টি? তিনি বললেনঃ তারপর হলো, তুমি তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে যিনা কর। অত:পর আল্লাহ এ কথার সত্যতায় অবতীর্ণ করলেনঃ “এবং তারা আল্লাহ্‌র সঙ্গে কোন ইলাহকে আহ্বান করে না, আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন উপযুক্ত কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করে না এবং ব্যাভিচার করে না। যে এগুলো করে সে শাস্তি ভোগ করবে” – (সূরা ফুরক্বান ২৫/৬৮)। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯৬)

এই পরিচ্ছেদে ইমাম বুখারী (রহঃ) ১২টি হাদীস বর্ণনা করেছেন। প্রত্যেকটি হাদীসের মধ্যেই হত্যার বিষয়ে কঠোরতা রয়েছে। যারা না বুঝে বলে থাকে যে, ইসলাম মানুষকে হত্যাযজ্ঞের প্রতি উৎসাহ যোগায় তাদের ভাল করে এই হাদীসগুলো অধ্যয়ন করা দরকার। আশা করা যায়, যদি কেউ স্থিরভাবে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মনোযোগ সহকারে সত্য উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে হাদীসগুলো অধ্যয়ন করে, তবে তার অন্তরে যত কালিমা-ই থাকুক না কেন তা অবশ্য অবশ্যই দূরীভূত হবে ইনশা-আল্লাহ।

৬৮৬২
عَلِيٌّ حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ سَعِيدِ بْنِ الْعَاصِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَنْ يَزَالَ الْمُؤْمِنُ فِي فُسْحَةٍ مِنْ دِينِهِ مَا لَمْ يُصِبْ دَمًا حَرَامًا.

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ মু’মিন তার দ্বীনের ব্যাপারে পূর্ণ স্বস্তিতে থাকে, যে পর্যন্ত না সে কোন হারাম ঘটায়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৮৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯৭)

৬৮৬৩
أَحْمَدُ بْنُ يَعْقُوبَ حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ سَعِيدٍ سَمِعْتُ أَبِي يُحَدِّثُ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ قَالَ إِنَّ مِنْ وَرَطَاتِ الْأُمُورِ الَّتِي لاَ مَخْرَجَ لِمَنْ أَوْقَعَ نَفْسَهُ فِيهَا سَفْكَ الدَّمِ الْحَرَامِ بِغَيْرِ حِلِّهِ.

‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে সব বিষয়ে কেউ নিজেকে জড়িয়ে ফেলার পরে তার ধ্বংস থেকে নিজেকে রক্ষা করার উপায় থাকে না, সেগুলোর একটি হচ্ছে হালাল ছাড়া হারাম রক্ত প্রবাহিত করা (অর্থাৎ অন্যায় ভাবে কাউকে হত্যা করা)।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯৮)

৬৮৬৪
عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسَى عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَوَّلُ مَا يُقْضَى بَيْنَ النَّاسِ فِي الدِّمَاءِ.

‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সবার আগে মানুষের মাঝে যে বিষয়ের ফয়সালা করা হবে তা হলো হত্যা।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৮৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯৯)

৬৮৬৫
عَبْدَانُ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ حَدَّثَنَا يُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنَا عَطَاءُ بْنُ يَزِيدَ أَنَّ عُبَيْدَ اللهِ بْنَ عَدِيٍّ حَدَّثَهُ أَنَّ الْمِقْدَادَ بْنَ عَمْرٍو الْكِنْدِيَّ حَلِيفَ بَنِي زُهْرَةَ حَدَّثَهُ وَكَانَ شَهِدَ بَدْرًا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّي لَقِيتُ كَافِرًا فَاقْتَتَلْنَا فَضَرَبَ يَدِي بِالسَّيْفِ فَقَطَعَهَا ثُمَّ لاَذَ مِنِّي بِشَجَرَةٍ وَقَالَ أَسْلَمْتُ لِلَّهِ آقْتُلُهُ بَعْدَ أَنْ قَالَهَا قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لاَ تَقْتُلْهُ قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَإِنَّهُ طَرَحَ إِحْدَى يَدَيَّ ثُمَّ قَالَ ذَلِكَ بَعْدَ مَا قَطَعَهَا آقْتُلُهُ قَالَ لاَ تَقْتُلْهُ فَإِنْ قَتَلْتَهُ فَإِنَّهُ بِمَنْزِلَتِكَ قَبْلَ أَنْ تَقْتُلَهُ وَأَنْتَ بِمَنْزِلَتِهِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ كَلِمَتَهُ الَّتِي قَالَ.

বনী যুহরা গোত্রের মিত্র মিকদাদ ইব্‌নু আমর কিনদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যিনি বদরের যুদ্ধে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে উপস্হিত ছিলেন। তিনি বললেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! এক কাফেরের সঙ্গে আমার মুকাবিলা হল এবং আমাদের মধ্যে লড়াই বাধল। সে তলোয়ার দিয়ে আমার হাতে আঘাত করল এবং তা কেটে ফেলল। তারপর সে কোন গাছের আড়ালে আশ্রয় নিল আর বলল, আমি আল্লাহ্‌র জন্য মুসলিম হয়ে গেলাম। এ কথা বলার পর কি আমি তাকে হত্যা করতে পারব? রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তুমি তাকে হত্যা করবে না। তিনি বললেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! সে তো আমার এক হাত কেটে দিয়েছে। আর কেটে ফেলার পরই এ কথা বলেছে, এতে কি আমি তাকে হত্যা করতে পারব? তিনি বললেনঃ তুমি তাকে হত্যা করবে না। তুমি যদি তাকে হত্যা কর তাহলে তাকে হত্যা করার আগে তুমি যেখানে ছিলে সে সেখানে এসে যাবে। আর সে ঐ কালিমা উচ্চারণ করার আগে যেখানে ছিল তুমি সেখানে চলে যাবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪০০)

৬৮৬৬
وَقَالَ حَبِيبُ بْنُ أَبِي عَمْرَةَ عَنْ سَعِيدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِلْمِقْدَادِ إِذَا كَانَ رَجُلٌ مُؤْمِنٌ يُخْفِي إِيمَانَهُ مَعَ قَوْمٍ كُفَّارٍ فَأَظْهَرَ إِيمَانَهُ فَقَتَلْتَهُ فَكَذَلِكَ كُنْتَ أَنْتَ تُخْفِي إِيمَانَكَ بِمَكَّةَ مِنْ قَبْلُ.

হাবীব ইব্‌নু আবূ আমরা (রহঃ) সা’ঈদ (রহঃ)-এর সূত্রে ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিকদাদ (রাঃ) -কে বলেছেনঃ উক্ত মু’মিন লোকটি যখন কাফেরদের মাঝে অবস্হান করছিল তখন সে আপন ঈমান গোপন রেখেছিল। এরপর সে তার ঈমান প্রকাশ করল আর তুমি তাকে হত্যা করে ফেললে। তুমিও তো এর আগে মক্কায় থাকাকালে আপন ঈমান লুকিয়ে রেখেছিলে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪০০)

৮৭/২. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্‌র বাণীঃ আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে। (সূরা আল-মায়িদাহ ৫/৩২)

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়া প্রাণ হত্যা নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।

৬৮৬৭
قَبِيصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مُرَّةَ عَنْ مَسْرُوقٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ تُقْتَلُ نَفْسٌ إِلاَّ كَانَ عَلَى ابْنِ آدَمَ الأَوَّلِ كِفْلٌ مِنْهَا .

‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেনঃ কোন মানুষকে হত্যা করা হলে আদম (আঃ)- এর প্রথম সন্তান (কাবীল) এর উপর (অপরাধের) কিছু অংশ অবশ্যই পড়বে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৮৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪০১)

৬৮৬৮
أَبُو الْوَلِيدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ وَاقِدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ أَخْبَرَنِي عَنْ أَبِيهِ سَمِعَ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ تَرْجِعُوا بَعْدِي كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ.

‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেনঃ তোমরা আমার পরে কুফরিতে ফিরে যেয়ো না যে (সে অবস্থায়) তোমরা একে অপরের গর্দান উড়িয়ে দিবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৮৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪০২)

৬৮৬৯
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَلِيِّ بْنِ مُدْرِكٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا زُرْعَةَ بْنَ عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ عَنْ جَرِيرٍ قَالَ قَالَ لِي النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ اسْتَنْصِتْ النَّاسَ لاَ تَرْجِعُوا بَعْدِي كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ رَوَاهُ أَبُو بَكْرَةَ وَابْنُ عَبَّاسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.

জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বিদায় হাজ্জের সময় বলেছেন, লোকদেরকে নীরব কর, তোমরা আমার পরে কুফরিতে ফিরে যেয়ো না যে, তোমরা একে অপরের গর্দান উড়িয়ে দিবে।

আবূ বকর ও ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে (এরকম) বর্ণনা করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৯০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪০৩)

৬৮৭০
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ فِرَاسٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْكَبَائِرُ الإِشْرَاكُ بِاللهِ وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ أَوْ قَالَ الْيَمِينُ الْغَمُوسُ شَكَّ شُعْبَةُ وَقَالَ مُعَاذٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ الْكَبَائِرُ الإِشْرَاكُ بِاللهِ وَالْيَمِينُ الْغَمُوسُ وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ أَوْ قَالَ وَقَتْلُ النَّفْسِ.

‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কবীরা গুনাহ হচ্ছে আল্লাহ্‌র সঙ্গে শরীক করা, পিতা মাতার অবাধ্য হওয়া অথবা বলেছেন, মিথ্যা কসম করা। শু‘বাহ (রহঃ) তাতে সন্দেহ করেন। এবং মুয়ায (রহঃ) বলেন, শু‘বাহ আমাদেরকে বর্ণনা করেছেন, কবীরা গুনাহ্ হচ্ছে আল্লাহ্‌র সঙ্গে শরীক করা, মিথ্যা কসম করা আর মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া অথবা বলেছেন প্রাণ হত্যা করা।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪০৪)

৬৮৭১
إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ أَبِي بَكْرٍ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْكَبَائِرُ ح وحَدَّثَنَا عَمْرٌو وَهُوَ ابْنُ مَرْزُوقٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ ابْنِ أَبِي بَكْرٍ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَكْبَرُ الْكَبَائِرِ الإِشْرَاكُ بِاللهِ وَقَتْلُ النَّفْسِ وَعُقُوقُ الْوَالِدَيْنِ وَقَوْلُ الزُّورِ أَوْ قَالَ وَشَهَادَةُ الزُّورِ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কবীরা গুনাহসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বড় গুনাহ্ হচ্ছে আল্লাহ্‌র সঙ্গে শরীক করা, প্রাণ হত্যা করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া আর মিথ্যা বলা, কিংবা বলেছেন, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪০৫)

৬৮৭২
عَمْرُو بْنُ زُرَارَةَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ حَدَّثَنَا حُصَيْنٌ حَدَّثَنَا أَبُو ظَبْيَانَ قَالَ سَمِعْتُ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدِ بْنِ حَارِثَةَ يُحَدِّثُ قَالَ بَعَثَنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى الْحُرَقَةِ مِنْ جُهَيْنَةَ قَالَ فَصَبَّحْنَا الْقَوْمَ فَهَزَمْنَاهُمْ قَالَ وَلَحِقْتُ أَنَا وَرَجُلٌ مِنْ الأَنْصَارِ رَجُلاً مِنْهُمْ قَالَ فَلَمَّا غَشِينَاهُ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ قَالَ فَكَفَّ عَنْهُ الأَنْصَارِيُّ فَطَعَنْتُهُ بِرُمْحِي حَتَّى قَتَلْتُهُ قَالَ فَلَمَّا قَدِمْنَا بَلَغَ ذَلِكَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَقَالَ لِي يَا أُسَامَةُ أَقَتَلْتَهُ بَعْدَ مَا قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّمَا كَانَ مُتَعَوِّذًا قَالَ أَقَتَلْتَهُ بَعْدَ مَا قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ قَالَ فَمَا زَالَ يُكَرِّرُهَا عَلَيَّ حَتَّى تَمَنَّيْتُ أَنِّي لَمْ أَكُنْ أَسْلَمْتُ قَبْلَ ذَلِكَ الْيَوْمِ.

উসামাহ ইব্‌নু যায়দ ইব্‌নু হারিসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে জুহাইনা কওমের হারাকা শাখার বিরুদ্ধে পাঠালেন। আমরা ভোরে এ কওমের কাছে এলাম এবং তাদেরকে পরাস্ত করে ফেললাম। তিনি বলেন, আমি ও আনসারদের এক ব্যক্তি তাদের একজনকে ধাওয়া করে তার কাছে পৌঁছে গেলাম। তিনি বলেন, আমরা যখন আক্রমণ করতে উদ্যত হলাম তখন সে বলে উঠল, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্। তিনি বলেন, আনসারী ব্যক্তি তার থেকে বিরত হয়ে গেল। কিন্তু আমি তাকে আমার বর্শা দিয়ে আঘাত করে হত্যা করলাম। তিনি বলেন, আমরা যখন মদীনায় আসলাম, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এ সংবাদ পৌঁছল। তিনি বলেন, আমাকে তিনি বললেনঃ হে উসামাহ! তুমি কি তাকে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ বলার পরও হত্যা করলে? আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! সে আসলে হত্যা থেকে বাঁচতে চেয়েছিল। তিনি বললেনঃ আহা! তুমি কি তাকে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বলার পরও হত্যা করলে? তিনি বলেন, তিনি বারবার কথাটি আমাকে বলতে থাকলেন। এমন কি আমি কামনা করতে লাগলাম, যদি আমি ঐ দিনের আগে মুসলিম না হতাম। [১১৪] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৯৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪০৬)

[১১৪] (সে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার পরেও তুমি তাকে হত্যা করেছ?) ইব্‌নু ত্বীন বলেন, এই তিরস্কারের মধ্যে রয়েছে মহান শিক্ষা এবং শিক্ষার মধ্যে রয়েছে এমন এক ঘোষণা যে, পরবর্তীতে আর কেউ যেন তাওহীদের বাণী উচ্চারণকারীকে হত্যা করতে উদ্যত না হয়। আর ইমাম কুরতুবী (রাহিঃ) বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর এই বাণী বার বার উচ্চারণের মধ্যে এবং ওযর গ্রহণ না করার মধ্যে অনুরূপ পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে রয়েছে কঠিন ধমক। (ফাতহুল বারী)

৬৮৭৩
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ حَدَّثَنَا يَزِيدُ عَنْ أَبِي الْخَيْرِ عَنْ الصُّنَابِحِيِّ عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ قَالَ إِنِّي مِنْ النُّقَبَاءِ الَّذِينَ بَايَعُوا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم بَايَعْنَاهُ عَلَى أَنْ لاَ نُشْرِكَ بِاللهِ شَيْئًا وَلاَ نَسْرِقَ وَلاَ نَزْنِيَ وَلاَ نَقْتُلَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللهُ وَلاَ نَنْتَهِبَ وَلاَ نَعْصِيَ بِالْجَنَّةِ إِنْ فَعَلْنَا ذَلِكَ فَإِنْ غَشِينَا مِنْ ذَلِكَ شَيْئًا كَانَ قَضَاءُ ذَلِكَ إِلَى اللهِ.

‘উবাদাহ ইব্‌নু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ঐ নির্বাচিত নেতাদের একজন ছিলাম যারা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাতে বায়’আত করেছিলেন। আমরা তাঁর হাতে এ শর্তে বায়’আত করেছি যে, আমরা আল্লাহ্‌র সঙ্গে কিছুকে শরীক করব না, যিনা করব না, চুরি করব না, এমন প্রাণ হত্যা করব না যা আল্লাহ্ হারাম করেছেন, আমরা লুণ্ঠন করব না, নাফরমানী করব না। যদি আমরা ওগুলো ঠিকভাবে পালন করি তবে জান্নাত লাভ হবে। আর যদি এর মধ্য থেকে কোন একটা করে ফেলি তাহলে তার ফয়সালা আল্লাহ্‌র কাছে সমর্পিত। (আধুনিক প্রকাশনী- ,৬৩৯৪ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪০৭)

৬৮৭৪
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ حَمَلَ عَلَيْنَا السِّلاَحَ فَلَيْسَ مِنَّا رَوَاهُ أَبُو مُوسَى عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم.

‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক আমাদের বিপক্ষে অস্ত্র ধারণ করবে সে আমাদের দলভুক্ত নয়।

আবূ মূসা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে (এরকম) বর্ণনা করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪০৮)

৬৮৭৫
عَبْدُ الرَّحْمٰنِ بْنُ الْمُبَارَكِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ وَيُونُسُ عَنْ الْحَسَنِ عَنْ الأَحْنَفِ بْنِ قَيْسٍ قَالَ ذَهَبْتُ لِأَنْصُرَ هَذَا الرَّجُلَ فَلَقِيَنِي أَبُو بَكْرَةَ فَقَالَ أَيْنَ تُرِيدُ قُلْتُ أَنْصُرُ هَذَا الرَّجُلَ قَالَ ارْجِعْ فَإِنِّي سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ إِذَا الْتَقَى الْمُسْلِمَانِ بِسَيْفَيْهِمَا فَالْقَاتِلُ وَالْمَقْتُولُ فِي النَّارِ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ هَذَا الْقَاتِلُ فَمَا بَالُ الْمَقْتُولِ قَالَ إِنَّهُ كَانَ حَرِيصًا عَلَى قَتْلِ صَاحِبِهِ.

আহনাফ ইব্‌নু কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি তাঁকে (‘আলী (রাঃ)-কে সাহায্য) করার জন্য যাচ্ছিলাম। এমন সময় আমার সঙ্গে আবূ বকর (রাঃ) – এর সাক্ষাৎ ঘটল। তিনি বললেন, কোথায় যাচ্ছ? আমি বললাম, ঐ ব্যক্তিকে সাহায্য করতে। তিনি বললেন, ফিরে যাও। কেননা, আমি রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে বলতে শুনেছি যে, যখন দু’জন মুসলিম তলোয়ার নিয়ে পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তখন হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তির অবস্থান হবে জাহান্নাম। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! হত্যাকারীর ব্যাপারটা তো বুঝা গেল। কিন্তু নিহত ব্যক্তির ব্যাপার সে কেমন? তিনি বললেনঃ সেও তার বিরোধীকে হত্যা করতে আগ্রহান্বিত ছিল। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪০৯)

৮৭/৩. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ হে মু’মিনগণ! নিহতদের ব্যাপারে তোমাদের জন্য কিসাসের বিধান দেয়া হয়েছে…… (সূরা আল-বাক্বারাহ ২/১৭৮)

৮৭/৪. অধ্যায়ঃ
(ইমাম কর্তৃক) হত্যাকারীকে স্বীকারোক্তি পর্যন্ত প্রশ্ন করা। আর শরীয়তের শাস্তির ব্যাপারে স্বীকারোক্তি।

৬৮৭৬
حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ يَهُودِيًّا رَضَّ رَأْسَ جَارِيَةٍ بَيْنَ حَجَرَيْنِ فَقِيلَ لَهَا مَنْ فَعَلَ بِكِ هَذَا أَفُلاَنٌ أَوْ فُلاَنٌ حَتَّى سُمِّيَ الْيَهُودِيُّ فَأُتِيَ بِهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يَزَلْ بِهِ حَتَّى أَقَرَّ بِهِ فَرُضَّ رَأْسُهُ بِالْحِجَارَةِ.

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক ইয়াহূদী একটি বালিকার মাথা দু’টি পাথরের মাঝে রেখে চূর্ণ করে দিল। এরপর তাকে জিজ্ঞেস করা হল কে তোমার সঙ্গে এমন ব্যবহার করেছেন? অমুক অথবা অমুক? শেষ পর্যন্ত ইয়াহূদীটির নাম বলা হল। তাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে আনা হল এবং তিনি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকলেন। অবশেষে সে তা স্বীকার করল। কাজেই পাথরের আঘাতে তার মাথা চূর্ণ করে দেয়া হল। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪১০)

৮৭/৫. অধ্যায়ঃ
পাথর বা লাঠি দিয়ে হত্যা করা।

৬৮৭৭
مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ إِدْرِيسَ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ هِشَامِ بْنِ زَيْدِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ جَدِّهِ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ خَرَجَتْ جَارِيَةٌ عَلَيْهَا أَوْضَاحٌ بِالْمَدِينَةِ قَالَ فَرَمَاهَا يَهُودِيٌّ بِحَجَرٍ قَالَ فَجِيءَ بِهَا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَبِهَا رَمَقٌ فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فُلاَنٌ قَتَلَكِ فَرَفَعَتْ رَأْسَهَا فَأَعَادَ عَلَيْهَا قَالَ فُلاَنٌ قَتَلَكِ فَرَفَعَتْ رَأْسَهَا فَقَالَ لَهَا فِي الثَّالِثَةِ فُلاَنٌ قَتَلَكِ فَخَفَضَتْ رَأْسَهَا فَدَعَا بِهِ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَتَلَهُ بَيْنَ الْحَجَرَيْنِ.

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রুপার গহনা পরিহিতা এক বালিকা মদীনায় বের হল। রাবী বলেন, তখন এক ইয়াহুদী তার প্রতি পাথর নিক্ষেপ করল। রাবী বলেন, তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আনা হল। তখন রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, অমুক কি তোমাকে হত্যা করেছে? সে তার মাথা উঠাল। তিনি আবার বললেন, অমুক কি তোমাকে হত্যা করেছে? সে তার মাথা উঠাল। তিনি তাকে তৃতীয়বার বললেন, অমুক কি তোমাকে হত্যা করেছে? সে তার মাথা নিচু করল। তখন রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রস্তর নিক্ষেপকারীকে ডেকে আনলেন এবং দু’টি পাথরের মাঝে রেখে তাকে হত্যা করলেন। [১১৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪১১)

হাদীসটি জামহুরের দলীল। কারণ জামহুর ওলামার মতে হত্যাকারীকে অনুরূপভাবেই হত্যা করা হবে সে যা দ্বারা হত্যা করেছে। তারা আল্লাহ তা‘আলার ঐ বাণী অাঁকড়ে ধরেছেন। {وَإِنْ عَاقَبْتُمْ فَعَاقِبُواْ بِمِثْلِ مَا عُوقِبْتُم بِهِ وَلَئِن صَبَرْتُمْ لَهُوَ خَيْرٌ لِّلصَّابِرينَ} [সূরা আন্-নাহল (১৬): ১২৬]।



আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন, {فَاعْتَدُواْ عَلَيْهِ بِمِثْلِ مَا اعْتَدَى عَلَيْكُمْ} [সূরা আল-বাকারাহ (২): ১৯৪] (ফাতহুল বারী)

৮৭/৬. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্‌র বাণী: প্রাণের বদলে প্রাণ…………..। (সূরা আল-মায়িদাহ ৫/৪৫)

৬৮৭৮
عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِي حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ مُرَّةَ عَنْ مَسْرُوقٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لاَ يَحِلُّ دَمُ امْرِئٍ مُسْلِمٍ يَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلٰهَ إِلاَّ اللهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ بِإِحْدَى ثَلاَثٍ النَّفْسُ بِالنَّفْسِ وَالثَّيِّبُ الزَّانِي وَالْمَارِقُ مِنْ الدِّينِ التَّارِكُ لِلْجَمَاعَةِ.

‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন মুসলিম ব্যক্তি যদি সাক্ষ্য দেয় যে, আল্লাহ্‌ ব্যতীত আর কোন ইলাহ্‌ নেই এবং আমি আল্লাহ্‌র রাসূল, তিন-তিনটি কারণ ছাড়া তাকে হত্যা করা বৈধ নয়। (যথা) জানের বদলে জান, বিবাহিত ব্যভিচারী, আর নিজের দ্বীন ত্যাগকারী মুসলিম জামাআত থেকে পৃথক হয়ে যাওয়া ব্যক্তি। [১১৬][মুসলিম ৬/২৮, হাঃ ১৬৭৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪১২)

[১১৬] হাদীসে উল্লেখিত “জামাআত” দ্বারা উদ্দেশ্য (আরবি) তথা মুসলমানদের জামা’আত। অর্থাৎ মুরদাত হওয়ার মাধ্যমে মুসলিমদের থেকে বিছিন্ন হয় অথবা মুরতাদ (স্বধর্মত্যাগী) হওয়ার মাধ্যমে মুসলমানদের ছেড়ে দেয়। সুতরাং (আরবি) শব্দটি ﺗﺎﺭﻙ ও ﺍﻟﻤﻔﺎﺭﻕ শব্দদ্বয়ের বিশেষণ। যা স্বতন্ত্র বিশেষণ নয়। কারণ স্বতন্ত্র বিশেষণ ধরা হলে হাদীসে উল্লেখিত তিনটি বৈশিষ্ট্যের স্থলে চারটি বৈশিষ্ট্য হয়ে যাবে। উল্লেখ্য যে, হাদীসে উল্লেখিত “জামা’আত” দ্বারা “মুসলমানদের মাঝে গড়ে ওঠা ছোট, বড় আঞ্চলিক বা জাতীয় ভিত্তিক কোন সংগঠন” উদ্দেশ্য নেয়া মোটেও ঠিক নয়। বরং তা সহীহ আকীদার পরিপন্থী।

৮৭/৭. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি পাথর দিয়ে কিসাস নিল

৬৮৭৯
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ هِشَامِ بْنِ زَيْدٍ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ يَهُودِيًّا قَتَلَ جَارِيَةً عَلَى أَوْضَاحٍ لَهَا فَقَتَلَهَا بِحَجَرٍ فَجِيءَ بِهَا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَبِهَا رَمَقٌ فَقَالَ أَقَتَلَكِ فُلاَنٌ فَأَشَارَتْ بِرَأْسِهَا أَنْ لاَ ثُمَّ قَالَ الثَّانِيَةَ فَأَشَارَتْ بِرَأْسِهَا أَنْ لاَ ثُمَّ سَأَلَهَا الثَّالِثَةَ فَأَشَارَتْ بِرَأْسِهَا أَنْ نَعَمْ فَقَتَلَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِحَجَرَيْنِ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক ইয়াহুদী একটি বালিকাকে তার রুপার অলঙ্কারের লোভে হত্যা করল। সে তাকে পাথর দিয়ে হত্যা করল। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে আনা হল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, অমুক কি তোমাকে হত্যা করেছে? সে তার মাথা দিয়ে ইঙ্গিত করল যে, না। এরপর দ্বিতীয়বার তিনি জিজ্ঞেস করলেন। সে তার মাথা দিয়ে ইশারা করল যে, না। অত:পর তৃতীয়বার তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন। সে তার মাথা দিয়ে ইঙ্গিত করল যে, হ্যাঁ। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে (হত্যাকারীকে) দু’টি পাথর দিয়ে হত্যা করলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪১৩)

৮৭/৮. অধ্যায়ঃ
কাউকে হত্যা করা হলে তার উত্তরাধিকারীগণ দু’রকমের শাস্তির যে কোন একটি দেয়ার অধিকার রাখে।

৬৮৮০
أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا شَيْبَانُ عَنْ يَحْيَى عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ خُزَاعَةَ قَتَلُوا رَجُلاً وَقَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ رَجَاءٍ حَدَّثَنَا حَرْبٌ عَنْ يَحْيَى حَدَّثَنَا أَبُو سَلَمَةَ حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ أَنَّهُ عَامَ فَتْحِ مَكَّةَ قَتَلَتْ خُزَاعَةُ رَجُلاً مِنْ بَنِي لَيْثٍ بِقَتِيلٍ لَهُمْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَقَامَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّ اللهَ حَبَسَ عَنْ مَكَّةَ الْفِيلَ وَسَلَّطَ عَلَيْهِمْ رَسُولَهُ وَالْمُؤْمِنِينَ أَلاَ وَإِنَّهَا لَمْ تَحِلَّ لِأَحَدٍ قَبْلِي وَلاَ تَحِلُّ لِأَحَدٍ بَعْدِي أَلاَ وَإِنَّمَا أُحِلَّتْ لِي سَاعَةً مِنْ نَهَارٍ أَلاَ وَإِنَّهَا سَاعَتِي هَذِهِ حَرَامٌ لاَ يُخْتَلَى شَوْكُهَا وَلاَ يُعْضَدُ شَجَرُهَا وَلاَ يَلْتَقِطُ سَاقِطَتَهَا إِلاَّ مُنْشِدٌ وَمَنْ قُتِلَ لَهُ قَتِيلٌ فَهُوَ بِخَيْرِ النَّظَرَيْنِ إِمَّا يُودَى وَإِمَّا يُقَادُ فَقَامَ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْيَمَنِ يُقَالُ لَهُ أَبُو شَاهٍ فَقَالَ اكْتُبْ لِي يَا رَسُولَ اللهِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم اكْتُبُوا لِأَبِي شَاهٍ ثُمَّ قَامَ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِلاَّ الإِذْخِرَ فَإِنَّمَا نَجْعَلُهُ فِي بُيُوتِنَا وَقُبُورِنَا فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ الإِذْخِرَ وَتَابَعَهُ عُبَيْدُ اللهِ عَنْ شَيْبَانَ فِي الْفِيلِ قَالَ بَعْضُهُمْ عَنْ أَبِي نُعَيْمٍ الْقَتْلَ وَقَالَ عُبَيْدُ اللهِ إِمَّا أَنْ يُقَادَ أَهْلُ الْقَتِيلِ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। খুযা‘আ গোত্রের লোকেরা এক ব্যক্তিকে হত্যা করল। ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু রাজা (রহ.)…..আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের বছর খুযা‘আ গোত্রের লোকেরা জাহিলী যুগের স্বগোত্রীয় নিহত ব্যক্তির প্রতিশোধ হিসেবে বানী লায়স গোত্রের এক ব্যক্তিকে হত্যা করল। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়ালেন এবং বললেনঃ আল্লাহ্ মক্কা থেকে হস্তীদলকে প্রতিহত করেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে আপন রাসূল ও মু’মিনদেরকে কর্তৃত্ব দান করেছেন। জেনে রেখো! মক্কা আমার পূর্বে কারো জন্য হালাল হয়নি, আর আমার পরও কারো জন্য হালাল হবে না। জেনে রেখো! আমার বেলায় তা দিনের কিছু সময়ের জন্য হালাল করা হয়েছিল। সাবধান! তা আমার এ সময়ে এমন সম্মানিত, তার কাঁটা উপড়ানো যাবে না, তার গাছ কাটা যাবে না,তাতে পড়ে থাকা বস্তু মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া তুলে নেয়া যাবে না। আর যার কাউকে হত্যা করা হয় সে দু’প্রকার দন্ডের যে কোন একটি দেয়ার অধিকার লাভ করবে। হয়ত রক্তপণ নেয়া হবে, নতুবা কিসাস নেয়া হবে। এ সময় ইয়ামনবাসী এক লোক দাঁড়াল, যাকে আবূ শাহ্ বলা হয়। সে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে লিখে দিন। তখন রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তোমরা আবূ শাহ্কে লিখে দাও। তখন কুরাইশ গোত্রের এক লোক দাঁড়াল। আর বলল, হে আল্লাহর রাসূল! ইয্খির ব্যতীত। কেননা, আমরা সেটা আমাদের ঘরে, আমাদের কবরে কাজে লাগাই। তখন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইয্খির ছাড়া।



‘উবাইদুল্লাহ্ (রহ.) শায়বান (রহ.) থেকে الْفِيلِ (হস্তী)-এর ব্যাপারে হারব ইবনু শাদ্দাদ (রহ.)-এর অনুসরণ করেছেন। কেউ কেউ আবূ নু‘আয়ম (রহ.) থেকে المقتل শব্দ উদ্ধৃত করেছেন। ‘উবাইদুল্লাহ্ (রহ.) إِمَّا أَنْ يُقَادَ -এর পরে أَهْلُ الْقَتِيلِ শব্দও বর্ণনা করেছেন। [১১২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪১৪)

৬৮৮১
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَتْ فِي بَنِي إِسْرَائِيلَ قِصَاصٌ وَلَمْ تَكُنْ فِيهِمْ الدِّيَةُ فَقَالَ اللهُ لِهَذِهِ الأُمَّةِ {كُتِبَ عَلَيْكُمْ الْقِصَاصُ فِي الْقَتْلَى} إِلَى هَذِهِ الْآيَةِ {فَمَنْ عُفِيَ لَهُ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ}

قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ فَالْعَفْوُ أَنْ يَقْبَلَ الدِّيَةَ فِي الْعَمْدِ قَالَ {فَاتِّبَاعٌ بِالْمَعْرُوفِ} أَنْ يَطْلُبَ بِمَعْرُوفٍ وَيُؤَدِّيَ بِإِحْسَانٍ.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বানী ইসরাঈলদের মাঝে কিসাসের বিধান কার্যকর ছিল। তাদের মাঝে রক্তপণের বিধান ছিল না। তবে আল্লাহ এ উম্মাতকে বললেনঃ নরহত্যার ক্ষেত্রে তোমাদের জন্য কিসাসের বিধান দেয়া হয়েছে……… কিন্তু তার ভাইয়ের পক্ষ হতে কিছুটা ক্ষমা করা হলে পর্যন্ত- (সূরা আল-বাক্বারাহ ২/১৭৮)।

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, ক্ষমা করার অর্থ হলো ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যার ক্ষেত্রে রক্তপণ প্রহণ করা। তিনি বলেন, আর প্রচলিত প্রথার অনুসরণ করার অর্থ হচ্ছে, ন্যায়সঙ্গত দাবি ও দয়ার সঙ্গে দায়িত্ব আদায় করা। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪১৫)

৮৭/৯. অধ্যায়ঃ
ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়া রক্তপাত দাবি করা।

৬৮৮২
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي حُسَيْنٍ حَدَّثَنَا نَافِعُ بْنُ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَبْغَضُ النَّاسِ إِلَى اللهِ ثَلاَثَةٌ مُلْحِدٌ فِي الْحَرَمِ وَمُبْتَغٍ فِي الإِسْلاَمِ سُنَّةَ الْجَاهِلِيَّةِ وَمُطَّلِبُ دَمِ امْرِئٍ بِغَيْرِ حَقٍّ لِيُهَرِيقَ دَمَهُ

ইব্‌নু ‘‌আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: আল্লাহ্‌র কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত লোক হচ্ছে তিনজন। যে লোক হারাম শরীফে অন্যায় ও অপকর্মে লিপ্ত হয়। যে লোক ইসলামী যুগে জাহিলী যুগের রেওয়াজ অন্বেষণ করে। যে লোক ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়া কারো রক্তপাত দাবি করে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪১৬)

৮৭/১০. অধ্যায়ঃ
ভুলবশতঃ হত্যার ক্ষেত্রে মৃত্যুর পর ক্ষমা করা।

৬৮৮৩
فَرْوَةُ بْنُ أَبِي الْمَغْرَاءِ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ هُزِمَ الْمُشْرِكُونَ يَوْمَ أُحُدٍ ح و حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا أَبُو مَرْوَانَ يَحْيَى بْنُ أَبِي زَكَرِيَّاءَ يَعْنِي الْوَاسِطِيَّ عَنْ هِشَامٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ صَرَخَ إِبْلِيسُ يَوْمَ أُحُدٍ فِي النَّاسِ يَا عِبَادَ اللهِ أُخْرَاكُمْ فَرَجَعَتْ أُولاَهُمْ عَلَى أُخْرَاهُمْ حَتَّى قَتَلُوا الْيَمَانِ فَقَالَ حُذَيْفَةُ أَبِي أَبِي فَقَتَلُوهُ فَقَالَ حُذَيْفَةُ غَفَرَ اللهُ لَكُمْ قَالَ وَقَدْ كَانَ انْهَزَمَ مِنْهُمْ قَوْمٌ حَتَّى لَحِقُوا بِالطَّائِفِ.

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উহুদের দিন ইব্‌লীস লোকদের মধ্যে চিৎকার দিয়ে বলল, হে আল্লাহ্‌র বান্দারা! পিছনের দলের ওপর আক্রমন চালাও। ফলে তাদের সামনের লোকেরা পেছনের লোকের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। এমন কি তারা ইয়ামানকে হত্যা করে ফেলল। তখন হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, আমার পিতা! আমার পিতা! কিন্তু তারা তাকে হত্যা করে ফেলল। তখন হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, আল্লাহ তোমাদের মাফ করুন। রাবী বলেন, মুশরিকদের একটি দল পরাজিত হয়ে তায়েফ চলে গিয়েছিল। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪০৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪১৭)

৮৭/১১. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ কোন মু’মিন ব্যক্তির জন্য অন্য মু’মিন ব্যক্তিকে হত্যা করা বৈধ নয়। তবে ভুলবশত করলে সেটা আলাদা……….. (সূরা আন্-নিসা ৪/৯২)

৮৭/১২. অধ্যায়ঃ
একবার হত্যার কথা স্বীকার করলে তাকে হত্যা করা হবে।

৬৮৮৪
إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا حَبَّانُ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ أَنَّ يَهُودِيًّا رَضَّ رَأْسَ جَارِيَةٍ بَيْنَ حَجَرَيْنِ فَقِيلَ لَهَا مَنْ فَعَلَ بِكِ هَذَا أَفُلاَنٌ أَفُلاَنٌ حَتَّى سُمِّيَ الْيَهُودِيُّ فَأَوْمَأَتْ بِرَأْسِهَا فَجِيءَ بِالْيَهُودِيِّ فَاعْتَرَفَ فَأَمَرَ بِهِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَرُضَّ رَأْسُهُ بِالْحِجَارَةِ وَقَدْ قَالَ هَمَّامٌ بِحَجَرَيْنِ.

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক ইয়াহূদী একটি বালিকার মাথা দু’টি পাথরের মাঝে রেখে চূর্ণ করে দিল। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হল, কে তোমার সাথে এমন ব্যবহার করেছে? অমুক? না অমুক? শেষে ইয়াহুদী লোকটির নাম উল্লেখ করা হল। তখন সে তার মাথা দিয়ে (হ্যাঁ-সূচক) ইশারা করল। তখন ইয়াহুদী লোকটির নাম উল্লেখ করা হল। তখন ইয়াহুদী লোকটিকে আনা হল এবং সে স্বীকার করল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার ব্যাপারে আদেশ করলেন, তাই তার মাথা একটি পাথর দিয়ে চূর্ণ করা হল।

এবং হাম্মা (রহঃ) বলেন, দু’টি পাথর দিয়ে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪০৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪১৮)

৮৭/১৩. অধ্যায়ঃ
নারীর বদলে পুরুষকে হত্যা করা

৬৮৮৫
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَتَلَ يَهُودِيًّا بِجَارِيَةٍ قَتَلَهَا عَلَى أَوْضَاحٍ لَهَا.

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একজন ইয়াহুদীকে একজন বালিকার বদলে হত্যা করেছেন। সে রূপার গহনার লোভে মেয়েটিকে হত্যা করেছিল।[২৪১৩; মুসলিম ২৮/৩, হাঃ ১৬৭২, আহমাদ ১৩৮৪১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪০৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪১৯)

হাদীসটি হতে জানা যায় : যদি কোন পুরুষ কোন মহিলাকে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করে তবে ঐ মহিলার হত্যাকারীকে কিসাস স্বরূপ হত্যা করতে হবে। অনুরূপ যদি কোন মহিলা কোন পুরুষকে হত্যা করে তবে ঐ পুরুষের হত্যাকারীকে কিসাস স্বরূপ হত্যা করতে হবে। জামহুর ওলামার এটাই মত এবং এটিই সঠিক। আর ইমাম বুখারী জামহুর উলামার মতের স্বপক্ষে প্রমাণ পেশ করার উদ্দেশ্যেই অধ্যায়ের নামকরণ করেছেন قَتْلِ الرَّجُلِ بِالْمَرْأَةِ ।

৮৭/১৪. অধ্যায়ঃ
আহত হবার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষদের মধ্যে কিসাস।

আলিমগণ বলেন, নারীর বদলে পুরুষকে হত্যা করা হবে। আর উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করা হয় যে, ইচ্ছাকৃতভাবে প্রত্যেক হত্যা বা আহত করার ক্ষেত্রে নারীর বদলে পুরুষকে কিসাসের বিধান মতে শাস্তি দেয়া হবে। এটাই ‘উমর ইব্‌নু আবদুল ‘আযীয (রহঃ), ইবরাহীম (রহঃ) এবং আবূয যিনাদ (রহঃ) এর অভিমত তাদের আসহাব থেকে। রুবায় – এর বোন কোন এক লোককে আহত করলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, এক্ষেত্রে আল্লাহ্‌র বিধান হল ‘কিসাস’।

৬৮৮৬
عَمْرُو بْنُ عَلِيِّ بْنِ بَحْرٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ أَبِي عَائِشَةَ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ لَدَدْنَا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فِي مَرَضِهِ فَقَالَ لاَ تُلِدُّونِي فَقُلْنَا كَرَاهِيَةُ الْمَرِيضِ لِلدَّوَاءِ فَلَمَّا أَفَاقَ قَالَ لاَ يَبْقَى أَحَدٌ مِنْكُمْ إِلاَّ لُدَّ غَيْرَ الْعَبَّاسِ فَإِنَّهُ لَمْ يَشْهَدْكُمْ.

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর অসুখের সময় তাঁর মুখের এক কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিলাম। তিনি বললেন, তোমরা আমার মুখের কিনারায় ঔষধ দিওনা। আমরা মনে করলাম, রোগী ঔষধ সেবন অপছন্দ করেই থাকে। যখন তাঁর হুশ ফিরে এলো, তখন তিনি বললেনঃতোমাদের মধ্যে যেন এমন কেউ থাকে না, যার মুখের কিনারায় জোরপূর্বক ঔষধ ঢেলে দেয়া না হয় শুধুমাত্র ‘আব্বাস ব্যতীত। কেননা, সে তোমাদের কাছে হাযির ছিল না। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪২০)

৮৭/১৫. অধ্যায়ঃ
হাকিমের কাছে মামলা পেশ করা ছাড়া আপন অধিকার আদায় করে নেয়া বা কিসাস গ্রহণ করা।

৬৮৮৭
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ أَنَّ الأَعْرَجَ حَدَّثَهُ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ يَقُولُ إِنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ نَحْنُ الْآخِرُونَ السَّابِقُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, আমরা (দুনিয়াতে) সর্বশেষ ও (আখিরাতে) সর্বপ্রথম। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪২১)

৬৮৮৮
وَبِإِسْنَادِهِ لَوْ اطَّلَعَ فِي بَيْتِكَ أَحَدٌ وَلَمْ تَأْذَنْ لَهُ خَذَفْتَهُ بِحَصَاةٍ فَفَقَأْتَ عَيْنَهُ مَا كَانَ عَلَيْكَ مِنْ جُنَاحٍ.

উক্ত হাদীসের সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেনঃ যদি কেউ তোমার ঘরে তোমার অনুমতি ব্যতীত উঁকি মারে আর তুমি পাথর মেরে তার চক্ষু ফুটা করে দাও, তাতে তোমার কোন গুনাহ্ হবে না। [৬৭০২; মুসলিম ৩৮/৯, হাঃ ২১৫৮, আহমাদ ১৯৫৩০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪০৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪২২)

৬৮৮৯
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ حُمَيْدٍ أَنَّ رَجُلاً اطَّلَعَ فِي بَيْتِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَسَدَّدَ إِلَيْهِ مِشْقَصًا فَقُلْتُ مَنْ حَدَّثَكَ قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ.

হুমায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ঘরে উঁকি মারল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার দিকে চাকু নিক্ষেপ করতে উদ্যত হলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, (এ হাদীস) আপনাকে কে বর্ণনা করেছেন? তিনি বললেন, আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪০৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪২২)

৮৭/১৬. অধ্যায়ঃ
ভিড়ে মারা গেলে বা হত্যা করা হলে

৬৮৯০
إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ أَخْبَرَنَا أَبُو أُسَامَةَ قَالَ هِشَامٌ أَخْبَرَنَا عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ لَمَّا كَانَ يَوْمُ أُحُدٍ هُزِمَ الْمُشْرِكُونَ فَصَاحَ إِبْلِيسُ أَيْ عِبَادَ اللهِ أُخْرَاكُمْ فَرَجَعَتْ أُولاَهُمْ فَاجْتَلَدَتْ هِيَ وَأُخْرَاهُمْ فَنَظَرَ حُذَيْفَةُ فَإِذَا هُوَ بِأَبِيهِ الْيَمَانِ فَقَالَ أَيْ عِبَادَ اللهِ أَبِي أَبِي قَالَتْ فَوَاللهِ مَا احْتَجَزُوا حَتَّى قَتَلُوهُ قَالَ حُذَيْفَةُ غَفَرَ اللهُ لَكُمْ قَالَ عُرْوَةُ فَمَا زَالَتْ فِي حُذَيْفَةَ مِنْهُ بَقِيَّةُ خَيْرٍ حَتَّى لَحِقَ بِاللهِ.

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উহুদের দিন যখন মুশরিকরা পরাজিত হয়ে গেল তখন ইব্‌লীস চিৎকার দিয়ে বলল, হে আল্লাহ্‌র বান্দাগণ! পিছনের দলের উপর আক্রমণ কর। তখন সামনের লোকেরা পেছনের লোকেদের উপর আক্রমণ করল ও পরস্পরে লড়াইয়ে লিপ্ত হল। তখন হুযাইফাহ (রাঃ) তাকিয়ে দেখতে পেলেন যে তাঁর বাবা ইয়ামান আক্রান্ত হয়েছেন। তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহ্‌র বান্দাগণ! (এতো) আমার পিতা! আমার পিতা! তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র কসম! তারা তাকে হত্যা না করে থামল না। হুযাইফাহ (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন। উরওয়াহ (রহঃ) বলেন, এ কারণে আল্লাহ্‌র সঙ্গে সাক্ষাত না হওয়া পর্যন্ত হুযাইফাহ (রাঃ)-এর অন্তরে এই স্মৃতি জাগরুক ছিল।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪১০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪২৩)

৮৭/১৭. অধ্যায়ঃ
যখন কেউ ভুলক্রমে নিজেকে হত্যা করে তখন তার কোন রক্তপণ নেই।

৬৮৯১
الْمَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ أَبِي عُبَيْدٍ عَنْ سَلَمَةَ قَالَ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَى خَيْبَرَ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْهُمْ أَسْمِعْنَا يَا عَامِرُ مِنْ هُنَيْهَاتِكَ فَحَدَا بِهِمْ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَنْ السَّائِقُ قَالُوا عَامِرٌ فَقَالَ رَحِمَهُ اللهُ فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ هَلاَّ أَمْتَعْتَنَا بِهِ فَأُصِيبَ صَبِيحَةَ لَيْلَتِهِ فَقَالَ الْقَوْمُ حَبِطَ عَمَلُهُ قَتَلَ نَفْسَهُ فَلَمَّا رَجَعْتُ وَهُمْ يَتَحَدَّثُونَ أَنَّ عَامِرًا حَبِطَ عَمَلُهُ فَجِئْتُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا نَبِيَّ اللهِ فَدَاكَ أَبِي وَأُمِّي زَعَمُوا أَنَّ عَامِرًا حَبِطَ عَمَلُهُ فَقَالَ كَذَبَ مَنْ قَالَهَا إِنَّ لَهُ لأجْرَيْنِ اثْنَيْنِ إِنَّهُ لَجَاهِدٌ مُجَاهِدٌ وَأَيُّ قَتْلٍ يَزِيدُهُ عَلَيْهِ.

সালাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে খায়বারের পথে রওয়ানা হলাম। তথন তাদের এক ব্যক্তি বলল, হে আমির! তোমরা আমাদেরকে উট চালনার কিছু গান শোনাও। সে তাদেরকে তা গেয়ে শোনাল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ চালকটি কে? তারা বলল, আমির। তিনি বললেন আল্লাহ্‌ তাকে রহম করুন। তারা বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমাদেরকে তার থেকে দীর্ঘকাল উপকার লাভের সুযোগ করে দিন। পরদিন সকালে আমির নিহত হল। তখন লোকেরা বললে লাগল তার ‘আমল বিনষ্ট হয়ে গেছে, সে নিজেকে হত্যা করেছে। যখন আমি ফিরলাম, আর লোকেরা বলাবলি করছিল যে, আমিরের ‘আমল বিনষ্ট হয়ে গেছে, তখন আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলাম এবং বললাম, হে আল্লাহ্‌র নবী! আমার পিতা-মাতা আপনার প্রতি কুরবান। তাদের ধারণা, আমিরের আমল নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বললেনঃযে এ কথা বলেছে মিথ্যা বলেছে। কারণ, আমিরের জন্য দ্বিগুণ পুরষ্কার। কারণ সে আল্লাহ্‌র পথে সাধ্যমত চেষ্টা করেছ, অন্য কোন্ প্রকারের হত্যা তাকে এর চেয়ে অধিক পুরষ্কারের অধিকারী করত? (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪১১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪২৪)

৮৭/১৮. অধ্যায়ঃ
দাঁত দিয়ে কামড়ানোর কারণে কারো দাঁত উপড়ে গেলে।

৬৮৯২
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ قَالَ سَمِعْتُ زُرَارَةَ بْنَ أَوْفَى عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ أَنَّ رَجُلاً عَضَّ يَدَ رَجُلٍ فَنَزَعَ يَدَهُ مِنْ فَمِهِ فَوَقَعَتْ ثَنِيَّتَاهُ فَاخْتَصَمُوا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَعَضُّ أَحَدُكُمْ أَخَاهُ كَمَا يَعَضُّ الْفَحْلُ لاَ دِيَةَ لَكَ.

ইমরান ইব্‌নু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক লোক অন্য এক লোকের হাত দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরল। সে তার হাত ঐ লোকের মুখ থেকে টেনে বের করল। ফলে তার দু’টো দাঁত উপড়ে গেল। তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর নিকট তাদের মুকাদ্দমা হাজির করল। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের কেউ তার ভাইকে কি কামড়াবে উট যেমন কামড়ায়? তোমার জন্য কোন রক্তপণ নেই। [১১৮][মুসলিম ১৭/৪, হাঃ ১৬৭৩, আহমাদ ১৯৮৫০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪১২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪২৫)

[১১৮] ইসলাম যে একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা হাদীসটি তার জ্বলন্ত বাস্তব প্রমাণ। কত সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম বিষয়ের কী চমৎকার সমাধান, যা অন্য কোন ধর্মে বিরল। হাদীসটি হতে প্রমাণ পাওয়া যায়:

১) রাগ বা ক্রোধ থেকে সতর্কতা।

২) বিচারের রায় পাওয়ার জন্য বিচারকের নিকট কারো অপরাধের বিবরণ তুলে ধরা।

৩) চতুষ্পদ প্রাণীর কর্মের সাথে মানুষের কোন কর্মের উপমা দেয়ার বৈধতা। যদি ঐ কর্মের মত অপছন্দনীয় স্থানে পতিত হয়।

৬৮৯৩
أَبُو عَاصِمٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ صَفْوَانَ بْنِ يَعْلَى عَنْ أَبِيهِ قَالَ خَرَجْتُ فِي غَزْوَةٍ فَعَضَّ رَجُلٌ فَانْتَزَعَ ثَنِيَّتَهُ فَأَبْطَلَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم.

ইয়া‘লা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি কোন একটি যুদ্ধে বেরিয়েছিলাম। তখন এক লোক দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে, যার ফলে তার দাঁত উপড়ে যায়। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার (দাঁতের) রক্তপণকে বাতিল করে দেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪১৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪২৬)

৮৭/১৯. অধ্যায়ঃ
দাঁতের বদলে দাঁত

৬৮৯৪
الأَنْصَارِيُّ حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ ابْنَةَ النَّضْرِ لَطَمَتْ جَارِيَةً فَكَسَرَتْ ثَنِيَّتَهَا فَأَتَوْا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَمَرَ بِالْقِصَاصِ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাযরের কন্যা একটি বালিকাকে চড় দিয়ে তার দাঁত ভেঙ্গে ফেলল। তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এল। তখন তিনি কিসাসের হুকুম দিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪১৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪২৭)

৮৭/২০. অধ্যায়ঃ
আঙ্গুলের রক্তপণ

৬৮৯৫
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ هَذِهِ وَهَذِهِ سَوَاءٌ يَعْنِي الْخِنْصَرَ وَالإِبْهَامَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন: রক্তপণের ব্যাপারে এটি এবং ওটির সমান। অর্থাৎ কনিষ্ঠাঙ্গুলি ও বৃদ্ধাঙ্গুলি। (আঃপ্রঃ ৬৪১৫, ইঃফাঃ ৬৪২৮)।



———————-



৬৮৯৫/১. ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে ঐরূপই বলতে শুনেছি। (আঃপ্রঃ ৬৪১৬, ইঃফাঃ ৬৪২৯)

৮৭/২১. অধ্যায়ঃ
যখন একটি দল কোন এক লোককে বিপদগ্রস্ত করে তোলে, তখন তাদের সবাইকে শাস্তি দেয়া হবে কি? অথবা সবার নিকট থেকে কিসাস গ্রহণ করা হবে কি?

মুতার্রিফ (রহঃ) শাবী (রহঃ) থেকে এমন দু’লোকের ব্যাপারে বর্ণনা করেন যারা এক লোকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছিল যে, সে চুরি করেছে। তখন আলী (রাঃ) তার হাত কেটে দিলেন। তারপর তারা অপর একজনকে নিয়ে এসে বলল, আমরা ভুল করে ফেলেছি। তখন তিনি তাদের সাক্ষ্য বাতিল করে দিলেন এবং প্রথম ব্যক্তির রক্তপণ গ্রহণ করলেন। আর বললেন, যদি আমি জানতাম যে, তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে কাজটি করেছ, তাহলে তোমাদের দু’জনের হাত কেটে ফেলতাম।

৬৮৯৬
وَقَالَ لِي ابْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ غُلاَمًا قُتِلَ غِيلَةً فَقَالَ عُمَرُ لَوْ اشْتَرَكَ فِيهَا أَهْلُ صَنْعَاءَ لَقَتَلْتُهُمْ وَقَالَ مُغِيرَةُ بْنُ حَكِيمٍ عَنْ أَبِيهِ إِنَّ أَرْبَعَةً قَتَلُوا صَبِيًّا فَقَالَ عُمَرُ مِثْلَهُ وَأَقَادَ أَبُو بَكْرٍ وَابْنُ الزُّبَيْرِ وَعَلِيٌّ وَسُوَيْدُ بْنُ مُقَرِّنٍ مِنْ لَطْمَةٍ وَأَقَادَ عُمَرُ مِنْ ضَرْبَةٍ بِالدِّرَّةِ وَأَقَادَ عَلِيٌّ مِنْ ثَلاَثَةِ أَسْوَاطٍ وَاقْتَصَّ شُرَيْحٌ مِنْ سَوْطٍ وَخُمُوشٍ

আবূ ‘আবদুল্লাহ্‌ (ইমাম বুখারী) (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমাকে ইব্‌নু বাশশার (রহঃ) ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, একটি বালককে গোপনে হত্যা করা হয়। তখন উমর (রাঃ) বললেন, যদি গোটা সান’আবাসী এতে অংশ নিত তাহলে আমি তাদেরকে হত্যা করতাম।

মুগীরাহ ইব্‌নু হাকীম (রহঃ) আপন পিতা হাকীম থেকে বর্ণনা করেন যে, চারজন লোক একটি বালককে হত্যা করেছিল। তখন ‘উমর (রাঃ) ঐরকম কথা বলেছিলেন। আবূ বকর ও ইব্‌নু যুবায়র, ‘আলী ও সুওয়ায়দ ইব্‌নু মুকাররিন (রাঃ) চড়ের বিষয়ে কিসাসের নির্দেশ দেন। উমর (রাঃ) ছড়ি দিয়ে মারা ব্যাপারে কিসাসের নির্দেশ দেন। আর ‘আলী (রাঃ) তিনটি বেত্রাঘাতের জন্য কিসাসের নির্দেশ দেন এবং শুরায়হ (রহঃ) একটি বেত্রাঘাত ও নখের আঁচড়ের জন্য কিসাস বলবৎ করেন।(আধুনিক প্রকাশনী- অনুচ্ছেদ, ই.ফা, অনুচ্ছেদ)

৬৮৯৭
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ أَبِي عَائِشَةَ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَالَتْ عَائِشَةُ لَدَدْنَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي مَرَضِهِ وَجَعَلَ يُشِيرُ إِلَيْنَا لاَ تَلُدُّونِي قَالَ فَقُلْنَا كَرَاهِيَةُ الْمَرِيضِ بِالدَّوَاءِ فَلَمَّا أَفَاقَ قَالَ أَلَمْ أَنْهَكُمْ أَنْ تَلُدُّونِي قَالَ قُلْنَا كَرَاهِيَةٌ لِلدَّوَاءِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لاَ يَبْقَى مِنْكُمْ أَحَدٌ إِلاَّ لُدَّ وَأَنَا أَنْظُرُ إِلاَّ الْعَبَّاسَ فَإِنَّهُ لَمْ يَشْهَدْكُمْ

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন , আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর অসুস্থতার সময় তাঁর মুখের এক পাশে ঔষধ ঢেলে দিলাম। আর তিনি আমাদের দিকে ইঙ্গিত করতে থাকলেন যে, তোমরা আমার মুখের এক পাশে ঔষধ ঢেলে দিও না। আমরা মনে করলাম যে , রোগীর ঔষধের প্রতি অনাসক্তিই এর কারণ। যখন তিনি জ্ঞান ফিরে পেলেন , তখন বললেনঃ আমাকে ( জোর পূর্বক ) ঔষধ সেবন করাতে কি তোমাদেরকে নিষেধ করিনি? আমরা বললাম , রোগীর ঔষধের প্রতি অনাসক্তিই এর কারণ বলে আমরা মনে করেছি। তিনি বললেনঃ তোমাদের মধ্যে এমন কেউ যেন না থাকে যার মুখে জোরপূর্বক ঔষধ ঢালা না হবে আর আমি দেখব শুধু ‘আব্বাস ছাড়া। কারণ, সে তোমাদের সাথে উপস্থিত ছিল না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৩০)

৮৭/২২ . অধ্যায়ঃ
‘কাসামাহ’ (শপথ)

আশ্‌আস ইব্‌নু কায়স (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেছেন, তুমি দু’জন সাক্ষী হাজির করবে, নতুবা তার কসম! ইব্‌নু আবূ মুলায়কা (রহঃ) বলেন, মু’আবিয়াহ (রাঃ) কাসামা অনুযায়ী কিসাস গ্রহণ করতেন না। ‘উমর ইব্‌নু আবদুল ‘আযীয (রহঃ) তাঁর পক্ষ থেকে নিযুক্ত বসরার গভর্নর আদী ইব্‌নু আরতাত (রহঃ)-এর নিকট একজন নিহত লোকের ব্যাপারে পত্র লিখেন, যাকে তেল ব্যাবসায়ীদের বাড়ীর নিকট পাওয়া গিয়েছিল। তিনি লিখেছিলেন, যদি তার আত্মীয়-স্বজনরা প্রমাণ হাজির করতে পারে তবে দন্ড প্রদান করবে নতুবা লোকদের উপর যুল্‌ম করবে না। কেননা, তা এমন ব্যাপার, যা ক্বিয়ামাত পর্যন্ত ফায়সালা করা যায় না।

৬৮৯৮
أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عُبَيْدٍ عَنْ بُشَيْرِ بْنِ يَسَارٍ زَعَمَ أَنَّ رَجُلاً مِنْ الأَنْصَارِ يُقَالُ لَهُ سَهْلُ بْنُ أَبِي حَثْمَةَ أَخْبَرَهُ أَنَّ نَفَرًا مِنْ قَوْمِهِ انْطَلَقُوا إِلَى خَيْبَرَ فَتَفَرَّقُوا فِيهَا وَوَجَدُوا أَحَدَهُمْ قَتِيلاً وَقَالُوا لِلَّذِي وُجِدَ فِيهِمْ قَدْ قَتَلْتُمْ صَاحِبَنَا قَالُوا مَا قَتَلْنَا وَلاَ عَلِمْنَا قَاتِلاً فَانْطَلَقُوا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ انْطَلَقْنَا إِلَى خَيْبَرَ فَوَجَدْنَا أَحَدَنَا قَتِيلاً فَقَالَ الْكُبْرَ الْكُبْرَ فَقَالَ لَهُمْ تَأْتُونَ بِالْبَيِّنَةِ عَلَى مَنْ قَتَلَهُ قَالُوا مَا لَنَا بَيِّنَةٌ قَالَ فَيَحْلِفُونَ قَالُوا لاَ نَرْضَى بِأَيْمَانِ الْيَهُودِ فَكَرِهَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُبْطِلَ دَمَهُ فَوَدَاهُ مِائَةً مِنْ إِبِلِ الصَّدَقَةِ

আবূ নু’আয়ম (রহঃ) সাহ্‌ল ইব্‌নু আবূ হাস্‌মা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তার গোত্রের একদল লোক খায়বার গেল ও সেখানে তারা বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে পড়ল। তারা তাদের একজনকে নিহত অবস্থায় পেল। এবং যাদের কাছে তাকে নিহত অবস্থায় পাওয়া গেল তাদেরকে তারা বলল , তোমরা আমাদের সাথীকে হত্যা করেছ। তারা বলল, আমরা তাকে হত্যা করিনি, আর হত্যাকারীকে জানিও না। এরপর তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে গেল এবং বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমরা খায়বার গিয়েছিলাম। আর আমাদের একজনকে সেখানে নিহত অবস্থায় পেলাম। তখন তিনি বললেন বড়দের কে বলতে দাও, বড়দেরকে বলতে দাও। তারপর তিনি তাদেরকে বললেনঃ তোমাদেরকে তার হত্যাকারীর বিরুদ্ধে প্রমাণ পেশ করতে হবে। তারা বলল, আমাদের কাছে কোন প্রমাণ নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে ওরা কসম করবে। তারা বলল, ইয়াহূদীদের কসমে আমাদের বিশ্বাস নেই। এই নিহতের রক্ত বৃথা হয়ে যাক তা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পছন্দ করলেন না। তাই সদাকাহ্‌র একশ উট দিয়ে তার রক্তপণ আদায় করলেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৩১)

৬৮৯৯
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا أَبُو بِشْرٍ إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ الأَسَدِيُّ حَدَّثَنَا الْحَجَّاجُ بْنُ أَبِي عُثْمَانَ حَدَّثَنِي أَبُو رَجَاءٍ مِنْ آلِ أَبِي قِلاَبَةَ حَدَّثَنِي أَبُو قِلاَبَةَ أَنَّ عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ أَبْرَزَ سَرِيرَهُ يَوْمًا لِلنَّاسِ ثُمَّ أَذِنَ لَهُمْ فَدَخَلُوا فَقَالَ مَا تَقُولُونَ فِي الْقَسَامَةِ قَالَ نَقُولُ الْقَسَامَةُ الْقَوَدُ بِهَا حَقٌّ وَقَدْ أَقَادَتْ بِهَا الْخُلَفَاءُ قَالَ لِي مَا تَقُولُ يَا أَبَا قِلاَبَةَ وَنَصَبَنِي لِلنَّاسِ فَقُلْتُ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ عِنْدَكَ رُءُوسُ الأَجْنَادِ وَأَشْرَافُ الْعَرَبِ أَرَأَيْتَ لَوْ أَنَّ خَمْسِينَ مِنْهُمْ شَهِدُوا عَلَى رَجُلٍ مُحْصَنٍ بِدِمَشْقَ أَنَّهُ قَدْ زَنَى لَمْ يَرَوْهُ أَكُنْتَ تَرْجُمُهُ قَالَ لاَ قُلْتُ أَرَأَيْتَ لَوْ أَنَّ خَمْسِينَ مِنْهُمْ شَهِدُوا عَلَى رَجُلٍ بِحِمْصَ أَنَّهُ سَرَقَ أَكُنْتَ تَقْطَعُهُ وَلَمْ يَرَوْهُ قَالَ لاَ قُلْتُ فَوَاللهِ مَا قَتَلَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَحَدًا قَطُّ إِلاَّ فِي إِحْدَى ثَلاَثِ خِصَالٍ رَجُلٌ قَتَلَ بِجَرِيرَةِ نَفْسِهِ فَقُتِلَ أَوْ رَجُلٌ زَنَى بَعْدَ إِحْصَانٍ أَوْ رَجُلٌ حَارَبَ اللهَ وَرَسُولَهُ وَارْتَدَّ عَنْ الإِسْلاَمِ فَقَالَ الْقَوْمُ أَوَلَيْسَ قَدْ حَدَّثَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَطَعَ فِي السَّرَقِ وَسَمَرَ الأَعْيُنَ ثُمَّ نَبَذَهُمْ فِي الشَّمْسِ فَقُلْتُ أَنَا أُحَدِّثُكُمْ حَدِيثَ أَنَسٍ حَدَّثَنِي أَنَسٌ أَنَّ نَفَرًا مِنْ عُكْلٍ ثَمَانِيَةً قَدِمُوا عَلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَبَايَعُوهُ عَلَى الإِسْلاَمِ فَاسْتَوْخَمُوا الأَرْضَ فَسَقِمَتْ أَجْسَامُهُمْ فَشَكَوْا ذَلِكَ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَفَلاَ تَخْرُجُونَ مَعَ رَاعِينَا فِي إِبِلِهِ فَتُصِيبُونَ مِنْ أَلْبَانِهَا وَأَبْوَالِهَا قَالُوا بَلَى فَخَرَجُوا فَشَرِبُوا مِنْ أَلْبَانِهَا وَأَبْوَالِهَا فَصَحُّوا فَقَتَلُوا رَاعِيَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَطْرَدُوا النَّعَمَ فَبَلَغَ ذَلِكَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَرْسَلَ فِي آثَارِهِمْ فَأُدْرِكُوا فَجِيءَ بِهِمْ فَأَمَرَ بِهِمْ فَقُطِّعَتْ أَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُمْ وَسَمَرَ أَعْيُنَهُمْ ثُمَّ نَبَذَهُمْ فِي الشَّمْسِ حَتَّى مَاتُوا قُلْتُ وَأَيُّ شَيْءٍ أَشَدُّ مِمَّا صَنَعَ هَؤُلاَءِ ارْتَدُّوا عَنْ الإِسْلاَمِ وَقَتَلُوا وَسَرَقُوا فَقَالَ عَنْبَسَةُ بْنُ سَعِيدٍ وَاللهِ إِنْ سَمِعْتُ كَالْيَوْمِ قَطُّ فَقُلْتُ أَتَرُدُّ عَلَيَّ حَدِيثِي يَا عَنْبَسَةُ قَالَ لاَ وَلَكِنْ جِئْتَ بِالْحَدِيثِ عَلَى وَجْهِهِ وَاللهِ لاَ يَزَالُ هَذَا الْجُنْدُ بِخَيْرٍ مَا عَاشَ هَذَا الشَّيْخُ بَيْنَ أَظْهُرِهِمْ قُلْتُ وَقَدْ كَانَ فِي هَذَا سُنَّةٌ مِنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ عَلَيْهِ نَفَرٌ مِنْ الأَنْصَارِ فَتَحَدَّثُوا عِنْدَهُ فَخَرَجَ رَجُلٌ مِنْهُمْ بَيْنَ أَيْدِيهِمْ فَقُتِلَ فَخَرَجُوا بَعْدَهُ فَإِذَا هُمْ بِصَاحِبِهِمْ يَتَشَحَّطُ فِي الدَّمِ فَرَجَعُوا إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم صَاحِبُنَا كَانَ تَحَدَّثَ مَعَنَا فَخَرَجَ بَيْنَ أَيْدِينَا فَإِذَا نَحْنُ بِهِ يَتَشَحَّطُ فِي الدَّمِ فَخَرَجَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ بِمَنْ تَظُنُّونَ أَوْ مَنْ تَرَوْنَ قَتَلَهُ قَالُوا نَرَى أَنَّ الْيَهُودَ قَتَلَتْهُ فَأَرْسَلَ إِلَى الْيَهُودِ فَدَعَاهُمْ فَقَالَ آنْتُمْ قَتَلْتُمْ هَذَا قَالُوا لاَ قَالَ أَتَرْضَوْنَ نَفَلَ خَمْسِينَ مِنْ الْيَهُودِ مَا قَتَلُوهُ فَقَالُوا مَا يُبَالُونَ أَنْ يَقْتُلُونَا أَجْمَعِينَ ثُمَّ يَنْتَفِلُونَ قَالَ أَفَتَسْتَحِقُّونَ الدِّيَةَ بِأَيْمَانِ خَمْسِينَ مِنْكُمْ قَالُوا مَا كُنَّا لِنَحْلِفَ فَوَدَاهُ مِنْ عِنْدِهِ قُلْتُ وَقَدْ كَانَتْ هُذَيْلٌ خَلَعُوا خَلِيعًا لَهُمْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ فَطَرَقَ أَهْلَ بَيْتٍ مِنْ الْيَمَنِ بِالْبَطْحَاءِ فَانْتَبَهَ لَهُ رَجُلٌ مِنْهُمْ فَحَذَفَهُ بِالسَّيْفِ فَقَتَلَهُ فَجَاءَتْ هُذَيْلٌ فَأَخَذُوا الْيَمَانِيَّ فَرَفَعُوهُ إِلَى عُمَرَ بِالْمَوْسِمِ وَقَالُوا قَتَلَ صَاحِبَنَا فَقَالَ إِنَّهُمْ قَدْ خَلَعُوهُ فَقَالَ يُقْسِمُ خَمْسُونَ مِنْ هُذَيْلٍ مَا خَلَعُوهُ قَالَ فَأَقْسَمَ مِنْهُمْ تِسْعَةٌ وَأَرْبَعُونَ رَجُلاً وَقَدِمَ رَجُلٌ مِنْهُمْ مِنْ الشَّأْمِ فَسَأَلُوهُ أَنْ يُقْسِمَ فَافْتَدَى يَمِينَهُ مِنْهُمْ بِأَلْفِ دِرْهَمٍ فَأَدْخَلُوا مَكَانَهُ رَجُلاً آخَرَ فَدَفَعَهُ إِلَى أَخِي الْمَقْتُولِ فَقُرِنَتْ يَدُهُ بِيَدِهِ قَالُوا فَانْطَلَقَا وَالْخَمْسُونَ الَّذِينَ أَقْسَمُوا حَتَّى إِذَا كَانُوا بِنَخْلَةَ أَخَذَتْهُمْ السَّمَاءُ فَدَخَلُوا فِي غَارٍ فِي الْجَبَلِ فَانْهَجَمَ الْغَارُ عَلَى الْخَمْسِينَ الَّذِينَ أَقْسَمُوا فَمَاتُوا جَمِيعًا وَأَفْلَتَ الْقَرِينَانِ وَاتَّبَعَهُمَا حَجَرٌ فَكَسَرَ رِجْلَ أَخِي الْمَقْتُولِ فَعَاشَ حَوْلاً ثُمَّ مَاتَ قُلْتُ وَقَدْ كَانَ عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ مَرْوَانَ أَقَادَ رَجُلاً بِالْقَسَامَةِ ثُمَّ نَدِمَ بَعْدَ مَا صَنَعَ فَأَمَرَ بِالْخَمْسِينَ الَّذِينَ أَقْسَمُوا فَمُحُوا مِنْ الدِّيوَانِ وَسَيَّرَهُمْ إِلَى الشَّأْمِ

কুতাইবা ইব্‌নু সা’ঈদ (রহঃ) আবূ কিলাবা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একবার ‘উমর ইব্‌নু আবদুল ‘আযীয (রহঃ) তাঁর সিংহাসন মানুষদেরকে দেখানোর জন্য বের করলেন। তারপর লোকদেরকে তাঁর নিকট আসার অনুমতি প্রদান করলেন। তারা প্রবেশ করল। তারপর বললেন, তোমরা কাসামার ব্যাপারে কি মত পোষণ কর? তারা বলল, আমাদের মতে কাসামার ভিত্তিতে কিসাস গ্রহণ করা বৈধ। খলীফাগণ এর ভিত্তিতে কিসাস কার্যকর করেছেন। তিনি আমাকে বললেন, হে আবূ কিলাবা ! তুমি কী বল? তিনি আমাকে লোকদের সামনে দাঁড় করালেন। আমি বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনার কাছে সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থগণ ও আরব নেতাগণ আছেন, বলুন তো ! যদি তাদের থেকে পঞ্চাশ ব্যাক্তি দামেশ্‌কের একজন বিবাহিত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয় যে সে যিনা করেছে , অথচ তারা তাকে দেখেনি, তাহলে আপনি তাকে রজম করবেন কি? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, বলুন তো ! যদি তাদের মধ্য থেকে পঞ্চাশ জন হিম্‌স নিবাসী এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয় যে সে চুরি করেছে অথচ তারা তাকে দেখেনি, তাহলে কি আপনি তার হাত কাটবেন? তিনি বললেন, না। আমি বললাম , আল্লাহ্‌র কসম ! রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তিন কারণের কোন একটি ছাড়া কাউকে হত্যা করেননি। (যথাঃ) (অন্যায় ভাবে ) কাউকে হত্যা করলে তাকে হত্যা করা হবে। অথবা যে ব্যাক্তি বিয়ের পর যিনা করে, অথবা যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে ও ইসলাম থেকে ফিরে মুরতাদ হয়ে যায়। তখন লোকেরা বলল, আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) কি বর্ণনা করেননি যে, রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুরির ব্যাপারে হাত কেটেছেন , লৌহশলাকা দ্বারা চক্ষু ফুঁড়ে দিয়েছেন, তারপর তাদেরকে উত্তপ্ত রৌদ্রে ফেলে রেখেছেন। তখন আমি বললাম, আমি তোমাদেরকে আনাস (রাঃ)-এর হাদীস বর্ণনা করছি। আমাকে আনাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, উক্‌ল গোত্রের আটজন লোক রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এল। তারা তাঁর হাতে ইসলামের বায়’আত গ্রহণ করল। কিন্তু সে এলাকার আবহাওয়া তাদের অনুকূলে হল না এবং তারা অসুস্থ হয়ে পড়ল। তারা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এর অভিযোগ করল। তিনি তাদেরকে বললেন, তোমরা কি আমার রাখালের সঙ্গে তার উটপালের কাছে গিয়ে সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করবেনা? তারা বলল, হ্যাঁ। তারপর তারা সেখানে গিয়ে সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করল। ফলে তারা সুস্থ হয়ে গেল। এরপর তারা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর রাখালকে হত্যা করে উটগুলো হাঁকিয়ে নিয়ে চলল। এ সংবাদ রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কানে পৌঁছলে তিনি তাদের পেছনে ধাওয়া করার জন্য লোক পাঠালেন। তারা ধরা পরল এবং তাদেরকে নিয়ে আসা হল। তাদের ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হল। তাদের হাত-পা কাটা হল, লৌহশলাকা দিয়ে তাদের চোখ ফুঁড়ে দেয়া হল। এরপর তপ্ত রোদে তাদেরকে ফেলে রাখা হল। অবশেষে তারা মারা গেল। আমি বললাম, তারা যা করেছে এর চেয়ে জঘন্য আর কী হতে পারে? তারা ইসলাম থেকে মুরতাদ্‌ হল, হত্যা করল, চুরি করল। তখন আম্‌বাসা ইব্‌নু সা’ঈদ বললেন, আল্লাহ্‌র শপথ! আজকের মত আমি আর কখনো শুনিনি। আমি বললাম , হে আম্‌বাসা! তাহলে তুমি আমার বর্ণিত হাদীসটি প্রত্যখান করছ কি? তিনি বললেন, না, তুমি হাদীসটি সঠিকভাবে বর্ণনা করেছ। আল্লাহ্‌র কসম! এ লোকগুলো কল্যাণের উপর থাকবে যতদিন এ শায়খ (বুযর্গ) তাদের মধ্যে উপস্থিত থাকবেন। আমি বললাম, এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে একটা নিয়ম আছে। আনসারদের একটি দল তাঁর কাছে আসল। তারা তাঁর কাছে আলোচনা করছিল। ইতিমধ্যে তাদের সামনে তাদের এক লোক বেরিয়ে গেল এবং নিহত হল। তারপর তারা বের হল। তারা তাদের সাথী কে দেখতে পেল যে, রক্তের মাঝে নড়াচড়া করছে। তারা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে ফিরে এল এবং বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমাদের সাথী যে আমাদের সাথে আলোচনা করছিল এবং সে আমাদের সামনেই বের হয়ে গিয়েছিল, আমরা এখন তাকে রক্তের মাঝে নড়াচড়া করতে দেখতে পাচ্ছি। এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বেরিয়ে গেলেন এবং বললেনঃ তাকে হত্যা করার ব্যাপারে কাদের সম্বন্ধে তোমাদের ধারণা? তারা বলল, আমরা মনে করি, ইয়াহূদীরা তাকে হত্যা করেছে। তিনি ইয়াহূদীদেরকে ডেকে পাঠালেন। এরপর তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমরা ওকে হত্যা করেছ? তারা বলল, না। তিনি আনসারদেরকে বললেন, তোমরা কি এতে রাযী আছ যে, ইয়াহূদীদের পঞ্চাশ জন লোক শপথ করে বলবে যে, তারা তাকে হত্যা করেনি। আনসাররা বলল, তারা এতে পরওয়া করবেনা, তারা আমাদের সকলকে হত্যা করার পরও শপথ করে নিতে পারবে। তিনি বললেনঃ তাহলে তোমরা কি এজন্য প্রস্তুত আছ যে, তোমাদের থেকে পঞ্চাশজনের শপথের মাধ্যমে তোমরা দীয়াতের অধিকারী হবে? তারা বলল, আমরা শপথ করব না। তখন তিনি নিজের পক্ষ থেকে দীয়াত প্রদান করে দেন। (রাবী আবূ কালাবা বলেন) আমি বললাম, হুযায়ল গোত্র জাহিলী যুগে তাদের গোত্রের লোকেরা এক ব্যাক্তিকে সকল প্রকার দায়-দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। এক রাতে সে লোক বাহ্‌হা নামক স্থানে ইয়ামনের এক পরিবারের উপর হঠাৎ হামলা চালায়। কিন্তু সে পরিবারের এক লোক তা টের পেয়ে যায় এবং তার প্রতি তরবারী নিক্ষেপ করে তাকে হত্যা করে ফেলে। অতঃপর হুযায়ল গোত্রের লোকেরা এসে ইয়ামনী গোত্রের ব্যাক্তিটিকে ধরে ফেলে এবং (হজ্জের) মৌসুমে ‘উমর (রাঃ)-এর কাছে তাকে নিয়ে পেশ করে। আর বলে সে আমাদের এক সঙ্গী কে হত্যা করেছে। ইয়ামনী লোকটি বলল, তারা কিন্তু ওকে সকল প্রকার দায়-দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। তখন তিনি বললেন, হুযায়ল গোত্রের পঞ্চাশ জন লোক এ মর্মে শপথ করবে যে তারা ওকে সকল দায়-দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিচ্ছিন্ন করেনি। বর্ণনাকারী বলেন, তাদের মধ্যে থেকে ঊনপঞ্চাশ জন লোক শপথ করে নিল, অতঃপর তাদের একজন সিরিয়া থেকে এলো, তারা তাকে শপথ করতে বলল। কিন্তু সে এক হাজার দিরহামের বিনিময়ে শপথ থেকে তাদের সঙ্গে আপোস করে নিল। তখন তারা তার স্থলে অপর একজন কে যোগ করে নিল। তারা তাকে নিহত ব্যাক্তির ভাইয়ের কাছে পেশ করল। তারা উভয়েই করমর্দন করল। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা এবং ঐ পঞ্চাশ জন লোক, যারা শপথ করেছে, চললাম। যখন তারা নাখ্‌লা নামক স্থানে পৌঁছল, তাদের উপর বৃষ্টি নেমে এল। তখন তারা পর্বতের এক গুহায় প্রবেশ করল। কিন্তু গুহা এ পঞ্চাশজন শপথকারীর উপর ভেঙ্গে পড়ল? এতে তারা সকলেই মারা গেল। তবে করমর্দনকারী দু’জন বেঁচে গেল। কিন্তু একটি পাথর তাদের উভয়ের প্রতি নিক্ষিপ্ত হল এবং নিহত লোকের ভাইয়ের পা ভেঙ্গে ফেলল। আর সে এক বছর জীবিত থাকার পর মারা গেল। (রাবী বলেন) আমি বললাম, আবদুল মালিক ইব্‌নু মারওয়ান (এক সময়) কাসামার ভিত্তিতে এক ব্যাক্তির কিসাস গ্রহণ করেন। এরপর আপন কৃতকর্মের উপর তিনি লজ্জিত হন এবং ঐ পঞ্চাশ জন লোক সম্পর্কে নির্দেশ দিলেন যারা শপথ করেছিল, তাদেরকে রেজিস্ট্রার থেকে খারিজ করে দিয়ে সিরিয়ায় নির্বাসন দিলেন।[২৩৩; মুসলিম ২৮/২, হাঃ ১৬৭১, আহমাদ ১২৯৩৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৩২)

৮৭/২৩. অধ্যায়ঃ
যে লোক অন্য লোকেদের ঘরে উঁকি মারল আর তারা তার চক্ষু ফুঁড়ে দিল, এতে ঐ ব্যাক্তির জন্য দিয়াত নেই।

৬৯০০
أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ أَبِي بَكْرِ بْنِ أَنَسٍ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَجُلاً اطَّلَعَ مِنْ حُجْرٍ فِي بَعْضِ حُجَرِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَامَ إِلَيْهِ بِمِشْقَصٍ أَوْ بِمَشَاقِصَ وَجَعَلَ يَخْتِلُهُ لِيَطْعُنَهُ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন একটি হুজরার ছিদ্র দিয়ে উঁকি মারল। তখন তিনি তার প্রতি লক্ষ্য করে একটি তীক্ষ্ণ প্রশস্ত ছুরি নিয়ে দাড়ালেন এবং তার অজান্তে তাকে খোঁচা দেয়ার সুযোগ খুঁজতে লাগলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৩৩)

৬৯০১
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا لَيْثٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ أَنَّ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ السَّاعِدِيَّ أَخْبَرَهُ أَنَّ رَجُلاً اطَّلَعَ فِي جُحْرٍ فِي بَابِ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَمَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِدْرًى يَحُكُّ بِهِ رَأْسَهُ فَلَمَّا رَآهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَوْ أَعْلَمُ أَنَّكَ تَنْتَظِرُنِي لَطَعَنْتُ بِهِ فِي عَيْنَيْكَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّمَا جُعِلَ الإِذْنُ مِنْ قِبَلِ الْبَصَرِ

সাহ্‌ল ইব্‌নু সা’দ সা’ঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক লোক রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কোন হুজরার দরজার এক ছিদ্র দিয়ে উঁকি মারল। তখন রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট চিরুনির মত একখন্ড লোহা ছিল। এ দিয়ে তিনি নিজ মাথা চুল্‌কাচ্ছিলেন। যখন রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে দেখলেন তখন বললেনঃ যদি আমি নিশ্চিত হতাম যে, তুমি আমার দিকে তাকাচ্ছ তাহলে এটা দিয়ে আমি তোমার চোখে আঘাত করতাম। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ চোখের কারণেই অনুমতির বিধান রাখা হয়েছে। [১১৯] [৫৯২৪; মুসলিম ৩৮/৯, হাঃ ২১৫৬, আহমাদ ২২৮৬৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৩৪)

[১১৯] উঁকি মেরে বাড়ীর ভিতর তাকানো নিষিদ্ধ- বাড়ী অপরের হোক বা নিজেরই হোক। ইসলাম যে তার অনুসারীদেরকে কত মহান চরিত্রের উপর প্রতিষ্ঠিত করতে চায়, এ হাদীস তার এক উজ্জ্বল প্রমাণ।

৬৯০২
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ أَبُو الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم لَوْ أَنَّ امْرَأً اطَّلَعَ عَلَيْكَ بِغَيْرِ إِذْنٍ فَخَذَفْتَهُ بِعَصَاةٍ فَفَقَأْتَ عَيْنَهُ لَمْ يَكُنْ عَلَيْكَ جُنَاحٌ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবূল কাসিম (রাঃ) বলেছেনঃ যদি কোন লোক অনুমতি ছাড়া তোমার দিকে উঁকি মারে আর তখন তুমি তার প্রতি কংকর ছুঁড়ে তার চক্ষু উপড়ে ফেল, এতে তোমার কোন অপরাধ হবে না। [১২০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৩৫)

[১২০] ৬৯০০-৬৯০২ নং হাদীসগুলো থেকে যে শিক্ষণীয় বিষয় জানা যায় তা নিম্নরূপঃ

(১) মাথায় চুল রাখা ও তার পরিচর্যা করা।

(২) এমন হাতিয়ার রাখা যা দ্বারা বিষাক্ত ও হিংস্র প্রাণীকে তাড়ানো যায় এবং যা ব্যবহারে ময়লা ও উকুন বিতাড়ন করা যায়।

(৩) দরজা বন্ধ করে যে ব্যক্তি বাড়ীতে অবস্থান করছে তার বিনা অনুমতিতে বাড়ীতে প্রবেশ না করা, এমন কি দরজার ছিদ্র দিয়ে উঁকি দেয়ার নিষেধাজ্ঞা।

(৪) চুল আঁচড়ানোর বৈধতা।

(৫) অনুমতি নেয়ার বিষয়টি শুধুমাত্র যাদের সাথে বিবাহ হারাম নয় তাদের সাথে নির্দিষ্ট নয়। বরং তা মুহরিমদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য, যেমন মা, বোন ইত্যাদি। (ফাতহুল বারী)

৮৭/২৪. অধ্যায়ঃ
আকিলা (রক্তপণ) প্রসঙ্গে

৬৯০৩
صَدَقَةُ بْنُ الْفَضْلِ أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ حَدَّثَنَا مُطَرِّفٌ قَالَ سَمِعْتُ الشَّعْبِيَّ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا جُحَيْفَةَ قَالَ سَأَلْتُ عَلِيًّا هَلْ عِنْدَكُمْ شَيْءٌ مِمَّا لَيْسَ فِي الْقُرْآنِ وَقَالَ مَرَّةً مَا لَيْسَ عِنْدَ النَّاسِ فَقَالَ وَالَّذِي فَلَقَ الْحَبَّةَ وَبَرَأَ النَّسَمَةَ مَا عِنْدَنَا إِلاَّ مَا فِي الْقُرْآنِ إِلاَّ فَهْمًا يُعْطَى رَجُلٌ فِي كِتَابِهِ وَمَا فِي الصَّحِيفَةِ قُلْتُ وَمَا فِي الصَّحِيفَةِ قَالَ الْعَقْلُ وَفِكَاكُ الأَسِيرِ وَأَنْ لاَ يُقْتَلَ مُسْلِمٌ بِكَافِرٍ

আবূ জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আলী (রাঃ) -কে জিজ্ঞেস করলাম, যা কুরআনে নেই এমন কিছু আপনাদের নিকট আছে কি? একবার তিনি বলেছেন, যা মানুষের নিকট নেই…তখন তিনি বললেন, ঐ সত্তার কসম! যিনি খাদ্যশস্য অঙ্কুরিত করেন এবং প্রাণ সৃষ্টি করেন! কুরআনে যা কিছু আছে তা ছাড়া আমাদের নিকট অন্য কিছু নেই। তবে এমন জ্ঞান যা আল্লাহ্‌র কিতাব বুঝবার জন্য কোন ব্যাক্তিকে দেয়া হয় এবং এ কাগজের টুকরায় যা রয়েছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কাগজের টুক্‌রায় কী রয়েছে? তিনি বললেন, রক্তপণ ও মুক্তিপণের বিধান। আর (এ নীতি) কোন কাফেরের বদলে কোন মুসলিম কে হত্যা করা হবে না। [১২১] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৩৬)

[১২১] আলী (রাঃ) হয়ত রক্তপণ ও মুক্তিপণ সম্পর্কিত বিধানাবলী রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে জানার পর কাগজের টুকরায় লিখে রেখেছিলেন।

৮৭/২৫. অধ্যায়ঃ
মহিলার ভ্রূণ

৬৯০৪
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ وَحَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ امْرَأَتَيْنِ مِنْ هُذَيْلٍ رَمَتْ إِحْدَاهُمَا الْأُخْرَى فَطَرَحَتْ جَنِينَهَا فَقَضَى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيهَا بِغُرَّةٍ عَبْدٍ أَوْ أَمَةٍ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

হুযায়ল গোত্রের দু’জন মহিলার একজন আরেকজন কে পাথর ছুঁড়ে গর্ভপাত ঘটিয়ে দিল। তখন রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ মহিলার ব্যাপারে একটি গোলাম অথবা বাঁদী প্রদানের ফায়সালা দিলেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৩৭)

৬৯০৫
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ أَبِيهِ عَنْ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ عَنْ عُمَرَ أَنَّهُ اسْتَشَارَهُمْ فِي إِمْلاَصِ الْمَرْأَةِ فَقَالَ الْمُغِيرَةُ قَضَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِالْغُرَّةِ عَبْدٍ أَوْ أَمَةٍ

উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি মহিলাদের গর্ভপাত সম্বন্ধে সাহাবীদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। তখন মুগীরা (রাঃ) বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত লোকটিকে একটি গোলাম অথবা বাঁদী প্রদানের ফায়সালা করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৩৮)

৬৯০৬
فَشَهِدَ مُحَمَّدُ بْنُ مَسْلَمَةَ أَنَّهُ شَهِدَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَضَى بِهِ

উযার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাসলামাহ (রাঃ) সাক্ষ্য দিলেন যে, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে এ ফায়সালা করতে দেখেছেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৩৮)

৬৯০৭
عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسَى عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ عُمَرَ نَشَدَ النَّاسَ مَنْ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَضَى فِي السِّقْطِ فَقَالَ الْمُغِيرَةُ أَنَا سَمِعْتُهُ قَضَى فِيهِ بِغُرَّةٍ عَبْدٍ أَوْ أَمَةٍ

হিশামের পিতা ‘উরওয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘উমর (রাঃ) লোকদের কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে ভ্রূণ হত্যার ব্যাপারে ফায়সালা দিতে কে শুনেছে? তখন মুগীরা (রাঃ) বললেন, আমি তাঁকে এরূপ ক্ষেত্রে একটি গোলাম অথবা বাঁদী প্রদানের ফায়সালা করতে শুনেছি। তিনি বলেন, এ বিষয়ে তোমার সাক্ষী নিয়ে এসো।(আধুনিক প্রকাশনী- , ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৩৯)

৬৯০৮
م حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَابِقٍ حَدَّثَنَا زَائِدَةُ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ أَنَّهُ سَمِعَ الْمُغِيرَةَ بْنَ شُعْبَةَ يُحَدِّثُ عَنْ عُمَرَ أَنَّهُ اسْتَشَارَهُمْ فِي إِمْلاَصِ الْمَرْأَةِ مِثْلَهُ

মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাস্‌লামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মুহাম্মাদ ইব্‌নু মাস্‌লামাহ (রাঃ) বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ ফায়সালা প্রদান করেছেন। (আঃপ্রঃ, ইঃফাঃ ৬৪৩৯)



————————-



৬৯০৮/১. মুহাম্মাদ ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) ‘উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি সাহাবীগণের সঙ্গে গর্ভপাত ঘটানোর বিষয়ে এরূপ পরামর্শ করেছেন। [৬৯০৫; মুসলিম ২৮/১১, হাঃ ১৬৮২, আহমাদ ১৮১৬১] (আঃপ্রঃ ৬৪২৮, ইঃফাঃ ৬৪৪০)

৮৭/২৬. অধ্যায়ঃ
মহিলার ভ্রুন এবং দিয়াত পিতা ও পিতার নিকটাত্মীয়দের উপর বর্তায়, সন্তানের উপর নয়।

৬৯০৯
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَضَى فِي جَنِينِ امْرَأَةٍ مِنْ بَنِي لَحْيَانَ بِغُرَّةٍ عَبْدٍ أَوْ أَمَةٍ ثُمَّ إِنَّ الْمَرْأَةَ الَّتِي قَضَى عَلَيْهَا بِالْغُرَّةِ تُوُفِّيَتْ فَقَضَى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّ مِيرَاثَهَا لِبَنِيهَا وَزَوْجِهَا وَأَنَّ الْعَقْلَ عَلَى عَصَبَتِهَا

আবু হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাণী লিহ্‌য়ানের এক মহিলার ভ্রুন হত্যার ব্যাপারে একটি গোলাম অথবা বাঁদী প্রদানের ফায়সালা করেন। তারপর দণ্ডপ্রাপ্ত মহিলার মৃত্যু হল, যার ব্যাপারে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ ফায়সালা করেছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পুনরায় ফায়সালা প্রদান করলেন যে, তার ত্যাজ্য সম্পত্তি তার ছেলে সন্তান ও স্বামী পাবে। আর দিয়াত আদায় করবে তার আসাবা।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৪১)

৬৯১০
أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ حَدَّثَنَا يُونُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ ابْنِ الْمُسَيَّبِ وَأَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ اقْتَتَلَتْ امْرَأَتَانِ مِنْ هُذَيْلٍ فَرَمَتْ إِحْدَاهُمَا الْأُخْرَى بِحَجَرٍ فَقَتَلَتْهَا وَمَا فِي بَطْنِهَا فَاخْتَصَمُوا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَضَى أَنَّ دِيَةَ جَنِينِهَا غُرَّةٌ عَبْدٌ أَوْ وَلِيدَةٌ وَقَضَى أَنَّ دِيَةَ الْمَرْأَةِ عَلَى عَاقِلَتِهَا

আবূ হুরাইরাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হুযায়ল গোত্রের দু’জন মহিলা ঝগড়াকালে একে অন্যের প্রতি পাথর ছুঁড়ে মারে এবং একজন অন্য জনের গর্ভস্থিত সন্তানকে হত্যা করে ফেলল। তারপর তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে বিচার নিয়ে এল। তিনি ফায়সালা দিলেন যে, ভ্রুনের দিয়াত হল একটি গোলাম অথবা বাঁদী আর এ ফায়সালাও দিলেন যে, নিহত মহিলার দিয়াত হত্যাকারিণীর আসাবার উপর আসবে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৪২)

৮৭/২৭. অধ্যায়ঃ
যে কোন গোলাম অথবা বালক থেকে সাহায্য চায়

বর্ণিত আছে যে, উম্মু সালামাহ (রাঃ) একটি পাঠশালার শিক্ষকের কাছে খবর পাঠালেন যে, আমার কাছে কতিপয় বালক পাঠিয়ে দিন, যারা পশমের জট ছাড়াবে । তবে কোন আযাদ (বালক) পাঠাবেন না ।

৬৯১১
عَمْرُو بْنُ زُرَارَةَ أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ عَنْ أَنَسٍ قَالَ لَمَّا قَدِمَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمَدِينَةَ أَخَذَ أَبُو طَلْحَةَ بِيَدِي فَانْطَلَقَ بِي إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ أَنَسًا غُلاَمٌ كَيِّسٌ فَلْيَخْدُمْكَ قَالَ فَخَدَمْتُهُ فِي الْحَضَرِ وَالسَّفَرِ فَوَاللهِ مَا قَالَ لِي لِشَيْءٍ صَنَعْتُهُ لِمَ صَنَعْتَ هَذَا هَكَذَا وَلاَ لِشَيْءٍ لَمْ أَصْنَعْهُ لِمَ لَمْ تَصْنَعْ هَذَا هَكَذَا

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যখন রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মদীনায় আসলেন, তখন আবূ ত্বল্‌হা (রাঃ) আমার হাত ধরে আমাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে গেলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল ! আনাস একজন হুঁশিয়ার ছেলে। সে যেন আপনার খেদমত করে। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি মুকীম এবং সফরকালে তাঁর খেদমত করেছি। আল্লাহ্‌র কসম ! যে কাজ আমি করেছি এর জন্য তিনি আমাকে কোন দিন এ কথা বলেননি, এটা এমন কেন করেছ? আর যে কাজ আমি করিনি এ জন্য এ কথা বলেননি, এটা এরকম করনি কেন?(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৪৩)

৮৭/২৮. অধ্যায়ঃ
খণি দণ্ডমুক্ত এবং কূপ দণ্ডমুক্ত

৬৯১২
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ وَأَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْعَجْمَاءُ جَرْحُهَا جُبَارٌ وَالْبِئْرُ جُبَارٌ وَالْمَعْدِنُ جُبَارٌ وَفِي الرِّكَازِ الْخُمُسُ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন পশু কাউকে আহত করলে, কূপে বা খণিতে পড়ে কেউ নিহত বা আহত হলে তাতে কোন দণ্ড বা রক্তপণ নেই। আর কেউ গুপ্তধন পেলে তার প্রতি এক-পঞ্চমাংশ দেয়া ওয়াজিব।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৪৪)

৮৭/২৯. অধ্যায়ঃ
পশু আহত করলে তাতে কোন ক্ষতিপূরন নেই ।

ইবনে সীরিন (রহঃ) বলেন, তাদের সময় পশুর লাথির আঘাতের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ প্রদানের ফায়সালা দিতেন না । এবং লাগাম টানার দরুন কোন ক্ষতি হলে ক্ষতিপূরণের ফায়সালা দিতেন । হাম্মাদ (রহঃ) বলেন, লাথির আঘাতের কারণে দায়ী করা যাবে না । তবে যদি কেউ পশুটিকে খোঁচা মারে । শুরায়হ্ (রহঃ) বলেন, প্রতিশোধমূলক আঘাতের কারণে পশুকে দায়ী করা যাবে না । যেমন কেউ কোন পশুকে আঘাত করল, তখন পশুটিও তাকে পা দিয়ে আঘাত করল । হাকাম (রহঃ) এবং হাম্মাদ (রহঃ) বলেন, যদি ভাড়া-করা ব্যক্তি গাধাকে হাঁকিয়ে নেয়, যে গাধার উপর কোন মহিলা উপবিষ্ঠ থাকে আর মহিলাটি গাধা থেকে পড়ে যায়, তাহলে তার উপর কিছু বর্তিবে না । শা’বী (রহঃ) বলেন, যদি কেউ কোন পশু চালায় এবং তাকে ক্লান্ত করে ফেলে তাহলে তার উপর ক্ষতিপূরণ বর্তিবে । আর যদি ধীরে চালায় তাহলে বর্তিবে না ।

৬৯১৩
مُسْلِمٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الْعَجْمَاءُ عَقْلُهَا جُبَارٌ وَالْبِئْرُ جُبَارٌ وَالْمَعْدِنُ جُبَارٌ وَفِي الرِّكَازِ الْخُمُسُ

আবূ হুরাইরাহ (রহঃ)’র মাধ্যমে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, পশু আহত করলে, খণি বা কূপে পড়ে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারে কোন ক্ষতিপূরণ নেই। গুপ্তধনের এক-পঞ্চমাংশ দেয়া ওয়াজিব। [১৪৯৯; মুসলিম ২৯/১১, হাঃ ১৭১০, আহমাদ ৭২৫৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৪৫)

৮৭/৩০. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি যীম্মিকে বিনা অপরাধে হত্যা করে তার পাপ

৬৯১৪
قَيْسُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا الْحَسَنُ حَدَّثَنَا مُجَاهِدٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ قَتَلَ نَفْسًا مُعَاهَدًا لَمْ يَرِحْ رَائِحَةَ الْجَنَّةِ وَإِنَّ رِيحَهَا لَيُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ أَرْبَعِينَ عَامًا

‘আব্দুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘আম্‌র (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে ব্যক্তি নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি প্রদত্ত কোন লোককে হত্যা করে, সে ব্যক্তি জান্নাতের সুগন্ধির ঘ্রান নিতে পারবে না। অথচ তার সুগন্ধ চল্লিশ বছরের দুরত্ব থেকে পাওয়া যায়। [১২২](আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৪৬)

[১২২] হাদীসটিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কাফিরকে হত্যার ভয়াবহতা বর্ণনা করা হয়েছে । প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কাফিরকে হত্যা করার পরিণাম যদি এমন হয় তাহলে একজন মুসলিমকে হত্যা করার পরিণাম কী হতে পারে জ্ঞানী লোকদের একটু ভাবা উচিত।

উল্লেখ্য কাফেরকে হত্যার দায়ে কোন মুসলিমকে হত্যা করা যাবে না । তবে এর অর্থ এরুপ নয় যে, মুসলিম ব্যক্তি অপরাধী নয়, বরং সে তার কর্মের দ্বারা বড় গুনাহে জড়িত হয়েছে । হত্যাকারী এ মুসলিম ব্যক্তিকে যে হত্যা করা যাবে না তা পরের হাদীসে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

৮৭/৩১. অধ্যায়ঃ
কাফেরের বদলে মুসলিমকে হত্যা করা যাবে না

৬৯১৫
أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا مُطَرِّفٌ أَنَّ عَامِرًا حَدَّثَهُمْ عَنْ أَبِي جُحَيْفَةَ قَالَ قُلْتُ لِعَلِيٍّ ح حَدَّثَنَا صَدَقَةُ بْنُ الْفَضْلِ أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ حَدَّثَنَا مُطَرِّفٌ سَمِعْتُ الشَّعْبِيَّ يُحَدِّثُ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا جُحَيْفَةَ قَالَ سَأَلْتُ عَلِيًّا هَلْ عِنْدَكُمْ شَيْءٌ مِمَّا لَيْسَ فِي الْقُرْآنِ وَقَالَ ابْنُ عُيَيْنَةَ مَرَّةً مَا لَيْسَ عِنْدَ النَّاسِ فَقَالَ وَالَّذِي فَلَقَ الْحَبَّةَ وَبَرَأَ النَّسَمَةَ مَا عِنْدَنَا إِلاَّ مَا فِي الْقُرْآنِ إِلاَّ فَهْمًا يُعْطَى رَجُلٌ فِي كِتَابِهِ وَمَا فِي الصَّحِيفَةِ قُلْتُ وَمَا فِي الصَّحِيفَةِ قَالَ الْعَقْلُ وَفِكَاكُ الأَسِيرِ وَأَنْ لاَ يُقْتَلَ مُسْلِمٌ بِكَافِرٍ

আবূ জুহাইফাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আলী (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাদের কাছে এমন কিছু আছে কি যা কুরাআনে নেই? তিনি বললেন, দিয়াতের বিধান, বন্দী-মুক্তির বিধান এবং (এ বিধান যে) কাফেরের বদলে কোন মুসলিমকে হত্যা করা যাবে না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৪৭)

৮৭/৩২. অধ্যায়ঃ
যখন কোন মুসলিম কোন ইয়াহুদীকে ক্রোধের সময় থাপ্‌পড় মারল ।

এ সম্পর্কে আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন।

৬৯১৬
أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ تُخَيِّرُوا بَيْنَ الأَنْبِيَاءِ

আবূ সাঈদ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেনঃ তোমরা নবীদের একজনকে অন্য জনের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিওনা। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৪৮)

৬৯১৭
مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى الْمَازِنِيِّ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ جَاءَ رَجُلٌ مِنْ الْيَهُودِ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَدْ لُطِمَ وَجْهُهُ فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ إِنَّ رَجُلاً مِنْ أَصْحَابِكَ مِنْ الأَنْصَارِ قَدْ لَطَمَ فِي وَجْهِي قَالَ ادْعُوهُ فَدَعَوْهُ قَالَ لِمَ لَطَمْتَ وَجْهَهُ قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنِّي مَرَرْتُ بِالْيَهُودِ فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ وَالَّذِي اصْطَفَى مُوسَى عَلَى الْبَشَرِ قَالَ قُلْتُ وَعَلَى مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم قَالَ فَأَخَذَتْنِي غَضْبَةٌ فَلَطَمْتُهُ قَالَ لاَ تُخَيِّرُونِي مِنْ بَيْنِ الأَنْبِيَاءِ فَإِنَّ النَّاسَ يَصْعَقُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَأَكُونُ أَوَّلَ مَنْ يُفِيقُ فَإِذَا أَنَا بِمُوسَى آخِذٌ بِقَائِمَةٍ مِنْ قَوَائِمِ الْعَرْشِ فَلاَ أَدْرِي أَفَاقَ قَبْلِي أَمْ جُوزِيَ بِصَعْقَةِ الطُّورِ

আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জনৈক ইয়াহূদী, যার মুখে চপেটাঘাত করা হয়েছিল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কাছে এসে বলল, হে মুহাম্মাদ! আপনার জনৈক আনসারী সাহাবী আমার মুখে চপেটাঘাত করেছে। তিনি বললেন, তোমরা তাকে ডেকে আন। তারা তাকে ডেকে আনল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তুমি তাকে কেন চড় মারলে? সে বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমি এক ইয়াহূদীর কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন আমি তাকে বলতে শুনলাম যে, ঐ সত্তার কসম! যিনি মূসাকে মানবকুলের উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। তখন আমি বললাম, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর উপরেও কি? অতঃপর আমার ভীষণ রাগ এসে গেল। ফলে আমি তাকে চড় মেরে দেই। তিনি বলেনঃ তোমরা আমাকে নবীদের মাঝে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিও না। কেননা সকল মানুষই ক্বিয়ামতের দিন বেহুঁশ হয়ে পড়বে। তখন আমিই হব প্রথম ব্যক্তি যে হুঁশ ফিরে পাবে। কিন্তু আমি তখন মুসা (আঃ) – কে এমন অবস্থায় পাব যে, তিনি আরশের খুঁটিগুলো থেকে একটি খুঁটি ধরে আছেন। আমি বুঝতে পারব না যে, তিনি আমার আগে হুঁশ ফিরে পেলেন, না তূর পর্বতে বেহুঁশ হবার প্রতিদান দেয়া হয়েছে ( যে জন্য তিনি পুনরায় বেহুঁশই হননি)?(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৪৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৪৯)
তাঁরা বলেন, জনৈক ব্যক্তি নবী রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, আমি আপনাকে আল্লাহ্‌র কসম দিয়ে বলছি আপনি আমাদের মাঝে আল্লাহ্‌র কিতাব অনুযায়ী ফায়সালা করবেন। তখন তার প্রতিপক্ষ দাঁড়াল, আর সে ছিল তার চেয়ে অধিক বিজ্ঞ এবং বলল, সে ঠিকই বলেছে। আপনি আল্লাহ্‌র কিতাব অনুযায়ী আমাদের মাঝে ফায়সালা করে দিন এবং আমাকে অনুমতি দিন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল ! নবী রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ বল। তখন সে বলল, আমার ছেলে এর ব্যক্তির পরিবারে মজুর ছিল, সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে বসে। ফলে আমি একশ’ ছাগল ও একটি গোলামের বিনিময়ে তার থেকে আপোস করে নেই। তারপর ক’জন আলিমকে জিজ্ঞাসা করি। তাঁরা আমাকে জানালেন যে, আমার ছেলের উপর একশ’ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। আর এ ব্যক্তির স্ত্রীর উপর রজম। তখন নবী রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ঐ সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ! আমি অবশ্যই আল্লাহ্‌র কিতাব অনুযায়ী তোমাদের মাঝে ফায়সালা করব। একশ’ (ছাগল) আর গোলাম তোমার কাছে ফেরত হবে। আর তোমার ছেলের উপর আসবে একশ’ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। হে উনাইস ! তুমি প্রত্যূষে মহিলার কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করবে। যদি সে স্বীকার করে তাহলে তাকে রজম করবে। সে স্বীকার করল। ফলে তাকে সে রজম করল। [২৩১৪, ২৩১৫; মুসলিম ২৯/৫, হাঃ ১৬৯৭, ১৬৯৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯৫)

৬৮৬০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ، قَالاَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَنْشُدُكَ اللَّهَ إِلاَّ قَضَيْتَ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللَّهِ‏.‏ فَقَامَ خَصْمُهُ وَكَانَ أَفْقَهَ مِنْهُ فَقَالَ صَدَقَ، اقْضِ بَيْنَنَا بِكِتَابِ اللَّهِ، وَأْذَنْ لِي يَا رَسُولَ اللَّهِ‏.‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ قُلْ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ إِنَّ ابْنِي كَانَ عَسِيفًا فِي أَهْلِ، هَذَا فَزَنَى بِامْرَأَتِهِ، فَافْتَدَيْتُ مِنْهُ بِمِائَةِ شَاةٍ وَخَادِمٍ وَإِنِّي سَأَلْتُ رِجَالاً مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ فَأَخْبَرُونِي أَنَّ عَلَى ابْنِي جَلْدَ مِائَةٍ وَتَغْرِيبَ عَامٍ، وَأَنَّ عَلَى امْرَأَةِ هَذَا الرَّجْمَ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لأَقْضِيَنَّ بَيْنَكُمَا بِكِتَابِ اللَّهِ، الْمِائَةُ وَالْخَادِمُ رَدٌّ عَلَيْكَ، وَعَلَى ابْنِكَ جَلْدُ مِائَةٍ وَتَغْرِيبُ عَامٍ، وَيَا أُنَيْسُ اغْدُ عَلَى امْرَأَةِ هَذَا فَسَلْهَا، فَإِنِ اعْتَرَفَتْ فَارْجُمْهَا ‏”‏‏.‏ فَاعْتَرَفَتْ فَرَجَمَهَا‏.‏

মুহাম্মদ ইব্‌ন ইউসুফ (র.)…… আবূহুরায়রা ও যায়িদইব্‌ন খালিদ জুহানী (রা.) থেকে বর্ণিতঃ

তাঁরা বলেন, জনৈক ব্যক্তি নবী রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে বলল, আমি আপনাকে আল্লাহ্‌র কসম দিয়ে বলছি আপনি আমাদের মাঝে আল্লাহ্‌র কিতাব অনুযায়ী ফায়সালা করবেন। তখন তার প্রতিপক্ষ দাঁড়াল, আর সে ছিল তার চেয়ে অধিক বিজ্ঞ এবং বলল, সে ঠিকই বলেছে। আপনি আল্লাহ্‌র কিতাব অনুযায়ী আমাদের মাঝে ফায়সালা করে দিন এবং আমাকে অনুমতি দিন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল ! নবী রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ বল। তখন সে বলল, আমার ছেলে এর ব্যক্তির পরিবারে মজুর ছিল, সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে বসে। ফলে আমি একশ’ ছাগল ও একটি গোলামের বিনিময়ে তার থেকে আপোস করে নেই। তারপর ক’জন আলিমকে জিজ্ঞাসা করি। তাঁরা আমাকে জানালেন যে, আমার ছেলের উপর একশ’ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। আর এ ব্যক্তির স্ত্রীর উপর রজম। তখন নবী রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ঐ সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার প্রাণ! আমি অবশ্যই আল্লাহ্‌র কিতাব অনুযায়ী তোমাদের মাঝে ফায়সালা করব। একশ’ (ছাগল) আর গোলাম তোমার কাছে ফেরত হবে। আর তোমার ছেলের উপর আসবে একশ’ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। হে উনাইস ! তুমি প্রত্যূষে মহিলার কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করবে। যদি সে স্বীকার করে তাহলে তাকে রজম করবে। সে স্বীকার করল। ফলে তাকে সে রজম করল।[২৩১৪, ২৩১৫; মুসলিম ২৯/৫, হাঃ ১৬৯৭, ১৬৯৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৩৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৩৯৫)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]