সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস ফিতনা অধ্যায় ১ম ভাগ হাদিস নং ৭০৪৮ – ৭০৯৮

৯২/১. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ সতর্ক থাক সেই ফিতনা হতে যা বিশেষভাবে তোমাদের যালিম লোকেদের মাঝেই সীমাবদ্ধ হয়ে থাকবে না – (সূরাহ আনফাল ৮/২৫)।

এবং যা নাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফিত্‌না সম্পর্কে সতর্ক করতেন।

৭০৪৮
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ السَّرِيِّ حَدَّثَنَا نَافِعُ بْنُ عُمَرَ عَنْ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ قَالَ قَالَتْ أَسْمَاءُ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَنَا عَلَى حَوْضِي أَنْتَظِرُ مَنْ يَرِدُ عَلَيَّ فَيُؤْخَذُ بِنَاسٍ مِنْ دُونِي فَأَقُولُ أُمَّتِي فَيُقَالُ لاَ تَدْرِي مَشَوْا عَلَى الْقَهْقَرَى قَالَ ابْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ اللهُمَّ إِنَّا نَعُوذُ بِكَ أَنْ نَرْجِعَ عَلَى أَعْقَابِنَا أَوْ نُفْتَنَ

আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে রাসূলুল্লাহ (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি আমার হাউজের কাছে আগমনকারী লোকদের অপেক্ষায় থাকব। তখন আমার সামনে থেকে কতক লোককে ধরে নিয়ে যাওয়া হবে। আমি বলব, এরা তো আমার উম্মাত। তখন বলা হবে, আপনি জানেন না, এরা (আপনার পথ থেকে) পিছনে চলে গিয়েছিল।

(বর্ণনাকারী) ইব্‌নু আবূ মুলাইকাহ বলেনঃ হে আল্লাহ্‌! পিছনে ফিরে যাওয়া কিংবা ফিত্‌নায় পড়া থেকে আমরা আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৭২)

৭০৪৯
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ مُغِيرَةَ عَنْ أَبِي وَائِلٍ قَالَ قَالَ عَبْدُ اللهِ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنَا فَرَطُكُمْ عَلَى الْحَوْضِ لَيُرْفَعَنَّ إِلَيَّ رِجَالٌ مِنْكُمْ حَتَّى إِذَا أَهْوَيْتُ لِأُنَاوِلَهُمْ اخْتُلِجُوا دُونِي فَأَقُولُ أَيْ رَبِّ أَصْحَابِي يَقُولُ لاَ تَدْرِي مَا أَحْدَثُوا بَعْدَكَ.

আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি হাউজে কাউসারের নিকট তোমাদের আগেই হাজির থাকব। তোমাদের থেকে কিছু লোককে আমার নিকট পেশ করা হবে। কিন্তু আমি যখন তাদের পান করাতে উদ্যত হব, তখন তাদেরকে আমার নিকট হতে ছিনিয়ে নেয়া হবে। আমি বলব, হে রব! এরা তো আমার সাথী। তখন তিনি বলবেন, আপনার পর তারা নতুন কী ঘটিয়েছে তা আপনি জানেন না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৭৩)

৭০৫০
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِي حَازِمٍ قَالَ سَمِعْتُ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ يَقُولُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ أَنَا فَرَطُكُمْ عَلَى الْحَوْضِ فَمَنْ وَرَدَهُ شَرِبَ مِنْهُ وَمَنْ شَرِبَ مِنْهُ لَمْ يَظْمَأْ بَعْدَهُ أَبَدًا لَيَرِدُ عَلَيَّ أَقْوَامٌ أَعْرِفُهُمْ وَيَعْرِفُونِي ثُمَّ يُحَالُ بَيْنِي وَبَيْنَهُمْ قَالَ أَبُو حَازِمٍ فَسَمِعَنِي النُّعْمَانُ بْنُ أَبِي عَيَّاشٍ وَأَنَا أُحَدِّثُهُمْ هَذَا فَقَالَ هَكَذَا سَمِعْتَ سَهْلاً فَقُلْتُ نَعَمْ قَالَ وَأَنَا أَشْهَدُ عَلَى أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ لَسَمِعْتُهُ يَزِيدُ فِيهِ قَالَ إِنَّهُمْ مِنِّي فَيُقَالُ إِنَّكَ لاَ تَدْرِي مَا بَدَّلُوا بَعْدَكَ فَأَقُولُ سُحْقًا سُحْقًا لِمَنْ بَدَّلَ بَعْدِي.

সাহ্‌ল ইব্‌নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে বলতে শুনেছি যে, আমি হাউজের ধারে তোমাদের আগে হাজির থাকব। যে সেখানে হাজির হবে, সে সেখান থেকে পান করার সুযোগ পাবে। আর যে একবার সে হাউজ থেকে পান করবে সে কখনই পিপাসিত হবে না। অবশ্যই এমন কিছু দল আমার কাছে হাজির হবে যাদের আমি (আমার উম্মাত বলে) চিনতে পারব এবং তারাও আমাকে চিনতে পারবে। কিন্তু এরপরই তাদের ও আমার মাঝে প্রতিবন্ধকতা দাড় করে দেয়া হবে।

আবূ হাযিম (রহঃ) বলেন, আমি হাদীস বর্ণনা করছিলাম, এমন সময় নু’মান ইব্‌নু আবূ আয়াস আমার নিকট হতে এ হাদীসটি শুনে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি সাহ্‌ল থেকে হাদীসটি এরূপ শুনেছেন। আমি বললাম, হ্যাঁ। তখন সে বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি আবূ সা’ঈদ খুদ্‌রী (রাঃ) – কে এ হাদীসে অতিরিক্ত বলতে শুনেছি যে, নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বলবেনঃ এরা তো আমারই অনুসারী। তখন বলা হবে, আপনি নিশ্চয় জানেন না যে, আপনার পরে এরা দ্বীনের মধ্যে কি পরিবর্তন করেছে। এ শুনে আমি বলব, যারা আমার পরে পরিবর্তন করেছে, তারা দূর হোক, দূর হোক। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৭৪)

৭০৫১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِي حَازِمٍ قَالَ سَمِعْتُ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ يَقُولُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ أَنَا فَرَطُكُمْ عَلَى الْحَوْضِ فَمَنْ وَرَدَهُ شَرِبَ مِنْهُ وَمَنْ شَرِبَ مِنْهُ لَمْ يَظْمَأْ بَعْدَهُ أَبَدًا لَيَرِدُ عَلَيَّ أَقْوَامٌ أَعْرِفُهُمْ وَيَعْرِفُونِي ثُمَّ يُحَالُ بَيْنِي وَبَيْنَهُمْ قَالَ أَبُو حَازِمٍ فَسَمِعَنِي النُّعْمَانُ بْنُ أَبِي عَيَّاشٍ وَأَنَا أُحَدِّثُهُمْ هَذَا فَقَالَ هَكَذَا سَمِعْتَ سَهْلاً فَقُلْتُ نَعَمْ قَالَ وَأَنَا أَشْهَدُ عَلَى أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ لَسَمِعْتُهُ يَزِيدُ فِيهِ قَالَ إِنَّهُمْ مِنِّي فَيُقَالُ إِنَّكَ لاَ تَدْرِي مَا بَدَّلُوا بَعْدَكَ فَأَقُولُ سُحْقًا سُحْقًا لِمَنْ بَدَّلَ بَعْدِي.

সাহ্‌ল ইব্‌নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে বলতে শুনেছি যে, আমি হাউজের ধারে তোমাদের আগে হাজির থাকব। যে সেখানে হাজির হবে, সে সেখান থেকে পান করার সুযোগ পাবে। আর যে একবার সে হাউজ থেকে পান করবে সে কখনই পিপাসিত হবে না। অবশ্যই এমন কিছু দল আমার কাছে হাজির হবে যাদের আমি (আমার উম্মাত বলে) চিনতে পারব এবং তারাও আমাকে চিনতে পারবে। কিন্তু এরপরই তাদের ও আমার মাঝে প্রতিবন্ধকতা দাড় করে দেয়া হবে।

আবূ হাযিম (রহঃ) বলেন, আমি হাদীস বর্ণনা করছিলাম, এমন সময় নু’মান ইব্‌নু আবূ আয়াস আমার নিকট হতে এ হাদীসটি শুনে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি সাহ্‌ল থেকে হাদীসটি এরূপ শুনেছেন। আমি বললাম, হ্যাঁ। তখন সে বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি আবূ সা’ঈদ খুদ্‌রী (রাঃ) – কে এ হাদীসে অতিরিক্ত বলতে শুনেছি যে, নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বলবেনঃ এরা তো আমারই অনুসারী। তখন বলা হবে, আপনি নিশ্চয় জানেন না যে, আপনার পরে এরা দ্বীনের মধ্যে কি পরিবর্তন করেছে। এ শুনে আমি বলব, যারা আমার পরে পরিবর্তন করেছে, তারা দূর হোক, দূর হোক।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৭৪)

৯২/২. অধ্যায়ঃ
নাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ আমার পরে তোমরা এমন কিছু দেখতে পাবে, যা তোমরা পছন্দ করবে না। ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু যায়দ (রাঃ) বলেন, নাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা ধৈর্য ধারণ কর যতক্ষণ না হাউযের ধারে আমার সঙ্গে মিলিত হও।

৭০৫২
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ الْقَطَّانُ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ حَدَّثَنَا زَيْدُ بْنُ وَهْبٍ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ قَالَ قَالَ لَنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ بَعْدِي أَثَرَةً وَأُمُورًا تُنْكِرُونَهَا قَالُوا فَمَا تَأْمُرُنَا يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَدُّوا إِلَيْهِمْ حَقَّهُمْ وَسَلُوا اللهَ حَقَّكُم

আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের বলেছেনঃ আমার পরে তোমরা অবশ্যই ব্যক্তিস্বার্থকে প্রাধান্য দেয়ার প্রবণতা লক্ষ‍্য করবে। এবং এমন কিছু বিষয় দেখতে পাবে, যা তোমরা পছন্দ করবে না। তাঁরা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! তাহলে আমাদের জন্য কী হুকুম করছেন? উত্তরে তিনি বললেনঃ তাদের হক পূর্ণরূপে আদায় করবে, আর তোমাদের হক আল্লাহ্‌র কাছে চাইবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৭৫)

৭০৫৩
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ عَنْ الْجَعْدِ عَنْ أَبِي رَجَاءٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ كَرِهَ مِنْ أَمِيرِهِ شَيْئًا فَلْيَصْبِرْ فَإِنَّهُ مَنْ خَرَجَ مِنْ السُّلْطَانِ شِبْرًا مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কোন লোক যদি ‘আমীরের কোন কিছু অপছন্দ করে, তাহলে সে যেন ধৈর্য ধারণ করে। কেননা, যে লোক সুলতানের আনুগত্য থেকে এক বিঘতও সরে যাবে, তার মৃত্যু হবে জাহিলী যুগের মৃত্যুর মত। [১৫৪][৭০৫৪, ৭১৪৩; মুসলিম ৩৩/১৩, হাঃ ১৮৪৯, আহমাদ ২৪৮৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৭৬)


[১৫৪] মুসলিম শাসকের ভুল বা অন্যায় কার্যকলাপের জন্য প্রতিবাদ করা যাবে এই উদ্দেশ্যে যে, তিনি যেন সঠিক পথে প্রতিষ্ঠিত থাকেন, কিন্তু তার আনুগত্য থেকে বেরিয়ে গিয়ে বিদ্রোহ করা যাবে না, করলে অমুসলিমের মৃত্যু বরণ করতে হবে।

৭০৫৪
أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ الْجَعْدِ أَبِي عُثْمَانَ حَدَّثَنِي أَبُو رَجَاءٍ الْعُطَارِدِيُّ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ رَأَى مِنْ أَمِيرِهِ شَيْئًا يَكْرَهُهُ فَلْيَصْبِرْ عَلَيْهِ فَإِنَّهُ مَنْ فَارَقَ الْجَمَاعَةَ شِبْرًا فَمَاتَ إِلاَّ مَاتَ مِيتَةً جَاهِلِيَّةً.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক নিজ আমীরের কাছ থেকে অপছন্দনীয় কিছু দেখবে সে যেন তাতে ধৈর্য ধারণ করে। কেননা, যে লোক জামাআত থেকে এক বিঘতও বিচ্ছিন্ন হবে তার মৃত্যু হবে জাহিলী মৃত্যুর মত। [৭০৫৩; মুসলিম ৩৩/১৩, হাঃ ১৮৪৯, আহমাদ ২৪৮৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৭৭)

৭০৫৫
إِسْمَاعِيلُ حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ عَنْ عَمْرٍو عَنْ بُكَيْرٍ عَنْ بُسْرِ بْنِ سَعِيدٍ عَنْ جُنَادَةَ بْنِ أَبِي أُمَيَّةَ قَالَ دَخَلْنَا عَلَى عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ وَهُوَ مَرِيضٌ قُلْنَا أَصْلَحَكَ اللهُ حَدِّثْ بِحَدِيثٍ يَنْفَعُكَ اللهُ بِهِ سَمِعْتَهُ مِنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ دَعَانَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَبَايَعْنَاهُ

জুনাদাহ ইব্‌নু আবূ উমাইয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা ‘উবাদাহ ইব্‌নু সামিত (রাঃ)-এর নিকট ছিলাম। তখন তিনি অসুস্থ ছিলেন। আমরা বললাম, আল্লাহ্‌ আপনাকে সুস্থ করে দিন। আপনি আমাদের এমন একটি হাদীস বর্ণনা করুন, যদ্‌দ্বারা আল্লাহ আপনাকে উপকৃত করবেন এবং যা আপনি নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শুনেছেন। তিনি বলেন নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের আহবান করলেন। আমরা তাঁর কাছে বাই’আত করলাম। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৬৫ প্রথমাংশ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৭৮)

৭০৫৬
فَقَالَ فِيمَا أَخَذَ عَلَيْنَا أَنْ بَايَعَنَا عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ فِي مَنْشَطِنَا وَمَكْرَهِنَا وَعُسْرِنَا وَيُسْرِنَا وَأَثَرَةً عَلَيْنَا وَأَنْ لاَ نُنَازِعَ الأَمْرَ أَهْلَهُ إِلاَّ أَنْ تَرَوْا كُفْرًا بَوَاحًا عِنْدَكُمْ مِنْ اللهِ فِيهِ بُرْهَانٌ.

জুনাদাহ ইব্‌নু আবূ উমাইয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এরপর তিনি (‘উবাদাহ) বললেন, আমাদের থেকে যে ওয়াদা তিনি গ্রহণ করেছিলেন তাতে ছিল যে, আমরা আমাদের সুখে-দুঃখে, বেদনায় ও আনন্দে এবং আমাদের উপর অন্যকে আগ্রাধিকার দিলেও পূর্ণরূপে শোনা ও মানার উপর বাই’আত করলাম। আরো (বাই’আত করলাম) যে আমার ক্ষমতা সংক্রান্ত বিষয়ে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে ঝগড়া করব না। কিন্তু যদি স্পষ্ট কুফ্‌রী দেখ, তোমাদের কাছে আল্লাহ্‌র তরফ থেকে যে বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণ বিদ্যমান, তাহলে আলাদা কথা।[৭২০০; মুসলিম ২৯/৯, হাঃ ১৭০৯] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৬৫ শেষাংশ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৭৮)

৭০৫৭
مُحَمَّدُ بْنُ عَرْعَرَةَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ عَنْ أُسَيْدِ بْنِ حُضَيْرٍ أَنَّ رَجُلاً أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ اسْتَعْمَلْتَ فُلاَنًا وَلَمْ تَسْتَعْمِلْنِي قَالَ إِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ بَعْدِي أَثَرَةً فَاصْبِرُوا حَتَّى تَلْقَوْنِي.

উসায়দ ইব্‌নু হুযায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, এক লোক নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি অমুক লোককে হাকাম নিযুক্ত করলেন, অথচ আমাকে নিযুক্ত করলেন না। তখন নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ নিশ্চয়ই তোমরা আমার পর নিজের অগ্রাধিকার পাওয়ার চেষ্টা করবে। সে সময় তোমরা ধৈর্য ধরবে, যতক্ষণ না আমার সাথে মিলিত হও।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৭৯)

৯২/৩. অধ্যায়ঃ
নাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ কতকগুলো বুদ্ধিহীন বালকের হাতে আমার উম্মাত ধ্বংস হবে।

৭০৫৮
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ يَحْيَى بْنِ سَعِيدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ سَعِيدٍ قَالَ أَخْبَرَنِي جَدِّي قَالَ كُنْتُ جَالِسًا مَعَ أَبِي هُرَيْرَةَ فِي مَسْجِدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِالْمَدِينَةِ وَمَعَنَا مَرْوَانُ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ سَمِعْتُ الصَّادِقَ الْمَصْدُوقَ يَقُولُ هَلَكَةُ أُمَّتِي عَلَى يَدَيْ غِلْمَةٍ مِنْ قُرَيْشٍ فَقَالَ مَرْوَانُ لَعْنَةُ اللهِ عَلَيْهِمْ غِلْمَةً فَقَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ لَوْ شِئْتُ أَنْ أَقُولَ بَنِي فُلاَنٍ وَبَنِي فُلاَنٍ لَفَعَلْتُ فَكُنْتُ أَخْرُجُ مَعَ جَدِّي إِلَى بَنِي مَرْوَانَ حِينَ مُلِّكُوا بِالشَّأْمِ فَإِذَا رَآهُمْ غِلْمَانًا أَحْدَاثًا قَالَ لَنَا عَسَى هَؤُلاَءِ أَنْ يَكُونُوا مِنْهُمْ قُلْنَا أَنْتَ أَعْلَمُ.

আম্‌র ইব্‌নু ইয়াহ্‌ইয়া ইব্‌নু সা‘ঈদ ইব্‌নু ‘আম্‌র ইব্‌নু সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার দাদা আমাকে জানিয়েছেন যে, আমি আবূ হুরায়রা্‌ (রাঃ)-এর সঙ্গে মদিনায় নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাসজিদে উপবিষ্ট ছিলাম। আমাদের সঙ্গে মারওয়ানও ছিল। এ সময় আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন, আমি ‘আস্‌-সাদিকুল মাস্‌দুক’ (সত্যবাদী ও সত্যবাদী হিসাবে স্বীকৃত) – কে বলতে শুনেছি আমার উম্মাতের ধ্বংস কুরাইশের কতক বালকের হাতে হবে। তখন মারওয়ান বলল, এ সব বালকের প্রতি আল্লাহ্‌র ‘লা’নত’ বর্ষিত হোক। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন, আমি যদি বলার ইচ্ছা করি যে তারা অমুক অমুক গোত্রের লোক তাহলে বলতে সক্ষম। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৮০)

‘আম্‌র ইব্‌নু ইয়াহ্‌ইয়া বলেন, মারওয়ান যখন সিরিয়ায় ক্ষমতায় আসীন হল, তখন আমি আমার দাদার সাথে তাদের সেখানে গেলাম। তিনি যখন তাদের কম বয়সের বালক দেখতে পেলেন, তখন তিনি আমাদের বললেন, সম্ভবত এরা ঐ দলেরই লোক। আমরা বললাম, এ ব্যাপারে আপনিই ভাল জানেন।

৯২/৪. অধ্যায়ঃ
নাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ আরবরা অতি নিকটবর্তী এক দুর্যোগে হালাক হয়ে যাবে।

৭০৫৯
مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ أَنَّهُ سَمِعَ الزُّهْرِيَّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ أُمِّ سَلَمَةَ عَنْ أُمِّ حَبِيبَةَ عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ نَّ أَنَّهَا قَالَتْ اسْتَيْقَظَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنْ النَّوْمِ مُحْمَرًّا وَجْهُهُ يَقُولُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَيْلٌ لِلْعَرَبِ مِنْ شَرٍّ قَدْ اقْتَرَبَ فُتِحَ الْيَوْمَ مِنْ رَدْمِ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ مِثْلُ هَذِهِ وَعَقَدَ سُفْيَانُ تِسْعِينَ أَوْ مِائَةً قِيلَ أَنَهْلِكُ وَفِينَا الصَّالِحُونَ قَالَ نَعَمْ إِذَا كَثُرَ الْخَبَثُ.

যাইনাব বিন্‌ত জাহাশ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রক্তবর্ণ চেহারা নিয়ে ঘুম থেকে জাগলেন এবং বলতে লাগলেন, ‘লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ্‌’! আল্লাহ্‌ ব্যতীত কোন ইলাহ্‌ নেই। নিকটবর্তী এক দুর্যোগে আরব ধ্বংস হয়ে যাবে। ইয়াজূজ-মা‘জূজের (প্রতিরোধ) প্রাচীর আজ এতটুকু পরিমাণ খুলে গেছে। সুফ্‌ইয়ান নব্বই কিংবা একশ’র রেখায় আঙ্গুল রেখে গিঁট বানিয়ে দেখলেন। জিজ্ঞাসা করা হল, আমরা কি ধ্বংস হয়ে যাব অথচ আমাদের মাঝে নেককার লোকও থাকবে? নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ, যখন পাপাচার বেড়ে যাবে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৮১)

৭০৬০
أَبُو نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ عَنْ الزُّهْرِيِّ ح و حَدَّثَنِي مَحْمُودٌ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ قَالَ أَشْرَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى أُطُمٍ مِنْ آطَامِ الْمَدِينَةِ فَقَالَ هَلْ تَرَوْنَ مَا أَرَى قَالُوا لاَ قَالَ فَإِنِّي لأَرَى الْفِتَنَ تَقَعُ خِلاَلَ بُيُوتِكُمْ كَوَقْعِ الْقَطْرِ.

উসামাহ ইব্‌নু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনাহর টিলাসমূহের একটির উপর উঠে বললেন, আমি যা দেখি তোমরা কি তা দেখতে পাও? উত্তরে সাহাবা-ই-কিরাম বললেন, না। তখন নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ অবশ্যই আমি দেখতে পাচ্ছি, তোমাদের ঘরগুলোর ফাঁকে ফাঁকে ফিত্‌না বৃষ্টির মতো পতিত হচ্ছে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৮২)

৯২/৫. অধ্যায়ঃ
ফিত্‌নার ব্যাপ্তি ।

৭০৬১
عَيَّاشُ بْنُ الْوَلِيدِ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الأَعْلَى حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَعِيدٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَتَقَارَبُ الزَّمَانُ وَيَنْقُصُ الْعَمَلُ وَيُلْقَى الشُّحُّ وَتَظْهَرُ الْفِتَنُ وَيَكْثُرُ الْهَرْجُ قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَيُّمَ هُوَ قَالَ الْقَتْلُ الْقَتْلُ وَقَالَ شُعَيْبٌ وَيُونُسُ وَاللَّيْثُ وَابْنُ أَخِي الزُّهْرِيِّ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ حُمَيْدٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সময় নিকটতর হতে থাকবে, আর ‘আমাল কমে যেতে থাকবে, কৃপণতা ছড়িয়ে দেয়া হবে, ফিত্‌নার বিকাশ ঘটবে এবং হারজ ব্যাপকতর হবে। সাহাব-ই-কিরাম জিজ্ঞেস করলেন, হারজ সেটা কী? নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হত্যা, হত্যা। [৮৫]

শু‘আয়ব, ইউনুস, লায়স এবং যুহরীর ভ্রাতুষ্পুত্র আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৮৩)

৭০৬২
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسَى عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ شَقِيقٍ قَالَ كُنْتُ مَعَ عَبْدِ اللهِ وَأَبِي مُوسَى فَقَالاَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ بَيْنَ يَدَيْ السَّاعَةِ لأيَّامًا يَنْزِلُ فِيهَا الْجَهْلُ وَيُرْفَعُ فِيهَا الْعِلْمُ وَيَكْثُرُ فِيهَا الْهَرْجُ وَالْهَرْجُ الْقَتْلُ.

শাকিক থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ্ ও আবূ মূসা (রাঃ) -এর সঙ্গে ছিলাম। তাঁরা বলেন, নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অবশ্যই ক্বিয়ামাতের আগে এমন একটি সময় আসবে যখন সব জায়গায় মূর্খতা ছড়িয়ে পড়বে এবং ইল্‌ম উঠিয়ে নেয়া হবে। সে সময় ‘হারজ্‌’ বর্ধিত হবে। আর ‘হারজ্‌’ হল (মানুষ) হত্যা।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৮৪)

৭০৬৩
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسَى عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ شَقِيقٍ قَالَ كُنْتُ مَعَ عَبْدِ اللهِ وَأَبِي مُوسَى فَقَالاَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ بَيْنَ يَدَيْ السَّاعَةِ لأيَّامًا يَنْزِلُ فِيهَا الْجَهْلُ وَيُرْفَعُ فِيهَا الْعِلْمُ وَيَكْثُرُ فِيهَا الْهَرْجُ وَالْهَرْجُ الْقَتْلُ.

শাকিক থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ্ ও আবূ মূসা (রাঃ) -এর সঙ্গে ছিলাম। তাঁরা বলেন, নবী (সাল্লালাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অবশ্যই ক্বিয়ামাতের আগে এমন একটি সময় আসবে যখন সব জায়গায় মূর্খতা ছড়িয়ে পড়বে এবং ইল্‌ম উঠিয়ে নেয়া হবে। সে সময় ‘হারজ্‌’ বর্ধিত হবে। আর ‘হারজ্‌’ হল (মানুষ) হত্যা।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৮৪)

৭০৬৪
عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنَا أَبِي حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ حَدَّثَنَا شَقِيقٌ قَالَ جَلَسَ عَبْدُ اللهِ وَأَبُو مُوسَى فَتَحَدَّثَا فَقَالَ أَبُو مُوسَى قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ بَيْنَ يَدَيْ السَّاعَةِ أَيَّامًا يُرْفَعُ فِيهَا الْعِلْمُ وَيَنْزِلُ فِيهَا الْجَهْلُ وَيَكْثُرُ فِيهَا الْهَرْجُ وَالْهَرْجُ الْقَتْلُ.

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাতের আগে এমন একটি সময় আসবে যখন ইল্‌ম উঠিয়ে নেয়া হবে এবং সর্বত্র মূর্খতা ছড়িয়ে পড়বে, আর তখন হারজ বেড়ে যাবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৭২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৮৫)

৭০৬৫
قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي وَائِلٍ قَالَ إِنِّي لَجَالِسٌ مَعَ عَبْدِ اللهِ وَأَبِي مُوسَى فَقَالَ أَبُو مُوسَى سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ وَالْهَرْجُ بِلِسَانِ الْحَبَشَةِ الْقَتْلُ.

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে পূর্বে উল্লেখিত হাদীসের মত একটি হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি। আর হাবশী ভাষায় হারজ অর্থ (মানুষ) হত্যা। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৭৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৮৫)

৭০৬৬
مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ وَاصِلٍ عَنْ أَبِي وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ وَأَحْسِبُهُ رَفَعَهُ قَالَ بَيْنَ يَدَيْ السَّاعَةِ أَيَّامُ الْهَرْجِ يَزُولُ فِيهَا الْعِلْمُ وَيَظْهَرُ فِيهَا الْجَهْلُ قَالَ أَبُو مُوسَى وَالْهَرْجُ الْقَتْلُ بِلِسَانِ الْحَبَشَةِ.

আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তার সম্পর্কে আমার ধারণা, তিনি হাদীসটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে মারফু হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ক্বিয়ামাতের আগে হারজ অর্থাৎ হত্যার যুগ শুরু হবে। তখন ইল্‌ম বিলুপ্ত হয়ে যাবে এবং মূর্খতা প্রকাশিত হয়ে পড়বে। আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, হাবশী ভাষায় ‘হারজ’ অর্থ (মানুষ) হত্যা।(আধুনিক প্রকাশনী- নাই, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৮৬)

৭০৬৭
وَقَالَ أَبُو عَوَانَةَ عَنْ عَاصِمٍ عَنْ أَبِي وَائِلٍ عَنْ الأَشْعَرِيِّ أَنَّهُ قَالَ لِعَبْدِ اللهِ تَعْلَمُ الأَيَّامَ الَّتِي ذَكَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَيَّامَ الْهَرْجِ نَحْوَهُ قَالَ ابْنُ مَسْعُودٍ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ مِنْ شِرَارِ النَّاسِ مَنْ تُدْرِكْهُمْ السَّاعَةُ وَهُمْ أَحْيَاءٌ.

আবূ মূসা আশ্‌‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ আওয়ানা তাঁর বর্ণনাসূত্রে আবূ মূসা আশ্‌‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন যে, তিনি ‘আবদুল্লাহ্‌কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে যুগকে ‘হারজ’-এর যুগ বলেছেন সে যুগ সম্পর্কে আপনি কিছু জানেন কি? এর উত্তরে তিনি আগে উল্লেখিত হাদীসটি বর্ণনা করেন।

ইব্‌নু মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে বলতে শুনেছি যে, ক্বিয়ামাত যাদের জীবনকালে সংঘটিত হবে তারাই সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোক। [১৫৫] [মুসলিম ৫২/২৬, হাঃ ২৯৪৯] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৭৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৮৭)


[১] কিয়ামত শুধুমাত্র মন্দ ও খারাপ লোকদের উপর সংঘটিত হবে। কিন্তু لا تزال طائفة من أمتي على الحق حتى تقوم الساعة

হাদীস থেকে বুঝা যায় কিয়ামত মর্যাদাবান লোকদের উপরেও সংঘটিত হবে। সুতরাং উভয়ের সমন্বয় হল, কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার প্রাক্কালে আল্লাহ তা‘আলা হালকা বাতাস প্রেরণ করবেন এবং যাদের অন্তরে বিন্দু পরিমাণ ঈমান থাকবে ঐ বাতাস তাদের মৃত্যু ঘটাবে। ফলে কোন মু’মিন মুসলমান আর অবশিষ্ট থাকবে না। অবশিষ্ট থাকবে শুধু মন্দ ও খারাপ লোক তথা কাফের ও মুশরিক। আর তখনই সংঘটিত হবে মহাপ্রলয়-কিয়ামত। এ সম্পর্কে ইমাম মুসলিম আবূ হুরায়রা হতে মারফু সূত্রে বর্ণনা করেন, إن الله يبعث ريحا من اليمن الين من الحرير فلا تدع أحدا في قلبه مثقال ذرة من إيمان إلا قبضته

সহীহ মুসলিমেই দাজ্জাল, ঈসা (আঃ) ও ইয়াজুজ-মাজুজের ঘটনা সম্বলিত নাওয়াস ইবনু সাময়ানের দীর্ঘ হাদীসের শেষের দিকে এসেছে : إذ بعث الله ريحا طبية فتقبض روح كل مؤمن ومسلم ويبقى شرار الناس يتهارجون تهارج الحمر فعليهم تقوم الساعة এ ছাড়া সহীহ মুসলিম আরো বর্ণিত হয়েছে, لا تقوم الساعة على أحد يقول الله الله

এই হাদীসটি মুসনাদে আহমাদে এসেছে অন্য শব্দে। যেমন : على أحد يقول لا إله إلا الله

উপরোক্ত হাদীসগুলোকে আরো শক্তিশালী করে আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদের এই হাদীস لا تقوم الساعة إلا على شرار الناس সুতরাং لا হাদীসটি পবিত্র বাতাস অবতরণের সময় প্রত্যেক মু’মিন মুসলমানের মৃত্যু ঘটাবে। ফলে যখন খারাপ লোক ছাড়া কেউ অবশিষ্ট থাকবে না। তখনই হঠাৎ শুরু হবে কিয়ামত। (ফাতহুল বারী)

৯২/৬. অধ্যায়ঃ
প্রতিটি যুগের চেয়ে তার পরের যুগ আরও খারাপ হবে।

৭০৬৮
مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ الزُّبَيْرِ بْنِ عَدِيٍّ قَالَ أَتَيْنَا أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ فَشَكَوْنَا إِلَيْهِ مَا نَلْقَى مِنْ الْحَجَّاجِ فَقَالَ اصْبِرُوا فَإِنَّهُ لاَ يَأْتِي عَلَيْكُمْ زَمَانٌ إِلاَّ الَّذِي بَعْدَهُ شَرٌّ مِنْهُ حَتَّى تَلْقَوْا رَبَّكُمْ سَمِعْتُهُ مِنْ نَبِيِّكُمْ صلى الله عليه وسلم.

যুবায়র ইব্‌নু আদী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা আনাস্‌ ইব্‌নু মালিক (রাঃ)-এর নিকট গেলাম এবং হাজ্জাজের নিকট থেকে মানুষ যে জ্বালাতন ভোগ করছে সে সম্পর্কে অভিযোগ পেশ করলাম। তিনি বললেন, ধৈর্য ধর। কেননা, মহান প্রতিপালকের সাথে মিলিত হবার পূর্ব পর্যন্ত (অর্থাৎ মৃত্যুর পূর্বে) তোমাদের উপর এমন কোন যুগ অতীত হবে না, যার পরের যুগ তার চেয়েও বেশী খারাপ নয়। তিনি বলেন, এ কথাটি আমি তোমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শুনেছি। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৭৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৮৮)

৭০৬৯
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ ح و حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ حَدَّثَنِي أَخِي عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بِلاَلٍ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ أَبِي عَتِيقٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ هِنْدٍ بِنْتِ الْحَارِثِ الْفِرَاسِيَّةِ أَنَّ أُمَّ سَلَمَةَ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ اسْتَيْقَظَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةً فَزِعًا يَقُولُ سُبْحَانَ اللهِ مَاذَا أَنْزَلَ اللهُ مِنْ الْخَزَائِنِ وَمَاذَا أُنْزِلَ مِنْ الْفِتَنِ مَنْ يُوقِظُ صَوَاحِبَ الْحُجُرَاتِ يُرِيدُ أَزْوَاجَهُ لِكَيْ يُصَلِّينَ رُبَّ كَاسِيَةٍ فِي الدُّنْيَا عَارِيَةٍ فِي الْآخِرَةِ.

নাবী সহধর্মিণী উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন এক রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভীত অবস্থায় ঘুম থেকে জেগে বলতে লাগলেন, সুবহানাল্লাহ্‌, আল্লাহ্‌ তা‘আলা কতই না খাযানা অবতীর্ণ করেছেন আর কতই না ফিত্‌না অবতীর্ণ হয়েছে। কে আছে যে হুজরাবাসিনীদেরকে জাগিয়ে দেবে, যেন তারা সলাত আদায় করে। এ বলে তিনি তাঁর স্ত্রীদেরকে উদ্দেশ্য করেছিলেন। তিনি আরও বললেনঃ দুনিয়ার মধ্যে বহু বস্ত্র পরিহিতা পরকালে উলঙ্গ থাকবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৭৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৮৯)

৯২/৭. অধ্যায়ঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ যে ব্যক্তি আমাদের উপর অস্ত্র উত্তোলন করবে সে আমাদের দলভুক্ত নয়।

৭০৭০
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ حَمَلَ عَلَيْنَا السِّلاَحَ فَلَيْسَ مِنَّا.

আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক আমাদের উপর অস্ত্র তুলবে সে আমাদের দলভুক্ত নয়।[৬৮৭৪; মুসলিম ১/৪২, হাঃ ৯৮] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৭৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৯০)

৭০৭১
مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدٍ عَنْ أَبِي بُرْدَةَ عَنْ أَبِي مُوسَى عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ حَمَلَ عَلَيْنَا السِّلاَحَ فَلَيْسَ مِنَّا

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের উপর অস্ত্র উঠাবে সে আমাদের দলভুক্ত নয়। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৭৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৯১)

৭০৭২
مُحَمَّدٌ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ هَمَّامٍ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ يُشِيرُ أَحَدُكُمْ عَلَى أَخِيهِ بِالسِّلاَحِ فَإِنَّهُ لاَ يَدْرِي لَعَلَّ الشَّيْطَانَ يَنْزِعُ فِي يَدِهِ فَيَقَعُ فِي حُفْرَةٍ مِنْ النَّارِ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন তার অন্য কোন ভাইয়ের প্রতি অস্ত্র উঠিয়ে ইশারা না করে। কারণ সে জানে না হয়ত শয়তান তার হাতে ধাক্কা দিয়ে বসবে, ফলে (এক মুসলিমকে হত্যার কারণে) সে জাহান্নামের গর্তে পতিত হবে।[মুসলিম ৪৫/৩৫, হাঃ ২৬১৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৭৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৯২)

৭০৭৩
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ قُلْتُ لِعَمْرٍو يَا أَبَا مُحَمَّدٍ سَمِعْتَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ يَقُولُ مَرَّ رَجُلٌ بِسِهَامٍ فِي الْمَسْجِدِ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمْسِكْ بِنِصَالِهَا قَالَ نَعَمْ

সুফ্‌ইয়ান ইব্‌নু ‘উয়াইনাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আম্‌রকে জিজ্ঞেস করলাম, হে আবূ মুহাম্মাদ! আপনি কি জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌কে বলতে শুনেছেন যে, এক লোক মাসজিদে কতকগুলো তীর নিয়ে যাচ্ছিল, তখন রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ তীরের লৌহ ফলাগুলো মুষ্টিবদ্ধ করে রাখো। উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৮০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৯৩

৭০৭৪
أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ عَنْ جَابِرٍ أَنَّ رَجُلاً مَرَّ فِي الْمَسْجِدِ بِأَسْهُمٍ قَدْ أَبْدَى نُصُولَهَا فَأُمِرَ أَنْ يَأْخُذَ بِنُصُولِهَا لاَ يَخْدِشُ مُسْلِمًا.

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, এক লোক কতকগুলো তীর নিয়ে মাসজিদে এলো। সেগুলোর ফলা খোলা অবস্থায় ছিল। তখন তাকে নির্দেশ দেয়া হল, যেন সে তার তীরের ফলাগুলো ধরে রাখে, যাতে কোন মুসলিমের গায়ে আঘাত না লাগে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৮১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৯৪)

৭০৭৫
مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدٍ عَنْ أَبِي بُرْدَةَ عَنْ أَبِي مُوسَى عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا مَرَّ أَحَدُكُمْ فِي مَسْجِدِنَا أَوْ فِي سُوقِنَا وَمَعَهُ نَبْلٌ فَلْيُمْسِكْ عَلَى نِصَالِهَا أَوْ قَالَ فَلْيَقْبِضْ بِكَفِّهِ أَنْ يُصِيبَ أَحَدًا مِنْ الْمُسْلِمِينَ مِنْهَا شَيْءٌ.

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি তীর সাথে নিয়ে আমাদের মাসজিদে কিংবা বাজারে যায়, তাহলে সে যেন তীরের ফলাগুলো ধরে রাখে, কিংবা তিনি বলেছিলেনঃ তাহলে সে যেন তা মুষ্টিবদ্ধ করে রাখে, যাতে সে তীর কোন মুসলিমের গায়ে না লাগে। [৪৫২; মুসলিম ৪৫/৩৪, হাঃ ২৬১৫, আহমাদ ১৯৫৯৩] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৯৫)

৯২/৮. অধ্যায়ঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ আমার পরে তোমরা পরস্পরে হানাহানি করে কুফ্‌রীর দিকে ফিরে যেও না।

৭০৭৬
عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ حَدَّثَنِي أَبِي حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ حَدَّثَنَا شَقِيقٌ قَالَ قَالَ عَبْدُ اللهِ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوقٌ وَقِتَالُهُ كُفْرٌ.

আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেনঃ কোন মুসলিমকে গাল দেয়া ফাসিকী কাজ (জঘন্য পাপ) আর কোন মুসলিমকে হত্যা করা কুফ্‌রী। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৯৬)

৭০৭৭
حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ أَخْبَرَنِي وَاقِدُ بْنُ مُحَمَّدٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لاَ تَرْجِعُوا بَعْدِي كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ.

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে বলতে শুনেছেন যে, আমার পরে তোমরা পরস্পরে হানাহানি করে কুফরির দিকে ফিরে যেও না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৮৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৯৭)

৭০৭৮
مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى حَدَّثَنَا قُرَّةُ بْنُ خَالِدٍ حَدَّثَنَا ابْنُ سِيرِينَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرَةَ عَنْ أَبِي بَكْرَةَ وَعَنْ رَجُلٍ آخَرَ هُوَ أَفْضَلُ فِي نَفْسِي مِنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرَةَ عَنْ أَبِي بَكْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَطَبَ النَّاسَ فَقَالَ أَلاَ تَدْرُونَ أَيُّ يَوْمٍ هَذَا قَالُوا اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ قَالَ حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ سَيُسَمِّيهِ بِغَيْرِ اسْمِهِ فَقَالَ أَلَيْسَ بِيَوْمِ النَّحْرِ قُلْنَا بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ أَيُّ بَلَدٍ هَذَا أَلَيْسَتْ بِالْبَلْدَةِ الْحَرَامِ قُلْنَا بَلَى يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ وَأَعْرَاضَكُمْ وَأَبْشَارَكُمْ عَلَيْكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِي شَهْرِكُمْ هَذَا فِي بَلَدِكُمْ هَذَا أَلاَ هَلْ بَلَّغْتُ قُلْنَا نَعَمْ قَالَ اللهُمَّ اشْهَدْ فَلْيُبَلِّغْ الشَّاهِدُ الْغَائِبَ فَإِنَّهُ رُبَّ مُبَلِّغٍ يُبَلِّغُهُ لِمَنْ هُوَ أَوْعَى لَهُ فَكَانَ كَذَلِكَ قَالَ لاَ تَرْجِعُوا بَعْدِي كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ حُرِّقَ ابْنُ الْحَضْرَمِيِّ حِينَ حَرَّقَهُ جَارِيَةُ بْنُ قُدَامَةَ قَالَ أَشْرِفُوا عَلَى أَبِي بَكْرَةَ فَقَالُوا هَذَا أَبُو بَكْرَةَ يَرَاكَ قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ فَحَدَّثَتْنِي أُمِّي عَنْ أَبِي بَكْرَةَ أَنَّهُ قَالَ لَوْ دَخَلُوا عَلَيَّ مَا بَهَشْتُ بِقَصَبَةٍ.

আবূ বাকরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

(একবার) রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনতার উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন। তিনি (নবী সাঃ) বললেনঃ তোমরা কি জান না আজ কোন্ দিন? তারা বললেন, আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলই এ সম্পর্কে বেশি জানেন। (বর্ণনাকারী বলেন) এতে আমরা মনে করলাম হয়ত তিনি অন্য কোন নামে এ দিনটির নামকরণ করবেন। এরপর তিনি (নবী সাঃ) বললেনঃ এটি কি ইয়াওমন নাহর (কুরবানীর দিন) নয়? আমরা বললাম হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল। এরপর তিনি বললেনঃ এটি কোন্ নগর? এটি ‘হারাম নগর’ (সম্মানিত নগর) নয়? আমরা বললাম হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন নিঃসন্দেহ তোমাদের এ নগরে, এ মাসের এ দিনটি তোমাদের জন্য যেমন হারাম, তোমাদের (একের) রক্ত, সম্পদ, ইয্যত ও চামড়া অপরের জন্য তেমনি হারাম। শোন! আমি কি তোমাদের নিকট পৌঁছিয়েছি? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ্! তুমি সাক্ষী থাক। (তারপর তিনি বললেন) উপস্থিত ব্যক্তি যেন (আমার বাণী) অনুপস্থিতের নিকট পৌঁছিয়ে দেয়। কারণ অনেক প্রচারক এমন লোকের নিকট (আমার বাণী) পৌঁছাবে যারা তার চেয়ে বেশি সংরক্ষণকারী হবে।[১] আসলে ব্যাপারটি তাই। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমার পরে একে অন্যের গর্দান উড়িয়ে কুফ্রীর দিকে ফিরে যেয়ো না। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৮৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৯৮)

যে দিন জারিয়্যাহ্ ইবনু কুদামাহ কর্তৃক ‘আলা ইবনু হাযরামীকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়, সেদিন জারিয়্যাহ্ তার বাহিনীকে বলেছিল, আবূ বাকরাহর খবর নাও। তারা বলেছিল এই তো আবূ বকরাহ (রাঃ) আপনাকে দেখছেন। ‘আবদুর রহমান বলেন, আমার মা আমার কাছে বর্ণনা করেছেন আবূ বকরাহ (রাঃ) বলেছেন, (সেদিন) যদি তারা আমার গৃহে প্রবেশ করত, তাহলে আমি তাদেরকে একটি বাঁশের লাঠি নিক্ষেপ (প্রতিহত) করতাম না। আবূ ‘আবদুল্লাহ্ বলেন, হাদীসের ব্যবহৃত بَهَشْتُ শব্দের অর্থ رميت অর্থাৎ আমি নিক্ষেপ করেছি।


[১৫৬] আল্লাহর রসূলের কথা কতই না সত্য। পরবর্তী লোকেরা রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বাণী এতই সুন্দরভাবে সংরক্ষণ করেছিল যে তাদের নিকট থেকেই মুয়াত্তা ইমাম মালিক, মুসনাদে আহমাদ, বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী ইত্যাদি গ্রন্থের মাধ্যমে উম্মাতে মুসলিমার কাছে আল্লাহর রসূলের বাণীগুলো পৌঁছে গেছে।

৭০৭৯
أَحْمَدُ بْنُ إِشْكَابٍ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لاَ تَرْتَدُّوا بَعْدِي كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার পরে তোমরা একে অন্যের গর্দান উড়িয়ে কুফরির দিকে ফিরে যেও না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৮৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৫৯৯)

৭০৮০
سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ عَلِيِّ بْنِ مُدْرِكٍ سَمِعْتُ أَبَا زُرْعَةَ بْنَ عَمْرِو بْنِ جَرِيرٍ عَنْ جَدِّهِ جَرِيرٍ قَالَ قَالَ لِي رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ اسْتَنْصِتْ النَّاسَ ثُمَّ قَالَ لاَ تَرْجِعُوا بَعْدِي كُفَّارًا يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ

জারীর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন যে, বিদায় হাজ্জে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেনঃ লোকদেরকে চুপ থাকতে বল। তারপর তিনি বললেনঃ আমার পরে তোমরা একে অন্যের গর্দান উড়িয়ে কুফরির দিকে ফিরে যেও না। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৮৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬০০)

৯২/৯. অধ্যায়ঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ ফিতনা ছড়িয়ে পড়বে, তাতে দাঁড়ানো ব্যক্তির চেয়ে উপবিষ্ট ব্যক্তি উত্তম হবে।

৭০৮১
مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ح قَالَ إِبْرَاهِيمُ وَحَدَّثَنِي صَالِحُ بْنُ كَيْسَانَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم سَتَكُونُ فِتَنٌ الْقَاعِدُ فِيهَا خَيْرٌ مِنْ الْقَائِمِ وَالْقَائِمُ فِيهَا خَيْرٌ مِنْ الْمَاشِي وَالْمَاشِي فِيهَا خَيْرٌ مِنْ السَّاعِي مَنْ تَشَرَّفَ لَهَا تَسْتَشْرِفْهُ فَمَنْ وَجَدَ مِنْهَا مَلْجَأً أَوْ مَعَاذًا فَلْيَعُذْ بِهِ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শীঘ্রই অনেক ফিতনা দেখা দেবে। তখন উপবিষ্ট ব্যক্তি দাঁড়ানো ব্যক্তির চেয়ে উত্তম। দাঁড়ানো ব্যক্তি চলমান ব্যক্তির চেয়ে উত্তম। চলমান ব্যক্তি ধাবমান ব্যক্তির চেয়ে উত্তম। যে ব্যক্তি ফিতনার দিকে তাকাবে ফিতনা তাকে ঘিরে ধরবে। তখন কেউ যদি কোন আশ্রয়ের জায়গা কিংবা নিরাপদ জায়গা পায়, তাহলে সে যেন আত্মরক্ষা করে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৮৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬০১)

৭০৮২
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم سَتَكُونُ فِتَنٌ الْقَاعِدُ فِيهَا خَيْرٌ مِنْ الْقَائِمِ وَالْقَائِمُ خَيْرٌ مِنْ الْمَاشِي وَالْمَاشِي فِيهَا خَيْرٌ مِنْ السَّاعِي مَنْ تَشَرَّفَ لَهَا تَسْتَشْرِفْهُ فَمَنْ وَجَدَ مَلْجَأً أَوْ مَعَاذًا فَلْيَعُذْ بِهِ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শীঘ্রই ফিতনা দেখা দেবে। তখন উপবিষ্ট ব্যক্তি দাঁড়ানো ব্যক্তির চেয়ে ভাল (ফিতনামুক্ত) থাকবে, দাঁড়ানো ব্যক্তি চলমান ব্যক্তির চেয়ে ভাল থাকবে, চলমান ব্যক্তি ধাবমান ব্যক্তির চেয়ে ভাল থাকবে। যে ব্যক্তি সে ফিতনার দিকে তাকাবে, ফিতনা তাকে ঘিরে ধরবে। কাজেই তখন কেউ যদি কোথাও কোন নিরাপদ আশ্রয়স্থল কিংবা আত্মরক্ষার ঠিকানা পায়, তাহলে সে যেন সেখানে আশ্রয় নেয়। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৮৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬০২)

৯২/১০. অধ্যায়ঃ
তরবারী নিয়ে দু’জন মুসলমান পরস্পর মারমুখী হলে ।

৭০৮৩
عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ عَنْ رَجُلٍ لَمْ يُسَمِّهِ عَنْ الْحَسَنِ قَالَ خَرَجْتُ بِسِلاَحِي لَيَالِيَ الْفِتْنَةِ فَاسْتَقْبَلَنِي أَبُو بَكْرَةَ فَقَالَ أَيْنَ تُرِيدُ قُلْتُ أُرِيدُ نُصْرَةَ ابْنِ عَمِّ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا تَوَاجَهَ الْمُسْلِمَانِ بِسَيْفَيْهِمَا فَكِلاَهُمَا مِنْ أَهْلِ النَّارِ قِيلَ فَهَذَا الْقَاتِلُ فَمَا بَالُ الْمَقْتُولِ قَالَ إِنَّهُ أَرَادَ قَتْلَ صَاحِبِهِ قَالَ حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ فَذَكَرْتُ هَذَا الْحَدِيثَ لِأَيُّوبَ وَيُونُسَ بْنِ عُبَيْدٍ وَأَنَا أُرِيدُ أَنْ يُحَدِّثَانِي بِهِ فَقَالاَ إِنَّمَا رَوَى هَذَا الحَدِيثَ الْحَسَنُ عَنْ الأَحْنَفِ بْنِ قَيْسٍ عَنْ أَبِي بَكْرَةَ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ بِهَذَا وَقَالَ مُؤَمَّلٌ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ وَيُونُسُ وَهِشَامٌ وَمُعَلَّى بْنُ زِيَادٍ عَنْ الْحَسَنِ عَنْ الأَحْنَفِ عَنْ أَبِي بَكْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَرَوَاهُ مَعْمَرٌ عَنْ أَيُّوبَ وَرَوَاهُ بَكَّارُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي بَكْرَةَ وَقَالَ غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ رِبْعِيِّ بْنِ حِرَاشٍ عَنْ أَبِي بَكْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ يَرْفَعْهُ سُفْيَانُ عَنْ مَنْصُورٍ.

হাসান বসরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ফিতনার রাতে (অর্থাৎ জঙ্গে জামাল কিংবা জঙ্গে সিফ্ফীনে) আমি হাতিয়ার নিয়ে বের হলাম। হঠাৎ আবূ বকরাহ (রাঃ) আমার সামনে পড়লেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কোথায় যাচ্ছ? আমি বললাম, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর চাচাতো ভাইয়ের সাহায্যার্থে যাচ্ছি। তখন তিনি বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যদি দু’জন মুসলিম তলোয়ার নিয়ে পরস্পর সংঘর্ষের জন্য মুখোমুখী হয়, তাহলে উভয়েই জাহান্নামীদের মধ্যে গণ্য হবে। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, হত্যাকারী তো জাহান্নামী। কিন্তু নিহত ব্যক্তির কী অপরাধ? তিনি বললেন, সেও তার বিপক্ষকে হত্যা করার সংকল্প করেছিল।

বর্ণনাকারী হাম্মাদ ইব্‌নু যায়দ বলেন, আমি এ হাদীসটি আইউব ও ইউনুস ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্র কাছে বললাম। আমি চাচ্ছিলাম তাঁরা এ হাদীসটি আমাকে বর্ণনা করবেন। তাঁরা বললেন, এ হাদীসটি হাসান বসরী (রহঃ) আহ্নাফ ইব্‌নু কায়সের মাধ্যমে আবূ বকরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। (আ. প্র. ৬৫৯০, ই. ফা. ৬৬০৩)

আবূ বকরা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এ ব্যতীত মা‘মার আইউব থেকে এটি বর্ণনা করেছেন।

বাক্কার ইব্‌নু ‘আবদুল ‘আযীয নিজ পিতার মাধ্যমে আবূ বকরাহ (রাঃ) থেকে এটি বর্ণনা করেছেন এবং গুন্দার ও আবূ বকরা (রাঃ) – র বর্ণনায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে সুফ্ইয়ান সাওরী (রহঃ) মানসূর থেকে (পূর্বে উল্লেখিত সনদে হাদীসটি বর্ণনা করার সময়) মারফূ’ রূপে উল্লেখ করেননি।(আধুনিক প্রকাশনী- , ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬০৪)

৯২/১১. অধ্যায়ঃ
যখন জাম‘আত (মুসলিমরা সংঘবদ্ধ) থাকবে না তখন কী করতে হবে।

৭০৮৪
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا ابْنُ جَابِرٍ حَدَّثَنِي بُسْرُ بْنُ عُبَيْدِ اللهِ الْحَضْرَمِيُّ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا إِدْرِيسَ الْخَوْلاَنِيَّ أَنَّهُ سَمِعَ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ يَقُولُ كَانَ النَّاسُ يَسْأَلُونَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ الْخَيْرِ وَكُنْتُ أَسْأَلُهُ عَنْ الشَّرِّ مَخَافَةَ أَنْ يُدْرِكَنِي فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّا كُنَّا فِي جَاهِلِيَّةٍ وَشَرٍّ فَجَاءَنَا اللهُ بِهَذَا الْخَيْرِ فَهَلْ بَعْدَ هَذَا الْخَيْرِ مِنْ شَرٍّ قَالَ نَعَمْ قُلْتُ وَهَلْ بَعْدَ ذَلِكَ الشَّرِّ مِنْ خَيْرٍ قَالَ نَعَمْ وَفِيهِ دَخَنٌ قُلْتُ وَمَا دَخَنُهُ قَالَ قَوْمٌ يَهْدُونَ بِغَيْرِ هَدْيِي تَعْرِفُ مِنْهُمْ وَتُنْكِرُ قُلْتُ فَهَلْ بَعْدَ ذَلِكَ الْخَيْرِ مِنْ شَرٍّ قَالَ نَعَمْ دُعَاةٌ عَلَى أَبْوَابِ جَهَنَّمَ مَنْ أَجَابَهُمْ إِلَيْهَا قَذَفُوهُ فِيهَا قُلْتُ يَا رَسُولَ اللهِ صِفْهُمْ لَنَا قَالَ هُمْ مِنْ جِلْدَتِنَا وَيَتَكَلَّمُونَ بِأَلْسِنَتِنَا قُلْتُ فَمَا تَأْمُرُنِي إِنْ أَدْرَكَنِي ذَلِكَ قَالَ تَلْزَمُ جَمَاعَةَ الْمُسْلِمِينَ وَإِمَامَهُمْ قُلْتُ فَإِنْ لَمْ يَكُنْ لَهُمْ جَمَاعَةٌ وَلاَ إِمَامٌ قَالَ فَاعْتَزِلْ تِلْكَ الْفِرَقَ كُلَّهَا وَلَوْ أَنْ تَعَضَّ بِأَصْلِ شَجَرَةٍ حَتَّى يُدْرِكَكَ الْمَوْتُ وَأَنْتَ عَلَى ذَلِكَ.

হুযাইফাহ ইব্‌নু ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, লোকেরা রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে কল্যাণের বিষয়াবলী জিজ্ঞেস করত। কিন্তু আমি তাঁকে অকল্যাণের বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতাম এ ভয়ে যে, অকল্যাণ আমাকে পেয়ে না বসে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমরা তো জাহিলীয়্যাত ও অকল্যাণের মাঝে ছিলাম। এরপর আল্লাহ্ তা‘আলা আমাদেরকে এ কল্যাণের মধ্যে নিয়ে আসলেন। এ কল্যাণের পর আবারও কি অকল্যাণ আসবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তবে এর মধ্যে কিছুটা ধূম্রজাল থাকবে। আমি প্রশ্ন করলাম, এর ধূম্রজাল কিরূপ? তিনি বললেনঃ এক জামা‘আত আমার তরীকা ছেড়ে অন্য পথ ধরবে। তাদের থেকে ভাল কাজও দেখবে এবং মন্দ কাজও দেখবে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, সে কল্যাণের পর কি আবার অকল্যাণ আসবে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারী এক সম্প্রদায় হবে। যে ব্যক্তি তাদের আহ্বানে সাড়া দেবে, তাকে তারা জাহান্নামে নিক্ষেপ করে ছাড়বে। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! তাদের কিছু স্বভাবের কথা আমাদের বর্ণনা করুন। তিনি বললেনঃ তারা আমাদের লোকই এবং আমাদের ভাষায়ই কথা বলবে। আমি বললাম, যদি এমন অবস্থা আমাকে পেয়ে বসে, তাহলে কী করতে হুকুম দেন? তিনি বললেনঃ মুসলিমদের জামা‘আত ও ইমামকে আঁকড়ে থাকবে। আমি বললাম, যদি তখন মুসলিমদের কোন (সংঘবদ্ধ) জামা‘আত ও ইমাম না থাকে? তিনি বললেনঃ তখন সকল দলমত ত্যাগ করে সম্ভব হলে কোন গাছের শিকড় কামড়িয়ে পড়ে থাকবে, যতক্ষণ না সে অবস্থায় তোমার মৃত্যু উপস্থিত হয়।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬০৫)

৯২/১২. অধ্যায়ঃ
যে ফিত্নাকারী ও জালিমদের দল ভারী করাকে অপছন্দ করে।

৭০৮৫
عَبْدُ اللهِ بْنُ يَزِيدَ حَدَّثَنَا حَيْوَةُ وَغَيْرُهُ قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو الأَسْوَدِ وَقَالَ اللَّيْثُ عَنْ أَبِي الأَسْوَدِ قَالَ قُطِعَ عَلَى أَهْلِ الْمَدِينَةِ بَعْثٌ فَاكْتُتِبْتُ فِيهِ فَلَقِيتُ عِكْرِمَةَ فَأَخْبَرْتُهُ فَنَهَانِي أَشَدَّ النَّهْيِ ثُمَّ قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ أَنَّ أُنَاسًا مِنْ الْمُسْلِمِينَ كَانُوا مَعَ الْمُشْرِكِينَ يُكَثِّرُونَ سَوَادَ الْمُشْرِكِينَ عَلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَيَأْتِي السَّهْمُ فَيُرْمَى فَيُصِيبُ أَحَدَهُمْ فَيَقْتُلُهُ أَوْ يَضْرِبُهُ فَيَقْتُلُهُ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {إِنَّ الَّذِينَ تَوَفَّاهُمْ الْمَلآئِكَةُ ظَالِمِيْ أَنْفُسِهِمْ}

আবুল আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, তিনি বলেন, একবার মাদীনাহ্‌বাসীদের উপর একটি যোদ্ধাদল তৈরির সিদ্ধান্ত হল। আমার নামও সে দলের অন্তর্ভুক্ত করা হল। এরপর ইক্রামাহ (রহঃ)-এর সঙ্গে দেখা হলে আমি তাকে এ খবর দিলাম। তিনি আমাকে কঠোরভাবে নিষেধ করলেন এবং বললেন, আমাকে ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) জানিয়েছেন যে, মুসলিমদের কতক লোক মুশরিকদের সঙ্গে ছিল। এতে তারা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুকাবিলায় মুশরিকদের দল ভারী করছিল। তখন কোন তীর যা নিক্ষিপ্ত হত এবং তাদের কাউকে আঘাত করে এটি তাকে হত্যা করত। অথবা কেউ তাকে তলোয়ার দিয়ে আঘাতে হত্যা করত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা‘আলা আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ যারা নিজেদের আত্মার উপর যুল্ম করেছিল এমন লোকেদের প্রাণ হরণের সময় ফেরেশতারা তাদেরকে জিজ্ঞেস করে…… (সূরাহ আন্-নিসা ৪/৯৭)।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৯২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬০৬)

৯২/১৩. অধ্যায়ঃ
যখন মানুষের আবর্জনা (নিকৃষ্ট মানুষেরা) অবশিষ্ট থাকবে ।

৭০৮৬
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ حَدَّثَنَا حُذَيْفَةُ قَالَ حَدَّثَنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَدِيثَيْنِ رَأَيْتُ أَحَدَهُمَا وَأَنَا أَنْتَظِرُ الآخَرَ حَدَّثَنَا أَنَّ الأَمَانَةَ نَزَلَتْ فِي جَذْرِ قُلُوبِ الرِّجَالِ ثُمَّ عَلِمُوا مِنْ الْقُرْآنِ ثُمَّ عَلِمُوا مِنْ السُّنَّةِ وَحَدَّثَنَا عَنْ رَفْعِهَا قَالَ يَنَامُ الرَّجُلُ النَّوْمَةَ فَتُقْبَضُ الأَمَانَةُ مِنْ قَلْبِهِ فَيَظَلُّ أَثَرُهَا مِثْلَ أَثَرِ الْوَكْتِ ثُمَّ يَنَامُ النَّوْمَةَ فَتُقْبَضُ فَيَبْقَى فِيهَا أَثَرُهَا مِثْلَ أَثَرِ الْمَجْلِ كَجَمْرٍ دَحْرَجْتَهُ عَلَى رِجْلِكَ فَنَفِطَ فَتَرَاهُ مُنْتَبِرًا وَلَيْسَ فِيهِ شَيْءٌ وَيُصْبِحُ النَّاسُ يَتَبَايَعُونَ فَلاَ يَكَادُ أَحَدٌ يُؤَدِّي الأَمَانَةَ فَيُقَالُ إِنَّ فِي بَنِي فُلاَنٍ رَجُلاً أَمِينًا وَيُقَالُ لِلرَّجُلِ مَا أَعْقَلَهُ وَمَا أَظْرَفَهُ وَمَا أَجْلَدَهُ وَمَا فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةِ خَرْدَلٍ مِنْ إِيمَانٍ وَلَقَدْ أَتَى عَلَيَّ زَمَانٌ وَلاَ أُبَالِي أَيُّكُمْ بَايَعْتُ لَئِنْ كَانَ مُسْلِمًا رَدَّهُ عَلَيَّ الإِسْلاَمُ وَإِنْ كَانَ نَصْرَانِيًّا رَدَّهُ عَلَيَّ سَاعِيهِ وَأَمَّا الْيَوْمَ فَمَا كُنْتُ أُبَايِعُ إِلاَّ فُلاَنًا وَفُلاَنًا.

হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের দু’টি হাদীস বর্ণনা করেছিলেন, যার একটি আমি দেখেছি (সত্যে পরিণত হয়েছে) আর অপরটির অপেক্ষায় আছি। তিনি আমাদের বলেনঃ আমানাত মানুষের অন্তর্মূলে প্রবিষ্ট হয়। এরপর তারা কুরআন শিখে, তারপর তারা সুন্নাহ্র জ্ঞান অর্জন করে। তিনি আমাদের আমানাত বিলুপ্তি সম্পর্কেও বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেনঃ মানুষ এক সময় ঘুমাবে। তার অন্তর থেকে আমানাত উঠিয়ে নেয়া হবে। তখন একটি বিন্দুর মত চিহ্ন অবশিষ্ট থাকবে। এরপর সে আবার ঘুমাবে। তারপর আবার তুলে নেয়া হবে, তখন ফোসকার মত তার চিহ্ন অবশিষ্ট থাকবে। যেমন একটা জ্বলন্ত অঙ্গারকে যদি তুমি পায়ের উপর রেখে দাও এতে পায়ে ফোস্কা পড়ে, তখন তুমি সেটাকে ফোলা দেখবে। অথচ তার মধ্যে কিছুই নেই। (এ সময়) মানুষ বেচাকেনা করবে বটে কিন্তু কেউ আমানাত আদায় করবে না। তখন বলা হবে, অমুক গোত্রে একজন আমানাতদার ব্যক্তি আছেন। কোন কোন লোক সম্পর্কে বলা হবে যে, লোকটি কতই না বুদ্ধিমান, কতই না বিচক্ষণ, কতই না বীর, অথচ তার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমান নেই। [এরপর হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন] আমার উপর দিয়ে এমন একটি যুগ অতিবাহিত হয়েছে তখন আমি তোমাদের কার সঙ্গে লেনদেন করছি এ সম্পর্কে মোটেও চিন্তা-ভাবনা করতান না। কেননা, সে যদি মুসলিম হয় তাহলে তার দীনই (হক আদায়ের জন্য) তাকে আমার কাছে ফিরিয়ে আনবে। আর যদি সে খ্রিস্টান হয়, তাহলে তার অভিভাবকরাই (হক আদায়ের জন্য) তাকে আমার কাছে ফিরে আসতে বাধ্য করবে। কিন্তু বর্তমানে আমি অমুক অমুককে ব্যতীত কারো সঙ্গে বেচাকেনা করি না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৯৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬০৭)

৯২/১৪. অধ্যায়ঃ
ফিতনার সময় বেদুঈন সুলভ জীবন কাটানো বাঞ্ছনীয় ।

৭০৮৭
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا حَاتِمٌ عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي عُبَيْدٍ عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ أَنَّهُ دَخَلَ عَلَى الْحَجَّاجُ فَقَالَ يَا ابْنَ الأَكْوَعِ ارْتَدَدْتَ عَلَى عَقِبَيْكَ تَعَرَّبْتَ قَالَ لاَ وَلَكِنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَذِنَ لِي فِي الْبَدْوِ وَعَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي عُبَيْدٍ قَالَ لَمَّا قُتِلَ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ خَرَجَ سَلَمَةُ بْنُ الأَكْوَعِ إِلَى الرَّبَذَةِ وَتَزَوَّجَ هُنَاكَ امْرَأَةً وَوَلَدَتْ لَهُ أَوْلاَدًا فَلَمْ يَزَلْ بِهَا حَتَّى قَبْلَ أَنْ يَمُوتَ بِلَيَالٍ فَنَزَلَ الْمَدِينَةَ.

সালামাহ ইব্‌নু আকওয়া’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, একবার হাজ্জাজ আমার কাছে এলেন। তখন সে তাঁকে বলল, হে ইব্‌নু আকওয়া’! আপনি আগের অবস্থায় ফিরে গেলেন না কি যে বেদুঈনের মত জীবন কাটাতে শুরু করেছেন? তিনি বললেন, না। বরং রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বেদুঈন সুলভ জীবন যাপনের অনুমতি প্রদান করেছেন।

ইয়াযীদ ইব্‌নু আবূ ‘উবাইদুল্লাহ্ বর্ণনা করেন যে, যখন ‘উসমান ইব্‌নু আফ্‌ফান (রাঃ) নিহত হলেন, তখন সালামাহ ইব্‌নু আকওয়া’ (রাঃ) ‘রাবাযা’য় চলে যান এবং সেখানে তিনি এক মহিলাকে বিয়ে করেন। সে মহিলার ঘরে তাঁর কয়েকজন সন্তান জন্মে। মৃত্যুর কয়েক দিন আগে তিনি মদিনায় আসেন। এর আগ পর্যন্ত তিনি সেখানেই বসবাসরত ছিলেন। [মুসলিম ৩৩/১৯, হাঃ ১৮৬২] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৯৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬০৮)

৭০৮৮
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي صَعْصَعَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ أَنَّهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُوشِكُ أَنْ يَكُونَ خَيْرَ مَالِ الْمُسْلِمِ غَنَمٌ يَتْبَعُ بِهَا شَعَفَ الْجِبَالِ وَمَوَاقِعَ الْقَطْرِ يَفِرُّ بِدِينِهِ مِنْ الْفِتَنِ.

আবূ সা’ঈদ খুদ্‌রী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ শীঘ্রই এমন এক সময় আসবে যখন মুসলিমদের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট সম্পদ হবে ছাগল। ফিত্‌না থেকে দ্বীন রক্ষার্থে পলায়নের জন্য তারা এগুলো নিয়ে পর্বতের চূড়ায় এবং বৃষ্টিপাতের জায়গাগুলোতে আশ্রয় নেবে। [১৫৭](আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬০৯)


[১৫৭] মুসলমান সমাজে যখন হত্যা, হানাহানি, বিবাদ, বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়বে, তখন ঈমান নিয়ে বাঁচার জন্য নিভৃত অবস্থানই হবে উওম পন্থা। শিরকও একটি অতি বড় ফিতনা যা বিভিন্ন পন্থায় আমাদের বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে।

৯২/১৫. অধ্যায়ঃ
ফিত্‌না হতে আশ্রয় প্রার্থনা।

৭০৮৯
حَدَّثَنَا مُعَاذُ بْنُ فَضَالَةَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ سَأَلُوا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أَحْفَوْهُ بِالْمَسْأَلَةِ، فَصَعِدَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ يَوْمٍ الْمِنْبَرَ فَقَالَ ‏”‏ لاَ تَسْأَلُونِي عَنْ شَىْءٍ إِلاَّ بَيَّنْتُ لَكُمْ ‏”‏‏.‏ فَجَعَلْتُ أَنْظُرُ يَمِينًا وَشِمَالاً، فَإِذَا كُلُّ رَجُلٍ رَأْسُهُ فِي ثَوْبِهِ يَبْكِي، فَأَنْشَأَ رَجُلٌ كَانَ إِذَا لاَحَى يُدْعَى إِلَى غَيْرِ أَبِيهِ فَقَالَ يَا نَبِيَّ اللَّهِ مَنْ أَبِي فَقَالَ ‏”‏ أَبُوكَ حُذَافَةُ ‏”‏‏.‏ ثُمَّ أَنْشَأَ عُمَرُ فَقَالَ رَضِينَا بِاللَّهِ رَبًّا، وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا، وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولاً، نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ سُوءِ الْفِتَنِ‏.‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَا رَأَيْتُ فِي الْخَيْرِ وَالشَّرِّ كَالْيَوْمِ قَطُّ، إِنَّهُ صُوِّرَتْ لِي الْجَنَّةُ وَالنَّارُ حَتَّى رَأَيْتُهُمَا دُونَ الْحَائِطِ ‏”‏‏.‏ قَالَ قَتَادَةُ يُذْكَرُ هَذَا الْحَدِيثُ عِنْدَ هَذِهِ الآيَةِ ‏{‏يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَسْأَلُوا عَنْ أَشْيَاءَ إِنْ تُبْدَ لَكُمْ تَسُؤْكُمْ‏}‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, তিনি বলেছেন, লোকেরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে প্রশ্ন করত। এমন কি প্রশ্ন করতে করতে তারা তাঁকে বিরক্ত করে তুলত। একদিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারে আরোহণ করলেন এবং বললেনঃ তোমরা (আজ) আমাকে যে প্রশ্নই করবে, আমি তারই উওর দিব। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি ডানে বামে তাকাচ্ছিলাম। দেখতে পেলাম প্রত্যেকেই আপন বস্ত্রে মাথা গুঁজে কাঁদছে। তখন এমন এক লোক পারস্পরিক ঝগড়ার সময় যাকে অন্য এক লোকের (যে আসলে তার পিতা নয়) সন্তান বলে সম্বোধন করা হত উঠে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর নাবী! আমার পিতা কে? তিনি বললেনঃ হুযাফা তোমার পিতা। এরপর ‘উমর (রাঃ) সম্মুখে এলেন আর বললেন, আমরা রব হিসেবে আল্লাহকে, দ্বীন হিসেবে ইসলামকে এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে রসূল হিসেবে মেনে পরিতুষ্ট। ফিতনার অনিষ্ট থেকে আমরা আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আজকের মত এত উওম বস্তু এবং এত খারাপ বস্তু আমি ইতিপূর্বে কখনো দেখেনি। আমার সামনে জান্নাত ও জাহান্নামের ছবি পেশ করা হয়েছিল। এমনকি আমি সে দু’টোকে এ দেয়ালের পাশেই দেখতে পাচ্ছিলাম। ক্বাতাদাহ বলেন, উপরে বর্ণিত হাদীসটি নিম্নোক্ত আয়াত প্রসঙ্গে বলে উল্লেখ করা হয়। ইরশাদ হলোঃ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা এমন বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা তোমাদের কাছে প্রকাশ করা হলে তা তোমাদেরকে কষ্ট দিবে” – (সূরাহ আল-মায়িদাহ ৫/১০১)।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৯৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬১০)

৭০৯০
وَقَالَ عَبَّاسٌ النَّرْسِيُّ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ أَنَّ أَنَسًا حَدَّثَهُمْ أَنَّ نَبِيَّ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا وَقَالَ كُلُّ رَجُلٍ لاَفًّا رَأْسَهُ فِي ثَوْبِهৃ يَبْكِي وَقَالَ عَائِذًا بِاللهِ مِنْ سُوءِ الْفِتَنِ أَوْ قَالَ أَعُوذُ بِاللهِ مِنْ سَوْأَى الْفِتَنِ.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আনাস (রাঃ) থেকে পূর্বোক্ত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে এ সূত্রে আনাস (রাঃ) كُلُّ رَجُلٍ رَأْسَهُ فِي ثَوْبِه يَبْكِي এর স্থলে كُلُّ رَجُلٍ لاَفًّا رَأْسَهُ فِي ثَوْبِه يَبْكِي (প্রত্যেক ব্যক্তি তার মাথায় কাপড় দিয়ে অচ্ছাদিত করে কাঁদছিল) বলে উল্লেখ করেছেন। এবং تَعَوَّذُ بِاللهِ مِنْ سُوءِ الْفِتَنِ এর স্থলে عَائِذًا بِاللهِ مِنْ سُوءِ الْفِتَنِ অথবা أَعُوذُ بِاللهِ مِنْ سَوْأَى الْفِتَن উল্লেখ করেছেন। [৯৩] (আধুনিক প্রকাশনী- নাই, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬১০)

৭০৯১
و قَالَ لِي خَلِيفَةُ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ وَمُعْتَمِرٌ عَنْ أَبِيهِ عَنْ قَتَادَةَ أَنَّ أَنَسًا حَدَّثَهُمْ عَنْ النَّبِيِّ بِهَذَا وَقَالَ عَائِذًا بِاللهِ مِنْ شَرِّ الْفِتَنِ.

ইমাম বুখারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

খালীফা (রহ.)….আনাস (রাঃ)-এর বর্ণনায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে পূর্বোক্ত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এ সূত্রে তিনি عَائِذًا بِاللهِ مِنْ شَرِّ الْفِتَنِ বলেছেন। [৯৩] (আধুনিক প্রকাশনী- নাই, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬১০)

৯২/১৬. অধ্যায়ঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণী ফিতনা পূর্ব দিক থেকে শুরু হবে ।

৭০৯২
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَامَ إِلَى جَنْبِ الْمِنْبَرِ فَقَالَ الْفِتْنَةُ هَا هُنَا الْفِتْنَةُ هَا هُنَا مِنْ حَيْثُ يَطْلُعُ قَرْنُ الشَّيْطَانِ أَوْ قَالَ قَرْنُ الشَّمْسِ.

সালিমের পিতা ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু্ ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

সালিমের পিতা ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু্ ‘উমার (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, একবার তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছেনঃ ফিত্‌না এ দিকে, ফিত্‌না সে দিকে যেখান থেকে শয়তানের শিং উদিত হবে। কিংবা বলেছিলেনঃ সূর্যের মাথা উদিত হয়। [৩১০৪; মুসলিম ৫২/১৬, হাঃ ২৯০৫, আহমাদ ৪৯৮০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬১১)

৭০৯৩
قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا لَيْثٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ مُسْتَقْبِلٌ الْمَشْرِقَ يَقُولُ أَلاَ إِنَّ الْفِتْنَةَ هَا هُنَا مِنْ حَيْثُ يَطْلُعُ قَرْنُ الشَّيْطَانِ.

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে, তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে পূর্ব দিকে মুখ করে বলতে শুনেছেন, সাবধান! ফিত্‌না সে দিকে যে দিক থেকে শয়তানের শিং উদিত হয়। [৩১০৪; মুসলিম ৫২/১৬, হাঃ ২৯০৫, আহমাদ ৫৪১০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৯৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬১২)

৭০৯৪
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا أَزْهَرُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ ابْنِ عَوْنٍ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ ذَكَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم اللهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي شَأْمِنَا اللهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي يَمَنِنَا قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ وَفِي نَجْدِنَا قَالَ اللهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي شَأْمِنَا اللهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي يَمَنِنَا قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ وَفِي نَجْدِنَا فَأَظُنُّهُ قَالَ فِي الثَّالِثَةِ هُنَاكَ الزَّلاَزِلُ وَالْفِتَنُ وَبِهَا يَطْلُعُ قَرْنُ الشَّيْطَانِ.

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আলোচনা করছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেনঃ হে আল্লাহ! আমাদের জন্য আমাদের সিরিয়ায় বারকাত দাও। হে আল্লাহ! আমাদের জন্য আমাদের ইয়ামানে বারকাত দাও। লোকেরা বলল আমাদের নজদেও। তিনি বললেন হে আল্লাহ! আমাদের জন্য আমাদের সিরিয়ায় বরকত দাও। হে আল্লাহ! আমাদের জন্য বরকত দাও আমাদের ইয়ামানে। লোকেরা বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমাদের নজদেও। (বর্ণনাকারী বলেন) আমার মনে হয়, তৃতীয়বারে তিনি বললেনঃ সেখানে তো কেবল ভূমিকম্প আর ফিত্‌না। আর তথা হতে শয়তানের শিং উদিত হবে। [১৫৮](আধুনিক প্রকাশনী- ৬৫৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬১৩)


[১৫৮] “পূর্ব প্রান্ত হতে ফিতনা প্রকাশ পাবে” রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এই কথা বলার কারণ ছিল সেই সময় মাদীনার পূর্বাঞ্চলের অধিবাসীরা ছিল কাফির গোষ্ঠী। রসূল (সাঃ)-এর এই কথা হুবহু বাস্তবায়িত হয়েছিল। কারণ প্রথম ফিতনা আরম্ভ হয়েছিল পূর্ব প্রান্ত হতেই। আর ঐ ফিতনাই মুসলমানদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টির অন্যতম কারণ ছিল। তেমনি ভাবে ঐ প্রান্ত হতেই বিদ’আত উৎপন্ন হয়ছিল। ইমাম খাওাবী বলেনঃ নাজ্‌দ হচ্ছে পূর্ব দিকে। মদীনাহয় অবস্থানকারী ব্যক্তির নিকট নাজদের অবস্থান হচ্ছে ইরাক ও তার আশপাশের মরু অঞ্চল। আর তা মদীনাবাসীর পূর্ব প্রান্ত। নাজদের মূল সংজ্ঞা হল, যমীন থেকে প্রত্যেক উঁচু জায়গাকে নাজ্‌দ বলে। অর্থাৎ উচ্চভূমি যা নিম্নভূমির বিপরীত। সম্পূর্ণ তিহামা অঞ্চল নিম্নভূমির অর্ন্তগত। আর মক্কা এই তিহামা অঞ্চলেই অবস্থিত। সুতরাং যারা বলে নাজদ ইরাকের দিকে তারা “নাজদ” নামক নিদ্দিষ্ট জায়গা ধারণা করেছেন। যেমন, দাউদী। কিন্তু তা আদৌ ঠিক নয়। বরং আরবী ভাষায় প্রত্যেক উচ্চভূমি যা নিম্নভূমির বিপরীত তাকেই নাজদ নামে অভিহিত করা হয়। আর নিম্নভূমিকে গাওর নামে অভিহিত করা হয়। (ফাতহুল বারী)

৭০৯৫
إِسْحَاقُ بْنُ شَاهِينَ الْوَاسِطِيُّ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ بَيَانٍ عَنْ وَبَرَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ فَرَجَوْنَا أَنْ يُحَدِّثَنَا حَدِيثًا حَسَنًا قَالَ فَبَادَرَنَا إِلَيْهِ رَجُلٌ فَقَالَ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ حَدِّثْنَا عَنْ الْقِتَالِ فِي الْفِتْنَةِ وَاللهُ يَقُولُ وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ فَقَالَ هَلْ تَدْرِي مَا الْفِتْنَةُ ثَكِلَتْكَ أُمُّكَ إِنَّمَا كَانَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم يُقَاتِلُ الْمُشْرِكِينَ وَكَانَ الدُّخُولُ فِي دِينِهِمْ فِتْنَةً وَلَيْسَ كَقِتَالِكُمْ عَلَى الْمُلْكِ.

সা’ঈদ ইব্‌নু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন একবার ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) আমাদের নিকট আসলেন। আমরা আশা করেছিলাম যে, তিনি আমাদের একটি উওম হাদীস বর্ণনা করবেন। এক ব্যক্তি তাঁর দিকে আমাদের চেয়ে এগিয়ে বলল, হে আবূ ‘আবদুর রহমান! ফিত্‌নার সময় যুদ্ধ করা সম্পর্কে আমাদের কিছু বলুন। কেননা, আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ “তাদের সঙ্গে যুদ্ধ কর, যতক্ষণ না ফিত্‌নার অবসান ঘটে” – (সূরাহ আল-বাক্কারাহ ২/১৯৩)। তখন তিনি বললেন, তোমার মা তোমার জন্য বিলাপ করুক। ফিত্‌না কাকে বলে জান কি? মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তো যুদ্ধ করতেন মুশরিকদের বিরুদ্ধে। কেননা, তাদের শিরকের মধ্যে থাকাটাই আসলে ফিত্‌না। কিন্তু তা তোমাদের রাজ্য নিয়ে লড়াইয়ের মত ছিল না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৬০০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬১৪)

৯২/১৭. অধ্যায়ঃ
সমুদ্রের ঢেউয়ের মত ফিত্‌নার ঢেউ হইবে ।

ইব্‌নু ‘উয়াইনাহ (রহঃ) খালফ্‌ ইব্‌নু হাওশাব (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, পূর্ববর্তী লোকেরা নিম্নোক্ত কবিতার দ্বারা ফিত্‌নার উপমা দিতে পছন্দ করতেন।

যুদ্ধের প্রথম অবস্থা যুবতীর মত,

যে তার রুপ-রং নিয়ে অপরিণামদর্শীর উদ্দেশ্যে ছুটাছুটি করে।

কিন্তু যখন যুদ্ধের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে

এবং তার ফুল্‌কিগুলো হয় পূর্ণ যৌবণা, তখন সে বৃদ্ধা বিধবার মত পালিয়ে যায়,

যার চুল বেশিরভাগই সাদা হয়ে গেছে, রঙ ফিকে হয়ে বদলে গেছে,

যার ঘ্রা্ণ নিতে ও চুমু খেতে ঘৃণা লাগে।

৭০৯৬
عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ حَدَّثَنَا أَبِي حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ حَدَّثَنَا شَقِيقٌ سَمِعْتُ حُذَيْفَةَ يَقُولُ بَيْنَا نَحْنُ جُلُوسٌ عِنْدَ عُمَرَ إِذْ قَالَ أَيُّكُمْ يَحْفَظُ قَوْلَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الْفِتْنَةِ قَالَ فِتْنَةُ الرَّجُلِ فِي أَهْلِهِ وَمَالِهِ وَوَلَدِهِ وَجَارِهِ تُكَفِّرُهَا الصَّلاَةُ وَالصَّدَقَةُ وَالأَمْرُ بِالْمَعْرُوفِ وَالنَّهْيُ عَنْ الْمُنْكَرِ قَالَ لَيْسَ عَنْ هَذَا أَسْأَلُكَ وَلَكِنْ الَّتِي تَمُوجُ كَمَوْجِ الْبَحْرِ قَالَ لَيْسَ عَلَيْكَ مِنْهَا بَأْسٌ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ إِنَّ بَيْنَكَ وَبَيْنَهَا بَابًا مُغْلَقًا قَالَ عُمَرُ أَيُكْسَرُ الْبَابُ أَمْ يُفْتَحُ قَالَ بَلْ يُكْسَرُ قَالَ عُمَرُ إِذًا لاَ يُغْلَقَ أَبَدًا قُلْتُ أَجَلْ قُلْنَا لِحُذَيْفَةَ أَكَانَ عُمَرُ يَعْلَمُ الْبَابَ قَالَ نَعَمْ كَمَا يَعْلَمُ أَنَّ دُونَ غَدٍ لَيْلَةً وَذَلِكَ أَنِّي حَدَّثْتُهُ حَدِيثًا لَيْسَ بِالأَغَالِيطِ فَهِبْنَا أَنْ نَسْأَلَهُ مَنْ الْبَابُ فَأَمَرْنَا مَسْرُوقًا فَسَأَلَهُ فَقَالَ مَنْ الْبَابُ قَالَ عُمَرُ.

হুযাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আমরা উমার (রাঃ)-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। হঠাৎ তিনি বললেন, ফিত্‌না সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বক্তব্য তোমাদের মধ্যে কে স্মরণ রেখেছে? হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, (নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন) মানুষ নিজের পরিবার, ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি ও প্রতিবেশীর ব্যাপারে যে ফিত্‌নায় পতিত হয়, সালাত, সদাকাহ, সৎকাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ তার সে পাপকে মুছে ফেলে। তিনি বলেন, আমি তোমাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিনি, এবং সে ফিত্‌নার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছি যা সাগর লহরীর মত ঢেউ খেলবে। হুযাইফাহ (রাঃ) বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! সে ফিত্‌নায় আপনার কোন অসুবিধা হবে না। কেননা, সে ফিত্‌না ও আপনার মাঝে একটি বন্ধ দরজা আছে। উমার (রাঃ) বললেন, দরজাটি কি ভেঙ্গে ফেলা হবে, না খুলে দেওয়া হবে? তিনি বললেন, না বরং ভেঙ্গে ফেলা হবে। ‘উমার (রাঃ) বললেন, তা হলে তো সেটা আর কখনো বন্ধ করা যাবে না। (হুযাইফাহ বলেন) আমি বললাম হ্যাঁ। (শাকীক বলেন) আমরা হুযাইফাহ (রাঃ) – কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘উমার (রাঃ) কি দরজাটি সম্পর্কে জানতেন? উওরে তিনি বললেন, হ্যাঁ। যেমন আমি সুনিশ্চিতভাবে জানি যে আগামী দিনের পর রাত আসবে। কেননা আমি তাকে এমন হাদীস বর্ণনা করেছিলাম যা ত্রুটিমুক্ত। (শাকীক বলেন) দরজাটি কে সম্পর্কে আমরা হুযাইফাহ (রাঃ) – কে জিজ্ঞেস করতে আমরা ভয় পাচ্ছিলাম, তাই আমরা মাসরুককে জিজ্ঞেস করতে বললাম। তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, দরজাটি কে? উওরে তিনি বললেন, ‘উমার (রাঃ) (নিজেই)। [১৫৯](আধুনিক প্রকাশনী- ৬৬০১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬১৫)


[১৫৯] উমার (রাঃ) এর শাহাদাতের পর ফিতনার সর্বগ্রাসী ঢেউ মুসলিম দুনিয়াকে গ্রাস করে নিয়েছে। এ ফিতনার ঢেউ কখনই আর বন্ধ হবে না।

৭০৯৭
سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ شَرِيكِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ قَالَ خَرَجَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا إِلَى حَائِطٍ مِنْ حَوَائِطِ الْمَدِينَةِ لِحَاجَتِهِ وَخَرَجْتُ فِي إِثْرِهِ فَلَمَّا دَخَلَ الْحَائِطَ جَلَسْتُ عَلَى بَابِهِ وَقُلْتُ لأَكُونَنَّ الْيَوْمَ بَوَّابَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَلَمْ يَأْمُرْنِي فَذَهَبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَقَضَى حَاجَتَهُ وَجَلَسَ عَلَى قُفِّ الْبِئْرِ فَكَشَفَ عَنْ سَاقَيْهِ وَدَلاَّهُمَا فِي الْبِئْرِ فَجَاءَ أَبُو بَكْرٍ يَسْتَأْذِنُ عَلَيْهِ لِيَدْخُلَ فَقُلْتُ كَمَا أَنْتَ حَتَّى أَسْتَأْذِنَ لَكَ فَوَقَفَ فَجِئْتُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ يَا نَبِيَّ اللهِ أَبُو بَكْرٍ يَسْتَأْذِنُ عَلَيْكَ قَالَ ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ فَدَخَلَ فَجَاءَ عَنْ يَمِينِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَكَشَفَ عَنْ سَاقَيْهِ وَدَلاَّهُمَا فِي الْبِئْرِ فَجَاءَ عُمَرُ فَقُلْتُ كَمَا أَنْتَ حَتَّى أَسْتَأْذِنَ لَكَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ فَجَاءَ عَنْ يَسَارِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَكَشَفَ عَنْ سَاقَيْهِ فَدَلاَّهُمَا فِي الْبِئْرِ فَامْتَلاَ الْقُفُّ فَلَمْ يَكُنْ فِيهِ مَجْلِسٌ ثُمَّ جَاءَ عُثْمَانُ فَقُلْتُ كَمَا أَنْتَ حَتَّى أَسْتَأْذِنَ لَكَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ائْذَنْ لَهُ وَبَشِّرْهُ بِالْجَنَّةِ مَعَهَا بَلاَءٌ يُصِيبُهُ فَدَخَلَ فَلَمْ يَجِدْ مَعَهُمْ مَجْلِسًا فَتَحَوَّلَ حَتَّى جَاءَ مُقَابِلَهُمْ عَلَى شَفَةِ الْبِئْرِ فَكَشَفَ عَنْ سَاقَيْهِ ثُمَّ دَلاَّهُمَا فِي الْبِئْرِ فَجَعَلْتُ أَتَمَنَّى أَخًا لِي وَأَدْعُو اللهَ أَنْ يَأْتِيَ قَالَ ابْنُ الْمُسَيَّبِ فَتَأَوَّلْتُ ذَلِكَ قُبُورَهُمْ اجْتَمَعَتْ هَا هُنَا وَانْفَرَدَ عُثْمَانُ.

আবূ মূসা আশ’আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রয়োজনবশত মাদীনার (দেয়াল ঘেরা) বাগানগুলোর একটি বাগানের উদ্দেশ্যে বের হলেন। আমি তাঁর পিছনে গেলাম। তিনি যখন বাগানে প্রবেশ করলেন, আমি এর দরজায় বসে থাকলাম এবং মনে মনে বললাম, আজ আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রহরীর কাজ করব। অবশ্য তিনি আমাকে এর নির্দেশ দেননি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ভিতরে গেলেন এবং স্বীয় প্রয়োজন সেরে নিলেন। এরপর একটি কূপের পোস্তার উপর বসলেন এবং হাঁটুর নিচের অংশের কাপড় তুলে নিয়ে দু’পা কূপের মধ্যে ঝুলিয়ে দিলেন। এমন সময় আবূ বাকর (রাঃ) এসে তাঁর নিকট প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। আমি বললাম, আপনি অপেক্ষা করুন, যতক্ষণ না আমি আপনার জন্য অনুমতি নিয়ে আসছি। তিনি অপেক্ষা করলেন। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসলাম এবং বললাম, হে আল্লাহ্‌র নাবী! আবূ বাকর (রাঃ) আপনার কাছে প্রবেশের অনুমতি চাচ্ছেন। তিনি বললেনঃ তাঁকে আসার অনুমতি দাও এবং তাঁকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও। আবূ বাকর (রাঃ) প্রবেশ করলেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ডান পার্শে গিয়ে বসলেন। এরপর তিনিও হাঁটুর নিচের অংশ অনাবৃত করে উভয় পা কূপের মধ্যে ঝুলিয়ে দিলেন। এরপর ‘উমার (রাঃ) আসলেন। আমি বললাম, আপনি নিজ জায়গায় অপেক্ষা করুন। আমি আপনার জন্য অনুমতি নিয়ে আসি। (অনুমতি প্রার্থনা করলে) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাঁকে আসার অনুমতি দাও এবং জান্নাতের সুসংবাদ দাও। তিনি এসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বামদিকে বসলেন এবং হাঁটুর নিচের অংশ অনাবৃত করে দু’পা কূপের মধ্যে ঝুলিয়ে দিলেন। এতে কূপের পোস্তা পূর্ণ হয়ে গেল এবং সেখানে বসার আর কোন স্থান অবশিষ্ট বাকী থাকল না। এরপর ‘উসমান (রাঃ) আসলেন। আমি বললাম, আপনি নিজ জায়গায় অপেক্ষা করুন, যতক্ষণ আমি আপনার জন্য অনুমতি নিয়ে না আসি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাঁকে আসার অনুমতি দাও এবং তাঁকে বিপদগ্রস্ত হওয়াসহ জান্নাতের সুসংবাদ দাও। তিনি প্রবেশ করলেন। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে বসার কোন জায়গা পেলেন না। কাজেই তিনি উল্টো দিকে এসে তাঁদের মুখোমুখী হয়ে কুয়ার পাড়ে বসে গেলেন এবং হাঁটুদ্বয়ের নিচের অংশ অনাবৃত করে উভয় পা কুয়ার ভিতরে ঝুলিয়ে দিলেন। আমি তখন আমার অন্য এক ভাই-এর (আগমন) কামনা করছিলাম এবং আল্লাহর নিকট দু’আ করছিলাম যেন সে (এ মূহূর্তে) আগমন করে।

ইব্‌নু মুসাইয়্যাব বলেন, আমি এ ঘটনার ভাবার্থ এভাবে গ্রহণ করেছি যে, তা হল তাঁদের তিনজনের কবর যা এখানে একসঙ্গে হয়েছে। আর ‘উসমান (রাঃ)-এর অন্য স্থানে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৬০২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬১৬)

৭০৯৮
بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ سُلَيْمَانَ سَمِعْتُ أَبَا وَائِلٍ قَالَ قِيلَ لِأُسَامَةَ أَلاَ تُكَلِّمُ هَذَا قَالَ قَدْ كَلَّمْتُهُ مَا دُونَ أَنْ أَفْتَحَ بَابًا أَكُونُ أَوَّلَ مَنْ يَفْتَحُهُ وَمَا أَنَا بِالَّذِي أَقُولُ لِرَجُلٍ بَعْدَ أَنْ يَكُونَ أَمِيرًا عَلَى رَجُلَيْنِ أَنْتَ خَيْرٌ بَعْدَ مَا سَمِعْتُ مِنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ يُجَاءُ بِرَجُلٍ فَيُطْرَحُ فِي النَّارِ فَيَطْحَنُ فِيهَا كَطَحْنِ الْحِمَارِ بِرَحَاهُ فَيُطِيفُ بِهِ أَهْلُ النَّارِ فَيَقُولُونَ أَيْ فُلاَنُ أَلَسْتَ كُنْتَ تَأْمُرُ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَى عَنْ الْمُنْكَرِ فَيَقُولُ إِنِّي كُنْتُ آمُرُ بِالْمَعْرُوفِ وَلاَ أَفْعَلُهُ وَأَنْهَى عَنْ الْمُنْكَرِ وَأَفْعَلُهُ.

আবূ ওয়ায়িল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উসামাহ (রাঃ) – কে বলা হল আপনি কি এ সম্পর্কে কিছু বলবেন না? তিনি বললেন, আমি এ সম্পর্কে বলেছি, তবে এমন পথে নয় যে, আমি তোমার জন্য একটি দ্বার (ফিতনার) উম্মোচিত করব যাতে আমিই হব এর প্রথম উন্মোচনকারী এবং আমি এমন ব্যক্তি নই যে, কোন লোক দুই ব্যক্তির আমীর নিযুক্ত হবার পর তার ব্যাপারে বলব, আপনি উত্তম। কেননা, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে বলতে শুনেছি যে (কিয়ামতের দিন) এক ব্যক্তিকে নিয়ে আসা হবে এবং তাকে জাহান্নামে ফেলা হবে। এরপর তাকে গাধা দিয়ে চাকা ঘুরিয়ে যেমন গম পিষা হয়, তেমনি পিষে ফেলা হবে। জাহান্নামবাসীরা তার পাশে এসে জড় হবে এবং বলবে, হে অমুক! তুমিই কি আমাদের ভাল কাজের হুকুম ও মন্দ কাজের থেকে নিষেধ করতে না? তখন সে বলবে, হ্যাঁ, আমি ভালকাজের হুকুম দিতাম, তবে আমি নিজে তা করতাম না এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করতাম, তবে আমি নিজেই তা করতাম। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৬০৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৬১৭)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]