সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস জাহমিয়াদের মতের খণ্ডন ও তাওহীদ প্রসঙ্গ অধ্যায় ৩য় ভাগ হাদিস নং ৭৪৩৪ – ৭৪৬৩

৯৭/২৪. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্‌র বাণীঃ কতক মুখ সেদিন উজ্জ্বল হবে। তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে। (সূরা আল-ক্বিয়ামাহ ৭৫/২২-২৩)

৭৪৩৪
عَمْرُو بْنُ عَوْنٍ حَدَّثَنَا خَالِدٌ وَهُشَيْمٌ عَنْ إِسْمَاعِيلَ عَنْ قَيْسٍ عَنْ جَرِيرٍ قَالَ كُنَّا جُلُوسًا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذْ نَظَرَ إِلَى الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ قَالَ إِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ رَبَّكُمْ كَمَا تَرَوْنَ هَذَا الْقَمَرَ لاَ تُضَامُونَ فِي رُؤْيَتِهِ فَإِنْ اسْتَطَعْتُمْ أَنْ لاَ تُغْلَبُوا عَلَى صَلاَةٍ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَصَلاَةٍ قَبْلَ غُرُوبِ الشَّمْسِ فَافْعَلُوا

জারীর ইবনু আব্দুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে উপবিষ্ট ছিলাম। তিনি পূর্ণিমার রাতে চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, তোমরা শীঘ্রই তোমাদের রব্বকে দেখতে পাবে, যেমনি তোমরা এ চাঁদটিকে দেখতে পাচ্ছ। অথচ এটিকে দেখতে তোমাদের কোন অসুবিধে হচ্ছে না। অতএব, তোমরা সক্ষম হলে সূর্য উঠার আগের সালাত ও সূর্য ডুবার পরের সালাত (যথাযথভাবে) আদায় করতে তোমরা যেন পরাজিত না হও। তাহলে তাই কর। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯১৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯২৮)

৭৪৩৫
يُوسُفُ بْنُ مُوسَى حَدَّثَنَا عَاصِمُ بْنُ يُوسُفَ الْيَرْبُوعِيُّ حَدَّثَنَا أَبُو شِهَابٍ عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ عَنْ جَرِيرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ رَبَّكُمْ عِيَانًا

জারীর ইবনু আব্দুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

জারীর ইবনু আব্দুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ অবশ্যই তোমারা তোমাদের রব্বকে দিব্যচক্ষে দেখতে পাবে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯১৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯২৯)

৭৪৩৬
عَبْدَةُ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا حُسَيْنٌ الْجُعْفِيُّ عَنْ زَائِدَةَ حَدَّثَنَا بَيَانُ بْنُ بِشْرٍ عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ الْبَدْرِ فَقَالَ إِنَّكُمْ سَتَرَوْنَ رَبَّكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ كَمَا تَرَوْنَ هَذَا لاَ تُضَامُونَ فِي رُؤْيَتِهِ

জারীর ইবনু আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা পূর্ণিমার রাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের কাছে বের হয়ে আসলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ শীঘ্রই তোমরা তোমাদের রবকে ক্বিয়ামতের দিন দেখতে পাবে, যেমন এ চাঁদটিকে তোমরা দেখছ এবং একে দেখতে তোমাদের অসুবিধে হচ্ছে না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৩০)

৭৪৩৭
عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّاسَ قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ هَلْ نَرَى رَبَّنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَلْ تُضَارُّونَ فِي الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ قَالُوا لاَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ فَهَلْ تُضَارُّونَ فِي الشَّمْسِ لَيْسَ دُونَهَا سَحَابٌ قَالُوا لاَ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ فَإِنَّكُمْ تَرَوْنَهُ كَذَلِكَ يَجْمَعُ اللهُ النَّاسَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيَقُولُ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ شَيْئًا فَلْيَتْبَعْهُ فَيَتْبَعُ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ الشَّمْسَ الشَّمْسَ وَيَتْبَعُ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ الْقَمَرَ الْقَمَرَ وَيَتْبَعُ مَنْ كَانَ يَعْبُدُ الطَّوَاغِيتَ الطَّوَاغِيتَ وَتَبْقَى هَذِهِ الْأُمَّةُ فِيهَا شَافِعُوهَا أَوْ مُنَافِقُوهَا شَكَّ إِبْرَاهِيمُ فَيَأْتِيهِمْ اللهُ فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ فَيَقُولُونَ هَذَا مَكَانُنَا حَتَّى يَأْتِيَنَا رَبُّنَا فَإِذَا جَاءَنَا رَبُّنَا عَرَفْنَاهُ فَيَأْتِيهِمْ اللهُ فِي صُورَتِهِ الَّتِي يَعْرِفُونَ فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ فَيَقُولُونَ أَنْتَ رَبُّنَا فَيَتْبَعُونَهُ وَيُضْرَبُ الصِّرَاطُ بَيْنَ ظَهْرَيْ جَهَنَّمَ فَأَكُونُ أَنَا وَأُمَّتِي أَوَّلَ مَنْ يُجِيزُهَا وَلاَ يَتَكَلَّمُ يَوْمَئِذٍ إِلاَّ الرُّسُلُ وَدَعْوَى الرُّسُلِ يَوْمَئِذٍ اللهُمَّ سَلِّمْ سَلِّمْ وَفِي جَهَنَّمَ كَلاَلِيبُ مِثْلُ شَوْكِ السَّعْدَانِ هَلْ رَأَيْتُمْ السَّعْدَانَ قَالُوا نَعَمْ يَا رَسُولَ اللهِ قَالَ فَإِنَّهَا مِثْلُ شَوْكِ السَّعْدَانِ غَيْرَ أَنَّهُ لاَ يَعْلَمُ مَا قَدْرُ عِظَمِهَا إِلاَّ اللهُ تَخْطَفُ النَّاسَ بِأَعْمَالِهِمْ فَمِنْهُمْ الْمُوبَقُ بَقِيَ بِعَمَلِهِ أَوْ الْمُوثَقُ بِعَمَلِهِ وَمِنْهُمْ الْمُخَرْدَلُ أَوْ الْمُجَازَى أَوْ نَحْوُهُ ثُمَّ يَتَجَلَّى حَتَّى إِذَا فَرَغَ اللهُ مِنْ الْقَضَاءِ بَيْنَ الْعِبَادِ وَأَرَادَ أَنْ يُخْرِجَ بِرَحْمَتِهِ مَنْ أَرَادَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ أَمَرَ الْمَلاَئِكَةَ أَنْ يُخْرِجُوا مِنْ النَّارِ مَنْ كَانَ لاَ يُشْرِكُ بِاللهِ شَيْئًا مِمَّنْ أَرَادَ اللهُ أَنْ يَرْحَمَهُ مِمَّنْ يَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ فَيَعْرِفُونَهُمْ فِي النَّارِ بِأَثَرِ السُّجُودِ تَأْكُلُ النَّارُ ابْنَ آدَمَ إِلاَّ أَثَرَ السُّجُودِ حَرَّمَ اللهُ عَلَى النَّارِ أَنْ تَأْكُلَ أَثَرَ السُّجُودِ فَيَخْرُجُونَ مِنْ النَّارِ قَدْ امْتُحِشُوا فَيُصَبُّ عَلَيْهِمْ مَاءُ الْحَيَاةِ فَيَنْبُتُونَ تَحْتَهُ كَمَا تَنْبُتُ الْحِبَّةُ فِي حَمِيلِ السَّيْلِ ثُمَّ يَفْرُغُ اللهُ مِنْ الْقَضَاءِ بَيْنَ الْعِبَادِ وَيَبْقَى رَجُلٌ مِنْهُمْ مُقْبِلٌ بِوَجْهِهِ عَلَى النَّارِ هُوَ آخِرُ أَهْلِ النَّارِ دُخُولاً الْجَنَّةَ فَيَقُولُ أَيْ رَبِّ اصْرِفْ وَجْهِي عَنْ النَّارِ فَإِنَّهُ قَدْ قَشَبَنِي رِيحُهَا وَأَحْرَقَنِي ذَكَاؤُهَا فَيَدْعُو اللهَ بِمَا شَاءَ أَنْ يَدْعُوَهُ ثُمَّ يَقُولُ اللهُ هَلْ عَسَيْتَ إِنْ أَعْطَيْتُكَ ذَلِكَ أَنْ تَسْأَلَنِي غَيْرَهُ فَيَقُولُ لاَ وَعِزَّتِكَ لاَ أَسْأَلُكَ غَيْرَهُ وَيُعْطِي رَبَّهُ مِنْ عُهُودٍ وَمَوَاثِيقَ مَا شَاءَ فَيَصْرِفُ اللهُ وَجْهَهُ عَنْ النَّارِ فَإِذَا أَقْبَلَ عَلَى الْجَنَّةِ وَرَآهَا سَكَتَ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَسْكُتَ ثُمَّ يَقُولُ أَيْ رَبِّ قَدِّمْنِي إِلَى بَابِ الْجَنَّةِ فَيَقُولُ اللهُ لَهُ أَلَسْتَ قَدْ أَعْطَيْتَ عُهُودَكَ وَمَوَاثِيقَكَ أَنْ لاَ تَسْأَلَنِي غَيْرَ الَّذِي أُعْطِيتَ أَبَدًا وَيْلَكَ يَا ابْنَ آدَمَ مَا أَغْدَرَكَ فَيَقُولُ أَيْ رَبِّ وَيَدْعُو اللهَ حَتَّى يَقُولَ هَلْ عَسَيْتَ إِنْ أُعْطِيتَ ذَلِكَ أَنْ تَسْأَلَ غَيْرَهُ فَيَقُولُ لاَ وَعِزَّتِكَ لاَ أَسْأَلُكَ غَيْرَهُ وَيُعْطِي مَا شَاءَ مِنْ عُهُودٍ وَمَوَاثِيقَ فَيُقَدِّمُهُ إِلَى بَابِ الْجَنَّةِ فَإِذَا قَامَ إِلَى بَابِ الْجَنَّةِ انْفَهَقَتْ لَهُ الْجَنَّةُ فَرَأَى مَا فِيهَا مِنْ الْحَبْرَةِ وَالسُّرُورِ فَيَسْكُتُ مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَسْكُتَ ثُمَّ يَقُولُ أَيْ رَبِّ أَدْخِلْنِي الْجَنَّةَ فَيَقُولُ اللهُ أَلَسْتَ قَدْ أَعْطَيْتَ عُهُودَكَ وَمَوَاثِيقَكَ أَنْ لاَ تَسْأَلَ غَيْرَ مَا أُعْطِيتَ فَيَقُولُ وَيْلَكَ يَا ابْنَ آدَمَ مَا أَغْدَرَكَ فَيَقُولُ أَيْ رَبِّ لاَ أَكُونَنَّ أَشْقَى خَلْقِكَ فَلاَ يَزَالُ يَدْعُو حَتَّى يَضْحَكَ اللهُ مِنْهُ فَإِذَا ضَحِكَ مِنْهُ قَالَ لَهُ ادْخُلْ الْجَنَّةَ فَإِذَا دَخَلَهَا قَالَ اللهُ لَهُ تَمَنَّهْ فَسَأَلَ رَبَّهُ وَتَمَنَّى حَتَّى إِنَّ اللهَ لَيُذَكِّرُهُ يَقُولُ كَذَا وَكَذَا حَتَّى انْقَطَعَتْ بِهِ الأَمَانِيُّ قَالَ اللهُ ذَلِكَ لَكَ وَمِثْلُهُ مَعَهُ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, লোকেরা (সহাবাগণ) জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! ক্বিয়ামাতের দিন আমরা কি আমাদের রব্বকে দেখতে পাব? রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমাদের কি পূর্ণিমার রাতে চাঁদ দেখতে অসুবিধা হয়? সবাই বলে উঠলেন, না, হে আল্লাহ্‌র রসূল! তিনি আবার বললেনঃ মেঘহীন আকাশে সূর্য দেখতে তোমাদের কি অসুবিধা হয়? সবাই বলে উঠলেন, না, হে আল্লাহ্‌র রসূল। তখন রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা সেরকমই আল্লাহ্কে দেখতে পাবে। ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ্ লোকদের একত্রিত করে বলবেন, যে যার ‘ইবাদাত করছিলে সে যেন তার অনুসরণ করে। তারপর যারা সূর্যের ‘ইবাদাত করত, সূর্যের অনুসরণ করবে। যারা চন্দ্রের ‘ইবাদাত করত, তারা চন্দ্রের অনুসরণ করবে। আর যারা তাগুতের পূজা করত, তারা তাদের অনুসরণ করবে। বাকী থাকবে এই উম্মাত। এদের মধ্যে এদের সুপারিশকারীরাও থাকবে অথবা রাবী বলেছেন, মুনাফিকরাও থাকবে। এখানে বর্ণনাকারী ইব্‌রাহীম (রহঃ) সন্দেহ পোষণ করেছেন। তারপর আল্লাহ্ তাদের কাছে এসে বলবেনঃ আমিই তোমাদের রব। তখন তারা বলবে, যতক্ষন আমাদের রব আমাদের কাছে না আসবেন, ততক্ষণ আমরা এ স্থানেই থাকব। আমাদের রব যখন আসবেন, তখন আমরা তাকে চিনতে পারব। তারপর আল্লাহ্ এমন এক সুরতে তাদের কাছে আসবেন, যে সুরতে তারা তাঁকে চিনবে। তখন তিনি বলবেন, তোমাদের রব আমিই। তারা বলে উঠবে হাঁ, আপনিই আমাদের রব। তারপর তারা তাঁর অনুসরণ করবে। এরপর জাহান্নামের উপর পুল কায়িম করা হবে। যারা পুল পার হবে, আমি এবং আমার উম্মাত তাদের মধ্যে প্রথম থাকব। সেদিন একমাত্র রসূলগণ ব্যতীত আর কেউই কথা বলতে পারবে না। আর রসূলগনেরও আবেদন হবে শুধু আল্লাহুম্মা সাল্লিম, সাল্লিম (আয় আল্লাহ্! নিরাপদে রাখুন, নিরাপদে রাখুন)। এবং জাহান্নামে সাদান-এর কাঁটার মত আঁকড়া থাকবে। তোমরা দেখেছ কি সাদান-এর কাঁটা? সহাবাগণ বললেন, জী হ্যাঁ, হে আল্লাহ্‌র রসূল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ জাহান্নামের সে কাঁটাগুলো এ সাদান-এর কাঁটার মত। হ্যাঁ, তবে সেগুলো যে কত বড় হবে তা একমাত্র আল্লাহ্ই জানেন। ওসব কাঁটা মানুষকে তাদের আমলের অনুপাতে বিদ্ধ করবে। কতিপয় মানুষ থাকবে ঈমানদার, তারা তাদের আমলের কারণে নিরাপদ থাকবে। আর কেউ কেউ তার ‘আমালের কারণে ধ্বংস হবে। কাউকে নিক্ষেপ করা হবে, আর কাউকে প্রতিদান দেয়া হবে। কিংবা সেরকমই কিছু রাবী বলেছেন। তারপর (আল্লাহ্) প্রকাশিত হবেন। তিনি বান্দাদের বিচার শেষ করে যখন আপন রহমতে কতক জাহান্নামবাসীকে বের করতে চাইবেন, তখন তিনি তাদের মধ্যকার শির্ক হতে মুক্তদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে দেয়ার জন্য ফেরেশ্‌তাদেরকে আদেশ দেবেন। তারাই হচ্ছে ওসব বান্দা যাদের উপর আল্লাহ রহমত করবেন, যারা সাক্ষ্য দিয়েছে যে, আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই। সাজদাহর চিহ্ন দ্বারা তাদেরকে ফেরেশ্তারা চিনতে পারবেন। সাজদাহর চিহ্নগুলো ছাড়া সে সব আদাম সন্তানের সারা দেহ জাহান্নামের আগুন ভস্মীভূত করে দেবে। সাজদাহর চিহ্নগুলো জ্বালিয়ে দেয়া আল্লাহ্ জাহান্নামের উপর হারাম করে দিয়েছেন। অতঃপর তাদেরকে আগুনে দগ্ধ অবস্থায় জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। তাদের ওপর ঢালা হবে সঞ্জীবনীর পানি। এর ফলে নিম্নভাগ থেকে তারা এমনভাবে সজীব হয়ে ওঠবে, প্লাবনের পানিতে বীজ মাটি থেকে যেভাবে গজিয়ে ওঠে। এরপর আল্লাহ্ বান্দাদের বিচার কাজ শেষ করবেন। এদের মধ্য থেকে একজন বাকী থেকে যাবে, যে জাহান্নামের দিকে মুখ করে থাকবে। জাহান্নামীদের মধ্যে এই হচ্ছে সর্বশেষ জান্নাতে প্রবেশকারী। তখন সে বলবে, হে আমার রব! আমার চেহারাটা জাহান্নামের দিক থেকে ফিরিয়ে দাও। কেননা, জাহান্নামের (দুর্গন্ধযুক্ত) হাওয়া আমাকে অস্থির করে তুলছে এবং এর শিখা আমাকে জ্বালাচ্ছে। তখন সে আল্লাহর ইচ্ছা মুতাবিক তাঁর কাছে প্রার্থনা করবে। তারপর আল্লাহ্ বলবেন, তোমরা প্রার্থিত বস্তু যদি তোমাকে দেয়া হয়, তবে অন্য কিছু চাইবে না তো? তখন সে বলবে, না, তোমার ইয্যতের শপথ করে বলছি, তা ব্যতীত আমি আর কিছু চাইব না। তখন সে আল্লাহ্‌র ইচ্ছা মোতাবেক তাঁকে বহু অঙ্গীকার ও’য়াদা দেবে। ফলে আল্লাহ্ তার চেহারা জাহান্নাম থেকে ফিরিয়ে দেবেন। যখন সে জান্নাতের দিকে মুখ ফিরাবে এবং জান্নাতকে দেখবে, সে আল্লাহ্‌র ইচ্ছা মোতাবেক যতক্ষণ চুপ থাকার চুপ থেকে বলবে, হে আমার রব! আমাকে জান্নাতের দ্বার পর্যন্ত এগিয়ে দাও। আল্লাহ্ তখন তাকে বলবেন, তুমি কি বহু ও’য়াদা ও অঙ্গীকার দাওনি যে তোমাকে যা দেয়া হবে, তা ব্যতীত আর কিছুই তুমি কখনো চাইবে না। সর্বনাশ তোমার, হে আদাম সন্তান! কতই না ও’য়াদা ভঙ্গকারী তুমি। তখন সে বলবে, হে আমার রব সে আল্লাহকে ডাকতে থাকবে। আল্লাহ্ তখন তাকে বলবেন, আচ্ছা, এটি যদি তোমাকে দেয়া হয়, আর কিছু তো চাইবে না? সে বলবে, তোমার ইয্যতের কসম! সেটি ব্যতীত আমি আর কিছুই চাইব না। তারপর আল্লাহ্‌র ইচ্ছানুযায়ী ও’য়াদা ও অঙ্গীকার দেবে আর আল্লাহ্ তাকে জান্নাতের দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিবেন। যখন সে জান্নাতের দরজার কাছে দাঁড়াবে, তখন তার জন্য জান্নাত উন্মুক্ত হয়ে যাবে, তখন সে এর মধ্যকার আরাম আয়েশ ও ভোগ বিলাসের প্রাচুর্য দেখতে পাবে। তখন সে আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী চুপ থেকে পরে বলবে, হে আমার রব! আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করায়ে দিন। আল্লাহ্ বলবেনঃ তুমি কি আমাকে এই ও’য়াদা ও অঙ্গীকার দাওনি যে, তোমাকে যা দেয়া হবে, সেটা ব্যতীত আর কিছুর প্রার্থনা করবে না? সর্বনাশ তোমার! হে বানী আদাম! কতই না ও’য়াদা ভঙ্গকারী তুমি। তখন সে বলবে, হে আমার রব! আমি তোমার সৃষ্টিকুলের মধ্যে নিকৃষ্টতর হতে চাই না। তখন সে আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনা করতে থাকবে। অবশেষে আল্লাহ্ এতে হেসে দেবেন। আল্লাহ্ তার অবস্থার জন্য হেসে তাকে নির্দেশ দেবেন, তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর। সে জান্নাতে প্রবেশ করলে আল্লাহ্ তাকে বলবেনঃ এবার তুমি চাও। সে তখন রবের কাছে চাইবে এবং আকাঙ্ক্ষা জানাবে। সর্বশেষে আল্লাহ্ নিজে তাকে স্বরণ করিয়ে দিয়ে বলবেন, এটা, ওটা চাও। এতে তার আবেদন-আকাঙ্ক্ষা শেষ হলে আল্লাহ বলবেনঃ তোমাকে ওগুলো দেয়া হল, সঙ্গে সঙ্গে সে পরিমান আরো দেয়া হল। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৩১)

৭৪৩৮
قَالَ عَطَاءُ بْنُ يَزِيدَ وَأَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ مَعَ أَبِي هُرَيْرَةَ لاَ يَرُدُّ عَلَيْهِ مِنْ حَدِيثِهِ شَيْئًا حَتَّى إِذَا حَدَّثَ أَبُو هُرَيْرَةَ أَنَّ اللهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى قَالَ ذَلِكَ لَكَ وَمِثْلُهُ مَعَهُ قَالَ أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ وَعَشَرَةُ أَمْثَالِهِ مَعَهُ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ مَا حَفِظْتُ إِلاَّ قَوْلَهُ ذَلِكَ لَكَ وَمِثْلُهُ مَعَهُ قَالَ أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ أَشْهَدُ أَنِّي حَفِظْتُ مِنْ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَوْلَهُ ذَلِكَ لَكَ وَعَشَرَةُ أَمْثَالِهِ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ فَذَلِكَ الرَّجُلُ آخِرُ أَهْلِ الْجَنَّةِ دُخُولاً الْجَنَّةَ

আত্বা ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘আত্বা ইব্‌নু ইয়াযীদ (রহঃ) বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) যখন হাদীসটির বর্ণনা দিচ্ছিলেন, তখন আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) -ও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) -এর এ বর্ণিত হাদীসের কোথাও প্রতিবাদ করলেন না। বর্ণনার শেষাংশে এসে আবূ হুরায়রা (রাঃ) যখন বর্ণনা করলেন, “আল্লাহ্ তাকে বলবেন, ওসব তোমাকে দেয়া হলো, আরো তার সমপরিমান তার সঙ্গে দেয়া হল” তখন আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) প্রতিবাদ করে বললেন, হে আবূ হুরায়রা (রাঃ), রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তার সঙ্গে আরো দশগুন। তখন আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন, আমি সংরক্ষন করেছি এভাবে- ওসব তোমাকে দেয়া হলো, আর এ সঙ্গে আরো এক গুন দেয়া হল। আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট হতে এভাবে সংরক্ষন করেছি- ও সবই তোমাকে দেয়া হলো, এর সঙ্গে তোমাকে দেয়া হলো আরো দশ গুন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, এই হচ্ছে জান্নাতে প্রবেশকারীদের মধ্যে সর্বশেষ ব্যক্তি।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯২০ শেষাংশ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৩১)

৭৪৩৯
يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ خَالِدِ بْنِ يَزِيدَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِلاَلٍ عَنْ زَيْدٍ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللهِ هَلْ نَرَى رَبَّنَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ هَلْ تُضَارُونَ فِي رُؤْيَةِ الشَّمْسِ وَالْقَمَرِ إِذَا كَانَتْ صَحْوًا قُلْنَا لاَ قَالَ فَإِنَّكُمْ لاَ تُضَارُونَ فِي رُؤْيَةِ رَبِّكُمْ يَوْمَئِذٍ إِلاَّ كَمَا تُضَارُونَ فِي رُؤْيَتِهِمَا ثُمَّ قَالَ يُنَادِي مُنَادٍ لِيَذْهَبْ كُلُّ قَوْمٍ إِلَى مَا كَانُوا يَعْبُدُونَ فَيَذْهَبُ أَصْحَابُ الصَّلِيبِ مَعَ صَلِيبِهِمْ وَأَصْحَابُ الأَوْثَانِ مَعَ أَوْثَانِهِمْ وَأَصْحَابُ كُلِّ آلِهَةٍ مَعَ آلِهَتِهِمْ حَتَّى يَبْقَى مَنْ كَانَ يَعْبُدُ اللهَ مِنْ بَرٍّ أَوْ فَاجِرٍ وَغُبَّرَاتٌ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ ثُمَّ يُؤْتَى بِجَهَنَّمَ تُعْرَضُ كَأَنَّهَا سَرَابٌ فَيُقَالُ لِلْيَهُودِ مَا كُنْتُمْ تَعْبُدُونَ قَالُوا كُنَّا نَعْبُدُ عُزَيْرَ ابْنَ اللهِ فَيُقَالُ كَذَبْتُمْ لَمْ يَكُنْ لِلَّهِ صَاحِبَةٌ وَلاَ وَلَدٌ فَمَا تُرِيدُونَ قَالُوا نُرِيدُ أَنْ تَسْقِيَنَا فَيُقَالُ اشْرَبُوا فَيَتَسَاقَطُونَ فِي جَهَنَّمَ ثُمَّ يُقَالُ لِلنَّصَارَى مَا كُنْتُمْ تَعْبُدُونَ فَيَقُولُونَ كُنَّا نَعْبُدُ الْمَسِيحَ ابْنَ اللهِ فَيُقَالُ كَذَبْتُمْ لَمْ يَكُنْ لِلَّهِ صَاحِبَةٌ وَلاَ وَلَدٌ فَمَا تُرِيدُونَ فَيَقُولُونَ نُرِيدُ أَنْ تَسْقِيَنَا فَيُقَالُ اشْرَبُوا فَيَتَسَاقَطُونَ فِي جَهَنَّمَ حَتَّى يَبْقَى مَنْ كَانَ يَعْبُدُ اللهَ مِنْ بَرٍّ أَوْ فَاجِرٍ فَيُقَالُ لَهُمْ مَا يَحْبِسُكُمْ وَقَدْ ذَهَبَ النَّاسُ فَيَقُولُونَ فَارَقْنَاهُمْ وَنَحْنُ أَحْوَجُ مِنَّا إِلَيْهِ الْيَوْمَ وَإِنَّا سَمِعْنَا مُنَادِيًا يُنَادِي لِيَلْحَقْ كُلُّ قَوْمٍ بِمَا كَانُوا يَعْبُدُونَ وَإِنَّمَا نَنْتَظِرُ رَبَّنَا قَالَ فَيَأْتِيهِمْ الْجَبَّارُ فِي صُورَةٍ غَيْرِ صُورَتِهِ الَّتِي رَأَوْهُ فِيهَا أَوَّلَ مَرَّةٍ فَيَقُولُ أَنَا رَبُّكُمْ فَيَقُولُونَ أَنْتَ رَبُّنَا فَلاَ يُكَلِّمُهُ إِلاَّ الأَنْبِيَاءُ فَيَقُولُ هَلْ بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُ آيَةٌ تَعْرِفُونَهُ فَيَقُولُونَ السَّاقُ فَيَكْشِفُ عَنْ سَاقِهِ فَيَسْجُدُ لَهُ كُلُّ مُؤْمِنٍ وَيَبْقَى مَنْ كَانَ يَسْجُدُ لِلَّهِ رِيَاءً وَسُمْعَةً فَيَذْهَبُ كَيْمَا يَسْجُدَ فَيَعُودُ ظَهْرُهُ طَبَقًا وَاحِدًا ثُمَّ يُؤْتَى بِالْجَسْرِ فَيُجْعَلُ بَيْنَ ظَهْرَيْ جَهَنَّمَ قُلْنَا يَا رَسُولَ اللهِ وَمَا الْجَسْرُ قَالَ مَدْحَضَةٌ مَزِلَّةٌ عَلَيْهِ خَطَاطِيفُ وَكَلاَلِيبُ وَحَسَكَةٌ مُفَلْطَحَةٌ لَهَا شَوْكَةٌ عُقَيْفَاءُ تَكُونُ بِنَجْدٍ يُقَالُ لَهَا السَّعْدَانُ الْمُؤْمِنُ عَلَيْهَا كَالطَّرْفِ وَكَالْبَرْقِ وَكَالرِّيحِ وَكَأَجَاوِيدِ الْخَيْلِ وَالرِّكَابِ فَنَاجٍ مُسَلَّمٌ وَنَاجٍ مَخْدُوشٌ وَمَكْدُوسٌ فِي نَارِ جَهَنَّمَ حَتَّى يَمُرَّ آخِرُهُمْ يُسْحَبُ سَحْبًا فَمَا أَنْتُمْ بِأَشَدَّ لِي مُنَاشَدَةً فِي الْحَقِّ قَدْ تَبَيَّنَ لَكُمْ مِنْ الْمُؤْمِنِ يَوْمَئِذٍ لِلْجَبَّارِ وَإِذَا رَأَوْا أَنَّهُمْ قَدْ نَجَوْا فِي إِخْوَانِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا إِخْوَانُنَا كَانُوا يُصَلُّونَ مَعَنَا وَيَصُومُونَ مَعَنَا وَيَعْمَلُونَ مَعَنَا فَيَقُولُ اللهُ تَعَالَى اذْهَبُوا فَمَنْ وَجَدْتُمْ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ دِينَارٍ مِنْ إِيمَانٍ فَأَخْرِجُوهُ وَيُحَرِّمُ اللهُ صُوَرَهُمْ عَلَى النَّارِ فَيَأْتُونَهُمْ وَبَعْضُهُمْ قَدْ غَابَ فِي النَّارِ إِلَى قَدَمِهِ وَإِلَى أَنْصَافِ سَاقَيْهِ فَيُخْرِجُونَ مَنْ عَرَفُوا ثُمَّ يَعُودُونَ فَيَقُولُ اذْهَبُوا فَمَنْ وَجَدْتُمْ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ نِصْفِ دِينَارٍ فَأَخْرِجُوهُ فَيُخْرِجُونَ مَنْ عَرَفُوا ثُمَّ يَعُودُونَ فَيَقُولُ اذْهَبُوا فَمَنْ وَجَدْتُمْ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ مِنْ إِيمَانٍ فَأَخْرِجُوهُ فَيُخْرِجُونَ مَنْ عَرَفُوا قَالَ أَبُو سَعِيدٍ فَإِنْ لَمْ تُصَدِّقُونِي فَاقْرَءُوا {إِنَّ اللهَ لاَ يَظْلِمُ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ وَإِنْ تَكُ حَسَنَةً يُضَاعِفْهَا} فَيَشْفَعُ النَّبِيُّونَ وَالْمَلاَئِكَةُ وَالْمُؤْمِنُونَ فَيَقُولُ الْجَبَّارُ بَقِيَتْ شَفَاعَتِي فَيَقْبِضُ قَبْضَةً مِنْ النَّارِ فَيُخْرِجُ أَقْوَامًا قَدْ امْتُحِشُوا فَيُلْقَوْنَ فِي نَهَرٍ بِأَفْوَاهِ الْجَنَّةِ يُقَالُ لَهُ مَاءُ الْحَيَاةِ فَيَنْبُتُونَ فِي حَافَتَيْهِ كَمَا تَنْبُتُ الْحِبَّةُ فِي حَمِيلِ السَّيْلِ قَدْ رَأَيْتُمُوهَا إِلَى جَانِبِ الصَّخْرَةِ وَإِلَى جَانِبِ الشَّجَرَةِ فَمَا كَانَ إِلَى الشَّمْسِ مِنْهَا كَانَ أَخْضَرَ وَمَا كَانَ مِنْهَا إِلَى الظِّلِّ كَانَ أَبْيَضَ فَيَخْرُجُونَ كَأَنَّهُمْ اللُّؤْلُؤُ فَيُجْعَلُ فِي رِقَابِهِمْ الْخَوَاتِيمُ فَيَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ فَيَقُولُ أَهْلُ الْجَنَّةِ هَؤُلاَءِ عُتَقَاءُ الرَّحْمَنِ أَدْخَلَهُمْ الْجَنَّةَ بِغَيْرِ عَمَلٍ عَمِلُوهُ وَلاَ خَيْرٍ قَدَّمُوهُ فَيُقَالُ لَهُمْ لَكُمْ مَا رَأَيْتُمْ وَمِثْلَهُ مَعَهُ

আবূ সা’ঈদ খুদরি (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমরা ক্বিয়ামতের দিন আমাদের রব্বের দর্শন লাভ করব কি? তিনি বললেনঃ মেঘহীন আকাশে সূর্যকে দেখতে তোমাদের অসুবিধা হয় কি? আমরা বললাম, না। তিনি বললেনঃ সেদিন তোমাদের রবকে দেখতে তোমাদের কোন অসুবিধা হবে না। এতটুকু ব্যতীত যতটুকু সূর্য দেখার সময় পেয়ে থাক। সেদিন একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা করবেন, যারা যে জিনিসের ‘ইবাদাত করতে, তারা সে জিনিসের কাছে গমন কর। এরপর যারা ক্রশপূজারী ছিল, তারা যাবে তাদের ক্রুশের কাছে। মূর্তিপূজারীরা যাবে তাদের মূর্তির সঙ্গে। সকলেই তাদের উপাস্যের সঙ্গে যাবে। বাকী থাকবে একমাত্র আল্লাহ্‌র ‘ইবাদাতকারীরা। নেক্‌কার ও বদ্কার সকলেই এবং আহলে কিতাবের কতক লোকও থাকবে। অতঃপর জাহান্নামকে আনা হবে। সেটি তখন থাকবে মরীচিকার মত। ইয়াহূদীদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে, তোমরা কিসের ‘ইবাদাত করতে? তারা উত্তর করবে, আমরা আল্লাহর পুত্র উযায়র (আঃ) -এর ‘ইবাদাত করতাম। তখন তাদেরকে বলা হবে, তোমরা মিথ্যা বলছ। কারণ আল্লাহ্‌র কোন স্ত্রীও নেই এবং নেই তাঁর কোন সন্তান। এখন তোমরা কী চাও? তারা বলবে, আমরা চাই, আমাদেরকে পানি পান করান। তখন তাদেরকে বলা হবে, তোমরা পানি পান কর। এরপর তারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হতে থাকবে। তারপর নাসারাদেরকে বলা হবে, তোমরা কিসের ‘ইবাদাত করতে? তারা বলবে, আমরা আল্লাহ্‌র পুত্র মসীহের ‘ইবাদাত করতাম। তখন তাদেরকে বলা হবে, তোমরা মিথ্যা বলছ। আল্লাহর কোন স্ত্রীও ছিল না, সন্তানও ছিল না। এখন তোমরা কী চাও? তারা বলবে, আমাদের ইচ্ছা আপনি আমাদেরকে পানি পান করতে দিন। তাদেরকে উত্তর দেয়া হবে, তোমরা পান কর। তারপর তারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হতে থাকবে। অবশেষে বাকী থাকবে একমাত্র আল্লাহ্‌র ‘ইবাদতকারীগণ। তাদের নেক্কার ও বদকার সকলেই। তাদেরকে লক্ষ্য করে বলা হবে, কোন্ জিনিস তোমাদেরকে আটকে রেখেছে? অথচ অন্যরা তো চলে গেছে। তারা বলবে, আমরা তো সেদিন তাদের থেকে আলাদা রয়েছি, যেদিন আজকের চেয়ে তাদের অধিক প্রয়োজন ছিল। আমরা একজন ঘোষণাকারীর এ ঘোষণা দিতে শুনেছি যে, যারা যাদের ‘ইবাদাত করত তারা যেন ওদের সঙ্গে যায়। আমরা অপেক্ষা করছি আমাদের রবের। নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এরপর মহাক্ষমতাশালী আল্লাহ্ তাদের কাছে আসবেন। এবার তিনি সে সুরতে আসবেন না, যেভাবে তাঁকে প্রথমে ঈমানদারগণ দেখেছিলেন। এসে তিনি ঘোষণা দেবেন- আমি তোমাদের রব, সবাই তখন বলে উঠবে আপনিই আমাদের প্রতিপালক। আর সেদিন নবীগন ছাড়া তাঁর সঙ্গে কেউ কথা বলতে পারবে না। আল্লাহ্ তাদেরকে বলবেন, তোমাদের এবং তাঁর মাঝখানে পরিচয়ের জন্য কোন আলামত আছে কি? তারা বলবেন, পায়ের নলা। তখন পায়ের নলা খুলে দেয়া হবে। এই দেখে ঈমানদারগণ সবাই সাজদায় পড়ে যাবে। বাকি থাকবে তারা, যারা লোক-দেখানো এবং লোক-শোনানো সাজদাহ্ করছিল। তবে তারা সাজদাহর মনোভাব নিয়ে সাজদাহ্ করার জন্য যাবে, কিন্তু তাদের মেরুদণ্ড একটি তক্তার মত শক্ত হয়ে যাবে। এমন সময় জাহান্নামের উপর পুল স্থাপন করা হবে। সাহাবীগণ বললেন, সে পুলটি কেমন হবে হে আল্লাহ্‌র রসূল? তিনি বললেনঃ দুর্গম পিচ্ছিল স্থান। এর ওপর আংটা ও হুক থাকবে, শক্ত চওড়া উল্টো কাঁটা বিশিষ্ট হবে, যা নাজ্দ দেশের সাদান বৃক্ষের কাঁটার মত হবে। সে পুলের উপর দিয়ে ঈমানদারগণের কেউ পার হয়ে যাবে চোখের পলকের মতো, কেউ বিদ্যুতের মতো, কেউ বাতাসের মতো আবার কেউ দ্রুতগামী ঘোড়া ও সাওয়ারের মতো। তবে মুক্তিপ্রাপ্তরা কেউ নিরাপদে চলে আসবেন, আবার কেউ জাহান্নামের আগুনে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাবে। একবারে শেষে অতিক্রম করবে যে লোকটি, সে হেঁচড়িয়ে কোন ভাবে পার হয়ে আসবে। এখন তোমরা হকের বিষয়ে আমার চেয়ে অধিক কঠোর নও, যতটুকু সেদিন ঈমানদারগণ আল্লাহ্‌র সম্মুখে হয়ে থাকবে, যা তোমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে। যখন ঈমানদারগণ এ দৃশ্যটি দেখবে যে, তাদের ভাইদেরকে রেখে একমাত্র তারাই মুক্তি পেয়েছে, তখন তারা বলবে, হে আমাদের রব! আমাদের সেসব ভাই কোথায়, যারা আমাদের সঙ্গে সালাত আদায় করত, সওম পালন করত, নেক কাজ করত? তখন আল্লাহ্ তা’য়ালা তাদেরকে বলবেন, তোমরা যাও, যাদের অন্তরে এক দীনার পরিমান ঈমান পাবে, তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে আন। আল্লাহ্ তাদের মুখমণ্ডল জাহান্নামের ওপর হারাম করে দিয়েছেন। এদের কেউ কেউ দু’পা ও দু’পায়ের নলার বেশী পর্যন্ত জাহান্নামের মধ্যে থাকবে। তারা যাদেরকে চিনতে পারে, তাদেরকে বের করবে। তারপর এরা আবার ফিরে আসবে। আল্লাহ্ আবার তাদেরকে বলবেন, তোমরা যাও, যাদের অন্তরে অর্ধ দীনার পরিমাণ ঈমান পাবে, তাদেরকে বের করে নিয়ে আসবে। তারা গিয়ে তাদেরকেই বের করে নিয়ে আসবে, যাদেরকে তারা চিনতে পারবে। তারপর আবার ফিরে আসবে। আল্লাহ্ তাদেরকে আবার বলবেন, তোমরা যাও, যাদের অন্তরে অণু পরিমাণ ঈমান পাবে, তাদেরকে বের করে নিয়ে আসবে। তারা যাদেরকে চিনতে পারবে তাদেরকে বের করে নিয়ে আসবে। বর্ণনাকারী আবূ সা’ঈদ খুদ্রী (রাঃ) বলেন, তোমরা যদি আমাকে বিশ্বাস না কর, তাহলে আল্লাহর এ বাণীটি পড়ঃ “আল্লাহ অণু পরিমাণও যুল্ম করেন না, আর কোন পুণ্য কাজ হলে তাকে তিনি দ্বিগুণ করেন”- (সূরা আন্-নিসা ৪/৪০)। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), ফেরেশ্তা ও মু’মিনগণ সুপারিশ করবে। তখন মহা পরাক্রান্ত আল্লাহ্ বলবেন, এখন শুধু আমার শাফাআতই বাকী রয়েছে। তিনি জাহান্নাম থেকে একমুষ্টি ভরে এমন কতগুলো কওমকে বের করবেন যারা জ্বলে পুড়ে দগ্ধ হয়ে গিয়েছে। তারপর তাদেরকে জান্নাতের সম্মখে অবস্থিত ‘হায়াত’ নামের নহরে ঢালা হবে। তারা সে নহরের দু’পার্শ্বে এমনভাবে উদগত হবে, যেমন পাথর এবং গাছের কিনারে বয়ে আনা আবর্জনায় বীজ থেকে তৃণ উদগত হয়। দেখতে পাও তার মধ্যে সূর্যের আলোর অংশের গাছগুলো সাধারণত সবুজ হয়, ছায়ার অংশেরগুলো সাদা হয়। তারা সেখান থেকে মুক্তার দানার মত বের হবে। তাদের গর্দানে মোহর লাগানো হবে। জান্নাতে তারা যখন প্রবেশ করবে, তখন অন্যান্য জান্নাতবাসীরা বলবেন, এরা হলেন রহমান কর্তৃক আযাতকৃত যাদেরকে আল্লাহ্ কোন নেক ‘আমাল কিংবা কল্যাণকর কাজ ব্যতীতই জান্নাতে দাখিল করেছেন। তখন তাদেরকে বলা হবেঃ তোমরা যা দেখেছ, সবই তো তোমাদের, এর সঙ্গে আরো সমপরিমান তোমাদেরকে দেয়া হলো। [২২; মুসলিম ১/৮১, হাঃ ১৮৩, আহমাদ ১১১২৭] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৩২)

৭৪৪০
وَقَالَ حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ حَدَّثَنَا هَمَّامُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ يُحْبَسُ الْمُؤْمِنُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ حَتَّى يُهِمُّوا بِذَلِكَ فَيَقُولُونَ لَوْ اسْتَشْفَعْنَا إِلَى رَبِّنَا فَيُرِيحُنَا مِنْ مَكَانِنَا فَيَأْتُونَ آدَمَ فَيَقُولُونَ أَنْتَ آدَمُ أَبُو النَّاسِ خَلَقَكَ اللهُ بِيَدِهِ وَأَسْكَنَكَ جَنَّتَهُ وَأَسْجَدَ لَكَ مَلاَئِكَتَهُ وَعَلَّمَكَ أَسْمَاءَ كُلِّ شَيْءٍ لِتَشْفَعْ لَنَا عِنْدَ رَبِّكَ حَتَّى يُرِيحَنَا مِنْ مَكَانِنَا هَذَا قَالَ فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ قَالَ وَيَذْكُرُ خَطِيئَتَهُ الَّتِي أَصَابَ أَكْلَهُ مِنْ الشَّجَرَةِ وَقَدْ نُهِيَ عَنْهَا وَلَكِنْ ائْتُوا نُوحًا أَوَّلَ نَبِيٍّ بَعَثَهُ اللهُ إِلَى أَهْلِ الأَرْضِ فَيَأْتُونَ نُوحًا فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ وَيَذْكُرُ خَطِيئَتَهُ الَّتِي أَصَابَ سُؤَالَهُ رَبَّهُ بِغَيْرِ عِلْمٍ وَلَكِنْ ائْتُوا إِبْرَاهِيمَ خَلِيلَ الرَّحْمَنِ قَالَ فَيَأْتُونَ إِبْرَاهِيمَ فَيَقُولُ إِنِّي لَسْتُ هُنَاكُمْ وَيَذْكُرُ ثَلاَثَ كَلِمَاتٍ كَذَبَهُنَّ وَلَكِنْ ائْتُوا مُوسَى عَبْدًا آتَاهُ اللهُ التَّوْرَاةَ وَكَلَّمَهُ وَقَرَّبَهُ نَجِيًّا قَالَ فَيَأْتُونَ مُوسَى فَيَقُولُ إِنِّي لَسْتُ هُنَاكُمْ وَيَذْكُرُ خَطِيئَتَهُ الَّتِي أَصَابَ قَتْلَهُ النَّفْسَ وَلَكِنْ ائْتُوا عِيسَى عَبْدَ اللهِ وَرَسُولَهُ وَرُوحَ اللهِ وَكَلِمَتَهُ قَالَ فَيَأْتُونَ عِيسَى فَيَقُولُ لَسْتُ هُنَاكُمْ وَلَكِنْ ائْتُوا مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم عَبْدًا غَفَرَ اللهُ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ وَمَا تَأَخَّرَ فَيَأْتُونِي فَأَسْتَأْذِنُ عَلَى رَبِّي فِي دَارِهِ فَيُؤْذَنُ لِي عَلَيْهِ فَإِذَا رَأَيْتُهُ وَقَعْتُ سَاجِدًا فَيَدَعُنِي مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَدَعَنِي فَيَقُولُ ارْفَعْ مُحَمَّدُ وَقُلْ يُسْمَعْ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ وَسَلْ تُعْطَ قَالَ فَأَرْفَعُ رَأْسِي فَأُثْنِي عَلَى رَبِّي بِثَنَاءٍ وَتَحْمِيدٍ يُعَلِّمُنِيهِ ثُمَّ أَشْفَعُ فَيَحُدُّ لِي حَدًّا فَأَخْرُجُ فَأُدْخِلُهُمْ الْجَنَّةَ قَالَ قَتَادَةُ وَسَمِعْتُهُ أَيْضًا يَقُولُ فَأَخْرُجُ فَأُخْرِجُهُمْ مِنْ النَّارِ وَأُدْخِلُهُمْ الْجَنَّةَ ثُمَّ أَعُودُ الثَّانِيَةَ فَأَسْتَأْذِنُ عَلَى رَبِّي فِي دَارِهِ فَيُؤْذَنُ لِي عَلَيْهِ فَإِذَا رَأَيْتُهُ وَقَعْتُ سَاجِدًا فَيَدَعُنِي مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَدَعَنِي ثُمَّ يَقُولُ ارْفَعْ مُحَمَّدُ وَقُلْ يُسْمَعْ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ وَسَلْ تُعْطَ قَالَ فَأَرْفَعُ رَأْسِي فَأُثْنِي عَلَى رَبِّي بِثَنَاءٍ وَتَحْمِيدٍ يُعَلِّمُنِيهِ قَالَ ثُمَّ أَشْفَعُ فَيَحُدُّ لِي حَدًّا فَأَخْرُجُ فَأُدْخِلُهُمْ الْجَنَّةَ قَالَ قَتَادَةُ وَسَمِعْتُهُ يَقُولُ فَأَخْرُجُ فَأُخْرِجُهُمْ مِنْ النَّارِ وَأُدْخِلُهُمْ الْجَنَّةَ ثُمَّ أَعُودُ الثَّالِثَةَ فَأَسْتَأْذِنُ عَلَى رَبِّي فِي دَارِهِ فَيُؤْذَنُ لِي عَلَيْهِ فَإِذَا رَأَيْتُهُ وَقَعْتُ سَاجِدًا فَيَدَعُنِي مَا شَاءَ اللهُ أَنْ يَدَعَنِي ثُمَّ يَقُولُ ارْفَعْ مُحَمَّدُ وَقُلْ يُسْمَعْ وَاشْفَعْ تُشَفَّعْ وَسَلْ تُعْطَهْ قَالَ فَأَرْفَعُ رَأْسِي فَأُثْنِي عَلَى رَبِّي بِثَنَاءٍ وَتَحْمِيدٍ يُعَلِّمُنِيهِ قَالَ ثُمَّ أَشْفَعُ فَيَحُدُّ لِي حَدًّا فَأَخْرُجُ فَأُدْخِلُهُمْ الْجَنَّةَ قَالَ قَتَادَةُ وَقَدْ سَمِعْتُهُ يَقُولُ فَأَخْرُجُ فَأُخْرِجُهُمْ مِنْ النَّارِ وَأُدْخِلُهُمْ الْجَنَّةَ حَتَّى مَا يَبْقَى فِي النَّارِ إِلاَّ مَنْ حَبَسَهُ الْقُرْآنُ أَيْ وَجَبَ عَلَيْهِ الْخُلُودُ قَالَ ثُمَّ تَلاَ هَذِهِ الْآيَةَ {عَسَى أَنْ يَبْعَثَكَ رَبُّكَ مَقَامًا مَحْمُودًا} قَالَ وَهَذَا الْمَقَامُ الْمَحْمُودُ الَّذِي وُعِدَهُ نَبِيُّكُمْ صلى الله عليه وسلم

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ঈমানদারদেরকে ক্বিয়ামাতের দিন আবদ্ধ করে রাখা হবে। অবশেষে তারা অস্থির হয়ে যাবে এবং বলবে, আমরা যদি আমাদের রবের নিকট কারো দ্বারা শাফায়াত করাই যিনি আমাদের স্বস্তি দান করেন। তারপর তারা আদাম (আঃ) -এর কাছে এসে বলবে, আপনিই তো সে আদম, যিনি মনুষ্য জাতির পিতা, স্বয়ং আল্লাহ্ আপন হাত দিয়ে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। আপনাকে বসবাসের সুযোগ দিয়েছেন তাঁর জান্নাতে, ফেরেশতাদের দিয়ে আপনাকে সাজদাহ করিয়েছেন এবং আপনাকে সব জিনিসের নাম শিক্ষা দিয়েছেন। আমাদের এ জায়গা থেকে মুক্তি লাভের জন্য আপনার সেই রবের কাছে শাফাআত করুন। তখন আদাম (আঃ) বলবেন, আমি তোমাদের এ কাজের জন্য নই। নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এরপর তিনি নিষেধকৃত গাছের ফল খাওয়ার ভুলের কথাটি উল্লেখ করবেন। তিনি বলবেন, বরং তোমরা নূহ (আঃ) -এর কাছে যাও, যিনি পৃথিবীবাসীদের জন্য প্ররিত নবীগনের মধ্যে প্রথম নবী। তারপর তারা নূহ (আঃ) -এর কাছে এলে তিনি তাদেরকে বলবেন, আমি তোমাদের এ কাজের জন্য নই। আর তিনি না জেনে তাঁর রবের কাছে প্রার্থনার ভুলের কথাটি উল্লেখ করবেন এবং বলবেন বরং তোমরা রাহমানের একনিষ্ট বন্ধু ইবরাহীমের কাছে যাও। নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ অতঃপর তারা ইবরাহীম (আঃ) -এর কাছে আসবে। তখন ইবরাহীম (আঃ) বলবেন, আমি তোমাদের এ কাজের জন্য নই। আর তিনি এমন তিনটি কথা উল্লেখ করবেন যেগুলো আসল ব্যাপারের উল্টো ছিল। পরে বলবেন, তোমরা বরং মূসা (আঃ) -এর কাছে যাও তিনি আল্লাহ্‌র এমন এক বান্দা যাঁকে আল্লাহ্ তাওরাত দিয়েছিলেন, তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন এবং গোপন কথাবার্তার মাধ্যমে তাঁকে নৈকট্য দান করেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ সবাই তখন মূসা (আঃ) -এর কাছে আসবে। তিনিও বলবেন, আমি তোমাদের এ কাজের জন্য নই। এবং তিনি হত্যার ভুলের কথা উল্লেখ করবেন। তিনি বলবেন, তোমরা বরং ‘ঈসা (আঃ) -এর কাছে যাও। যিনি আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রসূল এবং তাঁর রূহ ও বাণী। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তারা সবাই তখন ‘ঈসা (আঃ) -এর কাছে আসবে। ‘ঈসা (আঃ) বলবেন, আমি তোমাদের এ কাজের জন্য নই। তিনি বলবেন, তোমরা বরং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে যাও। তিনি আল্লাহর এমন এক বান্দা যাঁর আগের ও পরের ভুল তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তখন তারা আমার কাছে আসবে। আমি তখন আমার রবের কাছে তাঁর নিকট হাযির হবার অনুমতি চাইব। আমাকে তাঁর কাছে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হবে। তাঁর দর্শন লাভের সঙ্গে সঙ্গে আমি সিজদায় পড়ে যাবো। তিনি আমাকে সে হালতে যতক্ষণ চাইবেন রাখবেন। অতঃপর আল্লাহ্‌ বলবেন, মুহাম্মাদ! মাথা ওঠান; বলুন, আপনার কথা শোনা হবে, শাফাআত করুন, কবূল করা হবে, চান, আপনাকে দেয়া হবে। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তখন আমি আমার মাথা ওঠাবো। তারপর আমি আমার প্রতিপালকের এমন স্তব ও স্তুতি করবো যা তিনি আমাকে শিখিয়ে দেবেন। অতঃপর আমি সুপারিশ করবো, তবে আমার জন্য একটা সীমা নির্দিষ্ট করে দেয়া হবে। ‘আমি বের হয়ে তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবো। বর্ণনাকারী ক্বাতাদাহ (রহঃ) বলেন, আমি আনাস (রাঃ) -কে এ কথাও বলতে শুনেছি যে, আমি বের হবো এবং তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করবো এবং জান্নাতে প্রবেশ করাব। তারপর আমি ফিরে এসে আমার প্রতিপালকের নিকট হাযির হওয়ার অনুমতি চাইব। আমাকে অনুমতি দেয়া হবে। আমি তাঁকে দেখার পর সিজদায় পড়ে যাব। আল্লাহ্ যতক্ষণ চাইবেন, আমাকে সে হালাতে রাখবেন। তারপর বলবেন, মুহাম্মাদ! মাথা উঠান। বলুন, শোনা হবে, শাফা’আত করুন, কবূল করা হবে, চান, দেয়া হবে। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তারপর আমি আমার মাথা উঠাবো। আমার রবের এমন স্তব ও স্তুতি করব, যা তিনি আমাকে শিখিয়ে দিবেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এরপর আমি শাফাআত করব, আমার জন্য একটা সীমা নির্দিষ্ট করা হবে। আমি বের হয়ে তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাব। বর্ণনাকারী ক্বাতাদাহ (রহঃ) বলেন, আমি আনাস (রাঃ) -কে বলতে শুনেছি, নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তখন আমি বের হব এবং তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করব এবং জান্নাতে প্রবেশ করাব। তারপর তৃতীয়বারের মত ফিরে আসব এবং আমার রবের নিকট প্রবেশ করার অনুমতি চাইব। আমাকে অনুমতি দেয়া হবে। আমি তাকে দেখার পর সিজদায় পড়ে যাব। আল্লাহ্ আমাকে সে হালাতে রাখবেন, যতক্ষণ চাইবেন। অতঃপর আল্লাহ্ বলবেন, মুহাম্মাদ! মাথা উঠান এবং বলুন, শোনা হবে, সুপারিশ করুন, কবূল করা হবে, চান, দেয়া হবে। রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি মাথা উঠিয়ে আমার রবের এমন স্তব ও স্তুতি করব, যা তিনি আমাকে শিখিয়ে দেবেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ এরপর আমি শাফাআত করব, আমার জন্য একটা সীমা নির্দিষ্ট করা হবে। তারপর আমি বের হয়ে তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাব। বর্ণনাকারী ক্বাতাদাহ (রহঃ) বলেন, আমি আনাস (রাঃ) -কে বলতে শুনেছি, নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমি সেখান থেকে বের হয়ে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে জান্নাতে প্রবেশ করাব। অবশেষে জাহান্নামে বাকী থাকবে কেবল তারা, কুরআন যাদেরকে আটকে রেখেছে। অর্থাৎ যাদের ওপর জাহান্নামের চিরবাস ওয়াজিব হয়ে পড়েছে। আনাস (রাঃ) বলেন, তিনি কুরআনের এ আয়াত তিলাওয়াত করলেনঃ “শীঘ্রই তোমার প্রতিপালক তোমাকে প্রশংসিত স্থানে উন্নীত করবেন”-(সূরা ইসরা ১৭/৭৯) এবং তিনি বললেন এটিই হচ্ছে, তোমাদের নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর জন্য প্রতিশ্রুত ‘মাকামে মাহমূদ’। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৩২)

৭৪৪১
عُبَيْدُ اللهِ بْنُ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنِي عَمِّي حَدَّثَنَا أَبِي عَنْ صَالِحٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ قَالَ حَدَّثَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَرْسَلَ إِلَى الأَنْصَارِ فَجَمَعَهُمْ فِي قُبَّةٍ وَقَالَ لَهُمْ اصْبِرُوا حَتَّى تَلْقَوْا اللهَ وَرَسُولَهُ فَإِنِّي عَلَى الْحَوْضِ

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনসারদের কাছে (লোক) পাঠালেন। তাদেরকে একটা তাঁবুর মধ্যে সমবেত করলেন এবং তাদের বললেনঃ তোমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সঙ্গে সাক্ষাত পর্যন্ত ধৈর্য ধরবে। কারণ আমি হাওযের (কাউসারের) নিকটেই থাকব। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৩৩)

৭৪৪২
ثَابِتُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ سُلَيْمَانَ الأَحْوَلِ عَنْ طَاوُسٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا تَهَجَّدَ مِنْ اللَّيْلِ قَالَ اللهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ قَيِّمُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ رَبُّ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ وَلَكَ الْحَمْدُ أَنْتَ نُورُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمَنْ فِيهِنَّ أَنْتَ الْحَقُّ وَقَوْلُكَ الْحَقُّ وَوَعْدُكَ الْحَقُّ وَلِقَاؤُكَ الْحَقُّ وَالْجَنَّةُ حَقٌّ وَالنَّارُ حَقٌّ وَالسَّاعَةُ حَقٌّ اللهُمَّ لَكَ أَسْلَمْتُ وَبِكَ آمَنْتُ وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْكَ خَاصَمْتُ وَبِكَ حَاكَمْتُ فَاغْفِرْ لِي مَا قَدَّمْتُ وَمَا أَخَّرْتُ وَأَسْرَرْتُ وَأَعْلَنْتُ وَمَا أَنْتَ أَعْلَمُ بِهِ مِنِّي لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ

قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ قَالَ قَيْسُ بْنُ سَعْدٍ وَأَبُو الزُّبَيْرِ عَنْ طَاوُسٍ قَيَّامُ وَقَالَ مُجَاهِدٌ الْقَيُّومُ الْقَائِمُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ وَقَرَأَ عُمَرُ الْقَيَّامُ وَكِلاَهُمَا مَدْحٌ

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহ ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাতে যখন তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করতেন, তখন বলতেনঃ হে আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্! সব প্রশংসা একমাত্র আপনারই, আসমান ও যমীনের পরিচালক আপনিই এবং আপনারই জন্য সব স্তুতি। আসমান ও যমীন এবং এসবের মাঝের সবকিছুর প্রতিপালক আপনিই এবং আপনারই জন্য সব প্রশংসা। আসমান যমীন ও এগুলোর মধ্যকার সব কিছুর নূর আপনিই। আপনি সত্য, আপনার বাণী সত্য, আপনার ওয়াদা সত্য, আপনার সাক্ষাত সত্য, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য এবং ক্বিয়ামাত সত্য। হে আল্লাহ্! আপনারই জন্য আমি ইসলাম কবূল করেছি এবং আপনারই প্রতি ঈমান এনেছি, আপনারই ওপর ভরসা করেছি, আপনারই কাছে মোকদ্দমা সোপর্দ করেছি, আপনারই কাছে ফায়সালা চেয়েছি। তাই আপনি আমার আগের ও পিছের গোপন, প্রকাশ্য এবং যা আপনি আমার চেয়ে অধিক জানেন তা সবই ক্ষমা করে দিন। আপনি ব্যতীত কোন ইলাহ্‌ নেই।

বর্ণনাকারী তাঊস (রহ.) থেকে কায়স ইবনু সা‘দ (রহ.) এবং আবূ যুবায়র (রহ.) قَيّمُ -এর স্থলে قَيَّامُ বর্ণনা করেছেন। বর্ণনাকারী মুজাহিদ বলেন قَيّومُ সবকিছুর পরিচালককে বলা হয়ে থাকে। ‘উমার (রাঃ) قَيَّامُ পড়েছেন। মূলত শব্দ দু’টিই প্রশংসার জন্য ব্যবহৃত হয়। [১১২০] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৩৪)

৭৪৪৩
يُوسُفُ بْنُ مُوسَى حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ حَدَّثَنِي الأَعْمَشُ عَنْ خَيْثَمَةَ عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا مِنْكُمْ مِنْ أَحَدٍ إِلاَّ سَيُكَلِّمُهُ رَبُّهُ لَيْسَ بَيْنَهُ وَبَيْنَهُ تُرْجُمَانٌ وَلاَ حِجَابٌ يَحْجُبُهُ

আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকের সঙ্গে শীঘ্রই তার প্রতিপালক কথা বলবেন, তখন প্রতিপালক ও তার মাঝে কোন অনুবাদক ও আড়াল করে এমন পর্দা থাকবে না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৩৫)

৭৪৪৪
عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ الصَّمَدِ عَنْ أَبِي عِمْرَانَ عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ قَيْسٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ جَنَّتَانِ مِنْ فِضَّةٍ آنِيَتُهُمَا وَمَا فِيهِمَا وَجَنَّتَانِ مِنْ ذَهَبٍ آنِيَتُهُمَا وَمَا فِيهِمَا وَمَا بَيْنَ الْقَوْمِ وَبَيْنَ أَنْ يَنْظُرُوا إِلَى رَبِّهِمْ إِلاَّ رِدَاءُ الْكِبْرِ عَلَى وَجْهِهِ فِي جَنَّةِ عَدْنٍ

কায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেছেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দু’টি জান্নাত এমন হবে, সেগুলোর পানপাত্র ও তার ভিতরের সব কিছুই হবে রূপার। আর দু’টি জান্নাত এমন হবে, সেগুলোর পানপাত্র ও তার ভিতরের সবকিছুই হবে সোনার। জান্নাতে আদ্‌নে তাদের ও তাদের রব্বের দর্শনের মাঝে তাঁর চেহারার উপর অহংকারের চাদর ব্যতীত আর কোন কিছু আড়াল থাকবে না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৩৬)

৭৪৪৫
الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ أَعْيَنَ وَجَامِعُ بْنُ أَبِي رَاشِدٍ عَنْ أَبِي وَائِلٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ اقْتَطَعَ مَالَ امْرِئٍ مُسْلِمٍ بِيَمِينٍ كَاذِبَةٍ لَقِيَ اللهَ وَهُوَ عَلَيْهِ غَضْبَانُ قَالَ عَبْدُ اللهِ ثُمَّ قَرَأَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِصْدَاقَهُ مِنْ كِتَابِ اللهِ جَلَّ ذِكْرُهُ {إِنَّ الَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ اللهِ وَأَيْمَانِهِمْ ثَمَنًا قَلِيلاً أُولَئِكَ لاَ خَلاَقَ لَهُمْ فِي الْآخِرَةِ وَلاَ يُكَلِّمُهُمْ اللهُ} الْآيَةَ

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক মিথ্যা শপথ করে কোন মুসলিমের সম্পদ আত্মসাৎ করবে, সে ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ্‌র সঙ্গে মিলিত হবে এমন অবস্থায় যে, তিনি তার ওপর রাগান্বিত থাকবেন। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কথার সত্যায়নে আল্লাহ্‌র কিতাবের আয়াত তিলাওয়াত করেনঃ “নিশ্চয় যারা আল্লাহ্‌র সাথে কৃত অঙ্গীকার এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করে, এরা আখিরাতের নি’আমাতের কোন অংশই পাবে না এবং আল্লাহ ক্বিয়ামাতের দিন তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না…..” (সূরাহ আলু ‘ইমরান ৩/৭৭)। [২৩৫৬] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৩৭)

৭৪৪৬
عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ثَلاَثَةٌ لاَ يُكَلِّمُهُمْ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِمْ رَجُلٌ حَلَفَ عَلَى سِلْعَةٍ لَقَدْ أَعْطَى بِهَا أَكْثَرَ مِمَّا أَعْطَى وَهُوَ كَاذِبٌ وَرَجُلٌ حَلَفَ عَلَى يَمِينٍ كَاذِبَةٍ بَعْدَ الْعَصْرِ لِيَقْتَطِعَ بِهَا مَالَ امْرِئٍ مُسْلِمٍ وَرَجُلٌ مَنَعَ فَضْلَ مَاءٍ فَيَقُولُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ الْيَوْمَ أَمْنَعُكَ فَضْلِي كَمَا مَنَعْتَ فَضْلَ مَا لَمْ تَعْمَلْ يَدَاكَ

আবূ হুরাইরাই (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিন রকমের মানুষ, যাদের সঙ্গে ক্বিয়ামাতের দিন আল্লাহ্ কথা বলবেন না এবং তাদের দিকে তাকাবেন না। যে লোক তার মালের উপর এ মিথ্যা কসম করে যে, একে এখন যে মূল্যে বিক্রি করা হলো এর চেয়ে অধিক মূল্যে তা বিক্রয় করা যাচ্ছিল। (২) যে লোক কোন মুসলিমের মাল আত্মসাৎ করার জন্য ‘আসরের সলাতের পর মিথ্যা শপথ করে। (৩) এক লোক সে, যে প্রয়োজনের বেশি পানি আটকিয়ে রাখে। আল্লাহ্ তাকে উদ্দেশ্য করে ক্বিয়ামাতের দিন বলবেন, আজ আমি আমার অনুগ্রহ থেকে তোমাকে বঞ্চিত করব, যেমনি তুমি সেই অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত করতে যা তোমার হাতে অর্জিত নয়। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৩৮)

৭৪৪৭
مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ عَنْ مُحَمَّدٍ عَنْ ابْنِ أَبِي بَكْرَةَ عَنْ أَبِي بَكْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ الزَّمَانُ قَدْ اسْتَدَارَ كَهَيْئَتِهِ يَوْمَ خَلَقَ اللهُ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ السَّنَةُ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ثَلاَثٌ مُتَوَالِيَاتٌ ذُو الْقَعْدَةِ وَذُو الْحَجَّةِ وَالْمُحَرَّمُ وَرَجَبُ مُضَرَ الَّذِي بَيْنَ جُمَادَى وَشَعْبَانَ أَيُّ شَهْرٍ هَذَا قُلْنَا اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ فَسَكَتَ حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ يُسَمِّيهِ بِغَيْرِ اسْمِهِ قَالَ أَلَيْسَ ذَا الْحَجَّةِ قُلْنَا بَلَى قَالَ أَيُّ بَلَدٍ هَذَا قُلْنَا اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ فَسَكَتَ حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ سَيُسَمِّيهِ بِغَيْرِ اسْمِهِ قَالَ أَلَيْسَ الْبَلْدَةَ قُلْنَا بَلَى قَالَ فَأَيُّ يَوْمٍ هَذَا قُلْنَا اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ فَسَكَتَ حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ سَيُسَمِّيهِ بِغَيْرِ اسْمِهِ قَالَ أَلَيْسَ يَوْمَ النَّحْرِ قُلْنَا بَلَى قَالَ فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ قَالَ مُحَمَّدٌ وَأَحْسِبُهُ قَالَ وَأَعْرَاضَكُمْ عَلَيْكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا فِي بَلَدِكُمْ هَذَا فِي شَهْرِكُمْ هَذَا وَسَتَلْقَوْنَ رَبَّكُمْ فَيَسْأَلُكُمْ عَنْ أَعْمَالِكُمْ أَلاَ فَلاَ تَرْجِعُوا بَعْدِي ضُلاَّلاً يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ أَلاَ لِيُبْلِغْ الشَّاهِدُ الْغَائِبَ فَلَعَلَّ بَعْضَ مَنْ يَبْلُغُهُ أَنْ يَكُونَ أَوْعَى لَهُ مِنْ بَعْضِ مَنْ سَمِعَهُ فَكَانَ مُحَمَّدٌ إِذَا ذَكَرَهُ قَالَ صَدَقَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ قَالَ أَلاَ هَلْ بَلَّغْتُ أَلاَ هَلْ بَلَّغْتُ

আবূ বাকরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ বাকরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ আসমান ও যমীনকে যেদিন সৃষ্টি করেছিলেন, সেদিনের অবস্থায় যামানা আবার ফিরে এসেছে। বার মাসে এক বছর হয়। তার মধ্যে চারটি মাস মর্যাদাসম্পন্ন। যুলকাদা, যুলহাজ্জা ও মুহাররম- এ তিন মাস এক নাগাড়ে আসে। আর মুযার গোত্রের রজব মাস যা জুমাদা ও শা’বান মাসের মধ্যে। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এটি কোন্ মাস? আমরা বললাম, আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলই ভালো জানেন। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুপ থাকলেন যার জন্য আমরা ভেবেছিলাম, তিনি এই নামটি পাল্টিয়ে অন্য কোন নাম রাখবেন। তিনি বললেন, এটি কি যুলহাজ্জা নয়? আমরা উত্তর করলাম, হ্যাঁ, এটি যুলহাজ্জার মাস। তিনি বললেনঃ এটি কোন্ শহর? আমরা বললাম, আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলই অধিক জানেন। তিনি নীরব রইলেনঃ আমরা ভেবেছিলাম, তিনি হয়ত শহরটির নাম বদলিয়ে অন্য নাম রাখবেন। তিনি বললেনঃ এটি কি সেই শহরটি নয়? আমরা উত্তর করলাম, হ্যাঁ। তারপর তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, আজকের এ দিনটি কোন্ দিন? আমরা উত্তর করলাম, আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলই অধিক জানেন। তিনি চুপ থাকলেন, যার জন্য আমরা ভাবলাম তিনি সম্ভবত এর নামটা বদলে দেবেন। তিনি বললেনঃ এটা কি কুরবানীর দিন নয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বললেনঃ তোমাদের রক্ত এবং সম্পদ বর্ণনাকারী মুহাম্মাদ ইব্‌নু সীরীন (রহঃ) বলেছেন, আমার ধারণা হচ্ছে, আবূ বকরা (রাঃ) ‘তোমাদের ইয্যত’ কথাটিও বর্ণনা করেছিলেন, অর্থাৎ ওসব এ পবিত্র দিনে, এ পবিত্র শহরে, এ পবিত্র মাসটির মত পবিত্র ও মর্যাদাসম্পন্ন। শীঘ্রই তোমরা তোমাদের রব্বের সাক্ষাত লাভ করবে। তখন তিনি তোমাদেরকে তোমাদের ‘আমাল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন। সাবধান, আমার মৃত্যুর পর তোমরা পথভ্রষ্ট হয়ে একে অপরকে হত্যা করো না। সাবধান! উপস্থিতগণ অনুপস্থিত লোকদের কাছে (কথাগুলো) পৌছে দেবে। কেননা, হয়ত যার কাছে পৌছে দেয়া হবে, তাদের মাঝে এমন ব্যক্তিও থাকবে, যারা শ্রবণকারীর চেয়ে অধিক সংরক্ষণকারী হবে। মুহাম্মাদ ইব্‌নু সীরীন (রহঃ) যখন এ হাদীসটি বর্ণনা করতেন, তখন বলতেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্যিই বলেছিলেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ জেনে রেখো, আমি পৌছিয়ে দিয়েছি কি? জেনে রেখো পৌছিয়ে দিয়েছি কি?(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৩৯)

৯৭/২৫. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌র রাহমাত নেক্‌কারদের নিকটবর্তী। (সূরা আল-আ’রাফ ৭/৫৬)

৭৪৪৮
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا عَاصِمٌ عَنْ أَبِي عُثْمَانَ عَنْ أُسَامَةَ قَالَ كَانَ ابْنٌ لِبَعْضِ بَنَاتِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَقْضِي فَأَرْسَلَتْ إِلَيْهِ أَنْ يَأْتِيَهَا فَأَرْسَلَ إِنَّ لِلَّهِ مَا أَخَذَ وَلَهُ مَا أَعْطَى وَكُلٌّ إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى فَلْتَصْبِرْ وَلْتَحْتَسِبْ فَأَرْسَلَتْ إِلَيْهِ فَأَقْسَمَتْ عَلَيْهِ فَقَامَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقُمْتُ مَعَهُ وَمُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ وَأُبَيُّ بْنُ كَعْبٍ وَعُبَادَةُ بْنُ الصَّامِتِ فَلَمَّا دَخَلْنَا نَاوَلُوا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم الصَّبِيَّ وَنَفْسُهُ تَقَلْقَلُ فِي صَدْرِهِ حَسِبْتُهُ قَالَ كَأَنَّهَا شَنَّةٌ فَبَكَى رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ أَتَبْكِي فَقَالَ إِنَّمَا يَرْحَمُ اللهُ مِنْ عِبَادِهِ الرُّحَمَاءَ

উসামাহ ইব্‌নু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কোন এক কন্যার এক ছেলের মৃত্যু উপস্থিত হলে তাঁর কন্যা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে যাওয়ার জন্য একজন লোক পাঠালেন। উত্তরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোক পাঠিয়ে জানালেনঃ আল্লাহ্ যা নিয়ে নেন আর যা দেন সবই তাঁরই জন্য। আর প্রতিটির বস্তুর জন্য একটা সময়সীমা নির্দিষ্ট আছে। কাজেই সে যেন ধৈর্য ধরে এবং অবশ্যই সওয়াবের আশা করে। তারপর নবী-কন্যা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে যাওয়ার জন্য কসম দিয়ে আবার লোক পাঠালেন। তিনি যাওয়ার জন্য ওঠে দাঁড়ালেন। বর্ণনাকারী উসামাহ ইব্‌নু যায়দ (রাঃ) বলেন, আমি, মু’আয ইব্‌নু জাবাল, উবাই ইব্‌ন কা’ব, ‘উবাদাহ ইব্‌নু সামিতও তাঁর সঙ্গে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ালাম। আমরা সেখানে গিয়ে প্রবেশ করলে তখন তারা শিশুটিকে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে দিলেন। আর তখন বাচ্চার বুকের মধ্যে এক অস্বস্তি বোধ হচ্ছিল। বর্ণনাকারী বলেন, আমার ধারণা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বলেছিলেনঃ এ তো যেন মশকের মত। এরপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাঁদলেন। তা দেখে সা’দ ইব্‌নু ‘উবাদাহ (রাঃ) বললেন, আপনি কাঁদছেন? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ তাঁর দয়ালু বান্দাদের উপরই দয়া করেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৪০)

৭৪৪৯
عُبَيْدُ اللهِ بْنُ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ حَدَّثَنَا أَبِي عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ اخْتَصَمَتْ الْجَنَّةُ وَالنَّارُ إِلَى رَبّهِمَا فَقَالَتْ الْجَنَّةُ يَا رَبِّ مَا لَهَا لاَ يَدْخُلُهَا إِلاَّ ضُعَفَاءُ النَّاسِ وَسَقَطُهُمْ وَقَالَتْ النَّارُ يَعْنِي أُوثِرْتُ بِالْمُتَكَبِّرِينَ فَقَالَ اللهُ تَعَالَى لِلْجَنَّةِ أَنْتِ رَحْمَتِي وَقَالَ لِلنَّارِ أَنْتِ عَذَابِي أُصِيبُ بِكِ مَنْ أَشَاءُ وَلِكُلِّ وَاحِدَةٍ مِنْكُمَا مِلْؤُهَا قَالَ فَأَمَّا الْجَنَّةُ فَإِنَّ اللهَ لاَ يَظْلِمُ مِنْ خَلْقِهِ أَحَدًا وَإِنَّهُ يُنْشِئُ لِلنَّارِ مَنْ يَشَاءُ فَيُلْقَوْنَ فِيهَا فَ تَقُولُ هَلْ مِنْ مَزِيدٍ ثَلاَثًا حَتَّى يَضَعَ فِيهَا قَدَمَهُ فَتَمْتَلِئُ وَيُرَدُّ بَعْضُهَا إِلَى بَعْضٍ وَتَقُولُ قَطْ قَطْ قَطْ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জান্নাত ও জাহান্নাম উভয়েই স্বীয় রবের নিকট অভিযোগ করল। জান্নাত বলল, হে আমার প্রতিপালক! আমার ব্যপারটি কী যে তাতে শুধু নিঃস্ব ও নিম্ন শেণীর লোকেরাই প্রবেশ করবে। এদিকে জাহান্নামও অভিযোগ করল অর্থাৎ আপনি শুধুমাত্র অহংকারীদেরকেই আমাতে প্রাধান্য দিলেন। আল্লাহ্ জান্নাতকে লক্ষ্য করে বললেন, তুমি আমার রহমত। জাহান্নামকে বললেন, তুমি আমার আযাব। আমি যাকে চাইব, তোমাকে দিয়ে শাস্তি পৌঁছাব। তোমাদের উভয়কেই পূর্ণ করা হবে। তবে আল্লাহ্ তাঁর সৃষ্টির কারো উপর যুলুম করবেন না। তিনি জাহান্নামের জন্য নিজ ইচ্ছানুযায়ী নতুন সৃষ্টি সৃষ্টি করবেন। তাদেরকে যখন জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে, তখন জাহান্নাম বলবে, আরো অতিরিক্ত আছে কি? জাহান্নামে আরো নিক্ষেপ করা হবে, তখনো বলবে, আরো অতিরিক্ত আছে কি? এভাবে তিনবার বলবে। অবশেষে আল্লাহ্ তাঁর পা জাহান্নামে প্রবেশ করিয়ে দিলে তা পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। তখন জাহান্নামের একটি অংশ অন্য অংশকে এ উত্তর করবে- আর নয়, আর নয়, আর নয়। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৪১)

৭৪৫০
حَفْصُ بْنُ عُمَرَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَيُصِيبَنَّ أَقْوَامًا سَفْعٌ مِنْ النَّارِ بِذُنُوبٍ أَصَابُوهَا عُقُوبَةً ثُمَّ يُدْخِلُهُمْ اللهُ الْجَنَّةَ بِفَضْلِ رَحْمَتِهِ يُقَالُ لَهُمْ الْجَهَنَّمِيُّونَ

وَقَالَ هَمَّامٌ قَتَادَةُ حَدَّثَنَا أَنَسٌ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কতকগুলো সম্প্রদায় তাদের গুনাহের কারণে শাস্তি হিসেবে জাহান্নামের আগুনে পৌছবে। অতঃপর আল্লাহ্ নিজ রাহমাতে তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেবেন। তাদেরকে ‘জাহান্নামী’ বলা হবে।

হাম্মাম (রহঃ)….আনাস (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে উক্ত হাদীস বর্ণনা করেছেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৪২)

৯৭/২৬. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহই আসমান ও যমীনকে স্থির রাখেন যাতে ও দু’টো টলে না যায়। (সূরা ফাতির ৩৫/৪১)

৭৪৫১
مُوسَى حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ جَاءَ حَبْرٌ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ إِنَّ اللهَ يَضَعُ السَّمَاءَ عَلَى إِصْبَعٍ وَالأَرْضَ عَلَى إِصْبَعٍ وَالْجِبَالَ عَلَى إِصْبَعٍ وَالشَّجَرَ وَالأَنْهَارَ عَلَى إِصْبَعٍ وَسَائِرَ الْخَلْقِ عَلَى إِصْبَعٍ ثُمَّ يَقُولُ بِيَدِهِ أَنَا الْمَلِكُ فَضَحِكَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ {وَمَا قَدَرُوا اللهَ حَقَّ قَدْرِهِ}

আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ইয়াহূদী বিদ্বান রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে বলল, হে মুহাম্মাদ! আল্লাহ্ ক্বিয়ামাতের দিন আসমানকে এক আঙ্গুলের ওপর, পৃথিবীকে এক আঙ্গুলের ওপর, পর্বতরাজিকে এক আঙ্গুলের ওপর, বৃক্ষলতা ও নদীনালাকে এক আঙ্গুলের ওপর এবং সকল সৃষ্টিকে এক আঙ্গুলের ওপর রেখে দেবেন। এবং নিজ হাতে ইশারা দিয়ে বলবেন, সম্রাট একমাত্র আমিই। এতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাসলেন এবং বললেনঃ তারা আল্লাহ্‌র যথাযোগ্য মর্যাদা উপলব্ধি করেনি- (সূরা আন’আম ৬/৯১)। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৪৩)

৯৭/২৭. অধ্যায়ঃ
আসমান, যমীন ইত্যাদির সৃষ্টি সম্পর্কে; এটি রব্বের কাজ ও নির্দেশ।

وَهُوَ فِعْلُ الرَّبِّ تَبَارَكَ وَتَعَالَى وَأَمْرُهُ فَالرَّبُّ بِصِفَاتِهِ وَفِعْلِهِ وَأَمْرِهِ وَكَلاَمِهِ وَهُوَ الْخَالِقُ الْمُكَوِّنُ غَيْرُ مَخْلُوقٍ وَمَا كَانَ بِفِعْلِهِ وَأَمْرِهِ وَتَخْلِيقِهِ وَتَكْوِينِهِ فَهُوَ مَفْعُولٌ مَخْلُوقٌ مُكَوَّنٌ

অতএব রব্ব তাঁর গুণাবলী, কাজ, আদেশ ও কালামসহ তিনি স্রষ্টা ও অস্তিত্বদানকারী। তিনি সৃষ্ট নন। তাঁর কাজ, আদেশ ও সৃষ্টি এবং অস্তিত্ব দানে যা হয়, তা হলো কর্ম, সৃষ্ট ও অস্তিত্ব লাভকারী বস্তু।

৭৪৫২
سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ أَخْبَرَنِي شَرِيكُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي نَمِرٍ عَنْ كُرَيْبٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ بِتُّ فِي بَيْتِ مَيْمُونَةَ لَيْلَةً وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عِنْدَهَا لِأَنْظُرَ كَيْفَ صَلاَةُ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِاللَّيْلِ فَتَحَدَّثَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَعَ أَهْلِهِ سَاعَةً ثُمَّ رَقَدَ فَلَمَّا كَانَ ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ أَوْ بَعْضُهُ قَعَدَ فَنَظَرَ إِلَى السَّمَاءِ فَقَرَأَ {إِنَّ فِي خَلْقِ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ} إِلَى قَوْلِهِ {لِأُولِي الأَلْبَابِ} ثُمَّ قَامَ فَتَوَضَّأَ وَاسْتَنَّ ثُمَّ صَلَّى إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً ثُمَّ أَذَّنَ بِلاَلٌ بِالصَّلاَةِ فَصَلَّى رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ خَرَجَ فَصَلَّى لِلنَّاسِ الصُّبْحَ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি একবার মাইমূনাহ (রাঃ) -এর ঘরে রাত কাটালাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কাছে ছিলেন। রাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সালাত কেমন হয় তা দেখার জন্য। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পরিবারের সঙ্গে কিছু সময় কথা বললেন এবং ঘুমিয়ে পড়লেন। এরপর যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ কিংবা শেষের কিছু অংশ বাকী থাকল, তিনি উঠে বসলেন এবং আসমানের দিকে তাকিয়ে তিলাওয়াত করলেনঃ আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে….বোধশক্তিসম্পন্ন লোকদের জন্য- (সূরা আল্ ‘ইমরান ৩/১৯০)। তারপর তিনি উঠে গিয়ে ওযূ ও মিস্ওয়াক করলেন। অতঃপর এগার রাক’আত সালাত আদায় করলেন। বিলাল (রাঃ) (ফজরের) সলাতের আযান দিলে তিনি দু’রাক’আত সালাত পড়ে নিলেন। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হয়ে সহাবাদেরকে ফজরের (দু’রাক’আত) সালাত পড়িয়ে দিলেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৪৪)

৯৭/২৮. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্‌ তা’আলার বানীঃ আমার প্রেরিত বান্দাদের সম্পর্কে আমার এ কথা আগেই স্থির হয়ে গেছে। (সূরা আস্‌ সাফফাত ৩৭/১৭১)

৭৪৫৩
إِسْمَاعِيلُ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَمَّا قَضَى اللهُ الْخَلْقَ كَتَبَ عِنْدَهُ فَوْقَ عَرْشِهِ إِنَّ رَحْمَتِي سَبَقَتْ غَضَبِي

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা যখন (সৃষ্টির) কাজ সম্পন্ন করলেন, তখন তাঁর নিকট তাঁর আরশের ওপর লিখে দিলেন, “আমার রহমত আমার ক্রোধকে ছাড়িয়ে গেছে”।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৪৫)

৭৪৫৪
آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ سَمِعْتُ زَيْدَ بْنَ وَهْبٍ سَمِعْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ مَسْعُودٍ حَدَّثَنَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ الصَّادِقُ الْمَصْدُوقُ أَنَّ خَلْقَ أَحَدِكُمْ يُجْمَعُ فِي بَطْنِ أُمِّهِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا أَوْ أَرْبَعِينَ لَيْلَةً ثُمَّ يَكُونُ عَلَقَةً مِثْلَهُ ثُمَّ يَكُونُ مُضْغَةً مِثْلَهُ ثُمَّ يُبْعَثُ إِلَيْهِ الْمَلَكُ فَيُؤْذَنُ بِأَرْبَعِ كَلِمَاتٍ فَيَكْتُبُ رِزْقَهُ وَأَجَلَهُ وَعَمَلَهُ وَشَقِيٌّ أَمْ سَعِيدٌ ثُمَّ يَنْفُخُ فِيهِ الرُّوحَ فَإِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ حَتَّى لاَ يَكُونُ بَيْنَهَا وَبَيْنَهُ إِلاَّ ذِرَاعٌ فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ فَيَدْخُلُ النَّارَ وَإِنَّ أَحَدَكُمْ لَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهَا وَبَيْنَهُ إِلاَّ ذِرَاعٌ فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ فَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَيَدْخُلُهَا

আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু মাস’ঊদ (র) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যিনি ‘সত্যবাদী’ এবং ‘সত্যবাদী বলে স্বীকৃত’ আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন যে, তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টি হলো এমন বীর্য থেকে যাকে মায়ের পেটে চল্লিশ দিন কিংবা চল্লিশ রাত একত্রিত রাখা হয়। তারপর তেমনি সময়ে আলাক হয়, তারপর তেমনি সময়ে গোশতপিণ্ডে পরিণত হয়। তারপর আল্লাহ্ তার কাছে ফেরেশতা প্রেরণ করেন। এই ফেরেশতাকে চারটি বিষয় সম্পর্কে লেখার করার জন্য হুকুম দেয়া হয়। যার ফলে ফেরেশতা তার রিযক, ‘আমাল, আয়ু এবং দুর্ভাগা কিংবা ভাগ্যবান হওয়া সম্পর্কে লিখে দেয়। তারপর তার মধ্যে প্রাণ ফুঁকে দেয়া হয়। এজন্যই তোমাদের কেউ জান্নাতীদের ‘আমাল করে এতটুকু এগিয়ে যায় যে, তার ও জান্নাতের মাঝে কেবল এক গজের দূরত্ব থাকতেই তার উপর লিখিত তাক্দীর প্রবল হয়ে যায়। তখন সে জাহান্নামীদের মত ‘আমাল করে। শেষে সে জাহান্নামে প্রবেশ করে। আবার তোমাদের কেউ জাহান্নামীদের মত ‘আমাল করে এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, তার ও জাহান্নামের মাঝে মাত্র এক গজের দূরত্ব থাকতে তার উপর তাকদীরের লেখা প্রবল হয়, ফলে সে জান্নাতীদের মত ‘আমাল করে, শেষে জান্নাতেই প্রবেশ করে। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৪৬)

৭৪৫৫
خَلاَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ ذَرٍّ سَمِعْتُ أَبِي يُحَدِّثُ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ يَا جِبْرِيلُ مَا يَمْنَعُكَ أَنْ تَزُورَنَا أَكْثَرَ مِمَّا تَزُورُنَا فَنَزَلَتْ {وَمَا نَتَنَزَّلُ إِلاَّ بِأَمْرِ رَبِّكَ لَهُ مَا بَيْنَ أَيْدِينَا وَمَا خَلْفَنَا} إِلَى آخِرِ الْآيَةِ قَالَ كَانَ هَذَا الْجَوَابَ لِمُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিবরাঈলকে জিজ্ঞেস করলেন, হে জিব্রীল! আপনি আমাদের সঙ্গে যে পরিমাণ সাক্ষাত করেন, তার চেয়ে বেশী সাক্ষাত করতে কিসে বাধা দেয়? এরই প্রেক্ষাপটে কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল হয়ঃ (ফেরেশতাগণ বলেন) ‘আমরা আপনার প্রতিপালকের হুকুম ছাড়া অবতরণ করি না, যা আমাদের সামনে আছে, আর যা আমাদের পেছনে আছে আর এ দু’য়ের মাঝে যা আছে তা তাঁরই, আপনার প্রতিপালক কক্ষনো ভুলে যান না। (সুরাহ মারইয়াম ১৯/৬৪)। ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এটি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর প্রশ্নের উত্তর।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৪৭৪)

৭৪৫৬
يَحْيَى حَدَّثَنَا وَكِيعٌ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللهِ قَالَ كُنْتُ أَمْشِي مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي حَرْثٍ بِالْمَدِينَةِ وَهُوَ مُتَّكِئٌ عَلَى عَسِيبٍ فَمَرَّ بِقَوْمٍ مِنْ الْيَهُودِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ سَلُوهُ عَنْ الرُّوحِ وَقَالَ بَعْضُهُمْ لاَ تَسْأَلُوهُ عَنْ الرُّوحِ فَسَأَلُوهُ فَقَامَ مُتَوَكِّئًا عَلَى الْعَسِيبِ وَأَنَا خَلْفَهُ فَظَنَنْتُ أَنَّهُ يُوحَى إِلَيْهِ فَقَالَ {وَيَسْأَلُونَكَ عَنْ الرُّوحِ قُلْ الرُّوحُ مِنْ أَمْرِ رَبِّي وَمَا أُوتِيتُمْ مِنْ الْعِلْمِ إِلاَّ قَلِيلاً} فَقَالَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ قَدْ قُلْنَا لَكُمْ لاَ تَسْأَلُوهُ

আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সঙ্গে মদিনায় একটি কৃষিক্ষেত দিয়ে চলছিলাম। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন একটি খেজুরের ডালের উপর ভর দিয়ে চলছিলেন। তারপর তিনি যখন ইয়াহূদীদের এক কাওমের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তারা একে অপরকে বলতে লাগল, তাঁকে রূহ্‌ সম্পর্কে জিজ্ঞেস কর। আবার কেঊ কেঊ বলল, তাঁকে কিছু জিজ্ঞেস করো না। শেষে তাঁরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে রূহ্‌ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। তারপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খেজুরের শাখার ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন। তখন আমি তাঁর পেছনেই ছিলাম। আমি ভাবছিলাম, তাঁর ওপর ওয়াহী অবতীর্ণ হচ্ছে। পরে তিনি বললেনঃ “তোমাকে তারা রূহ্‌ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বল, ‘রূহ্‌ হচ্ছে আমার প্রতিপালকের হুকুমের অন্তর্ভুক্ত (একটি হুকুম)। এ সম্পর্কে তোমাকে অতি সামান্য জ্ঞানই দেয়া হয়েছে।” – (সুরাহ ইসরা ১৭/৮৫)। তখন তাদের একজন আরেকজনকে বলতে লাগল, বলেছিলাম তোমাদেরকে তাঁকে কোন প্রশ্ন করো না।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৪৮)

৭৪৫৭
إِسْمَاعِيلُ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ تَكَفَّلَ اللهُ لِمَنْ جَاهَدَ فِي سَبِيلِهِ لاَ يُخْرِجُهُ إِلاَّ الْجِهَادُ فِي سَبِيلِهِ وَتَصْدِيقُ كَلِمَاتِهِ بِأَنْ يُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ أَوْ يَرْجِعَهُ إِلَى مَسْكَنِهِ الَّذِي خَرَجَ مِنْهُ مَعَ مَا نَالَ مِنْ أَجْرٍ أَوْ غَنِيمَةٍ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্‌র রাস্তায় জিহাদের নিয়্যতে যে লোক বের হয়, আর আল্লাহ্‌র রাস্তায় জিহাদ এবং তাঁর কলেমার বিশ্বাসই যদি তাকে বের করে থাকে, এমন লোকের জন্য আল্লাহ্ স্বয়ং যিম্মাদার হয়ে যান। হয়তো তাকে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, নচেৎ যে জায়গা থেকে সে বের হয়েছিল সওয়াব কিংবা গনীমতসহ তাকে সে জায়গায় ফিরিয়ে আনবেন।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৪৯)

৭৪৫৮
مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ أَبِي وَائِلٍ عَنْ أَبِي مُوسَى قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ الرَّجُلُ يُقَاتِلُ حَمِيَّةً وَيُقَاتِلُ شَجَاعَةً وَيُقَاتِلُ رِيَاءً فَأَيُّ ذَلِكَ فِي سَبِيلِ اللهِ قَالَ مَنْ قَاتَلَ لِتَكُونَ كَلِمَةُ اللهِ هِيَ الْعُلْيَا فَهُوَ فِي سَبِيلِ اللهِ

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে এসে বলল, কেউ যুদ্ধ করে মর্যাদার জন্য, কেউ বীরত্বের জন্য, কেউ লোক দেখানোর জন্য। এদের কার যুদ্ধটা আল্লাহ্‌র পথে হচ্ছে? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যে লোক আল্লাহ্‌র বাণীকে উর্দ্ধে তুলে ধরার জন্য যুদ্ধ করে, সেটাই আল্লাহ্‌র পথে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৫০)

৯৭/২৯. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কোন বিষয়ে আমি ইচ্ছে করলে বলি, ‘হয়ে যাও’, ফলে তা হয়ে যায়। (সূরা আন্‌-নাহল ১৬/৪০)

৭৪৫৯
شِهَابُ بْنُ عَبَّادٍ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ حُمَيْدٍ عَنْ إِسْمَاعِيلَ عَنْ قَيْسٍ عَنْ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لاَ يَزَالُ مِنْ أُمَّتِي قَوْمٌ ظَاهِرِينَ عَلَى النَّاسِ حَتَّى يَأْتِيَهُمْ أَمْرُ اللهِ

মুগীরাহ ইব্‌নু শু‘বাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, আমার উম্মাতের মধ্যে সব সময় এমন একটি দল থাকবে, যারা আল্লাহ্‌র হুকুম আসা পর্যন্ত অন্যান্য লোকের বিরুদ্ধে জয়ী থাকবে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৪১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৫১)

৭৪৬০
الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ حَدَّثَنَا ابْنُ جَابِرٍ حَدَّثَنِي عُمَيْرُ بْنُ هَانِئٍ أَنَّهُ سَمِعَ مُعَاوِيَةَ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ لاَ يَزَالُ مِنْ أُمَّتِي أُمَّةٌ قَائِمَةٌ بِأَمْرِ اللهِ مَا يَضُرُّهُمْ مَنْ كَذَّبَهُمْ وَلاَ مَنْ خَالَفَهُمْ حَتَّى يَأْتِيَ أَمْرُ اللهِ وَهُمْ عَلَى ذَلِكَ فَقَالَ مَالِكُ بْنُ يُخَامِرَ سَمِعْتُ مُعَاذًا يَقُولُ وَهُمْ بِالشَّأْمِ فَقَالَ مُعَاوِيَةُ هَذَا مَالِكٌ يَزْعُمُ أَنَّهُ سَمِعَ مُعَاذًا يَقُولُ وَهُمْ بِالشَّأْمِ

মু’আবীয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, আমার উম্মাত হতে একটি দল সব সময় আল্লাহ্‌র হুকুমের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। যারা তাদেরকে মিথ্যুক সাব্যস্ত করতে চাইবে কিংবা বিরোধিতা করবে, তারা এদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। ক্বিয়ামাত আসা পর্যন্ত তারা এ অবস্থায় থাকবে। মালিক ইব্‌নু ইয়ুখামির (রাঃ) বলেন, আমি মু’আয (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, তাঁরা হবে সিরিয়ার লোক।

মু’আবিয়াহ (রাঃ) বলেন, মালিক ইব্‌নু ইয়ুখামির (রাঃ) বলেন, তিনি মু’আয (রাঃ) -কে বলতে শুনেছেন, তাঁরা হবে সিরিয়ার।(আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৪২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৫২)

৭৪৬১
أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي حُسَيْنٍ حَدَّثَنَا نَافِعُ بْنُ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ وَقَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى مُسَيْلِمَةَ فِي أَصْحَابِهِ فَقَالَ لَوْ سَأَلْتَنِي هَذِهِ الْقِطْعَةَ مَا أَعْطَيْتُكَهَا وَلَنْ تَعْدُوَ أَمْرَ اللهِ فِيكَ وَلَئِنْ أَدْبَرْتَ لَيَعْقِرَنَّكَ اللهُ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার মুসায়লামার কাছে একটু অবস্থান করলেন। তখন সে তার সঙ্গীদের মধ্যে ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তুমি যদি আমার কাছে এ টুকরাটিও চাও, তা হলে আমি তোমাকে তাও তো দিচ্ছি না। তোমার সম্পর্কে আল্লাহ্ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা তুমি এড়াতে পারবে না। আর যদি তুমি ফিরে যাও, তা হলে আল্লাহ্ স্বয়ং তোমাকে ধ্বংস করে দেবেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৪৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৫৩)

৭৪৬২
مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ عَنْ عَبْدِ الْوَاحِدِ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ ابْنِ مَسْعُودٍ قَالَ بَيْنَا أَنَا أَمْشِي مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي بَعْضِ حَرْثِ الْمَدِينَةِ وَهُوَ يَتَوَكَّأُ عَلَى عَسِيبٍ مَعَهُ فَمَرَرْنَا عَلَى نَفَرٍ مِنْ الْيَهُودِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لِبَعْضٍ سَلُوهُ عَنْ الرُّوحِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لاَ تَسْأَلُوهُ أَنْ يَجِيءَ فِيهِ بِشَيْءٍ تَكْرَهُونَهُ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لَنَسْأَلَنَّهُ فَقَامَ إِلَيْهِ رَجُلٌ مِنْهُمْ فَقَالَ يَا أَبَا الْقَاسِمِ مَا الرُّوحُ فَسَكَتَ عَنْهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَعَلِمْتُ أَنَّهُ يُوحَى إِلَيْهِ فَقَالَ {وَيَسْأَلُونَكَ عَنْ الرُّوحِ قُلْ الرُّوحُ مِنْ أَمْرِ رَبِّي وَمَا أُوتُوا مِنْ الْعِلْمِ إِلاَّ قَلِيلاً} قَالَ الأَعْمَشُ هَكَذَا فِي قِرَاءَتِنَا

আব্দুল্লাহ্ ইব্‌নু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে মাদ্বীনাহ্য় এক কৃষিক্ষেত কিংবা অনাবাদী জায়গা দিয়ে যাচ্ছিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের সঙ্গে রাখা একটা খেজুরের শাখার উপর ভর দিয়ে চলছিলেন। তারপর আমরা একদল ইয়াহূদীকে অতিক্রম করছিলাম। তাদের একে অন্যকে বলতে লাগল, তাঁকে রূহ্ সম্পর্কে জিজ্ঞেস কর। আবার তাদের কেউ কেউ বলল, তাঁকে জিজ্ঞেস করো না। হয়তো তিনি এমন বিষয় উপস্থাপন করবেন, যা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয় লাগবে। তা সত্ত্বেও তাদের কেউ বলে উঠল, আমরা অবশ্যই তাঁকে জিজ্ঞেস করব। অতঃপর তাদের একজন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দিকে এগিয়ে প্রশ্ন করল, হে আবুল কাসিম! রূহ্ কী? এতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুপ থাকলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি তখন বুঝতে পেরেছিলাম, তাঁর প্রতি ওয়াহী নাযিল হচ্ছে, এরপর তিনি পড়লেনঃ ‘‘তোমাকে তারা রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বল, ‘রূহ হচ্ছে আমার প্রতিপালকের হুকুমের অন্তর্ভুক্ত (একটি হুকুম)। এ সম্পর্কে তোমাকে অতি সামান্য জ্ঞানই দেয়া হয়েছে।’’- (সূরাহ ইসরা ১৭/৮৫)। আ‘মাশ বললেন, আয়াতে وَمَا أُوتُواআমাদের কিরাআতে এমনটাই আছে। [১২৫] (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৪৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৫৪)

৯৭/৩০. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্‌র বাণীঃ

বল, ‘সমুদ্রগুলো যদি আমার প্রতিপালকের কথা লেখার জন্য কালি হয়ে যায়, তবে আমার প্রতিপালকের কথা লেখা শেষ হওয়ার আগেই সমুদ্র অবশ্যই নিঃশেষ হয়ে যাবে, আমি যদি এর সাহায্যের জন্য আরো এত পরিমাণ সমুদ্র নিয়ে আসি তবুও।’ (সূরা কাহাফ ১৮/১০৯)। আল্লাহ্‌র বাণীঃ দুনিয়ার সব গাছ যদি কলম হয় আর সমুদ্র (কালি হয়) আর তার সাথে আরো সাত সমুদ্র যুক্ত হয়, তবুও আল্লাহ্‌র (প্রশংসার) কথা (লেখা) শেষ হবে না। – (সূরা লুক্বমান ৩১/২৭)। আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ যিনি ছয় দিনে আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর আরশে সমুন্নত হয়েছেন। দিনকে তিনি রাতের পর্দা দিয়ে ঢেকে দেন, তারা একে অন্যকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে এবং সূর্য, চন্দ্র, তারকারাজি তাঁরই আজ্ঞাবহ। জেনে রেখ, সৃষ্টি তাঁর, হুকুমও (চলবে) তাঁর, মহীয়ান, গরীয়ান আল্লাহ বিশ্বজগতের প্রতিপালক- (সূরা আল-আ’রাফ ৭/৫৪)। (—) অর্থ (—) অধীন করে দেয়া।

৭৪৬৩
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ تَكَفَّلَ اللهُ لِمَنْ جَاهَدَ فِي سَبِيلِهِ لاَ يُخْرِجُهُ مِنْ بَيْتِهِ إِلاَّ الْجِهَادُ فِي سَبِيلِهِ وَتَصْدِيقُ كَلِمَتِهِ أَنْ يُدْخِلَهُ الْجَنَّةَ أَوْ يَرُدَّهُ إِلَى مَسْكَنِهِ بِمَا نَالَ مِنْ أَجْرٍ أَوْ غَنِيمَةٍ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ্‌র পথে জিহাদের নিয়্যত নিয়ে যে লোক বের হবে এবং আল্লাহ্‌র পথে জিহাদ এবং তাঁর কলেমার প্রতি বিশ্বাস ব্যতীত অন্য কিছু তাকে তার ঘর থেকে বের করেনি, তবে এমন লোকের জন্য আল্লাহ্ যামিন হয়ে যান। হয়তো তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেবেন, নইলে সে যে সওয়াব ও গনীমাত হাসিল করেছে, তা সহ তাকে তার বাসস্থানে ফিরিয়ে আনবেন। (আধুনিক প্রকাশনী- ৬৯৪৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৯৫৫)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]