সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস ইলম অধ্যায় হাদিস নং ৫৯ – ১০০

৩/১. অধ্যায়ঃ
‘ইল্‌মের ফযীলাত

আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ “তোমাদের মধ্যে যারা ঈমানদার আল্লাহ তা‘আলা তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেবেন এবং তাদেরকেও (বাড়িয়ে দিবেন) যাদেরকে ইল্‌ম দেয়া হয়েছে। আর আল্লাহ তোমাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে পূর্ণ অবগত আছেন”-(সূরা আল-মুজাদালাহ্‌ ৫৮/১১)।

মহান আল্লাহর বাণীঃ رَبِّ زِدْنِيْ عِلْمًا “হে আমার প্রতিপালক! আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দাও।” (সূরা তোয়াহা ২০/১১৪)

৩/২. অধ্যায়ঃ
আলোচনায় রত অবস্থায় ইল্‌ম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে আলোচনা শেষ করার পর প্রশ্নকারীর উত্তর দেয়া

৫৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ، قَالَ حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ، ح وَحَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُلَيْحٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، حَدَّثَنِي هِلاَلُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ بَيْنَمَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي مَجْلِسٍ يُحَدِّثُ الْقَوْمَ جَاءَهُ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ مَتَى السَّاعَةُ فَمَضَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُحَدِّثُ، فَقَالَ بَعْضُ الْقَوْمِ سَمِعَ مَا قَالَ، فَكَرِهَ مَا قَالَ، وَقَالَ بَعْضُهُمْ بَلْ لَمْ يَسْمَعْ، حَتَّى إِذَا قَضَى حَدِيثَهُ قَالَ ‏”‏ أَيْنَ ـ أُرَاهُ ـ السَّائِلُ عَنِ السَّاعَةِ ‏”‏‏.‏ قَالَ هَا أَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَإِذَا ضُيِّعَتِ الأَمَانَةُ فَانْتَظِرِ السَّاعَةَ ‏”‏‏.‏ قَالَ كَيْفَ إِضَاعَتُهَا قَالَ ‏”‏ إِذَا وُسِّدَ الأَمْرُ إِلَى غَيْرِ أَهْلِهِ فَانْتَظِرِ السَّاعَةَ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ একদা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মজলিসে জনসম্মুখে কিছু আলোচনা করছিলেন। ইতোমধ্যে তাঁর নিকট জনৈক বেদুঈন এসে জিজ্ঞেস করলো, ‘ক্বিয়ামত কখন সংঘটিত হবে?’ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর আলোচনায় রত থাকলেন। এতে কেউ কেউ বললেন, লোকটি যা বলেছে তিনি তা শুনেছেন কিন্তু তার কথা পছন্দ করেননি। আর কেউ কেউ বললেন বরং তিনি শুনতেই পাননি। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আলোচনা শেষে বললেনঃ ‘ক্বিয়ামাত সম্পর্কে প্রশ্নকারী লোকটি কোথায়?’ সে বলল, ‘এই যে আমি, হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেনঃ “ যখন কোন অনুপযুক্ত ব্যক্তির উপর কোন কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়, তখন তুমি ক্বিয়ামতের অপেক্ষা করবে। ”

(৬৪৯৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৫৭)

৩/৩. অধ্যায়ঃ
উচ্চৈঃস্বরে ‘ইল্‌মের আলোচনা।

৬০
حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، عَارِمُ بْنُ الْفَضْلِ قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ تَخَلَّفَ عَنَّا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي سَفْرَةٍ سَافَرْنَاهَا، فَأَدْرَكَنَا وَقَدْ أَرْهَقَتْنَا الصَّلاَةُ وَنَحْنُ نَتَوَضَّأُ، فَجَعَلْنَا نَمْسَحُ عَلَى أَرْجُلِنَا، فَنَادَى بِأَعْلَى صَوْتِهِ ‏ “‏ وَيْلٌ لِلأَعْقَابِ مِنَ النَّارِ ‏”‏‏.‏ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا‏.‏

‘আব্দুল্লাহ্‌ ইব্‌নু আম্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন এক সফরে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের পিছনে পড়ে গেলেন। পরে তিনি আমাদের নিকট পৌঁছলেন, এদিকে আমরা (আসরের) সালাত আদায় করতে বিলম্ব করে ফেলেছিলাম এবং আমরা উযূ করছিলাম। আমরা আমাদের পা কোনমতে পানি দ্বারা ভিজিয়ে নিচ্ছিলাম। তিনি উচ্চৈঃস্বরে বললেনঃ পায়ের গোড়ালিগুলোর (শুকনো থাকার) জন্য জাহান্নামের ‘আযাব রয়েছে। তিনি দু’বার বা তিনবার এ কথা বললেন।

(৯৬, ১৬৩; মুসলিম ২/৯ হাঃ ২৪১, আহমাদ ৬৮২৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৫৮)

৩/৪. অধ্যায়ঃ
মুহাদ্দিসের উক্তিঃ হাদ্দাসানা, আখবারানা ও আম্বাআনা

‘হুমাইদী (রহঃ) [১] বর্ণনা করেন যে, ইব্‌ন ‘উয়াইনা (রহঃ)-এর মতে انبأنا,حدّثنا,اخبرنا،سمعت একই অর্থবোধক। ইব্‌ন মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন, حَدَّثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ الصَّادِقُ الْمَصْدُوقُ অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন; আর তিনি সত্যবাদী এবং সত্যবাদীরূপে স্বীকৃত’। শাকীক (রহঃ) আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَلِمَةً ’ অর্থাৎ ‘আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে এরূপ উক্তি শুনেছি’………। হুযাইফা (রাঃ) বলেন, حَدَّثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَدِيثَيْنِ অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের কাছে দু’টি হাদীস বর্ণনা করেছেন।’ আবুল ‘আলিয়া (রহঃ) ইব্‌ন ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, يَرْوِيهِ عَنْ رَبِّهِ عَزَّ وَجَلَّ ’ অর্থাৎ ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে, তিনি তাঁর রব থেকে বর্ণনা করেন’………। আনাস (রাঃ) বলেন, عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيمَا يَرْوِي عَنْ رَبِّهِ অর্থাৎ ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে, তিনি বর্ণনা করেন তাঁর রব থেকে’………। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, عنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَرْوِيهِ عَنْ رَبِّكُمْ عَزَّ وَجَلَّ অর্থাৎ ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে, তিনি তোমাদের মহিমাময় ও সুমহান রব থেকে বর্ণনা করেন’……।

৬১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ إِنَّ مِنَ الشَّجَرِ شَجَرَةً لاَ يَسْقُطُ وَرَقُهَا، وَإِنَّهَا مَثَلُ الْمُسْلِمِ، فَحَدِّثُونِي مَا هِيَ ‏”‏‏.‏ فَوَقَعَ النَّاسُ فِي شَجَرِ الْبَوَادِي‏.‏ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ وَوَقَعَ فِي نَفْسِي أَنَّهَا النَّخْلَةُ، فَاسْتَحْيَيْتُ ثُمَّ قَالُوا حَدِّثْنَا مَا هِيَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏”‏ هِيَ النَّخْلَةُ ‏”‏‏.‏

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা বললেনঃ গাছগাছালির মধ্যে এমন একটি গাছ আছে যার পাতা ঝরে না। আর তা মুসলিমের উদাহরণ, তোমরা আমাকে অবগত করো ‘সেটি কি গাছ?’ তখন লোকেরা জঙ্গলের বিভিন্ন গাছ-গাছালির নাম ধারণা করতে লাগলো। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, ‘আমার ধারণা হলো, সেটা হবে খেজুর গাছ।’ কিন্তু (আমি ছোট থাকার কারণে) তা বলতে লজ্জা পাচ্ছিলাম। অতঃপর সাহাবীগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমাদের বলে দিন সেটি কি গাছ?’ তিনি বললেনঃ ‘তা হচ্ছে খেজুর গাছ।’

(৬২, ৭২, ১৩১, ২২০৯, ৪৬৯৮, ৫৪৪৪, ৫৪৪৮, ৬১২২, ৬১৪৪; মুসলিম ৫০/১৫ হাঃ ২৮১১, আহমাদ ৬৪৭৭) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫৯,ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৫৯)

[১] ইমাম বুখারীর মতে এগুলো হাদীস রিওয়ায়াতের সমার্থক পারিভাষিক শব্দ; মুহাদ্দিসগণের মধ্য এ সম্বন্ধে মতভেদ আছে।

৩/৫. অধ্যায়ঃ
শিষ্যদের জ্ঞান যাচাইয়ের উদ্দেশে শিক্ষকের কোন বিষয় উত্থাপন করা

৬২
حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ إِنَّ مِنَ الشَّجَرِ شَجَرَةً لاَ يَسْقُطُ وَرَقُهَا، وَإِنَّهَا مَثَلُ الْمُسْلِمِ، حَدِّثُونِي مَا هِيَ ‏”‏‏.‏ قَالَ فَوَقَعَ النَّاسُ فِي شَجَرِ الْبَوَادِي‏.‏ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ فَوَقَعَ فِي نَفْسِي أَنَّهَا النَّخْلَةُ، ثُمَّ قَالُوا حَدِّثْنَا مَا هِيَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏”‏ هِيَ النَّخْلَةُ ‏”‏‏.‏

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা বললেনঃ ‘গাছ-গাছালির মধ্যে এমন একটি গাছ রয়েছে যার পাতা ঝরে পড়ে না। আর তা মুসলিমের উদাহরণ। তোমরা আমাকে বলো, ‘সেটি কী গাছ?’ রাবী বলেন, তখন লোকেরা জঙ্গলের বিভিন্ন গাছ-গাছালির নাম ধারণা করতে লাগলো। ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, ‘আমার ধারণা হলো, সেটা হবে খেজুর গাছ।’ কিন্তু আমি (ছোট থাকার কারণে) তা বলতে লজ্জা পাচ্ছিলাম। অতঃপর সাহাবীগণ (রাঃ) বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনি আমাদের বলে দিন সেটি কী গাছ?’ তিনি বললেনঃ ‘তা হচ্ছে খেজুর গাছ।’

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৬০)

৩/৬. অধ্যায়ঃ
হাদীস অধ্যয়ন ও মুহাদ্দিসের নিকট বর্ণনা করা

হাসান (বসরী), সুফিয়ান সাউরী এবং মালিক (রহঃ)-এর মতে মুহাদ্দিসের সম্মুখে পাঠ করা বৈধ। কতিপয় মুহাদ্দিস উস্তাদের সামনে পাঠ করার স্বপক্ষে যিমাম ইব্‌নু সা‘লাবা (রাঃ)-এর হাদীস বর্ণনা করেন। তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলেছিলেন, ‘আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করার সম্বন্ধে আল্লাহ আপনাকে কী নির্দেশ দিয়েছেন?’ তিনি বললেনঃ ‘হ্যাঁ’। রাবী বলেন, এগুলো আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সম্মুখে পাঠ করা। যিমাম (রাঃ) তাঁর গোত্রের নিকট এ নির্দেশগুলো অবগত করেন এবং তাঁরা তা গ্রহণ করেন। (ইমাম) মালিক (রহঃ) তাঁর মতের সমর্থনে লিখিত দলীলকে প্রমাণ হিসেবে বর্ননা করেন, যা লোকদের সামনে পাঠ করা হলে তারা বলে, ‘অমুক আমাদের সাক্ষী বানিয়েছেন।’ শিক্ষকের সামনে পাঠ করে পাঠক বলে, ‘অমুক আমাকে পড়িয়েছেন।’

হাসান বসরী (রহঃ) বতে বর্ণিত। তিনি বলেন, শিক্ষকের সামনে শিষ্যদের পাঠ করাতে কোন দ্বিধা নেই। ‘উবায়দুল্লাহ ইব্‌নু মূসা (রহঃ) সুফিয়ান (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, যখন মুহাদ্দিসের সম্মুখে (কোন হাদীস) পাঠ করা হয় তখন হাদ্দাসানী (তিনি আমার নিকট হাদীস বর্ণনা করেছেন) বলায় কোন আপত্তি নেই। বর্ণনাকারী বলেন, আমি আবূ ‘আসিমকে মালিক ও সুফিয়ান (রহঃ) হতে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, ‘শিক্ষকের সামনে পাঠ করা এবং শিক্ষকের নিজে পাঠ করা একই পর্যায়ভুক্ত।’ (আ.প্র. ৬১, ই.ফা. ৬১)

৬৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ سَعِيدٍ ـ هُوَ الْمَقْبُرِيُّ ـ عَنْ شَرِيكِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي نَمِرٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ بَيْنَمَا نَحْنُ جُلُوسٌ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي الْمَسْجِدِ، دَخَلَ رَجُلٌ عَلَى جَمَلٍ فَأَنَاخَهُ فِي الْمَسْجِدِ، ثُمَّ عَقَلَهُ، ثُمَّ قَالَ لَهُمْ أَيُّكُمْ مُحَمَّدٌ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مُتَّكِئٌ بَيْنَ ظَهْرَانَيْهِمْ‏.‏ فَقُلْنَا هَذَا الرَّجُلُ الأَبْيَضُ الْمُتَّكِئُ‏.‏ فَقَالَ لَهُ الرَّجُلُ ابْنَ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ قَدْ أَجَبْتُكَ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ الرَّجُلُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنِّي سَائِلُكَ فَمُشَدِّدٌ عَلَيْكَ فِي الْمَسْأَلَةِ فَلاَ تَجِدْ عَلَىَّ فِي نَفْسِكَ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ سَلْ عَمَّا بَدَا لَكَ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ أَسْأَلُكَ بِرَبِّكَ وَرَبِّ مَنْ قَبْلَكَ، آللَّهُ أَرْسَلَكَ إِلَى النَّاسِ كُلِّهِمْ فَقَالَ ‏”‏ اللَّهُمَّ نَعَمْ ‏”‏‏.‏ قَالَ أَنْشُدُكَ بِاللَّهِ، آللَّهُ أَمَرَكَ أَنْ نُصَلِّيَ الصَّلَوَاتِ الْخَمْسَ فِي الْيَوْمِ وَاللَّيْلَةِ قَالَ ‏”‏ اللَّهُمَّ نَعَمْ ‏”‏‏.‏ قَالَ أَنْشُدُكَ بِاللَّهِ، آللَّهُ أَمَرَكَ أَنْ نَصُومَ هَذَا الشَّهْرَ مِنَ السَّنَةِ قَالَ ‏”‏ اللَّهُمَّ نَعَمْ ‏”‏‏.‏ قَالَ أَنْشُدُكَ بِاللَّهِ، آللَّهُ أَمَرَكَ أَنْ تَأْخُذَ هَذِهِ الصَّدَقَةَ مِنْ أَغْنِيَائِنَا فَتَقْسِمَهَا عَلَى فُقَرَائِنَا فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ اللَّهُمَّ نَعَمْ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ الرَّجُلُ آمَنْتُ بِمَا جِئْتَ بِهِ، وَأَنَا رَسُولُ مَنْ وَرَائِي مِنْ قَوْمِي، وَأَنَا ضِمَامُ بْنُ ثَعْلَبَةَ أَخُو بَنِي سَعْدِ بْنِ بَكْرٍ‏.‏ رَوَاهُ مُوسَى وَعَلِيُّ بْنُ عَبْدِ الْحَمِيدِ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ ثَابِتٍ عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا‏.‏

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ একদা আমরা মসজিদে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন জনৈক ব্যক্তি সওয়ার অবস্থায় প্রবেশ করলো। মসজিদে (প্রাঙ্গণে) সে তার উটটি বসিয়ে (বেঁধে) দিলো। অতঃপর সাহাবীদের লক্ষ্য করে বললো, ‘তোমাদের মধ্যে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন ব্যক্তি?’ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন তাদের সামনেই হেলান দিয়ে উপবিষ্ট ছিলেন। আমরা বললাম, ‘এই হেলান দিয়ে উপবিষ্ট ফর্সা ব্যক্তিটিই হলেন তিনি।’

অতঃপর লোকটি তাঁকে লক্ষ্য করে বললো, ‘হে আবদুল মুত্তালিবের পুত্র!’ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেনঃ ‘আমি তোমার উত্তর দিচ্ছি? লোকটি বললো, ‘আমি আপনাকে কিছু জিজ্ঞেস করবো এবং সে প্রশ্ন করার ব্যাপারে কঠোর হব, এতে আপনি আমার প্রতি অসন্তুষ্ট হবেন না।’ ‘তিনি বললেন, ‘তোমার যা মনে চায় জিজ্ঞেস করো।’

সে বললো, ‘আমি আপনাকে স্বীয় প্রতিপালক এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতিপালকের শপথ দিয়ে জিজ্ঞেস করছি, আল্লাহ কি আপনাকে সমগ্র মানবকূলের প্রতি রসূলরূপে প্রেরণ করেছেন?’ তিনি বললেনঃ ‘আল্লাহ সাক্ষী, হ্যাঁ।’ সে বললো, ‘আমি আপনাকে আল্লাহর শপথ দিয়ে বলছি, আল্লাহই কি আপনাকে দিনে রাতে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের আদেশ দিয়েছেন?’ তিনি বললেনঃ ‘আল্লাহ সাক্ষী, হ্যাঁ।’ সে বললো, ‘আমি আপনাকে আল্লাহর শপথ দিয়ে বলছি, আল্লাহই কি আপনাকে বছরের এ মাসে (রমযান) সিয়াম পালনের আদেশ দিয়েছেন?’ তিনি বললেনঃ ‘আল্লাহ সাক্ষী, হ্যাঁ।’ সে বললো, ‘আমি আপনাকে আল্লাহর শপথ দিয়ে বলছি, আল্লাহই কি আপনাকে আদেশ দিয়েছেন, আমাদের ধনীদের থেকে এসব সদাক্বাহ (যাকাত) আদায় করে দরিদ্রদের মাঝে বন্টন করে দিতে?’ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘আল্লাহ সাক্ষী, হ্যাঁ।’ অতঃপর লোকটি বললো, ‘আমি বিশ্বাস স্থাপন করলাম আপনি যা (যে শরী‘য়াত) এনেছেন তার উপর। আর আমি আমার গোত্রের রেখে আসা লোকজনের পক্ষে প্রতিনিধি, আমার নাম যিমাম ইব্‌নু সা‘লাবা, বানী সা‘আদ ইব্‌নু বক্‌র গোত্রের একজন।’

মূসা ও ‘আলী ইব্‌নু আবদুল হামীদ (রহঃ)….আনাস (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এরূপ বর্ণনা করেছেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৬২)

৩/৭. অধ্যায়ঃ
শায়খ কর্তৃক ছাত্রকে হাদীসের কিতাব প্রদান এবং ‘আলিম কর্তৃক ‘ইলমের কথা লিখে বিভিন্ন দেশে প্রেরণ।

আনাস (রাঃ) বলেন, ‘উসমান (রাঃ) কুরআন করীমের বহু কপি তৈরী করিয়ে বিভিন্ন দেশে পাঠান। ‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ), ইয়াহইয়া ইব্‌নু সা’ঈদ ও মালিক (রহঃ) এটাকে জায়েয মনে করেন। কোন কোন হিজাযবাসী ছাত্রকে হাদীস বর্ণনার অনুমতি প্রদানের ব্যাপারে নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এ হাদীস দিয়ে দলীল পেশ করেন যে, তিনি একটি সেনাদলের প্রধানকে একখানি পত্র দেন এবং তাঁকে বলে দেন, অমুক অমুক স্থানে না পৌঁছা পর্যন্ত এটা পড়ো না। অতঃপর তিনি যখন সে স্থানে পৌঁছলেন, তখন লোকের সামনে তা পড়ে শোনান এবং রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নির্দেশ তাদেরকে জানান।

৬৪
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَبَّاسٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ بِكِتَابِهِ رَجُلاً، وَأَمَرَهُ أَنْ يَدْفَعَهُ إِلَى عَظِيمِ الْبَحْرَيْنِ، فَدَفَعَهُ عَظِيمُ الْبَحْرَيْنِ إِلَى كِسْرَى، فَلَمَّا قَرَأَهُ مَزَّقَهُ‏.‏ فَحَسِبْتُ أَنَّ ابْنَ الْمُسَيَّبِ قَالَ فَدَعَا عَلَيْهِمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُمَزَّقُوا كُلَّ مُمَزَّقٍ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জনৈক ব্যক্তিকে তাঁর চিঠি দিয়ে পাঠালেন এবং তাকে বাহরাইনের গভর্নর-এর নিকট তা পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দিলেন। অতঃপর বাহ্‌রাইনের গভর্নর তা কিস্‌রা (পারস্য সম্রাট)-এর নিকট দিলেন। পত্রটি পড়ার পর সে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেললো। [বর্ণনাকারী ইব্‌নু শিহাব (রহঃ) বলেন] আমার ধারণা ইব্‌নু মুসায়্যাব (রহঃ) বলেছেন, (এ ঘটনার খবর পেয়ে) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের জন্য বদদু‘আ করেন যে, তাদেরকেও যেন সম্পূর্ণরূপে টুকরো টুকরো করে ফেলা হয়।

(২৯৩৯, ৪৪২৪, ৭২৬৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৬৪)

৬৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَبُو الْحَسَنِ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ كَتَبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم كِتَابًا ـ أَوْ أَرَادَ أَنْ يَكْتُبَ ـ فَقِيلَ لَهُ إِنَّهُمْ لاَ يَقْرَءُونَ كِتَابًا إِلاَّ مَخْتُومًا‏.‏ فَاتَّخَذَ خَاتَمًا مِنْ فِضَّةٍ نَقْشُهُ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ‏.‏ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى بَيَاضِهِ فِي يَدِهِ‏.‏ فَقُلْتُ لِقَتَادَةَ مَنْ قَالَ نَقْشُهُ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ قَالَ أَنَسٌ‏

আনাস ইব্‌ন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একখানি পত্র লিখালেন অথবা একখানি পত্র লিখাতে ইচ্ছে পোষণ করলেন। তখন তাঁকে বলা হলো যে, তারা (রোমবাসী ও অনারবরা) সীলমোহরযুক্ত ছাড়া কোন পত্র পড়ে না। এরপর তিনি রূপার একটি আংটি (মোহর) তৈরী করালেন যার নকশা ছিলো مُحَمَّدُ الرَّسُوْل الله ’ (মোহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ্)। আমি যেন তাঁর হাতে সে আংটির ঔজ্জ্বল্য (এখনো) দেখতে পাচ্ছি [শু’বা (রহঃ) বলেন] আমি কাতাদা (রহঃ) কে বললাম, কে বলেছে যে, তার নকশা مُحَمَّدُ الرَّسُوْل الله’ ছিলো? তিনি বললেন, ‘আনাস (রাঃ)।’

(২৯৩৮, ৫৮৭০, ৫৮৭২, ৫৮৭৪, ৫৮৭৫, ৫৮৭৭, ৭১৬২; মুসলিম ৩৭/১২ হাঃ ২০৯২, আহমাদ ১২৯৪০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৬৫)

৩/৮. অধ্যায়ঃ
মজলিসের শেষ প্রান্তে বসা এবং মজলিসের অভ্যন্তরে ফাঁক দেখে সেখানে বসা

৬৬
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، أَنَّ أَبَا مُرَّةَ، مَوْلَى عَقِيلِ بْنِ أَبِي طَالِبٍ أَخْبَرَهُ عَنْ أَبِي وَاقِدٍ اللَّيْثِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَمَا هُوَ جَالِسٌ فِي الْمَسْجِدِ وَالنَّاسُ مَعَهُ، إِذْ أَقْبَلَ ثَلاَثَةُ نَفَرٍ، فَأَقْبَلَ اثْنَانِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَذَهَبَ وَاحِدٌ، قَالَ فَوَقَفَا عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَمَّا أَحَدُهُمَا فَرَأَى فُرْجَةً فِي الْحَلْقَةِ فَجَلَسَ فِيهَا، وَأَمَّا الآخَرُ فَجَلَسَ خَلْفَهُمْ، وَأَمَّا الثَّالِثُ فَأَدْبَرَ ذَاهِبًا، فَلَمَّا فَرَغَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ أَلاَ أُخْبِرُكُمْ عَنِ النَّفَرِ الثَّلاَثَةِ أَمَّا أَحَدُهُمْ فَأَوَى إِلَى اللَّهِ، فَآوَاهُ اللَّهُ، وَأَمَّا الآخَرُ فَاسْتَحْيَا، فَاسْتَحْيَا اللَّهُ مِنْهُ، وَأَمَّا الآخَرُ فَأَعْرَضَ، فَأَعْرَضَ اللَّهُ عَنْهُ

আবূ ওয়াক্বিদ আল-লায়সী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-একদা মসজিদে বসে ছিলেন; তাঁর সাথে আরও লোকজন ছিলেন। এমতাবস্থায় তিনজন লোক আসলো। তন্মধ্যে দু’জন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর দিকে এগিয়ে আসলেন এবং একজন চলে গেলেন। আবূ ওয়াক্বিদ (রাঃ) বলেন, তাঁরা দু’জন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর তাঁদের একজন মজলিসের মধ্যে কিছুটা খালি জায়গা দেখে সেখানে বসে পড়লেন এবং অপরজন তাদের পেছনে বসলেন। আর তৃতীয় ব্যক্তি ফিরে গেলো। যখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অবসর হলেন (সাহাবীদের লক্ষ্য করে) বললেনঃ আমি কি তোমাদের এই তিন ব্যক্তি সম্পর্কে কিছু বলবো না? তাদের একজন আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করলো, আল্লাহ তাকে আশ্রয় দিলেন। অন্যজন লজ্জাবোধ করলো, তাই আল্লাহও তার ব্যাপারে লজ্জাবোধ করলেন। আর অপরজন (মজলিসে হাযির হওয়া থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিলেন, তাই আল্লাহও তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন।

(৪৭৪; মুসলিম ৩৯/১০ হাঃ ৬১৭৬, আহমাদ ২১৯৬৬) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৬৬)

৩/৯. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বাণীঃ যাদের নিকট হাদীস পৌঁছান হয় তাদের মধ্যে অনেকে এমন রয়েছে, যে শ্রোতা অপেক্ষা অধিক আয়ত্ত রাখতে পারে।

৬৭
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا بِشْرٌ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرَةَ، عَنْ أَبِيهِ، ذَكَرَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَعَدَ عَلَى بَعِيرِهِ، وَأَمْسَكَ إِنْسَانٌ بِخِطَامِهِ ـ أَوْ بِزِمَامِهِ ـ قَالَ ‏”‏ أَىُّ يَوْمٍ هَذَا ‏”‏‏.‏ فَسَكَتْنَا حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ سَيُسَمِّيهِ سِوَى اسْمِهِ‏.‏ قَالَ ‏”‏ أَلَيْسَ يَوْمَ النَّحْرِ ‏”‏‏.‏ قُلْنَا بَلَى‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَأَىُّ شَهْرٍ هَذَا ‏”‏‏.‏ فَسَكَتْنَا حَتَّى ظَنَنَّا أَنَّهُ سَيُسَمِّيهِ بِغَيْرِ اسْمِهِ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ أَلَيْسَ بِذِي الْحِجَّةِ ‏”‏‏.‏ قُلْنَا بَلَى‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَإِنَّ دِمَاءَكُمْ وَأَمْوَالَكُمْ وَأَعْرَاضَكُمْ بَيْنَكُمْ حَرَامٌ كَحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا، فِي شَهْرِكُمْ هَذَا، فِي بَلَدِكُمْ هَذَا‏.‏ لِيُبَلِّغِ الشَّاهِدُ الْغَائِبَ، فَإِنَّ الشَّاهِدَ عَسَى أَنْ يُبَلِّغَ مَنْ هُوَ أَوْعَى لَهُ مِنْهُ

আবূ বাক্‌রাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কথা উল্লেখ করে বলেন, (মিনায়) তিনি তাঁর উটের উপর উপবেশন করলেন। জনৈক ব্যক্তি তাঁর উটের লাগাম ধরে রেখেছিলো। তিনি বললেনঃ ‘এটা কোন্‌ দিন?’ আমরা চুপ করে রইলাম আর ধারণা করলাম যে, অচিরেই তিনি এ দিনটির আলাদা কোন নাম দিবেন। তিনি বললেনঃ “এটা কি কুরবানীর দিন নয়?” আমরা বললাম, ‘জি হ্যাঁ।’ তিনি জিজ্ঞেস করলেন: ‘এটা কোন্‌ মাস?’ আমরা নীরব রইলাম আর ধারণা করলাম যে, অচিরেই তিনি এর আলাদা কোন নাম দিবেন। তিনি বললেনঃ ‘এটা কি যিলহাজ্জ মাস নয়?’ আমরা বললাম, ‘জী হ্যাঁ।’ তিনি বললেনঃ ‘তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধন-সম্পদ, তোমাদের সম্মান তোমাদের পরস্পরের জন্য হারাম, যেমন আজকের তোমাদের এ দিন, তোমাদের এ মাস, তোমাদের এ শহর মর্যাদাসম্পন্ন। এখানে উপস্থিত ব্যক্তিরা (আমার এ বাণী) যেন অনুপস্থিত ব্যক্তির নিকট এসব কথা পৌঁছে দেয়। কারণ উপস্থিত ব্যক্তি সম্ভবত এমন এক ব্যক্তির নিকট পৌঁছাবে, যে এ বাণীকে তার চেয়ে অধিক আয়ত্তে রাখতে পারবে।’

(১০৫, ১৭৪১, ৩১৯৭, ৪৪০৬, ৪৬৬২, ৫৫৫০, ৭০৭৮, ৭৪৪৭; মুসলিম ২৮/৯ হাঃ ১৬৭৯, আহমাদ ২০৪০৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৬৭)

৩/১০. অধ্যায়ঃ
বলা ও করার পূর্বে জ্ঞান আবশ্যক।

মহা মহিমান্বিত আল্লাহ বলেন : فَاعْلَمْ أَنَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ “সুতরাং জেনে রাখ, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই।” (সূরা মুহাম্মাদ ৪৭/১৯)।

এখানে আল্লাহ তা’আলা ইলমের কথা আগে বলেছেন। আলিমগণই নবীগণের ওয়ারিস। তারা ইলমের ওয়ারিস হয়েছেন। তাই যে ইলম হাসিল করে সে বিরাট অংশ লাভ করে। আর যে ব্যক্তি ইলম হাসিলের উদ্দেশ্যে পথ চলে, আল্লাহ তা’আলা তার জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দেন। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ

إِنَّمَا يَخْشَى اللَّهَ مِنْ عِبَادِهِ الْعُلَمَاءُ

আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে আলিমগণই তাকে ভয় করে (সূরা ফাতির ৩৫/২৮)।

আল্লাহ তা’আলা আর ইরশাদ করেনঃ

وَمَا يَعْقِلُهَا إِلاَّ الْعَالِمُونَ “আলিমগণ ছাড়া তা কেউ বুঝেনা”। (সূরা আল-‘আনকাবুত ২৯/৩৪)

অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছেঃ

وَقَالُوا لَوْ كُنَّا نَسْمَعُ أَوْ نَعْقِلُ مَا كُنَّا فِي أَصْحَابِ السَّعِيرِ তারা বলবে, যদি আমরা শুনতাম অথবা বিবেক-বুদ্ধি প্রয়োগ করতাম, তাহলে আমরা জাহান্নামী হতাম না। (সূরা মুল্ক ৬৭/১০)

অন্যত্র তিনি বলেনঃ

هَلْ يَسْتَوِي الَّذِينَ يَعْلَمُونَ وَالَّذِينَ لاَ يَعْلَمُونَ “বল, যারা জানে আর যারা জানে না, তারা কি সমান হতে পারে? (সূরা যুমার ৩৯/৯)

নবী কারিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ যার কল্যাণ চান তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন। অধ্যায়নের মাধ্যমেই জ্ঞান অর্জিত হয়। আবু যার (রাঃ) তাঁর ঘাড়ের দিকে ইশারা করে বলেন, যদি তোমরা এখানে তরবারি ধর, এরপর আমি বুঝতে পারি যে, তোমরা আমার ওপর সে তরবারী চালাবার আগে আমি একটু কথা বলতে পারব, তবে আমি যা নবী কারিম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শুনেছি, অবশ্যই তা বলে ফেলব। নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাণীঃ উপস্থিত ব্যক্তিরা যেন অনুপস্থিত ব্যক্তির কাছে (আমার বানী) পৌঁছে দেয়। ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ) বলেন, كُونُوا رَبَّانِيِّينَ (তোমরা রব্বানি হও)। এখানে رَبَّانِيِّينَ মানে প্রজ্ঞাবান, আলিম ও ফকীহগণ। আরো বলা হয় رباني সে ব্যক্তি কে বলা হয় যিনি মানুষকে জ্ঞানের বড় বড় বিষয়ের পূর্বে ছোট ছোট বিষয় শিক্ষা দিয়ে গড়ে তোলেন।

৩/১১. অধ্যায়ঃ
লোকজন যাতে বিরক্ত না হয়ে পড়ে সে জন্য আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নসীহতে ও ইল্‌ম শিক্ষাদানে উপযুক্ত সময়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতেন।

৬৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنِ ابْنِ مَسْعُودٍ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَتَخَوَّلُنَا بِالْمَوْعِظَةِ فِي الأَيَّامِ، كَرَاهَةَ السَّآمَةِ عَلَيْنَا‏.‏

ইব্‌নু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের অবস্থার প্রতি লক্ষ্য রেখে নির্দিষ্ট দিনে নাসীহাত করতেন, আমরা যাতে বিরক্ত বোধ না করি।

(৭০,৬৪১১; মুসলিম ৫০/১৯ হাঃ ২৮২১, আহমাদ ৪০৬০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৬৮)

৬৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو التَّيَّاحِ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ يَسِّرُوا وَلاَ تُعَسِّرُوا، وَبَشِّرُوا وَلاَ تُنَفِّرُوا

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সহজ পন্থা অবলম্বন করো, কঠিন পন্থা অবলম্বন করো না, মানুষকে সুসংবাদ দাও, বিরক্তি সৃষ্টি করো না।

(৬১২৫; মুসলিম ৩২/৩ হাঃ ১৭৩৪, আহমাদ ১৩১৭৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৬৯, .ফা. ৬৯)

৩/১২. অধ্যায়ঃ
ইল্‌ম শিক্ষার্থীদের জন্য দিন নির্দিষ্ট করা।

৭০
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، قَالَ كَانَ عَبْدُ اللَّهِ يُذَكِّرُ النَّاسَ فِي كُلِّ خَمِيسٍ، فَقَالَ لَهُ رَجُلٌ يَا أَبَا عَبْدِ الرَّحْمَنِ لَوَدِدْتُ أَنَّكَ ذَكَّرْتَنَا كُلَّ يَوْمٍ‏.‏ قَالَ أَمَا إِنَّهُ يَمْنَعُنِي مِنْ ذَلِكَ أَنِّي أَكْرَهُ أَنْ أُمِلَّكُمْ، وَإِنِّي أَتَخَوَّلُكُمْ بِالْمَوْعِظَةِ كَمَا كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَتَخَوَّلُنَا بِهَا، مَخَافَةَ السَّآمَةِ عَلَيْنَا‏.‏

আবূ ওয়াইল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ ইব্‌নু মাস’ঊদ (রাঃ) প্রতি বৃহস্পতিবার লোকদের নাসীহাত করতেন। তাঁকে একজন বললো, ‘হে আবূ ‘আবদুর রহমান! আমার ইচ্ছা জাগে, যেন আপনি প্রতিদিন আমাদের নাসীহাত করেন। তিনি বললেনঃ এ কাজ থেকে আমাকে যা বাধা দেয় তা হচ্ছে, আমি তোমাদেরকে ক্লান্ত করতে পছন্দ করি না। আর আমি নাসীহাত করার ব্যাপারে তোমাদের (অবস্থার) প্রতি খেয়াল রাখি, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্লান্তির আশংকায় আমাদের প্রতি যেমন লক্ষ্য রাখতেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৭০)

৩/১৩. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন।

৭১
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ قَالَ حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ سَمِعْتُ مُعَاوِيَةَ، خَطِيبًا يَقُولُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ مَنْ يُرِدِ اللَّهُ بِهِ خَيْرًا يُفَقِّهْهُ فِي الدِّينِ، وَإِنَّمَا أَنَا قَاسِمٌ وَاللَّهُ يُعْطِي، وَلَنْ تَزَالَ هَذِهِ الأُمَّةُ قَائِمَةً عَلَى أَمْرِ اللَّهِ لاَ يَضُرُّهُمْ مَنْ خَالَفَهُمْ حَتَّى يَأْتِيَ أَمْرُ اللَّهِ

হুমায়দ ইব্‌নু ‘আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি মু’আবিয়াহ (রাঃ)-কে খুৎবায় বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে দ্বীনের ‘ইল্‌ম দান করেন। আমি তো বিতরণকারী মাত্র, আল্লাহই (জ্ঞান) দাতা। সর্বদাই এ উম্মাত ক্বিয়ামাত পর্যন্ত আল্লাহর হুকুমের উপর কায়িম থাকবে, বিরোধিতাকারীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না।

(৩১১৬, ৩৬৪১,৭৩১২, ৭৪৬০; মুসলিম ১২/৩৩ হাঃ ১০৩৭, আহমাদ ১৬৮৪৯, ১৬৮৭৮, ১৬৯১০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৭১)

৩/১৪. অধ্যায়ঃ
‘ইল্‌মের ব্যাপারে সঠিক অনুধাবন।

৭২
حَدَّثَنَا عَلِيٌّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ قَالَ لِي ابْنُ أَبِي نَجِيحٍ عَنْ مُجَاهِدٍ، قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ إِلَى الْمَدِينَةِ فَلَمْ أَسْمَعْهُ يُحَدِّثُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ حَدِيثًا وَاحِدًا، قَالَ كُنَّا عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأُتِيَ بِجُمَّارٍ فَقَالَ ‏”‏ إِنَّ مِنَ الشَّجَرِ شَجَرَةً مَثَلُهَا كَمَثَلِ الْمُسْلِمِ ‏”‏‏.‏ فَأَرَدْتُ أَنْ أَقُولَ هِيَ النَّخْلَةُ، فَإِذَا أَنَا أَصْغَرُ الْقَوْمِ فَسَكَتُّ، قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ هِيَ النَّخْلَةُ

মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি সফরে মদীনা পর্যন্ত ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ)-এর সাথে ছিলাম। এ সময় তাঁকে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একটি মাত্র হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি বলেন, আমরা একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট ছিলাম। তখন তাঁর নিকট খেজুর গাছের (অভ্যন্তরের কোমল অংশ) মাথি আনা হলো। অতঃপর তিনি বললেনঃ বৃক্ষরাজির মধ্যে এমন একটি বৃক্ষ রয়েছে, যার দৃষ্টান্ত মুসলিমের ন্যায়। তখন আমি বলতে চাইলাম যে, তা হলো খেজুর বৃক্ষ, কিন্তু আমি লোকদের মাঝে বয়সে সবচাইতে ছোট ছিলাম। তাই নীরব থাকলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘সেটা হলো খেজুর বৃক্ষ।’

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৭২)

৩/১৫. অধ্যায়ঃ
ইল্‌ম ও হিকমাহ এর ক্ষেত্রে সমতুল্য হবার উৎসাহ।

‘উমার (রাঃ) বলেন, তোমরা নেতা হবার পূর্বেই জ্ঞানার্জন করে নাও। আবূ ‘আবদুল্লাহ্‌ (বুখারী) বলেন, আর নেতা বানিয়ে দেয়ার পরও, কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণ বৃদ্ধ বয়সেও ‘ইল্‌ম অর্জন করেছেন।

৭৩
حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَدَّثَنِي إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي خَالِدٍ، عَلَى غَيْرِ مَا حَدَّثَنَاهُ الزُّهْرِيُّ، قَالَ سَمِعْتُ قَيْسَ بْنَ أَبِي حَازِمٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ مَسْعُودٍ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لاَ حَسَدَ إِلاَّ فِي اثْنَتَيْنِ رَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ مَالاً فَسُلِّطَ عَلَى هَلَكَتِهِ فِي الْحَقِّ، وَرَجُلٌ آتَاهُ اللَّهُ الْحِكْمَةَ، فَهْوَ يَقْضِي بِهَا وَيُعَلِّمُهَا

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেবল দু’টি বিষয়ে ঈর্ষা করা বৈধঃ

(১) সে ব্যক্তির উপর, যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন, অতঃপর তাকে বৈধ পন্থায় অকাতরে ব্যয় করার ক্ষমতা দিয়েছেন;

(২) সে ব্যক্তির উপর, যাকে আল্লাহ তা’আলা প্রজ্ঞা দান করেছেন, অতঃপর সে তাঁর মাধ্যমে বিচার ফায়সালা করে ও তা অন্যকে শিক্ষা দেয়।

(১৪০৯,৭১৪১,৭৩১৬; মুসলিম ৬/৪৭ হাঃ ৮১৬, আহমাদ ৩৪৫১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৭৩)

৩/১৬. অধ্যায়ঃ
সমুদ্রে খাযির (‘আঃ)-এর নিকট মূসা (‘আঃ)-এর গমন।

আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “আমি কি আপনার অনুসরণ করব এ শর্তে যে, সত্য পথের যে জ্ঞান আপনাকে দেয়া হয়েছে তা থেকে আমাকে শিক্ষা দেবেন।” (সূরা কাহ্‌ফ ১৮/৬৬)

৭৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ غُرَيْرٍ الزُّهْرِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، حَدَّثَ أَنَّ عُبَيْدَ اللَّهِ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ أَخْبَرَهُ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ تَمَارَى هُوَ وَالْحُرُّ بْنُ قَيْسِ بْنِ حِصْنٍ الْفَزَارِيُّ فِي صَاحِبِ مُوسَى قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ هُوَ خَضِرٌ‏.‏ فَمَرَّ بِهِمَا أُبَىُّ بْنُ كَعْبٍ، فَدَعَاهُ ابْنُ عَبَّاسٍ فَقَالَ إِنِّي تَمَارَيْتُ أَنَا وَصَاحِبِي، هَذَا فِي صَاحِبِ مُوسَى الَّذِي سَأَلَ مُوسَى السَّبِيلَ إِلَى لُقِيِّهِ، هَلْ سَمِعْتَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَذْكُرُ شَأْنَهُ قَالَ نَعَمْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ بَيْنَمَا مُوسَى فِي مَلإٍ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ، جَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ هَلْ تَعْلَمُ أَحَدًا أَعْلَمَ مِنْكَ قَالَ مُوسَى لاَ‏.‏ فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَى مُوسَى بَلَى، عَبْدُنَا خَضِرٌ، فَسَأَلَ مُوسَى السَّبِيلَ إِلَيْهِ، فَجَعَلَ اللَّهُ لَهُ الْحُوتَ آيَةً، وَقِيلَ لَهُ إِذَا فَقَدْتَ الْحُوتَ فَارْجِعْ، فَإِنَّكَ سَتَلْقَاهُ، وَكَانَ يَتَّبِعُ أَثَرَ الْحُوتِ فِي الْبَحْرِ، فَقَالَ لِمُوسَى فَتَاهُ أَرَأَيْتَ إِذْ أَوَيْنَا إِلَى الصَّخْرَةِ فَإِنِّي نَسِيتُ الْحُوتَ، وَمَا أَنْسَانِيهِ إِلاَّ الشَّيْطَانُ أَنْ أَذْكُرَهُ‏.‏ قَالَ ذَلِكَ مَا كُنَّا نَبْغِي، فَارْتَدَّا عَلَى آثَارِهِمَا قَصَصًا، فَوَجَدَا خَضِرًا‏.‏ فَكَانَ مِنْ شَأْنِهِمَا الَّذِي قَصَّ اللَّهُ ـ عَزَّ وَجَلَّ ـ فِي كِتَابِهِ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি এবং হুর ইব্‌নু কায়স ইব্‌নু হিসন আল-ফাযারীর মধ্যে মূসা (‘আঃ)-এর সম্পর্কে বাদানুবাদ হলো। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, তিনি ছিলেন খাযির। ঘটনাক্রমে তখন তাদের পাশ দিয়ে উবাঈ ইব্‌ন কা’ব (রাঃ) যাচ্ছিলেন। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) তাঁকে ডাক দিয়ে বললেনঃ আমি ও আমার এ ভাই মূসা (‘আঃ)-এর সেই সহচর সম্পর্কে বাদানুবাদ করছি যাঁর সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য মূসা (‘আঃ) আল্লাহর নিকট পথের সন্ধান চেয়েছিলেন- আপনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর সম্পর্কে কিছু বলতে শুনেছেন কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, একদা মূসা (‘আঃ) বানী ইসরাঈলের কোন এক মজলিসে উপস্থিত ছিলেন। তখন তাঁর নিকট জনৈক ব্যক্তি এসে বললো, ‘আপনি কাউকে আপনার চেয়ে অধিক জ্ঞানী বলে মনে করেন কি?’ মূসা (‘আঃ) বললেন, ‘না।’ তখন আল্লাহ তা’আলা মূসা (‘আঃ)-এর নিকট ওয়াহী প্রেরণ করলেন : ‘হ্যাঁ, আমার বান্দা খাযির।’ অতঃপর মূসা (‘আঃ) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য পথের সন্ধান চাইলেন। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা মাছকে তাঁর জন্য নিদর্শন বানিয়ে দিলেন এবং তাঁকে বলা হলো, যখন তুমি মাছটি হারিয়ে ফেলবে তখন ফিরে যাবে। কারণ, কিছুক্ষণের মধ্যেই তুমি তাঁর সাথে মিলিত হবে। তখন তিনি সমুদ্রে সে মাছের নিদর্শন অনুসরণ করতে লাগলেন। মূসা (‘আঃ)-কে তাঁর সঙ্গী যুবক (ইউশা ইব্‌নু নূন) বললেন, (কুরআন মজীদের ভাষায়) :

أَرَأَيْتَ إِذْ أَوَيْنَا إِلَى الصَّخْرَةِ فَإِنِّي نَسِيتُ الْحُوتَ، وَمَا أَنْسَانِيهِ إِلاَّ الشَّيْطَانُ أَنْ أَذْكُرَهُ‏.‏ قَالَ ذَلِكَ مَا كُنَّا ،نَبْغِي فَارْتَدَّا عَلَى آثَارِهِمَا قَصَصًا

“আপনি কি লক্ষ্য করেছেন আমরা যখন পাথরের নিকট বিশ্রাম নিচ্ছিলাম তখন আমি মাছের কথা ভুলে গিয়েছিলাম? শয়তানই তার কথা আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছিলো। মূসা বললেন, আমরা তো সেটিরই সন্ধান করছিলাম। অতঃপর তারা নিজেদের পদচিহ্ন অনুসরণ করে ফিরে চললো।” (সূরা কাহ্‌ফ ১৮/৬৩-৬৪) তাঁরা খাযিরকে পেলেন। তাদের ঘটনা সেটাই, যা আল্লাহ তা’আলা তাঁর কিতাবে বিবৃত করেছেন।

(২২৬৭, ২৭২৮, ৩২৭৮, ৩৪০০,৩৪০১, ৪৭২৫, ৪৭২৬, ৪৭২৭, ৬৬৭২, ৭৪৭৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৭৪)

৩/১৭. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উক্তি : হে আল্লাহ! আপনি তাকে কিতাব শিক্ষা দিন।

৭৫
حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، قَالَ حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ ضَمَّنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ ‏ “‏ اللَّهُمَّ عَلِّمْهُ الْكِتَابَ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার আমাকে জাপটে ধরে বললেন, ‘হে আল্লাহ! আপনি তাকে কিতাবের (কুরআন) জ্ঞান দান করুন।’

(১৪৩, ৩৭৫৬, ৭২৭০; মুসলিম ৪৪/৩০ হাঃ ২৪৭৭, আহমাদ ২৩৯৭, ২৮৮১, ৩০২৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৭৫)

৩/১৮. অধ্যায়ঃ
বালকদের কোন্‌ বয়সের শোনা কথা গ্রহণযোগ্য।

৭৬
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ أَقْبَلْتُ رَاكِبًا عَلَى حِمَارٍ أَتَانٍ، وَأَنَا يَوْمَئِذٍ قَدْ نَاهَزْتُ الاِحْتِلاَمَ، وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي بِمِنًى إِلَى غَيْرِ جِدَارٍ، فَمَرَرْتُ بَيْنَ يَدَىْ بَعْضِ الصَّفِّ وَأَرْسَلْتُ الأَتَانَ تَرْتَعُ، فَدَخَلْتُ فِي الصَّفِّ، فَلَمْ يُنْكَرْ ذَلِكَ عَلَىَّ

‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি সাবালক হবার নিকটবর্তী বয়সে একদা একটি গাধীর উপর আরোহিত অবস্থায় এলাম। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন মিনায় সালাত আদায় করছিলেন তাঁর সামনে কোন দেয়াল না রেখেই। তখন আমি কোন এক কাতারের সামনে দিয়ে অতিক্রম করলাম এবং গাধীটিকে বিচরণের জন্য ছেড়ে দিলাম। আমি কাতারের ভেতর ঢুকে পড়লাম কিন্তু এতে কেউ আমাকে নিষেধ করেননি।

(৪৯৩, ৮৬১, ১৮৫৭, ৪৪১২; মুসলিম ৪/৪৭ হাঃ ৫০৪, আহমাদ ১৮৯১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৭৬)

৭৭
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو مُسْهِرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنِي الزُّبَيْدِيُّ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مَحْمُودِ بْنِ الرَّبِيعِ، قَالَ عَقَلْتُ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَجَّةً مَجَّهَا فِي وَجْهِي وَأَنَا ابْنُ خَمْسِ سِنِينَ مِنْ دَلْوٍ‏.‏

মাহমূদ ইব্‌নুর-রাবী’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার মনে আছে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার বালতি থেকে পানি নিয়ে আমার মুখমন্ডলের উপর কুলি করে দিয়েছিলেন, তখন আমি ছিলাম পাঁচ বছরের বালক।

(১৮৯, ৮৩৯, ১১৮৫, ৬৩৫৪, ৬৪২২ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৭৭)

৩/১৯. অধ্যায়ঃ
জ্ঞান অন্বেষণের উদ্দেশ্যে বের হওয়া।

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) একটি মাত্র হাদীসের জন্য ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু উনায়স (রাঃ)-এর নিকট এক মাসের পথ সফর করে গিয়েছিলেন।

৭৮
حَدَّثَنَا أَبُو الْقَاسِمِ، خَالِدُ بْنُ خَلِيٍّ قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ قَالَ الأَوْزَاعِيُّ أَخْبَرَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ تَمَارَى هُوَ وَالْحُرُّ بْنُ قَيْسِ بْنِ حِصْنٍ الْفَزَارِيُّ فِي صَاحِبِ مُوسَى، فَمَرَّ بِهِمَا أُبَىُّ بْنُ كَعْبٍ، فَدَعَاهُ ابْنُ عَبَّاسٍ فَقَالَ إِنِّي تَمَارَيْتُ أَنَا وَصَاحِبِي هَذَا فِي صَاحِبِ مُوسَى الَّذِي سَأَلَ السَّبِيلَ إِلَى لُقِيِّهِ، هَلْ سَمِعْتَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَذْكُرُ شَأْنَهُ فَقَالَ أُبَىٌّ نَعَمْ، سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَذْكُرُ شَأْنَهُ يَقُولُ ‏ “‏ بَيْنَمَا مُوسَى فِي مَلإٍ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ، إِذْ جَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ أَتَعْلَمُ أَحَدًا أَعْلَمَ مِنْكَ قَالَ مُوسَى لاَ‏.‏ فَأَوْحَى اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ إِلَى مُوسَى بَلَى، عَبْدُنَا خَضِرٌ، فَسَأَلَ السَّبِيلَ إِلَى لُقِيِّهِ، فَجَعَلَ اللَّهُ لَهُ الْحُوتَ آيَةً، وَقِيلَ لَهُ إِذَا فَقَدْتَ الْحُوتَ فَارْجِعْ، فَإِنَّكَ سَتَلْقَاهُ، فَكَانَ مُوسَى صلى الله عليه وسلم يَتَّبِعُ أَثَرَ الْحُوتِ فِي الْبَحْرِ‏.‏ فَقَالَ فَتَى مُوسَى لِمُوسَى أَرَأَيْتَ إِذْ أَوَيْنَا إِلَى الصَّخْرَةِ فَإِنِّي نَسِيتُ الْحُوتَ، وَمَا أَنْسَانِيهِ إِلاَّ الشَّيْطَانُ أَنْ أَذْكُرَهُ‏.‏ قَالَ مُوسَى ذَلِكَ مَا كُنَّا نَبْغِي‏.‏ فَارْتَدَّا عَلَى آثَارِهِمَا قَصَصًا، فَوَجَدَا خَضِرًا، فَكَانَ مِنْ شَأْنِهِمَا مَا قَصَّ اللَّهُ فِي كِتَابِهِ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি এবং হুর ইব্‌নু কায়স ইব্‌নু হিসন আল-ফাযারীর মধ্যে মূসা (‘আঃ)-এর সম্পর্কে বাদানুবাদ হলো। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, তিনি ছিলেন খাযির। ঘটনাক্রমে তখন তাদের পাশ দিয়ে উবাঈ ইব্‌ন কা’ব (রাঃ) যাচ্ছিলেন। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) তাঁকে ডাক দিয়ে বললেনঃ আমি ও আমার এ ভাই মূসা (‘আঃ)-এর সেই সহচর সম্পর্কে বাদানুবাদ করছি যাঁর সাথে সাক্ষাত করার জন্য মূসা (‘আঃ) আল্লাহর নিকট পথের সন্ধান চেয়েছিলেন। আপনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তাঁর সম্পর্কে কিছু বলতে শুনেছেন কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, একদা মূসা (‘আঃ) বানী ইসরাঈলের কোন এক মজলিসে উপস্থিত ছিলেন। তখন তাঁর নিকট জনৈক ব্যক্তি এসে বললো, ‘আপনি কাউকে আপনার চেয়ে অধিক জ্ঞানী বলে মনে করেন কি?’ মূসা (‘আঃ) বললেন, ‘না।’ তখন আল্লাহ তা’আলা মূসা (‘আঃ)-এর নিকট ওয়াহী প্রেরণ করলেন : ‘হ্যাঁ, আমার বান্দা খাযির।’ অতঃপর মূসা (‘আঃ) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য পথের সন্ধান চাইলেন। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা মাছকে তাঁর জন্য নিদর্শন বানিয়ে দিলেন এবং তাঁকে বলা হলো, যখন তুমি মাছটি হারিয়ে ফেলবে তখন ফিরে যাবে। কারণ, কিছুক্ষণের মধ্যেই তুমি তাঁর সাথে মিলিত হবে। তখন তিনি সমুদ্রে সে মাছের নিদর্শন অনুসরণ করতে লাগলেন। মূসা (‘আঃ)-কে তাঁর সঙ্গী যুবক (ইউশা ইব্‌নু নূন) বললেন, (কুরআন মজীদের ভাষায়) :

اَرَءَيْتَ اِذْ اَوَيْنَآ اِلَي الصّخْرَةِ فَاِنِّي نَسِيْتُ الْحُوْتَ وَ مَا اَنْسنِيْهُ اِللَّا الشَّىيْطَانُ اَنْ اَذْكُرَه

“আপনি কি লক্ষ্য করেছেন আমরা যখন পাথরের কাছে বিশ্রাম করছিলাম তখন আমি মাছের কথা (বলতে) ভুলে গিয়েছিলাম। আর শয়তান তার কথা আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছিলো’ (১৮:৬৩)। ……

মূসা (‘আঃ) বললেনঃ ذَلِكَ مَا كُنَّا نَبْغِي‏.‏ فَارْتَدَّا عَلَى آثَارِهِمَا قَصَصًا “আমরা সে স্থানটির অনুসন্ধান করছিলাম।“ অতঃপর তারা নিজেদের পদচিহ্ন অনুসরণ করে ফিরে চললো। (সূরা কাহ্‌ফ ১৮/৬৩-৬৪)

তাঁরা খাযিরকে পেলেন। এ হলো তাদের দু’জনের ঘটনা, যা আল্লাহ তা’আলা তাঁর কিতাবে বিবৃত করেছেন।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৭৮)

৩/২০. অধ্যায়ঃ
‘ইল্‌ম অন্বেষণকারী ও ‘ইল্‌ম প্রদানকারীর ফযীলাত।

৭৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، قَالَ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ مَثَلُ مَا بَعَثَنِي اللَّهُ بِهِ مِنَ الْهُدَى وَالْعِلْمِ كَمَثَلِ الْغَيْثِ الْكَثِيرِ أَصَابَ أَرْضًا، فَكَانَ مِنْهَا نَقِيَّةٌ قَبِلَتِ الْمَاءَ، فَأَنْبَتَتِ الْكَلأَ وَالْعُشْبَ الْكَثِيرَ، وَكَانَتْ مِنْهَا أَجَادِبُ أَمْسَكَتِ الْمَاءَ، فَنَفَعَ اللَّهُ بِهَا النَّاسَ، فَشَرِبُوا وَسَقَوْا وَزَرَعُوا، وَأَصَابَتْ مِنْهَا طَائِفَةً أُخْرَى، إِنَّمَا هِيَ قِيعَانٌ لاَ تُمْسِكُ مَاءً، وَلاَ تُنْبِتُ كَلأً، فَذَلِكَ مَثَلُ مَنْ فَقِهَ فِي دِينِ اللَّهِ وَنَفَعَهُ مَا بَعَثَنِي اللَّهُ بِهِ، فَعَلِمَ وَعَلَّمَ، وَمَثَلُ مَنْ لَمْ يَرْفَعْ بِذَلِكَ رَأْسًا، وَلَمْ يَقْبَلْ هُدَى اللَّهِ الَّذِي أُرْسِلْتُ بِهِ ‏”‏‏.‏ قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ قَالَ إِسْحَاقُ وَكَانَ مِنْهَا طَائِفَةٌ قَيَّلَتِ الْمَاءَ‏.‏ قَاعٌ يَعْلُوهُ الْمَاءُ، وَالصَّفْصَفُ الْمُسْتَوِي مِنَ الأَرْضِ

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা আমাকে যে হিদায়াত ও ‘ইল্‌ম দিয়ে পাঠিয়েছেন তার দৃষ্টান্ত হলো যমীনের উপর পতিত প্রবল বর্ষণের ন্যায়। কোন কোন ভূমি থাকে উর্বর যা সে পানি শুষে নিয়ে প্রচুর পরিমাণে ঘাসপাতা এবং সবুজ তরুলতা উৎপাদন করে। আর কোন কোন ভূমি থাকে কঠিন যা পানি আটকে রাখে। পরে আল্লাহ তা’আলা তা দিয়ে মানুষের উপকার করেন; তারা নিজেরা পান করে ও (পশুপালকে) পান করায় এবং তা দ্বারা চাষাবাদ করে। আবার কোন কোন জমি রয়েছে যা একেবারে মসৃণ ও সমতল; তা না পানি আটকে রাখে, আর না কোন ঘাসপাতা উৎপাদন করে। এই হলো সে ব্যক্তির দৃষ্টান্ত যে দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করে এবং আল্লাহ তা’আলা আমাকে যা দিয়ে প্রেরণ করেছেন তাতে সে উপকৃত হয়। ফলে সে নিজে শিক্ষা করে এবং অপরকে শিখায়। আর সে ব্যক্তিরও দৃষ্টান্ত- যে সে দিকে মাথা তুলে দেখে না এবং আল্লাহর যে হিদায়াত নিয়ে আমি প্রেরিত হয়েছি, তা গ্রহণও করে না।

আবূ ‘আবদুল্লাহ (বুখারী) (রহঃ) বলেনঃ ইসহাক (রহঃ) আবূ উসামা (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেনঃ তিনি قَبِلت এর স্থলে قَيَّلَت (আটকিয়ে রাখে) ব্যবহার করেছেন। قَاعَا হলো এমন ভূমি যার উপর পানি জমে থাকে। আর الصَّفصفُ হলো সমতল ভূমি।

(মুসলিম ৪৩/৫ হাঃ ২২৮২, আহমাদ ১৯৫৯০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৭৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৭৯)

৩/২১. অধ্যায়ঃ
‘ইল্‌মের বিলুপ্তি ও মূর্খতার প্রসার।

রাবী’আহ (রহঃ) বলেন, যার নিকট সামান্য জ্ঞান আছে, তার উচিত নয় নিজেকে অপমানিত করা

৮০
حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ مَيْسَرَةَ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِنَّ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ يُرْفَعَ الْعِلْمُ، وَيَثْبُتَ الْجَهْلُ، وَيُشْرَبَ الْخَمْرُ، وَيَظْهَرَ الزِّنَ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন যে, ক্বিয়ামাতের কিছু ‘আলামত হলো : ‘ইল্‌ম হ্রাস পাবে, অজ্ঞতা প্রসারতা লাভ করবে, মদপানের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং যেনা ব্যভিচার বিস্তার লাভ করবে।

(৮১, ৫২৩১, ৫৫৭৭, ৬৮০৮; মুসলিম ৪৭/৪ হাঃ ২৬৭১, আহমাদ ১৩০৯৩, ১৪০৮০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৮০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৮০)

৮১
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ لأُحَدِّثَنَّكُمْ حَدِيثًا لاَ يُحَدِّثُكُمْ أَحَدٌ بَعْدِي سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ يَقِلَّ الْعِلْمُ، وَيَظْهَرَ الْجَهْلُ، وَيَظْهَرَ الزِّنَا، وَتَكْثُرَ النِّسَاءُ وَيَقِلَّ الرِّجَالُ، حَتَّى يَكُونَ لِخَمْسِينَ امْرَأَةً الْقَيِّمُ الْوَاحِدُ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি কি তোমাদের এমন একটি হাদীস বর্ণনা করবো যা আমার পর তোমাদের নিকট আর কেউ বর্ণনা করবে না। আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, ক্বিয়ামাতের কিছু আলামত হলো : ‘ইল্‌ম হ্রাস পাবে, অজ্ঞতার প্রসার ঘটবে, ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়বে, স্ত্রীলোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে, এমনকি প্রতি পঞ্চাশজন স্ত্রীলোকের জন্য মাত্র একজন পুরুষ হবে পরিচালক।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৮১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৮১)

৩/২২. অধ্যায়ঃ
জ্ঞানের উপকারিতা।

৮২
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ، قَالَ حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ حَمْزَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ أُتِيتُ بِقَدَحِ لَبَنٍ، فَشَرِبْتُ حَتَّى إِنِّي لأَرَى الرِّيَّ يَخْرُجُ فِي أَظْفَارِي، ثُمَّ أَعْطَيْتُ فَضْلِي عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ ‏”‏‏.‏ قَالُوا فَمَا أَوَّلْتَهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏”‏ الْعِلْمَ

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, একদা আমি নিদ্রাবস্থায় ছিলাম। তখন (স্বপ্নে) আমার নিকট এক পিয়ালা দুধ নিয়ে আসা হলো। আমি তা পান করলাম। এমনকি আমার মনে হতে লাগলো যে, সে পরিতৃপ্তি আমার নখ দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছে। অতঃপর অবশিষ্টাংশ আমি ‘উমার ইব্‌নুল-খাত্তাবকে দিলাম। সাহাবীগণ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি এ স্বপ্নের কী ব্যাখ্যা করেন? তিনি জবাবে বললেনঃ তা হলো আল-‘ইল্‌ম।

(৩৬৮১,৭০০৬,৭০০৭,৭০২৭,৭০৩২; মুসলিম ৪৩/২ হাঃ ২৩৯১, আহমাদ ৫৫৫৫) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৮২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৮২)

৩/২৩. অধ্যায়ঃ
প্রাণী বা অন্য বাহনের উপর সওয়ারী হয়ে দণ্ডায়মান অবস্থায় ফতোয়া দেয়া।

৮৩
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عِيسَى بْنِ طَلْحَةَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَفَ فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ بِمِنًى لِلنَّاسِ يَسْأَلُونَهُ، فَجَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ لَمْ أَشْعُرْ فَحَلَقْتُ قَبْلَ أَنْ أَذْبَحَ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ اذْبَحْ وَلاَ حَرَجَ ‏”‏‏.‏ فَجَاءَ آخَرُ فَقَالَ لَمْ أَشْعُرْ، فَنَحَرْتُ قَبْلَ أَنْ أَرْمِيَ‏.‏ قَالَ ‏”‏ ارْمِ وَلاَ حَرَجَ ‏”‏‏.‏ فَمَا سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ شَىْءٍ قُدِّمَ وَلاَ أُخِّرَ إِلاَّ قَالَ افْعَلْ وَلاَ حَرَجَ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর ইব্‌নু ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিদায় হাজ্জের দিবসে মিনায় লোকদের সম্মুখে (বাহনের উপর) দাঁড়ালেন। লোকেরা তাঁকে বিভিন্ন মাসআলা জিজ্ঞেস করছিলো। জনৈক ব্যক্তি তাঁর নিকট এসে বললো, আমি ভুলক্রমে কুরবানীর পূর্বেই মাথা কামিয়ে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ যবেহ করো, কোন ক্ষতি নেই। আর এক ব্যক্তি এসে বললো, আমি ভুলক্রমে কঙ্কর নিক্ষেপের পূর্বেই কুরবানী করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ কঙ্কর ছুঁড়ো, কোন অসুবিধে নেই। ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘আমার (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেদিন পূর্বে বা পরে করা যে কোন কাজ সম্পর্কেই জিজ্ঞাসিত হচ্ছিলেন, তিনি এ কথাই বলেছিলেন : করো, কোন ক্ষতি নেই।

(১২৪,১৭৩৬,১৭৩৭,১৭৩৮,৬৬৬৫; মুসলিম ১৫/৫৭ হাঃ ১৩০৬, আহমাদ ৬৪৯৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৮৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৮৩)

[১] হানাফী মাযহাব মতে কাফ্‌ফারা দিতে হবে কিন্তু এর কোন সহীহ্‌ হাদীসভিত্তিক দলীল নেই। বরং এটা হাদীস বিরোধী মত।

৩/২৪. অধ্যায়ঃ
হাত ও মাথার ইশারায় মাসআলার জওয়াব দান।

৮৪
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ فِي حَجَّتِهِ فَقَالَ ذَبَحْتُ قَبْلَ أَنْ أَرْمِيَ، فَأَوْمَأَ بِيَدِهِ قَالَ وَلاَ حَرَجَ‏.‏ قَالَ حَلَقْتُ قَبْلَ أَنْ أَذْبَحَ‏.‏ فَأَوْمَأَ بِيَدِهِ وَلاَ حَرَجَ‏.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

হাজ্জের সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞাসিত হলেন। কোন একজন বললো : আমি কঙ্কর নিক্ষেপের পূর্বেই যবেহ (কুরবানী) করে ফেলেছি। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাত দিয়ে ইঙ্গিত করে বললেনঃ কোন অসুবিধে নেই। আর এক ব্যক্তি বললো : আমি যবেহ করার পূর্বে মাথা মুন্ডন করে ফেলেছি। তিনি হাত দিয়ে ইঙ্গিত করলেন : কোন ক্ষতি নেই।

(১৭২১, ১৭২২, ১৭২৩, ১৭৩৪, ৬৬৬৬ দ্রষ্টব্য) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৮৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৮৪)

৮৫
حَدَّثَنَا الْمَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ أَخْبَرَنَا حَنْظَلَةُ بْنُ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ سَالِمٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ يُقْبَضُ الْعِلْمُ، وَيَظْهَرُ الْجَهْلُ وَالْفِتَنُ، وَيَكْثُرُ الْهَرْجُ ‏”‏‏.‏ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَا الْهَرْجُ فَقَالَ هَكَذَا بِيَدِهِ، فَحَرَّفَهَا، كَأَنَّهُ يُرِيدُ الْقَتْلَ‏.

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ (শেষ যামানায়) ‘ইল্‌ম উঠিয়ে নেয়া হবে, অজ্ঞতা ও ফিতনা ছড়িয়ে পড়বে এবং ‘হার্‌জ’ বেড়ে যাবে। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! ‘হার্‌জ’ কী? তিনি হাত দ্বারা ইঙ্গিত করে বললেনঃ ‘এ রকম’। যেন তিনি এর দ্বারা হত্যা বুঝিয়েছিলেন।

(১০৩৬, ১৪১২, ৩৬০৮, ৪৬৩৫, ৬০৩৭, ৬৫০৬, ৬৯৩৫, ৭০৬১, ৭১১৫, ৭১২১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৮৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৮৫

৮৬
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، قَالَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ، عَنْ فَاطِمَةَ، عَنْ أَسْمَاءَ، قَالَتْ أَتَيْتُ عَائِشَةَ وَهِيَ تُصَلِّي فَقُلْتُ مَا شَأْنُ النَّاسِ فَأَشَارَتْ إِلَى السَّمَاءِ، فَإِذَا النَّاسُ قِيَامٌ، فَقَالَتْ سُبْحَانَ اللَّهِ‏.‏ قُلْتُ آيَةٌ فَأَشَارَتْ بِرَأْسِهَا، أَىْ نَعَمْ، فَقُمْتُ حَتَّى تَجَلاَّنِي الْغَشْىُ، فَجَعَلْتُ أَصُبُّ عَلَى رَأْسِي الْمَاءَ، فَحَمِدَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَأَثْنَى عَلَيْهِ، ثُمَّ قَالَ ‏ “‏ مَا مِنْ شَىْءٍ لَمْ أَكُنْ أُرِيتُهُ إِلاَّ رَأَيْتُهُ فِي مَقَامِي حَتَّى الْجَنَّةَ وَالنَّارَ، فَأُوحِيَ إِلَىَّ أَنَّكُمْ تُفْتَنُونَ فِي قُبُورِكُمْ، مِثْلَ ـ أَوْ قَرِيبًا لاَ أَدْرِي أَىَّ ذَلِكَ قَالَتْ أَسْمَاءُ ـ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ، يُقَالُ مَا عِلْمُكَ بِهَذَا الرَّجُلِ فَأَمَّا الْمُؤْمِنُ ـ أَوِ الْمُوقِنُ لاَ أَدْرِي بِأَيِّهِمَا قَالَتْ أَسْمَاءُ ـ فَيَقُولُ هُوَ مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ جَاءَنَا بِالْبَيِّنَاتِ وَالْهُدَى، فَأَجَبْنَا وَاتَّبَعْنَا، هُوَ مُحَمَّدٌ‏.‏ ثَلاَثًا، فَيُقَالُ نَمْ صَالِحًا، قَدْ عَلِمْنَا إِنْ كُنْتَ لَمُوقِنًا بِهِ، وَأَمَّا الْمُنَافِقُ ـ أَوِ الْمُرْتَابُ لاَ أَدْرِي أَىَّ ذَلِكَ قَالَتْ أَسْمَاءُ ـ فَيَقُولُ لاَ أَدْرِي، سَمِعْتُ النَّاسَ يَقُولُونَ شَيْئًا فَقُلْتُهُ

আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ)-র নিকট আসলাম, তিনি তখন সালাতরত ছিলেন। আমি বললাম, ‘মানুষের কী হয়েছে?’ তিনি আকাশের দিকে ইঙ্গিত করলেন ( সূর্য গ্রহণ লেগেছে )। তখন সকল লোক (সালাতুল কুসূফ এর জন্য ) দাঁড়িয়ে রয়েছে। ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন, সুবহানাল্লাহ! আমি বললাম, এটা কি কোন নিদর্শন? তিনি মাথা দিয়ে ইঙ্গিত করলেন, ‘হ্যাঁ।’ অতঃপর আমি (সালাতে) দাঁড়িয়ে গেলাম। এমনকি (দীর্ঘতার কারণে) আমার জ্ঞান হারিয়ে ফেলার উপক্রম হলো। তাই আমি আমার মাথায় পানি ঢালতে আরম্ভ করলাম। পরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর হামদ ও সানা পাঠ করলেন। অতঃপর বললেনঃ যা কিছু আমাকে ইতোপূর্বে দেখানো হয়নি , তা আমি আমার এ স্থানেই দেখতে পেয়েছি। এমনকি জান্নাত ও জাহান্নামও। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা আমার নিকট ওয়াহী প্রেরণ করলেন, ‘দাজ্জালের ন্যায় (কঠিন) পরীক্ষা অথবা তাঁর কাছাকাছি বিপদ দিয়ে তোমাদেরকে কবরে পরীক্ষায় ফেলা হবে।’

ফাতিমা (রাঃ) বলেন, আসমা (রাঃ) مِثْلُ (অনুরুপ) শব্দ বলেছিলেন, না قَرِيْبُ (কাছাকাছি) শব্দ, তা ঠিক আমার মনে নেই। (কবরের মধ্যে) বলা হবে, ‘এ ব্যক্তি সম্পর্কে তুমি কী জানো?’ তখন মু’মিন ব্যক্তি বা মু’কিন (বিশ্বাসী) ব্যক্তি [ফাতিমা (রাঃ) বলেন ] আসমা (রাঃ) এর কোন শব্দটি বলেছিলেন আমি জানিনা], বলবে ,তিনি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), তিনি আল্লাহর রসূল। আমাদের নিকট মু’জিযা ও হিদায়াত নিয়ে এসেছিলেন। আমরা তা গ্রহণ করেছিলাম এবং তাঁর ইততিবা’ করেছিলাম। তিনি মুহাম্মাদ।’ তিনবার এরূপ বলবে। তখন তাকে বলা হবে , আরামে ঘুমিয়ে থাকো , আমরা জানতে পারলাম যে, তুমি (দুনিয়ায়) তাঁর উপর বিশ্বাসী ছিলে। আর মুনাফিক অথবা মুরতাদ (সন্দেহ পোষণকারী) ফাতিমা বলেন, আসমা কোনটি বলেছিলেন, আমি ঠিক মনে করতে পারছি না- বলবে, আমি কিছুই জানি না। মানুষকে (তাঁর সম্পর্কে) যা বলতে শুনেছি , আমিও তাই বলেছি।

(১৮৪, ৯২২, ১০৫৩, ১০৫৪, ১০৬১, ১২৩৫, ১৩৭৩, ২৫১৯, ২৫২০, ৭২৮৭; মুসলিম ১০/২ হাঃ ৯০৫, আহমাদ ২৬৯৯১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৮৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৮৬)

৩/২৫. অধ্যায়ঃ
আবদুল কায়েস গোত্রের প্রতিনিধি দলকে ঈমান ও ‘ইলমের রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরবর্তীদেরকে তা জানিয়ে দেয়ার ব্যাপারে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উদ্বুদ্ধুকরণ।

মালিক ইব্‌নুল হুওয়াইরিস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের বলেছিন, তোমার তোমাদের গোত্রের নিকট ফিরে যাও এবং তাদেরকে শিক্ষা দাও।

৮৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي جَمْرَةَ، قَالَ كُنْتُ أُتَرْجِمُ بَيْنَ ابْنِ عَبَّاسٍ وَبَيْنَ النَّاسِ فَقَالَ إِنَّ وَفْدَ عَبْدِ الْقَيْسِ أَتَوُا النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏”‏ مَنِ الْوَفْدُ ـ أَوْ مَنِ الْقَوْمُ ‏”‏‏.‏ قَالُوا رَبِيعَةُ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ مَرْحَبًا بِالْقَوْمِ ـ أَوْ بِالْوَفْدِ ـ غَيْرَ خَزَايَا وَلاَ نَدَامَى ‏”‏‏.‏ قَالُوا إِنَّا نَأْتِيكَ مِنْ شُقَّةٍ بَعِيدَةٍ، وَبَيْنَنَا وَبَيْنَكَ هَذَا الْحَىُّ مِنْ كُفَّارِ مُضَرَ، وَلاَ نَسْتَطِيعُ أَنْ نَأْتِيَكَ إِلاَّ فِي شَهْرٍ حَرَامٍ فَمُرْنَا بِأَمْرٍ نُخْبِرْ بِهِ مَنْ وَرَاءَنَا، نَدْخُلُ بِهِ الْجَنَّةَ‏.‏ فَأَمَرَهُمْ بِأَرْبَعٍ، وَنَهَاهُمْ عَنْ أَرْبَعٍ أَمَرَهُمْ بِالإِيمَانِ بِاللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَحْدَهُ‏.‏ قَالَ ‏”‏ هَلْ تَدْرُونَ مَا الإِيمَانُ بِاللَّهِ وَحْدَهُ ‏”‏‏.‏ قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ‏.‏ قَالَ ‏”‏ شَهَادَةُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَإِقَامُ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءُ الزَّكَاةِ، وَصَوْمُ رَمَضَانَ، وَتُعْطُوا الْخُمُسَ مِنَ الْمَغْنَمِ ‏”‏‏.‏ وَنَهَاهُمْ عَنِ الدُّبَّاءِ وَالْحَنْتَمِ وَالْمُزَفَّتِ‏.‏ قَالَ شُعْبَةُ رُبَّمَا قَالَ النَّقِيرِ، وَرُبَّمَا قَالَ الْمُقَيَّرِ‏.‏ قَالَ ‏”‏ احْفَظُوهُ وَأَخْبِرُوهُ مَنْ وَرَاءَكُمْ

আবূ জামরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) ও লোকদের মধ্যে ভাষান্তরের কাজ করতাম। একদা ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন , ‘আব্দুল কায়স গোত্রের প্রতিনিধি দল নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট আসলে তিনি বললেনঃ তোমরা কোন প্রতিনিধি দল? অথবা বললেন তোমরা কোন গোত্রের? তাঁরা বললো রাবী‘আহ গোত্রের। তিনি বললেনঃ ‘স্বাগতম। এ গোত্রের প্রতি অথবা এ প্রতিনিধি দলের প্রতি, এরা কোনরূপ অপদস্থ ও লাঞ্ছিত না হয়েই এসেছে। তারা বলল, ‘আমরা বহু দূর হতে আপনার নিকট এসেছি। আর আমাদের ও আপনার মধ্যে রয়েছে কাফিরদের এই ‘মুযার’ গোত্রের বাস। আমরা নিষিদ্ধ মাস ব্যতীত আপনার নিকট আসতে সক্ষম নই। সুতরাং আমাদের এমন কিছু নির্দেশ দিন, যা আমাদের পশ্চাতে যারা রয়েছে তাদের নিকট পৌঁছাতে এবং তাঁর ওয়াসীলায় আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি।’ তখন তিনি তাদের চারটি কাজের নির্দেশ দিলেন এবং চারটি কাজ থেকে নিষেধ করলেন। তাদের এক আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপনের আদেশ করলেন। তিনি বললেনঃ এক আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন কীরূপে হয় জান? তাঁরা বললোঃ ‘আল্লাহ ও তাঁর রসূলই ভালো জানেন।’ তিনি বললেনঃ ‘তা হলো এ সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রসূল, সালাত প্রতিষ্ঠা করা , যাকাত আদায় করা এবং রমযান-এর সিয়াম পালন করা আর তোমরা গনীমতের মাল থেকে এক-পঞ্চমাংশ দান করবে।’ আর তাদের নিষেধ করলেন শুকনো কদুর খোল, সবুজ কলস এবং আলকাতরা দ্বারা রঙ করা পাত্র ব্যবহার করতে। শু‘বা বলেন, কখনও (আবূ জামরা) খেজুর গাছ থেকে তৈরি পাত্রের কথাও বলেছেন আবার তিনি কখনও النَّقي -এর স্থলে المُقَيَّر বলেছেন। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা এগুলো মনোযোগ সহকারে স্মরণ রাখো এবং তোমাদের পশ্চাতে যারা রয়েছে তাদের নিকট পৌঁছে দাও।

(আধুনিক প্রকাশনীঃ ৮৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৮৭)

৩/২৬. অধ্যায়ঃ
উদ্ভূত মাসআলার উদ্দেশে সফর করা এবং নিজের পরিজনদের শিক্ষা প্রদান।

৮৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ أَبُو الْحَسَنِ، قَالَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنَا عُمَرُ بْنُ سَعِيدِ بْنِ أَبِي حُسَيْنٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ الْحَارِثِ، أَنَّهُ تَزَوَّجَ ابْنَةً لأَبِي إِهَابِ بْنِ عَزِيزٍ، فَأَتَتْهُ امْرَأَةٌ فَقَالَتْ إِنِّي قَدْ أَرْضَعْتُ عُقْبَةَ وَالَّتِي تَزَوَّجَ بِهَا‏.‏ فَقَالَ لَهَا عُقْبَةُ مَا أَعْلَمُ أَنَّكِ أَرْضَعْتِنِي وَلاَ أَخْبَرْتِنِي‏.‏ فَرَكِبَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالْمَدِينَةِ فَسَأَلَهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ كَيْفَ وَقَدْ قِيلَ ‏”‏‏.‏ فَفَارَقَهَا عُقْبَةُ، وَنَكَحَتْ زَوْجًا غَيْرَهُ‏.‏

‘উকবাহ ইব্‌নুল হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি আবূ ইহাব ইব্‌নু ‘আযীয (রাঃ) –এর কন্যাকে বিয়ে করলে তাঁর নিকট জনৈকা স্ত্রীলোক এসে বললো, আমি ‘ঊকবাহ (রাঃ) –কে এবং সে যাকে বিয়ে করেছে তাকে (আবূ ইহাবের কন্যাকে) দুধ পান করিয়েছি। ‘উকবাহ তাকে বললেন আমি জানি না তুমি আমাকে দুধ পান করিয়েছো, আর (ইতোপূর্বে) তুমি আমাকে একথা জানাওনি। অতঃপর তিনি মদীনায় আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গেলেন এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ কথার পর তুমি কীভাবে তাঁর সঙ্গে সংসার করবে? অতঃপর ‘উকবাহ তাঁর স্ত্রীকে আলাদা করে দিলেন এবং মহিলা অন্য স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলো।

(২০৫২, ২৬৪০, ২৬৫৯, ২৬৬০, ৫১০৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৮৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৮৮)

৩/২৭. অধ্যায়ঃ
পালাক্রমে ইলম শিক্ষা করা।

৮৯
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، ح قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ وَقَالَ ابْنُ وَهْبٍ أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي ثَوْرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ، عَنْ عُمَرَ، قَالَ كُنْتُ أَنَا وَجَارٌ، لِي مِنَ الأَنْصَارِ فِي بَنِي أُمَيَّةَ بْنِ زَيْدٍ، وَهْىَ مِنْ عَوَالِي الْمَدِينَةِ، وَكُنَّا نَتَنَاوَبُ النُّزُولَ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَنْزِلُ يَوْمًا وَأَنْزِلُ يَوْمًا، فَإِذَا نَزَلْتُ جِئْتُهُ بِخَبَرِ ذَلِكَ الْيَوْمِ مِنَ الْوَحْىِ وَغَيْرِهِ، وَإِذَا نَزَلَ فَعَلَ مِثْلَ ذَلِكَ، فَنَزَلَ صَاحِبِي الأَنْصَارِيُّ يَوْمَ نَوْبَتِهِ، فَضَرَبَ بَابِي ضَرْبًا شَدِيدًا‏.‏ فَقَالَ أَثَمَّ هُوَ فَفَزِعْتُ فَخَرَجْتُ إِلَيْهِ فَقَالَ قَدْ حَدَثَ أَمْرٌ عَظِيمٌ‏.‏ قَالَ فَدَخَلْتُ عَلَى حَفْصَةَ فَإِذَا هِيَ تَبْكِي فَقُلْتُ طَلَّقَكُنَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ لاَ أَدْرِي‏.‏ ثُمَّ دَخَلْتُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ وَأَنَا قَائِمٌ أَطَلَّقْتَ نِسَاءَكَ قَالَ ‏ “‏ لاَ ‏”‏‏.‏ فَقُلْتُ اللَّهُ أَكْبَرُ‏.‏

উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি ও আমার এক আনসারী প্রতিবেশী বনী উমাইয়া ইব্‌নু যায়দের মহল্লায় বাস করতাম। এ মহল্লাটি ছিলো মদীনার উঁচু এলাকায় অবস্থিত। আমরা দু’জনে পালাক্রমে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হতাম। তিনি একদিন আসতেন আর আমি একদিন আসতাম। আমি যেদিন আসতাম, সেদিনের ওয়াহী প্রভৃতির খবর নিয়ে তাঁকে পৌঁছে দিতাম। আর তিনি যেদিন আসতেন সেদিন তিনিও তাই করতেন। অতঃপর একদা আমার আনসারী সাথী তাঁর পালার দিন আসলেন এবং (সেখান থেকে ফিরে) আমার দরজায় খুব জোরে জোরে আঘাত করতে লাগলেন। (আমার নাম নিয়ে) বলতে লাগলেন, তিনি কি এখানে আছেন? আমি ঘাবড়ে গিয়ে তাঁর দিকে গেলাম। তিনি বললেন, এক বিরাট ঘটনা ঘটে গেছে [আল্লাহর রাসূল(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর স্ত্রীগণকে তালাক দিয়েছেন]। আমি তখনি (আমার কন্যা) হাফসা (রাঃ) এর নিকট গেলাম। তিনি তখন কাঁদছিলেন। আমি বললাম, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কি তোমাদের তালাক দিয়ে দিয়েছেন? তিনি বললেন, ‘আমি জানি না।’ অতঃপর আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট গেলাম এবং দাঁড়িয়ে থেকেই বললামঃ আপনি কি আপনার স্ত্রীদের তালাক দিয়েছেন? জবাবে তিনি বললেনঃ ‘না।’ আমি তখন বললাম ‘আল্লাহ আকবর’।

(২৪৬৮, ৪৯১৩, ৪৯১৫, ৫১৯১, ৫২১৮, ৫৮৪৩, ৭২৫৬, ৭২৬৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৮৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৮৯)

৩/২৮ অধ্যায়ঃ
অপছন্দনীয় কিছু দেখলে ওয়ায-নাসীহাত বা শিক্ষাপ্রদানের সময় রাগ করা।

৯০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، قَالَ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنِ ابْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ الأَنْصَارِيِّ، قَالَ قَالَ رَجُلٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ، لاَ أَكَادُ أُدْرِكُ الصَّلاَةَ مِمَّا يُطَوِّلُ بِنَا فُلاَنٌ، فَمَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فِي مَوْعِظَةٍ أَشَدَّ غَضَبًا مِنْ يَوْمِئِذٍ فَقَالَ ‏ “‏ أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّكُمْ مُنَفِّرُونَ، فَمَنْ صَلَّى بِالنَّاسِ فَلْيُخَفِّفْ، فَإِنَّ فِيهِمُ الْمَرِيضَ وَالضَّعِيفَ وَذَا الْحَاجَةِ ‏

আবূ মাস’উদ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা জনৈক ব্যক্তি বললো, ‘হে আল্লাহর রাসূল ! আমি সালাতে (জামা’আতে) শামিল হতে পারি না। কারণ অমুক ব্যক্তি আমাদের নিয়ে খুব দীর্ঘ সালাত আদায় করেন। [আবূ মাস’উদ (রাঃ) বলেন,] আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কোন নাসীহাতের মজলিসে সেদিনের তুলনায় অধিক রাগান্বিত হতে দেখিনি। (রাগত স্বরে) তিনি বললেনঃ হে লোক সকল ! তোমরা মানুষের মধ্যে বিরক্তির সৃষ্টি করো। অতএব যে লোকদের নিয়ে সালাত আদায় করবে সে যেন সংক্ষেপ করে। কারণ তাঁদের মধ্যে রোগী , দুর্বল ও কর্মব্যস্ত লোকও থাকে।

(৭০২, ৭০৪, ৬১১০, ৭১৫৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৯০, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৯০)

৯১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ الْمَدِينِيُّ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ يَزِيدَ، مَوْلَى الْمُنْبَعِثِ عَنْ زَيْدِ بْنِ خَالِدٍ الْجُهَنِيِّ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم سَأَلَهُ رَجُلٌ عَنِ اللُّقَطَةِ فَقَالَ ‏”‏ اعْرِفْ وِكَاءَهَا ـ أَوْ قَالَ وِعَاءَهَا ـ وَعِفَاصَهَا، ثُمَّ عَرِّفْهَا سَنَةً، ثُمَّ اسْتَمْتِعْ بِهَا، فَإِنْ جَاءَ رَبُّهَا فَأَدِّهَا إِلَيْهِ ‏”‏‏.‏ قَالَ فَضَالَّةُ الإِبِلِ فَغَضِبَ حَتَّى احْمَرَّتْ وَجْنَتَاهُ ـ أَوْ قَالَ احْمَرَّ وَجْهُهُ ـ فَقَالَ ‏”‏ وَمَا لَكَ وَلَهَا مَعَهَا سِقَاؤُهَا وَحِذَاؤُهَا، تَرِدُ الْمَاءَ، وَتَرْعَى الشَّجَرَ، فَذَرْهَا حَتَّى يَلْقَاهَا رَبُّهَا ‏”‏‏.‏ قَالَ فَضَالَّةُ الْغَنَمِ قَالَ ‏”‏ لَكَ أَوْ لأَخِيكَ أَوْ لِلذِّئْبِ

যায়দ ইব্‌নু খালিদ আল-জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

জনৈক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে কুড়িয়ে পাওয়া জিনিস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ তাঁর বাঁধনের রশি অথবা বললেন, থলে-ঝুলি ভালো করে চিনে রাখো। অতঃপর এক বছর পর্যন্ত তার ঘোষণা দিতে থাকো। তারপর (মালিক পাওয়া না গেলে) তুমি তা ব্যবহার করো। অতঃপর যদি এর প্রাপক আসে তবে তাকে তা দিয়ে দেবে। সে বললো, ‘হারানো উটের ব্যাপারে কী করতে হবে?’ এ কথা শুনে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমন রাগ করলেন যে, তাঁর গাল দু’টো লাল হয়ে গেলো। অথবা বর্ণণাকারী বলেন, তাঁর মুখমন্ডল লাল হয়ে গেলো। তিনি বললেনঃ ‘উট নিয়ে তোমার কী হয়েছে? তার তো আছে পানির মশক ও শক্ত পা। পানির নিকট যেতে পারে এবং গাছ খেতে পারে। কাজেই তাকে ছেড়ে দাও এমন সময়ের মধ্যে তার মালিক তাকে পেয়ে যাবে।’ সে বললো, ‘হারানো ছাগল পাওয়া গেলে?’ তিনি বললেন, ‘সেটি তোমার হবে, না হলে তোমার ভাইয়ের, না হলে বাঘের।’

(২৩৭২, ২৪২৭, ২৪২৮, ২৪২৯, ২৪৩৬, ২৪৩৮, ৫২৯২, ৬১১২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৯১, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৯১)

৯২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ أَشْيَاءَ كَرِهَهَا، فَلَمَّا أُكْثِرَ عَلَيْهِ غَضِبَ، ثُمَّ قَالَ لِلنَّاسِ ‏”‏ سَلُونِي عَمَّا شِئْتُمْ ‏”‏‏.‏ قَالَ رَجُلٌ مَنْ أَبِي قَالَ ‏”‏ أَبُوكَ حُذَافَةُ ‏”‏‏.‏ فَقَامَ آخَرُ فَقَالَ مَنْ أَبِي يَا رَسُولَ اللَّهِ فَقَالَ ‏”‏ أَبُوكَ سَالِمٌ مَوْلَى شَيْبَةَ ‏”‏‏.‏ فَلَمَّا رَأَى عُمَرُ مَا فِي وَجْهِهِ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّا نَتُوبُ إِلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ‏.‏

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন , একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কয়েকটি অপছন্দনীয় বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। প্রশ্নের সংখ্যা অধিক হয়ে যাওয়ায় তখন তিনি রেগে গিয়ে লোকদেরকে বললেনঃ ‘তোমরা আমার নিকট যা ইচ্ছা প্রশ্ন করো।’ জনৈক ব্যাক্তি বললো, ‘আমার পিতা কে?’ তিনি বললেনঃ ‘তোমার পিতা হুযাফাহ।’ আর এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললো, ‘হে আল্লাহর রাসূল ! ‘আমার পিতা কে?’ তিনি বললেনঃ ‘তোমার পিতা হলো শায়বার দাস সালিম।’ তখন ‘উমার (রাঃ) আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর চেহারার অবস্থা দেখে বললেনঃ ‘হে আল্লাহর রাসূল ! আমরা মহিমান্বিত আল্লাহর নিকট তাওবাহ করছি।’

৭২৯১; মুসলিম ৪৩/৩৭ হাঃ ২৩৬০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৯২, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৯২)

৩/২৯. অধ্যায়ঃ
ইমাম বা মুহাদ্দিসের সামনে হাঁটু গেড়ে বসা।

৯৩
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، قَالَ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ، فَقَامَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ حُذَافَةَ فَقَالَ مَنْ أَبِي فَقَالَ ‏”‏ أَبُوكَ حُذَافَةُ ‏”‏‏.‏ ثُمَّ أَكْثَرَ أَنْ يَقُولَ ‏”‏ سَلُونِي ‏”‏‏.‏ فَبَرَكَ عُمَرُ عَلَى رُكْبَتَيْهِ فَقَالَ رَضِينَا بِاللَّهِ رَبًّا، وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا، وَبِمُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم نَبِيًّا، فَسَكَتَ‏.‏

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদা আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বের হলেন। তখন ‘আব্দুল্লাহ ইবনু হুযাফাহ দাঁড়িয়ে বললেন, ‘আমার পিতা কে?’ তিনি বললেনঃ ‘তোমার পিতা হুযাফাহ।’ অতঃপর তিনি বারবার বলতে লাগলেন, ‘তোমরা আমাকে প্রশ্ন করো।’ ‘উমার (রাঃ) তখন জানু পেতে বসে বললেনঃ ‘আমরা আল্লাহকে প্রতিপালক হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নবী হিসেবে সন্তুষ্ট চিত্তে গ্রহণ করে নিয়েছি।’ তিনি এ কথা তিনবার বললেন। এতে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নীরব হলেন।

(৫৪০, ৭৪৯, ৪৬২১, ৬৩৬২, ৬৪৬৮, ৬৪৮৬, ৭০৮৯, ৭০৯০, ৭০৯১, ৭২৯৪, ৭২৯৫; মুসলিম ৪৩/৩৭ হাঃ ২৩৫৯, আহমাদ ১২৬৫৯) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৯৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৯৩)

৩/৩০. অধ্যায়ঃ
ভালভাবে বুঝবার জন্য কোন কথা তিনবার বলা।

নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ‘ মিথ্যা কথা থেকে সাবধান !’ এ কথাটি তিনি বারবার বলতে লাগলেন। ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (বিদায় হাজ্জে) বলেছেনঃ আমি কি পৌছে দিয়েছি? একথা তিনি তিনবার বলেছেন।

৯৪
حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالَ حَدَّثَنَا ثُمَامَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ إِذَا سَلَّمَ سَلَّمَ ثَلاَثًا، وَإِذَا تَكَلَّمَ بِكَلِمَةٍ أَعَادَهَا ثَلاَثًا‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন সালাম দিতেন, তিনবার সালাম দিতেন। আর যখন কোন কথা বলতেন তখন তা তিনবার বলতেন।

(৯৫, ৬২৪৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ নাই, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৯৪)

৯৫
حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ، قَالَ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالَ حَدَّثَنَا ثُمَامَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَنَسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ كَانَ إِذَا تَكَلَّمَ بِكَلِمَةٍ أَعَادَهَا ثَلاَثًا حَتَّى تُفْهَمَ عَنْهُ، وَإِذَا أَتَى عَلَى قَوْمٍ فَسَلَّمَ عَلَيْهِمْ سَلَّمَ عَلَيْهِمْ ثَلاَثًا‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন কোন কথা বলতেন তখন তা বুঝে নেয়ার জন্য তিনবার বলতেন। আর যখন তিনি কোন গোত্রের নিকট এসে সালাম দিতেন, তাদের প্রতি তিনবার সালাম দিতেন।

(৯৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৯৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৯৫)

৯৬
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ يُوسُفَ بْنِ مَاهَكَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، قَالَ تَخَلَّفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ سَافَرْنَاهُ فَأَدْرَكَنَا وَقَدْ أَرْهَقْنَا الصَّلاَةَ صَلاَةَ الْعَصْرِ وَنَحْنُ نَتَوَضَّأُ، فَجَعَلْنَا نَمْسَحُ عَلَى أَرْجُلِنَا، فَنَادَى بِأَعْلَى صَوْتِهِ ‏ “‏ وَيْلٌ لِلأَعْقَابِ مِنَ النَّارِ ‏”‏‏.‏ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন এক সফরে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের পিছনে পড়ে গেলেন। পরে তিনি আমাদের নিকট পৌছলেন, এদিকে আমরা (আসরের) সালাত আদায় করতে বিলম্ব করে ফেলেছিলাম এবং আমরা উযূ করছিলাম। আমরা আমাদের পা কোনমতে পানি দ্বারা ভিজিয়ে নিচ্ছিলাম। তিনি উচ্চৈস্বঃরে বললেনঃ পায়ের গোড়ালিগুলোর (শুকনো থাকার) জন্য জাহান্নামের ‘আযাব রয়েছে। তিনি দু’বার বা তিনবার এ কথা বললেন।

(৬০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৯৫, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৯৬)

৩/৩১ অধ্যায়ঃ
নিজের দাসী ও পরিবার পরিজনকে শিক্ষা প্রদান।

৯৭
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدٌ ـ هُوَ ابْنُ سَلاَمٍ ـ حَدَّثَنَا الْمُحَارِبِيُّ، قَالَ حَدَّثَنَا صَالِحُ بْنُ حَيَّانَ، قَالَ قَالَ عَامِرٌ الشَّعْبِيُّ حَدَّثَنِي أَبُو بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ ثَلاَثَةٌ لَهُمْ أَجْرَانِ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ آمَنَ بِنَبِيِّهِ، وَآمَنَ بِمُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم وَالْعَبْدُ الْمَمْلُوكُ إِذَا أَدَّى حَقَّ اللَّهِ وَحَقَّ مَوَالِيهِ، وَرَجُلٌ كَانَتْ عِنْدَهُ أَمَةٌ ‏{‏يَطَؤُهَا‏}‏ فَأَدَّبَهَا، فَأَحْسَنَ تَأْدِيبَهَا، وَعَلَّمَهَا فَأَحْسَنَ تَعْلِيمَهَا، ثُمَّ أَعْتَقَهَا فَتَزَوَّجَهَا، فَلَهُ أَجْرَانِ ‏”‏‏.‏

ثُمَّ قَالَ عَامِرٌ أَعْطَيْنَاكَهَا بِغَيْرِ شَىْءٍ، قَدْ كَانَ يُرْكَبُ فِيمَا دُونَهَا إِلَى الْمَدِينَةِ‏

আবূ বুরদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করে তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তিন ধরণের লোকের জন্য দু’টি পুণ্য রয়েছেঃ

(১) আহলে কিতাব- যে ব্যক্তি তার নবীর উপর ঈমান এনেছে এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপরও ঈমান এনেছে।

(২) যে ক্রীতদাস আল্লাহর হক আদায় করে এবং তাঁর মালিকের হকও (আদায় করে)।

(৩) যার বাঁদী ছিলো, যার সাথে সে মিলিত হতো। তারপর তাঁকে সে সুন্দরভাবে আদাব-কায়দা শিক্ষা দিয়েছে এবং ভালভাবে দ্বীনী ইলম শিক্ষা দিয়েছে, অতঃপর তাঁকে আযাদ করে বিয়ে করেছে; তাঁর জন্য দু’টি পুণ্য রয়েছে। অতঃপর বর্ণনাকারী ‘আমির (রহঃ) (তাঁর ছাত্রকে) বলেন, তোমাকে কোন কিছুর বিনিময় ব্যতীতই হাদীসটি শিক্ষা দিলাম, অথচ পূর্বে এর চেয়ে ছোট হাদীসের জন্যও লোকেরা (দূর-দূরান্ত থেকে) সওয়ার হয়ে মদীনায় আসতো।

(২৫৪৪, ২৫৪৭, ২৫৫১, ৩০১১, ৩৪৪৬, ৫০৮৩; মুসলিম ১/৭০ হাঃ ১৫৪, আহমাদ ১৯৭৩২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৯৬, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৯৭)

৩/৩২ অধ্যায়ঃ
‘আলিম কর্তৃক নারীদের উপদেশ প্রদান করা ও দ্বীনী ‘ইলম শিক্ষা প্রদান।

৯৮
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، قَالَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَيُّوبَ، قَالَ سَمِعْتُ عَطَاءً، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ، قَالَ أَشْهَدُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ـ أَوْ قَالَ عَطَاءٌ أَشْهَدُ عَلَى ابْنِ عَبَّاسٍ ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ وَمَعَهُ بِلاَلٌ، فَظَنَّ أَنَّهُ لَمْ يُسْمِعِ النِّسَاءَ فَوَعَظَهُنَّ، وَأَمَرَهُنَّ بِالصَّدَقَةِ، فَجَعَلَتِ الْمَرْأَةُ تُلْقِي الْقُرْطَ وَالْخَاتَمَ، وَبِلاَلٌ يَأْخُذُ فِي طَرَفِ ثَوْبِهِ‏.‏

وَقَالَ إِسْمَاعِيلُ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ عَطَاءٍ وَقَالَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ أَشْهَدُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে সাক্ষী রেখে বলছি, কিংবা পরবর্তী বর্ণনাকারী ‘আতা (রহঃ) বলেন, আমি ইব্‌নু ‘আব্বাসকে সাক্ষী রেখে বলছি যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (ঈদের দিন পুরুষের কাতার থেকে) বের হলেন আর তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিলাল (রাঃ)। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ধারণা করলেন যে, দূরে থাকার জন্য তাঁর নাসীহাত মহিলাদের নিকট পৌছেনি। ফলে তিনি তাঁদের নাসীহাত করলেন এবং দান-খায়রাত করার উপদেশ দিলেন। তখন মহিলারা কানের দুল ও হাতের আংটি দান করতে লাগলেন। আর বিলাল (রাঃ) সেগুলো তাঁর কাপড়ের প্রান্তে গ্রহণ করতে লাগলেন। ইসমা‘ঈল (রহঃ) ‘আতা (রহঃ) সূত্রে বলেন যে, ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে সাক্ষী রেখে বলছি।

(৮৬৩, ৯৬২, ৯৬৪, ৯৭৫, ৯৭৭, ৯৭৯, ৯৮৯, ১৪৩১, ১৪৪৯, ৪৮৯৫, ৫২৪৯, ৫৮৮০, ৫৮৮১, ৫৮৮৩, ৭৩২৫; মুসলিম ৮/১ হাঃ ৮৮৪, আহমাদ ৩০৬৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৯৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৯৮)

৩/৩৩. অধ্যায়ঃ
হাদীসের প্রতি আগ্রহ।

৯৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَبِي عَمْرٍو، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّهُ قَالَ قِيلَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَنْ أَسْعَدُ النَّاسِ بِشَفَاعَتِكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لَقَدْ ظَنَنْتُ يَا أَبَا هُرَيْرَةَ أَنْ لاَ يَسْأَلَنِي عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ أَحَدٌ أَوَّلُ مِنْكَ، لِمَا رَأَيْتُ مِنْ حِرْصِكَ عَلَى الْحَدِيثِ، أَسْعَدُ النَّاسِ بِشَفَاعَتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، خَالِصًا مِنْ قَلْبِهِ أَوْ نَفْسِهِ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ একদা আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে প্রশ্ন করা হলোঃ হে আল্লাহর রাসূল! ক্বিয়ামতের দিন আপনার সুপারিশ লাভের ব্যাপারে কে সবচেয়ে অধিক সৌভাগ্যবান হবে? আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আবূ হুরায়রা ! আমি মনে করেছিলাম, এ বিষয়ে তোমার পূর্বে আমাকে আর কেউ জিজ্ঞেস করবে না। কেননা আমি দেখেছি হাদীসের প্রতি তোমার বিশেষ লোভ রয়েছে। ক্বিয়ামতের দিন আমার শাফা’আত লাভে সবচেয়ে সৌভাগ্যবান হবে সেই ব্যাক্তি যে একনিষ্ঠচিত্তে (لآ إِلَهَلا إله إلا الله) (আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন ইলাহ নেই) বলে।

(৬৫৭০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৯৮, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৯৯)

৩/৩৪ অধ্যায়ঃ
কীভাবে (দ্বীনী) জ্ঞান তুলে নেয়া হবে।

‘উমর ইব্‌নু আবদুল আযীয (রহঃ) মদীনায় আবূ বকর ইব্‌নু হাযম (রহঃ) – এর কাছে এক পত্রে লিখেন : খোঁজ কর , রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর যে হাদীস পাও তা লিখে নাও। আমি ইলম লোপ পাওয়ার এবং আলিমদের বিদায় নেওয়ার আশংকা করছি এবং জেনে রাখো , নবী করীম (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর হাদীস ছাড়া আর কিছুই গ্রহণ করা হবে না এবং প্রত্যেকের উচিত ইলমের প্রচার-প্রসার করা , আর তারা যেন একত্রে বসে (ইলমের চর্চা করে ) , যাতে যে জানে না সে শিক্ষা লাভ করতে পারে। কারণ ইলম গোপনীয় বিষয় না হওয়া পর্যন্ত বিলুপ্ত হবে না।

‘আলা ইব্‌নু ‘আব্দুল জব্বার (রহঃ) ….. আব্দুল্লাহ্ ইব্‌নু দীনার (রহঃ)- এর সূত্রে বর্ণিত রিওয়ায়াতে ‘উমার ইব্‌নু আবদুল-‘আযীয (রহঃ)- এর উপরোক্ত হাদীসে ‘আলিমগণের বিদায় নেওয়া’ পর্যন্ত বর্ণিত আছে। (আ প্র অনুচ্ছেদ পৃ ৮৫ , ই: ফা: ১০০)

১০০
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ إِنَّ اللَّهَ لاَ يَقْبِضُ الْعِلْمَ انْتِزَاعًا، يَنْتَزِعُهُ مِنَ الْعِبَادِ، وَلَكِنْ يَقْبِضُ الْعِلْمَ بِقَبْضِ الْعُلَمَاءِ، حَتَّى إِذَا لَمْ يُبْقِ عَالِمًا، اتَّخَذَ النَّاسُ رُءُوسًا جُهَّالاً فَسُئِلُوا، فَأَفْتَوْا بِغَيْرِ عِلْمٍ، فَضَلُّوا وَأَضَلُّوا ‏”‏‏.

قَالَ الْفِرَبْرِيُّ حَدَّثَنَا عَبَّاسٌ قَالَ حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ هِشَامٍ نَحْوَهُ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমর ইব্‌নুল ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের অন্তর থেকে ‘ইলম উঠিয়ে নেন না, কিন্তু দ্বীনের আলিমদের উঠিয়ে নেয়ার ভয় করি। যখন কোন আলিম অবশিষ্ট থাকবে না তখন লোকেরা মূর্খদেরকেই নেতা বানিয়ে নিবে। তাঁদের জিজ্ঞেস করা হলে না জানলেও ফতোয়া প্রদান করবে। ফলে তারা নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে , এবং অন্যকেও পথভ্রষ্ট করবে।

ফিরাবরী বলেন, ………… জরীর হিশামের নিকট হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

(৭৩০৭; মুসলিম ৪৭/৪, হাঃ ২৬৭৩, আহমাদ ৬৫২১) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৯৯, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১০১)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]