সহীহ বুখারী শরীফ হজ্জ অধ্যায় ৩য় ভাগ হাদিস নং ১৬০১ – ১৬৪৩

২৫/৫৪. অধ্যায়ঃ
কা‘বা ঘরের অভ্যন্তরে চতুর্দিকে তাকবীর ধ্বনি দেয়া।

১৬০১
حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ إِنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَمَّا قَدِمَ أَبَى أَنْ يَدْخُلَ الْبَيْتَ وَفِيهِ الآلِهَةُ فَأَمَرَ بِهَا فَأُخْرِجَتْ فَأَخْرَجُوا صُورَةَ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ فِي أَيْدِيهِمَا الأَزْلاَمُ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَاتَلَهُمْ اللهُ أَمَا وَاللهِ لَقَدْ عَلِمُوا أَنَّهُمَا لَمْ يَسْتَقْسِمَا بِهَا قَطُّ فَدَخَلَ الْبَيْتَ فَكَبَّرَ فِي نَوَاحِيهِ وَلَمْ يُصَلِّ فِيهِ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন (মক্কা) এলেন, তখন কা‘বা ঘরে প্রবেশ করতে অস্বীকৃতি জানান। কেননা কা‘বা ঘরের ভিতরে মূর্তি ছিল। তিনি নির্দেশ দিলেন এবং মূর্তিগুলো বের করে ফেলা হল। (এক পর্যায়ে) ইব্রাহীম ও ইসমা‘ঈল (‘আঃ)-এর প্রতিকৃতি বের করে আনা হয়। তাদের উভয়ের হাতে জুয়া খেলার তীর ছিল। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আল্লাহ! (মুশরিকদের) ধ্বংস করুন। আল্লাহর কসম! অবশ্যই তারা জানে যে, [ইব্রাহীম ও ইসমা‘ঈল (‘আঃ)] তীর দিয়ে অংশ নির্ধারণের ভাগ্য পরীক্ষা কখনো করেননি। এরপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কা‘বা ঘরে প্রবেশ করেন এবং ঘরের চারদিকে তাকবীর বলেন। কিন্তু ঘরের ভিতরে সালাত আদায় করেননি। (৩৯৮)

(আঃপ্রঃ ১৪৯৭, ইঃফাঃ ১৫০৩)

২৫/৫৫. অধ্যায়ঃ
রামল কিভাবে শুরু হয়েছিল।

১৬০২
. حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ هُوَ ابْنُ زَيْدٍ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَدِمَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَصْحَابُهُ فَقَالَ الْمُشْرِكُونَ إِنَّهُ يَقْدَمُ عَلَيْكُمْ وَقَدْ وَهَنَهُمْ حُمَّى يَثْرِبَ فَأَمَرَهُمْ النَّبِيُّ أَنْ يَرْمُلُوا الأَشْوَاطَ الثَّلاَثَةَ وَأَنْ يَمْشُوا مَا بَيْنَ الرُّكْنَيْنِ وَلَمْ يَمْنَعْهُ أَنْ يَأْمُرَهُمْ أَنْ يَرْمُلُوا الأَشْوَاطَ كُلَّهَا إِلاَّ الإِبْقَاءُ عَلَيْهِمْ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীগণকে নিয়ে মক্কা আগমণ করলে মুশরিকরা মন্তব্য করল, এমন একদল লোক আসছে যাদেরকে ইয়াস্‌রিব-এর (মদীনার) জ্বর দুর্বল করে দিয়েছে (এ কথা শুনে) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীগণকে তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করে ‘রামল’ করতে (উভয় কাঁধ হেলে দুলে জোর কদমে চলতে) এবং উভয় রুকনের মধ্যবর্তী স্থানটুকু স্বাভাবিক গতিতে চলতে নির্দেশ দিলেন, সাহাবীদের প্রতি দয়াবশত সব ক’টি চক্করে রামল করতে আদেশ করেননি।

(৪২৫৬, মুসলিম ১৫/৩৯, হাঃ ১২৬৬) (আঃপ্রঃ ১৪৯৮, ইঃফাঃ ১৫০৪)

২৫/৫৬. অধ্যায়ঃ
মক্কায় আগমণের পরই তাওয়াফের প্রারম্ভে হাজ্‌রে আসওয়াদ চুম্বন ও স্পর্শ করা এবং তিন চক্করে রামল করা।

১৬০৩
حَدَّثَنَا أَصْبَغُ بْنُ الْفَرَجِ أَخْبَرَنِي ابْنُ وَهْبٍ عَنْ يُونُسَ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيهِ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ يَقْدَمُ مَكَّةَ إِذَا اسْتَلَمَ الرُّكْنَ الأَسْوَدَ أَوَّلَ مَا يَطُوفُ يَخُبُّ ثَلاَثَةَ أَطْوَافٍ مِنْ السَّبْعِ

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মক্কায় উপনীত হয়ে তাওয়াফের শুরুতে হাজ্‌রে আসওয়াদ ইসতিলাম (চুম্বন, স্পর্শ)- করতে এবং সাত চক্করের মধ্যে প্রথম তিন চক্করে রামল করতে দেখেছি।

(১৬০৪, ১৬১৬, ১৬১৭, ১৬৪৪, মুসলিম ১৫/৩৯ হাঃ ১২৬১) (আঃপ্রঃ ১৪৯৯, ইঃফাঃ ১৫০৫)

২৫/৫৭. অধ্যায়ঃ
হজ্জ ও ‘উমরাতে রামল করা।

১৬০৪
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ سَلاَمٍ حَدَّثَنَا سُرَيْجُ بْنُ النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا فُلَيْحٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ سَعَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ثَلاَثَةَ أَشْوَاطٍ وَمَشَى أَرْبَعَةً فِي الْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ تَابَعَهُ اللَّيْثُ قَالَ حَدَّثَنِي كَثِيرُ بْنُ فَرْقَدٍ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হজ্জ এবং ‘উমরাহ’র তাওয়াফে (প্রথম) তিন চক্করে রামল করেছেন, অবশিষ্ট চার চক্করে স্বাভাবিক গতিতে চলেছেন। লাইস (রহঃ) হাদীস বর্ননায় সুরাইজ ইব্‌নু নু‘মান (রহঃ)-এর অনুসরণ করে বলেন, কাসীর ইব্‌নু ফারকাদ (রহঃ)…ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন। (১৬০৩)

(আঃপ্রঃ ১৫০০, ইঃফাঃ ১৫০৬)

১৬০৫
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرِ بْنِ أَبِي كَثِيرٍ قَالَ أَخْبَرَنِي زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ عَنْ أَبِيهِ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ قَالَ لِلرُّكْنِ أَمَا وَاللهِ إِنِّي لأعْلَمُ أَنَّكَ حَجَرٌ لاَ تَضُرُّ وَلاَ تَنْفَعُ وَلَوْلاَ أَنِّي رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم اسْتَلَمَكَ مَا اسْتَلَمْتُكَ فَاسْتَلَمَهُ ثُمَّ قَالَ فَمَا لَنَا وَلِلرَّمَلِ إِنَّمَا كُنَّا رَاءَيْنَا بِهِ الْمُشْرِكِينَ وَقَدْ أَهْلَكَهُمْ اللهُ ثُمَّ قَالَ شَيْءٌ صَنَعَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَلاَ نُحِبُّ أَنْ نَتْرُكَ

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘উমর ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ) হাজ্‌রে আসওয়াদকে লক্ষ্য করে বললেন, ওহে! আল্লাহর কসম, আমি নিশ্চিতরূপে জানি তুমি একটি পাথর, তুমি কারও কল্যাণ বা অকল্যাণ করতে পার না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তোমায় চুম্বন করতে না দেখলে আমি তোমাকে চুম্বন করতাম না। এরপর তিনি চুম্বন করলেন। পরে বললেন, আমাদের রামল করার উদ্দেশ্য কী ছিল? আমরা তো রামল করে মুশরিকদেরকে আমাদের শক্তি প্রদর্শন করেছিলাম। আল্লাহ এখন তাদের ধ্বংস করে দিয়েছেন। এরপর বললেন, যেহেতু এই (রামল) কাজটি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) করেছেন, তাই তা পরিত্যাগ করা পছন্দ করি না। (১৫৯৭)

(আঃপ্রঃ ১৫০১, ইঃফাঃ ১৫০৭)

১৬০৬
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ مَا تَرَكْتُ اسْتِلاَمَ هَذَيْنِ الرُّكْنَيْنِ فِي شِدَّةٍ وَلاَ رَخَاءٍ مُنْذُ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَسْتَلِمُهُمَا قُلْتُ لِنَافِعٍ أَكَانَ ابْنُ عُمَرَ يَمْشِي بَيْنَ الرُّكْنَيْنِ قَالَ إِنَّمَا كَانَ يَمْشِي لِيَكُونَ أَيْسَرَ لاِسْتِلاَمِهِ

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন হতে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (তাওয়াফ করার সময়) এ দু’টি রুকন ইসতিলাম (চুমু) করতে দেখেছি, তখন হতে ভীড় থাকুক বা নাই থাকুক কোন অবস্থাতেই এ দু’-এর ইসতিলাম (চুমু) করা বাদ দেইনি। [রাবী ‘উবাইদুল্লাহ (রহঃ) বলেন] আমি নাফি‘ (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) কি ঐ ‘দু’ রুকনের মধ্যবর্তী স্থানে স্বাভাবিক গতিতে চলতেন? তিনি বললেন, সহজে ইসতিলাম করার উদ্দেশে তিনি (এতদুভয়ের মাঝে) স্বাভাবিকভাবে চলতেন।

(১৬১১, মুসলিম ১৫/৪০, হাঃ ১২৬৮, আহমাদ ৪৮৮৭)(আঃপ্রঃ ১৫০২, ইঃফাঃ ১৫০৮)

২৫/৫৮. অধ্যায়ঃ
লাঠি বা ছড়ির মাধ্যমে হাজরে আসওয়াদ চুম্বন করা।

১৬০৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ وَيَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ طَافَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ عَلَى بَعِيرٍ يَسْتَلِمُ الرُّكْنَ بِمِحْجَنٍ تَابَعَهُ الدَّرَاوَرْدِيُّ عَنْ ابْنِ أَخِي الزُّهْرِيِّ عَنْ عَمِّهِ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বিদায় হজ্জের সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উটের পিঠে আরোহণ করে তাওয়াফ করার সময় ছড়ির মাধ্যমে হাজ্‌রে আসওয়াদ চুম্বন করেন। দারাওয়ার্দী (রহঃ) হাদীস বর্ণনায় ইউনুস (রহঃ)-এর অনুসরণ করে ইব্‌নু আবিয যুহরী (রহঃ) সূত্রে তার চাচা (যুহরী) (রহঃ) হতে রিওয়ায়াত করেছেন।

(১৬১২, ১৬৩, ১৬৩২, ৫২৯৩, মুসলিম ১৫/৪২, হাঃ ১২৭২, আহমাদ) (আঃপ্রঃ ১৫০৩, ইঃফাঃ ১৫০৯)

২৫/৫৯. অধ্যায়ঃ
যে কেবল দুই ইয়ামানী রুকনকে চুম্বন করে।

১৬০৮
وَقَالَ مُحَمَّدُ بْنُ بَكْرٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ عَنْ أَبِي الشَّعْثَاءِ أَنَّهُ قَالَ وَمَنْ يَتَّقِي شَيْئًا مِنْ الْبَيْتِ وَكَانَ مُعَاوِيَةُ يَسْتَلِمُ الأَرْكَانَ فَقَالَ لَهُ ابْنُ عَبَّاسٍ إِنَّهُ لاَ يُسْتَلَمُ هَذَانِ الرُّكْنَانِ فَقَالَ لَيْسَ شَيْءٌ مِنْ الْبَيْتِ مَهْجُورًا وَكَانَ ابْنُ الزُّبَيْرِ يَسْتَلِمُهُنَّ كُلَّهُنَّ

আবুশ-শা‘সা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কে আছে বায়তুল্লাহর কোন অংশ (কোন রুকনের ইস্‌তিলাম) ছেড়ে দেয়; মু‘আবিয়াহ (রাঃ) (চার) রুকনের ইস্‌তিলাম করতেন। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) তাঁকে বললেন, আমরা এ দু’রুকন-এর চুম্বন করি না। তখন মু‘আবিয়াহ (রাঃ) তাঁকে বললেন, বায়তুল্লাহর কোন অংশই বাদ দেয়া যেতে পারে না। ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু যুবাইর (রাঃ) সব কয়টি রুকন ইস্‌তিলাম করতেন।

(আঃপ্রঃ অনুচ্ছেদ ৫৯, ইঃফাঃ পরিচ্ছেদ ১০২৯)

১৬০৯
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ حَدَّثَنَا لَيْثٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللهِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ لَمْ أَرَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَسْتَلِمُ مِنْ الْبَيْتِ إِلاَّ الرُّكْنَيْنِ الْيَمَانِيَيْنِ

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে কেবল ইয়ামানী দু’ রুকনকে ইস্‌তিলাম করতে দেখেছি। (১৬৬)

(আঃপ্রঃ ১৫০৪, ইঃফাঃ ১৫১০)

২৫/৬০. অধ্যায়ঃ
হাজ্‌রে আসওয়াদকে চুম্বন করা।

১৬১০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سِنَانٍ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ أَخْبَرَنَا وَرْقَاءُ أَخْبَرَنَا زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ رَأَيْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَبَّلَ الْحَجَرَ وَقَالَ لَوْلاَ أَنِّي رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَبَّلَكَ مَا قَبَّلْتُكَ

আসলাম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘উমর ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ)-কে হাজ্‌রে আসওয়াদ চুম্বন করতে দেখেছি। আর তিনি বললেন, যদি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তোমায় চুম্বন করতে না দেখতাম তাহলে আমিও তোমায় চুম্বন করতাম না। (১৫৯৭)

(আঃপ্রঃ ১৫০৫, ইঃফাঃ ১৫১১)

১৬১১
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ الزُّبَيْرِ بْنِ عَرَبِيٍّ قَالَ سَأَلَ رَجُلٌ ابْنَ عُمَرَ عَنْ اسْتِلاَمِ الْحَجَرِ فَقَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَسْتَلِمُهُ وَيُقَبِّلُهُ قَالَ قُلْتُ أَرَأَيْتَ إِنْ زُحِمْتُ أَرَأَيْتَ إِنْ غُلِبْتُ قَالَ اجْعَلْ أَرَأَيْتَ بِالْيَمَنِ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَسْتَلِمُهُ وَيُقَبِّلُهُ

যুবাইর ইব্‌নু ‘আরাবী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি হাজ্‌রে আসওয়াদ সম্পর্কে ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ)-এর নিকট জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তার স্পর্শ ও চুম্বন করতে দেখেছি। সে ব্যক্তি বলল, যদি ভীড়ে আটকে যাই বা অপারগ হই তাহলে (চুম্বন করা, না করা সম্পর্কে) আপনার অভিমত কি? তিনি (ইব্‌নু ‘উমর) বললেন, আপনার অভিমত কী? এ কথাটি ইয়ামানে রেখে দাও। আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তা স্পর্শ ও চুম্বন করতে দেখেছি। (১৬০৬)

(আঃপ্রঃ ১৫০৬, ইঃফাঃ ১৫১২)

হাজ্‌রে আসওয়াদের নিকটে পৌঁছে তার দিকে ইঙ্গিত করা।
২৫/৬১. অধ্যায়ঃ

১৬১২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ طَافَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِالْبَيْتِ عَلَى بَعِيرٍ كُلَّمَا أَتَى عَلَى الرُّكْنِ أَشَارَ إِلَيْهِ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উটের পিঠে (আরোহণ করে) বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করেন, যখনই তিনি হাজ্‌রে আসওয়াদের কাছে আসতেন তখনই কোন কিছু দিয়ে তার প্রতি ইঙ্গিত করতেন। (১৬০৭)

(আঃপ্রঃ ১৫০৭, ইঃফাঃ ১৫১৩)

২৫/৬২. অধ্যায়ঃ
হাজ্‌রে আসওয়াদ-এর নিকটে তাকবীর পাঠ করা।

১৬১৩
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا خَالِدٌ الْحَذَّاءُ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ طَافَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِالْبَيْتِ عَلَى بَعِيرٍ كُلَّمَا أَتَى الرُّكْنَ أَشَارَ إِلَيْهِ بِشَيْءٍ كَانَ عِنْدَهُ وَكَبَّرَ

تَابَعَهُ إِبْرَاهِيمُ بْنُ طَهْمَانَ عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উটের পিঠে আরোহণ করে বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করেন, যখনই তিনি হাজ্‌রে আসওয়াদের কাছে আসতেন তখনই কোন কিছুর দ্বারা তার ইঙ্গিত করতেন এবং তাকবীর বলতেন [৫৯]। (১৬০৭) (আঃপ্রঃ ১৫০৮, ইঃফাঃ ১৫১৪)

ইব্রাহীম ইব্‌নু তাহমান (রহঃ) খালিদ হায্‌যা (রহঃ) হতে হাদীস বর্ণনায় তার (খালিদ ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ) অনুসরণ করেছেন।


[৫৯] হাজারে আসওয়াদকে যদি হাত দ্বারা বা ছড়ি দ্বারা স্পর্শ করা সম্ভব না হয়, তবে কেবলমাত্র হাজারে আসওয়াদের প্রতি নিজ হাতে ইশারা করে “আল্লাহু আকবার” বলবে। কিন্তু ইশারাকৃত হাত চুম্বন করবে না। (আধুনিক প্রকাশনী প্রকাশিত বুখারী ২য় খন্ড ১০৪ পৃষ্ঠার টীকায় হাত চুম্বন করার কথা বলা হয়েছে যা হাদীস সম্মত নয়, দ্রষ্টব্য বুখারী হাদীস ১৫০৭-১৫০৮)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

২৫/৬৩. অধ্যায়ঃ
মক্কায় আগমন করে গৃহে প্রত্যাবর্তনের পূর্বে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করা। অতঃপর দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করে সাফার দিকে (সা‘য়ী করতে) যাওয়া।

১৬১৪
حَدَّثَنَا أَصْبَغُ عَنْ ابْنِ وَهْبٍ أَخْبَرَنِي عَمْرٌو عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ ذَكَرْتُ لِعُرْوَةَ قَالَ فَأَخْبَرَتْنِي عَائِشَةُ أَنَّ أَوَّلَ شَيْءٍ بَدَأَ بِهِ حِينَ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ تَوَضَّأَ ثُمَّ طَافَ ثُمَّ لَمْ تَكُنْ عُمْرَةً ثُمَّ حَجَّ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ مِثْلَهُ ثُمَّ حَجَجْتُ مَعَ أَبِي الزُّبَيْرِ فَأَوَّلُ شَيْءٍ بَدَأَ بِهِ الطَّوَافُ ثُمَّ رَأَيْتُ الْمُهَاجِرِينَ وَالأَنْصَارَ يَفْعَلُونَهُ وَقَدْ أَخْبَرَتْنِي أُمِّي أَنَّهَا أَهَلَّتْ هِيَ وَأُخْتُهَا وَالزُّبَيْرُ وَفُلاَنٌ وَفُلاَنٌ بِعُمْرَةٍ فَلَمَّا مَسَحُوا الرُّكْنَ حَلُّوا

‘আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় উপনীত হয়ে সর্বপ্রথম অযূ করে তাওয়াফ সম্পন্ন করেন। (রাবী) ‘উরওয়াহ (রহঃ) বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এই তাওয়াফটি ‘উমরাহ’র তাওয়াফ ছিল না। (তিনি আরো বলেন) অতঃপর আবূ বকর ও ‘উমর (রাঃ) অনুরূপভাবে হজ্জ করেছেন। এরপর আমার পিতা যুবাইর (রাঃ)-এর সাথে আমি হজ্জ করেছি তাতেও দেখেছি যে, সর্বপ্রথম তিনি তাওয়াফ করেছেন। এরপর মুহাজির, আনসার সকল সাহাবা (রাঃ)-কে এরূপ করতে দেখেছি। আমার মা আমাকে জানিয়েছেন যে, তিনি, তাঁর বোন এবং যুবাইর ও অমুক অমুক ব্যক্তি ‘উমরাহ’র ইহ্‌রাম বেঁধেছেন, যখন তাঁরা তাওয়াফ সমাধা করেছেন, হালাল হয়ে গেছেন।

(১৬১৪=১৬৪১) (১৬১৫=১৬৪২, ১৭৯৬) (আঃপ্রঃ ১৫০৯, ইঃফাঃ ১৫১৫)

১৬১৫
حَدَّثَنَا أَصْبَغُ عَنْ ابْنِ وَهْبٍ أَخْبَرَنِي عَمْرٌو عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ ذَكَرْتُ لِعُرْوَةَ قَالَ فَأَخْبَرَتْنِي عَائِشَةُ أَنَّ أَوَّلَ شَيْءٍ بَدَأَ بِهِ حِينَ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ تَوَضَّأَ ثُمَّ طَافَ ثُمَّ لَمْ تَكُنْ عُمْرَةً ثُمَّ حَجَّ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ مِثْلَهُ ثُمَّ حَجَجْتُ مَعَ أَبِي الزُّبَيْرِ فَأَوَّلُ شَيْءٍ بَدَأَ بِهِ الطَّوَافُ ثُمَّ رَأَيْتُ الْمُهَاجِرِينَ وَالأَنْصَارَ يَفْعَلُونَهُ وَقَدْ أَخْبَرَتْنِي أُمِّي أَنَّهَا أَهَلَّتْ هِيَ وَأُخْتُهَا وَالزُّبَيْرُ وَفُلاَنٌ وَفُلاَنٌ بِعُمْرَةٍ فَلَمَّا مَسَحُوا الرُّكْنَ حَلُّوا

‘আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় উপনীত হয়ে সর্বপ্রথম অযূ করে তাওয়াফ সম্পন্ন করেন। (রাবী) ‘উরওয়াহ (রহঃ) বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর এই তাওয়াফটি ‘উমরাহ’র তাওয়াফ ছিল না। (তিনি আরো বলেন) অতঃপর আবূ বকর ও ‘উমর (রাঃ) অনুরূপভাবে হজ্জ করেছেন। এরপর আমার পিতা যুবাইর (রাঃ)-এর সাথে আমি হজ্জ করেছি তাতেও দেখেছি যে, সর্বপ্রথম তিনি তাওয়াফ করেছেন। এরপর মুহাজির, আনসার সকল সাহাবা (রাঃ)-কে এরূপ করতে দেখেছি। আমার মা আমাকে জানিয়েছেন যে, তিনি, তাঁর বোন এবং যুবাইর ও অমুক অমুক ব্যক্তি ‘উমরাহ’র ইহ্‌রাম বেঁধেছেন, যখন তাঁরা তাওয়াফ সমাধা করেছেন, হালাল হয়ে গেছেন। (১৬১৪=১৬৪১)

(১৬১৫=১৬৪২, ১৭৯৬) (আঃপ্রঃ ১৫০৯, ইঃফাঃ ১৫১৫)

১৬১৬
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا أَبُو ضَمْرَةَ أَنَسٌ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا طَافَ فِي الْحَجِّ أَوْ الْعُمْرَةِ أَوَّلَ مَا يَقْدَمُ سَعَى ثَلاَثَةَ أَطْوَافٍ وَمَشَى أَرْبَعَةً ثُمَّ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ ثُمَّ يَطُوفُ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় উপনীত হয়ে হজ্জ বা ‘উমরাহ উভয় অবস্থায় সর্বপ্রথম যে তাওয়াফ করতেন, তার প্রথম তিন চক্করে রামল করতেন এবং পরবর্তী চার চক্করে স্বাভাবিকভাবে হেঁটে চলতেন। তাওয়াফ শেষে দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করে সাফা ও মারওয়ায় সা‘ঈ করতেন। (১৬০৩)

(আঃপ্রঃ ১৫১০, ইঃফাঃ ১৫১৬)

১৬১৭
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ عِيَاضٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا طَافَ بِالْبَيْتِ الطَّوَافَ الأَوَّلَ يَخُبُّ ثَلاَثَةَ أَطْوَافٍ وَيَمْشِي أَرْبَعَةً وَأَنَّهُ كَانَ يَسْعَى بَطْنَ الْمَسِيلِ إِذَا طَافَ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বায়তুল্লাহ পৌঁছে প্রথম তাওয়াফ করার সময় তিন চক্করে রামল করেতেন এবং পরবর্তী চার চক্করে স্বাভাবিক গতিতে হেঁটে চলতেন। সাফা ও মারওয়ায় সা’ঈ করার সময় উভয় টিলার মধ্যবর্তী নিচু স্থানটুকু দ্রুতগতিতে চলতেন। (১৬০৩)

(আঃপ্রঃ ১৫১১, ইঃফাঃ ১৫১৭)

২৫/৬৪. অধ্যায়ঃ
পুরুষের সঙ্গে নারীদের তাওয়াফ করা।

১৬১৮
و قَالَ لِي عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنَا قَالَ أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ إِذْ مَنَعَ ابْنُ هِشَامٍ النِّسَاءَ الطَّوَافَ مَعَ الرِّجَالِ قَالَ كَيْفَ يَمْنَعُهُنَّ وَقَدْ طَافَ نِسَاءُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَعَ الرِّجَالِ قُلْتُ أَبَعْدَ الْحِجَابِ أَوْ قَبْلُ قَالَ إِي لَعَمْرِي لَقَدْ أَدْرَكْتُهُ بَعْدَ الْحِجَابِ قُلْتُ كَيْفَ يُخَالِطْنَ الرِّجَالَ قَالَ لَمْ يَكُنَّ يُخَالِطْنَ كَانَتْ عَائِشَةُ تَطُوفُ حَجْرَةً مِنْ الرِّجَالِ لاَ تُخَالِطُهُمْ فَقَالَتْ امْرَأَةٌ انْطَلِقِي نَسْتَلِمْ يَا أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ قَالَتْ انْطَلِقِي عَنْكِ وَأَبَتْ يَخْرُجْنَ مُتَنَكِّرَاتٍ بِاللَّيْلِ فَيَطُفْنَ مَعَ الرِّجَالِ وَلَكِنَّهُنَّ كُنَّ إِذَا دَخَلْنَ الْبَيْتَ قُمْنَ حَتَّى يَدْخُلْنَ وَأُخْرِجَ الرِّجَالُ وَكُنْتُ آتِي عَائِشَةَ أَنَا وَعُبَيْدُ بْنُ عُمَيْرٍ وَهِيَ مُجَاوِرَةٌ فِي جَوْفِ ثَبِيرٍ قُلْتُ وَمَا حِجَابُهَا قَالَ هِيَ فِي قُبَّةٍ تُرْكِيَّةٍ لَهَا غِشَاءٌ وَمَا بَيْنَنَا وَبَيْنَهَا غَيْرُ ذَلِكَ وَرَأَيْتُ عَلَيْهَا دِرْعًا مُوَرَّدًا

[ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন] আমাকে ‘আমর ইব্‌নু ‘আলী (রহঃ) থেকে ইব্‌নু জুরাইজ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আত্বা (রহঃ) বলেছেন, ইব্‌নু হিশাম (রহঃ) যখন মহিলাদের পুরুষের সঙ্গে তাওয়াফ করতে নিষেধ করেন, তখন ‘আত্বা (রহঃ) তাঁকে বললেন, আপনি তাদের কী করে নিষেধ করেছেন, অথচ নবী সহধর্মিণীগন পুরুষদের সঙ্গে তাওয়াফ করেছেন? [ইব্‌নু জুরাইজ (রহঃ) বলেন] আমি তাঁকে প্রশ্ন করলাম, তা কি পর্দার আয়াত নাযিল হওয়ার পরে, না পূর্বে? তিনি [আত্বা (রহঃ)] বললেন, হ্যাঁ আমার জিবনের কসম, আমি পর্দার আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পরের কথাই বলছি। আমি জানতে চাইলাম পুরুষগন মহিলাদের সাথে মিলে কিভাবে তাওয়াফ করতেন? তিনি বললেন, পুরুষগন মহিলাদের সাথে মিলে তাওয়াফ করতেন না। ‘আয়েশা (রাঃ) বরং পুরুষদের পাশ কাটিয়ে তাওয়াফ করতেন, তাদের মাঝে মিশে যেতেন না। এক মহিলা ‘আয়েশা (রাঃ) কে বললেন চলুন, হে উম্মুল ‘মু’মিনীন! আমরা তাওয়াফ করে আসি। তিনি বললেন, “তোমার মনে চাইলে তুমি যাও” আর তিনি যেতে অস্বীকার করলেন। তাঁরা রাতের বেলা পর্দা করে বের হয়ে (সম্পূর্ণ না মিশে) পুরুষদের পাশাপাশি থেকে তাওয়াফ করতেন। উম্মুল মু’মিনীনগন বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করতে চাইলে সকল পুরুষ বের করে না দেয়া পর্যন্ত তাঁরা দাঁড়িয়ে থাকতেন। ‘আত্বা (রহঃ) বলেনহ, ‘ঊবাইদ ইব্‌নু ‘উমাইর এবং আমি ‘আয়েশা (রাঃ) এর কাছে গেলাম, তিনি তখন “সবীর” পর্বতে অবপাথান করছিলেন।? [ইব্‌নু জুরাইজ (রহঃ) বলেন] আমি বললাম, তখন তিনি কি দিয়ে পর্দা করছিলেন? আত্বা (রহঃ) বললেন, তখন তিনি পর্দা ঝুলানো তুর্কী তাঁবুতে ছিলেন, এছাড়া তাঁর ও আমাদের মাঝে অন্য কোন কিছু ছিলনা। (অকস্মাৎ দৃষ্টি পড়ায়) আমি তাঁর গায়ে গোলাপি রং-এর চাদর দেখতে পেলাম।

(আঃপ্রঃ অনুচ্ছেদ ৬৪, ইঃফাঃ পরিচ্ছেদ ১০২৪)

১৬১৯
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ نَوْفَلٍ عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ شَكَوْتُ إِلَى رَسُولِ اللهِ أَنِّي أَشْتَكِي فَقَالَ طُوفِي مِنْ وَرَاءِ النَّاسِ وَأَنْتِ رَاكِبَةٌ فَطُفْتُ وَرَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِينَئِذٍ يُصَلِّي إِلَى جَنْبِ الْبَيْتِ وَهُوَ يَقْرَأُ {وَالطُّورِ وَكِتَابٍ مَسْطُورٍ}

নবী সহধর্মিণী উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট অসুস্থতার কথা জানালে তিনি বললেনঃ বাহনে আরোহণ করে মানুষের পেছনে পেছনে থেকে তাওয়াফ কর। আমি মানুষের পেছনে পেছনে থেকে তাওয়াফ করছিলাম, তখন আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কা’বা ঘরের পার্শ্বে সালাত আদায় করছিলেন এবং এতে তিনি (আরবি) এই (সূরাটি) তিলাওয়াত করেছিলেন। (৪৬৪)

(আঃপ্রঃ ১৫১২, ইঃফাঃ ১৫১৮)

২৫/৬৫. অধ্যায়ঃ
তাওয়াফ করার সময় কথাবার্তা বলা।

১৬২০
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى حَدَّثَنَا هِشَامٌ أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ أَخْبَرَهُمْ قَالَ أَخْبَرَنِي سُلَيْمَانُ الأَحْوَلُ أَنَّ طَاوُسًا أَخْبَرَهُ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم مَرَّ وَهُوَ يَطُوفُ بِالْكَعْبَةِ بِإِنْسَانٍ رَبَطَ يَدَهُ إِلَى إِنْسَانٍ بِسَيْرٍ أَوْ بِخَيْطٍ أَوْ بِشَيْءٍ غَيْرِ ذَلِكَ فَقَطَعَهُ النَّبِيُّ بِيَدِهِ ثُمَّ قَالَ قُدْهُ بِيَدِهِ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বায়তুল্লাহর তাওয়াফের সময় এক ব্যক্তির নিকট দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, সে চামড়ার ফিতা বা সূতা অথবা অন্য কিছু দ্বারা আপন হাত অপর এক ব্যক্তির সাথে বেঁধে দিয়েছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ হাতে তাঁর বাঁধন ছিন্ন করে দিয়ে বললেনঃ হাত ধরে টেনে নাও।

(১৬২১, ৬৭০২, ৬৭০৩) (আঃপ্রঃ ১৫১৩, ইঃফাঃ ১৫১৯)

২৫/৬৬. অধ্যায়ঃ
তাওয়াফের সময় রশি দিয়ে কাউকে টানতে দেখলে বা অশোভণীয় কোন কিছু দেখলে তা হতে বাধা প্রদান করবে।

১৬২১
حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ عَنْ ابْنِ جُرَيْجٍ عَنْ سُلَيْمَانَ الأَحْوَلِ عَنْ طَاوُسٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَأَى رَجُلاً يَطُوفُ بِالْكَعْبَةِ بِزِمَامٍ أَوْ غَيْرِهِ فَقَطَعَهُ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে কা’বা ঘরে তাওয়াফ করতে দেখতে পেলেন এ অবস্থায় যে, চাবুকের ফিতা বা অন্য কিছু দিয়ে (তাকে টেনে নেয়া হচ্ছে)। তখন তিনি টা বিচ্ছিন্ন করে দিলেন। (১৬২০)

(আঃপ্রঃ ১৫১৪, ইঃফাঃ ১৫২০)

২৫/৬৭. অধ্যায়ঃ
উলঙ্গ হয়ে বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করবে না এবং কোন মুশরিক হজ্জ করবে না।

১৬২২
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ قَالَ يُونُسُ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ حَدَّثَنِي حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا بَكْرٍ الصِّدِّيقَ بَعَثَهُ فِي الْحَجَّةِ الَّتِي أَمَّرَهُ عَلَيْهَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَبْلَ حَجَّةِ الْوَدَاعِ يَوْمَ النَّحْرِ فِي رَهْطٍ يُؤَذِّنُ فِي النَّاسِ أَلاَ لاَ يَحُجُّ بَعْدَ الْعَامِ مُشْرِكٌ وَلاَ يَطُوفُ بِالْبَيْتِ عُرْيَانٌ

আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বিদায় হজ্জের পুর্বে যে হজ্জে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবূ বকর (রাঃ)-কে আমীর নিযুক্ত করেন, সে হজ্জে কুরবানীর দিন [আবূ বকর (রাঃ)] আমাকে একদল লোকের সঙ্গে পাঠালেন, যারা লোকদের কাছে ঘোষনা করবে যে, এ বছরের পর হতে কোন মুশরিক হজ্জ করবে না এবং উলঙ্গ হয়ে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করবে না।

(৩৬৯, মুসলিম ১৫/৭৭, হাঃ ১৩৪৭, আহমাদ ৪) (আঃপ্রঃ ১৫১৫, ইঃফাঃ ১৫২১)

২৫/৬৮. অধ্যায়ঃ
তাওয়াফ আরম্ভ করার পর থেমে গেলে।

‘আত্বা (রহঃ) বলেন, কেও তাওয়াফ করার সময় সালাতের ইক্বামাত দেয়া হলে অথবা কাউকে তার স্থান হতে হটিয়ে দেয়া হলে সালামের পর ঐ স্থান হতে তাওয়াফ আবার শুরু করবে যেখান হতে তা বন্ধ হয়েছিল। ইব্‌নু ‘উমর ও ‘আবদুর রাহমান ইব্‌নু আবূ বাকার (রাঃ) হতেও অনুরূপ উল্লেখ রয়েছে।

২৫/৬৯. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাওয়াফের সাত চক্কর পর দু’ রাক’আত সালাত আদায় করেছেন।

নাফি’ (রহঃ) বলেন, ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) প্রতি সাত চক্কর শেষে দু’ রাক’আত সালাত আদায় করতেন। ইসমা’ঈল ইব্‌নু উমাইয়া (রহঃ) বলেন, আমি যুহরীকে বললাম, ‘আত্বা (রহঃ) বলেন, তাওয়াফের দু’ রাক’আতের ক্ষেত্রে ফারয্‌ সালাত আদায় করে নিলে তা যথেষ্ট হবে। তখন যুহরী (রহঃ) বললেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর তরীকা অবলম্বন করাই উত্তম, যতবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাওয়াফের সাত চক্কর পূর্ণ করেছেন, ততবার তার পর দু’ রাক’আত সালাত আদায় করেছেন।

১৬২৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو سَأَلْنَا ابْنَ عُمَرَأَيَقَعُ الرَّجُلُ عَلَى امْرَأَتِهِ فِي الْعُمْرَةِ قَبْلَ أَنْ يَطُوفَ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ قَالَ قَدِمَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَطَافَ بِالْبَيْتِ سَبْعًا ثُمَّ صَلَّى خَلْفَ الْمَقَامِ رَكْعَتَيْنِ وَطَافَ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ وَقَالَ {لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللهِ إِسْوَةٌ حَسَنَةٌ}

‘আম্‌র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ)-কে জিজ্জেস করলাম, ‘উমরাহকারীর জন্য সাফা ও মারওয়া সা’য়ী করার পূর্বে স্ত্রী সহবাস বৈধ হবে কি? তিনি বললেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় উপনীত হয়ে সাত চক্করে বাইতুল্লাহর তাওয়াফ সমাপ্ত করে মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে দু’ রাক’আত সালাত আদায় করেন, অতঃপর সাফা ও মারওয়া সা’য়ী করেন। এরপর ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) তিলাওয়াত করেন, “তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে”-(আল-আহযাবঃ ২৩)। (৩৯৫)

(আঃপ্রঃ, ইঃফাঃ ১৫২২)

১৬২৪
قَالَ وَسَأَلْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ فَقَالَ لاَ يَقْرَبُ امْرَأَتَهُ حَتَّى يَطُوفَ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ

(রাবী) ‘আম্‌র (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, সাফা ও মারওয়া সা’য়ী করার পূর্বে স্ত্রী সহবাস বৈধ নয়। (৩৯৬)

(আঃপ্রঃ ১৫১৬, ইঃফাঃ ১৫২২ শেষাংশ)

২৫/৭০. অধ্যায়ঃ
প্রথমবার তাওয়াফ (তাওয়াফে কুদুম)-এর পর ‘আরাফাতে গিয়ে সেখান থেকে প্রত্যাবর্তন না করা পর্যন্ত বাইতুল্লাহর নিকটবর্তী না হওয়া (তাওয়াফ না করা)।

১৬২৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ حَدَّثَنَا فُضَيْلٌ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ أَخْبَرَنِي كُرَيْبٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ قَالَ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَكَّةَ فَطَافَ وَسَعَى بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ وَلَمْ يَقْرَبْ الْكَعْبَةَ بَعْدَ طَوَافِهِ بِهَا حَتَّى رَجَعَ مِنْ عَرَفَةَ

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় উপনীত হয়ে সাত চক্করে তাওয়াফ করে সাফা ও মারওয়া সা’ঈ করেন, এরপর (প্রথম) তাওয়াফের পরে ‘আরাফাহ হতে ফিরে আসার পূর্ব পর্যন্ত বাইতুল্লাহর নিকটবর্তী হননি। (তাওয়াফ করেননি)। (১৫৪৫)

(আঃপ্রঃ ১৫১৭, ইঃফাঃ ১৫২৩)

২৫/৭১. অধ্যায়ঃ
তাওয়াফের দু’ রাক’আত সালাত মাসজিদুল হারামের বাইরে আদায় করা।

‘উমর [ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ)] দু’ রাক’আত সালাত হারাম সীমানার বাইরে আদায় করেছেন।

১৬২৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ زَيْنَبَ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ شَكَوْتُ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم ح وحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا أَبُو مَرْوَانَ يَحْيَى بْنُ أَبِي زَكَرِيَّاءَ الْغَسَّانِيُّ عَنْ هِشَامٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ وَهُوَ بِمَكَّةَ وَأَرَادَ الْخُرُوجَ وَلَمْ تَكُنْ أُمُّ سَلَمَةَ طَافَتْ بِالْبَيْتِ وَأَرَادَتْ الْخُرُوجَ فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أُقِيمَتْ صَلاَةُ الصُّبْحِ فَطُوفِي عَلَى بَعِيرِكِ وَالنَّاسُ يُصَلُّونَ فَفَعَلَتْ ذَلِكَ فَلَمْ تُصَلِّ حَتَّى خَرَجَتْ

উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট অসুস্থতার কথা জানালাম, অন্য সূত্রে মুহাম্মাদ ইব্‌নু হারব (রহঃ)… নবী সহধর্মিনী উম্মু সালামাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কা হতে প্রস্থান করার ইচ্ছা করলে উম্মু সালামাহ (রাঃ) -ও মক্কা ত্যাগের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন, অথচ তিনি (অসুস্থতার কারণে) তখনও বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করতে পারেননি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন তাঁকে বললেনঃ যখন ফজরের সালাতের ইক্বামাত দেয়া হবে আর লোকেরা সালাত আদায় করতে থাকবে, তখন তোমরা উটে আরোহণ করে তুমি তাওয়াফ আদায় করে নিবে। তিনি তাই করলেন। এরপর (তাওয়াফের) সালাত আদায় করার পূর্বেই মক্কা ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন। (৪৬৪)

(আঃপ্রঃ ১৫১৮, ইঃফাঃ ১৫২৪)

২৫/৭২. অধ্যায়ঃ
তাওয়াফের দু’ রাক’আত সালাত মাকামে ইব্রাহীমের পশ্চাতে আদায় করা।

১৬২৭
حَدَّثَنَا آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ عُمَرَ يَقُولُ قَدِمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَطَافَ بِالْبَيْتِ سَبْعًا وَصَلَّى خَلْفَ الْمَقَامِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ خَرَجَ إِلَى الصَّفَا وَقَدْ قَالَ اللهُ تَعَالَى : {لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ}

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় উপনীত হয়ে সাত চক্করে (বাইতুল্লাহর) তাওয়াফ সম্পন্ন করে মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে দু’ রাক’আত সালাত আদায় করলেন। অতঃপর সাফার দিকে বেরিয়ে গেলেন। [ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) বলেন] মহান আল্লাহ বলেছেনঃ “নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ”- (আল-আহযাবঃ ২৩) (৩৯৫)

(আঃপ্রঃ ১৫১৯, ইঃফাঃ ১৫২৫)

২৫/৭৩. অধ্যায়ঃ
ফজর ও ‘আসর-এর (সালাতের) পর তাওয়াফ করা।

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) সূর্যোদয়ের পূর্বেই তাওয়াফের দু’রাক’আত সালাত আদায় করে নিতেন। (একদা) ‘উমর (রাঃ) ফজরের সলাতের পর তাওয়াফ করে বাহনে আরোহণ করেন এবং তাওয়াফের দু’ রাক’আত সালাত যু-তুওয়া (নামক স্থানে) পৌছে আদায় করেন।

১৬২৮
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عُمَرَ الْبَصْرِيُّ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ عَنْ حَبِيبٍ عَنْ عَطَاءٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ نَاسًا طَافُوا بِالْبَيْتِ بَعْدَ صَلاَةِ الصُّبْحِ ثُمَّ قَعَدُوا إِلَى الْمُذَكِّرِ حَتَّى إِذَا طَلَعَتْ الشَّمْسُ قَامُوا يُصَلُّونَ فَقَالَتْ عَائِشَةُ قَعَدُوا حَتَّى إِذَا كَانَتْ السَّاعَةُ الَّتِي تُكْرَهُ فِيهَا الصَّلاَةُ قَامُوا يُصَلُّونَ

‘আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

কিছু লোক ফজরের সলাতের পর বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করল। অতঃপর তারা নসীহতকারীর (নসীহত শোনার জন্য) বসে গেল। অবশেষে সুর্যোদয় হলে তারা দাঁড়িয়ে (তাওয়াফের) সালাত আদায় করল। তখন আয়েশা (রাঃ) বললেন, তারা বসে রইল আর যে সময়টিতে সালাত আদায় করা মাকরূহ তখন তারা সলাতে দাঁড়িয়ে গেল!

(আঃপ্রঃ ১৫২০, ইঃফাঃ ১৫২৬)

১৬২৯
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ حَدَّثَنَا أَبُو ضَمْرَةَ حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ عَنْ نَافِعٍ أَنَّ عَبْدَ اللهِ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَنْهَى عِنِ الصَّلاَةِ عِنْدَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَعِنْدَ غُرُوبِهَا

‘আবদুল্লাহ (ইব্‌নু ‘উমর) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে শুনেছি, তিনি সূর্যোদয়ের সময় এবং সূর্যাস্থের সময় সালাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন। (৫৮২)

(আঃপ্রঃ ১৫২১, ইঃফাঃ ১৫২৭)

১৬৩০
حَدَّثَنِي الْحَسَنُ بْنُ مُحَمَّدٍ هُوَ الزَّعْفَرَانِيُّ حَدَّثَنَا عَبِيدَةُ بْنُ حُمَيْدٍ حَدَّثَنِي عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ رُفَيْعٍ قَالَ رَأَيْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ الزُّبَيْرِ يَطُوفُ بَعْدَ الْفَجْرِ وَيُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ

‘আবদুল ‘আযীয ইব্‌নু রূফাই (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু যুবাইর (রাঃ)-কে ফজরের সালাতের পর তাওয়াফ করতে এবং দু’ রাক’আত (তাওয়াফের) সালাত আদায় করতে দেখেছি।

(আঃপ্রঃ ১৫২২, ইঃফাঃ ১৫২৮)

১৬৩১
قَالَ عَبْدُ الْعَزِيزِ وَرَأَيْتُ عَبْدَ اللهِ بْنَ الزُّبَيْرِ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ بَعْدَ الْعَصْرِ وَيُخْبِرُ أَنَّ عَائِشَةَ حَدَّثَتْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَدْخُلْ بَيْتَهَا إِلاَّ صَلاَّهُمَا

‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু যুবাইর (রাঃ)-কে ‘আসরের সালাতের পর দু’ রাক’আত সালাত আদায় করতে দেখেছি এবং তিনি বলেছেন ‘আয়েশা (রাঃ) তাঁকে বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (‘আসরের সালাতের পরের) এই দু’রাক’আত সালাত আদায় করা ব্যতীত তাঁর ঘরে প্রবেশ করতেন না। (৫৯০)

(আঃপ্রঃ ১৫২২, ইঃফাঃ ১৫২৮ শেষাংশ)

২৫/৭৪. অধ্যায়ঃ
অসুস্থ ব্যক্তির আরোহী হয়ে তাওয়াফ করা।

১৬৩২
حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ الْوَاسِطِيُّ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم طَافَ بِالْبَيْتِ وَهُوَ عَلَى بَعِيرٍ كُلَّمَا أَتَى عَلَى الرُّكْنِ أَشَارَ إِلَيْهِ بِشَيْءٍ فِي يَدِهِ وَكَبَّرَ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উটের পিঠে সওয়ার হয়ে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করেন, যখনই তিনি হাজরে আসওয়াদের কাছে আসতেন তখন তাঁর হাতের বস্তু (লাঠি) দিয়ে তার দিকে ইঙ্গিত করতেন ও তাকবীর বলতেন। (১৬০৭)

(আ.প্র ১৫২৩. , ইঃফাঃ ১৫২৯)

১৬৩৩
دَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ نَوْفَلٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ زَيْنَبَ ابْنَةِ أُمِّ سَلَمَةَ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ قَالَتْ شَكَوْتُ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنِّي أَشْتَكِي فَقَالَ طُوفِي مِنْ وَرَاءِ النَّاسِ وَأَنْتِ رَاكِبَةٌ فَطُفْتُ وَرَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يُصَلِّي إِلَى جَنْبِ الْبَيْتِ وَهُوَ يَقْرَأُ بِـ {الطُّورِ وَكِتَابٍ مَسْطُورٍ}

উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আমার অসুস্থতার কথা জানালে তিন বললেনঃ তুমি সওয়ার হয়ে লোকদের পিছন দিক দিয়ে তাওয়াফ করে নাও। তাই আমি তাওয়াফ করছিলাম এবং আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কা’বার পাশে সালাত আদায় করছিলেন ও সূরা (আরবি) (আত্‌-তূর) তিলাওয়াত করছিলেন। (৪৬৪)

(আঃপ্রঃ ১৫২৪, ইঃফাঃ ১৫৩০)

২৫/৭৫. অধ্যায়ঃ
হাজীদেরকে পানি পান করানো।

১৬৩৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ أَبِي الأَسْوَدِ حَدَّثَنَا أَبُو ضَمْرَةَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ اسْتَأْذَنَ الْعَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَبِيتَ بِمَكَّةَ لَيَالِيَ مِنًى مِنْ أَجْلِ سِقَايَتِهِ فَأَذِنَ لَهُ

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আব্বাস ইব্‌নু ‘আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হাজীদের পানি পান করানোর উদ্দেশে মিনায় অবস্থানের রাতগুলো মক্কায় কাটানোর অনুমতি চাইলে তিনি তাঁকে অনুমতি দেন।

(১৬৪৩, ১৬৪৪, ১৬৪৫, মুসলিম ১৫/৬০, হাঃ ১৩১৫, আহমাদ ৬৭০৭) (আঃপ্রঃ ১৫২৫, ইঃফাঃ ১৫৩১)

১৬৩৫
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ خَالِدٍ الْحَذَّاءِ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم جَاءَ إِلَى السِّقَايَةِ فَاسْتَسْقَى فَقَالَ الْعَبَّاسُ يَا فَضْلُ اذْهَبْ إِلَى أُمِّكَ فَأْتِ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم بِشَرَابٍ مِنْ عِنْدِهَا فَقَالَ اسْقِنِي قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّهُمْ يَجْعَلُونَ أَيْدِيَهُمْ فِيهِ قَالَ اسْقِنِي فَشَرِبَ مِنْهُ ثُمَّ أَتَى زَمْزَمَ وَهُمْ يَسْقُونَ وَيَعْمَلُونَ فِيهَا فَقَالَ اعْمَلُوا فَإِنَّكُمْ عَلَى عَمَلٍ صَالِحٍ ثُمَّ قَالَ لَوْلاَ أَنْ تُغْلَبُوا لَنَزَلْتُ حَتَّى أَضَعَ الْحَبْلَ عَلَى هَذِهِ يَعْنِي عَاتِقَهُ وَأَشَارَ إِلَى عَاتِقِهِ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পানি পান করার স্থানে এসে পানি চাইলেন, ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, হে ফায্‌ল! তোমার মার নিকট যাও। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য তার নিকট হতে পানীয় নিয়ে এসো। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এখান হতেই পান করান। ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! লোকেরা এই পানিতে হাত রাখে। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এখান হতেই দিন এবং এই পানি হতেই পান করলেন। এরপর যমযম কূপের নিকট এলেন। লোকেরা পানি তুলে (হাজীদের) পান করাচ্ছিল, তখন তিনি বললেনঃ তোমরা কাজ করে যাও। তোমরা নেক কাজে রত আছ। এরপর তিনি বললেনঃ তোমরা পরাভূত হয়ে যাবে এ আশঙ্কা না থাকলে আমি নিজেই নেমে (বালতির) রশি এখানে নিতাম; এ বলে তিনি আপন কাঁধের প্রতি ইঙ্গিত করেন।

(আঃপ্রঃ ১৫২৬, ইঃফাঃ ১৫৩২)

২৫/৭৬. অধ্যায়ঃ
যমযম সম্পর্কে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে।

১৬৩৬
وَقَالَ عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا يُونُسُ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ كَانَ أَبُو ذَرٍّ يُحَدِّثُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ فُرِجَ سَقْفِي وَأَنَا بِمَكَّةَ فَنَزَلَ جِبْرِيلُ عَلَيْهِ السَّلاَم فَفَرَجَ صَدْرِي ثُمَّ غَسَلَهُ بِمَاءِ زَمْزَمَ ثُمَّ جَاءَ بِطَسْتٍ مِنْ ذَهَبٍ مُمْتَلِئٍ حِكْمَةً وَإِيمَانًا فَأَفْرَغَهَا فِي صَدْرِي ثُمَّ أَطْبَقَهُ ثُمَّ أَخَذَ بِيَدِي فَعَرَجَ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا قَالَ جِبْرِيلُ لِخَازِنِ السَّمَاءِ الدُّنْيَا افْتَحْ قَالَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيلُ

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আমি মক্কায় অবস্থানকালে ঘরের ছাদ ফাঁক করা হল এবং জিবরাঈল (‘আঃ) অবতরণ করলেন। এরপর তিনি আমার বক্ষ বিদারণ করলেন এবং তা যমযমের পানি দ্বারা ধুলেন, এরপর ঈমান ও হিক্‌মতে পরিপূর্ণ একটি সোনার পেয়ালা নিয়ে এলেন এবং তা আমার বুকে ঢেলে দিয়ে জোড়া লাগিয়ে দিলেন। অতঃপর আমার হাত ধরে আমাকে নিয়ে দুনিয়ার আসমানে গেলেন এবং জিবরাঈল (‘আঃ) এই আসমানের তত্ত্বাবধানকারী ফেরেশ্‌তাকে বললেন, (দরজা) খোল। তিনি বললেন কে? তিনি বললেন, আমি জিবরাঈল। (৩৪৯) (আঃপ্রঃ ৭৫, ইঃফাঃ অনুচ্ছেদ ১০৩৬)

১৬৩৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ هُوَ ابْنُ سَلاَمٍ أَخْبَرَنَا الْفَزَارِيُّ عَنْ عَاصِمٍ عَنْ الشَّعْبِيِّ أَنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ حَدَّثَهُ قَالَ سَقَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ زَمْزَمَ فَشَرِبَ وَهُوَ قَائِمٌ قَالَ عَاصِمٌ فَحَلَفَ عِكْرِمَةُ مَا كَانَ يَوْمَئِذٍ إِلاَّ عَلَى بَعِيرٍ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি যমযমের পানি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট পেশ করলাম। তিনি তা দাঁড়িয়ে পান করলেন। (রাবী’) ‘আসিম বলেন, ‘ইকরিমা (রাঃ) হলফ করে বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন উটের পিঠে আরোহী অবস্থায়ই ছিলেন।

(৫৬১৭, মুসলিম ৩৬/১৫, হাঃ ২০২৭, আহমাদ ২৬০৮) (আঃপ্রঃ ১৫২৭, ইঃফাঃ ১৫৩৩)

২৫/৭৭. অধ্যায়ঃ
কিরান হজ্জকারীর তাওয়াফ।

১৬৩৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ فَأَهْلَلْنَا بِعُمْرَةٍ ثُمَّ قَالَ مَنْ كَانَ مَعَهُ هَدْيٌ فَلْيُهِلَّ بِالْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ ثُمَّ لاَ يَحِلُّ حَتَّى يَحِلَّ مِنْهُمَا فَقَدِمْتُ مَكَّةَ وَأَنَا حَائِضٌ فَلَمَّا قَضَيْنَا حَجَّنَا أَرْسَلَنِي مَعَ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ إِلَى التَّنْعِيمِ فَاعْتَمَرْتُ فَقَالَ هَذِهِ مَكَانَ عُمْرَتِكِ فَطَافَ الَّذِينَ أَهَلُّوا بِالْعُمْرَةِ ثُمَّ حَلُّوا ثُمَّ طَافُوا طَوَافًا آخَرَ بَعْدَ أَنْ رَجَعُوا مِنْ مِنًى وَأَمَّا الَّذِينَ جَمَعُوا بَيْنَ الْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ فَإِنَّمَا طَافُوا طَوَافًا وَاحِدًا

‘আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা বিদায় হজ্জে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে বের হলাম এবং ‘উমরাহ’র ইহ্‌রাম বাঁধলাম। এরপর আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যার সাথে হাদী-এর জানোয়ার আছে সে যেন হজ্জ ও উমরাহ উভয়ের ইহ্‌রাম বেঁধে নেয়। অতঃপর উভয় কাজ সমাপ্ত না করা পর্যন্ত সে হালাল হবে না। আমি মক্কায় উপনীত হয়ে ঋতুবতী হলাম। যখন আমরা হজ্জ সমাপ্ত করলাম, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুর রাহমান (রাঃ)-এর সঙ্গে আমাকে তান’ঈম প্রেরণ করলেন। এরপর আমি ‘উমরাহ পালন করলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ হলো তোমার পূর্ববর্তী (অসমাপ্ত) ‘উমরাহ’র স্থলবর্তী। ঐ হজ্জের সময় যাঁরা (কেবল) ‘উমরাহ’র নিয়্যাতে ইহ্‌রাম বেঁধে এসেছিলেন, তাঁরা তাওয়াফ করে হালাল হয়ে গেলেন। এরপর তাঁরা মিনা হতে প্রত্যাবর্তন করে দ্বিতীয়বার তাওয়াফ করেন। আর যাঁরা একসাথে ‘উমরাহ ও হজ্জের নিয়্যাত করেছিলেন, তাঁরা একবার তাওয়াফ করলেন। (২৯৪)

(আঃপ্রঃ ১৫২৮, ইঃফাঃ ১৫৩৪)

১৬৩৯
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ عَنْ أَيُّوبَ عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ دَخَلَ ابْنُهُ عَبْدُ اللهِ بْنُ عَبْدِ اللهِ وَظَهْرُهُ فِي الدَّارِ فَقَالَ إِنِّي لاَ آمَنُ أَنْ يَكُونَ الْعَامَ بَيْنَ النَّاسِ قِتَالٌ فَيَصُدُّوكَ عَنْ الْبَيْتِ فَلَوْ أَقَمْتَ فَقَالَ قَدْ خَرَجَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَحَالَ كُفَّارُ قُرَيْشٍ بَيْنهُ وَبَيْنَ الْبَيْتِ فَإِنْ حِيلَ بَيْنِي وَبَيْنَهُ أَفْعَلُ كَمَا فَعَلَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم {لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللهِ إِسْوَةٌ حَسَنَةٌ} ثُمَّ قَالَ أُشْهِدُكُمْ أَنِّي قَدْ أَوْجَبْتُ مَعَ عُمْرَتِي حَجًّا قَالَ ثُمَّ قَدِمَ فَطَافَ لَهُمَا طَوَافًا وَاحِدًا

নাফি’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) তাঁর ছেলে ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌-এর নিকট গেলেন, যখন তাঁর (হজ্জ যাত্রার) বাহন প্রস্তুত, তখন তাঁর ছেলে বললেন, আমার আশঙ্কা হয়। এ বছর মানুষের মধ্যে লড়াই হবে, তারা আপনাকে কা’বায় যেতে বাধা দিবে। কাজেই এবার নিবৃত্ত হওয়াটাই উত্তম। তখন ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা রওনা হয়েছিলেন, কুরায়শ কাফিররা তাঁকে বাইতুল্লাহ যেতে বাধা দিয়েছিল। আমাকেও যদি বাইতুল্লাহ যেতে বাধা দেয়া হয়, তবে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা করেছিলেন, আমিও তাই করব। “কেননা, নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ”-(আল-আযহাব ২১)। এরপর তিনি বললেন, তোমরা সাক্ষী থেকো, আমি ‘উমরাহ’র সাথে হজ্জ-এর সংকল্প করছি। (রাবী) নাফি’ (রহঃ) বলেন, তিনি মক্কায় উপনীত হয়ে উভয়টির জন্য মাত্র একটি তাওয়াফ করলেন।

(১৬৪০, ১৬৯৩, ১৭০৮, ১৭২৯, ১৮০৬, ১৮০৭, ১৮০৮, ১৮১০, ১৮১২, ১৮১৩, ৪১৮৩, ৪১৮৪, ৪১৮৫, মুসলিম ১৫/২৬, হাঃ ১২৩০, আহমাদ ১৮১৩) (আঃপ্রঃ ১৫২৯, ইঃফাঃ ১৫৩৫)

১৬৪০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ أَرَادَ الْحَجَّ عَامَ نَزَلَ الْحَجَّاجُ بِابْنِ الزُّبَيْرِ فَقِيلَ لَهُ إِنَّ النَّاسَ كَائِنٌ بَيْنَهُمْ قِتَالٌ وَإِنَّا نَخَافُ أَنْ يَصُدُّوكَ فَقَالَ {لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللهِ إِسْوَةٌ حَسَنَةٌ} إِذًا أَصْنَعَ كَمَا صَنَعَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنِّي أُشْهِدُكُمْ أَنِّي قَدْ أَوْجَبْتُ عُمْرَةً ثُمَّ خَرَجَ حَتَّى إِذَا كَانَ بِظَاهِرِ الْبَيْدَاءِ قَالَ مَا شَأْنُ الْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ إِلاَّ وَاحِدٌ أُشْهِدُكُمْ أَنِّي قَدْ أَوْجَبْتُ حَجًّا مَعَ عُمْرَتِي وَأَهْدَى هَدْيًا اشْتَرَاهُ بِقُدَيْدٍ وَلَمْ يَزِدْ عَلَى ذَلِكَ فَلَمْ يَنْحَرْ وَلَمْ يَحِلَّ مِنْ شَيْءٍ حَرُمَ مِنْهُ وَلَمْ يَحْلِقْ وَلَمْ يُقَصِّرْ حَتَّى كَانَ يَوْمُ النَّحْرِ فَنَحَرَ وَحَلَقَ وَرَأَى أَنْ قَدْ قَضَى طَوَافَ الْحَجِّ وَالْعُمْرَةِ بِطَوَافِهِ الأَوَّلِ وَقَالَ ابْنُ عُمَرَ كَذَلِكَ فَعَلَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم

নাফি’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যে বছর হাজ্জাজ ইব্‌নু ইউসুফ ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু যুবাইর (রাঃ)-এর সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য মক্কায় আসেন, ঐ বছর ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) হজ্জের এরাদা করেন। তখন তাঁকে বলা হলো, (বিবদমান দু’ দল) মানুষের মধ্যে যুদ্ধ হতে পারে। আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে যে, আপনাকে তারা বাধা দিবে। তিনি বললেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আল্লাহর রসূলের মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে”-(আযহাবঃ ২১)। কাজেই এমন কিছু হলে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা করেছিলেন আমিও তাই করব। আমি তোমাদের সাক্ষী রেখে বলছি যে, আমি ‘উমরাহ’র সংকল্প করলাম। এরপর তিনি বের হলেন এবং বায়দার উঁচু অঞ্চলে পৌছার পর তিনি বললেন, হজ্জ ও ‘উমরাহ’র বিধান একই, আমি তোমাদের সাক্ষী করে বলছি, আমি ‘উমরাহ’র সঙ্গে হজ্জেরও নিয়্যাত করলাম এবং তিনি কুদায়দ হতে ক্রয় করা একটি হাদী পাঠালেন, এর অতিরিক্ত কিছু করেননি। এরপর তিনি কুরবানী করেননি এবং ইহ্‌রামও ত্যাগ করেন নি এবং মাথা মুণ্ডন বা চুল ছাঁটা কোনটাই করেননি। অবশেষে কুরবানীর দিন এলে তিনি কুরবানী করলেন, মাথা মুন্ডালেন। তাঁর অভিমত হলো, প্রথম তাওয়াফ-এর মাধ্যমেই তিনি হজ্জ ও ‘উমরাহ উভয়ের তাওয়াফ সেরে নিয়েছেন। ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমনই করেছেন।

(১৬৩৯, মুসলিম ১৫/২৬, হাঃ ১২৩০) (আঃপ্রঃ ১৫৩০, ইঃফাঃ ১৫৩৬)

২৫/৭৮. অধ্যায়ঃ
অযূ সহকারে তাওয়াফ করা।

১৬৪১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عِيسَى حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ قَالَ أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ نَوْفَلٍ الْقُرَشِيِّ أَنَّهُ سَأَلَ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ فَقَالَ قَدْ حَجَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَتْنِي عَائِشَةُ أَنَّهُ أَوَّلُ شَيْءٍ بَدَأَ بِهِ حِينَ قَدِمَ أَنَّهُ تَوَضَّأَ ثُمَّ طَافَ بِالْبَيْتِ ثُمَّ لَمْ تَكُنْ عُمْرَةً ثُمَّ حَجَّ أَبُو بَكْرٍ فَكَانَ أَوَّلَ شَيْءٍ بَدَأَ بِهِ الطَّوَافُ بِالْبَيْتِ ثُمَّ لَمْ تَكُنْ عُمْرَةً ثُمَّ عُمَرُ مِثْلُ ذَلِكَ ثُمَّ حَجَّ عُثْمَانُ فَرَأَيْتُهُ أَوَّلُ شَيْءٍ بَدَأَ بِهِ الطَّوَافُ بِالْبَيْتِ ثُمَّ لَمْ تَكُنْ عُمْرَةً ثُمَّ مُعَاوِيَةُ وَعَبْدُ اللهِ بْنُ عُمَرَ ثُمَّ حَجَجْتُ مَعَ أَبِي الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ فَكَانَ أَوَّلَ شَيْءٍ بَدَأَ بِهِ الطَّوَافُ بِالْبَيْتِ ثُمَّ لَمْ تَكُنْ عُمْرَةً ثُمَّ رَأَيْتُ الْمُهَاجِرِينَ وَالأَنْصَارَ يَفْعَلُونَ ذَلِكَ ثُمَّ لَمْ تَكُنْ عُمْرَةً ثُمَّ آخِرُ مَنْ رَأَيْتُ فَعَلَ ذَلِكَ ابْنُ عُمَرَ ثُمَّ لَمْ يَنْقُضْهَا عُمْرَةً وَهَذَا ابْنُ عُمَرَ عِنْدَهُمْ فَلاَ يَسْأَلُونَهُ وَلاَ أَحَدٌ مِمَّنْ مَضَى مَا كَانُوا يَبْدَءُونَ بِشَيْءٍ حَتَّى يَضَعُوا أَقْدَامَهُمْ مِنْ الطَّوَافِ بِالْبَيْتِ ثُمَّ لاَ يَحِلُّونَ وَقَدْ رَأَيْتُ أُمِّي وَخَالَتِي حِينَ تَقْدَمَانِ لاَ تَبْتَدِئَانِ بِشَيْءٍ أَوَّلَ مِنْ الْبَيْتِ تَطُوفَانِ بِهِ ثُمَّ إِنَّهُمَا لاَ تَحِلاَّنِ

মুহাম্মদ ইব্‌নু ‘আবদুর রাহমান ইব্‌নু নাওফাল কুরাশী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি ‘উরওয়া ইব্‌নু যুবাইর (রহঃ)-কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হজ্জ বিষয়ে জিজ্জেস করলেন। তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হজ্জ-এর বিষয়টি ‘আয়েশা (রাঃ) আমাকে এরূপে বর্ণনা দিয়েছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মক্কায় উপনীত হয়ে সর্বপ্রথম অযূ করে বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করেন। তা ‘উমরাহ’র তাওয়াফ ছিল না। পরে আবূ বকর (রাঃ) হজ্জ করেছেন, তিনিও হজ্জের প্রথম কাজ বাইতুল্লাহ তাওয়াফ দ্বারাই শুরু করতেন, তা ‘উমরাহ’র তাওয়াফ ছিল না। তাঁরপর ‘উমর (রাঃ)-ও অনুরূপ করতেন। এরপর ‘উসমান (রাঃ) হজ্জ করেন। আমি তাঁকেও ( হজ্জের কাজ) বাইতুল্লাহ তাওয়াফ দ্বারাই শুরু করতে দেখেছি, তাঁর এই তাওয়াফও ‘উমরাহ’র তাওয়াফ ছিল না। মু’আবিয়া এবং ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) (অনুরূপ করেন)। এরপর আমি আমার পিতা যুবাইর ইব্‌নু ‘আওয়াম (রাঃ)-এর সঙ্গে হজ্জ করলাম। তিনি বাইতুল্লাহর তাওয়াফ হতেই শুরু করেন, আর তাঁর এ তাওয়াফ ‘উমরাহ’র তাওয়াফ ছিল না। মুহাজির ও আনসার সাহাবীগণ (রাঃ)-কে আমি এরূপ করতে দেখেছি। তাদের সে তাওয়াফও ‘উমরাহ’র তাওয়াফ ছিল না। সবশেষে আমি ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ)-কেও অনুরূপ করতে দেখেছি। তিনিও সে তাওয়াফ ‘উমরাহ’র তাওয়াফ হিসেবে করেননি। ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) তো তাঁদের নিকটেই আছেন তাঁর কাছে জেনে নিন না কেন? সাহাবীগণের মধ্যে যাঁরা অতীত হয়ে গেছেন তাঁদের কেউই মাসজিদে হারামে প্রবেশ করে বাইতুল্লাহর তাওয়াফ সমাধান করার পূর্বে অন্য কোন কাজ করতেন না এবং তাওয়াফ করে ইহ্‌রাম ভঙ্গ করতেন না। আমার মা (আসমা) ও খালা (‘আয়েশা) (রাঃ)-কে দেখেছি, তাঁরা উভয়ে মাসজিদুল হারামে প্রবেশ করে সর্বপ্রথম তাওয়াফ সমাধা করেন, কিন্তু তাওয়াফ করে ইহ্‌রাম ভঙ্গ করেননি। (১৬১৪)

(আঃপ্রঃ , ইঃফাঃ ১৫৩৭)

১৬৪২
وَقَدْ أَخْبَرَتْنِيأُمِّي أَنَّهَا أَهَلَّتْ هِيَ وَأُخْتُهَا وَالزُّبَيْرُ وَفُلاَنٌ وَفُلاَنٌ بِعُمْرَةٍ فَلَمَّا مَسَحُوا الرُّكْنَ حَلُّوا

বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

তিনি তাঁর বোন [‘আয়েশা (রাঃ) ও (আমার পিতা) যুবাইর (রাঃ) এবং অমুক অমুক ‘উমরাহ’র নিয়্যাতে ইহ্‌রাম বাঁধেন। এরপর তাওয়াফ (ও সা’য়ী) শেষে হালাল হয়ে যান।

(১৬১৫, মুসলিম ১৫/২৯, হাঃ ১২৩৫) (আঃপ্রঃ ১৫৩১, ইঃফাঃ ১৫৩৭ শেষাংশ)

২৫/৭৯. অধ্যায়ঃ
সাফা ও মারওয়া মাঝে সা’য়ী করা অবশ্য কর্তব্য এবং এ দু’টিকে আল্লাহুর নিদর্শন বানানো হয়েছে।

১৬৪৩
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ عُرْوَةُ سَأَلْتُ عَائِشَةَ فَقُلْتُ لَهَا أَرَأَيْتِ قَوْلَ اللهِ تَعَالَى : {إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللهِ فَمَنْ حَجَّ الْبَيْتَ أَوْ اعْتَمَرَ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ يَطَّوَّفَ بِهِمَا} فَوَاللهِ مَا عَلَى أَحَدٍ جُنَاحٌ أَنْ لاَ يَطُوفَ بِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ قَالَتْ بِئْسَ مَا قُلْتَ يَا ابْنَ أُخْتِي إِنَّ هَذِهِ لَوْ كَانَتْ كَمَا أَوَّلْتَهَا عَلَيْهِ كَانَتْ لاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ أَنْ لاَ يَتَطَوَّفَ بِهِمَا وَلَكِنَّهَا أُنْزِلَتْ فِي الأَنْصَارِ كَانُوا قَبْلَ أَنْ يُسْلِمُوا يُهِلُّونَ لِمَنَاةَ الطَّاغِيَةِ الَّتِي كَانُوا يَعْبُدُونَهَا عِنْدَ الْمُشَلَّلِ فَكَانَ مَنْ أَهَلَّ يَتَحَرَّجُ أَنْ يَطُوفَ بِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ فَلَمَّا أَسْلَمُوا سَأَلُوا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ ذَلِكَ قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّا كُنَّا نَتَحَرَّجُ أَنْ نَطُوفَ بَيْنَ الصَّفَا وَالْمَرْوَةِ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى : {إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللهِ} الآيَةَ قَالَتْ عَائِشَةُ وَقَدْ سَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الطَّوَافَ بَيْنَهُمَا فَلَيْسَ لأَحَدٍ أَنْ يَتْرُكَ الطَّوَافَ بَيْنَهُمَا ثُمَّ أَخْبَرْتُ أَبَا بَكْرِ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ فَقَالَ إِنَّ هَذَا لَعِلْمٌ مَا كُنْتُ سَمِعْتُهُ وَلَقَدْ سَمِعْتُ رِجَالاً مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ يَذْكُرُونَ أَنَّ النَّاسَ إِلاَّ مَنْ ذَكَرَتْ عَائِشَةُ مِمَّنْ كَانَ يُهِلُّ بِمَنَاةَ كَانُوا يَطُوفُونَ كُلُّهُمْ بِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ فَلَمَّا ذَكَرَ اللهُ تَعَالَى الطَّوَافَ بِالْبَيْتِ وَلَمْ يَذْكُرْ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ فِي الْقُرْآنِ قَالُوا يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كُنَّا نَطُوفُ بِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ وَإِنَّ اللهَ أَنْزَلَ الطَّوَافَ بِالْبَيْتِ فَلَمْ يَذْكُرْ الصَّفَا فَهَلْ عَلَيْنَا مِنْ حَرَجٍ أَنْ نَطَّوَّفَ بِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ فَأَنْزَلَ اللهُ تَعَالَى {إِنَّ الصَّفَا وَالْمَرْوَةَ مِنْ شَعَائِرِ اللهِ} الآيَةَ قَالَ أَبُو بَكْرٍ فَأَسْمَعُ هَذِهِ الآيَةَ نَزَلَتْ فِي الْفَرِيقَيْنِ كِلَيْهِمَا فِي الَّذِينَ كَانُوا يَتَحَرَّجُونَ أَنْ يَطُوفُوا بِالْجَاهِلِيَّةِ بِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ وَالَّذِينَ يَطُوفُونَ ثُمَّ تَحَرَّجُوا أَنْ يَطُوفُوا بِهِمَا فِي الإِسْلاَمِ مِنْ أَجْلِ أَنَّ اللهَ تَعَالَى أَمَرَ بِالطَّوَافِ بِالْبَيْتِ وَلَمْ يَذْكُرْ الصَّفَا حَتَّى ذَكَرَ ذَلِكَ بَعْدَ مَا ذَكَرَ الطَّوَافَ بِالْبَيْتِ

‘উরওয়াহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়েশা (রাঃ)-কে জিজ্জেস করলাম যে, মহান আল্লাহর এ বাণী সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? “সাফা ও মারওয়া আল্লাহর নিদর্শনসমূহের অন্যতম। কাজেই যে কেও কা’বা ঘরে হজ্জ বা ‘উমরাহ সম্পন্ন করে, এ দু’টির মাঝে যাতায়াত করলে তার কোন দোষ নেই”-(আল-বাকারাঃ ১৫৮)। (আমার ধারোণা যে,) সাফা-মারওয়ার মাঝে কেও সা’ঈ না করলে তার কোন দোষ নেই। তখন তিনি [আয়েশা (রাঃ)] বললেন, ওহে বোনপো! তুমি যা বললে, তা ঠিক নয়। কেননা, যা তুমি তাফসীর করলে, যদি আয়াতের মর্ম তা-ই হতো, তাহলে আয়াতের শব্দ বিন্যাস এভাবে হতো (আরবি) -“দু’টোর মাঝে সা’ঈ না করায় কোন দোষ নেই।” কিন্তু আয়াতটি আনসারদের সম্পর্কে অবতীর্ন হয়েছে, যারা ইসলাম গ্রহনের পূর্বে মুশাল্লাহ নামক স্থানে স্থাপিত মানাত নামের মূর্তির পূজা করত, তার নামেই তারা ইহ্‌রাম বাঁধত। সে মূর্তির নামে যারা ইহ্‌রাম বাঁধত তারা সাফা-মারওয়া সা’ঈ করাকে দোষবহ মনে করত। ইসলাম গ্রহণের পর তাঁরা আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এ সম্পর্কে জিজ্জেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! পূর্বে আমরা সাফা ও মারওয়া সা’ঈ করাকে দোষবহ মনে করতাম (এখন কি করবো?) এ প্রসঙ্গেই আল্লাহ তা’আলা (আরবি) অবতীর্ণ করেন। ‘আয়েশা (রাঃ) বলেন, (সাফা ও মারওয়ার মাঝে) উভয় পাহাড়ের মাঝে সা’ঈ করা আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিধান দিয়েছেন। কাজেই কারো পক্ষে এ দু’য়ের সা’ঈ পরিত্যাগ করা ঠিক নয়। (রাবী বলেন) এ বছর আবূ বকর ইব্‌নু ‘আবদুর রাহমান (রাঃ)-কে ঘটনাটি জানালাম। তখন তিনি বললেন, আমি তো এ কথা শুনিনি, তবে ‘আয়েশা (রাঃ) ব্যাতীত বহু ‘আলিমকে উল্লেখ করতে শুনেছি যে, মানাতের নামে যারা ইহ্‌রাম বাঁধত তারা সকলেই সাফা ও মারওয়া সা’য়ী করত, যখন আল্লাহ কুরআনে বাইতুল্লাহ তাওয়াফের কথা উল্লেখ করলেন, কিন্তু সাফা ও মারওয়ার আলোচনা তাতে হলো না, তখন সাহাবাগন বলতে লাগলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা সাফা ও মারওয়া সা’ঈ করতাম, এখন দেখি আল্লাহ কেবল বাইতুল্লাহ তাওয়াফের কথা অবতীর্ন করেছেন, সাফার উল্লেখ করেননি। কাজেই সাফা ও মারওয়ার মাঝে সা’য়ী করলে আমাদের দোষ হবে কি? এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ন করেন- (আরবি) আবূ বকর (রাঃ) আরো বলেন, আমি শুনতে পেয়েছি, আয়াতটি দু’ প্রকার লোকদের উভয়ের প্রতি লক্ষ করেই অবতীর্ন হয়েছে, অর্থাৎ যারা জাহিলী যুগে সাফা ও মারওয়া সা’ঈ করা হতে বিরত থাকতেন, আর যারা তৎকালে সা’য়ী করত বটে, কিন্তু ইসলাম গ্রহনের পর সা’য়ী করার বিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাঁদের দ্বিধার কারণ ছিল আল্লাহ বাইতুল্লাহ তাওয়াফের নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু সাফা ও মারওয়ার কথা উল্লেখ করেননি? অবশেষে বাইতুল্লাহ তাওয়াফের কথা আলোচনার পর আল্লাহ সাফা ও মারওয়া সা’ঈ করার কথা উল্লেখ করেন।

(১৭৯০, ৪৪৯৫, ৪৭৬১, মুসলিম ১৫/৪৩, হাঃ ১২৭৭) (আঃপ্রঃ ১৫৩২, ইঃফাঃ ১৫৩৮)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]