সহীহ বুখারী শরীফ সাওম অধ্যায় ২য় ভাগ হাদিস নং ১৯২৫– ১৯৫০

৩০/২২. অধ্যায়ঃ
নাপাক অবস্থায় সওম পালনকারীর সকাল হওয়া ।

১৯২৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ سُمَيٍّ مَوْلَى أَبِي بَكْرِ بنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بنِ الحَارِثِ بْنِ هِشَامِ بْنِ المُغِيرَةِ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا بَكْرِ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ قَالَ كُنْتُ أَنَا وَأَبِي حِينَ دَخَلْنَا عَلَى عَائِشَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ ح و حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ أَنَّ أَبَاهُ عَبْدَ الرَّحْمٰنِ أَخْبَرَ مَرْوَانَ أَنَّ عَائِشَةَ وَأُمَّ سَلَمَةَ أَخْبَرَتَاهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُدْرِكُهُ الْفَجْرُ وَهُوَ جُنُبٌ مِنْ أَهْلِهِ ثُمَّ يَغْتَسِلُ وَيَصُومُ وَقَالَ مَرْوَانُ لِعَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْحَارِثِ أُقْسِمُ بِاللهِ لَتُقَرِّعَنَّ بِهَا أَبَا هُرَيْرَةَ وَمَرْوَانُ يَوْمَئِذٍ عَلَى الْمَدِينَةِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ فَكَرِهَ ذَلِكَ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ ثُمَّ قُدِّرَ لَنَا أَنْ نَجْتَمِعَ بِذِي الْحُلَيْفَةِ وَكَانَتْ لأَبِي هُرَيْرَةَ هُنَالِكَ أَرْضٌ فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ لأَبِي هُرَيْرَةَ إِنِّي ذَاكِرٌ لَكَ أَمْرًا وَلَوْلاَ مَرْوَانُ أَقْسَمَ عَلَيَّ فِيهِ لَمْ أَذْكُرْهُ لَكَ فَذَكَرَ قَوْلَ عَائِشَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ فَقَالَ كَذَلِكَ حَدَّثَنِي الْفَضْلُ بْنُ عَبَّاسٍ وَهُنَّ أَعْلَمُ وَقَالَ هَمَّامٌ وَابْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ كَانَ النَّبِيُّ يَأْمُرُ بِالْفِطْرِ وَالأَوَّلُ أَسْنَدُ

আবূ বাকর ইব্‌নু আব্দুর রাহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি এবং আমার পিতা আয়িশাহ (রাঃ) এবং উম্মু সালামাহ (রাঃ) এর নিকট গেলাম। (অপর বর্ণনায়) আবুল ইয়ামান (রহঃ)… মারওয়ান (রহঃ) হতে বর্ণিত যে, আয়িশাহ (রাঃ) এবং উম্মু সালামাহ (রাঃ) তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, নিজ স্ত্রীর সাথে মিলনজনিত জুনূবী অবস্থায় আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর ফাজরের সময় হয়ে যেত। তখন তিনি গোসল করতেন এবং সওম পালন করতেন। মারওয়ান (রহঃ) ‘আবদুর রাহমান ইব্‌নু হারিস (রহঃ)-কে বললেন, আল্লাহ্‌র শপথ করে বলছি, এ হাদীস শুনিয়ে তুমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে শঙ্কিত করে দিবে। এ সময় মারওয়ান (রহঃ) মাদীনার গভর্নর ছিলেন। আবূ বাকর (রহঃ) বলেন, মারওয়ান এর কথা আবদুর রাহমান (রহঃ) পছন্দ করেননি। রাবী বলেন, এরপর ভাগ্যক্রমে আমরা যুল-হুলাইফাতে একত্রিত হই। সেখানে আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর একখণ্ড জমি ছিল। ‘আবদুর রাহমান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে বললেন, আমি আপনার নিকট একটি কথা বলতে চাই, মারওয়ান যদি এ বিষয়টি আমাকে কসম দিয়ে না বলতেন, তা হলে আমি তা আপনার সঙ্গে আলোচনা করতাম না। অতঃপর তিনি ‘আয়িশাহ (রাঃ) ও উম্মু সালামাহ (রাঃ) এর বর্ণিত উক্তিটি উল্লেখ করলেন। ফায্‌ল ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) অনুরূপ একটি হাদীস আমাকে শুনিয়েছেন এবং এ বিষয়ে তিনি সর্বাধিক অবগত। হাম্মাম (রহঃ) এবং ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, এরূপ ক্ষেত্রে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওম পরিত্যাগ করে খাওয়ার হুকুম দিতেন। প্রথমোক্ত হাদীসটি সনদের দিক হতে বিশুদ্ধ।

১৯২৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ سُمَيٍّ مَوْلَى أَبِي بَكْرِ بنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بنِ الحَارِثِ بْنِ هِشَامِ بْنِ المُغِيرَةِ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا بَكْرِ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ قَالَ كُنْتُ أَنَا وَأَبِي حِينَ دَخَلْنَا عَلَى عَائِشَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ ح و حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْحَارِثِ بْنِ هِشَامٍ أَنَّ أَبَاهُ عَبْدَ الرَّحْمٰنِ أَخْبَرَ مَرْوَانَ أَنَّ عَائِشَةَ وَأُمَّ سَلَمَةَ أَخْبَرَتَاهُ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُدْرِكُهُ الْفَجْرُ وَهُوَ جُنُبٌ مِنْ أَهْلِهِ ثُمَّ يَغْتَسِلُ وَيَصُومُ وَقَالَ مَرْوَانُ لِعَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ الْحَارِثِ أُقْسِمُ بِاللهِ لَتُقَرِّعَنَّ بِهَا أَبَا هُرَيْرَةَ وَمَرْوَانُ يَوْمَئِذٍ عَلَى الْمَدِينَةِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ فَكَرِهَ ذَلِكَ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ ثُمَّ قُدِّرَ لَنَا أَنْ نَجْتَمِعَ بِذِي الْحُلَيْفَةِ وَكَانَتْ لأَبِي هُرَيْرَةَ هُنَالِكَ أَرْضٌ فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمٰنِ لأَبِي هُرَيْرَةَ إِنِّي ذَاكِرٌ لَكَ أَمْرًا وَلَوْلاَ مَرْوَانُ أَقْسَمَ عَلَيَّ فِيهِ لَمْ أَذْكُرْهُ لَكَ فَذَكَرَ قَوْلَ عَائِشَةَ وَأُمِّ سَلَمَةَ فَقَالَ كَذَلِكَ حَدَّثَنِي الْفَضْلُ بْنُ عَبَّاسٍ وَهُنَّ أَعْلَمُ وَقَالَ هَمَّامٌ وَابْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ كَانَ النَّبِيُّ يَأْمُرُ بِالْفِطْرِ وَالأَوَّلُ أَسْنَدُ

আবূ বাকর ইব্‌নু আব্দুর রাহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি এবং আমার পিতা আয়িশাহ (রাঃ) এবং উম্মু সালামাহ (রাঃ) এর নিকট গেলাম। (অপর বর্ণনায়) আবুল ইয়ামান (রহঃ)… মারওয়ান (রহঃ) হতে বর্ণিত যে, আয়িশাহ (রাঃ) এবং উম্মু সালামাহ (রাঃ) তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, নিজ স্ত্রীর সাথে মিলনজনিত জুনূবী অবস্থায় আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর ফাজরের সময় হয়ে যেত। তখন তিনি গোসল করতেন এবং সওম পালন করতেন। মারওয়ান (রহঃ) ‘আবদুর রাহমান ইব্‌নু হারিস (রহঃ)-কে বললেন, আল্লাহ্‌র শপথ করে বলছি, এ হাদীস শুনিয়ে তুমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে শঙ্কিত করে দিবে। এ সময় মারওয়ান (রহঃ) মাদীনার গভর্নর ছিলেন। আবূ বাকর (রহঃ) বলেন, মারওয়ান এর কথা আবদুর রাহমান (রহঃ) পছন্দ করেননি। রাবী বলেন, এরপর ভাগ্যক্রমে আমরা যুল-হুলাইফাতে একত্রিত হই। সেখানে আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর একখণ্ড জমি ছিল। ‘আবদুর রাহমান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে বললেন, আমি আপনার নিকট একটি কথা বলতে চাই, মারওয়ান যদি এ বিষয়টি আমাকে কসম দিয়ে না বলতেন, তা হলে আমি তা আপনার সঙ্গে আলোচনা করতাম না। অতঃপর তিনি ‘আয়িশাহ (রাঃ) ও উম্মু সালামাহ (রাঃ) এর বর্ণিত উক্তিটি উল্লেখ করলেন। ফায্‌ল ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) অনুরূপ একটি হাদীস আমাকে শুনিয়েছেন এবং এ বিষয়ে তিনি সর্বাধিক অবগত। হাম্মাম (রহঃ) এবং ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমার সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, এরূপ ক্ষেত্রে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওম পরিত্যাগ করে খাওয়ার হুকুম দিতেন। প্রথমোক্ত হাদীসটি সনদের দিক হতে বিশুদ্ধ।

৩০/২৩. অধ্যায়ঃ
সায়িম কর্তৃক স্ত্রীকে স্পর্শ করা ।

আয়িশাহ (রাঃ) বলেন, সওম পালনকারীর জন্য তার স্ত্রীর লজ্জাস্থান হারাম ।

১৯২৭
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ قَالَ عَنْ شُعْبَةَ عَنْ الْحَكَمِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ الأَسْوَدِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُقَبِّلُ وَيُبَاشِرُ وَهُوَ صَائِمٌ وَكَانَ أَمْلَكَكُمْ لإِرْبِهِ

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওমের অবস্থায় চুমু খেতেন এবং গায়ে গা লাগাতেন। তবে তিনি তাঁর প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে তোমাদের চেয়ে অধিক সক্ষম ছিলেন।

ইব্‌ন ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন , اِربٌ মানে হাজত বা চাহিদা। তাউস (রহঃ) বলেন, غَيرَ اُولِي الاَربَةِ মানে বোধহীন , যার মেয়েদের প্রতি কোন খাহিশ নেই।

৩০/২৪. অধ্যায়ঃ
সায়িমের চুম্বন দেয়া ।

জাবির ইব্‌নু যায়দ (রহঃ) বলেন, (নারীদের দিকে) তাকালে যদি বীর্যপাত ঘটে, তাহলেও সওম পূর্ণ করবে ।

১৯২৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ هِشَامٍ قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي عَنْ عَائِشَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ح وحَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ إِنْ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَيُقَبِّلُ بَعْضَ أَزْوَاجِهِ وَهُوَ صَائِمٌ ثُمَّ ضَحِكَتْ

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সায়িম অবস্থায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কোন কোন স্ত্রীকে চুমু খেতেন। (এ কথা বলে) ‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) হেসে দিলেন।

১৯২৯
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ هِشَامِ بْنِ أَبِي عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ زَيْنَبَ ابْنَةِ أُمِّ سَلَمَةَ عَنْ أُمِّهَا قَالَتْ بَيْنَمَا أَنَا مَعَ رَسُولِ اللهِ فِي الْخَمِيلَةِ إِذْ حِضْتُ فَانْسَلَلْتُ فَأَخَذْتُ ثِيَابَ حِيضَتِي فَقَالَ مَا لَكِ أَنَفِسْتِ قُلْتُ نَعَمْ فَدَخَلْتُ مَعَهُ فِي الْخَمِيلَةِ وَكَانَتْ هِيَ وَرَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَغْتَسِلاَنِ مِنْ إِنَاءٍ وَاحِدٍ وَكَانَ يُقَبِّلُهَا وَهُوَ صَائِمٌ

উম্মু সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে একই চাদরে আমি ছিলাম। এমন সময় আমার ঋতু শুরু হল। তখন আমি আমার হায়যের কাপড় পরিধান করলাম। তিনি বললেনঃ তোমার কী হলো? তোমার কি ঋতু দেখা দিয়েছে? আমি বললাম, হ্যাঁ; অতঃপর আমি আবার তাঁর সঙ্গে চাদরের ভিতর ঢুকে পড়লাম। তিনি এবং আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একই পাত্র হতে গোসল করতেন এবং সায়িম অবস্থায় আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে চুমু দিতেন।

৩০/২৫. অধ্যায়ঃ
সায়িমের গোসল করা ।

সওমরত অবস্থায় ইব্‌নু উমার (রাঃ) একটি কাপড় ভিজালেন এরপর তা গায়ে দেয়া হলো । সওমরত অবস্থায় শাবী (রহঃ) গোসলখানায় প্রবেশ করেছেন । ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ) বলেন, হাঁড়ি হতে কিছু বা অন্য কোন জিনিস চেটে স্বাদ দেখায় দোষ নেই । হাসান (রহঃ) বলেন, সওম পালনকারীর কুলি করা এবং ঠাণ্ডা লাগান দূষণীয় নয় । ইব্‌নু মাস‘উদ (রাঃ) বলেন, তোমাদের কেউ সওম পালন করলে সে যেন সকালে তেল লাগায় এবং চুল আঁচড়িয়ে নেয় । আনাস (রাঃ) বলেন, আমার একটি হাউস আছে, আমি সায়িম অবস্থায় তাতে প্রবেশ করি । নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত যে, তিনি সায়িম অবস্থায় মিস্ওয়াক করতেন । ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) সায়িম অবস্থায় দিনের প্রথমভাগে এবং শেষভাগে মিস্ওয়াক করতেন । আত্বা (রহঃ) বলেন, থুথু গিলে ফেললে সওম ভঙ্গ হয়েছে বলা যায় না । ইব্‌নু সীরীন (রহঃ) বলেন, কাঁচা মিস্ওয়াক ব্যবহারে কোন দোষ নেই । প্রশ্ন করা হল, কাঁচা মিস্ওয়াকের তো স্বাদ রয়েছে? তিনি বলেন, পানিরও তো স্বাদ আছে, অথচ এ পানি দিয়েই তুমি কুলি কর । আনাস (রাঃ), হাসান (রহঃ) এবং ইবরাহীম (রহঃ) সায়িমের সুরমা ব্যবহারে কোন দোষ মনে করতেন না ।

১৯৩০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ حَدَّثَنَا يُونُسُ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُرْوَةَ وَأَبِي بَكْرٍ قَالَتْ عَائِشَةُ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُدْرِكُهُ الْفَجْرُ فِي رَمَضَانَ مِنْ غَيْرِ حُلْمٍ فَيَغْتَسِلُ وَيَصُومُ

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রমযান মাসে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ভোর হয়ে যেত ইহতিলাম (স্বপ্নদোষ) ব্যতিত (জুনুবী অবস্থায়)। তখন তিনি গোসল করতেন এবং সওম পালন করতেন।

১৯৩১
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ عَنْ سُمَيٍّ مَوْلَى أَبِي بَكْرِ بنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بنِ الحَارِثِ بْنِ هِشَامِ بْنِ المُغِيرَةِ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا بَكْرِ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ كُنْتُ أَنَا وَأَبِي فَذَهَبْتُ مَعَهُ حَتَّى دَخَلْنَا عَلَى عَائِشَةَ قَالَتْ أَشْهَدُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنْ كَانَ لَيُصْبِحُ جُنُبًا مِنْ جِمَاعٍ غَيْرِ احْتِلاَمٍ

আবূ বাকর ইব্‌নু আবদুর রহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আমার পিতার সঙ্গে রওয়ানা হয়ে ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর নিকট পৌঁছলাম। তিনি বললেন, আমি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছি, তিনি ইহতিলাম ব্যতীত স্ত্রী সহবাসের কারণে জুনুবী অবস্থায় সকাল পর্যন্ত থেকেছেন এবং এরপর সওম পালন করেছেন।

১৯৩২
ثُمَّ يَصُومُهُ ثُمَّ دَخَلْنَا عَلَى أُمِّ سَلَمَةَ فَقَالَتْ مِثْلَ ذَلِكَ

আবূ বাকর ইব্‌নু আবদুর রহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

অতঃপর আমরা উম্মু সালামাহ (রাঃ)-এর নিকট গেলাম। তিনিও অনুরূপ কথাই বললেন।

৩০/২৬. অধ্যায়ঃ
সায়িম ভুলবশতঃ কিছু খেলে বা পান করে ফেললে ।

আত্বা (রহঃ) বলেন, নাকে পানি দিতে গিয়ে যদি তা কণ্ঠনালীতে ঢুকে যায়, আর সে ফিরাতে সক্ষম না হয় তা হলে দোষ নেই । হাসান (রহঃ) বলেন, সায়িম ব্যক্তির কণ্ঠনালীতে মাছি ঢুকে পড়লে তার কিছু করতে হবে না । হাসান এবং মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন, সায়িম ব্যক্তি যদি ভুলবশতঃ স্ত্রী সহবাস করে ফেলে, তবে তার কিছু করতে হবে না ।

১৯৩৩
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا ابْنُ سِيرِينَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِذَا نَسِيَ فَأَكَلَ وَشَرِبَ فَلْيُتِمَّ صَوْمَهُ فَإِنَّمَا أَطْعَمَهُ اللهُ وَسَقَاهُ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সওম পালনকারী ভুলক্রমে যদি আহার করে বা পান করে ফেলে, তাহলে সে যেন তার সওম পুরা করে নেয়। কেননা আল্লাহ্‌ই তাকে পানাহার করিয়েছেন।

৩০/২৭. অধ্যায়ঃ
সায়িমের জন্য কাঁচা বা শুকনো দাঁতন ব্যবহার করা ।

আমির ইব্‌নু রাবী’আহ (রাঃ) হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে সায়িম অবস্থায় অসংখ্য বার মিসওয়াক করতে দেখেছি । আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, আমার উম্মাতের জন্য যদি কষ্টকর মনে না করতাম তাহলে প্রতিবার উযুর সময়ই আমি তাদের মিসওয়াকের নির্দেশ দিতাম । জাবির (রাঃ) এবং যায়েদ ইব্‌নু খালিদ (রাঃ)-এর সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে এবং তিনি সায়িম এবং যে সায়িম নয়, তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য করেননি । ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন যে, মিসওয়াক করায় রয়েছে মুখের পবিত্রতা ও আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি । ‘আত্বা (রহঃ) এবং কাতাদাহ (রহঃ) বলেছেন, সায়িম তার মুখের থুথু গিলে ফেলতে পারে ।

১৯৩৪
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ قَالَ حَدَّثَنِي الزُّهْرِيُّ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ عَنْ حُمْرَانَ رَأَيْتُ عُثْمَانَ تَوَضَّأَ فَأَفْرَغَ عَلَى يَدَيْهِ ثَلاَثًا ثُمَّ تَمَضْمَضَ وَاسْتَنْثَرَ ثُمَّ غَسَلَ وَجْهَهُ ثَلاَثًا ثُمَّ غَسَلَ يَدَهُ الْيُمْنَى إِلَى الْمَرْفِقِ ثَلاَثًا ثُمَّ غَسَلَ يَدَهُ الْيُسْرَى إِلَى الْمَرْفِقِ ثَلاَثًا ثُمَّ مَسَحَ بِرَأْسِهِ ثُمَّ غَسَلَ رِجْلَهُ الْيُمْنَى ثَلاَثًا ثُمَّ الْيُسْرَى ثَلاَثًا ثُمَّ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَوَضَّأَ نَحْوَ وَضُوئِي هَذَا ثُمَّ قَالَ مَنْ تَوَضَّأَ وُضُوئِي هَذَا ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ لاَ يُحَدِّثُ نَفْسَهُ فِيهِمَا بِشَيْءٍ إِلاَّ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ

হুমরান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি উসমান (রাঃ)-কে উযূ করতে দেখেছি। তিনি তিনবার হাতের উপর পানি ঢাললেন। এরপর কুলি করলেন, নাকে পানি দিলেন। অতঃপর তিনবার চেহারা (মুখমণ্ডল) ধুলেন। এরপর ডান হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুলেন এবং বামহাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুলেন। এরপর তিনি মাথা মাসাহ করলেন। অতঃপর ডান পা তিনবার ধুলেন অতঃপর বাম পা তিনবার ধুলেন। এরপর বললেন, আমি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে উযূ করতে দেখেছি আমার এ উযূর মতই। এরপর তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার এ উযূর মত উযূ করে দু’রাক’আত সালাত আদায় করবে এবং এতে মনে মনে কোন কিছুর চিন্তা-ভাবনায় লিপ্ত হবে না, তার অতীতের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।

৩০/২৮. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর বাণীঃ যখন উযূ করবে তখন নাকের ছিদ্র দিয়ে পানি টেনে নিবে ।

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সায়িম এবং সায়িম নয়, তাদের মধ্যে কোন পার্থক্য করেননি । হাসান (রহঃ) বলেন, সায়িমের জন্য নাকে ঔষধ ব্যবহার করায় দোষ নেই যদি তা কণ্ঠনালীতে না পৌঁছে এবং সে সুরমা ব্যবহার করতে পারবে । ‘আত্বা (রহঃ) বলেন, কুলি করে মুখের পানি ফেলে দেয়ার পর থুথু এবং মুখের অবশিষ্ট পানি গিলে ফেলায় কোন ক্ষতি নেই এবং সায়িম গোন্দ (আঠা) চিবাবে না । গোন্দ চিবিয়ে যদি কেউ থুথু গিলে ফেলে, তা হলে তার সওম নষ্ট হয়ে যাবে, আমি এ কথা বলছি না, তবে এরূপ করা হতে নিষেধ করা উচিত ।

৩০/২৯. অধ্যায়ঃ
রমযানে যৌন মিলন করা

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে একটি মারফূ হাদীসে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি ওযর এবং রোগ ব্যতীত রমযানের একটি সওম ভেঙ্গে ফেলল, তার সারা জীবনের সওমের দ্বারাও এ কাযা আদায় হবে না, যদিও সে সারা জীবন সওম পালন করে । ইব্‌নু মাস‘উদ (রাঃ)-ও অনুরূপ কথাই বলেছেন । সা’ঈদ ইব্‌নু মুসায়্যাব, শা’বী, ইব্‌নু যুবায়র, ইব্রাহীম, কাতাদাহ এবং হাম্মাদ (রহঃ) বলেছেন, তার স্থলে একদিন কাযা করবে ।

১৯৩৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مُنِيرٍ سَمِعَ يَزِيدَ بْنَ هَارُونَ حَدَّثَنَا يَحْيَى هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمٰنِ بْنَ الْقَاسِمِ أَخْبَرَهُ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جَعْفَرِ بْنِ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ بْنِ خُوَيْلِدٍ عَنْ عَبَّادِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ الزُّبَيْرِ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ سَمِعَ عَائِشَةَ تَقُولُ إِنَّ رَجُلاً أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّهُ احْتَرَقَ قَالَ مَا لَكَ قَالَ أَصَبْتُ أَهْلِي فِي رَمَضَانَ فَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِمِكْتَلٍ يُدْعَى الْعَرَقَ فَقَالَ أَيْنَ الْمُحْتَرِقُ قَالَ أَنَا قَالَ تَصَدَّقْ بِهَذَا

‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল যে, সে তো জ্বলে গেছে। তিনি বললেনঃ তোমার কি হয়েছে? লোকটি বলল, রমযানে আমি স্ত্রী সহবাস করে ফেলেছি। এ সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে (খেজুর ভর্তি) ঝুড়ি এল, যাকে আরাক (১৫ সা’ পরিমাণ) বলা হয়। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ অগ্নিদগ্ধ লোকটি কোথায়? লোকটি বলল, আমি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ গুলো সদাকাহ করে দাও।

৩০/৩০. অধ্যায়ঃ
যদি রমযানে স্ত্রী মিলন করে এবং তার নিকট কিছু না থাকে এবং তাকে সদকাহ দেয়া হয়, তাহলে সে যেন তা কাফফারা স্বরূপ দিয়ে দেয় ।

১৯৩৬
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ أَخْبَرَنِي حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ جُلُوسٌ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذْ جَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَلَكْتُ قَالَ مَا لَكَ قَالَ وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي وَأَنَا صَائِمٌ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم هَلْ تَجِدُ رَقَبَةً تُعْتِقُهَا قَالَ لاَ قَالَ فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ قَالَ لاَ فَقَالَ فَهَلْ تَجِدُ إِطْعَامَ سِتِّينَ مِسْكِينًا قَالَ لاَ قَالَ فَمَكَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَبَيْنَا نَحْنُ عَلَى ذَلِكَ أُتِيَ النَّبِيُّ بِعَرَقٍ فِيهَا تَمْرٌ وَالْعَرَقُ الْمِكْتَلُ قَالَ أَيْنَ السَّائِلُ فَقَالَ أَنَا قَالَ خُذْهَا فَتَصَدَّقْ بِهِ فَقَالَ الرَّجُلُ أَعَلَى أَفْقَرَ مِنِّي يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَوَاللهِ مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا يُرِيدُ الْحَرَّتَيْنِ أَهْلُ بَيْتٍ أَفْقَرُ مِنْ أَهْلِ بَيْتِي فَضَحِكَ النَّبِيُّ حَتَّى بَدَتْ أَنْيَابُهُ ثُمَّ قَالَ أَطْعِمْهُ أَهْلَكَ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমার কি হয়েছে? সে বলল, আমি সায়িম অবস্থায় আমার স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়েছি। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আযাদ করার মত কোন ক্রীতদাস তুমি মুক্ত করতে পারবে কি? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তুমি কি একাধারে দু’মাস সওম পালন করতে পারবে? সে বলল, না। এরপর তিনি বললেনঃ ষাটজন মিসকীন খাওয়াতে পারবে কি? সে বলল, না। রাবী বলেন, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেমে গেলেন, আমরাও এ অবস্থায় ছিলাম। এ সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এক ‘আরাক পেশ করা হল যাতে খেজুর ছিল। ‘আরাক হল ঝুড়ি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ প্রশ্নকারী কোথায়? সে বলল, আমি। তিনি বললেনঃ এগুলো নিয়ে সদাকাহ করে দাও। তখন লোকটি বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমার চাইতেও বেশি অভাবগ্রস্থকে সদাকাহ করব? আল্লাহ্‌র শপথ, মাদীনার উভয় লাবা অর্থাৎ উভয় প্রান্তের মধ্যে আমার পরিবারের চেয়ে অভাবগ্রস্থ কেউ নেই। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হেসে উঠলেন এবং তাঁর দাঁত (আইনয়াব) দেখা গেল। অতঃপর তিনি বললেনঃ এগুলো তোমার পরিবারকে খাওয়াও।

৩০/৩১. অধ্যায়ঃ
রমযানের সায়িম অবস্থায় যে ব্যক্তি স্ত্রী মিলন করেছে সে ব্যক্তি কি কাফ্‌ফারা হতে তার অভাবগ্রস্থ পরিবারকে খাওয়াতে পারবে?

১৯৩৭
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ إِنَّ الأَخِرَ وَقَعَ عَلَى امْرَأَتِهِ فِي رَمَضَانَ فَقَالَ أَتَجِدُ مَا تُحَرِّرُ رَقَبَةً قَالَ لاَ قَالَ فَتَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ قَالَ لاَ قَالَ أَفَتَجِدُ مَا تُطْعِمُ بِهِ سِتِّينَ مِسْكِينًا قَالَ لاَ قَالَ فَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِعَرَقٍ فِيهِ تَمْرٌ وَهُوَ الزَّبِيلُ قَالَ أَطْعِمْ هَذَا عَنْكَ قَالَ عَلَى أَحْوَجَ مِنَّا مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا أَهْلُ بَيْتٍ أَحْوَجُ مِنَّا قَالَ فَأَطْعِمْهُ أَهْلَكَ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে বলল, এই হতভাগা স্ত্রী সহবাস করেছে রমযানে। তিনি বললেনঃ তুমি কি একটি গোলাম আযাদ করতে পারবে? লোকটি বলল, না। তিনি বললেনঃ তুমি কি ক্রমাগত দু’মাস সিয়াম পালন করতে পারবে? লোকটি বলল, না। তিনি বললেনঃ তুমি কি ষাটজন মিসকীন খাওয়াতে পারবে? সে বলল, না। এমতাবস্থায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এক ‘আরাক অর্থাৎ এক ঝুড়ি খেজুর এল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এগুলো তোমার তরফ হতে লোকদেরকে আহার করাও। লোকটি বলল, আমার চাইতেও অধিক অভাবগ্রস্থ কে? অথচ মাদীনার উভয় লাবার অর্থাৎ হাররার মধ্যবর্তী স্থলে আমার পরিবারের চেয়ে অধিক অভাবগ্রস্থ কেউ নেই। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তা হলে তুমি স্বীয় পরিবারকেই খাওয়াও।

৩০/৩২. অধ্যায়ঃ
সায়িমের শিঙ্গা লাগানো বা বমি করা ।

ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, ইয়াহইয়া ইব্‌নু সালিহ (রহঃ) আমাকে বলেছেন… আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, বমি করলে সওম ভঙ্গ হয় না । কেননা এতে কিছু বের হয়, ভিতরে প্রবেশ করে না । আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে এও বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেছেন, সওম ভঙ্গ হয়ে যাবে । প্রথম উক্তিটি বেশি সহীহ । ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) এবং ইকরিমাহ (রহঃ) বলেন, কোন কিছু ভিতরে প্রবেশ করলে সওম নষ্ট হয়; কিন্তু বের হওয়ার কারণে নয় । ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) সায়িম অবস্থায় শিঙ্গা লাগাতেন । অবশ্য পরবর্তী সময় তিনি দিনে শিঙ্গা লাগানো ছেড়ে দিয়ে রাতে শিঙ্গা লাগাতেন । আবূ মূসা (রাঃ) রাতে শিঙ্গা লাগিয়েছেন । সা’ঈদ, যায়দ ইব্‌নু আরকাম এবং উম্মু সালামাহ (রাঃ) সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, তাঁরা সকলেই সওম পালনকারী অবস্থায় শিঙ্গা লাগাতেন । বুকায়র (রহঃ) উম্মু আলকামাহ (রহঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, আমরা ‘আয়িশাহ (রাঃ)-এর সামনে শিঙ্গা লাগাতাম, তিনি আমাদের নিষেধ করতেন না । হাসান (রহঃ) হতে একাধিক রাবী সূত্রে মরফূ‘ হাদীসে আছে যে, শিঙ্গা প্রয়োগকারী এবং গ্রহণকারী উভয়ের সওমই নষ্ট হয়ে যাবে । ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, ‘আইয়াশ (রহঃ) হাসান (রহঃ) হতে আমার নিকট অনুরূপ বর্ণনা করেছেন । তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এ কি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত? তিনি বললেন, হাঁ । অতঃপর তিনি বললেন, আল্লাহই সবচেয়ে অধিক জানেন ।

১৯৩৮
حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ عَنْ أَيُّوْبَ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ :أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم احْتَجَمَ وَهُوَ مُحْرِمٌ وَاحْتَجَمَ وَهُوَ صَائِمٌ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুহরিম অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন এবং সায়িম অবস্থায়ও শিঙ্গা লাগিয়েছেন।

১৯৩৯
حَدَّثَنَا أَبُو مَعْمَرٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ حَدَّثَنَا أَيُّوبُ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ احْتَجَمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ صَائِمٌ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সায়িম অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন।

১৯৪০
حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ قَالَ سَمِعْتُ ثَابِتًا الْبُنَانِيَّ قَالَ سُئِلَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ أَكُنْتُمْ تَكْرَهُونَ الْحِجَامَةَ لِلصَّائِمِ قَالَ لاَ إِلاَّ مِنْ أَجْلِ الضَّعْفِ وَزَادَ شَبَابَةُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ عَلَى عَهْدِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم

সাবিত আল-বুনানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ)-কে প্রশ্ন করা হল, আপনারা কি সায়িমের শিঙ্গা লাগানো (রক্তমোক্ষম) অপছন্দ করতেন? তিনি বললেন, না। তবে দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে অপছন্দ করতাম। শাবাবা (রহঃ) শু’বাহ (রহঃ) হতে —— ‘নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে’ কথাটি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন।

৩০/৩৩. অধ্যায়ঃ
সফরে সওম পালন করা বা না করা ।

১৯৪১
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ الشَّيْبَانِيِّ سَمِعَ ابْنَ أَبِي أَوْفَى قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ فَقَالَ لِرَجُلٍ انْزِلْ فَاجْدَحْ لِي قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم الشَّمْسُ قَالَ انْزِلْ فَاجْدَحْ لِي قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم الشَّمْسُ قَالَ انْزِلْ فَاجْدَحْ لِي فَنَزَلَ فَجَدَحَ لَهُ فَشَرِبَ ثُمَّ رَمَى بِيَدِهِ هَا هُنَا ثُمَّ قَالَ إِذَا رَأَيْتُمْ اللَّيْلَ أَقْبَلَ مِنْ هَا هُنَا فَقَدْ أَفْطَرَ الصَّائِمُ تَابَعَهُ جَرِيرٌ وَأَبُو بَكْرِ بْنُ عَيَّاشٍ عَنْ الشَّيْبَانِيِّ عَنْ ابْنِ أَبِي أَوْفَى قَالَ كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ فِي سَفَرٍ

ইব্‌নু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন এক সফরে আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে ছিলাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে বললেনঃ সওয়ারী হতে নেমে আমার জন্য ছাতু গুলিয়ে আন। সে বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! সূর্য এখনো অস্ত যায়নি। তিনি বললেনঃ সওয়ারী হতে নেমে আমার জন্য ছাতু গুলিয়ে আন। সে বলল, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! সূর্য এখনো ডুবেনি। তিনি বললেনঃ সওয়ারী হতে নামো এবং আমার জন্য ছাতু গুলিয়ে আন। অতঃপর সে সাওয়ারী হতে নেমে ছাতু গুলিয়ে আনলে তিনি তা পান করলেন এবং হাতের ইঙ্গিতে বললেনঃ যখন দেখবে রাত এদিক হতে ঘনিয়ে আসছে তখন বুঝবে, সওম পালনকারী ব্যক্তির ইফতারের সময় হয়েছে। জারীর (রাঃ) এবং আবূ বাকর ইব্‌নু ‘আইয়াশ…ইব্‌নু আবূ ‘আওফা (রাঃ) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, কোন এক সফরে আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলাম।

১৯৪২
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ هِشَامٍ قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ حَمْزَةَ بْنَ عَمْرٍو الأَسْلَمِيَّ قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنِّي أَسْرُدُ الصَّوْمَ

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

হামযাহ ইব্‌নু আমর আসলামী (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি একাধারে সিয়ামব্রত পালন করছি।

১৯৪৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ حَمْزَةَ بْنَ عَمْرٍو الأَسْلَمِيَّ قَالَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَأَصُومُ فِي السَّفَرِ وَكَانَ كَثِيرَ الصِّيَامِ فَقَالَ إِنْ شِئْتَ فَصُمْ وَإِنْ شِئْتَ فَأَفْطِرْ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

হামযাহ ইব্‌নু ‘আমর আসলামী (রাঃ) অধিক সওম পালনে অভ্যস্ত ছিলেন। তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেন, আমি সফরেও কি সওম পালন করতে পারি? তিনি বললেনঃ ইচ্ছা করলে তুমি সওম পালন করতে পার, আবার ইচ্ছা করলে নাও করতে পার।

৩০/৩৪. অধ্যায়ঃ
রমযানের কয়েক দিন সওম করে যদি কেউ সফর শুরু করে ।

১৯৪৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ عُبَيْدِ اللهِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُتْبَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ إِلَى مَكَّةَ فِي رَمَضَانَ فَصَامَ حَتَّى بَلَغَ الْكَدِيدَ أَفْطَرَ فَأَفْطَرَ النَّاسُ قَالَ أَبُو عَبْد اللهِ وَالْكَدِيدُ مَاءٌ بَيْنَ عُسْفَانَ وَقُدَيْدٍ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওমের অবস্থায় কোন এক রমযানে মক্কার পথে যাত্রা করলেন। কাদীদ নামক স্থানে পৌঁছার পর তিনি সওম ভঙ্গ করে ফেললে লোকেরা সকলেই সওম ভঙ্গ করলেন। আবূ ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, উসফান ও কুদায়দ নামক দুই স্থানের মধ্যে কাদীদ একটি ঝর্ণা।

৩০/৩৫.অধ্যায়ঃ
৩০/৩৫.অধ্যায়ঃ

১৯৪৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ عَنْ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ بْنِ يَزِيدَ بْنِ جَابِرٍ أَنَّ إِسْمَاعِيلَ بْنَ عُبَيْدِ اللهِ حَدَّثَهُ عَنْ أُمِّ الدَّرْدَاءِ عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ قَالَ خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ فِي بَعْضِ أَسْفَارِهِ فِي يَوْمٍ حَارٍّ حَتَّى يَضَعَ الرَّجُلُ يَدَهُ عَلَى رَأْسِهِ مِنْ شِدَّةِ الْحَرِّ وَمَا فِينَا صَائِمٌ إِلاَّ مَا كَانَ مِنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَابْنِ رَوَاحَةَ

আবুদ দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন এক সফরে প্রচণ্ড গরমের দিনে আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে যাত্রা করলাম। গরম এত প্রচণ্ড ছিল যে, প্রত্যেকেই আপন আপন হাত মাথার উপর তুলে ধরেছিলেন। এ সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং ইবনে রাওয়াহা (রাঃ) ব্যতীত আমাদের কেউই সিয়ামরত ছিলেন না।

৩০/৩৬. অধ্যায়ঃ
প্রচণ্ড গরমের জন্য যে ব্যক্তির উপর ছায়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে তাঁর সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর বাণীঃ সফরে সওম পালন করায় সাওয়াব নেই ।

১৯৪৬
حَدَّثَنَا آدَمُ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمٰنِ الأَنْصَارِيُّ قَالَ سَمِعْتُ مُحَمَّدَ بْنَ عَمْرِو بْنِ الْحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ فَرَأَى زِحَامًا وَرَجُلاً قَدْ ظُلِّلَ عَلَيْهِ فَقَالَ مَا هَذَا فَقَالُوا صَائِمٌ فَقَالَ لَيْسَ مِنْ الْبِرِّ الصَّوْمُ فِي السَّفَرِ

জাবির ইব্‌নু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক সফরে ছিলেন, হঠাৎ তিনি লোকের জটলা এবং ছায়ার নিচে এক ব্যক্তিকে দেখে জিজ্ঞেস করলেনঃ এর কি হয়েছে? লোকেরা বলল, সে সায়িম। আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সফরে সওম পালনে কোন সওয়াব নেই।

৩০/৩৭. অধ্যায়ঃ
সওম করা ও না করার ব্যাপারে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণ পরস্পরের প্রতি দোষারোপ করতেন না ।

১৯৪৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ حُمَيْدٍ الطَّوِيلِ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ كُنَّا نُسَافِرُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يَعِبْ الصَّائِمُ عَلَى الْمُفْطِرِ وَلاَ الْمُفْطِرُ عَلَى الصَّائِمِ

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সফরে যেতাম। সায়িম ব্যক্তি গায়ের সায়িমকে (যে সওম পালন করছে না) এবং গায়ের সায়িম ব্যক্তি সায়িমকে দোষারোপ করত না।

৩০/৩৮. অধ্যায়ঃ
লোকদেরকে দেখানোর জন্য সফর অবস্থায় সওম ভঙ্গ করা ।

১৯৪৮
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ عَنْ مَنْصُورٍ عَنْ مُجَاهِدٍ عَنْ طَاوُسٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ خَرَجَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ الْمَدِينَةِ إِلَى مَكَّةَ فَصَامَ حَتَّى بَلَغَ عُسْفَانَ ثُمَّ دَعَا بِمَاءٍ فَرَفَعَهُ إِلَى يَدَيْهِ لِيُرِيَهُ النَّاسَ فَأَفْطَرَ حَتَّى قَدِمَ مَكَّةَ وَذَلِكَ فِي رَمَضَانَ فَكَانَ ابْنُ عَبَّاسٍ يَقُولُ قَدْ صَامَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَأَفْطَرَ فَمَنْ شَاءَ صَامَ وَمَنْ شَاءَ أَفْطَرَ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাদীনাহ হতে মক্কায় রওয়ানা হলেন। তখন তিনি সওম পালন করছিলেন। ‘উসফানে পৌঁছার পর তিনি পানি আনার জন্য আদেশ দিলেন। অতঃপর তিনি লোকদেরকে দেখানোর জন্য পানি হাতের উপর উঁচু করে ধরে সওম ভঙ্গ করলেন এবং এ অবস্থায় মক্কায় পৌঁছলেন। এ ছিল রমযান মাসে। তাই ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলতেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সওম পালন করেছেন এবং সওম ভঙ্গ করেছেন। যার ইচ্ছা সওম পালন করতে পারে আর যার ইচ্ছা সওম ভঙ্গ করতে পারে।

৩০/৩৯. অধ্যায়ঃ
“আর (সওম) যাদের জন্য অতিশয় কষ্ট দেয়, তাদের করণীয়, তারা এর বদলে ফিদইয়া হিসেবে একজন মিসকীনকে খাদ্য দেবে ।” (আল-বাকারাহ : ১৮৪)

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) এবং সালামাহ ইব্‌নু আকওয়া’ (রাঃ) বলেন যে, উক্ত আয়াতকে রহিত করেছে এ আয়াত : “ রমযান মাস, এ মাসেই কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে, যা মানুষের জন্য হিদায়াত, সৎপথের স্পষ্ট নিদর্শন এবং সত্যাসত্যের পার্থক্যকারী । সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে এ মাস পাবে সে যেন এ মাসে সিয়াম পালন করে । তবে কেউ অসুস্থ হলে কিংবা সফরে থাকলে সে অন্য সময়ে সওম এর সংখ্যা পূরণ করে দিবে । আল্লাহ চান তোমাদের জন্য সহজ করতে, তিনি এমন কিছু চান না যা তোমাদের জন্য কষ্টকর । যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তোমাদের সৎপথে পরিচালিত করার দরুন আল্লাহর মহিমা বর্ণনা কর এবং যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পার ।” (আল-বাকারাহ : ১৮৫)

ইব্‌নু নুমাইর (রহঃ) ইব্‌নু আবূ লায়লা (রহঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণ আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন, রমযানের হুকুম নাযিল হলে তা পালন করা তাঁদের জন্য কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায় । তাই তাঁদের মধ্যে কেউ সওম পালনে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও সওম ত্যাগ করে প্রতিদিনের পরিবর্তে একজন মিসকীনকে খাওয়াতো। এ ব্যাপারে তাদের অনুমতিও দেওয়া হয়েছিল । (আরবী) ‘আর সওম পালন করাই তোমাদের জন্য উত্তম, এ আয়াতটি পূর্বের হুকুমকে রহিত করে দেয় এবং সবাইকে সওম পালনের নির্দেশ দেয়া হয়।

১৯৪৯
حَدَّثَنَا عَيَّاشٌ حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَرَأَ {فِدْيَةٌ طَعَامُ مَسَاكِينَ} قَالَ هِيَ مَنْسُوخَةٌ

ইব্‌নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি فِدْيَةٌ طَعَامُ مَسَاكِينَ আয়াতটি পড়ে বলেছেন যে, ইহা মানসূখ (রহিত)।

৩০/৪০. অধ্যায়ঃ
রমযানের কাযা কখন আদায় করতে হবে?

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, পৃথক পৃথক রাখলে কোন ক্ষতি নেই । কেননা আল্লাহ বলেছেন, ‘অন্যদিনে এর সংখ্যা পূর্ণ করবে’ (আল-বাকারাহ (২) : ১৮৪) । সা’ঈদ ইব্‌নু মুসায়্যাব (রহঃ) বলেছেন, রমযানের কাযা আদায় না করে যুলহাজ্জ মাসের প্রথম দশকে সওম পালন করা উচিত নয় । ইবরাহীম নাখ’ঈ (রহঃ) বলেন, অবহেলার কারণে যদি পরবর্তী রমযান এসে যায় তাহলে উভয় রমযানের সওম এক সাথে আদায় করবে । মিসকীন খাওয়াতে হবে বলে তিনি মনে করেন না । আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত । একটি মুরসাল হাদীসে এবং ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, সে খাওয়াবে; অথচ আল্লাহ তাআলা খাওয়ানোর কথাটি উল্লেখ করেননি । বরং তিনি বলেছেন, ‘অন্যদিনে এর সংখ্যা পূর্ণ করবে’- (আল-বাকারাহ : ১৮৪) ।

১৯৫০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ أَبِي سَلَمَةَ قَالَ سَمِعْتُ عَائِشَةَ تَقُولُ كَانَ يَكُونُ عَلَيَّ الصَّوْمُ مِنْ رَمَضَانَ فَمَا أَسْتَطِيعُ أَنْ أَقْضِيَ إِلاَّ فِي شَعْبَانَ قَالَ يَحْيَى الشُّغْلُ مِنْ النَّبِيِّ أَوْ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم

‘আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার উপর রমযানের যে কাযা হয়েছে তা পরবর্তী শা’বান ব্যতীত আমি আদায় করতে পারতাম না। ইয়াহইয়া (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ব্যস্ততার কারণে কিংবা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ব্যস্ততার কারণে।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]