সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস ক্রয় বিক্রয় অধ্যায় ১ম ভাগ হাদিস নং ২০৪৭ – ২০৯৭

৩৪/১. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ তা’আলার এ বাণী সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে (ইরশাদ করেছেন): ‎

“সলাত শেষ হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ অনুসন্ধান করবে ও আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করবে যাতে তোমরা সফলতা লাভ করতে পার। যখন তারা দেখল ব্যবসায় কৌতুক তখন তারা আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে সেদিকে ছুটে গেল। বলুন, আল্লাহর নিকট যা আছে, তা ক্রীড়া-কৌতুক ও ব্যবসা অপেক্ষা উৎকৃষ্ট। আল্লাহ সর্বশেষ্ঠ রিযিকদাতা।” (জুমু’আহঃ ১০)

আর আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “তোমরা পরস্পর পরস্পরের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। কিন্তু তোমাদের পরস্পর সন্তুষ্টচিত্তে ব্যবসা করা বৈধ।” (আন্‌-নিসাঃ ২৯)

২০৪৭
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، حَدَّثَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، وَأَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ إِنَّكُمْ تَقُولُونَ إِنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ يُكْثِرُ الْحَدِيثَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم‏.‏ وَتَقُولُونَ مَا بَالُ الْمُهَاجِرِينَ وَالأَنْصَارِ لاَ يُحَدِّثُونَ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِ حَدِيثِ أَبِي هُرَيْرَةَ وَإِنَّ إِخْوَتِي مِنَ الْمُهَاجِرِينَ كَانَ يَشْغَلُهُمْ صَفْقٌ بِالأَسْوَاقِ، وَكُنْتُ أَلْزَمُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى مِلْءِ بَطْنِي، فَأَشْهَدُ إِذَا غَابُوا وَأَحْفَظُ إِذَا نَسُوا، وَكَانَ يَشْغَلُ إِخْوَتِي مِنَ الأَنْصَارِ عَمَلُ أَمْوَالِهِمْ، وَكُنْتُ امْرَأً مِسْكِينًا مِنْ مَسَاكِينِ الصُّفَّةِ أَعِي حِينَ يَنْسَوْنَ، وَقَدْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي حَدِيثٍ يُحَدِّثُهُ ‏ “‏ إِنَّهُ لَنْ يَبْسُطَ أَحَدٌ ثَوْبَهُ حَتَّى أَقْضِيَ مَقَالَتِي هَذِهِ، ثُمَّ يَجْمَعَ إِلَيْهِ ثَوْبَهُ إِلاَّ وَعَى مَا أَقُولُ ‏”‏‏.‏ فَبَسَطْتُ نَمِرَةً عَلَىَّ، حَتَّى إِذَا قَضَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَقَالَتَهُ جَمَعْتُهَا إِلَى صَدْرِي، فَمَا نَسِيتُ مِنْ مَقَالَةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم تِلْكَ مِنْ شَىْءٍ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তোমরা বলে থাক, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আবূ হুরায়রা (রাঃ) বেশি বেশি হাদীস বর্ণনা করে থাকে এবং আরো বলেন, মুহাজির ও আনসারদের কী হলো যে, তারা তো আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)‌-এর হাদীস বর্ণনা করে না? আমার মুহাজির ভাইয়েরা বাজারে ক্রয়-বিক্রয়ে ব্যস্ত থাকত আর আমি কোন প্রকারে আমার পেটের চাহিদা মিটিয়ে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)– এর দরবারে পড়ে থাকতাম। তাঁরা যখন অনুপস্থিত থাকত তখন আমি উপস্থিত থাকতাম। তাঁরা যা ভুলে যেত আমি তা মুখস্থ করতাম। আর আমার আনসার ভাইয়েরা নিজেদের ক্ষেত-খামারের কাজে ব্যস্ত থাকতেন। আমি ছিলাম সুফ্‌ফার মিসকীনদের একজন মিসকীন। তাঁরা যা ভুলে যেতো, আমি তা মুখস্থ রাখতাম। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর এক বর্ণনায় বললেন, আমার এ কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত যে কেউ তার কাপড় বিছিয়ে দিবে এবং পরে নিজের শরীরের সাথে তার কাপড় জড়িয়ে নেবে, আমি যা বলছি সে তা স্মরণ রাখতে পারবে। [আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন] আমি আমার গায়ের চাদরখানা বিছিয়ে দিলাম যতক্ষণ না আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কথা শেষ করলেন, পরে আমি তা আমার বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলাম। ফলে আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সে কথার কিছুই ভুলে যাইনি।

২০৪৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَالَ قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ ـ رضى الله عنه ـ لَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ آخَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنِي وَبَيْنَ سَعْدِ بْنِ الرَّبِيعِ فَقَالَ سَعْدُ بْنُ الرَّبِيعِ إِنِّي أَكْثَرُ الأَنْصَارِ مَالاً، فَأَقْسِمُ لَكَ نِصْفَ مَالِي، وَانْظُرْ أَىَّ زَوْجَتَىَّ هَوِيتَ نَزَلْتُ لَكَ عَنْهَا، فَإِذَا حَلَّتْ تَزَوَّجْتَهَا‏.‏ قَالَ فَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ لاَ حَاجَةَ لِي فِي ذَلِكَ، هَلْ مِنْ سُوقٍ فِيهِ تِجَارَةٌ قَالَ سُوقُ قَيْنُقَاعَ‏.‏ قَالَ فَغَدَا إِلَيْهِ عَبْدُ الرَّحْمَنِ، فَأَتَى بِأَقِطٍ وَسَمْنٍ ـ قَالَ ـ ثُمَّ تَابَعَ الْغُدُوَّ، فَمَا لَبِثَ أَنْ جَاءَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ عَلَيْهِ أَثَرُ صُفْرَةٍ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ تَزَوَّجْتَ ‏”‏‏.‏ قَالَ نَعَمْ‏.‏ قَالَ ‏”‏ وَمَنْ ‏”‏‏.‏ قَالَ امْرَأَةً مِنَ الأَنْصَارِ‏.‏ قَالَ ‏”‏ كَمْ سُقْتَ ‏”‏‏.‏ قَالَ زِنَةَ نَوَاةٍ مِنْ ذَهَبٍ أَوْ نَوَاةً مِنْ ذَهَبٍ‏.‏ فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ أَوْلِمْ وَلَوْ بِشَاةٍ ‏”‏‏.‏

‘আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা যখন মদীনায় আসি, তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার এবং সা‘দ ইবনু রাবী’ (রাঃ) এর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন সৃষ্টি করে দেন। পরে সা‘দ ইবনু রাবী’ বললেন, আমি আনসারদের মধ্যে অধিক ধনাঢ্য ছিলাম। আমার অর্ধেক সম্পত্তি তোমাকে বন্টন করে দিচ্ছি এবং আমার উভয় স্ত্রীকে দেখে যাকে তোমার পছন্দ হয়, বল আমি তাকে তোমার জন্য পরিত্যাগ করব। যখন সে (ইদ্দত পূর্ণ করবে) তখন তুমি বিবাহ করবে। আবদুর রহমান (রাঃ) বললেন, এ সবে আমার কোন প্রয়োজন নেই। বরং (আপনি বলুন) ব্যবসা-বানিজ্য করার মতো কোন বাজার আছে কি? তিনি বললেন, কায়নুকার বাজার আছে। পরদিন ‘আবদুর রহমান (রাঃ) সে বাজারে গিয়ে পনীর ও ঘি (খরিদ করে) নিয়ে আসলেন। এরপর ক্রমাগত যাওয়া-আসা করতে থাকেন। কিছুকাল পরে ‘আবদুর রহমান (রাঃ) এর কাপড়ে বিয়ের হলুদ রঙের চিহ্ন দেখা গেল। এরপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি বিবাহ করেছ? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, সে কে? তিনি বললেন, জনৈকা আনসারী মহিলা। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কী পরিমাণ মোহর দিয়েছ? ‘আবদুর রহমান (রাঃ) বললেন, খেজুরের এক আঁটি পরিমাণ স্বর্ণ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেন, একটি বকরী দিয়ে হলেও ওয়ালীমা কর।

২০৪৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا حُمَيْدٌ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَدِمَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ الْمَدِينَةَ فَآخَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَهُ وَبَيْنَ سَعْدِ بْنِ الرَّبِيعِ الأَنْصَارِيِّ، وَكَانَ سَعْدٌ ذَا غِنًى، فَقَالَ لِعَبْدِ الرَّحْمَنِ أُقَاسِمُكَ مَالِي نِصْفَيْنِ، وَأُزَوِّجُكَ‏.‏ قَالَ بَارَكَ اللَّهُ لَكَ فِي أَهْلِكَ وَمَالِكَ، دُلُّونِي عَلَى السُّوقِ‏.‏ فَمَا رَجَعَ حَتَّى اسْتَفْضَلَ أَقِطًا وَسَمْنًا، فَأَتَى بِهِ أَهْلَ مَنْزِلِهِ، فَمَكَثْنَا يَسِيرًا ـ أَوْ مَا شَاءَ اللَّهُ ـ فَجَاءَ وَعَلَيْهِ وَضَرٌ مِنْ صُفْرَةٍ، فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَهْيَمْ ‏”‏‏.‏ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ تَزَوَّجْتُ امْرَأَةً مِنَ الأَنْصَارِ‏.‏ قَالَ ‏”‏ مَا سُقْتَ إِلَيْهَا ‏”‏‏.‏ قَالَ نَوَاةً مِنْ ذَهَبٍ، أَوْ وَزْنَ نَوَاةٍ مِنْ ذَهَبٍ‏.‏ قَالَ ‏”‏ أَوْلِمْ وَلَوْ بِشَاةٍ ‏”‏‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) মদীনায় আগমন করলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর ও সা‘দ ইবনু রাবী’ আনসারীর মাঝে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন করে দেন। সা‘দ (রাঃ) ধনী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি ‘আবদুর রহমান (রাঃ)-কে বললেন, আমি তোমার উদ্দেশ্যে আমার সম্পত্তি অর্ধেক অর্ধেক ভাগ করে নিতে চাই এবং তোমাকে বিবাহ করিয়ে দিতে চাই। তিনি বলেন, আল্লাহ তা‘আলা তোমার পরিবার ও সম্পদে বরকত দান করুন। আমাকে বাজার দেখিয়ে দাও। তিনি বাজার হতে মুনাফা করে নিয়ে আসলেন পনীর ও ঘি। এভাবে কিছুকাল কাটালেন। একদিন তিনি এভাবে আসলেন যে, তাঁর গায়ে বিয়ের হলুদ রঙের চিহ্ন লেগে আছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে জিজ্ঞেস করলেন, কী ব্যাপার? তিনি বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি জনৈকা আনসারী মহিলাকে বিবাহ করেছি। তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] জিজ্ঞেস করলেন, তুমি তাকে কী দিয়েছ? তিনি বললেন, খেজুরের এক আঁটি পরিমাণ স্বর্ণ। তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] বললেন, একটি বকরী দিয়ে হলেও ওয়ালীমা কর।

২০৫০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ كَانَتْ عُكَاظٌ وَمِجَنَّةُ وَذُو الْمَجَازِ أَسْوَاقًا فِي الْجَاهِلِيَّةِ، فَلَمَّا كَانَ الإِسْلاَمُ فَكَأَنَّهُمْ تَأَثَّمُوا فِيهِ فَنَزَلَتْ ‏{‏لَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَبْتَغُوا فَضْلاً مِنْ رَبِّكُمْ ‏}‏ فِي مَوَاسِمِ الْحَجِّ، قَرَأَهَا ابْنُ عَبَّاسٍ‏.‏

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উকায, মাজিন্না ও যুল-মাজায জাহিলীয়্যাতের যুগে বাজার ছিল। ইসলামের আগমনের পরে লোকেরা ঐ সমস্ত বাজারে যেতে গুনাহ মনে করতে লাগল। ফলে অবতীর্ণ হলঃ “তোমাদের প্রভুর অনুগ্রহ তালাশে তোমাদের কোন গুনাহ নেই”- (আল-বাকারা ১৯৮)। ইবনু আব্বাস (রাঃ) (আয়াতের সঙ্গে) হাজ্জের মওসুমে কথাটুকুও পড়লেন।

৩৪/২. অধ্যায়ঃ
হালাল সুস্পষ্ট, হারামও সুস্পষ্ট এবং এ দু‘য়ের মধ্যখানে রয়েছে সন্দেহজনক বিষয়।

২০৫১
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، سَمِعْتُ النُّعْمَانَ بْنَ بَشِيرٍ ـ رضى الله عنه ـ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم‏.‏ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي فَرْوَةَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ النُّعْمَانَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ أَبِي فَرْوَةَ، سَمِعْتُ الشَّعْبِيَّ، سَمِعْتُ النُّعْمَانَ بْنَ بَشِيرٍ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي فَرْوَةَ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ بَشِيرٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ الْحَلاَلُ بَيِّنٌ، وَالْحَرَامُ بَيِّنٌ وَبَيْنَهُمَا أُمُورٌ مُشْتَبِهَةٌ، فَمَنْ تَرَكَ مَا شُبِّهَ عَلَيْهِ مِنَ الإِثْمِ كَانَ لِمَا اسْتَبَانَ أَتْرَكَ، وَمَنِ اجْتَرَأَ عَلَى مَا يَشُكُّ فِيهِ مِنَ الإِثْمِ أَوْشَكَ أَنْ يُوَاقِعَ مَا اسْتَبَانَ، وَالْمَعَاصِي حِمَى اللَّهِ، مَنْ يَرْتَعْ حَوْلَ الْحِمَى يُوشِكْ أَنْ يُوَاقِعَهُ ‏”‏‏.‏

নু‘মান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, হালাল সুস্পষ্ট এবং হারামও সুস্পষ্ট, উভয়ের মাঝে বহু অস্পষ্ট বিষয় রয়েছে। যে ব্যক্তি গুনাহের সন্দেহযুক্ত কাজ পরিত্যাগ করে, সে ব্যক্তি যে বিষয়ে গুনাহ হওয়া সুস্পষ্ট, সে বিষয়ে অধিকতর পরিত্যাগকারী হবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি গুনাহের সন্দেহযুক্ত কাজ করতে দুঃসাহস করে, সে ব্যক্তির সুস্পষ্ট গুনাহের কাজে পতিত হবার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। গুনাহসমূহ আল্লাহর সংরক্ষিত এলাকা, যে জানোয়ার সংরক্ষিত এলাকার চারপাশে চরতে থাকে, তার ঐ সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করার সম্ভাবনা রয়েছে।

৩৪/৩. অধ্যায়ঃ
মুতাশাবিহাত বা সন্দেহজনক বিষয়সমূহের বিশ্লেষণ।

হাস্‌সান ইবনু আবূ সিনান (রহঃ) বলেন, আমি পরহেযগারী হতে বেশী সহজ কাজ দেখতে পাইনি। (তা হলো) যা তোমার কাছে সন্দেহযুক্ত মনে হয়, তা পরিত্যাগ করে সন্দেহমুক্ত কাজ কর।

২০৫২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي حُسَيْنٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ الْحَارِثِ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ امْرَأَةً، سَوْدَاءَ جَاءَتْ، فَزَعَمَتْ أَنَّهَا أَرْضَعَتْهُمَا، فَذَكَرَ لِلنَّبِيِّ فَأَعْرَضَ عَنْهُ، وَتَبَسَّمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم‏.‏ قَالَ ‏ “‏ كَيْفَ وَقَدْ قِيلَ ‏”‏‏.‏ وَقَدْ كَانَتْ تَحْتَهُ ابْنَةُ أَبِي إِهَابٍ التَّمِيمِيِّ‏.

উকবা ইবনু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একজন কালো মেয়েলোক এসে দাবী করলো যে, সে তাদের উভয় (উকবা ও তার স্ত্রী)-কে দুধপান করিয়েছে। তিনি এ কথা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বর্ণনা করলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর হতে মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং মুচকি হেসে বললেন, কিভাবে? অথচ এমনটি বলা হয়ে গেছে। তাঁর স্ত্রী ছিলেন আবূ ইহাব তামীমীর মেয়ে।

২০৫৩
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ قَزَعَةَ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ كَانَ عُتْبَةُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ عَهِدَ إِلَى أَخِيهِ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ أَنَّ ابْنَ وَلِيدَةِ زَمْعَةَ مِنِّي فَاقْبِضْهُ‏.‏ قَالَتْ فَلَمَّا كَانَ عَامَ الْفَتْحِ أَخَذَهُ سَعْدُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ وَقَالَ ابْنُ أَخِي، قَدْ عَهِدَ إِلَىَّ فِيهِ‏.‏ فَقَامَ عَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ، فَقَالَ أَخِي، وَابْنُ وَلِيدَةِ أَبِي، وُلِدَ عَلَى فِرَاشِهِ‏.‏ فَتَسَاوَقَا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏ فَقَالَ سَعْدٌ يَا رَسُولَ اللَّهِ، ابْنُ أَخِي، كَانَ قَدْ عَهِدَ إِلَىَّ فِيهِ‏.‏ فَقَالَ عَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ أَخِي وَابْنُ وَلِيدَةِ أَبِي، وُلِدَ عَلَى فِرَاشِهِ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ هُوَ لَكَ يَا عَبْدُ بْنَ زَمْعَةَ ‏”‏‏.‏ ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ الْوَلَدُ لِلْفِرَاشِ، وَلِلْعَاهِرِ الْحَجَرُ ‏”‏‏.‏ ثُمَّ قَالَ لِسَوْدَةَ بِنْتِ زَمْعَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ احْتَجِبِي مِنْهُ ‏”‏‏.‏ لِمَا رَأَى مِنْ شَبَهِهِ بِعُتْبَةَ، فَمَا رَآهَا حَتَّى لَقِيَ اللَّهَ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, উতবা ইবনু আবূ ওয়াক্কাস তার ভাই সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) কে ওয়াসীয়াত করে যান যে, যাম‘আর বাঁদীর গর্ভস্থিত পুত্র আমার ঔরসজাত; তুমি তাকে (ভ্রাতুষ্পুত্র রূপে) তোমার অধীনে নিয়ে আসবে। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, মক্কা বিজয়ের কালে ঐ ছেলেটিকে সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) নিয়ে নিলেন এবং বললেন, এ আমার ভাইয়ের পুত্র। তিনি আমাকে এর সম্পর্কে ওয়াসীয়াত করে গেছেন। এদিকে যাম‘আর পুত্র ‘আব্‌দ দাবী করে যে, এ আমার ভাই, আমার পিতার বাঁদীর পুত্র। তার শয্যা সঙ্গিনীর গর্ভে জন্মগ্রহন করেছে। তারপর উভয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে গেলেন। সা‘দ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! এ আমার ভাইয়ের পুত্র, সে এর ব্যাপারে আমাকে ওয়াসীয়াত করে গেছে এবং ‘আব্‌দ ইবনু যাম‘আ বললেন, আমার ভাই। আমার পিতার দাসীর পুত্র, তাঁর সঙ্গে শায়িনীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেছে। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে ‘আব্‌দ ইবনু যাম‘আ! এ ছেলেটি তোমার প্রাপ্য। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, শয্যা যার, সন্তান তার। ব্যভিচারী যে, বঞ্চিত সে। এরপর তিনি নবী সহধর্মিনী সাওদা বিনতে যাম‘আ (রাঃ)-কে বললেন, তুমি ঐ ছেলেটি হতে পর্দা করবে। কারণ তিনি ঐ ছেলেটির মধ্যে উতবার সাদৃশ্য দেখতে পান। ফলে মৃত্যু পর্যন্ত ঐ ছেলেটি আর সাওদাহ (রাঃ)-কে দেখেনি।

২০৫৪
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي السَّفَرِ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ حَاتِمٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ سَأَلْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْمِعْرَاضِ فَقَالَ ‏”‏ إِذَا أَصَابَ بِحَدِّهِ فَكُلْ، وَإِذَا أَصَابَ بِعَرْضِهِ فَلاَ تَأْكُلْ، فَإِنَّهُ وَقِيذٌ ‏”‏‏.‏ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أُرْسِلُ كَلْبِي وَأُسَمِّي، فَأَجِدُ مَعَهُ عَلَى الصَّيْدِ كَلْبًا آخَرَ لَمْ أُسَمِّ عَلَيْهِ، وَلاَ أَدْرِي أَيُّهُمَا أَخَذَ‏.‏ قَالَ ‏”‏ لاَ تَأْكُلْ، إِنَّمَا سَمَّيْتَ عَلَى كَلْبِكَ وَلَمْ تُسَمِّ عَلَى الآخَرِ ‏”‏‏.‏

আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে পার্শ্বফলাবিহীন তীর (দ্বারা শিকার) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, যদি তীরের ধারালো পার্শ্ব আঘাত করে, তবে সে (শিকারকৃত জানোয়ারের গোশত) খাবে, আর যদি এর ধারহীন পার্শ্বের আঘাতে মারা যায়, তবে তা খাবে না। কেননা তা প্রহারের মৃত যবেহকৃত নয়। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি বিসমিল্লাহ পড়ে আমার (শিকারী) কুকুর ছেড়ে দিয়ে থাকি। পরে তার সাথে শিকারের কাছে (অনেক সময়) অন্য কুকুর দেখতে পাই যার উপর আমি বিসমিল্লাহ পড়িনি এবং আমি জানি না, উভয়ের মধ্যে কে শিকার ধরেছে। তিনি বললেন, তুমি তা খাবে না। তুমি তো তোমার কুকুরের উপর বিসমিল্লাহ পড়েছ, অন্যটির উপর পড়নি।

৩৪/৪. অধ্যায়ঃ
সন্দেহজনক বিষয় থেকে বিরত থাকা।

২০৫৫
حَدَّثَنَا قَبِيصَةُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ مَرَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِتَمْرَةٍ مَسْقُوطَةٍ فَقَالَ ‏”‏ لَوْلاَ أَنْ تَكُونَ صَدَقَةً لأَكَلْتُهَا ‏”‏‏.‏ وَقَالَ هَمَّامٌ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ أَجِدُ تَمْرَةً سَاقِطَةً عَلَى فِرَاشِي ‏”‏‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, (একদা) পথ অতিক্রমকালে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পড়ে থাকা একটি খেজুর দেখে বললেন, এটা যদি সদাকার খেজুর বলে সংশয় না থাকতো, তবে আমি তা খেতাম। আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে হাম্মাম (রহঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন আমার বিছানায় পড়ে থাকা খেজুর আমি পাই।

৩৪/৫. অধ্যায়ঃ
যারা ওয়াসওয়াসা সৃষ্টিকারী ও তদনুরূপ বিষয়কে সন্দেহজনক মনে করেন না।

২০৫৬
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ شُكِيَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الرَّجُلُ يَجِدُ فِي الصَّلاَةِ شَيْئًا، أَيَقْطَعُ الصَّلاَةَ قَالَ ‏ “‏ لاَ، حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا ‏”‏‏.‏ وَقَالَ ابْنُ أَبِي حَفْصَةَ عَنِ الزُّهْرِيِّ لاَ وُضُوءَ إِلاَّ فِيمَا وَجَدْتَ الرِّيحَ أَوْ سَمِعْتَ الصَّوْتَ‏.‏

আব্বাদ ইবনু তামীমের চাচা (‘আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ ইবনু আসিম) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এক ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হল যে, সালাত আদায়কালে তার অযু ভঙ্গের কিছু হয়েছে বলে মনে হয়, এতে কি সে সালাত ছেড়ে দেবে? তিনি বলেন, না, যতক্ষণ না সে আওয়াজ শোনে বা দুর্গন্ধ টের পায় অর্থাৎ নিশ্চিত না হয়।

ইবনু আবূ হাফসা (রহঃ) যুহরী (রহঃ) হতে বর্ণনা করেন, তুমি গন্ধ না পেলে অথবা আওয়াজ না শুনলে অযু করবে না।

২০৫৭
حَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ الْمِقْدَامِ الْعِجْلِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الطُّفَاوِيُّ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ،، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ قَوْمًا، قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ قَوْمًا يَأْتُونَنَا بِاللَّحْمِ لاَ نَدْرِي أَذَكَرُوا اسْمَ اللَّهِ عَلَيْهِ أَمْ لاَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ سَمُّوا اللَّهَ عَلَيْهِ وَكُلُوهُ ‏”‏‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

কিছু সংখ্যক লোক বলল, হে আল্লাহর রসূল! বহু লোক আমাদের কাছে গোশত নিয়ে আসে আমরা জানি না, তারা বিসমিল্লাহ পড়ে যবহ করেছিল কিনা? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা এর উপর আল্লাহর নাম লও এবং তা খাও (ওয়াসওয়াসার শিকার হয়ো না)।

৩৪/৬. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা যখন কোন ব্যবসায়ের সুযোগ বা ক্রীড়া কৌতুক দেখে তখন আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে তারা সে দিকে ছুটে যায়। (জুমুআহঃ ১১)

২০৫৮
حَدَّثَنَا طَلْقُ بْنُ غَنَّامٍ، حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، عَنْ حُصَيْنٍ، عَنْ سَالِمٍ، قَالَ حَدَّثَنِي جَابِرٌ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ نُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِذْ أَقْبَلَتْ مِنَ الشَّأْمِ عِيرٌ، تَحْمِلُ طَعَامًا، فَالْتَفَتُوا إِلَيْهَا، حَتَّى مَا بَقِيَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلاَّ اثْنَا عَشَرَ رَجُلاً فَنَزَلَتْ ‏{‏وَإِذَا رَأَوْا تِجَارَةً أَوْ لَهْوًا انْفَضُّوا إِلَيْهَا‏}

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সলাত আদায় করছিলাম। তখন সিরিয়া হতে একটি ব্যবসায়ী কাফেলা খাদ্য নিয়ে আগমন করল। লোকজন সকলেই সে দিকে চলে গেলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে মাত্র বারোজন থেকে গেলেন। এ প্রসঙ্গে নাযিল হলঃ “যখন তারা দেখল ব্যবসা ও কৌতুক তখন তারা সে দিকে ছুটে গেল”।

৩৪/৭. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি কোত্থেকে সম্পদ কামাই করল, তার পরোয়া করে না।

২০৫৯
حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ يَأْتِي عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ، لاَ يُبَالِي الْمَرْءُ مَا أَخَذَ مِنْهُ أَمِنَ الْحَلاَلِ أَمْ مِنَ الْحَرَامِ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এমন এক যুগ আসবে, যখন মানুষ পরোয়া করবে না যে, সে কোথা হতে সম্পদ উপার্জন করল, হালাল হতে না হারাম হতে।

৩৪/৮. অধ্যায়ঃ
কাপড় ও অন্যান্য জিনিসের ব্যবসা

আল্লাহ তা‘আলার বাণীঃ “সে সব লোক যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর যিক্‌র হতে বিরত রাখে না”। (আন-নূর ৩৭)

কাতাদাহ (রহঃ) বলেন, লোকেরা ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবসা-বাণিজ্য করতেন এবং যখন তাদের সামনে আল্লাহর কোন হক এসে উপস্থিত হতো, তখন তাদেরকে ব্যবসা-বানিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ হতে বিরত রাখত না, যতক্ষণ না তারা আল্লাহর সমীপে তা আদায় করে দিতেন।

২০৬০
حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، عَنْ أَبِي الْمِنْهَالِ، قَالَ كُنْتُ أَتَّجِرُ فِي الصَّرْفِ، فَسَأَلْتُ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ ـ رضى الله عنه ـ فَقَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم‏.‏ وَحَدَّثَنِي الْفَضْلُ بْنُ يَعْقُوبَ، حَدَّثَنَا الْحَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، وَعَامِرُ بْنُ مُصْعَبٍ، أَنَّهُمَا سَمِعَا أَبَا الْمِنْهَالِ، يَقُولُ سَأَلْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ وَزَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ عَنِ الصَّرْفِ، فَقَالاَ كُنَّا تَاجِرَيْنِ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلْنَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الصَّرْفِ فَقَالَ ‏ “‏ إِنْ كَانَ يَدًا بِيَدٍ فَلاَ بَأْسَ، وَإِنْ كَانَ نَسَاءً فَلاَ يَصْلُحُ ‏”‏‏.‏

আবুল মিনহাল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি সোনা-রূপার ব্যবসা করতাম। এ সম্পর্কে আমি যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ) এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ফাযল ইবনু ই‘য়াকূব (রহঃ) অন্য সনদে …….. আবুল মিনহাল (রহঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বারা ইবনু ‘আযিব ও যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ)-কে সোনা-রূপার ব্যবসা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তাঁরা উভয়ে বললেন, আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে ব্যবসায়ী ছিলাম। আমরা তাঁকে সোনা-রূপার ব্যবসা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, যদি হাতে হাতে (নগদ) হয়, তবে কোন ক্ষতি নেই; আর যদি বাকী হয় তবে জায়িয নয়।

২০৬১
حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، عَنْ أَبِي الْمِنْهَالِ، قَالَ كُنْتُ أَتَّجِرُ فِي الصَّرْفِ، فَسَأَلْتُ زَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ ـ رضى الله عنه ـ فَقَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم‏.‏ وَحَدَّثَنِي الْفَضْلُ بْنُ يَعْقُوبَ، حَدَّثَنَا الْحَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، وَعَامِرُ بْنُ مُصْعَبٍ، أَنَّهُمَا سَمِعَا أَبَا الْمِنْهَالِ، يَقُولُ سَأَلْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ وَزَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ عَنِ الصَّرْفِ، فَقَالاَ كُنَّا تَاجِرَيْنِ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلْنَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الصَّرْفِ فَقَالَ ‏ “‏ إِنْ كَانَ يَدًا بِيَدٍ فَلاَ بَأْسَ، وَإِنْ كَانَ نَسَاءً فَلاَ يَصْلُحُ ‏”‏‏.‏

আবুল মিনহাল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি সোনা-রূপার ব্যবসা করতাম। এ সম্পর্কে আমি যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ) এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ফাযল ইবনু ই‘য়াকূব (রহঃ) অন্য সনদে …….. আবুল মিনহাল (রহঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বারা ইবনু ‘আযিব ও যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ)-কে সোনা-রূপার ব্যবসা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তাঁরা উভয়ে বললেন, আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে ব্যবসায়ী ছিলাম। আমরা তাঁকে সোনা-রূপার ব্যবসা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, যদি হাতে হাতে (নগদ) হয়, তবে কোন ক্ষতি নেই; আর যদি বাকী হয় তবে জায়িয নয়।

৩৪/৯. অধ্যায়ঃ
ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে বহির্গত হওয়া।

মহান আল্লাহর বাণীঃ “তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর।” (জুমু’আহঃ ১০)

২০৬২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلاَمٍ، أَخْبَرَنَا مَخْلَدُ بْنُ يَزِيدَ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ عُمَيْرٍ، أَنَّ أَبَا مُوسَى الأَشْعَرِيَّ، اسْتَأْذَنَ عَلَى عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ ـ رضى الله عنه ـ فَلَمْ يُؤْذَنْ لَهُ، وَكَأَنَّهُ كَانَ مَشْغُولاً فَرَجَعَ أَبُو مُوسَى، فَفَرَغَ عُمَرُ فَقَالَ أَلَمْ أَسْمَعْ صَوْتَ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قَيْسٍ ائْذَنُوا لَهُ قِيلَ قَدْ رَجَعَ‏.‏ فَدَعَاهُ‏.‏ فَقَالَ كُنَّا نُؤْمَرُ بِذَلِكَ‏.‏ فَقَالَ تَأْتِينِي عَلَى ذَلِكَ بِالْبَيِّنَةِ‏.‏ فَانْطَلَقَ إِلَى مَجْلِسِ الأَنْصَارِ، فَسَأَلَهُمْ‏.‏ فَقَالُوا لاَ يَشْهَدُ لَكَ عَلَى هَذَا إِلاَّ أَصْغَرُنَا أَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ‏.‏ فَذَهَبَ بابي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ‏.‏ فَقَالَ عُمَرُ أَخَفِيَ عَلَىَّ مِنْ أَمْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَلْهَانِي الصَّفْقُ بِالأَسْوَاقِ‏.‏ يَعْنِي الْخُرُوجَ إِلَى تِجَارَةٍ‏.‏

‘উবায়দুল্লাহ ইবনু ‘উমাইর (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ মূসা আল-আশ‘আরী (রাঃ) ‘উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ)- এর নিকট প্রবেশের অনুমতি চাইলে তাকে অনুমতি দেয়া হয়নি; সম্ভবতঃ তিনি কোন কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তাই আবূ মূসা (রাঃ) ফিরে আসেন। পরে ‘উমর (রাঃ) পেরেশান হয়ে বললেন, আমি কি ‘আবদুল্লাহ ইবনু কায়স (আবূ মূসার নাম)-এর আওয়াজ শুনতে পাইনি? তাঁকে আসতে বল। কেউ বলল, তিনি তো ফিরে চলে গেছেন। ‘উমর (রাঃ) তাঁকে ডেকে পাঠালেন। তিনি (উপস্থিত হয়ে) বললেন, আমাদের এরূপই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ‘উমর (রাঃ) বললেন, তোমাকে এর উপর সাক্ষী পেশ করতে হবে। আবূ মূসা (রাঃ) ফিরে গিয়ে আনসারদের এক মজলিসে পৌঁছে তাদের এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলেন। তাঁরা বললেন, এ ব্যাপারে আমাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ)- ই সাক্ষ্য দেবে। তিনি আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ)-কে নিয়ে গেলেন। ‘উমর (রাঃ) (তার কাছ হতে সে হাদীসটি শুনে) বললেন, (কি আশ্চর্য) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নির্দেশ কি আমার কাছ হতে গোপন রয়ে গেল? (আসল ব্যাপার হল) বাজারের ক্রয়-বিক্রয় অর্থাৎ ব্যবসায়ের জন্য বের হওয়া আমাকে বেখবর রেখেছে।

৩৪/১০. অধ্যায়ঃ
নৌপথে বাণিজ্য

মাত্বার (রহঃ) বলেন, এতে কোন দোষ নেই এবং তা যথাযথ বলেই আল্লাহ কুরআনে এর উল্লেখ করেছেন। তারপর তিনি তিলাওয়াত করলেনঃ “এবং তোমরা এতে নৌযানকে দেখতে পাও তার বুক চিরে চলাচল করে, যা এজন্য যে, তাঁর অনুগ্রহের অনুসন্ধান করতে পার”- (ফাতিরঃ ১২)। আয়াতে উল্লেখিত ……… ‘আল-ফুলক’ শব্দের অর্থ নৌযান। একবচন ও বহুবচনে সমভাবে ব্যবহৃত হয়। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, নৌযান, বায়ু বিদীর্ণ করে চলে এবং নৌযানের মধ্যে বৃহৎ নৌযানই বায়ুতে বিদীর্ণ করে চলে।

২০৬৩
وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي جَعْفَرُ بْنُ رَبِيعَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ هُرْمُزَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ ذَكَرَ رَجُلاً مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ، خَرَجَ فِي الْبَحْرِ فَقَضَى حَاجَتَهُ‏.‏ وَسَاقَ الْحَدِيثَ‏.‏ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ صَالِحٍ قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ بِهَذَا‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বনী ইসরাঈলের এক ব্যক্তির আলোচনায় বলেন, সে নদীপথে বের হল এবং নিজের প্রয়োজন সেরে নিল। এরপর রাবী পুরা হাদীসটি বর্ণনা করেন।

৩৪/১১. অধ্যায়ঃ
নাই

আল্লাহর বাণী- “যখন তারা দেখল ব্যবসা ও কৌতুক তখন তারা আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে সেদিকে ছুটে গেল”- (জুমুআহ ১১)। এবং তাঁর বাণীঃ “সে সব লোক, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর যিক্‌র হতে গাফিল রাখে না।” (আন্-নূরঃ ৩৭)

কাতাদাহ (রহঃ) বলেন, সাহাবীগণ (রাঃ) ব্যবসা-বাণিজ্য করতেন বটে, কিন্তু যখন তাঁদের সামনে আল্লাহর কোন হক এসে উপস্থিত হতো, যতক্ষণ না তাঁরা এ হক আল্লাহর সমীপে আদায় করে দিতেন, ততক্ষণ ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর যিকির হতে গাফিল করতে পারত না।

২০৬৪
حَدَّثَنِي مُحَمَّدٌ، قَالَ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ حُصَيْنٍ، عَنْ سَالِمِ بْنِ أَبِي الْجَعْدِ، عَنْ جَابِرٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ أَقْبَلَتْ عِيرٌ، وَنَحْنُ نُصَلِّي مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم الْجُمُعَةَ، فَانْفَضَّ النَّاسُ إِلاَّ اثْنَىْ عَشَرَ رَجُلاً، فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ ‏{‏وَإِذَا رَأَوْا تِجَارَةً أَوْ لَهْوًا انْفَضُّوا إِلَيْهَا وَتَرَكُوكَ قَائِمًا ‏}‏

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে জুমু‘আর দিন সালাত আদায় করছিলাম। এমন সময় এক বাণিজ্যিক কাফেলা এসে হাযির হয়, তখন বারোজন লোক ছাড়া সকলেই সে কাফেলার দিকে ছুটে যান। তখন এ আয়াত নাযিল হয়ঃ “যখন তারা দেখল ব্যবসা ও কৌতুক তখন তারা আপনাকে দাঁড়ানো অবস্থায় রেখে সেদিকে ছুটে গেল।”- (সূরা জুমু’আ ১১)।

৩৪/১২. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণী- তোমরা যা উপার্জন কর তার উৎকৃষ্ট হতে ব্যয় কর। (আল বাকারাঃ ২৬৭)

২০৬৫
حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِذَا أَنْفَقَتِ الْمَرْأَةُ مِنْ طَعَامِ بَيْتِهَا، غَيْرَ مُفْسِدَةٍ، كَانَ لَهَا أَجْرُهَا بِمَا أَنْفَقَتْ، وَلِزَوْجِهَا بِمَا كَسَبَ، وَلِلْخَازِنِ مِثْلُ ذَلِكَ، لاَ يَنْقُصُ بَعْضُهُمْ أَجْرَ بَعْضٍ شَيْئًا ‏”‏‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন কোন মহিলা তার ঘরের খাদ্যসামগ্রী হতে ফাসাদের উদ্দেশ্য ব্যতীত খরচ করে তখন তার জন্য সাওয়াব রয়েছে তার খরচ করায়, তার স্বামীর জন্য সাওয়াব রয়েছে তার উপার্জনের এবং সংরক্ষণকারীর জন্যও অনুরূপ রয়েছে। তাদের কারো কারণে কারোর সাওয়াব কিছুই কমতি হবে না।

২০৬৬
حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ هَمَّامٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ إِذَا أَنْفَقَتِ الْمَرْأَةُ مِنْ كَسْبِ زَوْجِهَا عَنْ غَيْرِ أَمْرِهِ، فَلَهُ نِصْفُ أَجْرِهِ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন কোন মহিলা তার স্বামীর উপার্জন হতে তার অনুমতি ছাড়াই ব্যয় করবে, তখন তার জন্য অর্ধেক সওয়াব রয়েছে।

৩৪/১৩. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি উপার্জনে প্রশস্ততা চায়

২০৬৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي يَعْقُوبَ الْكِرْمَانِيُّ، حَدَّثَنَا حَسَّانُ، حَدَّثَنَا يُونُسُ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ مَنْ سَرَّهُ أَنْ يُبْسَطَ لَهُ رِزْقُهُ أَوْ يُنْسَأَ لَهُ فِي أَثَرِهِ فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ ‏”‏‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি শুনেছি, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে, তার জীবিকা বৃদ্ধি হোক অথবা তাঁর মৃত্যুর পরে সুনাম থাকুক, তবে সে যেন আত্মীয়ের সঙ্গে সদাচরণ করে।

৩৪/১৪. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক ধারে ক্রয় করা।

২০৬৮
حَدَّثَنَا مُعَلَّى بْنُ أَسَدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، قَالَ ذَكَرْنَا عِنْدَ إِبْرَاهِيمَ الرَّهْنَ فِي السَّلَمِ فَقَالَ حَدَّثَنِي الأَسْوَدُ عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم اشْتَرَى طَعَامًا مِنْ يَهُودِيٍّ إِلَى أَجَلٍ، وَرَهَنَهُ دِرْعًا مِنْ حَدِيدٍ‏.‏

আ’মাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বাকীতে ক্রয়ের জন্য বন্ধক রাখা সম্পর্কে আমরা ইব্রাহীম (রহঃ)-এর কাছে আলোচনা করছিলাম। তখন তিনি বলেন আসওয়াদ (রহঃ) ‘আয়িশা (রাঃ) হতে আমার কাছে বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জনৈক ইয়াহুদীর নিকট হতে নির্দিষ্ট মেয়াদে মূল্য পরিশোধের শর্তে খাদ্য ক্রয় করেন এবং তার নিকট নিজের লোহার বর্ম বন্ধক রাখেন।

২০৬৯
حَدَّثَنَا مُسْلِمٌ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَنَسٍ، ح‏.‏ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ حَوْشَبٍ، حَدَّثَنَا أَسْبَاطٌ أَبُو الْيَسَعِ الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ الدَّسْتَوَائِيُّ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّهُ مَشَى إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِخُبْزِ شَعِيرٍ، وَإِهَالَةٍ سَنِخَةٍ، وَلَقَدْ رَهَنَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم دِرْعًا لَهُ بِالْمَدِينَةِ عِنْدَ يَهُودِيٍّ، وَأَخَذَ مِنْهُ شَعِيرًا لأَهْلِهِ، وَلَقَدْ سَمِعْتُهُ يَقُولُ ‏ “‏ مَا أَمْسَى عِنْدَ آلِ مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم صَاعُ بُرٍّ وَلاَ صَاعُ حَبٍّ، وَإِنَّ عِنْدَهُ لَتِسْعَ نِسْوَةٍ ‏”‏‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একবার তিনি যবের আটা ও পুরানো গন্ধযুক্ত চর্বি নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হলেন। রাবী বলেন, আমি তাঁকে বলতে শুনেছি যে, মাদীনায় অবস্থান কালে তাঁর বর্ম জনৈক ইয়াহুদীর নিকট বন্ধক রেখে তিনি নিজ পরিবারের জন্য তার হতে যব খরিদ করেন। [রাবী কাতাদাহ (রহঃ) বলেন] আমি তাঁকে [ আনাস (রহঃ)-কে] বলতে শুনেছি যে, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর পরিবারের কাছে এক সা’ পরিমাণ গম বা এক সা’ পরিমাণ আটা ও থাকত না, অথচ সে সময় তাঁর নয়জন সহধর্মিণী ছিলেন

৩৪/১৫. অধ্যায়ঃ
স্বহস্তের উপার্জনে জীবিকা নির্বাহ করা।

২০৭০
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، أَنَّ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ لَمَّا اسْتُخْلِفَ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ قَالَ لَقَدْ عَلِمَ قَوْمِي أَنَّ حِرْفَتِي لَمْ تَكُنْ تَعْجِزُ عَنْ مَئُونَةِ أَهْلِي، وَشُغِلْتُ بِأَمْرِ الْمُسْلِمِينَ، فَسَيَأْكُلُ آلُ أَبِي بَكْرٍ مِنْ هَذَا الْمَالِ وَيَحْتَرِفُ لِلْمُسْلِمِينَ فِيهِ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ)-কে খলীফা বানানো হল, তখন তিনি বললেন, আমার জাতি জানে যে, আমার উপার্জন আমার পরিবারের ভরণ পোষণের জন্য অপর্যাপ্ত ছিল না। কিন্তু এখন আমি মুসলিম জনগণের কাজে সার্বক্ষণিক ব্যাপৃত হয়ে গেছি। অতএব আবূ বকরের পরিবার এই রাষ্ট্রীয় কোষাগার হতে খাদ্য গ্রহণ করবে এবং আবূ বকর (রাঃ) মুসলিম জনগণের সম্পদের তত্ত্বাবধান করবেন।

২০৭১
حَدَّثَنِي مُحَمَّدٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يَزِيدَ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو الأَسْوَدِ، عَنْ عُرْوَةَ، قَالَ قَالَتْ عَائِشَةُ ـ رضى الله عنها ـ كَانَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عُمَّالَ أَنْفُسِهِمْ، وَكَانَ يَكُونُ لَهُمْ أَرْوَاحٌ فَقِيلَ لَهُمْ لَوِ اغْتَسَلْتُمْ‏.‏ رَوَاهُ هَمَّامٌ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ عَائِشَةَ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাহাবীগণ নিজেদের কাজ-কর্ম নিজেরা করতেন। ফলে তাদের শরীর হতে ঘামের গন্ধ বের হতো। সেজন্য তাদের বলা হল, যদি তোমরা গোসল করে নাও। হাম্মাম (রহঃ) ………‘আয়িশা (রাঃ) হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

২০৭২
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا عِيسَى، عَنْ ثَوْرٍ، عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ، عَنِ الْمِقْدَامِ ـ رضى الله عنه ـ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ مَا أَكَلَ أَحَدٌ طَعَامًا قَطُّ خَيْرًا مِنْ أَنْ يَأْكُلَ مِنْ عَمَلِ يَدِهِ، وَإِنَّ نَبِيَّ اللَّهِ دَاوُدَ ـ عَلَيْهِ السَّلاَمُ ـ كَانَ يَأْكُلُ مِنْ عَمَلِ يَدِهِ ‏”‏‏.‏

মিকদাম (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নিজ হাতে উপার্জিত খাদ্যের চেয়ে উত্তম খাদ্য কখনো কেউ খায় না। আল্লাহর নবী দাঊদ (আঃ) নিজ হাতে উপার্জন করে খেতেন।

২০৭৩
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ أَنَّ دَاوُدَ ـ عَلَيْهِ السَّلاَمُ ـ كَانَ لاَ يَأْكُلُ إِلاَّ مِنْ عَمَلِ يَدِهِ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে আল্লাহর রসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর নবী দাঊদ (আঃ) নিজের হাতের উপার্জন হতেই খেতেন।

২০৭৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي عُبَيْدٍ، مَوْلَى عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لأَنْ يَحْتَطِبَ أَحَدُكُمْ حُزْمَةً عَلَى ظَهْرِهِ خَيْرٌ مِنْ أَنْ يَسْأَلَ أَحَدًا، فَيُعْطِيَهُ أَوْ يَمْنَعَهُ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কারো পক্ষে এক বোঝা লাকড়ি সংগ্রহ করে পিঠে বহন করে নেয়া কারো নিকট চাওয়ার চেয়ে উত্তম। কেউ দিতেও পারে, নাও দিতে পারে।

২০৭৫
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لأَنْ يَأْخُذَ أَحَدُكُمْ أَحْبُلَهُ خَيْرٌ لَهُ مِنْ أَنْ يَسْأَلَ النَّاسَ ‏”‏‏.‏

যুবাইর ইবনু আওয়াম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কারো জন্য তার রশি নিয়ে কাঠ সংগ্রহ করতে বের হওয়া মানুষের নিকট তার ভিক্ষা করার চেয়ে উত্তম। আবূ নু’আঈম (রহঃ) বলেন, মুহাম্মাদ ইবনু সওয়াব ও ইবনু নুমাইর (রহঃ) হিশাম (রহঃ)-এর মাধ্যমে তার পিতা হতে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

৩৪/১৬ অধ্যায়ঃ
ক্রয়-বিক্রয়ে নম্রতা ও কোমলতা। পাওনা ফিরিয়ে চাইলে নম্রতার সাথে চাওয়া উচিত।

২০৭৬
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَيَّاشٍ، حَدَّثَنَا أَبُو غَسَّانَ، مُحَمَّدُ بْنُ مُطَرِّفٍ قَالَ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُنْكَدِرِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ رَحِمَ اللَّهُ رَجُلاً سَمْحًا إِذَا بَاعَ، وَإِذَا اشْتَرَى، وَإِذَا اقْتَضَى ‏”‏‏.‏

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ এমন ব্যক্তির প্রতি রহমত বর্ষণ করেন যে নম্রতার সাথে ক্রয়-বিক্রয় করে ও পাওনা ফিরিয়ে চায়।

৩৪/১৭. অধ্যায়ঃ
সচ্ছল ব্যক্তিকে সুযোগ দেয়া।

২০৭৭
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا مَنْصُورٌ، أَنَّ رِبْعِيَّ بْنَ حِرَاشٍ، حَدَّثَهُ أَنَّ حُذَيْفَةَ ـ رضى الله عنه ـ حَدَّثَهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ تَلَقَّتِ الْمَلاَئِكَةُ رُوحَ رَجُلٍ مِمَّنْ كَانَ قَبْلَكُمْ قَالُوا أَعَمِلْتَ مِنَ الْخَيْرِ شَيْئًا قَالَ كُنْتُ آمُرُ فِتْيَانِي أَنْ يُنْظِرُوا وَيَتَجَاوَزُوا عَنِ الْمُوسِرِ قَالَ قَالَ فَتَجَاوَزُوا عَنْهُ ‏”‏‏.‏ وَقَالَ أَبُو مَالِكٍ عَنْ رِبْعِيٍّ ‏”‏ كُنْتُ أُيَسِّرُ عَلَى الْمُوسِرِ وَأُنْظِرُ الْمُعْسِرَ ‏”‏‏.‏ وَتَابَعَهُ شُعْبَةُ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ عَنْ رِبْعِيٍّ‏.‏ وَقَالَ أَبُو عَوَانَةَ عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ عَنْ رِبْعِيٍّ ‏”‏ أُنْظِرُ الْمُوسِرَ، وَأَتَجَاوَزُ عَنِ الْمُعْسِرِ ‏”‏‏.‏ وَقَالَ نُعَيْمُ بْنُ أَبِي هِنْدٍ عَنْ رِبْعِيٍّ ‏”‏ فَأَقْبَلُ مِنَ الْمُوسِرِ، وَأَتَجَاوَزُ عَنِ الْمُعْسِرِ ‏”‏‏.‏

হুযাইফাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে এক ব্যক্তির রুহের সাথে ফেরেশতা সাক্ষাৎ করে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি কোন নেক কাজ করেছ? লোকটি উত্তর দিল, আমি আমার কর্মচারীদের আদেশ করতাম যে, তারা যেন সচ্ছল ব্যক্তিকে অবকাশ দেয় এবং তার উপর পীড়াপীড়ি না করে। রাবী বলেন, তিনি বলেছেন, ফেরেশতারাও তাঁকে ক্ষমা করে দেন।

আবূ মালিক (রহঃ) রিব্‌ঈ হিরাশ (রহঃ) সূত্রে বর্ণনা করেন, আমি সচ্ছল ব্যক্তির জন্য সহজ করতাম এবং অভাবগ্রস্তকে অবকাশ দিতাম। শু’বাহ্‌ (রহঃ) আবদুল মালিক (রহঃ) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেন। আবূ আওয়ানাহ (রহঃ) আবদুল মালিক (রহঃ) সূত্রে বর্ণনা করেন, আমি সচ্ছলকে অবকাশ দিতাম এবং অভাবগ্রস্তকে মাফ করে দিতাম এবং নু’আইম ইবনু আবূ হিন্‌দ (রহঃ) রিব্‌ঈ (রহঃ) সূত্রে বলেন, আমি সচ্ছল ব্যক্তি হতে গ্রহণ করতাম এবং অভাবগ্রস্তকে ক্ষমা করে দিতাম।

৩৪/১৮. অধ্যায়ঃ
অসচ্ছল ও অভাবীকে অবকাশ দেয়া।

২০৭৮
حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ، حَدَّثَنَا الزُّبَيْدِيُّ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ كَانَ تَاجِرٌ يُدَايِنُ النَّاسَ، فَإِذَا رَأَى مُعْسِرًا قَالَ لِفِتْيَانِهِ تَجَاوَزُوا عَنْهُ، لَعَلَّ اللَّهَ أَنْ يَتَجَاوَزَ عَنَّا، فَتَجَاوَزَ اللَّهُ عَنْهُ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জনৈক ব্যবসায়ী লোকদের ঋণ দিত। কোন অভাবগ্রস্তকে দেখলে সে তার কর্মচারীদের বলত, তাকে ক্ষমা করে দাও, হয়তো আল্লাহ্‌ তা’আলা আমাদের ক্ষমা করে দিবেন। এর ফলে আল্লাহ্‌ তা’আলা তাকে ক্ষমা করে দেন।

৩৪/১৯. অধ্যায়ঃ
ক্রেতা-বিক্রেতা কর্তৃক বিক্রিত বস্তুর কোন কিছু লুকিয়ে না রেখে পণ্যের পূর্ণ অবস্থা বলে দেয়া এবং একে অন্যের কল্যাণ চাওয়া।

‘আদ্দা ইবনু খালিদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে লিখে দেন যে, এটি মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আদ্দা ইবনু খালিদ (রাঃ) হতে খরিদ করলেন। এ হলো এক মুসলিমের সঙ্গে আর এক মুসলিম এর ক্রয়-বিক্রয়। এতে নেই কোন খুঁৎ, কোন অবৈধতা এবং গায়েলা। কাতাদাহ (রহঃ) বলেন, গায়িলা অর্থ ব্যভিচার, চুরি ও পলায়নের অভ্যাস। ইবরাহীম নাখয়ী (রহঃ)-কে বলা হল, কোন কোন দালাল খুরাসান ও সিজিস্তান এর খাসবারশি নাম উচ্চারন করে এবং বলে, এটি কালকে এসেছে খুরাসান হতে, আর এটি আজ এসেছে সিজিস্তান হতে। তিনি এরূপ বলাকে খুবই গর্হিত মনে করলেন। উকবা ইবনু আমির (রহঃ) বলেন, কোন ব্যক্তির জন্য বৈধ নয় যে, সে কোন পণ্য বিক্রি করছে এবং এর দোষ-ত্রুটি জেনেও তা প্রকাশ করে না।

২০৭৯
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ صَالِحٍ أَبِي الْخَلِيلِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، رَفَعَهُ إِلَى حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ الْبَيِّعَانِ بِالْخِيَارِ مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا ـ أَوْ قَالَ حَتَّى يَتَفَرَّقَا ـ فَإِنْ صَدَقَا وَبَيَّنَا بُورِكَ لَهُمَا فِي بَيْعِهِمَا، وَإِنْ كَتَمَا وَكَذَبَا مُحِقَتْ بَرَكَةُ بَيْعِهِمَا ‏”‏‏.‏

হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ক্রেতা-বিক্রেতা যতক্ষণ পরস্পর বিচ্ছিন্ন না হয়, ততক্ষণ তাদের ইখতিয়ার থাকবে (ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন করা বা বাতিল করা)। যদি তারা সত্য বলে এবং অবস্থা ব্যক্ত করে তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত হবে আর যদি মিথ্যা বলে এবং দোষ গোপন করে তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত মুছে ফেলা হয়।

৩৪/২০. অধ্যায়ঃ
মেশানো (ভালমন্দ) খেজুর বিক্রি করা।

২০৮০
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كُنَّا نُرْزَقُ تَمْرَ الْجَمْعِ، وَهْوَ الْخِلْطُ مِنَ التَّمْرِ، وَكُنَّا نَبِيعُ صَاعَيْنِ بِصَاعٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لاَ صَاعَيْنِ بِصَاعٍ، وَلاَ دِرْهَمَيْنِ بِدِرْهَمٍ ‏”‏‏.‏

আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমাদের মিশ্রিত খেজুর দেয়া হতো, আমরা তা দু’ সা’-এর পরিবর্তে এক সা’ বিক্রি করতাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এক সা’-এর পরিবর্তে দু’সা’ এবং এক দিরহামের পরিবর্তে দু’দিরহাম বিক্রি করবে না।

৩৪/২১. অধ্যায়ঃ
গোশ্‌ত বিক্রেতা ও কসাই সম্পর্কিত বিবরণ।

২০৮১
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، قَالَ حَدَّثَنِي شَقِيقٌ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ يُكْنَى أَبَا شُعَيْبٍ فَقَالَ لِغُلاَمٍ لَهُ قَصَّابٍ اجْعَلْ لِي طَعَامًا يَكْفِي خَمْسَةً، فَإِنِّي أُرِيدُ أَنْ أَدْعُوَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَامِسَ خَمْسَةٍ، فَإِنِّي قَدْ عَرَفْتُ فِي وَجْهِهِ الْجُوعَ‏.‏ فَدَعَاهُمْ، فَجَاءَ مَعَهُمْ رَجُلٌ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِنَّ هَذَا قَدْ تَبِعَنَا، فَإِنْ شِئْتَ أَنْ تَأْذَنَ لَهُ فَأْذَنْ لَهُ، وَإِنْ شِئْتَ أَنْ يَرْجِعَ رَجَعَ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ لاَ، بَلْ قَدْ أَذِنْتُ لَهُ‏.‏

আবূ মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি, আবূ শু’আইব নামক জনৈক আনসারী এসে তার কসাই গোলামকে বললেন, পাঁচ জনের উপযোগী খাবার তৈরি করো। আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- সহ পাঁচজনকে দাওয়াত করতে যাই। তাঁর চেহারায় আমি ক্ষুধার চিহ্ন দেখতে পেয়েছি। তারপর সে লোক এসে দাওয়াত দিলেন। তাদের সঙ্গে আরেকজন অতিরিক্ত এলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এ আমাদের সঙ্গে এসেছে, তুমি ইচ্ছা করলে একে অনুমতি দিতে পার আর তুমি যদি চাও সে ফিরে যাক, তবে সে ফিরে যাবে। সাহাবী বললেন, না, বরং আমি তাকে অনুমতি দিলাম।

৩৪/২২. অধ্যায়ঃ
মিথ্যা বলা ও দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রাখায় ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত মুছে যায়।

২০৮২
حَدَّثَنَا بَدَلُ بْنُ الْمُحَبَّرِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا الْخَلِيلِ، يُحَدِّثُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ الْبَيِّعَانِ بِالْخِيَارِ مَا لَمْ يَتَفَرَّقَا ـ أَوْ قَالَ حَتَّى يَتَفَرَّقَا ـ فَإِنْ صَدَقَا وَبَيَّنَا بُورِكَ لَهُمَا فِي بَيْعِهِمَا، وَإِنْ كَتَمَا وَكَذَبَا مُحِقَتْ بَرَكَةُ بَيْعِهِمَا ‏”‏‏.‏

হাকীম ইব্‌নু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যতক্ষণ বিচ্ছিন্ন না হবে ততক্ষণ ক্রেতা-বিক্রেতার ইখতিয়ার থাকবে। যদি তারা সত্য বলে ও যথাযথ অবস্থা বর্ণনা করে তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত হবে, আর যদি পণ্যের প্রকৃত অবস্থা গোপন করে ও মিথ্যা বলে তবে ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত চলে যাবে।

৩৪/২৩. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ “হে মু’মিনগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধিহারে সুদ গ্রহণ করো না এ ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর তবে সফলতা অর্জন করতে পারবে।“ (আল ইমরানঃ ১৩০)

২০৮৩
حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لَيَأْتِيَنَّ عَلَى النَّاسِ زَمَانٌ لاَ يُبَالِي الْمَرْءُ بِمَا أَخَذَ الْمَالَ، أَمِنْ حَلاَلٍ أَمْ مِنْ حَرَامٍ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মানুষের উপর এমন এক যুগ অবশ্যই আসবে যখন মানুষ পরোয়া করবে না যে কিভাবে সে মাল অর্জন করল হালাল উপায়ে না হারাম উপায়ে।

৩৪/২৪. অধ্যায়ঃ
সুদ গ্রহীতা, তার সাক্ষ্যদাতা ও তার লেখক।

এ সম্পর্কে আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ যারা সুদ খায় তারা সেই ব্যক্তিরই ন্যায় দাঁড়াবে, যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা পাগল করে। এ জন্য যে, তারা বলে, বেচাকেনা তো সুদের মতো … তারা অগ্নির অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। (আল-বাকারাঃ ২৭৫)

২০৮৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ أَبِي الضُّحَى، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ لَمَّا نَزَلَتْ آخِرُ الْبَقَرَةِ قَرَأَهُنَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَيْهِمْ فِي الْمَسْجِدِ، ثُمَّ حَرَّمَ التِّجَارَةَ فِي الْخَمْرِ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন সূরা আল-বাকারার শেষ আয়াতগুলো নাযিল হল, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা মসজিদে পড়ে শোনালেন। তারপর মদের ব্যবসা হারাম বলে ঘোষণা করেন।

২০৮৫
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، حَدَّثَنَا أَبُو رَجَاءٍ، عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ رَأَيْتُ اللَّيْلَةَ رَجُلَيْنِ أَتَيَانِي، فَأَخْرَجَانِي إِلَى أَرْضٍ مُقَدَّسَةٍ، فَانْطَلَقْنَا حَتَّى أَتَيْنَا عَلَى نَهَرٍ مِنْ دَمٍ فِيهِ رَجُلٌ قَائِمٌ، وَعَلَى وَسَطِ النَّهْرِ رَجُلٌ بَيْنَ يَدَيْهِ حِجَارَةٌ، فَأَقْبَلَ الرَّجُلُ الَّذِي فِي النَّهَرِ فَإِذَا أَرَادَ الرَّجُلُ أَنْ يَخْرُجَ رَمَى الرَّجُلُ بِحَجَرٍ فِي فِيهِ فَرَدَّهُ حَيْثُ كَانَ، فَجَعَلَ كُلَّمَا جَاءَ لِيَخْرُجَ رَمَى فِي فِيهِ بِحَجَرٍ، فَيَرْجِعُ كَمَا كَانَ، فَقُلْتُ مَا هَذَا فَقَالَ الَّذِي رَأَيْتَهُ فِي النَّهَرِ آكِلُ الرِّبَا ‏”‏‏.‏

সামুরাহ ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আজ রাত্রে আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, দু’ব্যক্তি আমার নিকট আগমন করে আমাকে এক পবিত্র ভূমিতে নিয়ে গেল। আমরা চলতে চলতে এক রক্তের নদীর কাছে পৌঁছলাম। নদীর মধ্যস্থলে এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছে এবং আরেক ব্যক্তি নদীর তীরে, তার সামনে পাথর পড়ে রয়েছে। নদীর মাঝখানে লোকটি যখন বের হয়ে আসতে চায় তখন তীরের লোকটি তার মুখে পাথর খণ্ড নিক্ষেপ করে তাকে স্বস্থানে ফিরিয়ে দিচ্ছে। এভাবে যতবার সে বেরিয়ে আসতে চায় ততবারই তার মুখে পাথর নিক্ষেপ করছে আর সে স্বস্থানে ফিরে যাচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ কে? সে বলল, যাকে আপনি (রক্তের) নদীতে দেখেছেন, সে হল সুদখোর।

৩৪/২৫. অধ্যায়ঃ
সুদখোরের গুনাহ সম্পর্কে আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ

“হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যা বকেয়া আছে, তা ছেড়ে দাও। অতঃপর যদি তোমরা না কর তবে যুদ্ধের ঘোষণা শুনে নাও আল্লাহ্‌ এবং তাঁর রসূলের পক্ষ থেকে; আর যদি তোমরা তাওবাহ কর, তবে তোমরা প্রাপ্ত হবে তোমাদের মূলধন; আর তোমরা কারো প্রতি যুলুম করতে পারবে না, আর কেউ তোমাদের প্রতি যুলুম করতে পারবে না।“ (আল-বাকারা (২): ২৭৮-২৮১)

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এটিই শেষ আয়াত, যা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উপর নাযিল হয়েছে।

২০৮৬
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَوْنِ بْنِ أَبِي جُحَيْفَةَ، قَالَ رَأَيْتُ أَبِي اشْتَرَى عَبْدًا حَجَّامًا، فَسَأَلْتُهُ فَقَالَ نَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ ثَمَنِ الْكَلْبِ، وَثَمَنِ الدَّمِ، وَنَهَى عَنِ الْوَاشِمَةِ وَالْمَوْشُومَةِ، وَآكِلِ الرِّبَا، وَمُوكِلِهِ، وَلَعَنَ الْمُصَوِّرَ‏.‏

আওন ইব্‌নু আবূ জুহাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার পিতাকে দেখেছি, তিনি এক গোলাম খরিদ করেন যে শিঙ্গা লাগানোর কাজ করত। তিনি তাঁর শিঙ্গার যন্ত্রপাতি সম্পর্কে নির্দেশ দিলেন এবং তা ভেঙ্গে ফেলা হল। আমি এ ব্যাপারে তাঁকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুকুরের মূল্য এবং রক্তের মূল্য গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন [৪], আর দেহে দাগ দেয়া ও নেয়া হতে নিষেধ করেছেন। সুদ খাওয়া ও খাওয়ানো নিষেধ করেছেন আর ছবি অঙ্কনকারীর উপর লা’নত করেছেন।


[৪] রক্ত মোক্ষণ করে পারিশ্রমিক গ্রহণ করার অবৈধতা পরবর্তীতে উল্লেখিত হাদীস দ্বারা বাতিল হয়ে গেছে। চিত্র অঙ্কনকারী বলতে জীবসম্পন্ন প্রাণীর চিত্র অঙ্কনকারী বুঝানো হয়েছে যা অন্য হাদীস দ্বারা আমরা জানতে পারি। কোন প্রাণীর চিত্র অঙ্কন করা হারাম। (হাদীস নং ২১০৫)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩৪/২৬. অধ্যায়ঃ
(আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণী): আল্লাহ্‌ সুদকে ধ্বংস করেন এবং যাকাতে ক্রমবৃদ্ধি প্রদান করেন। আল্লাহ্‌ কোন অকৃতজ্ঞ অপরাধীকে পছন্দ করেন না। (আল-বাকারাঃ ২৭৬)

২০৮৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ ابْنُ الْمُسَيَّبِ إِنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ الْحَلِفُ مُنَفِّقَةٌ لِلسِّلْعَةِ مُمْحِقَةٌ لِلْبَرَكَةِ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, মিথ্যা কসম পণ্য চালু করে দেয় বটে, কিন্তু বরকত নিশ্চিহ্ন করে দেয়।

৩৪/২৭. অধ্যায়ঃ
ক্রয়-বিক্রয়ে শপথ করা অপছন্দনীয়।

২০৮৮
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا الْعَوَّامُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَجُلاً، أَقَامَ سِلْعَةً، وَهُوَ فِي السُّوقِ، فَحَلَفَ بِاللَّهِ لَقَدْ أَعْطَى بِهَا مَا لَمْ يُعْطَ، لِيُوقِعَ فِيهَا رَجُلاً مِنَ الْمُسْلِمِينَ، فَنَزَلَتْ ‏{‏إِنَّ الَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ اللَّهِ وَأَيْمَانِهِمْ ثَمَنًا قَلِيلاً ‏}‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ ‘আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি বাজারে পণ্য আমদানী করে আল্লাহর নামে কসম খেল যে, এর এত দাম বলা হয়েছে; কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা কেউ বলেনি। এতে তার উদ্দেশ্য সে যেন কোন মুসলিমকে পণ্যের ব্যাপারে ধোঁকায় ফেলতে পারে। এ প্রসঙ্গে আয়াত অবতীর্ণ হয়, “যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করে”- (আল-‘ইমরান ৭৭)।

৩৪/২৮. অধ্যায়ঃ
স্বর্ণকারদের ব্যাপারে যা বলা হয়েছে।

তাউস (রহঃ) ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মক্কার কাঁচা ঘাস কাটা যাবে না। ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, কিন্তু ইযখির ঘাস ব্যতিত। কেননা তা মক্কাবাসীদের কর্মকারদের ও তাদের ঘরের কাজে ব্যবহৃত হয়। নবী(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আচ্ছা ইযখির ঘাস ব্যতিত।

২০৮৯
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَلِيُّ بْنُ حُسَيْنٍ، أَنَّ حُسَيْنَ بْنَ عَلِيٍّ ـ رضى الله عنهما ـ أَخْبَرَهُ أَنَّ عَلِيًّا ـ عَلَيْهِ السَّلاَمُ ـ قَالَ كَانَتْ لِي شَارِفٌ مِنْ نَصِيبِي مِنَ الْمَغْنَمِ، وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَعْطَانِي شَارِفًا مِنَ الْخُمْسِ، فَلَمَّا أَرَدْتُ أَنْ أَبْتَنِيَ بِفَاطِمَةَ ـ عَلَيْهَا السَّلاَمُ ـ بِنْتِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَاعَدْتُ رَجُلاً صَوَّاغًا مِنْ بَنِي قَيْنُقَاعَ أَنْ يَرْتَحِلَ مَعِي فَنَأْتِيَ بِإِذْخِرٍ أَرَدْتُ أَنْ أَبِيعَهُ مِنَ الصَّوَّاغِينَ، وَأَسْتَعِينَ بِهِ فِي وَلِيمَةِ عُرُسِي‏.‏

হুসাইন ইবনু ‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বর্ণনা করেন, ‘আলী (রাঃ) বলেছেন, (বদর যুদ্ধের) গনীমতের মাল হতে আমার অংশের একটি উটনী ছিল এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর খুমুস্ হতে একটি উটনী আমাকে দান করলেন। যখন আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কন্যা ফাতিমা (রাঃ) এর সঙ্গে বাসর রাত যাপনের ইচ্ছা করলাম সে সময় আমি কায়নুকা গোত্রের একজন স্বর্ণকারের সাথে এই চুক্তি করেছিলাম যে, সে আমার সঙ্গে (জঙ্গলে) যাবে এবং ইযখির ঘাস বহন করে আনবে এবং তা স্বর্ণকারদের নিকট বিক্রি করে তার মূল্য দ্বারা আমার বিবাহের ওয়ালীমার ব্যবস্থা করব।

২০৯০
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ إِنَّ اللَّهَ حَرَّمَ مَكَّةَ، وَلَمْ تَحِلَّ لأَحَدٍ قَبْلِي، وَلاَ لأَحَدٍ بَعْدِي، وَإِنَّمَا حَلَّتْ لِي سَاعَةً مِنْ نَهَارٍ، وَلاَ يُخْتَلَى خَلاَهَا، وَلاَ يُعْضَدُ شَجَرُهَا، وَلاَ يُنَفَّرُ صَيْدُهَا وَلاَ يُلْتَقَطُ لُقَطَتُهَا إِلاَّ لِمُعَرِّفٍ ‏”‏‏.‏ وَقَالَ عَبَّاسُ بْنُ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ إِلاَّ الإِذْخِرَ لِصَاغَتِنَا وَلِسُقُفِ بُيُوتِنَا‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ إِلاَّ الإِذْخِرَ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ عِكْرِمَةُ هَلْ تَدْرِي مَا يُنَفَّرُ صَيْدُهَا هُوَ أَنْ تُنَحِّيَهُ مِنَ الظِّلِّ، وَتَنْزِلَ مَكَانَهُ‏.‏ قَالَ عَبْدُ الْوَهَّابِ عَنْ خَالِدٍ لِصَاغَتِنَا وَقُبُورِنَا‏.‏

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (মক্কা বিজয়ের দিন) বলেন, আল্লাহ্‌ তা’আলা মক্কায় (রক্তপাত) হারাম করে দিয়েছেন। আমার আগেও কারো জন্য মক্কা হালাল করা হয়নি এবং আমার পরেও কারো জন্য হালাল করা হবে না। আমার জন্য শুধুমাত্র দিনের কিছু অংশে মক্কায় (রক্তপাত) হালাল হয়েছিল [৫]। মক্কার কোন ঘাস কাটা যাবে না, কোন গাছ কাটা যাবে না। কোন শিকারকে তাড়ানো যাবে না। ঘোষণাকারী ব্যতিত কেউ মক্কার জমিনে পড়ে থাকা মাল উঠাতে পারবে না। ‘আব্বাস ইবনু ‘আবদুল মুত্তালিব (রাঃ) বললেন, কিন্তু ইযখির ঘাস, যা আমাদের স্বর্ণকারদের ও আমাদের ঘরের ছাদের জন্য ব্যবহৃত তা ব্যতীত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ইযখির ঘাস ব্যতিত। রাবী ইকরাম (রহঃ) বলেন, তুমি জানো শিকার তাড়ানোর অর্থ কী? তা হল, ছায়ায় অবস্থিত শিকারকে তাড়িয়ে তার স্থানে নিজে বসা। ‘আবদুল ওয়াহহাব (রহঃ) সূত্রে বলেছেন, আমাদের স্বর্ণকারদের জন্য ও আমাদের কবরের জন্য।


[৫] নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য মক্কাকে একদিনের কিছু সময়ের জন্য হালাল করা হয়েছিল- মক্কা বিজয়ের দিন।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩৪/২৯. অধ্যায়ঃ
তীরের ফলক নির্মাতা ও কর্মকারের সম্পর্কে বর্ণনা।

২০৯১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِي الضُّحَى، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ خَبَّابٍ، قَالَ كُنْتُ قَيْنًا فِي الْجَاهِلِيَّةِ، وَكَانَ لِي عَلَى الْعَاصِ بْنِ وَائِلٍ دَيْنٌ، فَأَتَيْتُهُ أَتَقَاضَاهُ قَالَ لاَ أُعْطِيكَ حَتَّى تَكْفُرَ بِمُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم‏.‏ فَقُلْتُ لاَ أَكْفُرُ حَتَّى يُمِيتَكَ اللَّهُ، ثُمَّ تُبْعَثَ‏.‏ قَالَ دَعْنِي حَتَّى أَمُوتَ وَأُبْعَثَ، فَسَأُوتَى مَالاً وَوَلَدًا فَأَقْضِيَكَ فَنَزَلَتْ ‏{‏أَفَرَأَيْتَ الَّذِي كَفَرَ بِآيَاتِنَا وَقَالَ لأُوتَيَنَّ مَالاً وَوَلَدًا * أَطَّلَعَ الْغَيْبَ أَمِ اتَّخَذَ عِنْدَ الرَّحْمَنِ عَهْدًا ‏}‏

খাব্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জাহিলীয়্যাতের যুগে আমি কর্মকারের পেশায় ছিলাম। ‘আস ইবনু ওয়াইলের কাছে কিছু পাওনা ছিল আমি তার কাছে তাগাদা করতে গেলে সে বলল, যতক্ষণ তুমি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে অস্বীকার না করবে ততক্ষণ আমি তোমাকে তোমার পাওনা দিব না। আমি বললাম, আল্লাহ্‌ তোমাকে মৃত্যু দিয়ে তারপর তোমাকে পুনরুত্থিত করা পর্যন্ত আমি তাঁকে অস্বীকার করব না। সে বলল, আমি মরে পুনরুত্থিত হওয়া পর্যন্ত আমাকে অব্যাহতি দাও। শীগ্‌গীরই আমাকে সম্পদ ও সন্তান দেয়া হবে, তখন আমি তোমার পাওনা পরিশোধ করব। এ প্রসঙ্গে এ আয়াত নাযিল হলঃ “তুমি কি লক্ষ্য করেছ তাকে, যে আমার আয়াতসমূহ প্রত্যাখ্যান করে এবং বলে আমাকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দেয়া হবেই”- (মারইয়াম ৭৭-৭৮)।

৩৪/৩০. অধ্যায়ঃ
দরজীদের সম্পর্কে বর্ণনা

২০৯২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ إِنَّ خَيَّاطًا دَعَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِطَعَامٍ صَنَعَهُ، قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ فَذَهَبْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى ذَلِكَ الطَّعَامِ، فَقَرَّبَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم خُبْزًا وَمَرَقًا فِيهِ دُبَّاءٌ وَقَدِيدٌ، فَرَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَتَتَبَّعُ الدُّبَّاءَ مِنْ حَوَالَىِ الْقَصْعَةِ ـ قَالَ ـ فَلَمْ أَزَلْ أُحِبُّ الدُّبَّاءَ مِنْ يَوْمِئِذٍ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক দরজী খাবার তৈরী করে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দাওয়াত করলেন। আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে রুটি এবং ঝোল যাতে লাউ ও গোশতের টুকরা ছিল, পেশ করলেন। আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে দেখতে পেলাম যে, পেয়ালার কিনারা হতে তিনি লাউয়ের টুকরা খোঁজ করে নিচ্ছেন। সেদিন হতে আমি সব সময় লাউ ভালবাসতে থাকি।

৩৪/৩১. অধ্যায়ঃ
তাঁতী সম্পর্কে বর্ণনা

২০৯৩
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، قَالَ سَمِعْتُ سَهْلَ بْنَ سَعْدٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ جَاءَتِ امْرَأَةٌ بِبُرْدَةٍ ـ قَالَ أَتَدْرُونَ مَا الْبُرْدَةُ فَقِيلَ لَهُ نَعَمْ، هِيَ الشَّمْلَةُ، مَنْسُوجٌ فِي حَاشِيَتِهَا ـ قَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنِّي نَسَجْتُ هَذِهِ بِيَدِي أَكْسُوكَهَا‏.‏ فَأَخَذَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مُحْتَاجًا إِلَيْهَا‏.‏ فَخَرَجَ إِلَيْنَا وَإِنَّهَا إِزَارُهُ‏.‏ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ يَا رَسُولَ اللَّهِ، اكْسُنِيهَا، فَقَالَ ‏ “‏ نَعَمْ ‏”‏‏.‏ فَجَلَسَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي الْمَجْلِسِ، ثُمَّ رَجَعَ فَطَوَاهَا، ثُمَّ أَرْسَلَ بِهَا إِلَيْهِ‏.‏ فَقَالَ لَهُ الْقَوْمُ مَا أَحْسَنْتَ، سَأَلْتَهَا إِيَّاهُ، لَقَدْ عَلِمْتَ أَنَّهُ لاَ يَرُدُّ سَائِلاً‏.‏ فَقَالَ الرَّجُلُ وَاللَّهِ مَا سَأَلْتُهُ إِلاَّ لِتَكُونَ كَفَنِي يَوْمَ أَمُوتُ‏.‏ قَالَ سَهْلٌ فَكَانَتْ كَفَنَهُ‏.‏

সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক মহিলা একটি বুরদা আনলেন। [সাহল (রাঃ)] বললেন, তোমরা জান বুরদা কী? তাকে বলা হয়, হ্যাঁ, তা হল এমন চাদর, যার পাড় বুনানো। মহিলা বললেন, হ্যাঁ আল্লাহর রসূল! আপনাকে পরিধান করানোর জন্য আমি এটি নিজ হাতে বুনে নিয়ে এসেছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা গ্রহণ করলেন এবং তাঁর এটির প্রয়োজন ছিল। তারপর তিনি তা তহবন্দরূপে পরিধান করে আমাদের সামনে এলেন। উপস্থিত লোকজনের মধ্যে একজন বলে উঠলেন, হে আল্লাহর রসূল! তা আমাকে পরিধান করতে দিন। তিনি বললেন, আচ্ছা। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছুক্ষণ মজলিসে বসে পরে ফিরে গেলেন। তারপর চাদরটি ভাঁজ করে সে লোকটির কাছে পাঠিয়ে দিলেন। লোকজন সে ব্যক্তিকে বললেন, তুমি ভাল করো নি, তুমি তাঁর কাছে চাদরটি চেয়ে ফেললে, অথচ তুমি জান যে, তিনি কোন যাঞ্চনাকারীকে ফিরিয়ে দেন না। সে লোকটি বললেন, আল্লাহর কসম, আমি চাদরটি এ জন্যই চেয়েছি যে, তা যাতে আমার মৃত্যুর পর আমার কাফন হয়। রাবী সাহল (রাঃ) বলেন, সেটি তার কাফন হয়েছিল।

৩৪/৩২. অধ্যায়ঃ
কাঠমিস্ত্রিদের সম্পর্কে

২০৯৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، قَالَ أَتَى رِجَالٌ إِلَى سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ يَسْأَلُونَهُ عَنِ الْمِنْبَرِ، فَقَالَ بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى فُلاَنَةَ ـ امْرَأَةٍ قَدْ سَمَّاهَا سَهْلٌ ـ ‏ “‏ أَنْ مُرِي غُلاَمَكِ النَّجَّارَ، يَعْمَلُ لِي أَعْوَادًا أَجْلِسُ عَلَيْهِنَّ إِذَا كَلَّمْتُ النَّاسَ ‏”‏‏.‏ فَأَمَرَتْهُ يَعْمَلُهَا مِنْ طَرْفَاءِ الْغَابَةِ ثُمَّ جَاءَ بِهَا، فَأَرْسَلَتْ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِهَا، فَأَمَرَ بِهَا فَوُضِعَتْ، فَجَلَسَ عَلَيْهِ‏.‏

আবূ হাযিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কিছু লোক সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ)-এর কাছে এসে মিম্বরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একজন (আনসারী) মহিলা- সাহল (রাঃ) যার নাম উল্লেখ করেছিলেন- তার কাছে তিনি সংবাদ পাঠালেন যে, তোমার সূত্রধর গোলামকে বল, সে যেন আমার জন্য কাঠ দিয়ে একটি (মিম্বর) তৈরি করে দেয়। লোকদের সাথে কথা বলার সময় যার উপর আমি বসতে পারি। সে মহিলা তাকে গাবা নামক স্থানের কাঠ দিয়ে মিম্বর বানানোর নির্দেশ দিলেন। তারপর গোলামটি তা নিয়ে এল এবং সে মহিলা এটি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে পাঠিয়ে দিলেন। তাঁর নির্দেশক্রমে তা স্থাপন করা হল, পরে তার উপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপবেশন করলেন।

২০৯৫
حَدَّثَنَا خَلاَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ أَيْمَنَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ امْرَأَةً مِنَ الأَنْصَارِ قَالَتْ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَلاَ أَجْعَلُ لَكَ شَيْئًا تَقْعُدُ عَلَيْهِ فَإِنَّ لِي غُلاَمًا نَجَّارًا‏.‏ قَالَ ‏”‏ إِنْ شِئْتِ ‏”‏‏.‏ قَالَ فَعَمِلَتْ لَهُ الْمِنْبَرَ، فَلَمَّا كَانَ يَوْمُ الْجُمُعَةِ قَعَدَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى الْمِنْبَرِ الَّذِي صُنِعَ، فَصَاحَتِ النَّخْلَةُ الَّتِي كَانَ يَخْطُبُ عِنْدَهَا حَتَّى كَادَتْ أَنْ تَنْشَقَّ، فَنَزَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى أَخَذَهَا فَضَمَّهَا إِلَيْهِ، فَجَعَلَتْ تَئِنُّ أَنِينَ الصَّبِيِّ الَّذِي يُسَكَّتُ حَتَّى اسْتَقَرَّتْ‏.‏ قَالَ ‏”‏ بَكَتْ عَلَى مَا كَانَتْ تَسْمَعُ مِنَ الذِّكْرِ ‏”‏‏.‏

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একজন আনসারী মহিলা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি কি আপনার জন্য এমন একটি জিনিস বানিয়ে দিব না, যার উপর আপনি বসবেন? কেননা, আমার একজন কাঠমিস্ত্রি গোলাম আছে। তিনি বললেন, যদি তুমি তা চাও। বর্ণনাকারী বললেন, তারপর সে মহিলা তাঁর জন্য মিম্বর তৈরি করলেন। যখন জুমু’আর দিন হলো, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেই তৈরি মিম্বারের উপরে বসলেন। সে সময় যে খেজুর গাছের কান্ডের উপর ভর দিয়ে তিনি খুতবা দিতেন, সেটি এমন ভাবে চীৎকার করে উঠল, যেন তা ফেটে পড়বে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নেমে এসে তা নিজের সঙ্গে জড়িয়ে ধরলেন। তখন সেটি ফোঁপাতে লাগল, যেমন ছোট শিশুকে চুপ করানোর সময় ফোঁপায় [৬]। অবশেষে তা স্থির হয়ে গেল। (রাবী বলেন) খেজুর কাণ্ডটি যে যিক্‌র-নসীহত শুনত, তা হারানোর কারণে কেঁদেছিল।


[৬] আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “পৃথিবীতে আর আকাশসমূহে যা কিছু আছে সবকিছুই আল্লাহর প্রশংসা কীর্তন করে”। সকল জড় পদার্থের মধ্যে চেতনা বিদ্যমান। আল্লাহ্‌ যখন ইচ্ছে করেন কেবল তখনই আমরা এসব জড় পদার্থের চেতনা সম্পর্কে জানতে পারি। খেজুর গাছের কান্ডের কান্ড এরই একটা উদাহরণ।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩৪/৩৩. অধ্যায়ঃ
ইমাম বা রাষ্ট্রের প্রধান কর্তৃক প্রয়োজনীয় বস্তু নিজেই ক্রয় করা।

ইবনু ‘উমর (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘উমর (রাঃ)-এর নিকট হতে একটি উট খরিদ করেছিলেন। ‘আবদুর রহমান ইবনু আবূ বকর (রাঃ) বলেন, জনৈক মুশরিক তার ছাগলের পাল নিয়ে আসলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার হতে একটি বকরী খরিদ করেন। আর তিনি জারির (রাঃ) হতে একটি উট খরিদ করেছিলেন।

২০৯৬
حَدَّثَنَا يُوسُفُ بْنُ عِيسَى، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتِ اشْتَرَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ يَهُودِيٍّ طَعَامًا بِنَسِيئَةٍ، وَرَهَنَهُ دِرْعَهُ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (রাঃ) জনৈক ইয়াহূদী হতে বাকীতে খাদ্য ক্রয় করেন এবং নিজের লৌহ বর্ম তার কাছে বন্ধক রাখেন।

৩৪/৩৪. অধ্যায়ঃ
চতুষ্পদ জন্তু ও গর্দভ ক্রয় করা।

জন্তু বা উট খরিদ কালে বিক্রেতা যদি তার পিঠে আরোহী অবস্থায় থাকে তবে তার অবতরণের পূর্বেই কি ক্রেতার হস্তগত হয়েছে বলে গণ্য হতে পারে?

ইবনু ‘উমর (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘উমর (রাঃ)– কে বললেন, আমার কাছে তা অর্থাৎ অবাধ্য উট বিক্রয় করে দাও।

২০৯৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ وَهْبِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ كُنْتُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي غَزَاةٍ، فَأَبْطَأَ بِي جَمَلِي وَأَعْيَا، فَأَتَى عَلَىَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏”‏ جَابِرٌ ‏”‏‏.‏ فَقُلْتُ نَعَمْ‏.‏ قَالَ ‏”‏ مَا شَأْنُكَ ‏”‏‏.‏ قُلْتُ أَبْطَأَ عَلَىَّ جَمَلِي وَأَعْيَا، فَتَخَلَّفْتُ‏.‏ فَنَزَلَ يَحْجُنُهُ بِمِحْجَنِهِ، ثُمَّ قَالَ ‏”‏ ارْكَبْ ‏”‏‏.‏ فَرَكِبْتُ، فَلَقَدْ رَأَيْتُهُ أَكُفُّهُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ تَزَوَّجْتَ ‏”‏‏.‏ قُلْتُ نَعَمْ‏.‏ قَالَ ‏”‏ بِكْرًا أَمْ ثَيِّبًا ‏”‏‏.‏ قُلْتُ بَلْ ثَيِّبًا‏.‏ قَالَ ‏”‏ أَفَلاَ جَارِيَةً تُلاَعِبُهَا وَتُلاَعِبُكَ ‏”‏‏.‏ قُلْتُ إِنَّ لِي أَخَوَاتٍ، فَأَحْبَبْتُ أَنْ أَتَزَوَّجَ امْرَأَةً تَجْمَعُهُنَّ، وَتَمْشُطُهُنَّ، وَتَقُومُ عَلَيْهِنَّ‏.‏ قَالَ ‏”‏ أَمَّا إِنَّكَ قَادِمٌ، فَإِذَا قَدِمْتَ فَالْكَيْسَ الْكَيْسَ ‏”‏‏.‏ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ أَتَبِيعُ جَمَلَكَ ‏”‏‏.‏ قُلْتُ نَعَمْ‏.‏ فَاشْتَرَاهُ مِنِّي بِأُوقِيَّةٍ، ثُمَّ قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَبْلِي، وَقَدِمْتُ بِالْغَدَاةِ، فَجِئْنَا إِلَى الْمَسْجِدِ، فَوَجَدْتُهُ عَلَى باب الْمَسْجِدِ، قَالَ ‏”‏ الآنَ قَدِمْتَ ‏”‏‏.‏ قُلْتُ نَعَمْ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَدَعْ جَمَلَكَ، فَادْخُلْ فَصَلِّ رَكْعَتَيْنِ ‏”‏‏.‏ فَدَخَلْتُ فَصَلَّيْتُ، فَأَمَرَ بِلاَلاً أَنْ يَزِنَ لَهُ أُوقِيَّةً‏.‏ فَوَزَنَ لِي بِلاَلٌ، فَأَرْجَحَ فِي الْمِيزَانِ، فَانْطَلَقْتُ حَتَّى وَلَّيْتُ فَقَالَ ‏”‏ ادْعُ لِي جَابِرًا ‏”‏‏.‏ قُلْتُ الآنَ يَرُدُّ عَلَىَّ الْجَمَلَ، وَلَمْ يَكُنْ شَىْءٌ أَبْغَضَ إِلَىَّ مِنْهُ‏.‏ قَالَ ‏”‏ خُذْ جَمَلَكَ وَلَكَ ثَمَنُهُ ‏”‏‏.‏

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক যুদ্ধে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর সঙ্গে ছিলাম। আমার উটটি অত্যন্ত ধীরে চলছিল বরং চলতে অক্ষম হয়ে পড়েছিল। এমতাবস্থায় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার কাছে এলেন এবং বললেন, জাবির? আমি বললাম, জী। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার অবস্থা কী? আমি বললাম, আমার উট আমাকে নিয়ে অত্যন্ত ধীরে চলছে এবং অক্ষম হয়ে পড়ছে। ফলে আমি পিছনে পড়ে গেছি। তখন তিনি নেমে চাবুক দিয়ে উটটিকে আঘাত করতে লাগলেন। তারপর বললেন, এবার আরোহণ কর। আমি আরোহণ করলাম। এরপর অবশ্য আমি উটটিকে এমন পেলাম যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অগ্রসর হওয়ায় বাধা দিতে হয়েছিল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি বিবাহ করেছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, কুমারী না বিবাহিতা? আমি বললাম, বিবাহিতা। তিনি বললেন, তরুণী বিবাহ করলে না কেন? তুমি তার সাথে হাসি-তামাসা এবং সে তোমার সাথে পূর্ণভাবে হাসি-তামাসা করত। আমি বললাম, আমার কয়েকটি বোন রয়েছে, ফলে আমি এমন এক মহিলাকে বিবাহ করতে পছন্দ করলাম, যে তাদেরকে মিল-মহব্বতে রাখতে, তাদের পরিচর্যা করতে এবং তাদের উত্তমরূপে কর্তৃত্ব করতে সক্ষম হয়। তিনি বললেন, শোন! তুমি তো বাড়ীতে পৌছবে? যখন তুমি পৌছবে তখন তুমি বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেবে। তিনি বললেন, তোমার উটটি বিক্রি করবে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি তা এক উকীয়ার বিনিময়ে আমার নিকট হতে কিনে নিলেন। তারপর আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার আগে (মদীনায়) পৌঁছলেন এবং আমি (পরের দিন) ভোরে পৌঁছলাম। আমি মাসজিদে নাববীতে গিয়ে তাঁকে দরজার সামনে পেলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, এখন এলে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তোমার উটটি রাখ এবং মসজিদে প্রবেশ করে দু’রাক’আত সালাত আদায় কর। আমি মসজিদে প্রবেশ করে সালাত আদায় করলাম। তারপর তিনি বিলাল (রাঃ)-কে উকীয়া ওজন করে আমাকে দিতে বললেন। বিলাল (রাঃ) ওজন করে দিলেন এবং আমার পক্ষে ঝুঁকিয়ে দিলেন। আমি রওয়ানা হলাম। যখন আমি পিছনে ফিরেছি তখন তিনি বললেন, জাবিরকে আমার কাছে ডাক। আমি ভাবলাম, এখন হয়তো উটটি আমাকে ফিরিয়ে দেবেন। আর আমার নিকট এর চেয়ে অপছন্দনীয় আর কিছুই ছিল না। তিনি বললেন, তোমার উটটি নিয়ে যাও এবং তার দামও তোমার।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]