সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস ক্রয় বিক্রয় অধ্যায় ৩য় ভাগ হাদিস নং ২১৪১ – ২২০৬

৩৪/৫৯. অধ্যায়ঃ
নিলাম ডাকে কেনা-বেচা

আতা (রহঃ) বলেন, আমি লোকেদের (সাহাবায়ে কিরামকে) দেখেছি যে, তারা গণীমতের মাল অধিক মূল্য দানকারীর কাছে বিক্রি করাতে দোষ মনে করতেন না।

২১৪১
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا الْحُسَيْنُ الْمُكْتِبُ عَنْ عَطَاءِ بْنِ أَبِي رَبَاحٍ عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ أَنَّ رَجُلاً أَعْتَقَ غُلاَمًا لَهُ عَنْ دُبُرٍ فَاحْتَاجَ فَأَخَذَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ مَنْ يَشْتَرِيهِ مِنِّي فَاشْتَرَاهُ نُعَيْمُ بْنُ عَبْدِ اللهِ بِكَذَا وَكَذَا فَدَفَعَهُ إِلَيْهِ

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি তার মৃত্যুর পরে তার গোলাম আযাদ হবে বলে ঘোষণা দিল। তারপর সে অভাবগ্রস্ত হয়ে পড়ল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গোলামটিকে নিয়ে নিলেন এবং বললেন, কে একে আমার নিকট হতে ক্রয় করবে? নু’আঈম ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) (তাঁর কাছ হতে) সেটি এত এত মূল্যে ক্রয় করলেন। তিনি গোলামটি তার হাওয়ালা করে দিলেন।



(২২৩০, ২২৩১, ২৪০৩, ২৫১৫, ২৫৩৪, ২৭১৬, ২৯৪৭, ৭১৮৬, মুসলিম ১২/১৩, হাঃ ৯৯৭, আহমাদ ১৪২৭৭) (আ.প্র. ১৯৯৩, ই.ফা. ২০০৮)

৩৪/৬০. অধ্যায়ঃ
ধোঁকাপূর্ণ দালালী এবং এরূপ ক্রয়-বিক্রয় অবৈধ হওয়ার মতামত

ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) বলেন, দালাল হলো সুদখোর, খিয়ানতকারী। আর দালালী হল প্রতারণা, যা বাতিল ও অবৈধ। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, প্রতারণার ঠিকানা জাহান্নাম। যে এরূপ ‘আমল করে যা আমাদের শরী’আতের পরিপন্থী; তা পরিত্যাজ্য।

২১৪২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ قَالَ نَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ النَّجْشِ

ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতারণামূলক দালালী হতে নিষেধ করেছেন।



(৬৯৬৩, মুসলিম ২১/৪, হাঃ ১৫১৬) (আ.প্র. ১৯৯৪, ই.ফা. ২০০৯)

৩৪/৬১. অধ্যায়ঃ
ধোঁকাপূর্ণ ক্রয়-বিক্রয় এবং গর্ভস্থিত বাচ্চা গর্ভ হতে বের হওয়ার পর তা গর্ভবতী হয়ে বাচ্চা প্রসব করা পর্যন্ত মেয়াদে বিক্রয় করা।

২১৪৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ بَيْعِ حَبَلِ الْحَبَلَةِ، وَكَانَ بَيْعًا يَتَبَايَعُهُ أَهْلُ الْجَاهِلِيَّةِ، كَانَ الرَّجُلُ يَبْتَاعُ الْجَزُورَ إِلَى أَنْ تُنْتَجَ النَّاقَةُ، ثُمَّ تُنْتَجُ الَّتِي فِي بَطْنِهَا‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গর্ভস্থিত বাচ্চার গর্ভের প্রসবের মেয়াদের উপর বিক্রি নিষেধ করেছেন। এ এক ধরনের বিক্রয়, যা জাহিলিয়াতের যুগে প্রচলিত ছিল। কেউ এ শর্তে উটনী ক্রয় করত যে, এই উটনীটি প্রসব করবে পরে ঐ শাবক তার গর্ভ প্রসব করার পর তার মূল্য দেয়া হবে।

৩৪/৬২. অধ্যায়ঃ
ছোঁয়ার মাধ্যমে কেনা-বেচা করা

আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ বেচা-কেনা হতে নিষেধ করেছেন।

২১৪৪
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ، قَالَ حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَامِرُ بْنُ سَعْدٍ، أَنَّ أَبَا سَعِيدٍ ـ رضى الله عنه ـ أَخْبَرَهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنِ الْمُنَابَذَةِ، وَهْىَ طَرْحُ الرَّجُلِ ثَوْبَهُ بِالْبَيْعِ إِلَى الرَّجُلِ، قَبْلَ أَنْ يُقَلِّبَهُ، أَوْ يَنْظُرَ إِلَيْهِ، وَنَهَى عَنِ الْمُلاَمَسَةِ، وَالْمُلاَمَسَةُ لَمْسُ الثَّوْبِ لاَ يَنْظُرُ إِلَيْهِ‏.‏

আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুনাবাযা পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করেছেন। তা হল, বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে ক্রেতা কাপড়টি উল্টানো পাল্টানো অথবা দেখে নেয়ার আগেই বিক্রেতা কর্তৃক তা ক্রেতার দিকে নিক্ষেপ করা। আর তিনি মুলামাসা পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয় করতেও নিষেধ করেছেন। মুলামাসা হল কাপড়টি না দেখে স্পর্শ করা (এতেই বেচা-কেনা সম্পন্ন হয়েছে বলে গণ্য হতো)।

২১৪৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ نُهِيَ عَنْ لِبْسَتَيْنِ، أَنْ يَحْتَبِيَ الرَّجُلُ، فِي الثَّوْبِ الْوَاحِدِ، ثُمَّ يَرْفَعَهُ عَلَى مَنْكِبِهِ، وَعَنْ بَيْعَتَيْنِ اللِّمَاسِ وَالنِّبَاذِ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, দুই ধরনের পোশাক পরিধান করা হতে নিষেধ করা হয়েছে। তা হলো একটি কাপড় শরীরে জড়িয়ে তার এক পার্শ্ব কাঁধের উপর তুলে দেয়া এবং দুই ধরনের বেচা-কেনা হতে নিষেধ করা হয়েছে; স্পর্শের এবং নিক্ষেপের বেচা-কেনা।

৩৪/৬৩. অধ্যায়ঃ
মুনাবাজার (পরস্পর নিক্ষেপের) দ্বারা ক্রয়-বিক্রয় করা।

আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এরূপ ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করেছেন।

২১৪৬
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ، وَعَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنِ الْمُلاَمَسَةِ وَالْمُنَابَذَةِ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্পর্শ ও নিক্ষেপের পদ্ধতিতে ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ করেছেন।

২১৪৭
حَدَّثَنَا عَيَّاشُ بْنُ الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ نَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ لِبْسَتَيْنِ وَعَنْ بَيْعَتَيْنِ الْمُلاَمَسَةِ وَالْمُنَابَذَةِ‏.‏

আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’ধরনের পোশাক পরিধান এবং স্পর্শ ও নিক্ষেপ এরূপ দু’ধরনের (পদ্ধতিতে) বেচা-কেনা নিষেধ করেছেন।

৩৪/৬৪. অধ্যায়ঃ
উষ্ট্রী, গাভী ও বকরীর দুধ বেশী দেখানোর জন্য পালানে দুধ জমা করা বিক্রেতার জন্য নিষেধ।

মুসাররাত সে জন্তুকে বলা হয়, যার দুধ কয়েক দিন দোহন না করে আটকিয়ে এবং জমা করে রাখা হয়। তাসরিয়ার মূল অর্থঃ পানি আটকিয়ে রাখা। এ হতে বলা হয় ………………….. আমি পানি আটকিয়ে রেখেছি বলবে, যখন তুমি পানিকে আটকিয়ে রাখবে।

২১৪৮
حَدَّثَنَا ابْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنِ الأَعْرَجِ، قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ لاَ تُصَرُّوا الإِبِلَ وَالْغَنَمَ، فَمَنِ ابْتَاعَهَا بَعْدُ فَإِنَّهُ بِخَيْرِ النَّظَرَيْنِ بَعْدَ أَنْ يَحْتَلِبَهَا إِنْ شَاءَ أَمْسَكَ، وَإِنْ شَاءَ رَدَّهَا وَصَاعَ تَمْرٍ ‏”‏‏.‏ وَيُذْكَرُ عَنْ أَبِي صَالِحٍ وَمُجَاهِدٍ وَالْوَلِيدِ بْنِ رَبَاحٍ وَمُوسَى بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ صَاعَ تَمْرٍ ‏”‏‏.‏ وَقَالَ بَعْضُهُمْ عَنِ ابْنِ سِيرِينَ صَاعًا مِنْ طَعَامٍ وَهْوَ بِالْخِيَارِ ثَلاَثًا‏.‏ وَقَالَ بَعْضُهُمْ عَنِ ابْنِ سِيرِينَ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ‏.‏ وَلَمْ يَذْكُرْ ثَلاَثًا، وَالتَّمْرُ أَكْثَرُ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তোমরা উটনী ও বকরীর দুধ (স্তন্যে) আটকিয়ে রেখ না। যে ব্যক্তি এরূপ পশু ক্রয় করে, সে দুধ দোহনের পরে দু’টি অধিকারের যেটি তার পক্ষে ভাল মনে করবে তাই করতে পারবে। যদি সে ইচ্ছা করে তবে ক্রীত পশুটি রেখে দিবে আর যদি ইচ্ছা করে তবে তা ফেরত দিবে এবং এর সাথে এক সা‘ পরিমাণ খেজুর দিবে। আবূ সালিহ্‌ মুজাহিদ, ওয়ালীদ ইবনু রাবাহ ও মূসা ইবনু ইয়াসার (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে এক সা‘ খেজুরের কথা উল্লেখ রয়েছে। কেউ কেউ ইবনু সীরীন (রহঃ) সূত্রে এক সা‘ খাদ্যের কথা বলেছেন এবং ক্রেতার জন্য তিন দিনের ইখতিয়ার থাকবে। আর কেউ কেউ ইবনু সীরীন (রহঃ) সূত্রে এক সা‘ খেজুরের কথা বলেছেন, তবে তিন দিনের কথা উল্লেখ করেননি। [ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, অধিকাংশের বর্ণনায় খেজুরের উল্লেখ রয়েছে]।

২১৪৯
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، قَالَ سَمِعْتُ أَبِي يَقُولُ، حَدَّثَنَا أَبُو عُثْمَانَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ مَنِ اشْتَرَى شَاةً مُحَفَّلَةً، فَرَدَّهَا فَلْيَرُدَّ مَعَهَا صَاعًا‏.‏ وَنَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ تُلَقَّى الْبُيُوعُ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে ব্যক্তি (স্তন্যে) দুধ আটকিয়ে রাখা বকরী ক্রয় করে তা ফেরত দিতে চায়, সে যেন এর সঙ্গে এক সা‘ পরিমাণ খেজুরও দেয়। আর নবী (পণ্য ক্রয় করার জন্য) বণিক দলের সাথে (শহরে প্রবেশের পূর্বে পথিমধ্যে) সাক্ষাৎ করতে নিষেধ করেছেন।

২১৫০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لاَ تَلَقَّوُا الرُّكْبَانَ، وَلاَ يَبِيعُ بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْعِ بَعْضٍ وَلاَ تَنَاجَشُوا وَلاَ يَبِيعُ حَاضِرٌ لِبَادٍ، وَلاَ تُصَرُّوا الْغَنَمَ، وَمَنِ ابْتَاعَهَا فَهْوَ بِخَيْرِ النَّظَرَيْنِ بَعْدَ أَنْ يَحْتَلِبَهَا إِنْ رَضِيَهَا أَمْسَكَهَا، وَإِنْ سَخِطَهَا رَدَّهَا وَصَاعًا مِنْ تَمْرٍ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা (পণ্যবাহী) কাফেলার সাথে (শহরে প্রবেশের পূর্বে) সাক্ষাৎ করবে না তোমাদের কেউ যেন কারো ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় না করে। তোমরা প্রতারণামূলক দালালী করবে না। শহরবাসী তোমাদের কেউ যেন গ্রামবাসীর পক্ষে বিক্রয় না করে। তোমরা বকরীর দুধ আটকিয়ে রাখবে না। যে এরূপ বকরী ক্রয় করবে, সে দুধ দোহনের পরে এ দু’টির মধ্যে যেটি ভাল মনে করবে, তা করতে পারে। সে যদি এতে সন্তুষ্ট হয় তবে বকরী রেখে দিবে, আর যদি সে তা অপছন্দ করে তবে ফেরত দিবে এবং এক সা‘ পরিমাণ খেজুর দিবে।

৩৪/৬৫. অধ্যায়ঃ
কেউ পালানে দুধ জমা করা পশু খরিদ করার পর চাইলে ফিরিয়ে দিতে পারে। কিন্তু তা দোহন করার বিনিময়ে এক সা‘ খেজুর প্রদান করতে হবে।

২১৫১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا الْمَكِّيُّ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي زِيَادٌ، أَنَّ ثَابِتًا، مَوْلَى عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ زَيْدٍ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَنِ اشْتَرَى غَنَمًا مُصَرَّاةً فَاحْتَلَبَهَا، فَإِنْ رَضِيَهَا أَمْسَكَهَا، وَإِنْ سَخِطَهَا فَفِي حَلْبَتِهَا صَاعٌ مِنْ تَمْرٍ ‏”‏‏.‏

মুহাম্মাদ ইবনু ‘আমর (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি (স্তনে) দুধ আটকিয়ে রাখা বকরী ক্রয় করে, তবে দোহনের পরে যদি ইচ্ছা করে তবে সেটি রেখে দেবে আর যদি অপছন্দ করে তবে দুহিত দুধের বিনিময়ে এক সা‘ খেজুর দিবে।

৩৪/৬৬. অধ্যায়ঃ
যিনাকার গোলামের বিক্রয়ের বর্ণনা।

(কাযী) শুরায়হ (রহঃ) বলেন, ক্রেতা ইচ্ছা করলে যিনাকার হওয়ার কারণে গোলাম ফিরিয়ে দিতে পারে।

২১৫২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، قَالَ حَدَّثَنِي سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّهُ سَمِعَهُ يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِذَا زَنَتِ الأَمَةُ فَتَبَيَّنَ زِنَاهَا فَلْيَجْلِدْهَا، وَلاَ يُثَرِّبْ، ثُمَّ إِنْ زَنَتْ فَلْيَجْلِدْهَا، وَلاَ يُثَرِّبْ، ثُمَّ إِنْ زَنَتِ الثَّالِثَةَ فَلْيَبِعْهَا، وَلَوْ بِحَبْلٍ مِنْ شَعَرٍ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যদি বাঁদী ব্যভিচার করে এবং তার ব্যভিচার প্রমাণিত হয়, তবে তাকে বেত্রাঘাত করবে। আর তিরস্কার করবে না। তারপর যদি আবার ব্যভিচার করে তবে তাকে বিক্রি করে দিবে; যদিও পশমের রশির (ন্যায় সামান্য বস্তুর) বিনিময়েও হয়।

২১৫৩
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنِ الأَمَةِ إِذَا زَنَتْ وَلَمْ تُحْصِنْ قَالَ ‏ “‏ إِنْ زَنَتْ فَاجْلِدُوهَا، ثُمَّ إِنْ زَنَتْ فَاجْلِدُوهَا، ثُمَّ إِنْ زَنَتْ فَبِيعُوهَا وَلَوْ بِضَفِيرٍ ‏”‏‏.‏ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ لاَ أَدْرِي بَعْدَ الثَّالِثَةِ، أَوِ الرَّابِعَةِ‏.‏

আবূ হুরায়রা ও যায়দ ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে অবিবাহিতা দাসী যদি ব্যভিচার করে সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, যদি সে ব্যভিচার করে, তবে তাকে বেত্রাঘাত কর। আবার যদি সে ব্যভিচার করে আবার বেত্রাঘাত কর। এরপর যদি ব্যভিচার করে তবে তাকে রশির বিনিময়ে হলেও বিক্রি করে দাও। রাবী ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, একথা তৃতীয় বারের না চতুর্থ বারের পর বলেছেন, তা আমার সঠিক জানা নাই।

২১৫৪
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، وَزَيْدِ بْنِ خَالِدٍ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سُئِلَ عَنِ الأَمَةِ إِذَا زَنَتْ وَلَمْ تُحْصِنْ قَالَ ‏ “‏ إِنْ زَنَتْ فَاجْلِدُوهَا، ثُمَّ إِنْ زَنَتْ فَاجْلِدُوهَا، ثُمَّ إِنْ زَنَتْ فَبِيعُوهَا وَلَوْ بِضَفِيرٍ ‏”‏‏.‏ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ لاَ أَدْرِي بَعْدَ الثَّالِثَةِ، أَوِ الرَّابِعَةِ‏.‏

আবূ হুরায়রা ও যায়দ ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে অবিবাহিতা দাসী যদি ব্যভিচার করে সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, যদি সে ব্যভিচার করে, তবে তাকে বেত্রাঘাত কর। আবার যদি সে ব্যভিচার করে আবার বেত্রাঘাত কর। এরপর যদি ব্যভিচার করে তবে তাকে রশির বিনিময়ে হলেও বিক্রি করে দাও। রাবী ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, একথা তৃতীয় বারের না চতুর্থ বারের পর বলেছেন, তা আমার সঠিক জানা নাই।

৩৪/৬৭. অধ্যায়ঃ
মহিলার সাথে কেনা-বেচা জায়িয

২১৫৫
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ قَالَتْ عَائِشَةُ ـ رضى الله عنها دَخَلَ عَلَىَّ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرْتُ لَهُ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ اشْتَرِي وَأَعْتِقِي، فَإِنَّ الْوَلاَءَ لِمَنْ أَعْتَقَ ‏”‏‏.‏ ثُمَّ قَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْعَشِيِّ، فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ، ثُمَّ قَالَ ‏”‏ مَا بَالُ أُنَاسٍ يَشْتَرِطُونَ شُرُوطًا لَيْسَ فِي كِتَابِ اللَّهِ، مَنِ اشْتَرَطَ شَرْطًا لَيْسَ فِي كِتَابِ اللَّهِ فَهْوَ بَاطِلٌ، وَإِنِ اشْتَرَطَ مِائَةَ شَرْطٍ، شَرْطُ اللَّهِ أَحَقُّ وَأَوْثَقُ ‏”‏‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার ঘরে প্রবেশ করলেন তখন আমি তাঁর নিকট (বারীরাহ্‌ নাম্নী দাসীর ক্রয় সংক্রান্ত ঘটনা) উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, তুমি ক্রয় কর এবং আযাদ করে দাও। কেননা, যে আযাদ করবে ‘ওয়ালা’ [৯] (আযাদ সূত্রে উত্তরাধিকার) তারই। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিকালের দিকে (মসজিদে নাববীতে) দাঁড়িয়ে আল্লাহ তা‘আলার যথাযথ প্রশংসা বর্ণনা করেন তারপর বললেন, লোকদের কী হলো যে, তারা এরূপ শর্তারোপ করে, যা আল্লাহর কিতাবে নেই। কোন ব্যক্তি যদি এমন শর্তারোপ করে, যা আল্লাহর কিতাবে নেই, তা বাতিল, যদিও সে শত শত শর্তারোপ করে। আল্লাহর শর্তই সঠিক ও সুদৃঢ়।






[৯] ওয়ালা বলতে বুঝায় মুক্তিপ্রাপ্ত দাস-দাসীর স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি এবং এর মালিক হবে যে তাকে মুক্ত করেছে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

২১৫৬
حَدَّثَنَا حَسَّانُ بْنُ أَبِي عَبَّادٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، قَالَ سَمِعْتُ نَافِعًا، يُحَدِّثُ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما أَنَّ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ سَاوَمَتْ بَرِيرَةَ فَخَرَجَ إِلَى الصَّلاَةِ، فَلَمَّا جَاءَ قَالَتْ إِنَّهُمْ أَبَوْا أَنْ يَبِيعُوهَا، إِلاَّ أَنْ يَشْتَرِطُوا الْوَلاَءَ‏.‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِنَّمَا الْوَلاَءُ لِمَنْ أَعْتَقَ ‏”‏‏.‏ قُلْتُ لِنَافِعٍ حُرًّا كَانَ زَوْجُهَا أَوْ عَبْدًا فَقَالَ مَا يُدْرِينِي

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘আয়িশা (রাঃ) বারীরার দরদাম করেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যান। যখন ফিরে আসেন তখন ‘আয়িশা (রাঃ) তাঁকে বললেন যে, তারা (মালিক পক্ষ) ওয়ালা এর শর্ত ছাড়া বিক্রি করতে রাযী নয়। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ওয়ালা তো তারই, যে আযাদ করে। রাবী হাম্মাম (রহঃ) বলেন, আমি নাফি (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, বারীরার স্বামী আযাদ ছিল, না দাস? তিনি বললেন, আমি কি করে জানব?

৩৪/৬৮. অধ্যায়ঃ
শহরের অধিবাসী কি গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দার পক্ষ হতে বিক্রয় করতে কিংবা তাকে সাহায্য বা সৎ পরামর্শ প্রদান করতে পারে?

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ তার ভাইয়ের সাহায্য কামনা করে তখন সে যেন তার উপকার করে। এ বিষয়ে আতা (রহঃ) অনুমতি প্রদান করেছেন।

২১৫৭
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ قَيْسٍ، سَمِعْتُ جَرِيرًا ـ رضى الله عنه ـ بَايَعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى شَهَادَةِ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ، وَإِقَامِ الصَّلاَةِ، وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ، وَالسَّمْعِ وَالطَّاعَةِ، وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ‏.‏

জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর হাতে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লাহ- এ কথার সাক্ষ্য দেয়ার, সালাত কায়িম করার, যাকাত দেয়ার, আমীরের কথা শুনার ও মেনে চলার এবং প্রত্যেক মুসলমানের হিত কামনা করার উপর বায়‘আত করেছিলাম।

২১৫৮
حَدَّثَنَا الصَّلْتُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ طَاوُسٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لاَ تَلَقَّوُا الرُّكْبَانَ وَلاَ يَبِيعُ حَاضِرٌ لِبَادٍ ‏”‏‏.‏ قَالَ فَقُلْتُ لاِبْنِ عَبَّاسٍ مَا قَوْلُهُ لاَ يَبِيعُ حَاضِرٌ لِبَادٍ قَالَ لاَ يَكُونُ لَهُ سِمْسَارًا‏.‏

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা পণ্যবাহী কাফেলার সাথে (শহরে প্রবেশের পূর্বে সস্তায় পণ্য খরিদের উদ্দেশ্যে) সাক্ষাৎ করবে না এবং শহরবাসী যেন গ্রামবাসীর পক্ষে বিক্রয় না করে। রাবী তাউস (রহঃ) বলেন, আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, শহরবাসী যেন গ্রামবাসীর পক্ষে বিক্রয় না করে, তাঁর এ কথার অর্থ কী? তিনি বললেন, তার হয়ে যেন সে প্রতারণামূলক দালালী না করে।

৩৪/৬৯. অধ্যায়ঃ
মজুরী নিয়ে শহরবাসী কর্তৃক পল্লীবাসীর পক্ষে বিক্রয় করাকে যারা দূষণীয় মনে করেন।

২১৫৯
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ صَبَّاحٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَلِيٍّ الْحَنَفِيُّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَبِيعَ حَاضِرٌ لِبَادٍ‏.‏ وَبِهِ قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, গ্রামবাসীর পক্ষে শহরবাসীর বিক্রয় আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)- ও অনুরূপ কথাই বলেছেন।

৩৪/৭০. অধ্যায়ঃ
শহরবাসী পল্লীবাসীর জন্য দালালীর মাধ্যমে কোন সামগ্রী ক্রয় করবে না।

ইবনু সীরীন ও ইবরাহীম (নাখয়ী) (রহঃ) ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য তা নাজায়িয বলেছেন। ইবরাহীম (রহঃ) বলেন, আরববাসী বলে, بِع لِي ثَوباً ‎ তারা এর অর্থ গ্রহণ করে ক্রয় করার অর্থাৎ আমাকে একটি কাপড় ক্রয় করে দাও। ‎

২১৬০
حَدَّثَنَا الْمَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ جُرَيْجٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لاَ يَبْتَاعُ الْمَرْءُ عَلَى بَيْعِ أَخِيهِ، وَلاَ تَنَاجَشُوا، وَلاَ يَبِعْ حَاضِرٌ لِبَادٍ ‏”‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কেউ যেন তার ভাইয়ের কেনা-বেচার উপরে ক্রয় না করে। আর তোমরা প্রতারণামূলক দালালী করবে না [১০] এবং শহরবাসী যেন গ্রামবাসীর পক্ষে বিক্রি না করে।






[১০] কেবলমাত্র ক্রেতাকে প্রতারিত করার উদ্দেশ্যে দালালী নিষিদ্ধ।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

২১৬১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُعَاذٌ، حَدَّثَنَا ابْنُ عَوْنٍ، عَنْ مُحَمَّدٍ، قَالَ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ نُهِينَا أَنْ يَبِيعَ حَاضِرٌ لِبَادٍ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, গ্রামবাসীর পক্ষে শহরবাসীর বিক্রি করা হতে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে।

৩৪/৭১. অধ্যায়ঃ
সস্তায় কিছু ক্রয় করার মানসে অগ্রসর হয়ে কাফেলার সঙ্গে মিলিত হয়ে কিছু ক্রয় করার প্রতি নিষেধাজ্ঞা এবং এ ধরনের খরিদ এক প্রকার অবৈধ কাজ ও প্রতারণা- এ কথা জেনেও কেউ তা করলে সে অবাধ্য ও পাপী।

২১৬২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ نَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنِ التَّلَقِّي، وَأَنْ يَبِيعَ حَاضِرٌ لِبَادٍ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, শহরে প্রবেশের পূর্বে বণিক দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা এবং গ্রামবাসীর পক্ষে শহরবাসীর বিক্রি করা হতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিষেধ করেছেন।

২১৬৩
حَدَّثَنِي عَيَّاشُ بْنُ الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ ابْنِ طَاوُسٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ سَأَلْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ مَا مَعْنَى قَوْلِهِ ‏ “‏ لاَ يَبِيعَنَّ حَاضِرٌ لِبَادٍ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ لاَ يَكُنْ لَهُ سِمْسَارًا‏.‏

তাউস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে গ্রামবাসীর পক্ষে শহরবাসী বিক্রয় করবে না, এ উক্তির অর্থ কী, তা জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, তার পক্ষে দালালী করবে না।

২১৬৪
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، قَالَ حَدَّثَنِي التَّيْمِيُّ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ مَنِ اشْتَرَى مُحَفَّلَةً فَلْيَرُدَّ مَعَهَا صَاعًا‏.‏ قَالَ وَنَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ تَلَقِّي الْبُيُوعِ‏.‏

‘আবদুল্লাহ (ইবনু মাস‘ঊদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে ব্যক্তি স্তনে দুধ আটকিয়ে রাখা (বকরী-গাভী) উটনী ক্রয় করে (তা ফেরত দিলে) সে যেন তার সাথে এক সা‘ (খেজুরও) ফেরত দেয়। তিনি আরো বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বণিক দলের সাথে (শহরে প্রবেশের পূর্বে) সাক্ষাৎ করতে নিষেধ করেছেন।

২১৬৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لاَ يَبِيعُ بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْعِ بَعْضٍ، وَلاَ تَلَقَّوُا السِّلَعَ حَتَّى يُهْبَطَ بِهَا إِلَى السُّوقِ ‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমাদের কেউ কারো ক্রয়-বিক্রয়ের উপর যেন ক্রয়-বিক্রয় না করে এবং তোমরা পণ্য ক্রয় করো না তা বাজারে হাজির না করা পর্যন্ত।

৩৪/৭২. অধ্যায়ঃ
অগ্রসর হয়ে কাফেলার সঙ্গে (বণিক দলের সাথে) সাক্ষাতের সীমা।

২১৬৬
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كُنَّا نَتَلَقَّى الرُّكْبَانَ فَنَشْتَرِي مِنْهُمُ الطَّعَامَ، فَنَهَانَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ نَبِيعَهُ حَتَّى يُبْلَغَ بِهِ سُوقُ الطَّعَامِ‏.‏ قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ هَذَا فِي أَعْلَى السُّوقِ، يُبَيِّنُهُ حَدِيثُ عُبَيْدِ اللَّهِ‏.‏

‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা বণিক দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের হতে খাদ্য ক্রয় করতাম। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাদ্যের বাজারে পৌঁছানোর পূর্বে আমাদের তা ক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। আবূ ‘আবদুল্লাহ (বুখারী) (রহঃ) বলেন, তা হল বাজারের প্রান্ত সীমা। ‘উবায়দুল্লাহ (রহঃ)-এর হাদীসে এ বর্ণনা রয়েছে।

২১৬৭
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي نَافِعٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانُوا يَبْتَاعُونَ الطَّعَامَ فِي أَعْلَى السُّوقِ فَيَبِيعُونَهُ فِي مَكَانِهِمْ، فَنَهَاهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَبِيعُوهُ فِي مَكَانِهِ حَتَّى يَنْقُلُوهُ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, লোকেরা বাজারের প্রান্ত সীমায় খাদ্য ক্রয় করে সেখানেই বিক্রি করে দিত। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) স্থানান্তর না করে সেখানেই বিক্রি করতে তাদের নিষেধ করেছেন।

৩৪/৭৩. অধ্যায়ঃ
বেচা-কেনায় অবৈধ শর্তারোপ করা

২১৬৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ جَاءَتْنِي بَرِيرَةُ فَقَالَتْ كَاتَبْتُ أَهْلِي عَلَى تِسْعِ أَوَاقٍ فِي كُلِّ عَامٍ وَقِيَّةٌ، فَأَعِينِينِي‏.‏ فَقُلْتُ إِنْ أَحَبَّ أَهْلُكِ أَنْ أَعُدَّهَا لَهُمْ وَيَكُونَ وَلاَؤُكِ لِي فَعَلْتُ‏.‏ فَذَهَبَتْ بَرِيرَةُ إِلَى أَهْلِهَا، فَقَالَتْ لَهُمْ فَأَبَوْا عَلَيْهَا، فَجَاءَتْ مِنْ عِنْدِهِمْ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم جَالِسٌ، فَقَالَتْ إِنِّي قَدْ عَرَضْتُ ذَلِكَ عَلَيْهِمْ فَأَبَوْا، إِلاَّ أَنْ يَكُونَ الْوَلاَءُ لَهُمْ‏.‏ فَسَمِعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَتْ عَائِشَةُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏”‏ خُذِيهَا وَاشْتَرِطِي لَهُمُ الْوَلاَءَ، فَإِنَّمَا الْوَلاَءُ لِمَنْ أَعْتَقَ ‏”‏‏.‏ فَفَعَلَتْ عَائِشَةُ ثُمَّ قَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي النَّاسِ، فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ، ثُمَّ قَالَ ‏”‏ أَمَّا بَعْدُ مَا بَالُ رِجَالٍ يَشْتَرِطُونَ شُرُوطًا لَيْسَتْ فِي كِتَابِ اللَّهِ، مَا كَانَ مِنْ شَرْطٍ لَيْسَ فِي كِتَابِ اللَّهِ فَهُوَ بَاطِلٌ وَإِنْ كَانَ مِائَةَ شَرْطٍ، قَضَاءُ اللَّهِ أَحَقُّ، وَشَرْطُ اللَّهِ أَوْثَقُ، وَإِنَّمَا الْوَلاَءُ لِمَنْ أَعْتَقَ ‏”‏‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বারীরাহ্‌ (রাঃ) আমার কাছে এসে বলল, আমি আমার মালিক পক্ষের সাথে নয় উকিয়া দেয়ার শর্তে মুকাতাবা [১১] করেছি- প্রতি বছর যা হতে এক উকিয়া করে দেয়া হবে। আপনি (এ ব্যাপারে) আমাকে সাহায্য করুন। আমি বললাম, যদি তোমার মালিক পক্ষ পছন্দ করে যে, আমি তাদের একবারেই তা পরিশোধ করব এবং তোমার ওয়ালা-এর অধিকার আমার হবে, তবে আমি তা করব। তখন বারীরাহ্‌ (রাঃ) তার মালিকদের নিকট গেল এবং তাদের তা বলল। তারা তা অস্বীকার করল। বারীরাহ্‌ (রাঃ) তাদের নিকট হতে (আমার কাছে) এল। আর তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সে বলল, আমি (আপনার) সে কথা তাদের কাছে পেশ করেছিলাম। কিন্তু তারা নিজেদের জন্য ওয়ালার অধিকার সংরক্ষণ ছাড়া রাযী হয় নি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা শুনলেন, ‘আয়িশা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তা সবিস্তারে জানালেন। তিনি বললেন, তুমি তাকে নিয়ে নাও এবং তাদের জন্য ওয়ালার শর্ত মেনে নাও। কেননা, ওয়ালা এর হক তারই, যে আযাদ করে। ‘আয়িশা (রাঃ) তাই করলেন। এরপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জনসমক্ষে দাঁড়িয়ে আল্লাহর হাম্‌দ ও সানা বর্ণনা করলেন। তারপর বললেন, লোকদের কি হল যে, তারা এমন শর্তারোপ করে যা আল্লাহর বিধানে নেই? আল্লাহর বিধানে যে শর্তের উল্লেখ নেই, তা বাতিল বলে গণ্য হবে, শত শর্ত হলেও। আল্লাহর ফায়সালাই সঠিক, আল্লাহর শর্তই সুদৃঢ়। ওয়ালার হাক্ব তো তারই, যে মুক্ত করে।






[১১] নিজের দাস-দাসীকে কোন কিছুর বিনিময়ে আযাদ করার চুক্তিকে মুকাতাবা বলে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

২১৬৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ عَائِشَةَ، أُمَّ الْمُؤْمِنِينَ أَرَادَتْ أَنْ تَشْتَرِيَ جَارِيَةً فَتُعْتِقَهَا، فَقَالَ أَهْلُهَا نَبِيعُكِهَا عَلَى أَنَّ وَلاَءَهَا لَنَا‏.‏ فَذَكَرَتْ ذَلِكَ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏ “‏ لاَ يَمْنَعُكِ ذَلِكَ، فَإِنَّمَا الْوَلاَءُ لِمَنْ أَعْتَقَ ‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রাঃ) একটি দাসী ক্রয় করে তাকে আযাদ করার ইচ্ছা করেন। দাসীটির মালিক পক্ষ বলল, দাসীটি এ শর্তে বিক্রি করব যে, তার ওয়ালার হক আমাদের থাকবে। তিনি এ কথা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে উল্লেখ করলেন। তিনি বললেন, এতে তোমার বাধা হবে না। কেননা, ওয়ালা তারই, যে মুক্ত করে।

৩৪/৭৪. অধ্যায়ঃ
খেজুরের পরিবর্তে খেজুর বিক্রয় করা

২১৭০
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسٍ، سَمِعَ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ الْبُرُّ بِالْبُرِّ رِبًا إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ، وَالشَّعِيرُ بِالشَّعِيرِ رِبًا إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ، وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ رِبًا إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ ‏”‏‏.‏

‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, হাতে হাতে (নগদ নগদ) ছাড়া গমের বদলে গম বিক্রি করা সুদ, নগদ নগদ ছাড়া যবের বদলে যব বিক্রয় সুদ, নগদ নগদ ব্যতীত খেজুরের বিনিময়ে খেজুর বিক্রয় সুদ।

৩৪/৭৫. অধ্যায়ঃ
শুকনো আঙ্গুরের পরিবর্তে শুকনো আঙ্গুর এবং খাদ্য দ্রব্যের পরিবর্তে খাদ্য দ্রব্য ক্রয় বিক্রয়।

২১৭১
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنِ الْمُزَابَنَةِ، وَالْمُزَابَنَةُ بَيْعُ الثَّمَرِ بِالتَّمْرِ كَيْلاً، وَبَيْعُ الزَّبِيبِ بِالْكَرْمِ كَيْلاً‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুযাবানা নিষেধ করেছেন। তিনি (ইবনু ‘উমর) বলেন, মুযাবানা হলো তাজা খেজুর শুকনো খেজুরের বদলে ওজন করে বিক্রি করা এবং কিসমিস তাজা আঙ্গুরের বদলে ওজন করে বিক্রি করা।

২১৭২
حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنِ الْمُزَابَنَةِ قَالَ وَالْمُزَابَنَةُ أَنْ يَبِيعَ الثَّمَرَ بِكَيْلٍ، إِنْ زَادَ فَلِي وَإِنْ نَقَصَ فَعَلَىَّ‏.‏ قَالَ وَحَدَّثَنِي زَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَخَّصَ فِي الْعَرَايَا بِخَرْصِهَا‏.‏

ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুযাবানা নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, মুযাবানা হলো- শুকনো খেজুর তাজা খেজুরের বিনিময়ে ওজন করে বিক্রি করা, বেশি হলে তা আমার প্রাপ্য, কম হলে তা পূরণ করা আমার দায়িত্ব।

২১৭৩
See previous Hadith

ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাবী বলেন, আমাকে যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) বলেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুমান করে আরায়া এর অনুমতি দিয়েছেন।

৩৪/৭৬. অধ্যায়ঃ
যবের বদলে যব (বার্লির বদলে বার্লি) বিক্রয় করা।

২১৭৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسٍ، أَخْبَرَهُ أَنَّهُ الْتَمَسَ، صَرْفًا بِمِائَةِ دِينَارٍ، فَدَعَانِي طَلْحَةُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ فَتَرَاوَضْنَا، حَتَّى اصْطَرَفَ مِنِّي، فَأَخَذَ الذَّهَبَ يُقَلِّبُهَا فِي يَدِهِ، ثُمَّ قَالَ حَتَّى يَأْتِيَ خَازِنِي مِنَ الْغَابَةِ، وَعُمَرُ يَسْمَعُ ذَلِكَ، فَقَالَ وَاللَّهِ لاَ تُفَارِقُهُ حَتَّى تَأْخُذَ مِنْهُ، قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ رِبًا إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ، وَالْبُرُّ بِالْبُرِّ رِبًا إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ، وَالشَّعِيرُ بِالشَّعِيرِ رِبًا إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ، وَالتَّمْرُ بِالتَّمْرِ رِبًا إِلاَّ هَاءَ وَهَاءَ ‏”‏‏.‏

মালিক ইবনু আওস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি একশ’ দীনারের বিনিময়ে সার্‌ফ এর জন্য লোক সন্ধান করছিলেন। তখন তালহা ইবনু ‘উবাইদুল্লাহ (রাঃ) আমাকে ডাক দিলেন। আমরা বিনিময় দ্রব্যের পরিমাণ নিয়ে আলোচনা করতে থাকলাম। অবশেষে তিনি আমার সঙ্গে সার্‌ফ [১২] করতে রাজী হলেন এবং আমার হতে স্বর্ণ নিয়ে তার হাতে নাড়া-চাড়া করতে করতে বললেন, আমার খাযাঞ্চী গাবা (নামক স্থান) হতে আসা পর্যন্ত (আমার জিনিস পেতে) দেরী করতে হবে। ঐ সময়ে ‘উমর (রাঃ) আমাদের কথা-বার্তা শুনছিলেন। তিনি বলে উঠলেন, আল্লাহর কসম! তার জিনিস গ্রহণ না করা পর্যন্ত তুমি তার হতে বিচ্ছিন্ন হতে পারবে না।



কারণ, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, নগদ নগদ না হলে স্বর্ণের বদলে স্বর্ণের বিক্রয় (সুদ) হবে। নগদ নগদ ছাড়া গমের বদলে গমের বিক্রয় সুদ হবে। নগদ নগদ ছাড়া যবের বদলে যবের বিক্রয় রিবা হবে। নগদ নগদ না হলে খেজুরের বদলে খেজুরের বিক্রয় সুদ হবে।






[১২] স্বর্ণ-রৌপ্যের পারস্পরিক ক্রয়-বিক্রয়কে সার্‌ফ বলে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩৪/৭৭. অধ্যায়ঃ
সোনার পরিবর্তে সোনা বিক্রয় করা।

২১৭৫
حَدَّثَنَا صَدَقَةُ بْنُ الْفَضْلِ، أَخْبَرَنَا إِسْمَاعِيلُ ابْنُ عُلَيَّةَ، قَالَ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي بَكْرَةَ، قَالَ قَالَ أَبُو بَكْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لاَ تَبِيعُوا الذَّهَبَ بِالذَّهَبِ إِلاَّ سَوَاءً بِسَوَاءٍ، وَالْفِضَّةَ بِالْفِضَّةِ إِلاَّ سَوَاءً بِسَوَاءٍ، وَبِيعُوا الذَّهَبَ بِالْفِضَّةِ وَالْفِضَّةَ بِالذَّهَبِ كَيْفَ شِئْتُمْ ‏”‏‏.‏

আবূ বাক্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সমান সমান ছাড়া তোমরা সোনার বদলে সোনা বিক্রয় করবে না। অনুরূপ রূপার বদলে রূপা সমান সমান ছাড়া (বিক্রি করবে না)। রূপার বদলে সোনা এবং সোনার বদলে রূপা যেভাবে ইচ্ছে, কেনা বেচা করতে পার।

৩৪/৭৮. অধ্যায়ঃ
রৌপ্যের বদলে রৌপ্য বিক্রয় করা।

২১৭৬
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا عَمِّي، حَدَّثَنَا ابْنُ أَخِي الزُّهْرِيِّ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ أَبَا سَعِيدٍ، حَدَّثَهُ مِثْلَ، ذَلِكَ حَدِيثًا عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَقِيَهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ فَقَالَ يَا أَبَا سَعِيدٍ، مَا هَذَا الَّذِي تُحَدِّثُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ فِي الصَّرْفِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ الذَّهَبُ بِالذَّهَبِ مِثْلاً بِمِثْلٍ وَالْوَرِقُ بِالْوَرِقِ مِثْلاً بِمِثْلٍ ‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে (আবূ বাকরার হাদীসের) অনুরূপ একটি হাদীস তাঁর কাছে বর্ণনা করেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) তাঁর (আবূ সাঈদ (রাঃ) – এর) সঙ্গে দেখা করে বললেন, হে আবূ সাঈদ! আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আপনি কী হাদীস বর্ণনা করে থাকেন? আবূ সাঈদ (রাঃ) সার্‌ফ (মুদ্রার বিনিময়) সম্পর্কে বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে আমি বলতে শুনেছি যে, সোনার বদলে সোনা বিক্রয় সমান পরিমাণ হতে হবে। রূপার বদলে রূপার বিক্রয় সমান হতে হবে।

২১৭৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لاَ تَبِيعُوا الذَّهَبَ بِالذَّهَبِ إِلاَّ مِثْلاً بِمِثْلٍ، وَلاَ تُشِفُّوا بَعْضَهَا عَلَى بَعْضٍ، وَلاَ تَبِيعُوا الْوَرِقَ بِالْوَرِقِ إِلاَّ مِثْلاً بِمِثْلٍ، وَلاَ تُشِفُّوا بَعْضَهَا عَلَى بَعْضٍ، وَلاَ تَبِيعُوا مِنْهَا غَائِبًا بِنَاجِزٍ ‏”‏

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সমান পরিমাণ ছাড়া তোমারা সোনার বদলে সোনা বিক্রি করবে না, একটি অপরটি হতে কম-বেশী করবে না। সমান ছাড়া তোমরা রূপার বদলে রূপা বিক্রি করবে না ও একটি অপরটি হতে কম-বেশী করবে না। আর নগদ মুদ্রার বিনিময়ে বাকী মুদ্রা বিক্রি করবে না।

৩৪/৭৯. অধ্যায়ঃ
বাকিতে বা ধারে দীনারের পরিবর্তে দীনার ক্রয়-বিক্রয়।

২১৭৮
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا الضَّحَّاكُ بْنُ مَخْلَدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، أَنَّ أَبَا صَالِحٍ الزَّيَّاتَ، أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ الدِّينَارُ بِالدِّينَارِ، وَالدِّرْهَمُ بِالدِّرْهَمِ‏.‏ فَقُلْتُ لَهُ فَإِنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ لاَ يَقُولُهُ‏.‏ فَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ سَأَلْتُهُ فَقُلْتُ سَمِعْتَهُ مِنَ النَّبِيِّ، صلى الله عليه وسلم، أَوْ وَجَدْتَهُ فِي كِتَابِ اللَّهِ قَالَ كُلُّ ذَلِكَ لاَ أَقُولُ، وَأَنْتُمْ أَعْلَمُ بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنِّي، وَلَكِنَّنِي أَخْبَرَنِي أُسَامَةُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لاَ رِبًا إِلاَّ فِي النَّسِيئَةِ ‏”‏‏.‏

আবূ সালিহ যায়য়্যাত (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ)- বলতে শুনলাম, দীনারের বদলে দীনার এবং দিরহামের বদলে দিরহাম (সমান সমান বিক্রি করবে)। এতে আমি তাঁকে বললাম, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তো তা বলেন না? উত্তরে আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, আমি তাঁকে (ইবনু ‘আব্বাসকে) জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, আপনি তা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে শুনেছেন না আল্লাহর কিতাবে পেয়েছেন? তিনি বললেন, এর কোনটি বলি নি। আপনারাই তো আমার চেয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে বেশী জানেন। আবশ্য আমাকে উসামা [ইবনু যায়দ (রাঃ)] জানিয়েছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, বাকী বিক্রয় ব্যতীত ‘রিবা’ হয় না। আবূ ‘আবদুল্লাহ (বুখারী) (রহঃ) বলেন, আমি সুলায়মান ইবনু হার্‌ব (রহঃ)-কে বলতে শুনেছি, বাকী বিক্রয় ব্যতীত ‘রিবা’ হয় না, এ কথার অর্থ আমাদের মতে এই যে, সোনা-রূপার বিনিময়ে, গম যবের বিনিময়ে কম-বেশী বেচা-কেনা করাতে দোষের কিছু নেই যদি নগদ হয়, কিন্তু বাকী বেচা-কেনাতে কোন কল্যাণ নেই।

২১৭৯
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا الضَّحَّاكُ بْنُ مَخْلَدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، أَنَّ أَبَا صَالِحٍ الزَّيَّاتَ، أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ الدِّينَارُ بِالدِّينَارِ، وَالدِّرْهَمُ بِالدِّرْهَمِ‏.‏ فَقُلْتُ لَهُ فَإِنَّ ابْنَ عَبَّاسٍ لاَ يَقُولُهُ‏.‏ فَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ سَأَلْتُهُ فَقُلْتُ سَمِعْتَهُ مِنَ النَّبِيِّ، صلى الله عليه وسلم، أَوْ وَجَدْتَهُ فِي كِتَابِ اللَّهِ قَالَ كُلُّ ذَلِكَ لاَ أَقُولُ، وَأَنْتُمْ أَعْلَمُ بِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنِّي، وَلَكِنَّنِي أَخْبَرَنِي أُسَامَةُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لاَ رِبًا إِلاَّ فِي النَّسِيئَةِ ‏”‏‏.‏

আবূ সালিহ যায়য়্যাত (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ)- বলতে শুনলাম, দীনারের বদলে দীনার এবং দিরহামের বদলে দিরহাম (সমান সমান বিক্রি করবে)। এতে আমি তাঁকে বললাম, ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) তো তা বলেন না? উত্তরে আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, আমি তাঁকে (ইবনু ‘আব্বাসকে) জিজ্ঞেস করেছিলাম যে, আপনি তা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে শুনেছেন না আল্লাহর কিতাবে পেয়েছেন? তিনি বললেন, এর কোনটি বলি নি। আপনারাই তো আমার চেয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে বেশী জানেন। আবশ্য আমাকে উসামা [ইবনু যায়দ (রাঃ)] জানিয়েছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, বাকী বিক্রয় ব্যতীত ‘রিবা’ হয় না। আবূ ‘আবদুল্লাহ (বুখারী) (রহঃ) বলেন, আমি সুলায়মান ইবনু হার্‌ব (রহঃ)-কে বলতে শুনেছি, বাকী বিক্রয় ব্যতীত ‘রিবা’ হয় না, এ কথার অর্থ আমাদের মতে এই যে, সোনা-রূপার বিনিময়ে, গম যবের বিনিময়ে কম-বেশী বেচা-কেনা করাতে দোষের কিছু নেই যদি নগদ হয়, কিন্তু বাকী বেচা-কেনাতে কোন কল্যাণ নেই।

৩৪/৮০. অধ্যায়ঃ
বাকীতে সোনার পরিবর্তে রৌপ্যের ক্রয়-বিক্রয়।

২১৮০
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ أَخْبَرَنِي حَبِيبُ بْنُ أَبِي ثَابِتٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا الْمِنْهَالِ، قَالَ سَأَلْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ وَزَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ ـ رضى الله عنهم ـ عَنِ الصَّرْفِ،، فَكُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا يَقُولُ هَذَا خَيْرٌ مِنِّي‏.‏ فَكِلاَهُمَا يَقُولُ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ بَيْعِ الذَّهَبِ بِالْوَرِقِ دَيْنًا‏.‏

আবূ মিনহাল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বারা ইবনু ‘আযিব ও যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ)-কে সার্‌ফ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলাম। তাঁরা উভয়ে (একে অপরের সম্পর্কে) বললেন, ইনি আমার চেয়ে উত্তম। এরপর উভয়েই বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাকীতে রূপার বিনিময়ে সোনা কেনা বেচা করতে বারণ করেছেন।

২১৮১
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ أَخْبَرَنِي حَبِيبُ بْنُ أَبِي ثَابِتٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا الْمِنْهَالِ، قَالَ سَأَلْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ وَزَيْدَ بْنَ أَرْقَمَ ـ رضى الله عنهم ـ عَنِ الصَّرْفِ،، فَكُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا يَقُولُ هَذَا خَيْرٌ مِنِّي‏.‏ فَكِلاَهُمَا يَقُولُ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ بَيْعِ الذَّهَبِ بِالْوَرِقِ دَيْنًا‏.‏

আবূ মিনহাল (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বারা ইবনু ‘আযিব ও যায়দ ইবনু আরকাম (রাঃ)-কে সার্‌ফ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলাম। তাঁরা উভয়ে (একে অপরের সম্পর্কে) বললেন, ইনি আমার চেয়ে উত্তম। এরপর উভয়েই বললেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাকীতে রূপার বিনিময়ে সোনা কেনা বেচা করতে বারণ করেছেন।

৩৪/৮১. অধ্যায়ঃ
রৌপ্যের পরিবর্তে নগদ নগদ সোনা বিক্রয় করার বর্ণনা।

২১৮২
حَدَّثَنَا عِمْرَانُ بْنُ مَيْسَرَةَ، حَدَّثَنَا عَبَّادُ بْنُ الْعَوَّامِ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ أَبِي بَكْرَةَ، عَنْ أَبِيهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ نَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْفِضَّةِ بِالْفِضَّةِ وَالذَّهَبِ بِالذَّهَبِ، إِلاَّ سَوَاءً بِسَوَاءٍ، وَأَمَرَنَا أَنْ نَبْتَاعَ الذَّهَبَ بِالْفِضَّةِ كَيْفَ شِئْنَا، وَالْفِضَّةَ بِالذَّهَبِ كَيْفَ شِئْنَا‏.‏

আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী(রাঃ) সমান সমান ছাড়া রূপার বদলে রূপার ক্রয়-বিক্রয় এবং সোনার বদলে সোনার ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন এবং তিনি রূপার বিনিময়ে সোনার বিক্রয়ে এবং সোনার বিনিময়ে রূপার বিক্রয়ে আমাদের ইচ্ছা অনু্যায়ী অনুমতি দিয়েছেন।

৩৪/৮২. অধ্যায়ঃ
মুযাবানা পদ্ধতিতে কেনা-বেচা। অর্থাৎ গাছের খেজুরের বদলে শুকনো খেজুর, রসালো আঙ্গুরের পরিবর্তে শুকনো আঙ্গুর এবং ধারে বিক্রয় করা।

আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুযাবানা ও মুহাকালা হতে নিষেধ করেছেন।

২১৮৩
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لاَ تَبِيعُوا الثَّمَرَ حَتَّى يَبْدُوَ صَلاَحُهُ، وَلاَ تَبِيعُوا الثَّمَرَ بِالتَّمْرِ ‏”‏ قَالَ سَالِمٌ وَأَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ، عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَخَّصَ بَعْدَ ذَلِكَ فِي بَيْعِ الْعَرِيَّةِ بِالرُّطَبِ أَوْ بِالتَّمْرِ، وَلَمْ يُرَخِّصْ فِي غَيْرِهِ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, উপযোগিতা প্রকাশ না পাওয়া পর্যন্ত তোমরা ফল বিক্রি করবে না এবং শুকনো খেজুরের বিনিময়ে তাজা খেজুর বিক্রি করবে না।

২১৮৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لاَ تَبِيعُوا الثَّمَرَ حَتَّى يَبْدُوَ صَلاَحُهُ، وَلاَ تَبِيعُوا الثَّمَرَ بِالتَّمْرِ ‏”‏ قَالَ سَالِمٌ وَأَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ، عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَخَّصَ بَعْدَ ذَلِكَ فِي بَيْعِ الْعَرِيَّةِ بِالرُّطَبِ أَوْ بِالتَّمْرِ، وَلَمْ يُرَخِّصْ فِي غَيْرِهِ‏.‏

সালিম (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাবী সালিম (রহঃ) বলেন, ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) সূত্রে আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরে তাজা বা শুকনো খেজুরের বিনিময়ে আরিয়্যা বিক্রয়ের অনুমতি দিয়েছেন। আরিয়্যা ব্যতীত অন্য কিছুতে এরূপ বিক্রির অনুমতি প্রদান করেন নি।

২১৮৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنِ الْمُزَابَنَةِ‏.‏ وَالْمُزَابَنَةُ اشْتِرَاءُ الثَّمَرِ بِالتَّمْرِ كَيْلاً، وَبَيْعُ الْكَرْمِ بِالزَّبِيبِ كَيْلاً‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুযাবানা হতে নিষেধ করেছেন। মুযাবানার অর্থ হল মেপে শুকনো খেজুরের বিনিময়ে তাজা খেজুর এবং মেপে কিসমিসের বিনিময়ে আঙ্গুর ক্রয় করা।

২১৮৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ الْحُصَيْنِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، مَوْلَى ابْنِ أَبِي أَحْمَدَ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ ـ رضى الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنِ الْمُزَابَنَةِ وَالْمُحَاقَلَةِ‏.‏ وَالْمُزَابَنَةُ اشْتِرَاءُ الثَّمَرِ بِالتَّمْرِ فِي رُءُوسِ النَّخْلِ‏.‏

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুযাবানা ও মুহাকালা বারণ করেছেন। মুযাবানার অর্থ- শুকনো খেজুরের বিনিময়ে গাছের মাথায় অবস্থিত তাজা খেজুর ক্রয় করা।

২১৮৭
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الشَّيْبَانِيِّ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ نَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْمُحَاقَلَةِ وَالْمُزَابَنَةِ‏.‏

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুহাকালা ও মুযাবানা নিষেধ করেছেন।

২১৮৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ ـ رضى الله عنهم ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَرْخَصَ لِصَاحِبِ الْعَرِيَّةِ أَنْ يَبِيعَهَا بِخَرْصِهَا‏.‏

যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরিয়্যা এর মালিককে তা অনুমানে বিক্রি করার অনুমতি প্রদান করেছেন।

৩৪/৮৩. অধ্যায়ঃ
সোনা ও রূপার বদলে গাছের খেজুর ক্রয়-বিক্রয় করা।

২১৮৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، عَنْ عَطَاءٍ، وَأَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ نَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ بَيْعِ الثَّمَرِ حَتَّى يَطِيبَ، وَلاَ يُبَاعُ شَىْءٌ مِنْهُ إِلاَّ بِالدِّينَارِ وَالدِّرْهَمِ إِلاَّ الْعَرَايَا‏.‏

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উপযোগী হওয়ার আগে ফল বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। (এবং এ-ও বলেছেন যে,) এর কিছুই দীনার ও দিরহাম এর বিনিময় ব্যতীত বিক্রি করা যাবে না, তবে আরায়্যার হুকুম এর ব্যতিক্রম।

২১৯০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ، قَالَ سَمِعْتُ مَالِكًا، وَسَأَلَهُ، عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ الرَّبِيعِ أَحَدَّثَكَ دَاوُدُ عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَخَّصَ فِي بَيْعِ الْعَرَايَا فِي خَمْسَةِ أَوْسُقٍ أَوْ دُونَ خَمْسَةِ أَوْسُقٍ قَالَ نَعَمْ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওহ্‌হাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি মালিকের কাছে শুনেছি, উবায়দুল্লাহ ইবনু রাবী’ (রহঃ) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, আবূ সুফিয়ান (রাঃ) সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে দাঊদ (রহঃ) এই হাদীস কি আপনার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাঁচ ওসাক অথবা পাঁচ ওসাকের কম পরিমাণে আরিয়্যা বিক্রয়ের অনুমতি দিয়েছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ।

২১৯১
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ قَالَ يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ سَمِعْتُ بُشَيْرًا، قَالَ سَمِعْتُ سَهْلَ بْنَ أَبِي حَثْمَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ بَيْعِ الثَّمَرِ بِالتَّمْرِ، وَرَخَّصَ فِي الْعَرِيَّةِ أَنْ تُبَاعَ بِخَرْصِهَا يَأْكُلُهَا أَهْلُهَا رُطَبًا‏.‏ وَقَالَ سُفْيَانُ مَرَّةً أُخْرَى إِلاَّ أَنَّهُ رَخَّصَ فِي الْعَرِيَّةِ يَبِيعُهَا أَهْلُهَا بِخَرْصِهَا، يَأْكُلُونَهَا رُطَبًا‏.‏ قَالَ هُوَ سَوَاءٌ‏.‏ قَالَ سُفْيَانُ فَقُلْتُ لِيَحْيَى وَأَنَا غُلاَمٌ إِنَّ أَهْلَ مَكَّةَ يَقُولُونَ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَخَّصَ فِي بَيْعِ الْعَرَايَا‏.‏ فَقَالَ وَمَا يُدْرِي أَهْلَ مَكَّةَ قُلْتُ إِنَّهُمْ يَرْوُونَهُ عَنْ جَابِرٍ‏.‏ فَسَكَتَ‏.‏ قَالَ سُفْيَانُ إِنَّمَا أَرَدْتُ أَنَّ جَابِرًا مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ‏.‏ قِيلَ لِسُفْيَانَ وَلَيْسَ فِيهِ نَهْىٌ عَنْ بَيْعِ الثَّمَرِ حَتَّى يَبْدُوَ صَلاَحُهُ قَالَ لاَ‏.‏

সাহল ইবনু আবূ হাসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) শুকনো খেজুরের বিনিময়ে তাজা খেজুর বিক্রি করতে বারণ করেছেন এবং আরিয়্যা-এর ক্ষেত্রে অনুমতি প্রদান করেছেন। তা হল তাজা ফল অনুমানে বিক্রি করা, যাতে (ক্রেতা) তাজা খেজুর খাওয়ার সুযোগ লাভ করতে পারে। রাবী সুফইয়ান (রহঃ) আর একবার এভাবে বর্ণনা করেছেন, অবশ্য তিনি [আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] আরিয়্যা এর ক্ষেত্রে অনুমতি দিয়েছেন যে, ফলের মালিক অনুমানে তাজা খেজুর বিক্রয় করে, যাতে তারা (ক্রেতাগণ) তাজা খেজুর খেতে পারে। রাবী বলেন, এ কথা পূর্বের কথা একই এবং সুফইয়ান (রহঃ) বলেন, আমি তরুণ বয়সে (আমার উস্তাদ) ইয়াহইয়া [ইবনু সাইদ (রহঃ)]-কে বললাম, মক্কাবাসীগণ তো বলে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরায়্যা-এর ক্রয়-বিক্রয়ের অনুমতি দিয়েছেন। তিনি বললেন, মক্কাবাসীদের তা কিসে অবহিত করল? আমি বললাম, তারা জাবির (রাঃ) হতে বর্ণনা করে থাকেন। এতে তিনি নীরব হয়ে গেলেন। সুফইয়ান (রহঃ) বলেন, আমার কথার মর্ম এই ছিল যে, জাবির (রাঃ) মাদীনাহ্‌বাসী। সুফইয়ান (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হল, এ হাদীসে এ কথাটুকু নাই যে, উপযোগিতা প্রকাশের পূর্বে ফল বিক্রি নিষিদ্ধ করেছেন। তিনি বলেন, না।

৩৪/৮৪. অধ্যায়ঃ
আরায়্যা এর ব্যাখ্যা

(ইমাম) মালিক (রহঃ) বলেন, আরায়্যা এর অর্থ- কোন একজন কর্তৃক কাউকে খেজুর গাছ (তার ফল খাওয়ার জন্য) দান করা। পরে ঐ ব্যক্তির বাগানে প্রবেশের কারণে সে বিরক্তি বোধ করে, ফলে তাকে অনুমতি দেয়া হয় যে, সে শুকনো ফলের বিনিময়ে গাছগুলো (এর ফল) ঐ ব্যক্তির নিকট হতে ক্রয় করে নিবে। মুহাম্মাদ ইবনু ইদরীস [ইমাম শাফিঈ (রহঃ)] বলেন, শুকনো খেজুর এর বিক্রি নগদ নগদ এবং মাপের মাধ্যমে হবে, অনুমান করে হবে না। (ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, ইমাম শফিঈ (রহঃ) এর মতের সমর্থন পাওয়া যায় সাহাল ইবনু হাসমা (রাঃ)-এর এ কথা থেকে “সুনির্দিষ্ট মাপের মাধ্যমে”। নাফি’ (রহঃ)-এর সূত্রে ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, মালিক কর্তৃক তার বাগান হতে একটি বা দুটি খেজুর গাছ দান করাকে আরাইয়া বলা হয়। সুফিয়ান ইব্‌নু হুসাইন (রহঃ) ইয়াযীদ (রহঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, আরাইয়া হলো কিছু সংখ্যক খেজুর গাছ গরীব মিসকীনদের দান করা হত, কিন্তু তারা খেজুর পাকা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারত না বিধায় তাদের অনুমতি দেয়া হত যে, তারা যে পরিমাণ খেজুরের ইচ্ছা, তা বিক্রি করে দিবে।

২১৯২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ ـ رضى الله عنهم ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَخَّصَ فِي الْعَرَايَا أَنْ تُبَاعَ بِخَرْصِهَا كَيْلاً‏.‏ قَالَ مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ وَالْعَرَايَا نَخَلاَتٌ مَعْلُومَاتٌ تَأْتِيهَا فَتَشْتَرِيهَا‏.‏

যায়দ ইব্‌নু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরাইয়ার ব্যাপারে অনুমতি দিয়েছেন যে, ওজনকৃত খেজুরের বিনিময়ে গাছের অনুমানকৃত খেজুর বিক্রি করা যেতে পারে। মূসা ইব্‌নু ‘উকবা (রহঃ) বলেন, আরাইয়া বলা হয়, বাগানে এসে কতগুলো নির্দিষ্ট গাছের খেজুর (শুকনা খেজুরের বদলে) ক্রয় করে নেয়া।

৩৪/৮৫. অধ্যায়ঃ
ব্যবহার উপযোগী হওয়ার আগেই ফল বেচা-কেনার বিবরণ।

২১৯৩
وَقَالَ اللَّيْثُ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، كَانَ عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ يُحَدِّثُ عَنْ سَهْلِ بْنِ أَبِي حَثْمَةَ الأَنْصَارِيِّ، مِنْ بَنِي حَارِثَةَ أَنَّهُ حَدَّثَهُ عَنْ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ النَّاسُ فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَتَبَايَعُونَ الثِّمَارَ، فَإِذَا جَدَّ النَّاسُ وَحَضَرَ تَقَاضِيهِمْ قَالَ الْمُبْتَاعُ إِنَّهُ أَصَابَ الثَّمَرَ الدُّمَانُ أَصَابَهُ مُرَاضٌ أَصَابَهُ قُشَامٌ ـ عَاهَاتٌ يَحْتَجُّونَ بِهَا ـ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمَّا كَثُرَتْ عِنْدَهُ الْخُصُومَةُ فِي ذَلِكَ ‏ “‏ فَإِمَّا لاَ فَلاَ يَتَبَايَعُوا حَتَّى يَبْدُوَ صَلاَحُ الثَّمَرِ ‏”‏‏.‏ كَالْمَشُورَةِ يُشِيرُ بِهَا لِكَثْرَةِ خُصُومَتِهِمْ‏.‏ وَأَخْبَرَنِي خَارِجَةُ بْنُ زَيْدِ بْنِ ثَابِتٍ أَنَّ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ لَمْ يَكُنْ يَبِيعُ ثِمَارَ أَرْضِهِ حَتَّى تَطْلُعَ الثُّرَيَّا فَيَتَبَيَّنَ الأَصْفَرُ مِنَ الأَحْمَرِ‏.‏

قَالَ أَبُو عَبْد اللَّهِ رَوَاهُ عَلِيُّ بْنُ بَحْرٍ حَدَّثَنَا حَكَّامٌ حَدَّثَنَا عَنْبَسَةُ عَنْ زَكَرِيَّاءَ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ سَهْلٍ عَنْ زَيْدٍ

লাইস (রহঃ) যাইদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সময়ে লোকেরা (গাছের) ফলের বেচা-কেনা করত। আবার যখন লোকদের ফল পাড়ার এবং তাদের মূল্য দেয়ার সময় হত, তখন ক্রেতা ফলে পোকা ধরেছে, নষ্ট হয়ে গিয়েছে, শুকিয়ে গিয়েছে এসব অনিষ্টকারী আপদের কথা উল্লেখ করে ঝগড়া করত। তখন এ ব্যাপারে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকটে অনেক অভিযোগ পেশ হতে লাগল, তখন তিনি বললেন, তোমরা যদি এ ধরণের বেচা কেনা বাদ দিতে না চাও তবে ফলের উপযোগিতা প্রকাশ পাবার পর তার বেচা কেনা করবে। অনেক অভিযোগ উত্থাপিত হবার কারণে তিনি এ কথাটি পরামর্শ স্বরূপ বলেছেন। রাবী বলেন, খারিজা ইব্‌নু যায়দ (রহঃ) আমাকে বলেছেন যে, যাইদ ইব্‌নু সাবিত (রাঃ) সুরাইয়া তারকা উদিত হবার পর ফলের হলুদ ও লালচে রঙের পূর্ণ প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত তাঁর বাগানের ফল বিক্রি করতেন না। আবূ ‘আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারি (রহঃ) বলেন, আলী ইব্‌নু বাহর (রহঃ) যায়দ (রাঃ) হতে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

২১৯৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ بَيْعِ الثِّمَارِ حَتَّى يَبْدُوَ صَلاَحُهَا، نَهَى الْبَائِعَ وَالْمُبْتَاعَ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফলের উপযোগিতা প্রকাশ হওয়ার আগে তা বিক্রি করতে ক্রেতা ও বিক্রেতাকে নিষেধ করেছেন।

২১৯৫
حَدَّثَنَا ابْنُ مُقَاتِلٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا حُمَيْدٌ الطَّوِيلُ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى أَنْ تُبَاعَ ثَمَرَةُ النَّخْلِ حَتَّى تَزْهُوَ‏.‏ قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ يَعْنِي حَتَّى تَحْمَرَّ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খেজুর ফল পোখতা হওয়ার আগে বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। আবূ ‘আবদুল্লাহ [ইমাম বুখারী (রহঃ)] বলেন, অর্থাৎ লালচে হওয়ার আগে।

২১৯৬
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ سَلِيمِ بْنِ حَيَّانَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مِينَا، قَالَ سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ نَهَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَنْ تُبَاعَ الثَّمَرَةُ حَتَّى تُشَقِّحَ‏.‏ فَقِيلَ مَا تُشَقِّحُ قَالَ تَحْمَارُّ وَتَصْفَارُّ وَيُؤْكَلُ مِنْهَا‏.‏

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফলের রং পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। রাবী বলেন, অর্থাৎ লালচে বর্ণের বা হলুদ বর্ণের না হওয়া পর্যন্ত এবং তা খাওয়ার যোগ্য না হওয়া পর্যন্ত।

৩৪/৮৬. অধ্যায়ঃ
খেজুর ব্যবহার উপযোগী হবার আগে তা বিক্রি করা।

২১৯৭
حَدَّثَنِي عَلِيُّ بْنُ الْهَيْثَمِ، حَدَّثَنَا مُعَلًّى، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا حُمَيْدٌ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ نَهَى عَنْ بَيْعِ الثَّمَرَةِ حَتَّى يَبْدُوَ صَلاَحُهَا، وَعَنِ النَّخْلِ حَتَّى يَزْهُوَ‏.‏ قِيلَ وَمَا يَزْهُو قَالَ يَحْمَارُّ أَوْ يَصْفَارُّ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফলের উপযোগিতা প্রকাশ হওয়ার আগে তা বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন এবং খেজুরের রং ধরার আগে (বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন)। জিজ্ঞেস করা হল, রং ধরার অর্থ কী? তিনি বলেন, লাল বর্ণ বা হলুদ বর্ণ ধারণ করা। আবূ ‘আবদুল্লাহ [ইমাম বুখারী (রহঃ)] বলেন, আমি মু’আল্লা ইবনু মানসূর (রহঃ) হতে হাদীস লিপিবদ্ধ করেছি। কিন্তু এ হাদীস তাঁর নিকট হতে লিখি নি।

৩৪/৮৭. অধ্যায়ঃ
ব্যবহার উপযোগী হওয়ার আগে যদি কেউ ফল বিক্রয় করে এবং কোন প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগে তা নষ্ট হয়ে যায় তাহলে বিক্রেতাকে সে ক্ষতির দায়িত্ব বহন করতে হবে।

২১৯৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ بَيْعِ الثِّمَارِ حَتَّى تُزْهِيَ‏.‏ فَقِيلَ لَهُ وَمَا تُزْهِي قَالَ حَتَّى تَحْمَرَّ‏.‏ فَقَالَ ‏ “‏ أَرَأَيْتَ إِذَا مَنَعَ اللَّهُ الثَّمَرَةَ، بِمَ يَأْخُذُ أَحَدُكُمْ مَالَ أَخِيهِ ‏”‏‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রং ধারণ করার আগে ফল বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন। জিজ্ঞেস করা হল, রং ধারণ করার অর্থ কী? তিনি বললেন, লাল বর্ণ ধারণ করা। পরে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, দেখ, যদি আল্লাহ তা’য়ালা ফল ধরা বন্ধ করে দেন, তবে তোমাদের কেউ (বিক্রেতা) কিসের বদলে তার ভাইয়ের মাল (ফলের মূল্য) নিবে?

২১৯৯
قَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ لَوْ أَنَّ رَجُلاً، ابْتَاعَ ثَمَرًا قَبْلَ أَنْ يَبْدُوَ صَلاَحُهُ، ثُمَّ أَصَابَتْهُ عَاهَةٌ، كَانَ مَا أَصَابَهُ عَلَى رَبِّهِ، أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لاَ تَتَبَايَعُوا الثَّمَرَ حَتَّى يَبْدُوَ صَلاَحُهَا، وَلاَ تَبِيعُوا الثَّمَرَ بِالتَّمْرِ ‏”‏‏.‏

ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন ব্যক্তি যদি ফলের উপযুক্ততা প্রকাশের পূর্বে তা ক্রয় করে, পরে তাতে মড়ক দেখা দেয়, তবে যা নষ্ট হবে তা মালিকের উপর বর্তাবে। [যুহরী (রহঃ)] বলেন, আমার নিকট সালিম ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) ইবনু ‘উমর (রাঃ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, উপযোগিতা প্রকাশ হওয়ার পূর্বে তোমরা ফল ক্রয় করবে না এবং শুকনো খেজুরের বিনিময়ে তাজা খেজুর বিক্রি করবে না।

৩৪/৮৮. অধ্যায়ঃ
নির্দিষ্ট মেয়াদে ধারে খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করা।

২২০০
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، قَالَ ذَكَرْنَا عِنْدَ إِبْرَاهِيمَ الرَّهْنَ فِي السَّلَفِ، فَقَالَ لاَ بَأْسَ بِهِ‏.‏ ثُمَّ حَدَّثَنَا عَنِ الأَسْوَدِ عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم اشْتَرَى طَعَامًا مِنْ يَهُودِيٍّ إِلَى أَجَلٍ، فَرَهَنَهُ دِرْعَهُ‏.‏

আ’মাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইবরাহীম (রহঃ)-এর কাছে বন্ধক রেখে বাকীতে ক্রয় করার ব্যাপারে আলোচনা করলাম। তিনি বললেন, এতে কোন দোষ নেই। এরপর তিনি আসওয়াদ (রহঃ) সূত্রে ‘আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দিষ্ট মেয়াদে (মূল্য বাকী রেখে) জনৈক ইয়াহূদীর নিকট হতে খাদ্য ক্রয় করেন এবং তাঁর বর্ম বন্ধক রাখেন।

৩৪/৮৯. অধ্যায়ঃ
উৎকৃষ্ট খেজুরের বিনিময়ে নষ্ট খেজুর বিক্রি করতে চাইলে।

২২০১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَبْدِ الْمَجِيدِ بْنِ سُهَيْلِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اسْتَعْمَلَ رَجُلاً عَلَى خَيْبَرَ، فَجَاءَهُ بِتَمْرٍ جَنِيبٍ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ أَكُلُّ تَمْرِ خَيْبَرَ هَكَذَا ‏”‏‏.‏ قَالَ لاَ وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّا لَنَأْخُذُ الصَّاعَ مِنْ هَذَا بِالصَّاعَيْنِ، وَالصَّاعَيْنِ بِالثَّلاَثَةِ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ لاَ تَفْعَلْ، بِعِ الْجَمْعَ بِالدَّرَاهِمِ، ثُمَّ ابْتَعْ بِالدَّرَاهِمِ جَنِيبًا ‏”‏‏.‏

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে খায়বারে তহসীলদার নিযুক্ত করেন। সে জানীব নামক (উত্তম) খেজুর নিয়ে উপস্থিত হলে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, খায়বারের সব খেজুর কি এ রকমের? সে বলল, না, আল্লাহর কসম, হে আল্লাহর রসূল! এরূপ নয়, বরং আমরা দু’ সা’ এর পরিবর্তে এ ধরণের এক সা’ খেজুর নিয়ে থাকি এবং তিন সা’ এর পরিবর্তে এক দু’ সা’। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এরূপ করবে না। বরং মিশ্রিত খেজুর দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করে দিরহাম দিয়ে জানীব খেজুর ক্রয় করবে।

২২০২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَبْدِ الْمَجِيدِ بْنِ سُهَيْلِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم اسْتَعْمَلَ رَجُلاً عَلَى خَيْبَرَ، فَجَاءَهُ بِتَمْرٍ جَنِيبٍ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ أَكُلُّ تَمْرِ خَيْبَرَ هَكَذَا ‏”‏‏.‏ قَالَ لاَ وَاللَّهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّا لَنَأْخُذُ الصَّاعَ مِنْ هَذَا بِالصَّاعَيْنِ، وَالصَّاعَيْنِ بِالثَّلاَثَةِ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ لاَ تَفْعَلْ، بِعِ الْجَمْعَ بِالدَّرَاهِمِ، ثُمَّ ابْتَعْ بِالدَّرَاهِمِ جَنِيبًا ‏”‏‏.‏

আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এক ব্যক্তিকে খায়বারে তহসীলদার নিযুক্ত করেন। সে জানীব নামক (উত্তম) খেজুর নিয়ে উপস্থিত হলে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, খায়বারের সব খেজুর কি এ রকমের? সে বলল, না, আল্লাহর কসম, হে আল্লাহর রসূল! এরূপ নয়, বরং আমরা দু’ সা’ এর পরিবর্তে এ ধরণের এক সা’ খেজুর নিয়ে থাকি এবং তিন সা’ এর পরিবর্তে এক দু’ সা’। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এরূপ করবে না। বরং মিশ্রিত খেজুর দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করে দিরহাম দিয়ে জানীব খেজুর ক্রয় করবে।

৩৪/৯০. অধ্যায়ঃ
স্ত্রী খেজুরের কাদিতে নর খেজুরের রেণু প্রবৃষ্ট করানো হয়েছে এরূপ খেজুর গাছের বিক্রেতা অথবা ফসলসহ জমি বিক্রেতা বা ঠিকা হিসাবে প্রদানকারীর বিবরণ।

২২০৩
قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ وَقَالَ لِي إِبْرَاهِيمُ أَخْبَرَنَا هِشَامٌ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِي مُلَيْكَةَ، يُخْبِرُ عَنْ نَافِعٍ، مَوْلَى ابْنِ عُمَرَ أَنَّ أَيُّمَا، نَخْلٍ بِيعَتْ قَدْ أُبِّرَتْ لَمْ يُذْكَرِ الثَّمَرُ، فَالثَّمَرُ لِلَّذِي أَبَّرَهَا، وَكَذَلِكَ الْعَبْدُ وَالْحَرْثُ‏.‏ سَمَّى لَهُ نَافِعٌ هَؤُلاَءِ الثَّلاَثَ‏.‏

ইবনু ‘উমর (রাঃ)-এর আযাদকৃত গোলাম নাফি’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তাবীরকৃত খেজুর গাছ ফলের উল্লেখ ব্যতীত বিক্রি করলে যে তাবীর [১৩] করেছে সে ফলের মালিক হবে। তেমনি গোলাম ও জমির ফসলও মালিকেরই থাকবে। রাবী নাফি’ (রহঃ) এই তিনটিরই উল্লেখ করছেন।






[১৩] অধিক ফলনের আশায় খেজুরের পুং খেজুর স্ত্রী খেজুর গাছের মধ্যে বিশেষ পদ্ধতিতে সংযোগ স্থাপন করাকে তাবীর বলা হয়।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

২২০৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ مَنْ بَاعَ نَخْلاً قَدْ أُبِّرَتْ فَثَمَرُهَا لِلْبَائِعِ، إِلاَّ أَنْ يَشْتَرِطَ الْمُبْتَاعُ ‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কেউ তাবীর করার পরে খেজুর গাছ বিক্রি করলে সে ফলের মালিক থাকবে, অবশ্য ক্রেতা যদি (ফল লাভের) শর্ত করে, তবে সে পাবে।

৩৪/৯১. অধ্যায়ঃ
মাঠের ফসল (যা এখনও কাটা হয়নি) ওজনকৃত খাদ্যের বদলে ফসল বিক্রি করা।

২২০৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْمُزَابَنَةِ أَنْ يَبِيعَ ثَمَرَ حَائِطِهِ إِنْ كَانَ نَخْلاً بِتَمْرٍ كَيْلاً، وَإِنْ كَانَ كَرْمًا أَنْ يَبِيعَهُ بِزَبِيبٍ كَيْلاً أَوْ كَانَ زَرْعًا أَنْ يَبِيعَهُ بِكَيْلِ طَعَامٍ، وَنَهَى عَنْ ذَلِكَ كُلِّهِ‏.‏

ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুযাবানা নিষেধ করেছেন, আর তা হলো বাগানের ফল বিক্রয় করা। খেজুর হলে মেপে শুকনো খেজুরের বদলে, আঙ্গুর হলে মেপে কিসমিসের বদলে, আর ফসল হলে মেপে খাদ্যের বদলে বিক্রি করা। তিনি এসব বিক্রি নিষেধ করেছেন।

৩৪/৯২. অধ্যায়ঃ
মূল শিকড়সহ খেজুর গাছ বিক্রি করা।

২২০৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ أَيُّمَا امْرِئٍ أَبَّرَ نَخْلاً ثُمَّ بَاعَ أَصْلَهَا، فَلِلَّذِي أَبَّرَ ثَمَرُ النَّخْلِ، إِلاَّ أَنْ يَشْتَرِطَهُ الْمُبْتَاعُ ‏”‏‏.‏

ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি খেজুর গাছে তাবীর করার পরে মূল গাছ বিক্রি করল, সে গাছের ফল যে তাবীর করেছে তারই থাকবে, অবশ্য ক্রেতা যদি ফলের শর্ত করে (তবে সে পাবে)।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]