সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস হিবা ও তার ফযীলত এবং এর প্রতি উৎসাহ প্রদান ২য় ভাগ হাদিস নং ২৬০২ – ২৬৩৬

৫১/২২ . অধ্যায়ঃ
জামা‘আতের জন্য এক ব্যক্তির দান।

আসমা (রাঃ) কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ এবং ইবনু আবূ ‘আতীক (রহঃ) -কে বলেছেন, আমি আমার বোন ‘আয়িশা (রাঃ)-এর নিকট হতে উত্তরাধিকারসূত্রে গানাহ নামক স্থানে কিছু সম্পত্তি পেয়েছি। আর মু‘আবিয়াহ (রাঃ) আমাকে এর পরিবর্তে আমাকে এক লাখ দিরহাম দিয়েছিলেন। এগুলো তোমাদের দু’জনের।

২৬০২
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ قَزَعَةَ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أُتِيَ بِشَرَابٍ فَشَرِبَ، وَعَنْ يَمِينِهِ غُلاَمٌ وَعَنْ يَسَارِهِ الأَشْيَاخُ فَقَالَ لِلْغُلاَمِ ‏ “‏ إِنْ أَذِنْتَ لِي أَعْطَيْتُ هَؤُلاَءِ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ مَا كُنْتُ لأُوثِرَ بِنَصِيبِي مِنْكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَحَدًا‏.‏ فَتَلَّهُ فِي يَدِهِ‏.‏

সাহ্‌ল ইবনু সা‘দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট কিছু পানীয় উপস্থিত করা হল। সেখান হতে কিছু তিনি নিজে পান করলেন। তাঁর ডান পার্শ্বে ছিল এক যুবক আর বাম পার্শ্বে ছিলেন বৃদ্ধগণ। তখন তিনি যুবককে বললেন, তুমি আমাকে অনুমতি দিলে এদেরকে আমি দিতে পারি। সে বলল, হে আল্লাহর রসূল! আপনার (বারকাত) হতে আমার প্রাপ্য অংশের ব্যাপারে আমি অন্য কাউকে অগ্রগণ্য করতে পারি না। তখন তিনি তার হাতে পাত্রটি সজোরে রেখে দিলেন।

৫১/২৩. অধ্যায়ঃ
দখলভুক্ত বা দখলভুক্ত নয় এবং বন্টিত বা বন্টিত নয় এমন সম্পদ দান করা।

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাঁর সহাবীগণ হাওয়াযিন গোত্রের নিকট হতে যে গনীমত লাভ করেছিলেন, তা বন্টিত না হওয়া সত্বেও তাদেরকে তা দান করে দিয়েছিলেন।

২৬০৩
حَدَّثَنَا ثَابِتٌ حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ عَنْ مُحَارِبٍ عَنْ جَابِرٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْمَسْجِدِ فَقَضَانِي وَزَادَنِي

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট মাসজিদে উপস্থিত হলাম, তিনি আমাকে মূল্য পরিশোধ করলেন এবং আরো বেশি দিলেন।

২৬০৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَارِبٍ، سَمِعْتُ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهما ـ يَقُولُ بِعْتُ مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بَعِيرًا فِي سَفَرٍ، فَلَمَّا أَتَيْنَا الْمَدِينَةَ قَالَ ‏ “‏ ائْتِ الْمَسْجِدَ فَصَلِّ رَكْعَتَيْنِ ‏”‏‏.‏ فَوَزَنَ ـ قَالَ شُعْبَةُ أُرَاهُ فَوَزَنَ لِي فَأَرْجَحَ، فَمَا زَالَ مِنْهَا شَىْءٌ حَتَّى أَصَابَهَا أَهْلُ الشَّأْمِ يَوْمَ الْحَرَّةِ‏.‏

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক সফরে আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট একটা উট বিক্রয় করলাম। মদীনায় ফিরে এসে তিনি আমাকে বললেন, মাসজিদে এস, দু’রাক‘আত সলাত আদায় কর। অতঃপর তিনি উটের দাম ওজন করে দিলেন। রাবী শু‘বা (রহঃ) বলেন, আমার মনে হয় তিনি বলেছিলেন, অতঃপর তিনি আমাকে ওজন করে উটের দাম দিলেন এবং বলেন, তিনি ওজনে প্রাপ্যের অধিক দিলেন। হার্‌রা যুদ্ধের সময় সিরিয়াবাসীর ছিনিয়ে নেয়ার আগে পর্যন্ত আমার নিকট ঐ মালের কিছু অবশিষ্ট ছিল।

২৬০৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أُتِيَ بِشَرَابٍ، وَعَنْ يَمِينِهِ غُلاَمٌ وَعَنْ يَسَارِهِ أَشْيَاخٌ، فَقَالَ لِلْغُلاَمِ ‏ “‏ أَتَأْذَنُ لِي أَنْ أُعْطِيَ هَؤُلاَءِ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ الْغُلاَمُ لاَ، وَاللَّهِ لاَ أُوثِرُ بِنَصِيبِي مِنْكَ أَحَدًا‏.‏ فَتَلَّهُ فِي يَدِهِ‏.‏

সাহ্‌ল ইবনু সা‘দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট কিছু পানীয় উপস্থিত করা হল। তখন তাঁর ডানপাশে ছিল এক যুবক আর বামপাশে ছিল কয়েকজন বৃদ্ধ। তিনি যুবককে বললেন, তুমি কি আমাকে এই পানীয় এদের দেয়ার অনুমতি দিবে? যুবক বলল, না, আল্লাহর কসম! আপনার বরকত হতে আমার প্রাপ্য অংশের ক্ষেত্রে আমি কাউকে অগ্রাধিকার দিব না। তখন তিনি পান পাত্র তার হাতে সজোরে রেখে দিলেন।

২৬০৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُثْمَانَ بْنِ جَبَلَةَ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبِي، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ سَلَمَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ لِرَجُلٍ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَيْنٌ فَهَمَّ بِهِ أَصْحَابُهُ، فَقَالَ ‏”‏ دَعُوهُ فَإِنَّ لِصَاحِبِ الْحَقِّ مَقَالاً‏.‏ وَقَالَ اشْتَرُوا لَهُ سِنًّا فَأَعْطُوهَا إِيَّاهُ ‏”‏‏.‏ فَقَالُوا إِنَّا لاَ نَجِدُ سِنًّا إِلاَّ سِنًّا هِيَ أَفْضَلُ مِنْ سِنِّهِ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَاشْتَرُوهَا فَأَعْطُوهَا إِيَّاهُ، فَإِنَّ مِنْ خَيْرِكُمْ أَحْسَنَكُمْ قَضَاءً ‏”‏‏.‏

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এক ব্যক্তির কিছু ঋণ ছিল। (তাগাদা করতে এসে সে অশোভনীয় কিছু শুরু করলে) সাহাবীগণ তাকে কিছু করতে চাইলেন। তিনি তাদের বললেন, তাকে ছেড়ে দাও, পাওনাদারের কিছু বলার হক আছে। তিনি তাদের আরও বললেন, তাকে এক বছর বয়সী একটি উট খরিদ করে দাও। সাহাবীগণ বললেন, আমরা তো তার দেয়া এক বছর বয়সের উটের মতো পাচ্ছিনা; বরং তার চেয়ে ভালো উট পাচ্ছি। তিনি বললেন, তবে তাই কিনে তাকে দিয়ে দাও। কেননা যে উত্তমরূপে ঋণ পরিশোধ করে, সে তোমাদের সর্বোত্তম ব্যক্তিদের মধ্যে। কিংবা তিনি বলেছেন, সে তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম।

৫১/২৪. অধ্যায়ঃ
একদল অন্য গোত্রকে বা এক ব্যক্তি কোন দলকে দান করলে তা বৈধ।

২৬০৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ مَرْوَانَ بْنَ الْحَكَمِ، وَالْمِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ، أَخْبَرَاهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ حِينَ جَاءَهُ وَفْدُ هَوَازِنَ مُسْلِمِينَ، فَسَأَلُوهُ أَنْ يَرُدَّ إِلَيْهِمْ أَمْوَالَهُمْ وَسَبْيَهُمْ فَقَالَ لَهُمْ ‏”‏ مَعِي مَنْ تَرَوْنَ، وَأَحَبُّ الْحَدِيثِ إِلَىَّ أَصْدَقُهُ، فَاخْتَارُوا إِحْدَى الطَّائِفَتَيْنِ إِمَّا السَّبْىَ وَإِمَّا الْمَالَ، وَقَدْ كُنْتُ اسْتَأْنَيْتُ ‏”‏‏.‏ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم انْتَظَرَهُمْ بِضْعَ عَشْرَةَ لَيْلَةً حِينَ قَفَلَ مِنَ الطَّائِفِ، فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم غَيْرُ رَادٍّ إِلَيْهِمْ إِلاَّ إِحْدَى الطَّائِفَتَيْنِ قَالُوا فَإِنَّا نَخْتَارُ سَبْيَنَا‏.‏ فَقَامَ فِي الْمُسْلِمِينَ فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّ إِخْوَانَكُمْ هَؤُلاَءِ جَاءُونَا تَائِبِينَ، وَإِنِّي رَأَيْتُ أَنْ أَرُدَّ إِلَيْهِمْ سَبْيَهُمْ، فَمَنْ أَحَبَّ مِنْكُمْ أَنْ يُطَيِّبَ ذَلِكَ فَلْيَفْعَلْ، وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يَكُونَ عَلَى حَظِّهِ حَتَّى نُعْطِيَهُ إِيَّاهُ مِنْ أَوَّلِ مَا يُفِيءُ اللَّهُ عَلَيْنَا فَلْيَفْعَلْ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ النَّاسُ طَيَّبْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ لَهُمْ‏.‏ فَقَالَ لَهُمْ ‏”‏ إِنَّا لاَ نَدْرِي مَنْ أَذِنَ مِنْكُمْ فِيهِ مِمَّنْ لَمْ يَأْذَنْ، فَارْجِعُوا حَتَّى يَرْفَعَ إِلَيْنَا عُرَفَاؤُكُمْ أَمْرَكُمْ ‏”‏‏.‏ فَرَجَعَ النَّاسُ فَكَلَّمَهُمْ عُرَفَاؤُهُمْ، ثُمَّ رَجَعُوا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرُوهُ أَنَّهُمْ طَيَّبُوا وَأَذِنُوا‏.‏ وَهَذَا الَّذِي بَلَغَنَا مِنْ سَبْىِ هَوَازِنَ هَذَا آخِرُ قَوْلِ الزُّهْرِيِّ، يَعْنِي فَهَذَا الَّذِي بَلَغَنَا‏.‏

মারওয়ান ইবনু হাকাম (রহঃ) ও মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হাওয়াযিন গোত্রের লোকেরা ইসলাম গ্রহণের পর প্রতিনিধি হিসাবে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এল এবং তাদের সম্পদ ও যুদ্ধবন্দী ফিরিয়ে দেয়ার আবেদন জানাল। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে বললেন, তোমরা দেখছ আমার সঙ্গে আরো লোক আছে। আমার নিকট সত্য কথা হল অধিক প্রিয়। তোমরা যুদ্ধবন্দী অথবা সম্পদ এ দুয়ের একটি বেছে নাও। আমি তো তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। (রাবী বলেন) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তায়েফ হতে ফিরে প্রায় দশ রাত তাদের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। যখন তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’টির যে কোন একটিই শুধু তাদের ফিরিয়ে দিবেন, তখন তারা বলল, তবে তো আমরা আমাদের বন্দীদেরই পছন্দ করব। অতঃপর তিনি মুসলিমদের সামনে দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা করে বললেন, আম্মাবাদ। তোমাদের এই ভাইয়েরা তাওবা করে আমাদের নিকট এসেছে, আর আমি তাদেরকে তাদের বন্দী ফিরিয়ে দেয়া সঠিক মনে করছি, কাজেই তোমাদের মধ্যে যারা সন্তুষ্টচিত্তে এ সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া পছন্দ করে, তারা যেন তা করে। আর যারা নিজেদের অংশ পেতে পছন্দ করে এরূপভাবে যে, আল্লাহ আমাকে প্রথমে যে ফায় সম্পদ দান করবেন, তা হতে তাদের প্রাপ্য অংশ আদায় করে দিব, তারা যেন তা করে। সকলেই তখন বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমরা প্রসন্নচিত্তে তা মেনে নিলাম। তিনি তাদের বললেন, তোমাদের মধ্যে কারা অনুমতি দিলে আর কারা দিলে না, তা-তো আমি বুঝতে পারলাম না। কাজেই তোমরা ফিরে যাও। তোমাদের নেতারা তোমাদের মতামত আমার নিকট পেশ করবে। অতঃপর লোকেরা ফিরে গেল এবং তাদের নেতারা তাদের সঙ্গে আলোচনা করল। পরে তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট ফিরে এসে তাঁকে জানাল যে, প্রসন্নচিত্তে অনুমতি দিয়েছে। হাওয়াযিনের বন্দী সম্পর্কে আমাদের নিকট এতটুকুই পৌঁছেছে। আবু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, এই শেষ অংশটুকুই ইমাম যুহরী (রহঃ)-এর বক্তব্য।

২৬০৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، أَنَّ مَرْوَانَ بْنَ الْحَكَمِ، وَالْمِسْوَرَ بْنَ مَخْرَمَةَ، أَخْبَرَاهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ حِينَ جَاءَهُ وَفْدُ هَوَازِنَ مُسْلِمِينَ، فَسَأَلُوهُ أَنْ يَرُدَّ إِلَيْهِمْ أَمْوَالَهُمْ وَسَبْيَهُمْ فَقَالَ لَهُمْ ‏”‏ مَعِي مَنْ تَرَوْنَ، وَأَحَبُّ الْحَدِيثِ إِلَىَّ أَصْدَقُهُ، فَاخْتَارُوا إِحْدَى الطَّائِفَتَيْنِ إِمَّا السَّبْىَ وَإِمَّا الْمَالَ، وَقَدْ كُنْتُ اسْتَأْنَيْتُ ‏”‏‏.‏ وَكَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم انْتَظَرَهُمْ بِضْعَ عَشْرَةَ لَيْلَةً حِينَ قَفَلَ مِنَ الطَّائِفِ، فَلَمَّا تَبَيَّنَ لَهُمْ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم غَيْرُ رَادٍّ إِلَيْهِمْ إِلاَّ إِحْدَى الطَّائِفَتَيْنِ قَالُوا فَإِنَّا نَخْتَارُ سَبْيَنَا‏.‏ فَقَامَ فِي الْمُسْلِمِينَ فَأَثْنَى عَلَى اللَّهِ بِمَا هُوَ أَهْلُهُ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ أَمَّا بَعْدُ فَإِنَّ إِخْوَانَكُمْ هَؤُلاَءِ جَاءُونَا تَائِبِينَ، وَإِنِّي رَأَيْتُ أَنْ أَرُدَّ إِلَيْهِمْ سَبْيَهُمْ، فَمَنْ أَحَبَّ مِنْكُمْ أَنْ يُطَيِّبَ ذَلِكَ فَلْيَفْعَلْ، وَمَنْ أَحَبَّ أَنْ يَكُونَ عَلَى حَظِّهِ حَتَّى نُعْطِيَهُ إِيَّاهُ مِنْ أَوَّلِ مَا يُفِيءُ اللَّهُ عَلَيْنَا فَلْيَفْعَلْ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ النَّاسُ طَيَّبْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ لَهُمْ‏.‏ فَقَالَ لَهُمْ ‏”‏ إِنَّا لاَ نَدْرِي مَنْ أَذِنَ مِنْكُمْ فِيهِ مِمَّنْ لَمْ يَأْذَنْ، فَارْجِعُوا حَتَّى يَرْفَعَ إِلَيْنَا عُرَفَاؤُكُمْ أَمْرَكُمْ ‏”‏‏.‏ فَرَجَعَ النَّاسُ فَكَلَّمَهُمْ عُرَفَاؤُهُمْ، ثُمَّ رَجَعُوا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرُوهُ أَنَّهُمْ طَيَّبُوا وَأَذِنُوا‏.‏ وَهَذَا الَّذِي بَلَغَنَا مِنْ سَبْىِ هَوَازِنَ هَذَا آخِرُ قَوْلِ الزُّهْرِيِّ، يَعْنِي فَهَذَا الَّذِي بَلَغَنَا‏.‏

মারওয়ান ইবনু হাকাম (রহঃ) ও মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হাওয়াযিন গোত্রের লোকেরা ইসলাম গ্রহণের পর প্রতিনিধি হিসাবে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এল এবং তাদের সম্পদ ও যুদ্ধবন্দী ফিরিয়ে দেয়ার আবেদন জানাল। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে বললেন, তোমরা দেখছ আমার সঙ্গে আরো লোক আছে। আমার নিকট সত্য কথা হল অধিক প্রিয়। তোমরা যুদ্ধবন্দী অথবা সম্পদ এ দুয়ের একটি বেছে নাও। আমি তো তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। (রাবী বলেন) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তায়েফ হতে ফিরে প্রায় দশ রাত তাদের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। যখন তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেল যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’টির যে কোন একটিই শুধু তাদের ফিরিয়ে দিবেন, তখন তারা বলল, তবে তো আমরা আমাদের বন্দীদেরই পছন্দ করব। অতঃপর তিনি মুসলিমদের সামনে দাঁড়ালেন এবং আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা করে বললেন, আম্মাবাদ। তোমাদের এই ভাইয়েরা তাওবা করে আমাদের নিকট এসেছে, আর আমি তাদেরকে তাদের বন্দী ফিরিয়ে দেয়া সঠিক মনে করছি, কাজেই তোমাদের মধ্যে যারা সন্তুষ্টচিত্তে এ সিদ্ধান্ত মেনে নেয়া পছন্দ করে, তারা যেন তা করে। আর যারা নিজেদের অংশ পেতে পছন্দ করে এরূপভাবে যে, আল্লাহ আমাকে প্রথমে যে ফায় সম্পদ দান করবেন, তা হতে তাদের প্রাপ্য অংশ আদায় করে দিব, তারা যেন তা করে। সকলেই তখন বলল, হে আল্লাহর রসূল! আমরা প্রসন্নচিত্তে তা মেনে নিলাম। তিনি তাদের বললেন, তোমাদের মধ্যে কারা অনুমতি দিলে আর কারা দিলে না, তা-তো আমি বুঝতে পারলাম না। কাজেই তোমরা ফিরে যাও। তোমাদের নেতারা তোমাদের মতামত আমার নিকট পেশ করবে। অতঃপর লোকেরা ফিরে গেল এবং তাদের নেতারা তাদের সঙ্গে আলোচনা করল। পরে তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট ফিরে এসে তাঁকে জানাল যে, প্রসন্নচিত্তে অনুমতি দিয়েছে। হাওয়াযিনের বন্দী সম্পর্কে আমাদের নিকট এতটুকুই পৌঁছেছে। আবু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, এই শেষ অংশটুকুই ইমাম যুহরী (রহঃ)-এর বক্তব্য।

৫১/২৫. অধ্যায়ঃ
সঙ্গীদের মাঝে কাউকে হাদিয়া করা হলে সেই তার হকদার।

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে উল্লেখ করা হয়েছে, সঙ্গীরাও শরীক থাকবে, কিন্তু তা সহিহ নয়।

২৬০৯
حَدَّثَنَا ابْنُ مُقَاتِلٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ كُهَيْلٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ أَخَذَ سِنًّا فَجَاءَ صَاحِبُهُ يَتَقَاضَاهُ فَقَالَ ‏”‏ إِنَّ لِصَاحِبِ الْحَقِّ مَقَالاً ‏”‏‏.‏ ثُمَّ قَضَاهُ أَفْضَلَ مِنْ سِنِّهِ وَقَالَ ‏”‏ أَفْضَلُكُمْ أَحْسَنُكُمْ قَضَاءً ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দিষ্ট বয়সের একটি উট ধার নিয়েছিলেন। কিছুদিন পর উটের মালিক এসে তাগাদা দিল। সাহাবীগণও তাকে কিছু বললেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, পাওনাদারদের কিছু বলার হক আছে। অতঃপর তিনি তাকে তার উটের চেয়ে উত্তম উট পরিশোধ করলেন এবং বললেন, ভালভাবে ঋণ পরিশোধকারী ব্যক্তিই তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম।

২৬১০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ عَمْرٍو، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّهُ كَانَ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ فَكَانَ عَلَى بَكْرٍ لِعُمَرَ صَعْبٍ، فَكَانَ يَتَقَدَّمُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَيَقُولُ أَبُوهُ يَا عَبْدَ اللَّهِ لاَ يَتَقَدَّمِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَحَدٌ‏.‏ فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ بِعْنِيهِ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ عُمَرُ هُوَ لَكَ‏.‏ فَاشْتَرَاهُ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ هُوَ لَكَ يَا عَبْدَ اللَّهِ، فَاصْنَعْ بِهِ مَا شِئْتَ ‏”‏‏.‏

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক সফরে তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলেন এবং ইবনু ‘উমার (রাঃ) একটি বেয়াড়া উটে সাওয়ার ছিলেন। উটটি বারবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আগে যাচ্ছিল। আর তার পিতা ‘উমার (রাঃ) তাকে বলছিলেন, হে ‘আবদুল্লাহ! নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আগে চলা কারো জন্য উচিত নয়। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘উমার (রাঃ)-কে বললেন এটা আমার নিকট বিক্রয় কর। ‘উমার (রাঃ) বললেন, এটাতো আপনার। তখন তিনি সেটা ক্রয় করে বললেন, হে ‘আবদুল্লাহ! এটা তোমার। কাজেই এটা দিয়ে তুমি যা ইচ্ছা তাই করতে পার।

৫১/২৬. অধ্যায়ঃ
উষ্ট্রারোহীকে সেই উষ্ট্রটি দান করা হলে তা বৈধ।

২৬১১
وَقَالَ الْحُمَيْدِيُّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا عَمْرٌو، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فِي سَفَرٍ، وَكُنْتُ عَلَى بَكْرٍ صَعْبٍ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِعُمَرَ ‏”‏ بِعْنِيهِ ‏”‏‏.‏ فَابْتَاعَهُ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ هُوَ لَكَ يَا عَبْدَ اللَّهِ ‏”‏‏.‏

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম আর আমি (আমার পিতার) একটি বেয়াড়া উটের উপর সাওয়ার ছিলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উমরকে বললেন, এটা আমার নিকট বেচে দাও। তিনি তা বেচে দিলেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে বললেন, হে ‘আবদুল্লাহ, এটা তোমার।

৫১/২৭. অধ্যায়ঃ
পরিধেয় হিসেবে অপছন্দনীয় কিছু হাদিয়া দেয়া।

২৬১২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ رَأَى عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ حُلَّةً سِيَرَاءَ عِنْدَ باب الْمَسْجِدِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ لَوِ اشْتَرَيْتَهَا فَلَبِسْتَهَا يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَلِلْوَفْدِ قَالَ ‏”‏ إِنَّمَا يَلْبَسُهَا مَنْ لاَ خَلاَقَ لَهُ فِي الآخِرَةِ ‏”‏‏.‏ ثُمَّ جَاءَتْ حُلَلٌ فَأَعْطَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عُمَرَ مِنْهَا حُلَّةً، وَقَالَ أَكَسَوْتَنِيهَا وَقُلْتَ فِي حُلَّةِ عُطَارِدٍ مَا قُلْتَ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ إِنِّي لَمْ أَكْسُكَهَا لِتَلْبَسَهَا ‏”‏‏.‏ فَكَسَا عُمَرُ أَخًا لَهُ بِمَكَّةَ مُشْرِكًا‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) মাসজিদের দ্বার প্রান্তে একজোড়া রেশমী বস্ত্র দেখে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! এটা যদি আপনি ক্রয় করে নেন এবং তা জুমু‘আর দিনে ও প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় পরিধান করতেন। তখন তিনি বললেন, এতো সে-ই পরিধান করে, আখিরাতে যার কোন অংশ নেই। পরে কিছু রেশমী জোড়া আসলে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখান থেকে ‘উমার (রাঃ) -কে এক জোড়া দান করলেন। তখন ‘উমার (রাঃ) বললেন, আপনি এটা আমাকে পরিধান করতে দিলেন অথচ (আগে) রেশমী কাপড় সম্পর্কে আপনি যা বলার বলেছিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমিতো এটা তোমাকে পরিধানের জন্য দেইনি। তখন ‘উমার (রাঃ) তা মক্কার তার এক মুশরিক ভাইকে দিয়ে দিলেন।

২৬১৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ أَبُو جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ أَتَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْتَ فَاطِمَةَ فَلَمْ يَدْخُلْ عَلَيْهَا، وَجَاءَ عَلِيٌّ فَذَكَرَتْ لَهُ ذَلِكَ فَذَكَرَهُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ إِنِّي رَأَيْتُ عَلَى بَابِهَا سِتْرًا مَوْشِيًّا ‏”‏‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ مَا لِي وَلِلدُّنْيَا ‏”‏‏.‏ فَأَتَاهَا عَلِيٌّ فَذَكَرَ ذَلِكَ لَهَا فَقَالَتْ لِيَأْمُرْنِي فِيهِ بِمَا شَاءَ‏.‏ قَالَ تُرْسِلُ بِهِ إِلَى فُلاَنٍ‏.‏ أَهْلِ بَيْتٍ بِهِمْ حَاجَةٌ‏.‏

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা ফাতিমাহ্‌র ঘরে গেলেন। কিন্তু ভিতরে প্রবেশ করলেন না। ‘আলী (রাঃ) ঘরে এলে ফাতিমাহ্‌ (রাঃ) তাকে ঘটনা জানালেন। তিনি আবার নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বিষয়টি নিবেদন করলেন। তখন তিনি বললেন, আমি তার দরজায় নকশা করা পর্দা ঝুলতে দেখেছি। দুনিয়ার চাকচিক্যের সঙ্গে আমার কী সম্পর্ক? ‘আলী (রাঃ) ফাতিমাহ্‌র নিকট এসে ঘটনা খুলে বললেন। ফাতিমাহ (রাঃ) বললেন, তিনি আমাকে এ সম্পর্কে যা ইচ্ছা নির্দেশ দিন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, অমুক পরিবারের অমুকের নিকট এটা পাঠিয়ে দাও; তাদের প্রয়োজন আছে।

২৬১৪
حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ مَيْسَرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ زَيْدَ بْنَ وَهْبٍ، عَنْ عَلِيٍّ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ أَهْدَى إِلَىَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حُلَّةً سِيَرَاءَ فَلَبِسْتُهَا، فَرَأَيْتُ الْغَضَبَ فِي وَجْهِهِ، فَشَقَقْتُهَا بَيْنَ نِسَائِي‏.‏

আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে একজোড়া রেশমী কাপড় দিলেন। আমি তা পরিধান করলাম। তাঁর মুখমণ্ডলে গোস্বার ভাব দেখতে পেয়ে আমি আমার মহিলাদের মাঝে তা ভাগ করে দিয়ে দিলাম।

৫১/২৮. অধ্যায়ঃ
মুশরিকদের দেয়া হাদিয়া গ্রহণ করা

আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন যে, ইবরাহীম (আঃ) (স্ত্রী) সারাকে নিয়ে হিজরাতকালে এমন এক জনপদে উপস্থিত হলেন, যেখানে ছিল এক বাদশাহ অথবা রাবী বলেন, প্রতাপশালী শাসক। সে বলল, সারার কাছে উপহার স্বরূপ হাজিরাকে দিয়ে দাও। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বিষ মিশানো বকরীর গোশত হাদিয়া দেয়া হয়েছিল। আবু হুমাইদ (রহঃ) বলেন, আয়িলার শাসক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে একটি সাদা খচ্চর উপহার দিয়েছিলেন, প্রতিদানে তিনি তাকে একটি চাদর দিয়েছিলেন আর সেখানকার শাসক হিসাবে তাকে নিয়োগ পত্র লিখে দিয়েছিলেন।

২৬১৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ قَتَادَةَ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ أُهْدِيَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم جُبَّةُ سُنْدُسٍ، وَكَانَ يَنْهَى عَنِ الْحَرِيرِ، فَعَجِبَ النَّاسُ مِنْهَا فَقَالَ ‏ “‏ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَمَنَادِيلُ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ فِي الْجَنَّةِ أَحْسَنُ مِنْ هَذَا ‏”‏‏.‏ وَقَالَ سَعِيدٌ عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ، إِنَّ أُكَيْدِرَ دُومَةَ أَهْدَى إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে একটি রেশমী জুব্বা হাদিয়া দেয়া হল। অথচ তিনি রেশমী কাপড় ব্যবহার করতে নিষেধ করতেন। এতে সহাবীগন খুশী হলেন। তখন তিনি বললেন, সেই সত্তার কসম! যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ, জান্নাতে সা‘দ ইবনু মু‘আযের রুমালগুলো এর চেয়ে উৎকৃষ্ট।

২৬১৬
See previous Hadith

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

দুমার উকাইদির নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে হাদিয়া দিয়েছিলেন।

২৬১৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ هِشَامِ بْنِ زَيْدٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ يَهُودِيَّةً، أَتَتِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بِشَاةٍ مَسْمُومَةٍ، فَأَكَلَ مِنْهَا فَجِيءَ بِهَا فَقِيلَ أَلاَ نَقْتُلُهَا‏.‏ قَالَ ‏ “‏ لاَ ‏”‏‏.‏ فَمَا زِلْتُ أَعْرِفُهَا فِي لَهَوَاتِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ইয়াহূদী মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমতে বিষ মিশানো বকরী নিয়ে এল। সেখান হতে কিছু অংশ তিনি খেলেন, অতঃপর মহিলাকে হাযির করা হল। তখন বলা হল, আপনি কি একে হত্যা করবেন না? তিনি বললেন, না। আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর তালুতে আমি বরাবরই বিষক্রিয়ার আলামত দেখতে পেতাম।

২৬১৮
حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا الْمُعْتَمِرُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي بَكْرٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثَلاَثِينَ وَمِائَةً فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ هَلْ مَعَ أَحَدٍ مِنْكُمْ طَعَامٌ ‏”‏‏.‏ فَإِذَا مَعَ رَجُلٍ صَاعٌ مِنْ طَعَامٍ أَوْ نَحْوُهُ، فَعُجِنَ ثُمَّ جَاءَ رَجُلٌ مُشْرِكٌ مُشْعَانٌّ طَوِيلٌ بِغَنَمٍ يَسُوقُهَا، فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ بَيْعًا أَمْ عَطِيَّةً ـ أَوْ قَالَ ـ أَمْ هِبَةً ‏”‏‏.‏ قَالَ لاَ، بَلْ بَيْعٌ‏.‏ فَاشْتَرَى مِنْهُ شَاةً، فَصُنِعَتْ وَأَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِسَوَادِ الْبَطْنِ أَنْ يُشْوَى، وَايْمُ اللَّهِ مَا فِي الثَّلاَثِينَ وَالْمِائَةِ إِلاَّ قَدْ حَزَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَهُ حُزَّةً مِنْ سَوَادِ بَطْنِهَا، إِنْ كَانَ شَاهِدًا أَعْطَاهَا إِيَّاهُ، وَإِنْ كَانَ غَائِبًا خَبَأَ لَهُ، فَجَعَلَ مِنْهَا قَصْعَتَيْنِ، فَأَكَلُوا أَجْمَعُونَ، وَشَبِعْنَا، فَفَضَلَتِ الْقَصْعَتَانِ، فَحَمَلْنَاهُ عَلَى الْبَعِيرِ‏.‏ أَوْ كَمَا قَالَ‏.‏

‘আবদুর রহমান ইবনু আবূ বক্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সফরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে আমরা একশ’ ত্রিশজন ব্যক্তি ছিলাম। সে সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের কারো সঙ্গে কি খাবার আছে? দেখা গেল, এক ব্যক্তির সঙ্গে এক সা’ কিংবা তার কমবেশী পরিমাণ খাদ্য আছে। সে আটা গোলানো হল। অতঃপর দীর্ঘ দেহী এলোমেলো চুলওয়ালা এক মুশরিক এক পাল বকরী হাঁকিয়ে নিয়ে এল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন- বিক্রি করবে, না উপহার দিবে? সে বলল : না, বরং বিক্রি করব। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার নিকট হতে একটা বকরী কিনে নিলেন। সেটাকে যব্‌হ করা হল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বকরীর কলিজা ভুনা করার আদেশ দিলেন। আল্লাহর কসম! একশ’ ত্রিশজনের প্রত্যেককে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেই কলিজার কিছু কিছু করে দিলেন। উপস্থিতদের হাতে দিলেন; আর অনুপস্থিত ছিল তার জন্য তুলে রাখলেন। অতঃপর দু’টি পাত্রে তিনি গোশত ভাগ করে রাখলেন। সবাই পরিতৃপ্ত হয়ে খেল। আর উভয় পাত্রে কিছু উদ্বৃত্ত রয়ে গেল। সেগুলো আমরা উটের পিঠে উঠিয়ে নিলাম। অথবা রাবী যা বললেন।

৫১/২৯. অধ্যায়ঃ
মুশরিকদেরকে হাদিয়া প্রদান করা

আল্লাহ তা‘আলার ইরশাদ : (মুশরিকদের মধ্যে) দ্বীনের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তোমাদেরকে নিজ দেশ থেকে বের করে দেয়নি, তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়ণদেরকে ভালোবাসেন। (সূরা আল-মুমতাহিনা : ৮)

২৬১৯
حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ رَأَى عُمَرُ حُلَّةً عَلَى رَجُلٍ تُبَاعُ فَقَالَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ابْتَعْ هَذِهِ الْحُلَّةَ تَلْبَسْهَا يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَإِذَا جَاءَكَ الْوَفْدُ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ إِنَّمَا يَلْبَسُ هَذَا مَنْ لاَ خَلاَقَ لَهُ فِي الآخِرَةِ ‏”‏‏.‏ فَأُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْهَا بِحُلَلٍ فَأَرْسَلَ إِلَى عُمَرَ مِنْهَا بِحُلَّةٍ‏.‏ فَقَالَ عُمَرُ كَيْفَ أَلْبَسُهَا وَقَدْ قُلْتَ فِيهَا مَا قُلْتَ قَالَ ‏”‏ إِنِّي لَمْ أَكْسُكَهَا لِتَلْبَسَهَا، تَبِيعُهَا أَوْ تَكْسُوهَا ‏”‏‏.‏ فَأَرْسَلَ بِهَا عُمَرُ إِلَى أَخٍ لَهُ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ قَبْلَ أَنْ يُسْلِمَ‏.‏

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘উমার (রাঃ) এক ব্যক্তিকে রেশমী বস্ত্র বিক্রি করতে দেখে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বললেন, এ জোড়াটি খরিদ করে নিন। জুমুআর দিনে এবং যখন আপনার নিকট কোন প্রতিনিধি দল আসে, তখন তা পরিধান করবেন। তিনি (নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এসব তো তারাই পরিধান করে, যাদের আখিরাতে কোন হিস্‌সা নেই। পরে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট কয়েক জোড়া রেশমী কাপড় এল। সেগুলো হতে একটি জোড়া তিনি ‘উমার (রাঃ)-এর নিকট পাঠালেন। তখন ‘উমার (রাঃ) বলেন, এটা আমি কিভাবে পরিধান করব। অথচ এ সম্পর্কে আপনি যা বলার বলেছেন। এতে তিনি বললেন, এটা তোমাকে আমি পরিধান করার জন্য দেইনি। হয় এটা বিক্রয় করে দিবে, নতুবা কাউকে দিয়ে দিবে। তখন ‘উমার (রাঃ) সেটা মক্কার বাসিন্দা তাঁর এক ভাইকে ইসলাম গ্রহণের আগে হাদিয়া পাঠালেন।

২৬২০
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ أَبِي بَكْرٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَتْ قَدِمَتْ عَلَىَّ أُمِّي وَهْىَ مُشْرِكَةٌ، فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، فَاسْتَفْتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قُلْتُ ‏{‏إِنَّ أُمِّي قَدِمَتْ‏}‏ وَهْىَ رَاغِبَةٌ، أَفَأَصِلُ أُمِّي قَالَ ‏ “‏ نَعَمْ صِلِي أُمَّكِ ‏”‏‏.‏

আসমা বিনতে আবূ বক্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যুগে আমার আম্মা মুশরিক অবস্থায় আমার নিকট এলেন। আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট ফাতওয়া চেয়ে বললাম, তিনি আমার প্রতি খুবই আকৃষ্ট, এমতাবস্থায় আমি কি তার সঙ্গে সদাচরণ করব? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তুমি তোমার মায়ের সঙ্গে সদাচরণ কর।

৫১/৩০. অধ্যায়ঃ
দান বা সদকা করা হলে তা ফিরিয়ে নেয়া কারো জন্য হালাল নয়।

২৬২১
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، وَشُعْبَةُ، قَالاَ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ الْعَائِدُ فِي هِبَتِهِ كَالْعَائِدِ فِي قَيْئِهِ ‏”‏‏.‏

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, দান করার পর যে তা ফিরিয়ে নেয়, সে ঐ লোকের মত, যে বমি করে তা আবার খায়।

২৬২২
حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْمُبَارَكِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لَيْسَ لَنَا مَثَلُ السَّوْءِ، الَّذِي يَعُودُ فِي هِبَتِهِ كَالْكَلْبِ يَرْجِعُ فِي قَيْئِهِ ‏”‏‏.‏

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, খারাপ উপমা দেয়া আমাদের জন্য শোভনীয় নয় তবু যে দান করে তা ফিরিয়ে নেয়, সে ঐ কুকুরের মতো, যে বমি করে তা আবার খায়।

২৬২৩
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ قَزَعَةَ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ أَبِيهِ، سَمِعْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ حَمَلْتُ عَلَى فَرَسٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، فَأَضَاعَهُ الَّذِي كَانَ عِنْدَهُ، فَأَرَدْتُ أَنْ أَشْتَرِيَهُ مِنْهُ، وَظَنَنْتُ أَنَّهُ بَائِعُهُ بِرُخْصٍ، فَسَأَلْتُ عَنْ ذَلِكَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏ “‏ لاَ تَشْتَرِهِ، وَإِنْ أَعْطَاكَهُ بِدِرْهَمٍ وَاحِدٍ، فَإِنَّ الْعَائِدَ فِي صَدَقَتِهِ كَالْكَلْبِ يَعُودُ فِي قَيْئِهِ ‏”‏‏.‏

‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক লোককে আমি আমার একটি ঘোড়া আল্লাহর রাস্তায় আরোহণের জন্য দান করলাম। ঘোড়াটি যার নিকট ছিল, সে তার চরম অযত্ন করল। তাই সেটা আমি তার নিকট হতে কিনে নিতে চাইলাম। আমার ধারণা ছিল যে, সে তা কম দামে বিক্রি করবে। এ সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেন, এক দিরহামের বিনিময়েও যদি সে তোমাকে তা দিতে রাজী হয় তবু তুমি তা ক্রয় কর না। কেননা, সদকা করার পর যে তা ফিরিয়ে নেয়, সে ঐ কুকুরের মত, যে বমি করে আবার তা খায়।

৫১/৩১. অধ্যায়ঃ
নাই

২৬২৪
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ، أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَهُمْ قَالَ أَخْبَرَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، أَنَّ بَنِي صُهَيْبٍ، مَوْلَى ابْنِ جُدْعَانَ ادَّعَوْا بَيْتَيْنِ وَحُجْرَةً، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَعْطَى ذَلِكَ صُهَيْبًا، فَقَالَ مَرْوَانُ مَنْ يَشْهَدُ لَكُمَا عَلَى ذَلِكَ قَالُوا ابْنُ عُمَرَ‏.‏ فَدَعَاهُ فَشَهِدَ لأَعْطَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صُهَيْبًا بَيْتَيْنِ وَحُجْرَةً‏.‏ فَقَضَى مَرْوَانُ بِشَهَادَتِهِ لَهُمْ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু উবায়দুল্লাহ ইবনু আবূ মুলায়কা (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইবনু জুদ‘আনের আযাদকৃত গোলাম সুহাইবের সন্তান, দু’টি ঘর ও একটি কামরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুহায়ব (রাঃ) -কে দান করেছিলেন বলে দাবী জানান। (মদীনার গভর্নর) মারওয়ান (রহঃ) তখন বললেন, এ ব্যাপারে তোমাদের পক্ষে কে সাক্ষী দিবে? তারা বলল, ইবনু ‘উমার (রাঃ)। মারওয়ান (রহঃ) তখন ইবনু ‘উমার (রাঃ) -কে ডেকে পাঠালেন। তিনি এ মর্মে সাক্ষ্য দিলেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সুহায়ব (রাঃ) -কে দু’টি ঘর ও একটি কামরা দান করেছিলেন। তাদের স্বপক্ষে ইবনু ‘উমারের সাক্ষ্য অনুযায়ী মারওয়ান ফায়সালা করলেন।

৫১/৩২. অধ্যায়ঃ
‘উমরা ও রুকবা [১] —- সম্পর্কে যা বলা হয়েছে।

— অর্থাৎ বাড়িটি তাকে (তার জীবনকাল পর্যন্ত) দান করে দিলাম। আল্লাহর বাণী : তোমাদেরকে তিনি তাতে বসবাস করিয়েছেন। (সূরা হূদ : ৬১)



[১] ‘উমরা : কাউকে কোন জিনিস দান করার সময় বলা যে, তোমার জীবন পর্যন্ত এটি তোমাকে দিলাম। রুকবা : অর্থ এই শর্তে কাউকে বাড়ীতে বসবাস করতে দেয়া যে দাতা ও গ্রহীতার মধ্যে দীর্ঘায়ু হবে, সে-ই এই বাড়ীর মালিক হবে।

২৬২৫
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ يَحْيَى، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ جَابِرٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَضَى النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِالْعُمْرَى أَنَّهَا لِمَنْ وُهِبَتْ لَهُ‏.‏

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘উমরাহ (বস্তু) সম্পর্কে ফায়সালা দিয়েছেন যে, যাকে দান করা হয়েছে, সে-ই সেটার মালিক হবে।

২৬২৬
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، قَالَ حَدَّثَنِي النَّضْرُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ بَشِيرِ بْنِ نَهِيكٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ الْعُمْرَى جَائِزَةٌ ‏”‏‏.‏ وَقَالَ عَطَاءٌ حَدَّثَنِي جَابِرٌ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘উমরাহ বৈধ। ‘আতা (রহঃ) বলেন, জাবির (রাঃ) আমাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একই রকম হাদীস শুনিয়েছেন।

৫১/৩৩. অধ্যায়ঃ
মানুষের কাছ থেকে যে ব্যক্তি ঘোড়া, চতুষ্পদ জন্তু বা অন্য কোন কিছু ধার নেয়।

২৬২৭
حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسًا، يَقُولُ كَانَ فَزَعٌ بِالْمَدِينَةِ فَاسْتَعَارَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَرَسًا مِنْ أَبِي طَلْحَةَ يُقَالُ لَهُ الْمَنْدُوبُ، فَرَكِبَ فَلَمَّا رَجَعَ قَالَ ‏ “‏ مَا رَأَيْنَا مِنْ شَىْءٍ، وَإِنْ وَجَدْنَاهُ لَبَحْرًا ‏”‏‏.‏

ক্বাতাদাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আনাস (রাঃ) -কে বলতে শুনেছি, মদীনায় একবার শত্রুর আক্রমণের ভয় ছড়িয়ে পড়ল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন আবূ ত্বলহা (রাঃ)-এর নিকট হতে একটি ঘোড়া ধার নিলেন এবং তাতে সাওয়ার হলেন। ঘোড়াটির নাম ছিল মানদূব। অতঃপর তিনি ঘোড়াটিতে টহল দিয়ে ফিরে এসে বললেন, কিছুই তো দেখতে পেলাম না, তবে এই ঘোড়াটিকে আমি সমুদ্রের তরঙ্গের মতো পেয়েছি।

৫১/৩৪. অধ্যায়ঃ
বাসর সজ্জার উদ্দেশে নব দম্পতির কিছু ধার নেয়া।

২৬২৮
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ أَيْمَنَ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، دَخَلْتُ عَلَى عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ وَعَلَيْهَا دِرْعُ قِطْرٍ ثَمَنُ خَمْسَةِ دَرَاهِمَ، فَقَالَتِ ارْفَعْ بَصَرَكَ إِلَى جَارِيَتِي، انْظُرْ إِلَيْهَا فَإِنَّهَا تُزْهَى أَنْ تَلْبَسَهُ فِي الْبَيْتِ، وَقَدْ كَانَ لِي مِنْهُنَّ دِرْعٌ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، فَمَا كَانَتِ امْرَأَةٌ تُقَيَّنُ بِالْمَدِينَةِ إِلاَّ أَرْسَلَتْ إِلَىَّ تَسْتَعِيرُهُ‏.‏

আয়মান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘আয়িশা (রাঃ)-এর নিকট আমি হাযির হলাম। তাঁর গায়ে তখন পাঁচ দিরহাম মূল্যের মোটা কাপড়ের কামিজ ছিল। তিনি আমাকে বললেন, আমার এ বাঁদীটার দিকে তাকাও, ঘরের ভিতরে এটা পরতে সে অপছন্দ করে। অথচ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যামানায় মদীনার মেয়েদের মধ্যে আমারই শুধু একটি কামিজ ছিল। মদীনায় কোন মেয়েকে বিয়ের সাজে সাজাতে গেলেই আমার নিকট কাউকে পাঠিয়ে ঐ কামিজটি চেয়ে নিত।

৫১/৩৫. অধ্যায়ঃ
দুগ্ধ পান করানোর জন্য সাময়িকভাবে উট-বকরি প্রদানের ফযীলত।

২৬২৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ نِعْمَ الْمَنِيحَةُ اللِّقْحَةُ الصَّفِيُّ مِنْحَةً، وَالشَّاةُ الصَّفِيُّ تَغْدُو بِإِنَاءٍ وَتَرُوحُ بِإِنَاءٍ ‏”‏‏.‏ حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ وَإِسْمَاعِيلُ عَنْ مَالِكٍ قَالَ نِعْمَ الصَّدَقَةُ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মানীহা হিসাবে অধিক দুগ্ধবতী উটনী ও অধিক দুগ্ধবতী বকরী কতই না উত্তম, যা সকাল বিকাল পাত্র ভর্তি দুধ দেয়।



(ইমাম বুখারী বলেন) ‘আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ ও ইসমাঈল (রহঃ) হাদীসটি মালিক (রহঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, এতে তিনি বলেন, সদকা হিসাবে কতই না উত্তম (দুগ্ধবতী উটনী, যা মানীহা হিসাবে দেয়া হয়)।

২৬৩০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ لَمَّا قَدِمَ الْمُهَاجِرُونَ الْمَدِينَةَ مِنْ مَكَّةَ وَلَيْسَ بِأَيْدِيهِمْ ـ يَعْنِي شَيْئًا ـ وَكَانَتِ الأَنْصَارُ أَهْلَ الأَرْضِ وَالْعَقَارِ، فَقَاسَمَهُمُ الأَنْصَارُ عَلَى أَنْ يُعْطُوهُمْ ثِمَارَ أَمْوَالِهِمْ كُلَّ عَامٍ وَيَكْفُوهُمُ الْعَمَلَ وَالْمَئُونَةَ، وَكَانَتْ أُمُّهُ أُمُّ أَنَسٍ أُمُّ سُلَيْمٍ كَانَتْ أُمَّ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، فَكَانَتْ أَعْطَتْ أُمُّ أَنَسٍ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عِذَاقًا فَأَعْطَاهُنَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أُمَّ أَيْمَنَ مَوْلاَتَهُ أُمَّ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدِ‏.‏ قَالَ ابْنُ شِهَابٍ فَأَخْبَرَنِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَمَّا فَرَغَ مِنْ قَتْلِ أَهْلِ خَيْبَرَ فَانْصَرَفَ إِلَى الْمَدِينَةِ، رَدَّ الْمُهَاجِرُونَ إِلَى الأَنْصَارِ مَنَائِحَهُمُ الَّتِي كَانُوا مَنَحُوهُمْ مِنْ ثِمَارِهِمْ فَرَدَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى أُمِّهِ عِذَاقَهَا، وَأَعْطَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أُمَّ أَيْمَنَ مَكَانَهُنَّ مِنْ حَائِطِهِ‏.‏ وَقَالَ أَحْمَدُ بْنُ شَبِيبٍ أَخْبَرَنَا أَبِي عَنْ يُونُسَ بِهَذَا، وَقَالَ مَكَانَهُنَّ مِنْ خَالِصِهِ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মক্কা হতে মদীনায় হিজরাতের সময় মুহাজিরদের হাকে কোন কিছু ছিল না। অন্যদিকে আনসারগণ ছিলেন জমি ও ভূসম্পত্তির অধিকারী। তাই আনসারগণ এই শর্তে মুহাজিরদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিলেন যে, প্রতি বছর তারা (আনসারগণ)-এর উৎপন্ন ফল ও ফসলের একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ তাদের (মুহাজিরগণের) দিবেন আর তারা এ কাজে শ্রম দিবে ও দায়-দায়িত্ব নিবে। আনাসের মা উম্মু সুলাইম (রাঃ) ছিলেন ‘আবদুল্লাহ ইবনু আবূ ত্বলহার মা। আনাসের মা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে (ফল ভোগ করার জন্য) কয়েকটি খেজুর গাছ দিয়েছিলেন। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেগুলো তাঁর আযাদকৃত বাঁদী ‘উসমান ইবনু যায়দের মা উম্মু আয়মানকে দান করে দিয়েছিলেন। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, আনাস (রাঃ) আমাকে বলেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খায়বারে ইয়াহূদীদের বিরুদ্ধে লড়াই শেষে মদীনায় ফিরে এলে মুহাজিরগণ আনসারদেরকে তাদের দানের সম্পত্তি ফিরিয়ে দিলেন; যেগুলো ফল ও ফসল ভোগ করার জন্য তারা মুহাজিরদের দান করেছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -ও তাঁর (আনাসের) মাকে তার খেজুর গাছগুলো ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উম্মু আয়মানকে ঐ গাছগুলোর পরিবর্তে নিজ বাগানের কিছু অংশ দান করলেন। আহমাদ ইবনু শাবীব (রহঃ) বলেন, আমার পিতা আমাদেরকে ইউনুসের সূত্রে এ হাদীসটি উল্লেখ করেছেন এবং — এর স্থলে — বলেছেন, যার অর্থ নিজ ভূমি থেকে।

২৬৩১
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، عَنْ حَسَّانَ بْنِ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي كَبْشَةَ السَّلُولِيِّ، سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو ـ رضى الله عنهما ـ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ أَرْبَعُونَ خَصْلَةً أَعْلاَهُنَّ مَنِيحَةُ الْعَنْزِ، مَا مِنْ عَامِلٍ يَعْمَلُ بِخَصْلَةٍ مِنْهَا رَجَاءَ ثَوَابِهَا وَتَصْدِيقَ مَوْعُودِهَا إِلاَّ أَدْخَلَهُ اللَّهُ بِهَا الْجَنَّةَ ‏”‏‏.‏ قَالَ حَسَّانُ فَعَدَدْنَا مَا دُونَ مَنِيحَةِ الْعَنْزِ مِنْ رَدِّ السَّلاَمِ، وَتَشْمِيتِ الْعَاطِسِ، وَإِمَاطَةِ الأَذَى عَنِ الطَّرِيقِ وَنَحْوِهِ، فَمَا اسْتَطَعْنَا أَنْ نَبْلُغَ خَمْسَ عَشْرَةَ خَصْلَةً‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু আম্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, চল্লিশটি স্বভাবের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট হল দুধ পান করার জন্য কাউকে বকরী দেয়া। কোন বান্দা যদি সওয়াবের আশায় এবং পুরস্কার দানের প্রতিশ্রুতিতে বিশ্বাস রেখে উক্ত চল্লিশ স্বভাবের যে কোন একটির উপরে আমল করে তবে আল্লাহ অবশ্যই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। হাস্‌সান (রহঃ) বলেন, দুধেল বকরী মানহি দেয়া ব্যতীত আর যে কয়টি স্বভাব আমরা গণনা করলাম, সেগুলো হল সালামের উত্তর দেয়া, হাঁচি দাতার হাঁচির উত্তরে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা, পথ হতে কষ্টদায়ক বস্তু সরানো ইত্যাদি। কিন্তু আমরা পনেরটি স্বভাবের অধিক গণনা করতে পারলাম না।

২৬৩২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، قَالَ حَدَّثَنِي عَطَاءٌ، عَنْ جَابِرٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَتْ لِرِجَالٍ مِنَّا فُضُولُ أَرَضِينَ فَقَالُوا نُؤَاجِرُهَا بِالثُّلُثِ وَالرُّبُعِ وَالنِّصْفِ‏.‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَنْ كَانَتْ لَهُ أَرْضٌ فَلْيَزْرَعْهَا أَوْ لِيَمْنَحْهَا أَخَاهُ، فَإِنْ أَبَى فَلْيُمْسِكْ أَرْضَهُ ‏”‏‏.‏

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে কিছু লোকের অতিরিক্ত ভূসম্পত্তি ছিল।। তারা পরস্পর পরামর্শ করে ঠিক করল যে, এগুলো তারা তিন ভাগের এক ভাগ, চার ভাগের এক ভাগ বা অর্ধেক হিসাবে ইজারা দিবে। এ কথা শুনে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কারো অতিরিক্ত জমি থাকলে হয় সে নিজেই চাষ করবে, কিংবা তার ভাইকে তা (চাষ করতে) দিবে। আর তা না করতে চাইলে তা নিজের কাছেই রেখে দিবে।

২৬৩৩
وَقَالَ مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، حَدَّثَنِي الزُّهْرِيُّ، حَدَّثَنِي عَطَاءُ بْنُ يَزِيدَ، حَدَّثَنِي أَبُو سَعِيدٍ، قَالَ جَاءَ أَعْرَابِيٌّ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَهُ عَنِ الْهِجْرَةِ، فَقَالَ ‏”‏ وَيْحَكَ إِنَّ الْهِجْرَةَ شَأْنُهَا شَدِيدٌ فَهَلْ لَكَ مِنْ إِبِلٍ ‏”‏ قَالَ نَعَمْ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَتُعْطِي صَدَقَتَهَا ‏”‏‏.‏ قَالَ نَعَمْ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَهَلْ تَمْنَحُ مِنْهَا شَيْئًا ‏”‏‏.‏ قَالَ نَعَمْ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَتَحْلُبُهَا يَوْمَ وِرْدِهَا ‏”‏‏.‏ قَالَ نَعَمْ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَاعْمَلْ مِنْ وَرَاءِ الْبِحَارِ، فَإِنَّ اللَّهَ لَنْ يَتِرَكَ مِنْ عَمَلِكَ شَيْئًا ‏”‏‏.‏

আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক বেদুঈন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে হিজরাত সম্পর্কে জানতে চাইল। তিনি তাকে বললেন, থাম! হিজরাতের ব্যাপার বড় কঠিন। বরং তোমার কি উট আছে? সে বলল, হ্যাঁ আছে। তিনি বললেন, তুমি কি এর সদকা আদায় করে থাক? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তুমি দুধ পানের জন্য এগুলো মানীহা হিসাবে দিয়ে থাক? সে বলল, হ্যাঁ। আবার তিনি প্রশ্ন করলেন, আচ্ছা! পানি পান করানোর উটগুলো দোহন কর কি? সে বলল, হ্যাঁ। তখন তিনি ইরশাদ করলেন, এ যদি হয় তাহলে সাগরের ওপারে হলেও অর্থাৎ তুমি যেখানে থাক ‘আমাল করতে থাক। আল্লাহ তোমার ‘আমালের প্রতিদানে কম করবেন না।

২৬৩৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ طَاوُسٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَعْلَمُهُمْ، بِذَاكَ ـ يَعْنِي ابْنَ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم خَرَجَ إِلَى أَرْضٍ تَهْتَزُّ زَرْعًا فَقَالَ ‏”‏ لِمَنْ هَذِهِ ‏”‏‏.‏ فَقَالُوا اكْتَرَاهَا فُلاَنٌ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ أَمَا إِنَّهُ لَوْ مَنَحَهَا إِيَّاهُ كَانَ خَيْرًا لَهُ مِنْ أَنْ يَأْخُذَ عَلَيْهَا أَجْرًا مَعْلُومًا

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার এক ‎জমিতে গেলেন, যার ফসলগুলো আন্দোলিত হচ্ছিল। তিনি জানতে চাইলেন, কার জমি? লোকেরা বলল, অমুক ‎ব্যক্তি এটি ইজারা নিয়েছে। তিনি বললেন, জমিটার নির্দিষ্ট ভাড়া গ্রহণ না করে সে যদি তাকে সাময়িকভাবে তা ‎দিয়ে দিত তবে সেটাই হত তার জন্য উত্তম।

৫১/৩৬. অধ্যায়ঃ
প্রচলিত অর্থে যদি কেউ বলে এই দাসীটি তোমার খিদমাতের জন্য দিলাম, এটা বৈধ।

কোন কোন ফিকাহ্ বিশারদ বলেন, এটা আরিয়ত হবে। তবে কেউ যদি বলে, এ কাপড়টি তোমাকে পরিধান করতে দিলাম, তবে তা হিবা হবে।

২৬৩৫
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ هَاجَرَ إِبْرَاهِيمُ بِسَارَةَ، فَأَعْطَوْهَا آجَرَ، فَرَجَعَتْ فَقَالَتْ أَشَعَرْتَ أَنَّ اللَّهَ كَبَتَ الْكَافِرَ وَأَخْدَمَ وَلِيدَةً ‏”‏‏.‏ وَقَالَ ابْنُ سِيرِينَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ فَأَخْدَمَهَا هَاجَرَ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বর্নিত গ্রন্থ হতে বলেছেন, ইবরাহীম (আঃ) (স্ত্রী) সারাকে সঙ্গে নিয়ে হিজরাত করলেন। লোকেরা সারার উদ্দেশে হাজিরাকে হাদিয়া দিলেন। তিনি ফিরে এসে (ইবরাহীমকে) বললেন, আপনি কি জেনেছেন, কাফিরদের আল্লাহ পরাস্ত করেছেন এবং সেবার জন্য একটি বালিকা দান করেছেন।



ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেন, আবূ হুরায়রা্ (রাঃ)-এর সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন, অতঃপর (সেই কাফির) সারার উদ্দেশে হাজিরাকে দান করল।

৫১/৩৭. অধ্যায়ঃ
আরোহনের নিমিত্তে অশ্ব দান ‘উমরাও (—) সদকা বলেই গণ্য হবে।

আর কোন কোন ফিকাহ্ বিশারদ বলেন, দাতা তা ফিরিয়ে নিতে পারে।

২৬৩৬
حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، قَالَ سَمِعْتُ مَالِكًا، يَسْأَلُ زَيْدَ بْنَ أَسْلَمَ قَالَ سَمِعْتُ أَبِي يَقُولُ، قَالَ عُمَرُ ـ رضى الله عنه ـ حَمَلْتُ عَلَى فَرَسٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، فَرَأَيْتُهُ يُبَاعُ، فَسَأَلْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏ “‏ لاَ تَشْتَرِ، وَلاَ تَعُدْ فِي صَدَقَتِكَ ‏”‏‏.

‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আমি জনৈক ব্যক্তিকে আল্লাহর পথে বাহন হিসাবে একটি ঘোড়া দিলাম। পরে তা বিক্রি হতে দেখে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেন, এটা ক্রয় করো না এবং সদকা করা মাল ফিরিয়ে নিও না।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]