৫৬/৭৭. অধ্যায়ঃ
অমুক লোক শহীদ এ কথা বলবে না।
আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্র পথে কে জিহাদ করছে, তা তিনিই ভাল জানেন এবং কে তাঁর পথে আহত হয়েছে আল্লাহ্ই অধিক অবগত আছেন।
২৮৯৮
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْتَقَى هُوَ وَالْمُشْرِكُوْنَ فَاقْتَتَلُوْا فَلَمَّا مَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى عَسْكَرِهِ وَمَالَ الْآخَرُوْنَ إِلَى عَسْكَرِهِمْ وَفِيْ أَصْحَابِ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ لَا يَدَعُ لَهُمْ شَاذَّةً وَلَا فَاذَّةً إِلَّا اتَّبَعَهَا يَضْرِبُهَا بِسَيْفِهِ فَقَالَ مَا أَجْزَأَ مِنَّا الْيَوْمَ أَحَدٌ كَمَا أَجْزَأَ فُلَانٌ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَمَا إِنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَقَالَ رَجُلٌ مِنْ الْقَوْمِ أَنَا صَاحِبُهُ قَالَ فَخَرَجَ مَعَهُ كُلَّمَا وَقَفَ وَقَفَ مَعَهُ وَإِذَا أَسْرَعَ أَسْرَعَ مَعَهُ قَالَ فَجُرِحَ الرَّجُلُ جُرْحًا شَدِيْدًا فَاسْتَعْجَلَ الْمَوْتَ فَوَضَعَ نَصْلَ سَيْفِهِ بِالأَرْضِ وَذُبَابَهُ بَيْنَ ثَدْيَيْهِ ثُمَّ تَحَامَلَ عَلَى سَيْفِهِ فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَخَرَجَ الرَّجُلُ إِلَى رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَشْهَدُ أَنَّكَ رَسُوْلُ اللهِ قَالَ وَمَا ذَاكَ قَالَ الرَّجُلُ الَّذِيْ ذَكَرْتَ آنِفًا أَنَّهُ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَأَعْظَمَ النَّاسُ ذَلِكَ فَقُلْتُ أَنَا لَكُمْ بِهِ فَخَرَجْتُ فِيْ طَلَبِهِ ثُمَّ جُرِحَ جُرْحًا شَدِيْدًا فَاسْتَعْجَلَ الْمَوْتَ فَوَضَعَ نَصْلَ سَيْفِهِ فِي الأَرْضِ وَذُبَابَهُ بَيْنَ ثَدْيَيْهِ ثُمَّ تَحَامَلَ عَلَيْهِ فَقَتَلَ نَفْسَهُ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ عِنْدَ ذَلِكَ إِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ الْجَنَّةِ فِيْمَا يَبْدُوْ لِلنَّاسِ وَهُوَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَعْمَلُ عَمَلَ أَهْلِ النَّارِ فِيْمَا يَبْدُوْ لِلنَّاسِ وَهُوَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ
সাহ্ল ইব্নু সা’দ সা’ঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও মুশ্রিকদের মধ্যে মুকাবিলা হয় এবং উভয়পক্ষ ভীষণ যুদ্ধে লিপ্ত হয়। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ সৈন্যদলের নিকট ফিরে এলেন, মুশ্রিকরাও নিজ সৈন্যদলে ফিরে গেল। সেই যুদ্ধে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গীদের মধ্যে এমন এক ব্যক্তি ছিল, যে কোন মুশ্রিককে একাকী দেখলেই তার পশ্চাতে ছুটত এবং তাকে তলোয়ার দিয়ে আক্রমণ করত। বর্ণনাকারী (সাহ্ল ইব্নু সা’দ (রাঃ) বলেন, আজ আমাদের কেউ অমুকের মত যুদ্ধ করতে পারেনি। তা শুনে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে তো জাহান্নামের অধিবাসী হবে। একজন সাহাবী বলে উঠলেন, আমি তার সঙ্গী হব। অতঃপর তিনি তার সঙ্গে বেরিয়ে পড়লেন, সে দাঁড়ালে তিনিও দাঁড়াতেন এবং সে শীঘ্র চললে তিনিও দ্রুত চলতেন। তিনি বললেন, এক সময় সে মারাত্মকভাবে আহত হলো এবং সে দ্রুত মৃত্যু কামনা করতে লাগল। এক সময় তলোয়ারের বাঁট মাটিতে রাখল এবং এর তীক্ষ্ণ দিক বুকে চেপে ধরে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করল। অনুসরণকারী ব্যক্তিটি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসলেন এবং বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি আল্লাহ্র রসূল। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কী ব্যাপার? তিনি বললেন, যে ব্যক্তিটি সম্পর্কে আপনি কিছুক্ষণ আগেই বলেছিলেন যে, সে জাহান্নামী হবে, তা শুনে সাহাবীগণ বিষয়টিকে অস্বাভাবিক মনে করলেন। আমি তাদের বললাম যে, আমি ব্যক্তিটির সম্পর্কে খবর তোমাদের জানাব। অতঃপর আমি তার পিছু পিছু বের হলাম। এক সময় লোকটি মারাত্মকভাবে আহত হয় এবং সে শীঘ্র মৃত্যু কামনা করতে থাকে। অতঃপর তার তলোয়ারের বাট মাটিতে রেখে এর তীক্ষ্ণধার বুকে চেপে ধরল এবং তার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করল। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন বললেন, ‘মানুষের বাহ্যিক বিচারে অনেক সময় কোন ব্যক্তি জান্নাতবাসীর মত ‘আমল করতে থাকে, আসলে সে জাহান্নামী হয় এবং তেমনি মানুষের বাহ্যিক বিচারে কোন ব্যক্তি জাহান্নামীর মত ‘আমল করলেও প্রকৃতপক্ষে সে জান্নাতী হয়।’
৫৬/৭৮. অধ্যায়ঃ
তীর চালনায় উৎসাহ দান
আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ “তোমরা প্র্রস্তুত রাখবে তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যা কিছু তোমাদের মধ্যে আছে অস্ত্রাদি ও অশ্ববাহিনী থেকে, এসব দিয়ে তোমরা ভীত-সন্ত্রস্ত করবে আল্লাহর শত্রুকে এবং তোমাদের শত্রুকে।” (আনফাল ৬০)
২৮৯৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا حَاتِمُ بْنُ إِسْمَاعِيْلَ عَنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِيْ عُبَيْدٍ قَالَ سَمِعْتُ سَلَمَةَ بْنَ الأَكْوَعِ قَالَ مَرَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى نَفَرٍ مِنْ أَسْلَمَ يَنْتَضِلُوْنَ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ارْمُوْا بَنِيْ إِسْمَاعِيْلَ فَإِنَّ أَبَاكُمْ كَانَ رَامِيًا ارْمُوْا وَأَنَا مَعَ بَنِيْ فُلَانٍ قَالَ فَأَمْسَكَ أَحَدُ الْفَرِيْقَيْنِ بِأَيْدِيْهِمْ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَا لَكُمْ لَا تَرْمُوْنَ قَالُوْا كَيْفَ نَرْمِيْ وَأَنْتَ مَعَهُمْ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ارْمُوْا فَأَنَا مَعَكُمْ كُلِّكُمْ
সালামা ইব্নু আকওয়া’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসলাম গোত্রের একদল লোকের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তারা তীরন্দাজী চর্চা করছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে বনূ ইসমাঈল! তোমরা তীর নিক্ষেপ করতে থাক। কেননা তোমাদের পূর্বপুরুষ দক্ষ তীরন্দাজ ছিলেন এবং আমি অমুক গোত্রের সঙ্গে আছি। রাবী বলেন, এ কথা শুনে দু’দলের এক দল তীর নিক্ষেপ বদ্ধ করে দিল। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমাদের কী হলো যে, তোমরা তীর নিক্ষেপ করছ না? তারা জবাব দিল, আমরা কিভাবে তীর নিক্ষেপ করতে পারি, অথচ আপনি তাদের সঙ্গে আছেন? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা তীর নিক্ষেপ করতে থাক, আমি তোমাদের সকলের সঙ্গে আছি।
২৯০০
حَدَّثَنَا أَبُوْ نُعَيْمٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الْغَسِيْلِ عَنْ حَمْزَةَ بْنِ أَبِيْ أُسَيْدٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ بَدْرٍ حِيْنَ صَفَفَنَا لِقُرَيْشٍ وَصَفُّوْا لَنَا إِذَا أَكْثَبُوكُمْ فَعَلَيْكُمْ بِالنَّبْلِ
আবূ উসাইদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বদরের দিন বলেছেন, আমরা যখন কুরাইশদের বিপক্ষে সারিবদ্ধ হয়েছিলাম এবং কুরাইশরা আমাদের বিপক্ষে সারিবদ্ধ হয়েছিল, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের বললেন, যখন তারা তোমাদের নিকটবর্তী হবে, তখন তোমরা তীর চালনা করবে। আবূ আব্দুল্লাহ (রহঃ) বলেন, —— এর অর্থ যখন অধিক সংখ্যক সমবেত হয়।
৫৬/৭৯. অধ্যায়ঃ
বর্শা বা তদ্রুপ কিছু নিয়ে খেলা করা।
২৯০১
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ مُوسَى أَخْبَرَنَا هِشَامٌ عَنْ مَعْمَرٍ عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ ابْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ بَيْنَا الْحَبَشَةُ يَلْعَبُوْنَ عِنْدَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِحِرَابِهِمْ دَخَلَ عُمَرُ فَأَهْوَى إِلَى الْحَصَى فَحَصَبَهُمْ بِهَا فَقَالَ دَعْهُمْ يَا عُمَرُ وَزَادَ عَلِيٌّ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ فِي الْمَسْجِدِ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার একদল হাব্শী নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বর্শা নিয়ে খেলা করছিলেন। এমন সময় ‘উমর (রাঃ) সেখানে এলেন এবং হাতে কাঁকর তুলে নিয়ে তাদের দিকে নিক্ষেপ করলেন। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে ‘উমর! তাদের করতে দাও। আলী……মা’মার (রহঃ) সূত্রে অতিরিক্ত বর্ণনা করেন, (এ ঘটনা) মসজিদে ঘটেছিল।
৫৬/৮০. অধ্যায়ঃ
ঢাল ও যে লোক তার সঙ্গীর ঢাল ব্যবহার করে।
২৯০২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا الأَوْزَاعِيُّ عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ طَلْحَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ كَانَ أَبُوْ طَلْحَةَ يَتَتَرَّسُ مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِتُرْسٍ وَاحِدٍ وَكَانَ أَبُوْ طَلْحَةَ حَسَنَ الرَّمْيِ فَكَانَ إِذَا رَمَى تَشَرَّفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَيَنْظُرُ إِلَى مَوْضِعِ نَبْلِهِ
আনাস ইব্নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবূ তাল্হা (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে একই ঢাল ব্যবহার করেছেন। আর আবূ তাল্হা (রাঃ) ছিলেন একজন ভালো তীরন্দাজ। তিনি যখন তীর ছুঁড়তেন, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাথা উঁচু করে তীর যে স্থানে পড়ত তা নযর রাখতেন।
২৯০৩
حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ عُفَيْرٍ حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ عَنْ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ سَهْلٍ قَالَ لَمَّا كُسِرَتْ بَيْضَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَلَى رَأْسِهِ وَأُدْمِيَ وَجْهُهُ وَكُسِرَتْ رَبَاعِيَتُهُ وَكَانَ عَلِيٌّ يَخْتَلِفُ بِالْمَاءِ فِي الْمِجَنِّ وَكَانَتْ فَاطِمَةُ تَغْسِلُهُ فَلَمَّا رَأَتْ الدَّمَ يَزِيْدُ عَلَى الْمَاءِ كَثْرَةً عَمَدَتْ إِلَى حَصِيْرٍ فَأَحْرَقَتْهَا وَأَلْصَقَتْهَا عَلَى جُرْحِهِ فَرَقَأَ الدَّمُ
সাহ্ল ইব্নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যুদ্ধের ময়দানে যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মাথার শিরস্ত্রাণ ভেঙ্গে গেল ও তাঁর মুখমন্ডল রক্তে ভিজে গেল এবং তাঁর সামনের দাঁত ভেঙ্গে গেল, ‘আলী (রাঃ) ঢালে ভরে ভরে পানি আনতেন এবং ফাতিমা (রাঃ) ক্ষতস্থান ধুয়ে দিচ্ছিলেন। যখন ফাতিমা (রাঃ) দেখলেন যে, পানির চেয়ে রক্ত পড়া আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন একখানা চাটাই নিয়ে তা পোড়ালেন এবং তার ছাই ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিলেন, তাতে রক্ত বন্ধ হয়ে গেল।
২৯০৪
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ عَمْرٍو عَنْ الزُّهْرِيِّ عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسِ بْنِ الْحَدَثَانِ عَنْ عُمَرَ قَالَ كَانَتْ أَمْوَالُ بَنِي النَّضِيْرِ مِمَّا أَفَاءَ اللهُ عَلَى رَسُوْلِهِ مِمَّا لَمْ يُوْجِفْ الْمُسْلِمُوْنَ عَلَيْهِ بِخَيْلٍ وَلَا رِكَابٍ فَكَانَتْ لِرَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم خَاصَّةً وَكَانَ يُنْفِقُ عَلَى أَهْلِهِ نَفَقَةَ سَنَتِهِ ثُمَّ يَجْعَلُ مَا بَقِيَ فِي السِّلَاحِ وَالْكُرَاعِ عُدَّةً فِيْ سَبِيْلِ اللهِ
‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, বনূ নযীরের সম্পদ আল্লাহ তা’আলা তাঁর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ‘ফায়’ হিসেবে দান করেছিলেন। এতে মুসলিমগণ অশ্ব বা সাওয়ারী চালনা করেনি। এ কারণে তা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য নির্দিষ্ট ছিল। এ সম্পদ থেকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পরিবারকে এক বছরের খরচ দিয়ে দিতেন এবং বাকী আল্লাহ্র রাস্তায় জিহাদের প্রস্তুতির জন্য হাতিয়ার ও ঘোড়া ইত্যাদিতে ব্যয় করতেন।
২৯০৫
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ سُفْيَانَ قَالَ حَدَّثَنِيْ سَعْدُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ شَدَّادٍ عَنْ عَلِيٍّ ح حَدَّثَنَا قَبِيْصَةُ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيْمَ قَالَ حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ شَدَّادٍ قَالَ سَمِعْتُ عَلِيًّا يَقُوْلُ مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يُفَدِّيْ رَجُلاً بَعْدَ سَعْدٍ سَمِعْتُهُ يَقُوْلُ ارْمِ فِدَاكَ أَبِيْ وَأُمِّي
‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সা’দ (রাঃ) ব্যতীত আর কারো জন্যও তাঁর পিতা-মাতাকে উৎসর্গ করার কথা বলতে দেখিনি। আমি তাঁকে বলতে শুনেছি, ‘তুমি তীর নিক্ষেপ কর, তোমার জন্য আমার পিতা-মাতা উৎসর্গ (ফিদা) হোক।’
৫৬/৮১. অধ্যায়ঃ
চামড়ার ঢাল সম্পর্কিত।
২৯০৬
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ ابْنُ وَهْبٍ قَالَ عَمْرٌو حَدَّثَنِيْ أَبُو الأَسْوَدِ عَنْ عُرْوَةَ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالت دَخَلَ عَلَيَّ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَعِنْدِيْ جَارِيَتَانِ تُغَنِّيَانِ بِغِنَاءِ بُعَاثَ فَاضْطَجَعَ عَلَى الْفِرَاشِ وَحَوَّلَ وَجْهَهُ فَدَخَلَ أَبُوْ بَكْرٍ فَانْتَهَرَنِيْ وَقَالَ مِزْمَارَةُ الشَّيْطَانِ عِنْدَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَأَقْبَلَ عَلَيْهِ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ دَعْهُمَا فَلَمَّا غَفَلَ غَمَزْتُهُمَا فَخَرَجَتَا
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার নিকট আসলেন। সে সময় দু’টি বালিকা বু’আস যুদ্ধের গৌরবগাঁথা গাচ্ছিল। তিনি এসেই বিছানায় গা এলিয়ে দিলেন এবং তাঁর মুখ ফিরিয়ে রাখলেন। এমন সময় আবূ বকর (রাঃ) এলেন এবং আমাকে ধমক দিলেন এবং বললেন, আল্লাহ্র রাসূলের নিকট শয়তানের বাজনা? আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর দিকে ফিরে বললেন ওদের ছেড়ে দাও। অতঃপর যখন তিনি অন্য দিকে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন আমি বালিকা দু’টিকে খোঁচা দিলাম। আর তারা বেরিয়ে গেল।
২৯০৭
قَالَتْ وَكَانَ يَوْمُ عِيْدٍ يَلْعَبُ السُّوْدَانُ بِالدَّرَقِ وَالْحِرَابِ فَإِمَّا سَأَلْتُ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَإِمَّا قَالَ تَشْتَهِيْنَ تَنْظُرِيْنَ فَقَالَتْ نَعَمْ فَأَقَامَنِيْ وَرَاءَهُ خَدِّيْ عَلَى خَدِّهِ وَيَقُوْلُ دُوْنَكُمْ بَنِيْ أَرْفِدَةَ حَتَّى إِذَا مَلِلْتُ قَالَ حَسْبُكِ قُلْتُ نَعَمْ قَالَ فَاذْهَبِيْ قَالَ أَبُوْ عَبْد اللهِ قَالَ أَحْمَدُ عَنْ ابْنِ وَهْبٍ فَلَمَّا غَفَلَ
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
ঈদের দিনে হাবশী লোকেরা ঢাল ও বর্শা নিয়ে খেলা করত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলেছিলাম কিংবা তিনিই আমাকে বলেছিলেন, তুমি কি দেখতে চাও? আমি বললাম, হ্যাঁ। অতঃপর তিনি আমাকে তাঁর পেছনে দাঁড় করালেন। আমার গাল তাঁর গালের উপর ছিল। তিনি বলছিলেন, হে বনূ আরফিদা, চালিয়ে যাও। যখন আমি ক্লান্ত হয়ে পড়লাম, তিনি আমাকে বললেন, যথেষ্ট হয়েছে? বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, তাহলে যাও। আহমদ (রহঃ) ইব্নু ওয়াহাব (রহঃ) সূত্রে বলেন, তিনি যখন অন্য মনস্ক হলেন।
৫৬/৮২. অধ্যায়ঃ
কোষে ও স্কন্ধে তরবারি বহন।
২৯০৮
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ عَنْ ثَابِتٍ عَنْ أَنَسٍ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَحْسَنَ النَّاسِ وَأَشْجَعَ النَّاسِ وَلَقَدْ فَزِعَ أَهْلُ الْمَدِيْنَةِ لَيْلَةً فَخَرَجُوْا نَحْوَ الصَّوْتِ فَاسْتَقْبَلَهُمْ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَقَدْ اسْتَبْرَأَ الْخَبَرَ وَهُوَ عَلَى فَرَسٍ لِأَبِيْ طَلْحَةَ عُرْيٍ وَفِيْ عُنُقِهِ السَّيْفُ وَهُوَ يَقُوْلُ لَمْ تُرَاعُوْا لَمْ تُرَاعُوْا ثُمَّ قَالَ وَجَدْنَاهُ بَحْرًا أَوْ قَالَ إِنَّهُ لَبَحْرٌ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সকল লোকের চেয়ে সুশ্রী ও সাহসী ছিলেন। এক রাতে মদীনার লোকেরা ভীত হয়ে শব্দের দিকে বের হলো। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁদের সামনে এলেন এমন অবস্থায় যে, তিনি শব্দের কারণ অন্বেষণ করে ফেলেছেন। তিনি আবূ ত্বলহার জিনবিহীন ঘোড়ার পিঠে সাওয়ার ছিলেন এবং তাঁর কাঁধে তরবারি ছিল। তিনি বলছিলেন, তোমরা ভীত হয়ো না। অতঃপর তিনি বললেন, আমি ঘোড়াটিকে সমুদ্রের মত গতিশীল পেয়েছি, অথবা তিনি বললেন, এটি সমুদ্র।
৫৬/৮৩. অধ্যায়ঃ
তলোয়ার স্বর্ণ-রৌপ্যে খচিতকরণ।
২৯০৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللهِ أَخْبَرَنَا الأَوْزَاعِيُّ قَالَ سَمِعْتُ سُلَيْمَانَ بْنَ حَبِيْبٍ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا أُمَامَةَ يَقُوْلُ لَقَدْ فَتَحَ الْفُتُوْحَ قَوْمٌ مَا كَانَتْ حِلْيَةُ سُيُوفِهِمْ الذَّهَبَ وَلَا الْفِضَّةَ إِنَّمَا كَانَتْ حِلْيَتُهُمْ الْعَلَابِيَّ وَالآنُكَ وَالْحَدِيْدَ
আবূ উমামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এই সব বিজয় এমন সব লোকেদের দ্বারা অর্জিত হয়েছিল, যাদের তলোয়ার স্বর্ণ বা রৌপ্য খচিত ছিল না, বরং তাদের তলোয়ার ছিল উঠের গর্দানের চামড়া এবং লৌহ কারুকার্য খচিত।
৫৬/৮৪. অধ্যায়ঃ
সফরে দ্বিপ্রহরের বিশ্রামকালে তলোয়ার গাছে ঝুলিয়ে রাখা
২৯১০
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ قَالَ حَدَّثَنِيْ سِنَانُ بْنُ أَبِيْ سِنَانٍ الدُّؤَلِيُّ وَأَبُوْ سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَ أَنَّهُ غَزَا مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قِبَلَ نَجْدٍ فَلَمَّا قَفَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَفَلَ مَعَهُ فَأَدْرَكَتْهُمْ الْقَائِلَةُ فِيْ وَادٍ كَثِيْرِ الْعِضَاهِ فَنَزَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَتَفَرَّقَ النَّاسُ يَسْتَظِلُّوْنَ بِالشَّجَرِ فَنَزَلَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَحْتَ سَمُرَةٍ وَعَلَّقَ بِهَا سَيْفَهُ وَنِمْنَا نَوْمَةً فَإِذَا رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم يَدْعُوْنَا وَإِذَا عِنْدَهُ أَعْرَابِيٌّ فَقَالَ إِنَّ هَذَا اخْتَرَطَ عَلَيَّ سَيْفِيْ وَأَنَا نَائِمٌ فَاسْتَيْقَظْتُ وَهُوَ فِيْ يَدِهِ صَلْتًا فَقَالَ مَنْ يَمْنَعُكَ مِنِّيْ فَقُلْتُ اللهُ ثَلَاثًا وَلَمْ يُعَاقِبْهُ وَجَلَسَ
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে নাজদের দিকে কোন এক যুদ্ধে বের হয়েছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফিরে আসলে তিনিও তাঁর সঙ্গে ফিরে আসলেন। তারা যখন কণ্টকময় বৃক্ষরাজীতে আবৃত এক উপত্যকায় উপস্থিত হলেন তখন তাঁদের দিবা বিশ্রামের সময় এলো। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেখানে অবতরণ করেন। লোকেরা ছায়ার আশ্রয়ে বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ল। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি বাবলা গাছের নিচে অবতরণ করলেন এবং তাতে তাঁর তরবারী ঝুলিয়ে রাখলেন। অতঃপর আমরা সকলেই ঘুমিয়ে পড়লাম। হঠাৎ এক সময় আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের ডাকতে লাগলেন। দেখলাম তাঁর পার্শ্বে একজন গ্রাম্য আরব। তিনি বললেন, আমার নিদ্রাবস্থায় এই ব্যক্তি আমারই তরবারী আমারই উপর বের করে ধরেছে। জেগে উঠে দেখতে পেলাম যে, তার হাতে খোলা তরবারী। সে বলল, আমার থেকে তোমাকে কে রক্ষা করবে, আমি বললাম, আল্লাহ! আল্লাহ! তিনবার। তারপরও তিনি কোন প্রতিশোধ নেননি, অথচ সে সেখানে বসে আছে।
৫৬/৮৫. অধ্যায়ঃ
শিরস্ত্রাণ পরিধাণ।
২৯১১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ أَبِيْ حَازِمٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ سَهْلٍ أَنَّهُ سُئِلَ عَنْ جُرْحِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ أُحُدٍ فَقَالَ جُرِحَ وَجْهُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَكُسِرَتْ رَبَاعِيَتُهُ وَهُشِمَتْ الْبَيْضَةُ عَلَى رَأْسِهِ فَكَانَتْ فَاطِمَةُ عَلَيْهَا السَّلَام تَغْسِلُ الدَّمَ وَعَلِيٌّ يُمْسِكُ فَلَمَّا رَأَتْ أَنَّ الدَّمَ لَا يَزِيْدُ إِلَّا كَثْرَةً أَخَذَتْ حَصِيْرًا فَأَحْرَقَتْهُ حَتَّى صَارَ رَمَادًا ثُمَّ أَلْزَقَتْهُ فَاسْتَمْسَكَ الدَّمُ
সাহ্ল (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাকে উহুদের দিনে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর আঘাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুখমন্ডল আহত হল এবং তাঁর সামনের দু’টি দাঁত ভেঙ্গে গেল, তাঁর মাথার শিরস্ত্রাণ ভেঙ্গে গেল। ফাতেমাহ (রাঃ) রক্ত ধুচ্ছিলেন আর ‘আলী (রাঃ) পানি ঢেলে দিচ্ছিলেন। তিনি যখন দেখতে পেলেন যে, রক্ত পড়া বাড়ছেই, তখন একটি চাটাই নিয়ে তা পুড়িয়ে ছাই করলেন এবং তা ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিলেন। অতঃপর রক্ত পড়া বন্ধ হল।
৫৬/৮৬. অধ্যায়ঃ
কারো মৃত্যুকালে তার অস্ত্র বিনষ্ট করা যারা পছন্দ করে না
২৯১২
حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ عَبَّاسٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ عَنْ سُفْيَانَ عَنْ أَبِيْ إِسْحَاقَ عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ قَالَ مَا تَرَكَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَّا سِلَاحَهُ وَبَغْلَةً بَيْضَاءَ وَأَرْضًا جَعَلَهَا صَدَقَةً
‘আম্র ইব্নু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কিছুই রেখে যাননি, কেবল তাঁর অস্ত্র, একটি সাদা খচ্চর ও এক টুকরো জমি, যা সদকা করে গিয়েছিলেন।
৫৬/৮৭. অধ্যায়ঃ
দুপুরের বিশ্রামকালে ইমাম থেকে তফাতে যাওয়া এবং গাছের ছায়ায় বিশ্রাম গ্রহন করা।
২৯১৩
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ حَدَّثَنَا سِنَانُ بْنُ أَبِيْ سِنَانٍ وَأَبُوْ سَلَمَةَ أَنَّ جَابِرًا أَخْبَرَهُ ح و حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ أَخْبَرَنَا ابْنُ شِهَابٍ عَنْ سِنَانِ بْنِ أَبِيْ سِنَانٍ الدُّؤَلِيِّ أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ أَنَّهُ غَزَا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَدْرَكَتْهُمْ الْقَائِلَةُ فِيْ وَادٍ كَثِيْرِ الْعِضَاهِ فَتَفَرَّقَ النَّاسُ فِي الْعِضَاهِ يَسْتَظِلُّوْنَ بِالشَّجَرِ فَنَزَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم تَحْتَ شَجَرَةٍ فَعَلَّقَ بِهَا سَيْفَهُ ثُمَّ نَامَ فَاسْتَيْقَظَ وَعِنْدَهُ رَجُلٌ وَهُوَ لَا يَشْعُرُ بِهِ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ هَذَا اخْتَرَطَ سَيْفِيْ فَقَالَ مَنْ يَمْنَعُكَ قُلْتُ اللهُ فَشَامَ السَّيْفَ فَهَا هُوَ ذَا جَالِسٌ ثُمَّ لَمْ يُعَاقِبْهُ
জাবির ইব্নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে একটি যুদ্ধে শরীক হয়েছিলেন। তাদের দুপুরের বিশ্রামের সময় হল এমন একটি উপত্যকায় যাতে কাঁটাদার প্রচুর বৃক্ষ ছিল। লোকেরা কাঁটাদার বৃক্ষরাজির ছায়ায় বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে পড়ল। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি বৃক্ষের নীচে অবতরণ করেন এবং একটি বৃক্ষে তাঁর তরবারী ঝুলিয়ে সেখানে ঘুমিয়ে পড়েন। তিনি জেগে উঠলেন এবং হঠাৎ তাঁর পার্শ্বে দেখতে পেলেন যে, জনৈক ব্যক্তি, অথচ তিনি তার ব্যাপারে টের পাননি। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এই ব্যক্তিটি হঠাৎ আমার তরবারীটি উঁচিয়ে বলল, কে তোমাকে আমার হাত থেকে রক্ষা করবে? আমি বললাম, আল্লাহ্! তখন সে ব্যক্তি তলোয়ারটি খাপে রেখে দিল। আর এই সে ব্যক্তি, এখনো বসা, কিন্তু তিনি তার প্রতিশোধ নেননি।
৫৬/৮৮. অধ্যায়ঃ
তীর নিক্ষেপ প্রসঙ্গে যা বলা হয়েছে।
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে উল্লেখ রয়েছে যে, তীরের ছায়ার নীচে আমার রিয্ক রাখা হয়েছে। যে ব্যক্তি আমার নির্দেশের বিরোধিতা করে, তার জন্য অপমান ও লাঞ্চনা নির্ধারিত আছে।
২৯১৪
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ أَبِي النَّضْرِ مَوْلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ اللهِ عَنْ نَافِعٍ مَوْلَى أَبِيْ قَتَادَةَ الأَنْصَارِيِّ عَنْ أَبِيْ قَتَادَةَ أَنَّهُ كَانَ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم حَتَّى إِذَا كَانَ بِبَعْضِ طَرِيْقِ مَكَّةَ تَخَلَّفَ مَعَ أَصْحَابٍ لَهُ مُحْرِمِيْنَ وَهُوَ غَيْرُ مُحْرِمٍ فَرَأَى حِمَارًا وَحْشِيًّا فَاسْتَوَى عَلَى فَرَسِهِ فَسَأَلَ أَصْحَابَهُ أَنْ يُنَاوِلُوْهُ سَوْطَهُ فَأَبَوْا فَسَأَلَهُمْ رُمْحَهُ فَأَبَوْا فَأَخَذَهُ ثُمَّ شَدَّ عَلَى الْحِمَارِ فَقَتَلَهُ فَأَكَلَ مِنْهُ بَعْضُ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَأَبَى بَعْضٌ فَلَمَّا أَدْرَكُوْا رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم سَأَلُوْهُ عَنْ ذَلِكَ قَالَ إِنَّمَا هِيَ طُعْمَةٌ أَطْعَمَكُمُوْهَا اللهُ وَعَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ عَنْ أَبِيْ قَتَادَةَ فِي الْحِمَارِ الْوَحْشِيِّ مِثْلُ حَدِيْثِ أَبِي النَّضْرِ قَالَ هَلْ مَعَكُمْ مِنْ لَحْمِهِ شَيْءٌ
আবূ ক্বাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একবার তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে ছিলেন। মক্কার পথে কোন এক স্থানে পৌঁছার পর আবূ ক্বাতাদা (রাঃ) কয়েকজন সঙ্গীসহ তাঁর পেছনে রয়ে গেলেন। সঙ্গীরা ছিলেন ইহরাম অবস্থায় আর তিনি ছিলেন ইহরাম বিহীন। এ সময় তিনি একটি বুনো গাধা দেখতে পান এবং তাঁর ঘোড়ার পিঠে আরোহণ করেন। তিনি তাঁর সঙ্গীদের তাঁর চাবুকটি উটিয়ে দিতে বলেন; কিন্তু তারা তা দিতে অস্বীকার করলেন। আবার তিনি তাঁর বর্শাটি উটিয়ে দিতে বলেন। তারা তাও দিতে অস্বীকার করলেন। তখন তিনি নিজেই তা উঠিয়ে নিলেন। অতঃপর গাধাটির উপর আক্রমণ চালালেন এবং তাকে হত্যা করলেন। সাথীরা কেউ কেউ এর গোশ্ত খেলেন এবং কেউ কেউ তা খেতে অস্বীকার করলেন। অতঃপর তারা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট গিয়ে এ সম্পর্কে তাঁর নিকট জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বললেন, এটি একটি আহারের বস্তু, যা আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদের আহারের জন্য দিয়েছেন। যায়িদ ইব্নু আসলাম (রহঃ) আবূ ক্বাতাদা (রাঃ) থেকে আবূ নাযর (রাঃ)-এর মতই বুনো গাধা সম্পর্কে হাদীস বর্ণনা করেছেন। এতে আছে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের সঙ্গে তার কিছু গোশ্ত আছে কি?
৫৬/৮৯. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর বর্ম এবং যুদ্ধে ব্যবহৃত তাঁর জামা সম্পর্কে যা বলা হয়েছে।
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, খালিদ (ইব্নু ওয়ালিদ) তো তাঁর বর্মগুলো আল্লাহ্র পথে ওয়াক্ফ করে দিয়েছে।
২৯১৫
حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ حَدَّثَنَا خَالِدٌ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ فِيْ قُبَّةٍ اللَّهُمَّ إِنِّيْ أَنْشُدُكَ عَهْدَكَ وَوَعْدَكَ اللَّهُمَّ إِنْ شِئْتَ لَمْ تُعْبَدْ بَعْدَ الْيَوْمِ فَأَخَذَ أَبُوْ بَكْرٍ بِيَدِهِ فَقَالَ حَسْبُكَ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَقَدْ أَلْحَحْتَ عَلَى رَبِّكَ وَهُوَ فِي الدِّرْعِ فَخَرَجَ وَهُوَ يَقُوْلُ سَيُهْزَمُ الْجَمْعُ وَيُوَلُّوْنَ الدُّبُرَ بَلْ السَّاعَةُ مَوْعِدُهُمْ وَالسَّاعَةُ أَدْهَى وَأَمَرُّ (النساء : 95) وَقَالَ وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا خَالِدٌ يَوْمَ بَدْرٍ
ইব্নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বদরের দিন একটি গুম্বজওয়ালা তাঁবুতে অবস্থান কালে দু‘আ করছিলেন, হে আল্লাহ্! আমি আপনার প্রতিজ্ঞা ও ওয়াদার দোহাই দিয়ে বলছি, আপনি যদি চান, তাহলে আজকের পরে আর আপনার ইবাদাত করা হবে না।’ এ সময় আবূ বকর (রাঃ) তাঁর হাত ধরে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! যথেষ্ট হয়েছে। আপনি বার বার নত হয়ে আপনার প্রতিপালকের কাছে দু‘আ করেছেন।’ সে সময় নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বর্ম আচ্ছাদিত ছিলেন। অতঃপর তিনি এই আয়াত পাঠ করতে করতে বেরিয়ে এলেনঃ শীঘ্রই দুশমনরা পরাস্ত হবে এবং পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে তদুপরি কিয়ামত শাস্তির নির্ধারিত কাল এবং কিয়ামত হবে অধিক কঠিন ও অধিক তিক্ত। (সূরা আল-ক্বামার ৪৫, ৪৬) ওয়াইব (রহঃ) বলেন, খালিদ (রহঃ) বলেছেন, ‘বদরের দিন’।
২৯১৬
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيْرٍ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ عَنْ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ عَنْ الأَسْوَدِ عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ تُوُفِّيَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَدِرْعُهُ مَرْهُوْنَةٌ عِنْدَ يَهُوْدِيٍّ بِثَلَاثِيْنَ صَاعًا مِنْ شَعِيْرٍ وَقَالَ يَعْلَى حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ دِرْعٌ مِنْ حَدِيْدٍ وَقَالَ مُعَلًّى حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ وَقَالَ رَهَنَهُ دِرْعًا مِنْ حَدِيْدٍ
‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যুর সময় তাঁর বর্মটি ত্রিশ সা’ যব-এর বিনিময়ে এক ইয়াহূদীর নিকট বন্ধক ছিল।
মুআল্লাহ ‘আবদুল ওয়াহিদ (রহঃ) সূত্রে আ’মাশ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর লোহার বর্ম বন্ধক রেখেছিলেন। আর ইয়ালা (রহঃ) আ’মাশ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, বর্মটি ছিল লোহার।
২৯১৭
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ حَدَّثَنَا ابْنُ طَاوُسٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَثَلُ الْبَخِيْلِ وَالْمُتَصَدِّقِ مَثَلُ رَجُلَيْنِ عَلَيْهِمَا جُبَّتَانِ مِنْ حَدِيْدٍ قَدْ اضْطَرَّتْ أَيْدِيَهُمَا إِلَى تَرَاقِيْهِمَا فَكُلَّمَا هَمَّ الْمُتَصَدِّقُ بِصَدَقَتِهِ اتَّسَعَتْ عَلَيْهِ حَتَّى تُعَفِّيَ أَثَرَهُ وَكُلَّمَا هَمَّ الْبَخِيْلُ بِالصَّدَقَةِ انْقَبَضَتْ كُلُّ حَلْقَةٍ إِلَى صَاحِبَتِهَا وَتَقَلَّصَتْ عَلَيْهِ وَانْضَمَّتْ يَدَاهُ إِلَى تَرَاقِيْهِ فَسَمِعَ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ فَيَجْتَهِدُ أَنْ يُوَسِّعَهَا فَلَا تَتَّسِعُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কৃপণ ও দানশীল ব্যক্তির উদাহরণ এমন দু’ ব্যক্তির মত, যারা লৌহ বর্মে আচ্ছাদিত। বর্ম দু’টি এত আঁটসাঁট যে, তাদের উভয়ের হাত কব্জায় আবদ্ধ রয়েছে। দানশীল ব্যক্তি যখন দান করতে ইচ্ছে করে, তখন বর্মটি তার দেহের উপর প্রসারিত হয়, এমনকি তা তার পায়ের চিহ্ন মুছে ফেলে। আর কৃপণ ব্যক্তি যখন দান করতে ইচ্ছে করে তখন বর্মের কড়াগুলো পরস্পর গলে গিয়ে তার শরীরকে আঁকড়ে ধরে এবং তার উভয় হস্ত কন্ঠের সঙ্গে লেগে যায়। অতঃপর আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, সে হাত দু’টিকে প্রসারিত করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করে; কিন্তু প্রসারিত করতে পারে না।
৫৬/৯০. অধ্যায়ঃ
সফরে এবং যুদ্ধে জোব্বা পরিধান করা
২৯১৮
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيْلَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ عَنْ أَبِي الضُّحَى مُسْلِمٍ هُوَ ابْنُ صُبَيْحٍ عَنْ مَسْرُوقٍ قَالَ حَدَّثَنِي الْمُغِيْرَةُ بْنُ شُعْبَةَ قَالَ انْطَلَقَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لِحَاجَتِهِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَلَقِيْتُهُ بِمَاءٍ فَتَوَضَّأَ وَعَلَيْهِ جُبَّةٌ شَأمِيَّةٌ فَمَضْمَضَ وَاسْتَنْشَقَ وَغَسَلَ وَجْهَهُ فَذَهَبَ يُخْرِجُ يَدَيْهِ مِنْ كُمَّيْهِ فَكَانَا ضَيِّقَيْنِ فَأَخْرَجَهُمَا مِنْ تَحْتُ فَغَسَلَهُمَا وَمَسَحَ بِرَأْسِهِ وَعَلَى خُفَّيْهِ
মুগীরাহ ইব্নু শু’বা থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্ রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা হাজত পূরণের জন্য গেলেন। সেখান থেকে ফিরে এলে আমি তাঁর নিকট পানি নিয়ে গেলাম। তিনি তা দিয়ে উযূ করেন। তাঁর পরিধানে ছিল সিরীয় জোব্বা। তিনি কুলি করেন, নাকে পানি দেন ও মুখমণ্ডল ধৌত করেন। অতঃপর তিনি জামার আস্তিন গুটিয়ে দু’টি হাত বের করতে চাইলেন। কিন্তু আস্তিন দু’টি ছিল খুবই আঁটসাঁট। তাই তিনি ভেতরের দিক থেকে হাত বের করে উভয় হাত ধুলেন এবং মাথা মসেহ করলেন এবং উভয় মোজার উপর মাস্হ করলেন।
৫৬/৯১. অধ্যায়ঃ
যুদ্ধে রেশমী পরিচ্ছদ পরিধান করা।
২৯১৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ الْمِقْدَامِ حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ الْحَارِثِ حَدَّثَنَا سَعِيْدٌ عَنْ قَتَادَةَ أَنَّ أَنَسًا حَدَّثَهُمْ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَخَّصَ لِعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَالزُّبَيْرِ فِيْ قَمِيْصٍ مِنْ حَرِيْرٍ مِنْ حِكَّةٍ كَانَتْ بِهِمَا
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুর রাহমান ইব্নু আওফ (রাঃ) ও যুবায়র (রাঃ)-কে তাদের শরীরে চুলকানি থাকায় রেশমী জামা পরিধান করতে অনুমতি দিয়েছিলেন।
২৯২০
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيْدِ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ ح حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ عَوْفٍ وَالزُّبَيْرَ شَكَوَا إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يَعْنِي الْقَمْلَ فَأَرْخَصَ لَهُمَا فِي الْحَرِيْرِ فَرَأَيْتُهُ عَلَيْهِمَا فِيْ غَزَاةٍ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
‘আবদুর রহমান ও যুবায়র (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উকুনের অভিযোগ করলে তিনি তাদেরকে রেশমী পোষাক পরার অনুমতি দেন। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি যুদ্ধে তাদের দেহে তা দেখেছি।
২৯২১
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ حَدَّثَنَا يَحْيَى عَنْ شُعْبَةَ أَخْبَرَنِيْ قَتَادَةُ أَنَّ أَنَسًا حَدَّثَهُمْ قَالَ رَخَّصَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَالزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ فِيْ حَرِيْرٍ
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‘আবদুর রাহমান ইব্নু আওফ ও যুবায়র ইব্নুল আওয়ামকে রেশমী পোষাক পরার অনুমতি দেন।
২৯২২
حَدَّثَنِيْ مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ سَمِعْتُ قَتَادَةَ عَنْ أَنَسٍ رَخَّصَ أَوْ رُخِّصَ لَهُمَا لِحِكَّةٍ بِهِمَا
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
শরীরে চুলকানী থাকার কারণে তাদের দু’জনকে (আবদুর রাহমান ও যুবায়রকে) রেশমী পোষাক পরার অনুমতি দিয়েছিলেন বা দেয়া হয়েছিল।
৫৬/৯২. অধ্যায়ঃ
ছুরি সম্পর্কে যা উল্লেখ করা হয়েছে।
২৯২৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيْزِ بْنُ عَبْدِ اللهِ قَالَ حَدَّثَنِيْ إِبْرَاهِيْمُ بْنُ سَعْدٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ جَعْفَرِ بْنِ عَمْرِو بْنِ أُمَيَّةَ الضَّمْرِيِّ عَنْ أَبِيْهِ قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَأْكُلُ مِنْ كَتِفٍ يَحْتَزُّ مِنْهَا ثُمَّ دُعِيَ إِلَى الصَّلَاةِ فَصَلَّى وَلَمْ يَتَوَضَّأْ حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ عَنْ الزُّهْرِيِّ وَزَادَ فَأَلْقَى السِّكِّيْنَ
‘আম্র ইব্নু উমায়্যাহ যামরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে (বকরির) হাত কেটে কেটে খেতে দেখেছি। অতঃপর তাঁকে সালাতের জন্য ডাকা হলে তিনি সালাত আদায় করলেন; কিন্তু তিনি উযূ করলেন না। আবুল ইয়ামান (রহঃ) শুয়াইব সূত্রে যুহরী (রহঃ) থেকে অতিরিক্ত বর্ণনা করেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছুরি রেখে দিলেন।
৫৬/৯৩. অধ্যায়ঃ
রোমীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ সম্পর্কে যা বলা হয়েছে।
২৯২৪
حَدَّثَنِيْ إِسْحَاقُ بْنُ يَزِيْدَ الدِّمَشْقِيُّ حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ قَالَ حَدَّثَنِيْ ثَوْرُ بْنُ يَزِيْدَ عَنْ خَالِدِ بْنِ مَعْدَانَ أَنَّ عُمَيْرَ بْنَ الأَسْوَدِ الْعَنْسِيَّ حَدَّثَهُ أَنَّهُ أَتَى عُبَادَةَ بْنَ الصَّامِتِ وَهُوَ نَازِلٌ فِيْ سَاحَةِ حِمْصَ وَهُوَ فِيْ بِنَاءٍ لَهُ وَمَعَهُ أُمُّ حَرَامٍ قَالَ عُمَيْرٌ فَحَدَّثَتْنَا أُمُّ حَرَامٍ أَنَّهَا سَمِعَتْ النَّبِيَّ يَقُوْلُ أَوَّلُ جَيْشٍ مِنْ أُمَّتِيْ يَغْزُوْنَ الْبَحْرَ قَدْ أَوْجَبُوْا قَالَتْ أُمُّ حَرَامٍ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ أَنَا فِيْهِمْ قَالَ أَنْتِ فِيْهِمْ ثُمَّ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَوَّلُ جَيْشٍ مِنْ أُمَّتِيْ يَغْزُوْنَ مَدِيْنَةَ قَيْصَرَ مَغْفُوْرٌ لَهُمْ فَقُلْتُ أَنَا فِيْهِمْ يَا رَسُوْلَ اللهِ قَالَ لَا
‘উমাইর ইব্নু আসওয়াদ আনসী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ‘উবাদা ইব্নু সামিত (রাঃ)-এর নিকট আসলেন। তখন ‘উবাদা (রাঃ) হিম্স উপকূলে তাঁর একটি ঘরে অবস্থান করছিলেন এবং তার সঙ্গে ছিলেন উম্মু হারাম। ‘উমাইর (রহঃ) বলেন, উম্মু হারাম (রাঃ) আমাদের নিকট বর্ণনা করেন, তিনি আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, আমার উম্মাতের মধ্যে প্রথম যে দলটি নৌ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে তারা যেন জান্নাত অবধারিত করে ফেলল। উম্মু হারাম (রাঃ) বলেন, আমি কি তাদের মধ্যে হবো? তিনি বললেন, তুমি তাদের মধ্যে হবে। উম্মু হারাম (রাঃ) বলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার উম্মাতের প্রথম যে দলটি কায়সার-এর রাজধানী আক্রমণ করবে তারা ক্ষমাপ্রাপ্ত। অতঃপর আমি বললাম, ‘হে আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি কি তাদের মধ্যে হবো?’ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘না।’
৫৬/৯৪. অধ্যায়ঃ
ইয়াহূদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
২৯২৫
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُحَمَّدٍ الْفَرْوِيُّ حَدَّثَنَا مَالِكٌ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ تُقَاتِلُوْنَ الْيَهُوْدَ حَتَّى يَخْتَبِيَ أَحَدُهُمْ وَرَاءَ الْحَجَرِ فَيَقُوْلُ يَا عَبْدَ اللهِ هَذَا يَهُوْدِيٌّ وَرَائِيْ فَاقْتُلْهُ
‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা ইয়াহূদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। এমনকি তাদের কেউ যদি পাথরের আড়ালে লুকিয়ে থাকে তাহলে পাথরও বলবে, ‘হে আল্লাহ্র বান্দা, আমার পেছনে ইয়াহূদী আছে, তাকে হত্যা কর।’
২৯২৬
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ أَخْبَرَنَا جَرِيْرٌ عَنْ عُمَارَةَ بْنِ الْقَعْقَاعِ عَنْ أَبِيْ زُرْعَةَ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُقَاتِلُوْا الْيَهُوْدَ حَتَّى يَقُوْلَ الْحَجَرُ وَرَاءَهُ الْيَهُوْدِيُّ يَا مُسْلِمُ هَذَا يَهُوْدِيٌّ وَرَائِيْ فَاقْتُلْهُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কিয়ামত সংঘটিত হবে না যে পর্যন্ত না তোমরা ইয়াহূদীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। এমনকি কোন ইয়াহূদী পাথরের আড়ালে লুকিয়ে থাকলে, পাথর বলবে, ‘হে মুসলিম, আমার পেছনে ইয়াহূদী আছে, তাকে হত্যা কর।’
৫৬/৯৫. অধ্যায়ঃ
তুর্কদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
২৯২৭
حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ حَدَّثَنَا جَرِيْرُ بْنُ حَازِمٍ قَالَ سَمِعْتُ الْحَسَنَ يَقُوْلُ حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ تَغْلِبَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ تُقَاتِلُوْا قَوْمًا يَنْتَعِلُوْنَ نِعَالَ الشَّعَرِ وَإِنَّ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ تُقَاتِلُوْا قَوْمًا عِرَاضَ الْوُجُوْهِ كَأَنَّ وُجُوْهَهُمْ الْمَجَانُّ الْمُطْرَقَةُ
‘আম্র ইব্নু তাগলিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কিয়ামতের আলামতসমূহের একটি এই যে, তোমরা এমন এক জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, যারা পশমের জুতা পরিধান করবে। কিয়ামতের আর একটি আলামত এই যে, তোমরা এমন এক জাতির বিপক্ষে যুদ্ধ করবে, যাদের মুখমণ্ডল হবে চওড়া, তাদের মুখমণ্ডল যেন পিটানো চামড়ার ঢাল।
২৯২৮
حَدَّثَنَا سَعِيْدُ بْنُ مُحَمَّدٍ حَدَّثَنَا يَعْقُوْبُ حَدَّثَنَا أَبِيْ عَنْ صَالِحٍ عَنْ الأَعْرَجِ قَالَ قَالَ أَبُوْ هُرَيْرَةَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُقَاتِلُوْا التُّرْكَ صِغَارَ الأَعْيُنِ حُمْرَ الْوُجُوْهِ ذُلْفَ الْأُنُوفِ كَأَنَّ وُجُوْهَهُمْ الْمَجَانُّ الْمُطْرَقَةُ وَلَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُقَاتِلُوْا قَوْمًا نِعَالُهُمْ الشَّعَرُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ততদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতদিন তোমরা এমন তুর্ক জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করবে, যাদের চোখ ছোট, চেহারা লাল, নাক চেপ্টা এবং মুখমণ্ডল পেটানো চামড়ার ঢালের মত। আর ততদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতদিন না তোমরা এমন এক জাতির বিপক্ষে যুদ্ধ করবে, যাদের জুতা হবে পশমের।
৫৬/৯৬. অধ্যায়ঃ
যারা পশমের জুতা পরিধান করবে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।
২৯২৯
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللهِ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ قَالَ الزُّهْرِيُّ عَنْ سَعِيْدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُقَاتِلُوْا قَوْمًا نِعَالُهُمْ الشَّعَرُ وَلَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تُقَاتِلُوْا قَوْمًا كَأَنَّ وُجُوْهَهُمْ الْمَجَانُّ الْمُطْرَقَةُ قَالَ سُفْيَانُ وَزَادَ فِيْهِ أَبُو الزِّنَادِ عَنْ الأَعْرَجِ عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رِوَايَةً صِغَارَ الأَعْيُنِ ذُلْفَ الْأُنُوفِ كَأَنَّ وُجُوْهَهُمْ الْمَجَانُّ الْمُطْرَقَةُ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না তোমরা এমন জাতির বিপক্ষে যুদ্ধ করবে যাদের জুতা হবে পশমের। আর কিয়ামত সংঘটিত হবে না যতক্ষণ না তোমরা এমন জাতির বিপক্ষে যুদ্ধ করবে, যাদের মুখমণ্ডল হবে পিটানো চামড়ার ঢালের মত। সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, আ’রাজ সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে আবূযযিনাদ এই রেওয়ায়তে অতিরিক্ত বর্ণনা করেন; তাদের চোখ হবে ছোট, নাক হবে চেপ্টা, তাদের চেহারা যেন পিটানো চামড়ার ঢাল।
৫৬/৯৭. অধ্যায়ঃ
পরাজয়ের সময় সঙ্গীদের সারিবদ্ধ করা, নিজের সওয়ারী থেকে নামা ও আল্লাহ্র সাহায্য প্রার্থনা করা।
২৯৩০
حَدَّثَنَا عَمْرُوْ بْنُ خَالِدٍ الْحَرَّانِيُّ حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ حَدَّثَنَا أَبُوْ إِسْحَاقَ قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ وَسَأَلَهُ رَجُلٌ أَكُنْتُمْ فَرَرْتُمْ يَا أَبَا عُمَارَةَ يَوْمَ حُنَيْنٍ قَالَ لَا وَاللهِ مَا وَلَّى رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَلَكِنَّهُ خَرَجَ شُبَّانُ أَصْحَابِهِ وَأَخِفَّاؤُهُمْ حُسَّرًا لَيْسَ بِسِلَاحٍ فَأَتَوْا قَوْمًا رُمَاةً جَمْعَ هَوَازِنَ وَبَنِيْ نَصْرٍ مَا يَكَادُ يَسْقُطُ لَهُمْ سَهْمٌ فَرَشَقُوْهُمْ رَشْقًا مَا يَكَادُوْنَ يُخْطِئُوْنَ فَأَقْبَلُوْا هُنَالِكَ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ عَلَى بَغْلَتِهِ الْبَيْضَاءِ وَابْنُ عَمِّهِ أَبُوْ سُفْيَانَ بْنُ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الْمُطَّلِبِ يَقُوْدُ بِهِ فَنَزَلَ وَاسْتَنْصَرَ ثُمَّ قَالَ :
أَنَا الـنّـَبـِيُّ لَا كَـذِبْ * أَنَا ابْنُ عَـبـْدِ الْمُطَّـلِـبْ
ثُمَّ صَفَّ أَصْحَابَهُ
বারা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তাকে এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, হে আবূ উমারা! হুনায়নের দিন আপনারা কি পলায়ন করেছিলেন? তিনি বললেন, না, আল্লাহ্র কসম, আল্লাহ্র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পলায়ন করেননি। বরং তাঁর কিছু সংখ্যক নওজোয়ান সাহাবী হাতিয়ার ছাড়াই অগ্রসর হয়ে গিয়েছিলেন। তারা বনূ হাওয়াযিন ও বনূ নাসর গোত্রের সুদক্ষ তীরন্দাজদের সম্মুখীন হন। তাদের কোন তীরই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়নি। তারা এদের প্রতি এমনভাবে তীর বর্ষণ করল যে, তাদের কোন তীরই ব্যর্থ হয়নি। সেখান থেকে তারা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এসে উপস্থিত হলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন তাঁর সাদা খচ্ছরটির পিঠে ছিলেন এবং তাঁর চাচাতো ভাই আবূ সুফিয়ান ইব্নু হারিস ইব্নু ‘আবদুল মুত্তালিব তাঁর লাগাম ধরে ছিলেন। তখন তিনি নামেন এবং আল্লাহ্র সাহায্য প্রার্থনা করেন। অতঃপর তিনি বলেন, আমি নবী, এ কথা মিথ্যা নয়। আমি ‘আবদুল মুত্তালিবের পুত্র। অতঃপর তিনি সাহাবীদের সারিবদ্ধ করেন।