সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস সৃষ্টির সূচনা অধ্যায় ১ম ভাগ হাদিস নং ৩১৯০ – ৩২৫৬

৫৯/১. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বানীঃ তিনিই সৃষ্টির সূচনা করেন, তারপর তিনিই তা পুনরায় তা সৃষ্টি করবেন এটা তার জন্য খুব সহজ। (সূরা রূম ২৭)

রাবী ইবনে খুসাইম এবং হাসান বসরী (রহঃ) বলেন, সব কিছুই তাঁর জন্য সহজ। আর—– ও —— যার অর্থ সহজ, উচ্চারনের দিক দিয়ে যথাক্রমে ——— ও ——- ও — এবং —– ও —– এর অনুরূপ। এর অর্থ —— আমার পক্ষে কি এটা কঠিন, যখন তিনি তোমাদের পয়দা করেছেন এবং তোমাদের সৃষ্টির সূচনা করেছেন? —– ক্লান্তি। —– বিভিন্ন অবস্থায় ————— সে তাঁর মর্যাদা অতিক্রম করল।

৩১৯০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ جَامِعِ بْنِ شَدَّادٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ مُحْرِزٍ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ جَاءَ نَفَرٌ مِنْ بَنِي تَمِيمٍ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏”‏ يَا بَنِي تَمِيمٍ، أَبْشِرُوا ‏”‏‏.‏ قَالُوا بَشَّرْتَنَا فَأَعْطِنَا‏.‏ فَتَغَيَّرَ وَجْهُهُ، فَجَاءَهُ أَهْلُ الْيَمَنِ، فَقَالَ ‏”‏ يَا أَهْلَ الْيَمَنِ، اقْبَلُوا الْبُشْرَى إِذْ لَمْ يَقْبَلْهَا بَنُو تَمِيمٍ ‏”‏‏.‏ قَالُوا قَبِلْنَا‏.‏ فَأَخَذَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُحَدِّثُ بَدْءَ الْخَلْقِ وَالْعَرْشِ، فَجَاءَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا عِمْرَانُ، رَاحِلَتُكَ تَفَلَّتَتْ، لَيْتَنِي لَمْ أَقُمْ‏.‏

‘ইমরান ইব্‌নু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বনূ তামীমের একদল লোক নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এল, তখন তিনি তাদের বললেন, হে তামীম সম্প্রদায়! সুসংবাদ গ্রহণ কর। তখন তারা বলল, আপনি তো সুসংবাদ জানিয়েছেন, এবার আমাদের দান করুন। এতে তাঁর মুখমন্ডল বিবর্ণ হয়ে গেল। এমন সময় তাঁর কাছে ইয়ামানের লোকজন এল। তখন তিনি বললেন, হে ইয়ামানবাসী! তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। কেননা তামীম সম্প্রদায়ের লোকেরা তা গ্রহণ করেনি। তারা বলল, আমরা গ্রহণ করলাম। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সৃষ্টির সূচনা এবং আরশ সম্পর্কে বর্ণনা করেন। এর মধ্যে জনৈক ব্যক্তি এসে বলল, হে ইমরান! তোমার উটনীটি পালিয়ে গেছে। হায়! আমি যদি উঠে না চলে যেতাম। [১]

৩১৯১
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصِ بْنِ غِيَاثٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا جَامِعُ بْنُ شَدَّادٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ مُحْرِزٍ، أَنَّهُ حَدَّثَهُ عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ دَخَلْتُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَعَقَلْتُ نَاقَتِي بِالْبَابِ، فَأَتَاهُ نَاسٌ مِنْ بَنِي تَمِيمٍ فَقَالَ ‏”‏ اقْبَلُوا الْبُشْرَى يَا بَنِي تَمِيمٍ ‏”‏‏.‏ قَالُوا قَدْ بَشَّرْتَنَا فَأَعْطِنَا‏.‏ مَرَّتَيْنِ، ثُمَّ دَخَلَ عَلَيْهِ نَاسٌ مِنْ أَهْلِ الْيَمَنِ فَقَالَ ‏”‏ اقْبَلُوا الْبُشْرَى يَا أَهْلَ الْيَمَنِ، إِذْ لَمْ يَقْبَلْهَا بَنُو تَمِيمٍ ‏”‏‏.‏ قَالُوا قَدْ قَبِلْنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ، قَالُوا جِئْنَاكَ نَسْأَلُكَ عَنْ هَذَا الأَمْرِ قَالَ ‏”‏ كَانَ اللَّهُ وَلَمْ يَكُنْ شَىْءٌ غَيْرُهُ، وَكَانَ عَرْشُهُ عَلَى الْمَاءِ، وَكَتَبَ فِي الذِّكْرِ كُلَّ شَىْءٍ، وَخَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ ‏”‏‏.‏ فَنَادَى مُنَادٍ ذَهَبَتْ نَاقَتُكَ يَا ابْنَ الْحُصَيْنِ‏.‏ فَانْطَلَقْتُ فَإِذَا هِيَ يَقْطَعُ دُونَهَا السَّرَابُ، فَوَاللَّهِ لَوَدِدْتُ أَنِّي كُنْتُ تَرَكْتُهَا‏.‏

‘ইমরান ইব্‌নু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন,আমি আমার উটনীটি দরজার সঙ্গে বেঁধে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হলাম। তখন তাঁর নিকট তামীম সম্প্রদায়ের কিছু লোক এল। তিনি বললেন, হে তামীম সম্প্রদায়! তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। উত্তরে তারা বলল, আপনি তো আমাদের সুসংবাদ দিয়েছেন, এবার আমাদেরকে কিছু দান করুন। একথা দু’বার বলল। অতঃপর তাঁর নিকট ইয়ামানের কিছু লোক আসল। তিনি তাদের বললেন, হে ইয়ামানবাসী! তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। কারণ বনূ তামীম তা গ্রহণ করেনি। তারা বলল, হে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমরা তা গ্রহণ করলাম। তারা আরও বলল, আমরা দ্বীন সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করার জন্য আপনার খেদমতে এসেছিলাম। তখন তিনি বললেন, একমাত্র আল্লাহই ছিলেন, আর তিনি ছাড়া আর কোন কিছুই ছিল না। তাঁর আরশ ছিল পানির উপরে। অতঃপর তিনি লাওহে মাহফুজে সব কিছু লিপিবদ্ধ করলেন এবং আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করলেন। এ সময় একজন ঘোষণাকারি ঘোষণা করল, হে ইব্‌নু হুসাইন! আপনার উটনী পালিয়ে গেছে। তখন আমি এর খোঁজে চলে গেলাম। দেখলাম তা এত দূরে চলে গেছে যে, তার এবং আমার মধ্যে মরীচিকাময় ময়দান দূরত্ব হয়ে পড়েছে। আল্লাহ‌্‌র কসম! আমি তখন উটনীটিকে একেবারে ছেড়ে দেয়ার ইচ্ছা করলাম।

৩১৯২
وَرَوَى عِيسَى، عَنْ رَقَبَةَ، عَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ، قَالَ سَمِعْتُ عُمَرَ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ قَامَ فِينَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَقَامًا، فَأَخْبَرَنَا عَنْ بَدْءِ الْخَلْقِ حَتَّى دَخَلَ أَهْلُ الْجَنَّةِ مَنَازِلَهُمْ، وَأَهْلُ النَّارِ مَنَازِلَهُمْ، حَفِظَ ذَلِكَ مَنْ حَفِظَهُ، وَنَسِيَهُ مَنْ نَسِيَهُ‏.‏

তারিক ইব্‌নু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘উমর (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মধ্যে দাঁড়ালেন। অতঃপর তিনি আমাদের সৃষ্টির সূচনা সম্পর্কে জ্ঞাত করলেন। অবশেষে তিনি জান্নাতবাসী ও জাহান্নামবাসীর নিজ নিজ নির্দিষ্ট স্থানে প্রবেশ করার কথাও উল্লেখ করলেন। যে ব্যক্তি এ কথাটি স্মরণ রাখতে পেরেছে, সে স্মরণ রেখেছে আর যে ভুলে যাবার সে ভুলে গেছে।

৩১৯৩
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، عَنْ أَبِي أَحْمَدَ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أُرَاهُ ‏ “‏ يَقُولُ اللَّهُ شَتَمَنِي ابْنُ آدَمَ وَمَا يَنْبَغِي لَهُ أَنْ يَشْتِمَنِي، وَتَكَذَّبَنِي وَمَا يَنْبَغِي لَهُ، أَمَّا شَتْمُهُ فَقَوْلُهُ إِنَّ لِي وَلَدًا‏.‏ وَأَمَّا تَكْذِيبُهُ فَقَوْلُهُ لَيْسَ يُعِيدُنِي كَمَا بَدَأَنِي ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মহান আল্লাহ বলেন, আদম সন্তান আমাকে গালি দেয় অথচ আমাকে গালি দেয়া তার উচিত নয়। আর সে আমাকে মিথ্যা জানে অথচ তার উচিত নয়। আমাকে গালি দেয়া হচ্ছে, তার এ উক্তি যে, আমার সন্তান আছে। আর তার মিথ্যা মনে করা হচ্ছে, তার এ উক্তি, যেভাবে আল্লাহ আমাকে প্রথমে সৃষ্টি করেছেন, সেভাবে কখনও তিনি আমাকে আবার সৃষ্টি করবেন না।

৩১৯৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا مُغِيرَةُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْقُرَشِيُّ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لَمَّا قَضَى اللَّهُ الْخَلْقَ كَتَبَ فِي كِتَابِهِ، فَهْوَ عِنْدَهُ فَوْقَ الْعَرْشِ إِنَّ رَحْمَتِي غَلَبَتْ غَضَبِي ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ যখন সৃষ্টির কাজ শেষ করলেন, তখন তিনি তাঁর কিতাব লাওহে মাহ্‌ফুজে লিখেন, যা আরশের উপর তাঁর নিকট আছে। নিশ্চয়ই আমার রহমত আমার ক্রোধের উপর প্রবল।

৫৯/২. অধ্যায়ঃ
সাত যমীন সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে।

মহান আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ সেই সত্তা, যিনি সৃষ্টি করেছেন সাত আসমান এবং এর অনুরূপ যমীনও। (আত-ত্বলাকঃ ১২)

———– আকাশ। ——-এর ভিত্তি —— তার সমতা ও সৌন্দর্য —— -সে শুনল ও মান্য করল। ——- সে (যমীন) তার সকল মৃতকে বের করে দেবে এবং তা খালি হয়ে যাবে ওদের থেকে। ——– তাকে সকল দিক হতে বিছিয়ে দিয়েছে। —– ভূপৃষ্ঠ যা সকল প্রাণীর নিদ্রা ও জাগরণের স্থান।

৩১৯৫
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ عُلَيَّةَ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ الْمُبَارَكِ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، كَانَتْ بَيْنَهُ وَبَيْنَ أُنَاسٍ خُصُومَةٌ فِي أَرْضٍ، فَدَخَلَ عَلَى عَائِشَةَ فَذَكَرَ لَهَا ذَلِكَ، فَقَالَتْ يَا أَبَا سَلَمَةَ اجْتَنِبِ الأَرْضَ، فَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ مَنْ ظَلَمَ قِيدَ شِبْرٍ طُوِّقَهُ مِنْ سَبْعِ أَرَضِينَ ‏”‏‏.‏

আবূ সালামা ইব্‌নু ‘আবদির রাহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

(তিনি বলেন), কয়েকজন লোকের সঙ্গে একখণ্ড ভূমি নিয়ে তাঁর ঝগড়া ছিল। ‘আয়িশা (রাঃ)-এর নিকট এসে তা জানালেন। তিনি বললেন, হে আবূ সালামা! জমা-জমির গোলমাল হতে দূরে থাক। কেননা, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে লোক এক বিঘত পরিমাণ অন্যের জমি অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করেছে, কিয়ামতের দিন সাত তবক যমীনের হার তার গলায় পরিয়ে দেয়া হবে।

৩১৯৬
حَدَّثَنَا بِشْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَنْ أَخَذَ شَيْئًا مِنَ الأَرْضِ بِغَيْرِ حَقِّهِ خُسِفَ بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلَى سَبْعِ أَرَضِينَ ‏”‏‏.‏

সালিম (রাঃ)-এর পিতা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে লোক অন্যায়ভাবে কারো ভূমির সামান্যতম অংশও আত্মসাৎ করবে, কিয়ামতের দিন সাত তবক যমীনের নীচে তাকে ধ্বসিয়ে দেয়া হবে।

৩১৯৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَهَّابِ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ سِيرِينَ، عَنِ ابْنِ أَبِي بَكْرَةَ، عَنْ أَبِي بَكْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ الزَّمَانُ قَدِ اسْتَدَارَ كَهَيْئَتِهِ يَوْمَ خَلَقَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضَ، السَّنَةُ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا، مِنْهَا أَرْبَعَةٌ حُرُمٌ، ثَلاَثَةٌ مُتَوَالِيَاتٌ ذُو الْقَعْدَةِ وَذُو الْحِجَّةِ وَالْمُحَرَّمُ، وَرَجَبُ مُضَرَ الَّذِي بَيْنَ جُمَادَى وَشَعْبَانَ ‏”‏‏.‏

আবূ বাকরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ যে দিন আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন, সে দিন হতে সময় যেভাবে আবর্তিত হচ্ছিল আজও তা সেভাবে আবর্তিত হচ্ছে। বারো মাসে এক বছর। এর মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। যুল-কা’দাহ, যূল-হিজ্জাহ ও মুহাররাম। তিনটি মাস পরস্পর রয়েছে। আর একটি মাস হলো রজব-ই-মুযারা [১] যা জুমাদা ও শা’বান মাসের মাঝে অবস্থিত।






[১] মুযারা একটি সম্প্রদায়ের নাম। ‘আরবের অন্যান্য সম্প্রদায় হতে এ সম্প্রদায়টি রজব মাসের সম্মান প্রদর্শনে অতি কঠোর ছিল। তাই এ মাসটিকে তাদের দিকে সম্বন্ধ করে হাদীসে “রজব-মুযারা” বলা হয়েছে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩১৯৮
حَدَّثَنِي عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ زَيْدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ نُفَيْلٍ، أَنَّهُ خَاصَمَتْهُ أَرْوَى فِي حَقٍّ زَعَمَتْ أَنَّهُ انْتَقَصَهُ لَهَا إِلَى مَرْوَانَ، فَقَالَ سَعِيدٌ أَنَا أَنْتَقِصُ مِنْ حَقِّهَا شَيْئًا، أَشْهَدُ لَسَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ مَنْ أَخَذَ شِبْرًا مِنَ الأَرْضِ ظُلْمًا، فَإِنَّهُ يُطَوَّقُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ سَبْعِ أَرَضِينَ ‏”‏‏.‏ قَالَ ابْنُ أَبِي الزِّنَادِ عَنْ هِشَامٍ عَنْ أَبِيهِ قَالَ قَالَ لِي سَعِيدُ بْنُ زَيْدٍ دَخَلْتُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏

সা’ঈদ ইব্‌নু যায়িদ ইবনে ‘আম্‌র ইবনে নুফাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘আরওয়া’ নামক এক মহিলা এক সাহাবীর বিরুদ্ধে মারওয়ানের নিকট তার ঐ পাওনার ব্যাপারে মামলা দায়ের করল, যা তার ধারণায় তিনি নষ্ট করেছেন। ব্যাপার শুনে সা’ঈদ (রাঃ) বললেন, আমি কি তার সামান্য হকও নষ্ট করতে পারি? আমি তো সাক্ষ্য দিচ্ছি, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি যুল্‌ম করে অন্যের এক বিঘত যমীনও আত্মসাৎ করে, কেয়ামতের দিন সাত তবক যমীনের শিকল তার গলায় পরিয়ে দেয়া হবে। ইব্‌নু আবিয যিনাদ (রহঃ) হিশাম (রহঃ) থেকে, তিনি তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, তিনি (হিশামের পিতা ‘উরওয়াহ) (রাঃ) বলেন, সা’ঈদ ইব্‌নু যায়দ (রাঃ) আমাকে বলেছেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত হলাম (তখন তিনি এ হাদীস বর্ণনা করেন)।

৫৯/৩. অধ্যায়ঃ
নক্ষত্ররাজি সম্পর্কে

কাতাদাহ (রহঃ) বলেন, (আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ) আর আমি তো নিকটবর্তী আসমানকে প্রদীপ মালা দিয়ে শুশোভিত করেছি (মূলকঃ ৫) [এ সম্পর্কে ক্বাতাদা (রহঃ) বলেন] এ সব নক্ষত্ররাজি তিনটি উদ্দেশে সৃষ্টি করা হয়েছে। (১) এদেরকে আসমানের সৌন্দর্য করেছেন (২) শয়তানদের প্রতি নিক্ষেপের জন্য (৩) এবং পথ ও দিক নির্ণয়ের আলামত হিসেবে। অতএব যে ব্যাক্তি এদের সম্পর্কে এছাড়া অন্য কোন ব্যাখ্যা দেয় সে ভুল করে, নিজ প্রাপ্য হারায় এবং সে এমন বিষয়ে কষ্ট করে যে বিষয়ে তার কোন জ্ঞান নেই।

আর ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, {——-}-অর্থ পরিবর্তন (আল-কাহাফঃ ৪৫) (আর {আরবী} অর্থ তৃণ যা চতুষ্পদ জন্তু ভক্ষণ করে, {আরবী}-অর্থ মাখলুক {আরবী} অর্থ প্রতিবন্ধক (মু’মিনূনঃ ১০০)



আর মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, {আরবী} অর্থ জড়ানো (নাবাঃ ১৬) আর {আরবী} অর্থ ঘন ও সন্নিবেশিত বাগান। {আরবী} অর্থ বিছানা (বাক্বারাহঃ ২২)। যেমন মহান আল্লাহর বাণীঃ আর তোমাদের জন্য রয়েছে পৃথিবীতে অবস্থান স্থল- (বাক্বারাহঃ ৩৬)। {আরবী}-অর্থ অল্প (আ’রাফঃ ৫৮)।

৫৯/৪. অধ্যায়ঃ
সূর্য ও চন্দ্রের অবস্থান

উভয়েই (সূর্য ও চন্দ্র) সুনির্দিষ্ট কক্ষে বিচরণ করে।” (আর-রহমানঃ ৫)



মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, উভয়ের আবর্তন চাকার আবর্তনের অনুরূপ। আর অন্যেরা বলেন, উভয় এমন এক নির্দিষ্ট হিসাব ও স্থানের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত যা তারা অর্থাৎ চন্দ্র-সূর্য লংঘন করতে পারে না। – হল – শব্দের বহুবচন, যেমন – এর বহুবচন হল – এর অর্থ তার জ্যোতি। – চন্দ্র-সূর্যের একটির জ্যোতি অপরটির জ্যোতিকে ঢাকতে পারে না, আর তাদের পক্ষে এটা সম্ভব নয়। – রাত দিনকে দ্রুত অতিক্রম করে। উভয়ে দ্রুত অতিক্রম করতে চায়। – আমি উভয়ের একটিকে অপরটি হতে বের করে আনি আর তাদের প্রতিটি চালিত করা হয় – এবং – এর অর্থ তার বিদীর্ণ হওয়া। – তার সেই অংশ যা বিদীর্ণ হয়নি আর তারা তার উভয় পার্শ্বে থাকবে। যেমন তোমার উক্তি – কূপের তীরে অন্ধকারে ছেয়ে গেল। হাসান বসরী (রহঃ) বলেন, – অর্থ লেপটিয়ে দেয়া হবে, যাতে তার জ্যোতি নিঃশেষ হয়ে যাবে। আর বলা হয়ে থাকে – এর অর্থ আর শপথ রজনীর এবং তার যে জীবজন্তু একত্রিত করল। – বরাবর হল। – চন্দ্র সূর্যের কক্ষ ও নির্ধারিত স্থান। -গরম বাতাস যা দিনের বেলায় সূর্যের সঙ্গে প্রবাহিত হয়। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, – রাত্রি বেলার আর – দিনের বেলার লু হাওয়া। বলা হয় -অর্থ প্রবিষ্ট করে বা করবে – অর্থ এমন প্রতিটি বস্তু যা তুমি অন্যটির মধ্যে ঢুকিয়েছ।

৩১৯৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ التَّيْمِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لأَبِي ذَرٍّ حِينَ غَرَبَتِ الشَّمْسُ ‏”‏ تَدْرِي أَيْنَ تَذْهَبُ ‏”‏‏.‏ قُلْتُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَإِنَّهَا تَذْهَبُ حَتَّى تَسْجُدَ تَحْتَ الْعَرْشِ، فَتَسْتَأْذِنَ فَيُؤْذَنَ لَهَا، وَيُوشِكُ أَنْ تَسْجُدَ فَلاَ يُقْبَلَ مِنْهَا، وَتَسْتَأْذِنَ فَلاَ يُؤْذَنَ لَهَا، يُقَالُ لَهَا ارْجِعِي مِنْ حَيْثُ جِئْتِ‏.‏ فَتَطْلُعُ مِنْ مَغْرِبِهَا، فَذَلِكَ قَوْلُهُ تَعَالَى ‏{‏وَالشَّمْسُ تَجْرِي لِمُسْتَقَرٍّ لَهَا ذَلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ ‏}‏‏”‏‏.‏

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূর্য অস্ত যাবার সময় আবূ যার (রাঃ)-কে বললেন, তুমি কি জান, সূর্য কোথায় যায়? আমি বললাম, আল্লাহ এবং তাঁর রসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, তা যেতে যেতে আরশের নীচে গিয়ে সিজদা পড়ে যায়। অতঃপর সে আবার উদিত হবার অনুমতি চায় এবং তাকে অনুমতি দেয়া হয়। আর শীঘ্রই এমন সময় আসবে যে, সিজ্‌দা করবে কিন্তু তা কবূল করা হবে না এবং সে অনুমতি চাইবে কিন্তু তাকে অনুমতি দেয়া হবে না। তাকে বলা হবে, যে পথ দিয়ে আসলে ঐ পথেই ফিরে যাও। তখন সে পশ্চিম দিক হতে উদিত হয়– এটাই মর্ম হল মহান আল্লাহর বাণীরঃ “আর সূর্য নিজ গন্তব্যে (অথবা) কক্ষ পথে চলতে থাকে। এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ।” (ইয়াসীন ৩৮)

৩২০০
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ الْمُخْتَارِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ الدَّانَاجُ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ مُكَوَّرَانِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কিয়ামতের দিন সূর্য ও চন্দ্র দু’টিকেই গুটিয়ে নেয়া হবে।

৩২০১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَمْرٌو، أَنَّ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ الْقَاسِمِ، حَدَّثَهُ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّهُ كَانَ يُخْبِرُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ لاَ يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ، وَلَكِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا فَصَلُّوا ‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কারো মৃত্যু কিংবা জন্মের কারণে সূর্য গ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয় না, বরং এ দু’টো আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে দু’টি নিদর্শন মাত্র। কাজেই তোমরা যখন তা ঘটতে দেখবে তখন সালাত আদায় করবে।

৩২০২
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِنَّ الشَّمْسَ وَالْقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، لاَ يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ ذَلِكَ فَاذْكُرُوا اللَّهَ ‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সূর্য এবং চন্দ্র আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্য হতে দু’টি নিদর্শন। কারো মৃত্যু কিংবা জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয় না। কাজেই তোমরা যখন তা ঘটতে দেখবে তখন আল্লাহ্‌র যিক্‌র করবে।

৩২০৩
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، أَنَّ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَخْبَرَتْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ خَسَفَتِ الشَّمْسُ قَامَ فَكَبَّرَ وَقَرَأَ قِرَاءَةً طَوِيلَةً، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلاً ثُمَّ رَفَعَ رَأْسَهُ فَقَالَ ‏”‏ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ ‏”‏ وَقَامَ كَمَا هُوَ، فَقَرَأَ قِرَاءَةً طَوِيلَةً وَهْىَ أَدْنَى مِنَ الْقِرَاءَةِ الأُولَى، ثُمَّ رَكَعَ رُكُوعًا طَوِيلاً وَهْىَ أَدْنَى مِنَ الرَّكْعَةِ الأُولَى، ثُمَّ سَجَدَ سُجُودًا طَوِيلاً، ثُمَّ فَعَلَ فِي الرَّكْعَةِ الآخِرَةِ مِثْلَ ذَلِكَ، ثُمَّ سَلَّمَ وَقَدْ تَجَلَّتِ الشَّمْسُ، فَخَطَبَ النَّاسَ، فَقَالَ فِي كُسُوفِ الشَّمْسِ وَالْقَمَرِ ‏”‏ إِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، لاَ يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ، وَلاَ لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا فَافْزَعُوا إِلَى الصَّلاَةِ ‏”‏‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যেদিন সূর্যগ্রহণ হল, সে দিন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতে দাঁড়ালেন। অতঃপর তাকবীর বললেন এবং দীর্ঘ কিরাআত পাঠ করলেন। অতঃপর দীর্ঘ রুকু করলেন অতঃপর তিনি মাথা উঠালেন এবং বললেন, – এবং তিনি আগের মত দাঁড়ালেন। আর দীর্ঘ কিরাআত পাঠ করলেন কিন্তু তা প্রথম কিরাআত থেকে কম ছিল। অতঃপর তিনি দীর্ঘক্ষণ রুকু’ করলেন কিন্তু তা প্রথম রাক’আতের চেয়ে কম ছিল। অতঃপর তিনি দীর্ঘ সিজদা করলেন। তিনি শেষ রাক’আতেও ঐ রকমই করলেন, পরে সালাম ফিরালেন। এ সময় সূর্য উজ্জ্বল হয়ে গেছে। তখন তিনি মানুষদের উদ্দেশে খুত্‌বা দিলেন। তিনি সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণ সম্পর্কে বললেন, অবশ্যই এ দু’টি আল্লাহর নিদর্শনাবলীর মধ্যে দু’টি নিদর্শন। কারো মৃত্যু ও জন্মের কারণে সূর্যগ্রহণ-চন্দ্রগ্রহণ হয় না। অতএব যখনই তোমরা তা ঘটতে দেখবে তখনই সালাতে ভয়-ভীতি নিয়ে লিপ্ত হবে।

৩২০৪
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنِي قَيْسٌ، عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ لاَ يَنْكَسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ، وَلَكِنَّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللَّهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُمَا فَصَلُّوا ‏”‏‏.‏

আবূ মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ কারো মৃত্যু ও জন্মের কারণে হয় না। উভয়টি আল্লাহ্‌র নিদর্শনসমূহের মধ্যে হতে দু’টি নিদর্শন। অতএব যখন তোমরা তা ঘটতে দেখবে, তখন তোমরা সালাত আদায় করবে।

৫৯/৫. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ তা’আলার এ বাণী সম্বন্ধে যা বর্ণিত হয়েছেঃ তিনিই স্বীয় রাহমাতের বৃষ্টির পূর্বে বিস্তৃতরূপে বায়ুকে করেন। (আল-ফুরকান ৪৮)

– অর্থ যা সব কিছু ভেঙ্গে দেয়। – শব্দদ্বয় – শব্দের বহুবচন, যার অর্থ বৃষ্টি বর্ষণকারী। – ঝঞ্ঝা বায়ু যা যমীন হতে আকাশের দিকে স্তম্ভাকারে প্রবাহিত হতে থাকে, যাতে আগুন বিরাজ করে। – অর্থ শীতল। – অর্থ বিস্তৃত।

৩২০৫
حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ مُجَاهِدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ نُصِرْتُ بِالصَّبَا، وَأُهْلِكَتْ عَادٌ بِالدَّبُورِ ‏”‏‏.‏

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, পূর্বের বাতাস দ্বারা আমাকে সাহায্য করা হয়েছে, আর পশ্চিমের বাতাস দ্বারা আদ জাতিকে হালাক করা হয়েছে।

৩২০৬
حَدَّثَنَا مَكِّيُّ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا رَأَى مَخِيلَةً فِي السَّمَاءِ أَقْبَلَ وَأَدْبَرَ وَدَخَلَ وَخَرَجَ وَتَغَيَّرَ وَجْهُهُ، فَإِذَا أَمْطَرَتِ السَّمَاءُ سُرِّيَ عَنْهُ، فَعَرَّفَتْهُ عَائِشَةُ ذَلِكَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَا أَدْرِي لَعَلَّهُ كَمَا قَالَ قَوْمٌ ‏{‏فَلَمَّا رَأَوْهُ عَارِضًا مُسْتَقْبِلَ أَوْدِيَتِهِمْ‏}‏ ‏”‏‏.‏ الآيَةَ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন আকাশে মেঘ দেখতেন, তখন একবার সামনে আগাতেন, আবার পেছনে সরে যেতেন। আবার কখনও ঘরে প্রবেশ করতেন, আবার বেরিয়ে যেতেন আর তাঁর মুখমণ্ডল মলিন হয়ে যেত। পরে যখন আকাশ বৃষ্টি বর্ষণ করত তখন তাঁর এ অবস্থা দূর হত। ‘আয়িশা (রাঃ)-এর কারণ জানতে চাইলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি জানি না, এ মেঘ এমন মেঘও হতে পারে যা দেখে আদ জাতি বলেছিলঃ অতঃপর যখন তারা তাদের উপত্যকার দিকে উক্ত মেঘমালাকে এগোতে দেখল। (৪৬ : ২৪)

৫৯/৬. অধ্যায়ঃ
ফেরেশতাদের বর্ণনা

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে বললেন, ফেরেশতাদের মধ্যে জিব্‌রাঈল (‘আঃ) ইয়াহূদীদের শত্রু। [১] আর ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, – অর্থ আমরা তো (ফেরেশতাকুল) সারিবদ্ধভাবে দন্ডায়মান- (সাফফাতঃ ১৬৫)। (আ.প্র. ২৯৬৬)



[১] এ সময় ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) ইয়াহূদী ছিলেন। আর ইয়াহূদীদের উপর সকল ‘আযাবের সংবাদ জিব্‌রাঈল (‘আঃ)-ই নিয়ে এসেছেন। তাই তারা তাঁর সম্বন্ধে এরকম ধারণা পোষণ করত।

৩২০৭
حَدَّثَنَا هُدْبَةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ،‏.‏ وَقَالَ لِي خَلِيفَةُ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، وَهِشَامٌ، قَالاَ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ صَعْصَعَةَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ بَيْنَا أَنَا عِنْدَ الْبَيْتِ بَيْنَ النَّائِمِ وَالْيَقْظَانِ ـ وَذَكَرَ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ ـ فَأُتِيتُ بِطَسْتٍ مِنْ ذَهَبٍ مُلِئَ حِكْمَةً وَإِيمَانًا، فَشُقَّ مِنَ النَّحْرِ إِلَى مَرَاقِّ الْبَطْنِ، ثُمَّ غُسِلَ الْبَطْنُ بِمَاءِ زَمْزَمَ، ثُمَّ مُلِئَ حِكْمَةً وَإِيمَانًا، وَأُتِيتُ بِدَابَّةٍ أَبْيَضَ دُونَ الْبَغْلِ وَفَوْقَ الْحِمَارِ الْبُرَاقُ، فَانْطَلَقْتُ مَعَ جِبْرِيلَ حَتَّى أَتَيْنَا السَّمَاءَ الدُّنْيَا قِيلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيلُ‏.‏ قِيلَ مَنْ مَعَكَ قِيلَ مُحَمَّدٌ‏.‏ قِيلَ وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ قَالَ نَعَمْ‏.‏ قِيلَ مَرْحَبًا بِهِ، وَلَنِعْمَ الْمَجِيءُ جَاءَ‏.‏ فَأَتَيْتُ عَلَى آدَمَ، فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، فَقَالَ مَرْحَبًا بِكَ مِنِ ابْنٍ وَنَبِيٍّ‏.‏ فَأَتَيْنَا السَّمَاءَ الثَّانِيَةَ، قِيلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيلُ‏.‏ قِيلَ مَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم‏.‏ قِيلَ أُرْسِلَ إِلَيْهِ قَالَ نَعَمْ‏.‏ قِيلَ مَرْحَبًا بِهِ، وَلَنِعْمَ الْمَجِيءُ جَاءَ‏.‏ فَأَتَيْتُ عَلَى عِيسَى وَيَحْيَى فَقَالاَ مَرْحَبًا بِكَ مِنْ أَخٍ وَنَبِيٍّ‏.‏ فَأَتَيْنَا السَّمَاءَ الثَّالِثَةَ، قِيلَ مَنْ هَذَا قِيلَ جِبْرِيلُ‏.‏ قِيلَ مَنْ مَعَكَ قِيلَ مُحَمَّدٌ‏.‏ قِيلَ وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ قَالَ نَعَمْ‏.‏ قِيلَ مَرْحَبًا بِهِ وَلَنِعْمَ الْمَجِيءُ جَاءَ‏.‏ فَأَتَيْتُ يُوسُفَ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، قَالَ مَرْحَبًا بِكَ مِنْ أَخٍ وَنَبِيٍّ فَأَتَيْنَا السَّمَاءَ الرَّابِعَةَ، قِيلَ مَنْ هَذَا قِيلَ جِبْرِيلُ‏.‏ قِيلَ مَنْ مَعَكَ قِيلَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم‏.‏ قِيلَ وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ قِيلَ نَعَمْ‏.‏ قِيلَ مَرْحَبًا بِهِ، وَلَنِعْمَ الْمَجِيءُ جَاءَ‏.‏ فَأَتَيْتُ عَلَى إِدْرِيسَ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، فَقَالَ مَرْحَبًا مِنْ أَخٍ وَنَبِيٍّ‏.‏ فَأَتَيْنَا السَّمَاءَ الْخَامِسَةَ، قِيلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيلُ‏.‏ قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قِيلَ مُحَمَّدٌ‏.‏ قِيلَ وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ قَالَ نَعَمْ‏.‏ قِيلَ مَرْحَبًا بِهِ، وَلَنِعْمَ الْمَجِيءُ جَاءَ‏.‏ فَأَتَيْنَا عَلَى هَارُونَ، فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَقَالَ مَرْحَبًا بِكَ مِنْ أَخٍ وَنَبِيٍّ‏.‏ فَأَتَيْنَا عَلَى السَّمَاءِ السَّادِسَةِ، قِيلَ مَنْ هَذَا قِيلَ جِبْرِيلُ‏.‏ قِيلَ مَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ صلى الله عليه وسلم‏.‏ قِيلَ وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ مَرْحَبًا بِهِ، وَلَنِعْمَ الْمَجِيءُ جَاءَ‏.‏ فَأَتَيْتُ عَلَى مُوسَى، فَسَلَّمْتُ ‏{‏عَلَيْهِ‏}‏ فَقَالَ مَرْحَبًا بِكَ مِنْ أَخٍ وَنَبِيٍّ‏.‏ فَلَمَّا جَاوَزْتُ بَكَى‏.‏ فَقِيلَ مَا أَبْكَاكَ قَالَ يَا رَبِّ، هَذَا الْغُلاَمُ الَّذِي بُعِثَ بَعْدِي يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مِنْ أُمَّتِهِ أَفْضَلُ مِمَّا يَدْخُلُ مِنْ أُمَّتِي‏.‏ فَأَتَيْنَا السَّمَاءَ السَّابِعَةَ، قِيلَ مَنْ هَذَا قِيلَ جِبْرِيلُ‏.‏ قِيلَ مَنْ مَعَكَ قِيلَ مُحَمَّدٌ‏.‏ قِيلَ وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ مَرْحَبًا بِهِ، وَنِعْمَ الْمَجِيءُ جَاءَ‏.‏ فَأَتَيْتُ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ فَقَالَ مَرْحَبًا بِكَ مِنِ ابْنٍ وَنَبِيٍّ، فَرُفِعَ لِيَ الْبَيْتُ الْمَعْمُورُ، فَسَأَلْتُ جِبْرِيلَ فَقَالَ هَذَا الْبَيْتُ الْمَعْمُورُ يُصَلِّي فِيهِ كُلَّ يَوْمٍ سَبْعُونَ أَلْفَ مَلَكٍ، إِذَا خَرَجُوا لَمْ يَعُودُوا إِلَيْهِ آخِرَ مَا عَلَيْهِمْ، وَرُفِعَتْ لِي سِدْرَةُ الْمُنْتَهَى فَإِذَا نَبِقُهَا كَأَنَّهُ قِلاَلُ هَجَرٍ، وَوَرَقُهَا كَأَنَّهُ آذَانُ الْفُيُولِ، فِي أَصْلِهَا أَرْبَعَةُ أَنْهَارٍ نَهْرَانِ بَاطِنَانِ وَنَهْرَانِ ظَاهِرَانِ، فَسَأَلْتُ جِبْرِيلَ فَقَالَ أَمَّا الْبَاطِنَانِ فَفِي الْجَنَّةِ، وَأَمَّا الظَّاهِرَانِ النِّيلُ وَالْفُرَاتُ، ثُمَّ فُرِضَتْ عَلَىَّ خَمْسُونَ صَلاَةً، فَأَقْبَلْتُ حَتَّى جِئْتُ مُوسَى، فَقَالَ مَا صَنَعْتَ قُلْتُ فُرِضَتْ عَلَىَّ خَمْسُونَ صَلاَةً‏.‏ قَالَ أَنَا أَعْلَمُ بِالنَّاسِ مِنْكَ، عَالَجْتُ بَنِي إِسْرَائِيلَ أَشَدَّ الْمُعَالَجَةِ، وَإِنَّ أُمَّتَكَ لاَ تُطِيقُ، فَارْجِعْ إِلَى رَبِّكَ فَسَلْهُ‏.‏ فَرَجَعْتُ فَسَأَلْتُهُ، فَجَعَلَهَا أَرْبَعِينَ، ثُمَّ مِثْلَهُ ثُمَّ ثَلاَثِينَ، ثُمَّ مِثْلَهُ فَجَعَلَ عِشْرِينَ، ثُمَّ مِثْلَهُ فَجَعَلَ عَشْرًا، فَأَتَيْتُ مُوسَى فَقَالَ مِثْلَهُ، فَجَعَلَهَا خَمْسًا، فَأَتَيْتُ مُوسَى فَقَالَ مَا صَنَعْتَ قُلْتُ جَعَلَهَا خَمْسًا، فَقَالَ مِثْلَهُ، قُلْتُ سَلَّمْتُ بِخَيْرٍ، فَنُودِيَ إِنِّي قَدْ أَمْضَيْتُ فَرِيضَتِي وَخَفَّفْتُ عَنْ عِبَادِي، وَأَجْزِي الْحَسَنَةَ عَشْرًا ‏”‏‏.‏ وَقَالَ هَمَّامٌ عَنْ قَتَادَةَ عَنِ الْحَسَنِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ فِي الْبَيْتِ الْمَعْمُورِ ‏”‏‏.‏

মালিক ইব্‌নু সা’সা’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমি কা’বা ঘরের নিকট নিদ্রা ও জাগরণ- এ দু’অবস্থার মাঝামাঝি অবস্থায় ছিলাম। অতঃপর তিনি দু’ব্যক্তির মাঝে অপর এক ব্যক্তি অর্থাৎ নিজের অবস্থা উল্লেখ করে বললেন, আমার নিকট সোনার একটি পেয়ালা নিয়ে আসা হল- যা হিক্‌মত ও ঈমানে ভরা ছিল। অতঃপর আমার বুক হতে পেটের নিচ পর্যন্ত চিরে ফেলা হল। অতঃপর আমার পেট যমযমের পানি দিয়ে ধোয়া হল। অতঃপর তা হিক্‌মত ও ঈমানে পূর্ণ করা হল এবং আমার নিকট সাদা রঙের চতুষ্পদ জন্তু আনা হল, যা খচ্চর হতে ছোট আর গাধা হতে বড় অর্থাৎ বোরাক। অতঃপর তাতে চড়ে আমি জিব্‌রাঈল (‘আঃ) সহ চলতে চলতে পৃথিবীর নিকটতম আসমানে গিয়ে পৌঁছলাম। জিজ্ঞেস করা হল, এ কে? উত্তরে বলা হল, জিব্‌রাঈল। জিজ্ঞেস করা হল, আপনার সঙ্গে আর কে? উত্তর দেয়া হল, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। প্রশ্ন করা হল তাঁকে আনার জন্য কি পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বলা হল, তাঁকে মারহাবা, তাঁর আগমন কতই না উত্তম। অতঃপর আমি আদম (‘আঃ)-এর নিকট গেলাম। তাঁকে সালাম করলাম। তিনি বললেন, পুত্র ও নবী! তোমার প্রতি মারহাবা। অতঃপর আমরা দ্বিতীয় আসমানে গেলাম। জিজ্ঞেস করা হল, এ কে? তিনি বললেন, আমি জিব্‌রাঈল। জিজ্ঞেস করা হল, আপনার সঙ্গে আর কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। প্রশ্ন করা হল, তাঁকে আনার জন্য কি পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বলা হল, তাঁকে মারহাবা আর তাঁর আগমন কতই না উত্তম। অতঃপর আমি ‘ঈসা ও ইয়াহইয়া (‘আঃ)-এর নিকট আসলাম। তাঁরা উভয়ে বললেন, ভাই ও নবী! আপনার প্রতি মারহাবা। অতঃপর আমরা তৃতীয় আসমানে পৌঁছলাম। জিজ্ঞেস করা হল, এ কে? উত্তরে বলা হল, আমি জিব্‌রাঈল। প্রশ্ন করা হল, আপনার সঙ্গে কে? বলা হল, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। জিজ্ঞেস করা হল, তাঁকে আনার জন্য কি পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ। বলা হল, তাঁকে মারহাবা আর তাঁর আগমন কতই না উত্তম। অতঃপর আমি ইউসুফ (‘আঃ)-এর নিকট গেলাম। তাঁকে আমি সালাম করলাম। তিনি বললেন, ভাই ও নবী! আপনাকে মারহাবা। অতঃপর আমরা চতুর্থ আসমানে পৌঁছলাম। প্রশ্ন করা হল, এ কে? তিনি বললেন, আমি জিব্‌রাঈল। জিজ্ঞেস করা হল, আপনার সঙ্গে কে? বলা হল, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। প্রশ্ন করা হল, তাঁকে আনার জন্য কি পাঠানো হয়েছে? জবাবে বলা হল, হ্যাঁ। বলা হল, তাঁকে মারহাবা আর তাঁর আগমন কতই না উত্তম। অতঃপর আমি ইদ্‌রীস (‘আঃ)-এর নিকট গেলাম। আমি তাঁকে সালাম করলাম। তিনি বললেন, ভাই ও নবী! আপনাকে মারহাবা। এরপর আমরা পঞ্চম আসমানে পৌঁছলাম। জিজ্ঞেস করা হল, এ কে? বলা হয় আমি জিব্‌রাঈল। প্রশ্ন হল, আপনার সঙ্গে আর কে? বলা হল, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। প্রশ্ন করা হল, তাঁকে আনার জন্য কি পাঠানো হয়েছে? বলা হল হ্যাঁ। বললেন, তাঁকে মারহাবা আর তাঁর আগমন কতই না উত্তম। অতঃপর আমরা হারুন (‘আঃ)-এর নিকট গেলাম। আমি তাঁকে সালাম করলাম। তিনি বললেন, ভাই ও নবী! আপনাকে মারহাবা। অতঃপর আমরা ষষ্ঠ আসমানে পৌঁছলাম। জিজ্ঞেস করা হল, এ কে? বলা হল, আমি জিব্‌রাঈল। প্রশ্ন হল, আপনার সঙ্গে কে? বলা হল, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। বলা হল, তাঁকে আনার জন্য পাঠানো হয়েছে? তাঁকে মারহাবা আর তাঁর আগমন কতই না উত্তম। অতঃপর আমি মূসা (‘আঃ)-এর নিকট গেলাম। আমি তাঁকে সালাম করলাম। তিনি বললেন, ভাই ও নবী আপনাকে মারহাবা। অতঃপর আমি যখন তাঁর কাছ দিয়ে গেলাম, তখন তিনি কেঁদে ফেললেন। তাঁকে বলা হল, আপনি কাঁদছেন কেন? তিনি বললেন, হে রব! এ ব্যক্তি যে আমার পরে প্রেরিত, তাঁর উম্মত আমার উম্মাতের চেয়ে অধিক পরিমাণে বেহেশতে যাবে। অতঃপর আমরা সপ্তম আকাশে পৌঁছলাম। প্রশ্ন করা হল, এ কে? বলা হল, আমি জিব্‌রাঈল। জিজ্ঞেস করা হল, আপনার সঙ্গে কে? বলা হল, মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। বলা হল, তাঁকে আনার জন্য পাঠানো হয়েছে? তাঁকে মারহাবা। তাঁর আগমন কতই না উত্তম। অতঃপর আমি ইব্‌রাহীম (‘আঃ)-এর নিকট গেলাম। তাঁকে সালাম করলাম। তিনি বললেন, হে পুত্র ও নবী! আপনাকে মারহাবা। অতঃপর বায়তুল মা’মূরকে আমার সামনে প্রকাশ করা হল। আমি জিব্‌রাঈল (‘আঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, এটি বায়তুল মা’মূর। প্রতিদিন এখানে সত্তর হাজার ফেরেশতা সালাত আদায় করেন। এরা এখান হতে একবার বাহির হলে দ্বিতীয় বার ফিরে আসেন না। এটাই তাদের শেষ প্রবেশ। অতঃপর আমাকে ‘সিদ্‌রাতুল মুনতাহা’ দেখানো হল। দেখলাম, এর ফল যেন হাজারা নামক জায়গার মটকার মত। আর তার পাতা যেন হাতীর কান। তার উৎসমূলে চারটি ঝরণা প্রবাহিত। দু’টি ভিতরে আর দু’টি বাইরে। এ সম্পর্কে আমি জিব্‌রাঈলকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, ভিতরের দু’টি জান্নাতে অবস্থিত। আর বাইরের দু’টির একটি হল- ফুরাত আর অপরটি হল (মিশরের) নীল নদ। অতঃপর আমার প্রতি পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত ফরয করা হয়। আমি তা গ্রহণ করে মূসা (‘আঃ)-এর নিকট ফিরে এলাম। তিনি বললেন, কি করে এলেন? আমি বললাম, আমার প্রতি পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত ফরয করা হয়েছে। তিনি বললেন, আমি আপনার চেয়ে মানুষ সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত আছি। আমি বাণী ইসরাঈলের রোগ সরানোর যথেষ্ট চেষ্টা করেছি। আপনার উম্মত এত আদায়ে সমর্থ হবে, না। অতএব আপনার রবের নিকট ফিরে যান এবং তা কমানোর আবেদন করুন। আমি ফিরে গেলাম এবং তাঁর নিকট আবেদন করলাম। তিনি সালাত চল্লিশ ওয়াক্ত করে দিলেন। আবার তেমন ঘটল। সালাত ত্রিশ ওয়াক্ত করে দেয়া হল। আবার তেমন ঘটলে তিনি সালাত বিশ ওয়াক্ত করে দিলেন। আবার তেমন ঘটল। তিনি সালাতকে দশ ওয়াক্ত করে দিলেন। অতঃপর আমি মূসা (‘আঃ)-এর নিকট আসলাম। তিনি আগের মত বললেন, এবার আল্লাহ সালাতকে পাঁচ ওয়াক্ত ফরয করে দিলেন। আমি মূসার নিকট আসলাম। তিনি বললেন, কী করে আসলেন? আমি বললাম, আল্লাহ পাঁচ ওয়াক্ত ফরয করে দিয়েছেন। এবারও তিনি আগের মত বললেন, আমি বললাম, আমি তা মেনে নিয়েছি। তখন আওয়াজ এল, আমি আমার ফরয জারি করে দিয়েছি। আর আমার বান্দাদের হতে হালকা করেও দিয়েছি। আমি প্রতিটি নেকির বদলে দশগুণ সওয়াব দিব। আর বায়তুল মা’মূর সম্পর্কে হাম্মাম (রহঃ) …… আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেন।

৩২০৮
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الرَّبِيعِ، حَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ، قَالَ عَبْدُ اللَّهِ حَدَّثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ الصَّادِقُ الْمَصْدُوقُ قَالَ ‏ “‏ إِنَّ أَحَدَكُمْ يُجْمَعُ خَلْقُهُ فِي بَطْنِ أُمِّهِ أَرْبَعِينَ يَوْمًا، ثُمَّ يَكُونُ عَلَقَةً مِثْلَ ذَلِكَ، ثُمَّ يَكُونُ مُضْغَةً مِثْلَ ذَلِكَ، ثُمَّ يَبْعَثُ اللَّهُ مَلَكًا، فَيُؤْمَرُ بِأَرْبَعِ كَلِمَاتٍ، وَيُقَالُ لَهُ اكْتُبْ عَمَلَهُ وَرِزْقَهُ وَأَجَلَهُ وَشَقِيٌّ أَوْ سَعِيدٌ‏.‏ ثُمَّ يُنْفَخُ فِيهِ الرُّوحُ، فَإِنَّ الرَّجُلَ مِنْكُمْ لَيَعْمَلُ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجَنَّةِ إِلاَّ ذِرَاعٌ، فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ كِتَابُهُ، فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ النَّارِ، وَيَعْمَلُ حَتَّى مَا يَكُونُ بَيْنَهُ وَبَيْنَ النَّارِ إِلاَّ ذِرَاعٌ، فَيَسْبِقُ عَلَيْهِ الْكِتَابُ، فَيَعْمَلُ بِعَمَلِ أَهْلِ الْجَنَّةِ ‏”‏‏.‏

যায়দ ইব্‌নু ওয়াহ্‌ব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, সত্যবাদী হিসেবে গৃহীত আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের নিকট হাদীস বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন, নিশ্চয় তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টির উপাদান নিজ নিজ মায়ের পেটে চল্লিশ দিন পর্যন্ত বীর্যরূপে অবস্থান করে, অতঃপর তা জমাট বাঁধা রক্তে পরিণত হয়। ঐভাবে চল্লিশ দিন অবস্থান করে। অতঃপর তা মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়ে (আগের মত চল্লিশ দিন) থাকে। অতঃপর আল্লাহ একজন ফেরেশতা প্রেরণ করেন। আর তাঁকে চারটি বিষয়ে আদেশ দেয়া হয়। তাঁকে লিপিবদ্ধ করতে বলা হয়, তার ‘আমল, তার রিয্‌ক, তার আয়ু এবং সে কি পাপী হবে না নেককার হবে। অতঃপর তার মধ্যে আত্মা ফুঁকে দেয়া হয়। কাজেই তোমাদের কোন ব্যক্তি ‘আমল করতে করতে এমন পর্যায়ে পৌছে যে, তার এবং জান্নাতের মাঝে মাত্র এক হাত পার্থক্য থাকে। এমন সময় তার ‘আমলনামা তার উপর জয়ী হয়। তখন সে জাহান্নামবাসীর মত আমল করে। আর একজন ‘আমল করতে করতে এমন স্তরে পৌছে যে, তার এবং জাহান্নামের মাঝে মাত্র এক হাত তফাৎ থাকে, এমন সময় তার ‘আমলনামা তার উপর জয়ী হয়। ফলে সে জান্নাতবাসীর মত ‘আমল করে।

৩২০৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلاَمٍ، أَخْبَرَنَا مَخْلَدٌ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، قَالَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏ وَتَابَعَهُ أَبُو عَاصِمٍ عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ إِذَا أَحَبَّ اللَّهُ الْعَبْدَ نَادَى جِبْرِيلَ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ فُلاَنًا فَأَحْبِبْهُ‏.‏ فَيُحِبُّهُ جِبْرِيلُ، فَيُنَادِي جِبْرِيلُ فِي أَهْلِ السَّمَاءِ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ فُلاَنًا فَأَحِبُّوهُ‏.‏ فَيُحِبُّهُ أَهْلُ السَّمَاءِ، ثُمَّ يُوضَعُ لَهُ الْقَبُولُ فِي الأَرْضِ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে ভালবাসেন তখন তিনি জিব্‌রাঈল (‘আঃ)-কে ডেকে বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ অমুক বান্দাহকে ভালবাসেন, কাজেই তুমিও তাকে ভালবাস। তখন জিব্‌রাঈল (‘আঃ)-ও তাকে ভালবাসেন এবং জিব্‌রাঈল (‘আঃ) আকাশের অধিবাসীদের মধ্যে ঘোষণা করে দেন যে, আল্লাহ অমুক বান্দাহকে ভালবাসেন। কাজেই তোমরা তাকে ভালবাস। তখন আকাশের অধিবাসী তাকে ভালবাসতে থাকে। অতঃপর পৃথিবীতেও তাকে সম্মানিত করার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়।

৩২১০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي جَعْفَرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهَا سَمِعَتْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ إِنَّ الْمَلاَئِكَةَ تَنْزِلُ فِي الْعَنَانِ ـ وَهْوَ السَّحَابُ ـ فَتَذْكُرُ الأَمْرَ قُضِيَ فِي السَّمَاءِ، فَتَسْتَرِقُ الشَّيَاطِينُ السَّمْعَ، فَتَسْمَعُهُ فَتُوحِيهِ إِلَى الْكُهَّانِ، فَيَكْذِبُونَ مَعَهَا مِائَةَ كَذْبَةٍ مِنْ عِنْدِ أَنْفُسِهِمْ ‏”‏‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, ফেরেশতামণ্ডলী মেঘমালার আড়ালে অবতরণ করেন এবং আকাশের ফায়সালাসমূহ আলোচনা করেন। তখন শয়তানেরা তা চুরি করে শোনার চেষ্টা করে এবং তার কিছু শোনেও ফেলে। অতঃপর তারা সেটা গণকের নিকট পৌছে দেয় এবং তারা তার সেই শোনা কথার সঙ্গে নিজেদের আরো শত মিথ্যা মিলিয়ে বলে থাকে।

৩২১১
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، وَالأَغَرِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِذَا كَانَ يَوْمُ الْجُمُعَةِ كَانَ عَلَى كُلِّ باب مِنْ أَبْوَابِ الْمَسْجِدِ الْمَلاَئِكَةُ، يَكْتُبُونَ الأَوَّلَ فَالأَوَّلَ، فَإِذَا جَلَسَ الإِمَامُ طَوَوُا الصُّحُفَ وَجَاءُوا يَسْتَمِعُونَ الذِّكْرَ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘জুমু‘আর দিন মসজিদের প্রতিটি দরজায় ফেরেশতা এসে দাঁড়িয়ে যায় এবং যে ব্যক্তি প্রথম মসজিদে প্রবেশ করে, তার নাম লিখে নেয়। অতঃপর ক্রমান্বয়ে পরবর্তীদের নামও লিখে নেয়। ইমাম যখন বসে পড়েন তখন তারা এসব লেখা পুস্তিকা বন্ধ করে দেন এবং তাঁরা মসজিদে এসে যিক্‌র শুনতে থাকেন।’

৩২১২
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا الزُّهْرِيُّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، قَالَ مَرَّ عُمَرُ فِي الْمَسْجِدِ وَحَسَّانُ يُنْشِدُ، فَقَالَ كُنْتُ أُنْشِدُ فِيهِ، وَفِيهِ مَنْ هُوَ خَيْرٌ مِنْكَ، ثُمَّ الْتَفَتَ إِلَى أَبِي هُرَيْرَةَ، فَقَالَ أَنْشُدُكَ بِاللَّهِ، أَسَمِعْتَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ أَجِبْ عَنِّي، اللَّهُمَّ أَيِّدْهُ بِرُوحِ الْقُدُسِ ‏”‏‏.‏ قَالَ نَعَمْ‏.‏

সা’ঈদ ইব্‌নু মুসাইয়্যাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা ‘উমর (রাঃ) মসজিদে নববীতে আগমন করেন, তখন হাস্‌সান ইব্‌নু সাবিত (রাঃ) কবিতা আবৃত্তি করছিলেন। তখন তিনি বললেন, এখানে আপনার চেয়ে উত্তম ব্যক্তির উপস্থিতিতেও আমি কবিতা আবৃত্তি করতাম। অতঃপর তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-এর দিকে তাকালেন এবং বললেন, আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করছি; আপনি কি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, “তুমি আমার পক্ষ হতে জবাব দাও। হে আল্লাহ! আপনি তাকে রুহুল কুদুস [জিবরাঈল (‘আঃ)] দ্বারা সাহায্য করুন।” তিনি উত্তরে বললেন, হ্যাঁ।






[১] মসজিদে কবিতা আবৃত্তি করতে হাস্‌সান ইবন সাবিত (রা.)-এর প্রতি উমর (রা.) আপত্তি করাতে তিনি আবু হুরায়রা (রা.)-কে সাক্ষী হিসাবে পেশ করলেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর উপস্থিতিতে মসজিদে কবিতা আবৃত্তি করেছেন ।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩২১৩
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنِ الْبَرَاءِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِحَسَّانَ ‏ “‏ اهْجُهُمْ ـ أَوْ هَاجِهِمْ ـ وَجِبْرِيلُ مَعَكَ ‏”‏‏.‏

বারা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাস্‌সান (রাঃ)-কে বলেছেন, তুমি তাদের দোষ-ত্রুটি বর্ণনা কর অথবা তাদের কুৎসার জবাব দাও। তোমার সঙ্গে জিব্‌রাঈল (‘আঃ) আছেন।

৩২১৪
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، أَخْبَرَنَا وَهْبُ بْنُ جَرِيرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ، سَمِعْتُ حُمَيْدَ بْنَ هِلاَلٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى غُبَارٍ سَاطِعٍ فِي سِكَّةِ بَنِي غَنْمٍ‏.‏ زَادَ مُوسَى مَوْكِبَ جِبْرِيلَ‏.‏

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি যেন বনূ গানমের গলিতে উপরে উঠা ধূলা স্বয়ং দেখতে পাচ্ছি। মূসা এতটুকু বাড়িয়ে বলেছেন, জিব্‌রীল বাহন নিয়ে পদচারণা করেন। [১]






[১] কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে হাস্‌সান ইব্‌নু সাবিত (রাঃ) কাফিরদের প্রতিবাদ করতেন। জিব্‌রীল (‘আঃ) তাঁর দলবল নিয়ে তাঁকে সাহায্য করতেন। তখন তাঁদের পদচালনার কারণে যে ধূলি উর্ধ্বে উঠত আমি যেন তা বনূ গানমের গলিতে স্বয়ং প্রত্যক্ষ করেছি।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩২১৫
حَدَّثَنَا فَرْوَةُ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ الْحَارِثَ بْنَ هِشَامٍ، سَأَلَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَيْفَ يَأْتِيكَ الْوَحْىُ قَالَ ‏ “‏ كُلُّ ذَاكَ يَأْتِي الْمَلَكُ أَحْيَانًا فِي مِثْلِ صَلْصَلَةِ الْجَرَسِ، فَيَفْصِمُ عَنِّي وَقَدْ وَعَيْتُ مَا قَالَ، وَهْوَ أَشَدُّهُ عَلَىَّ، وَيَتَمَثَّلُ لِي الْمَلَكُ أَحْيَانًا رَجُلاً، فَيُكَلِّمُنِي فَأَعِي مَا يَقُولُ ‏”‏‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

হারিস ইব্‌নু হিশাম (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার নিকট ওয়াহী কিভাবে আসে? তিনি বললেন, ‘সব ধরনের ওয়াহী নিয়ে ফেরেশতা আসেন। কখনো কখনো ঘন্টার আওয়াজের মত শব্দ করে। যখন আমার নিকট ওয়াহী আসা শেষ হয়ে যায়, তখন তিনি যা বলেছেন আমি তা মুখস্থ করে ফেলি। আর এভাবে শব্দ করে ওয়াহী আসাটা আমার নিকট কঠিন মনে হয়। আর কখনও কখনও ফেরেশতা আমার নিকট মানুষের আকারে আসেন এবং আমার সঙ্গে কথা বলেন। তিনি যা বলেন আমি তা মুখস্থ করে নেই।’

৩২১৬
حَدَّثَنَا آدَمُ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏”‏ مَنْ أَنْفَقَ زَوْجَيْنِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ دَعَتْهُ خَزَنَةُ الْجَنَّةِ أَىْ فُلُ هَلُمَّ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ ذَاكَ الَّذِي لاَ تَوَى عَلَيْهِ‏.‏ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ أَرْجُو أَنْ تَكُونَ مِنْهُمْ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে কোন কিছু জোড়ায় জোড়ায় দান করবে, তাকে জান্নাতের পর্যবেক্ষকগণ আহবান করতে থাকবে, হে অমুক ব্যক্তি! এ দিকে আস! তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেন, এমন ব্যক্তি তো সেই যার কোন ধ্বংস নেই। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমি আশা করি, তুমি তাদের মধ্যে একজন হবে।

৩২১৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا هِشَامٌ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَهَا ‏ “‏ يَا عَائِشَةُ، هَذَا جِبْرِيلُ يَقْرَأُ عَلَيْكِ السَّلاَمَ ‏”‏‏.‏ فَقَالَتْ وَعَلَيْهِ السَّلاَمُ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ‏.‏ تَرَى مَا لاَ أَرَى‏.‏ تُرِيدُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেন, হে আয়িশা! এই যে জিব্‌রীল (‘আঃ) তোমাকে সালাম দিচ্ছেন। তখন তিনি বললেন, তাঁর প্রতি সালাম, আল্লাহর রহমত এবং তাঁর বরকত বর্ষিত হোক। আপনি এমন কিছু দেখেন যা আমি দেখতে পাই না। এর দ্বারা তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বুঝিয়েছেন।

৩২১৮
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ ذَرٍّ، ح قَالَ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ عُمَرَ بْنِ ذَرٍّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِجِبْرِيلَ ‏”‏ أَلاَ تَزُورُنَا أَكْثَرَ مِمَّا تَزُورُنَا ‏”‏ قَالَ فَنَزَلَتْ ‏{‏وَمَا نَتَنَزَّلُ إِلاَّ بِأَمْرِ رَبِّكَ لَهُ مَا بَيْنَ أَيْدِينَا وَمَا خَلْفَنَا‏}‏ الآيَةَ‏.‏

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিব্‌রাঈল (‘আঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি আমার কাছে যতবার আসেন তার চেয়ে অধিক আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন না কেন? রাবী বলেন, তখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ “(জিবরাঈল বললঃ) আমি আপনার রবের আদেশ ব্যতিরেকে আসতে পারি না। তাঁরই আয়ত্বে রয়েছে যা কিছু আমাদের সামনে আছে, যা আমাদের পশ্চাতে আছে এবং যা কিছু এর মধ্যস্থলে আছে”-(মারইয়াম ৬৪)।

৩২১৯
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي سُلَيْمَانُ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ أَقْرَأَنِي جِبْرِيلُ عَلَى حَرْفٍ، فَلَمْ أَزَلْ أَسْتَزِيدُهُ حَتَّى انْتَهَى إِلَى سَبْعَةِ أَحْرُفٍ ‏”‏‏.‏

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘জিব্‌রীল (‘আঃ) আমাকে এক আঞ্চলিক ভাষায় কুরআন পাঠ করে শুনিয়েছেন। কিন্তু আমি সব সময় তাঁর নিকট বেশি ভাষায় পাঠ শুনতে চাইতাম। শেষতক তা সাতটি আঞ্চলিক ভাষায় শেষ হয়। [১]






[১] সাতটি আঞ্চলিক ভাষাতে কুরাআন অবতীর্ণ হলেও কুরআন লিপিবদ্ধ করার সময় কুরাইশ ভাষাকেই নির্ধারণ করা হয়। (লামহাত ফী উলুমিল কুরআন, ডঃ মুহাম্মাদ বিন লুতফী সাব্বাক, পৃষ্ঠা ১৭২)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩২২০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَجْوَدَ النَّاسِ، وَكَانَ أَجْوَدَ مَا يَكُونُ فِي رَمَضَانَ حِينَ يَلْقَاهُ جِبْرِيلُ، وَكَانَ جِبْرِيلُ يَلْقَاهُ فِي كُلِّ لَيْلَةٍ مِنْ رَمَضَانَ، فَيُدَارِسُهُ الْقُرْآنَ، فَلَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ يَلْقَاهُ جِبْرِيلُ أَجْوَدُ بِالْخَيْرِ مِنَ الرِّيحِ الْمُرْسَلَةِ‏.‏ وَعَنْ عَبْدِ اللَّهِ حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَهُ‏.‏ وَرَوَى أَبُو هُرَيْرَةَ وَفَاطِمَةُ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّ جِبْرِيلَ كَانَ يُعَارِضُهُ الْقُرْآنَ‏.‏

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকদের মধ্যে সবচেয়ে দানশীল ছিলেন আর রমাযান মাসে যখন জিব্‌রীল (‘আঃ) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন তখন তিনি আরো অধিক দানশীল হয়ে যেতেন। জিব্‌রীল (‘আঃ) রমযানের প্রতি রাতে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে কুরআন পাঠ করে শুনাতেন। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সঙ্গে যখন জিব্‌রাঈল (‘আঃ) দেখা করতেন, তখন তিনি মানুষের কল্যাণের জন্য পাঠানো বাতাসের চেয়েও বেশি দানশীল হয়ে হতেন। ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) হতে বর্ণিত। মা’মার (রহঃ) এ সনদে একই রকম হাদীসের বর্ণনা করেছেন আর আবূ হুরায়রা (রাঃ) এবং ফাতেমাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিকট হতে ———–এর স্থলে ———– বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ জিব্‌রীল তাঁর উপর কুরআন পেশ করতেন।

৩২২১
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّ عُمَرَ بْنَ عَبْدِ الْعَزِيزِ، أَخَّرَ الْعَصْرَ شَيْئًا فَقَالَ لَهُ عُرْوَةُ أَمَا إِنَّ جِبْرِيلَ قَدْ نَزَلَ فَصَلَّى أَمَامَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم‏.‏ فَقَالَ عُمَرُ اعْلَمْ مَا تَقُولُ يَا عُرْوَةُ‏.‏ قَالَ سَمِعْتُ بَشِيرَ بْنَ أَبِي مَسْعُودٍ يَقُولُ سَمِعْتُ أَبَا مَسْعُودٍ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ نَزَلَ جِبْرِيلُ فَأَمَّنِي، فَصَلَّيْتُ مَعَهُ، ثُمَّ صَلَّيْتُ مَعَهُ، ثُمَّ صَلَّيْتُ مَعَهُ، ثُمَّ صَلَّيْتُ مَعَهُ، ثُمَّ صَلَّيْتُ مَعَهُ ‏”‏‏.‏ يَحْسُبُ بِأَصَابِعِهِ خَمْسَ صَلَوَاتٍ‏.‏

ইব্‌নু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একবার ‘উমর ইব্‌নু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ) ‘আসরের সালাত কিছুটা দেরিতে আদায় করলেন। তখন তাঁকে ‘উরওয়াহ (রাঃ) বললেন, একবার জিব্‌রীল (‘আঃ) আসলেন এবং আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ইমাম হয়ে সালাত আদায় করলেন। তা শুনে ‘উমর ইব্‌নু ‘আবদুল ‘আযীয (রহঃ) বললেন, হে ‘উরওয়াহ! কি বলছ, চিন্তা কর। উত্তরে তিনি বললেন, আমি বশীর ইব্‌নু মাস’ঊদকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলতে শুনেছি, একবার জিব্‌রীল (‘আঃ) আসলেন, অতঃপর তিনি আমার ইমামতি করলেন এবং তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করলাম। অতঃপর আমি তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করলাম। অতঃপর আমি তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করলাম। অতঃপর আমি তাঁর সঙ্গে সালাত আদায় করলাম। এ সময় তিনি তাঁর আঙ্গুলে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত গুণছিলেন।

৩২২২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ وَهْبٍ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ قَالَ لِي جِبْرِيلُ مَنْ مَاتَ مِنْ أُمَّتِكَ لاَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ، أَوْ لَمْ يَدْخُلِ النَّارَ، قَالَ وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ قَالَ وَإِنْ ‏”‏‏.‏

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, একবার জিব্‌রাঈল (‘আঃ) আমাকে বললেন, আপনার উম্মত হতে যদি এমন এক ব্যক্তি মারা যায় যা আল্লাহ্‌র সঙ্গে কোন কিছুই শরীক করেনি, তাহলে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে কিংবা তিনি বলেছেন, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যদিও সে যিনা ও চুরি করে। জিব্‌রীল (‘আঃ) বললেন, যদিও (সে যিনা ও চুরি করে তবুও)। [১]






[১] অপরাধের শাস্তি ভোগের পর জান্নাতে যাবে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩২২৩
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ الْمَلاَئِكَةُ يَتَعَاقَبُونَ، مَلاَئِكَةٌ بِاللَّيْلِ وَمَلاَئِكَةٌ بِالنَّهَارِ، وَيَجْتَمِعُونَ فِي صَلاَةِ الْفَجْرِ وَالْعَصْرِ، ثُمَّ يَعْرُجُ إِلَيْهِ الَّذِينَ بَاتُوا فِيكُمْ، فَيَسْأَلُهُمْ وَهْوَ أَعْلَمُ، فَيَقُولُ كَيْفَ تَرَكْتُمْ ‏{‏عِبَادِي‏}‏ فَيَقُولُونَ تَرَكْنَاهُمْ يُصَلُّونَ، وَأَتَيْنَاهُمْ يُصَلُّونَ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ফেরেশতামন্ডলী একদলের পেছনে আর একদল আগমন করেন। একদল ফেরেশতা রাতে আসেন আর একদল ফেরেশতা দিনে আসেন। তাঁরা ফাজ্‌র ও ‘আসর সালাতে একত্রিত হয়ে থাকেন। অতঃপর যারা তোমাদের নিকট রাত্রি কাটিয়েছিলেন তারা আল্লাহ্‌র নিকট উর্ধ্বে চলে যান। তখন তাদেরকে মানুষের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। অথচ তিনি তাদের চেয়ে এ ব্যাপারে অধিক জ্ঞাত আছেন। তিনি বলেন, তোমরা আমার বান্দাহদেরকে কী হালতে ছেড়ে এসেছে? উত্তরে তাঁরা বলেন, আমরা তাদেরকে সালাতরত অবস্থাতেই পৌঁছেছিলাম।

৫৯/৭. অধ্যায়ঃ
তোমাদের কেউ যখন আমীন বলে আর আকশের ফেরেশতাগণও আমীন বলে। অতঃপর একের আমীন অন্যের আমীনের সঙ্গে মিলিতভাবে উচ্চারিত হয় তখন পুর্বের পাপরাশি মুছে দেয়া হয়।

৩২২৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، أَخْبَرَنَا مَخْلَدٌ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أُمَيَّةَ، أَنَّ نَافِعًا، حَدَّثَهُ أَنَّ الْقَاسِمَ بْنَ مُحَمَّدٍ حَدَّثَهُ عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ حَشَوْتُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وِسَادَةً فِيهَا تَمَاثِيلُ كَأَنَّهَا نُمْرُقَةٌ، فَجَاءَ فَقَامَ بَيْنَ الْبَابَيْنِ وَجَعَلَ يَتَغَيَّرُ وَجْهُهُ، فَقُلْتُ مَا لَنَا يَا رَسُولَ اللَّهِ‏.‏ قَالَ ‏”‏ مَا بَالُ هَذِهِ الْوِسَادَةِ ‏”‏‏.‏ قَالَتْ وِسَادَةٌ جَعَلْتُهَا لَكَ لِتَضْطَجِعَ عَلَيْهَا‏.‏ قَالَ ‏”‏ أَمَا عَلِمْتِ أَنَّ الْمَلاَئِكَةَ لاَ تَدْخُلُ بَيْتًا فِيهِ صُورَةٌ، وَأَنَّ مَنْ صَنَعَ الصُّورَةَ يُعَذَّبُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَقُولُ أَحْيُوا مَا خَلَقْتُمْ ‏”‏‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জন্য প্রানীর ছবিওয়ালা একটি বালিশ তৈরি করেছিলাম। যেন তা একটি ছোট গদী। অতঃপর তিনি আমার ঘরে এসে দু’দরজার মধ্যে দাঁড়ালেন আর তাঁর চেহারা মলিন হয়ে গেল। তখন আমি বললাম, এ বালিশটি আপনি এর উপর ঠেস দিয়ে বসতে পারেন সে’ জন্য তৈরি করছি। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি কি জান না যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে ফেরেশতা প্রবেশ করে না। আর যে ব্যক্তি প্রাণীর ছবি আকেঁ তাকে কিয়ামতের দিন শাস্তি দেয়া হবে? (আল্লাহ্‌) বলবেন, ‘বানিয়েছ, তাঁকে জীবিত কর।’

৩২২৫
حَدَّثَنَا ابْنُ مُقَاتِلٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّهُ سَمِعَ ابْنَ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ يَقُولُ سَمِعْتُ أَبَا طَلْحَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ لاَ تَدْخُلُ الْمَلاَئِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ وَلاَ صُورَةُ تَمَاثِيلَ ‏”‏‏.‏

আবূ ত্বালহা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, যে বাড়িতে কুকুর থাকে আর প্রাণীর ছবি থাকে সেথায় ফেরেশতা প্রবেশ করে না।

৩২২৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنَا عَمْرٌو، أَنَّ بُكَيْرَ بْنَ الأَشَجِّ، حَدَّثَهُ أَنَّ بُسْرَ بْنَ سَعِيدٍ حَدَّثَهُ أَنَّ زَيْدَ بْنَ خَالِدٍ الْجُهَنِيَّ ـ رضى الله عنه ـ حَدَّثَهُ وَمَعَ، بُسْرِ بْنِ سَعِيدٍ عُبَيْدُ اللَّهِ الْخَوْلاَنِيُّ الَّذِي كَانَ فِي حَجْرِ مَيْمُونَةَ ـ رضى الله عنها ـ زَوْجِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَدَّثَهُمَا زَيْدُ بْنُ خَالِدٍ أَنَّ أَبَا طَلْحَةَ حَدَّثَهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ لاَ تَدْخُلُ الْمَلاَئِكَةُ بَيْتًا فِيهِ صُورَةٌ ‏”‏‏.‏ قَالَ بُسْرٌ فَمَرِضَ زَيْدُ بْنُ خَالِدٍ، فَعُدْنَاهُ فَإِذَا نَحْنُ فِي بَيْتِهِ بِسِتْرٍ فِيهِ تَصَاوِيرُ، فَقُلْتُ لِعُبَيْدِ اللَّهِ الْخَوْلاَنِيِّ أَلَمْ يُحَدِّثْنَا فِي التَّصَاوِيرِ فَقَالَ إِنَّهُ قَالَ ‏”‏ إِلاَّ رَقْمٌ فِي ثَوْبٍ ‏”‏‏.‏ أَلاَ سَمِعْتَهُ قُلْتُ لاَ‏.‏ قَالَ بَلَى قَدْ ذَكَرَهُ‏.‏

আবূ ত্বলহা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে বাড়িতে প্রাণীর ছবি থাকে সেখানে ফেরেশতা প্রবেশ করে না।’ বুস্‌র (রহঃ) বলেন, অতপর যায়িদ ইব্‌নু খালিদ (রাঃ) রোগাক্রান্ত হন। আমরা তাঁর সেবার জন্য গেলাম। তখন আমরা তাঁর ঘরে একটি পর্দায় কিছু ছবি দেখতে পেলাম। তখন আমি (বুস্‌র) ‘উবাইদুল্লাহ খাওলানী (রহঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, ইনি কি আমাদের কাছে ছবি সম্পর্কীয় হাদীস বর্ণনা করেননি? তখন তিনি বলেছেন, প্রাণীর; তবে কাপড়ের মধ্যে কিছু অংকন করা নিষিদ্ধ নয়, তুমি কি তা শুননি? আমি বললাম, না। তিনি বললেন, হ্যাঁ, তিনি তা বর্ণনা করেছেন।

৩২২৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سُلَيْمَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عُمَرُ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ وَعَدَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم جِبْرِيلُ فَقَالَ إِنَّا لاَ نَدْخُلُ بَيْتًا فِيهِ صُورَةٌ وَلاَ كَلْبٌ‏.‏

সালিম (রাঃ) তাঁর পিতার নিকট থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জিব্‌রাঈল (‘আঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ওয়াদা দিয়েছিলেন। আমরা ঐ ঘরে প্রবেশ করি না, যে ঘরে ছবি ও কুকুর থাকে।

৩২২৮
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ سُمَىٍّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ إِذَا قَالَ الإِمَامُ سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ‏.‏ فَقُولُوا اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ، فَإِنَّهُ مَنْ وَافَقَ قَوْلُهُ قَوْلَ الْمَلاَئِكَةِ، غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (সালাতে) ইমাম যখন ————— বলবে, তখন তোমরা বলবে——————— (হে আল্লাহ! আমাদের প্রতিপালক। আপনার জন্য সকল প্রশংসা) কেননা যার এ উক্তি ফেরেশতাগণের উক্তির সঙ্গে মিলে যাবে, তার আগের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।

৩২২৯
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُلَيْحٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ هِلاَلِ بْنِ عَلِيٍّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي عَمْرَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ إِنَّ أَحَدَكُمْ فِي صَلاَةٍ مَا دَامَتِ الصَّلاَةُ تَحْبِسُهُ، وَالْمَلاَئِكَةُ تَقُولُ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ‏.‏ مَا لَمْ يَقُمْ مِنْ صَلاَتِهِ أَوْ يُحْدِثْ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যতক্ষণ পর্যন্ত সালাতে রত থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত ফেরেশতাগণ এ বলে দু’আ করতে থাকে, হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করে দিন এবং হে আল্লাহ! তার প্রতি রহম করুন যতক্ষণ পর্যন্ত লোকটি সালাত ছেড়ে না দাঁড়ায় কিংবা তার উযু ভঙ্গ না হয়।’

৩২৩০
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ يَعْلَى، عَنْ أَبِيهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ عَلَى الْمِنْبَرِ ‏{‏وَنَادَوْا يَا مَالِكُ‏}‏‏.‏ قَالَ سُفْيَانُ فِي قِرَاءَةِ عَبْدِ اللَّهِ وَنَادَوْا يَا مَالِ‏.‏

সাফওয়ান ইব্‌নু ইয়া‘লা (রাঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে মিম্বারে উঠে এ আয়াত তিলাওয়াত করতে শুনেছি;—————–(আর তারা ডাকল, হে মালিক!) সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস‘উদ (রাঃ)-এর ক্বিরাআতে ———– স্থলে ———— রয়েছে।

৩২৩১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عُرْوَةُ، أَنَّ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم حَدَّثَتْهُ أَنَّهَا قَالَتْ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم هَلْ أَتَى عَلَيْكَ يَوْمٌ كَانَ أَشَدَّ مِنْ يَوْمِ أُحُدٍ قَالَ ‏ “‏ لَقَدْ لَقِيتُ مِنْ قَوْمِكِ مَا لَقِيتُ، وَكَانَ أَشَدُّ مَا لَقِيتُ مِنْهُمْ يَوْمَ الْعَقَبَةِ، إِذْ عَرَضْتُ نَفْسِي عَلَى ابْنِ عَبْدِ يَالِيلَ بْنِ عَبْدِ كُلاَلٍ، فَلَمْ يُجِبْنِي إِلَى مَا أَرَدْتُ، فَانْطَلَقْتُ وَأَنَا مَهْمُومٌ عَلَى وَجْهِي، فَلَمْ أَسْتَفِقْ إِلاَّ وَأَنَا بِقَرْنِ الثَّعَالِبِ، فَرَفَعْتُ رَأْسِي، فَإِذَا أَنَا بِسَحَابَةٍ قَدْ أَظَلَّتْنِي، فَنَظَرْتُ فَإِذَا فِيهَا جِبْرِيلُ فَنَادَانِي فَقَالَ إِنَّ اللَّهَ قَدْ سَمِعَ قَوْلَ قَوْمِكَ لَكَ وَمَا رَدُّوا عَلَيْكَ، وَقَدْ بَعَثَ إِلَيْكَ مَلَكَ الْجِبَالِ لِتَأْمُرَهُ بِمَا شِئْتَ فِيهِمْ، فَنَادَانِي مَلَكُ الْجِبَالِ، فَسَلَّمَ عَلَىَّ ثُمَّ قَالَ يَا مُحَمَّدُ، فَقَالَ ذَلِكَ فِيمَا شِئْتَ، إِنْ شِئْتَ أَنْ أُطْبِقَ عَلَيْهِمِ الأَخْشَبَيْنِ، فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَلْ أَرْجُو أَنْ يُخْرِجَ اللَّهُ مِنْ أَصْلاَبِهِمْ مَنْ يَعْبُدُ اللَّهَ وَحْدَهُ لاَ يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا ‏”‏‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একবার তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলেন, উহুদের দিনের চেয়ে কঠিন কোনদিন কি আপনার উপর এসেছিল? তিনি বললেন, আমি তোমার ক্বওম হতে যে বিপদের সম্মুখীন হয়েছি, তাতো হয়েছি। তাদের হতে অধিক কঠিন বিপদের সম্মুখীন হয়েছি, আকাবার দিন যখন আমি নিজেকে ইব্‌নু ‘আবদে ইয়ালীল ইবনে ‘আবদে কলালের নিকট পেশ করেছিলাম। আমি যা চেয়েছিলাম, সে তার জবাব দেয়নি। তখন আমি এমন ভাবে বিষণ্ণ চেহারা নিয়ে ফিরে এলাম যে, কারনুস সাআলিবে পৌছা পর্যন্ত আমার চিন্তা দূর হয়নি। তখন আমি মাথা উপরে উঠালাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম এক টুকরো মেঘ আমাকে ছায়া দিচ্ছে। আমি সেদিকে তাকালাম। তারমধ্যে ছিলেন জিবরাঈল (‘আঃ)। তিনি আমাকে ডেকে বললেন, আপনার ক্বওম আপনাকে যা বলেছে এবং তারা উত্তরে যা বলেছে তা সবই আল্লাহ শুনেছেন। তিনি আপনার নিকট পাহাড়ের ফেরেশতাকে পাঠিয়েছেন। এদের সম্পর্কে আপনার যা ইচ্ছে আপনি তাঁকে হুকুম দিতে পারেন। তখন পাহাড়ের ফেরেশতা আমাকে ডাকলেন এবং আমাকে সালাম দিলেন। অতঃপর বললেন, হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! এসব ব্যাপার আপনার ইচ্ছাধীন। আপনি যদি চান, তাহলে আমি তাদের উপর আখশাবাইন [১] কে চাপিয়ে দিব। উত্তরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, বরং আশা করি মহান আল্লাহ তাদের বংশ থেকে এমন সন্তান জন্ম দেবেন যারা এক আল্লাহর ‘ইবাদত করবে আর তাঁর সঙ্গে কাউকে শরীক করবেনা।






[১] আখশাবাইনঃ দু‘টি কঠিন শিলার পাহাড়।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩২৩২
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو إِسْحَاقَ الشَّيْبَانِيُّ، قَالَ سَأَلْتُ زِرَّ بْنَ حُبَيْشٍ عَنْ قَوْلِ اللَّهِ، تَعَالَى ‏{‏فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَى * فَأَوْحَى إِلَى عَبْدِهِ مَا أَوْحَى‏}‏‏.‏ قَالَ حَدَّثَنَا ابْنُ مَسْعُودٍ أَنَّهُ رَأَى جِبْرِيلَ لَهُ سِتُّمِائَةِ جَنَاحٍ‏.‏

আবূ ইসহাক শায়বানী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি যির ইব্‌নু হুবাইশ (রাঃ)–কে মহান আল্লাহর এ বাণীঃ ‘‘অবশেষে তাদের মধ্যে দুই ধনুকের দূরত্ব রইল অথবা আরও কম। তখন আল্লাহ স্বীয় বান্দার প্রতি যা ওয়াহী করার ছিল, তা ওয়াহী করলেন’’- (আন্-নাজম ৯-১০)। এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, ইব্‌নু মাস‘উদ (রাঃ) আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিবরাঈল (‘আঃ)-কে দেখেছেন। তাঁর ছয়শ’টি ডানাছিল।

৩২৩৩
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه – ‏{‏لَقَدْ رَأَى مِنْ آيَاتِ رَبِّهِ الْكُبْرَى‏}‏ قَالَ رَأَى رَفْرَفًا أَخْضَرَ سَدَّ أُفُقَ السَّمَاءِ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস‘উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি এ আয়াতঃ তিনি তো স্বীয় রবের মহান নিদর্শনসমূহ দর্শন করেছেন।’’ (আন্-নাজম ১৮)–এর মর্মার্থে বলেন, তিনি (নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)) সবুজবর্ণের রফরফ [২] দেখেছেন, যা আকাশের দিগন্তকে আবৃত করে রেখেছিল।






[২] রফরফ অর্থ সবুজ কাপড়ের বিছানা।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩২৩৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الأَنْصَارِيُّ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، أَنْبَأَنَا الْقَاسِمُ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ مَنْ زَعَمَ أَنَّ مُحَمَّدًا رَأَى رَبَّهُ فَقَدْ أَعْظَمَ، وَلَكِنْ قَدْ رَأَى جِبْرِيلَ فِي صُورَتِهِ، وَخَلْقُهُ سَادٌّ مَا بَيْنَ الأُفُقِ

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যে ব্যক্তি মনে করবে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর রবকে দেখেছেন, সে ব্যক্তি মহা ভুল করবে। বরং তিনি জিব্‌রাঈল (‘আঃ)–কে তাঁর আসল আকার ও চেহারায় দেখেছেন। তিনি আকাশের দিকচক্রবাল জুড়ে অবস্থান করছিলেন।

৩২৩৫
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، حَدَّثَنَا زَكَرِيَّاءُ بْنُ أَبِي زَائِدَةَ، عَنِ ابْنِ الأَشْوَعِ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ قُلْتُ لِعَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ فَأَيْنَ قَوْلُهُ ‏{‏ثُمَّ دَنَا فَتَدَلَّى * فَكَانَ قَابَ قَوْسَيْنِ أَوْ أَدْنَى‏}‏ قَالَتْ ذَاكَ جِبْرِيلُ كَانَ يَأْتِيهِ فِي صُورَةِ الرَّجُلِ، وَإِنَّهُ أَتَاهُ هَذِهِ الْمَرَّةَ فِي صُورَتِهِ الَّتِي هِيَ صُورَتُهُ، فَسَدَّ الأُفُقَ‏.‏

মাসরূক (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ)-কে আল্লাহ্‌র বাণীঃ ‘‘তারপর সে তার নিকটবর্তী হল এবং আতি নিকটবর্তী হল, অবশেষে তাদের মধ্যে দুই ধনুকের দূরত্ব রইল আথবা আরও কম’’ (আন্-নাজম ৮,৯) – এর অর্থ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, তিনি জিব্‌রাঈল (‘আঃ) ছিলেন। তিনি সাধারণত মানুষের আকার নিয়ে তাঁর নিকট আসতেন। কিন্তু এবার তিনি নিকটে এসেছিলেন তাঁর আসল চেহারা নিয়ে। তখন তিনি আকাশের সম্পূর্ণ দিকচক্রবাল আবৃত করে ফেলেছিলেন।

৩২৩৬
حَدَّثَنَا مُوسَى، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، حَدَّثَنَا أَبُو رَجَاءٍ، عَنْ سَمُرَةَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ رَأَيْتُ اللَّيْلَةَ رَجُلَيْنِ أَتَيَانِي قَالاَ الَّذِي يُوقِدُ النَّارَ مَالِكٌ خَازِنُ النَّارِ، وَأَنَا جِبْرِيلُ، وَهَذَا مِيكَائِيلُ ‏”‏‏.‏

সামূরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আজ রাতে আমি দেখেছি, দু’ব্যক্তি আমার নিকট আসেছে। তারা বলল, যে অগ্নি প্রজ্বলিত করছিল সে হলো দোযখের তত্ত্বাবধায়ক মালিক আর আমি জিব্‌রাঈল এবং ইনি মীকাঈল।

৩২৩৭
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَأَبَتْ، فَبَاتَ غَضْبَانَ عَلَيْهَا، لَعَنَتْهَا الْمَلاَئِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ ‏”‏‏.‏ تَابَعَهُ شُعْبَةُ وَأَبُو حَمْزَةَ وَابْنُ دَاوُدَ وَأَبُو مُعَاوِيَةَ عَنِ الأَعْمَشِ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কোন লোক যদি নিজ স্ত্রীকে নিজ বিছানায় আসতে ডাকে আর সে অস্বীকার করে এবং সে ব্যক্তি স্ত্রীর উপর দুঃখ নিয়ে রাত্রি যাপন করে, তাহলে ফেরেশতাগণ এমন স্ত্রীর উপর সকাল পর্যন্ত লা‘নত দিতে থাকে। শুবা, আবূ হামযাহ্, ইব্‌নু দাউদ ও আবূ মু‘আবিয়াহ (রহঃ) হতে হাদীস বর্ণনায় আবূ আওয়ানাহ (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।

৩২৩৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، قَالَ حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ، قَالَ أَخْبَرَنِي جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏”‏ ثُمَّ فَتَرَ عَنِّي الْوَحْىُ فَتْرَةً، فَبَيْنَا أَنَا أَمْشِي سَمِعْتُ صَوْتًا مِنَ السَّمَاءِ، فَرَفَعْتُ بَصَرِي قِبَلَ السَّمَاءِ فَإِذَا الْمَلَكُ الَّذِي جَاءَنِي بِحِرَاءٍ قَاعِدٌ عَلَى كُرْسِيٍّ بَيْنَ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ، فَجُئِثْتُ مِنْهُ حَتَّى هَوَيْتُ إِلَى الأَرْضِ، فَجِئْتُ أَهْلِي فَقُلْتُ زَمِّلُونِي زَمِّلُونِي‏.‏ فَأَنْزَلَ اللَّهُ تَعَالَى ‏{‏يَا أَيُّهَا الْمُدَّثِّرُ‏}‏ إِلَى ‏{‏فَاهْجُرْ‏}‏ ‏”‏‏.‏ قَالَ أَبُو سَلَمَةَ وَالرِّجْزُ الأَوْثَانُ‏.‏

জাবির ইব্‌নু ‘আবদিল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – কে বলতে শুনেছি। আমার নিকট হতে কিছুদিনের জন্য ওয়াহী বন্ধ হয়ে গেল। আমি পথ চলতেছিলাম। এরই মধ্যে আকাশ হতে একটি আওয়াজ শুনতে পেলাম। তখন আমি আকাশের দিকে দৃষ্টি তুললাম। হঠাৎ দেখতে পেলাম, হেরা পাহাড়ের গুহায় আমার নিকট যে ফেরেশতা এসেছিলেন, তিনি আকাশ ও যমীনের মাঝখানে একটি কুরসীর উপর বসে আছেন। আমি তাতে ভীত হয়ে গেলাম, এমন কি মাটিতে পড়ে যাবার উপক্রম হলাম। অতঃপর আমি আমার পরিজনের নিকট এলাম এবং বললাম, আমাকে কম্বল দিয়ে আবৃত কর, আমাকে কম্বল দিয়ে আবৃত কর। তখন মহান আল্লাহ্‌ এ আয়াত অবতীর্ণ করেনঃ ————- হে বস্ত্রাবৃত। উঠ, সতর্কবাণী প্রচার কর…..অপবিত্রতা হতে দূরে থাক। (আল-মুদ্দাসসিরঃ ১-৫) আবূ সালামা (রাঃ) বলেন, অত্র আয়াতে —— হল প্রতিমা।

৩২৩৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ،‏.‏ وَقَالَ لِي خَلِيفَةُ حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ، حَدَّثَنَا ابْنُ عَمِّ، نَبِيِّكُمْ يَعْنِي ابْنَ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ رَأَيْتُ لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِي مُوسَى رَجُلاً آدَمَ طُوَالاً جَعْدًا، كَأَنَّهُ مِنْ رِجَالِ شَنُوءَةَ، وَرَأَيْتُ عِيسَى رَجُلاً مَرْبُوعًا مَرْبُوعَ الْخَلْقِ إِلَى الْحُمْرَةِ وَالْبَيَاضِ، سَبْطَ الرَّأْسِ، وَرَأَيْتُ مَالِكًا خَازِنَ النَّارِ ‏”‏‏.‏ وَالدَّجَّالَ فِي آيَاتٍ أَرَاهُنَّ اللَّهُ إِيَّاهُ، فَلاَ تَكُنْ فِي مِرْيَةٍ مِنْ لِقَائِهِ‏.‏ قَالَ أَنَسٌ وَأَبُو بَكْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ تَحْرُسُ الْمَلاَئِكَةُ الْمَدِينَةَ مِنَ الدَّجَّالِ ‏”‏‏.‏

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর চাচা ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মিরাজের রাত্রে আমি মূসা (‘আঃ)- কে দেখেছি। তিনি গোধুম বর্ণের পুরুষ ছিলেন; দেহের গঠন ছিল লম্বা। মাথার চুল ছিল কোঁকড়ানো। যেন তিনি শানুআ গোত্রের জনৈক ব্যক্তি। আমি ‘ঈসা (‘আঃ)- কে দেখতে পাই। তিনি ছিলেন মধ্যম গঠনের লোক। তাঁর দেহবর্ণ ছিল সাদা লালে মিশ্রিত। তিনি ছিলেন মধ্যম দেহবিশিষ্ঠ। মাথার চুল ছিল অকুঞ্চিত। জাহান্নামের তত্ত্বাবধায়ক মালিক এবং দাজ্জালকেও আমি দেখেছি। আল্লাহ তা‘আলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে বিশেষ করে যে সকল নিদর্শনসমূহ দেখিয়েছেন তার মধ্যে এগুলোও ছিল সুতরাং তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে তুমি সন্দেহ পোষণ করবেনা। আনাস এবং আবূ বাকরাহ (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন, ফেরেশতা মণ্ডলী মদীনাকে দাজ্জাল হতে পাহারা দিয়ে রাখবেন।

৫৯/৮. অধ্যায়ঃ
জান্নাতের বর্ণনা সম্পর্কে যা বলা হয়েছে আর তা হল সৃষ্ট

আবুল ‘আলিয়াহ (রহঃ) বলেন,——–মাসিক ঋতু, পেশাব ও থুথু হতে পবিত্র। ———যখনই তাদের সামনে কোন একপ্রকারের খাদ্য পরিবেশন করা হবে, অতঃপরই অন্য এক প্রকারের খাদ্য পরিবেশন করা হবে। তারা (জান্নাতবাসীরা) বলবে, এগুলোতো ইতোপূর্বেই আমাদেরকে পরিবেশন করা হয়েছে। ———— তাদেরকে পরস্পরসদৃশ খাবার পরিবেশন করা হবে অথচ সেগুলো স্বাদে হবে বিভিন্ন। ——- তারা যেভাবে ইচ্ছা ফলফলাদি গ্রহণ করবে। ——- নিকটবর্তী ——- পালঙ্কসমূহ। হাসান বসরী (রহঃ) বলেন, ——– চেহারার সজীবতা। আর —— মনেরআনন্দ।

মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, —– –দ্রুতপ্রবাহিতপানি। —- পেটের ব্যথা। —- তাদের বুদ্ধি লোপ পাবেনা। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন,—- পরিপূর্ণ। —- অংকুরিত যৌবনা তরুণী। —- পাণীয়। —- – জান্নাতবাসীদের পাণীয় যা উঁচু হতে নিঃসৃত হয়। —- তার মোড়ক হবে —- কস্তুরী। —- দুই উচ্ছলিত (ঝর্ণা) —- সোনা ও মণিমুক্তা দিয়ে তৈরী। এ শব্দটি হতেই ——-– এর উৎপত্তি অর্থাৎ উটের পিঠের গদী। —- –হাতল বিহীন পানপাত্র —-–– হাতল বিশিষ্ট পানপাত্র। ——– সোহাগিনী। একবচনে —- –যেমন —–এর বহুবচন —– মক্কা বাসী একে — –মদীনা বাসী —- আর ইরাকীরা— বলে থাকে।

মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, — জান্নাত ও স্বচ্ছল জীবন। — জীবিকা। .— কলা — কাঁদিভরা, এটাও বলা হয় যার কাঁটা নেই। — স্বামীদের নিকট সোহাগিনী। — প্রবাহিত। — একটির উপর আরেকটি বিছানা — অলীক কথা। — মিথ্যা। — ডালসমূহ। ———– দুই বাগিচার ফল হবে তাদের নিকটবর্তী যা নিকট হতে গ্রহণ করবে। ——— এ বাগিচা দু’টি ঘন সবুজ।

৩২৪০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ بْنُ سَعْدٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِذَا مَاتَ أَحَدُكُمْ فَإِنَّهُ يُعْرَضُ عَلَيْهِ مَقْعَدُهُ بِالْغَدَاةِ وَالْعَشِيِّ، فَإِنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ فَمِنْ أَهْلِ الْجَنَّةِ، وَإِنْ كَانَ مِنْ أَهْلِ النَّارِ فَمِنْ أَهْلِ النَّارِ ‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন তোমাদের কোন ব্যক্তি মারা যায় তখন সকাল-সন্ধায় তার পরকালের আবাসস্থল তার নিকট পেশ করা হয়। সে যদি জান্নাতবাসী হয় তবে তাকে জান্নাতবাসীর আবাস স্থান আর যদি সে জাহান্নাম বাসী হয় তবে তাকে জাহান্নামবাসীর আবাসস্থান দেখান হয়।

৩২৪১
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا سَلْمُ بْنُ زَرِيرٍ، حَدَّثَنَا أَبُو رَجَاءٍ، عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ اطَّلَعْتُ فِي الْجَنَّةِ فَرَأَيْتُ أَكْثَرَ أَهْلِهَا الْفُقَرَاءَ، وَاطَّلَعْتُ فِي النَّارِ فَرَأَيْتُ أَكْثَرَ أَهْلِهَا النِّسَاءَ ‏”‏‏.‏

‘ইমরান ইব্‌নু হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘আমি জান্নাতের অধিবাসী সম্পর্কে জ্ঞাত হয়েছি। আমি জানতে পারলাম, জান্নাতে অধিকাংশ অধিবাসী হবে দরিদ্রলোক। জাহান্নামীদের সম্পর্কে জ্ঞাত হয়েছি, আমি জানতে পারলাম, এর বেশির ভাগ অধিবাসী নারী।’

৩২৪২
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، قَالَ حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ بَيْنَا نَحْنُ عِنْدَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ قَالَ ‏ “‏ بَيْنَا أَنَا نَائِمٌ رَأَيْتُنِي فِي الْجَنَّةِ، فَإِذَا امْرَأَةٌ تَتَوَضَّأُ إِلَى جَانِبِ قَصْرٍ، فَقُلْتُ لِمَنْ هَذَا الْقَصْرُ فَقَالُوا لِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ، فَذَكَرْتُ غَيْرَتَهُ، فَوَلَّيْتُ مُدْبِرًا ‏”‏‏.‏ فَبَكَى عُمَرُ وَقَالَ أَعَلَيْكَ أَغَارُ يَا رَسُولَ اللَّهِ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘এক সময় আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। তিনি বললেন, আমি নিদ্রিত ছিলাম। দেখলাম আমি জান্নাতে অবস্থিত। হঠাৎ দেখলাম এক নারী একটি দালানের পাশে উযু করছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এ দালানটি কার? তারা উত্তরে বললেন, ‘উমারের। তখন তাঁর আত্মমর্যাদার কথা আমার স্মরণ হল। আমি পেছনের দিকে ফিরে চলে আসলাম।’ একথা শুনে ‘উমর (রাঃ) কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনার সম্মুখে কি আমার কোন মর্যাদাবোধ থাকতে পারে?

৩২৪৩
حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا عِمْرَانَ الْجَوْنِيَّ، يُحَدِّثُ عَنْ أَبِي بَكْرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قَيْسٍ الأَشْعَرِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ الْخَيْمَةُ دُرَّةٌ مُجَوَّفَةٌ، طُولُهَا فِي السَّمَاءِ ثَلاَثُونَ مِيلاً، فِي كُلِّ زَاوِيَةٍ مِنْهَا لِلْمُؤْمِنِ أَهْلٌ لاَ يَرَاهُمُ الآخَرُونَ ‏”‏‏.‏ قَالَ أَبُو عَبْدِ الصَّمَدِ وَالْحَارِثُ بْنُ عُبَيْدٍ عَنْ أَبِي عِمْرَانَ سِتُّونَ مِيلاً‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু কায়স আল-আশ‘আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘গুণসম্পন্ন মোতির তাঁবু থাকবে যার উচ্চতা ত্রিশ মাইল। এর প্রতিটি কোণে মু’মিনদের জন্য এমন স্ত্রী থাকবে যাদেরকে অন্যরা কখনো দেখেনি।’ আবূ ‘আবদুস সামাদ ও হারিস ইব্‌নু ‘উবায়দ আবূ ‘ইমরান (রহঃ) হতে ষাট মাইল বলে বর্ণনা করেছেন।

৩২৪৪
حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ قَالَ اللَّهُ أَعْدَدْتُ لِعِبَادِي الصَّالِحِينَ مَا لاَ عَيْنَ رَأَتْ، وَلاَ أُذُنَ سَمِعَتْ، وَلاَ خَطَرَ عَلَى قَلْبِ بَشَرٍ، فَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ ‏{‏فَلاَ تَعْلَمُ نَفْسٌ مَا أُخْفِيَ لَهُمْ مِنْ قُرَّةِ أَعْيُنٍ ‏}‏‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘মহান আল্লাহ বলেছেন, আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য এমন জিনিস তৈরি করে রেখেছি, যা কোন চক্ষু দেখেনি, কোন কান শুনেনি এবং যার সম্পর্কে কোন মানুষের মনে ধারণাও জন্মেনি। তোমরা চাইলে এ আয়াতটি পাঠ করতে পার, ‘‘কেউ জানেনা, তাদের জন্য তাদের চোখ শীতলকারী কী জিনিস লুকানো আছে’’- (আসসাজদাহঃ ১৩)

৩২৪৫
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مُقَاتِلٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ أَوَّلُ زُمْرَةٍ تَلِجُ الْجَنَّةَ صُورَتُهُمْ عَلَى صُورَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ، لاَ يَبْصُقُونَ فِيهَا وَلاَ يَمْتَخِطُونَ وَلاَ يَتَغَوَّطُونَ، آنِيَتُهُمْ فِيهَا الذَّهَبُ، أَمْشَاطُهُمْ مِنَ الذَّهَبِ وَالْفِضَّةِ، وَمَجَامِرُهُمُ الأَلُوَّةُ، وَرَشْحُهُمُ الْمِسْكُ، وَلِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ زَوْجَتَانِ، يُرَى مُخُّ سُوقِهِمَا مِنْ وَرَاءِ اللَّحْمِ، مِنَ الْحُسْنِ، لاَ اخْتِلاَفَ بَيْنَهُمْ وَلاَ تَبَاغُضَ، قُلُوبُهُمْ قَلْبٌ وَاحِدٌ، يُسَبِّحُونَ اللَّهَ بُكْرَةً وَعَشِيًّا ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে দল প্রথমে জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের চেহারা পূর্ণিমার রাতের চাঁদের মত উজ্জ্বল হবে। তারা সেখানে থুথু ফেলবে না, নাক ঝাড়বেনা, মল মূত্র ত্যাগ করবেনা। সেখানে তাদের পাত্র হবে স্বর্ণের; তাদের চিরুণী হবে স্বর্ণ ও রৌপ্যের, তাদের ধুনুচিতে থাকবে সুগন্ধি কাষ্ঠ। তাদের গায়ের ঘাম মিসকের মত সুগন্ধময় হবে। তাদের প্রত্যেকের জন্য এমন দু’জন স্ত্রী থাকবে যাদের সৌন্দর্যের কারণে গোশত ভেদ করে পায়ের নলার হাড়ের মজ্জা দেখা যাবে। তাদের মধ্যে কোন মতভেদ থাকবে না; পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ থাকবে না। তাদের সকলের অন্তর এক অন্তরের মত হবে। তারা সকাল- সন্ধ্যায় আল্লাহর তাসবীহ পাঠ করতে থাকবে।’

৩২৪৬
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ أَوَّلُ زُمْرَةٍ تَدْخُلُ الْجَنَّةَ عَلَى صُورَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ، وَالَّذِينَ عَلَى إِثْرِهِمْ كَأَشَدِّ كَوْكَبٍ إِضَاءَةً، قُلُوبُهُمْ عَلَى قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ، لاَ اخْتِلاَفَ بَيْنَهُمْ وَلاَ تَبَاغُضَ، لِكُلِّ امْرِئٍ مِنْهُمْ زَوْجَتَانِ، كُلُّ وَاحِدَةٍ مِنْهُمَا يُرَى مُخُّ سَاقِهَا مِنْ وَرَاءِ لَحْمِهَا مِنَ الْحُسْنِ، يُسَبِّحُونَ اللَّهَ بُكْرَةً وَعَشِيًّا، لاَ يَسْقَمُونَ وَلاَ يَمْتَخِطُونَ، وَلاَ يَبْصُقُونَ، آنِيَتُهُمُ الذَّهَبُ وَالْفِضَّةُ، وَأَمْشَاطُهُمُ الذَّهَبُ، وَقُودُ مَجَامِرِهِمُ الأُلُوَّةُ ـ قَالَ أَبُو الْيَمَانِ يَعْنِي الْعُودَ ـ وَرَشْحُهُمُ الْمِسْكُ ‏”‏‏.‏ وَقَالَ مُجَاهِدٌ الإِبْكَارُ أَوَّلُ الْفَجْرِ، وَالْعَشِيُّ مَيْلُ الشَّمْسِ أَنْ تُرَاهُ تَغْرُبَ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘প্রথম যে দল জান্নাতে প্রবেশ করবে তারা পূর্ণিমার চাঁদের মত উজ্জ্বল চেহারা নিয়ে প্রবেশ করবে আর তাদের পর যারা প্রবেশ করবে তারা অতি উজ্জ্বল তারার ন্যায় আকৃতি ধারন করবে। তাদের অন্তরগুলো এক ব্যাক্তির অন্তরের মত থকবে। তাদের মধ্যে কোন রকম মতভেদ থাকবে না আর পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ থাকবে না। তাদের প্রত্যেকের দু’জন করে স্ত্রী থাকবে। সৌন্দর্যের কারণে গোশ্‌ত ভেদ করে পায়ের নলার মজ্জা দেখা যাবে। তারা সকাল- সন্ধ্যায় আল্লাহর তাসবীহ পাঠ করবে। তারা রোগাক্রান্ত হবে না, নাক ঝাড়বেনা, থুথু ফেলবে না। তাদের পাত্রসমূহ হবে স্বর্ণ ও রৌপ্যের আর চিরুণী হবে স্বর্ণের। তাদের ধুনুচিতে থাকবে সুগন্ধি কাষ্ঠ।’ আবুল ইয়ামান (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ কাষ্ঠ। তাদের গায়ের ঘাম মিসকের মত সুগন্ধময় হবে। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, — অর্থ উষাকালের প্রথম অংশ — অর্থ সূর্য ঢলে পড়ার সময় হতে অস্ত যাওয়া পর্যন্ত সময়কাল।

৩২৪৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي بَكْرٍ الْمُقَدَّمِيُّ، حَدَّثَنَا فُضَيْلُ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لَيَدْخُلَنَّ مِنْ أُمَّتِي سَبْعُونَ أَلْفًا ـ أَوْ سَبْعُمِائَةِ أَلْفٍ ـ لاَ يَدْخُلُ أَوَّلُهُمْ حَتَّى يَدْخُلَ آخِرُهُمْ، وَجُوهُهُمْ عَلَى صُورَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ ‏”‏‏.‏

সাহ্‌ল ইব্‌নু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম), বলেছেন, আমার উম্মাতের সত্তর হাজার লোক অথবা সাত লক্ষ লোক একই সঙ্গে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদের কেউ আগে কেউ পরে এভাবে নয় আর তাদের চেহারা পূর্ণিমার চাঁদের মত উজ্জ্বল থাকবে।

৩২৪৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْجُعْفِيُّ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا شَيْبَانُ، عَنْ قَتَادَةَ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ أُهْدِيَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم جُبَّةُ سُنْدُسٍ، وَكَانَ يَنْهَى عَنِ الْحَرِيرِ، فَعَجِبَ النَّاسُ مِنْهَا، فَقَالَ ‏ “‏ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ، لَمَنَادِيلُ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ فِي الْجَنَّةِ أَحْسَنُ مِنْ هَذَا ‏”‏‏.‏

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে একটি রেশমী জুব্বা হাদিয়া দেয়া হল। অথচ তিনি রেশমী বস্ত্র পরতে নিষেধ করতেন; লোকেরা তা খুব পছন্দ করল। তখন তিনি বললেন, ঐ সত্তার কসম! যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ, অবশ্যই জান্নাতে সা’দ ইবনু মুআ’যের রুমাল এর থেকে বেশি সুন্দর হবে।

৩২৪৯
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ سُفْيَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو إِسْحَاقَ، قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ بْنَ عَازِبٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِثَوْبٍ مِنْ حَرِيرٍ، فَجَعَلُوا يَعْجَبُونَ مِنْ حُسْنِهِ وَلِينِهِ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لَمَنَادِيلُ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ فِي الْجَنَّةِ أَفْضَلُ مِنْ هَذَا ‏”‏‏.‏

বারাআ ইব্‌নু ‘আযির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট একখানা রেশমী বস্ত্র আনা হল। লোকজন এর সৌন্দর্য এবং কমনীয়তার জন্য সেটা খুব পছন্দ করতে লাগল। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, ‘অবশ্যই জান্নাতে সা’দ ইব্‌নু মু’আযের রুমাল এর থেকেও বেশি উত্তম হবে’।

৩২৫০
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ السَّاعِدِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَوْضِعُ سَوْطٍ فِي الْجَنَّةِ خَيْرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيهَا ‏”‏‏.‏

সাহ্‌ল ইব্‌নু সা’দ আস্‌সা’ইয়িদী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘জান্নাতে চাবুক পরিমাণ সামান্য জায়গাও দুনিয়া এবং এর মধ্যে যা আছে তার থেকে উত্তম।

৩২৫১
حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عَبْدِ الْمُؤْمِنِ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ إِنَّ فِي الْجَنَّةِ لَشَجَرَةً يَسِيرُ الرَّاكِبُ فِي ظِلِّهَا مِائَةَ عَامٍ لاَ يَقْطَعُهَا ‏”‏‏.‏

আনাস ইব্‌নু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, জান্নাতে এমন একটি গাছ আছে, যার ছায়ায় কোন আরোহী শত বছর পর্যন্ত চললেও তা অতিক্রম করতে পারবে না।

৩২৫২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ، حَدَّثَنَا فُلَيْحُ بْنُ سُلَيْمَانَ، حَدَّثَنَا هِلاَلُ بْنُ عَلِيٍّ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي عَمْرَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ إِنَّ فِي الْجَنَّةِ لَشَجَرَةً يَسِيرُ الرَّاكِبُ فِي ظِلِّهَا مِائَةَ سَنَةٍ، وَاقْرَءُوا إِنْ شِئْتُمْ ‏{‏وَظِلٍّ مَمْدُودٍ‏}‏‏”‏

«وَلَقَابُ قَوْسِ أَحَدِكُمْ فِي الْجَنَّةِ خَيْرٌ مِمَّا طَلَعَتْ عَلَيْهِ الشَّمْسُ أَوْ تَغْرُبُ»

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, জান্নাতে এমন একটি বৃক্ষ আছে যার ছায়ায় কোন আরোহী শত বছর পর্যন্ত চলতে পারবে। আর তোমরা ইচ্ছা করলে তিলওয়াত করতে পার ————– এবং দীর্ঘ ছায়া।

৩২৫৩

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আর জান্নাতে তোমাদের কারও একটি ধনুকের পরিমাণ জায়গাও ঐ জায়গা অপেক্ষা অধিক উত্তম সেখানে সূর্য উদিত হয় আর সূর্য অস্তমিত হয় (অর্থাৎ পৃথিবীর চেয়ে)।

৩২৫৪
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُلَيْحٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ هِلاَلٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي عَمْرَةَ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ أَوَّلُ زُمْرَةٍ تَدْخُلُ الْجَنَّةَ عَلَى صُورَةِ الْقَمَرِ لَيْلَةَ الْبَدْرِ، وَالَّذِينَ عَلَى آثَارِهِمْ كَأَحْسَنِ كَوْكَبٍ دُرِّيٍّ فِي السَّمَاءِ إِضَاءَةً، قُلُوبُهُمْ عَلَى قَلْبِ رَجُلٍ وَاحِدٍ، لاَ تَبَاغُضَ بَيْنَهُمْ وَلاَ تَحَاسُدَ، لِكُلِّ امْرِئٍ زَوْجَتَانِ مِنَ الْحُورِ الْعِينِ، يُرَى مُخُّ سُوقِهِنَّ مِنْ وَرَاءِ الْعَظْمِ وَاللَّحْمِ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, প্রথম যে দল জান্নাতে প্রবেশ করবে তাদের চেহারা পূর্ণিমা রাতের চাঁদের মত উজ্জ্বল হবে আর তাদের অনুগামী দলের চেহারা আকাশের উজ্জ্বল তারকার চেয়েও অধিক সুন্দর ও উজ্জ্বল হবে। তাদের অন্তরগুলো এক ব্যক্তির অন্তরের মত হবে। তাদের মধ্যে কোন বিদ্বেষ থাকবে না, কোন হিংসা থাকবে না, তাদের প্রত্যেকের জন্য ডাগর ডাগর চোখওয়ালা দু’জন করে এমন স্ত্রী থাকবে, যাদের পদ তলের অস্থি মজ্জা ও গোশত ভেদ করে দেখা যাবে।

৩২৫৫
حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مِنْهَالٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، قَالَ عَدِيُّ بْنُ ثَابِتٍ أَخْبَرَنِي قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَمَّا مَاتَ إِبْرَاهِيمُ قَالَ ‏ “‏ إِنَّ لَهُ مُرْضِعًا فِي الْجَنَّةِ ‏”‏‏.‏

বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (এর ছেলে) ইবরাহীম (রাঃ) ইন্তিকাল করেন, তখন তিনি বলেন, জান্নাতে এর এক ধাত্রী আছে।

৩২৫৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ صَفْوَانَ بْنِ سُلَيْمٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ إِنَّ أَهْلَ الْجَنَّةِ يَتَرَاءَيُونَ أَهْلَ الْغُرَفِ مِنْ فَوْقِهِمْ كَمَا يَتَرَاءَيُونَ الْكَوْكَبَ الدُّرِّيَّ الْغَابِرَ فِي الأُفُقِ مِنَ الْمَشْرِقِ أَوِ الْمَغْرِبِ، لِتَفَاضُلِ مَا بَيْنَهُمْ ‏”‏‏.‏ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ، تِلْكَ مَنَازِلُ الأَنْبِيَاءِ لاَ يَبْلُغُهَا غَيْرُهُمْ قَالَ ‏”‏ بَلَى وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، رِجَالٌ آمَنُوا بِاللَّهِ وَصَدَّقُوا الْمُرْسَلِينَ ‏”‏‏.‏

আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, অবশ্যই জান্নাতবাসীরা তাদের উপরের বালাখানার বাসিন্দাদের এমনভাবে দেখতে পাবে, যেমন তোমরা আকাশের পূর্ব অথবা পশ্চিম দিকে উজ্জ্বল দীপ্তিমান নক্ষত্র দেখতে পাও। এটা হবে তাদের মধ্যে মর্যাদার পার্থক্যের কারণে। সাহাবীগণ বললেন, ‘হে আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ তো নবীগণের জায়গা। তাদের ব্যতিত অন্যরা সেখানে পৌঁছতে পারবে না। তিনি বললেন, হ্যাঁ, সে সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, যেসব লোক আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনবে এবং রসূলগণকে সত্য বলে স্বীকার করবে।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]