সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস সৃষ্টির সূচনা অধ্যায় ৩য় ভাগ হাদিস নং ৩২৯৬– ৩৩২৫

৫৯/১২. অধ্যায়ঃ
জ্বিন, তাদের পুরস্কার এবং শাস্তির বিবরণ।

মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ হে জ্বিন ও মানবজাতি! তোমাদের কাছে কি আসেনি তোমাদের মধ্য থেকে রসূলগণ যারা তোমাদের কাছে আমার নিদর্শনসমূহ বর্ণনা করত- (সূরা আন’আম ১৩০)। —— ক্ষতি। ————–তারা আল্লাহ ও জ্বিনদের মাঝে সম্পর্ক স্থাপণ করেছে- (সূরা সাফফাত ১৫৮ আয়াতের তাফসীরে)। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, কুরাইশ কাফিররা ফেরেশতামণ্ডলীকে আল্লাহর কন্যা এবং তাদের মাতাদেরকে জ্বিনের নেতাদের কন্যা বলে আখ্যায়িত করত। মহান আল্লাহ বলেনঃ জ্বিনগণ অবশ্যই জানে যে, তাদেরকে হিসাবের সময় উপস্থিত করা হবে। অচিরেই তাদেরকে হিসাবের জন্য উপস্থিত করা হবে। ——— তারা এমন এক সম্প্রদায় যাদেরকে হিসাবের সময় উপস্থিত করা হবে- (সূরা ইয়াসীন ৭৫)।

৩২৯৬
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي صَعْصَعَةَ الأَنْصَارِيِّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ لَهُ ‏ “‏ إِنِّي أَرَاكَ تُحِبُّ الْغَنَمَ وَالْبَادِيَةَ، فَإِذَا كُنْتَ فِي غَنَمِكَ وَبَادِيَتِكَ فَأَذَّنْتَ بِالصَّلاَةِ، فَارْفَعْ صَوْتَكَ بِالنِّدَاءِ، فَإِنَّهُ لاَ يَسْمَعُ مَدَى صَوْتِ الْمُؤَذِّنِ جِنٌّ وَلاَ إِنْسٌ وَلاَ شَىْءٌ إِلاَّ شَهِدَ لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏”‏‏.‏ قَالَ أَبُو سَعِيدٍ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم‏.‏

আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি ‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আবদুর রহমান (রহঃ)- কে বলেছেন, ‘আমি তোমাকে দেখছি তুমি বকরির পাল ও মরুভূমি পছন্দ করছ। অতএব, তুমি যখন তোমার বকরির পাল নিয়ে মরুভূমিতে অবস্থান করবে, সালাতের সময় হলে আযান দিবে, আযানে তোমার স্বর উচ্চ করবে। কেননা মুআয্‌যিনের কণ্ঠস্বর জ্বিন, মানুষ ও যে কোন বস্তু শুনে, তারা ক্বিয়ামতের দিন তার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে।’ আবূ সা’ঈদ (রাঃ) বলেন, আমি এ হাদীসটি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট হতে শুনেছি।

৫৯/১৩. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ “স্মরণ করুন, আমি আপনার প্রতি একদল জ্বিনকে আকৃষ্ট করেছিলাম …. এরূপ লোকেরাই প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতার মধ্যে পতিত রয়েছে। (সূরা আহ্কাফ ২৯-৩২)

—— অর্থ ফিরিবার স্থান। —— আমরা ফিরিয়ে দিলাম।

৫৯/১৪. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ আর আল্লাহ যমীনে সকল প্রকার প্রাণী ছড়িয়ে দিয়েছেন।”

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, ——– হল পুরুষ সাপ। বলা হয় সাপ বিভিন্ন প্রকারের হয়, শ্বেত সাপ, মাদী সাপ আর কাল সাপ, ———- অর্থ আল্লাহ তাঁর রাজত্ব ও কর্তৃত্বে সকল জীবকে রেখেছেন, —- তাদের ডানাগুলো সম্প্রসারিত অবস্থায়। — তারা তাদের ডানাগুলো সঙ্কুচিত করে।

৩২৯৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَخْطُبُ عَلَى الْمِنْبَرِ يَقُولُ ‏ “‏ اقْتُلُوا الْحَيَّاتِ، وَاقْتُلُوا ذَا الطُّفْيَتَيْنِ وَالأَبْتَرَ، فَإِنَّهُمَا يَطْمِسَانِ الْبَصَرَ، وَيَسْتَسْقِطَانِ الْحَبَلَ ‏”‏‏.‏ قَالَ عَبْدُ اللَّهِ فَبَيْنَا أَنَا أُطَارِدُ، حَيَّةً لأَقْتُلَهَا فَنَادَانِي أَبُو لُبَابَةَ لاَ تَقْتُلْهَا‏.‏ فَقُلْتُ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ أَمَرَ بِقَتْلِ الْحَيَّاتِ‏.‏ قَالَ إِنَّهُ نَهَى بَعْدَ ذَلِكَ عَنْ ذَوَاتِ الْبُيُوتِ، وَهْىَ الْعَوَامِرُ‏.‏

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে মিম্বারের উপর ভাষণ দানের সময় বলতে শুনেছেন, ‘সাপ মেরে ফেল। বিশেষ করে মেরে ফেল ঐ সাপ, যার মাথার উপর দু’টো সাদা রেখা আছে এবং লেজ কাটা সাপ। কারণ এ দু’প্রকারের সাপ চোখের জ্যোতি নষ্ট করে দেয় ও গর্ভপাত ঘটায়।’

৩২৯৮
See previous Hadith

‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, একদা আমি একটি সাপ মারার জন্য তার পিছু ধাওয়া করছিলাম। এমন সময় আবূ লুবাবা (রাঃ) আমাকে ডেকে বললেন, সাপটি মেরোনা। তখন আমি বললাম, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাপ মারার জন্য আদেশ দিয়েছেন। তিনি বললেন, এরপরে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে সাপ ঘরে বাস করে যাকে ‘আওয়ামির’ বলা হয় এমন সাপ মারতে নিষেধ করেছেন।

৩২৯৯
وَقَالَ عَبْدُ الرَّزَّاقِ عَنْ مَعْمَرٍ، فَرَآنِي أَبُو لُبَابَةَ أَوْ زَيْدُ بْنُ الْخَطَّابِ‏.‏ وَتَابَعَهُ يُونُسُ وَابْنُ عُيَيْنَةَ وَإِسْحَاقُ الْكَلْبِيُّ وَالزُّبَيْدِيُّ‏.‏ وَقَالَ صَالِحٌ وَابْنُ أَبِي حَفْصَةَ وَابْنُ مُجَمِّعٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، رَآنِي أَبُو لُبَابَةَ وَزَيْدُ بْنُ الْخَطَّابِ‏.‏

‘আবদুর রায্‌যাক (রহঃ) মা’মার (রহঃ) সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ

আমাকে দেখেছেন আবূ লুবাবা অথবা যায়দ ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ) আর অনুসরণ করেছেন মা’মার (রহঃ)- কে ইউনুস ইব্‌নু ইয়াইনা, ইসহাক কলবী ও যুবাইদী (রহঃ) এবং সালিহ, ইব্‌নু আবূ হাফসাহ ও ইব্‌নু মুজাম্মি’ (রহঃ)…. ইবনু ’উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, ‘আমাকে দেখেছেন আবু লুবাবা ও যায়দ ইব্‌নু খাত্তাব (রাঃ)।

৫৯/১৫. অধ্যায়ঃ
মুসলিমের সর্বোৎকৃষ্ট মাল হল ছাগের পাল যেগুলোকে নিয়ে তারা পাহাড়ের উপর চলে যায়।

৩৩০০
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي صَعْصَعَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ يُوشِكُ أَنْ يَكُونَ خَيْرَ مَالِ الرَّجُلِ غَنَمٌ يَتْبَعُ بِهَا شَعَفَ الْجِبَالِ وَمَوَاقِعَ الْقَطْرِ، يَفِرُّ بِدِينِهِ مِنَ الْفِتَنِ ‏”‏‏.‏

আবূ সা’ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সে সময় অতি নিকটে যখন একজন মুসলিমের সবচেয়ে উত্তম সম্পদ হবে ছাগ-পাল। তা নিয়ে সে পাহাড়ের চূড়ায় এবং বৃষ্টির এলাকায় চলে যাবে; সে ফিতনা হতে নিজের দ্বীনকে রক্ষার জন্য পলায়ন করবে।

৩৩০১
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ رَأْسُ الْكُفْرِ نَحْوَ الْمَشْرِقِ، وَالْفَخْرُ وَالْخُيَلاَءُ فِي أَهْلِ الْخَيْلِ وَالإِبِلِ، وَالْفَدَّادِينَ أَهْلِ الْوَبَرِ، وَالسَّكِينَةُ فِي أَهْلِ الْغَنَمِ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘কুফরীর মূল পূর্বদিকে, গর্ব এবং অহংকার ঘোড়া এবং উটের মালিকদের মধ্যে এবং বেদুইনদের মধ্যে যারা তাদের উটের পাল নিয়ে ব্যস্ত থাকে, আর শান্তি বকরির পালের মালিকদের মধ্যে।’

৩৩০২
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ حَدَّثَنِي قَيْسٌ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَمْرٍو أَبِي مَسْعُودٍ، قَالَ أَشَارَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِيَدِهِ نَحْوَ الْيَمَنِ فَقَالَ ‏ “‏ الإِيمَانُ يَمَانٍ هَا هُنَا، أَلاَ إِنَّ الْقَسْوَةَ وَغِلَظَ الْقُلُوبِ فِي الْفَدَّادِينَ عِنْدَ أُصُولِ أَذْنَابِ الإِبِلِ، حَيْثُ يَطْلُعُ قَرْنَا الشَّيْطَانِ فِي رَبِيعَةَ وَمُضَرَ ‏”‏‏.‏

‘উক্‌বাহ ইব্‌নু আম্‌র আবূ মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ হাতের দ্বারা ইয়ামানের দিকে ইশারা করে বললেন, ঈমান এদিকে। দেখ কঠোরতা এবং অন্তরের কাঠিন্য ঐ সব বেদুইনদের মধ্যে যারা তাদের উট নিয়ে ব্যস্ত থাকে যেখান থেকে শয়তানের শিং দু’টি উদয় হয় অর্থ্যাৎ রাবীয়াহ ও মুযার গোত্রদ্বয়ের মধ্যে।

৩৩০৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ إِذَا سَمِعْتُمْ صِيَاحَ الدِّيَكَةِ فَاسْأَلُوا اللَّهَ مِنْ فَضْلِهِ، فَإِنَّهَا رَأَتْ مَلَكًا، وَإِذَا سَمِعْتُمْ نَهِيقَ الْحِمَارِ فَتَعَوَّذُوا بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَإِنَّهُ رَأَى شَيْطَانًا ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যখন তোমরা মোরগের ডাক শুনবে তখন তোমরা আল্লাহর নিকট তাঁর অনুগ্রহ প্রার্থনা করে দু’আ কর। কেননা এ মোরগ ফেরেশতাদের দেখে আর যখন গাধার আওয়াজ শুনবে তখন শয়তান হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাইবে, কেননা এ গাধাটি শয়তান দেখেছে।’

৩৩০৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ، أَخْبَرَنَا رَوْحٌ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ، سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ إِذَا كَانَ جُنْحُ اللَّيْلِ ـ أَوْ أَمْسَيْتُمْ ـ فَكُفُّوا صِبْيَانَكُمْ، فَإِنَّ الشَّيَاطِينَ تَنْتَشِرُ حِينَئِذٍ، فَإِذَا ذَهَبَ سَاعَةٌ مِنَ اللَّيْلِ فَحُلُّوهُمْ، وَأَغْلِقُوا الأَبْوَابَ، وَاذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ، فَإِنَّ الشَّيْطَانَ لاَ يَفْتَحُ بَابًا مُغْلَقًا ‏”‏‏.‏ قَالَ وَأَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ نَحْوَ مَا أَخْبَرَنِي عَطَاءٌ وَلَمْ يَذْكُرْ ‏”‏ وَاذْكُرُوا اسْمَ اللَّهِ ‏”‏‏.‏

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘যখন রাতের আঁধার নেমে আসবে অথবা বলেছেন, যখন সন্ধ্যা হয়ে যাবে তখন তোমরা তোমাদের শিশুদেরকে আটকিয়ে রাখবে। কেননা এসময় শয়তানেরা ছড়িয়ে পড়ে। আর যখন রাতের কিছু অংশ অতিক্রান্ত হবে তখন তাদেরকে ছেড়ে দিতে পার। তোমরা ঘরের দরজা বন্ধ করবে এবং আল্লাহ্‌র নাম স্মরণ করবে। কেননা শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারেনা। ইব্‌নু জুরাইজ (রহঃ) বলেন, হাদীসটি ‘আম্‌র ইব্‌নু দীনার (রহঃ) ……. জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্‌ হতে ‘আত্বা (রহঃ)-এর মতই বর্ণনা করেছেন। তবে তিনি ———— বলেননি।

৩৩০৫
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ فُقِدَتْ أُمَّةٌ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ لاَ يُدْرَى مَا فَعَلَتْ، وَإِنِّي لاَ أُرَاهَا إِلاَّ الْفَارَ إِذَا وُضِعَ لَهَا أَلْبَانُ الإِبِلِ لَمْ تَشْرَبْ، وَإِذَا وُضِعَ لَهَا أَلْبَانُ الشَّاءِ شَرِبَتْ ‏”‏‏.‏ فَحَدَّثْتُ كَعْبًا فَقَالَ أَنْتَ سَمِعْتَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُهُ قُلْتُ نَعَمْ‏.‏ قَالَ لِي مِرَارًا‏.‏ فَقُلْتُ أَفَأَقْرَأُ التَّوْرَاةَ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বনী ইসরাঈলের একদল লোক নিখোঁজ হয়েছিল। কেউ জানেনা তাদের কী হলো আর আমি তাদেরকে ইঁদুর বলেই মনে করি। কেননা তাদের সামনে যখন উটের দুধ রাখা হয়, তারা তা পান করে না, আর যখন তাদের সামনে ছাগী দুগ্ধ রাখা হয় তখন তারা তা পান করে। [আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন] আমি এ হাদীসটি কা‘বের নিকট বললাম, তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন আপনি কি এটা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- কে বলতে শুনেছেন? আমি বললাম, হ্যাঁ। অতঃপর তিনি কয়েকবার আমাকে এ কথাটি জিজ্ঞেস করলেন। তখন আমি বললাম, আমি কি তাওরাত কিতাব পড়েছি?

৩৩০৬
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ عُفَيْرٍ، عَنِ ابْنِ وَهْبٍ، قَالَ حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، يُحَدِّثُ عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لِلْوَزَغِ الْفُوَيْسِقُ‏.‏ وَلَمْ أَسْمَعْهُ أَمَرَ بِقَتْلِهِ‏.‏ وَزَعَمَ سَعْدُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ بِقَتْلِهِ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গিরগিটি বা রক্তচোষা টিকটিকি কে নিকৃষ্টতম ফাসিক বলে আখ্যায়িত করেছেন। আমি আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–কে একে হত্যা করার আদেশ দিতে শুনিনি। আর সা‘দ ইব্‌নু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একে হত্যা করার আদেশ দিয়েছেন।

৩৩০৭
حَدَّثَنَا صَدَقَةُ، أَخْبَرَنَا ابْنُ عُيَيْنَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ جُبَيْرِ بْنِ شَيْبَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، أَنَّ أُمَّ شَرِيكٍ، أَخْبَرَتْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَهَا بِقَتْلِ الأَوْزَاغِ‏.‏

সা‘ঈদ ইব্‌নু মুসাইয়্যাব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উম্মু শারীক (রহঃ) তাঁকে খবর দিয়েছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে গিরগিটি বা রক্ত চোষা জাতীয় টিকটিকি হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছেন।

৩৩০৮
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتْ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ اقْتُلُوا ذَا الطُّفْيَتَيْنِ، فَإِنَّهُ يَلْتَمِسُ الْبَصَرَ، وَيُصِيبُ الْحَبَلَ ‏”‏‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘পিঠে দু’টি সাদা রেখা ওয়ালা সাপকে হত্যা কর। কেননা এ জাতীয় সাপ দৃষ্টিশক্তি বিনষ্ট করে আর গর্ভপাত ঘটায়।’

৩৩০৯
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ هِشَامٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ عَائِشَةَ،، قَالَتْ أَمَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِقَتْلِ الأَبْتَرِ وَقَالَ ‏ “‏ إِنَّهُ يُصِيبُ الْبَصَرَ، وَيُذْهِبُ الْحَبَلَ ‏”‏‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লেজকাটা সাপকে হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছেন, আর বলেছেন, এ ধরনের সাপ দৃষ্টিশক্তি বিনষ্ট করে এবং গর্ভপাত ঘটায়।

৩৩১০
حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنْ أَبِي يُونُسَ الْقُشَيْرِيِّ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، كَانَ يَقْتُلُ الْحَيَّاتِ ثُمَّ نَهَى قَالَ إِنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم هَدَمَ حَائِطًا لَهُ، فَوَجَدَ فِيهِ سِلْخَ حَيَّةٍ فَقَالَ ‏”‏ انْظُرُوا أَيْنَ هُوَ ‏”‏‏.‏ فَنَظَرُوا فَقَالَ ‏”‏ اقْتُلُوهُ ‏”‏‏.‏ فَكُنْتُ أَقْتُلُهَا لِذَلِكَ‏.‏ فَلَقِيتُ أَبَا لُبَابَةَ فَأَخْبَرَنِي أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ لاَ تَقْتُلُوا الْجِنَّانَ، إِلاَّ كُلَّ أَبْتَرَ ذِي طُفْيَتَيْنِ، فَإِنَّهُ يُسْقِطُ الْوَلَدَ، وَيُذْهِبُ الْبَصَرَ، فَاقْتُلُوهُ ‏”‏‏.‏

ইব্‌নু আবূ মুলায়কাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) প্রথমে সাপ মেরে ফেলতেন। পরে মারতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেছেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একবার তাঁর একটি দেয়াল ভেঙ্গে ফেলেন। তাতে তিনি সাপের খোলস দেখতে পান। তখন তিনি বললেন, দেখ! কোথায় সাপ আছে? লোকেরা দেখল তিনি বললেন, একে মেরে ফেল। এ কারণে আমি সাপ মেরে ফেললাম।

৩৩১১
See previous Hadith

ইব্‌নু আবূ মুলায়কাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

অতঃপর আবূ লুবাবার সঙ্গে আমার দেখা হল। তিনি আমাকে জানালেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, পিঠের উপর দু‘টি রেখাওয়ালা এবং লেজকাটা সাপ ছাড়া অন্য কোন সাপকে তোমরা মেরোনা। কেননা ওগুলো গর্ভপাত ঘটায় এবং চোখের জ্যোতি নষ্ট করে দেয়। তাই এ জাতীয় সাপ মেরে ফেল।

৩৩১২
حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا جَرِيرُ بْنُ حَازِمٍ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّهُ كَانَ يَقْتُلُ الْحَيَّاتِ‏.‏ فَحَدَّثَهُ أَبُو لُبَابَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم نَهَى عَنْ قَتْلِ جِنَّانِ الْبُيُوتِ، فَأَمْسَكَ عَنْهَا‏.‏

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি সাপ হত্যা করতেন।

৩৩১৩
See previous Hadith

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

অতঃপর আবূ লুবাবাহ (রাঃ) তাঁকে একটি হাদীস শুনালেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘরে বসবাসকারী সাপ হত্যা করতে নিষেধ করেছেন। ফলে তিনি সাপ মারা বন্ধ করে দেন।

৫৯/১৬. অধ্যায়ঃ
হারামে হত্যাযোগ্য পাঁচ প্রকারের অনিষ্টকারী প্রাণী।

৩৩১৪
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عَنْهَا ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ خَمْسٌ فَوَاسِقُ يُقْتَلْنَ فِي الْحَرَمِ الْفَأْرَةُ، وَالْعَقْرَبُ، وَالْحُدَيَّا، وَالْغُرَابُ، وَالْكَلْبُ الْعَقُورُ ‏”‏‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, পাঁচ প্রকার প্রাণী অধিক ক্ষতিকারক। এদেরকে হারামেও (সীমানারমধ্যে) হত্যা করা যায়। এগুলো হল বিচ্ছু, ইঁদুর, চিল, কাক ও পাগলা কুকুর।

৩৩১৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ خَمْسٌ مِنَ الدَّوَابِّ مَنْ قَتَلَهُنَّ وَهْوَ مُحْرِمٌ فَلاَ جُنَاحَ عَلَيْهِ الْعَقْرَبُ، وَالْفَأْرَةُ، وَالْكَلْبُ الْعَقُورُ، وَالْغُرَابُ، وَالْحِدَأَةُ ‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, পাঁচ প্রকারের ক্ষতিকারক প্রাণী যাদেরকে কেউ ইহরাম অবস্থায়ও যদি মেরে ফেলে, তাহলে তার কোন গুনাহ নেই। এগুলো হল বিচ্ছু, ইঁদুর, পাগলা কুকুর, কাক এবং চিল।

৩৩১৬
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ كَثِيرٍ، عَنْ عَطَاءٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهما ـ رَفَعَهُ قَالَ ‏ “‏ خَمِّرُوا الآنِيَةَ، وَأَوْكُوا الأَسْقِيَةَ، وَأَجِيفُوا الأَبْوَابَ، وَاكْفِتُوا صِبْيَانَكُمْ عِنْدَ الْعِشَاءِ، فَإِنَّ لِلْجِنِّ انْتِشَارًا وَخَطْفَةً، وَأَطْفِئُوا الْمَصَابِيحَ عِنْدَ الرُّقَادِ، فَإِنَّ الْفُوَيْسِقَةَ رُبَّمَا اجْتَرَّتِ الْفَتِيلَةَ فَأَحْرَقَتْ أَهْلَ الْبَيْتِ ‏”‏‏.‏ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ وَحَبِيبٌ عَنْ عَطَاءٍ فَإِنَّ لِلشَّيَاطِينِ‏.‏

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমরা পাত্রগুলো ঢেকে রেখো, পান করার পাত্রগুলো বন্ধ করে রেখো, ঘরের দরজাগুলো বন্ধ করে রেখো আর সাঁঝের বেলায় তোমাদের বাচ্চাদেরকে ঘরে আটকে রেখো। কারণ এসময় জ্বিনেরা ছড়িয়ে পড়ে এবং কোনকিছুকে দ্রুত পাকড়াও করে। আর নিদ্রাকালে বাতিগুলো নিভিয়ে দেবে। কেননা অনেক সময় ছোট ছোট ক্ষতিকারক ইঁদুর প্রজ্জ্বলিত সলতেযুক্ত বাতি টেনে নিয়ে যায় এবং গৃহবাসীকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। ইব্‌নু জুরাইজ এবং হাবীব (রহঃ) আত্বা (রহঃ) হতে “কেননা এসময় জ্বিনেরা ছড়িয়ে পড়ে” এর স্থলে “শয়তানেরা ছড়িয়ে পড়ে” বর্ণনা করেছেন।

৩৩১৭
حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، عَنْ إِسْرَائِيلَ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَارٍ فَنَزَلَتْ ‏{‏وَالْمُرْسَلاَتِ عُرْفًا‏}‏ فَإِنَّا لَنَتَلَقَّاهَا مِنْ فِيهِ، إِذْ خَرَجَتْ حَيَّةٌ مِنْ جُحْرِهَا فَابْتَدَرْنَاهَا لِنَقْتُلَهَا، فَسَبَقَتْنَا فَدَخَلَتْ جُحْرَهَا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ وُقِيَتْ شَرَّكُمْ، كَمَا وُقِيتُمْ شَرَّهَا ‏”‏‏.‏ وَعَنْ إِسْرَائِيلَ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنْ عَلْقَمَةَ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ مِثْلَهُ قَالَ وَإِنَّا لَنَتَلَقَّاهَا مِنْ فِيهِ رَطْبَةً‏.‏ وَتَابَعَهُ أَبُو عَوَانَةَ عَنْ مُغِيرَةَ‏.‏ وَقَالَ حَفْصٌ وَأَبُو مُعَاوِيَةَ وَسُلَيْمَانُ بْنُ قَرْمٍ عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ إِبْرَاهِيمَ عَنِ الأَسْوَدِ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সঙ্গে এক গুহায় ছিলাম। তখন ওয়াল “মুরসালাতি গারকা” সূরাটি অবতীর্ণ হয়। আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)– এর মুখ হতে সূরাটি শিখে নিচ্ছিলাম। এমন সময় একটা সাপ বেরিয়ে এল তার গর্ত হতে। আমরা তাকে মারার জন্য দৌঁড়ে যাই। কিন্তু সে আমাদের আগেই গিয়ে গর্তে ঢুকে পড়ে। তখন আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, সে তোমাদের অনিষ্ট হতে যেমন রক্ষা পেয়েছে, তোমরাও তেমন তার অনিষ্ট হতে বেঁচে গেছ।



ইসরাঈল (রহ) আ’মাশ, ইব্‌রাহীম,‘আলকামাহ (রহঃ)-ও ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে এ রকমই বর্ণনা করেছেন। রাবী ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেছেন, আমরা সূরাটি তাঁর মুখ হতে বের হবার সঙ্গে সঙ্গে শিখে নিচ্ছিলাম। আবূ আওয়ানাহ মুগীরাহ (রাঃ) হতে এভাবেই বর্ণনা করেছেন। আর হাফস, আবূ মু’আবিয়া ও সুলাইমান ইব্‌নু কারম, আ’মাশ, ইব্‌রাহীম, আসওয়াদ (রহঃ)-ও ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে অনুরূপই বর্ণনা করেছেন।

৩৩১৮
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الأَعْلَى، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ دَخَلَتِ امْرَأَةٌ النَّارَ فِي هِرَّةٍ رَبَطَتْهَا، فَلَمْ تُطْعِمْهَا، وَلَمْ تَدَعْهَا تَأْكُلُ مِنْ خِشَاشِ الأَرْضِ ‏”‏‏.‏ قَالَ وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَهُ‏.‏

ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক নারী একটি বিড়ালের কারণে জাহান্নামে গিয়েছিল, সে তাকে বেঁধে রেখেছিল। সে তাকে খাবারও দেয়নি, ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে যমীনের পোকা মাকড় খেতে পারত। আবু হুরায়রা (রাঃ) সূত্রেও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত আছে।

৩৩১৯
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ نَزَلَ نَبِيٌّ مِنَ الأَنْبِيَاءِ تَحْتَ شَجَرَةٍ فَلَدَغَتْهُ نَمْلَةٌ، فَأَمَرَ بِجَهَازِهِ فَأُخْرِجَ مِنْ تَحْتِهَا، ثُمَّ أَمَرَ بِبَيْتِهَا فَأُحْرِقَ بِالنَّارِ، فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَيْهِ فَهَلاَّ نَمْلَةً وَاحِدَةً ‏”‏‏.‏

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল( সাঃ) বলেছেন, নবীগণের মধ্যে কোন এক নবী একটি গাছের নীচে অবতরণ করেন। অতঃপর তাঁকে একটি পিঁপড়ায় কামড় দেয়। তিনি তাঁর আসবাবপত্রের ব্যাপারে আদেশ দেন। এগুলো গাছের নিচ থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। অতঃপর তিনি নির্দেশ দিলে পিঁপড়ার বাসা আগুন দিতে জ্বালিয়ে দেয়া হল। তখন আল্লাহ তাঁর প্রতি ওয়াহী নাযিল করলেন, ‘তুমি একটি মাত্র পিঁপড়াকে শাস্তি দিলে না কেন?’

৫৯/১৭. অধ্যায়ঃ
পানীয় দ্রব্যে মাছি পড়লে ডুবিয়ে দেবে। কারণ তার এক ডানায় থাকে রোগ, অন্যটিতে থাকে আরোগ্যের উপায়।

৩৩২০
حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عُتْبَةُ بْنُ مُسْلِمٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ بْنُ حُنَيْنٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِذَا وَقَعَ الذُّبَابُ فِي شَرَابِ أَحَدِكُمْ فَلْيَغْمِسْهُ، ثُمَّ لِيَنْزِعْهُ، فَإِنَّ فِي إِحْدَى جَنَاحَيْهِ دَاءً وَالأُخْرَى شِفَاءً

‘উবাইদ ইব্‌নু হুনায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘তোমাদের কারো পানীয় দ্রব্যে মাছি পড়লে সেটাকে তাতে ডুবিয়ে দেবে। অতঃপর তাকে উঠিয়ে ফেলবে। কেননা তার এক ডানায় রোগ থাকে আর অপর ডানায় থাকে রোগের প্রতিষেধক।’

৩৩২১
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الصَّبَّاحِ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ الأَزْرَقُ، حَدَّثَنَا عَوْفٌ، عَنِ الْحَسَنِ، وَابْنِ، سِيرِينَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ غُفِرَ لاِمْرَأَةٍ مُومِسَةٍ مَرَّتْ بِكَلْبٍ عَلَى رَأْسِ رَكِيٍّ يَلْهَثُ، قَالَ كَادَ يَقْتُلُهُ الْعَطَشُ، فَنَزَعَتْ خُفَّهَا، فَأَوْثَقَتْهُ بِخِمَارِهَا، فَنَزَعَتْ لَهُ مِنَ الْمَاءِ، فَغُفِرَ لَهَا بِذَلِكَ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘এক ব্যভিচারিণীকে ক্ষমা করে দেয়া হয়। সে একটি কুকুরের কাছ দিয়ে যাচ্ছিল। তখন সে দেখতে পেল কুকুরটি একটি কূপের পাশে বসে হাঁপাচ্ছে। রাবী বলেন, পানির পিপাসা তাকে মুমূর্ষ করে দিয়েছিল। তখন সেই নারী তার মোজা খুলে উড়নার সাথে বাঁধল। অতঃপর সে কূপ হতে পানি তুলল (এবং কুকুরটিকে পানি পান করালো) এ কারণে তাকে ক্ষমা করে দেয়া হল।’

৩৩২২
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَفِظْتُهُ مِنَ الزُّهْرِيِّ كَمَا أَنَّكَ هَا هُنَا أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ عَنْ أَبِي طَلْحَةَ ـ رضى الله عنهم ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لاَ تَدْخُلُ الْمَلاَئِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ وَلاَ صُورَةٌ ‏”‏‏.‏

আবূ ত্বলহা (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘যে বাড়িতে কুকুর এবং প্রাণীর ছবি থাকে তাতে ফেরেশতামন্ডলী প্রবেশ করেন না।’

৩৩২৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ بِقَتْلِ الْكِلاَبِ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কুকুর মেরে ফেলতে আদেশ করেছেন।’

৩৩২৪
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ يَحْيَى، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو سَلَمَةَ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ حَدَّثَهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَنْ أَمْسَكَ كَلْبًا يَنْقُصْ مِنْ عَمَلِهِ كُلَّ يَوْمٍ قِيرَاطٌ، إِلاَّ كَلْبَ حَرْثٍ أَوْ كَلْبَ مَاشِيَةٍ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কুকুর প্রতিপালন করবে, প্রত্যেক দিন তার ‘আমলনামা হতে এক ক্বীরাত করে সওয়াব কমতে থাকবে। তবে ক্ষেত খামার কিংবা পশু পাল পাহারা দেয়ার কাজে নিযুক্ত শিকারী কুকুর ছাড়া।’

৩৩২৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ، قَالَ أَخْبَرَنِي يَزِيدُ بْنُ خُصَيْفَةَ، قَالَ أَخْبَرَنِي السَّائِبُ بْنُ يَزِيدَ، سَمِعَ سُفْيَانَ بْنَ أَبِي زُهَيْرٍ الشَّنَئِيَّ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ مَنِ اقْتَنَى كَلْبًا لاَ يُغْنِي عَنْهُ زَرْعًا وَلاَ ضَرْعًا، نَقَصَ مِنْ عَمَلِهِ كُلَّ يَوْمٍ قِيرَاطٌ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ السَّائِبُ أَنْتَ سَمِعْتَ هَذَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِيْ وَرَبِّ هَذِهِ الْقِبْلَةِ‏.‏

সায়িব ইবনু ইয়াযীদ সুফিয়ান ইবনু আবূ যুহাইর শানাভির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন, যে ব্যক্তি কুকুর লালন পালন করে, যদ্‌দ্বারা না কৃষির উপকার হয়, না পশুপালনের, তার ‘আমল হতে প্রত্যহ এক কিরাত ‘আমল কমে যায়। সায়িব জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি তা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে শুনেছেন? তিনি বললেন, এই কিবলার (কা’বার) প্রতিপালকের শপথ!, অবশ্যই।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]