সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস আম্বিয়া কিরাম (আঃ) ২য় ভাগ হাদিস নং ৩৩৭২ – ৩৪৩০

৬০/১১. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ (হে মুহাম্মাদ) আপনি তাদেরকে ইবরাহীম (‘আঃ)-এর মেহমানগণের ঘটনা জানিয়ে দিন। যখন তারা তাঁর নিকট এসেছিলেন- (হিজরঃ ৫১-৫২)। ——– ভয় পাবেন না। (মহান আল্লাহ্‌র বাণী): স্মরণ করুন যখন ইবরাহীম (‘আঃ) বললেন, হে আমার রব! আমাকে দেখিয়ে দিন, আপনি কিভাবে মৃতকে জীবন দান করেন- (আল-বাকারাহঃ ২৬০)।

৩৩৭২
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَسَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ نَحْنُ أَحَقُّ مِنْ إِبْرَاهِيمَ إِذْ قَالَ ‏{‏رَبِّ أَرِنِي كَيْفَ تُحْيِي الْمَوْتَى قَالَ أَوَلَمْ تُؤْمِنْ قَالَ بَلَى وَلَكِنْ لِيَطْمَئِنَّ قَلْبِي‏}‏ وَيَرْحَمُ اللَّهُ لُوطًا، لَقَدْ كَانَ يَأْوِي إِلَى رُكْنٍ شَدِيدٍ وَلَوْ لَبِثْتُ فِي السِّجْنِ طُولَ مَا لَبِثَ يُوسُفُ لأَجَبْتُ الدَّاعِيَ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ইবরাহীম (‘আঃ) তাঁর অন্তরের প্রশান্তির জন্য মৃতকে কিভাবে জীবিত করা হবে, এ সম্পর্কে আল্লাহর নিকট জিজ্ঞেস করেছিলেন, (সন্দেহবশত নয়) যদি “সন্দেহ” বলে অভিহিত করা হয় তবে এরূপ “সন্দেহ” এর ব্যাপারে আমরা ইবরাহীম (‘আঃ)-এর চেয়ে অধিক উপযোগী। যখন ইবরাহীম (‘আঃ) বলেছিলেন, হে আমার প্রতিপালক! আমাকে দেখিয়ে দিন, আপনি কিভাবে মৃতকে জীবিত করেন। আল্লাহ বললেন, তুমি কি বিশ্বাস কর না? তিনি বললেন, হাঁ। তা সত্ত্বেও যাতে আমার অন্তর প্রশান্তি লাভ করে- (আল-বাকারাহঃ ২৬০)। অতঃপর [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লূত (‘আঃ)-এর ঘটনা উল্লেখ করে বললেন।] আল্লাহ লূত (‘আঃ)-এর প্রতি রহম করুন। তিনি একটি সুদৃঢ় খুঁটির আশ্রয় চেয়েছিলেন আর আমি যদি কারাগারে এত দীর্ঘ সময় থাকতাম যত দীর্ঘ সময় ইউসুফ (‘আঃ) কারাগারে ছিলেন তবে তার (বাদশাহ্‌র) ডাকে সাড়া দিতাম। [১]

[১] রাসুলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর এ কথার দ্বারা ইউসুফ (‘আঃ) এর অসীম ধৈর্য্যের প্রশংসা করেছেন।


৬০/১২. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ এবং স্মরণ করুন এই কিতাবে ইসমাঈলের কথা, অবশ্যই তিনি ছিলেন ওয়াদা পালনে সত্যনিষ্ঠ। (মারইয়ামঃ ৫৪)

৩৩৭৩
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا حَاتِمٌ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي عُبَيْدٍ، عَنْ سَلَمَةَ بْنِ الأَكْوَعِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ مَرَّ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَلَى نَفَرٍ مِنْ أَسْلَمَ يَنْتَضِلُونَ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ ارْمُوا بَنِي إِسْمَاعِيلَ، فَإِنَّ أَبَاكُمْ كَانَ رَامِيًا، وَأَنَا مَعَ بَنِي فُلاَنٍ ‏”‏‏.‏ قَالَ فَأَمْسَكَ أَحَدُ الْفَرِيقَيْنِ بِأَيْدِيهِمْ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَا لَكُمْ لاَ تَرْمُونَ ‏”‏‏.‏ فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ، نَرْمِي وَأَنْتَ مَعَهُمْ قَالَ ‏”‏ ارْمُوا وَأَنَا مَعَكُمْ كُلِّكُمْ ‏”‏‏.‏

সালামা ইবনু আকওয়া’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আসলাম গোত্রের একদল লোকের কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। এ সময় তারা তীরন্দাজীর প্রতিযোগিতা করছিল। তখন রাসুলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে বনী ইসমাঈল! তোমরা তীরন্দাজী করে দাও। কেননা তোমাদের পূর্বপুরুষ তীরন্দাজ ছিলেন। সুতরাং তোমরাও তীরন্দাজী করে যাও আর আমি অমুক গোত্রের লোকদের সঙ্গে আছি। রাবী বলেন, তাদের এক পক্ষ হাত চালনা হতে বিরত হয়ে গেল। তখন রসুলূল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমাদের কী হল, তোমরা যে তীরন্দাজী করছ না? তখন তারা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কিভাবে তীর ছুঁড়তে পারি, অথচ আপনি তো তাদের সঙ্গে রয়েছেন। তখন তিনি বললেন, তোমরা তীর ছুঁড়তে থাক, আমি তোমাদের সবার সঙ্গেই আছি।

৬০/১৩. অধ্যায়ঃ
নবী‎ ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (‘আঃ)-এর ঘটনা।

এ সম্পর্কে ইবনু ‘উমর ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস বর্ণনা করেছেন।

৬০/১৪. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যখন ইয়াকূব (‘আঃ)-এর মৃত্যুকাল এসে হাযির হয়েছিল, তোমরা কি তখন সেখানে উপস্থিত ছিলে? যখন তিনি তাঁর সন্তানদের জিজ্ঞেস করছিলেন। (আল-বাকারাহঃ ১৩৩)

৩৩৭৪
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، سَمِعَ الْمُعْتَمِرَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قِيلَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مَنْ أَكْرَمُ النَّاسِ قَالَ ‏”‏ أَكْرَمُهُمْ أَتْقَاهُمْ ‏”‏‏.‏ قَالُوا يَا نَبِيَّ اللَّهِ، لَيْسَ عَنْ هَذَا نَسْأَلُكَ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَأَكْرَمُ النَّاسِ يُوسُفُ نَبِيُّ اللَّهِ ابْنُ نَبِيِّ اللَّهِ ابْنِ نَبِيِّ اللَّهِ ابْنِ خَلِيلِ اللَّهِ ‏”‏‏.‏ قَالُوا لَيْسَ عَنْ هَذَا نَسْأَلُكَ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَعَنْ مَعَادِنِ الْعَرَبِ تَسْأَلُونِي ‏”‏‏.‏ قَالُوا نَعَمْ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَخِيَارُكُمْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ خِيَارُكُمْ فِي الإِسْلاَمِ إِذَا فَقِهُوا ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হল যে, লোকদের মধ্যে অধিক সম্মানিত ব্যক্তি কে? তিনি বললেন, তাদের মধ্যে যে সবচেয়ে অধিক আল্লাহ ভীরু, সে সবচেয়ে অধিক সম্মানিত। সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহ্‌র নবী‎! আমরা আপনাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিনি। তিনি বললেন, তা হলে সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি হলেন আল্লাহর নবী‎ ইউসুফ ইবনু আল্লাহর নবী‎ (ইয়াকুব) ইবনু আল্লাহর নবী‎ (ইসহাক) ইবনু আল্লাহর খালীল ইবরাহীম (‘আঃ)। তাঁরা বললেন, আমরা এ সম্পর্কেও জিজ্ঞেস করিনি। তিনি বললেন, তবে কি তোমরা আমাকে আরবদের উচ্চ বংশ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছ? তারা বলল, হাঁ। তখন নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, জাহিলিয়াতের যুগে তোমাদের মধ্যে যারা সবচেয়ে উত্তম ব্যক্তি ছিলেন ইসলাম গ্রহণের পরও তারাই সবচেয়ে উত্তম ব্যক্তি, যদি তাঁরা ইসলামের জ্ঞান অর্জন করে থাকেন।

৬০/১৫. অধ্যায়ঃ
(মহান আল্লাহর বাণীঃ স্মরণ কর লুতের কথা, তিনি তাঁর সম্প্রদায়কে বলেছিলেন; তোমরা কেন অশ্লীল কাজ করছ? অথচ এর পরিণতির কথা তোমরা অবগত আছ। তোমরা কি কামতৃপ্তির জন্য নারীদেরকে ছেড়ে পুরুষে উপগত হচ্ছ? তোমরা তো এক মুর্খ সম্প্রদায়। উত্তরে তাঁর কওমের এ কথা ছাড়া আর কোন কথা ছিল না যে, লূত পরিবারকে তোমাদের জনপদ থেকে বের করে দাও। এরা তো এমন লোক যারা অত্যন্ত পাকপবিত্র থাকে। অতঃপর তাঁকে (লুতকে) ও তাঁর পরিবারবর্গকে উদ্ধার করলাম তাঁর স্ত্রীকে ছাড়া। কেননা, তার জন্য ধ্বংসপ্রাপ্তদের ভাগ্যই নির্ধারিত করেছিলাম। আর তাদের উপর বর্ষণ করেছিলাম মুষলধারে পাথরের বৃষ্টি। এই সর্তককৃত লোকদের উপর বর্ষিত বৃষ্টি কতই না নিকৃষ্ট ছিল। (আন্‌-নামলঃ ৫৪-৫৮)

৩৩৭৫
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏{‏يَغْفِرُ اللَّهُ لِلُوطٍ إِنْ كَانَ لَيَأْوِي إِلَى رُكْنٍ شَدِيدٍ‏}‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আল্লাহ লূত (‘আঃ)-কে মাফ করুন। তিনি একটি মজবুত খুঁটির আশ্রয় চেয়েছিলেন।

৬০/১৬. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ অতঃপর যখন আল্লাহ্‌র ফেরেশতামন্ডলী লূত পরিবারের নিকট আসলেন, তখন তিনি বললেন, তোমরা তো অপিরিচিত লোক- (হিজরঃ ৬১-৬২)।

—————— একই অর্থে ব্যবহৃত ——— অর্থ দ্রুত চলল ——— অর্থ শেষ ——– অর্থ ধ্বংস ——— অর্থ প্রত্যক্ষকারীদের জন্য —— অর্থ রাস্তার।

৩৩৭৬
حَدَّثَنَا مَحْمُودٌ، حَدَّثَنَا أَبُو أَحْمَدَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الأَسْوَدِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَرَأَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏{‏فَهَلْ مِنْ مُدَّكِر ‏}‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ———– পড়েছেন।

৬০/১৭. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ আর সামূদ জাতির প্রতি তাদেরই ভাই সালিহকে পাঠিয়েছিলাম- (হূদঃ ৬১)।. আল্লাহ আরো বলেন, হিজরবাসীরা রসূলগণের প্রতি মিথ্যারোপ করেছিলো- (হিজরঃ ৮০)।

— হিজর সামূদ সম্প্রদায়ের বসবাসের স্থান। — অর্থ নিষিদ্ধ ক্ষেত। প্রত্যেক নিষিদ্ধ বস্তুকে — বলা হয়। আর এ অর্থেই — বলা হয়ে থাকে। — তুমি যে সব ভবন নির্মাণ কর। তুমি যমীনের যে অংশ ঘেরাও করে রাখ তাও — । একারণেই হাতীমে কা’বাকে — নামে অভিহিত করা হয়। তা যেন — শব্দ — অর্থে ব্যবহৃত যেমন —- শব্দটি —- অর্থে ব্যবহৃত। ঘোটকীকেও —- বলা হয়। আর বুদ্ধি-বিবেকের অর্থে ——- বলা হয়। তবে ——— একটি স্থানের নাম।

৩৩৭৭
حَدَّثَنَا الْحُمَيْدِيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا هِشَامُ بْنُ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنَ زَمْعَةَ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم‏.‏ وَذَكَرَ الَّذِي عَقَرَ النَّاقَةَ قَالَ ‏ “‏ انْتَدَبَ لَهَا رَجُلٌ ذُو عِزٍّ وَمَنَعَةٍ فِي قُوَّةٍ كَأَبِي زَمْعَةَ ‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু যাম’আহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে শুনেছি এবং তিনি যে লোক [সালিহ (‘আঃ)-এর] উঁটনী কেটেছিলেন তার উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, উটনীকে হত্যা করার জন্য এমন এক লোক (কিদার) তৈরী হয়েছিল যে তার গোত্রের ভিতর প্রভাবশালী ও শক্তিশালী ছিল, যেমন ছিল আবূ যাম’আহ।

৩৩৭৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ مِسْكِينٍ أَبُو الْحَسَنِ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَسَّانَ بْنِ حَيَّانَ أَبُو زَكَرِيَّاءَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمَّا نَزَلَ الْحِجْرَ فِي غَزْوَةِ تَبُوكَ أَمَرَهُمْ أَنْ لاَ يَشْرَبُوا مِنْ بِئْرِهَا، وَلاَ يَسْتَقُوا مِنْهَا فَقَالُوا قَدْ عَجَنَّا مِنْهَا، وَاسْتَقَيْنَا‏.‏ فَأَمَرَهُمْ أَنْ يَطْرَحُوا ذَلِكَ الْعَجِينَ وَيُهَرِيقُوا ذَلِكَ الْمَاءَ‏.‏ وَيُرْوَى عَنْ سَبْرَةَ بْنِ مَعْبَدٍ وَأَبِي الشُّمُوسِ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ بِإِلْقَاءِ الطَّعَامِ‏.‏ وَقَالَ أَبُو ذَرٍّ عَنِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَنِ اعْتَجَنَ بِمَائِهِ ‏”‏‏.‏

ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাবুকের যুদ্ধের সময় যখন হিজর নামক স্থানে অবতরন করলেন, তখন তিনি সাহাবীগণকে নির্দেশ করলেন, তাঁরা যেন এখানের কূপের পানি পান না করে এবং মশকেও পানি না ভরে। তখন সাহাবীগণ বললেন, আমরা তো এর পানি দ্বারা রুটির আটা গুলে ফেলেছি এবং পানিও ভরে রেখেছি। তখন নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে সেই গুলানো আটা ফেলে দেয়ার এবং পানি ঢেলে দেয়ার নির্দেশ দিলেন। সাবরা ইবনু মা’বাদ এবং আবুশ শামূস (রহঃ) হতে বর্ণিত যে, নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাদ্য ফেলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আর আবূ যার (রাঃ) নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেছেন, এর পানি দ্বারা যে আটা গুলেছে (তা ফেলে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন)।

৩৩৭৯
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، حَدَّثَنَا أَنَسُ بْنُ عِيَاضٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَخْبَرَهُ أَنَّ النَّاسَ نَزَلُوا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَرْضَ ثَمُودَ الْحِجْرَ، فَاسْتَقَوْا مِنْ بِئْرِهَا، وَاعْتَجَنُوا بِهِ، فَأَمَرَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُهَرِيقُوا مَا اسْتَقَوْا مِنْ بِئْرِهَا، وَأَنْ يَعْلِفُوا الإِبِلَ الْعَجِينَ، وَأَمَرَهُمْ أَنْ يَسْتَقُوا مِنَ الْبِئْرِ الَّتِي كَانَ تَرِدُهَا النَّاقَةُ‏.‏ تَابَعَهُ أُسَامَةُ عَنْ نَافِعٍ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সাহাবীগণ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সঙ্গে সামূদ জাতির আবাসস্থল ‘হিজর’ নামক স্থানে অবতরণ করলেন আর তখন তারা এর কূপের পানি মশকে ভরে রাখলেন এবং এ পানি দ্বারা আটা গুলে নিলেন। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে হুকুম দিলেন, তার ঐ কূপ হতে যে পানি ভরে রেখেছে, তা যেন ফেলে দেয় আর পানিতে গুলা আটা যেন উটগুলোকে খাওয়ায় আর তিনি তাদের আদেশ করলেন তারা যেন ঐ কূপ হতে মশক ভরে যেখান হতে [সালিহ (‘আঃ)]-এর উটনীটি পানি পান করত। উসামা (রহঃ) নাফি (রহঃ) হতে হাদিস বর্ণনায় ‘উবাইদুল্লাহ (রহঃ)-কে অনুসরণ করেছেন।

৩৩৮০
حَدَّثَنِي مُحَمَّدٌ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَالِمُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ ـ رضى الله عنهم أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَمَّا مَرَّ بِالْحِجْرِ قَالَ ‏ “‏ لاَ تَدْخُلُوا مَسَاكِنَ الَّذِينَ ظَلَمُوا إِلاَّ أَنْ تَكُونُوا بَاكِينَ، أَنْ يُصِيبَكُمْ مَا أَصَابَهُمْ ‏”‏‏.‏ ثُمَّ تَقَنَّعَ بِرِدَائِهِ، وَهْوَ عَلَى الرَّحْلِ‏.‏

‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন ‘হিজ্‌র’ নামক স্থান অতিক্রম করলেন, তখন তিনি বললেন, তোমরা এমন লোকদের আবাস স্থল প্রবেশ করো না যারা নিজেরাই নিজেদের উপর যুল্‌ম করেছে। প্রবেশ করলে, ক্রন্দনরত অবস্থায়, যেন তাদের প্রতি যে বিপদ এসেছিল তোমাদের প্রতি সে রকম বিপদ না আসে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বাহনের উপর আরোহী অবস্থায় নিজ চাদর দিয়ে চেহারা ঢেকে নিলেন।

৩৩৮১
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ، حَدَّثَنَا وَهْبٌ، حَدَّثَنَا أَبِي، سَمِعْتُ يُونُسَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، أَنَّ ابْنَ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لاَ تَدْخُلُوا مَسَاكِنَ الَّذِينَ ظَلَمُوا أَنْفُسَهُمْ إِلاَّ أَنْ تَكُونُوا بَاكِينَ، أَنْ يُصِيبَكُمْ مِثْلُ مَا أَصَابَهُمْ ‏”‏‏.‏

ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নির্দেশ দিয়েছেন, তোমারা একমাত্র ক্রন্দনরত অবস্থায়ই এমন লোকদের আবাসস্থলে প্রবেশ করবে যারা নিজেরাই নিজেদের উপর যুল্‌ম করেছে। তাদের উপর যে মুসিবত আপতিত হয়েছিল তোমাদের উপরও যেন সে মুসিবত না আসে।

৬০/১৮. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বানীঃ যখন ইয়াকুব (‘আঃ)-এর নিকট মৃত্যু এসেছিল, তখন কি তোমরা হাযির ছিলে? (আল-বাকারাহঃ ১৩৩)

৩৩৮২
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ‏ “‏ الْكَرِيمُ ابْنُ الْكَرِيمِ ابْنِ الْكَرِيمِ ابْنِ الْكَرِيمِ يُوسُفُ ابْنُ يَعْقُوبَ بْنِ إِسْحَاقَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ ـ عَلَيْهِمُ السَّلاَمُ ‏”‏‏.‏

ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সম্মানী ব্যক্তি- যিনি সম্মানী ব্যক্তির সন্তান, যিনি সম্মানী ব্যক্তির সন্তান, যিনি সম্মানী ব্যক্তির সন্তান। তিনি হলেন, ইউসুফ ইবনু ইয়া’কূব ইবনু ইসহাক ইব্‌নু ইবরাহীম (আলাইহিমুস সালাম)।

৬০/১৯. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই ইউসুফ এবং তাঁর ভাইদের কাহিনীতে জিজ্ঞাসাকারীদের জন্য অনেক নিদর্শন আছে। (ইউসুফঃ ৭)

৩৩৮৩
حَدَّثَنِي عُبَيْدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ أَبِي أُسَامَةَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ أَبِي سَعِيدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ سُئِلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ أَكْرَمُ النَّاسِ قَالَ ‏”‏ أَتْقَاهُمْ لِلَّهِ ‏”‏‏.‏ قَالُوا لَيْسَ عَنْ هَذَا نَسْأَلُكَ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَأَكْرَمُ النَّاسِ يُوسُفُ نَبِيُّ اللَّهِ ابْنُ نَبِيِّ اللَّهِ ابْنِ نَبِيِّ اللَّهِ ابْنِ خَلِيلِ اللَّهِ ‏”‏‏.‏ قَالُوا لَيْسَ عَنْ هَذَا نَسْأَلُكَ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَعَنْ مَعَادِنِ الْعَرَبِ تَسْأَلُونِي، النَّاسُ مَعَادِنُ خِيَارُهُمْ فِي الْجَاهِلِيَّةِ خِيَارُهُمْ فِي الإِسْلاَمِ إِذَا فَقِهُوا ‏”‏‏.‏ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ سَلَامٍ أَخْبَرَنَا عَبْدَةُ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ سَعِيدٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِهَذَا

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, মানুষের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সম্মানিত ব্যক্তি কে? তিনি উত্তর দিলেন, তাদের মধ্যে যে আল্লাহকে সবচেয়ে অধিক ভয় করে। তারা বললেন, আমরা আপনাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করিনি। তিনি বললেন, তাহলে মানুষের মধ্যে সর্বাধিক সম্মানিত ব্যক্তি হলেন, আল্লাহর নবী‎ ইউসুফ ইবনু আল্লাহর নবী‎ ইবনু আল্লাহর নবী‎ ইবনু আল্লাহর খালিল (‘আঃ)। তাঁরা বললেন, আমরা আপনাকে এ বিষয়েও জিজ্ঞেস করিনি। তখন তিনি বললেন, তাহলে তোমরা আমার নিকট আরবের খণি অর্থাৎ গোত্রগুলো সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছ? (তাহলে শুন) মানুষ খণি বিশেষ, জাহিলিয়্যাতের যুগে যারা তাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি ছিল, ইসলামেও তারা সর্বোত্তম ব্যক্তি, যদি তারা ইসলামী জ্ঞান লাভ করে।



আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ রকমই বর্ণনা করেছেন।

৩৩৮৪
حَدَّثَنَا بَدَلُ بْنُ الْمُحَبَّرِ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ سَمِعْتُ عُرْوَةَ بْنَ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَهَا ‏”‏ مُرِي أَبَا بَكْرٍ يُصَلِّي بِالنَّاسِ ‏”‏‏.‏ قَالَتْ إِنَّهُ رَجُلٌ أَسِيفٌ، مَتَى يَقُمْ مَقَامَكَ رَقَّ‏.‏ فَعَادَ فَعَادَتْ، قَالَ شُعْبَةُ فَقَالَ فِي الثَّالِثَةِ أَوِ الرَّابِعَةِ ‏”‏ إِنَّكُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ، مُرُوا أَبَا بَكْرٍ ‏”‏‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বলেছেন, আবূ বাকর (রাঃ)-কে বল, তিনি যেন লোকদের সালাতে ইমামতি করেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন, তিনি একজন কোমল হৃদয়ের লোক। যখন আপনার জায়গায় তিনি দাঁড়াবেন, তখন (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বিগলিত অন্তর হয়ে পড়বেন। নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পুনরায় একই কথা করলেন, ‘আয়িশা (রাঃ) আবারও সেই উত্তর দিলেন, শু’বাহ (রহঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তৃতীয় অথবা চতুর্থবার বললেন, [হে ‘আয়িশা]! তোমরা ইউসুফ (‘আঃ)-এর ঘটনার নিন্দাকারী নারীদের মত। আবূ বক্‌রকে বল (তিনি যেন লোকদের সালাতে ইমামতি করেন)।

৩৩৮৫
حَدَّثَنَا الرَّبِيعُ بْنُ يَحْيَى الْبَصْرِيُّ، حَدَّثَنَا زَائِدَةُ، عَنْ عَبْدِ الْمَلِكِ بْنِ عُمَيْرٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ بْنِ أَبِي مُوسَى، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ مَرِضَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏”‏ مُرُوا أَبَا بَكْرٍ فَلْيُصَلِّ بِالنَّاسِ ‏”‏‏.‏ فَقَالَتْ إِنَّ أَبَا بَكْرٍ رَجُلٌ‏.‏ فَقَالَ مِثْلَهُ فَقَالَتْ مِثْلَهُ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ مُرُوهُ فَإِنَّكُنَّ صَوَاحِبُ يُوسُفَ ‏”‏‏.‏ فَأَمَّ أَبُو بَكْرٍ فِي حَيَاةِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم‏.‏ فَقَالَ حُسَيْنٌ عَنْ زَائِدَةَ رَجُلٌ رَقِيقٌ‏.‏

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লেন, তখন তিনি বললেন, আবূ বক্‌রকে বল, তিনি যেন লোকদের সালাত আদায় করিয়ে দেন। তখন ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন, আবূ বকর (রাঃ) তো এ রকম লোক। অতঃপর নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনুরূপ বললেন, তখন ‘আয়িশা (রাঃ) ও ঐরূপই বললেন, তখন নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আয়িশাহ! নিশ্চয় তোমরা ইউসুফ (‘আঃ)-এর ঘটনার নিন্দাকারী নারীদের মত হয়ে গেছ। অতঃপর আবূ বকর (রাঃ) নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জীবদ্দশায় ইমামত করলেন। বর্ণনাকারী হুসাইন (রহঃ) যায়িদা (রহঃ) হতে বর্ণনা করেছেন, এখানে —– এর স্থলে —— আছে অর্থাৎ তিনি একজন কোমল হৃদয়ের লোক।

৩৩৮৬
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ اللَّهُمَّ أَنْجِ عَيَّاشَ بْنَ أَبِي رَبِيعَةَ، اللَّهُمَّ أَنْجِ سَلَمَةَ بْنَ هِشَامٍ، اللَّهُمَّ أَنْجِ الْوَلِيدَ بْنَ الْوَلِيدِ اللَّهُمَّ أَنْجِ الْمُسْتَضْعَفِينَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ، اللَّهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى مُضَرَ، اللَّهُمَّ اجْعَلْهَا سِنِينَ كَسِنِي يُوسُفَ ‏”‏‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’আ করেছেন, হে আল্লাহ! আয়্যাশ ইবনু আবূ রবী’আকে মুক্তি দিন। হে আল্লাহ! সালাম ইবনু হিশামকে নাজাত দিন। হে আল্লাহ! ওয়ালীদ ইবনু ওয়ালীদকে নাজাত দিন। হে আল্লাহ! দুর্বল মুমিনদেরকে মুক্তি দিন। হে আল্লাহ! মুযার গোত্রকে শক্তভাবে পাকড়াও করুন। হে আল্লাহ! এ গোত্রের উপর এমন দুর্ভিক্ষ ও অনটন নাযিল করুন যেমন দুর্ভিক্ষ ইউসুফ (‘আঃ)-এর যামানায় হয়েছিল।

৩৩৮৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ ابْنِ أَخِي جُوَيْرِيَةَ حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ بْنُ أَسْمَاءَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَنَّ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ، وَأَبَا، عُبَيْدٍ أَخْبَرَاهُ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ يَرْحَمُ اللَّهُ لُوطًا، لَقَدْ كَانَ يَأْوِي إِلَى رُكْنٍ شَدِيدٍ، وَلَوْ لَبِثْتُ فِي السِّجْنِ مَا لَبِثَ يُوسُفُ ثُمَّ أَتَانِي الدَّاعِي لأَجَبْتُهُ ‏”‏‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ লূত (‘আঃ) -এর উপর রহম করুন। তিনি একটি সুদৃঢ় খুঁটির আশ্রয় নিয়েছিলেন আর ইউসুফ (‘আঃ) যত দীর্ঘ সময় জেলখানায় কাটিয়েছেন, আমি যদি অত দীর্ঘ সময় কারাগারে কাটাতাম এবং পরে রাজদূত আমার নিকট আসত তবে নিশ্চয়ই আমি তার ডাকে সাড়া দিতাম।

৩৩৮৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلاَمٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، حَدَّثَنَا حُصَيْنٌ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، قَالَ سَأَلْتُ أُمَّ رُومَانَ، وَهْىَ أُمُّ عَائِشَةَ، عَمَّا قِيلَ فِيهَا مَا قِيلَ قَالَتْ بَيْنَمَا أَنَا مَعَ عَائِشَةَ جَالِسَتَانِ، إِذْ وَلَجَتْ عَلَيْنَا امْرَأَةٌ مِنَ الأَنْصَارِ، وَهْىَ تَقُولُ فَعَلَ اللَّهُ بِفُلاَنٍ وَفَعَلَ‏.‏ قَالَتْ فَقُلْتُ لِمَ قَالَتْ إِنَّهُ نَمَا ذِكْرَ الْحَدِيثِ‏.‏ فَقَالَتْ عَائِشَةُ أَىُّ حَدِيثٍ فَأَخْبَرَتْهَا‏.‏ قَالَتْ فَسَمِعَهُ أَبُو بَكْرٍ وَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَتْ نَعَمْ‏.‏ فَخَرَّتْ مَغْشِيًّا عَلَيْهَا، فَمَا أَفَاقَتْ إِلاَّ وَعَلَيْهَا حُمَّى بِنَافِضٍ، فَجَاءَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏ “‏ مَا لِهَذِهِ ‏”‏‏.‏ قُلْتُ حُمَّى أَخَذَتْهَا مِنْ أَجْلِ حَدِيثٍ تُحُدِّثَ بِهِ، فَقَعَدَتْ فَقَالَتْ وَاللَّهِ لَئِنْ حَلَفْتُ لاَ تُصَدِّقُونِي، وَلَئِنِ اعْتَذَرْتُ لاَ تَعْذِرُونِي، فَمَثَلِي وَمَثَلُكُمْ كَمَثَلِ يَعْقُوبَ وَبَنِيهِ، فَاللَّهُ الْمُسْتَعَانُ عَلَى مَا تَصِفُونَ‏.‏ فَانْصَرَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَأَنْزَلَ اللَّهُ مَا أَنْزَلَ، فَأَخْبَرَهَا فَقَالَتْ بِحَمْدِ اللَّهِ لاَ بِحَمْدِ أَحَدٍ‏.‏

মাসরূক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশা (রাঃ)-এর মা উম্মু রুমানার নিকট আয়িশাহর বিষয়ে যে সব মিথ্যা অপবাদের কথা বলাবলি হচ্ছিল সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, আমি আয়িশার সঙ্গে একত্রে উপবিষ্ট ছিলাম। এমন সময় একজন আনসারী মহিলা এ কথা বলতে বলতে আমাদের নিকট প্রবেশ করল। আল্লাহ অমুককে শাস্তি দিক। আর শাস্তি তো দিয়েছেন। এ কথা শুনে উম্মু রুমানা (রাঃ) বললেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম এ কথা বলার কারণ কী? সে মহিলাটি বলল, ঐ লোকটিই তো কথাটির চর্চা করছে। তখন ‘আয়িশা (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, কোন কথাটির? অতঃপর সে ‘আয়িশা (রাঃ)-কে বিষয়টি জানিয়ে দিল। ‘আয়িশা (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, বিষয়টি কি আবূ বকর (রাঃ) ও রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -ও শুনেছেন? সে বলল, হাঁ! এতে ‘আয়িশা (রাঃ) বেহুশ হয়ে পড়ে গেলেন। পরে তাঁর হুশ ফিরে আসল তবে তাঁর শরীর কাঁপিয়ে জ্বর আসল। অতঃপর নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে জিজ্ঞেস করলেন, তার কী হল? আমি বললাম, তাঁর সম্পর্কে যা কিছু রটেছে তাতে সে (মনে) আঘাত পেয়েছে ফলে সে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। এ সময় ‘আয়িশা (রাঃ) উঠে বসলেন, আর বলতে লাগলেন, আল্লাহর কসম, আমি যদি কসম খেয়ে বলি তবুও আপনারা আমাকে বিশ্বাস করবেন না আর যদি উযর পেশ করি তাও আপনারা আমার উযর শুনবেন না। অতএব এখন আমার ও আপনাদের উপমা হল ইয়াকুব (‘আঃ) ও তাঁর ছেলেদের মত। আপনারা যা বর্ণনা করেছেন সে বিষয়ে একমাত্র আল্লাহর নিকটই সাহায্য চাওয়া হল। অতঃপর নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ফিরে চলে গেলেন এবং আল্লাহ যা নাযিল করার তা নাযিল করলেন। তখন নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসে ‘আয়িশা (রাঃ)-কে এ খবর জানালেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন, আমি একমাত্র আল্লাহরই প্রশংসা করব অন্য কারো প্রশংসা নয়।

৩৩৮৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ، أَنَّهُ سَأَلَ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَرَأَيْتِ قَوْلَهُ ‏{‏حَتَّى إِذَا اسْتَيْأَسَ الرُّسُلُ وَظَنُّوا أَنَّهُمْ قَدْ كُذِّبُوا‏}‏ أَوْ كُذِبُوا‏.‏ قَالَتْ بَلْ كَذَّبَهُمْ قَوْمُهُمْ‏.‏ فَقُلْتُ وَاللَّهِ لَقَدِ اسْتَيْقَنُوا أَنَّ قَوْمَهُمْ كَذَّبُوهُمْ وَمَا هُوَ بِالظَّنِّ‏.‏ فَقَالَتْ يَا عُرَيَّةُ، لَقَدِ اسْتَيْقَنُوا بِذَلِكَ‏.‏ قُلْتُ فَلَعَلَّهَا أَوْ كُذِبُوا‏.‏ قَالَتْ مَعَاذَ اللَّهِ، لَمْ تَكُنِ الرُّسُلُ تَظُنُّ ذَلِكَ بِرَبِّهَا وَأَمَّا هَذِهِ الآيَةُ قَالَتْ هُمْ أَتْبَاعُ الرُّسُلِ الَّذِينَ آمَنُوا بِرَبِّهِمْ وَصَدَّقُوهُمْ، وَطَالَ عَلَيْهِمُ الْبَلاَءُ، وَاسْتَأْخَرَ عَنْهُمُ النَّصْرُ حَتَّى إِذَا اسْتَيْأَسَتْ مِمَّنْ كَذَّبَهُمْ مِنْ قَوْمِهِمْ، وَظَنُّوا أَنَّ أَتْبَاعَهُمْ كَذَّبُوهُمْ جَاءَهُمْ نَصْرُ اللَّهِ‏.‏ قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ ‏{‏اسْتَيْأَسُوا‏}‏ افْتَعَلُوا مِنْ يَئِسْتُ‏.‏ ‏{‏مِنْهُ‏}‏ مِنْ يُوسُفَ‏.‏ ‏{‏لاَ تَيْأَسُوا مِنْ رَوْحِ اللَّهِ‏}‏ مَعْنَاهُ الرَّجَاءُ‏.‏

‘উরওয়াহ ইবনু যুবাইর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সহধর্মিণী ‘আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ —————————– আয়াতাংশের মধ্যে —– হবে, না —– হবে? (যাল হরফে তাশদীদ সহ পড়তে হবে না তাশদীদ ব্যতীত)? ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, (এখানে —– নয়, —— হবে) কেননা, তাঁদের কাওম তাঁদেরকে মিথ্যাচারী বলেছিল। [‘উরওয়াহ (রহঃ) বলেন] আমি বললাম, মহান আল্লাহর কসম, রসূলগণের দৃঢ় প্রত্যয় ছিল যে, তাঁদের কাওম তাদেরকে মিথ্যাচারী বলেছে, আর তাতো সন্দেহের বিষয় ছিল না। (কাজেই এখানে ——- হবে কিভাবে?) তখন ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, হে ‘উরাইয়াহ! এ ব্যাপারে তো তাদের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল। [‘উরওয়াহ (রহঃ) বলেন] আমি বললাম, সম্ভবতঃ এখানে —— হবে। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, মা’আযাল্লাহ! রাসূলগণ কখনো আল্লাহ সম্পর্কে এরূপ ধারণা করতেন না। (অর্থাৎ —— হলে অর্থ দাঁড়ায়, আল্লাহ তা’আলা রসূলগণের সঙ্গে মিথ্যা বলেছেন। অথচ রাসূলগণ কখনো এরূপ ধারণা করতে পারে না।) তবে এ আয়াত সম্পর্কে ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, তারা রাসূলগণের অনুসারী যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছেন এবং রাসূলগণকে বিশ্বাস করেছেন। তাঁদের উপর পরীক্ষা দীর্ঘায়িত হয়। তাঁদের প্রতি সাহায্য পৌঁছতে বিলম্ব হয়। অবশেষে রসূলগণ যখন তাঁদের কাওমের লোকদের মধ্যে যারা তাঁদেরকে মিথ্যা মনে করেছে, তাদের ঈমান আনার ব্যাপারে নিরাশ হয়ে গেলেন এবং তাঁরা এ ধারণা করতে লাগলেন যে, তাঁদের অনুসারীগণও তাঁদেরকে মিথ্যাচারী মনে করবেন, ঠিক এ সময়ই মহান আল্লাহর সাহায্য পৌঁছে গেল। ——- শব্দটি ——- এর ওজনে এসেছে। ———- হতে নিষ্পন্ন হয়েছে। অর্থাৎ তারা ইউসুফ (‘আঃ) হতে নিরাশ হয়ে গেছে। ————— এর অর্থ তোমরা আল্লাহর রহমত হতে নিরাশ হয়ো না।

৩৩৯০
أَخْبَرَنِي عَبْدَةُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ الْكَرِيمُ ابْنُ الْكَرِيمِ ابْنِ الْكَرِيمِ ابْنِ الْكَرِيمِ يُوسُفُ بْنُ يَعْقُوبَ بْنِ إِسْحَاقَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ عَلَيْهِمِ السَّلاَمُ ‏”‏‏.‏

ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সম্মানিত ব্যক্তি যিনি সম্মানিত ব্যক্তির সন্তান, যিনি সম্মানিত ব্যক্তির সন্তান, যিনি সম্মানিত ব্যক্তির সন্তান, তিনি হলেন, ইউসুফ ইবনু ইয়াকুব ইবনু ইসহাক ইব্‌নু ইবরাহীম (‘আঃ)।

৬০/২০. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর বাণীঃ (আর স্মরণ কর) আইয়ুবের কথা। যখন তিনি তাঁর রবকে ডেকে বললেন, আমিতো দুঃখ কষ্টে পড়েছি, আর তুমিতো সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু। (আম্বিয়াঃ ৮৩)।

(— অর্থ আঘাত কর। — অর্থ দ্রুত বলে)

৩৩৯১
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْجُعْفِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ بَيْنَمَا أَيُّوبُ يَغْتَسِلُ عُرْيَانًا خَرَّ عَلَيْهِ رِجْلُ جَرَادٍ مِنْ ذَهَبٍ، فَجَعَلَ يَحْثِي فِي ثَوْبِهِ، فَنَادَى رَبُّهُ يَا أَيُّوبُ، أَلَمْ أَكُنْ أَغْنَيْتُكَ عَمَّا تَرَى قَالَ بَلَى يَا رَبِّ، وَلَكِنْ لاَ غِنَى لِي عَنْ بَرَكَتِكَ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, একদা আইয়ুব (‘আঃ) নগ্ন শরীরে গোসল করছিলেন। এমন সময় তাঁর উপর স্বর্ণের এক ঝাঁক পঙ্গপাল পতিত হল। তিনি সেগুলো দু’হাতে ধরে কাপড়ে রাখতে লাগলেন। তখন তাঁর রব তাঁকে ডেকে বললেন, হে আইয়ুব! তুমি যা দেখতে পাচ্ছ, তা থেকে কি আমি তোমাকে অমুখাপেক্ষী করে দেইনি? তিনি উত্তর দিলেন, হাঁ, হে রব! কিন্তু আমি আপনার বরকত থেকে মুখাপেক্ষীহীন নই।

৬০/২১. অধ্যায়ঃ
(আল্লাহ তা’আলার বাণী): আর স্মরণ কর এই কিতাবে মূসার কথা। নিশ্চয়ই তিনি ছিলেন, বিশেষভাবে বাছাইকৃত রসূল ও নবী‎। তাকে আমি ডেকেছিলাম তূর পাহাড়ের দক্ষিণ দিক হতে এবং আমি অন্তরংগ আলাপে তাকে নৈকট্য দান করেছিলাম। আমি নিজ অনুগ্রহে তার ভাই হারূনকে নবী‎রূপে তাকে দিলাম। (মারইয়াম: ৫১-৫৩)

একবচন দ্বিবচন ও বহুবচনের ক্ষেত্রেও — বলা হয়। —- অর্থ অন্তরঙ্গ আলাপে নির্জনতা অবলম্বন করা। এর বহুবচন —- ব্যবহৃত হয়। — পরস্পর অন্তরঙ্গ আলাপ করে। — অর্থ গ্রাস করে।

(আল্লাহ তা’আলার বাণী) “ফির’আউন গোত্রের এক মু’মিন ব্যক্তি যে ঈমান গোপন রাখত…নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারী মিথ্যাবাদীকে পথ প্রদর্শন করেন না।” (গাফিরঃ ২৮)

৩৩৯২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، قَالَ حَدَّثَنِي عُقَيْلٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، سَمِعْتُ عُرْوَةَ، قَالَ قَالَتْ عَائِشَةُ ـ رضى الله عنها فَرَجَعَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِلَى خَدِيجَةَ يَرْجُفُ فُؤَادُهُ، فَانْطَلَقَتْ بِهِ إِلَى وَرَقَةَ بْنِ نَوْفَلٍ، وَكَانَ رَجُلاً تَنَصَّرَ يَقْرَأُ الإِنْجِيلَ بِالْعَرَبِيَّةِ‏.‏ فَقَالَ وَرَقَةُ مَاذَا تَرَى فَأَخْبَرَهُ‏.‏ فَقَالَ وَرَقَةُ هَذَا النَّامُوسُ الَّذِي أَنْزَلَ اللَّهُ عَلَى مُوسَى، وَإِنْ أَدْرَكَنِي يَوْمُكَ أَنْصُرْكَ نَصْرًا مُؤَزَّرًا‏.‏ النَّامُوسُ صَاحِبُ السِّرِّ الَّذِي يُطْلِعُهُ بِمَا يَسْتُرُهُ عَنْ غَيْرِهِ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাদীজাহ (রাঃ)-এর নিকট ফিরে আসলেন তাঁর হৃদয় কাঁপছিল। তখন খাদীজাহ (রাঃ) তাঁকে নিয়ে ওয়ারাকা ইবনু নাওফলের নিকট গেলেন। তিনি খৃস্টান ধর্ম অবলম্বন করেছিলেন। তিনি আরবী ভাষায় ইঞ্জিল পাঠ করতেন। ওয়ারাকা জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি দেখেছেন? নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে সব ঘটনা জানালেন। তখন ওয়ারাকা বললেন, এতো সেই নামুস যাঁকে আল্লাহ তা’আলা মূসা (‘আঃ)-এর নিকট নাযিল করেছিলেন। আপনার সে সময় যদি আমি পাই, তবে সর্বশক্তি দিয়ে আমি আপনাকে সাহায্য করব।



নামূস শব্দের অর্থ গোপন তত্ত্ব ও তথ্যবাহী যাকে কেউ কোন বিষয়ে খবর দেয় আর সে তা অপর হতে গোপন রাখে।

৬০/২২. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ

আপনার নিকট কি মূসার বৃত্তান্ত পৌঁছেছে? তিনি যখন আগুন দেখলেন…‘তুমি ‘তুয়া’ নামক এক পবিত্র ময়দানে রয়েছ। (ত্ব-হা ৯-১৩)



— অর্থ আমি আগুন দেখেছি। সম্ভবতঃ আমি তোমাদের জন্য তা হতে কিছু জ্বলন্ত আগুন আনতে পারব…(ত্বোয়া-হা ১০) ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, —– অর্থ বরকতময়। — একটি উপত্যকার নাম। — অর্থ তার অবস্থায়। — অর্থ আল্লাহভীরু। — অর্থ আমাদের ইচ্ছামত — অর্থ ভাগ্যাহত হয়েছে। — অর্থ মূসার স্মরণ ব্যতীত সব কিছু থেকে শুনা হয়ে গেল। — অর্থ সাহায্যকারী রূপে যেন সে আমাকে সমর্থন করে। এর অর্থ আরো বলা হয় আর্তনাদে সাড়াদানকারী বা সাহায্যকারী। ———– একই অর্থ উভয় কিরাআতে। — অর্থ পরস্পর পরামর্শ করা। — অর্থ সাহায্য করা। বলা হয় ———- অর্থাৎ আমি তার কাজে সাহায্য করেছি। — কাঠের বড় টুকরার অঙ্গার যাতে কোন শিখা। — অর্থ অচিরেই আমি তোমার সাহায্য করব। বলা হয় যখন তুমি কারো সাহায্য করবে তখন তুমি যেন তার পার্শ্বদেশ হয়ে গেলে।



এবং অন্যান্যগণ বলেন যে কোন অক্ষর উচ্চারণ করতে পারেনা অথবা তার মুখ হতে তা, তা, ফা, ফা উচ্চারিত হয় তাকেই তোতলামি বলে। — অর্থ আমার পিঠ — অর্থ – সে তোমাদেরকে ধ্বংস করে দিবে। — শব্দটি — শব্দের স্ত্রী লিঙ্গ। আয়াতে উল্লিখিত ——- অর্থ তোমাদের দ্বীন। বলা হয়, ———— অর্থ-উত্তমটি গ্রহণ করো। ————– অর্থাৎ তোমরা সারিবদ্ধ হয়ে এসো। বলা হয়, তুমি কি আজ ছফ্‌ফে উপস্থিত হয়েছিলে অর্থাৎ যেখানে নামায পড়া হয় সেখানে? — অর্থ- সে অন্তরে ভয় পোষণ করেছে। — মূলে — অক্ষরে যের হবার কারণে — তে পরিবর্তিত হয়েছে। ———– এখানে — অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। — অর্থ- তোমার অবস্থা। —- শব্দটি —- এর মাসদার। অর্থ- তোমার অবস্থা। —– অর্থ- আমি অবশ্যই তাকে উড়িয়ে দেব। —- অর্থ পূর্বাহ্ন, যখন সূর্যের উষ্ণতা বেড়ে যায়। — তুমি তার পিছনে পিছনে যাও। কখনো এ অর্থেও ব্যবহৃত হয় যে, তুমি তোমার কথা বলো যেমন, ———— এর মধ্যে এ অর্থ ব্যবহৃত হয়েছে। —- অর্থ- দূর থেকে। ——— একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। আর মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, —- অর্থ- নির্ধারিত সময়ে। —- অর্থ দুর্বল হয়ো না। —– অর্থ- তাদের মধ্যবর্তী স্থান। —– অর্থ- শুক্‌না। ———- অর্থ- যে সব অলঙ্কার তারা ফির’আউনের লোকদের হতে ধার নিয়েছিল। —— অর্থ- আমি তা নিক্ষেপ করলাম। —– অর্থ বানালো। —– অর্থ- তারা বল্‌তে লাগ্‌লো, মূসা রবের তালাশে ভুল পথে গিয়েছে। ————- অর্থ- তাদের কোন কথার প্রতি উত্তর সে দেয় না- এ আয়াতাংশ সামেরীর বাছুর সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে।

৩৩৯৩
حَدَّثَنَا هُدْبَةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ صَعْصَعَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَدَّثَهُمْ عَنْ لَيْلَةِ أُسْرِيَ بِهِ حَتَّى أَتَى السَّمَاءَ الْخَامِسَةَ، فَإِذَا هَارُونُ قَالَ هَذَا هَارُونُ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ‏.‏ فَسَلَّمْتُ عَلَيْهِ، فَرَدَّ ثُمَّ قَالَ مَرْحَبًا بِالأَخِ الصَّالِحِ وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ‏.‏ تَابَعَهُ ثَابِتٌ وَعَبَّادُ بْنُ أَبِي عَلِيٍّ عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏

মালিক ইব্‌নু সা’সাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিরাজ রাত্রির ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তাঁদের নিকট এও বলেন, তিনি যখন পঞ্চম আকাশে এসে পৌঁছলেন, তখন হঠাৎ সেখানে হারূন (‘আঃ)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হল। জিবরাঈল (‘আঃ) বললেন, ইনি হলেন, হারূন (‘আঃ) তাঁকে সালাম করুন তখন আমি তাঁকে সালাম করলাম। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেন, মারহাবা পুণ্যবান ভাই ও পুণ্যবান নবী‎। সাবিত এবং ‘আব্বাদ ইব্‌নু আবূ আলী (রহঃ) আনাস (রাঃ) সূত্রে নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীস বর্ণনায় ক্বাতাদা (রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।

৬০/২৩. অধ্যায়ঃ
“ফির’আউন গোত্রের এক মু’মিন ব্যক্তি যে তার ঈমান গোপন রাখত, ……।. নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারী মিথ্যাবাদীকে পথ প্রদর্শন করেন না।” (গাফির/আল-মু’মিনঃ ২৮) [১]

[১] অন্যান্য অনেক অধ্যায়ের মত ইমাম বুখারী (রহঃ) এখানেও কোন হাদীস বা ব্যাখ্যা উল্লেখ করেননি।

৬০/২৪. অধ্যায়ঃ
হে মুহাম্মাদ! আপনার নিকট কি মূসার বৃত্তান্ত পৌঁছেছে? (ত্বা-হা: ৯) আর আল্লাহ্‌ মূসার সঙ্গে সাক্ষাতে কথাবার্তা বলেছেন। (আন-নিসাঃ ১৬৪)

৩৩৯৪
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى، أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِهِ ‏ “‏ رَأَيْتُ مُوسَى وَإِذَا رَجُلٌ ضَرْبٌ رَجِلٌ، كَأَنَّهُ مِنْ رِجَالِ شَنُوءَةَ، وَرَأَيْتُ عِيسَى، فَإِذَا هُوَ رَجُلٌ رَبْعَةٌ أَحْمَرُ كَأَنَّمَا خَرَجَ مِنْ دِيمَاسٍ، وَأَنَا أَشْبَهُ وَلَدِ إِبْرَاهِيمَ صلى الله عليه وسلم بِهِ، ثُمَّ أُتِيتُ بِإِنَاءَيْنِ، فِي أَحَدِهِمَا لَبَنٌ، وَفِي الآخَرِ خَمْرٌ فَقَالَ اشْرَبْ أَيَّهُمَا شِئْتَ‏.‏ فَأَخَذْتُ اللَّبَنَ فَشَرِبْتُهُ فَقِيلَ أَخَذْتَ الْفِطْرَةَ، أَمَا إِنَّكَ لَوْ أَخَذْتَ الْخَمْرَ غَوَتْ أُمَّتُكَ ‏”‏‏.‏

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে রাতে আমার মি’রাজ হয়েছিল, সে রাতে আমি মূসা (‘আঃ)-কে দেখতে পেয়েছি। তিনি হলেন, হালকা পাতলা দেহের অধিকারী ব্যক্তি তাঁর চুল কোঁকড়ানো ছিল না। মনে হচ্ছিল তিনি যে ইয়ামান দেশীয় শানূআ গোত্রের জনৈক ব্যক্তি, আর আমি ‘ঈসা (‘আঃ)-কে দেখতে পেয়েছি। তিনি হলেন মধ্যম দেহবিশিষ্ট, গায়ের রঙ ছিল লাল। যেন তিনি এক্ষুণি গোসলখানা হতে বের হলেন। আর ইব্‌রাহীম (‘আঃ)-এর বংশধরদের মধ্যে তাঁর সঙ্গে আমার চেহারার মিল সবচেয়ে বেশি। অতঃপর আমার সম্মুখে দু’টি পেয়ালা আনা হল। তার একটিতে ছিল দুধ আর অপরটিতে ছিল শরাব। তখন জিব্‌রাঈল (‘আঃ) বললেন, এ দু’টির মধ্যে যেটি চান আপনি পান করতে পারেন। আমি দুধের পেয়ালাটি নিলাম এবং তা পান করলাম। তখন বলা হল, আপনি স্বভাব প্রকৃতিকে বেছে নিয়েছেন। দেখুন, আপনি যদি শরাব নিয়ে নিতেন, তাহলে আপনার উম্মতগণ পথভ্রষ্ট হয়ে যেত।

৩৩৯৫
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا الْعَالِيَةِ، حَدَّثَنَا ابْنُ عَمِّ، نَبِيِّكُمْ ـ يَعْنِي ابْنَ عَبَّاسٍ ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ لاَ يَنْبَغِي لِعَبْدٍ أَنْ يَقُولَ أَنَا خَيْرٌ مِنْ يُونُسَ بْنِ مَتَّى ‏”‏‏.‏ وَنَسَبَهُ إِلَى أَبِيهِ‏.‏ وَذَكَرَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِهِ فَقَالَ ‏”‏ مُوسَى آدَمُ طُوَالٌ كَأَنَّهُ مِنْ رِجَالِ شَنُوءَةَ ‏”‏‏.‏ وَقَالَ ‏”‏ عِيسَى جَعْدٌ مَرْبُوعٌ ‏”‏‏.‏ وَذَكَرَ مَالِكًا خَازِنَ النَّارِ، وَذَكَرَ الدَّجَّالَ‏.‏

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কোন ব্যক্তির এ কথা বলা ঠিক হবে না যে, আমি (নবী‎) ইউনুস ইব্‌নু মাত্তার চেয়ে উত্তম। নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথা বলতে গিয়ে ইউনুস (‘আঃ)-এর পিতার নাম উল্লেখ করেছেন।

৩৩৯৬
See previous Hadith

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আর নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিরাজের রাতের কথাও উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন মূসা (‘আঃ) বাদামী রঙ বিশিষ্ট দীর্ঘদেহী ছিলেন। যেন তিনি শানু’আহ গোত্রের লোকদের মত। তিনি আরো বলেছেন যে, ‘ঈসা (‘আঃ) ছিলেন মধ্যমদেহী, কোকঁড়ানো চুলওয়ালা ব্যক্তি। আর তিনি [নবী‎(সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] জাহান্নামের দারোগা মালিক এবং দাজ্জালের কথাও উল্লেখ করেছেন।

৩৩৯৭
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ السَّخْتِيَانِيُّ، عَنِ ابْنِ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم لَمَّا قَدِمَ الْمَدِينَةَ وَجَدَهُمْ يَصُومُونَ يَوْمًا، يَعْنِي عَاشُورَاءَ، فَقَالُوا هَذَا يَوْمٌ عَظِيمٌ، وَهْوَ يَوْمٌ نَجَّى اللَّهُ فِيهِ مُوسَى، وَأَغْرَقَ آلَ فِرْعَوْنَ، فَصَامَ مُوسَى شُكْرًا لِلَّهِ‏.‏ فَقَالَ ‏ “‏ أَنَا أَوْلَى بِمُوسَى مِنْهُمْ ‏”‏‏.‏ فَصَامَهُ وَأَمَرَ بِصِيَامِهِ‏.‏

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন মদীনায় আগমন করেন, তখন তিনি মদীনাবাসীকে এমনভাবে পেলেন যে, তারা একদিন সাওম পালন করে অর্থাৎ সে দিনটি হল ‘আশুরার দিন। তারা বলল, এটি একটি মহান দিবস। এ এমন দিন যে দিনে আল্লাহ্‌ মূসা (‘আঃ) –কে নাজাত দিয়েছিলেন এবং ফির‘আউনের সম্প্রদায়কে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন। অতঃপর মূসা (‘আঃ) শুকরিয়া হিসেবে এদিন সাওম পালন করেছেন। তখন নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাদের তুলনায় আমি হলাম মূসা (‘আঃ)–এর অধিক নিকটবর্তী। কাজেই তিনি নিজেও এদিন সাওম পালন করেছেন এবং এদিন সাওম পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।

৬০/২৫. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ

আর আমি মূসাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি ত্রিশ রাত্রির এবং সেগুলোকে পূর্ণ করেছি আরো দশ রাত দ্বারা। বস্তুত এভাবে চল্লিশ রাতের মেয়াদ পূর্ণ হয়ে গেছে। আর মূসা তাঁর ভাই হারূনকে বললেন, আমার সম্প্রদায়ে তুমি আমার প্রতিনিধি হিসাবে থাক। তাদের সংশোধন করতে থাক এবং ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের পথে চলো না। অতঃপর মূসা যখন আমার প্রতিশ্রুতির সময় অনুযায়ী এসে হাযির হলেন এবং তাঁর সাথে তাঁর রবের কথা বললেন, তখন তিনি বললেন, হে আমার রব, আমাকে তোমার দর্শন দাও, যেন আমি তোমাকে দেখতে পাই … (আয়াতের শেষ পর্যন্ত) আর আমিই প্রথম মু‘মিনদের মধ্যে প্রথম শ্রেণীর। (আ’রাফ ১৪২-৪৩)



বলা হয় —- অর্থ ভূকম্পন। আয়াতে উল্লেখিত —- দ্বিবচন বহুবচন অর্থে ব্যবহূত। এখানে —- শব্দটিকে এক ধরে নিয়ে —- সহ দ্বিচন রূপে —- বলা হয়েছে। যেমন মহান আল্লাহ্‌র বাণী : —— এর মধ্যে —— এক ধরে দ্বিবচনে উল্লেখ করা হয়েছে। —– বহুবচন বলা হয়নি। —– অর্থাৎ পরস্পর মিলিত। —— অর্থাৎ তাদের হৃদয়ে গোবৎস প্রীতি সিঞ্চিত হয়েছিল। বলা হয় —— অর্থ রঞ্জিত কাপড়। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, ——- অর্থ প্রবাহিত হয়েছিল। —- অর্থ আমি পাহাড়কে তাদের উপর উচিয়ে ছিলাম।

৩৩৯৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ يَحْيَى، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ النَّاسُ يَصْعَقُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ، فَأَكُونُ أَوَّلَ مَنْ يُفِيقُ، فَإِذَا أَنَا بِمُوسَى آخِذٌ بِقَائِمَةٍ مِنْ قَوَائِمِ الْعَرْشِ، فَلاَ أَدْرِي أَفَاقَ قَبْلِي، أَمْ جُوزِيَ بِصَعْقَةِ الطُّورِ ‏”‏‏.‏

আবূ সা‘ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কিয়ামতের দিন সকল মানুষ বেহুশ হবে। অতঃপর সর্বপ্রথম আমারই হুশ আসবে। তখন আমি মূসা (‘আঃ)-কে দেখতে পাব যে, তিনি আরশের খুঁটিগুলোর একটি খুঁটি ধরে রয়েছেন। আমি জানি না, আমার আগেই কি তাঁর হুশ আসল, না-কি তুর পাহাড়ে বেহুশ হবার প্রতিদান তাঁকে দেয়া হল।

৩৩৯৯
حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ الْجُعْفِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لَوْلاَ بَنُو إِسْرَائِيلَ لَمْ يَخْنَزِ اللَّحْمُ، وَلَوْلاَ حَوَّاءُ لَمْ تَخُنْ أُنْثَى زَوْجَهَا الدَّهْرَ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যদি বনী ইসরাঈল না হত, তবে গোশ্‌ত পচে যেত না। আর যদি (মা) হাওয়া (‘আঃ) না হতেন, তাহলে কক্ষনো কোন নারী তার স্বামীর খেয়ানত করত না।

৬০/২৬. অধ্যায়ঃ
বন্যার কারণে তুফান।

মহামারিকেও তুফান নামে অভিহিত করা হয়। —- কীট যা ছোট ছোট উকুনের মত হয়ে থাকে। —— স্থির নিশ্চিত। —– লজ্জিত। আর যে লজ্জিত হয়, সে অধোমুখে পতিত হয়।

৬০/২৭. অধ্যায়ঃ
মূসা (‘আঃ)-এর সম্পর্কিত খাযির (‘আঃ)-এর ঘটনা।

৩৪০০
حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّ عُبَيْدَ اللَّهِ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَهُ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، أَنَّهُ تَمَارَى هُوَ وَالْحُرُّ بْنُ قَيْسٍ الْفَزَارِيُّ فِي صَاحِبِ مُوسَى، قَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ هُوَ خَضِرٌ، فَمَرَّ بِهِمَا أُبَىُّ بْنُ كَعْبٍ، فَدَعَاهُ ابْنُ عَبَّاسٍ، فَقَالَ إِنِّي تَمَارَيْتُ أَنَا وَصَاحِبِي، هَذَا فِي صَاحِبِ مُوسَى الَّذِي سَأَلَ السَّبِيلَ إِلَى لُقِيِّهِ، هَلْ سَمِعْتَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَذْكُرُ شَأْنَهُ قَالَ نَعَمْ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ بَيْنَمَا مُوسَى فِي مَلإٍ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ جَاءَهُ رَجُلٌ، فَقَالَ هَلْ تَعْلَمُ أَحَدًا أَعْلَمَ مِنْكَ قَالَ لاَ‏.‏ فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَى مُوسَى بَلَى عَبْدُنَا خَضِرٌ‏.‏ فَسَأَلَ مُوسَى السَّبِيلَ إِلَيْهِ، فَجُعِلَ لَهُ الْحُوتُ آيَةً، وَقِيلَ لَهُ إِذَا فَقَدْتَ الْحُوتَ فَارْجِعْ، فَإِنَّكَ سَتَلْقَاهُ‏.‏ فَكَانَ يَتْبَعُ الْحُوتَ فِي الْبَحْرِ، فَقَالَ لِمُوسَى فَتَاهُ أَرَأَيْتَ إِذْ أَوَيْنَا إِلَى الصَّخْرَةِ، فَإِنِّي نَسِيتُ الْحُوتَ، وَمَا أَنْسَانِيهِ إِلاَّ الشَّيْطَانُ أَنْ أَذْكُرَهُ‏.‏ فَقَالَ مُوسَى ذَلِكَ مَا كُنَّا نَبْغِ‏.‏ فَارْتَدَّا عَلَى آثَارِهِمَا قَصَصًا فَوَجَدَا خَضِرًا، فَكَانَ مِنْ شَأْنِهِمَا الَّذِي قَصَّ اللَّهُ فِي كِتَابِهِ ‏”‏‏.‏

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি এবং হুর ইব্‌নু কাযেস ফাযারী মূসা (‘আঃ)-এর সাথীর ব্যাপারে বিতর্ক করছিলেন। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, তিনি হলেন, খাযির। এমনি সময় উবাই ইব্‌নু কা’ব (রাঃ) তাদের উভয়ের কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন, তখন ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) তাঁকে ডাকলেন এবং বললেন, আমি এবং আমার এ সাথী মূসা (‘আঃ)–এর সাথী সম্পর্কে বিতর্ক করছি, যাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য মূসা (‘আঃ) পথের সন্ধান চেয়েছিলেন। আপনি কি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –কে তাঁর ঘটনা বর্ণনা করতে শুনেছেন? তিনি বললেন, হাঁ। আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, মূসা (‘আঃ) বনী ইসরাঈলের এক সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। তখন তাঁর নিকট জনৈক ব্যক্তি আসল এবং জিজ্ঞেস করল, আপনি কি এমন কাউকে জানেন, যিনি আপনার চেয়ে অধিক জ্ঞানী? তিনি বললেন, না। তখন মূসা (‘আঃ)–এর প্রতি আল্লাহ্‌ ওহী পাঠিয়ে জানিয়ে দিলেন, হাঁ, আমার বান্দা খাযির। তখন মূসা (‘আঃ) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য পথের সন্ধান চেয়েছিলেন। তখন তাঁর জন্য একটি মাছ নিদর্শন হিসেবে ঠিক করে দেয়া হল এবং তাকে বলে দেয়া হল, যখন তুমি মাছটি হারাবে, তখন তুমি পিছনে ফিরে আসবে, তাহলেই তুমি তাঁর সাক্ষাৎ পাবে। তারপর মূসা (‘আঃ) নদীতে মাছের পিছে পিছে চলছিলেন, এমন সময় মূসা (‘আঃ) –কে তাঁর খাদিম বলে উঠল, “আপনি কি লক্ষ্য করেছেন। আমরা যখন ঐ পাথরটির নিকট অবস্থান করছিলাম, তখন আমি মাছটির কথা ভুলে গিয়েছিলাম। বস্তুতঃ তার হতে একমাত্র শয়তানই আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছিল”– (কাহ্‌ফ ৬৩)। মূসা (‘আঃ) বললেন, আমরা তো সে স্থানেরই খোঁজ করছিলাম। অতএব তাঁরা উভয়ে পিছনে ফিরে চললেন, এবং খাযিরের সাক্ষাৎ পেলেন- (কাহ্‌ফ ৬৪) তাঁদের উভয়েরই অবস্থার বর্ণনা ঠিক তাই যা আল্লাহ্‌ তাঁর কিতাবে বর্ণনা করেছেন।

৩৪০১
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ دِينَارٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ جُبَيْرٍ، قَالَ قُلْتُ لاِبْنِ عَبَّاسٍ إِنَّ نَوْفًا الْبَكَالِيَّ يَزْعُمُ أَنَّ مُوسَى صَاحِبَ الْخَضِرِ لَيْسَ هُوَ مُوسَى بَنِي إِسْرَائِيلَ، إِنَّمَا هُوَ مُوسَى آخَرُ‏.‏ فَقَالَ كَذَبَ عَدُوُّ اللَّهِ حَدَّثَنَا أُبَىُّ بْنُ كَعْبٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ أَنَّ مُوسَى قَامَ خَطِيبًا فِي بَنِي إِسْرَائِيلَ، فَسُئِلَ أَىُّ النَّاسِ أَعْلَمُ فَقَالَ أَنَا‏.‏ فَعَتَبَ اللَّهُ عَلَيْهِ إِذْ لَمْ يَرُدَّ الْعِلْمَ إِلَيْهِ‏.‏ فَقَالَ لَهُ بَلَى، لِي عَبْدٌ بِمَجْمَعِ الْبَحْرَيْنِ هُوَ أَعْلَمُ مِنْكَ‏.‏ قَالَ أَىْ رَبِّ وَمَنْ لِي بِهِ ـ وَرُبَّمَا قَالَ سُفْيَانُ أَىْ رَبِّ وَكَيْفَ لِي بِهِ ـ قَالَ تَأْخُذُ حُوتًا، فَتَجْعَلُهُ فِي مِكْتَلٍ، حَيْثُمَا فَقَدْتَ الْحُوتَ فَهْوَ ثَمَّ ـ وَرُبَّمَا قَالَ فَهْوَ ثَمَّهْ ـ وَأَخَذَ حُوتًا، فَجَعَلَهُ فِي مِكْتَلٍ، ثُمَّ انْطَلَقَ هُوَ وَفَتَاهُ يُوشَعُ بْنُ نُونٍ، حَتَّى أَتَيَا الصَّخْرَةَ، وَضَعَا رُءُوسَهُمَا فَرَقَدَ مُوسَى، وَاضْطَرَبَ الْحُوتُ فَخَرَجَ فَسَقَطَ فِي الْبَحْرِ، فَاتَّخَذَ سَبِيلَهُ فِي الْبَحْرِ سَرَبًا، فَأَمْسَكَ اللَّهُ عَنِ الْحُوتِ جِرْيَةَ الْمَاءِ، فَصَارَ مِثْلَ الطَّاقِ، فَقَالَ هَكَذَا مِثْلُ الطَّاقِ‏.‏ فَانْطَلَقَا يَمْشِيَانِ بَقِيَّةَ لَيْلَتِهِمَا وَيَوْمَهُمَا، حَتَّى إِذَا كَانَ مِنَ الْغَدِ قَالَ لِفَتَاهُ آتِنَا غَدَاءَنَا لَقَدْ لَقِينَا مِنْ سَفَرِنَا هَذَا نَصَبًا‏.‏ وَلَمْ يَجِدْ مُوسَى النَّصَبَ حَتَّى جَاوَزَ حَيْثُ أَمَرَهُ اللَّهُ‏.‏ قَالَ لَهُ فَتَاهُ أَرَأَيْتَ إِذْ أَوَيْنَا إِلَى الصَّخْرَةِ فَإِنِّي نَسِيتُ الْحُوتَ، وَمَا أَنْسَانِيهِ إِلاَّ الشَّيْطَانُ أَنْ أَذْكُرَهُ، وَاتَّخَذَ سَبِيلَهُ فِي الْبَحْرِ عَجَبًا، فَكَانَ لِلْحُوتِ سَرَبًا وَلَهُمَا عَجَبًا‏.‏ قَالَ لَهُ مُوسَى ذَلِكَ مَا كُنَّا نَبْغِي، فَارْتَدَّا عَلَى آثَارِهِمَا قَصَصًا، رَجَعَا يَقُصَّانِ آثَارَهُمَا حَتَّى انْتَهَيَا إِلَى الصَّخْرَةِ، فَإِذَا رَجُلٌ مُسَجًّى بِثَوْبٍ، فَسَلَّمَ مُوسَى، فَرَدَّ عَلَيْهِ‏.‏ فَقَالَ وَأَنَّى بِأَرْضِكَ السَّلاَمُ‏.‏ قَالَ أَنَا مُوسَى‏.‏ قَالَ مُوسَى بَنِي إِسْرَائِيلَ قَالَ نَعَمْ، أَتَيْتُكَ لِتُعَلِّمَنِي مِمَّا عُلِّمْتَ رَشَدًا‏.‏ قَالَ يَا مُوسَى إِنِّي عَلَى عِلْمٍ مِنْ عِلْمِ اللَّهِ، عَلَّمَنِيهِ اللَّهُ لاَ تَعْلَمُهُ وَأَنْتَ عَلَى عِلْمٍ مِنْ عِلْمِ اللَّهِ عَلَّمَكَهُ اللَّهُ لاَ أَعْلَمُهُ‏.‏ قَالَ هَلْ أَتَّبِعُكَ قَالَ ‏{‏إِنَّكَ لَنْ تَسْتَطِيعَ مَعِيَ صَبْرًا * وَكَيْفَ تَصْبِرُ عَلَى مَا لَمْ تُحِطْ بِهِ خُبْرًا‏}‏ إِلَى قَوْلِهِ ‏{‏إِمْرًا‏}‏ فَانْطَلَقَا يَمْشِيَانِ عَلَى سَاحِلِ الْبَحْرِ، فَمَرَّتْ بِهِمَا سَفِينَةٌ، كَلَّمُوهُمْ أَنْ يَحْمِلُوهُمْ، فَعَرَفُوا الْخَضِرَ، فَحَمَلُوهُ بِغَيْرِ نَوْلٍ، فَلَمَّا رَكِبَا فِي السَّفِينَةِ جَاءَ عُصْفُورٌ، فَوَقَعَ عَلَى حَرْفِ السَّفِينَةِ، فَنَقَرَ فِي الْبَحْرِ نَقْرَةً أَوْ نَقْرَتَيْنِ، قَالَ لَهُ الْخَضِرُ يَا مُوسَى، مَا نَقَصَ عِلْمِي وَعِلْمُكَ مِنْ عِلْمِ اللَّهِ إِلاَّ مِثْلَ مَا نَقَصَ هَذَا الْعُصْفُورُ بِمِنْقَارِهِ مِنَ الْبَحْرِ‏.‏ إِذْ أَخَذَ الْفَأْسَ فَنَزَعَ لَوْحًا، قَالَ فَلَمْ يَفْجَأْ مُوسَى إِلاَّ وَقَدْ قَلَعَ لَوْحًا بِالْقَدُّومِ‏.‏ فَقَالَ لَهُ مُوسَى مَا صَنَعْتَ قَوْمٌ حَمَلُونَا بِغَيْرِ نَوْلٍ، عَمَدْتَ إِلَى سَفِينَتِهِمْ فَخَرَقْتَهَا لِتُغْرِقَ أَهْلَهَا، لَقَدْ جِئْتَ شَيْئًا إِمْرًا‏.‏ قَالَ أَلَمْ أَقُلْ إِنَّكَ لَنْ تَسْتَطِيعَ مَعِيَ صَبْرًا‏.‏ قَالَ لاَ تُؤَاخِذْنِي بِمَا نَسِيتُ وَلاَ تُرْهِقْنِي مِنْ أَمْرِي عُسْرًا، فَكَانَتِ الأُولَى مِنْ مُوسَى نِسْيَانًا‏.‏ فَلَمَّا خَرَجَا مِنَ الْبَحْرِ مَرُّوا بِغُلاَمٍ يَلْعَبُ مَعَ الصِّبْيَانِ، فَأَخَذَ الْخَضِرُ بِرَأْسِهِ فَقَلَعَهُ بِيَدِهِ هَكَذَا ـ وَأَوْمَأَ سُفْيَانُ بِأَطْرَافِ أَصَابِعِهِ كَأَنَّهُ يَقْطِفُ شَيْئًا ـ فَقَالَ لَهُ مُوسَى أَقَتَلْتَ نَفْسًا زَكِيَّةً بِغَيْرِ نَفْسٍ لَقَدْ جِئْتَ شَيْئًا نُكْرًا‏.‏ قَالَ أَلَمْ أَقُلْ لَكَ إِنَّكَ لَنْ تَسْتَطِيعَ مَعِيَ صَبْرًا‏.‏ قَالَ إِنْ سَأَلْتُكَ عَنْ شَىْءٍ بَعْدَهَا فَلاَ تُصَاحِبْنِي، قَدْ بَلَغْتَ مِنْ لَدُنِّي عُذْرًا‏.‏ فَانْطَلَقَا حَتَّى إِذَا أَتَيَا أَهْلَ قَرْيَةٍ اسْتَطْعَمَا أَهْلَهَا فَأَبَوْا أَنْ يُضَيِّفُوهُمَا فَوَجَدَا فِيهَا جِدَارًا يُرِيدُ أَنْ يَنْقَضَّ مَائِلاً ـ أَوْمَأَ بِيَدِهِ هَكَذَا وَأَشَارَ سُفْيَانُ كَأَنَّهُ يَمْسَحُ شَيْئًا إِلَى فَوْقُ، فَلَمْ أَسْمَعْ سُفْيَانَ يَذْكُرُ مَائِلاً إِلاَّ مَرَّةً ـ قَالَ قَوْمٌ أَتَيْنَاهُمْ فَلَمْ يُطْعِمُونَا وَلَمْ يُضَيِّفُونَا عَمَدْتَ إِلَى حَائِطِهِمْ لَوْ شِئْتَ لاَتَّخَذْتَ عَلَيْهِ أَجْرًا‏.‏ قَالَ هَذَا فِرَاقُ بَيْنِي وَبَيْنِكَ، سَأُنَبِّئُكَ بِتَأْوِيلِ مَا لَمْ تَسْتَطِعْ عَلَيْهِ صَبْرًا‏”‏‏.‏ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ وَدِدْنَا أَنَّ مُوسَى كَانَ صَبَرَ، فَقَصَّ اللَّهُ عَلَيْنَا مِنْ خَبَرِهِمَا ‏”‏‏.‏ قَالَ سُفْيَانُ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ يَرْحَمُ اللَّهُ مُوسَى، لَوْ كَانَ صَبَرَ يُقَصُّ عَلَيْنَا مِنْ أَمْرِهِمَا ‏”‏‏.‏ وَقَرَأَ ابْنُ عَبَّاسٍ أَمَامَهُمْ مَلِكٌ يَأْخُذُ كُلَّ سَفِينَةٍ صَالِحَةٍ غَصْبًا، وَأَمَّا الْغُلاَمُ فَكَانَ كَافِرًا وَكَانَ أَبَوَاهُ مُؤْمِنَيْنِ‏.‏ ثُمَّ قَالَ لِي سُفْيَانُ سَمِعْتُهُ مِنْهُ مَرَّتَيْنِ وَحَفِظْتُهُ مِنْهُ‏.‏ قِيلَ لِسُفْيَانَ حَفِظْتَهُ قَبْلَ أَنْ تَسْمَعَهُ مِنْ عَمْرٍو، أَوْ تَحَفَّظْتَهُ مِنْ إِنْسَانٍ فَقَالَ مِمَّنْ أَتَحَفَّظُهُ وَرَوَاهُ أَحَدٌ عَنْ عَمْرٍو غَيْرِي سَمِعْتُهُ مِنْهُ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلاَثًا وَحَفِظْتُهُ مِنْهُ‏.‏

সা‘ঈদ ইব্‌নু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে বললাম, নাওফল বিক্কালী ধারণা করছে যে, খাযিরের সঙ্গী মূসা বনী ইসরাঈলের নবী‎ মূসা (‘আঃ) নন; নিশ্চয়ই তিনি অপর কোন মূসা। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ্‌র দুশমন মিথ্যা কথা বলেছে। উবাই ইব্‌নু কা‘ব (রাঃ) নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে, একবার মূসা (‘আঃ) বনী ইসরাঈলের এক সমাবেশে ভাষণ দেয়ার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। তখন তাঁকে জিজ্ঞেস করা হল, কোন্‌ ব্যক্তি সবচেয় অধিক জ্ঞানী? তিনি বললেন, আমি। মূসা (‘আঃ)–এর এ উত্তরে আল্লাহ্‌ তাঁর প্রতি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করলেন। কেননা তিনি জ্ঞানকে আল্লাহ্‌র দিকে সম্পর্কিত করেননি। আল্লাহ্‌ তাঁকে বললেন, বরং দুই নদীর সংযোগ স্থলে আমার একজন বান্দা আছে, সে তোমার চেয়ে অধিক জ্ঞানী। মূসা (‘আঃ) আরয করলেন, হে আমার রব! তাঁর নিকট পৌছতে কে আমাকে সাহায্য করবে? কখনও সুফিয়ান এভাবে বর্ণনা করেছেন, হে আমার রব! আমি তাঁর সঙ্গে কিভাবে সাক্ষাৎ করব? আল্লাহ্‌ বললেন, তুমি একটি মাছ ধর এবং তা একটি থলের মধ্যে ভরে রাখ। যেখানে গিয়ে তুমি মাছটি হারিয়ে ফেলবে সেখানেই তিনি অবস্থান করছেন। অতঃপর মূসা (‘আঃ) একটি মাছ ধরলেন এবং থলের মধ্যে ভরে রাখলেন। অতঃপর তিনি এবং তাঁর সাথী ইউশা ইব্‌নু নূন চলতে লাগলেন অবশেষে তাঁরা উভয়ে একটি পাথরের নিকট এসে পৌঁছে তার উপরে মাথা রেখে বিশ্রাম করলেন। এ সময় মূসা (‘আঃ) ঘুমিয়ে পড়লেন আর মাছটি নড়াচড়া করতে করতে থলে হতে বের হয়ে নদীতে চলে গেল। অতঃপর সে নদীতে সুড়ঙ্গ আকারে স্বীয় পথ করে নিল আর আল্লাহ্‌ মাছটির চলার পথে পানির গতি স্তব্ধ করে দিলেন। ফলে তার গমন পথটি সুড়ঙ্গের মত হয়ে গেল। এ সময় নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাতের ইঙ্গিত করে বললেন, এভাবে সুড়ঙ্গের মত হয়েছিল। অতঃপর তাঁরা উভয়ে অবশিষ্ট রাত এবং পুরো দিন পথ চললেন। শেষে যখন পরের দিন ভোর হল তখন মূসা (‘আঃ) তাঁর যুবক সঙ্গীকে বললেন, আমার সকালের খাবার আন। আমি এ সফরে খুব ক্লান্তিবোধ করছি। বস্তুতঃ মূসা (‘আঃ) যে পর্যন্ত আল্লাহ্‌র নির্দেশিত স্থানটি অতিক্রম না করেছেন সে পর্যন্ত তিনি সফরে কোন ক্রান্তিই অনুভব করেননি। তখন তাঁর সঙ্গী তাঁকে বললেন, আপনি কি লক্ষ্য করেছেন, আমরা যখন সেই পাথরটির নিকট বিশ্রাম নিয়েছিলাম মাছটি চলে যাবার কথা বলতে আমি একেবারেই ভুলে গেছি। আসলে আপনার নিকট তা উল্লেখ করতে একমাত্র শয়তানই আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছে। মাছটি নদীতে আশ্চর্যজনকভাবে নিজের রাস্তা করে নিয়েছে। (রাবী বলেন) পথটি মাছের জন্য ছিল একটি সুড়ঙ্গের মত আর তাঁদের জন্য ছিল একটি আশ্চর্যজনক ব্যাপার। মূসা (‘আঃ) তাকে বললেন, ওটাইতো সেই স্থান যা আমরা খুঁজে বেড়াচ্ছি। অতঃপর উভয়ে নিজ নিজ পদচিহ্ন ধরে পিছনের দিকে ফিরে চললেন, শেষ পর্যন্ত তাঁরা দু’জনে সেই পাথরটির নিকট এসে পৌঁছালেন এবং দেখলেন সেখানে জনৈক ব্যক্তি বস্ত্রাবৃত হয়ে আছেন। মূসা (‘আঃ) তাঁকে সালাম করলেন। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বললেন, এখানে সালাম কী করে এলো? তিনি বললেন, আমি মূসা। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি বনী ইসরাঈলের মূসা? তিনি বললেন, হাঁ, আমি আপনার নিকট এসেছি, সরল সঠিক জ্ঞানের ঐ সব কথাগুলো শিখার জন্যে যা আপনাকে শিখানো হয়েছে। তিনি বললেন, হে মূসা! আমার আল্লাহ্‌র দেয়া কিছু জ্ঞান আছে যা আল্লাহ্‌ আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন, আপনি তা জানেন। আর আপনারও আল্লাহ্‌ প্রদত্ত কিছু জ্ঞান আছে যা আল্লাহ্‌ আপনাকে শিখিয়েছেন, আমি তা জানি না। মূসা (‘আঃ) বললেন, আমি কি আপনার সাথী হতে পারি? খাযির (‘আঃ) বললেন, আপনি আমার সঙ্গে থেকে ধৈর্য ধারণ করতে পারবেন না আর আপনি এমন বিষয়ে ধৈর্য রাখবেন কী করে, যার রহস্য আপনার জানা নেই? মূসা (‘আঃ) বললেন, ইন্‌ শা আল্লাহ্‌ আপনি আমাকে একজন ধৈর্যশীল হিসেবে দেখতে পাবেন। আমি আপনার কোন আদেশই অমান্য করব না। অতঃপর তাঁরা দু’জনে রওয়ানা হয়ে নদীর তীর দিয়ে চলতে লাগলেন। এমন সময় একটি নৌকা তাঁদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। তারা তাদেরকেও নৌকায় উঠিয়ে নিতে অনুরোধ করলেন। তারা খাযির (‘আঃ) –কে চিনে ফেললেন এবং তারা তাঁকে তাঁর সঙ্গীসহ পারিশ্রমিক ছাড়াই নৌকায় তুলে নিল। তারা দু’জন যখন নৌকায় উঠলেন, তখন একটি চড়ুই পাখি এসে নৌকাটির এক পাশে বসল এবং একবার কি দু’বার পানিতে ঠোঁট ডুবাল। খাযির (‘আঃ) বললেন, হে মূসা (‘আঃ)! আমার ও তোমার জ্ঞানের দ্বারা আল্লাহ্‌র জ্ঞান হতে ততটুকুও কমেনি যতটুকু এ পাখিটি তার ঠোঁটের দ্বারা নদীর পানি হ্রাস করেছে। অতঃপর খাযির (‘আঃ) হঠাৎ একটি কুঠার নিয়ে নৌকাটির একটি তক্তা খুলে ফেললেন, মূসা (‘আঃ) অকস্মাৎ দৃষ্টি দিতেই দেখতে পেলেন তিনি কুঠার দিয়ে একটি তক্তা খুলে ফেলেছেন। তখন তাঁকে তিনি বললেন, আপনি এ কী করলেন? লোকেরা আমাদের মজুরি ছাড়া নৌকায় তুলে নিল, আর আপনি তাদের নৌকার যাত্রীদেরকে ডুবিয়ে দেয়ার জন্য নৌকাটি ফুটো করে দিলেন? এতো আপনি একটি গুরুতর কাজ করলেন। খাযির (‘আঃ) বললেন, আমি কি বলিনি যে, আপনি কখনও আমার সঙ্গে ধৈর্যধারণ করতে পারবেন না? মূসা (‘আঃ) বললেন, আমি যে বিষয়টি ভুলে গেছি, তার জন্য আমাকে দোষারোপ করবেন না। আর আমার এ ব্যবহারে আমার প্রতি কঠোর হবেন না। মূসা (‘আঃ)–এর পক্ষ হতে প্রথম এই কথাটি ছিল ভুলক্রমে। অতঃপর যখন তাঁরা উভয়ে নদী পার হয়ে আসলেন, তখন তাঁরা একটি বালকের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন সে অন্যান্য বালকদের সাথে খেলছিল। খাযির (‘আঃ) তার মাথা ধরলেন এবং নিজ হাতে তার ঘাড় আলাদা করে ফেললেন। এ কথাটি বুঝানোর জন্য সুফিয়ান (রহঃ) তাঁর হাতের আঙ্গুলগুলোর অগ্রভাগ দ্বারা এমনভাবে ইঙ্গিত করলেন যেন তিনি কোন জিনিস ছিঁড়ে নিচ্ছিলেন। এতে মূসা (‘আঃ) তাঁকে বললেন, আপনি একটি নিষ্পাপ বালককে বিনা অপরাধে হত্যা করলেন? নিশ্চয়ই আপনি একটি অন্যায় কাজ করলেন। খাযির (‘আঃ) বললেন, আমি কি আপনাকে বলিনি যে আপনি আমার সঙ্গে ধৈর্য ধরতে পারবেন না? মূসা (‘আঃ) বললেন, অতঃপর যদি আমি আপনাকে আর কোন বিষয়ে জিজ্ঞেস করি তাহলে আপনি আমাকে আর আপনার সাথে রাখবেন না। কেননা আপনার উযর আপত্তি চূড়ান্ত হয়েছে। অতঃপর তাঁরা চলতে লাগলেন শেষ অবধি তাঁরা এক জনপদে এসে পৌঁছলেন। তাঁরা গ্রামবাসীদের নিকট খাবার চাইলেন। কিন্তু তারা তাঁদের আতিথ্য করতে অস্বীকার করল। অতঃপর তাঁরা সেখানেই একটি দেয়াল দেখতে পেলেন যা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছিল। তা একদিকে ঝুঁকে গিয়েছিল। খাযির (‘আঃ) তা নিজের হাতে সোজা করে দিলেন। রাবী আপন হাতে এভাবে ইঙ্গিত করলেন। আর সুফিয়ান (রহঃ) এমনিভাবে ইঙ্গিত করলেন যেন তিনি কোন জিনিস উপরের দিকে উঁচু করে দিচ্ছেন। “ঝুঁকে পড়েছে” এ কথাটি আমি সুফিয়ানকে মাত্র একবার বলতে শুনেছি। মূসা (‘আঃ) বললেন, তারা এমন মানুষ যে , আমরা তাদের নিকট আসলাম, তারা আমাদেরকে না খাবার দিল, না আমাদের আতিথ্য করল আর আপনি এদের দেয়াল সোজা করতে গেলেন। আপনি ইচ্ছা করলে এর বদলে মজুরি গ্রহণ করতে পারতেন। খাযির (‘আঃ) বললেন, এখানেই আপনার ও আমার মধ্যে বিচ্ছেদ হল। তবে এখনই আমি আপনাকে জ্ঞাত করছি ওসব কথার রহস্য, যেসব বিষয়ে আপনি ধৈর্য ধরতে পারেননি। নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমাদেরতো ইচ্ছা যে, মূসা (‘আঃ) ধৈর্য ধরলে আমাদের নিকট তাঁদের আরো আনেক অধিক খবর বর্ণনা করা হতো। সুফিয়ান (রহঃ) বর্ণনা করেন নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আল্লাহ্‌ মূসা (‘আঃ)–এর উপর রহমত বর্ষণ করুন। তিনি যদি ধৈর্য ধরতেন, তাহলে তাদের উভয়ের ব্যাপারে আমাদের নিকট আরো অনেক ঘটনা জানানো হতো। রাবী বলেন, ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) এখানে পড়েছেন, তাদের সামনে একজন বাদশাহ ছিল, সে প্রতিটি নিখুঁত নৌকা জোর করে ছিনিয়ে নিত। আর সে ছেলেটি ছিল কাফির, তার পিতা-মাতা ছিলেন মুমিন। অতঃপর সুফিয়ান (রহঃ) আমাকে বলেছেন, আমি এ হাদীসটি তাঁর (‘আমর ইব্‌নু দীনার) হতে দু’বার শুনেছি এবং তাঁর নিকট হতেই মুখস্ত করেছি। সুফিয়ান (রহঃ) –কে জিজ্ঞেস করা হলো, আপনি কি ‘আমর ইব্‌নু দীনার (রহঃ) হতে শুনার পূর্বেই তা মুখস্ত করেছেন না অপর কোন লোকের নিকট শুনে তা মুখস্ত করেছেন? তিনি বললেন, আমি কার নিকট হতে তা মুখস্ত করতে পারি? আমি ব্যতীত আর কেউ কি এ হাদীস আমরের নিকট হতে বর্ণনা করেছেন? আমি তাঁর নিকট হতে শুনেছি দুইবার কি তিনবার। আর তাঁর থেকেই তা মুখস্ত করেছি। ‘আলী ইব্‌নু খুশরম (রহঃ) সুফিয়ান (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত দীর্ঘ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

৩৪০২
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَعِيدٍ الأَصْبَهَانِيُّ، أَخْبَرَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ إِنَّمَا سُمِّيَ الْخَضِرُ أَنَّهُ جَلَسَ عَلَى فَرْوَةٍ بَيْضَاءَ فَإِذَا هِيَ تَهْتَزُّ مِنْ خَلْفِهِ خَضْرَاءَ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, খাযির (‘আঃ) –কে খাযির নামে আখ্যায়িত করার কারণ এই যে, একদা তিনি ঘাস-পাতা বিহীন শুকনো সাদা জায়গায় বসেছিলেন। সেখান হতে তাঁর উঠে যাবার পরই হঠাৎ ঐ জায়গাটি সবুজ হয়ে গেল।

৬০/২৮. অধ্যায়ঃ
৬০/২৮. অধ্যায়ঃ

৩৪০৩
حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ نَصْرٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، أَنَّهُ سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ قِيلَ لِبَنِي إِسْرَائِيلَ ادْخُلُوا الْبَابَ سُجَّدًا وَقُولُوا حِطَّةٌ‏.‏ فَبَدَّلُوا فَدَخَلُوا يَزْحَفُونَ عَلَى أَسْتَاهِهِمْ، وَقَالُوا حَبَّةٌ فِي شَعْرَةٍ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, বনী ইসরাঈলকে আদেশ দেয়া হয়েছিল, “তোমরা দরজা দিয়ে অবনত মস্তকে প্রবেশ কর আর মুখে বল, ‘হিত্তাতুন’ (অর্থাৎ হে আল্লাহ্‌! আমাদের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দাও।)” (আল-বাকারা: ৫৮) কিন্তু তারা এ শব্দটি পরিবর্তন করে ফেলল এবং প্রবেশ দ্বারে যেন নতজানু হতে না হয় সে জন্য তারা নিজ নিজ নিতম্বের ওপর ভর দিয়ে শহরে প্রবেশ করল আর মুখে বলল, ‘হাব্বাতুন্‌ ফী শা‘আরাতিন” (অর্থাৎ হে আল্লাহ্‌! আমাদেরকে যবের দানা দাও।)

৩৪০৪
حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، حَدَّثَنَا عَوْفٌ، عَنِ الْحَسَنِ، وَمُحَمَّدٍ، وَخِلاَسٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ إِنَّ مُوسَى كَانَ رَجُلاً حَيِيًّا سِتِّيرًا، لاَ يُرَى مِنْ جِلْدِهِ شَىْءٌ، اسْتِحْيَاءً مِنْهُ، فَآذَاهُ مَنْ آذَاهُ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ، فَقَالُوا مَا يَسْتَتِرُ هَذَا التَّسَتُّرَ إِلاَّ مِنْ عَيْبٍ بِجِلْدِهِ، إِمَّا بَرَصٌ وَإِمَّا أُدْرَةٌ وَإِمَّا آفَةٌ‏.‏ وَإِنَّ اللَّهَ أَرَادَ أَنْ يُبَرِّئَهُ مِمَّا قَالُوا لِمُوسَى فَخَلاَ يَوْمًا وَحْدَهُ فَوَضَعَ ثِيَابَهُ عَلَى الْحَجَرِ ثُمَّ اغْتَسَلَ، فَلَمَّا فَرَغَ أَقْبَلَ إِلَى ثِيَابِهِ لِيَأْخُذَهَا، وَإِنَّ الْحَجَرَ عَدَا بِثَوْبِهِ، فَأَخَذَ مُوسَى عَصَاهُ وَطَلَبَ الْحَجَرَ، فَجَعَلَ يَقُولُ ثَوْبِي حَجَرُ، ثَوْبِي حَجَرُ، حَتَّى انْتَهَى إِلَى مَلإٍ مِنْ بَنِي إِسْرَائِيلَ، فَرَأَوْهُ عُرْيَانًا أَحْسَنَ مَا خَلَقَ اللَّهُ، وَأَبْرَأَهُ مِمَّا يَقُولُونَ، وَقَامَ الْحَجَرُ فَأَخَذَ ثَوْبَهُ فَلَبِسَهُ، وَطَفِقَ بِالْحَجَرِ ضَرْبًا بِعَصَاهُ، فَوَاللَّهِ إِنَّ بِالْحَجَرِ لَنَدَبًا مِنْ أَثَرِ ضَرْبِهِ ثَلاَثًا أَوْ أَرْبَعًا أَوْ خَمْسًا، فَذَلِكَ قَوْلُهُ ‏{‏يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَكُونُوا كَالَّذِينَ آذَوْا مُوسَى فَبَرَّأَهُ اللَّهُ مِمَّا قَالُوا وَكَانَ عِنْدَ اللَّهِ وَجِيهًا‏}‏‏.‏‏”‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মূসা (‘আঃ) অত্যন্ত লজ্জাশীল ছিলেন, সব সময় শরীর ঢেকে রাখতেন। তাঁর দেহের কোন অংশ খোলা দেখা যেত না, তা থেকে তিনি লজ্জাবোধ করতেন। বনী ইসরাঈলের কিছু লোক তাঁকে খুব কষ্ট দিত। তারা বলত, তিনি যে শরীরকে এত অধিক ঢেকে রাখেন, তার একমাত্র কারণ হলো, তাঁর শরীরের কোন দোষ আছে। হয়ত শ্বেত রোগ অথবা একশিরা বা অন্য কোন রোগ আছে। আল্লাহ্‌ তা‘আলা ইচ্ছা করলেন মূসা (‘আঃ) সম্পর্কে তারা যে অপবাদ ছড়িয়েছে তা হতে তাঁকে মুক্ত করবেন। অতঃপর একদিন নিরালায় গিয়ে তিনি একাকী হলেন এবং তাঁর পরণের কাপড় খুলে একটি পাথরের ওপর রাখলেন, অতঃপর গোসল করলেন, গোসল সেরে যেমনই তিনি কাপড় নেয়ার জন্য সেদিকে এগিয়ে গেলেন তাঁর কাপড়সহ পাথরটি ছুটে চলল। অতঃপর মূসা (‘আঃ) তাঁর লাঠিটি হাতে নিয়ে পাথরটির পিছনে পিছনে ছুটলেন। তিনি বলতে লাগলেন, আমার কাপড় হে পাথর! হে পাথর! শেষে কাপড়টি বনী ইসরাঈলের একটি জন সমাবেশে গিয়ে পৌঁছল। তখন তারা মূসা (‘আঃ) –কে বস্ত্রহীন অবস্থায় দেখল যে তিনি আল্লাহ্‌র সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে সৌন্দর্যে ভরপুর এবং তারা তাঁকে যে অপবাদ দিয়েছিল সে সব দোষ হতে তিনি পুরোপুরি মুক্ত। আর পাথরটি থামল, তখন মূসা (‘আঃ) তাঁর কাপড় নিয়ে পরলেন এবং তাঁর হাতের লাঠি দিয়ে পাথরটিকে জোরে জোরে আঘাত করতে লাগলেন। আল্লাহ্‌র কসম! এতে পাথরটিতে তিন, চার, কিংবা পাঁচটি আঘাতের দাগ পড়ে গেল। আর এটিই হলো আল্লাহ্‌র এ বাণীর মর্ম: “হে মুমিনগণ! তোমরা তাদের মত হয়ো না যারা মূসা (‘আঃ)–কে কষ্ট দিয়েছিল। অতঃপর আল্লাহ্‌ তাঁকে নির্দোষ প্রমাণিত করেন তা হতে যা তারা রটিয়েছিল। আর তিনি ছিলেন আল্লাহ্‌র নিকট মর্যাদার অধিকারী।” (আল-আহযাব: ৬৯)

৩৪০৫
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا وَائِلٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَبْدَ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَسَمَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَسْمًا، فَقَالَ رَجُلٌ إِنَّ هَذِهِ لَقِسْمَةٌ مَا أُرِيدَ بِهَا وَجْهُ اللَّهِ‏.‏ فَأَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْتُهُ، فَغَضِبَ حَتَّى رَأَيْتُ الْغَضَبَ فِي وَجْهِهِ، ثُمَّ قَالَ ‏ “‏ يَرْحَمُ اللَّهُ مُوسَى قَدْ أُوذِيَ بِأَكْثَرَ مِنْ هَذَا فَصَبَرَ ‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদা কিছু জিনিস বণ্টন করেন। তখন এক ব্যক্তি বলল, এতো এমন ধরনের বণ্টন যা আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করা হয়নি। অতঃপর আমি নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আসলাম এবং তাঁকে বিষয়টি জানালাম। তিনি খুবই অসন্তুষ্ট হলেন, এমনকি তাঁর চেহারায় আমি অসন্তুষ্টির ভাব লক্ষ্য করলাম। অতঃপর তিনি বললেন, আল্লাহ্‌ মূসা (‘আঃ)–এর প্রতি রহম করুন তাঁকে এর চেয়ে অনেক বেশি কষ্ট দেয়া হয়েছিল, তবুও তিনি ধৈর্য অবলম্বন করেছিলেন।

৬০/২৯. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণী: তারা প্রতিমা পূজায় রত এক জাতির নিকট হাজির হয়। (আ’রাফ: ১৩৮)

—- অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত —- অর্থ যেন তারা ধ্বংস হয় —– অর্থ যা অধিকারে এনেছিল।

৩৪০৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَجْنِي الْكَبَاثَ، وَإِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ عَلَيْكُمْ بِالأَسْوَدِ مِنْهُ، فَإِنَّهُ أَطْيَبُهُ ‏”‏‏.‏ قَالُوا أَكُنْتَ تَرْعَى الْغَنَمَ قَالَ ‏”‏ وَهَلْ مِنْ نَبِيٍّ إِلاَّ وَقَدْ رَعَاهَا ‏”‏‏.‏

জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর সঙ্গে ‘কাবাস’ (পিলু) গাছের পাকা ফল বেছে বেছে নিচ্ছিলাম। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এর মধ্যে কালোগুলো নেয়াই তোমাদের উচিত। কেননা এগুলোই অধিক সুস্বাদু। সাহাবীগণ বললেন, আপনি কি ছাগল চরিয়েছিলে? তিনি বললেন, প্রত্যেক নবী‎ই তা চরিয়েছেন।

৬০/৩০. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণী: স্মরণ কর, যখন মূসা তাঁর সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ আল্লাহ তোমাদের একটি গরু যবেহ করতে আদেশ দিয়েছেন। (আল-বাকারাহ্‌: ৬৭)

আবুল ‘আলিয়াহ (রহ.) বলেন , —- বুড়ো ও বাছুর উভয়ের মাঝামাঝি, —- উজ্জ্বল গাঢ়। —- অর্থ , যা কাজে ব্যবহূত হয় নাই। ——– জমি চাষে অর্থাৎ গাভীটি এমন যা ভূমি কর্ষণে ও চাষের কাজে ব্যবহূত হয়নি। —- যা সকল ত্রুটি ও খুঁত মুক্ত। —- কোন দাগ নেই। হলুদ ও সাদা বর্ণের। তুমি ইচ্ছা করলে কালোও বলতে পারো। আরও বলা হয় এর অর্থ হলুদ বর্ণের। যেমন মহান আল্লাহর বাণী: ——— পীতবর্ণের উটসমূহ। ——— তোমরা পরস্পর মত বিরোধ করেছিলে।

৬০/৩১. অধ্যায়ঃ
মূসা (‘আঃ)–এর মৃত্যু ও তৎপরবর্তী অবস্থার বর্ণনা।

৩৪০৭
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ مُوسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ ابْنِ طَاوُسٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ أُرْسِلَ مَلَكُ الْمَوْتِ إِلَى مُوسَى ـ عَلَيْهِمَا السَّلاَمُ ـ فَلَمَّا جَاءَهُ صَكَّهُ، فَرَجَعَ إِلَى رَبِّهِ، فَقَالَ أَرْسَلْتَنِي إِلَى عَبْدٍ لاَ يُرِيدُ الْمَوْتَ‏.‏ قَالَ ارْجِعْ إِلَيْهِ، فَقُلْ لَهُ يَضَعُ يَدَهُ عَلَى مَتْنِ ثَوْرٍ، فَلَهُ بِمَا غَطَّتْ يَدُهُ بِكُلِّ شَعَرَةٍ سَنَةٌ‏.‏ قَالَ أَىْ رَبِّ، ثُمَّ مَاذَا قَالَ ثُمَّ الْمَوْتُ‏.‏ قَالَ فَالآنَ‏.‏ قَالَ فَسَأَلَ اللَّهَ أَنْ يُدْنِيَهُ مِنَ الأَرْضِ الْمُقَدَّسَةِ رَمْيَةً بِحَجَرٍ‏.‏ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لَوْ كُنْتُ ثَمَّ لأَرَيْتُكُمْ قَبْرَهُ إِلَى جَانِبِ الطَّرِيقِ تَحْتَ الْكَثِيبِ الأَحْمَرِ ‏”‏‏.‏ قَالَ وَأَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ عَنْ هَمَّامٍ حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মালাকুল মাওতকে মূসা (‘আঃ)–এর নিকট তাঁর জন্য পাঠান হয়েছিল। ফেরেশতা যখন তাঁর নিকট আসলেন, তিনি তাঁর চোখে চপেটাঘাত করলেন। তখন ফেরেশতা তাঁর রবের নিকট ফিরে গেলেন এবং বললেন, আপনি আমাকে এমন এক বান্দার নিকট পাঠিয়েছেন যে মরতে চায় না। আল্লাহ্‌ বললেন, তুমি তার নিকট ফিরে যাও এবং তাকে বল সে যেন তার একটি হাত গরুর পিঠে রাখে, তার হাত যতগুলো পশম ঢাকবে তার প্রতিটি পশমের বদলে তাকে এক বছর করে জীবন দেয়া হবে। মূসা (‘আঃ) বললেন, হে রব! অতঃপর কী হবে? আল্লাহ্‌ বললেন, অতঃপর মৃত্যু। মূসা (‘আঃ) বললেন, তাহলে এখনই হোক। (রাবী) বলেন, তখন তিনি আল্লাহ্‌র নিকট আরয করলেন, তাঁকে যেন ‘আরদে মুকাদ্দাস’ হতে একটি পাথর নিক্ষেপের দূরত্বের সমান স্থানে পৌঁছে দেয়া হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমি যদি সেখানে থাকতাম তাহলে অবশ্যই আমি তোমাদেরকে পথের ধারে লাল টিলার নীচে তাঁর কবরটি দেখিয়ে দিতাম। রাবী আব্দুর রায্‌যাক বলেন, মা‘মার (রহঃ) …… আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে একইভাবে বর্ণনা করেছেন।

৩৪০৮
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، وَسَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ اسْتَبَّ رَجُلٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ وَرَجُلٌ مِنَ الْيَهُودِ‏.‏ فَقَالَ الْمُسْلِمُ وَالَّذِي اصْطَفَى مُحَمَّدًا صلى الله عليه وسلم عَلَى الْعَالَمِينَ‏.‏ فِي قَسَمٍ يُقْسِمُ بِهِ‏.‏ فَقَالَ الْيَهُودِيُّ وَالَّذِي اصْطَفَى مُوسَى عَلَى الْعَالَمِينَ‏.‏ فَرَفَعَ الْمُسْلِمُ عِنْدَ ذَلِكَ يَدَهُ، فَلَطَمَ الْيَهُودِيَّ، فَذَهَبَ الْيَهُودِيُّ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَهُ الَّذِي كَانَ مِنْ أَمْرِهِ وَأَمْرِ الْمُسْلِمِ فَقَالَ ‏ “‏ لاَ تُخَيِّرُونِي عَلَى مُوسَى، فَإِنَّ النَّاسَ يَصْعَقُونَ فَأَكُونُ أَوَّلَ مَنْ يُفِيقُ، فَإِذَا مُوسَى بَاطِشٌ بِجَانِبِ الْعَرْشِ، فَلاَ أَدْرِي أَكَانَ فِيمَنْ صَعِقَ فَأَفَاقَ قَبْلِي أَوْ كَانَ مِمَّنِ اسْتَثْنَى اللَّهُ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একজন মুসলিম আর একজন ইয়াহূদী পরস্পরকে গালি দিল। মুসলিম ব্যক্তি বললেন, সেই সত্তার কসম! যিনি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে তামাম জগতের উপর মনোনীত করেছেন। কসম করার সময় তিনি একথাটি বলেছেন। তখন ইয়াহূদী লোকটিও বলল, ঐ সত্তার কসম! যিনি মূসা (‘আঃ) –কে তামাম জগতের উপর মনোনীত করেছেন। তখন সেই মুসলিম সাহাবী সে সময় তার হাত উঠিয়ে ইয়াহূদীকে একটি চড় মারলেন। তখন সে ইয়াহূদী নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকট গেল এবং ঘটনাটি জানালো যা তার ও মুসলিম সাহাবীর মধ্যে ঘটেছিল। তখন নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তোমরা আমাকে মূসা (‘আঃ)–এর উপর বেশি মর্যাদা দিওনা। সকল মানুষ বেহুশ হয়ে যাবে। আর আমিই সর্বপ্রথম হুশ ফিরে পাব। তখনই আমি মূসা (‘আঃ) –কে দেখব, তিনি আরশের একপাশ ধরে রয়েছেন। আমি জানি না, যারা বেহুঁশ হয়েছিল, তিনিও কি তাদের অন্তর্ভুক্ত অতঃপর আমার আগে তাঁর হুশ এসে গেছে? কিংবা তিনি তাদেরই একজন, যাঁদেরকে আল্লাহ্‌ বেহুঁশ হওয়া থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন।

৩৪০৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ حُمَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ احْتَجَّ آدَمُ وَمُوسَى فَقَالَ لَهُ مُوسَى أَنْتَ آدَمُ الَّذِي أَخْرَجَتْكَ خَطِيئَتُكَ مِنَ الْجَنَّةِ‏.‏ فَقَالَ لَهُ آدَمُ أَنْتَ مُوسَى الَّذِي اصْطَفَاكَ اللَّهُ بِرِسَالاَتِهِ وَبِكَلاَمِهِ، ثُمَّ تَلُومُنِي عَلَى أَمْرٍ قُدِّرَ عَلَىَّ قَبْلَ أَنْ أُخْلَقَ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ فَحَجَّ آدَمُ مُوسَى ‏”‏ مَرَّتَيْنِ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আদম (‘আঃ) ও মূসা (‘আঃ) তর্ক-বিতর্ক করছিলেন। তখন মূসা (‘আঃ) তাঁকে বলছিলেন, আপনি সেই আদম যে আপনার ভুল আপনাকে বেহেশত হতে বের করে দিয়েছিল। আদম (‘আঃ) তাঁকে বললেন, আপনি কি সেই মূসা যে, আপনাকে আল্লাহ্‌ তাঁর রিসালাত দান এবং বাক্যালাপ দ্বারা সম্মানিত করেছিলেন। অতঃপরও আপনি আমাকে এমন বিষয়ে দোষী করছেন, যা আমার সৃষ্টির আগেই আমার জন্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু’বার বলেছেন, এ বিতর্কে আদম (‘আঃ) মূসা (‘আঃ)–এর ওপর বিজয়ী হন।

৩৪১০
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا حُصَيْنُ بْنُ نُمَيْرٍ، عَنْ حُصَيْنِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ خَرَجَ عَلَيْنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا قَالَ ‏ “‏ عُرِضَتْ عَلَىَّ الأُمَمُ، وَرَأَيْتُ سَوَادًا كَثِيرًا سَدَّ الأُفُقَ فَقِيلَ هَذَا مُوسَى فِي قَوْمِهِ

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের সামনে আসলেন এবং বললেন, আমার নিকট সকল নবী‎র উম্মতকে পেশ করা হয়েছিল। তখন আমি একটি বিরাট দল দেখলাম, যা দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত আবৃত করে ফেলেছিল। তখন বলা হলো, ইনি হলেন মূসা (‘আঃ) তাঁর কওমের মাঝে।

৬০/৩২. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণী: আর আল্লাহ্‌ মু‘মিনদের জন্য দৃষ্টান্ত পেশ করেছেন ফির‘আউনের স্ত্রীর। আর সে ছিল বিনয়ী ইবাদাতকারীদের অন্তর্ভুক্ত। ( আত্‌ তাহ্‌রীম: ১১-১২)

৩৪১১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ مُرَّةَ، عَنْ مُرَّةَ الْهَمْدَانِيِّ، عَنْ أَبِي مُوسَى ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ كَمَلَ مِنَ الرِّجَالِ كَثِيرٌ، وَلَمْ يَكْمُلْ مِنَ النِّسَاءِ إِلاَّ آسِيَةُ امْرَأَةُ فِرْعَوْنَ، وَمَرْيَمُ بِنْتُ عِمْرَانَ، وَإِنَّ فَضْلَ عَائِشَةَ عَلَى النِّسَاءِ كَفَضْلِ الثَّرِيدِ عَلَى سَائِرِ الطَّعَامِ ‏”‏‏.‏

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, পুরুষদের মধ্যে অনেকেই পূর্ণতা অর্জন করেছেন। কিন্তু মহিলাদের মধ্যে ফির‘আউনের স্ত্রী আসিয়া এবং ইমরানের কন্যা মারইয়াম ব্যতীত আর কেউ পূর্ণতা অর্জনে সক্ষম হয়নি। তবে ‘আয়িশার মর্যাদা সব মহিলার উপর এমন, যেমন সারীদের (গোশতের সুরুয়ায় ভিজা রুটির) মর্যাদা সকল প্রকার খাদ্যের উপর।

৬০/৩৩. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণী: নিশ্চয়ই কারূন ছিল মূসা (‘আঃ)–এর সম্প্রদায় ভুক্ত।… (আল-কাসাস: ৭৬)

—- অর্থ অবশ্যই কষ্টসাধ্য ছিল। ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, —- অর্থ একদল বলবান লোকও তাঁর চাবিগুলো বহন করতে পারতো না। বলা হয় —- অর্থ দাম্ভিক লোকগুলো। —- হচ্ছে —- এর মত, অর্থ তুমি দেখলেতো, আল্লাহ্‌ যাকে ইচ্ছা রিয্‌ক বেশি করে দেন, আর যাকে ইচ্ছা কম করে দেন …। (লুকমান: ৩৭)

৬০/৩৪. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণী: মাদইয়ান বাসীদের প্রতি তাদের ভাই শু‘আইবকে পাঠিয়েছিলাম। (আ‘রাফ: ৮৫, হুদ: ৪৮ ও ‘আনকাবূত: ৩৬)

——— অর্থাৎ মাদ্‌ইয়ানবাসীদের প্রতি। কেননা মাদ্‌ইয়ান একটি জনপদ। যেমন ————- অর্থাৎ জনপদবাসী ও যাত্রীদল। —– অর্থাৎ তোমরা তার প্রতি ফিরে তাকাওনি। যখন কারোও কোনো প্রয়োজন পুরা না করবে, তখন বলা হয় – তুমি আমার প্রয়োজনকে পিছনে ফেলে রেখেছো। অথবা তুমি আমার প্রতি ফিরে তাকাওনি। —- অর্থ –তুমি তোমার সঙ্গে কোন বাহন অথবা বাসন রাখতে যার দ্বারা তুমি উপকৃত হবে। ———– একই অর্থ । —– অর্থ জীবন যাপন। —- অর্থ চিন্তিত হওয়া —- অর্থ দুঃখিত হবো। হাসান (রহ.) বলেন, ————- অর্থাৎ তুমি তো অবশ্যই সহিঞ্চু সদাচারী – (হূদ ৮৭)। এখানে কাফিরেরা ঠাট্টাচ্ছলে বলতো। আর মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, —– মূলতঃ —- ছিল। —- অর্থ-তাদের জন্য মেঘাচ্ছন্ন দিবসের আযাব।

৬০/৩৫. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণী: আর ইউনূসও ছিলেন রাসূলদের একজন … তারপর একটি মাছ তাকে গিলে ফেলল, তখন তিনি নিজেকে তিরস্কার করতে লাগলেন। (আস্‌সাফফাত: ১৩৯-১৪২)

মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, —- অর্থ-অপরাধী —– অর্থ বোঝাই নৌযান। (আল্লাহ্‌র বাণী) সুতরাং যদি তিনি আল্লাহর তাসবীহ পাঠকারী না হতেন- (আস্ সাফফাত ১৪৩)। অতঃপর আমি তাকে নিক্ষেপ করলাম এক ময়দানে এবং তিনি ছিলেন পীড়িত। আর আমি উৎপন্ন করলাম তার উপর এক লাউ গাছ- ( আস্‌ সাফফাত ১৪৫-১৪৬)। —- অর্থ- যমীনের উপরিভাগ। —- অর্থ-কাণ্ডবিহীন তৃণলতা, যেমন লাউ গাছ ও তার সদৃশ। (মহান আল্লাহ্‌র বাণী) আমি তাকে রাসূল করে পাঠিয়েছিলাম এক লক্ষ বা ততোধিক লোকের প্রতি। তারা ঈমান এনেছিল, ফলে আমি তাদেরকে এক নির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত জীবনোপভোগ করতে দিয়েছিলাম- ( আস্‌ সাফফাত ১৪৭-৪৮)। (মহান আল্লাহ্‌র বাণী) অতএব, ধৈর্যধারণ করুন আপনার রবের নির্দেশের অপেক্ষায়। আপনি মাছওয়ালা ইউনুসের মত হবেন না, যখন তিনি চিন্তায়-বিপদে আচ্ছন্ন অবস্থায় কাতর প্রার্থনা করেছিলেন- (কলম ৪৮)। ——- অর্থ-বিষাদাচ্ছন্ন।

৩৪১২
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ سُفْيَانَ، قَالَ حَدَّثَنِي الأَعْمَشُ،‏.‏ حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ لاَ يَقُولَنَّ أَحَدُكُمْ إِنِّي خَيْرٌ مِنْ يُونُسَ ‏”‏‏.‏ زَادَ مُسَدَّدٌ ‏”‏ يُونُسَ بْنِ مَتَّى ‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন এরূপ না বলে যে, আমি অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইউনুস (‘আঃ) হতে উত্তম। মুসাদ্দাদ (রহঃ) অতিরিক্ত বললেন, ইউনুস ইব্‌নু মাত্তা।

৩৪১৩
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِي الْعَالِيَةِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ مَا يَنْبَغِي لِعَبْدٍ أَنْ يَقُولَ إِنِّي خَيْرٌ مِنْ يُونُسَ بْنِ مَتَّى ‏”‏‏.‏ وَنَسَبَهُ إِلَى أَبِيهِ‏.‏

ইব্‌নে ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কারো জন্য এ কথা বলা উচিত নয় যে, নিশ্চয়ই আমি (মুহাম্মাদ) ইউনুস ইব্‌নু মাত্তা হতে উত্তম। আর নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে (ইউনুসকে) তাঁর পিতার দিকে সম্পর্কিত করেছেন।

৩৪১৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، عَنِ اللَّيْثِ، عَنْ عَبْدِ الْعَزِيزِ بْنِ أَبِي سَلَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْفَضْلِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ بَيْنَمَا يَهُودِيٌّ يَعْرِضُ سِلْعَتَهُ أُعْطِيَ بِهَا شَيْئًا كَرِهَهُ‏.‏ فَقَالَ لاَ وَالَّذِي اصْطَفَى مُوسَى عَلَى الْبَشَرِ، فَسَمِعَهُ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ فَقَامَ، فَلَطَمَ وَجْهَهُ، وَقَالَ تَقُولُ وَالَّذِي اصْطَفَى مُوسَى عَلَى الْبَشَرِ، وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ أَظْهُرِنَا فَذَهَبَ إِلَيْهِ، فَقَالَ أَبَا الْقَاسِمِ، إِنَّ لِي ذِمَّةً وَعَهْدًا، فَمَا بَالُ فُلاَنٍ لَطَمَ وَجْهِي‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ لِمَ لَطَمْتَ وَجْهَهُ ‏”‏‏.‏ فَذَكَرَهُ، فَغَضِبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم حَتَّى رُئِيَ فِي وَجْهِهِ، ثُمَّ قَالَ ‏”‏ لاَ تُفَضِّلُوا بَيْنَ أَنْبِيَاءِ اللَّهِ، فَإِنَّهُ يُنْفَخُ فِي الصُّورِ، فَيَصْعَقُ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَمَنْ فِي الأَرْضِ، إِلاَّ مَنْ شَاءَ اللَّهُ، ثُمَّ يُنْفَخُ فِيهِ أُخْرَى، فَأَكُونُ أَوَّلَ مَنْ بُعِثَ فَإِذَا مُوسَى آخِذٌ بِالْعَرْشِ، فَلاَ أَدْرِي أَحُوسِبَ بِصَعْقَتِهِ يَوْمَ الطُّورِ أَمْ بُعِثَ قَبْلِي -‏ وَلَا أَقُولُ إِنَّ أَحَدًا أَفْضَلُ مِنْ يُونُسَ بْنِ مَتَّى”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার এক ইয়াহূদী তার কিছু দ্রব্য সামগ্রী বিক্রির জন্য পেশ করছিল, তার বিনিময়ে তাকে এমন কিছু দেয়া হলো যা সে পছন্দ করল না। তখন সে বলল, না! সেই সত্তার কসম, যে মূসা (‘আঃ) –কে মানব জাতির উপর মর্যাদা দান করেছেন। এ কথাটি একজন আনসারী শুনলেন, তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন। আর তার মুখের উপর এক চড় মারলেন। আর বললেন, তুমি বলছো , সেই সত্তার কসম! যিনি মূসাকে মানব জাতির উপর মর্যাদা দান করেছেন অথচ নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের মধ্যে অবস্থান করছেন। তখন সে ইয়াহূদী লোকটি নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)–এর নিকট গেলো এবং বলল, হে আবুল কাসিম! নিশ্চয়ই আমার জন্য নিরাপত্তা এবং অঙ্গীকার রয়েছে অর্থাৎ আমি একজন যিম্মী। অমুক ব্যক্তি কী কারণে আমার মুখে চড় মারলো? তখন নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, কেন তুমি তার মুখে চড় মারলে? আনসারী লোকটি ঘটনা বর্ণনা করলো। তখন নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রাগান্বিত হলেন। এমনকি তাঁর চেহারায় তা দেখা গেল। অতঃপর তিনি বললেন, আল্লাহ্‌র নবী‎গণের মধ্যে কাউকে কারো উপর মর্যাদা দান করো না। কেননা কিয়ামতের দিন যখন শিংগায় ফুঁক দেয়া হবে, তখন আল্লাহ্‌ যাকে চাইবেন সে ছাড়া আসমান ও যমীনের বাকী সবাই বেহুশ হয়ে যাবে। অতঃপর দ্বিতীয়বার তাতে ফুঁক দেয়া হবে। তখন সর্বপ্রথম আমাকেই উঠানো হবে। তখনই আমি দেখতে পাব মূসা (‘আঃ) আরশ ধরে রয়েছেন। আমি জানি না, তূর পর্বতের ঘটনার দিন তিনি যে বেহুশ হয়েছিলেন, এটা কি তারই বিনিময়, না আমার আগেই তাঁকে বেহুশি থেকে উঠানো হয়েছে?

৩৪১৫
See previous Hadith

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আর আমি এ কথাও বলি না যে কোন ব্যক্তি ইউনুস ইব্‌নু মাত্তার চেয়ে বেশি মর্যাদার অধিকারী।

৩৪১৬
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَعْدِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، سَمِعْتُ حُمَيْدَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لاَ يَنْبَغِي لِعَبْدٍ أَنْ يَقُولَ أَنَا خَيْرٌ مِنْ يُونُسَ بْنِ مَتَّى ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, কোন বান্দার জন্যই এ কথা বলা সমীচীন নয় যে, আমি (মুহাম্মাদ) ইউনুস ইব্‌নু মাত্তার থেকে উত্তম।

৬০/৩৬. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণী: আর তাদেরকে সমুদ্র তীরবর্তী জনপদবাসীদের সম্বন্ধে জিজ্ঞেস কর। যখন তারা শনিবার সীমালঙ্ঘন করতো। ( আ’রাফ ১৬৩)

—- অর্থ সীমালঙ্ঘন করতো। সমুদ্রের মাছগুলো শনিবার উদযাপনের দিন পানির উপর ভেসে তাদের নিকট আসতো। —- অর্থ পানিতে ভেসে আর যেদিন তারা শনিবার উদ্‌যাপন করতো না …… মহান আল্লাহ্‌র বাণী: —- পর্যন্ত। —- ঘৃণিত-ভীষণ অপদস্থ।

৬০/৩৭. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণী: আমি দাউদকে ‘যাবুর’ দিয়েছি। (বনী ইসরাঈল ৫৫)

—- কিতাবসমূহ। তার একবচনে —- আর —- আমি লিখেছি। আর আমি আমার পক্ষ হতে দাউদকে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিলাম। হে পর্বত! তাঁর সঙ্গে মিলে আমার তাসবীহ পাঠ কর। মুজাহিদ (রহ.) বলেন, তার সঙ্গে তাসবীহ পাঠ কর। —- লৌহবর্মসমূহ। আর এ নির্দেশ আমি পাখীকেও দিয়েছিলাম। আমি তাঁর জন্য লোহাকে নরম করে দিয়েছিলাম। তুমি লৌহবর্ম তৈরি করতে সঠিক পরিমাপের প্রতি লক্ষ্য রেখো। —- পেরেক ও কড়াসমূহ। পেরেক এমন ছোট করে তৈরি করো না যাতে তা ঢিলে হয়ে যায়। আর এতো বড় করোনা যাতে বর্ম ভেঙ্গে যায়। —— অর্থ-অবতীর্ণ করা। —- অর্থ-বেশি ও সমৃদ্ধ। “আর সৎকর্ম কর, নিশ্চয়ই তোমরা যা কর আমি তা দেখি।” (সাবা ১০-১১)

৩৪১৭
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ خُفِّفَ عَلَى دَاوُدَ ـ عَلَيْهِ السَّلاَمُ ـ الْقُرْآنُ، فَكَانَ يَأْمُرُ بِدَوَابِّهِ فَتُسْرَجُ، فَيَقْرَأُ الْقُرْآنَ قَبْلَ أَنْ تُسْرَجَ دَوَابُّهُ، وَلاَ يَأْكُلُ إِلاَّ مِنْ عَمَلِ يَدِهِ ‏”‏‏.‏ رَوَاهُ مُوسَى بْنُ عُقْبَةَ عَنْ صَفْوَانَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, দাউদ (‘আঃ)-এর জন্য কুরআন (যাবুর) তেলাওয়াত সহজ করে দেয়া হয়েছিল। তিনি তাঁর পশুযানে গদি বাঁধার আদেশ করতেন, তখন তার উপর গদি বাঁধা হতো। অতঃপর তাঁর পশুযানের উপর গদি বাঁধার পূর্বেই তিনি যাবুর তিলাওয়াত করে শেষ করে ফেলতেন। তিনি নিজ হাতে উপার্জন করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন। মূসা ইব্‌নু ‘উকবা (রহঃ) …… আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে হাদীসটি রিওয়ায়াত করেছেন।

৩৪১৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّ سَعِيدَ بْنَ الْمُسَيَّبِ، أَخْبَرَهُ وَأَبَا، سَلَمَةَ بْنَ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ أُخْبِرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنِّي أَقُولُ وَاللَّهِ لأَصُومَنَّ النَّهَارَ وَلأَقُومَنَّ اللَّيْلَ مَا عِشْتُ‏.‏ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ أَنْتَ الَّذِي تَقُولُ وَاللَّهِ لأَصُومَنَّ النَّهَارَ وَلأَقُومَنَّ اللَّيْلَ مَا عِشْتُ ‏”‏ قُلْتُ قَدْ قُلْتُهُ‏.‏ قَالَ ‏”‏ إِنَّكَ لاَ تَسْتَطِيعُ ذَلِكَ، فَصُمْ وَأَفْطِرْ، وَقُمْ وَنَمْ، وَصُمْ مِنَ الشَّهْرِ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ، فَإِنَّ الْحَسَنَةَ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا، وَذَلِكَ مِثْلُ صِيَامِ الدَّهْرِ ‏”‏‏.‏ فَقُلْتُ إِنِّي أُطِيقُ أَفْضَلَ مِنْ ذَلِكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَصُمْ يَوْمًا وَأَفْطِرْ يَوْمَيْنِ ‏”‏‏.‏ قَالَ قُلْتُ إِنِّي أُطِيقُ أَفْضَلَ مِنْ ذَلِكَ‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَصُمْ يَوْمًا وَأَفْطِرْ يَوْمًا، وَذَلِكَ صِيَامُ دَاوُدَ، وَهْوَ عَدْلُ الصِّيَامِ ‏”‏‏.‏ قُلْتُ إِنِّي أُطِيقُ أَفْضَلَ مِنْهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ‏.‏ قَالَ ‏”‏ لاَ أَفْضَلَ مِنْ ذَلِكَ ‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জানান হল যে, আমি বলছি, আল্লাহ্‌র কসম! আমি যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন অবশ্যই আমি অবিরত দিনে সওম পালন করবো আর রাতে ‘ইবাদাতে রত থাকবো। তখন আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিজ্ঞেস করলেন, তুমিই কি বলেছো, ‘আল্লাহ্‌র শপথ! আমি যতদিন বাঁচবো, ততদিন দিনে সওম পালন করবো এবং রাতে ‘ইবাদাতে মশগুল থাকবো। আমি আরয করলাম, আমিই তা বলেছি। তিনি বললেন, সেই শক্তি তোমার নেই। কাজেই সওমও পালন কর, ইফ্‌তারও কর। রাতে ‘ইবাদতও কর এবং ঘুমও যাও। আর প্রতি মাসে তিনদিন সওম পালন কর। কেননা প্রতিটি নেক কাজের কমপক্ষে দশগুণ সওয়াব পাওয়া যায়। আর এটা সারা বছর সওম পালন করার সমান। তখন আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি এর থেকেও বেশী সওম পালন করার ক্ষমতা রাখি। তখন তিনি বললেন, তাহলে তুমি একদিন সওম পালন কর আর দু’দিন ইফতার কর।  তখন আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি এ থেকেও অধিক পালন করার শক্তি রাখি। তখন তিনি বললেন, তাহলে তুমি একদিন সওম পালন কর আর একদিন বিরতি দাও। এটা দাউদ (‘আঃ)-এর সওম পালন করার নিয়ম। আর এটাই সওম পালনের উত্তম নিয়ম। আমি আরয করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি এ থেকেও অধিক শক্তি রাখি। তিনি বললেন, এ থেকে বেশী কিছু নেই।

৩৪১৯
حَدَّثَنَا خَلاَّدُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا مِسْعَرٌ، حَدَّثَنَا حَبِيبُ بْنُ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ أَبِي الْعَبَّاسِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، قَالَ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ أَلَمْ أُنَبَّأْ أَنَّكَ تَقُومُ اللَّيْلَ وَتَصُومُ ‏”‏‏.‏ فَقُلْتُ نَعَمْ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ فَإِنَّكَ إِذَا فَعَلْتَ ذَلِكَ هَجَمَتِ الْعَيْنُ وَنَفِهَتِ النَّفْسُ، صُمْ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ثَلاَثَةَ أَيَّامٍ، فَذَلِكَ صَوْمُ الدَّهْرِ ـ أَوْ كَصَوْمِ الدَّهْرِ ‏”‏‏.‏ قُلْتُ إِنِّي أَجِدُ بِي ـ قَالَ مِسْعَرٌ يَعْنِي ـ قُوَّةً‏.‏ قَالَ ‏”‏ فَصُمْ صَوْمَ دَاوُدَ ـ عَلَيْهِ السَّلاَمُ ـ وَكَانَ يَصُومُ يَوْمًا، وَيُفْطِرُ يَوْمًا، وَلاَ يَفِرُّ إِذَا لاَقَى ‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আম্‌র ইব্‌নু ‘আস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আমি কি জ্ঞাত হইনি যে, তুমি রাত ভর ‘ইবাদত এবং দিন ভর সওম পালন কর! আমি বললাম হাঁ। তিনি বললেন, যদি তুমি এমন কর; তবে তোমার দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে যাবে এবং দেহ ক্লান্ত হয়ে যাবে। কাজেই প্রতিমাসে তিনদিন সওম পালন কর। তাহলে তা সারা বছরের সওমের সমতুল্য হয়ে যাবে। আমি বললাম, আমি আমার মধ্যে আরও অধিক পাই। মিসআর (রাঃ) বলেন, এখানে শক্তি বুঝানো হয়েছে। তখন আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাহলে তুমি দাউদ (‘আঃ)-এর নিয়মে সওম পালন কর। তিনি একদিন সওম পালন করতেন আর একদিন বিরত থাকতেন। আর শত্রুর মুখোমুখী হলে তিনি কখনও পালিয়ে যেতেন না।

৬০/৩৮. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্‌র নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় সালাত দাউদ (‘আঃ)-এর সালাত ও সবচেয়ে পছন্দনীয় সওম দাউদ (‘আঃ)-এর সওম। তিনি রাতের প্রথমার্ধে ঘুমাতেন আর এক-তৃতীয়াংশ দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করতেন এবং বাকী ষষ্ঠাংশ ঘুমাতেন। তিনি একদিন সওম পালন করতেন আর একদিন বিরতি দিতেন।

‘আলী (ইব্‌নু মদীনী) (রহ.) বলেন, এটাই ‘আয়িশা (রাঃ)-এর কথা যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বদা সাহরীকালে আমার নিকট নিদ্রিত থাকতেন।

৩৪২০
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرِو بْنِ دِينَارٍ، عَنْ عَمْرِو بْنِ أَوْسٍ الثَّقَفِيِّ، سَمِعَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عَمْرٍو، قَالَ قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ أَحَبُّ الصِّيَامِ إِلَى اللَّهِ صِيَامُ دَاوُدَ، كَانَ يَصُومُ يَوْمًا وَيُفْطِرُ يَوْمًا، وَأَحَبُّ الصَّلاَةِ إِلَى اللَّهِ صَلاَةُ دَاوُدَ، كَانَ يَنَامُ نِصْفَ اللَّيْلِ وَيَقُومُ ثُلُثَهُ وَيَنَامُ سُدُسَهُ ‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্‌নু ‘আম্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেছেন, আল্লাহ্‌র নিকট অধিক পছন্দনীয় সওম হলো দাউদ (‘আঃ)-এর নিয়মে সওম পালন করা। তিনি একদিন সওম পালন করতেন আর একদিন বিরত থাকতেন। আল্লাহ্‌র নিকট অধিক পছন্দনীয় সালাত হলো দাউদ (‘আঃ)-এর নিয়মে সালাত আদায় করা। তিনি রাতের অর্ধাংশ ঘুমাতেন, রাতের এক তৃতীয়াংশ সালাতে দাঁড়াতেন আর বাকী ষষ্ঠাংশ আবার ঘুমাতেন।

৬০/৩৯. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ এবং স্মরণ করুন আমার বান্দা দাউদের কথা, যিনি ছিলেন খুব শক্তিশালী এবং যিনি ছিলেন অতিশয় আল্লাহ অভিমুখী…….. ফায়সালাকারীর বর্ণনা শক্তি। (সোয়াদ ১৭-২০)

মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, ———- অর্থ বিচার-ফায়সালার সঠিক জ্ঞান। —— অবিচার করবে না। (আল্লাহ্‌র বাণী) আমাদের সঠিক পথ নির্দেশ করুন। এ আমার ভাই, তার আছে নিরানব্বইটি দুম্বা এবং আমার আছে মাত্র একটি দুম্বা। —– মহিলা এবং বকরী উভয়কে বলা হয়ে থাকে- সে বলে আমার যিম্মায় এটি দিয়ে দাও। এ বাক্য ———-এর মত অর্থাৎ যাকারিয়া তার যিম্মায় মারইয়ামকে নিয়ে নিলেন। ———- এবং কথায় সে আমার প্রতি কঠোরতা প্রদর্শন করেছে। —— অর্থ আমার উপর সে প্রবল হয়েছে। আমার চেয়ে সে প্রবল। —– অর্থ তাকে আমি প্রবল করে দিলাম। —– অর্থ কথা-বাক্যালাপ। (আল্লাহ্‌র বাণী) দাঊদ বললেনঃ এ ব্যক্তি তোমার দুম্বাটিকে তার দুম্বাগুলোর সাথে সংযুক্ত করার দাবি করে তোমার প্রতি অবশ্যই যুল্‌ম করেছে। আর অধিকাংশ শরীকেরাই একে অন্যের উপর অন্যায় আচরণ করে থাকে।- (সোয়াদ ২৪)। —— অর্থ শরীকগণ —– ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, এর অর্থ পরীক্ষা করলাম। ‘উমর (রাঃ) — শব্দে —- হরফে তাশদীদ দিয়ে পাঠ করেছেন। (আল্লাহ্‌র বাণী) অতএব তিনি তার রবের সমীপে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন এবং সিজদায় লুটিয়ে পড়লেন ও তাঁর অভিমুখী হলেন। (সোয়াদ ২৪)

৩৪২১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، حَدَّثَنَا سَهْلُ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ سَمِعْتُ الْعَوَّامَ، عَنْ مُجَاهِدٍ، قَالَ قُلْتُ لاِبْنِ عَبَّاسٍ أَسْجُدُ فِي ‏{‏ص‏}‏ فَقَرَأَ ‏{‏وَمِنْ ذُرِّيَّتِهِ دَاوُدَ وَسُلَيْمَانَ‏}‏ حَتَّى أَتَى ‏{‏فَبِهُدَاهُمُ اقْتَدِهْ‏}‏ فَقَالَ نَبِيُّكُمْ صلى الله عليه وسلم مِمَّنْ أُمِرَ أَنْ يَقْتَدِيَ بِهِمْ‏.‏

মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলাম, আমরা কি সূরা ছোয়াদ পাঠ করে সিজদা করবো? তখন তিনি ————- হতে ———– পর্যন্ত আয়াত তিলাওয়াত করলেন। অতঃপর  ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, তোমাদের নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঐ সব মহান ব্যক্তিদের একজন, যাঁদেরকে পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।

৩৪২২
حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، عَنْ عِكْرِمَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ لَيْسَ ‏{‏ص‏}‏ مِنْ عَزَائِمِ السُّجُودِ، وَرَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَسْجُدُ فِيهَا‏.‏

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সূরা ছোয়াদের সিজ্‌দা একান্ত জরুরী নয়। কিন্তু আমি নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে সূরায় সিজ্‌দা করতে দেখেছি।

৬০/৪০. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আর আমি দাঊদকে দান করলাম সুলাইমান। সে ছিল অতি উত্তম বান্দা। তিনি তো ছিলেন অতিশয় আল্লাহ অভিমুখী। (সোয়াদ ৩০)

—— অর্থ গোনাহ হতে ফিরে যে আল্লাহ্‌ অভিমুখী হয়। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তিনি প্রার্থনা করলেনঃ হে আমার রব! আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমাকে এমন রাজ্য দান করুন, যা আমি ছাড়া আর কারও ভাগ্যে না জোটে- (সোয়াদ ৩৫)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তারা তা অনুসরণ করল যা শয়তানরা আবৃত্তি করত সুলাইমানের রাজত্বকালে- (আল-বাকারা ১০২) মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আমি বায়ুকে সুলাইমানের অধীন করে দিলাম যা সকালে একমাসের পথ অতিক্রম করত এবং বিকালে একমাসের পথ অতিক্রম করত। আর আমি তার জন্য বিগলিত তামার এক প্রস্রবণ প্রবাহিত করেছিলাম। —- অর্থ বিগলিত করে দিলাম —- অর্থ লোহার প্রস্রবণ-আর কতক জ্বিন তাঁর রবের নির্দেশে তার সামনে কাজ করত। তাদের যে কেউ আমার আদেশ অমান্য করে, তাকে জ্বলন্ত আগুনের শাস্তি আস্বাদন করাব। জ্বিনেরা সুলাইমানের ইচ্ছানুযায়ী তার জন্য প্রাসাদ তৈরি করত। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, ——- অর্থ বড় বড় দালানের তুলনায় ছোট ইমারত-ভাস্কর্য শিল্প প্রস্তুত করতো, আর হাউজ সদৃশ বৃহদাকার রান্না করার পাত্র তৈরি করতো- যেমন উটের জন্য হাওম থাকে। ইব্‌নু আব্বাস (রাঃ) বলেন, যেমন যমীনে গর্ত থাকে। আর তৈরি বিশাল বিশাল ডেকচি যা সুদৃঢ়ভাবে স্থাপিত। হে দাঊদের পরিবার! আমার কৃতজ্ঞতার সঙ্গে তোমরা কাজ কর। আর আমার বান্দাগনের মধ্যে অল্পই শুকুর গুযারী করে- (সাবা ১২-১৩)। ———— কেবল মাটির পোকা অর্থাৎ উই পোকা যা তার (সুলাইমানের) লাঠি খেতেছিল। —– তার লাঠি। যখন সে (সুলাইমান) পড়ে গেল…..লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তিতে- (সাবা ১৪) মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ সম্পদের মোহে আমার রবের স্মরণ থেকে- আয়াতাংশে —- অর্থ ———- অর্থ তিনি [(সুলাইমান (‘আঃ)] ঘোড়াগুলোর গর্দানসমূহ ও তাদের হাঁটুর নলাসমূহ কাটতে লাগলেন। —- অর্থ, শৃঙ্খলসমূহ। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, —- অর্থ, দৌড়ের জন্য প্রস্তুত ঘোড়াসমূহ। এ অর্থ ———- হতে গৃহীত। ঘোড়া যখন দৌড়ের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে এক পা উঠিয়ে অন্য পায়ের খুরার উপর দাঁড়িয়ে যায়, তখন এ বাক্য বলা হয়। ——- অর্থ দ্রুতগামী , —- শয়তান — উত্তম ———– যেখানে ইচ্ছা —- দান কর ———– নির্দ্বিধায়। (সদ ৩১-৩৮)

৩৪২৩
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ زِيَادٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِنَّ عِفْرِيتًا مِنَ الْجِنِّ تَفَلَّتَ الْبَارِحَةَ لِيَقْطَعَ عَلَىَّ صَلاَتِي، فَأَمْكَنَنِي اللَّهُ مِنْهُ، فَأَخَذْتُهُ، فَأَرَدْتُ أَنْ أَرْبُطَهُ عَلَى سَارِيَةٍ مِنْ سَوَارِي الْمَسْجِدِ حَتَّى تَنْظُرُوا إِلَيْهِ كُلُّكُمْ فَذَكَرْتُ دَعْوَةَ أَخِي سُلَيْمَانَ رَبِّ هَبْ لِي مُلْكًا لاَ يَنْبَغِي لأَحَدٍ مِنْ بَعْدِي‏.‏ فَرَدَدْتُهُ خَاسِئًا ‏”‏‏.‏ عِفْرِيتٌ مُتَمَرِّدٌ مِنْ إِنْسٍ أَوْ جَانٍّ، مِثْلُ زِبْنِيَةٍ جَمَاعَتُهَا الزَّبَانِيَةُ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, একটি অবাধ্য  জ্বিন এক রাতে আমার সালাতে বাধা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে আমার নিকট আসল। আল্লাহ্‌ আমাকে তার উপর ক্ষমতা প্রদান করলেন। আমি তাকে ধরলাম এবং মসজিদের একটি খুঁটির সাথে বেঁধে রাখার ইচ্ছে করলাম, যাতে তোমরা সবাই স্বচক্ষে তাকে দেখতে পাও। তখনই আমার ভাই সুলাইমান (‘আঃ)-এর এ দু’আটি আমার মনে পড়লো। হে আমার রব! আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমাকে এমন রাজ্য দান করুন, যা আমি ছাড়া আর কারও ভাগ্যে না জোটে- (সোয়াদ ৩৫)। অতঃপর আমি জ্বিনটিকে ব্যর্থ এবং লাঞ্ছিত করে ছেড়ে দিলাম। জ্বিন কিংবা মানুষের অত্যন্ত পিশাচ ব্যক্তিকে ইফ্‌রীত বলা হয়। ইফ্‌রীত ও ইফ্‌রীয়াতুন যিব্‌নিয়াতুন-এর মত এক বচন, যার বহু বচন যাবানিয়াতুন।

৩৪২৪
حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ مَخْلَدٍ، حَدَّثَنَا مُغِيرَةُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ قَالَ سُلَيْمَانُ بْنُ دَاوُدَ لأَطُوفَنَّ اللَّيْلَةَ عَلَى سَبْعِينَ امْرَأَةً تَحْمِلُ كُلُّ امْرَأَةٍ فَارِسًا يُجَاهِدُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ، فَقَالَ لَهُ صَاحِبُهُ إِنْ شَاءَ اللَّهُ‏.‏ فَلَمْ يَقُلْ، وَلَمْ تَحْمِلْ شَيْئًا إِلاَّ وَاحِدًا سَاقِطًا إِحْدَى شِقَّيْهِ ‏”‏‏.‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ لَوْ قَالَهَا لَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ ‏”‏‏.‏ قَالَ شُعَيْبٌ وَابْنُ أَبِي الزِّنَادِ ‏”‏ تِسْعِينَ ‏”‏‏.‏ وَهْوَ أَصَحُّ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, সুলায়মান ইব্‌নু দাঊদ (‘আঃ) বলেছিলেন, আজ রাতে আমি আমার সত্তর জন স্ত্রীর নিকট যাব। প্রত্যেক স্ত্রী একজন করে অশ্বারোহী যোদ্ধা গর্ভধারণ করবে। এরা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। তখন তাঁর সাথী বললেন, ইন্‌ শা আল্লাহ্‌। কিন্তু তিনি মুখে তা বললেন না। অতঃপর একজন স্ত্রী ছাড়া কেউ গর্ভধারণ করলেন না। সে যাও এক (পুত্র) সন্তান প্রসব করলেন যার এক অঙ্গ ছিল না। নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তিনি যদি ‘ইন্‌ শা আল্লাহ্‌’ মুখে বলতেন, তাহলে আল্লাহ্‌র পথে জিহাদ করতো। শু’আয়ব এবং ইব্‌নু আবূ যিনাদ (রহঃ) এখানে নব্বই জন স্ত্রীর কথা উল্লেখ করেছেন আর এটাই সঠিক।

৩৪২৫
حَدَّثَنِي عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ التَّيْمِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ‏.‏ أَىُّ مَسْجِدٍ وُضِعَ أَوَّلُ قَالَ ‏”‏ الْمَسْجِدُ الْحَرَامُ ‏”‏‏.‏ قُلْتُ ثُمَّ أَىٌّ قَالَ ‏”‏ ثُمَّ الْمَسْجِدُ الأَقْصَى ‏”‏‏.‏ قُلْتُ كَمْ كَانَ بَيْنَهُمَا قَالَ ‏”‏ أَرْبَعُونَ ‏”‏‏.‏ ثُمَّ قَالَ ‏”‏ حَيْثُمَا أَدْرَكَتْكَ الصَّلاَةُ فَصَلِّ، وَالأَرْضُ لَكَ مَسْجِدٌ ‏”‏‏.‏

আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! সর্বপ্রথম কোন্‌ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি বললেন, মসজিদে হারাম। আমি বললাম, অতঃপর কোনটি? তিনি বললেন, মসজিদে আক্‌সা। আমি বললাম, এ দু’য়ের নির্মাণের মাঝখানে কত তফাৎ? তিনি বললেন, চল্লিশ (বছরের) [১] (অতঃপর তিনি বললেন), যেখানেই তোমার সালাতের সময় হবে, সেখানেই তুমি সালাত আদায় করে নিবে। কারণ পৃথিবীটাই তোমার জন্য মসজিদ।

[১] এ দু মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করেন আদম (‘আঃ)। দু মসজিদের ভিত্তি স্থাপনে ব্যবধান ছিল ৪০ বছর।


৩৪২৬
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، حَدَّثَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَهُ أَنَّهُ، سَمِعَ أَبَا هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏”‏ مَثَلِي وَمَثَلُ النَّاسِ كَمَثَلِ رَجُلٍ اسْتَوْقَدَ نَارًا، فَجَعَلَ الْفَرَاشُ وَهَذِهِ الدَّوَابُّ تَقَعُ فِي النَّارِ ‏”‏‏.‏ وَقَالَ ‏”‏ كَانَتِ امْرَأَتَانِ مَعَهُمَا ابْنَاهُمَا جَاءَ الذِّئْبُ فَذَهَبَ بِابْنِ إِحْدَاهُمَا، فَقَالَتْ صَاحِبَتُهَا إِنَّمَا ذَهَبَ بِابْنِكِ‏.‏ وَقَالَتِ الأُخْرَى إِنَّمَا ذَهَبَ بِابْنِكِ‏.‏ فَتَحَاكَمَتَا إِلَى دَاوُدَ، فَقَضَى بِهِ لِلْكُبْرَى فَخَرَجَتَا عَلَى سُلَيْمَانَ بْنِ دَاوُدَ فَأَخْبَرَتَاهُ‏.‏ فَقَالَ ائْتُونِي بِالسِّكِّينِ أَشُقُّهُ بَيْنَهُمَا‏.‏ فَقَالَتِ الصُّغْرَى لاَ تَفْعَلْ يَرْحَمُكَ اللَّهُ، هُوَ ابْنُهَا‏.‏ فَقَضَى بِهِ لِلصُّغْرَى ‏”‏‏.‏ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ وَاللَّهِ إِنْ سَمِعْتُ بِالسِّكِّينِ إِلاَّ يَوْمَئِذٍ، وَمَا كُنَّا نَقُولُ إِلاَّ الْمُدْيَةُ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছেন যে, আমার ও অন্যান্য মানুষের দৃষ্টান্ত হলো এমন যেমন কোন এক ব্যক্তি আগুন জ্বালাল এবং তাতে পতঙ্গ এবং পোকামাকড় ঝাঁকে ঝাঁকে পড়তে লাগল।

৩৪২৭
See previous Hadith

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, দু’জন মহিলা ছিল। তাদের সাথে দু’টি সন্তানও ছিল। হঠাৎ একটি বাঘ এসে তাদের একজনের ছেলে নিয়ে গেল। সঙ্গের একজন মহিলা বললো, “তোমার ছেলেটিই বাঘে নিয়ে গেছে।” অন্য মহিলাটি বললো, “না, বাঘে তোমার ছেলেটি নিয়ে গেছে।” অতঃপর উভয় মহিলাই দাঊদ (‘আঃ)-এর নিকট এ বিরোধ মীমাংসার জন্য বিচারপ্রার্থী হল। তখন তিনি ছেলেটির বিষয়ে বয়স্কা মহিলাটির পক্ষে রায় দিলেন। অতঃপর তারা উভয়ে বেরিয়ে দাঊদ (‘আঃ)-এর পুত্র সুলায়মান (‘আঃ)-এর নিকট দিয়ে যেতে লাগল এবং তারা দু’জনে তাঁকে ব্যাপারটি জানালেন। তখন তিনি লোকদেরকে বললেন, তোমরা আমার নিকট একখানা ছোরা নিয়ে আস। আমি ছেলেটিকে দু’ টুক্‌রা করে তাদের দু’জনের মধ্যে ভাগ করে দেই। একথা শুনে অল্পবয়স্কা মহিলাটি বলে উঠলো, তা করবেন না, আল্লাহ্‌ আপনার উপর রহম করুন। ছেলেটি তারই। তখন তিনি ছেলেটি সম্পর্কে অল্পবয়স্কা মহিলাটির অনুকূলে রায় দিলেন।



আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আল্লাহ্‌র কসম! ছোরা অর্থে لسّيكينا শব্দটি আমি ঐদিনই শুনেছি। তা না হলে আমরাতো ছোরাকে المُديَتُ ই বলতাম।

৬০/৪১. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি লুকমানকে হিক্‌মত দান করেছি। আর সে বলেছিল, শির্‌ক এক মহা যুল্‌ম। (লুকমান ১২-১৩)

(মহান আল্লাহ্‌র বাণী): হে বৎস! তা (পাপ) যদি সরিষার দানা পরিমাণও ছোট হয়…দাম্ভিককে ভালবাসেন না। (লুকমান ১৬-১৮)। চেহারা ফিরিয়ে অবজ্ঞা করো না।

৩৪২৮
حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتِ ‏{‏الَّذِينَ آمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ‏}‏ قَالَ أَصْحَابُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَيُّنَا لَمْ يَلْبِسْ إِيمَانَهُ بِظُلْمٍ فَنَزَلَتْ ‏{‏لاَ تُشْرِكْ بِاللَّهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ ‏}

‘আবদুল্লাহ (ইব্‌নু মাস’ঊদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন এ আয়াত নাযিল হলঃ যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে যুল্‌মের দ্বারা কলুষিত করেনি- (আল-আন’আম ৮২)। তখন নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাহাবীগণ বললেন, আমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি আছে যে, নিজের ঈমানকে যুল্‌মের দ্বারা কলুষিত করেনি? তখন এ আয়াত নাযিল হয়ঃ আল্লাহর সঙ্গে শরীক করো না। কেননা শির্‌ক হচ্ছে এক মহা যুল্‌ম- (লুকমান ১৮)।

৩৪২৯
حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ، أَخْبَرَنَا عِيسَى بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ لَمَّا نَزَلَتِ ‏{‏الَّذِينَ آمَنُوا وَلَمْ يَلْبِسُوا إِيمَانَهُمْ بِظُلْمٍ‏}‏ شَقَّ ذَلِكَ عَلَى الْمُسْلِمِينَ، فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَيُّنَا لاَ يَظْلِمُ نَفْسَهُ قَالَ ‏”‏ لَيْسَ ذَلِكَ، إِنَّمَا هُوَ الشِّرْكُ، أَلَمْ تَسْمَعُوا مَا قَالَ لُقْمَانُ لاِبْنِهِ وَهْوَ يَعِظُهُ ‏{‏يَا بُنَىَّ لاَ تُشْرِكْ بِاللَّهِ إِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِيمٌ ‏}‏‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ (ইব্‌নু মাস’ঊদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন যখন এ আয়াতে কারীমা নাযিল হলঃ যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে যুল্‌মের দ্বারা কলুষিত করেনি। তখন তা মুসলিমদের পক্ষে কঠিন হয়ে গেল। তারা আরয করলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি আছে যে নিজের উপর যুল্‌ম করেনি? তখন নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, এখানে অর্থ তা নয় বরং এখানে যুল্‌মের অর্থ হলো শির্‌ক। তোমরা কি কুরআনে শুননি লুকমান তাঁর ছেলেকে নাসীহাত দেয়ার সময় কী বলেছিলেন? তিনি বলেছিলেন, “হে আমার বৎস! তুমি আল্লাহ্‌র সঙ্গে শির্‌ক করো না। কেননা, নিশ্চয়ই শির্‌ক এক মহা যুল্‌ম।

৬০/৪২. অধ্যায়ঃ
মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আপনি তাদের কাছে এক জনপদের সে সময়ের ঘটনা বর্ণনা করুন, যখন তাদের কাছে কয়েকজন রাসূল এসেছিলেন। (ইয়াসীন ১৩)

মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, فَعَزَّزناَ অর্থ আমি শক্তিশালী করলাম। আর ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, كُم طاَئِرُ অর্থ তোমাদের বিপদসমূহ।

৬০/৪৩. অধ্যায়ঃ
আল্লাহ্‌র বাণীঃ এ হল আপনার রবের অনুগ্রহের বিবরণ যা তাঁর বান্দা যাকারিয়ার প্রতি করা হয়েছে। ইতিপূর্বে আমি এ নামে কারও নামকরণ করিনি। (মারইয়াম ২-৭)

ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, سَمِيَّا অর্থ-সমতুল্য। তেমন বলা হয় رضِيّا অর্থ مَرضِيّا পছন্দনীয়। عَتِيَّا অর্থ عَصِيَّا অর্থাৎ অবাধ্য يَعتُو عَتَا থেকে গৃহীত। যাকারিয়া বললেন, হে আমার প্রতিপালক! কেমন করে আমার সন্তান হবে? আমার স্ত্রী তো বন্ধ্যা? আর আমিও তো বার্ধক্যের চূড়ান্তে পৌঁছেছি। তিনি বললেন, তোমার নিদর্শন হলো তুমি সুস্থ অবস্থায় তিন দিন কারো সঙ্গে কথাবার্তা বলবে না। অতঃপর তিনি মিরহাব হতে বের হয়ে তাঁর কাউমের নিকট আসলেন, আর ইঙ্গিতে তাদেরকে সকাল-সন্ধ্যায় আল্লাহ্‌র তাসবীহ পড়তে বললেন। فَأَوحَي অর্থ, অতঃপর তিনি ইশারা করে বললেন। (আল্লাহ্‌ বললেন), হে ইয়াহ্‌ইয়া! এ কিতাব শক্তভাবে ধারণ কর। যে দিন তিনি জীবিত পুনরুত্থিত হবেন- (মারইয়াম ২-১৫)। لَطِفاً حَفِيّاً অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ অতিশয় অনুগ্রহশীল। عاَقِراً (বন্ধ্যা) শব্দটি পুং ও স্ত্রী লিঙ্গেই ব্যবহৃত হয়।

৩৪৩০
حَدَّثَنَا هُدْبَةُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامُ بْنُ يَحْيَى، حَدَّثَنَا قَتَادَةُ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ مَالِكِ بْنِ صَعْصَعَةَ، أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَدَّثَهُمْ عَنْ لَيْلَةَ أُسْرِيَ ‏ “‏ ثُمَّ صَعِدَ حَتَّى أَتَى السَّمَاءَ الثَّانِيَةَ فَاسْتَفْتَحَ، قِيلَ مَنْ هَذَا قَالَ جِبْرِيلُ‏.‏ قِيلَ وَمَنْ مَعَكَ قَالَ مُحَمَّدٌ‏.‏ قِيلَ وَقَدْ أُرْسِلَ إِلَيْهِ قَالَ نَعَمْ‏.‏ فَلَمَّا خَلَصْتُ، فَإِذَا يَحْيَى وَعِيسَى وَهُمَا ابْنَا خَالَةٍ‏.‏ قَالَ هَذَا يَحْيَى وَعِيسَى فَسَلِّمْ عَلَيْهِمَا‏.‏ فَسَلَّمْتُ فَرَدَّا ثُمَّ قَالاَ مَرْحَبًا بِالأَخِ الصَّالِحِ وَالنَّبِيِّ الصَّالِحِ

মালিক ইব্‌নু সা’সা’আহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী‎ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবাগণের নিকট মিরাজের রাত্রির বর্ণনায় বলেছেন, তারপর তিনি আমাকে নিয়ে উপরে চললেন, এমনকি দ্বিতীয় আকাশে এসে পৌঁছলেন এবং দরজা খুলতে বললেন, জিজ্ঞেস করা হল কে? বললেন, আমি জিব্‌রাঈল। প্রশ্ন হলো। আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেন, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। জিজ্ঞেস করা হলো। তাঁকে কি ডেকে পাঠানো হয়েছে? উত্তর দিলেন হাঁ, অতঃপর আমরা যখন সেখানে পৌঁছলাম তখন সেখানে ইয়াহ্‌ইয়া ও ‘ঈসা (‘আঃ)-কে দেখলাম। তাঁরা উভয়ে খালাতো ভাই ছিলেন। জিব্‌রাঈল বললেন, এঁরা হলেন, ইয়াহ্‌ইয়া এবং ‘ঈসা (‘আঃ)। তাদেরকে সালাম করুন, তখন আমি সালাম দিলাম। তাঁরাও সালামের জবাব দিলেন। অতঃপর তাঁরা বললেন, নেক ভাই এবং নেক নবী‎র প্রতি মারহাবা।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]