সহীহ বুখারী শরীফ হাদিস মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য অধ্যায় ২য় ভাগ হাদিস নং ৩৫২৩ – ৩৫৭০

৬১/১২. অধ্যায়ঃ
যমযমের ঘটনা ও আরবের মূর্খতা।

৩৫২৩
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ أَسْلَمُ وَغِفَارُ وَشَىْءٌ مِنْ مُزَيْنَةَ وَجُهَيْنَةَ ـ أَوْ قَالَ شَىْءٌ مِنْ جُهَيْنَةَ أَوْ مُزَيْنَةَ ـ خَيْرٌ عِنْدَ اللَّهِ ـ أَوْ قَالَ ـ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ أَسَدٍ وَتَمِيمٍ وَهَوَازِنَ وَغَطَفَانَ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আসলাম, গিফার এবং মুযাইনাহ ও জুহানাহ গোত্রের কিছু অংশ অথবা জুহানাহর কিছু অংশ কিংবা মুযায়নাহর কিছু অংশ আল্লাহ্‌র নিকট অথবা বলেছেন কিয়ামতের দিন আসাদ, তামীম, হাওয়াযিন ও গাত্ফান গোত্র চেয়ে উত্তম বলে বিবেচিত হবে।

৩৫২৪
حَدَّثَنَا أَبُو النُّعْمَانِ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ إِذَا سَرَّكَ أَنْ تَعْلَمَ جَهْلَ الْعَرَبِ فَاقْرَأْ مَا فَوْقَ الثَّلاَثِينَ وَمِائَةٍ فِي سُورَةِ الأَنْعَامِ ‏{‏قَدْ خَسِرَ الَّذِينَ قَتَلُوا أَوْلاَدَهُمْ سَفَهًا بِغَيْرِ عِلْمٍ‏}‏ إِلَى قَوْلِهِ ‏{‏قَدْ ضَلُّوا وَمَا كَانُوا مُهْتَدِينَ‏}‏‏.‏

ইব্ন ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তুমি যদি আরবদের অজ্ঞতা সম্বন্ধে জানতে আগ্রহী হও, তবে সূরা আন্’আমের ১৩০ আয়াতের অংশটুকু মনোযোগের সঙ্গে পাঠ কর। “অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তারা যারা নিজ সন্তানদেরকে হত্যা করেছে বোকামির দরুন ও অজ্ঞতাবশতঃ এবং হারাম করে নিয়েছে তা যা আল্লাহ্ তাদেরকে জীবিকা হিসেবে দিয়েছিলেন, কেবল আল্লাহ্ সম্বন্ধে মিথ্যা রচনা করার উদ্দেশ্যে। নিশ্চয় তারা বিপথগামী হয়েছে এবং তারা হিদায়াতপ্রাপ্তও ছিল না”। (আল-আনআম ১৪০)

৬১/১৩. অধ্যায়ঃ
যিনি ইসলাম ও জাহিলী যুগে পিতৃপুরুষের সঙ্গে বংশধারা সম্পর্কিত করেন।

ইব্ন ‘উমর (রাঃ) ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সম্ভ্রান্ত বংশ – ধারার সন্তান হলেন ইউসুফ (আঃ) ইব্ন ইয়া’কূব (আঃ) ইব্ন ইসহাক (আঃ) ইব্ন ইব্রাহীম খলিলুল্লাহ্ (আঃ)। বারা’আহ (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন আমি ‘আবদুল মুত্তালিবের বংশধর। (আ.প্র. ৩২৬২, ই.ফা. ২০৬৩ পরিচ্ছেদ)

৩৫২৫
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ مُرَّةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ ‏{‏وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ‏}‏ جَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يُنَادِي ‏”‏ يَا بَنِي فِهْرٍ، يَا بَنِي عَدِيٍّ لِبُطُونِ قُرَيْشٍ ‏”‏‏.‏

ইব্ন ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন এ আয়াত “তোমার নিকট আত্মীয়গণকে সতর্ক কর” (আশ শু’আরাঃ ২১৪) অবতীর্ণ হল, তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে বানী ফিহ্র, হে বনী ‘আদি! বিভিন্ন কুরাইশ শাখা গোত্রগুলিকে নাম ধরে ধরে ইসলামের পথে ডাক দিতে লাগলেন।

৩৫২৬
وَقَالَ لَنَا قَبِيصَةُ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ، عَنْ حَبِيبِ بْنِ أَبِي ثَابِتٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ لَمَّا نَزَلَتْ ‏{‏وَأَنْذِرْ عَشِيرَتَكَ الأَقْرَبِينَ‏}‏ جَعَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَدْعُوهُمْ قَبَائِلَ قَبَائِلَ‏.‏

ইবন ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন এ আয়াত “তোমার নিকট আত্মীয়গণকে সতর্ক কর” (আশ শু’আরাঃ ২১৪) অবতীর্ণ হল, তখন নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদেরকে গোত্র গোত্র ধরে ডাক দিতে লাগলেন।

৩৫২৭
حَدَّثَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، أَخْبَرَنَا أَبُو الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ يَا بَنِي عَبْدِ مَنَافٍ، اشْتَرُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ اللَّهِ، يَا بَنِي عَبْدِ الْمُطَّلِبِ اشْتَرُوا أَنْفُسَكُمْ مِنَ اللَّهِ، يَا أُمَّ الزُّبَيْرِ بْنِ الْعَوَّامِ عَمَّةَ رَسُولِ اللَّهِ، يَا فَاطِمَةُ بِنْتَ مُحَمَّدٍ، اشْتَرِيَا أَنْفُسَكُمَا مِنَ اللَّهِ، لاَ أَمْلِكُ لَكُمَا مِنَ اللَّهِ شَيْئًا، سَلاَنِي مِنْ مَالِي مَا شِئْتُمَا ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে আব্দে মানাফের বংশধরগণ! তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে আল্লাহ্‌র শাস্তি হতে বাঁচাও। হে ‘আবদুল মুত্তালিবের বংশধরগণ! তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে হিফাজত কর। হে যুবায়রের মা- আল্লাহ্‌র রাসূলের ফুফু, হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কন্যা ফাতিমা! তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে রক্ষা কর। তোমাদেরকে আজাব হতে বাঁচানোর সামান্যতম ক্ষমতাও আমার নাই আর আমার ধন – সম্পদ হতে তোমরা যা ইচ্ছা তা চেয়ে নিতে পার।

৬১/১৪. অধ্যায়ঃ
ভাগ্নে ও আযাদকৃত গোলাম নিজের গোত্রেরই অন্তর্ভুক্ত।

৩৫২৮
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ دَعَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم الأَنْصَارَ فَقَالَ ‏”‏ هَلْ فِيكُمْ أَحَدٌ مِنْ غَيْرِكُمْ ‏”‏‏.‏ قَالُوا لاَ، إِلاَّ ابْنُ أُخْتٍ لَنَا‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ ابْنُ أُخْتِ الْقَوْمِ مِنْهُمْ ‏”‏‏.

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনসারদের বললেন, তোমাদের মধ্যে অপর গোত্রের কেউ আছে কি? তারা বললেন না, অন্য কেউ নেই। তবে আমাদের এক ভাগিনা আছে। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন কোন গোত্রের ভাগ্নে সে গোত্রেরই অন্তর্ভুক্ত।

৬১/১৫. অধ্যায়ঃ
হাবশীদের কাহিনী

এবং রাসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উক্তি হে বনূ আরফিদা

৩৫২৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ أَبَا بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ دَخَلَ عَلَيْهَا وَعِنْدَهَا جَارِيَتَانِ فِي أَيَّامِ مِنًى تُدَفِّفَانِ وَتَضْرِبَانِ، وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مُتَغَشٍّ بِثَوْبِهِ، فَانْتَهَرَهُمَا أَبُو بَكْرٍ، فَكَشَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ وَجْهِهِ، فَقَالَ ‏”‏ دَعْهُمَا يَا أَبَا بَكْرٍ، فَإِنَّهَا أَيَّامُ عِيدٍ، وَتِلْكَ الأَيَّامُ أَيَّامُ مِنًى ‏”‏‏.‏ وَقَالَتْ عَائِشَةُ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَسْتُرُنِي، وَأَنَا أَنْظُرُ إِلَى الْحَبَشَةِ، وَهُمْ يَلْعَبُونَ فِي الْمَسْجِدِ فَزَجَرَهُمْ ‏{‏عُمَرُ‏}‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ دَعْهُمْ أَمْنًا بَنِي أَرْفَدَةَ ‏”‏‏.‏ يَعْنِي مِنَ الأَمْنِ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মিনায় অবস্থানের দিনগুলোতে (অর্থাৎ ১০, ১১, ১২ তারিখে) আবূ বকর (রাঃ) আমার গৃহে প্রবেশ করলেন। তখন তাঁর কাছে দু’টি বালিকা ছিল। তারা দফ বাজিয়ে নেচে নেচে গান করছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন চাদর দিয়ে মুখ ঢেকে শুয়েছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) এদেরকে ধমক দিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন মুখ হতে চাদর সরিয়ে বললেন, হে আবূ বকর (রাঃ)! এদেরকে গাইতে দাও। কেননা, আজ ঈদের দিনও মিনার দিনগুলির অন্তর্ভুক্ত।

৩৫৩০
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّ أَبَا بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ دَخَلَ عَلَيْهَا وَعِنْدَهَا جَارِيَتَانِ فِي أَيَّامِ مِنًى تُدَفِّفَانِ وَتَضْرِبَانِ، وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مُتَغَشٍّ بِثَوْبِهِ، فَانْتَهَرَهُمَا أَبُو بَكْرٍ، فَكَشَفَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنْ وَجْهِهِ، فَقَالَ ‏”‏ دَعْهُمَا يَا أَبَا بَكْرٍ، فَإِنَّهَا أَيَّامُ عِيدٍ، وَتِلْكَ الأَيَّامُ أَيَّامُ مِنًى ‏”‏‏.‏ وَقَالَتْ عَائِشَةُ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَسْتُرُنِي، وَأَنَا أَنْظُرُ إِلَى الْحَبَشَةِ، وَهُمْ يَلْعَبُونَ فِي الْمَسْجِدِ فَزَجَرَهُمْ ‏{‏عُمَرُ‏}‏ فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ دَعْهُمْ أَمْنًا بَنِي أَرْفَدَةَ ‏”‏‏.‏ يَعْنِي مِنَ الأَمْنِ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে আড়াল করে দাঁড়িয়ে ছিলেন আর আমি হাবশীদের খেলা দেখছিলাম। মসজিদের কাছে তারা যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে খেলা করছিল। এমন সময় ‘উমর (রাঃ) এসে তাদেরকে ধমক দিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে ‘উমর! তাদেরকে বনূ আরফিদাকে নিরাপদ ছেড়ে দাও।

৬১/১৬. অধ্যায়ঃ
যে ব্যক্তি পছন্দ করে যে, তার বংশকে যেন গালি দেয়া না হয়।

৩৫৩১
حَدَّثَنِي عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدَةُ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ قَالَتِ اسْتَأْذَنَ حَسَّانُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فِي هِجَاءِ الْمُشْرِكِينَ، قَالَ ‏ “‏ كَيْفَ بِنَسَبِي ‏”‏‏.‏ فَقَالَ حَسَّانُ لأَسُلَّنَّكَ مِنْهُمْ كَمَا تُسَلُّ الشَّعَرَةُ مِنَ الْعَجِينِ‏.‏ وَعَنْ أَبِيهِ قَالَ ذَهَبْتُ أَسُبُّ حَسَّانَ عِنْدَ عَائِشَةَ فَقَالَتْ لاَ تَسُبُّهُ فَإِنَّهُ كَانَ يُنَافِحُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হাসসান (রাঃ) কবিতার ছন্দে মুশরিকদের নিন্দা করতে অনুমতি চাইলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার বংশকে কিভাবে তুমি আলাদা করবে? হাসসান (রাঃ) বললেন, আমি তাদের মধ্য হতে এমনভাবে আপনাকে আলাদা করে নিব যেমনভাবে আটার খামির হতে চুলকে আলাদা করে নেয়া হয়। ‘উরওয়াহ্ (রহঃ) বলেন, আমি হাসসান (রাঃ) -কে ‘আয়িশা (রাঃ) -এর সম্মুখে তিরস্কার করতে উদ্যত হলে, তিনি আমাকে বললেন, তাকে গালি দিও না। সে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর তরফ হতে কবিতার মাধ্যমে শত্রুর কথার আঘাত প্রতিহত করত।

৬১/১৭. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নামসমূহ সম্পর্কে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে।

আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ “মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের মধ্যে কোন পুরুষের পিতা নয়; মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ্‌র রাসূল ও তাঁর সঙ্গে যারা আছেন তারা কুফরের বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর” (আল – ফাতহঃ ২৯) আর তাঁর বাণীঃ “আমার পর যিনি আসবেন তাঁর নাম আহমাদ”। (সফঃ ৬)

৩৫৩২
حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ الْمُنْذِرِ، قَالَ حَدَّثَنِي مَعْنٌ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لِي خَمْسَةُ أَسْمَاءٍ أَنَا مُحَمَّدٌ، وَأَحْمَدُ، وَأَنَا الْمَاحِي الَّذِي يَمْحُو اللَّهُ بِي الْكُفْرَ، وَأَنَا الْحَاشِرُ الَّذِي يُحْشَرُ النَّاسُ عَلَى قَدَمِي، وَأَنَا الْعَاقِبُ ‏”‏‏.‏

যুবায়র ‘ইব্ন মুত’ঈম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমার পাঁচটি (প্রসিদ্ধ) নাম রয়েছে, আমি মুহাম্মাদ, আমি আহমাদ, আমি আল-মাহী আমার দ্বারা আল্লাহ্ কুফর ও শিরককে নিশ্চিহ্ন করে দিবেন। আমি আল-হাশির আমার চারপাশে মানব জাতিকে একত্রিত করা হবে। আমি আল-আক্বিব (সর্বশেষে আগমনকারী)।

৩৫৩৩
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ أَلاَ تَعْجَبُونَ كَيْفَ يَصْرِفُ اللَّهُ عَنِّي شَتْمَ قُرَيْشٍ وَلَعْنَهُمْ يَشْتِمُونَ مُذَمَّمًا وَيَلْعَنُونَ مُذَمَّمًا وَأَنَا مُحَمَّدٌ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, তোমরা কি আশ্চর্যান্বিত হও না? আমার উপর আরোপিত কুরাইশদের নিন্দা ও অভিশাপকে আল্লাহ্ তা’আলা কি চমৎকারভাবে দূরীভূত করছেন? তারা আমাকে নিন্দিত ভেবে গালি দিচ্ছে, অভিশাপ করছে অথচ আমি মুহাম্মাদ চির প্রশংসিত।

৬১/১৮. অধ্যায়ঃ
খাতামুন-নাবীয়্যীন।

৩৫৩৪
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سِنَانٍ، حَدَّثَنَا سَلِيمٌ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مِينَاءَ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَثَلِي وَمَثَلُ الأَنْبِيَاءِ كَرَجُلٍ بَنَى دَارًا فَأَكْمَلَهَا وَأَحْسَنَهَا، إِلاَّ مَوْضِعَ لَبِنَةٍ، فَجَعَلَ النَّاسُ يَدْخُلُونَهَا وَيَتَعَجَّبُونَ، وَيَقُولُونَ لَوْلاَ مَوْضِعُ اللَّبِنَةِ ‏”‏‏.‏

জাবির ‘ইব্ন ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন আমার ও অন্যান্য নবীগণের অবস্থা এমন, যেন কেউ একটি গৃহ নির্মাণ করলো আর একটি ইটের স্থান শূন্য রেখে নির্মাণ কাজ শেষ করে গৃহটিকে সুসজ্জিত করে নিল। জনগণ মুগ্ধ হল এবং তারা বলাবলি করতে লাগল, যদি একটি ইটের জায়গাটুকু খালি রাখা না হত।

৩৫৩৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ إِنَّ مَثَلِي وَمَثَلَ الأَنْبِيَاءِ مِنْ قَبْلِي كَمَثَلِ رَجُلٍ بَنَى بَيْتًا فَأَحْسَنَهُ وَأَجْمَلَهُ، إِلاَّ مَوْضِعَ لَبِنَةٍ مِنْ زَاوِيَةٍ، فَجَعَلَ النَّاسُ يَطُوفُونَ بِهِ وَيَعْجَبُونَ لَهُ، وَيَقُولُونَ هَلاَّ وُضِعَتْ هَذِهِ اللَّبِنَةُ قَالَ فَأَنَا اللَّبِنَةُ، وَأَنَا خَاتِمُ النَّبِيِّينَ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি এবং আমার পূর্ববর্তী নবীগণের অবস্থা এমন, এক ব্যক্তি যেন একটি গৃহ নির্মাণ করল; তাকে সুশোভিত ও সুসজ্জিত করল, কিন্তু এক পাশে একটি ইটের জায়গা খালি রয়ে গেল। অতঃপর লোকজন এর চারপাশে ঘুরে আশ্চর্য হয়ে বলতে লাগল ঐ শূন্যস্থানের ইটটি লাগানো হল না কেন? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমিই সে ইট। আর আমিই সর্বশেষ নবী।

৬১/১৯. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মৃত্যু।

৩৫৩৬
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم تُوُفِّيَ وَهْوَ ابْنُ ثَلاَثٍ وَسِتِّينَ‏.‏ وَقَالَ ابْنُ شِهَابٍ وَأَخْبَرَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ مِثْلَهُ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মৃত্যু হয় তখন তাঁর বয়স হয়েছিল তেষট্টি বছর। ইব্‌ন শিহাব বলেন, সা’ঈদ ইবনুল মুসায়্যিব এভাবেই আমার কাছে বর্ণনা করেন।

৬১/২০. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উপনামসমূহ।

৩৫৩৭
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ حُمَيْدٍ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِي السُّوقِ فَقَالَ رَجُلٌ يَا أَبَا الْقَاسِمِ‏.‏ فَالْتَفَتَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ ‏ “‏ سَمُّوا بِاسْمِي، وَلاَ تَكْتَنُوا بِكُنْيَتِي ‏”‏‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একদিন বাজারে গিয়েছিলেন। তখন এক ব্যক্তি ‘হে আবুল কাসিম!’ বলে ডাক দিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সেদিকে ফিরে তাকালেন। তখন তিনি বললেন, তোমরা আমার আসল নামে নাম রাখতে পার, কিন্তু আমার উপনামে কারো নাম রেখ না।

৩৫৩৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مَنْصُورٍ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ جَابِرٍ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ تَسَمَّوْا بِاسْمِي، وَلاَ تَكْتَنُوا بِكُنْيَتِي ‏”‏

জাবির (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বললেন, আমার আসল নামে অন্যের নামকরণ করতে পার, কিন্তু আমার উপনাম অন্যের জন্য রেখোনা।

৩৫৩৯
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنِ ابْنِ سِيرِينَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ أَبُو الْقَاسِمِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ سَمُّوا بِاسْمِي، وَلاَ تَكْتَنُوا بِكُنْيَتِي ‏”‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আবূল কাসিম (নবী) (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমার নামে নামকরণ করতে পার, কিন্তু আমার উপনামে তোমাদের নাম রেখ না।

৬১/২১. অধ্যায়ঃ
৬১/২১. অধ্যায়ঃ

৩৫৪০
حَدَّثَنِي إِسْحَاقُ، أَخْبَرَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى، عَنِ الْجُعَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، رَأَيْتُ السَّائِبَ بْنَ يَزِيدَ ابْنَ أَرْبَعٍ وَتِسْعِينَ جَلْدًا مُعْتَدِلاً فَقَالَ قَدْ عَلِمْتُ مَا مُتِّعْتُ بِهِ سَمْعِي وَبَصَرِي إِلاَّ بِدُعَاءِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، إِنَّ خَالَتِي ذَهَبَتْ بِي إِلَيْهِ فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ ابْنَ أُخْتِي شَاكٍ فَادْعُ اللَّهَ‏.‏ قَالَ فَدَعَا لِي‏.‏

জু’আইদ ইব্ন ‘আবদুর রাহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ‘সাইব ইব্‌ন ইয়াযীদকে চুরানব্বই বছর বয়সে সুস্থ – সবল ও সুঠাম দেহের অধিকারী দেখেছি। তিনি বললেন, তুমি অবশ্যই জ্ঞাত আছ যে, আমি এখনও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দু’আর বরকতেই চোখ ও কান দিয়ে উপকার লাভ করছি। আমার খালা একদিন আমাকে নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট গেলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমার ভাগিনাটি রোগাক্রান্ত। আপনি তার জন্য আল্লাহ্‌র কাছে দু’আ করুন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার জন্য দু’আ করলেন।

৬১/২২. অধ্যায়ঃ
নবুওয়াতের মোহর।

৩৫৪১
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا حَاتِمٌ، عَنِ الْجُعَيْدِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ سَمِعْتُ السَّائِبَ بْنَ يَزِيدَ، قَالَ ذَهَبَتْ بِي خَالَتِي إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ ابْنَ أُخْتِي‏.‏ وَقَعَ فَمَسَحَ رَأْسِي وَدَعَا لِي بِالْبَرَكَةِ، وَتَوَضَّأَ فَشَرِبْتُ مِنْ وَضُوئِهِ، ثُمَّ قُمْتُ خَلْفَ ظَهْرِهِ فَنَظَرْتُ إِلَى خَاتَمٍ بَيْنَ كَتِفَيْهِ‏.‏ قَالَ ابْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ الْحُجْلَةُ مِنْ حُجَلِ الْفَرَسِ الَّذِي بَيْنَ عَيْنَيْهِ‏.‏ قَالَ إِبْرَاهِيمُ بْنُ حَمْزَةَ مِثْلَ زِرِّ الْحَجَلَةِ

জু’আইদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি ‘সাইব ইব্‌ন ইয়াযীদকে বলতে শুনেছি যে, আমার খালা আমাকে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট নিয়ে গেলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমার ভাগিনা রোগাক্রান্ত। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার মাথায় হাত বুলালেন এবং আমার জন্য বরকতের দু’আ করলেন। তিনি ওযু করলেন, তাঁর ওযুর বাকি পানি আমি পান করলাম। অতঃপর আমি তাঁর পিছন দিকে গিয়ে দাঁড়ালাম তাঁর স্কন্ধের মাঝে “মোহরে নাবুওয়্যাত” দেখলাম যা কবুতরের ডিমের মত অথবা বাসর ঘরের পর্দার বুতামের মত।

ইব্‌ন ‘উবায়দুল্লাহ বলেন, (আরবী) অর্থ সাদা চিহ্ন, যা ঘোড়ার কপালের সাদা অংশ এর অর্থ হতে গৃহীত। আর ইব্রাহীম ইব্‌ন হামযাহ বলেন, কবুতরের ডিমের মত। আবূ ‘আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন বিশুদ্ধ (আরবী) এর পূর্বে (আরবী) হবে অর্থাৎ (আরবী)।

৬১/২৩. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর বর্ণনা।

৩৫৪২
حَدَّثَنَا أَبُو عَاصِمٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ سَعِيدِ بْنِ أَبِي حُسَيْنٍ، عَنِ ابْنِ أَبِي مُلَيْكَةَ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ الْحَارِثِ، قَالَ صَلَّى أَبُو بَكْرٍ ـ رضى الله عنه ـ الْعَصْرَ، ثُمَّ خَرَجَ يَمْشِي فَرَأَى الْحَسَنَ يَلْعَبُ مَعَ الصِّبْيَانِ، فَحَمَلَهُ عَلَى عَاتِقِهِ وَقَالَ بِأَبِي شَبِيهٌ بِالنَّبِيِّ لاَ شَبِيهٌ بِعَلِيٍّ‏.‏ وَعَلِيٌّ يَضْحَكُ‏.‏

‘উকবা ইবন হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদিন আবূ বকর (রাঃ) বাদ আসরের সালাত শেষে বের হয়ে চলতে লাগলেন। হাসান (রাঃ) -কে ছেলেদের সঙ্গে খেলা করতে দেখলেন। তখন তিনি তাঁকে স্কন্ধে তুলে নিলেন এবং বললেন, আমার পিতা কুরবান হোন! এ-ত নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাদৃশ্য, আলীর সাদৃশ্য নয়। তখন ‘আলী (রাঃ) হাসছিলেন।

৩৫৪৩
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، عَنْ أَبِي جُحَيْفَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ الْحَسَنُ يُشْبِهُهُ‏.‏

আবূ জুহাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখেছি। আর হাসান (রাঃ) তাঁরই সদৃশ।

৩৫৪৪
حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي خَالِدٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا جُحَيْفَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَكَانَ الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ ـ عَلَيْهِمَا السَّلاَمُ ـ يُشْبِهُهُ قُلْتُ لأَبِي جُحَيْفَةَ صِفْهُ لِي‏.‏ قَالَ كَانَ أَبْيَضَ قَدْ شَمِطَ‏.‏ وَأَمَرَ لَنَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِثَلاَثَ عَشْرَةَ قَلُوصًا قَالَ فَقُبِضَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَبْلَ أَنْ نَقْبِضَهَا‏.‏

আবূ জুহাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখেছি। হাসান ইব্‌ন ‘আলী ছিলেন (রাঃ) তাঁরই সদৃশ। (রাবী বলেন) আমি আবূ জুহায়ফাকে বললাম, আপনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বর্ণনা দিন। তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গৌর বর্ণের ছিলেন। কাল কেশরাজির মধ্যে সামান্য সাদা চুলও ছিল। তিনি তেরটি সবল উটনী আমাদেরকে দেয়ার আদেশ দিয়েছিলেন, কিন্তু আমাদের হাতে আসার আগেই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মৃত্যু হয়।

৩৫৪৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ رَجَاءٍ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ وَهْبٍ أَبِي جُحَيْفَةَ السُّوَائِيِّ، قَالَ رَأَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَرَأَيْتُ بَيَاضًا مِنْ تَحْتِ شَفَتِهِ السُّفْلَى الْعَنْفَقَةَ‏.‏

আবূ জুহাইফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখেছি আর তাঁর নীচ ঠোঁটের নিন্মভাগে দাড়িতে সামান্য সাদা চুল দেখেছি।

৩৫৪৬
حَدَّثَنَا عِصَامُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا حَرِيزُ بْنُ عُثْمَانَ، أَنَّهُ سَأَلَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ بُسْرٍ صَاحِبَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَرَأَيْتَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ شَيْخًا قَالَ كَانَ فِي عَنْفَقَتِهِ شَعَرَاتٌ بِيضٌ‏.‏

হারীয ইব্ন ‘উসমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সাহাবী ‘আবদুল্লাহ ইব্‌ন বুসরকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে দেখেছেন যে, তিনি কি বৃদ্ধ ছিলেন? তিনি বললেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিম্ন দাড়িতে কয়েকটি চুল সাদা ছিল।

৩৫৪৭
حَدَّثَنِي ابْنُ بُكَيْرٍ، قَالَ حَدَّثَنِي اللَّيْثُ، عَنْ خَالِدٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي هِلاَلٍ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَصِفُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ كَانَ رَبْعَةً مِنَ الْقَوْمِ، لَيْسَ بِالطَّوِيلِ وَلاَ بِالْقَصِيرِ، أَزْهَرَ اللَّوْنِ لَيْسَ بِأَبْيَضَ أَمْهَقَ وَلاَ آدَمَ، لَيْسَ بِجَعْدٍ قَطَطٍ وَلاَ سَبْطٍ رَجِلٍ، أُنْزِلَ عَلَيْهِ وَهْوَ ابْنُ أَرْبَعِينَ، فَلَبِثَ بِمَكَّةَ عَشْرَ سِنِينَ يُنْزَلُ عَلَيْهِ وَبِالْمَدِينَةِ عَشْرَ سِنِينَ، وَلَيْسَ فِي رَأْسِهِ وَلِحْيَتِهِ عِشْرُونَ شَعَرَةً بَيْضَاءَ‏.‏ قَالَ رَبِيعَةُ فَرَأَيْتُ شَعَرًا مِنْ شَعَرِهِ، فَإِذَا هُوَ أَحْمَرُ فَسَأَلْتُ فَقِيلَ احْمَرَّ مِنَ الطِّيبِ‏.‏

রাবী’আ ইব্ন আবূ ‘আবদুর রহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস ইব্‌ন মালিক (রাঃ) -কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বর্ণনা দিতে শুনেছি। তিনি বলেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকেদের মধ্যে মাঝারি গড়নের ছিলেন- বেশি লম্বাও ছিলেন না বা বেঁটেও ছিলেন না। তাঁর শরীরের রং গোলাপী ধরণের ছিল, ধবধবে সাদাও নয় কিংবা তামাটে বর্ণেরও নয়। মাথার চুল কোঁকড়ানোও ছিলনা, আবার একেবারে সোজাও ছিলনা। চল্লিশ বছর বয়সে তাঁর উপর ওয়াহী নাযিল হওয়া শুরু হয়। প্রথম দশ বছর মক্কায় অবস্থানকালে ওয়াহী যথারীতি নাযিল হতে থাকে। অতঃপর দশ বছর মদীনায় কাটান। অতঃপর তাঁর মৃত্যুর সময় তাঁর মাথা ও দাড়িতে কুড়িটি সাদা চুলও ছিলনা। রাবী’আ (রহঃ) বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর একটি চুল দেখেছি তা লাল রং-এর ছিল। আমি জিজ্ঞেস করলে বলা হল যে, সুগন্ধী লাগানোর জন্য তা লাল হয়েছিল।তিনি বলেন, আমি আনাস ইব্‌ন মালিক (রাঃ) -কে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বর্ণনা দিতে শুনেছি। তিনি বলেছেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোকেদের মধ্যে মাঝারি গড়নের ছিলেন- বেশি লম্বাও ছিলেন না বা বেঁটেও ছিলেন না। তাঁর শরীরের রং গোলাপী ধরণের ছিল, ধবধবে সাদাও নয় কিংবা তামাটে বর্ণেরও নয়। মাথার চুল কোঁকড়ানোও ছিলনা, আবার একেবারে সোজাও ছিলনা। চল্লিশ বছর বয়সে তাঁর উপর ওয়াহী নাযিল হওয়া শুরু হয়। প্রথম দশ বছর মক্কায় অবস্থানকালে ওয়াহী যথারীতি নাযিল হতে থাকে। অতঃপর দশ বছর মদীনায় কাটান। অতঃপর তাঁর মৃত্যুর সময় তাঁর মাথা ও দাড়িতে কুড়িটি সাদা চুলও ছিলনা। রাবী’আ (রহঃ) বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর একটি চুল দেখেছি তা লাল রং-এর ছিল। আমি জিজ্ঞেস করলে বলা হল যে, সুগন্ধী লাগানোর জন্য তা লাল হয়েছিল।

৩৫৪৮
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكُ بْنُ أَنَسٍ، عَنْ رَبِيعَةَ بْنِ أَبِي عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّهُ سَمِعَهُ يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَيْسَ بِالطَّوِيلِ الْبَائِنِ وَلاَ بِالْقَصِيرِ، وَلاَ بِالأَبْيَضِ الأَمْهَقِ، وَلَيْسَ بِالآدَمِ وَلَيْسَ بِالْجَعْدِ الْقَطَطِ وَلاَ بِالسَّبْطِ، بَعَثَهُ اللَّهُ عَلَى رَأْسِ أَرْبَعِينَ سَنَةً، فَأَقَامَ بِمَكَّةَ عَشْرَ سِنِينَ، وَبِالْمَدِينَةِ عَشْرَ سِنِينَ، فَتَوَفَّاهُ اللَّهُ، وَلَيْسَ فِي رَأْسِهِ وَلِحْيَتِهِ عِشْرُونَ شَعْرَةً بَيْضَاءَ‏.‏

আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অতিরিক্ত লম্বাও ছিলেন না এবং বেঁটেও ছিলেন না। ধবধবে সাদাও ছিলেন না, আবার তামাটে রং এরও ছিলেন না। কেশগুচ্ছ একেবারে কুঞ্চিত ছিল না, পুরোপুরি সোজাও ছিল না। চল্লিশ বছর বয়সে তিনি নবুওয়্যাত পান। তাঁর নবুওয়্যাত সময়ের প্রথম দশ বছর মক্কায় এবং পরের দশ বছর মদীনায় কাটান। তাঁর মৃত্যুকালে মাথা ও দাড়িতে বিশটি চুলও সাদা ছিল না।

৩৫৪৯
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ يُوسُفَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ سَمِعْتُ الْبَرَاءَ، يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَحْسَنَ النَّاسِ وَجْهًا وَأَحْسَنَهُ خَلْقًا، لَيْسَ بِالطَّوِيلِ الْبَائِنِ وَلاَ بِالْقَصِيرِ‏.‏

বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর চেহারা ছিল মানুষের মধ্যে [১] সর্বাপেক্ষা সুন্দর এবং তিনি ছিলেন সর্বোত্তম আখলাকের অধিকারী। তিনি বেশি লম্বাও ছিলেন না এবং বেঁটেও ছিলেন না।






[১] নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নবুওয়্যাতের আলামতসমূহের উপরে মহামতি ইমাম বুখারী (রহঃ) সহীহ সনদে প্রমাণিত কতিপয় নির্ভরযোগ্য হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সম্পর্কে যে সমুদয় বৈশিষ্ট্য ও নিদর্শনাবলী বর্ণনা করেছেন, তাতে এ কথা পরিষ্কারভাবেই প্রমাণিত হয় যে, মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষ ছিলেন। তিনি আল্লাহ্ তা’আলার খাস নূরে তৈরি বা বিশেষ কোন নূরানী কায়দায় সৃষ্ট বা স্বয়ং আল্লাহ্ তা’আলাই মুহাম্মদ নাম ধারণ করে মানবরূপে আত্মপ্রকাশ করেছেন- এবম্বিধ যাবতীয় চিন্তা-চেতনা, আক্বীদাহ-বিশ্বাস ও কথাবার্তা নিঃসন্দেহে বিভ্রান্তিকর তথা কুফরী কার্য বটে।

কেননা আল্লাহ্ তা’আলা উপরোক্ত বিষয়ে স্বীয় কুরআন মাজীদের মাধ্যমেই বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে অন্য কারো কোন অতিরিক্ত চিন্তা-ভাবনা করার অবকাশ নেই। সূরা কাহফের শেষ আয়াতে আল্লাহ্ তা’আলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে লক্ষ্য করে এরশাদ করেছেনঃ (আরবী) হে নবী! তুমি বলে দাও, আমি তোমাদের মতই একজন মানুষ। (আল-কাহ্ফঃ ১১০ আয়াতাংশ) এ বিষয়ে অন্যত্র আরো এরশাদ হচ্ছেঃ (আরবী) অর্থাৎ আল্লাহ্ তা’আলা মু’মিনদের প্রতি বিশেষ অনুগ্রহ করেছেন, যখন তিনি তাদের মধ্য হতেই (ফেরেশতা বা মানুষ নয় এমন কোন ভিন্ন জাতির মধ্য হতে প্রেরণ করেননি বরং) একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন। সূরা আল্ ইমরান, আয়াত নং – ১৬৪। উক্ত আয়াতে উল্লেখিত (আরবী) এই শব্দ দু’টির ব্যাখ্যায় হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ তাফসীর গ্রন্থ তাফসীরে রুহুল মা’আনীতে আল্লামা শায়খ শেহাবুদ্দীন আলুসী-আল্ হানাফী (রহঃ) লিখেছেনঃ রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে মানুষ বলে জানা ও তাঁকে মানুষের সন্তান মানুষ বলেই গ্রহণ করা সহীহ হওয়ার জন্য একান্ত শর্ত। তাঁকে ফেরেশতা, জ্বীন, নূরের দ্বারা তৈরী এসব কিছু বলা যাবে না বা চিন্তাও করা যাবে না। যেমন রুহুল মা’আনীর নিন্মোদ্ধৃত ভাষ্যে পরিষ্কার করেই বলা হয়েছেঃ (আরবী) অর্থাৎ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানুষ ছিলেন, কি আরবীয় মানুষ ছিলেন, এ বিষয়ে জ্ঞাত হওয়া এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে মানুষ বলেই জানা ঈমানের জন্য শর্ত না; ফারযি কিফায়াহ (আরবী)? এর জবাব এই যে, উক্ত বিষয়টি ঈমানের জন্য শর্ত বটে। অতঃপর কেউ যদি বলে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সমস্ত মাখলুকের জন্য নবী এটা বিশ্বাস করি, তবে তিনি মানুষ কি জ্বিন, কি ফেরেশতা, বা আরবের কি অনারবের এটা আমি জানিনা। উক্ত ব্যক্তি নিঃসন্দেহে কাফের। কেননা সে কুরআনের ঘোষণাকে অস্বীকার করেছে। (আরবী) পৃষ্ঠা নং- ১১৩, ৪র্থ খন্ড। অতএব এখানে লক্ষ্যণীয় এই যে, কতিপয় বিভ্রান্ত লোক নিজেদেরকে হানাফী আল্-ক্বাদরী, আল্-চিশ্তী ইত্যাদি নাম দিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে অতিমাত্রায় ভক্তি ও শ্রদ্ধা দেখাতে গিয়ে তাঁকে আল্লাহ্‌র আসনে বসিয়েছে। (আরবি) (আহাদ) ও (আরবি) (আহমাদ) -এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নিজেদের অজ্ঞতাবশতঃ এ ব্যাখ্যাও দিয়েছে, যে (আরবী) ও (আরবী) এর মধ্যে মাত্র একটি মীমের পার্থক্য ছাড়া আর কোন পার্থক্য নেই। (আরবী) প্রকাশ থাকে। পাক-ভারত উপমহাদেশের বিদ’আতীরা কুরআন ও সহীহ হাদীস বিরোধী সমস্ত কার্যাবলী চালু করে নিজেদের নাম দিয়ে রেখেছে আহলুস সুন্নাহ্ ওয়াল জামা’আহ। এ যেন বেদানা ফলের মতই অবস্থা। বেদানা ফল দানায় ভর্তি, অথচ নাম তার বেদানা। তথাকথিত (আরবী) (আহলুস সুন্নাহ্ ওয়াল জামা’আহ) নাম দিয়ে বিদ’আতীরা এ পৃথিবীর এমন কোন বিদ’আত নেই, যা এরা করছে না। যেমন কবর পূজা, পীর পূজা, মীলাদ, ওরশ ওরসেকূল, ইসালে সওয়াব, জশ্নে জুলুস, মিছিল, ঈদে মিলাদুন্নাবী ইত্যাদি ইত্যাদি।

উল্লেখ্য, এক শ্রেণীর বিদ’আতীরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে মর্যাদা তথা অত্যধিক পরিমাণে শান-মান দেয়ার নামে এতোই সীমালঙ্ঘন করছে যে, (আরবী) ‘আলিমুল গায়িব আল্লাহ্ তা’আলার বিশেষ ক্ষমতা হলো এই যে, তিনি সমস্ত গায়িবী খবরা-খবর জানেন। এ বিষয়ে বিদ’আতীদের আক্বীদাহ্ এই যে, নাউযুবিল্লাহ মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও আল্লাহ্ তা’আলার ন্যায় গায়িবী খবর জানতেন ও জানেন- যা সরাসরি কুরআন, হাদীস, ইজমা, কিয়াস ও জমহারে ‘উলামাসহ হাকপন্থী সর্বশ্রেণীর মুসলমানদের আক্বীদাহ্র বিপরীত। এ ব্যাপারে খোদ আল্লাহ্ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ (আরবী) অদৃশ্য বিষয়সমূহের চাবিকাঠি আল্লাহ্‌র নিকটে, তিনি ব্যতীত উক্ত বিষয়াবলী আর কেউ জানেনা। (সূরা আন’আম ৫৯) এ বিষয়ে ইমাম বুখারী (রহঃ) বর্ণনা করেনঃ (আরবী) অতীতকালের বিভ্রান্ত জাতিসমূহ তাদের নবীগণকে মাত্রাতিরিক্ত মর্যাদা দিতে গিয়ে আল্লাহ্‌র নামে শির্ক করেছিল। ইয়াহুদী ও খ্রিষ্টান জাতি ‘উযাইর ও ঈসা (আঃ) -দ্বয়কে আল্লাহ্‌র পুত্র বানিয়ে তাঁদের পূজা অর্চনা করতে শুরু করেছে এবং বর্তমানের বিভ্রান্ত মুসলমানদের একটা শ্রেণী উল্লেখিত জাতিদ্বয়কে ছাড়িয়ে গিয়ে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে আল্লাহ্‌র সাথে একাকার করে ফেলেছে যা বড়ই পরিতাপের বিষয় বটে। এ জাতীয় বিদ’আতীদেরকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সেই কালজয়ী বাণীটি স্মরণ করিয়ে দিতে চাইঃ (আরবী) নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেনঃ মারইয়াম তনয় ‘ঈসা (আঃ) -কে নিয়ে খ্রিস্টানরা যেভাবে বাড়াবাড়ি করছে তোমরা আমাকে নিয়ে সেভাবে বাড়াবাড়ি করোনা, আমি কেবল একজন বান্দা। অতএব তোমরা আমাকে আল্লাহ্‌র বান্দা ও তাঁর রসূল বলে সম্বোধন করবে।

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৩৫৫০
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ قَتَادَةَ، قَالَ سَأَلْتُ أَنَسًا هَلْ خَضَبَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم قَالَ لاَ، إِنَّمَا كَانَ شَىْءٌ فِي صُدْغَيْهِ‏.‏

ক্বাতাদাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ) -কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চুলে খেযাব লাগাতেন কি? তিনি বললেন, না। তাঁর কানের পাশে সামান্য কয়টা চুল সাদা হয়েছিল মাত্র।

৩৫৫১
حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ عُمَرَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم مَرْبُوعًا، بَعِيدَ مَا بَيْنَ الْمَنْكِبَيْنِ، لَهُ شَعَرٌ يَبْلُغُ شَحْمَةَ أُذُنِهِ، رَأَيْتُهُ فِي حُلَّةٍ حَمْرَاءَ، لَمْ أَرَ شَيْئًا قَطُّ أَحْسَنَ مِنْهُ‏.‏ قَالَ يُوسُفُ بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ عَنْ أَبِيهِ إِلَى مَنْكِبَيْهِ‏.‏

বারাআ ইব্ন ‘আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাঝারি গড়নের ছিলেন। তাঁর উভয় কাঁধের মধ্যস্থল প্রশস্ত ছিল। তাঁর মাথার চুল দুই কানের লতি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। আমি তাঁকে লাল ডোরাকাটা জোড় চাদর পরা অবস্থায় দেখেছি। তাঁর চেয়ে বেশি সুন্দর আমি কখনো কাউকে দেখিনি। ইউসুফ ইব্‌ন আবূ ইসহাক তাঁর পিতা হতে হাদীস বর্ণনায় বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর মাথার চুল কাঁধ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।

৩৫৫২
حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، قَالَ سُئِلَ الْبَرَاءُ أَكَانَ وَجْهُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِثْلَ السَّيْفِ قَالَ لاَ بَلْ مِثْلَ الْقَمَرِ‏.‏

আবূ ইসহাক তাবি-ঈ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বারাআ (রহঃ) -কে জিজ্ঞেস করা হল, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর চেহারা মুবারক কি তলোয়ারের মত ছিল? তিনি বললেন, না বরং চাঁদের ন্যায় ছিল।

৩৫৫৩
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ مَنْصُورٍ أَبُو عَلِيٍّ، حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ الأَعْوَرُ، بِالْمَصِّيصَةِ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الْحَكَمِ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا جُحَيْفَةَ، قَالَ خَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالْهَاجِرَةِ إِلَى الْبَطْحَاءِ فَتَوَضَّأَ ثُمَّ صَلَّى الظُّهْرَ رَكْعَتَيْنِ، وَالْعَصْرَ رَكْعَتَيْنِ، وَبَيْنَ يَدَيْهِ عَنَزَةٌ‏.‏ ‏{‏قَالَ شُعْبَةُ‏}‏ وَزَادَ فِيهِ عَوْنٌ عَنْ أَبِيهِ أَبِي جُحَيْفَةَ قَالَ كَانَ يَمُرُّ مِنْ وَرَائِهَا الْمَرْأَةُ، وَقَامَ النَّاسُ فَجَعَلُوا يَأْخُذُونَ يَدَيْهِ، فَيَمْسَحُونَ بِهَا وُجُوهَهُمْ، قَالَ فَأَخَذْتُ بِيَدِهِ، فَوَضَعْتُهَا عَلَى وَجْهِي، فَإِذَا هِيَ أَبْرَدُ مِنَ الثَّلْجِ، وَأَطْيَبُ رَائِحَةً مِنَ الْمِسْكِ‏.‏

হাকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবূ জুহাইফাহ (রাঃ) -কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, একদিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দুপুর বেলায় বাতহার দিকে বেরোলেন। সে স্থানে উযূ করে যুহরের দু’রাকআত ও আসরের দু’ রাক’আত সালাত আদায় করেন। তাঁর সামনে একটি বর্শা পোঁতা ছিল। বর্শার বাহির দিয়ে নারীরা যাতায়াত করছিল। সালাত শেষে লোকজন দাঁড়িয়ে গেল এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দু’ হাত ধরে তারা নিজেদের মাথা ও মুখমণ্ডলে বুলাতে লাগলেন। আমিও নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর হাত ধরে আমার মুখমণ্ডলে বুলাতে লাগলাম। তাঁর হাত বরফের থেকেও স্নিগ্ধ শীতল ও কস্তুরীর থেকেও বেশি সুগন্ধিময় ছিল।

৩৫৫৪
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ، أَخْبَرَنَا يُونُسُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ حَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَجْوَدَ النَّاسِ، وَأَجْوَدُ مَا يَكُونُ فِي رَمَضَانَ، حِينَ يَلْقَاهُ جِبْرِيلُ، وَكَانَ جِبْرِيلُ ـ عَلَيْهِ السَّلاَمُ ـ يَلْقَاهُ فِي كُلِّ لَيْلَةٍ مِنْ رَمَضَانَ، فَيُدَارِسُهُ الْقُرْآنَ فَلَرَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَجْوَدُ بِالْخَيْرِ مِنَ الرِّيحِ الْمُرْسَلَةِ‏.‏

ইব্ন ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্বাপেক্ষা বেশি দানশীল ছিলেন। তাঁর দানশীলতা বহুগুন বর্ধিত হত রমাযানের পবিত্র দিনে যখন জিব্রাঈল (আঃ) তাঁর সঙ্গে দেখা করতেন। জিব্রাঈল (আঃ) রমাযানের প্রতি রাতে তাঁর সঙ্গে দেখা করে কুরআনের সবক দিতেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কল্যাণ বণ্টনে প্রবাহিত বাতাসের চেয়েও বেশি দানশীল ছিলেন।

৩৫৫৫
حَدَّثَنَا يَحْيَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، حَدَّثَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي ابْنُ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَخَلَ عَلَيْهَا مَسْرُورًا تَبْرُقُ أَسَارِيرُ وَجْهِهِ، فَقَالَ ‏ “‏ أَلَمْ تَسْمَعِي مَا قَالَ الْمُدْلِجِيُّ لِزَيْدٍ وَأُسَامَةَ ـ وَرَأَى أَقْدَامَهُمَا ـ إِنَّ بَعْضَ هَذِهِ الأَقْدَامِ مِنْ بَعْضٍ ‏”‏‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদিন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অত্যন্ত আনন্দিত ও খুশী মনে তাঁর নিকট প্রবেশ করলেন। খুশীর কারণে তাঁর চেহারায় খুশীর চিহ্ন পরিস্ফুট হচ্ছিল। তিনি তখন ‘আয়িশাকে বললেন, হে ‘আয়িশা! তুমি শুননি, মুদলাজী যায়দ ও উসামাহ সম্পর্কে কী বলেছে? পিতা-পুত্রের শুধু পা দেখে বলল, এ পাগুলোর একটি অন্যটির অংশ।

৩৫৫৬
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ عُقَيْلٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ كَعْبٍ، قَالَ سَمِعْتُ كَعْبَ بْنَ مَالِكٍ، يُحَدِّثُ حِينَ تَخَلَّفَ عَنْ تَبُوكَ، قَالَ فَلَمَّا سَلَّمْتُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ يَبْرُقُ وَجْهُهُ مِنَ السُّرُورِ، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا سُرَّ اسْتَنَارَ وَجْهُهُ، حَتَّى كَأَنَّهُ قِطْعَةُ قَمَرٍ، وَكُنَّا نَعْرِفُ ذَلِكَ مِنْهُ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইব্ন কা’ব (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আমার পিতা কা’ব ইব্‌ন মালিক (রাঃ) -কে তার তাবূক যুদ্ধে না যাওয়ার ঘটনা বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে সালাম করলাম, খুশী ও আনন্দে তাঁর চেহারা ঝলমল করে উঠলো। তাঁর চেহারা এমনিই আনন্দে টগবগ করত। মনে হত যেন চাঁদের একটি টুক্রা। তাঁর মুখমণ্ডলের এ অবস্থা হতে আমরা তা বুঝতে পারতাম।

৩৫৫৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ عَمْرٍو، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ بُعِثْتُ مِنْ خَيْرِ قُرُونِ بَنِي آدَمَ قَرْنًا فَقَرْنًا، حَتَّى كُنْتُ مِنَ الْقَرْنِ الَّذِي كُنْتُ فِيهِ ‏”‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি বনি আদমের সর্বোত্তম যুগে আবির্ভূত হয়েছি। যুগের পর যুগ অতিবাহিত হয়ে আমি সেই যুগেই এসেছি যে যুগ আমার জন্য নির্দিষ্ট ছিল।

৩৫৫৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ بُكَيْرٍ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَسْدِلُ شَعَرَهُ، وَكَانَ الْمُشْرِكُونَ يَفْرُقُونَ رُءُوسَهُمْ فَكَانَ أَهْلُ الْكِتَابِ يَسْدِلُونَ رُءُوسَهُمْ، وَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يُحِبُّ مُوَافَقَةَ أَهْلِ الْكِتَابِ فِيمَا لَمْ يُؤْمَرْ فِيهِ بِشَىْءٍ، ثُمَّ فَرَقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم رَأْسَهُ‏.‏

ইব্ন ‘আব্বাস (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চুল পিছনে দিকে আঁচড়ে রাখতেন আর মুশ্রিকগণ তাদের চুল দু‘ভাগ করে সিঁথি কেটে রাখত। আহলে কিতাব তাদের চুল পিছন দিকে আঁচড়ে রাখত। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে কোন বিষয়ে আল্লাহ্‌র নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত আহলে কিতাবের অনুসরণ পছন্দ করতেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর চুল দু’ভাগ করে সিঁথি করে রাখতে লাগলেন।

৩৫৫৯
حَدَّثَنَا عَبْدَانُ، عَنْ أَبِي حَمْزَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ مَسْرُوقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ لَمْ يَكُنِ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فَاحِشًا وَلاَ مُتَفَحِّشًا وَكَانَ يَقُولُ ‏ “‏ إِنَّ مِنْ خِيَارِكُمْ أَحْسَنَكُمْ أَخْلاَقًا ‏”‏‏.‏

‘আবদুল্লাহ্ ইব্‌ন ‘আম্‌র (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অশ্লীল ভাষী ও অসদাচরণের অধিকারী ছিলেন না। তিনি বলতেন, তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই সর্বোত্তম যে নৈতিকতায় সর্বোত্তম।

৩৫৬০
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عُرْوَةَ بْنِ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّهَا قَالَتْ مَا خُيِّرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَ أَمْرَيْنِ إِلاَّ أَخَذَ أَيْسَرَهُمَا، مَا لَمْ يَكُنْ إِثْمًا، فَإِنْ كَانَ إِثْمًا كَانَ أَبْعَدَ النَّاسِ مِنْهُ، وَمَا انْتَقَمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لِنَفْسِهِ، إِلاَّ أَنْ تُنْتَهَكَ حُرْمَةُ اللَّهِ فَيَنْتَقِمَ لِلَّهِ بِهَا‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে যখনই দু’টি জিনিসের একটি গ্রহণের স্বাধীনতা দেয়া হত, তখন তিনি সহজটিই গ্রহণ করতেন যদি তা গুনাহ না হত। গুনাহ হতে তিনি অনেক দূরে অবস্থান করতেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের ব্যাপারে কখনো প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি। তবে আল্লাহ্‌র সীমারেখা লঙ্ঘন করা হলে আল্লাহ্কে সন্তুষ্ট করার জন্য প্রতিশোধ নিতেন।

৩৫৬১
حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ مَا مَسِسْتُ حَرِيرًا وَلاَ دِيبَاجًا أَلْيَنَ مِنْ كَفِّ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم، وَلاَ شَمِمْتُ رِيحًا قَطُّ أَوْ عَرْفًا قَطُّ أَطْيَبَ مِنْ رِيحِ أَوْ عَرْفِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর হাতের তালুর চেয়ে মোলায়েম কোন নরম ও গরদকেও আমি স্পর্শ করিনি। আর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর শরীরের সুঘ্রাণ অপেক্ষা অধিক সুঘ্রাণ আমি কখনো পাইনি।

৩৫৬২
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي عُتْبَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم أَشَدَّ حَيَاءً مِنَ الْعَذْرَاءِ فِي خِدْرِهَا‏.‏

حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، وَابْنُ، مَهْدِيٍّ قَالاَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، مِثْلَهُ وَإِذَا كَرِهَ شَيْئًا عُرِفَ فِي وَجْهِهِ‏.‏

আবূ সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) গৃহবাসিনী পর্দানশীন কুমারীদের চেয়েও বেশি লজ্জাশীল ছিলেন। মুহাম্মদ (রহঃ)…. শু’বাহ (রহঃ) হতে একই রূপ রিওয়ায়াত বর্ণিত হয়েছে। যখন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কোন কিছু অপছন্দ করতেন তা চেহারায় বুঝা যেত।

৩৫৬৩
حَدَّثَنِي عَلِيُّ بْنُ الْجَعْدِ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ مَا عَابَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم طَعَامًا قَطُّ، إِنِ اشْتَهَاهُ أَكَلَهُ، وَإِلاَّ تَرَكَهُ‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কখনো কোন খাদ্যকে মন্দ বলতেন না। ‎রুচি হলে খেতেন না হলে বাদ দিতেন।

৩৫৬৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ مُضَرَ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَالِكٍ ابْنِ بُحَيْنَةَ الأَسْدِيِّ، قَالَ كَانَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِذَا سَجَدَ فَرَّجَ بَيْنَ يَدَيْهِ حَتَّى نَرَى إِبْطَيْهِ‏.‏ قَالَ وَقَالَ ابْنُ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا بَكْرٌ بَيَاضَ إِبْطَيْهِ‏.‏

‘আবদুল্লাহ্ ইব্ন মালিক ইব্ন বুহায়নাহ আসাদিইয়ি (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ‎যখন সাজদাহ্ করতেন, তখন উভয় বাহুকে শরীর হতে এমনভাবে আলাদা করতেন যে, আমরা তাঁর বগল দেখতে পেতাম। ইব্‌ন বুকাইর ‎বলেন, বক্র হাদীস বর্ণনা করে বলেছেন, তাঁর বগলের শুভ্রতা দেখতে পেতাম।

৩৫৬৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ الأَعْلَى بْنُ حَمَّادٍ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ زُرَيْعٍ، حَدَّثَنَا سَعِيدٌ، عَنْ قَتَادَةَ، أَنَّ أَنَسًا ـ رضى الله عنه ـ حَدَّثَهُمْ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ لاَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ فِي شَىْءٍ مِنْ دُعَائِهِ، إِلاَّ فِي الاِسْتِسْقَاءِ، فَإِنَّهُ كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حَتَّى يُرَى بَيَاضُ إِبْطَيْهِ‏.‏

وَقَالَ أَبُو مُوسَى دَعَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ وَرَأَيْتُ بَيَاضَ إِبْطَيْهِ

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইস্তিস্কায় যতটা উঠাতেন অন্য কোন দু’আয় তাঁর বাহুদ্বয় এতটা ঊর্ধ্বে উঠাতেন না, কেননা এতে হাত এত ঊর্ধ্বে উঠাতেন যে তাঁর বগলের শুভ্রতা দেখা যেত। আবূ মূসা (রহঃ) হাদীস বর্ণনায় বলেন, আনাস (রাঃ) বলেছেন নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দু‘আর মধ্যে দু’হাত উপরে উঠিয়েছেন এবং আমি তাঁর বগলের শুভ্রতা দেখেছি।

৩৫৬৬
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ الصَّبَّاحِ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَابِقٍ، حَدَّثَنَا مَالِكُ بْنُ مِغْوَلٍ، قَالَ سَمِعْتُ عَوْنَ بْنَ أَبِي جُحَيْفَةَ، ذَكَرَ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ دُفِعْتُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَهْوَ بِالأَبْطَحِ فِي قُبَّةٍ كَانَ بِالْهَاجِرَةِ، خَرَجَ بِلاَلٌ فَنَادَى بِالصَّلاَةِ، ثُمَّ دَخَلَ فَأَخْرَجَ فَضْلَ وَضُوءِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، فَوَقَعَ النَّاسُ عَلَيْهِ يَأْخُذُونَ مِنْهُ، ثُمَّ دَخَلَ فَأَخْرَجَ الْعَنَزَةَ، وَخَرَجَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَأَنِّي أَنْظُرُ إِلَى وَبِيصِ سَاقَيْهِ فَرَكَزَ الْعَنَزَةَ، ثُمَّ صَلَّى الظُّهْرَ رَكْعَتَيْنِ وَالْعَصْرَ رَكْعَتَيْنِ، يَمُرُّ بَيْنَ يَدَيْهِ الْحِمَارُ وَالْمَرْأَةُ‏.‏

আবূ জুহায়ফাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন যে, আমাকে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে নেয়া হল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন আবতাহ নামক জায়গায় দুপুর বেলায় একটি তাঁবুতে অবস্থান করছিলেন। বিলাল (রাঃ) তাঁবু হতে বেরিয়ে এসে যুহরের সালাতের আযান দিলেন এবং আবার প্রবেশ করে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উযূর অবশিষ্ট পানি নিয়ে বেরিয়ে এলেন। লোকজন তা নেওয়ার জন্য ঝাপিয়ে পড়ল। অতঃপর তিনি আবার তাঁবুতে ঢুকে একটি ছোট্ট বর্শা নিয়ে বেরিয়ে আসলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -ও বেরিয়ে আসলেন। আমি যেন তাঁর পায়ের গোছার উজ্জ্বলতা, এখনো দেখতে পাচ্ছি। বর্শাটি সম্মুখে পুঁতে রাখলেন। অতঃপর যুহরের দু’ রাক‘আত এবং পরে আসরের দু’ রাক‘আত সালাত আদায় করলেন। বর্শার বাহির দিয়ে গাধা ও নারীরা চলাফেরা করছিল।

৩৫৬৭
حَدَّثَنِي الْحَسَنُ بْنُ صَبَّاحٍ الْبَزَّارُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُحَدِّثُ حَدِيثًا لَوْ عَدَّهُ الْعَادُّ لأَحْصَاهُ‏.‏ وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّهُ قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ أَلاَ يُعْجِبُكَ أَبُو فُلاَنٍ جَاءَ فَجَلَسَ إِلَى جَانِبِ حُجْرَتِي يُحَدِّثُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، يُسْمِعُنِي ذَلِكَ وَكُنْتُ أُسَبِّحُ فَقَامَ قَبْلَ أَنْ أَقْضِيَ سُبْحَتِي، وَلَوْ أَدْرَكْتُهُ لَرَدَدْتُ عَلَيْهِ، إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَكُنْ يَسْرُدُ الْحَدِيثَ كَسَرْدِكُمْ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এমনভাবে কথা বলতেন যে, কোন গণনাকারী গুনতে চাইলে তাঁর কথাগুলি গণনা করতে পারত।

৩৫৬৮
حَدَّثَنِي الْحَسَنُ بْنُ صَبَّاحٍ الْبَزَّارُ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يُحَدِّثُ حَدِيثًا لَوْ عَدَّهُ الْعَادُّ لأَحْصَاهُ‏.‏ وَقَالَ اللَّيْثُ حَدَّثَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، أَنَّهُ قَالَ أَخْبَرَنِي عُرْوَةُ بْنُ الزُّبَيْرِ، عَنْ عَائِشَةَ، أَنَّهَا قَالَتْ أَلاَ يُعْجِبُكَ أَبُو فُلاَنٍ جَاءَ فَجَلَسَ إِلَى جَانِبِ حُجْرَتِي يُحَدِّثُ عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم، يُسْمِعُنِي ذَلِكَ وَكُنْتُ أُسَبِّحُ فَقَامَ قَبْلَ أَنْ أَقْضِيَ سُبْحَتِي، وَلَوْ أَدْرَكْتُهُ لَرَدَدْتُ عَلَيْهِ، إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمْ يَكُنْ يَسْرُدُ الْحَدِيثَ كَسَرْدِكُمْ‏.‏

‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, তুমি অমুকের অবস্থা দেখে কি অবাক হও না? তিনি এসে আমার হুজরার পাশে বসে আমাকে শুনিয়ে হাদীস বর্ণনা করেন। আমি তখন সালাতে ছিলাম। আমার সালাত শেষ হবার আগেই তিনি উঠে চলে যান। যদি আমি তাকে পেতাম তবে আমি অবশ্যই তাকে সতর্ক করে দিতাম যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তোমাদের মত দ্রুততার সঙ্গে কথা বলতেন না।

৬১/২৪. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর চোখ বন্ধ থাকত কিন্তু তাঁর অন্তর থাকত বিনিদ্র।

সা‘ঈদ ইব্ন মীনাআ (রহঃ) জাবির (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে উক্ত হাদীসটি বর্ণনা করেন।

৩৫৬৯
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ عَنْ مَالِكٍ عَنْ سَعِيْدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِيْ سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّهُ سَأَلَ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا كَيْفَ كَانَتْ صَلَاةُ رَسُوْلِ اللهِ صلى الله عليه وسلم فِيْ رَمَضَانَ قَالَتْ مَا كَانَ يَزِيْدُ فِيْ رَمَضَانَ وَلَا فِيْ غَيْرِهِ عَلَى إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً يُصَلِّيْ أَرْبَعَ رَكَعَاتٍ فَلَا تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُوْلِهِنَّ ثُمَّ يُصَلِّيْ أَرْبَعًا فَلَا تَسْأَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُوْلِهِنَّ ثُمَّ يُصَلِّيْ ثَلَاثًا فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ تَنَامُ قَبْلَ أَنْ تُوْتِرَ قَالَ تَنَامُ عَيْنِيْ وَلَا يَنَامُ قَلْبِي

আবূ সালামা ইব্ন ‘আবদুর রাহমান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি ‘আয়িশা (রাঃ) -কে জিজ্ঞেস করলেন, রমাযান মাসে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর সালাত কেমন ছিল? ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) রমাযান মাসে ও অন্যান্য সব মাসের রাতে এগার রাক‘আতের অধিক সালাত আদায় রকতেন না। প্রথমে চার রাক‘আত পড়তেন। এ চার রাক‘আত আদায়ের সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করো না। অতঃপর আরো চার রাক‘আত সালাত আদায় করতেন। এ চার রাক‘আতের সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করো না। অতঃপর তিন রাক‘আত আদায় করতেন। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আপনি কি বিতর সালাত আদায়ের পূর্বে ঘুমিয়ে পড়েন? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, আমার চোখ ঘুমায়, আমার অন্তর ঘুমায় না।

৩৫৭০
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيْلُ قَالَ حَدَّثَنِيْ أَخِيْ عَنْ سُلَيْمَانَ عَنْ شَرِيكِ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ نَمِرٍ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ يُحَدِّثُنَا عَنْ لَيْلَةِ أُسْرِيَ بِالنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم مِنْ مَسْجِدِ الْكَعْبَةِ جَاءَهُ ثَلَاثَةُ نَفَرٍ قَبْلَ أَنْ يُوْحَى إِلَيْهِ وَهُوَ نَائِمٌ فِيْ مَسْجِدِ الْحَرَامِ فَقَالَ أَوَّلُهُمْ أَيُّهُمْ هُوَ فَقَالَ أَوْسَطُهُمْ هُوَ خَيْرُهُمْ وَقَالَ آخِرُهُمْ خُذُوْا خَيْرَهُمْ فَكَانَتْ تِلْكَ فَلَمْ يَرَهُمْ حَتَّى جَاءُوْا لَيْلَةً أُخْرَى فِيْمَا يَرَى قَلْبُهُ وَالنَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم نَائِمَةٌ عَيْنَاهُ وَلَا يَنَامُ قَلْبُهُ وَكَذَلِكَ الأَنْبِيَاءُ تَنَامُ أَعْيُنُهُمْ وَلَا تَنَامُ قُلُوْبُهُمْ فَتَوَلَاهُ جِبْرِيْلُ ثُمَّ عَرَجَ بِهِ إِلَى السَّمَاءِ

আনাস ইব্ন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি মসজিদে কা‘বা হতে রাতে অনুষ্ঠিত ইসরা -এর ঘটনা বর্ণনা করছিলেন যে, তিন ব্যক্তি তাঁর নিকট হাযির হলেন মি‘রাজ সম্পর্কে ওয়াহী অবতরণের পূর্বে। তখন তিনি মাসজিদুল হারামে ঘুমিয়ে ছিলেন। তাঁদের প্রথম জন বলল, তাদের কোন জন তিনি? মাঝের জন উত্তর দিল, তিনিই তাদের শ্রেষ্ঠ জন। আর শেষজন বলল, শ্রেষ্ঠ জনকে নিয়ে চল। এ রাতে এটুকুই হলো এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাদেরকে আর দেখেন নাই। অতঃপর আর এক রাতে তাঁরা আসলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর অন্তর তা দেখতে পাচ্ছিল। যেহেতু নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর চোখ ঘুমাত কিন্তু তাঁর অন্তর কখনও ঘুমাত না। এভাবে সকল আম্বিয়ায়ে কেরামের চোখ ঘুমাত কিন্তু অন্তর ঘুমাত না। অতঃপর জিব্রাঈল (আঃ) দায়িত্ব গ্রহণ করলেন এবং নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে নিয়ে আকাশের দিকে চড়তে লাগলেন।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]