সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা জিহাদ ও এর নীতিমালা অধ্যায় ১ম ভাগ হাদিস নং ৪৪১১ – ৪৪৭০


১. অধ্যায়ঃ
যে সকল কাফিরদের কাছে ইসলামের দা’ওয়াত পৌঁছেছে, তাদের বিরুদ্ধে পূর্ব ঘোষণা ব্যতীত যুদ্ধের বৈধতা

৪৪১১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى التَّمِيمِيُّ، حَدَّثَنَا سُلَيْمُ بْنُ أَخْضَرَ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، قَالَ كَتَبْتُ إِلَى نَافِعٍ أَسْأَلُهُ عَنِ الدُّعَاءِ، قَبْلَ الْقِتَالِ قَالَ فَكَتَبَ إِلَىَّ إِنَّمَا كَانَ ذَلِكَ فِي أَوَّلِ الإِسْلاَمِ قَدْ أَغَارَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى بَنِي الْمُصْطَلِقِ وَهُمْ غَارُّونَ وَأَنْعَامُهُمْ تُسْقَى عَلَى الْمَاءِ فَقَتَلَ مُقَاتِلَتَهُمْ وَسَبَى سَبْيَهُمْ وَأَصَابَ يَوْمَئِذٍ – قَالَ يَحْيَى أَحْسِبُهُ قَالَ – جُوَيْرِيَةَ – أَوْ قَالَ الْبَتَّةَ – ابْنَةَ الْحَارِثِ وَحَدَّثَنِي هَذَا الْحَدِيثَ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ وَكَانَ فِي ذَاكَ الْجَيْشِ

ইবনে ‘আওন (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নাফি’ (রহঃ) -কে এ কথা জানতে চেয়ে পত্র লিখলাম যে, যুদ্ধের পূর্বে বিধর্মীদের প্রতি দ্বীনের দা‘ওয়াত দেয়া প্রয়োজন কি-না? ইবনু ‘আওন বলেন, তখন তিনি আমাকে লিখলেন যে, এ (প্রথা) ইসলামের প্রারম্ভিক যুগে ছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বানূ মুসতালিকের উপর অতর্কিত আক্রমণ করলেন এমন অবস্থায় যে, তাদের পশুদের পানি পান করানো হচ্ছিল। তিনি তাদের যোদ্ধাদের হত্যা করলেন এবং বাকীদের বন্দী করলেন। আর সেদিনেই তাঁর হস্তগত হয়েছিল- ইয়াহইয়া বলেন যে, আমার মনে হয় তিনি বলেছেন – ‘জুওয়াইরিয়াহ্’ কিংবা নিশ্চিতরূপে বলেছেন ‘হারিসের কন্যা’। বর্ণনাকারী বলেন, এ হাদীস আমাকে ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) বর্ণনা করেছেন। তিনি তখন সে সেনাদলের মধ্যে ছিলেন। (ই.ফা. ৪৩৭০, ই.সে. ৪৩৭০)

৪৪১২
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏ مِثْلَهُ وَقَالَ جُوَيْرِيَةَ بِنْتَ الْحَارِثِ ‏.‏ وَلَمْ يَشُكَّ ‏.‏

ইবনু ‘আওন (রহঃ) হতে এ একই সূত্র থেকে বর্ণিতঃ

উল্লিখিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি জুওয়াইরিয়াহ্ বিনতু হারিস এর নাম উল্লেখ করেছেন তাতে সন্দেহ পোষণ করেননি। (ই.ফা. ৪৩৭১, ই.সে. ৪৩৭১)

২. অধ্যায়ঃ
খলীফা কর্তৃক সেনাদলের জন্য আমীর নির্বাচিত করা এবং যুদ্ধের নিয়ম-নীতি ও বিভিন্ন নির্দেশিকা সম্পর্কে তাদের উপদেশ প্রদান করা।

৪৪১৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعُ بْنُ الْجَرَّاحِ، عَنْ سُفْيَانَ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ أَمْلاَهُ عَلَيْنَا إِمْلاَءً

সুফইয়ান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

সুফইয়ান (রহঃ) থেকে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন যে, হাদীসটি আমাদের সামনে লিখিয়েছেন।

৪৪১৪
وَحَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ هَاشِمٍ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ، – يَعْنِي ابْنَ مَهْدِيٍّ – حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَلْقَمَةَ بْنِ مَرْثَدٍ، عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ بُرَيْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَمَّرَ أَمِيرًا عَلَى جَيْشٍ أَوْ سَرِيَّةٍ أَوْصَاهُ فِي خَاصَّتِهِ بِتَقْوَى اللَّهِ وَمَنْ مَعَهُ مِنَ الْمُسْلِمِينَ خَيْرًا ثُمَّ قَالَ ‏ “‏ اغْزُوا بِاسْمِ اللَّهِ فِي سَبِيلِ اللَّهِ قَاتِلُوا مَنْ كَفَرَ بِاللَّهِ اغْزُوا وَ لاَ تَغُلُّوا وَلاَ تَغْدِرُوا وَلاَ تَمْثُلُوا وَلاَ تَقْتُلُوا وَلِيدًا وَإِذَا لَقِيتَ عَدُوَّكَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ فَادْعُهُمْ إِلَى ثَلاَثِ خِصَالٍ – أَوْ خِلاَلٍ – فَأَيَّتُهُنَّ مَا أَجَابُوكَ فَاقْبَلْ مِنْهُمْ وَكُفَّ عَنْهُمْ ثُمَّ ادْعُهُمْ إِلَى الإِسْلاَمِ فَإِنْ أَجَابُوكَ فَاقْبَلْ مِنْهُمْ وَكُفَّ عَنْهُمْ ثُمَّ ادْعُهُمْ إِلَى التَّحَوُّلِ مِنْ دَارِهِمْ إِلَى دَارِ الْمُهَاجِرِينَ وَأَخْبِرْهُمْ أَنَّهُمْ إِنْ فَعَلُوا ذَلِكَ فَلَهُمْ مَا لِلْمُهَاجِرِينَ وَعَلَيْهِمْ مَا عَلَى الْمُهَاجِرِينَ فَإِنْ أَبَوْا أَنْ يَتَحَوَّلُوا مِنْهَا فَأَخْبِرْهُمْ أَنَّهُمْ يَكُونُونَ كَأَعْرَابِ الْمُسْلِمِينَ يَجْرِي عَلَيْهِمْ حُكْمُ اللَّهِ الَّذِي يَجْرِي عَلَى الْمُؤْمِنِينَ وَلاَ يَكُونُ لَهُمْ فِي الْغَنِيمَةِ وَالْفَىْءِ شَىْءٌ إِلاَّ أَنْ يُجَاهِدُوا مَعَ الْمُسْلِمِينَ فَإِنْ هُمْ أَبَوْا فَسَلْهُمُ الْجِزْيَةَ فَإِنْ هُمْ أَجَابُوكَ فَاقْبَلْ مِنْهُمْ وَكُفَّ عَنْهُمْ فَإِنْ هُمْ أَبَوْا فَاسْتَعِنْ بِاللَّهِ وَقَاتِلْهُمْ ‏.‏ وَإِذَا حَاصَرْتَ أَهْلَ حِصْنٍ فَأَرَادُوكَ أَنْ تَجْعَلَ لَهُمْ ذِمَّةَ اللَّهِ وَذِمَّةَ نَبِيِّهِ فَلاَ تَجْعَلْ لَهُمْ ذِمَّةَ اللَّهِ وَلاَ ذِمَّةَ نَبِيِّهِ وَلَكِنِ اجْعَلْ لَهُمْ ذِمَّتَكَ وَذِمَّةَ أَصْحَابِكَ فَإِنَّكُمْ أَنْ تُخْفِرُوا ذِمَمَكُمْ وَذِمَمَ أَصْحَابِكُمْ أَهْوَنُ مِنْ أَنْ تُخْفِرُوا ذِمَّةَ اللَّهِ وَذِمَّةَ رَسُولِهِ ‏.‏ وَإِذَا حَاصَرْتَ أَهْلَ حِصْنٍ فَأَرَادُوكَ أَنْ تُنْزِلَهُمْ عَلَى حُكْمِ اللَّهِ فَلاَ تُنْزِلْهُمْ عَلَى حُكْمِ اللَّهِ وَلَكِنْ أَنْزِلْهُمْ عَلَى حُكْمِكَ فَإِنَّكَ لاَ تَدْرِي أَتُصِيبُ حُكْمَ اللَّهِ فِيهِمْ أَمْ لاَ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ هَذَا أَوْ نَحْوَهُ وَزَادَ إِسْحَاقُ فِي آخِرِ حَدِيثِهِ عَنْ يَحْيَى بْنِ آدَمَ قَالَ فَذَكَرْتُ هَذَا الْحَدِيثَ لِمُقَاتِلِ بْنِ حَيَّانَ – قَالَ يَحْيَى يَعْنِي أَنَّ عَلْقَمَةَ يَقُولُهُ لاِبْنِ حَيَّانَ – فَقَالَ حَدَّثَنِي مُسْلِمُ بْنُ هَيْصَمٍ عَنِ النُّعْمَانِ بْنِ مُقَرِّنٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم نَحْوَهُ ‏.‏

সুলাইমান ইবনু বুরাইদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন কোন সেনাবাহিনী কিংবা সেনাদলের উপর আমীর নিযুক্ত করতেন তখন বিশেষতঃ তাকে আল্লাহ তা‘আলাকে ভয় করে চলার উপদেশ দিতেন এবং তাঁর সঙ্গী মুসলিমদের প্রতি আদেশ করতেন তারা যেন ভালভাবে চলে। আর (বিদায়লগ্নে) বলতেন, যুদ্ধ করো আল্লাহর নামে, আল্লাহর পথে। লড়াই করো তাদের বিরুদ্ধে যারা আল্লাহর সঙ্গে কুফরী করেছে। যুদ্ধ চালিয়ে যাও, তবে গনীমাতের মালের খিয়ানত করবে না, চু্ক্তি ভঙ্গ করবে না, শত্রু পক্ষের অঙ্গ বিকৃতি সাধন করবে না। শিশুদেরকে হত্যা করবে না। যখন তুমি মুশরিক শত্রুর সম্মুখীন হবে, তখন তাকে তিনটি বিষয় বা আচরণের প্রতি আহবান জানাবে। তারা এগুলোর মধ্য থেকে যেটিই গ্রহণ করে, তুমি তাদের পক্ষে থেকে তা মেনে নিবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থেকে সরে দাঁড়াবে। প্রথমে তাদের ইসলামের দিকে দাওয়াত দিবে। ‍যদি তারা তোমার এ আহ্বানে সাড়া দেয়, তবে তুমি তাদের পক্ষ থেকে তা মেনে নিবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা থেকে সরে দাঁড়াবে। এরপর তুমি তাদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে মুহাজিরদের এলাকায় (মাদীনায়) চলে যাওয়ার আহ্বান জানাবে। এবং তাদের জানিয়ে দিবে যে, যদি তারা তা কার্যকরী করে, তবে মুহাজিরদের জন্য যেসব উপকার ও দায়-দায়িত্ব রয়েছে, তা তাদের উপর কার্যকরী হবে। আর যদি তারা বাড়ি-ঘর ছেড়ে যেতে অস্বীকার করে, তবে তাদের জানিয়ে দেবে যে, তারা সাধারণ বেদুঈন মুসলিমদের মত গণ্য হবে। তাদের উপর আল্লাহর সে বিধান কার্যকরী হবে, যা মু’মিনদের উপর কার্যকরী হয় এবং তারা গনীমাত ও ফাই [৩২] থেকে কিছুই পাবে না। অবশ্য মুসলিমদের সঙ্গে শামিল হয়ে যুদ্ধ করলে তার অংশীদার হবে। আর যদি ইসলাম গ্রহণ করতে অস্বীকার করে , তাদের কাছে ‘জিযয়াহ’ প্রদানের দাবী জানাবে। যদি তারা তা গ্রহণ করে নেয়, তবে তুমি তাদের পক্ষ থেকে তা মেনে নিবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ থেকে বিরত থাকবে। আর যদি তারা এ দাবী না মানে তবে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে। আর যদি ‍তুমি কোন দুর্গবাসীকে অবরোধ করো এবং তারা যদি তোমার কাছে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের ‍যিম্মাদারী চায়, তবে তুমি তাদের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রসূলের যিম্মাদারী মেনে নিবে না। বরং তাদেরকে তোমার এবং তোমার সাথীদের যিম্মাদারীতে রাখবে। কেননা তারা যদি তোমার ও তোমার সাথীদের যিম্মাদার ভঙ্গ করে, তবে তা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের যিম্মাদারী ভঙ্গের চাইতে কম গুরুতর। আর যদি তোমরা কোন দুর্গের অধিবাসীদের অবরোধ করো, তখন যদি তারা তোমাদের কাছে আল্লাহর নির্দেশ মুতাবিক নেমে আসতে চায়, তবে তোমরা তাদেরকে আল্লাহর হুকুমের উপর নেমে আসতে দিবে না, বরং তুমি তাদেরকে তোমার সিদ্ধান্তের উপর নেমে আসতে দেবে। কেননা তোমার জানা নেই যে, তুমি তাদের মাঝে আল্লাহর নির্দেশ বাস্তবায়িত করতে পারবে কি-না?

‘আবদুর রহমান (রহঃ) এ হাদীস কিংবা এ হাদীসের অনুরূপ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। ইসহাক্ (রহঃ) তাঁর বর্ণিত হাদীসের শেষাংশে ইয়াহইয়া ইবনু আদম (রহঃ) সূত্রে কিছু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি এ হাদীসটি মুকাতিল ইবনু হাইয়্যান (রহঃ) -এর কাছে বর্ণনা করেছি। তখন তিনি ইয়াহইয়া (রহঃ) অর্থাৎ-‘আলকামাহ (রহঃ) -এর কথা উল্লেখ করে বলেন যে, তিনি তা বর্ণনা করেছেন ইবনু হাইয়্যানের উদ্দেশ্যে। অতএব তিনি বলেন যে, মুসলিম ইবনু হায়সাম (রহঃ), নু‘মান ইবনু মুকাররিন (রহঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে এর অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৩৭২, ই.সে. ৪৩৭২)

[৩২] যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধ ছাড়া শত্রুবাহিনীর ফেলে যাওয়া মালকে মালে ফাই বলে।

৪৪১৫
وَحَدَّثَنِي حَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، حَدَّثَنِي عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنِي عَلْقَمَةُ بْنُ مَرْثَدٍ، أَنَّ سُلَيْمَانَ بْنَ بُرَيْدَةَ، حَدَّثَهُ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا بَعَثَ أَمِيرًا أَوْ سَرِيَّةً دَعَاهُ فَأَوْصَاهُ ‏.‏ وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِمَعْنَى حَدِيثِ سُفْيَانَ ‏.‏

বুরাইদাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন কোন সেনাপতিকে অথবা সেনাবাহিনীকে প্রেরণ করতেন, তখন তাঁকে ডেকে কিছু উপদেশ দিতেন। ….. অতঃপর তিনি সুফ্ইয়ান (রহঃ) -এর বর্ণিত হাদীসের মর্মার্থ অনুসারে অবশিষ্ট হাদীস বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৪৩৭৩, ই.সে. ৪৩৭৩)

৪৪১৬
حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْوَهَّابِ الْفَرَّاءُ، عَنِ الْحُسَيْنِ بْنِ الْوَلِيدِ، عَنْ شُعْبَةَ، بِهَذَا ‏.‏

শু‘বাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৩৭৪, ই.সে. ৪৩৭৪)

৩. অধ্যায়ঃ
কাজ-কর্মে সহজ পন্থা অবলম্বন ও ঘৃণা-বিদ্বেষ না ছড়ানোর নির্দেশনা

৪৪১৭
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ – وَاللَّفْظُ لأَبِي بَكْرٍ – قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ عَنْ بُرَيْدِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا بَعَثَ أَحَدًا مِنْ أَصْحَابِهِ فِي بَعْضِ أَمْرِهِ قَالَ ‏ “‏ بَشِّرُوا وَلاَ تُنَفِّرُوا وَيَسِّرُوا وَلاَ تُعَسِّرُوا ‏”‏ ‏.‏

আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন তাঁর কোন সাহাবীকে কোন কাজে পাঠাতেন, তখন তাঁকে এ কথা বলতেন যে, তোমরা লোকদেরকে শুভ সংবাদ দেবে; ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়াবে না, সহজ করবে; কঠিন করবে না। (ই.ফা. ৪৩৭৫, ই.সে. ৭৩৭৫)

৪৪১৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم بَعَثَهُ وَمُعَاذًا إِلَى الْيَمَنِ فَقَالَ ‏ “‏ يَسِّرَا وَلاَ تُعَسِّرَا وَبَشِّرَا وَلاَ تُنَفِّرَا وَتَطَاوَعَا وَلاَ تَخْتَلِفَا ‏”‏ ‏.‏

সা‘ঈদ ইবনু আবূ বুরদাহ্ (রহঃ) তার দাদা থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁকে এবং মু‘আয (রাঃ) -কে যখন ইয়ামানে পাঠান তখন উপদেশ দিলেন তোমরা উভয়েই (সেখানে) সহজ পথ অবলম্বন করবে, কঠিন পথ গ্রহণ করবে না, সুসংবাদ দেবে, ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়াবে না, সম্মিলিতভাবে কাজ করবে এবং মতবিরোধ করবে না। (ই.ফা. ৪৩৭৬, ই.সে. ৪৩৭৬)

৪৪১৯
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَابْنُ أَبِي خَلَفٍ عَنْ زَكَرِيَّاءَ بْنِ عَدِيٍّ، أَخْبَرَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ، كِلاَهُمَا عَنْ سَعِيدِ بْنِ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ نَحْوَ حَدِيثِ شُعْبَةَ وَلَيْسَ فِي حَدِيثِ زَيْدِ بْنِ أَبِي أُنَيْسَةَ ‏ “‏ وَتَطَاوَعَا وَلاَ تَخْتَلِفَا ‏”‏ ‏.‏

সা’ঈদ ইবনু আবূ বুরদাহ (রহঃ) -এর দাদার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে উল্লেখিত শু‘বাহ্ (রহঃ) -এর হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। কিন্তু যায়দ ইবনু আবূ উনাইসাহ্ (রাঃ) -এর হাদীসে “এবং সম্মিলিতভাবে কাজ করবে, মতবিরোধ করবে না” এ অংশটুকু উল্লেখ নেই। (ই.ফা. ৪৩৭৭, ই.সে. ৪৩৭৭)

৪৪২০
حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ الْعَنْبَرِيُّ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، عَنْ أَنَسٍ، ح. وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ، الْوَلِيدِ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، كِلاَهُمَا عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ أَبِي التَّيَّاحِ، قَالَ سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ يَسِّرُوا وَلاَ تُعَسِّرُوا وَسَكِّنُوا وَلاَ تُنَفِّرُوا ‏”‏.

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি শুনেছি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, সহজভাবে কাজ করবে, কঠিনতা আরোপ করবে না, স্বস্তি (আরাম) প্রদান করবে এবং ঘৃণা-বিদ্বেষ ছড়াবে না। (ই.ফা. ৪৩৭৮, ই.সে. ৪৩৭৮)

৪. অধ্যায়ঃ
চুক্তিভঙ্গ হারাম

৪৪২১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، وَأَبُو أُسَامَةَ ح وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ، بْنُ حَرْبٍ وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ – يَعْنِي أَبَا قُدَامَةَ السَّرَخْسِيَّ – قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، – وَهُوَ الْقَطَّانُ – كُلُّهُمْ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِذَا جَمَعَ اللَّهُ الأَوَّلِينَ وَالآخِرِينَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرْفَعُ لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ فَقِيلَ هَذِهِ غَدْرَةُ فُلاَنِ بْنِ فُلاَنٍ ‏”‏ ‏.‏

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: যখন আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামাত দিবসে পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সকলকে একত্রিত করবেন, তখন প্রত্যেক প্রতারকের জন্য পৃথক পৃথক পতাকা উড্ডীন করা হবে এবং বলা হবে যে, এটি অমুকের পুত্র অমুকের প্রতারণার চিহ্ন। (ই.ফা. ৪৩৭৯, ই.সে. ৪৩৭৯)

৪৪২২
حَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ الْعَتَكِيُّ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، ح وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ، الرَّحْمَنِ الدَّارِمِيُّ حَدَّثَنَا عَفَّانُ، حَدَّثَنَا صَخْرُ بْنُ جُوَيْرِيَةَ، كِلاَهُمَا عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِهَذَا الْحَدِيثِ ‏.‏

ইবনু ‘উমার (রাঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৩৮০, ই.সে. ৪৩৮০)

৪৪২৩
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، حُجْرٍ عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ جَعْفَرٍ، عَنْ عَبْدِ، اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ أَنَّهُ سَمِعَ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِنَّ الْغَادِرَ يَنْصِبُ اللَّهُ لَهُ لِوَاءً يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَيُقَالُ أَلاَ هَذِهِ غَدْرَةُ فُلاَنٍ ‏”‏ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: নিশ্চয়ই প্রতারণাকারীর জন্য আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামাত দিবসে একটি পতাকা উড্ডীন করবেন। তখন বলা হবে যে, এটি অমুকের ধোঁকাবাজির পতাকা। (ই.ফা. ৪৩৮১, ই.সে. ৪৩৮১)

৪৪২৪
حَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ حَمْزَةَ، وَسَالِمٍ، ابْنَىْ عَبْدِ اللَّهِ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏”‏ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, প্রত্যেক প্রতারণাকারীর জন্য কিয়ামাত দিবসে একটি পতাকা থাকবে। (ই.ফা. ৪৩৮২, ই.সে. ৪৩৮২)

৪৪২৫
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، ح وَحَدَّثَنِي بِشْرُ، بْنُ خَالِدٍ أَخْبَرَنَا مُحَمَّدٌ، – يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ – كِلاَهُمَا عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَبِي وَائِلٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُقَالُ هَذِهِ غَدْرَةُ فُلاَنٍ ‏”‏ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ প্রত্যেক অঙ্গীকার ভঙ্গকারীর জন্য কিয়ামাত দিবসে একটি পতাকা থাকবে। তখন বলা হবে যে, এটি অমুকের প্রতারণার পতাকা। (ই.ফা. ৪৩৮৩, ই.সে. ৪৩৮৩)

৪৪২৬
وَحَدَّثَنَاهُ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ، ح وَحَدَّثَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ، بْنُ سَعِيدٍ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، جَمِيعًا عَنْ شُعْبَةَ، فِي هَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏ وَلَيْسَ فِي حَدِيثِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ ‏ “‏ يُقَالُ هَذِهِ غَدْرَةُ فُلاَنٍ ‏”‏ ‏.‏

শু‘বাহ (রাঃ) থেকে একই সূত্র থেকে বর্ণিতঃ

শু‘বাহ (রাঃ) থেকে একই সূত্রে হাদীস বর্ণনা করেছেন। আর ‘আবদুর রহমান (রাঃ) -এর হাদীসে “এটি অমুকের বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক” এ কথাটির উল্লেখ নেই। (ই.ফা. ৪৩৮৪, ই.সে. ৪৩৮৪)

৪৪২৭
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ آدَمَ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ عَبْدِ الْعَزِيزِ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُعْرَفُ بِهِ يُقَالُ هَذِهِ غَدْرَةُ فُلاَنٍ ‏”‏ ‏.‏

আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: প্রত্যেক অঙ্গীকার ভঙ্গকারীর জন্য কিয়ামাত দিবসে একটি পতাকা থাকবে, যদদ্বারা তাকে চেনা যাবে। আর বলা হবে যে, এটি অমুকের বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক। (ই.ফা. ৪৩৮৫, ই.সে. ৪৩৮৫)

৪৪২৮
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، عَنْ شُعْبَةَ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُعْرَفُ بِهِ ‏”‏ ‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: প্রত্যেক অঙ্গীকার ভঙ্গকারীর জন্য কিয়ামাত দিবসে একটি পতাকা থাকবে, যেটা দিয়ে তাকে চেনা যাবে। (ই.ফা. ৪৩৮৬, ই.সে. ৪৩৮৬)

৪৪২৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَعُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ سَعِيدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ خُلَيْدٍ، عَنْ أَبِي نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ عِنْدَ اسْتِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ‏”‏ ‏.‏

আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: কিয়ামাত দিবসে প্রত্যেক অঙ্গীকার ভঙ্গকারীর নিতম্বের (পাছা) পার্শ্বে একটি পতাকা থাকবে। (ই.ফা. ৪৩৮৭, ই.সে. ৪৩৮৭)

৪৪৩০
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا الْمُسْتَمِرُّ بْنُ الرَّيَّانِ، حَدَّثَنَا أَبُو نَضْرَةَ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لِكُلِّ غَادِرٍ لِوَاءٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يُرْفَعُ لَهُ بِقَدْرِ غَدْرِهِ أَلاَ وَلاَ غَادِرَ أَعْظَمُ غَدْرًا مِنْ أَمِيرِ عَامَّةٍ ‏”‏ ‏.‏

আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

প্রত্যেক ধোঁকাবাজের জন্য কিয়ামাত দিবসে একটি পতাকা থাকবে আর তা তার বিশ্বাসঘাতকতার পরিমাণ অনুযায়ী উঁচু করা হবে। সাবধান! জনগণের শাসক হয়ে যে বিশ্বাসঘাতকতা করে, তার চেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতক আর নেই। (ই.ফা. ৪৩৮৮, ই.সে. ৪৩৮৮)

৫. অধ্যায়ঃ
যুদ্ধের মধ্যে শত্রুকে ধোঁকা দেয়ার বৈধতা

৪৪৩১
وَحَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ السَّعْدِيُّ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، – وَاللَّفْظُ لِعَلِيٍّ وَزُهَيْرٍ – قَالَ عَلِيٌّ أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ سَمِعَ عَمْرٌو، جَابِرًا يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ الْحَرْبُ خَدْعَةٌ ‏”‏ ‏.‏

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: যুদ্ধ কৌশল ও ছলনারই নাম। (ই.ফা. ৪৩৮৯, ই.সে. ৪৩৮৯)

৪৪৩২
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَهْمٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏الْحَرْبُ خُدْعَةٌ ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: যুদ্ধ কুটকৌশলেরই নাম। (ই.ফা. ৪৩৯০, ই.সে. ৪৩৯০)

৬. অধ্যায়ঃ
শত্রুর সাথে সম্মুখ যুদ্ধের আকাঙ্খা করা নিষেধ; তবে যুদ্ধের মুখোমুখির বেলায় ধৈর্যধারণ করার নির্দেশ

৪৪৩৩
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْحُلْوَانِيُّ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو عَامِرٍ الْعَقَدِيُّ، عَنِ الْمُغِيرَةِ، – وَهُوَ ابْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْحِزَامِيُّ – عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي، هُرَيْرَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ لاَ تَمَنَّوْا لِقَاءَ الْعَدُوِّ فَإِذَا لَقِيتُمُوهُمْ فَاصْبِرُوا‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: তোমরা শত্রুর মুখোমুখি হওয়ার আকাঙ্খা করো না আর যখন মুখোমুখি হয়ে পড়ো তখন ধৈর্যধারণ করবে। (ই.ফা. ৪৩৯১, ই.সে. ৪৩৯১)

৪৪৩৪
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي مُوسَى، بْنُ عُقْبَةَ عَنْ أَبِي النَّضْرِ، عَنْ كِتَابِ، رَجُلٍ مِنْ أَسْلَمَ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم يُقَالُ لَهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ أَبِي أَوْفَى فَكَتَبَ إِلَى عُمَرَ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ حِينَ سَارَ إِلَى الْحَرُورِيَّةِ يُخْبِرُهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ فِي بَعْضِ أَيَّامِهِ الَّتِي لَقِيَ فِيهَا الْعَدُوَّ يَنْتَظِرُ حَتَّى إِذَا مَالَتِ الشَّمْسُ قَامَ فِيهِمْ فَقَالَ ‏”‏ يَا أَيُّهَا النَّاسُ لاَ تَتَمَنَّوْا لِقَاءَ الْعَدُوِّ وَاسْأَلُوا اللَّهَ الْعَافِيَةَ فَإِذَا لَقِيتُمُوهُمْ فَاصْبِرُوا وَاعْلَمُوا أَنَّ الْجَنَّةَ تَحْتَ ظِلاَلِ السُّيُوفِ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ قَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ ‏”‏ اللَّهُمَّ مُنْزِلَ الْكِتَابِ وَمُجْرِيَ السَّحَابِ وَهَازِمَ الأَحْزَابِ اهْزِمْهُمْ وَانْصُرْنَا عَلَيْهِمْ ‏”‏ ‏.‏

আবূ নাযর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাহাবাদের মধ্য থেকে আসলাম গোত্রের এক ব্যক্তির যার নাম ছিল আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা-চিঠি থেকে বর্ণনা করেছেন। এ চিঠি তিনি লিখেছিলেন উমার ইবনু উবাইদুল্লাহ (রাঃ)-এর নিকট, যখন তিনি হারূরিয়্যাহ (খারিজীদের বিরুদ্ধে) অভিযানে যাচ্ছিলেন। এতে তিনি তাঁকে অবহিত করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যেসব যুদ্ধে শত্রু বাহিনীর মুখোমুখি হয়েছিলেন তার কোন একযুদ্ধে অপেক্ষা করতে লাগলেন। অবশেষে যখন সূর্য ঢলে পড়ল তখন তিনি সঙ্গীদের মধ্যে দাঁড়িয়ে বললেনঃহে লোকজন! তোমরা শত্রুর মুখোমুখি হওয়ার আকাঙ্খা করো না। বরং আল্লাহর কাছে নিরাপত্তার প্রার্থনা করো। আর যখন তোমরা শত্রুর সামনা-সামনি হয়ে যাও তখন ধৈর্য ধারণ করবে। আর জেনে রেখো যে, জান্নাত তরবারির ছায়াতলে। তারপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দাঁড়িয়ে দুআ করলেন, ইয়া আল্লাহ! কিতাব অবতীর্ণকারী, মেঘমালা পরিচালনাকারী এবং শত্রুদলকে পরাস্তকারী। তুমি তাদের পরাস্ত করো এবং তাদের উপর আমাদেরকে সাহায্য করো। (ই.ফা. ৪৩৯২, ই.সে. ৪৩৯২)

৭. অধ্যায়ঃ
শত্রুর সাথে যুদ্ধের সময় (আল্লাহর কাছে বিজয়ের জন্য সাহায্য) প্রার্থনা করা মুস্তাহাব

৪৪৩৫
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، حَدَّثَنَا خَالِدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى، قَالَ دَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى الأَحْزَابِ فَقَالَ ‏ “‏ اللَّهُمَّ مُنْزِلَ الْكِتَابِ سَرِيعَ الْحِسَابِ اهْزِمِ الأَحْزَابَ اللَّهُمَّ اهْزِمْهُمْ وَزَلْزِلْهُمْ ‏”‏ ‏.‏

আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সম্মিলিত বাহিনীর বিরুদ্ধে (খন্দকের যুদ্ধে) এভাবে দুআ করলেন যে, হে আল্লাহ! কিতাব নাযিলকারী, দ্রুত হিসেব গ্রহণকারী, তুমি সম্মিলিত বাহিনীকে পরাজিত করে দাও। হে আল্লাহ! তুমি তাদের পরাজিত করে দাও এবং তাদের কম্পমান করে দাও। (ই.ফা. ৪৩৯৩, ই.সে. ৪৩৯৩)

৪৪৩৬
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعُ بْنُ الْجَرَّاحِ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي، خَالِدٍ قَالَ سَمِعْتُ ابْنَ أَبِي أَوْفَى، يَقُولُ دَعَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ بِمِثْلِ حَدِيثِ خَالِدٍ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ ‏”‏ هَازِمَ الأَحْزَابِ ‏”‏ ‏.‏ وَلَمْ يَذْكُرْ قَوْلَهُ ‏”‏ اللَّهُمَّ ‏”‏ ‏.‏

ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এভাবে দু’আ করলেন …… পরবর্তী অংশ উল্লিখিত খালিদের হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে তিনি এ (আরবী) বাক্যের পরিবর্তে (আরবী) বাক্যটি এনেছেন অর্থ শত্রু সৈন্যদের পরাস্তকারী। আর তিনি আল্লাহুম্মা “হে আল্লাহ!” শব্দটির উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৪৩৯৪, ই.সে. ৪৩৯৪)

৪৪৩৭
وَحَدَّثَنَاهُ إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَابْنُ أَبِي عُمَرَ، جَمِيعًا عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَزَادَ ابْنُ أَبِي عُمَرَ فِي رِوَايَتِهِ ‏ “‏ مُجْرِيَ السَّحَابِ ‏”‏ ‏.‏

ইসমা’ঈল (রহঃ) উক্ত সানাদ থেকে বর্ণিতঃ

তবে ইবনু আবূ ‘উমার (রহঃ) তাঁর বর্ণনায় (আরবী) “মেঘমালা পরিচালনাকারী” বাক্যটি অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৩৯৫, ই.সে. ৪৩৯৫)

৪৪৩৮
وَحَدَّثَنِي حَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ، حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ ثَابِتٍ، عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُولُ يَوْمَ أُحُدٍ ‏ “‏ اللَّهُمَّ إِنَّكَ إِنْ تَشَأْ لاَ تُعْبَدْ فِي الأَرْضِ ‏”‏ ‏.‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উহূদের যুদ্ধের দিন বলেছিলেন, হে আল্লাহ! তুমি যদি চাও পৃথিবীতে তোমার ইবাদাত করা হবে না। [৩৩] (ই.ফা. ৪৩৯৬, ই.সে. ৪৩৯৬)

[৩৩] এ প্রার্থনায় আল্লাহ তা’আলার ফয়সালায় নিজেদের সপে দেয়া ফুটে উঠেছে। অন্য বর্ণনায় এ দু’আটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বাদর দিবসে করেছিলেন বলে রয়েছে। সম্ভবত বাদর ও উহুদ উভয় যুদ্ধে নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এ দু’আ করেছিলেন। (সহীহ মুসলিম- মুখতাসার শারহে নাবাবী, আল্লামা ওয়াহীদুজ্জামান ৫ম খণ্ড, ৭ পৃষ্ঠা)

৮. অধ্যায়ঃ
যুদ্ধে নারী ও শিশুদের হত্যা করা হারাম

৪৪৩৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَمُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ، سَعِيدٍ حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ امْرَأَةً، وُجِدَتْ، فِي بَعْضِ مَغَازِي رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَقْتُولَةً فَأَنْكَرَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَتْلَ النِّسَاءِ وَالصِّبْيَانِ‏.‏

‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কোন এক যুদ্ধে একজন মহিলাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল। তিনি তখন নারী ও শিশুদের হত্যা করতে বারণ করেছিলেন। (ই.ফা. ৪৩৯৭, ই.সে. ৪৩৯৭)

৪৪৪০
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بِشْرٍ، وَأَبُو أُسَامَةَ قَالاَ حَدَّثَنَا عُبَيْدُ، اللَّهِ بْنُ عُمَرَ عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ وُجِدَتِ امْرَأَةٌ مَقْتُولَةً فِي بَعْضِ تِلْكَ الْمَغَازِي فَنَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنْ قَتْلِ النِّسَاءِ وَالصِّبْيَانِ ‏.‏

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

কোন এক মহিলাকে কোন এক যুদ্ধ ক্ষেত্রে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নারী ও শিশুদের হত্যা করতে নিষেধ করেছিলেন। (ই.ফা. ৪৩৯৮, ই.সে. ৪৩৯৮)

৯. অধ্যায়ঃ
রাতের আকস্মিক হামলায় অনিচ্ছাকৃতভাবে নারী ও শিশু হত্যায় দোষ নেই

৪৪৪১
وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَسَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، جَمِيعًا عَنِ ابْنِ عُيَيْنَةَ، قَالَ يَحْيَى أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ الصَّعْبِ، بْنِ جَثَّامَةَ قَالَ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الذَّرَارِيِّ مِنَ الْمُشْرِكِينَ يُبَيَّتُونَ فَيُصِيبُونَ مِنْ نِسَائِهِمْ وَذَرَارِيِّهِمْ ‏.‏ فَقَالَ ‏ “‏ هُمْ مِنْهُمْ ‏”‏ ‏.‏

সা’ব ইবনু জাসসামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, মুশরিকদের শিশু সন্তান সম্পর্কে যখন রাতের অন্ধকারে আকস্মিক হামলা করা হয়, তখন তাদের নারী ও শিশুরাও আক্রান্ত হয়। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃতারাও তাদের (মুশরিক যোদ্ধাদের) অন্তর্ভুক্ত। [৩৪] (ই.ফা. ৪৩৯৯, ই.সে. ৪৩৯৯)

[৩৪] রাতের আঁধারে তাদের আলাদা করা যায় না বিধায় দুনিয়ার হিসেবে তারা পুরুষ যোদ্ধাদের মধ্যে শামিল। তবে পরকালে কাফিরদের সন্তানদের অবস্থা কি হবে সে ব্যাপারে ভিন্নতর মতামত রয়েছে। বিশুদ্ধ মত হলো তারা জান্নাতী। দ্বিতীয় মত হলো, তারা জাহান্নামী। তৃতীয় মত হলো, জানা নেই। (শারাহে মুসলিম-ইমাম নাবাবী, ২য় খণ্ড, ৮৪ পৃষ্ঠা)

৪৪৪২
حَدَّثَنَا عَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ، اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ الصَّعْبِ بْنِ جَثَّامَةَ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا نُصِيبُ فِي الْبَيَاتِ مِنْ ذَرَارِيِّ الْمُشْرِكِينَ قَالَ ‏ “‏ هُمْ مِنْهُمْ ‏”‏ ‏.‏

সা’ব ইবনু জাসসামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমরা রাতের অন্ধকারে আকস্মিক হামলায় মুশরিকদের শিশুদের উপরও আঘাত করে ফেলি। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তারাও তাদের (মুশরিক যোদ্ধাদের) মধ্যে গণ্য। (ই.ফা. ৪৪০০, ই.সে. ৪৪০০)

৪৪৪৩
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو، بْنُ دِينَارٍ أَنَّ ابْنَ شِهَابٍ، أَخْبَرَهُ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُتْبَةَ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ الصَّعْبِ بْنِ جَثَّامَةَ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قِيلَ لَهُ لَوْ أَنَّ خَيْلاً أَغَارَتْ مِنَ اللَّيْلِ فَأَصَابَتْ مِنْ أَبْنَاءِ الْمُشْرِكِينَ قَالَ ‏ “‏ هُمْ مِنْ آبَائِهِمْ ‏”‏ ‏.‏

সা’ব ইবনু জাসসামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করা হলো, যদি অশ্বারোহীগণ রাতের অন্ধকারে হামলা চালায় এবং তাতে মুশরিকদের শিশু সন্তান নিহত হয়, (তবে এর হুকুম কী)? তিনি বললেনঃতারাও তাদের পিতা ও দাদার মধ্যে গণ্য। (ই.ফা. ৪৪০১, ই.সে. ৪৪০১)

১০. অধ্যায়ঃ
কাফিরদের গাছ-পালা কাটা ও জ্বালিয়ে দেয়া বৈধ

৪৪৪৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، وَمُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، ح وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ، سَعِيدٍ حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حَرَّقَ نَخْلَ بَنِي النَّضِيرِ وَقَطَعَ وَهِيَ الْبُوَيْرَةُ ‏.‏ زَادَ قُتَيْبَةُ وَابْنُ رُمْحٍ فِي حَدِيثِهِمَا فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ ‏{‏ مَا قَطَعْتُمْ مِنْ لِينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوهَا قَائِمَةً عَلَى أُصُولِهَا فَبِإِذْنِ اللَّهِ وَلِيُخْزِيَ الْفَاسِقِينَ‏}‏

‘আব্দুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নাযীর গোত্রের খেজুর বাগান জ্বালিয়ে দিলেন এবং কেটে দিলেন। বুওয়াইরাহ ছিল সে বাগানের নাম।

কুতাইবাহ এবং ইবনু রুমহ (রহঃ) উভয়েই তাঁদের হাদীসে অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন। এরপর মহান আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করেন: “তোমরা যেসব খেজুর বৃক্ষ কেটে ফেলেছো কিংবা তার কাণ্ডের উপর খাড়া রেখেছ, সবই ছিল আল্লাহর নির্দেশে, যাতে তিনি পাপাচারীদের অপদস্থ করেন।” (ই.ফা. ৪৪০২, ই.সে. ৪৪২০)

৪৪৪৫
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَهَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ مُوسَى، بْنِ عُقْبَةَ عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَطَعَ نَخْلَ بَنِي النَّضِيرِ وَحَرَّقَ وَلَهَا يَقُولُ حَسَّانُ وَهَانَ عَلَى سَرَاةِ بَنِي لُؤَىٍّ حَرِيقٌ بِالْبُوَيْرَةِ مُسْتَطِيرُ وَفِي ذَلِكَ نَزَلَتْ ‏{‏ مَا قَطَعْتُمْ مِنْ لِينَةٍ أَوْ تَرَكْتُمُوهَا قَائِمَةً عَلَى أُصُولِهَا‏}‏ الآيَةَ ‏.‏

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নাযীর গোত্রের খেজুর বাগান কেটেছিলেন এবং জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। এ সম্পর্কে কবি হাসসান (রাঃ) বলেন, “বনী লুওয়াই (অর্থাৎ-কুরায়শ) এর নেতাদের কাছে বুওয়াইরায় আগুনের লেলিহান শিখা খুব সহজ হয়ে গেছে।” আর এ সম্পর্কেই নাযিল হয়েছে এ আয়াত : (অর্থ) “তোমরা যেসব খেজুর গাছ কেটেছো অথবা তা কাণ্ডের উপর রেখে দিয়েছ” আয়াতটির শেষ পর্যন্ত। (ই.ফা. ৪৪০৩, ই.সে. ৪৪০৩)

৪৪৪৬
وَحَدَّثَنَا سَهْلُ بْنُ عُثْمَانَ، أَخْبَرَنِي عُقْبَةُ بْنُ خَالِدٍ السَّكُونِيُّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، قَالَ حَرَّقَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَخْلَ بَنِي النَّضِيرِ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নাযীর গোত্রের খেজুর বাগান জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। (ই.ফা. ৪৪০৪, ই.সে. ৪৪০৪)

১১. অধ্যায়ঃ
‘বিশেষভাবে এ উম্মাত’ এর জন্য গনীমাত হালাল

৪৪৪৭
وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، عَنْ مَعْمَرٍ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ، بْنُ رَافِعٍ – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ غَزَا نَبِيٌّ مِنَ الأَنْبِيَاءِ فَقَالَ لِقَوْمِهِ لاَ يَتْبَعْنِي رَجُلٌ قَدْ مَلَكَ بُضْعَ امْرَأَةٍ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يَبْنِيَ بِهَا وَلَمَّا يَبْنِ وَلاَ آخَرُ قَدْ بَنَى بُنْيَانًا وَلَمَّا يَرْفَعْ سُقُفَهَا وَلاَ آخَرُ قَدِ اشْتَرَى غَنَمًا أَوْ خَلِفَاتٍ وَهُوَ مُنْتَظِرٌ وِلاَدَهَا ‏.‏ قَالَ فَغَزَا فَأَدْنَى لِلْقَرْيَةِ حِينَ صَلاَةِ الْعَصْرِ أَوْ قَرِيبًا مِنْ ذَلِكَ فَقَالَ لِلشَّمْسِ أَنْتِ مَأْمُورَةٌ وَأَنَا مَأْمُورٌ اللَّهُمَّ احْبِسْهَا عَلَىَّ شَيْئًا ‏.‏ فَحُبِسَتْ عَلَيْهِ حَتَّى فَتَحَ اللَّهُ عَلَيْهِ – قَالَ – فَجَمَعُوا مَا غَنِمُوا فَأَقْبَلَتِ النَّارُ لِتَأْكُلَهُ فَأَبَتْ أَنْ تَطْعَمَهُ فَقَالَ فِيكُمْ غُلُولٌ فَلْيُبَايِعْنِي مِنْ كُلِّ قَبِيلَةٍ رَجُلٌ ‏.‏ فَبَايَعُوهُ فَلَصِقَتْ يَدُ رَجُلٍ بِيَدِهِ فَقَالَ فِيكُمُ الْغُلُولُ فَلْتُبَايِعْنِي قَبِيلَتُكَ ‏.‏ فَبَايَعَتْهُ – قَالَ – فَلَصِقَتْ بِيَدِ رَجُلَيْنِ أَوْ ثَلاَثَةٍ فَقَالَ فِيكُمُ الْغُلُولُ أَنْتُمْ غَلَلْتُمْ – قَالَ – فَأَخْرَجُوا لَهُ مِثْلَ رَأْسِ بَقَرَةٍ مِنْ ذَهَبٍ – قَالَ – فَوَضَعُوهُ فِي الْمَالِ وَهُوَ بِالصَّعِيدِ فَأَقْبَلَتِ النَّارُ فَأَكَلَتْهُ ‏.‏ فَلَمْ تَحِلَّ الْغَنَائِمُ لأَحَدٍ مِنْ قَبْلِنَا ذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ تَبَارَكَ وَتَعَالَى رَأَى ضَعْفَنَا وَعَجْزَنَا فَطَيَّبَهَا لَنَا ‏”‏ ‏.‏

হাম্মাম ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে যে সকল হাদীস আমাদেরকে বর্ণনা করেছেন, এর মধ্যে এটিও যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: নাবীগণের মধ্যে কোন এক নবী [ইউশা’ ইবনু নূন (‘আঃ) যিনি লাম (বাহরাইন) দেশে মূসা (‘আঃ)-এর প্রতিনিধি ছিলেন] জিহাদে রওনা দিলেন। তিনি তাঁর লোকদের বললেন, এমন লোক যেন আমার সাথে অভিযানে না আসে, যে ব্যক্তি সদ্য বিবাহ করেছে এবং বাসর যাপনে ইচ্ছুক; কিন্তু এখনো তা সম্পন্ন হয়নি। সে ব্যক্তি যেন না আসে যে গৃহ নির্মাণ করেছে এবং এখনো তার ছাদ দেয়নি এবং সে ব্যক্তি যেন না আসে যে গর্ভবতী ছাগল বা উটনী ক্রয় করেছে এবং সেগুলোর বাচ্চা প্রসবের অপক্ষায় আছে। রাবী বলেন, তারপর তিনি জিহাদে গমন করেন এবং ‘আসরের সালাতের সময় যুদ্ধ ক্ষেত্রে নিকটবর্তী এক গ্রামে পৌঁছেন। তখন তিনি সূর্যকে লক্ষ্য করে বললেন, তুমিও আদিষ্ট এবং আমিও আদিষ্ট। ইয়া আল্লাহ! তুমি একে আমার জন্য কিছুক্ষণ থামিয়ে রাখো (সূর্যাস্তের পূর্বেই বিজয় পাওয়ার জন্য)। সূর্যকে থামিয়ে দেয়া হলো। অবশেষে আল্লাহ তা’আলা তাঁকে বিজয় প্রদান করলেন। রাবী বলেন, তারা গনীমাতের মাল একত্রিত করল। তখন তা খাওয়ার জন্য আগুন এগিয়ে এলো। কিন্তু অগ্নি তা খেতে অস্বীকার করল। [৩৫] তখন সে নবী (‘আঃ) বললেন, তোমাদের মধ্যে আত্মসাৎকারী রয়েছে। কাজেই তোমাদের প্রত্যেক গোত্র থেকে একজন করে আমার কাছে বাই’আত করবে। সুতরাং তারা তাঁর কাছে বাই’আত করল। এতে এক ব্যক্তির হাত নবীর হাতের সাথে লেগে গেল। তখন তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে আত্মসাৎকারী রয়েছে। কাজেই তোমাদের গোত্রের লোকেরা আমার কাছে বাই’আত করুক। অতঃপর তার ঐ গোত্রের লোকেরা বাই’আত করল। রাবী বলেন, তখন নবী (‘আঃ)-এর হাত দু’ বা তিন ব্যক্তির হাতের সাথে লেগে গেল। তখন তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে আত্মসাৎকারী রয়েছে। তোমরা আত্মসাৎ করেছ। রাবী বলেন, তারপর তারা নাবীর কাছে একটি গাভীর মাথার পরিমাণ স্বর্ণখন্ড বের করে দিলো। আর তারা সেটিও ঐ সম্পদের সাথে রাখল। তারপর আগুন এগিয়ে এসে তা খেয়ে ফেলল। আমাদের পূর্বে কারো জন্য গনীমাতের মাল হালাল ছিল না। আল্লাহ তা’আলা আমাদের দুর্বলতা ও অক্ষমতা দেখে আমাদের জন্য গনীমাতের মাল হালাল করে দিলেন। (ই.ফা. ৪৪০৫, ই.সে. ৪৪০৫)

[৩৫] পূর্বযুগে যুদ্ধলব্ধ মাল যোদ্ধাগণের জন্য হালাল ছিল না। আকাশ থেকে আগুন এসে পুড়িয়ে যাওয়ার নিয়ম চালু ছিল। শর্ত তাতে আত্মসাৎ না থাকলে। অন্যথায় আগুন এসে তা গ্রহণ করতেন।

১২. অধ্যায়ঃ
গনীমাতের মালের বর্ণনা

৪৪৪৮
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ سِمَاكٍ، عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ أَخَذَ أَبِي مِنَ الْخُمْسِ سَيْفًا فَأَتَى بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ هَبْ لِي هَذَا ‏.‏ فَأَبَى فَأَنْزَلَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ ‏{‏ يَسْأَلُونَكَ عَنِ الأَنْفَالِ قُلِ الأَنْفَالُ لِلَّهِ وَالرَّسُولِ‏}‏

মাস’আব ইবনু সা’দ (রহঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ

আমার পিতা যুদ্ধলব্ধ সম্পদের এক পঞ্চমাংশ হতে কিছু বস্তু নিয়ে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে এসে বলেন, এটি আমাকে উপঢৌকন প্রদান করুন। তিনি অস্বীকার করেন। তখন আল্লাহ তা’আলা এ আয়াত নাযিল করেন : “তারা আপনার কাছে যুদ্ধলব্ধ দ্রব্য সম্ভার সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করে, আপনি বলে দিন, যুদ্ধলব্ধ দ্রব্য সম্ভার আল্লাহ ও রসূলের ” আয়াতটি শেষ পর্যন্ত নাযিল হলো। (ই.ফা. ৪৪০৬, ই.সে. ৪৪০৬)

৪৪৪৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ الْمُثَنَّى – قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ، بْنُ جَعْفَرٍ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ مُصْعَبِ بْنِ سَعْدٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ نَزَلَتْ فِيَّ أَرْبَعُ آيَاتٍ أَصَبْتُ سَيْفًا فَأَتَى بِهِ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ نَفِّلْنِيهِ ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ ضَعْهُ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ قَامَ فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ ضَعْهُ مِنْ حَيْثُ أَخَذْتَهُ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ قَامَ فَقَالَ نَفِّلْنِيهِ يَا رَسُولَ اللَّهِ ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ ضَعْهُ ‏”‏ ‏.‏ فَقَامَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ نَفِّلْنِيهِ أَأُجْعَلُ كَمَنْ لاَ غَنَاءَ لَهُ فَقَالَ لَهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ ضَعْهُ مِنْ حَيْثُ أَخَذْتَهَ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَنَزَلَتْ هَذِهِ الآيَةُ ‏{‏ يَسْأَلُونَكَ عَنِ الأَنْفَالِ قُلِ الأَنْفَالُ لِلَّهِ وَالرَّسُولِ‏}‏

মুস’আব বিন সা’দ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমার সম্বন্ধে চারটি আয়াত নাযিল হয়েছে। আমি একটি তলোয়ার পেলাম। এরপর সেটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর কাছে নিয়ে এসে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি এটি আমাকে দান করুন। তিনি বললেনঃতুমি এটি রেখে দাও। তারপর আবার দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! এটি আমাকে প্রদান করুন। তখনও তিনি বললেন, এটি যেখান থেকে নিয়েছো সেখানে রেখে দাও। তারপর তিনি আবার দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রসূল! এটি আমাকে দিয়ে দিন। আমাকে কি সে ব্যক্তির মতো গণ্য করা হলো যার এটার দরকার নেই? নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তুমি এটি যেখান থেকে নিয়েছ সেখানে রেখে দাও। এরপর এ আয়াত নাযিল হয়: (অর্থ) “তারা আপনাকে যুদ্ধলব্ধ দ্রব্যসম্ভার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। আপনি বলুন, যুদ্ধলব্ধ সম্পদ আল্লাহ ও রসূলের জন্য”…….। (ই.ফা. ৪৪০৭, ই.সে. ৪৪০৭)

৪৪৫০
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ بَعَثَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم سَرِيَّةً وَأَنَا فِيهِمْ قِبَلَ نَجْدٍ فَغَنِمُوا إِبِلاً كَثِيرَةً فَكَانَتْ سُهْمَانُهُمُ اثْنَى عَشَرَ بَعِيرًا أَوْ أَحَدَ عَشَرَ بَعِيرًا وَنُفِّلُوا بَعِيرًا بَعِيرًا ‏.‏

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদা একটি সেনাদল নাজদের দিকে পাঠান। আমিও তার মধ্যে ছিলাম। তাঁরা সেখানে অনেক উট গনীমাত হিসেবে লাভ করলেন। প্রত্যেকের অংশে বারটি করে অথবা এগারটি করে উট পড়ল এবং প্রত্যেককেই একটি করে বাড়তি উট প্রদান করা হলো। (ই.ফা. ৪৪০৮, ই.সে. ৪৪০৮)

৪৪৫১
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ سَرِيَّةً قِبَلَ نَجْدٍ وَفِيهِمُ ابْنُ عُمَرَ وَأَنَّ سُهْمَانَهُمْ بَلَغَتِ اثْنَىْ عَشَرَ بَعِيرًا وَنُفِّلُوا سِوَى ذَلِكَ بَعِيرًا فَلَمْ يُغَيِّرْهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসুলা্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নাজদের দিকে একটি সেনাদল পাঠান এবং তাদের মধ্যে ইবনু ‘উমার (রাঃ)-ও ছিলেন। যুদ্ধলব্দ সম্পদের বন্টনে তাদের ভাগে পড়ল বারটি করে উট। আর তা ছাড়া বাড়তি একটি করে উট দেয়া হলো। আর রসুলা্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এরূপ বন্টন সমর্থন করলে পরিবর্তন করেননি। (ই.ফা. ৪৪০৯ , ই.সে. ৪৪০৯ )

৪৪৫২
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، وَعَبْدُ الرَّحِيمِ بْنُ سُلَيْمَانَ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ بَعَثَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَرِيَّةً إِلَى نَجْدٍ فَخَرَجْتُ فِيهَا فَأَصَبْنَا إِبِلاً وَغَنَمًا فَبَلَغَتْ سُهْمَانُنَا اثْنَىْ عَشَرَ بَعِيرًا وَنَفَّلَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعِيرًا بَعِيرًا ‏.‏

ইবনু ‘উমার ( রাযিঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসুলা্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নাজদের দিকে একটি সেনাদল প্রেরন করেন। আর আমিও এতে গিয়েছিলাম। আমরা বহু উট এবং ছাগল পেলাম। আমাদের প্রত্যেক জনের ভাগে বারটি করে উট পরল এবং রসুলা্ল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রত্যেককে আরো একটি করে অতিরিক্ত উট প্রদান করলেন। ( ই.ফা. ৪৪১০, ই.সে. ৪৪১০)

৪৪৫৩
وَحَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، – وَهُوَ الْقَطَّانُ – عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏

‘উবাইদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

‘উবাইদুল্লাহ (রাঃ) থেকে উল্লেখিত হাদীসের অনুরূপ সানাদে হাদীস বর্ণনা করেন। (ই.ফা. ৪৪১১, ই.সে. ৪৪১১)

৪৪৫৪
وَحَدَّثَنَاهُ أَبُو الرَّبِيعِ، وَأَبُو كَامِلٍ قَالاَ حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، عَنْ أَيُّوبَ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، قَالَ كَتَبْتُ إِلَى نَافِعٍ أَسْأَلُهُ عَنِ النَّفَلِ، فَكَتَبَ إِلَىَّ أَنَّ ابن عمر كان في سرية وَحَدَّثَنَا ابْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، أَخْبَرَنِي مُوسَى، ح وَحَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ سَعِيدٍ الأَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ، كُلُّهُمْ عَنْ نَافِعٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ نَحْوَ حَدِيثِهِمْ ‏.‏

ইবনু ‘আওন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নফল সম্পর্কে জানতে চেয়ে নাফি’ (রহঃ)-এর কাছে লিখলাম। তিনি উত্তরে আমাকে লিখলেন যে, ইবনু ‘উমার (রাঃ) একটি সেনাদলে ছিলেন। ইবনু রাফি’ ও হারুন ইবনু সা’ঈদ আঈলি (রহঃ) তারা সকলেই নাফি’ (রহঃ)- এর সূত্রে উক্ত সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ননা করেন। (ই.ফা. ৪৪১২, ই.সে. ৪৪১২)

৪৪৫৫
وَحَدَّثَنَا سُرَيْجُ بْنُ يُونُسَ، وَعَمْرٌو النَّاقِدُ، – وَاللَّفْظُ لِسُرَيْجٍ – قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ، اللَّهِ بْنُ رَجَاءٍ عَنْ يُونُسَ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ نَفَّلَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم نَفَلاً سِوَى نَصِيبِنَا مِنَ الْخُمْسِ فَأَصَابَنِي شَارِفٌ وَالشَّارِفُ الْمُسِنُّ الْكَبِيرُ ‏

সালিম তাঁর পিতা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের অংশ পঞ্চমাংশ ছাড়াও বাড়তি দান করলেন। অতএব আমাদের ভাগে একটি ‘শারিফ’ মিললো। ‘শারিফ’ মানে বড় ধরনের বয়স্ক উট। (ই.ফা.৪৪১৩, ই.সে. ৪৪১৩)

৪৪৫৬
وَحَدَّثَنَا هَنَّادُ بْنُ السَّرِيِّ، حَدَّثَنَا ابْنُ الْمُبَارَكِ، ح وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، كِلاَهُمَا عَنْ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ بَلَغَنِي عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ نَفَّلَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم سَرِيَّةً بِنَحْوِ حَدِيثِ ابْنِ رَجَاءٍ ‏.‏

ইবনু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ক্ষুদ্র সেনাদলের মাঝে যুদ্ধলব্ধ মালামাল বন্টণের ব্যাপারে ইবনু ‘উমার থেকে আমার নিকট ইবনু রাজা কতৃক বর্ণিত হাদীসের মতো একটি হাদীস এসেছে। ( ই.ফা. ৪৪১৪, ই.সে. ৪৪১৪)

৪৪৫৭
وَحَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ شُعَيْبِ بْنِ اللَّيْثِ، حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ جَدِّي، قَالَ حَدَّثَنِي عُقَيْلُ، بْنُ خَالِدٍ عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ سَالِمٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَدْ كَانَ يُنَفِّلُ بَعْضَ مَنْ يَبْعَثُ مِنَ السَّرَايَا لأَنْفُسِهِمْ خَاصَّةً سِوَى قَسْمِ عَامَّةِ الْجَيْشِ وَالْخُمْسُ فِي ذَلِكَ وَاجِبٌ كُلِّهِ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্ষুদ্র সেনাদলে যেসব সৈনিককে প্রেরণ করতেন, তাদের কোন কোন সময় সাধারন সৈনিকদের অংশের চেয়েও কিছু অতিরিক্ত বিশেষভাবে প্রদান করতেন। আর সকল অর্জিত গনীমাতের মালের উপরেই এক পঞ্চমাংশ বের করা ওয়াজিব। (ই.ফা. ৪৪১৫, ই.সে. ৪৪১৫ )

১৩. অধ্যায়ঃ
নিহত শত্রু থেকে সম্পদ হত্যাকারী মুজাহিদের প্রাপ্য

৪৪৫৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى التَّمِيمِيُّ، أَخْبَرَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ، كَثِيرِ بْنِ أَفْلَحَ عَنْ أَبِي مُحَمَّدٍ الأَنْصَارِيِّ، وَكَانَ، جَلِيسًا لأَبِي قَتَادَةَ قَالَ قَالَ أَبُو قَتَادَةَ ‏ وَاقْتَصَّ الْحَدِيثَ ‏.‏

আবু মুহাম্মদ আল-আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি ছিলেন আবূ কাতাদার সহচর। তিনি বলেন, আবু কাতাদাহ বলেন, …… এরপর এতদসংক্রান্ত বিস্তৃত একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন। ( ই.ফা. ৪৪১৬, ই. সে. ৪৪১৬ )

৪৪৫৯
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ كَثِيرٍ، عَنْ أَبِي مُحَمَّدٍ، مَوْلَى أَبِي قَتَادَةَ أَنَّ أَبَا قَتَادَةَ، قَالَ ‏.‏ وَسَاقَ الْحَدِيثَ ‏.‏

আবু কাতাদাহ (রাঃ)-এর আযাদকৃত দাস আবূ মুহাম্মাদ থেকে বর্ণিতঃ

আবু কাতাদাহ (রাঃ) বলেন ……… অতঃপর পূর্ণ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৪১৬, ই.সে. ৪৪১৭)

৪৪৬০
وَحَدَّثَنَا أَبُو الطَّاهِرِ، وَحَرْمَلَةُ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، قَالَ سَمِعْتُ مَالِكَ بْنَ أَنَسٍ، يَقُولُ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُمَرَ بْنِ كَثِيرِ بْنِ أَفْلَحَ، عَنْ أَبِي مُحَمَّدٍ، مَوْلَى أَبِي قَتَادَةَ عَنْ أَبِي قَتَادَةَ، قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَامَ حُنَيْنٍ فَلَمَّا الْتَقَيْنَا كَانَتْ لِلْمُسْلِمِينَ جَوْلَةٌ ‏.‏ قَالَ فَرَأَيْتُ رَجُلاً مِنَ الْمُشْرِكِينَ قَدْ عَلاَ رَجُلاً مِنَ الْمُسْلِمِينَ فَاسْتَدَرْتُ إِلَيْهِ حَتَّى أَتَيْتُهُ مِنْ وَرَائِهِ فَضَرَبْتُهُ عَلَى حَبْلِ عَاتِقِهِ وَأَقْبَلَ عَلَىَّ فَضَمَّنِي ضَمَّةً وَجَدْتُ مِنْهَا رِيحَ الْمَوْتِ ثُمَّ أَدْرَكَهُ الْمَوْتُ فَأَرْسَلَنِي فَلَحِقْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ فَقَالَ مَا لِلنَّاسِ فَقُلْتُ أَمْرُ اللَّهِ ‏.‏ ثُمَّ إِنَّ النَّاسَ رَجَعُوا وَجَلَسَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ مَنْ قَتَلَ قَتِيلاً لَهُ عَلَيْهِ بَيِّنَةٌ فَلَهُ سَلَبُهُ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَقُمْتُ فَقُلْتُ مَنْ يَشْهَدُ لِي ثُمَّ جَلَسْتُ ثُمَّ قَالَ مِثْلَ ذَلِكَ فَقَالَ فَقُمْتُ فَقُلْتُ مَنْ يَشْهَدُ لِي ثُمَّ جَلَسْتُ ثُمَّ قَالَ ذَلِكَ الثَّالِثَةَ فَقُمْتُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَا لَكَ يَا أَبَا قَتَادَةَ ‏”‏ ‏.‏ فَقَصَصْتُ عَلَيْهِ الْقِصَّةَ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ صَدَقَ يَا رَسُولَ اللَّهِ سَلَبُ ذَلِكَ الْقَتِيلِ عِنْدِي فَأَرْضِهِ مِنْ حَقِّهِ ‏.‏ وَقَالَ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ لاَهَا اللَّهِ إِذًا لاَ يَعْمِدُ إِلَى أَسَدٍ مِنْ أُسُدِ اللَّهِ يُقَاتِلُ عَنِ اللَّهِ وَعَنْ رَسُولِهِ فَيُعْطِيكَ سَلَبَهُ ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ صَدَقَ فَأَعْطِهِ إِيَّاهُ ‏”‏ ‏.‏ فَأَعْطَانِي قَالَ فَبِعْتُ الدِّرْعَ فَابْتَعْتُ بِهِ مَخْرَفًا فِي بَنِي سَلِمَةَ فَإِنَّهُ لأَوَّلُ مَالٍ تَأَثَّلْتُهُ فِي الإِسْلاَمِ ‏.‏ وَفِي حَدِيثِ اللَّيْثِ فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ كَلاَّ لاَ يُعْطِيهِ أُضَيْبِعَ مِنْ قُرَيْشٍ وَيَدَعُ أَسَدًا مِنْ أُسُدِ اللَّهِ ‏.‏ وَفِي حَدِيثِ اللَّيْثِ لأَوَّلُ مَالٍ تَأَثَّلْتُهُ ‏.‏

আবু কাতাদাহ্‌ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হুনায়নের যুদ্ধের সময় আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাথে বের হলাম। আমরা যখন শত্রুদের মুখোমুখি হলাম তখন মুসলিমদের মধ্যে ছুটাছুটি আরম্ভ হলো। এ সময় আমি একজন মুশরিককে দেখতে পেলাম যে, সে একজন মুসলিম এর উপর চড়াও করেছে। তখন আমি একটু ঘুরে এসে পিছন দিক দিয়ে তার কাঁধের উপর আঘাত করলাম। তখন সে আমার দিকে অগ্রসর হয়ে আমাকে এমনভাবে চেপে ধরলো যে, আমি এতে মৃত্যুর গন্ধ পেলাম। এরপর সে মৃত্যুমুখে ঢলে পরল এবং আমাকে ছেড়ে দিলো। এরপর আমি ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ)-এর সঙ্গে একত্রিত হলাম। তিনি বললেন, লোকদের কি হয়েছে? আমি বললাম, এ আল্লাহর ব্যাপার (ইচ্ছে)। তারপর (পলায়নপর) লোকেরা ফিরে এলো। রসুলল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তখন (যুদ্ধক্ষেত্রে) বসেছিলেন। তিনি বললেন, যে মুসলিম সৈন্য অপর কোন শত্রু সৈন্যকে হত্যা করেছে এবং এতে তার প্রমান আছে, তাহলে তার সম্পদ তারই (হত্যাকারী মুজাহিদেরই প্রাপ্য)। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমি দাঁড়ালাম এবং বললাম, আমার জন্য কেউ সাক্ষ্য দেবে? তারপর আমি বসে পড়লাম। তিনি আবারও সেরূপ কথা বললেন, আমি দাঁড়ালাম এবং বললাম কেউ আমার জন্য সাক্ষ্য দেবে? এবং আমি বসে পড়লাম। তিনি তৃতীয়বারও ঐরূপ বলেন। তা শুনে আমি (আবার) দন্ডায়মান হলাম। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তোমার কি হয়েছে? হে আবু কাতাদা্হ! আমি তাঁর কাছে সমস্ত ঘটনা খুলে বললাম। তখন এক ব্যাক্তি বললো, হে আল্লাহর রসূল! তিনি (আবূ কাতাদা্হ) সত্য বলেছেন। ঐ নিহত ব্যাক্তির (পরিত্যক্ত) সম্পদ আমার কাছে রক্ষিত আছে। আপনি তার হক আমাকে দেয়ার ব্যাপারে তাঁকে রাজি করিয়ে দিন। তখন আবু বাকর সিদ্দিক (রাঃ) বললেন, না, আল্লাহর কসম! তা হতে পারে না। আল্লাহর সিংহসমূহের মধ্য হতে কোনো এক সিংহ (যোদ্ধা) যিনি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের পক্ষে যুদ্ধ করেছেন, আর তার প্রাপ্য সম্পদ যিনি তোমাকে প্রদান করবেন এমন হতে পারে। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ (আবূ বাকর) ঠিকই বলেছেন। সুতরাং তিনি তাকে (আবু কাতাদাহকেই) তা প্রদানের নির্দেশ দিলেন এবং তিনি তা আমাকেই দিলেন। আবূ কাতাদাহ (রাঃ) বলেন, আমি তা থেকে লৌহ বর্মটি বিক্রি করলাম এবং তা দিয়ে বানী সালামার মহল্লায় একটি ফলের বাগান খরিদ করলাম। এ ছিল আমার ইসলামী জীবনের প্রথম অর্জিত সম্পদ।

লায়স (রহঃ) এর বর্ণিত হাদীসে উল্লেখ আছে যে, আবূ বাকর (রাঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর সিংহসমূহের মধ্য থেকে কোন এক সিংহকে বাদ দিয়ে তা কুরায়শের কোনো শৃগালকে (কাপুরুসকে) প্রদান করেন না।

লায়স (রহঃ) এর বর্ণনায় রয়েছে এটিই আমার প্রথম সম্পদ যা আমি সংগ্রহ করেছি। (ই.ফা. ৪৪১৬, ই.সে. ৪৪১৮ )

৪৪৬১
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى التَّمِيمِيُّ، أَخْبَرَنَا يُوسُفُ بْنُ الْمَاجِشُونِ، عَنْ صَالِحِ بْنِ إِبْرَاهِيمَ، بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ، أَنَّهُ قَالَ بَيْنَا أَنَا وَاقِفٌ، فِي الصَّفِّ يَوْمَ بَدْرٍ نَظَرْتُ عَنْ يَمِينِي، وَشِمَالِي، فَإِذَا أَنَا بَيْنَ، غُلاَمَيْنِ مِنَ الأَنْصَارِ حَدِيثَةٍ أَسْنَانُهُمَا تَمَنَّيْتُ لَوْ كُنْتُ بَيْنَ أَضْلَعَ مِنْهُمَا فَغَمَزَنِي أَحَدُهُمَا ‏.‏ فَقَالَ يَا عَمِّ هَلْ تَعْرِفُ أَبَا جَهْلٍ قَالَ قُلْتُ نَعَمْ وَمَا حَاجَتُكَ إِلَيْهِ يَا ابْنَ أَخِي قَالَ أُخْبِرْتُ أَنَّهُ يَسُبُّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَئِنْ رَأَيْتُهُ لاَ يُفَارِقُ سَوَادِي سَوَادَهُ حَتَّى يَمُوتَ الأَعْجَلُ مِنَّا ‏.‏ قَالَ فَتَعَجَّبْتُ لِذَلِكَ فَغَمَزَنِي الآخَرُ فَقَالَ مِثْلَهَا – قَالَ – فَلَمْ أَنْشَبْ أَنْ نَظَرْتُ إِلَى أَبِي جَهْلٍ يَزُولُ فِي النَّاسِ فَقُلْتُ أَلاَ تَرَيَانِ هَذَا صَاحِبُكُمَا الَّذِي تَسْأَلاَنِ عَنْهُ قَالَ فَابْتَدَرَاهُ فَضَرَبَاهُ بِسَيْفَيْهِمَا حَتَّى قَتَلاَهُ ثُمَّ انْصَرَفَا إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرَاهُ ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ أَيُّكُمَا قَتَلَهُ ‏”‏ ‏.‏ فَقَالَ كُلُّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا أَنَا قَتَلْتُ ‏.‏ فَقَالَ ‏”‏ هَلْ مَسَحْتُمَا سَيْفَيْكُمَا ‏”‏ ‏.‏ قَالاَ لاَ ‏.‏ فَنَظَرَ فِي السَّيْفَيْنِ فَقَالَ ‏”‏ كِلاَكُمَا قَتَلَهُ ‏”‏ ‏.‏ وَقَضَى بِسَلَبِهِ لِمُعَاذِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْجَمُوحِ وَالرَّجُلاَنِ مُعَاذُ بْنُ عَمْرِو بْنِ الْجَمُوحِ وَمُعَاذُ ابْنُ عَفْرَاءَ ‏.‏

‘আবদুর রাহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বদরের দিন যুদ্ধ সারিতে অবস্হান করছিলাম। এমন সময় আমি ডান ও বাম দিকে তাকিয়ে দেখি যে, আমি দু’জন আনসারী বালকের মাঝখানে আছি। আমি আশা করেছিলাম, যদি আমি দু’জন শক্তিশালী যুবকের মাঝে থাকতে পেতাম। এমন সময় তাদের একজন আমাকে ইঙ্গিতে বললো, হে আমার চাচা! আপনি কি আবূ জাহেল কে চিনেন? আমি বললাম, হ্যাঁ। আর তাকে তোমার প্রয়োজন কী হে ভ্রাতুস্পুত্র! সে বলল, আমি সংবাদ জেনেছি যে, সে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে গালাগালি করে। সেই আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার জীবন, যদি আমি তাকে দেখতে পাই তবে অবশ্যই তাকে ছেড়ে দিব না, যতক্ষন না আমাদের দু’জনের থেকে যার মৃত্যু পূর্বে হওয়া অবধারিত তার মৃত্যু হয়। বর্ণনাকারী বলেন, কিশোরের এ কথা শুনে আমি আশ্চর্যান্বিত হলাম। তারপর অপর কিশোর আমার দিকে ইঙ্গিত করে অনুরূপ কথা বলল। পরে বেশি সময় অতিবাহিত হয়নি, হঠাৎ আমি দেখলাম, আবূ জাহল লোকদের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। আমি তখন বালক দু’জনকে বললাম, তোমরা কি দেখছ না এ ব্যাক্তিকে যার ব্যাপারে তোমরা জানতে চাচ্ছ। উভয়ে দৌড়ে গিয়ে তাদের তলোয়ার দ্বারা তাকে আঘাত করলো এবং হত্যা করে ফেললো। অতঃপর উভয়েই ফিরে এসে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে এই ঘটনার সংবাদ দিলো। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমাদের মধ্যে তাকে কে হত্যা করেছে? তাঁদের প্রত্যেকে বললো, আমি তাকে হত্যা করেছি। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তোমাদের তলোয়ার কি পরিস্কার করে ফেলেছো? তাঁরা বলল, না। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উভয়ের তলোয়ার পরীক্ষা করে দেখলেন। তারপর বললেন, তোমরা উভয়েই তাকে হত্যা করেছ। অতএব রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মু’আয ইবনু ‘আমর ইবনু জামূহকে খুলে নেয়া সম্পদ প্রদানের নির্দেশ দেন। আর সে দু’বালক হলো, মু’আয ইবনু ‘আমর ইবনু জামূহ এবং মু’আয ইবনু ‘আফরা (রাঃ)। ( ই.ফা. ৪৪১৭, ই.সে. ৪৪১৯ )

৪৪৬২
وَحَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَحْمَدُ بْنُ عَمْرِو بْنِ سَرْحٍ أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي مُعَاوِيَةُ بْنُ صَالِحٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ قَتَلَ رَجُلٌ مِنْ حِمْيَرَ رَجُلاً مِنَ الْعَدُوِّ فَأَرَادَ سَلَبَهُ فَمَنَعَهُ خَالِدُ بْنُ الْوَلِيدِ وَكَانَ وَالِيًا عَلَيْهِمْ فَأَتَى رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَوْفُ بْنُ مَالِكٍ فَأَخْبَرَهُ فَقَالَ لِخَالِدٍ ‏”‏ مَا مَنَعَكَ أَنْ تُعْطِيَهُ سَلَبَهُ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ اسْتَكْثَرْتُهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ ادْفَعْهُ إِلَيْهِ ‏”‏ ‏.‏ فَمَرَّ خَالِدٌ بِعَوْفٍ فَجَرَّ بِرِدَائِهِ ثُمَّ قَالَ هَلْ أَنْجَزْتُ لَكَ مَا ذَكَرْتُ لَكَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَسَمِعَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَاسْتُغْضِبَ فَقَالَ ‏”‏ لاَ تُعْطِهِ يَا خَالِدُ لاَ تُعْطِهِ يَا خَالِدُ هَلْ أَنْتُمْ تَارِكُونَ لِي أُمَرَائِي إِنَّمَا مَثَلُكُمْ وَمَثَلُهُمْ كَمَثَلِ رَجُلٍ اسْتُرْعِيَ إِبِلاً أَوْ غَنَمًا فَرَعَاهَا ثُمَّ تَحَيَّنَ سَقْيَهَا فَأَوْرَدَهَا حَوْضًا فَشَرَعَتْ فِيهِ فَشَرِبَتْ صَفْوَهُ وَتَرَكَتْ كَدَرَهُ فَصَفْوُهُ لَكُمْ وَكَدَرُهُ عَلَيْهِمْ ‏”‏ ‏.‏

‘আওফ ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হুমাইর গোত্রের এক ব্যাক্তি শত্রু পক্ষের এক ব্যাক্তিকে হত্যা করল এবং তার যুদ্ধলব্ধ সম্পদ নিতে চাইল। কিন্তু তাদের সেনাপতি খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) তাকে নিষেধ করলেন। তারপর ‘আওফ ইবনু মালিক (রাঃ) রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট এলেন এবং ঐ ঘটনার সংবাদ দিলেন। তখন তিনি খালিদ (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করলেন, কেন তুমি (নিহত ব্যাক্তির) সম্পদ তাকে প্রদান করলে না? খালিদ (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আমি তার প্রচুর সম্পদ পেয়েছি। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তাকে তা দিয়ে দাও। তারপর খালিদ (রাঃ) ‘আওফ (রাঃ)-এর কাছে দিয়ে গেলেন এবং ‘আওফ (রাঃ) তার চাদর ধরে টান দিয়ে বললেন, আমি তো আগেই বলেছিলাম ব্যাপারটি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর কাছে পৌছাবো। তাই কি হয়নি? অতএব রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তা শুনতে পেলেন। এতে তিনি রাগাম্বিত হলেন। এবং রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হে খালিদ! তুমি তাকে তা দেবে না! হে খালিদ! তুমি তাকে তা দেবে না ! তোমরা কি আমার নেতাদের পরিত্যাগ করবে? নিশ্চয় তোমাদের এবং তাদের দৃষ্টান্ত এমন, যেমন কোন ব্যাক্তি উট কিংবা ছাগল চড়াতে মনস্থ করলো। এবং মাঠে নিয়ে চড়াল। তারপর পিপাসার সময় পানি পান করানোর জন্য জলাশয়ে নিয়ে গেল। পরিস্কার পানি পান করতে শুরু করল এবং ঘোলাটে পানি পরিত্যাগ করল। অতঃপর এমনিভাবে পরিস্কারটা তোমাদের জন্য এবং অপরিষ্কারটা তোমাদের নেতাদের জন্য। ( ই.ফা. ৪৪১৮, ই.সে. ৪৪২০)

৪৪৬৩
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا صَفْوَانُ بْنُ عَمْرٍو، عَنْ عَبْدِ، الرَّحْمَنِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ نُفَيْرٍ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَوْفِ بْنِ مَالِكٍ الأَشْجَعِيِّ، قَالَ خَرَجْتُ مَعَ مَنْ خَرَجَ مَعَ زَيْدِ بْنِ حَارِثَةَ فِي غَزْوَةِ مُؤْتَةَ وَرَافَقَنِي مَدَدِيٌّ مِنَ الْيَمَنِ ‏.‏ وَسَاقَ الْحَدِيثَ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ‏.‏ بِنَحْوِهِ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ فِي الْحَدِيثِ قَالَ عَوْفٌ فَقُلْتُ يَا خَالِدُ أَمَا عَلِمْتَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَضَى بِالسَّلَبِ لِلْقَاتِلِ قَالَ بَلَى وَلَكِنِّي اسْتَكْثَرْتُهُ ‏.‏

‘আওফ ইবনু মালিক আশজা’ঈ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যায়দ ইবনু হারিসাহ (রাঃ)- এর সঙ্গে যারা মুতার যুদ্ধে গিয়েছিল, তন্মধ্যে আমিও ছিলাম। ইয়ামানের একজন সাহায্যকারীও আমার সাথি হলো। এরপর তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে উল্লিখিত হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেন। তবে তিনি হাদীসে বলেছেন যে, ‘আওফ (রাঃ) বলেন, অতঃপর আমি বললাম, হে খালিদ! তুমি কি জাননা যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শত্রু থেকে ছিনিয়ে নেয়া লব্ধ সম্পদ হত্যাকারী মুজাহিদ ব্যাক্তির প্রাপ্য বলে নির্দেশ দিয়েছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ, কিন্তু এই সম্পদ আমার কাছে অধিক মনে হলো। ( তাই আমি নিষেধ করেছিলাম।) ( ই.ফা. ৪৪১৯, ই.সে. ৪৪২১)

৪৪৬৪
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ الْحَنَفِيُّ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنِي إِيَاسُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنِي أَبِي سَلَمَةُ بْنُ الأَكْوَعِ، قَالَ غَزَوْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم هَوَازِنَ فَبَيْنَا نَحْنُ نَتَضَحَّى مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذْ جَاءَ رَجُلٌ عَلَى جَمَلٍ أَحْمَرَ فَأَنَاخَهُ ثُمَّ انْتَزَعَ طَلَقًا مِنْ حَقَبِهِ فَقَيَّدَ بِهِ الْجَمَلَ ثُمَّ تَقَدَّمَ يَتَغَدَّى مَعَ الْقَوْمِ وَجَعَلَ يَنْظُرُ وَفِينَا ضَعْفَةٌ وَرِقَّةٌ فِي الظَّهْرِ وَبَعْضُنَا مُشَاةٌ إِذْ خَرَجَ يَشْتَدُّ فَأَتَى جَمَلَهُ فَأَطْلَقَ قَيْدَهُ ثُمَّ أَنَاخَهُ وَقَعَدَ عَلَيْهِ فَأَثَارَهُ فَاشْتَدَّ بِهِ الْجَمَلُ فَاتَّبَعَهُ رَجُلٌ عَلَى نَاقَةٍ وَرْقَاءَ ‏.‏ قَالَ سَلَمَةُ وَخَرَجْتُ أَشْتَدُّ فَكُنْتُ عِنْدَ وَرِكِ النَّاقَةِ ‏.‏ ثُمَّ تَقَدَّمْتُ حَتَّى كُنْتُ عِنْدَ وَرِكِ الْجَمَلِ ثُمَّ تَقَدَّمْتُ حَتَّى أَخَذْتُ بِخِطَامِ الْجَمَلِ فَأَنَخْتُهُ فَلَمَّا وَضَعَ رُكْبَتَهُ فِي الأَرْضِ اخْتَرَطْتُ سَيْفِي فَضَرَبْتُ رَأْسَ الرَّجُلِ فَنَدَرَ ثُمَّ جِئْتُ بِالْجَمَلِ أَقُودُهُ عَلَيْهِ رَحْلُهُ وَسِلاَحُهُ فَاسْتَقْبَلَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَالنَّاسُ مَعَهُ فَقَالَ ‏”‏ مَنْ قَتَلَ الرَّجُلَ ‏”‏ ‏.‏ قَالُوا ابْنُ الأَكْوَعِ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ لَهُ سَلَبُهُ أَجْمَعُ ‏”‏ ‏.‏

আবু সালামাহ ইবনু আকওয়া’ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে হাওয়াযিন গোত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ছিলাম। একদা আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে সকালের খাওয়ায় শামিল ছিলাম। এমন সময় এক ব্যাক্তি লাল রঙের উটে চড়ে এসে উটটিকে বসাল এবং তার কোমর থেকে একটি চামড়ার রশি বের করে এর দ্বারা সেটিকে বাধঁলো। এরপর সে এসে লোকদের সাথে সকালের নাস্তা খেতে লাগল এবং এদিক-সেদিক তাকাতে লাগলো (সে ছিলো গুপ্তচর) আমাদের মধ্যে দুর্বলতাও ছিল। সওয়ারীও কম ছিল। আমাদের কেউ কেউ পায়ে হেটেঁ চলছিল। এমন সময় সে ব্যাক্তি দ্রুত গতিতে নিজের উটের কাছে এসে এর রশি খুললো। এরপর উটটিকে বসিয়ে এর উপর সওয়ার হয়ে হাঁকালো এবং উট তাকে নিয়ে ছুটলো। তখন এক ব্যাক্তি একটি ধুসর বর্ণের উটনীর উপর আরোহণ করে তার পশ্চাদ্ধাবন করল।

সালামাহ (রাঃ) বলেন, আমি বের হয়ে দৌড় দিলাম। অতঃপর আরও অগ্রসর হয়ে আমি উটনীর লাগাম ধরে ফেললাম। এবং আমি তাকে বসালাম। যখন উটটি তার হাঁটু মাটিতে রাখল, তখন আমি তলোয়ার বের করে লোকটির মাথায় আঘাত করলাম। সে মাটিতে লুটিয়ে পরল। এরপর আমি উটটি টেনে নিয়ে এলাম। এর উপর ঐ ব্যাক্তির আসবাবপত্র ও অস্ত্রশস্ত্র বোঝাই ছিল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) লোক জনসহ আমাকে এগিয়ে নিলেন। তিনি বললেন, কে এই লোকটিকে হত্যা করেছে? লোকেরা বললো, ইবনু আকওয়া। তিনি বললেন, (নিহত ব্যাক্তির) থেকে খুলে আনা সমুদয় সম্পদ আকওয়ার পুত্র সালামার জন্য। (ই.ফা. ৪৪২০, ই.সে. ৪৪২২ )

১৪. অধ্যায়ঃ
নফল ( অতিরিক্ত) প্রদান এবং আটকে পড়া বন্দীদের বিনিময়ে মুসলিমদের মুক্তি করা

৪৪৬৫
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنِي إِيَاسُ بْنُ سَلَمَةَ، حَدَّثَنِي أَبِي قَالَ، غَزَوْنَا فَزَارَةَ وَعَلَيْنَا أَبُو بَكْرٍ أَمَّرَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَيْنَا فَلَمَّا كَانَ بَيْنَنَا وَبَيْنَ الْمَاءِ سَاعَةٌ أَمَرَنَا أَبُو بَكْرٍ فَعَرَّسْنَا ثُمَّ شَنَّ الْغَارَةَ فَوَرَدَ الْمَاءَ فَقَتَلَ مَنْ قَتَلَ عَلَيْهِ وَسَبَى وَأَنْظُرُ إِلَى عُنُقٍ مِنَ النَّاسِ فِيهِمُ الذَّرَارِيُّ فَخَشِيتُ أَنْ يَسْبِقُونِي إِلَى الْجَبَلِ فَرَمَيْتُ بِسَهْمٍ بَيْنَهُمْ وَبَيْنَ الْجَبَلِ فَلَمَّا رَأَوُا السَّهْمَ وَقَفُوا فَجِئْتُ بِهِمْ أَسُوقُهُمْ وَفِيهِمُ امْرَأَةٌ مِنْ بَنِي فَزَارَةَ عَلَيْهَا قِشْعٌ مِنْ أَدَمٍ – قَالَ الْقِشْعُ النِّطَعُ – مَعَهَا ابْنَةٌ لَهَا مِنْ أَحْسَنِ الْعَرَبِ فَسُقْتُهُمْ حَتَّى أَتَيْتُ بِهِمْ أَبَا بَكْرٍ فَنَفَّلَنِي أَبُو بَكْرٍ ابْنَتَهَا فَقَدِمْنَا الْمَدِينَةَ وَمَا كَشَفْتُ لَهَا ثَوْبًا فَلَقِيَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي السُّوقِ فَقَالَ ‏”‏ يَا سَلَمَةُ هَبْ لِي الْمَرْأَةَ ‏”‏ ‏.‏ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَاللَّهِ لَقَدْ أَعْجَبَتْنِي وَمَا كَشَفْتُ لَهَا ثَوْبًا ثُمَّ لَقِيَنِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنَ الْغَدِ فِي السُّوقِ فَقَالَ لِي ‏”‏ يَا سَلَمَةُ هَبْ لِي الْمَرْأَةَ لِلَّهِ أَبُوكَ ‏”‏ ‏.‏ فَقُلْتُ هِيَ لَكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَوَاللَّهِ مَا كَشَفْتُ لَهَا ثَوْبًا فَبَعَثَ بِهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى أَهْلِ مَكَّةَ فَفَدَى بِهَا نَاسًا مِنَ الْمُسْلِمِينَ كَانُوا أُسِرُوا بِمَكَّةَ ‏.‏

সালামাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমরা ফাযারাহ গোত্রের সাথে যুদ্ধ করছিলাম। আবূ বাকর (রাঃ) ছিলেন, আমাদের আমীর। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাকে আমাদের আমীর নিযুক্ত করেছিলেন। যখন আমাদের এবং পানির স্হানের মাঝে একঘন্টা সময়ের ব্যবধান ছিল, তখন আবূ বাকর (রাঃ) আমাদেরকে (রাতের শেষের দিকে সেখানে অবতরণের) নির্দেশ দিলেন। সুতরাং আমরা রাতের শেষাংশেই সেখানে অবতরণ করলাম। এরপর বিভিন্ন দিক দিয়ে অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে পানির নিকট পৌঁছলেন। আর যাদেরকে তার বিরুদ্ধে পেলেন হত্যা এবং বন্দী করলেন। আমি লোকদের একটি দলকে দেখতে পাচ্ছি যাদের মধ্যে শিশু ও নারী রয়েছে। আমি আশংকা করছিলাম যে, তারা হয়তোবা আমার আগেই পাহাড়ে পৌঁছে যাবে। অতএব আমি তাদের ও পাহাড়ের মাঝে তীর নিক্ষেপ করলাম। তারা তখন তীর দেখতে পেয়ে থেমে গেলো। তখন আমি তাদের হাঁকিয়ে নিয়ে এলাম। তাদের মাঝে চামড়ার পোষাক পরিহিত বানী ফাযারার একজন মহিলাও ছিল এবং (রাবী বলেন) তার সঙ্গে এক কন্যা ছিল। সে ছিলো আরবের সব চেয়ে সুন্দরী। আমি সকলকেই হাঁকিয়ে আবূ বাকর (রাঃ)-এর কাছে নিয়ে এলাম। আবূ বাকর (রাঃ) মহিলার কন্যাটি আমাকে নফল হিসেবে প্রদান করলেন। এরপর আমি মাদীনায় ফিরে এলাম। আমি তখনও তার বস্ত্র উঠাইনি। পরে বাজারে আমার সাথে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাক্ষাৎ হলে তিনি বললেন হে সালামাহ! তুমি মহিলাটি আমাকে দিয়ে দাও। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আল্লাহ তা’আলার কসম, তাকে আমার অত্যাধিক পছন্দ হয়েছে এবং এখনও আমি তার বস্ত্র উঠাইনি। পরের দিন আবারও বাজারে আমার সাথে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাক্ষাৎ হলো। তখন তিনি বললেন, হে সালামাহ! তুমি মহিলাটি আমাকে দিয়ে দাও। “আল্লাহ তোমার পিতার কল্যান করুন।” তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আল্লাহর কসম! সে আপনার জন্যই। আমি তার বস্ত্র উন্মোচন করিনি। অতঃপর আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওই কন্যাটিকে মাক্কায় পাঠিয়ে দিয়ে তার বিনিময়ে কয়েকজন মুসলিম বন্দীকে মুক্ত করে আনলেন, যারা মাক্কায় ইতোপূর্বে বন্দী ছিল। ( ই.ফা. ৪৪২১, ই.সে. ৪৪২৩)

১৫. অধ্যায়ঃ
ফাই বা বিনা যুদ্ধলব্ধ সম্পদের হুকুম

৪৪৬৬
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَنْبَلٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنْ هَمَّامِ بْنِ مُنَبِّهٍ، قَالَ هَذَا مَا حَدَّثَنَا أَبُو هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرَ أَحَادِيثَ مِنْهَا وَقَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ أَيُّمَا قَرْيَةٍ أَتَيْتُمُوهَا وَأَقَمْتُمْ فِيهَا فَسَهْمُكُمْ فِيهَا وَأَيُّمَا قَرْيَةٍ عَصَتِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَإِنَّ خُمُسَهَا لِلَّهِ وَلِرَسُولِهِ ثُمَّ هِيَ لَكُمْ ‏”‏ ‏.‏

হাম্মান ইবনু মুনাব্বিহ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে আবূ হুরায়রা (রাঃ) যেসব হাদীস আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন তন্মধ্যে একটি হলো, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: তোমরা যে কোন জনপদে এসে অবস্হান করবে, সেখান থেকে ( প্রাপ্ত ফাই-এর ) এক অংশ পাবে। আর যে কোনো জনপদের অধিবাসীরা আল্লাহ ও তার রসূলের অবাধ্যতা করবে, (অর্থাৎ- যুদ্ধ করবে) তবে তার (সম্পদের) এক পঞ্চমাংশ আল্লাহ ও তার রসূলের জন্য। অতঃপর অবশিষ্ট সম্পদ তোমাদের জন্য। (ই.ফা. ৪৪২২, ই.সে. ৪৪২৪)

৪৪৬৭
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ – وَاللَّفْظُ لاِبْنِ أَبِي شَيْبَةَ – قَالَ إِسْحَاقُ أَخْبَرَنَا وَقَالَ الآخَرُونَ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ عَمْرٍو، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسٍ، عَنْ عُمَرَ، قَالَ كَانَتْ أَمْوَالُ بَنِي النَّضِيرِ مِمَّا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِمَّا لَمْ يُوجِفْ عَلَيْهِ الْمُسْلِمُونَ بِخَيْلٍ وَلاَ رِكَابٍ فَكَانَتْ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم خَاصَّةً فَكَانَ يُنْفِقُ عَلَى أَهْلِهِ نَفَقَةَ سَنَةٍ وَمَا بَقِيَ يَجْعَلُهُ فِي الْكُرَاعِ وَالسِّلاَحِ عُدَّةً فِي سَبِيلِ اللَّهِ ‏.‏

‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বানী নাযীর গোত্রের সম্পদ এমন সম্পদ যা আল্লাহ তা’আলা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বিনাযুদ্ধে প্রদান করেন। সেখানে মুসলিমরা ঘোড়া এবং উট হাঁকিয়ে যুদ্ধ করেনি। অতএব এ সম্পদ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর জন্য নির্দিষ্ট ছিল। সুতরাং তিনি তা থেকে স্বীয় পরিবারের এক বছরের ভরণ-পোষণে খরচ করতেন এবং অবশিষ্ট সম্পদ আল্লাহর পথে যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য ঘোড়া ও অস্ত্র ক্রয় খাতে রেখে দিতেন এবং আল্লাহর পথে ব্যয় করতেন। (ই.ফা. ৪৪২৩, ই.সে. ৪৪২৫)

৪৪৬৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ أَخْبَرَنَا سُفْيَانُ بْنُ عُيَيْنَةَ، عَنْ مَعْمَرٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏

যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উল্লিখিত হাদীস একই সূত্রে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৪২৪, ই.সে. ৪৪২৬)

৪৪৬৯
وَحَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ الضُّبَعِيُّ، حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، أَنَّ مَالِكَ بْنَ أَوْسٍ، حَدَّثَهُ قَالَ أَرْسَلَ إِلَىَّ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَجِئْتُهُ حِينَ تَعَالَى النَّهَارُ – قَالَ – فَوَجَدْتُهُ فِي بَيْتِهِ جَالِسًا عَلَى سَرِيرٍ مُفْضِيًا إِلَى رِمَالِهِ مُتَّكِئًا عَلَى وِسَادَةٍ مِنْ أَدَمٍ ‏.‏ فَقَالَ لِي يَا مَالُ إِنَّهُ قَدْ دَفَّ أَهْلُ أَبْيَاتٍ مِنْ قَوْمِكَ وَقَدْ أَمَرْتُ فِيهِمْ بِرَضْخٍ فَخُذْهُ فَاقْسِمْهُ بَيْنَهُمْ – قَالَ – قُلْتُ لَوْ أَمَرْتَ بِهَذَا غَيْرِي قَالَ خُذْهُ يَا مَالُ ‏.‏ قَالَ فَجَاءَ يَرْفَا فَقَالَ هَلْ لَكَ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ فِي عُثْمَانَ وَعَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ عَوْفٍ وَالزُّبَيْرِ وَسَعْدٍ فَقَالَ عُمَرُ نَعَمْ ‏.‏ فَأَذِنَ لَهُمْ فَدَخَلُوا ثُمَّ جَاءَ ‏.‏ فَقَالَ هَلْ لَكَ فِي عَبَّاسٍ وَعَلِيٍّ قَالَ نَعَمْ ‏.‏ فَأَذِنَ لَهُمَا فَقَالَ عَبَّاسٌ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ اقْضِ بَيْنِي وَبَيْنَ هَذَا الْكَاذِبِ الآثِمِ الْغَادِرِ الْخَائِنِ ‏.‏ فَقَالَ الْقَوْمُ أَجَلْ يَا أَمِيرَ الْمُؤْمِنِينَ فَاقْضِ بَيْنَهُمْ وَأَرِحْهُمْ ‏.‏ فَقَالَ مَالِكُ بْنُ أَوْسٍ يُخَيَّلُ إِلَىَّ أَنَّهُمْ قَدْ كَانُوا قَدَّمُوهُمْ لِذَلِكَ – فَقَالَ عُمَرُ اتَّئِدَا أَنْشُدُكُمْ بِاللَّهِ الَّذِي بِإِذْنِهِ تَقُومُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ أَتَعْلَمُونَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ ‏”‏ ‏.‏ قَالُوا نَعَمْ ‏.‏ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَى الْعَبَّاسِ وَعَلِيٍّ فَقَالَ أَنْشُدُكُمَا بِاللَّهِ الَّذِي بِإِذْنِهِ تَقُومُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ أَتَعْلَمَانِ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ لاَ نُورَثُ مَا تَرَكْنَاهُ صَدَقَةٌ ‏”‏ ‏.‏ قَالاَ نَعَمْ ‏.‏ فَقَالَ عُمَرُ إِنَّ اللَّهَ جَلَّ وَعَزَّ كَانَ خَصَّ رَسُولَهُ صلى الله عليه وسلم بِخَاصَّةٍ لَمْ يُخَصِّصْ بِهَا أَحَدًا غَيْرَهُ قَالَ ‏{‏ مَا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ مِنْ أَهْلِ الْقُرَى فَلِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ‏}‏ مَا أَدْرِي هَلْ قَرَأَ الآيَةَ الَّتِي قَبْلَهَا أَمْ لاَ ‏.‏ قَالَ فَقَسَمَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَيْنَكُمْ أَمْوَالَ بَنِي النَّضِيرِ فَوَاللَّهِ مَا اسْتَأْثَرَ عَلَيْكُمْ وَلاَ أَخَذَهَا دُونَكُمْ حَتَّى بَقِيَ هَذَا الْمَالُ فَكَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَأْخُذُ مِنْهُ نَفَقَةَ سَنَةٍ ثُمَّ يَجْعَلُ مَا بَقِيَ أُسْوَةَ الْمَالِ ‏.‏ ثُمَّ قَالَ أَنْشُدُكُمْ بِاللَّهِ الَّذِي بِإِذْنِهِ تَقُومُ السَّمَاءُ وَالأَرْضُ أَتَعْلَمُونَ ذَلِكَ قَالُوا نَعَمْ ‏.‏ ثُمَّ نَشَدَ عَبَّاسًا وَعَلِيًّا بِمِثْلِ مَا نَشَدَ بِهِ الْقَوْمَ أَتَعْلَمَانِ ذَلِكَ قَالاَ نَعَمْ ‏.‏ قَالَ فَلَمَّا تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَبُو بَكْرٍ أَنَا وَلِيُّ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَجِئْتُمَا تَطْلُبُ مِيرَاثَكَ مِنَ ابْنِ أَخِيكَ وَيَطْلُبُ هَذَا مِيرَاثَ امْرَأَتِهِ مِنْ أَبِيهَا فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَا نُورَثُ مَا تَرَكْنَا صَدَقَةٌ ‏”‏ ‏.‏ فَرَأَيْتُمَاهُ كَاذِبًا آثِمًا غَادِرًا خَائِنًا وَاللَّهُ يَعْلَمُ إِنَّهُ لَصَادِقٌ بَارٌّ رَاشِدٌ تَابِعٌ لِلْحَقِّ ثُمَّ تُوُفِّيَ أَبُو بَكْرٍ وَأَنَا وَلِيُّ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَوَلِيُّ أَبِي بَكْرٍ فَرَأَيْتُمَانِي كَاذِبًا آثِمًا غَادِرًا خَائِنًا وَاللَّهُ يَعْلَمُ إِنِّي لَصَادِقٌ بَارٌّ رَاشِدٌ تَابِعٌ لِلْحَقِّ فَوَلِيتُهَا ثُمَّ جِئْتَنِي أَنْتَ وَهَذَا وَأَنْتُمَا جَمِيعٌ وَأَمْرُكُمَا وَاحِدٌ فَقُلْتُمَا ادْفَعْهَا إِلَيْنَا فَقُلْتُ إِنْ شِئْتُمْ دَفَعْتُهَا إِلَيْكُمَا عَلَى أَنَّ عَلَيْكُمَا عَهْدَ اللَّهِ أَنْ تَعْمَلاَ فِيهَا بِالَّذِي كَانَ يَعْمَلُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخَذْتُمَاهَا بِذَلِكَ قَالَ أَكَذَلِكَ قَالاَ نَعَمْ ‏.‏ قَالَ ثُمَّ جِئْتُمَانِي لأَقْضِيَ بَيْنَكُمَا وَلاَ وَاللَّهِ لاَ أَقْضِي بَيْنَكُمَا بِغَيْرِ ذَلِكَ حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ فَإِنْ عَجَزْتُمَا عَنْهَا فَرُدَّاهَا إِلَىَّ ‏.‏

যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মালিক ইবনু আওস (রাঃ) তাকে হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) আমাকে ডেকে পাঠালেন। বেলা উঠে গেলে আমি তাঁর নিকট এলাম। তখন আমি তাঁকে তাঁর ঘরে খাটের উপর বসা অবস্থায় দেখলাম। তাতে বিছানা ছিল চাটাইয়ের। তিনি চামড়ার একটি বালিশের উপর হেলান দিয়ে বসা ছিলেন। তখন তিনি আমাকে বললেন, হে মাল! (অর্থাৎ- হে মালিক) তোমার সম্প্রদায়ের কয়েকটি পরিবারের লোকজন আমার কাছে দ্রুত এলো, আমি তাদেরকে কিছু দেয়ার নির্দেশ দিয়েছি। তুমি তা গ্রহন করো এবং তাদের মধ্যে বন্টন করে দাও। অতএব আমি বললাম, আপনি যদি এর নির্দেশ আমাকে ব্যতীত অন্য কাউকে দিতেন, তাহলে ভাল হত। তখন তিনি বললেন, হে মাল! (অর্থাৎ হে মালিক) তুমি তা গ্রহন করো। এমন সময় ইয়ারফা’ (রহঃ) তাঁর কাছে উপস্থিত হয়ে বলল, হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনার সাথে সাক্ষাৎ করতে চান ‘উসমান, ‘আবদূর রহমান ইবনু ‘আওফ, যুবায়র এবং সা’দ। তখন ‘উমার বললেন, হ্যাঁ, তাদেরকে আসতে দাও। তখন সকলেই প্রবেশ করলেন। এরপর পুনরায় ইয়ারফা’ এসে বলল, ‘আব্বাস এবং ‘আলী (রাঃ) আপনার সাথে সাক্ষাৎ করতে চান। তখন তিনি বললেন, হ্যাঁ, তাদেরকেও আসতে দাও। এরপর ‘আব্বাস (রাঃ) বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন! আমার মধ্যে এবং এ মিথ্যাবাদী, পাপী, প্রতারক ও বিশ্বাসঘাতকের মধ্যে মীমাংসা করে দিন। [৩৬] তখন লোকেরা বলল, হ্যাঁ, হে আমীরুল মু’মিনীন! তাঁদের মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে দিন এবং তাদেরকে এ থেকে স্বস্তি দিন। অতএব মালিক ইবনু আওস (রাঃ) বললেন, আমার ধারনা হলো যে, তাঁরা দু’জন অর্থাৎ- ‘আলী এবং ‘আব্বাস (রাঃ) তাঁদেরকে পূর্বাহ্নে পাঁঠিয়ে ছিলেন এ ব্যাপারটির জন্যেই, যেন তাঁরা ‘উমারকে ব্যাপারটি বুঝিয়ে ফায়সালা করে দেন।

‘উমার বললেন, আপনারা একটু অপেক্ষা করুন। আমি আপনাদের সে মহান আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, যার নির্দেশে আকাশ এবং পৃথিবী যথাস্থানে অবস্থিত। আপনাদের কি জানা নেই যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমরা (নাবীগণ) কাউকে ওয়ারিস বানিয়ে যাই না, আমরা যা রেখে যাই তা হবে সদাকাহ। তখন তাঁরা বললেন, হ্যাঁ, আমরা তা জানি। এবার তিনি ‘আলী এবং ‘আব্বাস (রাঃ)- এর দিকে লক্ষ্য করে বললেন, আমি আপনাদের উভয়কেই সে মহান আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, যাঁর নির্দেশে আকাশ এবং পৃথিবী যথাস্থানে অবস্থিত। আপনারা কি জানেন না যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমরা (নাবী সম্প্রদায়) কাউকে উত্তরাধিকার করে যাই না। আমরা যা রেখে যাই, তা হবে সদাকাহ। তখন তাঁরা উভয়েই বললেন, হ্যাঁ। আমরা তা জানি। তখন ‘উমার (রাঃ) বললেন, আল্লাহ তা’আলা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য প্রদান করেছেন, যা তাকে ছাড়া অন্য কাউকে প্রদান করেননি। তিনি বলেন, “আল্লাহ তা’আলা জনপদ বা নগরবাসীর নিকট থেকে মালে ফাই [৩৭] হিসেবে স্বীয় রসূলকে যা প্রদান করেছেন- তা আল্লাহ ও তদীয় রসূলের জন্য নির্দিষ্ট। আমার জানা নেই যে, তিনি এ পঠিত আয়াতের পূর্বেও কোন আয়াত পাঠ করছিলেন কি-না? অতঃপর ‘উমার (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তো তোমাদেরকে বানী নাযীর গোত্র থেকে প্রাপ্ত সম্পদ বন্টন করে দিয়েছেন। আল্লাহর শপথ! তিনি সম্পদকে নিজের জন্যে জমা করে রেখে যাননি। আর তিনি এমনও করেননি যে, নিজে সম্পদ নিয়েছেন এবং তোমাদেরকে তা দেননি। পরিশেষে যে সম্পদ রইল তা থেকে আপন পরিবারের এক বছরের ভরণ পোষণের খরচ রেখে অবশিষ্ট সম্পদ বাইতুল মালে জমা দেন। এরপর ‘উমার (রাঃ) বললেন, আপনাদেরকে সে মহান আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি, যার নির্দেশে আকাশ ও পৃথিবী যথাস্থানে অবস্থিত। আপনারা কি সেসব কথা অবগত আছেন। তখন তাঁরা বলেন, হ্যাঁ, আমরা তা জানি। এরপর তিনি ‘আব্বাস এবং ‘আলী (রাঃ) উভয়কে অনুরূপ শপথ প্রদান করলেন, যেরূপ তিনি ইতোপূর্বে আগত সম্প্রদায়ের লোকদেরকে শপথ প্রদান করেছিলেন। তিনি বললেন, আপনারা উভয়ই কি এসব কথা জানেন? তখন তাঁরা উভয়েই বললেন, হ্যাঁ। অতঃপর ‘উমার (রাঃ) বললেন, যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ইনতিকাল হলো তখন আবূ বাকর (রাঃ) বললেন যে, আমিই রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ওয়ালী। আর আপনারা উভয়েই এসেছেন, আপনি আপনার ভাতিজা থেকে মীরাস দাবী করতে। আর আপনি এসেছেন, আপনার স্ত্রীর (ফাতিমার) পিতা থেকে মীরাস গ্রহন করতে। এরপর আবূ বাকর (রাঃ) বললেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমাদের নাবীগনের সম্পত্তিতে কোন উত্তরাধিকারিত্ব নেই। আমরা যা রেখে যাই- তা হয় সদাকাহ। আপনারা উভয়েই তো তাকে মিথ্যাবাদী, অপরাধী, বিশ্বাসঘাতক এবং খিয়ানতকারী মনে করবেন। অতঃপর প্রকৃতপক্ষে নিশ্চয়ই তিনি [আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ)] সত্যবাদী, পুণ্যবান, সত্তপথ প্রদর্শক এবং সত্যের অনুসারী যা আল্লাহ জানেন। অতঃপর আবূ বাকর (রাঃ) মৃত্যুবরণ করলেন। তখন আমি ওয়ালী হলাম রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ও আবূ বাকর (রাঃ)-এর। সুতরাং আপনারা উভয়েই আমাকেও তার মত মিথ্যাবাদী, পাপী, বিশ্বাসঘাতক এবং খিয়ানতকারী মনে করছেন। আল্লাহ অবগত আছেন যে, নিশ্চয়ই আমি সত্যবাদী, পুণ্যবান, সত্য পথ-প্রদর্শক এবং সত্যের অনুসারী। আমি সে সম্পদেরও ওলী ও অভিভাবক। অতঃপর আপনি এবং ইনি এসেছেন। আপনারা উভয়েই এক এবং আপনাদের দাবীও এক। সুতরাং আপনারা বলছেন যে, এসব আমাদের কাছে দিয়ে দিন।

আমি বলি- যদি আপনারা চান, তবে আমি তা আপনাদেরকে দিয়ে দেব- এ শর্তে যে, আপনারা এ সম্পদ দ্বারা সে কাজ করবেন, যা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) করতেন। অতএব আপনারা এ শর্তে আমার নিকট থেকে তা গ্রহন করেছেন। এরপর ‘উমার (রাঃ) বললেন, আমার কথা কি যথার্থ? তখন উভয়েই বললেন, হ্যাঁ। ‘উমার (রাঃ) বললেন, তারপরও আপনারা দুজন আমার কাছে এসেছেন, আপনাদের মাঝে (সম্পদের) মীমাংসা করে দেয়ার জন্য। আল্লাহর কসম! আমি আপনাদের উভয়ের মাঝে এটা ছাড়া আর কোন মীমাংসা করতে পারবো না কিয়ামাত পর্যন্ত। আর যদি আপনারা সে মালের দায়িত্ব পালনে অপারগ হন, তবে তা আপনারা আমার কাছে ফেরত দিয়েছেন। (ই.ফা. ৪৪২৫, ই.সে. ৪৪২৭)

[৩৬] এখানে এ শব্দগুলোর প্রকৃত অর্থ উদ্দেশ্য নয়। বরং রূপক অর্থে এ শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়েছে। ‘আলী (রাঃ) -কে ধমক দেয়ার জন্যই ‘আব্বাস (রাঃ) এ কথা বলেছেন।

[৩৭] যুদ্ধবিহীন প্রাপ্ত সম্পদকে মালে ফাই বলে।

৪৪৭০
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَمُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، – قَالَ ابْنُ رَافِعٍ حَدَّثَنَا وَقَالَ الآخَرَانِ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، – أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مَالِكِ بْنِ أَوْسِ، بْنِ الْحَدَثَانِ قَالَ أَرْسَلَ إِلَىَّ عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ فَقَالَ إِنَّهُ قَدْ حَضَرَ أَهْلُ أَبْيَاتٍ مِنْ قَوْمِكَ ‏.‏ بِنَحْوِ حَدِيثِ مَالِكٍ ‏.‏ غَيْرَ أَنَّ فِيهِ، فَكَانَ يُنْفِقُ عَلَى أَهْلِهِ مِنْهُ سَنَةً وَرُبَّمَا قَالَ مَعْمَرٌ يَحْبِسُ قُوتَ أَهْلِهِ مِنْهُ سَنَةً ثُمَّ يَجْعَلُ مَا بَقِيَ مِنْهُ مَجْعَلَ مَالِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ ‏.‏

মালিক ইবনু আওস ইবনু হাদসান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ‘উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) আমাকে ডেকে পাঠালেন। এরপর বললেন, তোমার সম্প্রদায়ের কতিপয় পরিবারের লোক আমার কাছে উপস্থিত হলো। … … তারপর মালিক (রাঃ) – এর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। তাছাড়া তাঁর হাদীসে রয়েছে যে, “তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর পরিবারের জন্য তা থেকে এক বছরের খরচ দিতেন। অনেক সময় মামার (রহঃ) বলেছেন যে, তাঁর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পরিবারের জন্য তা থেকে এক বছরের খোরাকী রেখে দিতেন। এরপর অবশিষ্ট সম্পদ বাইতুল মালে জমা দিতেন। (ই.ফা. ৪৪২৬, ই.সে. ৪৪২৮)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]