সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা প্রশাসন ও নেতৃত্ব অধ্যায় ৩য় ভাগ হাদিস নং ৪৮২৮ – ৪৮৬৫

৪৯. অধ্যায়ঃ
সামুদ্রিক জিহাদের মাহাত্ম্য

৪৮২৮
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي، طَلْحَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَدْخُلُ عَلَى أُمِّ حَرَامٍ بِنْتِ مِلْحَانَ فَتُطْعِمُهُ وَكَانَتْ أُمُّ حَرَامٍ تَحْتَ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ فَدَخَلَ عَلَيْهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا فَأَطْعَمَتْهُ ثُمَّ جَلَسَتْ تَفْلِي رَأْسَهُ فَنَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ اسْتَيْقَظَ وَهُوَ يَضْحَكُ قَالَتْ فَقُلْتُ مَا يُضْحِكُكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏”‏ نَاسٌ مِنْ أُمَّتِي عُرِضُوا عَلَىَّ غُزَاةً فِي سَبِيلِ اللَّهِ يَرْكَبُونَ ثَبَجَ هَذَا الْبَحْرِ مُلُوكًا عَلَى الأَسِرَّةِ أَوْ مِثْلَ الْمُلُوكِ عَلَى الأَسِرَّةِ ‏”‏ ‏.‏ يَشُكُّ أَيَّهُمَا قَالَ قَالَتْ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ فَدَعَا لَهَا ثُمَّ وَضَعَ رَأْسَهُ فَنَامَ ثُمَّ اسْتَيْقَظَ وَهُوَ يَضْحَكُ قَالَتْ فَقُلْتُ مَا يُضْحِكُكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏”‏ نَاسٌ مِنْ أُمَّتِي عُرِضُوا عَلَىَّ غُزَاةً فِي سَبِيلِ اللَّهِ ‏”‏ ‏.‏ كَمَا قَالَ فِي الأُولَى قَالَتْ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهَ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ قَالَ ‏”‏ أَنْتِ مِنَ الأَوَّلِينَ ‏”‏ ‏.‏ فَرَكِبَتْ أُمُّ حَرَامٍ بِنْتُ مِلْحَانَ الْبَحْرَ فِي زَمَنِ مُعَاوِيَةَ فَصُرِعَتْ عَنْ دَابَّتِهَا حِينَ خَرَجَتْ مِنَ الْبَحْرِ فَهَلَكَتْ ‏.‏

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উম্মু হারাম বিনতু মিলহান (রাঃ)-এর ঘরে যেতেন। তিনি তাঁকে আপ্যায়ন করতেন। উম্মু হারাম (রাঃ) ছিলেন, ‘উবাদাহ্‌ ইবনু সামিত (রাঃ)-এর স্ত্রী। একদা তিনি তাঁর ঘরে গেলেন এবং তিনি তাঁকে (চিরাচরিত অভ্যাস অনুযায়ী) আপ্যায়ন করলেন। তারপর তিনি তাঁর (রসূলুল্লাহর) মাথার উকুন দেখতে বসলেন এবং এ অবস্থায় রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘুমিয়ে পড়লেন। তারপর তিনি যখন জাগ্রত হলেন তখন তিনি হাসছিলেন। উম্মু হারাম (রাঃ) বলেন, আমি তখন বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনার হাসির কারণ কী? তিনি বললেন, আমার উম্মাতের এমন কিছু সংখ্যক লোককে আমার সম্মুখে পেশ করা হলো, যারা আল্লাহর পথের যোদ্ধারূপে রাজা-বাদশাহের ন্যায় সাগর পৃষ্ঠে সিংহাসনে আসীন হবেন। অথবা বলেছেন, রাজা-বাদশাহ্‌র মতো সিংহাসনে আসীন হবেন। রাবী সন্দেহ পোষণ করেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কোন্‌ বাক্যটি বলেছেন। উম্মু হারাম (রাঃ) বলেন, তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি আল্লাহর কাছে দু’আ করুন! যেন তিনি আমাকেও তাদের সঙ্গে শামিল করেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর জন্যে দু’আ করলেন। এরপর তিনি মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন। আবার জেগে হাসতে লাগলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনাকে কিসে হাসাচ্ছে? তিনি বললেন, আমার উম্মাতের কিছু সংখ্যক লোককে আমার সম্মুখে পেশ করা হয়, আল্লাহর পথের যোদ্ধারূপে….. পূর্বের বাক্যের অনুরূপ। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আপনি আল্লাহর কাছে দু’আ করুন! তিনি যেন আমাকেও তাদের সঙ্গে শামিল করেন। তিনি বললেন, তুমি হবে তাদের প্রথম সারির একজন।

তারপর উম্মু হারাম বিনতু মিলহান মু’আবিয়াহ্‌ (রাঃ)-এর ‘আমালে (সত্যিসত্যি) সমুদ্রপৃষ্ঠে (সাইপ্রাসের যুদ্ধ উপলক্ষে) আরোহণ করেন এবং সমুদ্র থেকে বের হওয়ার কালে সওয়ারী থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। (ই.ফা. ৪৭৮১, ই.সে. ৪৭৮২)

৪৮২৯
حَدَّثَنَا خَلَفُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ، يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أُمِّ حَرَامٍ، وَهْىَ خَالَةُ أَنَسٍ قَالَتْ أَتَانَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا فَقَالَ عِنْدَنَا فَاسْتَيْقَظَ وَهُوَ يَضْحَكُ فَقُلْتُ مَا يُضْحِكُكَ يَا رَسُولَ اللَّهِ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي قَالَ ‏”‏ أُرِيتُ قَوْمًا مِنْ أُمَّتِي يَرْكَبُونَ ظَهْرَ الْبَحْرِ كَالْمُلُوكِ عَلَى الأَسِرَّةِ ‏”‏ ‏.‏ فَقُلْتُ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ قَالَ ‏”‏ فَإِنَّكِ مِنْهُمْ ‏”‏ ‏.‏ قَالَتْ ثُمَّ نَامَ فَاسْتَيْقَظَ أَيْضًا وَهُوَ يَضْحَكُ فَسَأَلْتُهُ فَقَالَ مِثْلَ مَقَالَتِهِ فَقُلْتُ ادْعُ اللَّهَ أَنْ يَجْعَلَنِي مِنْهُمْ ‏.‏ قَالَ ‏”‏ أَنْتِ مِنَ الأَوَّلِينَ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ فَتَزَوَّجَهَا عُبَادَةُ بْنُ الصَّامِتِ بَعْدُ فَغَزَا فِي الْبَحْرِ فَحَمَلَهَا مَعَهُ فَلَمَّا أَنْ جَاءَتْ قُرِّبَتْ لَهَا بَغْلَةٌ فَرَكِبَتْهَا فَصَرَعَتْهَا فَانْدَقَّتْ عُنُقُهَا ‏.‏

আনাস (রাঃ)-এর খালা থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের ঘরে এলেন এবং আমাদের এখানেই মধ্যাহ্ন বিশ্রাম করলেন। তারপর তিনি যখন জাগলেন তখন তিনি হাসছিলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনার হাসবার কারণ কী? আপনার প্রতি আমার পিতা-মাতা কুরবান হোক! তখন জবাবে তিনি বললেন, আমাকে (স্বপ্নে) দেখানো হলো যে, আমার উম্মাতের মধ্যকার একদল লোক রাজা-বাদশাহ্‌দে‌র সিংহাসনে আরোহণের মতো সমুদ্রপৃষ্ঠে আরোহণ করবে। তখন আমি আরয করলাম, আপনি আমার জন্য দু’আ করুন যেন তিনি আমাকে তাদের সঙ্গে শামিল করে নেন। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি তাদের মধ্যে শামিল থাকবে। তারপর তিনি ঘুমিয়ে পড়েন এবং পুনরায় জেগে আবারও হাসতে থাকেন। আমি তাঁকে কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি পূর্বের মতো উত্তর দিলেন। অতঃপর আমি বললাম, আপনি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করুন যেন তিনি আমাকে তাদের সঙ্গে শামিল রাখেন। তিনি বললেন, তুমি হবে তাদের প্রথম দলের অন্তর্ভুক্ত।

রাবী বলেন, পরবর্তীকালে ‘উবাদাহ্‌ ইবনু সামিত (রাঃ) তাঁকে বিয়ে করেন। তিনি সমুদ্রযুদ্ধে যাত্রা করেন এবং তাঁকেও সঙ্গে নিয়ে যান। যখন তিনি ফিরে আসছিলেন তখন একটি খচ্চর তাঁর সামনে আনা হলো। তিনি তাতে আরোহণ করলেন তখন খচ্চরটি তাঁকে নীচে ফেলে দেয়। তাতে তাঁর ঘাড় ভেঙ্গে যায়। (এবং এভাবে তিনি শহীদ হন।) (ই.ফা. ৪৭৮২, ই.সে. ৪৭৮৩)

৪৮৩০
وَحَدَّثَنَاهُ مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحِ بْنِ الْمُهَاجِرِ، وَيَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالاَ أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، عَنِ ابْنِ حَبَّانَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ خَالَتِهِ أُمِّ حَرَامٍ بِنْتِ مِلْحَانَ، أَنَّهَا قَالَتْ نَامَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمًا قَرِيبًا مِنِّي ثُمَّ اسْتَيْقَظَ يَتَبَسَّمُ – قَالَتْ – فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا أَضْحَكَكَ قَالَ ‏ “‏ نَاسٌ مِنْ أُمَّتِي عُرِضُوا عَلَىَّ يَرْكَبُونَ ظَهْرَ هَذَا الْبَحْرِ الأَخْضَرِ ‏”‏ ‏.‏ ثُمَّ ذَكَرَ نَحْوَ حَدِيثِ حَمَّادِ بْنِ زَيْدٍ ‏.‏

আনাস (রাঃ)-এর খালা উন্মু হারাম বিনত মিলহান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের কাছে এলেন এবং মধ্যাহ্ন বিশ্রাম করলেন তারপর মুচকি হাসতে হাসতে জাগলেন। তিনি বলেন, আমি তখন বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনার হাসবার কারণ কি? তিনি বললেন ; আমার উম্মাতের একদল লোককে আমার সামনে পেশ করা হলো যারা ঐ সবুজ সাগরের বুকে আরোহণ করবে …..। তারপর হাম্মাদ ইব্‌ন যায়দের অনুরূপ বর্ণনা করেন।

৪৮৩১
وَحَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، حُجْرٍ قَالُوا حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، – وَهُوَ ابْنُ جَعْفَرٍ – عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ سَمِعَ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، يَقُولُ أَتَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ابْنَةَ مِلْحَانَ خَالَةَ أَنَسٍ فَوَضَعَ رَأْسَهُ عِنْدَهَا ‏.‏ وَسَاقَ الْحَدِيثَ بِمَعْنَى حَدِيثِ إِسْحَاقَ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ وَمُحَمَّدِ بْنِ يَحْيَى بْنِ حَبَّانَ ‏.‏

আনাস ইবন মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

একদা রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আনাস (রাঃ)-এর খালা বিনত মিলহান (রাঃ)-এর কাছে এলেন এবং তার কাছে বিশ্রাম গ্রহণ করলেন। তারপর ইসহাক ইব্‌ন আবু তালহা ও মুহাম্মদ ইব্‌ন ইয়াহইয়া ইব্‌ন হাব্বান (রাঃ)-এর হাদীসের অনুরূপ শেষ পর্যন্ত বর্ণনা করেন।

৫০. অধ্যায়ঃ
আল্লাহর রাহে প্রহরায় থাকার ফযীলত

৪৮৩২
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ بَهْرَامَ الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا أَبُو الْوَلِيدِ الطَّيَالِسِيُّ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، – يَعْنِي ابْنَ سَعْدٍ – عَنْ أَيُّوبَ بْنِ مُوسَى، عَنْ مَكْحُولٍ، عَنْ شُرَحْبِيلَ بْنِ السَّمِطِ، عَنْ سَلْمَانَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ رِبَاطُ يَوْمٍ وَلَيْلَةٍ خَيْرٌ مِنْ صِيَامِ شَهْرٍ وَقِيَامِهِ وَإِنْ مَاتَ جَرَى عَلَيْهِ عَمَلُهُ الَّذِي كَانَ يَعْمَلُهُ وَأُجْرِيَ عَلَيْهِ رِزْقُهُ وَأَمِنَ الْفَتَّانَ ‏”‏ ‏.‏

সালমান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, একটি দিবস ও একটি রাতের সীমান্ত প্রহরা একমাস সিয়াম পালন এবং ইবাদতে রাত জাগার চাইতেও উত্তম। আর যদি এ অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে, তাতে তার এ আমলের সাওয়াব জারী থাকবে। এবং তার (শহীদসুলভ) রিযিক অব্যাহত রাখা হবে এবং সে ব্যক্তি ফিৎনাবাজদের থেকে নিরাপদে থাকবে।

৪৮৩৩
حَدَّثَنِي أَبُو الطَّاهِرِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ شُرَيْحٍ، عَنْ عَبْدِ الْكَرِيمِ، بْنِ الْحَارِثِ عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عُقْبَةَ، عَنْ شُرَحْبِيلَ بْنِ السَّمِطِ، عَنْ سَلْمَانَ الْخَيْرِ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمَعْنَى حَدِيثِ اللَّيْثِ عَنْ أَيُّوبَ بْنِ مُوسَى ‏.‏

সালমান আল-খায়র (রাঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে আয়ুব ইব্‌ন মূসা (রাঃ) থেকে লায়সের হাদীসের অনুরূপ অর্থযুক্ত হাদীস বর্ণনা করেছেন।

৫১. অধ্যায়ঃ
শহীদের বর্ণনা

৪৮৩৪
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ سُمَىٍّ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ بَيْنَمَا رَجُلٌ يَمْشِي بِطَرِيقٍ وَجَدَ غُصْنَ شَوْكٍ عَلَى الطَّرِيقِ فَأَخَّرَهُ فَشَكَرَ اللَّهُ لَهُ فَغَفَرَ لَهُ ‏”‏ ‏.‏ وَقَالَ ‏”‏ الشُّهَدَاءُ خَمْسَةٌ الْمَطْعُونُ وَالْمَبْطُونُ وَالْغَرِقُ وَصَاحِبُ الْهَدْمِ وَالشَّهِيدُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ ‏”‏ ‏.‏

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ একব্যক্তি পথ চলাকালে একটি কাঁটাযুক্ত গাছের ডাল রাস্তায় পেয়ে তা সরিয়ে দিল, তখন আল্লাহ্ তা’আলা তার এ কাজের মূল্যায়ন করলেন এবং (প্রতিদানে) তাকে মার্জনা করে দিলেন। তিনি আরও বললেনঃ শহীদ পাঁচ প্রকার : ১. প্লেগগ্রস্ত ২. উদরাময়গ্রস্ত ৩. ডুবন্ত (ডুবে মৃত) ৪. কোন কিছু চাপা পড়ে মৃত এবং ৫. মহান মহিয়ান আল্লাহর রাহে (প্রাণদানকারী) শহীদ।

৪৮৩৫
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ مَا تَعُدُّونَ الشَّهِيدَ فِيكُمْ ‏”‏ ‏.‏ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ قُتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَهُوَ شَهِيدٌ قَالَ ‏”‏ إِنَّ شُهَدَاءَ أُمَّتِي إِذًا لَقَلِيلٌ ‏”‏ ‏.‏ قَالُوا فَمَنْ هُمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ ‏”‏ مَنْ قُتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَهُوَ شَهِيدٌ وَمَنْ مَاتَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَهُوَ شَهِيدٌ وَمَنْ مَاتَ فِي الطَّاعُونِ فَهُوَ شَهِيدٌ وَمَنْ مَاتَ فِي الْبَطْنِ فَهُوَ شَهِيدٌ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ ابْنُ مِقْسَمٍ أَشْهَدُ عَلَى أَبِيكَ فِي هَذَا الْحَدِيثِ أَنَّهُ قَالَ ‏”‏ وَالْغَرِيقُ شَهِيدٌ ‏”‏ ‏.‏

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা তোমাদের মধ্যকার কাদেরকে শহীদ বলে গণ্য কর? তারা বললেন, “ইয়া রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে ব্যক্তি আল্লাহর রাহে নিহত হয় সেই তো শহীদ। ” তিনি বললেনঃ তবে তো আমার উম্মাতের শহীদের সংখ্যা অতি অল্প হবে। তখন তারা বললেন, তা হলে তারা কারা ইয়া রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ রাহে নিহত হয় সে শহীদ। যে ব্যক্তি আল্লাহর রাহে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করে সেও শহীদ। যে ব্যক্তি প্লেগে মারা যায় সে শহীদ যে ব্যক্তি উদরাময়ে মারা যায় সেও শহীদ। ইব্‌ন মিকসাম (রাঃ) বলেন, আমি তোমার পিতার উপর এ হাদীসের ব্যাপারে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি আরও বলেছেন, এবং পানিতে ডুবে মারা যায় এমন ব্যক্তিও শহীদ।

৪৮৩৬
حَدَّثَنِي عَبْدُ الْحَمِيدِ بْنُ بَيَانٍ الْوَاسِطِيُّ، حَدَّثَنَا خَالِدٌ، عَنْ سُهَيْلٍ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏ مِثْلَهُ غَيْرَ أَنَّ فِي حَدِيثِهِ قَالَ سُهَيْلٌ قَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مِقْسَمٍ أَشْهَدُ عَلَى أَبِيكَ أَنَّهُ زَادَ فِي هَذَا الْحَدِيثِ ‏ “‏ وَمَنْ غَرِقَ فَهُوَ شَهِيدٌ ‏”‏ ‏.‏

সুহায়ল (রাঃ)-এর সূত্র থেকে বর্ণিতঃ

অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। সুহায়ল (রাঃ) বলেন, উবায়দুল্লাহ ইব্‌ন মিকসাম (রাঃ) বলেন, আমি তোমার ভাইয়ের উপর এ হাদীসের ব্যাপারে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি তাতে এতটুকুও অধিক বলেছেন, যে ব্যক্তি পানিতে ডুবে মরলো সেও শহীদ।

৪৮৩৭
وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا بَهْزٌ، حَدَّثَنَا وُهَيْبٌ، حَدَّثَنَا سُهَيْلٌ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَفِي حَدِيثِهِ قَالَ أَخْبَرَنِي عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مِقْسَمٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، وَزَادَ، فِيهِ ‏ “‏ وَالْغَرِقُ شَهِيدٌ ‏”‏ ‏.‏

মুহাম্মদ ইবন হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

মুহাম্মদ ইব্‌ন হাতিম (রাঃ) এ সনদের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে এতটুকু বর্ধিত বলেছেন, যে ব্যক্তি ডুবে মরলো, সেও শহীদ।

৪৮৩৮
حَدَّثَنَا حَامِدُ بْنُ عُمَرَ الْبَكْرَاوِيُّ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ، – يَعْنِي ابْنَ زِيَادٍ – حَدَّثَنَا عَاصِمٌ، عَنْ حَفْصَةَ بِنْتِ سِيرِينَ، قَالَتْ قَالَ لِي أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ بِمَا مَاتَ يَحْيَى بْنُ أَبِي عَمْرَةَ قَالَتْ قُلْتُ بِالطَّاعُونِ ‏.‏ قَالَتْ فَقَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ الطَّاعُونُ شَهَادَةٌ لِكُلِّ مُسْلِمٍ ‏”‏ ‏.‏

হাফসা বিনত সীরীন (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, আনাস ইব্‌ন মালিক (রাঃ) আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়াহইয়া ইব্‌ন আবূ ‘আমরা কিসে মারা গেলেন? আমি বললাম, প্লেগগ্ৰস্ত হয়ে। তিনি (হাফসা) বলেন, তখন তিনি (আনাস) বললেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ প্লেগ হচ্ছে প্রত্যেকটি মুসলিম ব্যক্তির জন্যে শাহাদত স্বরূপ।

৪৮৩৯
وَحَدَّثَنَاهُ الْوَلِيدُ بْنُ شُجَاعٍ، حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنْ عَاصِمٍ، فِي هَذَا الإِسْنَادِ بِمِثْلِهِ ‏.‏

আসিম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এ সনদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

৫২. অধ্যায়ঃ
তিরন্দাযীর ফযীলত এবং এতে উৎসাহ প্রদান এবং তা শিক্ষা করে ভুলে যাওয়ার নিন্দা

৪৮৪০
حَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ مَعْرُوفٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ أَبِي عَلِيٍّ، ثُمَامَةَ بْنِ شُفَىٍّ أَنَّهُ سَمِعَ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ عَلَى الْمِنْبَرِ يَقُولُ ‏ “‏ وَأَعِدُّوا لَهُمْ مَا اسْتَطَعْتُمْ مِنْ قُوَّةٍ أَلاَ إِنَّ الْقُوَّةَ الرَّمْىُ أَلاَ إِنَّ الْقُوَّةَ الرَّمْىُ أَلاَ إِنَّ الْقُوَّةَ الرَّمْىُ ‏”‏

উকবা ইবন আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে মিম্বারের উপর আসীন অবস্থায় আমি বলতে শুনেছি, আল্লাহ্ তা’আলার বাণী “এবং তোমরা তাদের মুকাবিলায় শক্তি সঞ্চয় করে রাখো। ” জেনে রাখো, এ শক্তি হচ্ছে তীরন্দায়ী, জেনে রাখো শক্তি হচ্ছে তীরন্দায়ী, জেনে রাখো শক্তি হচ্ছে তীরন্দায়ী।

৪৮৪১
وَحَدَّثَنَا هَارُونُ بْنُ مَعْرُوفٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، عَنْ أَبِي عَلِيٍّ، عَنْ عُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ سَتُفْتَحُ عَلَيْكُمْ أَرَضُونَ وَيَكْفِيكُمُ اللَّهُ فَلاَ يَعْجِزُ أَحَدُكُمْ أَنْ يَلْهُوَ بِأَسْهُمِهِ ‏”‏ ‏.‏

উকবা ইবন আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে আমি বলতে শুনেছি, অচিরেই অনেক ভূ-খণ্ড তোমাদের পদানত হবে। আর শক্রদের মুকবিলায় আল্লাহই তোমাদের জন্যে যথেষ্ট হবেন। তোমাদের কোন ব্যক্তি যেন তীর দ্বারা খেলার (তীরন্দায়ীর) অভ্যাস ত্যাগ না করে।

৪৮৪২
وَحَدَّثَنَاهُ دَاوُدُ بْنُ رُشَيْدٍ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، عَنْ بَكْرِ بْنِ مُضَرَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ الْحَارِثِ، عَنْ أَبِي عَلِيٍّ الْهَمْدَانِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ عُقْبَةَ بْنَ عَامِرٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ ‏.‏

উকবা ইবন আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উকবা ইব্‌ন আমির (রাঃ) এর বরাতে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

৪৮৪৩
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحِ بْنِ الْمُهَاجِرِ، أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، عَنِ الْحَارِثِ بْنِ يَعْقُوبَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ شَمَاسَةَ، أَنَّ فُقَيْمًا اللَّخْمِيَّ، قَالَ لِعُقْبَةَ بْنِ عَامِرٍ تَخْتَلِفُ بَيْنَ هَذَيْنِ الْغَرَضَيْنِ وَأَنْتَ كَبِيرٌ يَشُقُّ عَلَيْكَ ‏.‏ قَالَ عُقْبَةُ لَوْلاَ كَلاَمٌ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم لَمْ أُعَانِهِ ‏.‏ قَالَ الْحَارِثُ فَقُلْتُ لاِبْنِ شُمَاسَةَ وَمَا ذَاكَ قَالَ إِنَّهُ قَالَ ‏ “‏ مَنْ عَلِمَ الرَّمْىَ ثُمَّ تَرَكَهُ فَلَيْسَ مِنَّا أَوْ قَدْ عَصَى ‏”‏ ‏.‏

ফুকায়ম লাখমী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উকবা ইব্‌ন আমির (রাঃ)-কে বললেন, এই দুই লক্ষ্যস্থলের মধ্যে বারবার আনাগোনা করা এই বৃদ্ধ বয়সে নিশ্চয়ই আপনার জন্য কষ্টকর হয়ে থাকবে। তিনি বললেন, আমি যদি একটি কথা রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট থেকে না শুনতাম, তবে এ কষ্ট করতাম না। রাবী হারিছ বলেন, আমি ইব্‌ন শামাসাহ (রাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, সে কথাটি কি? তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি তীর পরিচালনা শিখলো তারপর তার অভ্যাস ছেড়ে দিল সে আমাদের (উম্মতের দলভুক্ত) নয়। অথবা তিনি বলেছেন, সে পাপ করলো।

৫৩. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর বাণীঃ আমার উম্মতের একদল লোক হকের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে তাদের বিরোধিতা তাদের ক্ষতিসাধন করতে পারবে না

৪৮৪৪
حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَأَبُو الرَّبِيعِ الْعَتَكِيُّ، وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، قَالُوا حَدَّثَنَا حَمَّادٌ، – وَهُوَ ابْنُ زَيْدٍ – عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ أَبِي قِلاَبَةَ، عَنْ أَبِي أَسْمَاءَ، عَنْ ثَوْبَانَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏”‏ لاَ تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي ظَاهِرِينَ عَلَى الْحَقِّ لاَ يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ حَتَّى يَأْتِيَ أَمْرُ اللَّهِ وَهُمْ كَذَلِكَ ‏”‏ ‏.‏ وَلَيْسَ فِي حَدِيثِ قُتَيْبَةَ ‏”‏ وَهُمْ كَذَلِكَ ‏”‏ ‏.‏

সাওবান (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন ; আমার উন্মাতের একটি দল লোক সর্বদাই হকের উপর প্রতিষ্ঠিত (অবিচল) থাকবে। তাদের সঙ্গ ত্যাগ করে কেউ তাদের কোন অনিষ্ট করতে পারবে না। এমন কি এভাবে আল্লাহর আদেশ (অর্থাৎ কিয়ামত) এসে পড়বে আর তারা যেমনটি ছিল তেমনটিই থাকবে। কুতায়বা বর্ণিত হাদীসে “আর তারা তেমনি থাকবে” অংশটুকু নেই।

৪৮৪৫
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، وَعَبْدَةُ كِلاَهُمَا عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عُمَرَ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنَا مَرْوَانُ، – يَعْنِي الْفَزَارِيَّ – عَنْ إِسْمَاعِيلَ، عَنْ قَيْسٍ، عَنِ الْمُغِيرَةِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ لَنْ يَزَالَ قَوْمٌ مِنْ أُمَّتِي ظَاهِرِينَ عَلَى النَّاسِ حَتَّى يَأْتِيَهُمْ أَمْرُ اللَّهِ وَهُمْ ظَاهِرُونَ ‏”‏ ‏.‏

মুগীরা ইবন শু’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, আমার উম্মাতের একদল লোক সর্বদাই মানব জাতির উপর বিজয়ী (প্রভাব বিস্তারকারী) থাকবে। এমন কি এভাবে তাদের কাছে আল্লাহর আদেশ এসে পড়বে, তাদের বিজয়ী থাকাবস্থায়ই।

৪৮৪৬
وَحَدَّثَنِيهِ مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، حَدَّثَنِي إِسْمَاعِيلُ، عَنْ قَيْسٍ، قَالَ سَمِعْتُ الْمُغِيرَةَ بْنَ شُعْبَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ بِمِثْلِ حَدِيثِ مَرْوَانَ سَوَاءً ‏.‏

সমস্যা? রিপোর্ট করুন!

মুগীরা ইবন শু’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি। মারওয়ানের হাদীসের সম্পূর্ণ অনুরূপ।

৪৮৪৭
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سِمَاكِ بْنِ حَرْبٍ، عَنْ جَابِرِ بْنِ سَمُرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ‏ “‏ لَنْ يَبْرَحَ هَذَا الدِّينُ قَائِمًا يُقَاتِلُ عَلَيْهِ عِصَابَةٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ ‏”‏ ‏.‏

জাবির ইবন সামুরা (রাঃ) সূত্র থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন ; এ দ্বীন (ইসলাম) সর্বদা কায়েম থাকবে। মুসলমানদের একটি দল এর পক্ষে লড়তে থাকবে কিয়ামত সংঘটিত হওয়া পর্যন্ত।

৪৮৪৮
حَدَّثَنِي هَارُونُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، وَحَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ، قَالاَ حَدَّثَنَا حَجَّاجُ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ قَالَ ابْنُ جُرَيْجٍ أَخْبَرَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ لاَ تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي يُقَاتِلُونَ عَلَى الْحَقِّ ظَاهِرِينَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ‏”‏ ‏.‏

জাবির ইবন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি, আমার উম্মাতের একটি জামাআত সর্বদাই সত্যের সপক্ষে লড়তে থাকবে, কিয়ামতের দিন পর্যন্ত বিজয়ী (প্রভাবশালী) রূপে।

৪৮৪৯
حَدَّثَنَا مَنْصُورُ بْنُ أَبِي مُزَاحِمٍ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَمْزَةَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ يَزِيدَ، بْنِ جَابِرٍ أَنَّ عُمَيْرَ بْنَ هَانِئٍ، حَدَّثَهُ قَالَ سَمِعْتُ مُعَاوِيَةَ، عَلَى الْمِنْبَرِ يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ لاَ تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي قَائِمَةً بِأَمْرِ اللَّهِ لاَ يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ أَوْ خَالَفَهُمْ حَتَّى يَأْتِيَ أَمْرُ اللَّهِ وَهُمْ ظَاهِرُونَ عَلَى النَّاسِ ‏”‏ ‏.‏

উমায়র ইবন হানী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি মুআবিয়া (রাঃ)-কে মিম্বরের উপর (আসীন অবস্থায়) বলতে শুনেছি “আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি যে, আমার উম্মাতের একটি জামাআত আল্লাহর আদেশের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। যারা তাদের সঙ্গ (সহায়তা) ত্যাগ করবে বা বিরোধিতা করবে, তারা তাদের কোনই অনিষ্ট সাধন করতে পারবে না। এভাবে আল্লাহর আদেশ (তথা কিয়ামত) এসে পড়বে আর তারা তখনও লোকের উপর বিজয়ী থাকবে। ”

৪৮৫০
وَحَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا كَثِيرُ بْنُ هِشَامٍ، حَدَّثَنَا جَعْفَرٌ، – وَهُوَ ابْنُ بُرْقَانَ – حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ الأَصَمِّ، قَالَ سَمِعْتُ مُعَاوِيَةَ بْنَ أَبِي سُفْيَانَ، ذَكَرَ حَدِيثًا رَوَاهُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم لَمْ أَسْمَعْهُ رَوَى عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَلَى مِنْبَرِهِ حَدِيثًا غَيْرَهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ مَنْ يُرِدِ اللَّهُ بِهِ خَيْرًا يُفَقِّهْهُ فِي الدِّينِ وَلاَ تَزَالُ عِصَابَةٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ يُقَاتِلُونَ عَلَى الْحَقِّ ظَاهِرِينَ عَلَى مَنْ نَاوَأَهُمْ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ‏”‏ ‏.‏

ইয়ামীদ ইবন আসান্ম (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি মুআবিয়া ইব্‌ন আবূ সুফিয়ান (রাঃ)-কে এমন একটি হাদীস নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি যা ছাড়া নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর বরাতে অন্য কোন হাদীস মিম্বরের উপর থেকে বলতে তাকে আমি শুনিনি। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে দ্বীনের ব্যুৎপত্তি (সমঝ) দিয়ে থাকেন এবং মুসলমানদের একটি দল সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে লড়াই করবে। যারা তাদের প্রতি বিরূপ ভাব পোষণ করবে অথবা তাদের বিরুদ্ধে থাকবে তারা তাদের উপর বিজয়ী থাকবে। কিয়ামত অবধি এভাবে চলতে থাকবে।

৪৮৫১
حَدَّثَنِي أَحْمَدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ وَهْبٍ، حَدَّثَنَا عَمِّي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ وَهْبٍ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ الْحَارِثِ، حَدَّثَنِي يَزِيدُ بْنُ أَبِي حَبِيبٍ، حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ شُمَاسَةَ الْمَهْرِيُّ، قَالَ كُنْتُ عِنْدَ مَسْلَمَةَ بْنِ مُخَلَّدٍ وَعِنْدَهُ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ إِلاَّ عَلَى شِرَارِ الْخَلْقِ هُمْ شَرٌّ مِنْ أَهْلِ الْجَاهِلِيَّةِ لاَ يَدْعُونَ اللَّهَ بِشَىْءٍ إِلاَّ رَدَّهُ عَلَيْهِمْ ‏.‏ فَبَيْنَمَا هُمْ عَلَى ذَلِكَ أَقْبَلَ عُقْبَةُ بْنُ عَامِرٍ فَقَالَ لَهُ مَسْلَمَةُ يَا عُقْبَةُ اسْمَعْ مَا يَقُولُ عَبْدُ اللَّهِ ‏.‏ فَقَالَ عُقْبَةُ هُوَ أَعْلَمُ وَأَمَّا أَنَا فَسَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ لاَ تَزَالُ عِصَابَةٌ مِنْ أُمَّتِي يُقَاتِلُونَ عَلَى أَمْرِ اللَّهِ قَاهِرِينَ لِعَدُوِّهِمْ لاَ يَضُرُّهُمْ مَنْ خَالَفَهُمْ حَتَّى تَأْتِيَهُمُ السَّاعَةُ وَهُمْ عَلَى ذَلِكَ ‏”‏ ‏.‏ فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ أَجَلْ ‏.‏ ثُمَّ يَبْعَثُ اللَّهُ رِيحًا كَرِيحِ الْمِسْكِ مَسُّهَا مَسُّ الْحَرِيرِ فَلاَ تَتْرُكُ نَفْسًا فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةٍ مِنَ الإِيمَانِ إِلاَّ قَبَضَتْهُ ثُمَّ يَبْقَى شِرَارُ النَّاسِ عَلَيْهِمْ تَقُومُ السَّاعَةُ ‏.‏

আবদুর রাহমান ইবন শুমাসাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আমি মাসলামা ইব্‌ন মুখাল্লাদ (রাঃ)-এর কাছে বসা ছিলাম। তখন আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, কিয়ামত কেবল তখনই কায়েম হবে যখন সৃষ্টির নিকৃষ্টতম লোকরা থাকবে, ওরা জাহিলিয়াত সম্প্রদায়ের লোকদের চাইতেও নিকৃষ্ট হবে। তারা আল্লাহর কাছে যে বস্তুর জন্যই দু’আ করবে তিনি তা প্রত্যাখান করবেন। তারা যখন এ আলোচনায় ছিলেন এমন সময় উকবা ইব্‌ন আমির (রাঃ) সেখানে এলেন। তখন মাসলামা (রাঃ) বললেন, হে উকবা, শুনুন, আবদুল্লাহ কি বলছেন? তখন উকবা (রাঃ) বললেন, তিনিই তা অধিক জানেন। তবে আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি যে, আমার উম্মাতের একটি দল আল্লাহর বিধানের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে লড়ে যাবে। তারা তাদের শক্রদের মুকাবিলায় অত্যন্ত প্রতাপশালী হবে। যারা বিরোধিতা করবে, তারা তাদের কোন অনিষ্ট করতে পারবে না। এভাবে চলতে চলতে তাদের নিকট কিয়ামত এসে যাবে আর তার এর উপরই প্রতিষ্ঠিত থাকবে। আবদুল্লাহ (রাঃ) বললেন, হ্যা। তারপর আল্লাহ একটি বায়ু প্রবাহ প্রেরণ করবেন, সে বায়ু প্রবাহটি হবে কস্তূরীর সুঘ্ৰাণের ন্যায়। এবং তার পরশ হবে রেশমের পরশের মত। সে বায়ু এমন একটি লোককেও অবশিষ্ট রাখবে না যার অন্তরে একটি দানা পরিমাণ ঈমান থাকবে। তাদের সকলকে তা কবজ করে নেবে। তারপর কেবল নিকৃষ্ট লোকগুলোই বাকী থাকবে এবং তাদের উপরই কিয়ামত কায়েম হবে।

৪৮৫২
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ دَاوُدَ بْنِ أَبِي هِنْدٍ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ، عَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِي وَقَّاصٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لاَ يَزَالُ أَهْلُ الْغَرْبِ ظَاهِرِينَ عَلَى الْحَقِّ حَتَّى تَقُومَ السَّاعَةُ ‏”‏ ‏.‏

সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ পশ্চিম দেশীয়রা বরাবর হক্বের উপর বিজয়ী থাকবে কিয়ামাত পর্যন্ত। [৪২] (ই. ফা. ৪৮০৫, ই. সে. ৪৮০৬)






[৪২] অর্থাৎ আরব বা শামবাসী। (মুখতাসার শরহে মুসলিম লিন নাবাবী, ৫ম খন্ড, ১৮৫ পৃষ্ঠা)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

 সরাসরি

৫৪. অধ্যায়ঃ
সফরের সময় জীবজন্তুর সুবিধাদি লক্ষ্য করা ও পথে রাত্রি যাপন নিষিদ্ধ হওয়া

৪৮৫৩
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِذَا سَافَرْتُمْ فِي الْخِصْبِ فَأَعْطُوا الإِبِلَ حَظَّهَا مِنَ الأَرْضِ وَإِذَا سَافَرْتُمْ فِي السَّنَةِ فَأَسْرِعُوا عَلَيْهَا السَّيْرَ وَإِذَا عَرَّسْتُمْ بِاللَّيْلِ فَاجْتَنِبُوا الطَّرِيقَ فَإِنَّهَا مَأْوَى الْهَوَامِّ بِاللَّيْلِ ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমরা উর্বর ভূমি দিয়ে চলাচল করো তখন উটকে ভূমি থেকে তার পাওনা আদায় করতে দিও। আর যখন দুর্ভিক্ষগ্রস্থ ভূমি দিয়ে পথ অতিক্রম করো তখন তাড়াতাড়ি অতিক্রম করবে এবং যখন কোথাও রাত্রি যাপনের জন্য অবতরণ করবে, তখন রাস্তায় অবস্থান করবে না। কেননা তা হচ্ছে জন্তুদের রাতে চলার পথ এবং ছোট ছোট অনিষ্টকর প্রাণীদের রাত্রিকালীন আশ্রয়স্থল। (ই. ফা. ৪৮০৬, ই. সে. ৪৮০৭)

৪৮৫৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ، – يَعْنِي ابْنَ مُحَمَّدٍ – عَنْ سُهَيْلٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ إِذَا سَافَرْتُمْ فِي الْخِصْبِ فَأَعْطُوا الإِبِلَ حَظَّهَا مِنَ الأَرْضِ وَإِذَا سَافَرْتُمْ فِي السَّنَةِ فَبَادِرُوا بِهَا نِقَيَهَا وَإِذَا عَرَّسْتُمْ فَاجْتَنِبُوا الطَّرِيقَ فَإِنَّهَا طُرُقُ الدَّوَابِّ وَمَأْوَى الْهَوَامِّ بِاللَّيْلِ ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা যখন উর্বর ভূমি দিয়ে পথ অতিক্রম কর, তখন উটকে ভূমি থেকে তার অংশ দাও (অর্থাৎ তাদেরকে কিছুক্ষণ বিচরণের জন্যে ছেড়ে দাও)। আর যখন দুর্ভিক্ষগ্রস্থ বা অনুর্বর ভূমি দিয়ে পথ অতিক্রম কর তখন তাড়াতাড়ি (তাদের চলার শক্তি বাকী থাকতে) তা অতিক্রম করে যাও। আর যখন রাত্রি যাপনের জন্য কোথাও অবতরণ কর, তখন পথ (তাঁবু খাটানো) থেকে সরে থাকবে। কেননা তা হচ্ছে জীবজন্তু ও সাপ বিচ্ছু ইত্যাদির রাত্রিবেলার আশ্রয়স্থল। (ই. ফা. ৪৮০৭, ই. সে. ৪৮০৮)

৫৫. অধ্যায়ঃ
সফর কষ্টের একটা অংশ, প্রয়োজন সেরে মুসাফিরের তাড়াতাড়ি পরিজনদের কাছে ফিরে আসা মুস্তাহাব

৪৮৫৫
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ بْنِ قَعْنَبٍ، وَإِسْمَاعِيلُ بْنُ أَبِي أُوَيْسٍ، وَأَبُو مُصْعَبٍ الزُّهْرِيُّ وَمَنْصُورُ بْنُ أَبِي مُزَاحِمٍ وَقُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ قَالُوا حَدَّثَنَا مَالِكٌ، ح وَحَدَّثَنَا يَحْيَى، بْنُ يَحْيَى التَّمِيمِيُّ – وَاللَّفْظُ لَهُ – قَالَ قُلْتُ لِمَالِكٍ حَدَّثَكَ سُمَىٌّ عَنْ أَبِي صَالِحٍ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ السَّفَرُ قِطْعَةٌ مِنَ الْعَذَابِ يَمْنَعُ أَحَدَكُمْ نَوْمَهُ وَطَعَامَهُ وَشَرَابَهُ فَإِذَا قَضَى أَحَدُكُمْ نَهْمَتَهُ مِنْ وَجْهِهِ فَلْيُعَجِّلْ إِلَى أَهْلِهِ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ نَعَمْ ‏.‏

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ সফর ক্লেশের অংশ, তা তোমাদের কোন ব্যাক্তির ঘুম ও পানাহারে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সুতরাং তোমাদের কাজ শেষ হয়ে গেলেই সে যেন দ্রুততার সাথে পরিবার-পরিজনের নিকট ফিরে যায়। রাবী ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া তামীমী (রহঃ) বলেন, আমি (রাবী) মালিককে বললাম, সুমাই কি আপনাকে আবূ হূরাইরাহ (রাঃ) বর্ণিত এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন? তখন তিনি বললেন, হ্যাঁ। (ই. ফা. ৪৮০৮, ই. সে. ৪৮০৯)

৫৬. অধ্যায়ঃ
সফর থেকে রাতে অতর্কিতে ঘরে ফেরা মাকরূহ

৪৮৫৬
حَدَّثَنِي أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، عَنْ هَمَّامٍ، عَنْ إِسْحَاقَ، بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ لاَ يَطْرُقُ أَهْلَهُ لَيْلاً وَكَانَ يَأْتِيهِمْ غُدْوَةً أَوْ عَشِيَّةً ‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কখনো (গভীর) রাতে (সফর থেকে ঘরে) পরিবার-পরিজনের নিকট আসতেন না; বরং সকালে বা সন্ধ্যায় তাঁদের নিকট আসতেন। (ই. ফা. ৪৮০৯, ই. সে. ৪৮১০)

৪৮৫৭
وَحَدَّثَنِيهِ زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ غَيْرَ أَنَّهُ قَالَ كَانَ لاَ يَدْخُلُ ‏

আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে, তবে এতে (আরবী) -এর স্থলে (আরবী) বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৮১০, ই.সে. ৪৯১১)

৪৮৫৮
حَدَّثَنِي إِسْمَاعِيلُ بْنُ سَالِمٍ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا سَيَّارٌ، ح وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ سَيَّارٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي غَزَاةٍ فَلَمَّا قَدِمْنَا الْمَدِينَةَ ذَهَبْنَا لِنَدْخُلَ فَقَالَ ‏ “‏ أَمْهِلُوا حَتَّى نَدْخُلَ لَيْلاً – أَىْ عِشَاءً – كَىْ تَمْتَشِطَ الشَّعِثَةُ وَتَسْتَحِدَّ الْمُغِيبَةُ ‏”‏ ‏.‏

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আমরা এক অভিযানে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম)- এর সঙ্গে ছিলাম। তারপর আমরা যখন মাদীনায় আসলাম এবং ঘরে ফিরতে উদ্যত হলাম তখন তিনি বললেন, একটু অপেক্ষা কর, আমরা রাতে বা সন্ধ্যায় বাড়ীতে প্রবেশ করবো এতে যাদের সহধর্মিণীদের চুল অবিন্যস্ত তারা নিজেদের চুল বিন্যস্ত করে নিবে এবং যাদের স্বামী প্রবাসে ছিল তারা গুপ্তাঙ্গের লোম পরিষ্কার করার অবকাশ পাবে। (ই.ফা. ৪৮১১, ই.সে. ৪৯১২)

৪৮৫৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنِي عَبْدُ الصَّمَدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ سَيَّارٍ، عَنْ عَامِرٍ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ إِذَا قَدِمَ أَحَدُكُمْ لَيْلاً فَلاَ يَأْتِيَنَّ أَهْلَهُ طُرُوقًا حَتَّى تَسْتَحِدَّ الْمُغِيبَةُ وَتَمْتَشِطَ الشَّعِثَةُ ‏”‏ ‏.‏

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যখন তোমাদের কোন ব্যক্তি রাতের বেলা সফর থেকে ফিরে তখন সে যেন রাতের আগন্তুকের মতো অতর্কিতভাবে পরিবারবর্গের কাছে গিয়ে উপস্থিত না হয় যাতে দীর্ঘকাল অনুপস্থিত স্বামীর স্ত্রী তার গুপ্তাঙ্গের লোম পরিষ্কার করার এবং এলোমেলো চুলবিশিষ্টা নারী তার চুল বিন্যাস করার সুযোগ পায়। (ই.ফা. ৪৮১২, ই.সে. ৪৯১৩)

৪৮৬০
وَحَدَّثَنِيهِ يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ، حَدَّثَنَا رَوْحُ بْنُ عُبَادَةَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، حَدَّثَنَا سَيَّارٌ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ ‏.‏

সাইয়্যার (রহঃ) হতে এ সানাদ থেকে বর্ণিতঃ

অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ৪৮১৩, ই.সে. ৪৯১৪)

৪৮৬১
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، – يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ – حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ عَاصِمٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَطَالَ الرَّجُلُ الْغَيْبَةَ أَنْ يَأْتِيَ أَهْلَهُ طُرُوقًا ‏.‏

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন কোন ব্যক্তি দীর্ঘ সফরের পর বাড়ী ফিরে তখন রাতের অপ্রত্যাশিত আগন্তুকের মতো পরিবারের নিকট উপস্থিত হতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বারণ করেছেন। (ই.ফা. ৪৮১৪, ই.সে. ৪৯১৫)

৪৮৬২
وَحَدَّثَنِيهِ يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ، حَدَّثَنَا رَوْحٌ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏

শু’বাহ্ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উক্ত সানাদে বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ৪৮১৫, ই.সে. ৪৯১৬)

৪৮৬৩
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، عَنْ مُحَارِبٍ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يَطْرُقَ الرَّجُلُ أَهْلَهُ لَيْلاً يَتَخَوَّنُهُمْ أَوْ يَلْتَمِسُ عَثَرَاتِهِمْ ‏.‏

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন ব্যক্তি রাতের বেলা অতর্কিত ঘরে ফিরে তার স্ত্রীর প্রতি সন্দেহ পোষণ করতে কিংবা দোষ-ত্রুটি খোঁজ করতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বারণ করেছেন। (ই.ফা. ৪৮১৬, ই.সে. ৪৯১৭)

৪৮৬৪
وَحَدَّثَنِيهِ مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، بِهَذَا الإِسْنَادِ قَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ قَالَ سُفْيَانُ لاَ أَدْرِي هَذَا فِي الْحَدِيثِ أَمْ لاَ ‏.‏ يَعْنِي أَنْ يَتَخَوَّنَهُمْ أَوْ يَلْتَمِسَ عَثَرَاتِهِمْ ‏.‏

সুফইয়ান (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উক্ত হাদীস বর্ণিত। ‘আবদুর রহমান (রহঃ) বলেন, সুফইয়ান (রহঃ) বলেছেন, “তাদের প্রতি সন্দেহ পোষণ ও দোষ-ত্রুটি খোঁজা প্রসঙ্গটি” হাদীসে আছে কি-না তা আমার জানা নেই। (ই.ফা. ৪৮১৭, ই.সে. ৪৯১৮)

৪৮৬৫
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، ح وَحَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللَّهِ بْنُ مُعَاذٍ، حَدَّثَنَا أَبِي قَالاَ، جَمِيعًا حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُحَارِبٍ، عَنْ جَابِرٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِكَرَاهَةِ الطُّرُوقِ وَلَمْ يَذْكُرْ يَتَخَوَّنُهُمْ أَوْ يَلْتَمِسُ عَثَرَاتِهِمْ ‏.‏

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে অতর্কিত রাত্রিতে ঘরে ফিরা মাকরূহ হওয়া সংক্রান্ত কথা রিওয়ায়াত করেছেন। তবে তিনি ” তাদের প্রতি সন্দেহ পোষণ ও দোষ-ত্রুটি খোঁজা “বাক্যটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৪৮১৮, ই.সে. ৪৯১৯)

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]