সহীহ মুসলিম শরীফ হাদিস আরবি বাংলা ঈমান অধ্যায় ১ম ভাগ হাদিস নং ৮১ – ১০৫


২০. অধ্যায়ঃ
মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা ঈমানের অঙ্গ। ঈমান হ্রাস ও বৃদ্ধি হয়। ভালো কাজের আদেশ করা ও মন্দ কাজের নিষেধ করা ওয়াজিব

৮১
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ سُفْيَانَ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، كِلاَهُمَا عَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ، – وَهَذَا حَدِيثُ أَبِي بَكْرٍ – قَالَ أَوَّلُ مَنْ بَدَأَ بِالْخُطْبَةِ يَوْمَ الْعِيدِ قَبْلَ الصَّلاَةِ مَرْوَانُ فَقَامَ إِلَيْهِ رَجُلٌ فَقَالَ الصَّلاَةُ قَبْلَ الْخُطْبَةِ ‏.‏ فَقَالَ قَدْ تُرِكَ مَا هُنَالِكَ ‏.‏ فَقَالَ أَبُو سَعِيدٍ أَمَّا هَذَا فَقَدْ قَضَى مَا عَلَيْهِ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الإِيمَانِ ‏”‏ ‏.‏

তারিক ইবনু শিহাব (আবূ বাক্‌র ইবনু আবী শাইবার হাদীসে) থেকে বর্ণিতঃ

মারওয়ান ঈদের দিন সলাতের পূর্বে খুত্‌বাহ্‌ দেয়ার (বিদ‘আতী) প্রথা প্রচলন করে। এ সময় এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, ‘‘খুতবার আগে সলাত’’ (সম্পন্ন করুন)। মারওয়ান বললেন, এখন থেকে সে নিয়ম পরিত্যাগ করা হলো। সাথে সাথে আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ) উঠে বললেন, ঐ ব্যক্তি তার কর্তব্য পালন করেছে। আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, তোমাদের কেউ গর্হিত কাজ হতে দেখলে সে যেন স্বহস্তে (শক্তি প্রয়োগে) পরিবর্তন করে দেয়, যদি তার সে ক্ষমতা না থাকে, তবে মুখ (বাক্য) দ্বারা এর পরিবর্তন করবে। আর যদি সে সাধ্যও না থাকে, তখন অন্তর দ্বারা করবে, তবে এটা ঈমানের দুর্বলতম পরিচায়ক। (ই.ফা. ৮৩; ই.সে. ৮৫)
৮২
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ رَجَاءٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، وَعَنْ قَيْسِ بْنِ مُسْلِمٍ، عَنْ طَارِقِ بْنِ شِهَابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، فِي قِصَّةِ مَرْوَانَ وَحَدِيثِ أَبِي سَعِيدٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِ حَدِيثِ شُعْبَةَ وَسُفْيَانَ ‏.

আবূ সা‘ঈদ আল খুদরী (রাঃ)-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ

মারওয়ানের ঘটনা বর্ণনা করেছেন। আর এ হাদীসটি শু‘বাহ্‌ ও সুফ্‌ইয়ানের বর্ণিত হাদীসের মতোই। (ই.ফা. ৮৪; ই.সে. ৮৬)
৮৩
حَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، وَأَبُو بَكْرِ بْنُ النَّضْرِ وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ – وَاللَّفْظُ لِعَبْدٍ – قَالُوا حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ صَالِحِ بْنِ كَيْسَانَ، عَنِ الْحَارِثِ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَكَمِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْمِسْوَرِ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ مَا مِنْ نَبِيٍّ بَعَثَهُ اللَّهُ فِي أُمَّةٍ قَبْلِي إِلاَّ كَانَ لَهُ مِنْ أُمَّتِهِ حَوَارِيُّونَ وَأَصْحَابٌ يَأْخُذُونَ بِسُنَّتِهِ وَيَقْتَدُونَ بِأَمْرِهِ ثُمَّ إِنَّهَا تَخْلُفُ مِنْ بَعْدِهِمْ خُلُوفٌ يَقُولُونَ مَا لاَ يَفْعَلُونَ وَيَفْعَلُونَ مَا لاَ يُؤْمَرُونَ فَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِيَدِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ وَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِلِسَانِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ وَمَنْ جَاهَدَهُمْ بِقَلْبِهِ فَهُوَ مُؤْمِنٌ وَلَيْسَ وَرَاءَ ذَلِكَ مِنَ الإِيمَانِ حَبَّةُ خَرْدَلٍ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو رَافِعٍ فَحَدَّثْتُهُ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ فَأَنْكَرَهُ عَلَىَّ فَقَدِمَ ابْنُ مَسْعُودٍ فَنَزَلَ بِقَنَاةَ فَاسْتَتْبَعَنِي إِلَيْهِ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عُمَرَ يَعُودُهُ فَانْطَلَقْتُ مَعَهُ فَلَمَّا جَلَسْنَا سَأَلْتُ ابْنَ مَسْعُودٍ عَنْ هَذَا الْحَدِيثِ فَحَدَّثَنِيهِ كَمَا حَدَّثْتُهُ ابْنَ عُمَرَ ‏.‏ قَالَ صَالِحٌ وَقَدْ تُحُدِّثَ بِنَحْوِ ذَلِكَ عَنْ أَبِي رَافِعٍ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার পূর্বে আল্লাহ তা‘আলা যে নবীকেই কোন উম্মাতের মধ্যে পাঠিয়েছেন, তাদের মধ্যে তাঁর জন্য একদল অনুসারী ও সহাবা ছিল। তারা তাঁর সুন্নাতকে সমুন্নত রাখত এবং তাঁর নির্দেশের অনুসরণ করত। অতঃপর তাদের অবর্তমানে কতগুলো মন্দ লোক স্থলাভিষিক্ত হয়। তারা মুখে যা বলে নিজেরা তা করে না। আর যা করে তার জন্য তাদেরকে নির্দেশ করা হয়নি। অতএব যে ব্যক্তি তাদের হাত (শক্তি) দ্বারা মুকাবিলা করবে, সে মু’মিন। এরপর আর সরিষার দানা পরিমাণও ঈমানের স্তর নেই। আবূ নাফি’ বলেন, আমি এ হাদীসটি ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ)-কে বললাম। তিনি আমার সামনে এটা অস্বীকার করলেন। পরে এক সময় ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) ‘কানাত’ (মাদীনার কাছাকাছি একটি) নামক স্থানে আসলেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘উমার (রাঃ) অসুস্থ ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদকে দেখার জন্য আমাকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন। আমি তাঁর সাথে গেলাম। যখন আমরা বসে পড়লাম, তখন আমি ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদকে এ হাদীস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি আমাকে অবিকল সেরূপ-ই বর্ণনা করলেন, যেরূপ আমি ইবনু ‘উমার (রাঃ)-কে বর্ণনা করেছিলাম।

সালিহ বলেন, আবূরাফি’ থেকে হুবহু এরূপই বর্ণিত হয়েছে। (ই.ফা. ৮৫; ই.সে. ৮৭)
৮৪
وَحَدَّثَنِيهِ أَبُو بَكْرِ بْنُ إِسْحَاقَ بْنِ مُحَمَّدٍ، أَخْبَرَنَا ابْنُ أَبِي مَرْيَمَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْعَزِيزِ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي الْحَارِثُ بْنُ الْفُضَيْلِ الْخَطْمِيُّ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْحَكَمِ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ، عَنْ أَبِي رَافِعٍ، مَوْلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ مَا كَانَ مِنْ نَبِيٍّ إِلاَّ وَقَدْ كَانَ لَهُ حَوَارِيُّونَ يَهْتَدُونَ بِهَدْيِهِ وَيَسْتَنُّونَ بِسُنَّتِهِ ‏”‏ ‏.‏ مِثْلَ حَدِيثِ صَالِحٍ وَلَمْ يَذْكُرْ قُدُومَ ابْنِ مَسْعُودٍ وَاجْتِمَاعَ ابْنِ عُمَرَ مَعَهُ ‏.‏

‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘‘যে কোন নবীর জন্য এমন কিছু সংখ্যক নিবেদিত প্রাণ সহচর জুটেছিল, যারা তাঁর নির্দেশিত পথে জীবন যাপন করেছেন এবং তাঁর সুন্নাতকে সমুন্নত রেখেছেন।” হাদীসের অবশিষ্টাংশ হুবহু সালিহ-এর হাদীসের অনুরূপ। তবে এ বর্ণনায় ইবনু মাস‘ঊদের আগমন ও তাঁর সাথে ইবনু ‘উমারের একত্রিত হওয়ার কথা উল্লেখ নেই। (ই.ফা. ৮৬; ই.সে. ৮৮)


২১. অধ্যায়ঃ
মু’মিনদের মধ্যে একে অপরের চাইতে ঈমানের গুনে প্রাধান্য থাকা এবং এ বিষয়ে ইয়ামানবাসীরা অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত

৮৫
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، ح وَحَدَّثَنَا ابْنُ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي ح، وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ، كُلُّهُمْ عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، ح وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ حَبِيبٍ الْحَارِثِيُّ، – وَاللَّفْظُ لَهُ – حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، عَنْ إِسْمَاعِيلَ، قَالَ سَمِعْتُ قَيْسًا، يَرْوِي عَنْ أَبِي مَسْعُودٍ، قَالَ أَشَارَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِيَدِهِ نَحْوَ الْيَمَنِ فَقَالَ ‏ “‏ أَلاَ إِنَّ الإِيمَانَ هَا هُنَا وَإِنَّ الْقَسْوَةَ وَغِلَظَ الْقُلُوبِ فِي الْفَدَّادِينَ عِنْدَ أُصُولِ أَذْنَابِ الإِبِلِ حَيْثُ يَطْلُعُ قَرْنَا الشَّيْطَانِ فِي رَبِيعَةَ وَمُضَرَ ‏”‏ ‏.‏

আবূ মাস‘ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর হাত দিয়ে ইয়ামানের দিকে ইশারা করে বললেন, জেনে রাখো, ঈমান সেখানেই। কঠোর ও পাষাণ হৃদয় হচ্ছে শয়তানের দুই শিংয়ের মধ্যে বসবাসকারী সে সব লোক যারা উটের লেজের গোড়া থেকে চীৎকার দিয়ে থাকে, অর্থাৎ রাবী‘আহ্‌ ও মুযারা গোত্র। (ই.ফা. ৮৭; ই.সে. ৮৯)


৮৬
حَدَّثَنَا أَبُو الرَّبِيعِ الزَّهْرَانِيُّ، أَنْبَأَنَا حَمَّادٌ، حَدَّثَنَا أَيُّوبُ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ جَاءَ أَهْلُ الْيَمَنِ هُمْ أَرَقُّ أَفْئِدَةً الإِيمَانُ يَمَانٍ وَالْفِقْهُ يَمَانٍ وَالْحِكْمَةُ يَمَانِيَةٌ ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ইয়ামানের অধিবাসীরা এসেছে; তাদের হৃদয় বড়ই কোমল। ঈমান রয়েছে ইয়ামানবাসীদের মধ্যে, ধর্মীয় গভীর জ্ঞান রয়েছে ইয়ামানবাসীদের মধ্যে এবং হিকমাত রয়েছে ইয়ামানবাসীদের মধ্যে। (ই.ফা. ৮৮; ই.সে. ৯০)

৮৭
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، ح وَحَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ يُوسُفَ الأَزْرَقُ، كِلاَهُمَا عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، عَنْ مُحَمَّدٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ ‏.‏

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, পরবর্তী অংশ উপরোক্ত হাদিসের মতোই। (ই.ফা. ৮৯; ই.সে. ৯১)

৮৮
حَدَّثَنِي عَمْرٌو النَّاقِدُ، وَحَسَنٌ الْحُلْوَانِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، – وَهُوَ ابْنُ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ – حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، عَنِ الأَعْرَجِ، قَالَ قَالَ أَبُو هُرَيْرَةَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ أَتَاكُمْ أَهْلُ الْيَمَنِ هُمْ أَضْعَفُ قُلُوبًا وَأَرَقُّ أَفْئِدَةً الْفِقْهُ يَمَانٍ وَالْحِكْمَةُ يَمَانِيَةٌ ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের নিকট ইয়ামানবাসীরা এসেছে। তারা নম্রচিত্ত ও কোমল হৃদয়ের অধিকারী। ধর্মীয় গভীর জ্ঞান ইয়ামানবাসীদের মধ্যে এবং হিকমাতও ইয়ামানবাসীদের মধ্যে রয়েছে। [৩০] (ই.ফা. ৯০; ই.সে. ৯২)






[৩০] উল্লিখিত হাদীসে ﻭاﻠﺤﻜﺔ اﻠﻔﻘﻪ (আল ফিক্‌হ ওয়াল হিকমাহ্‌) অর্থাৎ জ্ঞান ও প্রজ্ঞাকে ইয়ামানের দিকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে।

৮৯
حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ أَبِي الزِّنَادِ، عَنِ الأَعْرَجِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ رَأْسُ الْكُفْرِ نَحْوَ الْمَشْرِقِ وَالْفَخْرُ وَالْخُيَلاَءُ فِي أَهْلِ الْخَيْلِ وَالإِبِلِ الْفَدَّادِينَ أَهْلِ الْوَبَرِ وَالسَّكِينَةُ فِي أَهْلِ الْغَنَمِ ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, কুফ্‌রের মূল উৎস হচ্ছে পূর্ব দিকে। অহংকার ও দাম্ভিকতা রয়েছে উচ্চৈঃস্বরে চিৎকারকারী পশুপালক ঘোড়া ও উট ওয়ালাদের মধ্যে। আর নম্রতা রয়েছে বকরীওয়ালাদের মধ্যে। [৩১] (ই.ফা. ৯১; ই.সে. ৯৩)

[৩১] প্রকৃত “ফাদ্দাদিন” হাদিসে শব্দের বিভিন্ন রকম অর্থ হয়ে থাকে। যেমন কেউ বলেন, গাই গরু যার দ্বারা জমিন আবাদ করা হয়। কেউ এ অর্থ অস্বীকার করেও বলেন যে, উচ্চৈঃস্বরে চিৎকার করে প্রকৃতপক্ষে উট ঘোড়াওয়ালা স্বাভাবিকভাবে চিল্লাচিল্লি করে থাকে। আর “আবার” উটের পশমকেও বলা হয়। আর নম্রতা বকরীওয়ালাদের মধ্যে, এজন্য বকরী চরানোর মাধ্যমে নবীদের মন মেজাজে নম্রতার শিক্ষা দেয়া হয়েছে।

৯০
وَحَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، حُجْرٍ عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ جَعْفَرٍ، – قَالَ ابْنُ أَيُّوبَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، – قَالَ أَخْبَرَنِي الْعَلاَءُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ “‏ الإِيمَانُ يَمَانٍ وَالْكُفْرُ قِبَلَ الْمَشْرِقِ وَالسَّكِينَةُ فِي أَهْلِ الْغَنَمِ وَالْفَخْرُ وَالرِّيَاءُ فِي الْفَدَّادِينَ أَهْلِ الْخَيْلِ وَالْوَبَرِ ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ঈমানের উৎস হচ্ছে ইয়ামানবাসীদের মধ্যে, আর কুফ্‌রের উৎস হচ্ছে পূর্ব দিকে এবং নম্রতা বকরীওয়ালাদের মধ্যে। আর অহংকার ও রিয়া চিৎকারকারী ঘোড়া ও উট পালকদের মধ্যে। (ই.ফা. ৯২; ই.সে. ৯৪)

৯১
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو سَلَمَةَ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ الْفَخْرُ وَالْخُيَلاَءُ فِي الْفَدَّادِينَ أَهْلِ الْوَبَرِ وَالسَّكِينَةُ فِي أَهْلِ الْغَنَمِ ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি যে, অহংকার ও দাম্ভিকতা চিৎকারকারী উট পালকদের মধ্যে এবং নম্রতা বকরীওয়ালাদের মধ্যে। (ই.ফা. ৯৩; ই.সে. ৯৫)
এখানে ইয়ামান দ্বারা কি উদ্দেশ্য এ সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। কাজী আয়ায সকল মতামতকে সমন্বয় করেছেন। তন্মধ্যে একটি মতামত হচ্ছে এখানে ইয়ামান দ্বারা মাক্কাহ্‌ নগরীকে বুঝানো হয়েছে। দ্বিতীয় মতামত হচ্ছে, এর দ্বারা মাক্কাহ্‌ ও মাদীনাহ্‌ উভয় স্থানকে বুঝানো হয়েছে। বর্ণিত আছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন এ কথাটি বলেছিলেন তখন তিনি তাবূকে অবস্থা করছিলেন। তখন মাক্কাহ্‌ ও মাদীনাহ্‌ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ইয়ামানের মধ্যখানে ছিল। তাই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মাক্কাহ্‌ ও মাদীনাকে বুঝাতে গিয়ে ইয়ামানের দিকে ইঙ্গিত করেছেন যেমন কা’বা ঘরের যে কোন্‌টি ইয়ামানের দিকে অবস্থিত তাকে বুঝানোর জন্য রুকনে ইয়ামানী বলা হয়। (শারহুন্‌ নাবাবী আলা মুসলিম, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩২)
৯২
وَحَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الدَّارِمِيُّ، أَخْبَرَنَا أَبُو الْيَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ مِثْلَهُ وَزَادَ ‏ “‏ الإِيمَانُ يَمَانٍ وَالْحِكْمَةُ يَمَانِيَةٌ ‏”‏ ‏.‏

যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

উপরোক্ত সূত্রে অবিকল বর্ণনা করেন। তবে এতে এ বাক্য অতিরিক্ত রয়েছে “ঈমান ইয়ামানবাসীদের মধ্যে এবং হিকমাত ইয়ামানবাসীদের মধ্যে”। (ই.ফা. ৯৪; ই.সে. ৯৬)
৯৩
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَخْبَرَنَا أَبُو الْيَمَانِ، عَنْ شُعَيْبٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، حَدَّثَنِي سَعِيدُ بْنُ الْمُسَيَّبِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ، قَالَ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏ “‏ جَاءَ أَهْلُ الْيَمَنِ هُمْ أَرَقُّ أَفْئِدَةً وَأَضْعَفُ قُلُوبًا الإِيمَانُ يَمَانٍ وَالْحِكْمَةُ يَمَانِيَةٌ السَّكِينَةُ فِي أَهْلِ الْغَنَمِ وَالْفَخْرُ وَالْخُيَلاَءُ فِي الْفَدَّادِينَ أَهْلِ الْوَبَرِ قِبَلَ مَطْلِعِ الشَّمْسِ ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের নিকট ইয়ামানের লোকেরা উপস্থিত হয়েছে। তারা নম্রচিত্ত ও কোমল হৃদয়ের অধিকারী। ঈমান ইয়ামানীদের মধ্যে এবং হিকমাত ইয়ামানীদের। নম্রতা বকরীওয়ালাদের মধ্যে এবং অহংকার ও দাম্ভিকতা, চিৎকারকারী উট পালকের মধ্যে, যাদের অবস্থান সূর্যোদয়ের দিকে। (ই.ফা. ৯৫; ই.সে. ৯৭)

৯৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ أَتَاكُمْ أَهْلُ الْيَمَنِ هُمْ أَلْيَنُ قُلُوبًا وَأَرَقُّ أَفْئِدَةً الإِيمَانُ يَمَانٍ وَالْحِكْمَةُ يَمَانِيَةٌ رَأْسُ الْكُفْرِ قِبَلَ الْمَشْرِقِ ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের নিকট ইয়ামানের লোকেরা উপস্থিত হয়েছে। তারা নম্রচিত্ত ও কোমল হৃদয়ের অধিকারী। ঈমান ইয়ামানীদের মধ্যে এবং হিকমাত ইয়ামানীদের। আর কুফ্‌রের উৎস হচ্ছে পূর্ব দিকে। (ই.ফা. ৯৬; ই.সে. ৯৮)
৯৫
وَحَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ وَلَمْ يَذْكُرْ ‏ “‏ رَأْسُ الْكُفْرِ قِبَلَ الْمَشْرِقِ ‏”‏ ‏.‏

আ’মাশ (রহঃ)-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ

এ সানাদেই অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। তবে তাঁর বর্ণনায় ‘কুফ্‌রের উৎস রয়েছে পূর্ব দিকে’ কথাটি উল্লেখ করেননি। (ই.ফা. ৯৭; ই.সে. ৯৯)
৯৬
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَدِيٍّ، ح وَحَدَّثَنِي بِشْرُ بْنُ خَالِدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدٌ، – يَعْنِي ابْنَ جَعْفَرٍ – قَالاَ حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ ‏.‏ مِثْلَ حَدِيثِ جَرِيرٍ وَزَادَ ‏ “‏ وَالْفَخْرُ وَالْخُيَلاَءُ فِي أَصْحَابِ الإِبِلِ وَالسَّكِينَةُ وَالْوَقَارُ فِي أَصْحَابِ الشَّاءِ ‏”‏ ‏.‏

মুহাম্মাদ ইবনু আল মুসান্না ও বিশ্‌র ইবনু খালিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

এ সানাদে জারীর (রাঃ) বর্ণিত হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে এতে বর্ণনাকারী শু’বাহ্‌, অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন ‘অহংকার ও দাম্ভিকতা উট মালিকদের মধ্যে, আর নম্রতা ও গাম্ভীর্য বকরীর মালিকদের মধ্যে। (ই.ফা. ৯৮; ই.সে. ১০০)
৯৭
وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، أَخْبَرَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْحَارِثِ الْمَخْزُومِيُّ، عَنِ ابْنِ جُرَيْجٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي أَبُو الزُّبَيْرِ، أَنَّهُ سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ غِلَظُ الْقُلُوبِ وَالْجَفَاءُ فِي الْمَشْرِقِ وَالإِيمَانُ فِي أَهْلِ الْحِجَازِ ‏”‏ ‏.‏

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মনের কঠোরতা ও অন্তরের নিষ্ঠুরতা পূর্ব দিকের মানুষের মধ্যে আর ঈমান হিজাযবাসীদের মধ্যে। (ই.ফা. ৯৯; ই.সে. ১০১)

২২. অধ্যায়ঃ
মু’মিন ব্যতীত কেউই জান্নাতে প্রবেশ করবে না, মু’মিনদের ভালোবাসা ঈমানের অঙ্গ আর তা অর্জনের উপায় হলো পরস্পর অধিক সালাম বিনিময়

৯৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، وَوَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لاَ تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا وَلاَ تُؤْمِنُوا حَتَّى تَحَابُّوا ‏.‏ أَوَلاَ أَدُلُّكُمْ عَلَى شَىْءٍ إِذَا فَعَلْتُمُوهُ تَحَابَبْتُمْ أَفْشُوا السَّلاَمَ بَيْنَكُمْ ‏”‏ ‏.‏

আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ঈমানদার ছাড়া কেউই জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, আর তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না একে অন্যকে ভালবাসবে। আমি কি তোমাদের তা বলে দিব না, কি করলে তোমাদের মাঝে পারস্পরিক ভালোবাসার সৃষ্টি হবে? তা হলো, তোমরা পরস্পর বেশি সালাম বিনিময় করবে। [৩২] (ই.ফা. ১০০; ই.সে. ১০২)
[৩২] প্রথমে ঈমান আনতে হবে, তারপর মুসলিম ব্যক্তি পরিচিত হোক আর না হোক সালাম বিনিময় করবে, সালাম বিনিময় ঈমান লাভের উপকরণ।

৯৯
وَحَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، أَنْبَأَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، بِهَذَا الإِسْنَادِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لاَ تَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ حَتَّى تُؤْمِنُوا ‏”‏ ‏.‏ بِمِثْلِ حَدِيثِ أَبِي مُعَاوِيَةَ وَوَكِيعٍ ‏.‏

আ’মাশ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, সে সত্তার শপথ! যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না তোমরা ঈমান আন। পরবর্তী অংশ আবূ মু’আবিয়াহ্‌ ও ওয়াকী’-এর হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ১০১; ই.সে. ১০৩)
২৩. অধ্যায়ঃ
সদুপদেশই দীন

১০০
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبَّادٍ الْمَكِّيُّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ قُلْتُ لِسُهَيْلٍ إِنَّ عَمْرًا حَدَّثَنَا عَنِ الْقَعْقَاعِ، عَنْ أَبِيكَ، قَالَ وَرَجَوْتُ أَنْ يُسْقِطَ، عَنِّي رَجُلاً قَالَ فَقَالَ سَمِعْتُهُ مِنَ الَّذِي سَمِعَهُ مِنْهُ أَبِي كَانَ صَدِيقًا لَهُ بِالشَّامِ ثُمَّ حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ سُهَيْلٍ عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏”‏ الدِّينُ النَّصِيحَةُ ‏”‏ قُلْنَا لِمَنْ قَالَ ‏”‏ لِلَّهِ وَلِكِتَابِهِ وَلِرَسُولِهِ وَلأَئِمَّةِ الْمُسْلِمِينَ وَعَامَّتِهِمْ ‏”‏ ‏.

তামীম আদ্‌ দারী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ সদুপদেশ দেয়াই দীন। আমরা আরয করলাম, কার জন্য উপদেশ? তিনি বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর কিতাবের, তাঁর রসূলের, মুসলিম শাসক এবং মুসলিম জনগণের। [৩৩] (ই.ফা. ১০২; ই.সে. ১০৪)
[৩৩] তামীম আদ্‌ দারী (রাঃ) হতে বুখারীতে কোন হাদীস বর্ণনা নেই আর মুসলিমে এটা ব্যতীত নেই। “নাসীহাত”একটি ‘আরাবী ও অত্যন্ত ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ। যার একটি অর্থ সমস্ত কল্যাণ একত্রে করা। ঐরূপ ‘কালাহ’ শব্দ, এটাও দু’রকম কল্যাণকে বোঝায়। কারও মতে, “নাসীহাত” এর আরেকটি অর্থ কারও ভিতর ত্রুটি থাকায় তাকে সংশোধনের লক্ষ্যে আলোচনা করা। যেমন- ﺒﻪ ﺜﻭ ﺠل اﻠر ﻨﺼﺡ “উমুক ব্যক্তি তার ছেড়া কাপড় সেলাই করেছেন, যাতে তা পড়ার উপযুক্ত হয়।” তেমনি কারও ভিতর কোন ত্রুটি থাকায় নাসীহাত করার অর্থ হলো সংশোধন করা, যা তার জন্য অত্যন্ত কল্যাণকর হয়। প্রথমতঃ আল্লাহর দিকে নাসীহাত। অর্থাৎ আল্লাহর প্রতি ঈমানের দিকে প্রত্যাবর্তন করা ও তাঁর সঙ্গে শারীক না করার উপদেশ দেয়া।

দ্বিতীয়তঃ আল্লাহর কিতাব “নাসীহাত” হলো এটা আল্লাহর কথা হিসেবে আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করা তিনি অবতীর্ণ করেছেন মানুষের রচিত নয়, আর তার মত তৈরি করা পৃথিবীতে আল্লাহ ব্যতীত সকলে একত্রিত হয়েও পারবে না।

তৃতীয়তঃ তাঁর রসূলের দিকে “নাসীহাত” আল্লাহ তাকে মানুষের হিদায়াতের জন্য পাঠিয়েছেন বিশ্বাস করা। রসূলের আদেশ ও নিষেধকে মেনে চলা, বিশ্বাস করা যে, তিনি শেষ নবী ও রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ।

চতুর্থতঃ “নাসীহাত” মুসলিম শাসকের আনুগত্য করা যতক্ষণ কুরআন হাদীস মুতাবিক নির্দেশ দিবে। জিহাদ যুদ্ধে শারীক হওয়া, তার পিছনে সলাত আদায় করা।
১০১
حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ حَاتِمٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ ‏.

তামীম আদ্‌ দারী (রাঃ) এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে উপরোক্ত হাদীসের মতোই বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১০৩; ই.সে. ১০৫)
১০২
وَحَدَّثَنِي أُمَيَّةُ بْنُ بِسْطَامَ، حَدَّثَنَا يَزِيدُ، – يَعْنِي ابْنَ زُرَيْعٍ – حَدَّثَنَا رَوْحٌ، – وَهُوَ ابْنُ الْقَاسِمِ – حَدَّثَنَا سُهَيْلٌ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ، سَمِعَهُ وَهُوَ، يُحَدِّثُ أَبَا صَالِحٍ عَنْ تَمِيمٍ الدَّارِيِّ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِمِثْلِهِ ‏.

তামীম আদ্‌ দারী (রাঃ)-এর সূত্রে থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। (ই.ফা. ১০৪; ই.সে. ১০৬)
১০৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ نُمَيْرٍ، وَأَبُو أُسَامَةَ عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ أَبِي خَالِدٍ، عَنْ قَيْسٍ، عَنْ جَرِيرٍ، قَالَ بَايَعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَلَى إِقَامِ الصَّلاَةِ وَإِيتَاءِ الزَّكَاةِ وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ ‏.

জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি সলাত আদায়ের, যাকাত দেয়ার এবং প্রত্যেক মুসলিম কল্যাণ সাধন করার জন্য রসূলুল্লাহ্‌ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বাই’আত করেছি। (ই.ফা. ১০৫; ই.সে. ১০৭)
১০৪
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَابْنُ، نُمَيْرٍ قَالُوا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ زِيَادِ بْنِ عِلاَقَةَ، سَمِعَ جَرِيرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، يَقُولُ بَايَعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَلَى النُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ ‏.

জারীর ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

আমি প্রত্যেক মুসলিমের কল্যাণ করার শর্তে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট বাই’আত করেছি। [৩৪] (ই.ফা. ১০৬; ই.সে. ১০৮)
[৩৪] সলাত ও যাকাতকে নির্দিষ্ট করেছেন, শাহাদাতাইনের পরই এর স্থান, আর বাই’য়াত শব্দ ব্যাপক অন্যান্য সকল ‘ইবাদাতের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
১০৫
حَدَّثَنَا سُرَيْجُ بْنُ يُونُسَ، وَيَعْقُوبُ الدَّوْرَقِيُّ، قَالاَ حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، عَنْ سَيَّارٍ، عَنِ الشَّعْبِيِّ، عَنْ جَرِيرٍ، قَالَ بَايَعْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَلَى السَّمْعِ وَالطَّاعَةِ فَلَقَّنَنِي ‏ “‏ فِيمَا اسْتَطَعْتَ ‏”‏ ‏.‏ وَالنُّصْحِ لِكُلِّ مُسْلِمٍ ‏.‏ قَالَ يَعْقُوبُ فِي رِوَايَتِهِ قَالَ حَدَّثَنَا سَيَّارٌ ‏.

জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে শ্রবণ ও আনুগত্যের বাই’আত গ্রহন করলে তিনি আমাকে শিখিয়ে দিলেন, (বলো) যতদূর আমার সাধ্যে কুলায় (কেননা সাধ্যের অতিরিক্ত করতে বান্দা অপারগ)। আর প্রত্যেক মুসলিমের উপদেশ দেয়ার ব্যাপারেও (বাই’আত করেছি)। ইয়া’কূব তার বর্ণনায় বলেন, সাইয়্যার আমাদেরকে হাদীস বর্ণনা করেছেন। [৩৫] (ই.ফা. ১০৭; ই.সে. ১০৯)

[৩৫] জারীর (রাঃ) তাঁর এক দাসকে বললেন যে, আমার জন্য একটা ঘোড়া ক্রয় করে আন, দাস তিনশত দিরহাম দাম দিয়ে একটি ঘোড়া ক্রয় করেন। বিক্রেতা সাথে সাথে আসলেন দাম গ্রহন করার জন্য। জারীর বললেন, তোমার ঘোড়ার দাম এর থেকে বেশি হবে। বিক্রেতা বললেন, যেটা ভাল মনে করেন। জারীর ঘোড়ার দাম বাড়াতে বাড়াতে আটশত দিরহামে ক্রয় করেন। উচিৎ হলো, মুসলিমদের কাউকে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত না করা।

FOR MORE CLICK HERE

Copyright © Quality Can Do Soft.
Designed and developed by Sohel Rana, Assistant Professor, Kumudini Government College, Tangail. Email: [email protected]