৩৯. অধ্যায়ঃ
অহংকারের পরিচয় ও তা হারাম হওয়া
১৬৬
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَمُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، وَإِبْرَاهِيمُ بْنُ دِينَارٍ، جَمِيعًا عَنْ يَحْيَى بْنِ حَمَّادٍ، – قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ حَمَّادٍ، – أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبَانَ بْنِ تَغْلِبَ، عَنْ فُضَيْلٍ الْفُقَيْمِيِّ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ النَّخَعِيِّ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مَسْعُودٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ كِبْرٍ ” . قَالَ رَجُلٌ إِنَّ الرَّجُلَ يُحِبُّ أَنْ يَكُونَ ثَوْبُهُ حَسَنًا وَنَعْلُهُ حَسَنَةً . قَالَ ” إِنَّ اللَّهَ جَمِيلٌ يُحِبُّ الْجَمَالَ الْكِبْرُ بَطَرُ الْحَقِّ وَغَمْطُ النَّاسِ ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করলো, মানুষ চায় যে, তার পোশাক সুন্দর হোক, তার জুতা সুন্দর হোক, এ –ও কি অহংকার? রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ‘আল্লাহ সুন্দর, তিনি সুন্দরকে ভালোবাসেন। প্রকৃতপক্ষে অহংকার হচ্ছে দম্ভভরে সত্য ও ন্যায় অস্বীকার করা এবং মানুষকে ঘৃণা করা।’ [৪১] (ই.ফা. ১৬৭; ই.সে. ১৭৩)
[৪১] কেউ যদি সুন্দর পোশাক পরিধান করে, আর সুন্দর জুতা পরিধান করে এটা শারী’আত সম্মত তা অহংকারের অন্তর্ভুক্ত হবে না।
১৬৭
حَدَّثَنَا مِنْجَابُ بْنُ الْحَارِثِ التَّمِيمِيُّ، وَسُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، كِلاَهُمَا عَنْ عَلِيِّ بْنِ مُسْهِرٍ، – قَالَ مِنْجَابٌ أَخْبَرَنَا ابْنُ مُسْهِرٍ، – عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ لاَ يَدْخُلُ النَّارَ أَحَدٌ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةِ خَرْدَلٍ مِنْ إِيمَانٍ وَلاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ أَحَدٌ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ حَبَّةِ خَرْدَلٍ مِنْ كِبْرِيَاءَ ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমান থাকবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। আর যে ব্যক্তির অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ অহংকার থাকবে সেও জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (ই.ফা. ১৬৮; ই.সে. ১৭৪)
১৬৮
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو دَاوُدَ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ أَبَانَ بْنِ تَغْلِبَ، عَنْ فُضَيْلٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ عَلْقَمَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ لاَ يَدْخُلُ الْجَنَّةَ مَنْ كَانَ فِي قَلْبِهِ مِثْقَالُ ذَرَّةٍ مِنْ كِبْرٍ ” .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার থাকবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (ই.ফা. ১৬৯; ই.সে. ১৭৫)
৪০.অধ্যায়ঃ
শিরক না করা অবস্থায় যার মৃত্যু হয় সে জান্নাতী, মুশরিক অবস্থায় যার মৃত্যু হয় সে জাহান্নামী
১৬৯
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ نُمَيْرٍ، حَدَّثَنَا أَبِي وَوَكِيعٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ شَقِيقٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ وَكِيعٌ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَقَالَ ابْنُ نُمَيْرٍ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ مَاتَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ النَّارَ ” . وَقُلْتُ أَنَا وَمَنْ مَاتَ لاَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ .
‘আবদুল্লাহ ইবনু মাস’উদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, অন্য বর্ণনায় রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি। যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোন কিছুকে শারীক করে মারা যাবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আমি বলি, যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শারীক না করা অবস্থায় মারা যায় সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (ই.ফা. ১৭০; ই.সে. ১৭৬)
১৭০
وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي سُفْيَانَ، عَنْ جَابِرٍ، قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا الْمُوجِبَتَانِ فَقَالَ “ مَنْ مَاتَ لاَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ مَاتَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ النَّارَ ” .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সামনে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করল-ইয়া রসূলুল্লাহ! ওয়াজিবকারী (অবশ্যম্ভাবী) দু’টো বিষয় কি? তিনি বললেন, আল্লাহর সাথে কোন কিছু শারীক না করে যে ব্যক্তি মারা যাবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোন কিছু শারীক করা অবস্থায় মারা যাবে সে জাহান্নামে যাবে। (ই.ফা. ১৭১; ই.সে. ১৭৭)
সরাসরি
১৭১
وَحَدَّثَنِي أَبُو أَيُّوبَ الْغَيْلاَنِيُّ، سُلَيْمَانُ بْنُ عُبَيْدِ اللَّهِ وَحَجَّاجُ بْنُ الشَّاعِرِ قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا قُرَّةُ، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، حَدَّثَنَا جَابِرُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ “ مَنْ لَقِيَ اللَّهَ لاَ يُشْرِكُ بِهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ وَمَنْ لَقِيَهُ يُشْرِكُ بِهِ دَخَلَ النَّارِ ” . قَالَ أَبُو أَيُّوبَ قَالَ أَبُو الزُّبَيْرِ عَنْ جَابِرٍ .
জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকেও শারীক না করে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে ব্যক্তি তাঁর সম্মুখে উপস্থিত হবে এমন অবস্থায় যে, সে আল্লাহর সাথে শারীক স্থির করে, তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। (ই.ফা. ১৭২; ই.সে. ১৭৮)
১৭২
وَحَدَّثَنِي إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، أَخْبَرَنَا مُعَاذٌ، – وَهُوَ ابْنُ هِشَامٍ – قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي، عَنْ أَبِي الزُّبَيْرِ، عَنْ جَابِرٍ، أَنَّ نَبِيَّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ بِمِثْلِهِ .
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যার পরবর্তী অংশ পূর্ববর্তী হাদীসের অনুরূপ। (ই.ফা. ১৭৩; ই.সে. ১৭৯)
১৭৩
وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، وَابْنُ، بَشَّارٍ قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ وَاصِلٍ الأَحْدَبِ، عَنِ الْمَعْرُورِ بْنِ سُوَيْدٍ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا ذَرٍّ، يُحَدِّثُ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ ” أَتَانِي جِبْرِيلُ – عَلَيْهِ السَّلاَمُ – فَبَشَّرَنِي أَنَّهُ مَنْ مَاتَ مِنْ أُمَّتِكَ لاَ يُشْرِكُ بِاللَّهِ شَيْئًا دَخَلَ الْجَنَّةَ ” . قُلْتُ وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ . قَالَ ” وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ ” .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, জিবরীল (আঃ) আমার নিকট এসে সুসংবাদ দিলেন যে, আপনার উম্মাতের যে কেউ শিরক না করে মারা যাবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি (আবূ যার) বললাম, যদিও সে ব্যভিচার করে এবং যদিও সে চুরি করে। তিনি বললেন, যদিও সে ব্যভিচার করে ও চুরি করে। (ই.ফা. ১৭৪; ই.সে. ১৮০)
১৭৪
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَأَحْمَدُ بْنُ خِرَاشٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ عَبْدِ الْوَارِثِ، حَدَّثَنَا أَبِي قَالَ، حَدَّثَنِي حُسَيْنٌ الْمُعَلِّمُ، عَنِ ابْنِ بُرَيْدَةَ، أَنَّ يَحْيَى بْنَ يَعْمَرَ، حَدَّثَهُ أَنَّ أَبَا الأَسْوَدِ الدِّيلِيَّ حَدَّثَهُ أَنَّ أَبَا ذَرٍّ حَدَّثَهُ قَالَ أَتَيْتُ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ نَائِمٌ عَلَيْهِ ثَوْبٌ أَبْيَضُ ثُمَّ أَتَيْتُهُ فَإِذَا هُوَ نَائِمٌ ثُمَّ أَتَيْتُهُ وَقَدِ اسْتَيْقَظَ فَجَلَسْتُ إِلَيْهِ فَقَالَ ” مَا مِنْ عَبْدٍ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ثُمَّ مَاتَ عَلَى ذَلِكَ إِلاَّ دَخَلَ الْجَنَّةَ ” . قُلْتُ وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ قَالَ ” وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ ” . قُلْتُ وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ قَالَ ” وَإِنْ زَنَى وَإِنْ سَرَقَ ” . ثَلاَثًا ثُمَّ قَالَ فِي الرَّابِعَةِ ” عَلَى رَغْمِ أَنْفِ أَبِي ذَرٍّ ” قَالَ فَخَرَجَ أَبُو ذَرٍّ وَهُوَ يَقُولُ وَإِنْ رَغِمَ أَنْفُ أَبِي ذَرٍّ .
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমাতে উপস্থিত হলাম। সে সময় তিনি ঘুমাচ্ছিলেন এবং তাঁর গায়ের উপর একখানা চাদর ছিল। আবার এসে তাঁকে ঘুমন্ত অবস্থায় পেলাম। পরে আবার এসে দেখি, তিনি ঘুম থেকে উঠেছেন। আমি তাঁর নিকটে বসলাম। তারপর তিনি বললেন, যে কোন বান্দা (আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই) বলবে এবং এ বিশ্বাসের উপর মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি আরয করলাম, যদি সে ব্যভিচার করে এবং চুরি করে তবুও? রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যদিও সে ব্যভিচার করে ও চুরি করে। এ কথাটি তিন তিনবার পুনরাবৃত্তি করা হলো। চতুর্থবারে রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, যদিও আবূ যার-এর নাক ধূলিমলিন হয়, (অর্থাৎ আবূ যার-এর অপছন্দ হলেও) রাবী বলেন, আবূ যার (রাঃ) এ কথা বলতে বলতে বের হলেন, যদিও আবূ যার-এর নাক ধূলিমলিন হয়। (ই.ফা. ১৭৫; ই.সে. ১৮১)
৪১. অধ্যায়ঃ
যে কাফির ব্যক্তি বলল, তাকে হত্যা করা হারাম
১৭৫
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا لَيْثٌ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رُمْحٍ، – وَاللَّفْظُ مُتَقَارِبٌ – أَخْبَرَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ بْنِ عَدِيِّ بْنِ الْخِيَارِ، عَنِ الْمِقْدَادِ بْنِ الأَسْوَدِ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ، قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ إِنْ لَقِيتُ رَجُلاً مِنَ الْكُفَّارِ فَقَاتَلَنِي فَضَرَبَ إِحْدَى يَدَىَّ بِالسَّيْفِ فَقَطَعَهَا . ثُمَّ لاَذَ مِنِّي بِشَجَرَةٍ فَقَالَ أَسْلَمْتُ لِلَّهِ . أَفَأَقْتُلُهُ يَا رَسُولَ اللَّهِ بَعْدَ أَنْ قَالَهَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لاَ تَقْتُلْهُ ” . قَالَ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّهُ قَدْ قَطَعَ يَدِي ثُمَّ قَالَ ذَلِكَ بَعْدَ أَنْ قَطَعَهَا أَفَأَقْتُلُهُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لاَ تَقْتُلْهُ فَإِنْ قَتَلْتَهُ فَإِنَّهُ بِمَنْزِلَتِكَ قَبْلَ أَنْ تَقْتُلَهُ وَإِنَّكَ بِمَنْزِلَتِهِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ كَلِمَتَهُ الَّتِي قَالَ ” .
মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনার মত কি? যদি আমি কোন কাফিরের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হই, আর সে আমার উপর আক্রমণ করে তরবারি দ্বারা আমার এক হাত কেটে ফেলে, অতঃপর সে এক বৃক্ষের আড়ালে গিয়ে আমার আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষা করে এবং এ কথা বলে যে, আমি আল্লাহর জন্য ইসলাম গ্রহণ করেছি। হে আল্লাহর রসূল, সে এ কথা বলে যে, আমি আল্লাহর জন্য ইসলাম গ্রহণ করেছি। হে আল্লাহর রসূল! তার এ কথা বলার পর আমি কি তাকে হত্যা করবো? রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ না, তাকে হত্যা করো না। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! সে তো আমার একটি হাত কেটে ফেলেছে আর এটা কাটার পরই সে ঐ কথা বলেছে? এমতাবস্থায় আমি কি তাকে হত্যা করবো? এবারও রসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তাকে হত্যা করো না। কেননা যদি তুমি তাকে হত্যা করো তাহলে তাকে হত্যা করার পূর্বে তুমি যে অবস্থায় ছিলে, সে তোমার সে অবস্থায় এসে যাবে। আর ঐ কালিমা বলার পূর্বে সে যে অবস্থায় ছিল, তুমি সে অবস্থায় এসে যাবে। [৪২] (ই.ফা. ১৭৬; ই.সে. ১৮২)
[৪২] যদি তাকে হত্যা কর, তাহলে তুমি ক্যাফের হয়ে যাবে, আর সে মুসলিম হয়ে যাবে (অন্তরের মালিক আল্লাহ) । (নাবাবী)
১৭৬
حَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، قَالاَ أَخْبَرَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، قَالَ أَخْبَرَنَا مَعْمَرٌ، ح وَحَدَّثَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مُوسَى الأَنْصَارِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ بْنُ مُسْلِمٍ، عَنِ الأَوْزَاعِيِّ، ح وَحَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ رَافِعٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّزَّاقِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ جُرَيْجٍ، جَمِيعًا عَنِ الزُّهْرِيِّ، بِهَذَا الإِسْنَادِ أَمَّا الأَوْزَاعِيُّ وَابْنُ جُرَيْجٍ فَفِي حَدِيثِهِمَا قَالَ أَسْلَمْتُ لِلَّهِ . كَمَا قَالَ اللَّيْثُ فِي حَدِيثِهِ . وَأَمَّا مَعْمَرٌ فَفِي حَدِيثِهِ فَلَمَّا أَهْوَيْتُ لأَقْتُلَهُ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ .
যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
এ সানাদে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে আওযা’ঈ ও ইবনু জুরায়জ তাদের হাদীসে বলেন, সে লোকটি বলেছিল, আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে ইসলাম গ্রহণ করলাম, যেমন পূর্বোক্ত হাদীসে লায়স বর্ণনা করেছেন। আর মা’মার বর্ণিত হাদীসে ‘যখন আমি তাকে হত্যা করার জন্য উদ্যত হলাম তখন সে বলল’, কথাটির উল্লেখ আছে। (ই.ফা. ১৭৭; ই.সে. ১৮৩)
১৭৭
وَحَدَّثَنِي حَرْمَلَةُ بْنُ يَحْيَى، أَخْبَرَنَا ابْنُ وَهْبٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، قَالَ حَدَّثَنِي عَطَاءُ بْنُ يَزِيدَ اللَّيْثِيُّ، ثُمَّ الْجُنْدَعِيُّ أَنَّ عُبَيْدَ، اللَّهِ بْنَ عَدِيِّ بْنِ الْخِيَارِ أَخْبَرَهُ أَنَّ الْمِقْدَادَ بْنَ عَمْرِو بْنِ الأَسْوَدِ الْكِنْدِيَّ – وَكَانَ حَلِيفًا لِبَنِي زُهْرَةَ وَكَانَ مِمَّنْ شَهِدَ بَدْرًا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم – أَنَّهُ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَرَأَيْتَ إِنْ لَقِيتُ رَجُلاً مِنَ الْكُفَّارِ ثُمَّ ذَكَرَ بِمِثْلِ حَدِيثِ اللَّيْثِ .
মিকদাদ ইবনু ‘আমর ইবনু আসওয়াদ আল কিন্দী (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যুহরী গোত্রের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলেন এবং বদরের যুদ্ধ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে উপস্থিত ছিলেন। তিনি আরয করলেন, ইয়া রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ! যদি আমি যুদ্ধের ময়দানে কোন কাফেরের সম্মুখীন হই। বাকী আংশ লায়স বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ (ই.ফা. ১৭৮; ই.সে. ১৮৪)
১৭৮
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، وَإِسْحَاقُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ، عَنْ أَبِي مُعَاوِيَةَ، كِلاَهُمَا عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي ظِبْيَانَ، عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ، وَهَذَا، حَدِيثُ ابْنِ أَبِي شَيْبَةَ قَالَ بَعَثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي سَرِيَّةٍ فَصَبَّحْنَا الْحُرَقَاتِ مِنْ جُهَيْنَةَ فَأَدْرَكْتُ رَجُلاً فَقَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . فَطَعَنْتُهُ فَوَقَعَ فِي نَفْسِي مِنْ ذَلِكَ فَذَكَرْتُهُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَقَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَقَتَلْتَهُ ” . قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّمَا قَالَهَا خَوْفًا مِنَ السِّلاَحِ . قَالَ ” أَفَلاَ شَقَقْتَ عَنْ قَلْبِهِ حَتَّى تَعْلَمَ أَقَالَهَا أَمْ لاَ ” . فَمَازَالَ يُكَرِّرُهَا عَلَىَّ حَتَّى تَمَنَّيْتُ أَنِّي أَسْلَمْتُ يَوْمَئِذٍ . قَالَ فَقَالَ سَعْدٌ وَأَنَا وَاللَّهِ لاَ أَقْتُلُ مُسْلِمًا حَتَّى يَقْتُلَهُ ذُو الْبُطَيْنِ . يَعْنِي أُسَامَةَ قَالَ قَالَ رَجُلٌ أَلَمْ يَقُلِ اللَّهُ { وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ} فَقَالَ سَعْدٌ قَدْ قَاتَلْنَا حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ وَأَنْتَ وَأَصْحَابُكَ تُرِيدُونَ أَنْ تُقَاتِلُوا حَتَّى تَكُونَ فِتْنَةٌ .
উসামাহ ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে এক জিহাদ অভিযানে পাঠালে আমরা প্রত্যুষে ‘জুহাইনার’ (একটি শাখা গোত্র) ‘আলহুরাকায়’ গিয়ে পৌঁছলাম। এ সময়ে আমি এক ব্যক্তির পশ্চাদ্ধাবন করে তাকে ধরে ফেলি। অবস্হা বেগতিক দেখে সে বলল, ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল-হ’ কিন্তু তাকে বর্শা দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে ফেললাম। কালিমা পড়ার পর আমি তাকে হত্যা করেছি বিধায়, আমার মন সংশয়ের ঊদ্রেক হলো। তাই ঘটনাটি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উল্লেখ করলাম। তিনি বললেন, তুমি কি তাকে ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল-হ’ বলার পর হত্যা করেছো। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! সে অস্ত্রের ভয়ে জান বাঁচানোর জন্য এরূপ বলেছে। তিনি রাগান্বিত হয়ে বললেন, তুমি তার অন্তর ছিঁড়ে দেখেছো, যাতে তুমি জানতে পারলে যে, সে এ কথাটি ভয়ে বলেছিল? (রাবী বলেন), তিনি এ কথাটি বার বার আবৃতি করতে থাকলেন। আর আমি মনে মনে আনুশোচনা করতে থাকলাম, ‘হায়! যদি আমি আজই ইসলাম গ্রহন করতাম! বর্ণনাকারী বলেন, এ সময় সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! আমি কখনো কোন মুসলিমকে হত্যা করব না, যেভাবে এ ভুঁড়ি ওয়ালা (উসামাহ) মুসলিমকে হত্যা করেছে। রাবী বলেন, তখন জনৈক ব্যক্তি বলল, আল্লাহ তা’য়ালা কি এ কথা বলেননি যে, “তোমরা তাদের (কাফিরদের) বিরুদ্ধে জিহাদ করো, যে পর্যন্ত ফিৎনা দূরীভুত না হয়, আর আল্লাহর দ্বীন পরিপূর্ণ না হয়ে যায়? এর জবাবে সা’দ (রাঃ) বললেন, আমরা জিহাদ করি, যাতে ফিৎনা না থাকে, কিন্তু তুমি আর তোমার সঙ্গীগণ এ ঊদ্দেশ্যে যুদ্ধ কর, যাতে ফেৎনা সৃষ্টি হয়। (ই.ফা. ১৭৯; ই.সে. ১৮৫)
১৭৯
حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ الدَّوْرَقِيُّ، حَدَّثَنَا هُشَيْمٌ، أَخْبَرَنَا حُصَيْنٌ، حَدَّثَنَا أَبُو ظِبْيَانَ، قَالَ سَمِعْتُ أُسَامَةَ بْنَ زَيْدِ بْنِ حَارِثَةَ، يُحَدِّثُ قَالَ بَعَثَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِلَى الْحُرَقَةِ مِنْ جُهَيْنَةَ فَصَبَّحْنَا الْقَوْمَ فَهَزَمْنَاهُمْ وَلَحِقْتُ أَنَا وَرَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ رَجُلاً مِنْهُمْ فَلَمَّا غَشَيْنَاهُ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . فَكَفَّ عَنْهُ الأَنْصَارِيُّ وَطَعَنْتُهُ بِرُمْحِي حَتَّى قَتَلْتُهُ . قَالَ فَلَمَّا قَدِمْنَا بَلَغَ ذَلِكَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لِي ” يَا أُسَامَةُ أَقَتَلْتَهُ بَعْدَ مَا قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ” . قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّمَا كَانَ مُتَعَوِّذًا . قَالَ فَقَالَ ” أَقَتَلْتَهُ بَعْدَ مَا قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ ” . قَالَ فَمَازَالَ يُكَرِّرُهَا عَلَىَّ حَتَّى تَمَنَّيْتُ أَنِّي لَمْ أَكُنْ أَسْلَمْتُ قَبْلَ ذَلِكَ الْيَوْمِ .
উসামাহ ইবনু যায়দ ইবনু হারিসাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-জুহাইনাহ গোত্রের হুরাকাহ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য আমাদের পাঠালেন। আমরা খুব ভোরে সে সম্প্রদায়ের ঊপর আক্রমণ করলাম এবং তাদের পরাজিত করলাম। আমি এবং একজন আনসার এক ব্যক্তির পিছু নিলাম আমরা যখন তাকে ঘিরে ফেললাম তখন সে বলল, আনসার তার মুখে “লা-ইলা-হা ইল্লাল-হ” কালিমা শুনে নিবৃত্ত হলেন। কিন্তু আমি তাকে বল্লম দ্বারা এমন আঘাত করলাম যে, তাকে মেরেই ফেললাম। আমরা যুদ্ধ ক্ষেত্র থেকে ফিরে এলে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এ খবরটি পৌছলো। তিনি আমাকে ডেকে বললেন, ‘হে উসামাহ! তুমি কি তাকে “লা-ইলা-হা ইল্লাল-হ” বলার পরেও হত্যা করে ফেলেছো? আমি আরয করলাম ‘হে আল্লাহর রসূল! সে ব্যক্তিতো আত্নরক্ষার জন্য এ কথা বলেছিল। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবার বললেন, তুমি কি তাকে ““লা-ইলা-হা ইল্লাল-হ” বলার পর ও হত্যা করে করেছো? এভাবে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বার বার আমার প্রতি এ কথা বলতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত আমার মনে এ আকাঙ্ক্ষা ঊদয় হলো যে, হায়! আজকে এ দিনের আগে আমি ইসলাম গ্রহণ না করতাম। (ই.ফা. ১৮০; ই.সে. ১৮৬)
১৮০
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ الْحَسَنِ بْنِ خِرَاشٍ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا مُعْتَمِرٌ، قَالَ سَمِعْتُ أَبِي يُحَدِّثُ، أَنَّ خَالِدًا الأَثْبَجَ ابْنَ أَخِي، صَفْوَانَ بْنِ مُحْرِزٍ حَدَّثَ عَنْ صَفْوَانَ بْنِ مُحْرِزٍ، أَنَّهُ حَدَّثَ أَنَّ جُنْدَبَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ الْبَجَلِيَّ بَعَثَ إِلَى عَسْعَسِ بْنِ سَلاَمَةَ زَمَنَ فِتْنَةِ ابْنِ الزُّبَيْرِ فَقَالَ اجْمَعْ لِي نَفَرًا مِنْ إِخْوَانِكَ حَتَّى أُحَدِّثَهُمْ . فَبَعَثَ رَسُولاً إِلَيْهِمْ فَلَمَّا اجْتَمَعُوا جَاءَ جُنْدَبٌ وَعَلَيْهِ بُرْنُسٌ أَصْفَرُ فَقَالَ تَحَدَّثُوا بِمَا كُنْتُمْ تَحَدَّثُونَ بِهِ . حَتَّى دَارَ الْحَدِيثُ فَلَمَّا دَارَ الْحَدِيثُ إِلَيْهِ حَسَرَ الْبُرْنُسَ عَنْ رَأْسِهِ فَقَالَ إِنِّي أَتَيْتُكُمْ وَلاَ أُرِيدُ أَنْ أُخْبِرَكُمْ عَنْ نَبِيِّكُمْ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بَعَثَ بَعْثًا مِنَ الْمُسْلِمِينَ إِلَى قَوْمٍ مِنَ الْمُشْرِكِينَ وَإِنَّهُمُ الْتَقَوْا فَكَانَ رَجُلٌ مِنَ الْمُشْرِكِينَ إِذَا شَاءَ أَنْ يَقْصِدَ إِلَى رَجُلٍ مِنَ الْمُسْلِمِينَ قَصَدَ لَهُ فَقَتَلَهُ وَإِنَّ رَجُلاً مِنَ الْمُسْلِمِينَ قَصَدَ غَفْلَتَهُ قَالَ وَكُنَّا نُحَدَّثُ أَنَّهُ أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ فَلَمَّا رَفَعَ عَلَيْهِ السَّيْفَ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . فَقَتَلَهُ فَجَاءَ الْبَشِيرُ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلَهُ فَأَخْبَرَهُ حَتَّى أَخْبَرَهُ خَبَرَ الرَّجُلِ كَيْفَ صَنَعَ فَدَعَاهُ فَسَأَلَهُ فَقَالَ ” لِمَ قَتَلْتَهُ ” . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهَ أَوْجَعَ فِي الْمُسْلِمِينَ وَقَتَلَ فُلاَنًا وَفُلاَنًا – وَسَمَّى لَهُ نَفَرًا – وَإِنِّي حَمَلْتُ عَلَيْهِ فَلَمَّا رَأَى السَّيْفَ قَالَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” أَقَتَلْتَهُ ” . قَالَ نَعَمْ . قَالَ ” فَكَيْفَ تَصْنَعُ بِلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ إِذَا جَاءَتْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ اسْتَغْفِرْ لِي . قَالَ ” وَكَيْفَ تَصْنَعُ بِلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ إِذَا جَاءَتْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” . قَالَ فَجَعَلَ لاَ يَزِيدُهُ عَلَى أَنْ يَقُولَ ” كَيْفَ تَصْنَعُ بِلاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ إِذَا جَاءَتْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” .
জুনদাব ইবনু ‘আবদুল্লাহ আল বাজালী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়রের ফিতনার যুগে ‘আস‘আস ইবনু সালামাহকে বলে পাঠালেন যে, তুমি তোমার কিছু বন্ধুকে আমার জন্য একত্র করবে, আমি তাদের সঙ্গে কথা বলব। ‘আস‘আস তাদের কাছে লোক পাঠালেন। তারা যখন সমবেত হলো, জুনদাব তখন হলুদ বর্ণের বুরনুস (এক ধরনের টুপি) পরে উপস্থিত হলেন এবং বললেন, তোমরা আগের মত কথা বার্তা বলতে থাক। এক পর্যায়ে যখন জুনদাব বললেন, তখন তিনি তাঁর মাথার বুরনুসটি নামিয়ে ফেললেন। বললেন আমি তোমাদের নিকট এসেছি। আমি তোমাদের কাছে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কিছু হাদীস বর্ণনা করতে চাই। তা হলো, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুসলিমদের একটি বাহিনী মুশরিক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে পাঠালেন। উভয় দল পরস্পর সম্মুখীন হলো এবং মুশরিক বাহিনীতে এক ব্যক্তি ছিল। সে যখন কোন মুসলিমকে হামলা করতে ইচ্ছা করত, সে তাকে লক্ষ্য করে ঝাপিয়ে পড়ত এবং শাহীদ করে ফেলত। একজন মুসলিম তার অসতর্ক মুহূর্তের অপেক্ষা করতে লাগলেন। জুনদাব বলেন আমাদের বলা হলো যে, সে ব্যক্তি ছিল উসামাহ ইবনু যায়দ। তিনি যখন তার উপর তলোয়ার উত্তোলন করলেন তখন সে বলল, লা-ইলা-হা ইল্লাল-হ। তবুও উসামাহ (রাঃ) তাকে হত্যা করলেন। দূত যুদ্ধে জয়লাভের সুসংবাদ নিয়ে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর খিদমাতে উপস্থিত হলো। তিনি তার যুদ্ধের পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। সে সব ঘটনাই বর্ণনা করে, এমন কি সে ব্যক্তির ঘটনাটিও বলল যে, তিনি কি করেছিলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উসামাকে ডেকে পাঠালেন এবং প্রশ্ন করলেন, তুমি সে ব্যক্তিকে হত্যা করলে কেন? উসামাহ বললেন হে আল্লাহর রসূল! সে অনেক মুসলিমকে আঘাত করেছে এবং অমুক অমুককে শাহীদ করে দিয়েছে। এ বলে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করলেন। আমি যখন তাকে আক্রমণ করলাম এবং সে তলোয়ার দেখল অমনি বলে উঠল। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তুমি তাকে মেরে ফেললে? তিনি বললেনঃ জি–হ্যাঁ। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন কিয়ামাত দিবসে যখন সে (কালিমা) নিয়ে আসবে তখন তুমি কি করবে? তিনি আরয করলেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আমার মাগফিরাতের জন্য দু’আ করুন। রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, কিয়ামাত দিবসে যখন সে (কালিমা) নিয়ে আসবে তখন তুমি কি করবে? তারপর তিনি কেবল এ কথাই বলছিলেন, কিয়ামাতের দিন যখন (কালিমা) নিয়ে আসবে তখন তুমি কি করবে? তিনি এর অতিরিক্ত কিছু বলেন নি। (ই.ফা. ১৮১; ই.সে. ১৮৭)
৪২ অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উক্তিঃ “যে ব্যক্তি আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করবে সে আমাদের দলভুক্ত নয়”
১৮১
حَدَّثَنِي زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ الْمُثَنَّى، قَالاَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، – وَهُوَ الْقَطَّانُ – ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، وَابْنُ، نُمَيْرٍ كُلُّهُمْ عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ح وَحَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ يَحْيَى، – وَاللَّفْظُ لَهُ – قَالَ قَرَأْتُ عَلَى مَالِكٍ عَنْ نَافِعٍ عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ حَمَلَ عَلَيْنَا السِّلاَحَ فَلَيْسَ مِنَّا ” .
‘আবদুল্লাহ ইব্নু ‘উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করবে সে আমাদের (মুসলিমের) দলভুক্ত নয়” (ই.ফা. ১৮২; ই.সে. ১৮৮)
সরাসরি
১৮২
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَابْنُ، نُمَيْرٍ قَالاَ حَدَّثَنَا مُصْعَبٌ، – وَهُوَ ابْنُ الْمِقْدَامِ – حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، عَنْ إِيَاسِ بْنِ سَلَمَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ سَلَّ عَلَيْنَا السَّيْفَ فَلَيْسَ مِنَّا ” .
সালামাহ ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের বিরুদ্ধে তলোয়ার উত্তোলন করবে সে আমাদের (মুসলিমের) দলভুক্ত নয়” (ই.ফা. ১৮৩; ই.সে. ১৮৯)
১৮৩
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ بَرَّادٍ الأَشْعَرِيُّ، وَأَبُو كُرَيْبٍ قَالُوا حَدَّثَنَا أَبُو أُسَامَةَ، عَنْ بُرَيْدٍ، عَنْ أَبِي بُرْدَةَ، عَنْ أَبِي مُوسَى، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ حَمَلَ عَلَيْنَا السِّلاَحَ فَلَيْسَ مِنَّا ” .
আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র উত্তোলন করবে সে আমাদের (মুসলিমের) দল ভুক্তনয়” (ই.ফা. ১৮৪; ই.সে. ১৯০)
৪৩. অধ্যায়ঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর উক্তিঃ “যে ব্যক্তি আমাদের ধোঁকা দেয় সে আমাদের দলভুক্ত নয়”
১৮৪
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، – وَهُوَ ابْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ الْقَارِيُّ ح وَحَدَّثَنَا أَبُو الأَحْوَصِ، مُحَمَّدُ بْنُ حَيَّانَ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي حَازِمٍ، كِلاَهُمَا عَنْ سُهَيْلِ بْنِ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ حَمَلَ عَلَيْنَا السِّلاَحَ فَلَيْسَ مِنَّا وَمَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “যে ব্যক্তি আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করবে সে আমাদের দলভুক্ত নয় আর যে ব্যক্তি আমাদের ধোঁকা দিবে সেও আমাদের দলভুক্ত নয়” (ই.ফা. ১৮৫; ই.সে. ১৯১)
১৮৫
وَحَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَيُّوبَ، وَقُتَيْبَةُ، وَابْنُ، حُجْرٍ جَمِيعًا عَنْ إِسْمَاعِيلَ بْنِ جَعْفَرٍ، – قَالَ ابْنُ أَيُّوبَ حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، – قَالَ أَخْبَرَنِي الْعَلاَءُ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، . أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مَرَّ عَلَى صُبْرَةِ طَعَامٍ فَأَدْخَلَ يَدَهُ فِيهَا فَنَالَتْ أَصَابِعُهُ بَلَلاً فَقَالَ ” مَا هَذَا يَا صَاحِبَ الطَّعَامِ ” . قَالَ أَصَابَتْهُ السَّمَاءُ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ ” أَفَلاَ جَعَلْتَهُ فَوْقَ الطَّعَامِ كَىْ يَرَاهُ النَّاسُ مَنْ غَشَّ فَلَيْسَ مِنِّي ” .
আবূ হুরায়রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
একদা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাদ্য শস্যের একটি স্তুপের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলেন। তিনি স্তুপের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে দিলেন ফলে হাতের আঙল গুলো ভিজে গেল। তিনি বললেন হে স্তুপের মালিক! এ কি ব্যাপার? লোকটি বলল, হে আল্লাহর রসূল! এতে বৃষ্টির পানি লেগেছে। তিনি বললেন, সেগুলো তুমি স্তুপের ওপরে রাখলে না কেন? তাহলে লোকেরা দেখে নিতে পারতো। জেনে রাখো, যে ব্যক্তি ধোঁকাবাজি করে, আমার সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। (ই.ফা. ১৮৬; ই.সে. ১৯২)